১০০টি চমৎকার ঘটনা - পর্ব-৯ (দরূদ শরীফ উনার ফযীলত)


দরূদ শরীফ উনার ফযীলত- পর্ব- ৯

কিতাবে বর্ণিত আছে, হাশরের দিন এক ব্যক্তির আমলনামা ওজন করে দেখা যাবে যে, তার নেকীর চেয়ে বদীর পাল্লা অনেক ভারী অর্থাৎ সে জাহান্নামী। লোকটি এটা দেখে খুব কান্নাকাটি শুরু করে দিবে। বারবার ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের কাছে কাকুতি মিনতি করতে থাকবে। লোকটির ব্যাকুলতা দেখে উনারা বলবেন, 'আমাদের কাছে কান্নাকাটি করে তো কোনো লাভ নেই তারচেয়ে বরং যিনি সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে গিয়ে আরজু পেশ করো। সেটাই তোমার জন্য ফায়দাজনক হবে।' তারপরে উনারা লোকটিকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কোথায় অবস্থান করছেন তাও দেখিয়ে দিবেন।

লোকটি তখন দ্রুত হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকটে গিয়ে আরজু পেশ করবে, ‘ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমার তো জায় ঠিকানা জাহান্নাম হয়ে গিয়েছে! এখন আমার কি উপায় হবে! আপনি যদি দয়া না করেন তবে আমি ধ্বংস হয়ে যাবো;’ ইত্যাদি অনেক কাকুতি মিনতি সে করবে।

হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তো রহমাতুল্লিল আলামীন রউফুর রহীম, উম্মতদেরকে সবচেয়ে বেশি মুহাব্বতকারী। তিনি লোকটির ফরিয়াদ শুনে তার আমলনামা পুনরায় ওজন করার জন্য বলবেন, তাই করা হবে। দেখা যাবে সত্যি লোকটির নেকীর পাল্লার চেয়ে বদীর পাল্লা অনেক ভারী। তখন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এক টুকরা কাগজ সেই নেকীর পাল্লায় দিয়ে দিবেন। সাথে সাথে নেকীর পাল্লা বদীর পাল্লার চেয়ে অনেক অনেক গুণ ভারী হয়ে যাবে। একটু আগে যে লোকটির জন্য জাহান্নাম ওয়াজিব ছিল, তার জন্য এখন জান্নাত ওয়াজিব হয়ে গিয়েছে। সুবহানাল্লাহ!

লোকটি এতে মহাখুশি হয়ে যাবে। সে বারবার হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শুকরিয়া আদায় করবে। তারপর বিনীতভাবে জানতে চাইবে, ‘ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! বেয়াদবি মাফ করবেন! আপনি কি এমন কাগজ আমার নেকীর পাল্লায় রেখেছিলেন, যার কারনে নেকীর পাল্লা এত ভারী হয়ে গেলো?' তখন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলবেন, ‘তুমি দুনিয়াতে থাকতে আমার প্রতি যে পবিত্র দরূদ শরীফ পাঠ করেছিলে, সেটাই আমি তোমার নেকীর পাল্লায় দিয়ে দিয়েছি।' সুবহানাল্লাহ!

দরুদ শরীফ পাঠকারী সকলকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি চিনেন। একদা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, 'আপনার থেকে দূরে অবস্থানকারী ও পরবর্তীকালে পৃথিবীতে আগমনকারী উনাদের পবিত্র দরূদ শরীফ পাঠ আপনার দৃষ্টিতে কি রকম হবে?' তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ‘মুহাব্বত সহকারে দরূদ শরীফ পাঠকারীদের দরূদ শরীফ আমি নিজেই শুনি এবং তাদেরকে চিনি। আর যারা মুহাব্বত সহকারে পাঠ করে না, তাদের দরূদ শরীফও আমার কাছে পেশ করা হয়।' সুবহানাল্লাহ!



0 Comments: