একজন কুতুবুজ্জামান- উনার দিদারে মাওলার দিকে প্রস্থান- সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযুর ক্বিবলা সাইয়্যিদ মুখলেছুর রহমান আলাইহিস সালাম উনার সাওয়ানেহে উমরী মুবারক-পর্ব-৬৩

 

ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ দাওয়াত, আফযালুল ইবাদ, ছহিবে কাশফ ওয়া কারামত, ফখরুল আউলিয়া, ছূফীয়ে বাতিন, ছহিবে ইসমে আযম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদুর রসূল, আমাদের সম্মানিত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার স্মরণে-

একজন কুতুবুজ্জামান-উনার দিদারে মাওলা উনার দিকে প্রস্থান-

হজ্ব এবং যিয়ারত শেষে দেশে  ফেরার পালা ॥

 মন পড়ে রয়েছে  পবিত্র রওযা মুবারকে আল্লাহ পাক-উনার নিগূঢ় নৈকট্য লাভকারী সূক্ষ্মদর্শী ওলীগণতো অনেক দূরের কথা, তরীক্বতের হক্ব সিলসিলাভুক্ত একজন সাধারণ সালিকও (মুরীদ) জানেন যে, শরীয়তের সম্পর্ক যাহিরী তাহ্যীবের সঙ্গে, বাতিনী সম্পর্ক অন্তরের পবিত্রতার সঙ্গে। যেমন, পাক-পবিত্র কাপড় পরিধান করে নামাজ পড়া শরীয়ত। কিন্তু অন্তরকে পবিত্র রাখা তরীক্বত। ওজু করে পবিত্রতা হাছিল করা শরীয়তের বিধান। আর অন্তরকে অনুক্ষণ পাক-পবিত্র রাখা তাছাউফের বিধান। ক্বিবলামুখী হওয়া শরীয়তের হুকুম। আর নিরন্তর অন্তরকে আল্লাহ্ পাক-উনার দিকে রুজু করে রাখা আল্লাহ্ পাক-উনার হুকুম। রওযা মুবারক যিয়ারত করা হাদীছ শরীফের আদেশ। কিন্তু সরওয়ারে দোজাহাঁ, খতিবুল আম্বিয়া, ছহিবুল ওহী ওয়াল কুরআন, হাবীবুল্লাহ্, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার সঙ্গে দায়িমীভাবে অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক রাখা আল্লাহ্ পাক-উনার আদেশ। অর্থাৎ দ্বীনী মুআমেলাত যাহিরের (শরীয়ত) সঙ্গে এবং ক্বলব-উনার মুআমেলাত অন্তরের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। তাজেদারে মদীনা, ছহিবু জাওয়ামিউল কালিম, রহমতে আলম, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার সঙ্গে উনারই আশিক আওলাদ, ওলীয়ে মাদারজাদ, আফযালুল ইবাদ, ফখরুল আউলিয়া, হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান রহমতুল্লাহি আলাইহি-উনার ক্বলব ও অন্তরের সম্পর্ক স্থাপিত হয়েছে উনার (হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান রহমতুল্লাহি আলাইহি) মুবারক জন্মলগ্ন থেকেই। সে সম্পর্ক নিগূঢ় ও অবিচ্ছেদ্য।

          হজ্ব এবং যিয়ারতে শরীয়তের আহকাম ইখলাছের সঙ্গে পরিপূর্ণরূপে প্রতিপালিত হয়েছে। আওলাদুর রসূল, হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান আলাইহিস সালাম প্রতিনিয়ত দিদার লাভের যোগ্যতা হাছিল করেছেন। নিত্যদিন সাক্ষাৎ লাভের জন্য আশান্বিতও হয়েছেন। দেশে ফিরে এলে লব্ধ নিয়ামত ও কামিয়াবী হ্রাস পাবার ভয় নেই, নিরন্তর দিদার হাছিল না হবার শঙ্কা নেই এবং অগ্রযাত্রা ব্যাহত হবার মতো কোন প্রতিবন্ধকতাও নেই। তবু মন চায় পবিত্র রওযা মুবারকে অবস্থান করে নৈকট্য সুধাপানে অবিরাম নিমগ্ন থাকতে। ছহিবুল ইহছান, হাবীবে আযম, রউফুর রহীম, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার সঙ্গে পরিপূর্ণ মনঃসংযোগের এমন পর্যায়ে পূর্ণতা প্রাপ্তির আনন্দ-বেদনা এবং বিদায়-বিচ্ছেদের দুঃসহ যাতনায় উনার মাহবুব আওলাদ এখন ব্যথ্যাভারে মুহ্যমান।

          ওলী আল্লাহ্গণের হিদায়েতের প্রক্রিয়া, বিন্যাস ও বিস্তৃতি এবং তাঁদের কর্মপরিধি ও অবস্থান আল্লাহ্ পাক কর্তৃক নির্ধারিত। নির্ধারিত এ নিগূঢ় বিষয়গুলো ইল্হাম, ইলকা ও ইলমে লাদুন্নীর মাধ্যমে আল্লাহ্ পাক উনার মাহবুব ওলীগণকে জানিয়ে দিয়ে থাকেন। রহমাতুল উম্মাহ, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার সঙ্গে দায়িমী নিছবত (সার্বক্ষণিক সম্পর্ক-সম্পৃক্ততা) বিদ্যমান থাকায় ওলী আল্লাহ্গণের যাবতীয় কার্যাবলী উনার সদয় আদেশ, নির্দেশ ও ইঙ্গিতে পরিচালিত হয়। মাশুকে মাওলা, আকরামুল আউয়ালীন ওয়াল আখিরীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দুনিয়ায় ইসলাম ধর্ম আবাদ এবং সমগ্র বিশ্বজগৎ প্রতিপালন ও পরিচালনায় আল্লাহ্ পাক-উনার সকল কাজের ইন্তিজামকারী। আল্লাহ্ পাক যাবতীয় বিষয়ের কার্যকারণ উনার প্রিয়তম হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার ইচ্ছাধীন করেছেন। ছহিবুল ওহী ওয়াল কুরআন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সল্লাম-উনার নিকট থেকেই আল্লাহ্ পাক-উনার সকল আদেশ ও নির্দেশ জারী হয়।

          ছহিবু সুলতানুন্ নাছীর, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে মহান আল্লাহ্ পাক আধিপত্য, ক্ষমতা ও ইখতিয়ার দান করেছেন এবং উনাকে আদ্যন্তকালের সুমহান মর্যাদা ও সর্বোত্তম মহিমায় অভিষিক্ত করেছেন। তাই উনার অবলুপ্ত সুন্নত (হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার সকল আদেশ, নির্দেশ ও আদর্শ) যিন্দাকরণ এবং সুন্নত পালনে মানুষকে অভ্যস্ত করে তোলার মাধ্যমে দুনিয়ায় ইসলাম ধর্ম আবাদের ইন্তিজামকারী ওয়ারাসাতুল আম্বিয়া(হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার ক্বায়িম মক্বাম খালিছ ওলী আল্লাহ)গণকে হাবীবে আযম, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সল্লাম অনুক্ষণ আদেশ-নির্দেশ দানের মাধ্যমে পরিচালিত করে থাকেন। আশিকে রসূল ওলী আল্লাহ্গণকে তিনি এই আদেশ, নির্দেশ ও ইঙ্গিত দান করেন স্বপ্ন দিদারে, কখনো রওযা মুবারক যিয়ারতকালে, আবার কখনো ওলী আল্লাহ্গণের জাগ্রত অবস্থায় প্রত্যক্ষ সাক্ষাৎদানের মাধ্যমে। (অসমাপ্ত)

আবা-১২২

0 Comments: