সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, আফদ্বলুন নাস ওয়ান নিসা বা’দা রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সংক্ষিপ্ত সম্মানিত জীবনী মুবারক
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় ইস্ম বা নাম মুবারক : সাইয়্যিদাতুনা হযরত খাদীজাহ আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত কুনিয়াত মুবারক: উম্মুল হিন্দ আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত লক্বব মুবারক
আইয়্যামে জাহিলিয়াতের যুগে: তখন তিনি সকলের মাঝে আত ত্বাহিরাহ, আত ত্বইয়্যিবাহ অর্থাৎ পূত-পবিত্রতা, পবিত্রতাদানকারিণী সম্মানিত লক্বব মুবারক-এ সারা আরবে, সারা পৃথিবীতে সুপরিচিত ছিলেন। সুবহানাল্লাহ!
পরবর্তীতে উনার সম্মানিত লক্বব মুবারক: আল কুবরা, উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা, সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, আফদ্বলুন নাস ওয়ান নিসা বা’দা রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, উম্মু আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আস সাইয়্যিদাহ, হাবীবাতুল্লাহ, মালিকুল জান্নাত, মালিকুদ দুনিয়া ওয়া আখিরাহ্, মালিকুল কায়িনাত ইত্যাদি অসংখ্য-অগণিত। সুবহানাল্লাহ!
যেই সম্মানিত লক্বব মুবারক-এ সম্মানিত পরিচিতি মুবারক গ্রহণ করেছেন: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম।
মহাসম্মানিত পিতা-মাতা আলাইহিমাস সালাম
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত পিতা হচ্ছেন সাইয়্যিদুনা হযরত খুওয়াইলিদ ইবনে আসাদ আলাইহিস সালাম। তিনি উনার মহাসম্মানিত পিতা উনার দিক থেকে চতুর্থ পুরুষে যেয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে মিলিত হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! যেমন-
سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ خَدِيـْجَةُ بِنْتُ خُوَيْلِدِ بْنِ اَسَدِ بْنِ عَبْدِ الْعُزَّى بْنِ قُصَىٍّ عَلَيْهِمُ السَّلَامُ.
অর্থ: “সাইয়্যিদাতুনা হযরত খাদীজাহ বিনতে খুওয়াইলিদ ইবনে আসাদ ইবনে আব্দিল ‘উয্যা ইবনে কুছাই আলাইহিমুস সালাম।” সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুনা হযরত কুছাই আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত পূর্বপুরুষ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক যখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে ৩০ বছর, তখন উনার মহাসম্মানিত পিতা হযরত খুওয়াইলিদ আলাইহিস সালাম তিনি হরবুল ফিজারের যুদ্ধের সময় মহাসম্মানিত বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিতা মাতা হচ্ছেন সাইয়্যিদাতুনা হযরত ফাত্বিমাহ বিনতে যায়িদাহ আলাইহাস সালাম। তিনি উনার মহাসম্মানিতা মাতা উনার দিক থেকে ১০ম পুরুষে যেয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে মিলিত হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! যেমন,
سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ خَدِيـْجَةُ بِنْتُ فَاطِمَةَ بِنْتِ زَائِدَةَ بْنِ جُنْدُبٍ وَّهُوَ الْاَصَمُّ بْنِ هَرِمِ بْنِ رَوَاحَةَ بْنِ حَجَرِ بْنِ عَبْدِ بْنِ مَعِيْصِ بْنِ عَامِرِ بْنِ لُؤَىٍّ عَلَيْهِمُ السَّلَامُ.
অর্থ: “সাইয়্যিদাতুনা হযরত খাদীজাতুল কুবরা আলাইহাস সালাম বিনতে ফাতিমাহ বিনতে যায়িদাহ ইবনে জুনদুব (তিনি হচ্ছেন আছম) ইবনে হারম ইবনে রওয়াহাহ ইবনে হাজার ইবনে আবদ ইবনে মা‘ঈছ ইবনে ‘আমির ইবনে লুআই আলাইহিমুস সালাম।” সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুনা হযরত লুআই আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত পূর্বপুরুষ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ: আমুল ফীলের ১৫ বছর পূর্বে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১৪ই সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ) ইয়াওমুল আহাদ বা’দ ফজর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত ভাই-বোন
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনারা ভাই-বোন ছিলেন মোট ৫ জন। ২ জন ভাই এবং ৩ জন বোন। উনার দুই ভাই হিযাম ও আওয়াম এবং এক বোন রক্বীক্বাহ উনারা মহাসম্মানিত দ্বীন ইসলাম প্রকাশের পূর্বে ইন্তেকাল করেন। তিনি হচ্ছেন ভাই-বোন উনাদের মধ্যে দ্বিতীয়। উনার আরেক বোন সাইয়্যিদাতুনা হযরত হালাহ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা তিনি মহাসম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেন। উনার মহাসম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূর আলাইহিস সালাম (সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল আছ ইবনে রবী’ আলাইহিস সালাম) উনার সাথেই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার মহাসম্মানিত আওলাদ খইরু ওয়া আফযালু বানাতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আন নূরুল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত খাইরু ওয়া আফযালু বানাতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ‘আযীমুশ শান মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে ‘আযীম শরীফ সুসম্পন্ন মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত নিসবতে ‘আযীম শরীফ
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ আসার পূর্বে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার ২টি সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ হয়েছিলো। প্রথম নিসবতে আযীম শরীফ হয়েছিলো আবূ হালাহ হিন্দ উনার সাথে। তিনি হচ্ছেন-
اَبُوْ هَالَةَ هِنْدُ بْنُ زُرَارَةَ بْنِ النَّــبَّاشِ التَّمِيْمِىُّ.
অর্থ: “আবূ হালাহ হিন্দ ইবনে যুরারহ ইবনে নাব্বাশ তামীমী।”
তিনি বেশি দিন দুনিয়ার যমীনে অবস্থান মুবারক করেননি। তখন উনার দুই জন আবনা’ (ছেলে) আলাইহিমাস সালাম এবং একজন বানাত (মেয়ে) আলাইহাস সালাম উনারা দুনিয়ার যমীনে তাশরীফ মুবারক আনেন। যিনি মেয়ে হিসেবে ছিলেন উনার সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক ছিলেন যাইনাব। তিনি শিশুকালেই বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। আর ছেলে দুইজন উনারা হচ্ছেন হযরত হিন্দ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি এবং হযরত হালাহ রদ্বিয়াল্লাহ তা‘য়ালা আনহু তিনি। সুবহানাল্লাহ! উনারা দুইজনই সম্মানিত ঈমান মুবারক এনেছেন এবং ছাহাবীয়াতের সম্মানিত মাক্বাম মুবারক অর্জন করেছেন। সুবহানাল্লাহ! বিশেষ করে যিনি হিন্দ রদ্বিয়াল্লাহ তা‘য়ালা আনহু তিনি শুরুতেই সম্মানিত ঈমান মুবারক এনেছেন। তিনি বদরী ছাহাবী ছিলেন। সুবহনাল্লাহ! তিনি উহুদের জিহাদেও ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি পরবর্তীতে সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার সাথে জিন্দেগী মুবারক যাপন করেছেন। সুবহানাল্লাহ! শেষে তিনি জঙ্গে জামাল জিহাদে সম্মানিত শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত হুলিয়া মুবারক, সম্মানিত সীরত মুবারক, সম্মানিত ছূরত মুবারক অত্যন্ত সুন্দরভাবে বর্ণনা মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ! যেটা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ এবং সম্মানিত সীরাত গ্রন্থসমূহ উনাদের মধ্যে দেখা যায়। বিশেষ করে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এবং সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা প্রায় সময় হযরত হিন্দ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার কাছে যেয়ে এই বর্ণনা মুবারকসমূহ শুনতেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি অত্যন্ত বিশুদ্ধভাষী ছিলেন। সুবহানাল্লাহ!
আর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত দ্বিতীয় আওলাদ হযরত হালাহ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনিও ছাহাবিয়াতের সম্মানিত মাক্বাম মুবারক অর্জন করেছেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি অনেক দিন দুনিয়ার যমীনে অবস্থান মুবারক করেছেন। তিনি সবসময়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সম্মানিত নিসবত মুবারক রাখতেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ-এ অবস্থান করা সত্ত্বেও প্রায় সময় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক আনতেন। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার দ্বিতীয় নিসবতে ‘আযীম শরীফ হয়েছিলো আতীক্ব ইবনে আবিদ উনার সাথে। তিনি হচ্ছেন-
عَتِيْقُ بْنُ عَابِدِ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ الْـمَخْزُوْمِىُّ.
অর্থ: “আতীক্ব ইবনে ‘আবিদ ইবনে আব্দিল্লাহ ইবনে ‘উমর মাখযূমী।”
উনার একজন আবনা ছেলে আলাইহিস সালাম এবং একজন বানাত (মেয়ে) আলাইহাস সালাম দুনিয়ার যমীনে তাশরীফ মুবারক আনেন। ছেলে যিনি ছিলেন, উনার সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক ছিলেন আব্দুল্লাহ। তিনি অল্প বয়স মুবারকেই সম্মানিত বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন। সুবহানাল্লাহ! আর যিনি মেয়ে ছিলেন উনার নাম মুবারক ছিলেন হিন্দাহ রদ্বিয়াল্লাহ তা‘য়ালা আনহা। তিনি ছাহাবীয়াতের মাক্বাম মুবারক অর্জন করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত আওলাদ আলাইহিমুস সালাম উনারা উনার সাথেই ছিলেন। পরবর্তীতে উনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে অবস্থান মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত ব্যবসা মুবারক
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি অনেক বড় সম্পদশালিনী ছিলেন। কুরাইশ গোত্র অনেক বড় গোত্র। সমস্ত কুরাইশ গোত্রের একত্রে যত সম্পদ ছিলো, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার এককভাবে তার চেয়ে বেশি সম্পদ মুবারক ছিলো। সুবহানাল্লাহ! উনার অনেক বড় ব্যবসা ছিলো। সুবহানাল্লাহ! ব্যবসার বিষয়টি নিয়ে তিনি চিন্তিত ছিলেন। উনার বিশিষ্ট গোলাম, খাদিম ছিলেন হযরত মাইসারাহ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি। সুবহানাল্লাহ! তিনি ব্যবসা দেখাশোনা করতেন। লোক দিয়ে ব্যবসা করানো হতো। মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি ব্যবসার জন্য একজন বিশ্বস্ত ব্যবসা পরিচালক খুঁজছিলেন, যিনি উনার ব্যবসার আনজাম দিবেন। সুবহানাল্লাহ! যেহেতু আত্মীয়তার সম্পর্কে এবং অন্যান্য দিক থেকে খাজা আবূ ত্বালিব উনার সাথে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সম্পর্ক ছিলো।
উনার সম্মানিত পিতা ইন্তেকালের পর উনার চাচা আমর বিন আসাদ তিনি উনাকে মোটামোটি দেখাশোনা করতেন। আর উনার সাথে খাজা আবূ ত্বালিব উনার সম্পর্ক ছিলো। ফলে তিনি বিষয়টি নিয়ে উনার সাথে আলোচনা করেছিলেন। তখন খাজা আবূ ত্বালিব তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে ব্যবসা করার জন্য বলেছিলেন। উনারা রাজী হলেন। যেহেতু তিনি ‘আল আমীন’ হিসেবে মশহূর ছিলেন। মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি আগ্রহ প্রকাশ করলেন। তখনো নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে ‘আযীম শরীফ অনুষ্ঠিত হননি। কিভাবে ব্যবসা হবে। মুদারাবা অনুযায়ী। অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার মাল-সম্পদ মুবারক দিয়ে ব্যবসা করবেন। অতঃপর ব্যবসা শেষে যেটা লাভ হবে তার একটা অংশ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি গ্রহণ করবেন এবং আরেকটা অংশ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি গ্রহণ করবেন। সুবহানাল্লাহ!
ব্যবসার উদ্দেশ্যে সিরিয়ায় সম্মানিত তাশরীফ মুবারক
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ব্যবসার উদ্দেশ্যে সিরিয়াতে সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নিলেন। উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার জন্য উনার সাথে হযরত মাইসারাহ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনাকে দেয়া হলো। যাওয়ার পথে ব্যতিক্রম অনেক কিছু সংঘটিত হলো এবং আসার সময়ও অনুরূপ অনেক কিছু সংঘটিত হলো। তবে সেখানে ব্যবসা করতে যেয়ে, একটা গির্জার পাশে একটা গাছের নিচে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত তাশরীফ মুবারক রেখেছিলেন। সেখানে একজন পাদ্রী ছিলো। তার নাম ছিলো নশতুরা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু। তিনি সেখানে অনেক বছর যাবৎ অপেক্ষমান ছিলেন। সেখানে একটি গাছ ছিলো, এমন একটি গাছ, যেখানে একমাত্র নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা ব্যতীত আর কেউ বসতে পারেন না। কোনো মতে বসার সুযোগ হয় না। সেই নশতুরা পাদ্রী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার জানা ছিলো, যিনি আখেরী নবী, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এক সময় এখানে সম্মানিত তাশরীফ মুবারক আনবেন এবং এই গাছের নিচে বসবেন। সুবহানাল্লাহ! সে এই জন্য অনেক বছর যাবৎ অপেক্ষমান ছিলো। সে গির্জায় বসে বসে লক্ষ্য করতো, গাছের কাছে কেউ যায় কিনা।
একদিন সেই পাদ্রী তিনি দেখতে পেলেন যে, সেই গাছের নিচে একজন মহাসম্মানিত বিশেষ ব্যক্তিত্ব মুবারক তিনি সম্মানিত তাশরীফ মুবারক রেখেছেন। সুবহানাল্লাহ! সেটা দেখে সেই পাদ্রী বের হয়ে আসলেন এবং উনার যে খাদিম হযরত মাইসারাহ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনাকে জিজ্ঞাসা করলেন, উনি কে? হযরত মাইসারাহ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি স্বাভাবিকভাবে পরিচয় দিলেন, তিনি কুরাইশ বংশের, হাশিমী গোত্রের। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় ইস্ম বা নাম মুবারক বলে পরিচয় দেয়া হলো। সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার আওলাদ। পাদ্রী এতে সন্তুষ্ট হলেন না। বললেন যে, আরো কিছু রয়েছে, এর মধ্যে। অনেক কিছু জিজ্ঞাসা করলেন এবং পাদ্রী বললেন, হে হযরত মাইসারাহ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু! আপনি ব্যাপারটা বুঝতে পারেননি, আপনারা উনাকে চিনতে পারেননি। আমি কিন্তু উনাকে চিনতে পেরেছি। উনি হচ্ছেন হাক্বীক্বীভাবেই যিনি আখিরী নবী, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! পরবর্তীতে সেই পাদ্রী সরাসরি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ যেয়ে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মালাহাত মুবারক-এ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কপাল মুবারক-এ) বুছা দিয়ে বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ! ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি আপনাকে চিনতে পেরেছি। আমাদের আসমানী কিতাবে আপনার বর্ণনা মুবারক রয়েছে। আপনি হচ্ছেন আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। সুবহানাল্লাহ! তবে আর কিছু দিন পর আপনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নুবুওওয়াত এবং রিসালাত মুবারক প্রকাশ পাবেন। আমি কিন্তু আপনার প্রতি সম্মানিত ঈমান আনলাম। সুবহানাল্লাহ! এরপর সেই পাদ্রী নশতুরা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি হযরত মাইসারাহ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার কাছে অনেক কিছু বলে, তিনি বললেন, আপনি লক্ষণ দেখবেন। আপনি বুঝতে পারবেন। সেটাই হযরত মাইসারাহ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বলেছেন, যেকোনো জায়গায় ব্যবসা করতে গেলে, মাল মনে হচ্ছে সস্তায় পাওয়া যাচ্ছে এবং বেশি দামে বিক্রি করা সহজ হচ্ছে। অনেক লাভ হচ্ছে এবং তিনি লক্ষ্য করলেন, খাদ্য খেতে গেলে অনেক বরকত। অল্প খাদ্য দিয়েই মনে হচ্ছে পেট ভরে যাচ্ছে। হযরত মাইসারাহ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি আরো লক্ষ্য করলেন, যত প্রখর রৌদ্রই হোক না কেনো, এই রৌদ্রের আলো নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মুজাসসাম মুবারক-এ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র জিসম মুবারক-এ) পড়ে না। সুবহানাল্লাহ!
তিনি লক্ষ্য করলেন, আকাশে মনে হচ্ছে দুই জন হযরত ফেরেশতা আলাইহিমাস সালাম উনারা ছায়া দিয়ে যাচ্ছেন। সুবহানাল্লাহ! এরূপ অসংখ্য ঘটনা সংঘটিত হলো। ব্যবসা করে অনেক লাভ হলো। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ প্রত্যাবর্তন এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে ‘আযীম শরীফ উনার পূর্বাভাস মুবারক
একদিন দুপুর বেলার কথা। মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার বাড়িটা ছিলো দোতলা। অনেক বড় বাড়ি ছিলো। তিনি দোতলায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। এমতাবস্থায় তিনি দেখতে পেলেন যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ প্রবেশ করছেন আর বিশেষ দুই জন সম্মানিত হযরত ফেরেশতা আলাইহিমাস সালাম উনারা উনাকে ছায়া মুবারক দিচ্ছেন। সুবহানাল্লাহ! মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি উপলব্ধি করতে পারলেন, বুঝতে পারলেন যে, এখানে একটা বিশেষ কোনো বিষয় রয়েছে। সুবহানাল্লাহ!
ঠিক এর মধ্যে উনার আরেকটি ঘটনা সংঘটিত হয়েছিলো। মহিলাদের একটি মজলিস ছিলো। উনাকে দাওয়াত দেয়া হয়েছিলো। সেখানে তিনি সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নিয়েছিলেন। সেখানে হঠাৎ একটা লোক মজলিসের বাইরে দূর থেকে ঘোষণা দিতে থাকলো, হে মহিলারা! আপনারা জেনে রাখুন, অতিশীঘ্রই এখানে একজন মহাসম্মানিত বিশেষ ব্যক্তিত্ব মুবারক সাইয়্যিদুনা ‘আহমদ’ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বহি:প্রকাশ মুবারক ঘটবেন। আপনাদের কারো পক্ষে যদি সম্ভব হয়, তাহলে আপনারা উনার মহাসম্মানিতা যাওজাতুম মুকাররমাহ (আহলিয়াহ) হওয়ার জন্য কোশেশ করুন, আপনারা কামিয়াবী হাছিল করবেন। সুবহানাল্লাহ! এটা যখন সেই ব্যক্তি বললেন, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি শুনলেন, ফিকির করলেন। কিন্তু অন্যান্য মহিলারা উত্তেজিত হয়ে লোকটাকে পাগল মনে করে কিছু ইট পাটকেল নিক্ষেপ করলো। না‘ঊযুবিল্লাহ! তিনি বিষয়টি লক্ষ্য করলেন, ফিকির করলেন। এই সমস্ত অনেক ঘটনা ঘটে গেলো। আর এই দিকে ব্যবসা শেষে এসে হযরত মাইসারাহ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনাকে যা সংঘটিত হয়েছে সবকিছু খুলে বললেন। তিনি এই বিষয়টিও সরাসরি বললেন যে, অমুক একজন পাদ্রী হযরত নশতুরা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বলেছেন, তিনি হচ্ছেন আখিরী নবী, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। সুবহানাল্লাহ!
তবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নুবুওওয়াত এবং রিসালাত মুবারক উনার বিষয়টি প্রকাশ হতে এখনো কিছু সময় বাকি আছে। এটা শুনে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি অত্যন্ত চিন্তিত হলেন। এই হিসেবে যেহেতু উনার নিকট বিভিন্ন দিক থেকে সম্মানিত নিসবতে ‘আযীম শরীফ উনার প্রস্তাব আসতেছিলো।
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ উনার প্রস্তাব মুবারক
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার ‘হযরত নাফিসাহ বিনতু মুনীয়াহ বা মানিয়াহ’ নামে একজন খাদিমা ছিলেন। তিনি উনার মাধ্যমে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সরাসরি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে ‘আযীম শরীফ উনার বিষয়ে প্রস্তাব মুবারক পেশ করলেন। আবার এই দিকে উনার চাচা আমর বিন আসাদ তিনিও এই বিষয়টা মধ্যস্থতা করলেন। তিনি খাজা আবূ ত্বালিব উনার কাছে সংবাদ মুবারক পৌঁছালেন। অতঃপর সংবাদ মুবারক যখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ পৌঁছানো হয়, তখন তিনি চুপ থাকেন। কোনো সম্মতি মুবারক প্রকাশ করেননি। কিন্তু পরবর্তীতে খাজা আবূ ত্বালিব তিনি বললেন, অসুবিধা নেই। তিনি তো সম্মানিতা এবং তিনি সারা আরবে ত্বাহিরাহ, ত্বইয়্যিবাহ হিসেবে, পূত-পবিত্রা ব্যক্তিত্বা হিসেবে মশহূর হয়ে গেছেন। সবদিক থেকেই তিনি যোগ্যতাসম্পন্না। কাজেই উনাকে গ্রহণ করতে তো কোনো অসুবিধা থাকার কথা না। খাজা আবূ ত্বালিব তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার পক্ষ থেকে সুপারিশ করলেন। তখন শেষ পর্যন্ত নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি (মহান আল্লাহ পাক উনার মুবারক ইচ্ছানুযায়ী) সম্মতি মুবারক প্রকাশ করলেন। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ
আনুষ্ঠানিকভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নুবুওওয়াত এবং রিসালাত মুবারক প্রকাশের ১৫ বছর পূর্বে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২২শে জুমাদাল ঊলা শরীফ সাইয়্যিদু সাইয়্যিদুল আইয়্যাম শরীফ (ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ অনুষ্ঠিত হন। সুবহানাল্লাহ! তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বয়স মুবারক ছিলেন ২৫ বছর এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বয়স মুবারক ছিলেন ৪০ বছর। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন আরবের মধ্যে সবচেয়ে বড় সম্পদশালিনী। উনার মত সম্পদশালিনী আরবে আর কেউ ছিলো না। সমস্ত কুরাইশদের যত সম্পদ ছিলো উনার এককভাবে তার চেয়ে বেশি সম্পদ মুবারক ছিলো। সুবহানাল্লাহ! সেই যামানায় উনার লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি টাকার ব্যবসা-বাণিজ্য মুবারক ছিলো। কিতাবে বর্ণিত রয়েছে, যেখানে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ অনুষ্ঠিত হয়েছেন, সেখান থেকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হুজরা শরীফ-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নেয়ার জন্য প্রতি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুদ দারাজাত মুবারক-এ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ক্বদম মুবারক-এ) একটি করে সম্মানিত স্বর্ণের প্লেট মুবারক দেয়া হয়েছিলো। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্বর্ণের প্লেট মুবারক-এ এক এক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুদ দারাজাত মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ক্বদম মুবারক) রেখে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হুজরা শরীফ-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নিয়েছিলেন। সুবহানাল্লাহ!
এখন যদি ১০০টা প্লেট ধরা হয়, আর প্রতিটি প্লেট যদি ৫ থেকে ৭ কেজি করে ধরা হয়। তাহলে দেখা যাচ্ছে ৫০০ থেকে ৭০০ কেজি স্বর্ণ, যা বর্তমান বাজার দর অনুযায়ী কমপক্ষে ৩০০ কোটি থেকে ৩৫০ কোটি থেকেও বেশি টাকা। সুবহানাল্লাহ! এই কমপক্ষে ৩০০ কোটি থেকে ৩৫০ কোটির থেকেও বেশি টাকা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ উনার সময় শুধু নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুদ দারাজাত মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ক্বদম মুবারক) উনার নীচে তিনি বিছিয়ে দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! তাহলে উনার কতো সম্পদ মুবারক ছিলো এবং কতো বেমেছালভাবে তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়েছেন, সেটা সকলের চিন্তা-কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত মোহরানা মুবারক উনার পরিমাণ হচ্ছেন ২০টি উট অর্থাৎ ৫০০ দিরহাম। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার মাধ্যমে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ৭জন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আওলাদ আলাইহিমুস সালাম এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আওলাদ আলাইহিন্নাস সালাম উনারা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত ইসলাম ও সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ: মহান আল্লাহ পাক উনার সৃষ্টি জগতে পুরুষ-মহিলা সকলের পূর্বে সর্বপ্রথম মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি সম্মানিত ইসলাম ও সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক: একাধারে ২৪ বছর ৪ মাস ২৫ দিন। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ: আনুষ্ঠানিকভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নুবুওওয়াত এবং রিসালাত মুবারক প্রকাশের ১০ম বৎসর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১৭ই রমাদ্বান শরীফ ইয়াওমুস সাব্ত শরীফ। তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বয়স মুবারক ছিলেন প্রায় ৫০ বছর।
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাজুন নামক স্থানে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ অবস্থিত। সবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আল ঊলা আলাইহাস সালাম উনার বেমেছাল শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক বর্ণনা আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুস সালাম মুবারক-এ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র জবান মুবারক-এ)
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
عَنْ حَضْرَتْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُوْدٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَضَّرَ اللهُ امْرَءًا سَـمِعَ مِنَّا حَدِيْثًا فَبَلَّغَهٗ كَمَا سَـمِعَهٗ فَرُبَّ مُبَلَّغٍ اَوْعـٰى مِنْ سَامِعٍ.
অর্থ: “ফক্বীহুল উম্মত হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাস‘ঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি ওই ব্যক্তির সম্মানিত চেহারা মুবারক সম্মুজ্জ্বল করুন, (উনাকে সম্মানিত রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক, মা’রিফাত-মুহব্বত মুবারক দান করুন,) যিনি আমার থেকে যেরূপ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ শুনবেন ঠিক হুবহু সেরূপ বর্ণনা করবেন। কেননা (পরবর্তীতে) যেই সকল সুমহান ব্যক্তিত্ব মুবারক উনাদের কাছে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ পৌঁছানো হবে, উনারা যাঁদের থেকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ শুনবেন, উনাদের থেকে অধিক বেশি বুঝবেন, উপলব্ধি করবেন, অনেক বেশি সম্মানিত ইলম মুবারক উনার অধিকারী হবেন।” সুবহানাল্লাহ! (তিরমিযী শরীফ, ছহীহ ইবনে হিব্বান, মুসনাদে বাযযার, ত্ববারনী শরীফ)
এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার পরিপূর্ণ মিছদাক্ব হচ্ছেন আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মহাসম্মানিত রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! উনাকে মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত প্রকার সম্মানিত ইলম মুবারক হাদিয়া মুবারক করেই সৃষ্টি মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি হচ্ছেন সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত প্রকার সম্মানিত ইলম মুবারক উনার মালিক। সুবহানাল্লাহ! তাই উনার একখানা সম্মানিত লক্বব মুবারক হচ্ছেন ‘ছাহিবু ইলমিল আউওয়ালি ওয়াল ইলমিল আখিরি’ তথা সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত প্রকার সম্মানিত ইলম মুবারক উনার মালিক। সুবহানাল্লাহ! তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের আলোকে মহাসম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার প্রতিটি বিষয়ে যে বেমেছাল মহাসম্মানিত তাজদীদ মুবারক করে যাচ্ছেন, তা অতুলনীয়, অকল্পনীয়, অভাবনীয় এবং অতি বিস্ময়কর। সুবহানাল্লাহ! বিশেষ করে তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের আলোকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আব্বা আলাইহিস সালাম উনার এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আম্মা আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক এতো বেমেছালভাবে প্রকাশ করে যাচ্ছেন, যার দৃষ্টান্ত কায়িনাতের বুকে আর নেই। আরো বিশেষ করে তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র জীবনী মুবারক এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক অত্যন্ত বেমেছালভাবে আলোচনা মুবারক করেছেন, প্রকাশ করেছেন। পৃথিবীর ইতিহাসে কোনো ইমাম-মুজতাহিদ, আউলিয়ায়ে কিরাম, কোনো মুজাদ্দিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা এরূপ সর্বোত্তমভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র জীবনী মুবারক এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক আলোচনা মুবারক করেননি। সুবহানাল্লাহ! কেউ কোনো কিতাবে দেখাতেও পারবে না। এটা উনার এক অনন্য বেমেছাল খুছূছিয়াত মুবারক, এক বেমেছাল বিস্ময়কর মহাসম্মানিত তাজদীদ মুবারক। সুবহানাল্লাহ! যা উনার বেমেছাল শ্রেষ্ঠত্ব মুবারক উনার বহিঃপ্রকাশ। সুবহানাল্লাহ! এর মাধ্যম দিয়েই প্রতিভাত হয় যে, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পৃথিবীর ইতিহাসে যত মুজাদ্দিদ, ইমাম-মুজতাহিদ, আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা এসেছেন এবং ক্বিয়ামত পর্যন্ত যত মুজাদ্দিদ, ইমাম-মুজতাহিদ, আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা আসবেন উনাদের প্রত্যেকের সাইয়্যিদ। সুবহানাল্লাহ! তিনি শুধু যিনি খ¦ালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া যত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক রয়েছেন, সমস্ত কিছুর অধিকারী হচ্ছেন তিনি। সুবহানাল্লাহ!
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ছাহিবু ইলমিল আউওয়ালি ওয়াল ইলমিল আখিরি, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি আমাকে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক আলোচনা মুবারক করার জন্য বলেছেন। তিনি বলেছেন, আমি যেন, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক সম্পর্কে আলোচনা করি। সুবহানাল্লাহ! তখন আমি বললাম, (বিনয় প্রকাশার্থে মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন,) আমার তো আপনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা নেই। তখন তিনি আমাকে বললেন, যতটুকু জানা রয়েছে, ততটুকুই যেন আমি আলোচনা মুবারক করি। সুবহানাল্লাহ! তারপর থেকে আমি একধারে ৫টি জুমুয়াহ শরীফ-এ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান সম্পর্কে আলোচনা মুবারক করি।” সুবহানাল্লাহ!
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ছাহিবু ইলমিল আউওয়ালি ওয়াল ইলমিল আখিরি, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যে বেমেছালভাবে সম্মানিত আলোচনা মুবারক করেছেন, তা পৃথিবীর ইতিহাসে নজীরবিহীন। পৃথিবীর ইতিহাসে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত শান মুবারক-এ এরূপ আলোচনা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পর আর কেউ করেননি। সুবহানাল্লাহ! মূলত, এটা সৃষ্টি জগতে এক অন্য বেমেছাল ও বিস্ময়কর মহাসম্মানিত তাজদীদ মুবারক। সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানার্থে আমাদের সবাইকে হাক্বীক্বী রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক, ছহীহ সমঝ, ইলম-আমল, ইখলাছ মুবারক দান করুন। আমীন!
সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্যে ঊলা বা প্রথমা, কুবরা বা মূল, বড়, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মূল এবং সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনারও মূল
মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্যে ঊলা বা প্রথমা, কুবরা বা মূল, বড়, মহান, শ্রেষ্ঠা।” সুবহানাল্লাহ!
মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন, “সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রত্যেকের মূল। সুবহানাল্লাহ! আমার নিকট মনে হয়, যেন তিনি সম্পূর্ণ সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনাকে পরিপূর্ণরূপে আঁকড়িয়ে ধরে রেখেছেন। উনার সম্মানার্থেই সম্মানিত দ্বীন ইসলাম টিকে রয়েছেন।” সুবহানাল্লাহ!
মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি আমাকে উনার সম্মানিত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক আলোচনা মুবারক করার জন্য বলেছেন। তিনি বলেছেন, আমি যেন, উনার সম্মানিত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক সম্পর্কে আলোচনা করি। সুবহানাল্লাহ! তখন আমি বললাম, (বিনয় প্রকাশার্থে মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন,) আমার তো আপনার সম্মানিত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা নেই। তখন তিনি আমাকে বললেন, যতটুকু জানা রয়েছে, ততটুকুই যেন আমি আলোচনা মুবারক করি। সুবহানাল্লাহ! তারপর থেকে আমি একধারে ৫টি জুমু‘য়াহ শরীফ-এ উনার সম্মানিত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান সম্পর্কে আলোচনা মুবারক করি।” সুবহানাল্লাহ!
মূলত, মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের পর আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনিই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সর্বোত্তম ছানা-ছিফত মুবারক বর্ণনা করেছেন, উনার হাক্বীক্বী শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক প্রকাশ করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্যে ঊলা বা প্রথমা
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্যে ‘ঊলা বা প্রথমা’। সুবহানাল্লাহ! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্যে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনাকেই সর্বপ্রথম মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন হিসেবে গ্রহণ করেছেন। সুবহানাল্লাহ! আর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি বেমেছালভাবে একাধারে ২৪ বছর ৪ মাস ২৫ দিন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বেমেছাল সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি যতদিন দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেছেন, ততদিন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অন্য কোনো মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে গ্রহণ করেননি। সুবহানাল্লাহ! এই সম্পর্কে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ اُمِّ الْمُؤْمِنِيْنَ الثَّالِثَةِ سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ اَلصِّدِّيْقَةِ عَلَيْهَا السَّلَامُ )سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ عَائِشَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ( قَالَتْ كَانَ النَّبِىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِذَا ذَكَرَ اُمَّ الْـمُؤْمِنِيْنَ الْاُوْلـٰى سَيِّدَتَنَا حَضْرَتْ اَلْكُبْرٰى عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتَنَا حَضْرَتْ خَدِيـْجَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ) اَثْنٰـى عَلَيْهَا فَاَحْسَنَ الثَّنَاءَ قَالَتْ فَغِرْتُ يَوْمًا فَقُلْتُ مَا اَكْثَرَ مَا تَذْكُرُهَا حَـمْرَاءَ الشِّدْقِ قَدْ اَبْدَلَكَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ بِـهَا خَيْرًا مِّنْهَا قَالَ مَا اَبْدَلَنِـىَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ خَيْرًا مِّنْهَا قَدْ اٰمَنَتْ بِـىْ اِذْ كَفَرَ بِـىَ النَّاسُ وَصَدَّقَتْنِـىْ اِذْ كَذَّبَنِـىَ النَّاسُ وَوَاسَتْنِـىْ بـِمَالـِهَا اِذْ حَرَمَنِـىَ النَّاسُ وَرَزَقَنِـىَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ وَلَدَهَا اِذْ حَرَمَنِـىْ اَوْلَادَ النِّسَاءِ.
অর্থ: “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত আলোচনা মুবারক করতেন, উনার সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করতেন, তখন উনার সর্বোত্তম ছানা-ছিফত মুবারক করতেন। সুবহানাল্লাহ! (এতো অধিক এবং সর্বোত্তম ছানা-ছিফত মুবারক করতেন, যেটা অন্য কোনো মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের সম্মানিত শান মুবারক-এ বা অন্য কারো সম্মানিত শান মুবারক-এ করতেন না। সুবহানাল্লাহ!) তিনি বলেন, একদিন আমি বিস্ময় প্রকাশ করলাম, (উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনার বিষয়টি স্পষ্ট করার জন্য) আমি বললাম, উনার এতো সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক, এতো সম্মানিত প্রশংসা মুবারক। তিনি তো অতীত হয়ে গেছেন এবং তিনি তো অনেক বয়স্কা ছিলেন, উনার সম্মানিত বয়স মুবারক তো অনেক হয়েছিলেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি তো এখন আপনাকে উনার চেয়ে উত্তম অনেক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে হাদিয়া মুবারক করেছেন। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, উনার থেকে উত্তম কোনো মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাকে হাদিয়া মুবারক করেননি। সুবহানাল্লাহ! মানুষ যখন আমাকে অস্বীকার করেছে, সম্মানিত ঈমান আনেনি, তখন তিনি সর্বপ্রথম আমার প্রতি সম্মানিত ঈমান মুবারক এনেছেন। সুবহানাল্লাহ! মানুষ যখন আমার বিষয় মুবারকগুলো সত্যারোপ করতে পারেনি, তিনি কিন্তু আমাকে সত্যারোপ করেছেন, আমাকে তাছদীক্ব করেছেন, আমার বিষয় মুবারকগুলো বিশ্বাস করেছেন, সত্য বলে গ্রহণ করেছেন। সুবহানাল্লাহ! মানুষ যখন আমার কোনো সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়নি, তখন তিনি উনার সমস্ত মাল-সম্পদ মুবারক দিয়ে আমার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়েছেন, আমাকে সান্তনা মুবারক দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! আর মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি ব্যতীত অন্য কোনো মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মাধ্যম দিয়ে আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় নসব মুবারক জারি করেননি, আমাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আওলাদ আলাইহিমুস সালাম ও আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে হাদিয়া মুবারক করেননি। অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক তিনি একমাত্র মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার মাধ্যম দিয়েই আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় নসব মুবারক জারি করেছেন, আমাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আওলাদ আলাইহিমুস সালাম ও আওলাদ আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে সম্মানিত হাদিয়া মুবারক করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (মুসনাদে আহমদ শরীফ)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ اُمِّ الْمُؤْمِنِيْنَ الثَّالِثَةِ سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ اَلصِّدِّيْقَةِ عَلَيْهَا السَّلَامُ )سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ عَائِشَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ( قَالَتْ مَا غِرْتُ عَلـٰى اَحَدٍ مِّنْ نِّسَاءِ النَّبِـىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا غِرْتُ عَلـٰى اُمِّ الْـمُؤْمِنِيْنَ الْاُوْلـٰى سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ اَلْكُبْرٰى عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ خَدِيـْجَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ) وَمَا رَاَيْتُهَا وَلٰكِنْ كَانَ يُكْثِرُ ذِكْرَهَا وَرُبـَّمَا ذَبَحَ الشَّاةَ ثُـمَّ يُقَطِّعُهَا اَعْضَاءً ثُـمَّ يَبْعَثُهَا فِـىْ صَدَائِقِ اُمِّ الْـمُؤْمِنِيْنَ الْاُوْلـٰى سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ اَلْكُبْرٰى عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ خَدِيـْجَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ) فَرُبـَّمَا قُلْتُ لَهٗ كَاَنَّهٗ لَـمْ يَكُنْ فِى الدُّنْيَا امْرَاَةٌ اِلَّا اُمَّ الْـمُؤْمِنِيْنَ الْاُوْلـٰى سَيِّدَتَنَا حَضْرَتْ اَلْكُبْرٰى عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتَنَا حَضْرَتْ خَدِيـْجَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ) فَيَقُوْلُ اِنَّهَا كَانَتْ وَكَانَتْ وَكَانَ لِـىْ مِنْهَا وَلَدٌ
অর্থ: “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার ব্যাপারে আমার যতটা বিস্ময় হয়, আমি যতটা বিস্ময় প্রকাশ করতাম, ততটা বিস্ময় প্রকাশ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অপর কোনো মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের প্রতি আমি করতাম না। অথচ উনাকে আমি দেখিনি। কিন্তু (বিস্ময় প্রকাশ করার কারণ ছিলো এই যে, স মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নেয়ার পরেও) সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সবসময় দায়িমীভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার কথা তথা উনার খুছূছিয়াত-বৈশিষ্ট্য মুবারক, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক সম্পর্কে আলোচনা মুবারক করতেন। সুবহানাল্লাহ! প্রায় সময় যখন খাসী যবাই করতেন, তখন সেই খাসীর কিছু অংশ মুবারক কেটে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার যারা মুহব্বতের পাত্রী ছিলেন, উনার যারা খিদমতের আনজাম দিতেন উনাদের কাছে (হাদিয়াস্বরূপ) পাঠিয়ে দিতেন। সুবহানাল্লাহ! আমি কখনও কখনও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বলতাম, ‘মনে হয় যেন যমীনে একমাত্র মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি ব্যতীত অন্য কোনো মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা নেই।’ তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি জবাবে ইরশাদ মুবারক করতেন, “নিশ্চয়ই তিনি এরূপ, এরূপই ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! আর উনার থেকেই আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আওলাদ আলাইহিমুস সালাম এবং আলাইহিন্নাস সালাম উনারা সম্মানিত তাশরীফ মুবারক এনেছেন এবং উনার মাধ্যম দিয়েই আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় নসব মুবারক দুনিয়ার যমীনে জারি থাকবেন।” সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, মিশকাত শরীফ)
উপরোক্ত দুইখানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের মধ্য থেকে প্রথমোক্ত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্পষ্টভাবে ইরশাদ মুবারক করেছেন,
مَا اَبْدَلَنِـىَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ خَيْرًا مِّنْهَا
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার থেকে উত্তম কোনো মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে আমাকে হাদিয়া মুবারক করেননি।” সুবহানাল্লাহ!
দ্বিতীয় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
فَرُبـَّمَا قُلْتُ لَهٗ كَاَنَّهٗ لَـمْ يَكُنْ فِى الدُّنْيَا امْرَاَةٌ اِلَّا اُمَّ الْـمُؤْمِنِيْنَ الْاُوْلـٰى سَيِّدَتَنَا حَضْرَتْ خَدِيـْجَةَ الْكُبْرٰى عَلَيْهَا السَّلَامُ فَيَقُوْلُ اِنَّهَا كَانَتْ وَكَانَتْ وَكَانَ لِـىْ مِنْهَا وَلَدٌ
অর্থ: “(মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি বলেন,) আমি কখনও কখনও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বলতাম, ‘মনে হয় যেন যমীনে একমাত্র মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি ব্যতীত অন্য কোনো মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা নেই।’ তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি জবাবে ইরশাদ মুবারক করতেন, নিশ্চয়ই তিনি এরূপ, এরূপই ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! আর উনার থেকেই আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আওলাদ আলাইহিমুস সালাম এবং আলাইহিন্নাস সালাম উনারা সম্মানিত তাশরীফ মুবারক এনেছেন এবং উনার মাধ্যম দিয়েই আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় নসব মুবারক দুনিয়ার যমীনে জারি থাকবেন।” সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, মিশকাত শরীফ)
সুতরাং উপরোক্ত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের থেকে অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হলো যে, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্যে কুবরা তথা মূল, বড়, মহান, শ্রেষ্ঠা। সুবহানাল্লাহ!
তাহলে উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কতো বেমেছাল, সেটা সকলের চিন্তা ও কল্পনার ঊর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ!
আমভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
اَلنَّبِـىُّ اَوْلـٰى بِالْمُؤْمِنِيْنَ مِنْ اَنْفُسِهِمْ وَاَزْوَاجُهۤٗ اُمَّهٰتُهُمْ.
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা মু’মিন উনাদের নিকট উনাদের জানের চেয়ে অধিক প্রিয় এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন সমস্ত সৃষ্টির মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র পিতা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা হচ্ছেন সমস্ত সৃষ্টির মহাসম্মানিত মাতা আলাইহিন্নাস সালাম।” (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৬)
এখন বলার বিষয় হচ্ছে, মু’মিন কারা? মূলত, একমাত্র যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ব্যতীত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারাসহ সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী প্রত্যেকেই মু’মিন। উনারা প্রত্যেকেই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি সম্মানিত ঈমান মুবারক এনেছেন। সুবহানাল্লাহ! কোনো হযরত নবী আলাইহিস সালাম উনাকে সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক দেয়া হয়নি, কোনো হযরত রসূল আলাইহিস সালাম উনাকে সম্মানিত রিসালাত মুবারক দেয়া হয়নি; যতক্ষণ পর্যন্ত উনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি সম্মানিত ঈমান মুবারক না এনেছেন। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি সম্মানিত ঈমান আনার পরেই মহান আল্লাহ পাক তিনি সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক ও সম্মানিত রিসালাত মুবারক হাদিয়া মুবারক করেছেন। তাহলে এখান থেকে স্পষ্ট হয়ে যায় যে, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা হচ্ছেন একমাত্র যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা ব্যতীত সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারাসহ সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলেরই মহাসম্মানিতা মাতা আলাইহিন্নাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন,
اِنَّ الْـجَنَّةَ تَـحْتَ اَقْدَامِ اُمَّهَاتِكُمْ
অর্থ: “নিশ্চয়ই তোমাদের সম্মানিত জন্নাত মুবারক হচ্ছে তোমাদের মায়ের পায়ের নিচে।” সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ অনুযায়ী মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা একমাত্র যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা ব্যতীত সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারাসহ সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলেরই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাতা আলাইহিন্নাস সালাম। সুবহানাল্লাহ! আর বর্ণিত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ অনুযায়ী যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা ব্যতীত সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারাসহ সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলেরই সম্মানিত জান্নাত মুবারক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুদ দারাজাত মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ক্বদম মুবারক) উনাদের নিচে। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের নিকট সন্তানতুল্য। সুবহানাল্লাহ!
মূলত, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের সম্মানিত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক এক কথায়, উনারা শুধু যিনি খ¦ালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া যত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক রয়েছেন, সমস্ত কিছুর অধিকারিণী হচ্ছেন উনারা। সুবাহানাল্লাহ! উনারা সমস্ত কিছুর মূল এবং মালিক। সুবহানাল্লাহ! উনারা হযরত নবী ও রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদেরও মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাতা আলাইহিন্নাস সালাম অর্থাৎ উনারা উনাদেরও মূল এবং মালিক। সুবহানাল্লাহ! উনারা কারো মুহতাজ নন; বরং সম্মানিত নুবুওওয়াত-রিসালাত মুবারকসহ সমস্ত হযরত নবী ও রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা উনাদের মুহতাজ। সুবহানাল্লাহ! উনাদের কারণে সম্মানিত নুবুওওয়াত-রিসালাত মুবারকসহ সমস্ত মাক্বামই সম্মানিত হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
এই সম্পর্কে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ اِمَامِ الْاَوَّلِ سَيِّدِنَا حَضْرَتْ كَرَّمَ اللهُ وَجْهَهٗ عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ اِنَّ النَّبِـىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَقُوْلُ نَـحْنُ اَهْلُ بَيْتٍ طَهَّرَهُمُ اللهُ مِنْ شَجَرَةِ النُّبُوَّةِ وَمَوْضِعِ الرِّسَالَـةِ وَمُـخْتَلِفِ الْمَلَائِكَةِ وَبَيْتِ الرَّحْـمَةِ وَمَعْدِنِ الْعِلْمِ.
অর্থ: “ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত র্কারামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সবসময় ইরশাদ মুবারক করতেন, আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে (আমাদেরকে) সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক উনার বৃক্ষ, সম্মানিত রিসালাত মুবারক উনার স্থান, বিভিন্ন হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের, উনাদের দ্বারা সম্মানিত খিদমত মুবারক, সম্মানিত রহমত মুবারক উনার ঘর মুবারক এবং সম্মানিত ইলম মুবারক উনার খনি মুবারক (ইত্যাদি সমস্ত কিছু) থেকে পবিত্র রেখেছেন, ছমাদ তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী) করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক, সম্মানিত রিসালাত মুবারক, বিভিন্ন ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের, উনাদের দ্বারা সম্মানিত খিদমত মুবারক, সম্মানিত রহমত মুবারক উনার ঘর মুবারক এবং সম্মানিত ইলম মুবারক উনার খনি মুবারক ইত্যাদি সমস্ত কিছু থেকে পবিত্র, ছমাদ তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী)। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! উনাদের কারণেই সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক, সম্মানিত রিসালাত মুবারক, সমস্ত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা, সম্মানিত রহমত মুবারক এবং সম্মানিত ইলম মুবারকসহ সমস্ত কিছুই ফযীলতপ্রাপ্ত হয়েছেন, সম্মানিত হয়েছেন।” সুবহানাল্লাহ!
তাহলে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কত বেমেছাল, তা এখান থেকে স্পষ্ট হয়ে যায়। সুবহানাল্লাহ! আর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্যে বিশেষ ব্যক্তিত্বা মুবারক হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা। সুবহানাল্লাহ! আবার উনাদের মধ্যে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন ঊলা তথা প্রথমা, কুবরা তথা মূল, বড়, মহান, শ্রেষ্ঠা। সুবহানাল্লাহ! তাহলে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কতো বেমেছাল, সেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের চিন্তা ও কল্পনার ঊর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরও মূল:
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মূল এবং তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরও মূল সুবহানাল্লাহ! সেটাই আমরা দেখতে পাই ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম তিনি ব্যতীত নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অন্য সকল মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আওলাদ আলাইহিমুস সালাম এবং আলাইহিন্নাস সালাম উনারা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার মাধ্যমে সম্মানিত তাশরীফ মুবারক এনেছেন এবং একমাত্র উনার মাধ্যম দিয়েই ক্বিয়ামত পর্যন্ত নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় নসব মুবারক জারি থাকবেন। সুবহানাল্লাহ! সেটাই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে,
وَرَزَقَنِـىَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ وَلَدَهَا اِذْ حَرَمَنِـىْ اَوْلَادَ النِّسَاءِ
অর্থ: “আর মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি ব্যতীত অন্য কোনো মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মাধ্যম দিয়ে আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় নসব মুবারক জারি করেননি, আমাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আওলাদ আলাইহিমুস সালাম এবং আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে হাদিয়া মুবারক করেননি। অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক তিনি একমাত্র মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার মাধ্যম দিয়েই আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় নসব মুবারক জারি করেছেন, আমাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আওলাদ আলাইহিমুস সালাম এবং আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে সম্মানিত হাদিয়া মুবারক করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (মুসনাদে আহমদ শরীফ)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
وَكَانَ لِـىْ مِنْهَا وَلَدٌ.
অর্থ: “আর উনার থেকেই আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আওলাদ আলাইহিমুস সালাম এবং আলাইহিন্নাস সালাম উনারা সম্মানিত তাশরীফ মুবারক এনেছেন এবং উনার মাধ্যমেই আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় নসব মুবারক দুনিয়ার যমীনে জারি থাকবেন।” সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, মিশকাত শরীফ)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আওলাদ হচ্ছেন বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা আন নূরুর রবি‘য়াহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদাতুনা আন নূরুর রাবি‘য়াহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার দুই জন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আওলাদ হচ্ছেন সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এবং সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! আর উনাদের মাধ্যম দিয়েই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় নসব মুবারক ক্বিয়ামত পর্যন্ত জারি থাকবেন। সুবহানাল্লাহ! উনাদের মাধ্যম দিয়েই ক্বিয়ামত পর্যন্ত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা এবং হযরত আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নিবেন। সুবহানাল্লাহ!
কাজেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরও মূল এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরও মূল। সুবহানাল্লাহ!
সুতরাং উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক বেমেছাল, যা জিন-ইনসান, কায়িনাতবাসী কখনো ভাষায় প্রকাশ করতে পারবে না। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি পুরো সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনাকে পরিপূর্ণরূপে আঁকড়িয়ে ধরে রেখেছেন। উনার সম্মানার্থেই সম্মানিত দ্বীন ইসলাম টিকে রয়েছেন
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনিই মহান আল্লাহ পাক উনার সৃষ্টি জগতে সর্বপ্রথম সম্মানিত ইসলাম ও সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
এই সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
اَوَّلُ مَنْ اَسْلَمَ وَاٰمَنَ فِـىْ خَلْقِ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ لَـمْ يَتَقَدَّمْهَا رَجُلٌ وَّلَا امْرَاَةٌ اُمُّ الْـمُؤْمِنِيْنَ الْاُوْلـٰى سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اَلْكُبْرٰى عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ خَدِيـْجَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ).
অর্থ: “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনিই মহান আল্লাহ পাক উনার সৃষ্টি জগতে সর্বপ্রথম সম্মানিত ইসলাম ও সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেছেন। সুবহানাল্লাহ! উনার পূর্বে কোনো পুরুষ মহিলা সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেনি এবং সম্মানিত ঈমান প্রকাশ করেনি।” সুবহানাল্লাহ!
এই সম্পর্কে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ رَبِيْعَةَ السَّعْدِىِّ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ قَالَ اَتَيْتُ حَضْرَتْ حُذَيْفَةَ بْنَ الْيَمَانِ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ وَهُوَ فِـىْ مَسْجِدِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَسَمِعْتُهٗ يَقُوْلُ كَانَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُوْلُ اُمُّ الْـمُؤْمِنِيْنَ الْاُوْلـٰى سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اَلْكُبْرٰى عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ خَدِيـْجَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ) سَابِقَةُ نِسَاءِ الْعَالَمِيْنَ اِلَـى الْاِيْـمَانِ بِاللهِ وَبِـمُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ.
অর্থ: “হযরত রবী‘আহ সা’দী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেন। আমি হযরত হুযায়ফাহ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার নিকট আসলাম। তখন তিনি সম্মানিত ও পবিত্র মসজিদে নববী শরীফ-এ অবস্থান মুবারক করতেছিলেন। আমি উনাকে বলতে শুনেছি, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সবসময় ইরশাদ মুবারক করতেন, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের প্রতি সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করার ক্ষেত্রে মহান আল্লাহ পাক উনার কায়িনাতে যত মহিলা রয়েছেন সকলের অগ্রগামী। অথাৎ তিনি সকলের পূর্বে সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (মুস্তাদরকে হাকিম ৩/২০৩, আল ফাতহুল কাবীর ২/৮০ ইত্যাদি)
কাজেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনিই সর্বপ্রথম সম্মানিত ইসলাম ও সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেছেন। সুবহানাল্লাহ! শুধু তাই নয়, তিনি সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার প্রচার-প্রসারের ক্ষেত্রে বেমেছাল অবদান মুবারক রেখেছেন। যা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। সুবহানাল্লাহ! উনার সম্মানার্থেই সম্মানিত দ্বীন ইসলাম টিকে রয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানার্থে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার প্রচার-প্রসারের ক্ষেত্রে যে অঢেল ধন-সম্পদ মুবারক ব্যয় করেছেন, সেটা বেমেছাল, তুলনাহীন। কুরাইশ গোত্র অনেক বড় গোত্র। সমস্ত কুরাইশদের যত সম্পদ ছিলো, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার এককভাবে তার চেয়ে বেশি সম্পদ মুবারক ছিলো। সুবহানাল্লাহ! তিনি উনার সমস্ত সম্পদ মুবারক নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য ব্যয় করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
مَا اَبْدَلَنِـىَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ خَيْرًا مِّنْهَا قَدْ اٰمَنَتْ بِـىْ اِذْ كَفَرَ بِـىَ النَّاسُ وَصَدَّقَتْنِـىْ اِذْ كَذَّبَنِـىَ النَّاسُ وَوَاسَتْنِـىْ بـِمَالـِهَا اِذْ حَرَمَنِـىَ النَّاسُ وَرَزَقَنِـىَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ وَلَدَهَا اِذْ حَرَمَنِـىْ اَوْلَادَ النِّسَاءِ.
অর্থ: “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার থেকে উত্তম কোনো মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাকে হাদিয়া মুবারক করেননি। সুবহানাল্লাহ! মানুষ যখন আমাকে অস্বীকার করেছে, সম্মানিত ঈমান আনেনি, তখন তিনি সর্বপ্রথম আমার প্রতি সম্মানিত ঈমান মুবারক এনেছেন। সুবহানাল্লাহ! মানুষ যখন আমার বিষয় মুবারকগুলো সত্যারোপ করতে পারেনি, তিনি কিন্তু আমাকে সত্যারোপ করেছেন, আমাকে তাছদীক্ব করেছেন, আমার বিষয় মুবারকগুলো বিশ্বাস করেছেন, সত্য বলে গ্রহণ করেছেন। সুবহানাল্লাহ! মানুষ যখন আমার কোনো সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়নি, তখন তিনি উনার সমস্ত মাল-সম্পদ মুবারক দিয়ে আমার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়েছেন, আমাকে সান্তনা মুবারক দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! আর মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি ব্যতীত অন্য কোনো মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মাধ্যম দিয়ে আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় নসব মুবারক জারি করেননি, আমাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আওলাদ আলাইহিমুস সালাম এবং আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে হাদিয়া মুবারক করেননি। অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক তিনি একমাত্র মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার মাধ্যম দিয়েই আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় নসব মুবারক জারি করেছেন, আমাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আওলাদ আলাইহিমুস সালাম এবং আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে সম্মানিত হাদিয়া মুবারক করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (মুসনাদে আহমদ শরীফ)
সুতরাং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার মাধ্যম দিয়েই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় নসব মুবারক ক্বিয়ামত পর্যন্ত জারি থাকবেন, ক্বিয়ামত পর্যন্ত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা এবং আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নিবেন। সুবহানাল্লাহ!
আর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ عَـلِـىٍّ كَرَّمَ اللهُ وَجْهَهٗ عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَلنُّجُوْمُ اَمَانٌ لِّاَهْلِ السَّمَاءِ اِذَا ذَهَبَتِ النُّجُوْمُ ذَهَبَ اَهْلُ السَّمَاءِ وَاَهْلُ بَيْتِـىْ اَمَانٌ لِّاَهْلِ الْاَرْضِ فَاِذَا ذَهَبَ اَهْلُ بَيْـتِـىْ ذَهَبَ اَهْلُ الْاَرْضِ.
অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তারকারাজি আসমানবাসীর জন্য নিরাপত্তাদানকারী। যখন তারকারাজি বিদায় নিবে, তখন আসমানবাসীরাও ধ্বংস হয়ে যাবে। আর আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা হচ্ছেন যমীনবাসীর জন্য, তামাম কায়িনাতবাসীর জন্য নিরাপত্তাদানকারী। যখন আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বিদায় নিবেন, তখন সমস্ত যমীনবাসী, সমস্ত কায়িনাতবাসী ধ্বংস হয়ে যাবে।” সুবহানাল্লাহ! (ফাদ্বায়িলুছ ছাহাবাহ ২/৬৭১, আছ ছওয়ায়িকুল মুহরিক্বহ ২/৬৭৫, আল মু’জাম ১/৪০৪, মিরক্বাত শরীফ ৯/৩৯৮৮, যাখায়িরুল ‘উক্ববাহ ১/১৭, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১১/৭)
অপর বর্ণনায় এসেছে,
عَنْ حَضْرَتْ سَلَمَةَ بْنِ الْاَكْوَعِ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَلنُّجُوْمُ اَمَانٌ لِّاَهْلِ السَّمَاءِ وَاَهْلُ بَيْتِـىْ اَمَانٌ لِّاُمَّتِـىْ.
অর্থ: “হযরত সালামাহ ইবনে আকওয়া’ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তারকারাজি হচ্ছে আসমানবাসীর জন্য নিরাপত্তাদানকারী। আর আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা হচ্ছেন আমার সমস্ত উম্মতের জন্য নিরাপত্তাদানকারী।” সুবহানাল্লাহ! (মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বাহ, মুসাদ্দাদ, আবূ ইয়া’লা, হাকিম, তিরমিযী, ত্ববারনী, ইবনে ‘আসাকির, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১১/৬, যাখায়িরুল ‘উক্ববাহ ১/১৭)
কাজেই এখান থেকে দিবালোকের ন্যায় অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হলো যে, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের উসীলায়, উনাদের মাধ্যমে, উনাদের সম্মানার্থে ক্বিয়ামত অবধি সারা পৃথিবী, সারা কায়িনাত, সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী, সমস্ত উম্মত ধ্বংস হওয়া থেকে নিরাপদ থাকবে, নিরাপত্তা লাভ করবে এবং সম্মানিত দ্বীন ইসলাম দুনিয়ার যমীনে ক্বিয়ামত পর্যন্ত টিকে থাকবে। সুবহানাল্লাহ! আর সেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরই মূল হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! সুতরাং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনিই সম্পূর্ণ সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনাকে পরিপূর্ণভাবে আঁকড়িয়ে ধরে রেখেছেন। সুবহানাল্লাহ! উনার সম্মানার্থেই সম্মানিত দ্বীন ইসলাম টিকে রয়েছেন এবং ক্বিয়ামত পর্যন্ত টিকে থাকবেন। সুবহানাল্লাহ!
যেমন বর্তমানে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম টিকে রয়েছেন মুজাদ্দিদে আ’যম, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানার্থে। সুবহানাল্লাহ! আর উনারা হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বংশধর। সুবহানাল্লাহ! এভাবেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মাধ্যমে ক্বিয়ামত পর্যন্ত সম্মানিত দ্বীন ইসলাম টিকে থাকবেন। সুবহানাল্লাহ!
তাহলে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কতো বেমেছাল, সেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। যা ভাষায় প্রকাশ করা আদৌ সম্ভব নয়। সুবহানাল্লাহ! তবে এক কথায় তিনি শুধু যিনি খ¦ালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া যত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক রয়েছেন, সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারিণী হচ্ছেন তিনি। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিমুস সালাম এবং আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি মুবারক
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ اُمِّ الْمُؤْمِنِيْنَ الثَّالِثَةِ سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ اَلصِّدِّيْقَةِ عَلَيْهَا السَّلَامُ )سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ عَائِشَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ( قَالَتْ مَا غِرْتُ عَلـٰى اَحَدٍ مِّنْ نِّسَاءِ النَّبِـىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا غِرْتُ عَلـٰى اُمِّ الْـمُؤْمِنِيْنَ الْاُوْلـٰى سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ اَلْكُبْرٰى عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ خَدِيـْجَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ) وَمَا رَاَيْتُهَا وَلٰكِنْ كَانَ يُكْثِرُ ذِكْرَهَا وَرُبـَّمَا ذَبَحَ الشَّاةَ ثُـمَّ يُقَطِّعُهَا اَعْضَاءً ثُـمَّ يَبْعَثُهَا فِـىْ صَدَائِقِ اُمِّ الْـمُؤْمِنِيْنَ الْاُوْلـٰى سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ اَلْكُبْرٰى عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ خَدِيـْجَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ) فَرُبـَّمَا قُلْتُ لَهٗ كَاَنَّهٗ لَـمْ يَكُنْ فِى الدُّنْيَا امْرَاَةٌ اِلَّا اُمَّ الْـمُؤْمِنِيْنَ الْاُوْلـٰى سَيِّدَتَنَا حَضْرَتْ اَلْكُبْرٰى عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتَنَا حَضْرَتْ خَدِيـْجَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ) فَيَقُوْلُ اِنَّهَا كَانَتْ وَكَانَتْ وَكَانَ لِـىْ مِنْهَا وَلَدٌ
অর্থ: “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার ব্যাপারে আমার যতটা বিস্ময় হয়, আমি যতটা বিস্ময় প্রকাশ করতাম, ততটা বিস্ময় প্রকাশ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অপর কোনো মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের প্রতি আমি করতাম না। অথচ উনাকে আমি দেখিনি। কিন্তু (বিস্ময় প্রকাশ করার কারণ ছিলো এই যে, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নেয়ার পরেও) সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সবসময় দায়িমীভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার কথা তথা উনার খুছূছিয়াত-বৈশিষ্ট্য মুবারক, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক সম্পর্কে আলোচনা মুবারক করতেন। সুবহানাল্লাহ! প্রায় সময় যখন খাসী যবাই করতেন, তখন সেই খাসীর কিছু অংশ মুবারক কেটে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার যারা মুহব্বতের পাত্রী ছিলেন, উনার যারা খিদমতের আনজাম দিতেন উনাদের কাছে (হাদিয়াস্বরূপ) পাঠিয়ে দিতেন। সুবহানাল্লাহ! আমি কখনও কখনও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বলতাম, ‘মনে হয় যেন যমীনে একমাত্র মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি ব্যতীত অন্য কোনো মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা নেই।’ তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি জবাবে ইরশাদ মুবারক করতেন, “নিশ্চয়ই তিনি এরূপ, এরূপই ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! আর উনার থেকেই আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আওলাদ আলাইহিমুস সালাম এবং আলাইহিন্নাস সালাম উনারা সম্মানিত তাশরীফ মুবারক এনেছেন এবং উনার মাধ্যম দিয়েই আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় নসব মুবারক দুনিয়ার যমীনে জারি থাকবেন।” সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, মিশকাত শরীফ)
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আওলাদ আলাইহিমুস সালাম এবং আলাইহিন্নাস সালাম উনারা ছিলেন মোট আট (৮) জন। উনাদের মধ্যে ৪ জন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আবনা তথা ছেলে আওলাদ আলাইহিমুস সালাম এবং ৪ জন এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বানাত তথা মেয়ে আওলাদ আলাইহিন্নাস সালাম। সুবহানাল্লাহ! উনাদের মধ্যে ৭ জনই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার মাধ্যমে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন। সুবহানাল্লাহ! মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করার ধারাবাহিকক্রম মুবারক অনুযায়ী উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ইসম বা নাম মুবারক হচ্ছেন-
১. ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুল আউওয়াল আলাইহিস সালাম (সাইয়্যিদুনা হযরত ক্বাসিম আলাইহিস সালাম),
২. বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আন নূরুল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত খাইরু ওয়া আফযালু বানাতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাইনাব আলাইহাস সালাম),
৩. ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুছ ছানী আলাইহিস সালাম (সাইয়্যিদুনা হযরত ত্বইয়্যিব আলাইহিস সালাম),
৪. ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছ আলাইহিস সালাম (সাইয়্যিদুনা হযরত ত্বাহির আলাইহিস সালাম),
৫. বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ (সাইয়্যিদাতুনা হযরত রুক্বইয়্যাহ আলাইহাস সালাম),
৬. বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ (সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম আলাইহাস সালাম) এবং
৭. বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আন নূরুর রাবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম (সাইয়্যিদাতুনা হযরত ফাত্বিমাহ আলাইহাস সালাম)। সুবহানাল্লাহ!
ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুল আউওয়াল আলাইহিস সালাম
ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুল আউওয়াল আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২রা রমাদ্বান শরীফ ইয়াওমুছ ছুলাছা’ শরীফ সকালে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বয়স মুবারক ছিলেন প্রায় সাড়ে ২৭ বছর। আর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বয়স মুবারক ছিলেন প্রায় সাড়ে ৪২ বছর। তিনি দুনিয়ার যমীনে ২২ মাস সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। অতঃপর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২রা রজবুল হারাম শরীফ সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ (ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ) ভোর রাতে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বয়স মুবারক প্রায় ২৯ বছর ৪ মাস। সুবহানাল্লাহ! আর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বয়স মুবারক ছিলেন প্রায় ৪৪ বছর ৪ মাস। মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মধ্যে তিনিই সর্বাধিক সময় দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!
বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আন নূরুল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত খাইরু ওয়া আফযালু বানাতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আন নূরুল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত খাইরু ওয়া আফযালু বানাতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুল আউওয়াল আলাইহিস সালাম উনার পর আনুষ্ঠানিকভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নুবুওওয়াত এবং রিসালত মুবারক প্রকাশের প্রায় ১১ বছর পূর্বে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২১শে জুমাদাল উখরা শরীফ ইয়াওমুল জুমুয়াহ শরীফ বা’দ ফজর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বয়স মুবারক ২৯ বৎসর পার হয়ে ৩০ বৎসর চলতে ছিলেন। আর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বয়স মুবারক ৪৪ বৎসর পার হয়ে ৪৫ বৎসর চলতে ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি ৮ম হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ৮ই মুহাররমুল হারাম শরীফ সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ (ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ) ইশরাকের ওয়াক্তে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি ৩০ বছর ৬ মাস ১৭ দিন দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সকলের মধ্যে তিনিই সর্বাধিক সময় দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!
ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুছ ছানী আলাইহিস সালাম
ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুছ ছানী আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২রা সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ) লাইলাতুল খমীস শরীফ শেষ রাতে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি দুনিয়ার যমীনে মাত্র ৭ দিন সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। অতঃপর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ৮ই সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ) ইয়াওমুল আরবিয়া’ শরীফ বা’দ আছর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বয়স মুবারক ছিলেন প্রায় ৩১ বছর। সুবহানাল্লাহ! আর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বয়স মুবারক ছিলেন প্রায় ৪৬ বছর। মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সকলের মধ্যে তিনিই সবচেয়ে কম সময় দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!
ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছ আলাইহিস সালাম
ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছ আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ৪ঠা সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ) ইয়াওমুল আরবিয়া’ শরীফ সকালে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি দুনিয়ার যমীনে মাত্র ৮ দিন সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। অতঃপর তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ) ইয়াওমুল খমীস শরীফ চাশতের সময় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বয়স মুবারক ৩২ বছর। সুবহানাল্লাহ! আর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বয়স মুবারক প্রায় ৪৭ বছর।
বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম
বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নুবুওওয়াত এবং রিসালত মুবারক প্রকাশ পাওয়ার প্রায় ৭ বছর পূর্বে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ৩রা রবী‘উছ ছানী শরীফ সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ (ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ) সকালে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহনাল্লাহ! দুনিয়াবী দৃষ্টিতে তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বয়স মুবারক ছিলেন ৩৩ বছর। আর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বয়স মুবারক ছিলেন ৪৮ বছর। তিনি ২য় হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১৮ই রমাদ্বান শরীফ লাইলাতুস সাব্ত শরীফ, রাতের শেষার্ধে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি ২১ বছর ৫ মাস ১৫ দিন দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!
বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম
বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নুবুওওয়াত এবং রিসালত মুবারক প্রকাশের প্রায় ৫ বছর পূর্বে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১১ই জুমাদাল ঊলা শরীফ লাইলাতুস সাবত শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বয়স মুবারক ছিলেন ৩৫ বছর। আর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বয়স মুবারক ছিলেন ৫০ বছর। সুবহানাল্লাহ! তিনি ৯ম হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ৬ই রমাদ্বান শরীফ সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ (ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ) বা’দ ফজর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি ২৬ বছর ৩ মাস ২৫ দিন দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!
বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম
বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নুবুওওয়াত এবং রিসালত মুবারক প্রকাশের প্রায় ৩ বছর পূর্বে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২০শে জুমাদাল উখরা শরীফ ইয়াওমুল জুমুয়াহ শরীফ সুবহে ছাদিক্ব উনার সময় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বয়স মুবারক ৩৭ বছর। আর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বয়স মুবারক ৫২ বছর। তিনি সম্মানিত ১১ হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ৩রা রমাদ্বান শরীফ সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ (ইয়াওমুল ইছনাইনিল আ’যীম শরীফ) বা’দ আছর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি ২৬ বছর ২ মাস ১৩ দিন দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!
উল্লেখ্য যে, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা প্রত্যেকেই সম্মানিত জামালী ত্ববী‘য়ত মুবারক উনার অধিকারী ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মধ্যে সবচেয়ে সম্মানিত জামালী ত্ববী‘য়ত মুবারক উনার অধিকারিণী ছিলেন আন নূরুল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত খাইরু ওয়া আফযালু বানাতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! উনার প্রায় অনুরূপ সম্মানিত জামালী ত্ববী‘য়ত মুবারক উনার অধিকারিণী ছিলেন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত ত্ববীয়ত মুবারক উনার মধ্যে সম্মানিত জামালী ও সম্মানিত জালালী উভয় প্রকার শান মুবারক মিশ্রিত ছিলেন, তবে সম্মানিত জালালী শান মুবারক উনার কিছুটা প্রাধান্য ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! আর সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত ত্ববীয়ত মুবারক উনার মধ্যে সম্মানিত জামালী ও সম্মানিত জালালী উভয় প্রকার শান মুবারক মিশ্রিত ছিলেন, তবে সম্মানিত জালালী ত্ববীয়ত মুবারক উনার শান মুবারক বেশি প্রকাশ পেতেন।” সুবহানাল্লাহ!
উপরে যা বর্ণিত হলো, তা আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এক অভূতপূর্ব, বেমেছাল এবং বিস্ময়কর মহাসম্মানিত তাজদীদ মুবারক। সুবহানাল্লাহ! এগুলো পৃথিবীর কোনো কিতাবে বর্ণিত নেই। সুবহানাল্লাহ! এখান থেকেই মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক এবং শ্রেষ্ঠত্ব মুবারক উনার বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যায়। সুবহানাল্লাহ! তিনি হচ্ছেন পৃথিবীর ইতিহাসে যত মুজাদ্দিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা এসেছেন এবং ক্বিয়ামত পর্যন্ত যত মুজাদ্দিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা আসবেন, উনাদের প্রত্যেকের সাইয়্যিদ। সুবহানাল্লাহ! এক কথায়, তিনি শুধু যিনি খ¦ালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া যত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক রয়েছেন, সমস্ত কিছুর অধিকারী হচ্ছেন তিনি। সুবহানাল্লাহ!
উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা কুবরা আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ, সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়া, সম্মানিত তা’যীম-তাকরীম মুবারক এবং সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক বর্ণনা করা
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যেই সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়েছেন, অন্য কারো পক্ষে এটা সম্ভব হয়নি আর হবেও না। সুবহানাল্লাহ!
খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
اِنَّـــاۤ اَرْسَلْنٰكَ شَاهِدًا وَّمُبَشِّرًا وَّنَذِيْرًا لِّــتُؤْمِنُوْا بِاللهِ وَرَسُوْلِهٖ وَتُعَزِّرُوْهُ وَتُوَقِّرُوْهُ وَتُسَبِّحُوْهُ بُكْرَةً وَّاَصِيْلًا.
অর্থ: “(আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূওে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) নিশ্চয়ই আমি আপনাকে প্রেরণ করেছি, সৃষ্টি মুবারক করেছি শাহিদ তথা সাক্ষ্যদাতা, উপস্থিত, হাযির-নাযির হিসেবে, সুসংবাদদানকারী এবং সতর্ককারীরূপে। যাতে করে তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের প্রতি সম্মানিত ঈমান মুবারক আনতে পারো। তোমরা উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দাও, উনাকে তা’যীম-তাকরীম মুবারক করো এবং উনার সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করো সকাল-সন্ধ্যা তথা অনন্তকালব্যাপী দায়িমীভাবে।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা ফাত্হ শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৮-৯)
এই সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনার পরিপূর্ণ হাক্বীক্বী মিছদাক্ব ছিলেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি।” সুবহানাল্লাহ!
ইনশাআল্লাহ এখন উপরোক্ত বিষয়ে সংক্ষেপে আলোচনা করা হবে।
সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনিই সেই সুমহান ব্যক্তিত্বা মুবারক যিনি মহান আল্লাহ পাক উনার সৃষ্টি জগতে সর্বপ্রথম সম্মানিত ইসলাম ও সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
এই সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
اَوَّلُ مَنْ اَسْلَمَ وَاٰمَنَ فِـىْ خَلْقِ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ لَـمْ يَتَقَدَّمْهَا رَجُلٌ وَّلَا امْرَاَةٌ اُمُّ الْـمُؤْمِنِيْنَ الْاُوْلـٰى سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ خَدِيـْجَةُ الْكُبْرٰى عَلَيْهَا السَّلَامُ
অর্থ: “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনিই মহান আল্লাহ পাক উনার সৃষ্টি জগতে সর্বপ্রথম সম্মানিত ইসলাম ও সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেছেন। সুবহানাল্লাহ! উনার পূর্বে কোন পুরুষ-মহিলা সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেনি এবং সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেনি।” সুবহানাল্লাহ!
এই সম্পর্কে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ رَبِيْعَةَ السَّعْدِىِّ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ قَالَ اَتَيْتُ حَضْرَتْ حُذَيْفَةَ بْنَ الْيَمَانِ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ وَهُوَ فِـىْ مَسْجِدِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَسَمِعْتُهٗ يَقُوْلُ كَانَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُوْلُ اُمُّ الْـمُؤْمِنِيْنَ الْاُوْلـٰى سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اَلْكُبْرٰى عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ خَدِيـْجَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ) سَابِقَةُ نِسَاءِ الْعَالَمِيْنَ اِلَـى الْاِيْـمَانِ بِاللهِ وَبِـمُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ.
অর্থ: “হযরত রবী‘আহ সা’দী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেন। আমি হযরত হুযায়ফাহ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার নিকট আসলাম। তখন তিনি সম্মানিত ও পবিত্র মসজিদে নববী শরীফ-এ অবস্থান মুবারক করতেছিলেন। আমি উনাকে বলতে শুনেছি, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের প্রতি সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করার ক্ষেত্রে মহান আল্লাহ পাক উনার কায়িনাতে যত মহিলা রয়েছেন সকলের অগ্রগামী। অর্থাৎ তিনি সকলের পূর্বে সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (মুস্তাদরকে হাকিম ৩/২০৩, আল ফাতহুল কাবীর ২/৮০ ইত্যাদি)
সেটাই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো সুস্পষ্টভাবে ইরশাদ মুবারক করেছেন,
قَدْ اٰمَنَتْ بِـىْ اِذْ كَفَرَ بِـىَ النَّاسُ
অর্থ: “মানুষ যখন আমাকে অস্বীকার করেছে, সম্মানিত ঈমান মুবারক আনেনি, তখন তিনি সর্বপ্রথম আমার প্রতি সম্মানিত ঈমান মুবারক এনেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (মুসনাদে আহমদ শরীফ)
তিনি সর্বপ্রথম সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেছেন এবং কায়িনাতের মাঝে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বেমেছাল সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত তা’যীম-তাকরীম মুবারক ও সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন আরবের মধ্যে সবচেয়ে বড় সম্পদশালিনী। উনার মত সম্পদশালিনী আরবে আর কেউ ছিলো না। সমস্ত কুরাইশদের যত সম্পদ ছিলো উনার এককভাবে তার চেয়ে বেশি সম্পদ মুবারক ছিলো। সেই যামানায় উনার লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি টাকার ব্যবসা-বাণিজ্য মুবারক ছিলো। কিতাবে বর্ণিত রয়েছে, যেখানে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আযীমুশ শান নিসবতে আযীম শরীফ অনুষ্ঠিত হয়েছে, সেখান থেকে সম্মানিত হুজরা শরীফ-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নেয়ার জন্য প্রতি সম্মানিত ক্বদম মুবারক-এ একটি করে সম্মানিত স্বর্ণের প্লেট মুবারক দেয়া হয়েছিলো। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্বর্ণের প্লেট মুবারক-এ এক এক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুদ দারাজাত মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ক্বদম মুবারক) রেখে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হুজরা শরীফ-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নিয়েছিলেন। সুবহানাল্লাহ!
এখন যদি ১০০টা প্লেট ধরা হয়, আর প্রতিটি প্লেট যদি ৫ থেকে ৭ কেজি করে ধরা হয়। তাহলে দেখা যাচ্ছে ৫০০ থেকে ৭০০ কেজি স্বর্ণ, যা বর্তমান বাজার দর অনুযায়ী কমপক্ষে ৩০০ কোটি থেকে ৩৫০ কোটি থেকেও বেশি টাকা। সুবহানাল্লাহ! এই কমপক্ষে ৩০০ কোটি থেকে ৩৫০ কোটি থেকেও বেশি টাকা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে ‘আযীম শরীফ উনার সময় শুধু নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুদ দারাজাত মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ক্বদম মুবারক) উনার নীচে তিনি বিছিয়ে দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! তাহলে উনার কতো সম্পদ মুবারক ছিলো এবং কতো বেমেছালভাবে তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়েছেন, সেটা সকলের চিন্তা-কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ!
যেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হুজরা শরীফ-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে আযীম শরীফ অনুষ্ঠিত হয়েছিলেন, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি সেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হুজরা শরীফ রেখে উনার ভাতিজা হাকীম ইবনে হিজাম উনার থেকে একটা বাড়ী কিনে সেখানে চলে আসেন। সুবহানাল্লাহ! সেখানে সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নিয়ে সম্মানিত অবস্থান করেন। সুবহানাল্লাহ! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত হিজরত মুবারক করা পর্যন্ত সেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হুজরা শরীফ-এ সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ! আর পূর্বের যেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বাড়ী মুবারক ছিলেন, সেটা বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আন নূরুল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত খাইরু ওয়া আফযালু বানাতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে আযীম শরীফ উনার সময় উনাকে সম্মানিত হাদিয়া মুবারক করা হয়েছিলো। সুবহানাল্লাহ! সেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বাড়ী মুবারক-এ সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূর আলাইহিস সালাম (সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল আছ আলাইহিস সালাম) তিনি এবং আন নূরুল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত খাইরু ওয়া আফযালু বানাতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা সম্মানিত অবস্থান মুবারক করতেন। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার মত সম্পদশালিনী আরবে আর কেউ ছিলো না। সুবহানাল্লাহ! তিনি উনার সেই সমস্ত সম্পদ মুবারকগুলো সম্মানিত দ্বীন ইসলাম প্রকাশের পূর্বে এবং পরে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ বিলিয়ে দিয়েছিলেন। সুবহানাল্লাহ! তাহলে তিনি সম্মানিত ধন-সম্পদ মুবারক দিয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কতটুকু সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়েছিলেন, সেটা মানুষ কখনও চিন্তা-ফিকির করে মিলাতে পারবে না। সুবহানাল্লাহ!
সেটাই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন,
وَوَاسَتْنِـىْ بـِمَالِـهَا اِذْ حَرَمَنِـىَ النَّاسُ
অর্থ: “মানুষ যখন আমার কোনো সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়নি, তখন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি উনার সমস্ত মাল-সম্পদ দিয়ে আমার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়েছেন এবং আমাকে সান্তনা মুবারক দিয়েছেন।” সুবহানাল্লাহ! (মুসনাদে আহমদ শরীফ)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ওহী মুবারক নাযিল হওয়ার পূর্বে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত হেরা গুহা মুবারক-এ সম্মানিত অবস্থান মুবারক করতেন। তখন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি সেখানে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য সম্মানিত খাবার মুবারক নিয়ে যেতেন। সুবহানাল্লাহ! ১৯৮৫ সালের কথা তখন এমনিতে স্বাভাবিকভাবে একজন সুস্থ-সবল এবং যুবক লোকের জন্য সম্মানিত হেরা গুহা মুবারক-এ উঠতে প্রায় ২:৩০ থেকে ৩:০০ ঘন্টা সময় লাগতো এবং অনেক কষ্ট হতো। তাহলে ১৪০০ বৎসর আগে কি অবস্থা ছিলো? আর দুনিয়াবী দৃষ্টিতে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বয়স মুবারক তো তখন অনেক ছিলেন, তখন তিনি এই অবস্থায় কিভাবে, কতোটুকু ত্যাগ এবং কষ্ট সহ্য করে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু অলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ সম্মানিত খাবার মুবারক নিয়ে গেছেন এবং উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়েছেন, সেটা সকলের চিন্তা-কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ! তিনি আরবের মধ্যে সবচেয়ে সম্পদশালিনী ছিলেন। ইচ্ছা করলে অসংখ্য খাদিম নিয়োগ করে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য সম্মানিত হেরা গুহা মুবারক-এ সম্মানিত খাবার মুবারক পাঠিয়ে দিতে পারতেন। কিন্তু তিনি সেটা করেননি। তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আলাইহাস সালাম হওয়া সত্ত্বেও, দুনিয়াবী দৃষ্টিতে উনার এতো অধিক সম্মানিত বয়স মুবারক হওয়া সত্ত্বেও, তিনি সীমাহীন কষ্ট সহ্য করে সেই সুউচ্চ সম্মানিত হেরা গুহা মুবারক-এ উঠে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য সম্মানিত খাবার মুবারক নিয়ে গেছেন এবং সেখানে গিয়ে উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! তাহলে তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কতো সীমাহীন মুহব্বত মুবারক করেছেন এবং কতো বেমেছালভাবে উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়েছেন, তা সকলের চিন্তা-কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ! মূলত, তা কায়িনাতের বুকে এক নযীরবিহীন দৃষ্টান্ত মুবারক। সুবহানাল্লাহ! তিনি ব্যতীত অন্য কেউ এরূপভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বেমেছাল সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়নি। এবং অন্য কারো পক্ষে এটা সম্ভবও হয়নি। সুবহানাল্লাহ! এক দিনের কথা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য সম্মানিত হেরা গুহা মুবারক-এ সম্মানিত খাবার মুবারক নিয়ে আসছিলেন, তখন স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজে উনার জন্য সুসংবাদ মুবারক প্রেরণ করেন। যেটা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে এসেছে,
عَنْ حَضْرَتْ اَبِـىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ اَتٰى حَضْرَتْ جِبْرِيْلُ عَلَيْهِ السَّلَامُ النَّبِـىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ هٰذِهٖ اُمُّ الْـمُؤْمِنِيْنَ الْاُوْلـٰى سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اَلْكُبْرٰى عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ خَدِيـْجَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ) قَدْ اَتَتْ مَعَهَا اِنَاءٌ فِيْهِ اِدَامٌ وَّطَعَامٌ فَاِذَا اَتَتْكَ فَاقْرَأْ عَلَيْهَا السَّلَامَ مِنْ رَّبّـِهَا وَمِنِّـىْ وَبَشِّرْهَا بِبَيْتٍ فِـى الْـجَنَّةِ مِنْ قَصَبٍ لَّا صَخَبَ فِيْهِ وَلَا نَصَبَ.
অর্থ: হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ এসে বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! এই যে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি একটি পাত্র মুবারক নিয়ে আপনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নিচ্ছেন। এই সম্মানিত পাত্র মুবারক-এ তরকারি মুবারক এবং খাদ্য মুবারক রয়েছেন। তিনি যখন আপনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নিবেন, তখন আপনি উনাকে উনার রব মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে এবং আমার (অর্থাৎ আমি হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম উনার) পক্ষ থেকে সালাম জানাবেন। আর উনাকে সম্মানিত জান্নাত মুবারক উনার মধ্যে মুক্তাখচিত এমন একটি সম্মানিত প্রাসাদ তথা সম্মানিত বালাখানা মুবারক সম্পর্কে সুসংবাদ মুবারক প্রদান করবেন, যেখানে কোনো শোরগোল নেই, কোনো ক্লান্তি তথা কষ্ট-ক্লেশ নেই।” সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, মিশকাত শরীফ)
তাহলে এখান থেকেই স্পষ্ট হয়ে যায় যে, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি কতো বেমেছালভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়েছেন যে, উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ খুশি হয়ে স্বয়ং যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজেই উনাকে সম্মানিত সালাম মুবারক জানিয়েছেন এবং উনাকে সম্মানিত জান্নাত মুবারক উনার সম্মানিত সুসংবাদ মুবারক হাদিয়া মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
শি‘আবে আবী ত্বালিবের কথা। যখন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি সেখানে সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নেন, তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বয়স মুবারক ছিলেন প্রায় ৬১ বছর। শি‘আবে আবী ত্বালিবে কাফির-মুশরিকরা খাবার পৌঁছাতে বাধা সৃষ্টি করে। তাদের বাধার কারণে সেখানে সাধারণত খাবার পৌঁছতো না বিধায় হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের এরূপ অবস্থা হয়েছিলো যে, উনারা খাদ্য হিসেবে গাছের লতা-পাতা, ছাল-বাকল পর্যন্ত খেয়েছিলেন। এমনকি উনারা চামড়ার না’লাঈন শরীফ (জুতা মুবারক) পানিতে সিদ্ধ করে চিবিয়েছেন। গাছের লতা-পাতা, ছাল-বাকল খাবার হিসেবে গ্রহণ করার ফলে উনাদের ইস্তিঞ্জা মুবারক বকরীর লেদের মত হয়ে গিয়েছিলো। সুবহানাল্লাহ! ক্ষুধার্ত শিশু উনাদের কান্না মুবারক-এ আশে-পাশের লোকেরা রাতে ঘুমাতে পারতো না। এই কঠিন পরিস্থিতিতেও মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি শি‘আবে আবী ত্বালিবে ৩ বছর সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি তখন কখনও কখনও সম্মানিত মারীদ্বী শান মুবারক (অসুস্থতা মুবারক) প্রকাশ করতেন এবং কখনও কখনও সম্মানিত ছিহ্হাতী শান মুবারক (সুস্থতা মুবারক) প্রকাশ করতেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি কিন্তু অনেক সম্পদশালিনী ছিলেন, তিনি ইচ্ছা করলে পারতেন, শি‘আবে আবী ত্বালিবে না যেয়ে সুখ-শান্তিতে সম্মানিত অবস্থান মুবারক করতে। কিন্তু তিনি সেটা করেননি। দুনিয়াবী দৃষ্টিতে উনার এতো অধিক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বয়স মুবারক হওয়া সত্ত্বেও তিনি শি‘আবে আবী ত্বালিবে দীর্ঘ ৩ বছর সম্মানিত অবস্থান মুবারক করে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বেমেছাল সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! তাহলে তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কতটুকু সম্মানিত মুহব্বত মুবারক করেছেন, উনার কতটুকু সম্মানিত তা’যীম-তাকরীম মুবারক করেছেন, উনার কতটুকু সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়েছেন, সেটা সমস্ত জিন-ইনসান তামাম কায়িনাতবাসীর চিন্তা-কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক বর্ণনা
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নবী-রসূল হিসেবে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হিসেবে এবং হাবীবুল্লাহ হিসেবে সৃষ্টি মুবারক হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! দুনিয়াবী দৃষ্টিতে যখন উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বয়স মুবারক ৪০ বছর, তখন আনুষ্ঠানিকভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নুবুওওয়াত এবং রিসালাত মুবারক প্রকাশ পান। উনার প্রতি আনুষ্ঠানিভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ওহী মুবারক নাযিল হন। মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে হযরত জিবরাঈল আলাইহিস সালাম তিনি (সম্মানিত হেরা গুহা মুবারক-এ) নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ওহী মুবারক নিয়ে আসেন। সুবহানাল্লাহ! এখন এই বিষয়টা উম্মতকে বুঝানোর জন্য নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত হেরা গুহা মুবারক থেকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হুজরা শরীফ-এ এসে বিষয়টা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার নিকট প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! এখন বিষয়টি অত্যন্ত কঠিন একটি বিষয়। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি একজন উম্মত। এখন বিষয়টা মানুষের জন্য বিশ্বাস করার বিষয় এবং ইস্তিক্বামত থাকার বিষয়। কিন্তুমহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি বিষয়টা শুনার পর কোনো চিন্তিত হননি, বিচলিত হননি, কোনো প্রকার ঘাবড়াননি। তিনি অত্যন্ত স্বাভাবিকভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে এই বলে সান্তনা মুবারক দিলেন যে, চিন্তার কোন কারণ নেই ইয়া রসূলাল্লাহ! ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! এই বিষয়টা যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে আপনার উপর নাযিল করা হয়েছে। সুবহানাল্লাহ! কারণ আপনার জন্য কোনো দিন কোনো খারাপী হবে না। আপনি তো সব সময় মানুষের উপকার করে থাকেন। সুবহানাল্লাহ! ইত্যাদি ইত্যাদি নিজ থেকে বলে উল্টো তিনি সান্তনা মুবারক দিলেন। সুবহানাল্লাহ! এবং তিনি বিষয়টি তাছদীক্ব করার জন্য উনার সম্মানিত চাচাতো ভাই হযরত ওরাক্বাহ ইবনে নাওফিল রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু যিনি পূর্ববর্তী সম্মানিত আসমানী কিতাবের উপর অত্যন্ত দক্ষ ছিলেন উনার কাছে যাওয়ার প্রস্তাব মুবারক দিলেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি বললেন, চলুন, আমরা সেখানে যাই। মূলত, এটা হচ্ছে উম্মতকে শিক্ষা দেয়ার জন্য। সুবহানাল্লাহ! উনারা সেখানে গেলেন। হযরত ওরাক্বাহ বিন নাওফিল রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুস সালাম মুবারক-এ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র জবান মুবারক-এ) বিষয়টি শুনে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বললেন, “যিনি আপনার নিকট এসেছেন তিনি হচ্ছেন হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম এবং আপনি হচ্ছেন আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। সুবহানাল্লাহ! কাজেই এটা সম্মানিত ওহী মুবারক উনার বহিঃপ্রকাশ মুবারক ঘটেছে। সুবহানাল্লাহ! আপনার নিকট আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত ওহী মুবারক নাযিল হয়েছে। সুবহানাল্লাহ! উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি বিষয়টা তাছদীক্ব করলেন। তিনি কিন্তু বিচলিত হতে পারতেন, চিন্তিত হতে পারতেন, ভয় পেতে পারতেন, অনেক কিছু করতে পারতেন। কিন্তু তিনি উল্টা বিষয়গুলো এতো স্বাভাবিকতার সাথে, ইতমিনানের সাথে গ্রহণ করলেন এবং জবাব দিলেন, যেটা ঠিক যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার যেন সরাসরি ক্বায়িম-মাক্বাম। সুবহানাল্লাহ! এটা অত্যন্ত সূক্ষ্ম বিষয়, ফিকিরের বিষয়। সুবহানাল্লাহ!
তাহলে উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কতো বেমেছালভাবে সম্মানিত তা’যীম-তাকরীম মুবারক করেছেন, উনার সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করেছেন, উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়েছেন, সেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম-কায়িনাবাসীর চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ اُمِّ الْمُؤْمِنِيْنَ الثَّالِثَةِ سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ اَلصِّدِّيْقَةِ عَلَيْهَا السَّلَامُ )سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ عَائِشَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ( قَالَتْ بَيْنَا رَأْسُ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِـىْ حِجْرِىْ فِـىْ لَيْلَةٍ ضَاحِيَةٍ اِذْ قُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ هَلْ يَكُوْنُ لِاَحَدٍ مِّنَ الْـحَسَنَاتِ عَدَدُ نُـجُوْمِ السَّمَاءِ قَالَ نَعَمْ حَضْرَتْ عُمَرُ عَلَيْهِ السَّلَامُ قُلْتُ فَاَيْنَ حَسَنَاتُ حَضْرَتْ اَبِـىْ بَكْرٍ عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ اِنَّـمَا جَمِيْعُ حَسَنَاتِ حَضْرَتْ عُمَرَ عَلَيْهِ السَّلَامُ كَحَسَنَةٍ وَّاحِدَةٍ مِّنْ حَسَنَاتِ حَضْرَتْ اَبِـىْ بَكْرٍ عَلَيْهِ السَّلَامُ.
অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক জ্যোস্নার রাতে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমার সম্মানিত কোল মুবারক-এ সম্মানিত মাথা মুবারক রেখে শুয়ে ছিলেন। আমি বললাম, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! কারো কি আকাশের তারকার সমপরিমাণ নেকী মুবারক রয়েছে? তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, হ্যা, ফারূক্বে আ’যম হযরত উমর ইবনুল খত্তাব আলাইহিস সালাম উনার আকাশের তারকার সমপরিমাণ নেকী মুবারক রয়েছে। সুবহানাল্লাহ! তখন আমি বললাম, তাহলে ছিদ্দীক্বে আকবর সাইয়্যিদুনা হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত নেকী মুবারক উনার পরিমাণ কত? জবাবে নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, নিশ্চয়ই সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার জিন্দেগীর সমস্ত নেকী মুবারক হচ্ছে সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার একখানা সম্মানিত নেকী মুবারক উনার সমান।” সুবহানাল্লাহ! (রযীন শরীফ, জামিউল উছূল শরীফ লিইবনে আছীর, মিশকাত শরীফ)
আর তাহচ্ছে আফদ্বালুন নাস বা’দাল আম্বিয়া, ছিদ্দীক্বে আকবর সাইয়্যিদুনা হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম তিনি সম্মানিত হিজরত মুবারক উনার সময় সম্মানিত সাওর গুহা মুবারক-এ চার দিন তিন রাত্রি মুবারক নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়ে যেই নেকী মুবারক অর্জন করেছিলেন, সেই সম্মানিত নেকী মুবারক। সেই সম্মানিত খেদমত মুবারকখানা হচ্ছেন, সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার জিন্দেগীর সমস্ত নেকী মুবারক উনার সমান। সুবহানাল্লাহ!
উল্লেখ্য, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১লা রবী‘উল আউওয়াল শরীফ লাইলাতুল খমীস শরীফ ফজরের পূর্বে সম্মানিত হেরা গুহা মুবারক-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক রাখেন এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ৫ই রবী‘উল আউওয়াল শরীফ লাইলাতুল ইছনাইনিল ‘আযীম শরীফ অন্ধকার হওয়ার সাথে সাথে সেখান থেকে বের হন। সুবহানাল্লাহ!
এখন বলার বিষয় হচ্ছে যে, যদি সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি সম্মানিত হিজরত মুবারক উনার সময় সম্মানিত সাওর গুহা মুবারক-এ চার দিন তিন রাত্রি মুবারক নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়ে এতো বেমেছাল নেকী মুবারক অর্জন করেন যে, সেই সম্মানিত নেকী মুবারক সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার জিন্দেগীর সমস্ত নেকী মুবারক উনার সমান হয়। সুবহানাল্লাহ! তাহলে উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি যে, একাধারে ২৪ বছর ৪ মাস ২৫ দিন বেমেছালভাবে সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিলেন, যার কোন মেছাল নেই, পৃথিবীর ইতিহাসে কারো পক্ষে এরূপ বেমেছাল সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়া সম্ভব হয়নি, আর হবেও না। তাহলে উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত নেকী মুবারক উনার পরিমাণ কতো সীমাহীন হবেন, সেটা জিন-ইনসানের চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ! যদি তাই হয়ে থাকে, তাহলে উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কতো বেমেছাল, তা কেউ ভাষা দিয়ে প্রকাশ করতে পারবে? কস্মিনকালেও নয়। সুবহানাল্লাহ! সেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
اِنَّ النَّبِىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَمَّا اُسْرِىَ بِهٖ لَيْلَةَ الْمِعْرَاجِ اِلَى السَّمٰوَاتِ الْعُلـٰى وَوَصَلَ اِلَى الْعَرْشِ الْمُعَلّٰى اَرَادَ خَلْعَ نَعْلَيْهِ اَخْذًا مِّـنْ قَوْلِهٖ تَعَالـٰى لِسَيِّدِنَا حَضْرَتْ مُوْسٰى عَلَيْهِ السَّلَامُ حِيْنَ كَلَّمَهٗ فَاخْلَعْ نَعْلَيْكَ اِنَّكَ بِالْوَادِ الْمُقَدَّسِ طُوًى. فَنُوْدِىَ مِنَ الْعَـلِـىِّ الْاَعْلـٰى يَا حَضْرَتْ مُـحَمَّدُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا تَـخْلَعْ نَعْلَيْكَ فَاِنَّ الْعَرْشَ يَتَشَرَّفُ بِقُدُوْمِكَ مُتَنَعِّـلًا وَّيَفْتَخِرُ عَلـٰى غَيْرِهٖ مُتَـبَـرِّكًـا فَصَعِدَ النَّبِىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِلَى الْعَرْشِ وَفِىْ قَدَمَيْهِ النَّعْلَانِ وَحَصَلَ لَهٗ بِذٰلِكَ عِزٌّ وَّشَأْنٌ.
অর্থ: “সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিইয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন সম্মানিত মি’রাজ শরীফ উনার রাতে সুউচ্চ সপ্ত আসমান অতিক্রম করে সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক উনার নিকটবর্তী হলেন, তখন তিনি উনার সম্মানিত ও পবিত্র না’লাইন শরীফ খুলে সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নেয়ার চিন্তা মুবারক করলেন। মহান আল্লাহ পাক উনার ওই সম্মানিত ও পবিত্র কালাম মুবারক ফিকির মুবারক করে, যেটা মহান আল্লাহ পাক তিনি (যখন সাইয়্যিদুনা হযরত কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি তূর পাহাড়ে মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে কথা বলার জন্য তাশরীফ মুবারক রাখবেন, তখন) হযরত কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে উদ্দেশ্য করে ইরশাদ মুবারক করেছিলেন-
فَاخْلَعْ نَعْلَيْكَ اِنَّكَ بِالْوَادِ الْمُقَدَّسِ طُوًى.
‘আপনি আপনার সম্মানিত না’লাইন শরীফ খুলুন। কেননা আপনি সম্মানিত (তূর পাহাড়ের) পবিত্র তুয়া উপত্যকায় তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করতে যাচ্ছেন। (সেখানে আমার সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক উনার ৭০ হাজার ভাগের এক ভাগ সম্মানিত নূর মুবারক বর্ষিত হয়েছেন। যার কারণে সেই স্থানটি সম্মানিত ও পবিত্র হয়ে গেছেন। সুবহানাল্লাহ! তাই আপনি সম্মানিত না’লাইন শরীফ খুলে আসুন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এই বিষয়টি ফিকির করে উনার সম্মানিত ও পবিত্র না’লাইন শরীফ খুলার চিন্তা মুবারক করেছিলেন মাত্র।) তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি সম্মানিত ওহী মুবারক করলেন, হে আমার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! দয়া করে আপনি আপনার সম্মানিত ও পবিত্র না’লাইন শরীফ খুলবেন না। অর্থাৎ আপনি আপনার সম্মানিত ও পবিত্র না’লাইন শরীফসহ আমার সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করুন। সুবহানাল্লাহ! কেননা আমার সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক আপনার সম্মানিত ও পবিত্র না’লাইন শরীফ উনাদের পরশ মুবারক-এ, আপনার সম্মানিত ও পবিত্র না’লাইন শরীফ উনাদের সম্মানিত ও পবিত্র ধূলি-বালি মুবারক উনাদের স্পর্শ মুবারক-এ ধন্য হবেন, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক হাছিল করবেন। সুবহানাল্লাহ! (শুধু তাই নয়,) আমার সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক আপনার সম্মানিত ও পবিত্র না’লাইন শরীফ উনাদের সম্মানিত স্পর্শ মুবারক পাওয়ার কারণে, আপনার সম্মানিত ও পবিত্র না’লাইন শরীফ উনাদের সম্মানিত ও পবিত্র ধূলি-বালি মুবারক লাভ করে বরকতময় হয়ে আরো পবিত্রতা হাছিল করবেন এবং অন্য সবার উপর ফখর করবেন। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত ও পবিত্র না’লাইন শরীফ পরিধান মুবারক করা অবস্থাতেই সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করলেন। আর সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত ও পবিত্র না’লাইন শরীফ উনাদের সম্মানিত স্পর্শ মুবারক লাভ করে, সম্মানিত ও পবিত্র না’লাইন শরীফ উনাদের সম্মানিত ও পবিত্র ধূলি-বালি মুবারক পেয়ে ইজ্জত-সম্মান, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক হাছিল করলেন।” সুবহানাল্লাহ! (ফাতহুল মুত‘য়াল ফী মাদহি খইরিন নি‘য়াল শরীফ)
অনুরূপ বর্ণনা দশম হিজরী শতকের মুজাদ্দিদ হযরত ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূত্বী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘ই’জাযুল কুরআন শরীফ’ উনার মধ্যে উল্লেখ করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
এখন বলার বিষয় হচ্ছে, হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি হচ্ছেন একজন জলীলুল ক্বদর নবী এবং রসূল। সুবহানাল্লাহ! যদি কিতাব হিসেবে ধরা হয়, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিষয়টি আলাদা। এছাড়া অন্যান্য সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্যে হযরত কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি হচ্ছেন প্রথম। সুবহানাল্লাহ! আর উনাকেই তূর পাহাড়ে যেতে হয়েছিলো উনার সম্মানিত না’লাইন শরীফ খুলে। কেননা সেখানে সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক উনার সত্তর হাজার ভাগের এক ভাগ নূর মুবারক যাহির হয়েছিলো। অন্যদিকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সরাসরি স্পর্শ মুবারক পেয়েছেন উনার সম্মানিত ও পবিত্র না’লাইন শরীফ। আর সম্মানিত ও পবিত্র না’লাইন শরীফ উনাদের স্পর্শ মুবারক পেয়েছে ধূলি-বালি। ফলে ধূলি-বালি এতো পবিত্রতা, ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক হাছিল করলেন যে, সম্মানিত মি’রাজ শরীফ উনার রজনীতে স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক উনার মূল সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক সেই সম্মানিত ও পবিত্র ধূলি-বালি মুবারক লাভ করার জন্য বেক্বারার-পেরেশান হয়ে গেলেন। সুবহানাল্লাহ! শুধু তাই নয়, সম্মানিত ও পবিত্র না’লাইন শরীফ উনাদের সম্মানিত ও পবিত্র ধূলি-বালি মুবারক পেয়ে স্বয়ং সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক ধন্য হলেন, মর্যাদা-মর্তবা মুবারক হাছিল করলেন, সম্মানিত হলেন, বরকতময় হলেন এবং আরো পবিত্রতা হাছিল করলেন; এমনকি এই কারণে অন্য সকলের উপর ফখর করলেন। সুবহানাল্লাহ! যদি এই বিষয়টি এরূপ হয়, তাহলে উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি যে একাধারে ২৪ বছর ৪ মাস ২৫ দিন সরাসরি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত ছোহবত মুবারক-এ থাকলেন, উনার সাথে অবস্থান মুবারক করলেন এবং বেমেছালভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিলেন, আর উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সরাসরি স্পর্শ মুবারক-এ যে ধূলি-বালি এসেছেন, সেই সম্মানিত ও পবিত্র ধূলি-বালি মুবারক উনাদের ফযীলত, মর্যাদা, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক ও পবিত্রতা মুবারক উনার হুকুম কী? অবশ্যই অবশ্যই সেই সম্মানিত ও পবিত্র ধূলি-বালি মুবারক উনাদের ফযীলত, মর্যাদা, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক ও পবিত্রতা মুবারকও আসমান-যমীন, সম্মানিত কা’বা শরীফ, সম্মানিত কুরসী শরীফ এবং মহান আল্লাহ পাক উনার আরশে আযীম মুবারক থেকেও লক্ষ-কোটিগুণ বেশি হবে। সুবহানাল্লাহ! শুধু তাই নয়, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত ও পবিত্র না’লাইন শরীফ উনাদের ধূলি-বালি মুবারক পেয়ে সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক যেরূপ ধন্য হয়েছিলেন, মর্যাদা-মর্তবা হাছিল করেছিলেন, সম্মানিত হয়েছিলেন, বরকতময় হয়েছিলেন এবং আরো পবিত্রতা হাছিল করেছিলেন, উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সরাসরি স্পর্শ মুবারক পেয়েছেন যে ‘সম্মানিত ও পবিত্র ধূলি-বালি মুবারক’ সেই সম্মানিত ও পবিত্র ধূলি-বালি মুবারক পেলেও মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক আরো লক্ষ-কোটি গুণ বেশি ধন্য হবেন, মর্যাদা-মর্তবা মুবারক হাছিল করবেন, সম্মানিত হবেন, বরকতময় হবেন এবং পবিত্রতা হাছিল করবেন। সুবহানাল্লাহ! আরো স্পষ্টভাবে বলতে গেলে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত ও পবিত্র না’লাইন শরীফ উনাদের সম্মানিত ও পবিত্র ধূলি-বালি মুবারক পেয়ে সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক যেমনিভাবে আরো পবিত্রতা হাছিল করেছেন, সম্মানিত ও বরকতময় হয়েছেন এবং সকলের উপর ফখর করেছেন, তেমনিভাবে উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত ও পবিত্র না’লাইন শরীফ উনাদের সম্মানিত ও পবিত্র ধূলি-বালি মুবারক পেলেও সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক আরো পবিত্রতা হাছিল করবেন, সম্মানিত ও বরকতময় হয়ে যাবেন এবং সকলের উপর ফখর করবেন। সুবহানাল্লাহ! যদি তাই হয়, তাহলে উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কতো বেমেছাল, সেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ! তিনি শুধু যিনি খ¦ালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া যত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক রয়েছেন, সমস্ত কিছুর অধিকারিণী হচ্ছেন তিনি। সুবহানাল্লাহ!
এই বিষয়গুলো কিন্তু শুধু যাঁরা হাক্বীক্বী ঈমানদার একমাত্র উনারাই বুঝবেন, উপলব্ধি করবেন এবং বীনা চূ-চেরা, ক্বীল-ক্বালে মেনে নিবেন। কিন্তু যারা মুনাফিক্ব তারা এই বিষয়গুলো কস্মিনকালেও বুঝবে না, উপলব্ধি করার তো প্রশ্নোই উঠে না; বরং নানা চূ-চেরা, ক্বীল-ক্বাল করবে। না‘ঊযুবিল্লাহ!
এই প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
وَلِلّٰهِ الْعِزَّةُ وَلِرَسُوْلِهٖ وَلِلْمُؤْمِنِيْنَ وَلٰكِنَّ الْمُنٰفِقِيْنَ لَا يَعْلَمُوْنَ
অর্থ: “সমস্ত ইজ্জত তথা শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক একমাত্র যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার (এবং উনার মহাসম্মানিত হযরত আব্বা আলাইহিস সালাম উনার এবং মহাসম্মানিতা হযরত আম্মা আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের, মহাসম্মানিতা হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের) জন্য এবং (উনাদের সাথে নিসবত স্থাপন করার কারণে) মু’মিনীন উনাদের জন্য। সুবহানাল্লাহ! কিন্তু মুনাফিক্বরা তা জানে না, বুঝে না।” (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা মুনাফিকূন শরীফ: সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৮)
হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের সম্মানিত পরিচিতি মুবারক
اُمَّهَاتٌ (উম্মাহাত) শব্দ মুবারকখানা اُمٌّ (উম্মুন) শব্দ মুবারক উনার বহুবচন। অর্থ মাতাগণ। আর اَلْمُؤْمِنِيْنَ (আল মু’মিনীন) শব্দ মুবারকখানা اَلْمُؤْمِنُ (আল মু’মিন) শব্দ মুবারক উনার বহুবচন। অর্থ মু’মিনগণ। আর اَلْمُؤْمِنِيْنَ (আল মু’মিনীন) শব্দ মুবারক উনার শুরুতে যে ال (আলিফ লাম) রয়েছে, তা হচ্ছে ال (আলিফ লামে) ইস্তিগরক্বী।
সুতরাং উম্মাহাতুল মু’মিনীন উনার অর্থ হচ্ছেন সমস্ত মু’মিন উনাদের মহাসম্মানিতা মাতাগণ। সুবুহানাল্লাহ! অর্থাৎ সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারাসহ সৃষ্টির শুরু থেকে এ পর্যন্ত যত মু’মিন দুনিয়ার যমীনে এসেছেন এবং ক্বিয়ামত পর্যন্ত যত মু’মিন দুনিয়ার যমীনে আসবেন উনাদের প্রত্যেকেরই মহাসম্মানিতা মাতা হচ্ছেন হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা যেহেতু একমাত্র যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা ব্যতীত সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারাসহ সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের মহাসম্মানিতা মাতা আলাইহিন্নাস সালাম, তাই উনাদেরকে ‘উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম’ বলা হয়। সুবহানাল্লাহ!
এ বিষয়টি স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ নাযিল করে হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের শান মুবারক সম্পর্কে হাক্বীক্বী ফায়ছালা মুবারক করে দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
اَلنَّبِـىُّ اَوْلـٰى بِالْمُؤْمِنِيْنَ مِنْ اَنْفُسِهِمْ وَاَزْوَاجُهۤٗ اُمَّهٰتُهُمْ.
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা মু’মিন উনাদের নিকট উনাদের জানের চেয়ে অধিক প্রিয় এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন সমস্ত সৃষ্টির মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র পিতা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা হচ্ছেন সমস্ত সৃষ্টির মহাসম্মানিত মাতা আলাইহিন্নাস সালাম।” (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৬)
হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা কতো জন এ নিয়ে অনেকেই অনেক ইখতিলাফ করেছেন। আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সমস্ত ইখতিলাফকে মিটিয়ে দিয়ে ইরশাদ মুবারক করেন যে, হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা ছিলেন মোট ১৩ জন। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নেয়ার মুবারক ধারাবাহিকক্রম অনুযায়ী উনাদের সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক হচ্ছেন-
১. উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা (হযরত খাদীজা) আলাইহাস সালাম।
২. উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ (হযরত সাওদাহ বিনতে যাম‘আহ) আলাইহাস সালাম,
৩. উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ (হযরত আয়িশা) আলাইহাস সালাম।
৪. উম্মুল মু’মিনীন আর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ইবনাতু আবীহা (হযরত হাফছাহ) আলাইহাস সালাম।
৫. উম্মুল মু’মিনীন আল খামিসাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন (হযরত যাইনাব বিনতে খুযাইমাহ) আলাইহাস সালাম।
৬. উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আস সাদিসাহ (হযরত উম্মু সালামাহ বিনতে আবী উমাইয়্যাহ) আলাইহাস সালাম।
৭. উম্মুল মু’মিনীন আস সাবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত আত্বওয়ালু ইয়াদান (হযরত যাইনাব বিনতে জাহ্শ) আলাইহাস সালাম।
৮. উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ (হযরত জুওয়াইরিয়া বিনতে হারিছ) আলাইহাস সালাম।
৯. উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আত তাসি‘য়াহ (হযরত রায়হানাহ বিনতে শাম‘ঊন) আলাইহাস সালাম।
১০. উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরাহ (হযরত ছফিয়্যাহ বিনতে হুইয়াই বিনতে আখত্বব) আলাইহাস সালাম।
১১. উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল হাদিয়াহ ‘আশার (হযরত উম্মু হাবীবাহ বিনতে আবী সুফিয়ান) আলাইহাস সালাম।
১২. উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ ‘আশার (হযরত মারিয়াহ ক্বিবতিয়াহ) আলাইহাস সালাম।
১৩. উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ ‘আশার (হযরত মাইমূনাহ বিনতে হারিছ) আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!মুহম্মদ আল আমীন।
হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা ব্যতীত সমস্ত কায়িনাতের মহাসম্মানিতা মাতা আলাইহিন্নাস সালাম
যিনি খালিক্ব¡ মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
اَلنَّبِـىُّ اَوْلـٰى بِالْمُؤْمِنِيْنَ مِنْ اَنْفُسِهِمْ وَاَزْوَاجُهۤٗ اُمَّهٰتُهُمْ.
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা মু’মিন উনাদের নিকট উনাদের জানের চেয়ে অধিক প্রিয় এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন সমস্ত সৃষ্টির মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র পিতা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা হচ্ছেন সমস্ত সৃষ্টির মহাসম্মানিত মাতা আলাইহিন্নাস সালাম।” (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৬)
আলোচ্য সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে اَوْلـٰى শব্দ মুবারকখানা ব্যবহার করা হয়েছে। আর اَوْلـٰى শব্দ মুবারক উনার একখানা অর্থ মুবারক হচ্ছেন ‘পিতা’। অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন সমস্ত মু’মিন উনাদের মহাসম্মানিত পিতা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। সুবহানাল্লাহ!
এ সম্পর্কে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَبِـىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰـى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنَّـمَا اَنَا لَكُمْ بِـمَنْزِلَةِ الْوَالِدِ.
অর্থ: “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমি তোমাদের পিতার ক্বায়িম মাক্বাম তথা মহাসম্মানিত পিতা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।” সুবহানাল্লাহ! (আবূ দাঊদ শরীফ)
হযরত উবাই ইবনে কা’ব রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বলেন, পূর্ববর্তী সমস্ত আসমানী কিতাব মুবারকসমূহে রয়েছে,
اَلنَّبِـىُّ اَوْلـٰى بِالْمُؤْمِنِيْنَ مِنْ اَنْفُسِهِمْ وَهُوَ اَبٌ لَّـهُمْ وَاَزْوَاجُهۤٗ اُمَّهٰتُهُمْ
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা মু’মিন উনাদের নিকট উনাদের জানের চেয়ে অধিক প্রিয় এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন সমস্ত সৃষ্টির মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র পিতা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা হচ্ছেন সমস্ত সৃষ্টির মহাসম্মানিত মাতা আলাইহিন্নাস সালাম।” (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৬)
সুতরাং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন সমস্ত মু’মিন উনাদের মহাসম্মানিত পিতা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আর হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা হচ্ছেন সমস্ত মু’মিন উনাদের মহাসম্মানিতা মাতা আলাইহিন্নাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
সেটাই আলোচ্য সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে স্পষ্ট ভাষায় বলা হয়েছে-
وَاَزْوَاجُهۤٗ اُمَّهٰتُهُمْ
অর্থ: “আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিতা ‘আযওয়াজুম মুত্বহ্হারাত’ তথা হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা হচ্ছেন সমস্ত মু’মিন উনাদের মহাসম্মানিতা মাতা আলাইহিন্নাস সালাম।” সুবহানাল্লাহ!
কাজেই, এ কথা আর বলার অপেক্ষাই রাখে না যে, হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা যেহেতু সমস্ত মু’মিন উনাদের মহাসম্মানিতা মাতা আলাইহিন্নাস সালাম, তাই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন সমস্ত মু’মিন উনাদের মহাসম্মানিত পিতা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। সুবহানাল্লাহ!
এই সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে মু’মিন বলতে একমাত্র যিনি খালিক্ব¡ মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ব্যতীত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারাসহ সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলেই উদ্দেশ্য। সুবহানাল্লাহ! উনারা সকলেই মু’মিন। উনারা প্রত্যেকেই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি সম্মানিত ঈমান মুবারক এনেছেন। সুবহানাল্লাহ! কোনো হযরত নবী আলাইহিস সালাম উনাকে সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক দেয়া হয়নি, কোনো হযরত রসূল আলাইহিস সালাম উনাকে সম্মানিত রিসালাত মুবারক দেয়া হয়নি; যতক্ষণ পর্যন্ত না উনারা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি সম্মানিত ঈমান মুবারক এনেছেন। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি সম্মানিত ঈমান মুবারক আনার পরেই মহান আল্লাহ পাক তিনি সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে সম্মানিত নুবুওওয়াত ও রিসালাত মুবারক হাদিয়া মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ! এ প্রসঙ্গে স্বয়ং যিনি খালিক্ব¡ মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَاِذْ اَخَذَ اللهُ مِيْثَاقَ النَّبِـيّٖنَ لَمَاۤ اٰتَيْتُكُمْ مِّنْ كِتٰبٍ وَّحِكْمَةٍ ثُـمَّ جَآءَكُمْ رَسُوْلٌ مُّصَدِّقٌ لِّـمَا مَعَكُمْ لَتُؤْمِنُنَّ بِهٖ وَلَتَنْصُرُنَّهٗ قَالَ ءَاَقْرَرْتُـمْ وَاَخَذْتُـمْ عَلـٰى ذٰلِكُمْ اِصْرِىْ قَالُوْاۤ اَقْرَرْنَا قَالَ فَاشْهَدُوْا وَاَنَا مَعَكُمْ مِّنَ الشّٰهِدِيْنَ. فَمَنْ تَوَلّٰى بَعْدَ ذٰلِكَ فَاُولٰٓـئِكَ هُمُ الْفٰسِقُوْنَ.
অর্থ: “আর (আমার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি স্মরণ করুন ঐ সময়ের কথা) যখন মহান আল্লাহ পাক তিনি সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের থেকে অঙ্গীকার মুবারক গ্রহণ করলেন যে, আপনাদেরকে সম্মানিত কিতাব মুবারক ও হিকমত মুবারক দেয়া হবে। অতঃপর আপনাদের নিকট একজন মহাসম্মানিত রসূল তথা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করবেন এবং তিনি আপনাদেরকে ও আপনাদের কাছে যা কিছু রয়েছে সমস্ত কিছুর তাছদীক্ব বা সত্যায়ন করবেন। আপনারা অবশ্যই অবশ্যই উনার প্রতি সম্মানিত ঈমান মুবারক আনবেন এবং উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিবেন। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, আপনারা কি তা স্বীকার করে নিলেন এবং এ মর্মে আমার সম্মানিত ওয়াদা মুবারক গ্রহণ করলেন? উনারা বললেন, আমরা স্বীকার করে নিলাম। মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, তাহলে আপনারা সকলে সাক্ষী থাকুন এবং আমিও আপনাদের সাথে সাক্ষী রইলাম। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর যে এই সম্মানিত ওয়াদা মুবারক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে অর্থাৎ ওয়াদা মুবারক উনার খিলাফ করবে, তারাই হচ্ছে ফাসিক্ব তথা চরম নাফরমান, কাট্টা কাফির।” না‘ঊযুবিল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আল ইমরান শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৮১-৮২)
কাজেই, হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা হচ্ছেন একমাত্র মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা ব্যতীত সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারাসহ সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িানাতবাসী সকলেরই মহাসম্মানিতা মাতা আলাইহিন্নাস সালাম। সুবহানাল্লাহ! আর এ কারণেই মহান আল্লাহ পাক তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের পর হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে বিবাহ করা সকলের জন্য হারাম ঘোষণা করে দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَمَا كَانَ لَكُمْ اَنْ تُؤْذُوْا رَسُوْلَ اللهِ وَلَاۤ اَنْ تَنْكِحُوْاۤ اَزْوَاجَهٗ مِنْۢ بَعْدِهٖۤ اَبَدًا اِنَّ ذٰلِكُمْ كَانَ عِنْدَ اللهِ عَظِيْمًا.
অর্থ: “আর মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কষ্ট দেয়া এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের পর উনার মহাসম্মানিতা আযওয়াজুম মুত্বহ্হারাত (হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম) উনাদেরকে বিবাহ করা তোমাদের জন্য কস্মিনকালেও জায়িয নেই। নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট এটা অনেক বড় অপরাধ।” (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৩)
কাজেই, উপরোক্ত দলীল-আদিল্লাহ মুবারক দ্বারা অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হলো যে, হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা হচ্ছেন একমাত্র যিনি খালিক্ব¡ মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা ব্যতীত সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারাসহ সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িানাতবাসী সকলেরই মহাসম্মানিতা মাতা আলাইহিন্নাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
সুতরাং হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের সম্মানিত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক এক কথায়, উনারা শুধু যিনি খালিক্ব¡ মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া যত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক রয়েছেন, সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারিণী হচ্ছেন উনারা। সুবাহানাল্লাহ! উনারা সমস্ত কিছুর মূল এবং মালিক। সুবহানাল্লাহ! উনারা হযরত নবী ও রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদেরও মহাসম্মানিতা মাতা আলাইহিন্নাস সালাম অর্থাৎ উনারা উনাদেরও মূল এবং মালিক। সুবহানাল্লাহ!
উল্লেখ্য যে, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
اِنَّ الْـجَنَّةَ تَـحْتَ اَقْدَامِ اُمَّهَاتِكُمْ
অর্থ: “নিশ্চয়ই সম্মানিত জান্নাত মুবারক তোমাদের সম্মানিতা মাতা উনাদের পায়ের নীচে।” সুবহানাল্লাহ!
অপর বর্ণনায় এসেছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رِضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ النَّبِـىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَلْـجَنَّةُ تَـحْتَ اَقْدَامِ الْاُمَّهَاتِ.
অর্থ: “হযরত আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, সম্মানিত জান্নাত মুবারক সম্মানিতা মাতা উনাদের পায়ের নিচে।” সুবহানাল্লাহ! (জামি‘উছ ছগীর ১/৫৬৩, আল কুনা ওয়াল আসমা’ ৩/১০৯১, মুসনাদে শিহাব ১/১০২, আল জামি’ লিখত্বীব বাগদাদী ৪/৪৬১, আল ফাওয়াইদ লিআবী শায়েখ ইস্পাহানী ১/২৬, আত তারগীব ওয়াত তারহীব ১/২৮১, মূজিবাতুল জান্নাহ ১/১১০, ফায়যুল ক্বদীর ৩/৪৭৭, আদ দুররুল মুনতাছিরাহ লিস সুয়ূত্বী ১/৯, আল ফাতহুল কাবীর লিস সুয়ূত্বী ২/৬২, জামি‘উল আহাদীছ ১২/৮০, দায়লামী শরীফ ২/১১৬, কাশফুল খফা ১/৩৩৫, কানযুল ‘উম্মাল ১৬/৪৬১, জাম‘উল জাওয়ামি’ ১/১১৬০৭, ইহইয়াউ ‘উলূমিদ্দীন, মিরক্বাত শরীফ ইত্যাদি)
অর্থাৎ সন্তানদের সম্মানিত জান্নাত মুবারক সম্মানিতা মাতা উনাদের পায়ের নিচে। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত ও পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ অনুযায়ী হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা একমাত্র যিনি খালিক্ব¡ মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা ব্যতীত সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারাসহ সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলেরই মহাসম্মানিতা মাতা আলাইহিন্নাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
আর বর্ণিত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ অনুযায়ী যিনি খালিক্ব¡ মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা ব্যতীত সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারাসহ সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলেরই সম্মানিত জান্নাত মুবারক হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের সম্মানিত ও পবিত্র ক্বদম মুবারক উনাদের নিচে। সুবহানাল্লাহ!
সেটাই কিতাবে বর্ণিত রয়েছে যে, হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে একই সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ একই সাথে সম্মানিত অবস্থান মুবারক করবেন। সুবহানাল্লাহ! আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত জান্নাত মুবারক থাকবে সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত জান্নাত মুবারক থেকে অনেক উপরে। সুবহানাল্লাহ! এতো অধিক উপরে যে, সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত জান্নাত মুবারক থেকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত জান্নাত মুবারক এরূপ দেখা যাবে, যেমন দুনিয়ার যমীন থেকে আকাশে তারকাকে মিটমিট করে জ্বলতে দেখা যায়। সুবহানাল্লাহ! অনুরূপভাবে হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত জান্নাত মুবারক থাকবে উম্মতদের জান্নাত মুবারক থেকে অনেক উপরে। তাহলে এখান থেকেই স্পষ্ট হয়ে যায় যে, হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা একমাত্র যিনি খালিক্ব¡ মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা ব্যতীত সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারাসহ সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলেরই মহাসম্মানিতা মাতা আলাইহিন্নাস সালাম এবং উনাদেরই সম্মানিত ও পবিত্র ক্বদম মুবারক উনাদের নিচে সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলেরই সম্মানিত জান্নাত মুবারক। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা হচ্ছেন হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের নিকট সন্তানতুল্য। সুবহানাল্লাহ!
কাজেই, হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা কারো মুহতাজ নন; বরং সম্মানিত নুবুওওয়াত ও রিসালাত মুবারকসহ সমস্ত হযরত নবী ও রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা উনাদের মুহতাজ। সুবহানাল্লাহ! উনাদের কারণে সম্মানিত নুবুওওয়াত ও রিসালাত মুবারকসহ সমস্ত মাক্বামই সম্মানিত হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! তাহলে হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কতো বেমেছাল তা কেউ কস্মিনকালেও ভাষায় প্রকাশ করতে পারবে না, চিন্তা-কল্পনা করে মিলাতে পারবে না। সুবহানাল্লাহ!
সেটাই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
مَنْ قَبَّلَ رِجْلَ اُمِّهٖ فَكَاَنَّـمَا قَبَّلَ عَتَبَةَ الْـجَنَّةِ
অর্থ: “যে ব্যক্তি তার সম্মানিতা মাতা উনার পায়ে বুছা দিলো, সে যেন সম্মানিত জান্নাত মুবারক উনার চৌকাঠে বুছা দিলো।” সুবহানাল্লাহ! (র্দুরুল মুখতার ৬/৩৬৭, আল মাবসূত্ব ১২/৩৬৪, তাবঈনুল হাক্বাইক্ব ১৬/৩৭১, রদ্দুল মুহতার ২৬/৩৯২)
এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফদ্বয় থেকেও সুস্পষ্ট হয়ে যায় যে, হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কতো বেমেছাল। সুবহানাল্লাহ! উনারা শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা ব্যতীত সমস্ত কায়িনাতের মহাসম্মানিতা মাতা আলাইহিন্নাস সালাম। সুবহানাল্লাহ! একমাত্র সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ব্যতীত সমস্ত কায়িনাতবাসীর সম্মানিত জান্নাত মুবারক হচ্ছেন হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের সম্মানিত ও পবিত্র ক্বদম মুবারক উনাদের নিচে। সুবহানাল্লাহ! কাজেই, যিনি যতো বেশি হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে সন্তুষ্ট করতে পারবেন, উনাদের মুহব্বত-মা’রিফাত, তায়াল্লুক্ব-নিসবত মুবারক হাছিল করতে পারবেন, তিনি ততো বেশি মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের হাক্বীক্বী মুহব্বত-মা’রিফাত, নিসবত-কুরবত, রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক হাছিল করতে পারবেন। সুবহানাল্লাহ! তাহলে হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কতো বেমেছাল, সেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের চিন্তা ও কল্পনার ঊর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ! আর এ কারণেই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
عَنْ اِمَامِ الْاَوَّلِ سَيِّدِنَا حَضْرَتْ كَرَّمَ اللهُ وَجْهَهٗ عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ اِنَّ النَّبِـىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَقُوْلُ نَـحْنُ اَهْلُ بَيْتٍ طَهَّرَهُمُ اللهُ مِنْ شَجَرَةِ النُّبُوَّةِ وَمَوْضِعِ الرِّسَالَـةِ وَمُـخْتَلِفِ الْمَلَائِكَةِ وَبَيْتِ الرَّحْـمَةِ وَمَعْدِنِ الْعِلْمِ.
অর্থ: “ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত র্কারামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সবসময় ইরশাদ মুবারক করতেন, আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে (আমাদেরকে) সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক উনার বৃক্ষ, সম্মানিত রিসালাত মুবারক উনার স্থান, বিভিন্ন হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের, উনাদের দ্বারা সম্মানিত খিদমত মুবারক, সম্মানিত রহমত মুবারক উনার ঘর মুবারক এবং সম্মানিত ইলম মুবারক উনার খনি মুবারক (ইত্যাদি সমস্ত কিছু) থেকে পবিত্র রেখেছেন, ছমাদ তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী) করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ!অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা একমাত্র মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের মুহতাজ ও উনাদের সম্মানার্থে উনারা সম্মানিত এবং উনাদের প্রতিই উনারা দায়েমীভাবে রুজু। সুবহানাল্লাহ! ফলে উনারা সমস্ত কিছু থেকেই বেনিয়ায। কাজেই, সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক, সম্মানিত রিসালাত মুবারক, বিভিন্ন ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের, উনাদের দ্বারা সম্মানিত খিদমত মুবারক, সম্মানিত রহমত মুবারক উনার ঘর মুবারক এবং সম্মানিত ইলম মুবারক উনার খনি মুবারক ইত্যাদি বরকতময় নিয়ামত মুবারক উনাদের প্রতি রুজু হওয়ার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সুযোগ নেই। অর্থাৎ উনারা সমস্ত কিছু থেকে পবিত্র, ছমাদ তথা বেনিয়ায। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! উনাদের কারণেই সমস্ত কিছু ফযীলতপ্রাপ্ত হয়েছেন, সম্মানিত হয়েছেন।” সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ!
আর সেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্যে আখাছ্ছুল খাছ বিশেষ ব্যক্তিত্বা মুবারকই হচ্ছেন হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা। সুবহানাল্লাহ! তাহলে হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কতো বেমেছাল সেটা ভাষায় প্রকাশ করা কস্মিনকালেও সম্ভব নয়। সুবহানাল্লাহ! এক কথায়, উনারা শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারিণী হচ্ছেন উনারা। সুবহানাল্লাহ! উনারা সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারাসহ সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের মহাসম্মানিতা মাতা আলাইহিন্নাস সালাম। সুবহানাল্লাহ! উনাদের সম্মানিত ও পবিত্র ক্বদম মুবারক উনাদের নিচেই সকলের সম্মানিত জান্নাত মুবারক। সুবহানাল্লাহ! যিনি যত বেশি উনাদের রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক, মুহব্বত-মা’রিফাত, তায়াল্লুক্ব-নিসবত মুবারক হাছিল করতে পারবেন, তিনি ততো বেশি মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের হাক্বীক্বী মুহব্বত-মা’রিফাত, নিসবত-কুরবত, রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক মুবারক হাছিল করতে পারবেন। সুবহানাল্লাহ! আর এর ব্যতিক্রম হলে হালাকী তথা ধ্বংস অনিবার্য। না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ!
কাজেই, হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা কারো মুহতাজ নন; বরং সম্মানিত নুবুওওয়াত ও রিসালাত মুবারকসহ সমস্ত হযরত নবী ও রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা উনাদের মুহতাজ। সুবহানাল্লাহ! উনাদের কারণে সম্মানিত নুবুওওয়াত ও রিসালাত মুবারকসহ সমস্ত মাক্বামই সম্মানিত হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! তাহলে হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কতো বেমেছাল তা কেউ কস্মিনকালেও ভাষায় প্রকাশ করতে পারবে না, চিন্তা-কল্পনা করে মিলাতে পারবে না। সুবহানাল্লাহ! তাই, সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের জন্য ফরযে আইন হচ্ছে হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বেমেছাল শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক সম্পর্কে জানা, আলোচনা করা, উনাদের প্রতি সর্বোত্তম বিশুদ্ধ আক্বীদাহ ও সর্বোচ্চ হুসনে যন মুবারক পোষণ করা এবং উনাদের সম্মানিত তা’যীম-তাকরীম মুবারক করা, সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়া, সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক বর্ণনা করা। সুবহানাল্লাহ!
হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের যারা মানহানী করবে, তাদের একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। তারা নামধারী মুসলমান হোক বা কাফির হোক অথবা নাস্তিক হোক কিংবা যেকোনো ধর্মেরই অনুসারী হোক না কেন। তাদের তাওবা গ্রহণযোগ্য হবে না। এমনকি যারা তাদেরকে সমর্থন করবে, তাদেরও একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদণ্ড-
হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক এক কথায় উনারা শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারিণী হচ্ছেন উনারা। সুবহানাল্লাহ! উনারা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সংযুক্ত এবং সম্পৃক্ত। সুবহানাল্লাহ! সম্মানিত শরীয়ত মুবারক উনার সম্মানিত ফতওয়া মুবারক অনুযায়ী- উনাদের যারা মানহানী করবে, সেটা সরাসরি হোক বা ইশারা ইঙ্গিতেই হোক, স্বাভাবিক অবস্থায় হোক অথবা মাতাল বা নেশাগ্রস্থ অবস্থায় হোক অর্থাৎ যেকোনো অবস্থায়ই হোক না কেন- অবশ্যই অবশ্যই তাদের একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। তারা নামধারী মুসলমান হোক বা কাফির হোক অথবা নাস্তিক হোক কিংবা যেকোনো ধর্মেরই অনুসারী হোক না কেন। তাদের তাওবা গ্রহণযোগ্য হবে না। এ মৃত্যুদ- থেকে রেহাই পাওয়ার তাদের কোনো সুযোগ নেই এবং এ বিষয়ে কোনো প্রকার ওজর-আপত্তিও গ্রহণযোগ্য হবে না। শুধু তাই নয়, তাদেরকে শাস্তিস্বরূপ দৃষ্টান্তমূলকভাবে মৃত্যুদণ্ড দিতে হবে। তা শরীয়তের অন্যান্য বিধান অমান্য করার কারণে যেরূপ কঠিন শাস্তি দেয়া হয়, তার চেয়ে আরো লক্ষ কোটি গুণ বেশি কঠিনভাবে যন্ত্রণাদায়ক ও লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি দিয়ে মৃত্যুদণ্ড দিতে হবে। এমনকি যারা তাদেরকে সমর্থন করবে, তাদেরও একই হুকুম। সুবহানাল্লাহ!
এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
اِنَّ الَّذِيْنَ يُؤْذُوْنَ اللهَ وَرَسُوْلَهٗ لَعَنَهُمُ اللهُ فِـى الدُّنْيَا وَالْاٰخِرَةِ وَاَعَدَّ لَـهُمْ عَذَابًا مُّهِيْنًا.
অর্থ: “নিশ্চয়ই যারা মহান আল্লাহ পাক উনাকে এবং উনার রসূল, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকে কষ্ট দেয়, তাদের উপর মহান আল্লাহ পাক উনার লা’নত দুনিয়া ও আখিরাতে এবং মহান আল্লাহ পাক তিনি তাদের জন্য লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৭)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ عَلِـىٍّ كَرَّمَ اللهُ وَجْهَهٗ عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ اٰذَانِـىْ فِـىْ عِتْـرَتِـىْ فَقَدْ اٰذَى اللهَ عَزَّ وَجَلَّ.
অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের ব্যাপারে আমাকে কষ্ট দিলো, সে মূলত যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনাকেই কষ্ট দিলো।” নাঊযুবিল্লাহ! (দায়লামী, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১১/৯)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ عَلِـىٍّ كَرَّمَ اللهُ وَجْهَهٗ عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ اٰذَانِـىْ وَعِتْرَتِـىْ فَعَلَيْهِ لَعْنَةُ اللهِ.
অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি আমাকে এবং আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে কষ্ট দিবে, তার উপর মহান আল্লাহ পাক উনার লা’নত। অর্থাৎ সে মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে লা’নতগ্রস্থ।” নাঊযুবিল্লাহ! (সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১১/৯)
আর মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
مَلْعُوْنِيْنَ اَيْنَمَا ثُقِفُوْاۤ اُخِذُوْا وَقُتِّلُوْا تَقْتِيْلًا.
অর্থ: “লা’নতগ্রস্ত অবস্থায় তাদেরকে যেখানেই পাওয়া যাবে, সেখানেই পাকড়াও করা হবে এবং অবশ্যই তাদেরকে ক্বতল করা হবে, মৃত্যুদ- দেয়া হবে।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৬১)
মহান আল্লাহ পাক তিনি অন্যত্র ইরশাদ মুবারক করেন-
وَالَّذِيْنَ يُؤْذُوْنَ رَسُوْلَ اللهِ لَـهُمْ عَذَابٌ اَلِيْمٌ.
অর্থ: “আর যারা মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কষ্ট দেয়, তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা তাওবা শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৬১)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ عَلِـىٍّ كَرَّمَ اللهُ وَجْهَهٗ عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ سَبَّ نَبِيًّا فَاقْتُلُوْهُ وَمَنْ سَبَّ اَصْحَابِـىْ فَاضْرِبُوْهُ.
অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি কোনো নবী-রসূল আলাইহিস সালাম উনাকে গাল-মন্দ করবে, উনার মানহানী করবে, আপনারা তাকে ক্বতল করুন, মৃত্যুদ- দিন। আর যে ব্যক্তি আমার হযরত ছাহাবায়ে রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম উনাদেরকে গাল-মন্দ করবে, উনাদের মানহানী করবে, আপনারা তাকে প্রহার করুন।” সুবহানাল্লাহ! (আশ শিফা ২/২২১, ফাতাওয়ায়ে বায্যাযিয়্যাহ ২/২৪২, আল মু’জামুছ ছগীর লিত ত্ববারনী ১/৩৯৩)
হযরত ইমাম আবূ ‘আব্দিল্লাহ মুহম্মদ ইবনে আব্দিস সালাম ইবনে সাহনূন রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন,
اَجْمَعَ الْعُلَمَاءُ اَنَّ شَاتِـمَ النَّبِـىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَلْمُتَنَقِّصَ لَهٗ كَافِرٌ وَّالْوَعِيْدُ جَارٍ عَلَيْهِ بِعَذَابِ اللهِ لَهٗ وَحُكْمُهٗ عِنْدَ الْاُمَّةِ الْقَتْلُ وَمَنْ شَكَّ فِـىْ كُفْرِهٖ وَعَذَابِهٖ كَفَرَ.
অর্থ: “সমস্ত হযরত ইমাম-মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণ উনারা এ বিষয়ে ইজমা’ করেছেন যে, নিঃসন্দেহে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গাল-মন্দকারী, উনার মর্যাদাহননকারী, মানহানীকারী ব্যক্তি কাফির এবং তার জন্য মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা রয়েছে। তার ব্যাপারে সমস্ত উম্মত উনাদের ফায়ছালা হলো, তাকে শাস্তিস্বরূপ ক্বতল করতে হবে, মৃত্যুদ- দিতে হবে। আর যে ব্যক্তি এ ধরণের লোকদের কাফির হওয়ার ব্যাপারে এবং শাস্তিযোগ্য হওয়ার বিষয়ে অর্থাৎ তার একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদ- হওয়ার বিষয়ে সন্দেহ পোষণ করবে, সেও কাফির হবে (এবং তাকেও শাস্তিস্বরূপ মৃত্যুদ- দিতে হবে)।” সুবহানাল্লাহ! (শিফা শরীফ ২/২১৫, আস সাইফুল মাসলূল ১২০ পৃ., নিহায়াতুস সুওয়াল ২৬১ পৃ.)
কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছে,
يُقْتَلُ عَلـٰى كُلِّ حَالٍ اَسَرَّ ذٰلِكَ اَوْ اَظْهَرَهٗ وَلَا يُسْتَتَابُ.
অর্থ: “যে কোনো অবস্থায় হোক না কেন তাকে ক্বতল করতে হবে, মৃত্যুদ- দিতে হবে। চাই সে গোপনে গাল-মন্দ করুক বা প্রকাশ্যে গাল-মন্দ করুক। তার তওবা গ্রহণযোগ্য হবে না।” (আশ শিফা ২/২১৬, আস সাইফুল মাসলূল ১২৭-১২৮ পৃ.)
আর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنِ الْاِمَامِ الثَّالِثِ سَيِّدِنَا حَضْرَتْ اَلْـحُسَيْنِ بْنِ عَلِىٍّ كَرَّمَ اللهُ وَجْهَهٗ عَلَيْهِمَا السَّلَامُ اَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَنْ سَبَّ اَهْلَ الْبَيْتِ فَاِنَّـمَا يَسُبُّ اللهَ وَرَسُوْلَهٗ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ.
অর্থ: “ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হুসাইন ইবনে হযরত আলী আলাইহিমাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে গাল-মন্দ করলো, মানহানী করলো, সে মূলত মহান আল্লাহ পাক উনাকে এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকেই গাল-মন্দ করলো, উনাদেরই মানহানী করলো।” না‘ঊযুবিল্লাহ! (সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১১/৮)
অতএব, সম্মানিত ও পবিত্র কুরআন শরীফ এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের আলোকে সম্মানিত ফতওয়া মুবারক হচ্ছেন- নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের যারা মানহানী করবে, তাদের একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদ-। আর হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্যে বিশেষ ব্যক্তিত্বা মুবারক। কাজেই, হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের যারা মানহানী করবে, তাদের একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদ-। তারা নামধারী মুসলমান হোক বা কাফির হোক অথবা নাস্তিক হোক কিংবা যেকোনো ধর্মেরই অনুসারী হোক না কেন। তাদের তাওবা গ্রহণযোগ্য হবে না। এ মৃত্যুদ- থেকে রেহাই পাওয়ার তাদের কোনো সুযোগ নেই এবং এ বিষয়ে কোনো প্রকার ওজর-আপত্তিও গ্রহণযোগ্য হবে না। শুধু তাই নয়, তাদেরকে শাস্তিস্বরূপ দৃষ্টান্তমূলকভাবে মৃত্যুদ- দিতে হবে। তা শরীয়তের অন্যান্য বিধান অমান্য করার কারণে যেরূপ কঠিন শাস্তি দেয়া হয়, তার চেয়ে আরো লক্ষ কোটি গুণ বেশি কঠিনভাবে যন্ত্রণাদায়ক ও লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি দিয়ে মৃত্যুদ- দিতে হবে। এমনকি যারা তাদেরকে সমর্থন করবে, তাদেরও একই হুকুম। সুবহানাল্লাহ!
এ সম্পর্কে কিতাবে অনেক ওয়াক্বেয়া মুবারক বর্ণিত রয়েছে। যেমন-
ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত যায়িদ ইবনে হাসান আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত বংশধর, ছাহিবু জুরযান, অত্যন্ত ন্যায়পরায়ণ ও ইনসাফগার শাসক, আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যদুনা হযরত ইমাম হাসান ইবনে যায়েদ আদ দায়ী ইবনে মুহম্মদ ইবনে ইসমা‘ঈল ইবনে হাসান ইবনে যায়েদ ইবনে হাসান ইবনে আলী ইবনে আবী ত্বালিব আলাইহিমুস সালাম (বিছাল শরীফ : ২৭০ হিজরী) উনার সম্মানিত জীবনী মুবারক-এ উল্লেখ রয়েছে,
قَالَ اَبُو السَّائِبِ عُتْبَةُ بْنُ عَبْدِ اللهِ الْـهَمْذَانِـىُّ قَاضِىُ الْقُضَاةِ كُنْتُ يَوْمًا بِـحَضْرَةِ الْـحَسَنِ بْنِ زَيْدِ ۣ الدَّاعِىِّ بِطَبَرِسْتَانَ وَكَانَ يَلْبَسُ الصُّوْفَ وَيَاْمُرُ بِالْمَعْرُوْفِ وَيَنْهٰى عَنِ الْمُنْكَرِ وَيُوَجِّهٗ فِـىْ كُلِّ سَنَةٍ بِعِشْرِيْنَ اَلْفَ دِيْنَارٍ اِلـٰى مَدِيْنَةِ السَّلَامِ تُفَرَّقُ عَلـٰى صَغَائِرِ وَلَدِ الصَّحَابَةِ وَكَانَ بـِحَضْرَتِهٖ رَجُلٌ ذَكَرَ اُمَّ الْمُؤْمِنِيْنَ الثَّالِثَةَ سَيِّدَتَنَا حَضْرَتْ اَلصِّدِّيْقَةَ عَائِشَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ بِذِكْرٍ قَبِيْحٍ مِّنَ الْفَاحِشَةِ فَقَالَ يَا غُلَامُ اضْرِبْ عُنُقَهٗ فَقَالَ لَهُ الْعَلَوِيُّوْنَ هٰذَا رَجُلٌ مِّنْ شِيْعَتِنَا فَقَالَ مَعَاذَ اللهِ هٰذَا رَجُلٌ طَعَنَ عَلَى النَّبِـىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ اَلْـخَبِيْثٰتُ لِلْخَبِيْثِيْنَ وَالْـخَبِيْثُوْنَ لِلْخَبِيْثٰتِ وَالطَّيِّبٰتُ لِلطَّيِّبِيْنَ وَالطَّيِّبُوْنَ لِلطَّيِّبٰتِ اُولٰٓئِكَ مُبَرَّءُوْنَ مِـمَّا يَقُوْلُوْنَ لَـهُمْ مَّغْفِرَةٌ وَّرِزْقٌ كَرِيْـمٌ فَاِنْ كَانَتْ اُمُّ الْمُؤْمِنِيْنَ الثَّالِثَةُ سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اَلصِّدِّيْقَةُ عَائِشَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ خَبِيْثَةً فَالنَّبِـىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَبِيْثٌ فَهُوَ كَافِرٌ فَاضْرِبُوْا عُنُقَهٗ فَضَرَبُوْا عُنُقَهٗ وَاَنَا حَاضِرٌ
অর্থ: ইমামুল আলাম, কাযীউল কুয্যাত হযরত ইমাম আবুস সায়িব ‘উতবাহ ইবনে ‘উবাইদুল্লাহ ইবনে মূসা হামযানী শাফি‘য়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি (বিছাল শরীফ : ৩৫০ হিজরী শরীফ) তিনি বলেন, আমি একদা তাবারিস্তানে ছাহিবু জুরযান, আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যদুনা ইমাম হযরত হাসান ইবনে যায়েদ আদ দায়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ উপস্থিত ছিলাম। তিনি সূফী উনাদের পোষাক পরিধান করতেন (অনেক উচ্চ পর্যায়ের মাশায়েখগণ উনাদের ইমাম ছিলেন) এবং সৎকাজের আদেশ করতেন ও অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করতেন (অর্থাৎ অত্যন্ত ইনসাফগার ও ন্যায়পরায়ণ শাসক ছিলেন)। তিনি প্রতি বছর সালাম শহর তথা বাগদাদ শরীফে ২০ হাজার স্বর্ণমুদ্রা প্রেরণ করতেন। যা শিশু ও হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের বংশধরগণ উনাদের মাঝে বন্টন করা হতো। সুবহানাল্লাহ! এক দিনের কথা- ছাহিবু জুরযান, আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যদুনা ইমাম হযরত হাসান ইবনে যায়েদ আদ দায়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার উপস্থিতীতে এক লোক উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সায়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীকাহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত শান মুবারক-এ অপছন্দনীয় ফাহিশামূলক কিছু কথাবার্তা বললো। নাঊযুবিল্লাহ! তখন তিনি একজনকে বললেন, হে বৎস! তুমি তার গর্দান উড়িয়ে দাও। তখন আলবীগণ উনারা উনাকে বললেন, সে তো আমাদের অনুসারী! তিনি বললেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি আশ্রয় দান করুন! এ নিকৃষ্ট লোকটি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত শান মুবারক-এ অপবাদ দিয়েছে। না‘ঊযুবিল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
اَلْـخَبِيْثٰتُ لِلْخَبِيْثِيْنَ وَالْـخَبِيْثُوْنَ لِلْخَبِيْثٰتِ وَالطَّيِّبٰتُ لِلطَّيِّبِيْنَ وَالطَّيِّبُوْنَ لِلطَّيِّبٰتِ اُولٰٓئِكَ مُبَرَّءُوْنَ مِـمَّا يَقُوْلُوْنَ لَـهُمْ مَّغْفِرَةٌ وَّرِزْقٌ كَرِيْـمٌ
‘দুশ্চরিত্রা মহিলারা দুশ্চরিত্র পুরুষের জন্য এবং দুশ্চরিত্র পুরুষরা দুশ্চরিত্রা মহিলাদের জন্য। সচ্চরিত্রা মহিলা উনারা সচ্চরিত্র পুরুষ উনাদের জন্য এবং সচ্চরিত্র পুরুষ উনারা সচ্চরিত্রা মহিলা উনাদের জন্য। উনাদের সম্পর্কে তারা যা বলে, উনারা সেটা থেকে পবিত্র। সুবহানাল্লাহ! উনাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও সম্মানজনক রিযিক্ব।’ সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা নূর শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ২৬)
উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীকাহ আলাইহাস সালাম তিনি যদি খবীছাহ তথা দুশ্চরিত্রা হন, নাঊযুবিল্লাহ! নাঊযুবিল্লাহ! নাঊযুবিল্লাহ! তাহলে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনিও খবীছ। নাঊযুবিল্লাহ! নাঊযুবিল্লাহ! নাঊযুবিল্লাহ! কাজেই, এই ব্যক্তি কাফির। আপনারা তার গর্দান উড়িয়ে দিন। তখন উনারা শস্তিস্বরূপ উক্ত ব্যক্তির গর্দান উড়িয়ে দিলেন, শাস্তিস্বরূপ তাকে মৃত্যুদ- দিলেন। সুবহানাল্লাহ! কাযীউল কুয্যাত ইমাম হযরত আবুস সায়িব ‘উতবাহ ইবনে ‘উবাইদুল্লাহ শাফি‘য়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, আমি তখন উক্ত মজলিসে উপস্থিত ছিলাম।” সুবহানাল্লাহ! (শরহু উছূলি ই’তিক্বাদি আহলিস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘য়াহ ৭/১৩৪৫, আস সাইফুল মাসলূল ‘আলা মান সাব্বার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ৪১৯পৃ.)
মাহবূবে এলাহী, আরিফ বিল্লাহ, আদীব, শা‘য়ির, ছাহিবুস শুজা‘য়াহ, ছাহিবু হুসনিস সীরাহ, আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যদুনা ইমাম হযরত মুহম্মদ ইবনে যায়েদ ইবনে মুহম্মদ ইবনে ইসমা‘ঈল ইবনে হাসান ইবনে যায়েদ ইবনে হাসান ইবনে আলী ইবনে আবী ত্বালিব আলাইহিমুস সালাম (শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ : ২৮৭ হিজরী শরীফ) তিনি ছিলেন ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত যায়িদ ইবনে হাসান আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত বংশধর। অর্থাৎ তিনি হচ্ছেন আখাছ্ছুল খাছ আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। সুবহানাল্লাহ! তিনি ছিলেন অত্যন্ত ন্যায়পরায়ণ ও ইনসাফগার শাসক। তিনি উনার সম্মানিত আপন বড় ভাই ছাহিবু জুরযান, আল ইমামুল ‘আদিল, আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যদুনা ইমাম হযরত হাসান ইবনে যায়েদ আদ দায়ী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার পর ২৭০ হিজরী শরীফ থেকে ২৮৭ হিজরী শরীফ পর্যন্ত অত্যন্ত ইনসাফ ও ন্যায়পরয়াণতার সাথে সম্মানিত শাসনকার্য মুবারক পরিচালনা করেন। উনার সম্মানিত জীবনী মুবারক-এ উল্লেখ রয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ اَبِـىْ جَعْفَرِ بْنِ الْفَضْلِ الطَّبَرِىِّ رَحْمَةُ اللهُ عَلَيْهِ قَالَ اِنَّ مُحَمَّدَ بْنَ زَيْدٍ اَخَا الْـحَسَنِ بْنِ زَيْدٍ رَحْمَةُ اللهُ عَلَيْهِ قَدِمَ عَلَيْهِ مِنَ الْعِرَاقِ رَجُلٌ يَّنُوْحُ بَيْنَ يَدَيْهِ فَذَكَرَ اُمَّ الْمُؤْمِنِيْنَ الثَّالِثَةَ سَيِّدَتَنَا حَضْرَتْ اَلصِّدِّيْقَةَ عَائِشَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ بِسُوْءٍ فَقَامَ اِلَيْهِ بِعَمُوْدٍ وَّضَرَبَ بِهٖ دِمَاغَهٗ فَقَتَلَهٗ فَقِيْلَ لَهٗ هٰذَا مِنْ شِيْعَتِنَا وَمِـمَّنْ يَّتَوَلَّانَا فَقَالَ هٰذَا سَـمّٰى جَدِّىْ قَرْنَانَ وَمَنْ سَـمّٰى جَدِّىْ قَرْنَانَ اسْتَحَقَّ عَلَيْهِ الْقَتْلَ فَقَتَلْتُهٗ
অর্থ: “হযরত আবূ জা’ফর ইবনে ফযল ত্ববারী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যদুনা ইমাম হযরত হাসান ইবনে যায়েদ আদ দায়ী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার সম্মানিত ভাই মাহবূবে এলাহী, আরিফ বিল্লাহ, আদীব, শা‘িয়র, ছাহিবুস শুজা‘য়াহ, ছাহিবু হুসনিস সীরাহ, অত্যন্ত ন্যায়পরায়ণ ও ইনসাফগার শাসক, আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যদুনা ইমাম হযরত মুহম্মদ ইবনে যায়েদ ইবনে মুহম্মদ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নিকট ইরাক থেকে এক ব্যক্তি আগমণ করলো। সে উনার সামনে এসে ইনিয়ে বিনিয়ে কান্নার স্বরে উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত শান মুবারক-এ এলোমেলো (কিছু খারাপ কথা) বললো। না‘ঊযুবিল্লাহ! তখন সাথে সাথে আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যদুনা ইমাম হযরত মুহম্মদ ইবনে যায়েদ ইবনে মুহম্মদ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি একখানা লোহার খুঁটি নিয়ে তার সম্মুখে দাঁড়িয়ে তার মস্তিষ্কের উপর (মাথার তালুর উপর) আঘাত করে তাকে হত্যা করে ফেললেন। সুবহানাল্লাহ! তখন উনাকে বলা হলো যে, সে তো আমাদের অনুসারী এবং যারা আমাদেরকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করেছে, সে তাদের অন্যতম। (জবাবে) তিনি বললেন, সে আমার মহাসম্মানিত নানাজান, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত শান মুবারক-এ অপবাদ দিয়েছে, উনার মানহানী করেছে। না‘ঊযুবিল্লাহ! আর যে আমার মহাসম্মানিত নানাজান, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত শান মুবারক-এ অপবাদ দেয়, উনার মানহানী করে, তাকে শাস্তিস্বরূপ ক্বতল করা, শাস্তিস্বরূপ মৃত্যুদ- দেয়া অপরিহার্য হয়ে যায়। তাই আমি তাকে শাস্তিস্বরূপ হত্যা করেছি, শাস্তিস্বরূপ মৃত্যুদ- দিয়েছি। সুবহানাল্লাহ! (শরহু উছূলি ই’তিক্বাদি আহলিস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘য়াহ ৭/১৩৪৩, আস সাইফুল মাসলূল ৪২০পৃ.)
উল্লেখ্য যে, উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার যেই হুকুম মুবারক অন্যান্য হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরও একই হুকুম মুবারক। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার যারা মানহানী করবে, তাদের একমাত্র শাস্তি যেমন মৃত্যুদণ্ড-, তেমনিভাবে অন্যান্য হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরও যারা মানহানী করবে, তাদেরও একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। তারা নামধারী মুসলমান হোক বা কাফির হোক অথবা নাস্তিক হোক কিংবা যেকোনো ধর্মেরই অনুসারী হোক না কেন। তাদের তাওবা গ্রহণযোগ্য হবে না। এ মৃত্যুদণ্ড- থেকে রেহাই পাওয়ার তাদের কোনো সুযোগ নেই এবং এ বিষয়ে কোনো প্রকার ওজর-আপত্তিও গ্রহণযোগ্য হবে না। শুধু তাই নয়, তাদেরকে শাস্তিস্বরূপ দৃষ্টান্তমূলকভাবে মৃত্যুদণ্ড- দিতে হবে। তা শরীয়তের অন্যান্য বিধান অমান্য করার কারণে যেরূপ কঠিন শাস্তি দেয়া হয়, তার চেয়ে আরো লক্ষ কোটি গুণ বেশি কঠিনভাবে যন্ত্রণাদায়ক ও লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি দিয়ে মৃত্যুদণ্ড- দিতে হবে। এমনকি যারা তাদেরকে সমর্থন করবে, তাদেরও একই হুকুম। সুবহানাল্লাহ!
হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত মুবারক করার, তা’যীম-তাকরীম মুবারক করার, উনাদের সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার, সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করার বেমেছাল ফযীলত মুবারক
হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে যাঁরা মুহব্বত করবেন, সম্মানিত তা’যীম-তাকরীম মুবারক করবেন, উনাদের সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিবেন, সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করবেন এবং উনাদের প্রতি সর্বোত্তম বিশুদ্ধ আক্বীদা ও সর্বোচ্চ হুসনে যন মুবারক পোষণ করবেন, নিঃসন্দেহে অবশ্যই অবশ্যই উনারা সর্বোচ্চ স্তরের ঈমানদার হবেন, মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের হাক্বীক্বী মুহব্বত-মা’রিফাত, নিসবত-কুরবত, রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক ও দায়িমী দীদার মুবারক লাভ করবেন এবং চরম-পরম কায়িময়াবী হাছিল করবেন। সুবহানাল্লাহ! ঐ সমস্ত সৌভাগ্যবান ব্যক্তি উনাদের জন্যই রয়েছে ইহকাল ও পরকালে সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বোত্তম সুসংবাদ মুবারক। সুবহানাল্লাহ! উনাদের সম্পর্কেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ جَرِيْرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ الْبَـجَـلِـىِّ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ مَّاتَ عَلـٰى حُبِّ اٰلِ سَيِّدِنَا مَوْلَانَا مُـحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَاتَ شَهِيْدًا اَلَا وَمَنْ مَّاتَ عَلـٰى حُبِّ اٰلِ سَيِّدِنَا مَوْلَانَا مُـحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَاتَ مَغْفُوْرًا لَّهٗ اَلَا وَمَنْ مَّاتَ عَلـٰى حُبِّ اٰلِ سَيِّدِنَا مَوْلَانَا مُـحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَاتَ تَائِبًا اَلَا وَمَنْ مَّاتَ عَلـٰى حُبِّ اٰلِ سَيِّدِنَا مَوْلَانَا مُـحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَاتَ مُؤْمِنًا مُّسْتَكْمِلَ الْاِيْـمَانِ اَلَا وَمَنْ مَّاتَ عَلـٰى حُبِّ اٰلِ سَيِّدِنَا مَوْلَانَا مُـحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَشَّرَهٗ مَلَكُ الْمَوْتِ بِالْـجَنَّةِ ثُـمَّ مُنْكَرٌ وَّنَكِيْرٌ اَلَا وَمَنْ مَّاتَ عَلـٰى حُبِّ اٰلِ سَيِّدِنَا مَوْلَانَا مُـحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُزَفُّ اِلَـى الْـجَنَّةِ كَمَا تُزَفُّ الْعَرُوْسُ اِلـٰى بَيْتِ زَوْجِهَا اَلَا وَمَنْ مَّاتَ عَلـٰى حُبِّ اٰلِ سَيِّدِنَا مَوْلَانَا مُـحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَتَحَ اللهُ لَهٗ فِـىْ قَبْرِهٖ بَابَيْنِ اِلَـى الْـجَنَّةِ اَلَا وَمَنْ مَّاتَ عَلـٰى حُبِّ اٰلِ سَيِّدِنَا مَوْلَانَا مُـحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ جَعَلَ اللهُ قَبْرَهٗ مَزَارَ مَلَائِكَةِ الرَّحْـمَةِ اَلَا وَمَنْ مَّاتَ عَلـٰى حُبِّ اٰلِ سَيِّدِنَا مَوْلَانَا مُـحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَاتَ عَلَى السُّنَّةِ وَالْـجَمَاعَةِ.
অর্থ: “হযরত জারীর ইবনে আব্দুল্লাহ বাজালী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত মুহব্বত মুবারক-এ ইন্তেকাল করবেন, তিনি শহীদী মৃত্যু পাবেন। সাবধান! যে ব্যক্তি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত মুহব্বত মুবারক-এ ইন্তেকাল করবেন, তিনি ক্ষমাপ্রাপ্ত হয়ে ইন্তেকাল করবেন। সুবহানাল্লাহ! সাবধান! যে ব্যক্তি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত মুহব্বত মুবারক-এ ইন্তেকাল করবেন, তিনি তওবাকারী হিসেবে ইন্তেকাল করবেন। সুবহানাল্লাহ! সাবধান! যে ব্যক্তি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত মুহব্বত মুবারক-এ ইন্তেকাল করবেন, তিনি পরিপূর্ণ ঈমানদার মু’মিন হিসেবে ইন্তেকাল করবেন। সুবহানাল্লাহ! সাবধান! যে ব্যক্তি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত মুহব্বত মুবারক-এ ইন্তেকাল করবেন, উনাকে মালাকুল মউত আলাইহিস সালাম তিনি অতঃপর হযরত মুনকার ও নাকীর আলাইহিমাস সালাম উনারা সম্মানিত বেহেশত মুবারক উনার সুসংবাদ মুবারক দিবেন। সুবহানাল্লাহ! সাবধান! যে ব্যক্তি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত মুহব্বত মুবারক-এ ইন্তেকাল করবেন, উনাকে এমনভাবে সুসজ্জিত করে সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ নেয়া হবে, যেমনভাবে কনেকে সাজিয়ে তার স্বামীর ঘরে নেয়া হয়। সুবহানাল্লাহ! সাবধান! যে ব্যক্তি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত মুহব্বত মুবারক-এ ইন্তেকাল করবেন, উনার কবরে উনার জন্য সম্মানিত জান্নাত মুবারক উনার দিকে দুটি দরজা খুলে দেয়া হবে। সুবহানাল্লাহ! সাবধান! যে ব্যক্তি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত মুহব্বত মুবারক-এ ইন্তেকাল করবেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি উক্ত ব্যক্তি উনার কবরকে সম্মানিত রহমতের ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের যিয়ারতের স্থান বানাবেন। সুবহানাল্লাহ! সাবধান! যে ব্যক্তি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত মুহব্বত মুবারক-এ ইন্তেকাল করবেন, তিনি সম্মানিত আহলু সুন্নাত ওয়াল জামায়াত উনার উপর ইন্তেকাল করবেন।” সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে কুরতুবী ১৬/২৩, তাফসীরে কবীর ২৭/৫৯৫, তাফসীরে হাক্কী ১৩/৭৯, তাফসীরে রূহুল বয়ান ৮/২৩৯, তাখরীজু আহাদীছুল কাশ্শাফ ৩/২৩৮, নুজহাতুল মাজালিস ১/৩৬৫)
হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের তারীখ মুবারক প্রকাশে আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অভুতপূর্ব বেমেছাল বিস্ময়কর মহাসম্মানিত তাজদীদ মুবারক
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُوْدٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَضَّرَ اللهُ امْرَءًا سَـمِعَ مِنَّا حَدِيْثًا فَبَلَّغَهٗ كَمَا سَـمِعَهٗ فَرُبَّ مُبَلَّغٍ اَوْعـٰى مِنْ سَامِعٍ.
অর্থ: “ফক্বীহুল উম্মত হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাস‘ঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি ওই ব্যক্তির সম্মানিত চেহারা মুবারক সম্মুজ্জ্বল করুন, (উনাকে সম্মানিত রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক, মা’রিফাত-মুহব্বত মুবারক দান করুন,) যিনি আমার থেকে যেরূপ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ শুনবেন ঠিক হুবহু সেরূপ বর্ণনা করবেন। কেননা (পরবর্তীতে) যেই সকল সুমহান ব্যক্তিত্ব মুবারক উনাদের কাছে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ পৌঁছানো হবে, উনারা যাঁদের থেকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ শুনবেন, উনাদের থেকে অধিক বেশি বুঝবেন, উপলব্ধি করবেন, অনেক বেশি সম্মানিত ইলম মুবারক উনার অধিকারী হবেন।” সুবহানাল্লাহ! (তিরমিযী শরীফ, ছহীহ ইবনে হিব্বান, মুসনাদে বাযযার, ত্ববারনী শরীফ)
এমহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার পরিপূর্ণ মিছদাক্ব হচ্ছেন আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! উনাকে মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত প্রকার সম্মানিত ইলম মুবারক হাদিয়া মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি হচ্ছেন সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত প্রকার সম্মানিত ইলম মুবারক উনার মালিক। সুবহানাল্লাহ!
মূলত, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সাথে মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উনার বেমেছাল সম্মানিত তা‘য়াল্লুক-নিসবত, মুহব্বত-ক্বুরবত মুবারক রয়েছেন, যা কায়িনাতের কারো পক্ষে ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। সুবহানাল্লাহ! যার কারণে তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সাথে সম্পৃক্ত বিশেষ বিশেষ আইয়্যামুল্লাহ শরীফ উনাদের তারীখ মুবারক প্রকাশ করে যাচ্ছেন। সুবহানাল্লাহ! যে বিষয়ে কায়িনাতবাসীর কোনো ইলম নেই এবং কোনো কিতাবেও কোনো প্রকার বর্ণনা নেই। নিম্নে সদ্য প্রকাশ করা হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের তারীখ মুবারক উনাদের বর্ণনা দেয়া হলো,
নং সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক এবং সম্মানিত গোত্র মুবারক সন মাস তারিখ বার দুনিয়ার যমীনে অবস্থান মুবারক
১ উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা কুবরা (হযরত খাদীজা) আলাইহাস সালাম (কুরাইশ) আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক প্রকাশের ১০ম বছর রমাদ্বান শরীফ ১৭ ইয়াওমুস সাবত প্রায় সাড়ে ৬৪ বছর
২ উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ (হযরত সাওদাহ বিনতে যাম‘আহ) আলাইহাস সালাম (কুরাইশ) ২২ হিজরী শরীফ যিলহজ্জ শরীফ ২৯ ইয়াওমুল খমীস প্রায় ৭১ বছর
৩ উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বাহ (হযরত আয়িশা) আলাইহাস সালাম (কুরাইশ) ৫৮ হিজরী শরীফ রমাদ্বান শরীফ ১৭ লাইলাতুল আহাদ প্রায় ৬৭ বছর
৪ উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রাবি‘য়াহ ইবনাতু আবীহা (হযরত হাফছাহ) আলাইহাস সালাম (কুরাইশ) ৪৫ হিজরী শরীফ শা’বান শরীফ ১৩ ইয়াওমুল খমীস প্রায় ৬৩ বছর
৫ উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল খামিসাহ উম্মুল মাসাকিন (হযরত যাইনাব বিনতে খুযাইমাহ) আলাইহাস সালাম (বনু হিলাল) ৪র্থ হিজরী শরীফ রবী‘উল আউওয়াল শরীফ ২৭ ইয়াওমুস সাব্ত প্রায় সাড়ে ৩০ বছর
৬ উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আস সাদিসাহ (হযরত উম্মু সালামাহ বিনতে আবী উমাইয়্যাহ) আলাইহাস সালাম (কুরাইশ) ৬৪ হিজরী শরীফ রবী‘উল আউওয়াল শরীফ ৫ ইছনাইনিল ‘আযীম শরীফ ৯৩ বছর পার হয়ে প্রায় ৯৪ বছর
৭ উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আস সাবি‘য়াহ আত্বওয়ালু ইয়াদান (হযরত যাইনাব বিনতে জাহাশ) আলাইহাস সালাম (বনু আসাদ) ২০ হিজরী শরীফ জুমাদাল উখরা শরীফ ২৩ ইছনাইনিল আযীম শরীফ প্রায় ৫৩ বছরের কাছাকাছি
৮ উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ (হযরত জুওয়াইরিয়াহ বিনতে হারিছ) আলাইহাস সালাম (বনু মুছত্বলিক্ব) ৫০ হিজরী শরীফ রবী‘উল আউওয়াল শরীফ ১৭ ইয়াওমুছ ছুলাছা’ প্রায় ৬৫ বছর
৯ উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আত তাসি‘য়াহ (হযরত রায়হানাহ বিনতে শাম‘ঊন) আলাইহাস সালাম (বনু নাযীর) ১১ হিজরী শরীফ মুহররমুল হারাম শরীফ ৫ ইয়াওমুল খমীস প্রায় ৪২ বছর
১০ উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরাহ (হযরত ছফিয়্যাহ বিনতে হুইয়াই ইবনে আখত্বব) আলাইহাস সালাম (বনু নাযীর) ৫০ হিজরী শরীফ রমাদ্বান শরীফ ২৩ ইয়াওমুল জুমুয়াহ প্রায় ৬০ বছর
১১ উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল হাদিয়াহ ‘আশার (হযরত উম্মু হাবীবাহ বিনতে আবী সুফিয়ান) আলাইহাস সালাম (কুরাইশ) ৪৪ হিজরী শরীফ শা’বান শরীফ ১৭ ইয়াওমুল খমীস প্রায় ৭৪ বছর
১২ উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ ‘আশার (হযরত মারিয়াহ ক্বিবতিয়াহ) আলাইহাস সালাম (বনু ক্বিব্ত) ১৬ হিজরী শরীফ মুহররমুল হারাম শরীফ ১৬ ইয়াওমুল খমীস প্রায় ৩০ বছর
১৩ উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ ‘আশার (হযরত মাইমূনাহ বিনতে হারিছ) আলাইহাস সালাম (বনু হিলাল) ৫১ হিজরী শরীফ যিলহজ্জ শরীফ ১৯ ইছনাইনিল ‘আযীম প্রায় ৯৫ বছর

0 Comments:
Post a Comment