সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ই’জায শরীফ


 
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ই’জায শরীফ

সৃষ্টি অঙ্গনের ভিত্তিমূল হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণ। উনারা মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার প্রিয়তম হাবীব সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মাহবূব এবং নায়িব।

হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের মধ্যে আ’লা দরজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিত্ব হলেন যামানার সম্মানিত মুজাদ্দিদগণ। নিঃসন্দেহে উনারাই স্ব স্ব যামানায় দ্বীনের ধারক-বাহক।

সকলেরই জানা রয়েছে- সম্মানিত মুজাদ্দিদগণ উনাদের ধারাবাহিকতায় শীর্ষ মর্যাদায় অধিষ্ঠিত রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম। যিনি সর্বযুগের সকল সময়ের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামান্য মুজাদ্দিদ, যিনি সর্বকালজয়ী অসম্ভব ক্ষমতাধর শরীয়ত ও তরীক্বতের রাহবার, যিনি দ্বীন ইসলামের ভিত্তিমূল। সুবহানাল্লাহ!

পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সুস্পষ্টভাবে বলেছেন, “ইমাম হবেন কুরাইশ থেকে।” (মুসনাদে আহমদ, ফতহুল বারী)

সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি মূলত উল্লেখিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত কুরাইশী ইমামই শুধু নন, তিনি একই সাথে সম্মানিত কুরাইশ খান্দানের পবিত্র হাসনাইনি নসব মুবারক উনার শ্রেষ্ঠ ইমাম অর্থাৎ ইমামে আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম, সকল ওলীগণ উনাদের ইমাম, সমস্ত মুজাদ্দিদগণ উনাদের ইমাম, দুনিয়া ও জান্নাতের ইমাম, সর্বোপরি তিনি সারা কায়িনাতের ইমাম। সুবহানাল্লাহ!

তাই সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম উনার প্রত্যেকটি মর্যাদা-মর্তবা প্রাপ্তি, মুবারক শান-মানের প্রকাশ, তাজদীদ ও যাবতীয় কার্যক্রম মহান বারে ইলাহী উনার কুদরত মুবারকে এবং সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মু’জিযাহ শরীফে সম্পাদিত হয়। আর বিষয়গুলো যে কারামতে বা ই’জায শরীফে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম তা তো বলার অপেক্ষা রাখে না।

সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম উনার লক্ষ কোটি ই’জায শরীফের মাঝে মুরীদদেরকে ফেরেশতা দ্বারা গায়েবী মদদ করা একটি বিশেষ ই’জায মুবারক। আর বিশেষভাবে তিনি আপন মুরীদ-মুহিব্বিনদেরকে শ্রেষ্ঠ ফেরেশতাদের দিয়ে সাহায্য করে থাকেন। এমনই একটি চমৎকার ই’জায শরীফ বর্ণিত হলো-

আমাদের এক পীরভাই মুহম্মদ ফারুক হুসাইন। যিনি বাণিজ্যিক গ্রুপ হা-মীম গ্রুপের আইটি ম্যানেজার।

অনেক বছর আগে পবিত্র কুরবানী ঈদ উপলক্ষে তিনি নিজ গ্রামের বাড়ি ভোলাতে যান। কয়েকদিন সেখানে অবস্থান করে লঞ্চে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা করেন।

বোরহানউদ্দিন থেকে রওয়ানা শুরু, গঙ্গাপুর হয়ে লঞ্চ ধুলিয়া এসে থামলো। লঞ্চ ঘাটে লোকে লোকারণ্য, লঞ্চ যখনই যে ঘাটে থামে সে ঘাট থেকে বিপুল সংখ্যক লোক লঞ্চে উঠে পড়ে। যাত্রীদের আধিক্যের কারণে মুহম্মদ ফারুক হুসাইনের কেবিনের সামনেও লোকজন চাপাচাপি করে বসে যায়। অবস্থা দর্শনে মনে হয় লঞ্চটা যেন এখনই ডুবে যাবে।

মুহম্মদ ফারুক হুসাইন কেবিনের ভিতরে বসে আছরের নামায শেষে ৪ বৎসর বয়সী শিশু ছেলেটাকে নিয়ে মহান মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনাকে স্মরণ করে মনে মনে বলতে থাকেন যে, ইয়া গাউছুল আ’যম মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম! আমি আমার সপরিবারে ঢাকা রওয়ানা দিয়েছি, আপনিই দেখার ও হিফাযতের মালিক। আপনি আমাদেরকে হিফাযত করুন।

শায়েখ পানে এই আরজু করার পর মুহূর্তেই তিনি দেখেন একজন বুযুর্গ ব্যক্তি মুহম্মদ ফারুক হুসাইনের সামনে উপস্থিত। বুযুর্গ ব্যক্তির পরনে পবিত্র সুন্নতী কোর্তা ও সেলাইবিহীন লুঙ্গি, মাথায় সুন্নতী পাগড়ি ও রুমাল, সুন্নতী চুল ও দাড়ি রয়েছে। আগত বুযুর্গ ব্যক্তিকে মুহম্মদ ফারুক হুসাইন প্রথম দর্শনে পীরভাই মনে করেছিলেন। কারণ এ রকম সুন্নতী পোশাক তো এখন রাজারবাগ শরীফ সিলসিলা ব্যতীত কেউ পরেন না। আগন্তুক মুহম্মদ ফারুক হুসাইনকে সালাম দিলেন এবং নিজ থেকেই পরিচয় দিলেন যে, তিনি একজন শ্রেষ্ঠ হযরত ফেরেশতা আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ!

মুহম্মদ ফারুক হুসাইন সালামের জাওয়াব দেন এবং শিশু ছেলের মাধ্যমে উনাকে কিছু হাদিয়া প্রদান করেন। সেই হযরত ফেরেশতা আলাইহিস সালাম তিনি হাদিয়া গ্রহণ করে অদৃশ্য হয়ে যান। কিছুক্ষণের মধ্যেই লঞ্চের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে থাকে। কিছু সংখ্যক পুলিশ এসে লঞ্চের কিছু যাত্রী নামিয়ে দেয়, লঞ্চ রওয়ানা শুরু করে। সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম উনার গায়েবী মদদে অত্যন্ত নিরাপদে মুহম্মদ ফারুক হুসাইন স্বপরিবারে ঢাকা পৌঁছে যান।

মহান বারে ইলাহী তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম উনার উসীলায় আমাদের সকলকে সার্বক্ষণিক গায়েবী মদদ ও ইহসান করুন। আমীন!


0 Comments: