“হানাফী মাযহাব মতে ফজর নামাযে কুনূত বা কুনূতে নাযেলা পাঠ করা নাজায়িয ও নামায ফাসিদ হওয়ার কারণ (পর্ব-১৭)

পিডিএফ-
“হানাফী মাযহাব মতে ফজর নামাযে কুনূত বা কুনূতে নাযেলা পাঠ করা নাজায়িয ও নামায ফাসিদ হওয়ার কারণ (পর্ব-১৭)


হানাফী মাযহাব মতে ফজর নামাযে কুনূত বা কুনূতে নাযেলা পাঠ করা নাজায়িয ও নামায ফাসিদ হওয়ার কারণ এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়াপেশ করতে পারায় মহান আল্লাহ পাক-এর দরবারে অসংখ্য শুকরিয়া। হানাফী মাযহাব মতে ফজর  নামাযে কুনূত বা কুনূতে নাযেলা পাঠ করা নাজায়িয ও নামায ফাসিদ হওয়ার কারণ এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া দেয়ার কারণ
সুন্নতের পথিকৃত, হক্বের অতন্দ্র প্রহরী, দ্বীন ইসলামের নির্ভীক সৈনিক, সারা জাহান থেকে কুফরী, শিরেকী ও বিদ্য়াতের মূলোৎপাটনকারী, বাতিলের আতঙ্ক এবং আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদায় বিশ্বাসী একমাত্র দলীলভিত্তিক তাজদীদী মুখপত্র- মাসিক আল বাইয়্যিনাতপত্রিকায় এ যাবৎ যত লেখা বা ফতওয়াই প্রকাশ বা পত্রস্থ হয়েছে এবং ইনশাআল্লাহ হবে তার প্রতিটিরই উদ্দেশ্য বা মাকছূদ এক ও অভিন্ন। অর্থাৎ মাসিক আল বাইয়্যিনাতেএমন সব লেখাই পত্রস্থ  হয়, যা মানুষের আক্বীদা ও আমলসমূহ পরিশুদ্ধ করণে বিশেষ সহায়ক।
 তদ্রুপ মাসিক আল বাইয়্যিনাতে’ “হানাফী মাযহাব মতে ফজর নামাযে কুনূত বা কুনূতে নাযেলা পাঠ করা নাজায়িয ও নামায ফাসিদ হওয়ার কারণ এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়াদেয়ার মাকছুদ এবং উদ্দেশ্যও ঠিক তাই।  মহান আল্লাহ পাক পবিত্র কালামে পাকে সূরা মায়িদার৮২নং আয়াত শরীফে ইরশাদ করেন,
 لتجدن اشد الناس عداوة للذين امنوا اليهود والذين اشركوا.
  অর্থঃ-তোমরা তোমাদের সবচেয়ে বড় শত্রু হিসেবে পাবে ইহুদীদেরকে। অতঃপর যারা মুশরিক তাদেরকে।মূলতঃ এই ইহুদীরাই মুসলমানের ঈমান-আমল  বিনষ্ট করে দ্বীন ইসলামে ফিৎনা সৃষ্টি করার লক্ষ্যে বিভিন্ন বাতিল ফিরকার জন্ম দিয়েছে। অর্থাৎ শিয়া, খারিজী, মুতাযিলা, জাবারিয়া, ক্বদরিয়া, বাহাই, কাদিয়ানী ও ওহাবী ইত্যাদি বাতিল ফিরকাগুলো ইহুদীদেরই এজেন্ট। বর্তমানে ইহুদীদের এজেন্ট হিসেবে মুসলমানদের ঈমান আমলের সবচেয়ে বেশী ক্ষতি করছে যারা, তারা হলো- ওহাবী সম্প্রদায়
উল্লেখ্য, ইহুদীদের এজেন্ট, ওহাবী মতাবলম্বী দাজ্জালে কায্যাব তথা উলামায়ে ছূরা  কুনূতে নাযেলাসম্পর্কেও সমাজে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। তারা সম্প্রতি আফগানিস্তান ও ইরাক যুদ্ধের সময় শত্রুদের প্রতি বদ্ দোয়াকরার লক্ষে সারাদেশব্যাপী এমনকি বিশ্বের অন্যান্য মুসলিম দেশগুলোতেও মুছল্লীদেরকে প্রতি ফজর নামাযে’ ‘কুনূতে নাযেলাপাঠ করার আহ্বান জানায় এবং তারা অনেক মসজিদেই ফজর নামাযে কুনূত বা কুনূতে নাযেলা পাঠ করে।  শুধু তাই নয়, বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা, কিতাবাদী ও বক্তব্যে তারা ফজর নামাযে কুনূতে নাযেলাপাঠ করাকে জায়িয বলে প্রচার করেছে। আর এ ব্যাপারে তাদের মূল দলীল হলো, ‘ফতওয়ায়ে দেওবন্দ।অথচ কুনূতে নাযেলাসম্পর্কিত ফতওয়ায়ে দেওবন্দ’-এর বক্তব্য সম্পূর্ণই ভুল, অশুদ্ধ, দলীলবিহীন ও হানাফী মাযহাবের ইমাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণের মতের সম্পূর্ণই খিলাফ। যার প্রমাণ ও খণ্ডন অত্র ফতওয়াতেই আপনারা যথাসময়ে পেয়ে যাবেন ইনশাআল্লাহ। তাদের উক্ত ভুল ফতওয়ার কারণে সাধারণ লোক মনে করবে হানাফী মাযহাব মতে বোধ হয় ফজরে কুনূত পড়া জায়িয।অথচ শরীয়ত যেটাকে নাজায়িয ও হারাম করেছে সেটাকে জায়িয বা হালাল মনে করা কুফরী বা ঈমান বিনষ্ট হওয়ার কারণ। অনুরূপ তাদের উক্ত ভুল ও অর্ধেক ফতওয়ার কারণে হাজার হাজার মুছল্লী ফজর নামাযে কুনূত পাঠ করার কারণে একটি ফরয আমল নামাযঅনায়াসে ও অজান্তেই ফাসিদ বা বিনষ্ট করে দিচ্ছে বা দিবে। অথচ নামায হচ্ছে, দ্বীন ইসলামের ভিত্তি বা খুঁটি। তাই বলার অপেক্ষাই রাখেনা যে, নামায তরক করা, ইচ্ছা করে নামায ফাসিদ হয় এমন কাজ করা, নামাযে অবহেলা করা, খুশু-খুযূর সাথে নামায আদায় না করা, হারাম-নাজায়িয থেকে নামাযকে হিফাযত না করা ইত্যাদি কার্যকলাপ কঠিন গুণাহ্র কাজ ও কুফরীর লক্ষণ। যেমন মিশকাত শরীফ”-এর কিতাবুছ্ ছলাহ্, বাবু ফাযায়িলিছ্ ছলাহ (নামাযের ফযীলত) অধ্যায়ের আল ফাছলুল্ আউয়াল-এর ৬নং হাদীছ শরীফে বর্ণিত আছে,
 عن حابر رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم بين العبد وبين الكفر ترك الصلوة.
 অর্থঃ- হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, বান্দার ও কুফরীর মধ্যে পার্থক্য হলো নামায ত্যাগ করা।” (মুসলিম শরীফ) অর্থাৎ অস্বীকৃতির সাথে নামায ত্যাগ করলে বান্দা কাফির হয়ে যায়।
আল্লাহ পাক-এর রসূল, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন,
  من ترك الصلوة حتى مضى وقتها ثم قضى عذاب فى النار حقبا والحقبة ثمانون سنة والسنة ثلث مائة وستون يوما كل يوم كان مقداره الف سنة.
 অর্থঃ- যে ব্যক্তি নামায তরক করলো, এমনকি নামাযের ওয়াক্ত শেষ হয়ে গেল, অতঃপর সে ব্যক্তি তার ক্বাযা আদায় করলো, সে জাহান্নামে এক হোক্বা শাস্তি ভোগ করবে। আর এক হোক্বা হচ্ছে ৮০ বছর এবং এক বছর হচ্ছে ৩৬০ দিন, প্রতিটি দিন হচ্ছে- হাজার বছরের সমান।” (মাজালিসুল আবরার, আল্ মানাসিক)
হাদীছ শরীফের বর্ণনা মুতাবিক হোক্বার পরিমাণ দুনিয়াবী বছর অনুযায়ী নিম্নরূপ-(৮০ বছর * ৩৬০ দিন = ২৮৮০০ দিন * ১০০০ বছর = ২,৮৮,০০০০০ বছর।) অতএব, এক হোক্বা = ২,৮৮,০০০০০ বছর। উল্লেখ্য, ক্বাযা নামায আদায়কারী ব্যক্তির উপর ওয়াক্ত মুতাবিক নামায ফরয হয়েছিল কিন্তু সে যথা সময়ে ফরয আদায় করেনি। অর্থাৎ ওয়াক্ত ফউত হওয়ার পর সে আদায় করেছে। ফরয নামায যথা সময় আদায় না করার কারণেই তাকে এক হোক্বা শাস্তি ভোগ করতে হবে। এখন সে যদি খালিছ তওবা করে, তাহলে আল্লাহ্ পাক ক্ষমা করে দিবেন। অন্যথায় তওবা ব্যতীত নামাযের ক্বাযা আদায় করলেও শাস্তি থেকে অব্যাহতি বা রেহাই পাওয়া যাবেনা। আর যারা নামাযের ক্বাযাও আদায় করবেনা আর তওবাও করবে না, তাদের যে কি শাস্তি হবে, সে সম্পর্কে আল্লাহ পাকই সবচেয়ে ভাল জানেন। নামাযের গুরুত্ব বুঝানোর জন্যই হাদীছ শরীফে উল্লেখিত শাস্তির কথা বলা হয়েছে।  নামায ফাসিদ তথা ভঙ্গ বা ফউত হবার পর কাযা আদায় করলেও যেখানে এক হোক্বা তথা দুই কোটি আটাশি লক্ষ বছর শাস্তি ভোগ করতে হয় সেখানে কুনূতে নাযেলা পাঠ করার কারণে নামায ভঙ্গ হওয়ার পর কাযা আদায় না করলে কত কোটি বছর শাস্তি হবে তা বলার অপেক্ষাই রাখেনা। মূলকথা, যারাই ফজর নামাযে কুনূতে নাযেলা পাঠ করবে তাদের নামায ফাসিদ বা বাতিল হয়ে যাবে। পক্ষান্তরে বাতিল ফিরক্বার মৌলভীরা ফজর বা অন্যান্য নামাযে কুনূতে নাযেলা পাঠ করা জায়িয ফতওয়া দিয়ে নিজেদের এবং সরলপ্রাণ মুছল্লীদের নামায ফাসিদ বা ভঙ্গ করে দেয়ার মাধ্যমে লানত বা কঠিন আযাবের উপযোগী হচ্ছে।  প্রকৃতপক্ষে ভুল ফতওয়া দিয়ে ইহুদীদের এজেন্ট, ওহাবী মতাবলম্বী, দাজ্জালে কায্যাব ও উলামায়ে ছূরা সাধারণ মুসলমানদের ঈমান-আমলকে বিনষ্ট করে দ্বীন ইসলামকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্রই সর্বদা করে যাচ্ছে। কাজেই এদের ভুল ফতওয়া থেকে যেন সাধারণ মুসলমানগণ নিজেদের ঈমান-আমল হিফাযত করতে পারে এবং যারা অজ্ঞতাহেতু ভুল ফতওয়া দিচ্ছে তারাও যেন সঠিক ও দলীলভিত্তিক ফতওয়া পাওয়ার পর ভুল ফতওয়া ও আমল থেকে তওবা করে হক্বের উপর ফিরে আসতে পারে। সর্বোপরি মহান আল্লাহ পাক-এর খাছ রেযামন্দী বা সন্তুষ্টি লাভ করতে পারে সে উদ্দেশ্যেই মাসিক আল বাইয়্যিনাতে হানাফী মাযহাব মতে ফজর নামাযে কুনূত বা কুনূতে নাযেলা পাঠ করা নাজায়িয ও নামায ফাসিদ হওয়ার কারণ এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়াপ্রকাশ করা হলো। আল্লাহ পাক আমাদের সকলকে উক্ত ফতওয়া মুতাবিক আমল করে মহান আল্লাহ পাক ও উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর খাছ রেযামন্দী হাছিল করার তাওফীক দান করুন। (আমীন)

(পূর্ব প্রকাশিতের পর)
কুনূতে নাযেলা সম্পর্কিত অখ্যাত রাহমানী পয়গামের জিহালতপূর্ণ ও বিভ্রান্তিকর বক্তব্যের দলীলভিত্তিক খন্ডনমূলক জবাব

বিগত আফগানিস্তান ও ইরাক যুদ্ধের সময় বিশ্বের অন্যান্য মুসলিম দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও ওহাবী, খারিজী ও বিদ্য়াতীরা দীর্ঘদিন ফজর নামাযে কুনূতে নাযেলা বা বদদোয়ার কুনূত পাঠ করে। সাথে সাথে অখ্যাত রহমানী পয়গাম ডিসেম্বর, ২০০২ সংখ্যায় এক জিজ্ঞাসার জবাবে কুনূতে নাযেলা পাঠ করাকে জায়িয বলে ফতওয়া দেয়া হয়। সঙ্গত কারণেই মাসিক আল বাইয়্যিনাতের পাঠকদের পক্ষ থেকে এ সম্পর্কিত একটি সুওয়াল আল বাইয়্যিনাত কর্তৃপক্ষের নিকট আসে। মাসিক আল বাইয়্যিনাত এর ফেব্রুয়ারী২০০৩ সংখ্যায় রাহমানী পয়গামের বক্তব্য খণ্ডন করতঃ একটি জাওয়াব দেয়া হয়। উক্ত জাওয়াব পেয়ে তারা সম্পূর্ণ লা-জাওয়াব হয়ে যায়। এর কিছুুদিন পর গবেষণা কেন্দ্র মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফথেকে একটি গবেষণালব্ধ ও দলীলভিত্তিক লিফ্লেট সারা দেশে প্রচার করা হয়। যাতে বলা হয়েছে যে, “হানাফী মাযহাব মতে ফজর নামাযে কুনূত বা কুনুতে নাযেলা পাঠ করা বিদয়াত ও নামায ফাসিদ হওয়ার কারণ।  উক্ত লিফলেটের একটি কপি তথাকথিত শাইখুল হাদীছ আযীযুল হকের মাদ্রাসার শিক্ষক ঢাকা শাহজাহানপুর আমতলা মসজিদের তথাকথিত খতীব মুফতী মনছূরুল হক্বের নিকট পৌছানো হয় এবং উক্ত লিফলেটের জবাব দেয়ার জন্যে বলা হয়। মনছূরুল হক সাতদিনের মধ্যে উক্ত লিফলেটের জাওয়াব দিবে বলে জানায়।  কিন্তু দীর্ঘদিন অতিবাহিত হওয়ার পরও তার কাছ থেকে উক্ত লিফলেটের কোন জাওয়াব পাওয়া গেলনা। এরপর মাসিক আল বাইয়্যিনাতের পাঠকগণের পূনঃ পূণঃ অনুরোধের প্রেক্ষিতে মাসিক আল বাইয়্যিনাতের ১৩২তম সংখ্যা থেকে কুনূতে নাযেলা সম্পর্কে আরো অধিক দলীল-আদিল্লাহ-এর ভিত্তিতে আরো বিস্তারিতভাবে ফতওয়া প্রদান করা হয়। যা এখনো অব্যাহত আছে। উক্ত ফতওয়া প্রকাশের পর ওহাবী, খারিজী ও বিদয়াতী মৌলভী যারা ফজর নামাযে কুনূতে নাযেলাপাঠ করেছিল তারা সাধারণ জনগণের নিকট জাহিল, গোমরাহ ও বিদয়াতী হিসেবে সাব্যস্ত হয়। অবস্থা বেগতিক দেখে এবং নিজেদের জিহালতী ও গোমরাহী ধামাচাপা দেয়ার উদ্দেশ্যে প্রকাশিত সুওয়াল, লিফলেট ও ফতওয়া কোনটাই খণ্ডন না করে দীর্ঘ প্রায় তিন বৎসর পর রাহমানী পয়গাম আগস্ট২০০৫ সংখ্যায় সম্পূর্ণ মনগড়া, বিভ্রান্তিকর, কারচুপিমূলক বক্তব্য প্রদান করে এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে ইবারত কারচুপি করে ও শাফিয়ী মাযহাবের মতকে দলীল হিসেবে উল্লেখ করে কুনূতে নাযেলাকে জায়িয করার ব্যর্থ অপপ্রয়াস চালিয়েছে।
তাই মাসিক আল বাইয়্যিনাতের অত্র সংখ্যা থেকে রাহমানী পয়গামে প্রদত্ত কুনূতে নাযেলা সম্পর্কিত মনগড়া, বিভ্রান্তিকর ও কারচুপিমূলক প্রতিটি বক্তব্য ও দলীল খন্ডন করতঃ সঠিক জাওয়াব প্রদান করা হচ্ছে ইনশা আল্লাহ। যাতে সাধারণ জনগণ পয়গাম গোষ্ঠীর জিহালতী, গোমরাহী, ধোঁকাবাজী, প্রতারণা ও জালিয়াতী সম্পর্কে আরো সুস্পষ্টভাবে অবগত হতে পারে এবং তাদের ধোঁকা ও প্রতারণা থেকে নিজ ঈমান ও আমলকে হিফাজত করতে পারে। নিম্নে ধাররাবাহিকভাবে রাহমানী পয়গামে প্রদত্ত কুনূতে নাযেলাসম্পর্কিত জিহালতপূর্ণ বক্তব্যসমূহকে পর্যায়ক্রমে উল্লেখ করে তার বিশুদ্ধতায় ছহীহ দলীলভিত্তিক খণ্ডনমুলক জাওয়াব দেয়া হলো।
অখ্যাত রাহমানী পয়গামের
জিহালতপূর্ণ বক্তব্য- ১
 অখ্যাত রাহমানী পয়গাম আগস্ট-২০০৫ ঈসায়ী সংখ্যার ৩৪ পৃষ্ঠায় জিজ্ঞাসা ও জবাব বিভাগে কুনূতে নাযেলা সম্পর্কিত এক জিজ্ঞাসার জবাবে যা লিখেছে, তা দ্বারা তারা প্রথমত: এটাই বুঝাতে চেয়েছে যে, “জমহুরে ফুক্বাহা বিশেষত হানাফী মাযহাবের ফুক্বাহায়ে কিরামগণের মতে কুনূতে নাযেলা তথা, যুদ্ধ বিগ্রহ মহামারী ইত্যাদি দুর্যোগপূর্ণ সময়ে কুনূতে নাযেলা পড়ার হুকুম মানসুখ হয়নি। বরং কোন প্রকার দুর্যোগ ছাড়া দায়েমীভাবে বা সব সময়েই ফজরের নামাযে যে কুনূত পড়া হতো তাই মানসুখ বা রহিত হয়ে গেছে। অর্থাৎ তাদের বক্তব্য হলো ফজরের নামাযে দুপ্রকার কুনূত ছিল।
১. কুনূতে দায়েমী: যা কোন প্রকার দুর্যোগ ছাড়া দায়েমীভাবে পড়া হতো। হানাফী মাযহাব মতে  এ প্রকার কুনূত মানসুখ হয়ে গেছে।
২. কুনূতে নাযেলাঃ যা ফজর নামাযে যুদ্ধ-বিগ্রহ, বালা- মুছীবত, মহামারী ইত্যাদি সময়ে পড়া হতো। হানাফী মযহাব মতে এ প্রকারের কুনূত মানসুখ হয়নি।
রহমানী পয়গামের জিহালতপূর্ণ বক্তব্যের খণ্ডনমূলক জবাব তাদের উক্ত বক্তব্যের জবাবে
প্রথমত: বলতে হয় যে, তাদের উপরোক্ত বক্তব্য প্রমাণ করে যে, তারা আশাদ্দুদ দরজার জাহিল ও চরম প্রতারক। শুধু তাই নয়, মাযহাবী ফায়সালার ব্যাপারেও তারা চরম অজ্ঞ। অর্থাৎ কোন্ হাদীছ শরীফ ও বক্তব্য হানাফী মাযহাবের আর কোন্টা শাফিয়ী বা অন্যান্য মাযহাবের এ সম্পর্কেও তারা নেহায়েতই অজ্ঞ। তাইতো তাদের গুরু শাইখুল হদছ নিজের বুযুর্গী জাহির করতে গিয়ে মাগরিব নামাযে সূরা ফাতিহার পর উচ্চস্বরে অর্থাৎ জোরে বিস্মিল্লাহ পাঠ করতঃ সূরা ইখলাস পাঠের পর বিস্মিল্লাহ আস্তে পাঠ করে সূরা কাফিরুন পাঠের পর প্রথম রাকায়াত শেষ করে। অত:পর দ্বিতীয় রাকায়াতে সূরা ফাতিহার পর জোরে বিস্মিল্লাহ বলে সূরা ইখলাস তারপর সূরা নছর পড়েছে। (আগস্ট২০০৫- শাইখুল হাদীসের ২৪ ঘণ্টা দ্রষ্টব্য)
অথচ আমাদের হানাফী মাযহাব মুতাবিক ফরজ, ওয়াজিব ও সুন্নতে মুয়াক্কাদা নামাযে সূরা ফাতিহার পর দুই সূরা একই রাকায়াতে পাঠ করা, পরের সূরা আগে পড়া, আগের সূরা পরে পড়া, ছোট সূরা আগে পড়া, বড় সূরা পরে পড়া এবং জেহ্রী ও র্সিরী সকল নামাযেই জোড়ে বা উচ্চ স্বরে বিস্মিল্লাহপাঠ করা মাকরূহ। শুধু তাই নয়, জেহ্রী নামাযে সূরার শুরু বা মধ্যখান যেখান থেকেই পাঠ করুক না কেন বিস্মিল্লাহপাঠ করতে হয়না। আর র্সিরী নামাযে যদি সূরার শুরু থেকে পাঠ করে তবে বিস্মিল্লাহপাঠ করতে হয়। আর যদি মধ্যখান থেকে পাঠ করে তবে বিস্মিল্লাহপাঠ করতে হয়না।
আর তারাবীহ্ নামাযে হাফিয ছাহেব যে একবার জোড়ে বা উচ্চস্বরে বিস্মিল্লাহপাঠ করেন তা মূলত: আয়াত শরীফ হিসেবে পাঠ করেন। কেননা, দুই সূরার মধ্যখানে যে বিস্মিল্লাহরয়েছে তা আয়াত শরীফ কিনা এ ব্যাপারে হানাফী মাযহাবের ইমামগণের মাঝে ইখতিলাফ বা মতভেদ রয়েছে।
কেউ বলেছেন, আয়াত শরীফ, কেউ বলেছেন আয়াত শরীফ নয়। এ মতভেদের কারণেই হাফিয ছাহেবকে একবার জোড়ে বা উচ্চস্বরে বিস্মিল্লাহপাঠ করতে হয়, তাতে শ্রোতাদের খতম পূর্ণ হওয়ার ব্যাপারে আর কোন সন্দেহ বা সংশয় থাকে না।
কাজেই এর দ্বারা কি এটাই প্রমাণ করেনা যে, তারা মাযহাব সম্পর্কে নেহায়েতই অজ্ঞ। সুতরাং কুনূতে নাযেলা হানাফী মাযহাব মতে মানসুখ হয়েছে। এটাও তাদের না জানাটাই স্বাভাবিক।
দ্বিতীয়তঃ হানাফী মাযহাব মতে, ফজরে দায়েমী কুনূত মানসুখ হয়েছে। কুনূতে নাযেলা মানসুখ হয়নি  তাদের এ বক্তব্যও সম্পূর্ণরূপে মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর ও ভিত্তিহীন এবং হানাফী ফক্বীহগণের প্রতি সুস্পষ্ট মিথ্যারোপের শামিল। কেননা তারা হানাফী মাযহাবের কোন নির্ভরযোগ্য কিতাব থেকে প্রমাণ করতে পারেনি এবং কস্মিনকালেও পারবে না যে, ফজর নামাযে দুপ্রকার কুনূত ছিল। বরং আমরা অসংখ্য দলীল দ্বারা প্রমাণ করেছি যে, ফজর নামাযে এক প্রকার কুনূতই ছিল আর সেটাই হচ্ছে কুনূতে নাযেলা। যাকে কুনূতে ফজর ও কুনূতে লান বলেও কিতাবে উল্লেখ করা হয়েছে। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রিল, যাকওয়ান, আছিয়্যাহ ইত্যাদি ক্বওমের বিরুদ্ধে বদদোয়ায় ফজর নামাযে দ্বিতীয় রাকায়াতে রুকুর পর শুধুমাত্র এক মাস পাঠ করেছেন।
অতঃপর মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন এর নির্দেশ মুবারকে তিনি তা পাঠ করা বন্ধ করেন। এর পূর্বে ও পরে কখনোই তিনি কুনূত তথা কুনূতে নাযেলা পাঠ করেননি। আর তখন থেকেই মূলতঃ ফজর নামাযে কুনূতে নাযেলা এর আমল মানসুখ হয়ে যায়। এটাই হানাফী মাযহাবের ফতওয়া গ্রাহ্য বা বিশুদ্ধ অভিমত।
এ সম্পর্কিত বিস্তারিত নির্ভরযোগ্য দলীল আদিল্লাহ সমূহ যদিও মাসিক আল বাইয়্যিনাতের পূর্ববর্তী সংখ্যায় উল্লেখ করা হয়েছে। পাঠকগণের বুঝার সুবিধার্থে এখানেও তা পুনরায় উল্লেখ করা হলো। যার মাধ্যমে আমরা সর্বপ্রথম প্রমাণ করবো যে, আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ, নূরে মুজাস্সাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ফজর নামাযে শুধুমাত্র একমাসই কুনূত পাঠ করেছেন। আর উক্ত কুনূতকেই মূলত: কুনূতে লান ও কুনূতে নাযেলা বলা হয়। দ্বিতীয়ত: প্রমাণ করা হবে যে, যে সকল কিতাবে ফজরের কুনূত মানসূখহওয়ার কথা উল্লেখ আছে তা দ্বারা মূলত: কুনূতে লান বা নাযেলাই উদ্দেশ্য।  তৃতীয়ত:  প্রমাণ করা হবে যে, হানাফী মাযহাব মতে, ফজর নামাযে কুনূতে লান বা নাযেলার আমল মানসূখ হয়ে গেছে। যা ইতিপূর্বে আমরা পূর্ববর্তী সংখ্যাগুলোতেও প্রমাণ করেছি।
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ফজর নামাযে শুধুমাত্র এক মাসই কুনূতে নাযেলা পাঠ করেছেন তার প্রমাণ
এ প্রসঙ্গে বাহরুর রায়িক্ব শরহে কানযুদ দাক্বায়িক্ব১ম খণ্ডের ৪৪ পৃষ্ঠা এবং শরহুন নিকায়া১ম খণ্ডের ২২৯ পৃষ্ঠায় বর্ণিত আছে,
[১১৮৬-১১৮৯]
ورواه ابو حنيفة عن حماد عن ابراهيم عن علقمة عن عبد الله ان النبى صلى الله عليه وسلم لم يقنت فى الفجر قط الا شهرا واحدا لم ير قبل ذلك ولا بعده وانما قنت فى ذلك الشهر يدعوا على ناس من المشركين ولهذا لم يكن انس يقنت فى الصبح كما رواه الطبرانى بسنده من حديث غالب بن فرقد الطحاوى قال كنت عند انس بن مالك شهرين فلم يقنت فى صلوة الغدوة وما رواه البخارى ومسلم عن ابى سلمة وسعيد بن المسيب عن ابى هريرة ان النبى صلى الله عليه وسلم لما رفع راسه من الركعة الثانية قال اللهم انج الوليد بن الوليد اللهم انج سلمة ابن هشام وفى اخره ثم بلغنا انه ترك ذلك لما نزلت (ليس لك من الامر شئ) الاية.
অর্থঃ- ইমাম আযম হযরত আবু হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি হযরত ইমাম হাম্মাদ রহমতুল্লাহি আলাইহি থেকে, তিনি হযরত ইব্রাহীম নখয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি থেকে, তিনি হযরত আলক্বামা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে, তিনি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে হাদীছ শরীফ খানা বর্ণনা করেন। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন যে, নিশ্চয়ই আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কেবলমাত্র একমাস ফজর নামাযে মুশরিকদের প্রতি বদদোয়ায় কুনূতে নাযেলা পাঠ করেন (অতঃপর তা পরিত্যাগ করেন)। এর পূর্বে এবং পরে আর কখনও আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে কুনূতে নাযেলা পাঠ করতে দেখা যায়নি। আর এই কারণেই হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ফজর নামাযে কুনূতে নাযেলা পাঠ করেননি। যেমন হযরত ইমাম ত্ববারানী রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর সনদে হযরত গালিব ইবনে ফারক্বাদ ত্বহাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আমি হযরত আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা-এর পিছনে দুই মাস ধরে নামায আদায় করেছিলাম। দেখেছি তিনি ফজরের নামাযে কখনই কুনূতে নাযেলা পাঠ করেননি। এটা ছাড়াও বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফে হযরত আবু সালামা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এবং হযরত সাঈদ ইবনে মুসাইয়্যিব রহমতুল্লাহি আলাইহি থেকে বর্ণিত আছে। তাঁরা উভয়ে হযরত আবু হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণনা করেন যে, আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (ফজরের নামাযে) দ্বিতীয় রাকয়াতে রুকু থেকে যখন মাথা মুবারক উঠাতেন তখন দাঁড়িয়ে বলতেন,
اللهم انج الوليد بن الوليد اللهم انج سلمة بن هشام الى اخره.
আয় আল্লাহ পাক! ওয়ালীদ ইবনে ওয়ালীদকে এবং সালামা ইবনে হিশামকে নাযাত দিন এভাবে হাদীছ শরীফ খানা শেষ পর্যন্ত পাঠ করতেন। হযরত আবু হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, অতঃপর আমাদের কাছে সংবাদ পৌঁছল যে, কুরআন শরীফের আয়াত শরীফ, ليس لك من الامر شئ الاية.
এ বিষয়ে আপনার আর কিছুই করার প্রয়োজন নেই।অবতীর্ণ হওয়ার পর হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঐ কুনূতে নাযেলা পাঠ করা পরিত্যাগ করেছেন।
এ প্রসঙ্গে আল আইনী২য় খণ্ডের ৫৯০ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,
[১১৯০-১১৯১]
وقال الطحاوى حدثنا ابو داود المقدمى ثنا ابو معشر ثنا ابو حمزة عن ابراهيم عن علقمة عن ابن مسعود رضى الله عنه قال قنت رسول الله صلى الله عليه وسلم شهرا يدعو على عصية وذكوان فلما نهى عليهم ترك القنوت.
অর্থঃ- হযরত ইমাম তাহাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, আমাদের কাছে হাদীছ শরীফ খানা বর্ণনা করেন হযরত আবু দাউদ আল মাক্বদামী রহমতুল্লাহি আলাইহি। তিনি বলেন, আমাদের কাছে হযরত আবু মাশার রহমতুল্লাহি আলাইহি বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আমাদের কাছে আবু হামযা রহমতুল্লাহি আলাইহি হযরত ইবরাহীম নখয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি থেকে, তিনি হযরত আলক্বামা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে, তিনি আবার হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণনা করেন। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, হযরত রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আছিয়্যা এবং যাকওয়ান গোত্রদ্বয়ের প্রতি বদদোয়ায় একমাস কুনূতে নাযেলা (ফজর নামাযে) পাঠ করেন। অতঃপর আল্লাহ্ পাক যখন হযরত রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে তাদের প্রতি বদদোয়া করতে নিষেধ করেন। তখন হযরত নবী পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কুনূতে নাযেলা পাঠ করা পরিত্যাগ করেন।” (শরহুন নিকায়া ১ম খণ্ড ২২৮ পৃষ্ঠা।)
হিদায়া মায়াদ দিরায়াকিতাবের ১ম খণ্ডের ১৪৭ পৃষ্ঠায় আরো উল্লেখ আছে,
[১১৯২-১১৯৪]
وعن ابى هريرة ان النبى صلى الله عليه وسلم لما رفع راسه من الركعة الثانية من الصبح قال اللهم انج الوليد الحديث ثم بلغنا انه ترك ذلك لما نزلت ليس لك من الامر شئ (متفق عليه).
অর্থঃ- হযরত আবু হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হযরত রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ফজর নামাযে দ্বিতীয় রাকয়াতে রুকু থেকে যখন মাথা উত্তোলন করতেন, তখন দাঁড়িয়ে বলতেন, اللهم انج الوليد. আয় আল্লাহ্ পাক! ওয়ালীদ ইবনে ওয়ালীদকে নাযাত দান করুন। অতঃপর আমাদের কাছে বর্ণনা সূত্রে এসে পৌছেছে যে, যখন আল্লাহ পাক ليس لك من الامر شئ. এ বিষয়ে আপনার আর কিছুই করার প্রয়োজন নেই।এই আয়াত শরীফখানা অবতীর্ণ করেন তখন হযরত নবী পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কুনূতে নাযেলা পাঠ করা পরিত্যাগ করেন। (বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ) আর এক মাস পাঠের পর তা পরিত্যাগ তথা মানসুখের কারনে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু পরবর্তীতে ফজর নামাযে কুনূতে নাযেলা পাঠ করাকে বিদ্য়াত বলেছেন।
[১১৯৫]
عن ابن عمر رضى الله عنه ذكر القنوت فقال والله انه لبدعة ما قنت رسول الله صلى الله عليه وسلم غير شهر واحد.
অর্থঃ- হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা তিনি নিজেই একদিন ফজর নামাযের কুনূতে নাযেলা সম্পর্কে আলোচনা করার পর বললেন, আল্লাহ পাক-এর কসম! অবশ্যই ফজর নামাযে কুনূতে নাযেলা পাঠ করা বিদ্য়াত। কেননা হযরত নবী পাক ছল্লাল্লাহু আলঅইহি ওয়া সাল্লাম শুধুমাত্র একমাস ব্যতীত আর কখনই কুনূতে নাযেলা পাঠ করেননি। (নূরুল হিদায়া ১মখণ্ড১১৭ পৃষ্ঠা।)
 আল ফিক্বহুল ইসলামীকিতাবের ১ম খণ্ডের ৮১০ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,
[১১৯৬]
واما القنوت النبى صلى الله عليه وسلم فى الفجر شهرا فهو منسوخ بالاجماع لما روى ابن مسعود انه عليه السلام قنت فى صلاة الفجر شهرا ثم تركه.
অর্থঃ- নিশ্চয়ই আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ফজর নামাযে শুধুমাত্র একমাস যে কুনূতে নাযেলা পাঠ করেছিলেন অতঃপর সেই কুনূতে নাযেলা সকল ইমামগণের ঐক্যমতে মানসুখ হয়েছে।
কেননা হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত আছে। তিনি বলেন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ফজর নামাযে কেবলমাত্র একমাস কুনূতে নাযেলা পাঠ করেন। অতঃপর তা বর্জন তথা পরিত্যাগ করেন।
আল হিদায়া মায়াদ দিরায়াকিতাবের প্রথম খন্ডের ১৪৭ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,
[১১৯৭]
حديث ابن مسعود ان النبى صلى الله عليه وسلم قنت فى صلاة الفجر ثم تركه البزار والطبرانى من حديث بن مسعود لم يقنت رسول الله صلى الله عليه وسلم فى الصبح الا شهرا ثم ترك لم يقنت قبله ولا بعده ..... واخرجه الطحاوى بلفظ قنت رسول الله صلى الله عليه وسلم شهرا يدعو على عصية وذكوان فلما ظهر عليهم ترك القنوت.
অর্থঃ- হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর থেকে হাদীছ শরীফ বর্ণিত আছে। তিনি বলেন, নিশ্চয়ই আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ফজরের নামাযে শুধুমাত্র একমাস কুনূতে নাযেলা পাঠ করেন। অতঃপর সেই কুনূতে নাযেলা পাঠ করা পরিত্যাগ করেন। হযরত ইমাম বাযযার এবং তাবারানী রহমতুল্লাহি আলাইহিমা হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে আরো হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেন। তিনি বলেন হযরত নবী পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ফজর নামাযে কুনূতে নাযেলা কেবল মাত্র একমাস পাঠের পর তা পাঠ করা পরিত্যাগ তথা বন্ধ করেন। এর পূর্বে এবং পরে তথা ওফাত মুবারকের পূর্ব পর্যন্ত আর কখনো কুনূতে নাযেলা পাঠ করেননি। হযরত ইমাম তাহাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি কর্তৃক অপর এক বর্ণনায় আছে যে, আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আছিয়্যা এবং যাকওয়ান গোত্রদ্বয়ের প্রতি বদদেয়ায় একমাস কুনূতে নাযেলা পাঠ করেন।
অতঃপর যখন তাদের প্রতি বদদোয়া করতে আল্লাহ্ পাক নিষেধ করেন তখন হযরত রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কুনূতে নাযেলা পাঠ করা বন্ধ করেন।
হাশিয়ায়ে তাহতাবী আলাদ্ দুররিল মুখতারকিতাবের ১ম খণ্ডের ২৮১ পৃষ্ঠায় আরো উল্লেখ আছে, [১১৯৮]
قوله لانه منسوخ- قال انس رضى الله تعالى عنه قنت رسول الله صلى الله عليه وسلم فى الصبح بعد الركوع يدعو على احياء من العرب رعل وذكوان وعصية حين قتلوا القراء وهم سبعون او ثمانون رجلا ثم تركه لما ظهر عليهم فدل على نسخه.
অর্থঃ- (ফজর নামাযে কুনূতে নাযেলা মানসুখ সম্পর্কিত বর্ণনা হচ্ছে)ঃ হযরত আনাস রদ্বিয়ালাহু তায়ালা আনহু বলেন, হযরত রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ফজর নামাযে রুকুর পর আরবের কতিপয় গোত্র রিল, যাকওয়ান ও আছিয়্যাহ-এর প্রতি বদ্দোয়ায় শুধুমাত্র একমাস কুনূতে নাযেলা পাঠ করেন। আর এটা ঐ সময় পড়েছিলেন যখন তারা সত্তর অথবা আশিজন হাফিযে কুরআন ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমদেরকে শহীদ করেছিলো। অতঃপর যখন নিষেধের আয়াত শরীফ অবতীর্ণ হয়, তখন আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কুনূতে নাযেলা পাঠ করা বন্ধ করে দেন। কাজেই, এ হাদীছ শরীফ খানাই প্রমাণ করে যে কুনূতে নাযেলা মানসুখ হয়ে গেছে।
বুখারী শরীফ”-এর ১ম খণ্ডের ১৩৬ পৃষ্ঠার ৬ নং হাশিয়ায় উল্লেখ আছে,
[১১৯৯-১২১২]
وعن انس رضى الله عنه ان النبى صلى الله عليه وسلم قنت شهرا ثم تركه فقوله ثم تركه يدل على ان القنوت فى الفرائض كان ثم نسخ.
অর্থঃ- হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নিশ্চয়ই আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শুধুমাত্র একমাস (ফজর নামাযে) কুনূতে নাযেলা পড়ে ছিলেন। অতঃপর ঐ কুনূতে নাযেলা পাঠ করা পরিত্যাগ তথা বন্ধ করেন। হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এর শেষের বর্ণনা (ثم تركه) (ছুম্মাতারাকাহু)
অতঃপর তিনি তা পরিত্যাগ করেছেন।এ কথার দ্বারা এটাই প্রমাণ করে যে, ফরয নামাযসমূহে কুনূতে নাযেলা ছিল পরে তা মানসুখ তথা রহিত হয়ে গেছে।  অনুরুপ বর্ণনা নিম্নোক্ত কিতাবসমূহের মধ্যেও রয়েছে। যেমন- (মুসলিম শরীফ, তিরমিযী শরীফ, আবু দাউদ শরীফ, নাসায়ী শরীফ, ইবনে মাজাহ শরীফ, তাহাবী শরীফ, মিশকাত শরীফ, মিরকাত শরীফ, আশরাফুত তাওযীহ, মিরয়াতুল মানাজীহ, ইরশাদুস্ সারী, ফতহুল বারী, উমদাতুল ক্বারী ইত্যাদি।)
উপরোক্ত নির্ভরযোগ্য ও মশহুর কিতাব সমূহের বর্ণনা দ্বারা সুস্পষ্ট ও অকাট্যভাবেই প্রমানিত হয় যে, রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সম্পূর্ণ হায়াত মুবারকে মাত্র একমাস কাফিরদের প্রতি বদদোয়ায় কুনূত পাঠ করেছেন। যাকে কুনূতে নাযেলা বলা হয়। পয়গাম গোষ্ঠিও এটা স্বীকার করেছে। যদি তাই হয় তবে ফজর নামাযে দায়েমী কুনূত বা বিত্র নামাযের ন্যায় কুনুত তিনি কখন পড়লেন? উক্ত ইবারতে তো স্পষ্টই উল্লেখ আছে,
قنت رسول الله صلى الله عليه وسلم شهرا.
রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একমাস কুনূত পড়েছেন। এ হাদীছ শরীফে কোন্ কুনূতের কথা বলা হয়েছে? নাযেলার কথা বলা হয়েছে। অতঃপর বলা হয়েছে ثم تركه অতঃপর তিনি তা তরক করেন। কোন কুনূত তরক করেন? নাযেলা তরক করেন।  অতঃপর বলা হয়েছে لم يقنت قبله ولا بعده তিনি এর পূর্বে ও পরে আর কখনো কুনূত পাঠ করেননি। কি কুনূত পাঠ করেননি কেন করেননি। নাযেলা পাঠ করেননি এবং মানসুখ হয়ে যাওয়ার কারণে পাঠ করেনি।  কেননা বুখারী শরীফের ইবারতে স্পষ্ট উল্লেখ আছে যে,
ثم تركه بدل على ان القنوت فى الفرائض كان ثم نسخ.
অতঃপর তিনি তা তরক করেনএকথা এটাই প্রমাণ করে যে, ফরজ নামাযে কুনূতে নাযেলা ছিল যা পরবর্তীতে অর্থাৎ একমাস পাঠ করার পর মানসুখ হয়ে যায়। যদি তাই হয়ে থাকে তবে কুনূতে নাযেলা মানসুখ হয়নি এবং রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কুনূতে নাযেলা ছাড়াও ফজরে বিতরের ন্যায় কুনূত পাঠ করেছেন। পয়গাম গোষ্ঠীর একথা কি করে সত্য হতে পারে? মুলতঃ তাদের উক্ত বক্তব্য সম্পূর্ণই মিথ্যা ও দলীলবিহীন। সুতরাং ফজর নামাযে যে কুনূত মানসুখ হওয়ার কথা বলা হয়েছে, সেটাই কুনূতে নাযেলা। কারণ কুনূতে নাযেলা ব্যতীত আর কুনূত ফজর নামাযে ছিল না। বা রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পাঠ করেননি।
যে সকল কিতাবে ফজরের কুনূত মানসুখ হওয়ার কথা উল্লেখ আছে তাদ্বারা যে কুনূতে লান বা নাযেলা উদ্দেশ্য তার প্রমাণ

ফতওয়ায়ে শামী২য় খণ্ডের ৮-৯ পৃষ্ঠায় দুররুল মুখতারকিতাবের ইবারতে উল্লেখ আছে,
[১২১৩]
وياتى الماموم بقنوت الوتر لا الفجر لانه منسوخ.
অর্থঃ- হানাফী মুক্তাদী (শাফিয়ী ইমামের পিছনে) বিত্র নামাযের দোয়া কুনূত পাঠ করবে। কিন্তু ফজরের নামাযে কুনূত বা কুনূতে নাযেলা পাঠ করবে না। কেননা ফজর নামাযের কুনূত বা কুনূতে নাযেলা মানসুখ হয়ে গেছে।
আল আইনীকিতাবের ২য় খণ্ডের ৫৯৭ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,
[১২১৪]
ان القنوت فى الفجر منسوخ معناه نسخ اصله.
অর্থঃ- নিশ্চয়ই ফজর নামাযে কুনূত বা কুনূতে নাযেলা মানসুখ। আর মানসুখের অর্থই হচ্ছে যার মূলেই মানসুখ।
মায়ারিফুস সুনানকিতাবের ৪র্থ খণ্ডের ২০ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,
[১২১৫]
ولابى حنيفة ومحمد انه اى ان القنوت فى الفجر منسوخ ...... ولا متابعة فيه اى فى المنسوخ لان الاتباع فيه لا يجوز.
অর্থঃ- ইমাম আযম হযরত আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি ও হযরত ইমাম মুহম্মদ রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর মতে নিশ্চয়ই ফজরের নামাযের কুনূত বা কুনূতে নাযেলা পাঠের বিধানটি মানসুখ হয়ে গেছে। আর মানসুখ বিষয়ের ইত্তিবা বা অনুসরণ করবেনা। কেননা মানসুখ বিষয়ের উপর ইত্তিবা বা অনুসরণ করা নাজায়িয ও হারাম।
[১২১৬]
والحديث حجة لنا فى ترك القنوت فى الفجر وبصرح فيه بانه محدث صححه الترمذى واعترف الحافظ فى التلخيص.
অর্থঃ- ফজরের নামাযে কুনূতে নাযেলা পরিত্যাগ করা সংক্রান্ত হাদীছ শরীফ খানাই আমাদের হানাফী মাযহাবের সুস্পষ্ট দলীল। আর এটাও সুস্পষ্ট যে, ফজর নামাযে কুনূতে নাযেলা পাঠ করা বিদ্য়াত (সাইয়্যিয়াহ)। হযরত ইমাম তিরমিযী রহমতুল্লাহি আলাইহি ঐ হাদীছ শরীফ খানাকে ছহীহ বলেছেন। আর হাফিয রহমতুল্লহি আলাইহি তালখীস কিতাবে এই মতকেই প্রাধান্য দিয়েছেন।
ফতওয়ায়ে শামীকিতাবের ২য় খন্ডের ১১ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,
[১২১৭]
قوله ولايقنت لغيره- اى غير الوتر وهذا نفى لقول الشافعى رحمه الله انه يقنت للفجر.
অর্থঃ- বিত্র নামায ব্যতীত অন্য কোন নামাযে কোন প্রকারের কুনূত পাঠ করা যাবে না। এর দ্বারা হযরত ইমাম শাফিয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর ফজর নামাযে কুনূত পাঠের বক্তব্যকে খণ্ডন করা হয়েছে।  কেননা শাফিয়ীগণ ফজরে কুনূত পাঠ করে থাকে।
 ফতওয়ায়ে কাযীখানকিতাবের ১ম খণ্ডের ২৪৫ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,
[১২১৮]
لايقنت لان القنوت فى صلاة الفجر منسوخ.
অর্থঃ- ফজরের নামাযে কুনূতে নাযেলা পড়বে না। কেননা ফজরের নামাযে কুনূতে নাযেলা পড়া সম্পর্কিত বর্ণনাটি মানসুখ হয়ে গেছে।
নুরুল হিদায়াকিতাবের ১ম খণ্ডের ১১৪ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,
[১২১৯]
উর্দূ কম্পোজ করতে হবে
অর্থঃ- বিত্র নামায ব্যতীত অন্য কোন নামাযে কোন প্রকার কুনূত পড়া জায়িয নেই।
তাফসীরে আহমদীকিতাবের ১ম খণ্ডের ১১২ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,
[১২২০]
لان دعاء القنوت عندنا انما يجب فى الصلوة الوتر خاصة ولا يجوز فى صلوة الفجر اصلا.
অর্থঃ- আমাদের হানাফী মাযহাব মতে শুধুমাত্র বিত্র নামাযে দোয়া কুনূত পাঠ করা ওয়াজিব। আর ফজর নামাযে মূলত কোন প্রকার কুনূতই পাঠ করা জায়িয নেই।
গায়াতুল আওতারকিতাবের ১ম খণ্ডের ৩১১ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,
[১২২১]
উর্দূ কম্পোজ করতে হবে
অর্থঃ- ফজর নামাযে কুনূত তথা কুনূতে নাযেলা পাঠ করবে না। কেননা ফজর নামাযে কুনূতে নাযেলা পাঠের বিধানটি মানসুখ হয়ে গেছে।
ফতওয়ায়ে নাওয়াযিলকিতাবের ৬০ পৃষ্ঠায় আরো বর্ণিত আছে,
[১২২২]
والقنوت فى صلوة الفجر منسوخ عندنا.
অর্থঃ- আমাদের হানাফী মাযহাবের নির্ভরযোগ্য ফতওয়া হলো ফজরের নামাযে কুনূতে নাযেলা পাঠ করা সম্পর্কিত বর্ণনাটি মানসুখ হয়েছে।
আশরাফুল হিদায়াকিতাবের ১ম খণ্ডের ১৯৮ পৃষ্ঠায় আরো উল্লেখ আছে,
[১২২৩]
উর্দূ কম্পোজ করতে হবে
অর্থঃ- তরফাইন তথা ইমামে আযম হযরত আবু হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি এবং হযরত ইমাম মুহম্মদ রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর (নির্ভরযোগ্য) দলীল হলো এই যে, ফজর নামাযে কুনূতে নাযেলা পাঠ করার বিধানটি মানসুখ তথা রহিত হয়ে গেছে। আল্লাহ পাক-এর রসূল, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ফজর নামাযে শুধু এক মাস কুনূতে নাযেলা পড়ার পর উহা বর্জন তথা পরিত্যাগ করেছেন।
হাশিয়ায়ে তাহতাবী আলাল মারাকিইল ফালাহকিতাবের ২৫৬ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,
[১২২৪]
ولهما ان قنوت الفجر منسوخ.
অর্থঃ- আমাদের হানাফী মাযহাবের ইমাম, ইমামে আযম হযরত আবু হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি এবং ইমাম মুহম্মদ রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর মতে অবশ্যই ফজর নামাযের কুনূতে নাযেলা পাঠ করা সম্পর্কিত বর্ণনাটি মানসুখ হয়ে গেছে।
এ প্রসঙ্গে ফতওয়ায়ে কুবরাকিতাবের ১ম খণ্ড ১৯১ পৃষ্ঠায় আছে,
[১২২৫-১২২৭]
انه منسوخ فلا يشرع بحال بناء على ان النبى صلى الله عليه وسلم قنت ثم ترك. والترك ينسخ. الفعل. هذا قول ابى حنيفة رحمه الله.
অর্থঃ- নিশ্চয়ই কুনূতে নাযেলা পাঠ করার বিধানটি মানসুখ হয়ে গেছে। যেহেতু হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সেটা (ফজর নামাযে একমাস) পাঠ করেন।
অতঃপর ঐ কুনূতে নাযেলা পাঠ করা পরিত্যাগ করেন। আর এ কারণেই বর্তমানে কুনূতে নাযেলা (নামাযে) পাঠ করা শরীয়তসম্মত নয়। কেননা, উক্ত আমলটি তরক্বের অর্থই হচ্ছে উক্ত আমলটি তথা কুনূতে নাযেলা পাঠের বিধানটি মানসুখ হয়ে যাওয়া। এটাই ইমাম আযম, হযরত ইমাম আবু হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর চূড়ান্ত অভিমত।” (ফতওয়ায়ে মাজমুয়াহ, মাউনা আলা মাযহাবি আলামিল মাদীনাহ ১ম খণ্ড ১১৩ পৃষ্ঠা)
আল বিনায়া (আইনী) শরহুল হিদায়াকিতাবের ২য় জিঃ ৫৯০ পৃষ্ঠায় আরো উল্লেখ আছে,
[১২২৮-১২২৯]
وان الله عز وجل نسخ ذلك بقوله (ليس لك من الامر شئ) الاية ففى ذلك ايضا وجوب ترك القنوت فى الفجر.
অর্থঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক ليس لك من الامر شئ الاية বিষয়ে আপনার আর কিছুই করার প্রয়োজন নেই।” (সুরা আল ইমরানের ১২৮ নং) আয়াত শরীফ খানা অবতীর্ণ করার মাধ্যমেই ফজর নামাযের কুনূতে নাযেলাকে মানসুখ করেন। ফলে ফজর নামাযে কুনূতে নাযেলা পরিত্যাগ করাও ওয়াজিব তথা ফরযের অর্ন্তভূক্ত। (তাহাবী শরীফ)
আইনুল হিদায়াকিতাবের ১ম খণ্ডের ৫৮৪ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,
[১২৩০-১২৩১]
উর্দূ কম্পোজ করতে হবে
অর্থঃ- ছহীহ ইবনে মাজাহ শরীফে স্পষ্টভাবে বর্ণিত আছে যে, উম্মুল মুমিনীন হযরত উম্মে সালামা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা বলেন, আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ, হুযূর  পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ফজরের নামাযে কুনূতে নাযেলা পাঠ করাকে নিষেধ করেছেন।
শরহুন নিকায়াকিতাবের ১ম খণ্ডের ২২৮ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,
[১২৩২]
واعلم ان قنوت الفجر منسوخ عندنا.
অর্থঃ- জেনে রাখুন, অবশ্যই ফজর নামাযের কুনূত তথা কুনূতে নাযেলা আমাদের হানাফী মাযহাবে মানসুখ তথা বাতিল।” “শরহুন নিক্বায়াকিতাবের ১ম খণ্ডের ২২৯ পৃষ্ঠায় আরো উল্লেখ আছে,
[১২৩৩-১২৩৪]
وعن ابن عمر انه ذكر القنوت فقال والله انه لبدعة ما قنت رسول الله صلى الله عليه وسلم غير شهر واحد ..... ما اخرجه ابن ماجه والنسائى والترمذى وقال حسن صحيح عن ابى مالك الاشجعى سعيد بن طارق بن الاشيم عن ابيه قال صليت خلف النبى صلى الله عليه وسلم فلم يقنت وصليت خلف ابى بكر فلم يقنت وصليت خلف عمر فلم يقنت وصليت خلف عثمان فلم يقنت وصليت خلف على فلم يقنت ثم قال يا بنى انها بدعة قال البخارى طارق بن اشيم له صحبة.
অর্থঃ- হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু একদিন কুনূতে নাযেলা আলোচনা করার পর বললেন, আল্লাহ পাক-এর কছম! অবশ্যই কুনূতে নাযেলা পাঠ করা এখন বিদয়াত। কেননা আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শুধু একমাস ব্যতীত আর কখনও কুনূতে নাযেলা পাঠ করেননি।
হযরত ইবনে মাজাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি, ইমাম নাসায়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি এবং ইমাম তিরমিযী রহমতুল্লাহি আলাইহি তাঁরা সকলেই হযরত আবু মালিক আশজায়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি এর পিতা কর্তৃক বর্ণিত হাদীছ শরীফ খানাকে হাসান ছহীহ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন। হযরত আবু মালিক আশজায়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর পিতা তারিক্ব ইবনে আশীম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন যে, আমি হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহ ওয়া সাল্লাম-এর পিছনে নামায আদায় করেছি কিন্তু (তরকের পর) তিনি আর কখনো কুনূতে নাযেলা পাঠ করেননি। হযরত আবু বকর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এর পিছনেও নামায আদায় করেছি কিন্তু তিনিও কুনূতে নাযেলা পাঠ করেননি। অনুরূপভাবে হযরত ওমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এর পিছনেও নামায পড়েছি কিন্তু তিনিও কুনূতে নাযেলা পাঠ করেননি। অতঃপর হযরত উছমান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর পিছনে নামায পড়েছি কিন্তু তিনিও কুনূতে নাযেলা পাঠ করেননি এবং হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুর-এর পিছনেও নামায আদায় করেছি কিন্তু তিনিও কুনূতে নাযেলা পাঠ করেননি। অতঃপর তারিক্ব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তাঁর ছেলে হযরত মালিক আজায়ী রহমতুল্লাহি আলাইহিকে উদ্দেশ্য করে বললেন, প্রিয় বৎস! নিশ্চয়ই কুনূতে নাযেলা (এখন পাঠ করা) বিদয়াত তথা বিদ্য়াতে সাইয়্যিয়াহ।
হযরত ইমাম বুখারী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, হযরত তারিক্ব বিন আশীম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ছাহাবীদের মধ্যে অন্যতম একজন ছাহাবী ছিলেন। (ফতহুল ক্বাদীর ১ খণ্ড, ৩৭৭ পৃষ্ঠা)
ফতহুল বারীকিতাবের ২য় খণ্ডের ৪৯০ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,
[১২৩৫-১২৩৯]
وقد روى مسلم من حديث البراء نحو حديث انس هذا تمسك به الطحاوى فى ترك القنوت فى الصبح قال لا نهم اجمعوا على نسخه فى المغرب فيكون فى الصبح كذلك النتهى.
অর্থঃ- হযরত ইমাম মুসলিম রহমতুল্লাহি আলাইহি হযরত বারা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেন। অনুরূপভাবে হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এর থেকেও ফজর নামাযে কুনূতে নাযেলা মানসুখ হওয়া সংক্রান্ত হাদীছ শরীফখানা বর্ণনা করেন। আর ইমাম আবু জাফর তাহাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি এই হাদীছ শরীফের মাধ্যমে দলীল গ্রহণ করেছেন যে, ফজর নামাযে কুনূতে নাযেলা পরিত্যাজ্য।  তিনি বলেন, মাগরিবের নামাযের কুনূতে নাযেলা মানসুখ তথা রহিত হওয়ার ব্যাপারে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণের ও ইমামগণের যেমন ইজমা হয়েছে অনুরূপভাবে ফজর নামাযের কুনূতে নাযেলা মানসুখ বা রহিত হওয়ার ব্যাপারেও ইমামগণের ইজমা হয়েছে।” (আল আইনী ২য় খণ্ড, ৫৯৫ পৃষ্ঠা, ইরশাদুস সারী ২য় খণ্ড, ২৩৪ পৃষ্ঠা, নাইলুল আওতার ২য় খণ্ড, ৩৬০ পৃষ্ঠা, শরহে মায়ানিল আছার ১ম  খণ্ড, ১৭৭ পৃষ্ঠা) মাদানুল হক্বায়িক্ব শরহে কানযুদ দাক্কায়িক্ব১ম খণ্ডের ১৫৫ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,
[১২৪০-১২৪৫]
উর্দূ কম্পোজ করতে হবে
অর্থঃ- বিত্র নামায ছাড়া অন্য কোন নামাযে কুনূত পাঠ করবে না। এবং বিত্র নামায ব্যতীত ফজর নামাযে কুনূতে নাযেলা পাঠকারীর পিছনেও কোন প্রকারের কুনূত পাঠ করবে না। لايقنت الخ. এর ব্যাখ্যায় ফক্বীহগণ ফিক্বাহ শাস্ত্রে বলেন, হানাফী মাযহাবের নির্ভরযোগ্য অভিমত এই যে, বিত্র নামায ব্যাতিত অন্য কোন নামাযে কোন প্রকারের কুনূত নেই। আর আমি এটাই বলি যে, ফজরের নামাযে যে কুনূত পাঠের কথা (হাদীছ শরীফে)
উল্লেখ আছে, সেটাই ছিল মূলতঃ কুনূতে নাযেলা যা মানসুখ হয়ে গেছে। কেননা হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে হাদীছ শরীফ বর্ণিত আছে যে, আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শুধুমাত্র এক মাস (আরব গোত্রের প্রতি বদদোয়ায়) ফজর নামাযে কুনূতে নাযেলা পাঠ করেন। অতঃপর তা পাঠ করা পরিত্যাগ তথা বন্ধ করেন। এর পূর্বে এবং পরে তখন থেকে ওফাত মুবারক পর্যন্ত আর কখনই কুনূতে নাযেলা পাঠ করেননি। (বাযযার, তাবারানী, মুছান্নাফে ইবনে আবী শাইবাহ) আর স্বয়ং হযরত ইমাম ইবনে মাজাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনিও উম্মুল মুমিনীন হযরত উম্মে সালামা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা থেকে হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেছেন। আর উম্মে সালামা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা বলেন, আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ফজর নামাযে কুনূতে নাযেলা পাঠ করতে নিষেধ করেছেন। হযরত গালিব ইবনে ফারক্বাদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনিও বলেন, আমি দুমাস হযরত আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর সঙ্গে থেকে পিছনে নামায আদায় করেছি কিন্তু তিনিও ফজর নামাযে কুনুত তথা কুনূতে নাযেলা পাঠ করেননি। (তাবারানী, মুছান্নাফে ইবনে আবী শাইবাহ) উপরোক্ত কিতাবের বক্তব্য দ্বারা সুস্পষ্ট ও অকাট্টভাবেই প্রমাণিত হলো যে, আমাদের হানাফী মাযহাব মতে ফজর নামাযে কুনূতে নাযেলা ব্যতীত অন্য কোন কুনূত ছিলো না। অর্থাৎ আখিরী রসূল, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ফজর নামাযে শুধুমাত্র এক মাসই কুনূত পাঠ করেছেন। আর সেটা ছিলো কুনূতে নাযেলা। যা মানসূখ হয়ে গেছে। সুতরাং যে সকল ফিক্বাহ্র কিতাবসমূহে ফজরে কুনূত মানসূখ হওয়ার কথা বলা হয়েছে তা দ্বারা মূলত: কুনূতে নাযেলা বা কুনূতে লান অর্থাৎ বদ্দোয়ার কুনূতই উদ্দেশ্য। কেননা উপরে বর্ণিত ফতওয়ায়ে কুবরায়স্পষ্টই উল্লেখ আছে যে,
ان النبى صلى الله عليه وسلم قنت ثم تركه. والترك ينسخ الفعل هذا قول ابى حنيفة رحمه الله تعالى.
অর্থাৎ রসুলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (এক মাস ফযর নামাযে) কুনূত পাঠ করেছেন, অতঃপর তা তরক করেছেন। আর তরক করার অর্থই হচ্ছে উক্ত আমলটি মানসুখ হয়ে যাওয়া। এটাই ইমাম আযম আবু হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর অভিমত।  আর মাদানুল হাক্বায়েক্বেরইবারতে একথা সুস্পষ্টভাবেই উল্লেখ আছে যে,
উর্দূ কম্পোজ করতে হবে
অর্থাৎ হানাফীদের মতে বিতর ব্যতীত অন্যকোন নামাযে কুনূত নেই। আমার বক্তব্য হলো  ফজরে যে কুনূত পাঠ করা হতো তা মুলতঃ কুনূতে নাযেলা। যা মানসুখ হয়ে গেছে।  অতএব প্রমাণিত হলো যে, ফজর নামাযে কুনূতে নাযেলা ব্যতীত অন্য কোন কনূতছিল না। সুতরাং যে সকল কিতাবে ফজরে কুনূত মানসুখ হওয়ার কথা বলা হয়েছে, তাদ্বারা মূলতঃ কুনূতে নাযেলাই উদ্দেশ্য। যেমন এ প্রসঙ্গে হযরত ইমাম মালিক রহমতুল্লাহি আলাইহিহি-এর মুওয়াত্তাশরীফের শরাহ আওজাযুল মাসালিক”-এর ২য় খণ্ড, ৩০৮ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,
[১২৪৬]
وقنوت اللعن المذكور فى الرواية محمول على القنوت المخصوص الذى فيه لعن الكفرة المسمى بقنوت النوازل.
অর্থঃ- উক্ত বর্ণনার মধ্যে যে লানত তথা বদ্দোয়ার কুনূত সম্পর্কে বলা হয়েছে, সে কুনূতটি সুনির্দিষ্টভাবে কাফিরদের প্রতি বদ্দোয়ায় পড়া হয়। আর এই কুনূতকেই কুনূতে নাযেলা হিসেবে নামকরণ করা হয়েছে।এ সম্পর্কে মিরয়াতুল মানাজীহ”-এর ২য় খণ্ড, ২৮৪ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,
[১২৪৭]
উর্দূ কম্পোজ করতে হবে
অর্থঃ- ফজর নামাযে যে কুনূতে নাযেলা ছিল তা শুধু মাত্র এক মাস ছিল। অতঃপর ঐ কুনূতে নাযেলা মানসুখ হয়ে যায়। আর এই হাদীছ শরীফ খানাই ইমামে আযম হযরত আবু হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর দলীল।” (অসমাপ্ত)

cieZx© msL¨vi A‡cÿvq _vKzb

0 Comments: