২৭ নং- সুওয়াল : যে সকল স্থানে একাধারে ৬ মাস রাত ৬ মাস দিন অথবা ৯ মাস রাত ৩ মাস দিন অথবা ৩ মাস রাত ৯ মাস দিন থাকে সে সকল স্থানে নামায, রোযা, ঈদ কিভাবে আদায় করতে হবে তা জানতে বাসনা রাখি।



সুওয়াল : যে সকল স্থানে একাধারে ৬ মাস রাত ৬ মাস দিন অথবা ৯ মাস রাত ৩ মাস দিন অথবা ৩ মাস রাত ৯ মাস দিন থাকে সে সকল স্থানে নামায, রোযা, ঈদ কিভাবে আদায় করতে হবে তা জানতে বাসনা রাখি।
জাওয়াব : মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন, নিশ্চয়ই মুমিনদের উপর নির্ধারিত সময় নামায আদায় করাকে ফরয করা হয়েছে।” (প্রত্যেক ওয়াক্তের নামায ওয়াক্ত হলেই আদায় করা ফরয)
পবিত্র রমযান শরীফ সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “যারা রমযান শরীফ পাবে (উপস্থিত হবে) তারা যেন অবশ্যই পবিত্র রমযান শরীফ রোযা রাখে। যাকাত সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তোমরা যাকাত আদায় কর।
সিহাহ সিত্তাহ পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ করা হয়েছে, “মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ছাহেবে নেছাব অর্থাৎ নিছাব পরিমাণ সম্পত্তিওয়ালা ব্যক্তিকে তার সম্পদের উপর এক বৎসর অতিবাহিত হলে যাকাত আদায় করতে হবে।
যেমন জোহরের ওয়াক্ত না হলে জোহরের নামায আদায় করা ফরয হয় না। পবিত্র রমযান শরীফ উনার মাস না পাওয়া গেলে কোনো ব্যক্তির জন্য পবিত্র রমযান শরীফ উনার রোযা রাখা ফরয হয় না। এবং এক বৎসর অতিবাহিত না হলে কোনো ব্যক্তির সম্পদের উপরও যাকাত ফরয হয় না। কিন্তু যে সমস্ত দেশে এক বৎসর অতিবাহিত না হলে কোনো ব্যক্তির সম্পদের উপরও যাকাত ফরয হয় না। কিন্তু যে সমস্ত দেশে এক বৎসরের ছয় মাস রাত, ছয় মাস দিন অথবা নয় মাস রাত, তিন মাস দিন অথবা তিন মাস রাত নয় মাস দিন থাকে সে সকল স্থানে মূলত উপরোক্ত আয়াতসমূহ মোতাবেক পাঁচ ওয়াক্ত নামাযই ফরয হয়। আর পবিত্র রমযান শরীফ উনার রোযা কারো উপরে ফরয হয় না এবং যাকাতও ফরয হয় না। কাজেই যদি কোনো ব্যক্তি বৎসরে পাঁচ ওয়াক্ত নামাযই শুধু পড়ে আর পবিত্র রমযান শরীফ উনার রোযা না রাখে এবং যাকাত আদায় না করে, তাহলে তার পক্ষে দ্বীনদার পরহেযগার হওয়া কঠিন। মূলত মহান আল্লাহ পাক তিনি পাঁচ ওয়াক্ত নামায ফরয করেছেন (২৪ ঘণ্টা দিবা-রাত্রির মধ্যে) বৎসরে এক মাস পবিত্র রমযান শরীফ উনার রোযা রাখাকে ফরয করেছেন। এবং বৎসরে একবার যাকাত আদায় করাকে ফরয করেছেন। যেহেতু প্রত্যেক দেশেই লোকজন চাকুরী, ব্যবসা-বাণিজ্য, খাওয়া দাওয়া, ঘুম ইত্যাদি চব্বিশঘন্টা হিসাব করে থাকে। সেহেতু নামায, রোযা, যাকাত ইত্যাদি চব্বিশ ঘণ্টা হিসাবে দিন, মাস, বৎসর বের করে আদায় করতে হবে। সেজন্য মোহাক্কিকীন মোদাক্কেকীন ওলামায়ে কিরামগণ উনারা ফায়সালা দিয়েছেন, যে সমস্ত এলাকার ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার আলোকেই এটাই ছাবিত হয় যে, ওয়াক্ত না পাওয়া গেলে নামায আদায় এলাকাবাসীগণ তাদের সময়সূচী সংগ্রহ করে সে মোতাবেক তাদের নামায, রোযা, যাকাত ইত্যাদি আদায় করতে হবে। অথবা  পবিত্র মক্কা শরীফ ও পবিত্র মদীনা শরীফ উনার সময়সূচী সংগ্রহ করে তাদের নামায, রোযা, যাকাত আদায় করতে হবে। উল্লেখ্য যে, ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আযহা তদ্রুপ আদায় করতে হবে।
শামী ও হাসিয়ায়ে তাহতাবী কিতাবে পবিত্র হাদীছ শরীফ হতে উল্লেখ করেছেন, চব্বিশ ঘণ্টা দিবা-রাত্রির মধ্যে যে পরিমাণ সময়ান্তর নামায পড়া হয়, সে সময়, সে পরিমাণ সময় বাদ দিয়ে প্রত্যেক দিনের প্রত্যেক ওয়াক্তের নামায আদায় করতে হবে।
শামী ও হাসিয়ায়ে তাহতাবী কিতাবে আরো উল্লেখ আছে যে- রোযা, যাকাত, হজ্জ, ইদ্দত কেনাবেচার মুদ্দত, বায়ে সালাম ইত্যাদি যাবতীয় কার্য চব্বিশ ঘন্টা দিবারাত্রির নিয়মে পরিমাণ করা সমাধা করবে। কিন্তু গ্রীষ্ম, বর্ষা ও বসন্ত ইত্যাদি ঋতুসমূহের প্রতি দৃষ্টি রাখবে। কেননা ঋতু ভেদে দিবা রাত্রি বড় ছোট হয়ে থাকে।
 আবা-৪

0 Comments: