৪৭৬ নং- সুওযাল : - একমাত্র পাঠা ও ষাঁড় ব্যতীত অন্য কোন প্রাণী জন্তু যেমন খাসী, বলদ ইত্যাদি কুরবানী দিয়ে কুরবানী হবে না। এটা কতটুকু শুদ্ধ ও শরীয়তসম্মত, দলীলসহ বিস্তারিত জানতে চাই।

সুওযাল- আলী আকবর রেজভী ফতওয়া দিয়েছে যে, একমাত্র পাঠা ও ষাঁড় ব্যতীত অন্য কোন প্রাণী জন্তু যেমন খাসী, বলদ ইত্যাদি কুরবানী দিয়ে কুরবানী হবে না। এটা কতটুকু শুদ্ধ ও শরীয়তসম্মত, দলীলসহ বিস্তারিত জানতে চাই।


জাওয়াব : হাদীছ শরীফ ও ফিক্বাহর কিতাবে উল্লেখ করা হয়েছে, কোনো প্রাণীর কোনো এক অঙ্গের এক তৃতীয়াংশের বেশি নষ্ট হয়ে গেলে তা কুরবানী করা জাযিয নেই। যেমন কান, লেজ ইত্যাদি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে যেমন, দাঁত অর্ধেকের বেশি যদি থাকে, তাহলে তা দিয়ে কুরবানী দুসস্ত রয়েছে। এ উসূলের উপর ক্বিয়াস করে আলী আকবর রেজভী ফতওয়া দিয়েছে যে, খাসী ও বলদ ইত্যাদি এ ধরনের প্রাণী কুরাবানী করলে কুরবানী দুরস্ত হবে না। আর এ ক্বিয়াস অশুদ্ধ, নাজায়িয এবং হাদীছ শরীফ বিরোধী য়েছৈ। কেননা, স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি  নিজে খাসি কুরবানী করেছেন। যা হাদীছ শরীফ-এ উল্লেখ রয়েছে,
*
অর্থ:- “হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এক কুরবানীর দিন সাদা কালো মিশ্রিত রংয়ের খাসিকৃত দুটি দুম্বা কুরবানী করলেন।” (্আহমদ শরীফ, আবূ দাউদ শরীফ, ইবনে মাযাহ শরীফ, দারিমী শরীফ, মিশকাত শরীফ, মিরকাত শরীফ, আশয়াতুল লুময়াত ও লুময়াত।)
কাজেই এ হাদীছ শরীফ-এর দ্বারা এটাই প্রমাণিত হয়, খাসি এবং খাসিকৃত প্রাণী কুরবানী করা জায়েয তো বটেই বরং খাছ সুন্নতের অন্তর্ভুক্ত। খাসি করার কারণে প্রাণীর মধ্যে সূরতান (প্রকাশ্য) যে ত্রুটি বা খুত হয়, সেটা শরয়ী ত্রুটি বা খুঁতের অন্তর্ভুক্ত নয়।
অতএব, কোন ব্যক্তি যদি জানা সত্ত্বেও সুন্নতের বিরুদ্ধে ফতওয়া দেয়, তাহলে সে কুফরী করলো এবং সে কাফিরের অন্তর্ভুক্ত হবে। কারণ, মহান আল্লাহ পাক সূরা আহযাব-এর ৩৬ নম্বর আয়াত শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে,
*
অর্থ:- “ কোনো মু’মিন পুরুষ-মহিলার জন্য জায়িয হবে না, মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোনো বিষয়ে যে ফায়ছালা করেছেন, সে বিসয়ে বিরোধী কোনো মত পেশ করে। আর যে মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাফরমানী করে, সে প্রকাশ্য গুমরাহে গুমরাহী। 
আর বিনা তাহক্বীক্বে ফতওয়া দেয়া সম্পূর্ণ নাজায়িয ও হারাম। যে বিনা তাহক্বীক্বে ফতওয়া দিবে, তার ফতওয়ার কারণে যারা শরীয়তের খিলাফ আমল করবে, তাদের সকলের গুনাহ ফতওয়া দানকারীর উপর বর্তাবে। কেননা, হাদীছ শরীফ-এ উল্লেখ আছে,
*
অর্থ:- “যাকে বিনা ইলমে ফতওয়া দেয়া হয়েছে তার গুনাহ, যে ফতওয়া দিয়েছে তার উপর বর্তাবে।” (আবু দাউদ শরীফ) আবা-২৯

0 Comments: