১০০টি চমৎকার ঘটনা - পর্ব-১৯ (দুনিয়ার চেয়ে পরকালের বদলা উত্তম)


দুনিয়ার চেয়ে পরকালের বদলা উত্তম-পর্ব-১৯

হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম একদিন দেখলেন দুই লোক মাছ ধরছে। একজন ঈমানদার আরেকজন কাফির। ঈমানদার ব্যক্তি প্রত্যেকবার বিসমিল্লাহ বলে ছিপ ফেলছেন, কিন্তু কোনো মাছ উঠছে না। আর কাফির প্রত্যেকবার তার দেবতার নাম নিয়ে ছিপ ফেলছে এবং তার ছিপে মাছ উঠছে।

হযরত কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম এটা দেখে মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট এর রহস্য জানতে চাইলেন। মহান আল্লাহ পাক তখন উনাকে আসমানের দিকে তাকাতে বললেন। তিনি তাকালেন এবং বলে উঠলেন, ‘আল্লাহু আকবার!' মহান আল্লাহ পাক আবার উনাকে যমীনের দিকে তাকাতে বললেন। তিনি তাকালেন এবং বলে উঠলেন, 'আল্লাহু আকবার!' ঈমানদার লোকটি বিষয়টা খেয়াল করলেন এবং হযরত কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার নিকট আরয করলেন, এরকম বলার কারণ কি? হযরত কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম তখন উনাকে বললেন আসমান ও যমীনের দিকে তাকাতে। লোকটি তাই করলো এবং দুইবারই বলে উঠলো, 'আল্লাহু আকবার!’

হযরত কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি দেখলে? লোকটি জবাব দিলো, 'হে হযরত কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম! আমি যখন আসমানের দিকে তাকালাম, তখন দেখলাম জান্নাতের দরজা খোলা। ভিতরে একটা পুকুর দেখা যাচ্ছে। সেখানে অনেক সুন্দর সুন্দর মাছ লাফালাফি করছে। আর সেই পুকুরের পাশে আমার নাম লেখা, অর্থাৎ পুকুরটি আমার জন্য রাখা। সুবহানাল্লাহ! আবার যখন যমীনের দিকে তাকালাম, তখন দেখলাম জাহান্নামের দরজা খোলা। ভিতরে একটি পুকুর দেখা যাচ্ছে। সেটাতে অনেক বিষধর সাপ, বিচ্ছু কিলবিল করছে। আর সেই পুকুরের পাশে এই কাফির লোকটির নাম লেখা অর্থাৎ এই পুকুরটি তার জায় ঠিকানা। নাউযুবিল্লাহ! হে হযরত কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম! যখন মহান আল্লাহ পাক উনার নাম মুবারক নিয়ে বারবার আমি ছিপ ফেলছিলাম, কিন্তু কোনো মাছ উঠছিল না; অথচ কাফির লোকটি তার দেবতার নাম নেয়া সত্ত্বেও প্রতিবার তার মাছ উঠছিল, তখন আমি প্রতিবারই একটা ধাক্কা খাচ্ছিলাম। তবুও মহান আল্লাহ পাক উনার উপর ইস্তেক্বামত থেকে উনার নাম মুবারক নিয়ে পরের বার আবার ছিপ ফেলছিলাম। এখন এই দৃশ্য দেখে আমার আর কোনো পেরেশানি নেই। মহান আল্লাহ পাক আমার বদলা পরকালের জন্য রেখেছেন। আর কাফির লোকটি তার বদলা দুনিয়াতেই পেয়ে যাচ্ছে।'

দুনিয়াতে যে যতটুকু বঞ্চিত হবে, মহান রব্বুল আলামীন পরকালে তাকে তার বদলা দিয়ে দিবেন। সুতরাং সব অবস্থায় শুকরিয়া আদায় করা উচিত।

0 Comments: