হুযুরপাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র জীবনী মুবারক । (পর্ব- ১৮-৪৯)



হুযুরপাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র জীবনী মুবারক।  (পর্ব- ১৮-৪৯)
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক আরশে আযীম, বেহেশতসহ কায়িনাতের সর্বত্র
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
وَرَفَعْنَا لَكَ ذِكْرَكَ
অর্থ : “(হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) আমি (মহান আল্লাহ পাক) আপনার যিকির বা আলোচনাকে সমুন্নত করেছি।” (সূরা আলাম নাশরাহ শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৪)








মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব ও রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সমুন্নত আলোচনা মুবারক, উনার সমুন্নত ছানা-ছিফত মুবারক মাখলূকাতের চিন্তা-ফিকির ও উপলব্ধির সীমাহীন ঊর্ধ্বে। মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার হাবীব ও রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছানা-ছিফত মুবারক, ফযীলত মুবারক বর্ণনা করতে করতে উনার পবিত্রতম নাম মুবারক উনার সাথে উনার হাবীব ও রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক সংযুক্ত করে দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
কেউ যদি ক্বিয়ামত পর্যন্ত শুধু لَا اِلٰهَ اِلَّا اللهُ “মহান আল্লাহ পাক তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ বা মা’বুদ নেই” বলে বা বিশ্বাস করে, সে কখনই ঈমানদার হতে পারবেনা, বরং কাফির ও চির জাহান্নামীই থেকে যাবে, যতক্ষণ পর্যন্ত না সে-مـُحَمَّدٌ رَّسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ  “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল” এ বাক্য মুবারক মনে-প্রাণে মেনে না নিবে। অর্থাৎ মু’মিন-মুসলমান উনাদের ঈমান গ্রহণের জন্য পূর্ণ কালিমা শরীফ হচ্ছে-
لَا اِلٰهَ اِلَّا اللهُ مـُحَمَّدٌ رَّسُوْلُ اللهِ )صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ (
 অর্থাৎ “মহান আল্লাহ পাক তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই। আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল” ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। (আল মুসতাদরাক লিল হাকিম, তবারানী শরীফ)
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরশে আযীম উনার মধ্যে, সমস্ত জান্নাত, লওহে মাহফূয তথা সারা আলমে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র ইসিম বা নাম মুবারক লিখে রেখেছেন। মানবীয় আকৃতিতে সৃষ্টি হিসেবে প্রথম মানব, প্রথম নবী ও প্রথম রসূল হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনার সৃষ্টির প্রারম্ভে মহান আল্লাহ পাক তিনি আরশে আযীম উনার মধ্যে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক এবং মহান আল্লাহ পাক উনার নাম মুবারক একসাথে সংযুক্ত দেখেছেন। আর সেই নাম মুবারক উনার ওসীলা দিয়ে পরবর্তীতে হযরত আদম আলাইহিস সালাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার কাছে দুয়া মুবারক করেছিলেন।
এ সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ করা হয়েছে-
حدثنا ابو سعيد عمرو بن مـحمد بن منصور العدل ثنا ابو الـحسن مـحمد بن اسحاق بن ابراهيم الـحنظلى ثنا ابو الـحارث عبد الله بن مسلم الفهرى ثنا اسـماعيل بن مسلمة انبأ عبد الرحـمن بن زيد بن أسلم عن ابيه عن جده عن حضرت عمر بن الـخطاب عليه السلام قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم لـما افترى حضرت ادم عليه السلام الـخطيئة قال يا رب اسألك بـحق حضرت مـحمد صلى الله عليه وسلم لـما غفرت لى فقال الله يا حضرت ادم عليه السلام وكيف عرفت مـحمدا صلى الله عليه وسلم ولـم اخلقه؟ قال يا رب لـما خلقتنى بيدك ونفخت فى من روحك رفعت رأسى فرأيت على قوائم العرش مكتوبا لا اله الا الله مـحمد رسول الله صلى الله عليه وسلم فعلمت أنك لـم تضف الى اسـمك الا احب الـخلق اليك فقال الله صدقت يا حضرت ادم عليه السلام انه لاحب الـخلق الى ادعنى بـحقه فقد غفرت لك ولو لا مـحمد صلى لله عليه وسلم ما خلقتك. هذا حديث صحيح الاسناد. الـمستدرك على الصحيحين.
অর্থ : হযরত ইমাম হাফিয আবূ আব্দিল্লাহ মুহম্মদ বিন আব্দুল্লাহ হাকিম নীসাবূরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, আমাদের কাছে পবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেছেন হযরত আবূ সাঈদ আমর বিন মুহম্মদ বিন মানছূর আদ্ল রহমতুল্লাহি আলাইহি। তিনি বলেন, আমাদের কাছে পবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেছেন হযরত আবুল হাসান মুহম্মদ বিন ইসহাক বিন ইবরাহীম হানযালী রহমতুল্লাহি আলাইহি। তিনি বলেন, আমাদের কাছে পবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেছেন আবুল হারিছ আব্দুল্লাহ বিন মুসলিম ফাহরী রহমতুল্লাহি আলাইহি। তিনি বলেন, আমাদের কাছে পবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেছেন হযরত ইসমাঈল বিন মাসলামাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি। তিনি বলেন, আমাদের কাছে খবর দিয়েছেন হযরত আব্দুর রহমান বিন যায়িদ বিন আসলাম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার পিতা থেকে, তিনি উনার দাদা থেকে, তিনি ছাহাবী হযরত উমর ইবনুল খত্তাব আলাইহিস সালাম উনার থেকে। তিনি বলেছেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যখন হযরত আদম আলাইহিস সালাম তিনি দুয়া মুবারক করার অনুমতি লাভ করলেন, তখন তিনি দুয়া মুবারক করলেন, হে আমার রব! আমি আপনার কাছে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয় সাল্লাম উনার ওসীলায় প্রার্থনা করছি। অতএব, আমার দুয়া মুবারক কবুল করুন। মহান আল্লাহ তায়ালা তিনি বললেন, হে হযরত আদম আলাইহিস সালাম! আপনি কিভাবে আমার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে চিনলেন? আমি তো উনাকে এখনো যমীনে জাহির করিনি।
জবাবে হযরত আদম আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, হে আমার রব! আপনি যখন আমাকে আপনার কুদরতী হাত মুবারক-এ তৈরি করে আমার মধ্যে রূহ মুবারক ফুঁকে দেন, তখন আমি আমার মাথা মুবারক উত্তোলন করে আরশে আযীম উনার খুঁটি মুবারকসমূহে লিখিত দেখতে পাই-
لَا اِلٰهَ اِلَّا اللهُ مـُحَمَّدٌ رَّسُوْلُ اللهِ )صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ (
অর্থ : “মহান আল্লাহ পাক তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ বা মাবূদ নেই। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল।”
তখন আমি বুঝতে পারলাম আপনার সম্মানিত নাম মুবারক অপর আরেক সম্মানিত নাম মুবারক উনার সাথে সংযুক্ত আছে তিনি সৃষ্টির মধ্যে আপনার সবচেয়ে বেশি মুহব্বতপ্রাপ্ত ব্যক্তিত্ব হবেন। তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, হে হযরত আদম আলাইহিস সালাম! আপনি ঠিকই বলেছেন, কারণ তিনি সৃষ্টির মধ্যে আমার কাছে সবচেয়ে বেশি মুহব্বতপ্রাপ্ত ব্যক্তিত্ব। হযরত আদম আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, হে মহান আল্লাহ পাক! উনার ওসীলায় আমার দুয়া মুবারক কবুল করুন। মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, আমি আপনার দুয়া মুবারক কবুল করলাম। যদি আমার হাবীব ও রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি না হতেন তাহলে আমি আপনাকেও সৃষ্টি করতাম না।” সুবহানাল্লাহ! এ পবিত্র হাদীছ শরীফখানা উনার সনদ ছহীহ তথা বিশুদ্ধ। (আল মুসতাদরাক লিল হাকিম ৪র্থ খ- ১৫৮৩ পৃষ্ঠা, আছ ছহীহাহ্ ১ম খ- ৮৮ পৃষ্ঠা, মুখতাছারুল মুস্তাদরাক ২য় খ- ১০৬৯ পৃষ্ঠা, আত তাওয়াস্সুল ১১৫ পৃষ্ঠা, তাফসীরুদ দুররিল মানছূর লিছ ছূয়ূত্বী ১ম খ- ৫৮ পৃষ্ঠা, কানযুল উম্মাল ১১ খ- ৪৫৫ পৃষ্ঠা)
পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র ছহীহ হাদীছ শরীফ উনাদের দ্বারা প্রমাণিত হলো যে, কেউ যদি ক্বিয়ামত পর্যন্ত শুধু لَا اِلٰهَ اِلَّا اللهُ (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু) বলে এবং বিশ্বাস করে, সে কখনোই ঈমানদার হতে পারবে না, বরং কাফির ও চির জাহান্নামীই থেকে যাবে, যতক্ষণ পর্যন্ত না সে مـُحَمَّدٌ رَّسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ (মুহম্মদুর রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ বাক্য মুবারক মনে প্রাণে মেনে না নিবে।

অর্থাৎ মু’মিন-মুসলমান উনাদের ঈমান গ্রহণের জন্য পূর্ণ কালিমা শরীফ হচ্ছে-
لَا اِلٰهَ اِلَّا اللهُ مـُحَمَّدٌ رَّسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
উচ্চারণ : “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহম্মদুর রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম”
অর্থ : “মহান আল্লাহ পাক তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ বা মাবূদ নেই। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল।”
 






মূলকথা হলো, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক মু’মিন-মুসলমান উনাদের ঈমান উনার মূল। উনার নাম মুবারক ব্যতীত ঈমান উনার কালিমা শরীফ অপূর্ণ।
খাছায়িছুল কুরবা’ ১ম খ- ১২ পৃষ্ঠায় উল্লেখ রয়েছে-
واخرج حضرت ابن عساكر عن حضرت كعب الاحبار رحـمة الله عليه قال: ان الله انزل على حضرت ادم عليه السلام عصيا بعدد الانبياء والـمرسلين، ثـم اقبل على ابنه حضرت شيث عليه السلام، فقال: اى بنى انت خليفتى من بعدى فخذها بعمارة التقوى والعروة الوثقى، فكلما ذكرت الله فاذكر الى جنبه اسم مـحمد صلى الله عليه وسلم، فانى رايت اسـمه صلى الله عليه وسلم مكتوبا على ساق العرش، وانا بين الروح والطين، ثـم انى طفت السموات فلم ار فى السموات موضعا الا رايت اسم مـحمد صلى الله عليه وسلم مكتوبا عليه وان ربى اسكننى الـجنة، فلم ار فى الـجنة قصرا ولا غرفة الا اسم مـحمد صلى الله عليه وسلم مكتوبا عليه، ولقد رايت اسم مـحمد صلى الله عليه وسلم مكتوبا على نـحور الـحور العين، وعلى ورق قصب اجام الـجنة، وعلى ورق شجرة طوبى، وعلى ورق سدرة الـمنتهى، وعلى اطراف الـحجب، وبين اعين الـملائكة، فاكثر ذكره صلى الله عليه وسلم، فان الـملائكة تذكره فى كل ساعاتـها.
অর্থ : “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আসাকির রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি হযরত কা’ব আহবার রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, “নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনার নিকট সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের সমসংখ্যক লাঠি মুবারক নাযিল করেন। অতঃপর হযরত আদম আলাইহিস সালাম তিনি উনার প্রিয় ছেলে হযরত শীছ আলাইহিস সালাম উনার কাছে (ওই লাঠি মুবারকসমূহ) সোপর্দ করেন। অতঃপর হযরত আদম আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, আমার সম্মানিত প্রিয় ছেলে (হযরত শীছ আলাইহিস সালাম)! আপনি আমার পরে আমার খলীফা আলাইহিস সালাম হবেন। কাজেই আপনি তাক্বওয়া ও মজবুতভাবে পরহেযগারীর সাথে উক্ত লাঠি মুবারকসমূহ গ্রহণ করবেন। আর যখনই আপনি মহান আল্লাহ পাক উনার নাম মুবারক উচ্চারণ করবেন, সাথে সাথে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারকও উচ্চারণ করবেন। কেননা আমি উনার নাম মুবারক আরশে আযীম উনার স্তম্ভ মুবারক উনার মধ্যে ওই সময় লিখিত দেখেছি যখন আমি রূহ মুবারক ও মাটি অবস্থায় ছিলাম। অতঃপর আমি সমস্ত আসমানে ছফর মুবারক করেছি। এমন কোন স্থান নেই যেখানে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক লিখিত দেখতে পাইনি। অর্থাৎ সমস্ত আসমানেই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক লিখা দেখেছি।
যখন আমার রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাকে জান্নাতে বসবাসের জন্য রাখলেন, তখন আমি জান্নাতে এমন কোন প্রাসাদ দেখেনি যেখানে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক লিখা নেই। অর্থাৎ জান্নাতের সমস্ত অট্টালিকা, প্রাসাদ ও প্রত্যেকটা কক্ষ বা কামরার মধ্যেই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক লিপিবদ্ধ রয়েছে। সুবহানাল্লাহ! আরো আমি দেখতে পেয়েছি, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক হুরদের বক্ষে, হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের চোখের পুতলীতে, তূবা বৃক্ষের পাতায় পাতায়, সিদরাতুল মুনতাহার পত্ররাজিতে, সমস্ত পর্দা মুবারকসমূহে এবং সমস্ত হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের চোখের মধ্যে। সুবহানাল্লাহ!
কাজেই আপনি উনার নাম মুবারক অধিক পরিমাণে যিকির করুন। নিশ্চয়ই সমস্ত হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক সদাসর্বদাই যিকির করে থাকেন।” অর্থাৎ উনার প্রতি ছলাত-সালাম শরীফ পাঠ করে থাকেন। সুবহানাল্লাহ! (ইবনে আসাকীর)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে এসেছে-
واخرج حضرت ابو نعيم رضى الله تعالى عنه فى الـحلية عن حضرت ابن عباس رضى الله تعالى عنهما قال: قال رسول الله صلى عليه وسلم: "ما فى الـجنة شجرة عليها ورقة الا مكتوب عليها لا اله الا الله محمد رسول الله صلى الله عليه وسلم"
অর্থ : “হযরত আবূ নুয়াইম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার ‘আল হিলইয়া’ গ্রন্থে বিশিষ্ট ছাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহ তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, “মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব ও রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, জান্নাতের এমন কোন গাছ নেই যার পাতার মধ্যে- لَا اِلٰهَ اِلَّا اللهُ مُـحَمَّدٌ رَّسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ এ বরকতময় কালিমা শরীফ লিখিত নেই।” সুবহানাল্লাহ! (খাছায়িছুল কুবরা)
অন্য পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে এসেছে-
واخرج ابن عساكر، عن حضرت جابر رضى الله تعالى عنه قال: "قال رسول الله صلى الله عليه وسلم مكتوب على باب الـجنة لا اله الا الله مـحمد رسول الله صلى الله عليه وسلم.
অর্থ : “হযরত ইবনে আসাকির রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব ও রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, জান্নাতের দরজা মুবারক এ লিখা রয়েছে-
لَا اِلٰهَ اِلَّا اللهُ مُـحَمَّدٌ رَّسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
অর্থাৎ “মহান আল্লাহ পাক তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই। আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।” সুবহানাল্লাহ! (খাছায়িছুল কুবরা)
অন্য পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে এসেছে-
واخرج الـحاكم وصححه، عن حضرت ابن عباس رضى الله تعالى عنهما قال: "اوحى الله تعالى الى حضرت عيسى عليه السلام امن بـمحمد صلى الله عليه وسلم وامر من ادركه من امتك ان يؤمنوا به فلو لا مـحمد صلى لله عليه وسلم ما خلقت حضرت ادم عليه السلام ولا الـجنة ولا النار، ولقد خلقت العرش على الـماء فاضطرب فكتبت عليه لا اله الا الله مـحمد رسول الله صلى الله عليه وسلم فسكن"
অর্থ : “হযরত ইমাম হাকিম নিশাপুরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ছহীহ সনদে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম উনার প্রতি ওহী মুবারক করলেন, আপনি নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি ঈমান আনুন এবং আপনার উম্মত উনাদেরকে আদেশ করুন তারা যখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সময়কাল পাবে তখন যেনো তারাও উনার প্রতি ঈমান আনে।
কেননা আমি যদি নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সৃষ্টি না করতাম তাহলে আমি হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনাকে সৃষ্টি করতাম না, জান্নাতও সৃষ্টি করতাম না, জাহান্নামও সৃষ্টি করতাম না। আমি যখন আরশে আযীম উনাকে সৃষ্টি করে পানির উপর রাখলাম, তখন তা হেলতে দুলতে লাগলো। অতঃপর যখন তাতে-
لَا اِلٰهَ اِلَّا اللهُ مُـحَمَّدٌ رَّسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
অর্থাৎ “মহান আল্লাহ পাক তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই। আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। এ কালিমা শরীফ লিখে দিলাম তখন তা স্থির হয়ে গেলো।” (খছায়িছুল কুবরা)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো রয়েছে-
واخرج الطبرانى، عن حضرت عبادة بن الصامت رضى الله تعالى عنه قال، قال رسول الله صلى الله عليه وسلم "كان فص خاتـم حضرت سليمان بن داود عليهما السلام سـماويا القى اليه فوضعه فى خاتـمه، وكان نقشه : انا الله لا اله الا انا مـحمد صلى الله عليه وسلم عبدى ورسولى".
অর্থ : “হযরত উবাদাহ ইবনে ছামিত রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে  বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালাম উনার আংটি মুবারক উনার পাথর মুবারকটি আসমান থেকে প্রেরিত হয়েছিলো। তিনি সেই পাথর মুবারক উনার আংটির সাথে সংযুক্ত করে নেন। সেই আংটি মুবারক উনার মধ্যে লিখা ছিলো-
انا الله لا اله الا انا مـحمد عبدى ورسولى.
অর্থাৎ আমি মহান আল্লাহ পাক। আমি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই। আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমার হাবীব ও রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।”
স্মরণীয় যে, আরশ-কুরসী মুবারক, লওহ-কলম মুবারক, আসমান-যমীন, জান্নাত, জামাদাত, শাজারাত, হাজারাত প্রত্যেক সৃষ্টির মধ্যেই মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব ও রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক লিপিবদ্ধ রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে অন্যত্র ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
واخرج ابن عساكر وابن النجار فى تاريـخهما، عن حضرت ابى الـحسن على بن عبد الله الـهاشـمى الرقى رحـمة الله عليه قال: دخلت بلاد الـهند، فرايت فى بعض قراها شجرة ورد اسود ينفتح عن وردة كبيرة طيبة الرائحة سوداء عليها مكتوب بـخط ابيض لا اله الا الله مـحمد رسول الله صلى الله عليه وسلم ابو بكر الصديق عليه السلام عمر الفاروق عليه السلام فشككت فى ذاك وقلت انه معمول فعمدت الى حبة لـم تفتح ففتحتها فرايت فيها كما رايت فى سائر الورد وفى البلد منه شئ كثير.
অর্থ : “হযরত ইবনে আসাকির রহমতুল্লাহি আলাইহি এবং হযরত ইবনে নাজ্জার রহমতুল্লাহি আলাইহি উনারা দু’জন স্বীয় ইতিহাসগ্রন্থে হযরত আবুল হাসান আলী ইবনে আব্দুল্লাহ আল হাশিমী আররক্বী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি ভারতবর্ষের কোন এক এলাকায় পৌঁছে একটি কালো রঙের গোলাপ গাছ দেখলাম। এর একটি ফুল অনেক বড়, যার রঙ কালো, সুগন্ধিময় এবং অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর ছিলো। ওই ফুলটির গায়ে সাদা হরফে লিখা ছিলো-
 لَا اِلٰهَ اِلَّا اللهُ مُـحَمَّدٌ رَّسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ابو بكر الصديق عَلَيْهِ السَّلَامَ عُمر الفاروق عَلَيْهِ السَّلَامَ.
উচ্চারণ : “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম, উমর ফারূক্ব আলাইহিস সালাম”

আমি মনে মনে ফিকির করলাম এবং আমার বিশ্বাস হলো, নিশ্চয়ই এটা কারো কাজ হবে। তাই আমি অন্য একটি বন্ধ কলি খুলে দেখলাম। আশ্চর্যের বিষয় তাতেও এরূপ লিপিবদ্ধ ছিলো। সুবহানাল্লাহ! এ ধরনের গোলাপ গাছ সেখানে প্রচুর পরিমাণে ছিলো।” সুবহানাল্লাহ! (ইবনে আসাকির, ইবনে নাজ্জার)

পূর্ববর্তী সমস্ত আসমানী কিতাব মুবারক উনাদের মধ্যে
আখিরী নবী, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক আগমন সম্পর্কে সুসংবাদ মুবারক ও ছানা-ছিফত মুবারক

মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
وَرَفَعْنَا لَكَ ذِكْرَكَ
অর্থ : “আর আমি আপনার যিকির মুবারক (আলোচনাকে) সমুন্নত করেছি”। (পবিত্র সূরা আলাম নাশরাহ শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৪)
মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার হাবীব ও রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নুরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যমীনে আগমন বা বিলাদত শরীফ উনার পূর্বেই মানবীয় আকৃতিতে সৃষ্টি হিসেবে প্রথম মানব, প্রথম নবী ও রসূল হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনার থেকে শুরু করে এক লক্ষ চব্বিশ হাজার, মতান্তরে দুই লক্ষ চব্বিশ হাজার হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে পাঠিয়েছেন। যিনি মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ তথা আগমন মুবারক সম্পর্কে সুসংবাদ যমীনবাসী বা সারা কায়িনাতবাসীকে জানিয়ে দেয়ার জন্য এবং উনার ছানা-ছিফত মুবারক, ফাযায়িল-ফযীলত মুবারক প্রকাশ করার জন্য হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা প্রত্যেকেই সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আগমন মুবারক সম্পর্কে সুসংবাদ মুবারক এবং উনার মর্যাদা-মর্তবা, ফাযায়িল-ফযীলত মুবারক স্ব-স্ব উম্মতদেরকে যথাযথভাবে বর্ণনা করে দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
স্মরণীয় যে, এক লক্ষ চব্বিশ হাজার, মতান্তরে দুই লক্ষ চব্বিশ হাজার হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্যে ৩১৩ জন থেকে ৩১৫ জন হচ্ছেন হযরত রসূল আলাইহিমুস সালাম। হযরত রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্যে কিছু সংখ্যক হচ্ছেন উলুল আযমে মিনার রুসূল আলাইহিমুস সালাম। হযরত রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের ৮ জন উনাদের উপর ১০৪ খানা পবিত্র আসমানী কিতাব মুবারক নাযিল হয়েছে। ৪ জন উনাদের উপর চারখানা পবিত্র কিতাব মুবারক এবং অন্য ৪ জন উনাদের উপর ১০০ খানা পবিত্র ছহীফা শরীফ নাযিল হয়।
প্রথম চারজন উনারা হচ্ছেন-
এক. সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। উনার উপর নাযিলকৃত পবিত্র কিতাব মুবারক ‘পবিত্র কুরআন মাজীদ’।
দুই. হযরত ঈসা রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম। উনার উপর নাযিলকৃত কিতাব মুবারক, ‘পবিত্র ইনযীল শরীফ’।
তিন. হযরত দাঊদ আলাইহিস সালাম। উনার উপর নাযিলকৃত পবিত্র কিতাব মুবারক  ‘পবিত্র যাবূর শরীফ’।
চার. হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম। উনার উপর নাযিলকৃত পবিত্র কিতাব মুবারক ‘পবিত্র তাওরাত শরীফ’।
অবশিষ্ট চারজন রসূল আলাইহিমুস সালাম। উনাদের উপর ১০০ খানা পবিত্র ছহীফা শরীফ নাযিল হয়। উনারা হলেন-
এক. হযরত আদম ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম। উনার উপর নাযিলকৃত পবিত্র ছহীফা শরীফ উনাদের সংখ্যা ১০ খানা।
দুই. হযরত শীছ আলাইহিস সালাম। উনার উপর নাযিলকৃত পবিত্র ছহীফা শরীফ উনাদের সংখ্যা ৫০ খানা।
তিন. হযরত ইদরীস আলাইহিস সালাম। উনার উপর নাযিলকৃত পবিত্র ছহীফা শরীফ উনাদের সংখ্যা ৩০ খানা।
চার. হযরত ইবরাহীম খলীল আলাইহিস সালাম। উনার উপর নাযিলকৃত পবিত্র ছহীফা শরীফ উনাদের সংখ্যা ১০ খানা।
অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক তিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক বিলাদত শরীফ বা আগমন মুবারক সম্পর্কে সুসংবাদ এবং উনার অশেষ ছানা-ছিফত মুবারক ১০৪ খানা পবিত্র আসমানী কিতাব মুবারক ও পবিত্র ছহীফা শরীফ উনাদের প্রত্যেকের মধ্যে উল্লেখ করেছেন এবং অতীতের হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালামগণ উনারা সকলেই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আগমন মুবারক সম্পর্কে সুসংবাদ মুবারক দিয়েছেন এবং সদাসর্বদাই উনার ছানা-ছিফত মুবারক করেছেন।
এ সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
اَلَّذِيْنَ يَتَّبِعُوْنَ الرَّسُوْلَ النَّبِيَّ الْاُمِّيَّ الَّذِيْ يَـجِدُوْنَهُ مَكْتُوْبًا عِنْدَهُمْ فِي التَّوْرَاةِ وَالْاِنْـجِيْلِ يَاْمُرُهُمْ بِالْمَعْرُوْفِ وَيَنْهَاهُمْ عَنِ الْمُنْكَرِوَيُـحِلُّ لَـهُمُ الطَّيِّبَاتِ وَيُـحَرِّمُ عَلَيْهِمُ الْـخَبَائِثَ وَيَضَعُ عَنْهُمْ اِصْرَهُمْ وَالْاَغْلَالَ الَّتِي كَانَتْ عَلَيْهِمْ ۚ
অর্থ : “যারা এমন রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অনুসরণ করে, যিনি হচ্ছেন উম্মি নবী অর্থাৎ হযরত নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের মূল বা সাইয়্যিদ, উনার সম্পর্কে তারা নিজেদের কাছে রক্ষিত পবিত্র তাওরাত শরীফ ও পবিত্র ইনযীল শরীফ উনাদের মধ্যে লেখা দেখতে পায়। তিনি সৎকাজের আদেশ মুবারক দান করেন এবং মন্দ কাজ হতে নিষেধ মুবারক করেন। আর পবিত্র বস্তুগুলোকে হালাল ঘোষণা করেন এবং অপবিত্র বস্তুগুলোকে তাদের জন্য হারাম করে দেন এবং তাদের উপর থেকে বোঝা নামিয়ে দেন এবং বন্দীত্ব অপসারণ করেন, যা তাদের উপর বিদ্যমান ছিল।” (পবিত্র সূরা আ’রাফ শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১৫৭)
মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব ও রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আগমন মুবারক সম্পর্কিত সুসংবাদ মুবারক এবং ছানা-ছিফত মুবারক হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার উপর নাযিলকৃত পবিত্র তাওরাত শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ রয়েছে। যা পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে উপরোক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে।
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন ‘উম্মি নবী’ অর্থাৎ হযরত নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের মূল বা সাইয়্যিদ। উনাকে সরাসরি এ পৃথিবীতে পাঠানোর পূর্বেই মহান আল্লাহ পাক তিনি আকাশ, গ্রহ-নক্ষত্র, চন্দ্র-সূর্য ইত্যাদি দ্বারা আসমান ও যমীন সুসজ্জিত করেন। যমীনের সৌন্দর্য বর্ধন করেন জিন-ইনসান, পশু-পাখি, তরুলতা, ফুল-ফল ইত্যাদি নানা উপকরণ দ্বারা। এক লক্ষ চব্বিশ হাজার, মতান্তরে দু’লক্ষ চব্বিশ হাজার হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে পাঠিয়েছেন দুনিয়াবাসী সবাইকে অবহিত করার জন্য যে, শীঘ্রই আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নাবিয়্যূল উম্মি, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি দুনিয়াতে তাশরীফ মুবারক আনবেন।
আর এ বিষয়কে আরো হৃদয়গ্রাহী ও গুরুত্বদানের জন্য পূর্ববর্তী সমস্ত পবিত্র আসমানী কিতাব মুবারক উনাদের মধ্যে সন্নিবেশিত করেছেন উনার মুবারক আলোচনা এবং মহান গুণাবলী মুবারক।
এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে এসেছে-
اخرج البخارى، عن حضرت عطاء بن يسار رضى الله تعالى عنه قال: لقيت حضرت عبد الله بن عمرو بن العاص رضى الله تعالى عنه قلت اخبرنى عن صفة رسول الله صلى الله عليه و سلم قال: "اجل، والله، انه لـموصوف فى التوراة ببعض صفته فى القران يا ايها النبى انا ارسلناك شاهدا ومبشرا ونذيرا- وحرزا للاميين، انت عبدى، ورسولى سـميتك الـمتوكل، ليس بفظ  ولا غليظ ولا صخاب، فى الاسواق ولا يـجزى بالسيئة السيئة، ولكن يعفو ويصفح، ولن يقبضه الله حتى يقيم به الـملة العوجاء، بان يقولوا لا اله الا الله، ويفتح  به اعينا عميا واذانا صما وقلوبا غلفا
অর্থ : “হযরত ইমাম বুখারী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি হযরত আত্বা ইবনে ইয়াসার রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আমি একদা হযরত আমর ইবনুল আছ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করলাম এবং বললাম, হে হযরত আমর ইবনুল আছ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু! আমার নিকট সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ‘ছিফত’ মুবারক তথা সুমহান গুণ মুবারক সম্পর্কে বর্ণনা করুন। হযরত আমর ইবনুল আছ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বললেন, তাহলে শুনুন! মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কিছু ছিফত (গুণ) মুবারক পবিত্র তাওরাত শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ রয়েছে। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! নিশ্চয়ই আমি আপনাকে প্রেরণ করেছি শাহীদ অর্থাৎ সাক্ষ্যদাতা, মুবাশশির অর্থাৎ সুসংবাদদাতা ও নাযীর অর্থাৎ ভয় প্রদর্শনকারী হিসেবে।”
আর আপনি সমস্ত উম্মত উনাদের আশ্রয়স্থল বা আশ্রয়দাতা। আপনি আমার আবদ অর্থাৎ হাবীব, হযরত নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী, হযরত রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। আমি মহান আল্লাহ পাক আপনার নাম মুবারক রেখেছি ‘মুতাওওয়াক্কিল’ অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক উনার উপর শ্রেষ্ঠতম ভরসাকারী। আপনি সর্বোত্তম চরিত্র মুবারক উনার অধিকারী এবং আপনি কঠোর নন। আপনার ব্যবহার মুবারক কোমল, সর্বোত্তম। আপনি কখনোই হাটে-বাজারে ঘোরাফেরা করেন না। আর আপনার প্রতি কেউ খারাপ ব্যবহার করলে আপনি খারাপ ব্যবহার না করে তাকে ক্ষমা করে দেন এবং তার সাথে উত্তম ব্যবহার করেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনাকে কখনোই উনার সাক্ষাতে নিবেন না যতক্ষণ পর্যন্ত আপনি এই যমীনে হক্ব প্রতিষ্ঠা না করবেন। অর্থাৎ যখন আপনার উম্মত মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব ও রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের প্রতি পরিপূর্ণভাবে ঈমান এনে ইস্তিকামত হবেন, তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনাকে উনার মুবারক সাক্ষাতে নিয়ে যাবেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনার ওসীলায় অন্ধ ব্যক্তিদেরকে দৃষ্টিশক্তি, বধির ব্যক্তিদেরকে শ্রবণশক্তি ও পথভ্রষ্ট ব্যক্তিদেরকে সৎপথের দিশা দান করবেন।” (খছায়িছুল কুবরা, মাদারিজুন নুবুওওয়াত, দালায়িলুন নুবুওওয়াত)
অন্য পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
واخرج ابن عساكر فى تاريخ دمشق من طريق محمد بن حمزة بن عبد الله بن سلام، عن جده حضرت عبد الله بن سلام رضى الله تعالى عنه انه لـما سـمع بـمخرج النبى صلى الله عليه وسلم بـمكة خرج فلقيه، فقال له النبى صلى الله عليه وسلم "انت ابن سلام رضى الله تعالى عنه عالـم اهل يثرب" قال: نعم، قال: "ناشدتك بالله الذى انزل التوراة على حضرت موسى عليه السلام ألا تـجد صفتى فى كتاب الله" قال: انسب ربك يارسول الله صلى الله عليه وسلم، فارتج النبى صلى الله عليه وسلم فقال له حضرت جبرئيل عليه السلام: قل هو الله احد، الله الصمد لـم يلد ولـم يولد ولـم يكن له كفوا احد- فقال حضرت ابن سلام رضى الله تعالى عنه: اشهد انك رسول الله صلى الله عليه وسلم وان الله مظهرك وظهر دينك على الاديان، وانى لاجد صفتك فى كتاب الله: يا ايها النبى انا ارسلناك شاهدا ومبشرا ونذيرا، انت عبدى ورسولى سـميتك الـمتوكل، ليس بفظ ولا غليظ ولا صخاب فى الاسواق ولا يـجزى بالسيئة مثلها، ولكن يعفو ويصفح، ولن يقبضه الله حتى يستقيم به الـملة الـمعوجة، حتى يقولوا لا اله الا الله ويفتح به اعينا عميا واذانا صما وقلوبا غلفا
অর্থ : “হযরত ইবনে আসাকির রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ‘তারিখে দামেশক্ব’-এ, মুহম্মদ ইবনে হামযা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার পিতামহ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণনা করেন, “তিনি বলেন, যখন আমি আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আগমন মুবারক উনার কথা শুনলাম তখন আমি উনার সাক্ষাত মুবারক হাছিলের জন্য রওয়ানা হলাম। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাকে দেখে বললেন, আপনি ইয়াছরিব (পবিত্র মদীনা শরীফ) উনার আলিম আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম নন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। আমি মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম দিয়ে আপনাকে বলছি, মহান আল্লাহ পাক তিনি যে হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার উপর ‘পবিত্র তাওরাত শরীফ’ নাযিল করেছেন সেই পবিত্র তাওরাত শরীফ উনার মধ্যে আমার ছানা-ছিফত মুবারক সম্পর্কে কি উল্লেখ নেই?” “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি আপনার রব মহান আল্লাহ পাক উনার সম্পর্কে বলুন। তখন তিনি ওহী মুবারক উনার অপেক্ষায় রইলেন। এরপর হযরত জিবরাঈল আলাইহিস সালাম তিনি ওহী মুবারক নিয়ে আগমন করলেন এবং পাঠ করলেন-
قُلْ هُوَ اللهُ اَحَدٌ ﴿١﴾ اللهُ الصَّمَدُ ﴿٢﴾ لَـمْ يَلِدْ وَلَـمْ يُوْلَدْ ﴿٣﴾ وَلَـمْ يَكُن لَّهٗ كُفُوًا اَحَدٌ ﴿٤﴾
অর্থাৎ “(মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) আপনি বলুন! মহান আল্লাহ পাক তিনি এক। মহান আল্লাহ পাক তিনি বেনিয়াজ অর্থাৎ তিনি কারো মুখাপেক্ষী নন। উনার থেকে কেউ জন্মগ্রহণ করেননি এবং উনিও কারো থেকে জন্মগ্রহণ করেননি। উনার সমকক্ষও কেউ নেই। (পবিত্র সূরা ইখলাছ শরীফ)”
উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ সমূহ শুনে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বললেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, নিশ্চয়ই আপনি মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনাকে এবং আপনার পবিত্র দ্বীন উনাকে সমস্ত ধর্মের উপর বিজয়ী করবেন। আর আমি আপনার ছানা-ছিফত মুবারক পবিত্র তাওরাত শরীফ উনার মধ্যে এভাবে উল্লেখ দেখেছি, যা মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্র কালাম পাক কুরআন শরীফ উনার মধ্যেও রয়েছে। তিনি বলেন-
يا ايها النبى انا ارسلنك شاهدا ومبشرا ونذيرا.
অর্থ : “হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! নিশ্চয়ই আমি আপনাকে প্রেরণ করেছি শাহীদ অর্থাৎ সাক্ষ্যদাতা, মুবাশশির অর্থাৎ সুসংবাদদাতা ও নাযীর অর্থাৎ ভয়প্রদর্শনকারী হিসেবে।” আপনি আমার হাবীব ও রসূল পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো বলেন, আমি আপনার নাম মুবারক রেখেছি ‘মুতাওওয়াক্কিল’ বা মহান আল্লাহ পাক উনার উপর শ্রেষ্ঠতম ভরসাকারী। আপনি সর্বোত্তম চরিত্র মুবারক উনার অধিকারী। আর আপনি কঠোর নন বরং আপনার ব্যবহার মুবারক কোমল সর্বোত্তম। আর আপনি হাটে-বাজারে ঘোরাফেরা করেন না। আপনার প্রতি কেউ খারাপ ব্যবহার করলে আপনি খারাপ আচরণ না করে ক্ষমা করে থাকেন। তার সাথে উত্তম ব্যবহার করে থাকেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনাকে কখনোই উনার সাক্ষাৎ মুবারক-এ নিবেন না, যতক্ষণ পর্যন্ত আপনি যমীনে হক্ব প্রতিষ্ঠা না করেন। অর্থাৎ যখন মানুষ মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব ও রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের প্রতি পরিপূর্ণ ঈমান এনে ইস্তিকামাত থাকবে, তখন মহান আল্লাহ পাক আপনাকে উনার সাক্ষাতে নিয়ে যাবেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনার ওসীলায় অন্ধ ব্যক্তিদেরকে পূর্ণ দৃষ্টিশক্তি ও বধির ব্যক্তিদেরকে পূর্ণ শ্রবণশক্তি এবং পথভ্রষ্ট ব্যক্তিদেরকে সৎপথের দিশা দান করবেন।” (খছায়িছুল কুবরা, মাদারিজুুন নুবুওওয়াত, দালায়িলুন নুবুওওয়াত)

হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ছহীফা শরীফ উনার মধ্যে আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক আগমন সম্পর্কে সুসংবাদ মুবারক ও ছানা-ছিফত মুবারক
পূর্ববর্তী তিনখানা পবিত্র আসমানী কিতাব মুবারক- (১) পবিত্র তাওরাত শরীফ, (২) পবিত্র যাবূর শরীফ ও (৩) পবিত্র ইনযীল শরীফ উনাদের মধ্যে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বেমেছাল ছানা-ছিফত মুবারক, মর্যাদা ও মর্তবা মুবারক বর্ণিত ছিলো। তেমনিভাবে হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতি নাযিলকৃত পবিত্র ছহীফা শরীফ উনাদের মধ্যেও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছানা-ছিফত মুবারক বর্ণিত ছিলো। মানবীয় আকৃতিতে সৃষ্টি হিসেবে প্রথম নবী ও প্রথম রসূল হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনার উপর নাযিলকৃত দশখানা পবিত্র ছহীফা শরীফ উনার মধ্যেও মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব ও রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সীমাহীন ছানা-ছিফত মুবারক উল্লেখ ছিলো।
মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনার উপর ওহী মুবারক করলেন, “আমি পবিত্র কা’বা শরীফ উনার মালিক। সেখানকার অধিবাসীগণ আমার প্রতিবেশী। পবিত্র খানায়ে কা’বা শরীফ উনার যিয়ারতকারীগণ আমার মেহমান। পবিত্র কা’বা শরীফ উনার যিয়ারত করার উদ্দেশ্যে যারা আসেন উনারা আমার সাহায্য সহযোগিতায়, আমার আশ্রয়ে আমার কুদরতী ছায়া মুবারক-এ অবস্থান করেন। উনাদের উপর আমার হিফাযত ও রক্ষণাবেক্ষণ (ক্বিয়ামত পর্যন্ত) থাকবে। গভীর প্রেরণায় আমার মুহব্বত ও আমার হাবীব ও রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুহব্বতে দলে দলে লোকজন এলোমেলো চুল নিয়ে ধুলায় ধূসরিত হয়ে ‘আল্লাহুম্মা লাব্বায়িক’ তাকবীর বলতে বলতে চোখে অশ্রুর ঢল নামিয়ে সেখানে হাযির হবেন। পবিত্র খানায়ে কা’বা শরীফ উনার যিয়ারতকারীগণ উনাদের উদ্দেশ্য আমার সন্তুষ্টি মুবারক ব্যতীত আর কিছুই নয়।
কেননা আমি হচ্ছি এই পবিত্র কা’বা শরীফ উনার সুমহান মালিক। আমারই যিয়ারত মুবারক-এ উনারা এসেছেন বলে উনারা আমার মেহমান। উনারা আমার রহম করম উনার উপযোগী বা অধিকারী হবেন। অর্থাৎ আমি উনাদেরকে দয়া ও ইহসান মুবারক দান করবো। উনাদেরকে আমি বঞ্চিত হতে দিবো না। সেই পবিত্র খানায়ে কা’বা শরীফ উনার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব প্রদান করবো আপনার সন্তান, যিনি আমার নবী-রসূল হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম উনাকে। উনার মাধ্যমে আমি পবিত্র খানায়ে কা’বা শরীফ উনার বুনিয়াদকে পুনঃনির্মাণ করবো এবং উনার হাত মুবারক দিয়েই আমি সেই পবিত্র ঘর মুবারক উনাকে আবাদ করবো। উনার জন্য আমি পবিত্র যমযম শরীফ উনার কূপকে প্রকাশিত করবো। পবিত্র খানায়ে কা’বা শরীফ উনার হেরেম ও হিল্ল উনারই উত্তরাধিকারে অর্পণ করবো। মাশআরে হারামকে উনার হাত মুবারক-এ ই সজ্জিত করবো। হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার পরবর্তী প্রত্যেক যামানারই মু’মিন মুসলমান উনারা পবিত্র কা’বা শরীফ উনাকে আবাদ করবেন। সেই ঘর মুবারক উনার দিকে ছফর করার ক্বছদ তথা ইচ্ছা রাখবেন। এমনকি পর্যায়ক্রমে উনার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব আপনার আওলাদ পাক উনাদের মাধ্যমে আখিরী নবী, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পর্যন্ত পৌঁছবে। যিনি মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব ও রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। তিনি আখিরী নবী ও রসূল। উনার পরে আর কোন নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম যমীনে তাশরীফ আনবেন না। আর যারা উক্ত ঘর মুবারক উনার মধ্যে অবস্থান করবেন এবং মহান খোদা তায়ালা উনার পবিত্র ঘর উনাকে দেখাশুনা, রক্ষণাবেক্ষণ করবেন, মুতাওয়াল্লী হবেন, উক্ত ঘর মুবারক উনার মধ্যে পবিত্র হজ্জ পালন করবেন, উনাদেরকে আমি আমার হাবীব ও রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাধ্যমে সর্বাধিক সম্মান প্রদান করবো। যারা আমার এবং আমার হাবীব ও রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সন্তুষ্টি মুবারক তলব করবেন তাদের জন্য ফরয হলো যিনি আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মত মুবারক ও পথ মুবারক উনাদেরকে গ্রহণ করা। আর উনার কেশ মুবারক হবে উম্মতের চিন্তায় বিক্ষিপ্ত, ধূসরিত। সুবহানাল্লাহ! (মাদারিজুন নুবুওওয়াত)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, হযরত আদম আলাইহিস সালাম তিনি ভারতবর্ষে অবতরণ করেন। অর্থাৎ তিনি ভারতবর্ষের স্বরণদ্বীপে আসেন। সেখানে হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনার ক্বদম মুবারক উনার চিহ্ন মুবারক রয়েছে। অবতরণের পর তিনি ফিকির করছিলেন। এমতাবস্থায় হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি আগমন করেন এবং আযান দেন-
الله اكبر، الله اكبر
اشهد ان لا اله الا الله، اشهد ان لا اله الا الله
اشهد ان مـحمدا رسول الله،  اشهد ان مـحمدا رسول الله
উচ্চারণ : আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার ॥ আশহাদু আল্ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ (২ বার)। আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রসূলুল্লাহ! (২ বার)।
এরূপ শুনে হযরত আদম আলাইহিস সালাম তিনি জিজ্ঞেস করলেন, ‘মুহম্মদ’ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, তিনি কে? হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, হযরত মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন আপনার সন্তানগণ উনাদের মধ্যে সর্বশেষ-সর্বশ্রেষ্ঠ নবী ও রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।” (খছায়িছুল কুবরা, হিলইয়া)
এ সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত আছে-
حدثنا ابو سعيد عمرو بن مـحمد بن منصور العدل ثنا ابو الـحسن مـحمد بن اسحاق بن ابراهيم الـحنظلى ثنا ابو الـحارث عبد الله بن مسلم الفهرى ثنا اسـماعيل بن مسلمة انبأ عبد الرحـمن بن زيد بن أسلم عن ابيه عن جده عن حضرت عمر بن الـخطاب عليه السلام قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم لـما اقترف حضرت ادم عليه السلام الـخطيئة قال يا رب اسألك بـحق حضرت مـحمد صلى الله عليه وسلم لـما غفرت لى فقال الله يا ادم عليه السلام وكيف عرفت حضرت مـحمدا صلى الله عليه وسلم ولـم اخلقه؟ قال يا رب لـما خلقتنى بيدك ونفخت فى من روحك رفعت رأسى فرأيت على قوائم العرش مكتوبا لا اله الا الله مـحمد رسول الله صلى الله عليه وسلم فعلمت أنك لـم تضف الى اسـمك الا احب الـخلق اليك فقال الله صدقت يا حضرت ادم عليه السلام انه لاحب الـخلق الى ادعنى بـحقه فقد غفرت لك ولو لا حضرت مـحمد صلى الله عليه وسلم ما خلقتك. هذا حديث صحيح الاسناد.
অর্থ : “হযরত ইমাম হাফিয আবূ আব্দিল্লাহ মুহম্মদ বিন আব্দুল্লাহ হাকিম নীসাবূরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, আমাদের কাছে পবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেছেন হযরত আবূ সাঈদ আমর বিন মুহম্মদ বিন মানছূর আদ্ল রহমতুল্লাহি আলাইহি। তিনি বলেন, আমাদের কাছে পবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেছেন হযরত আবুল হাসান মুহম্মদ বিন ইসহাক বিন ইবরাহীম হানযালী রহমতুল্লাহি আলাইহি। তিনি বলেন, আমাদের কাছে পবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেছেন হযরত আবুল হারিছ আব্দুল্লাহ বিন মুসলিম ফাহরী রহমতুল্লাহি আলাইহি। তিনি বলেন, আমাদের কাছে পবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেছেন হযরত ইসমাঈল বিন মাসলামাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি। তিনি বলেন, আমাদের কাছে খবর দিয়েছেন হযরত আব্দুর রহমান বিন যায়িদ বিন আসলাম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার পিতা থেকে, তিনি উনার দাদা থেকে, তিনি ছাহাবী হযরত উমর ইবনুল খত্তাব আলাইহিস সালাম উনার থেকে। তিনি বলেছেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যখন হযরত আদম আলাইহিস সালাম তিনি দুয়া মুবারক করার অনুমতি লাভ করলেন, তখন তিনি দুয়া করলেন, হে আমার রব! আমি আপনার কাছে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ওসীলায় প্রার্থনা করছি। অতএব আমার দুয়া কবুল করুন। মহান আল্লাহ তায়ালা তিনি বললেন, হে হযরত আদম আলাইহিস সালাম! আপনি কিভাবে আমার হাবীব ও রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে চিনলেন? অথচ এখনো উনাকে সরাসরি দুনিয়ায় জাহির করিনি!
জবাবে হযরত আদম আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, হে আমার রব! আপনি যখন আমাকে আপনার কুদরতী হাত মুবারক উনার দ্বারা তৈরি করে আমার মধ্যে রূহ মুবারক ফুঁকে দেন, তখন আমি আমার মাথা মুবারক উত্তোলন করে সম্মানিত আরশ উনার খুঁটি মুবারকসমূহে লিখিত দেখতে পাই-
لا اله الا الله مـحمد رسول الله صلى الله عليه وسلم
অর্থ : ‘মহান আল্লাহ পাক তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ বা মাবূদ নেই। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল।’
তখন আমি বুঝতে পারলাম আপনার সম্মানিত নাম মুবারক অপর আরেক সম্মানিত নাম মুবারক উনার সাথে সংযুক্ত আছে তিনি সৃষ্টির মধ্যে আপনার সবচেয়ে বেশি মুহব্বতপ্রাপ্ত ব্যক্তিত্ব হবেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, হে হযরত আদম আলাইহিস সালাম! আপনি ঠিকই বলেছেন, কারণ তিনি সৃষ্টির মধ্যে আমার কাছে সবচেয়ে বেশি মুহব্বতপ্রাপ্ত ব্যক্তিত্ব। হযরত আদম আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, হে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক! উনার ওসীলায় আমার দুয়া মুবারক কবুল করুন। মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, আমি আপনার দুয়া মুবারক কবুল করলাম। যদি আমার হাবীব ও রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি না হতেন, তাহলে আমি আপনাকেও সৃষ্টি করতাম না।” সুবহানাল্লাহ! এ পবিত্র  হাদীছ শরীফখানা উনার সনদ ছহীহ তথা বিশুদ্ধ। (আখরাজাহুল ইমামুল হাফিয আবূ আব্দিল্লাহ মুহম্মদ বিন আব্দুল্লাহ হাকিম নীসাবূরী রহমতুল্লাহি আলাইহি ফিল মুসতাদরাক আলাল ছহীহাইন-কিতাবু তাওয়ারিখিল মুতাক্বাদ্দিমীন- যিকরু আখবারি সাইয়্যিদিল মুরসালীন ওয়া খাতামিন নাবিয়্যীন মুহম্মদ বিন আব্দুল্লাহ বিন আব্দুল মুত্তালিবিল মুস্তফা ছলাওয়াতুল্লাহি আলাইহি ওয়া আলা আলিহিত ত্বাহিরীন ৪র্থ খ- ১৫৮৩ পৃষ্ঠা, আল মুসতাদরাক লিল হাকিম, আছ ছহীহাহ্ ১ম খ- ৮৮ পৃষ্ঠা, মুখতাছারুল মুস্তাদরাক ২য় খ- ১০৬৯ পৃষ্ঠা, আত তাওয়াস্সুল ১১৫ পৃষ্ঠা, তাফসীরুদ দুররিল মানছূর লিছ ছূয়ূত্বী ১ম খ- ৫৮ পৃষ্ঠা, কানযুল উম্মাল ১১ খ- ৪৫৫ পৃষ্ঠা)
পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র ছহীহ হাদীছ শরীফ উনাদের দ্বারা প্রমাণিত হলো যে, কেউ যদি ক্বিয়ামত পর্যন্ত শুধু لا اله الا الله ‘মহান আল্লাহ পাক তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ বা মা’বূদ নেই’ বলে বিশ্বাস করে সে কখনোই ঈমানদার হতে পারবে না।
বরং কাফির ও চির জাহান্নামীই থেকে যাবে। যতক্ষণ পর্যন্ত সেمـحمد رسول الله صلى الله عليه وسلم ‘নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল’ এ বাক্য মুবারক মনে প্রাণে মেনে না নিবে। অর্থাৎ মু’মিন-মুসলমান উনাদের জন্য পূর্ণ কালিমা শরীফ হচ্ছে-
لا اله الا الله مـحمد رسول الله صلى الله عليه وسلم
অর্থাৎ, “মহান আল্লাহ পাক তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই। আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল।”
মূলকথা হলো, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক মু’মিন-মুসলমান উনাদের ঈমান উনার মূল। উনার নাম মুবারক ব্যতীত ঈমান উনার কালিমা শরীফ অপূর্ণ।
আয় মহান আল্লাহ পাক! আমাদেরকে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হাক্বীক্বী মুহব্বত, মা’রিফত, যিয়ারত ও শাফায়াত নছীব করুন। আমীন।
হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনার দুয়া মুবারক সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ওসীলায় কবুল করা হলো। মহান আল্লাহ পাক তিনি স্বয়ং উনার হাবীব ও রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সীমাহীন মর্যাদা-মর্তবা মুবারক সমুন্নত করেছেন। প্রথম নবী ও প্রথম রসূল হযরত আদম আলাইহিস সালাম তিনি স্বয়ং সদাসর্বদা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছানা-ছিফত মুবারক বর্ণনা করতেন। তিনি উনাকে সবচেয়ে বেশি মুহব্বত করতেন। এমনকি উনার গোটা ছহীফা শরীফ উনার মধ্যে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছানা-ছিফত মুবারক দিয়ে পরিপূর্ণ ছিলো। সুবহানাল্লাহ!
হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার ছহীফা শরীফ উনার মধ্যে আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক আগমন সম্পর্কে সুসংবাদ মুবারক ও ছানা-ছিফত মুবারক এ পরিপূর্ণ
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
رَبَّنَا وَابْعَثْ فِيْهِمْ رَسُوْلًا مِّنْهُمْ يَتْلُوْ عَلَيْهِمْ اٰيَاتِكَ وَيُعَلِّمُهُمُ الْكِتَابَ وَالْـحِكْمَةَ وَيُزَكِّيهِمْ ۚ اِنَّكَ اَنْتَ الْعَزِيْزُ الْـحَكِيْمُ ﴿١٢٩﴾
অর্থ : “হে আমাদের মহান রব তায়ালা! আপনার তরফ হতে তাদের নিকট একজন রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে প্রেরণ করুন, যিনি আপনার পবিত্র আয়াত শরীফসমূহ তাদের নিকট তিলাওয়াত করে শুনাবেন, তাদেরকে কিতাব এবং হিকমত শিক্ষা দিবেন ও তাদেরকে ইছলাহ বা পরিশুদ্ধ করবেন। নিশ্চয়ই আপনি পরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময়।” (পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১২৯)
মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পূর্বপুরুষ হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি এবং উনার সম্মানিত আওলাদ পাক হযরত ইসমাঈল যবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি যখন মহান আল্লাহ পাক উনার মুবারক নির্দেশক্রমে পবিত্র কা’বা শরীফ পুনঃনির্মাণ সম্পন্ন করলেন, তখন মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট উপরোক্ত দুয়া মুবারক করেছিলেন, “হে মহান আল্লাহ পাক! আমার সম্মানিত বংশ মুবারক তথা আমার আওলাদ পাক (ছেলে) হযরত ইসমাঈল আলাইহিস সালাম উনার থেকে একজন রসূল প্রেরণ করুন, যিনি সমস্ত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের শ্রেষ্ঠ। যিনি হযরত নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী, হযরত রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
যিনি সর্বশ্রেষ্ঠ রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উপর পবিত্র ‘কুরআন শরীফ’ নাযিল করুন। তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার নাযিলকৃত সর্বশ্রেষ্ঠ আসমানী কিতাব মুবারক কুরআন শরীফ জিন-ইনসানকে শিক্ষা দিবেন, হিকমত শিক্ষা দিবেন এবং তাদেরকে তাযকিয়া বা পরিশুদ্ধ করবেন।”
উল্লেখিত রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। অত্র পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বুঝানো হয়েছে।
اخرج ابن سعد، عن حضرت ابن عباس رضى الله تعالى عنهما قال: "لـما امر حضرت ابراهيم عليه السلام باخراج حضرت هاجرة عليها السلام حـمل على البراق، فكان لا يـمر بارض عذبة سهلة الا قال: انزل هاهنا يا جبرئيل عليه السلام؟ فيقول: لا، حتى اتى مكة، فقال حضرت جبرئيل عليه السلام: انزل يا حضرت ابراهيم عليه السلام، قال: حيث لا ضرع ولا زرع، قال: نعم هاهنا يـخرج النبى الامى صلى الله عليه وسلم من ذرية ابنك الذى تتم به الكلمة العليا".
অর্থ : “হযরত সা’দ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণনা করেন, হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি উনার আহলিয়া হযরত হাজেরা আলাইহাস সালাম এবং উনাদের পুত্র হযরত ইসমাঈল যবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনারা সকলে বোরাকে সাওয়ার হয়ে সিরিয়া (সাম) থেকে পবিত্র মক্কা শরীফ উনার দিকে আসছিলেন। উনারা যখনই কোন উর্বর ও নরম ভূমি অতিক্রম করতেন, তখনই হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি বলতেন, হে হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম! এখানেই নেমে পড়–ন। হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি বিনয়ের সাথে বলেন, হে মহান আল্লাহ পাক উনার খলীল হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম! এখানে নয়।
এরপর যখন পবিত্র মক্কা শরীফ এসে পৌঁছলেন, তখন হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, হে মহান আল্লাহ পাক উনার খলীল হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম! আপনারা দয়া করে এখানেই তাশরীফ রাখুন। হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, এই শস্য ও পানিবিহীন প্রান্তরে? হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, হ্যাঁ, এখানেই। এখানেই আপনার সম্মানিত সন্তান আখিরী নবী, হযরত নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী, হযরত রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আগমন করবেন এবং তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার ওয়াদা মুবারককে পরিপূর্ণরূপে পূর্ণ করবেন।” সুবহানাল্লাহ! (খছায়িছুল কুবরা শরীফ ১/১৭)
واخرج عن حضرت الشعبى رحـمة الله عليه قال: فى مـجلة حضرت ابراهيم عليه السلام انه كائن من ولدك شعوب وشعوب حتى يأتى النبى الامى الذى يكون خاتـم الانبياء صلى الله عليه وسلم".
অর্থ : “হযরত ইমাম শা’বী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত, হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ছহীফা শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ রয়েছে, উনার বংশ মুবারক উনার মধ্যে অনেক সন্তান-সন্ততি আসবেন। অবশেষে হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সন্তানগণ উনাদের মধ্যে উম্মী নবী, আখিরী নবী, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আগমন করবেন, যিনি খাতামুন নাবিয়্যীন বা সর্বশেষ নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।” (খছায়িছুল কুবরা শরীফ ১/১৭)
মুহম্মদ ইবনে কা’বিল ক্বুরজী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, “মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত ইয়াকূব আলাইহিস সালাম উনার নিকট ওহী মুবারক পাঠালেন যে, নিশ্চয়ই আমি আপনার সন্তানদের মধ্যে অনেককে খিলাফত দান করবো এবং অনেক নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে প্রেরণ করবো। অতঃপর আমি সবচেয়ে সম্মানিত নবী ও রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পাঠাবো। উনার উম্মতগণ বাইতুল মুকাদ্দাস শরীফ উনার প্রাসাদরাজিকে পুনঃনির্মাণ করবেন। আর তিনি হচ্ছেন খাতামুন নাবিয়্যীন বা আখিরী নবী, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।” (খছায়িছুল কুবরা শরীফ ১/১৭)
হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার ছহীফা শরীফ উনার মধ্যে আরো উল্লেখ রয়েছে, “মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন, হে আমার নবী ও রসূল হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম! আপনার সম্মানিত পুত্র হযরত ইসমাঈল যবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্পর্কে আপনি যে দুয়া মুবারক করেছেন, তা আমি কবুল করলাম। অবশ্যই আমি উনার উপর এবং উনার সন্তান-সন্ততিগণ উনাদের উপর বরকত জারি করবো। উনার সন্তান উনাদের মধ্য থেকে আমি আলমে ওজুদে এমন এক ফরযন্দ উনার সুসংবাদ দিয়েছি, যিনি হলেন মহা সম্মানিত। উনার পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক ‘মুহম্মদ’ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। তিনি হলেন সারা কায়িনাতের মধ্যে সবচেয়ে পছন্দনীয়, মনোনীত ও প্রেরিত রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। উনার উম্মতগণও হবেন সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বোত্তম উম্মত।” সুবহানাল্লাহ! (মাদারাজিন নুবুওওয়াত)
স্মরণীয় যে, মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব ও রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার দুয়া মুবারক। তিনি যবীহুল্লাহ হযরত ইসমাঈল আলাইহিস সালাম উনার বংশধর। উনার মাতা ছিলেন হযরত হাজেরা আলাইহাস সালাম।
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ‘আমি যবীহাঈন বা দুই যবীহ থেকে এসেছি।’ একজন হযরত ইসমাঈল যবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি, অপরজন হচ্ছেন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত পিতাজান হযরত আব্দুল্লাহ যবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!



0 Comments: