কাদিয়ানি রদ -১৭

 


খতমে নুবুওওয়াত প্রচার কেন্দ্র খতমে নুবুওওয়াত  অস্বীকারকারীরা কাফির 

(ইসলামী শরীয়তের হুকুম মোতাবেক যারা মুসলমান থেকে খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভূক্ত হয় (যেমন- কাদিয়ানী, বাহাই  ইত্যাদি) তাদের তওবার জন্য নির্ধারিত সময় ৩দিন। এরপর তওবা না করলে, তাদের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড)

(১) কাদিয়ানী রদ!

(তৃতীয় ভাগ)

বাহরুল উলুম, ফখরুল ফোক্বাহা, রইছুল মোহাদ্দেসীন, তাজুল মোফাসসেরীন, হাফেজে হাদীছ, মুফতীয়ে আজম, পীরে কামেল, মোর্শেদে মোকাম্মেল হযরত মাওলানা আল্লামা শাহ সূফী মুহম্মদ রুহুল আমিন রহমতুল্লাহি আলাইহি কর্তৃক প্রণীত কাদিয়ানি রদকিতাবখানা (৬ষ্ঠ খন্ডে সমাপ্ত)। আমরা মাসিক আল বাইয়্যিনাত পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করছি। যাতে কাদিয়ানিদের সম্পর্কে সঠিক ধারণাসহ সমস্ত বাতিল ফেরকা থেকে আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের অনুসারীদের ঈমান আকীদার হেফাজত হয়। আল্লাহ পাক আমাদের প্রচেষ্টার কামিয়াবী দান করুন (আমিন)। ওনার কিতাব থেকে হুবহু উদ্ধৃত করা হলো, তবে তখনকার ভাষার সাথে বর্তমানে প্রচলিত ভাষার কিছুটা পার্থক্য রয়েছে।

(পূর্ব প্রকাশিতের পর) 

মির্জ্জার মছিহ দাবী খন্ডন।

তফছিরে এবনো কছির, ২/২৯ পৃষ্ঠা ;-

قال قتادة وغيره هذا من المقدم والمؤخر تقديره انى رافعك الى ومتو فيك يعنى بعد ذلك قا ل ابن جرير تو فيته هو رفعه وقال الا كشرون المراد بالوفاة النؤم كما قال الله تعالى وهو الذين يتوفاة النوم كما قال الله تعالى وهى الذين يتو فاكم بالليل الاية و قال و قال الله يتوفى الانخس حين موتها و التى لم تمت فيى منا مها الاية وكان رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول اذا قام من النوم الحمد لله الذيى احيانا بعد ما اما تنا الحديث.

কাতাদা প্রভৃতি বলিয়াছেন, এস্থলে অগ্র-পশ্চাৎ শব্দ উল্লেখ করা হইয়াছে, প্রকৃত অর্থ এইরূপ হইবে, আমি তোমাকে আমার নিকট তুলিয়া লইব, তৎপরে (দুনইয়ায় নাজিল হওয়ার পরে) তোমাকে মারিয়া ফেলিব।

এবনো জরির বলিয়াছে, توفى শব্দের অর্থ তুলিয়া লওয়া। অধিকাংশ বিদ্বানগণ বলিয়াছেন, وفاة শব্দের অর্থ নিদ্রা (অর্থাৎ নিদ্রিত অবস্থায় তুলিয়া লইব।) যেরূপ ছুরা আনয়াম ও ছুরা জোমারের আয়তে উক্ত শব্দর অর্থ নিদ্রা। হজরত একটী হাদিছে নিদ্রাকে اماتت বলিয়া উল্লেখ করিয়াছেন।ফৎহোল বায়ান, ২/৪৯ পৃষ্ঠা ;-

قال الفراء تقديره انيى رافعك ومطهرك ومتوفيك بعد انزالك من السماء وقال ابو زيد متوفيك قابضك وقيان والمعنيى كما قالقى الكشاف مستوفيى اجلك ومعناه انى عاصمك من ان يقتلكك الكفار وموخر اجلك الى اجل كتبته لك وميتك خف انفك لا قتلا بايديهم- انما احتاج المفسرون الى تاويل بما ذكر لا ن الصحيح ان الله تعالى رفعه الى السماء من غير وفاة كما رجحه كشير من المفسرين واختاره ابنجرير الطبرى ووجه ذلك انه قدصح فى الاخبار عن النبيى صلى الله عليه وسلم نزوله وقتله الدجال وقيل المراد بالوفاة هنا النوم ومشله هو الذي بتو فاكم بالليل اى ينيمكم وبه قال كشيرون.

ফার্র বলিয়াছেন, উহার অর্থ এই -নিশ্চয় আমি তোমাক তুলিয়া লইব, তোমাক পবিত্র করিব এবং তোমাকে আছমান হইতে নাজিল হওয়ার পরে মারিয়া ফেলিব। আবু জয়েদ উহার অর্থে বলিয়াছেন, আমি তোমাকে তুলিয়া লইব। কেহ কেহ বলেন, উহার অর্থ -আমি তোমার আয়ূকাল পূর্ণ করিব, অর্থাৎ তোমাকে নিরাপদে রাখিব, যেন কাফেরেরা তোমাকে হত্যা করিতে না পারে। তোমাকে উক্ত সময় অবধি জীবিত রাখিব -যাহা তোমার জন্য নিরূপণ করিয়া রাখিয়াছি। কাফেরেরা নিজেদের হস্তে তোমাকে হত্যা করিতে পারিবে না, আমি তোমার স্বাভাবিক মৃত্যুতে তোমাকে মারিব। টীকাকারগ وفاة শব্দের এইরূপ অর্থ গ্রহণে বাধ্য হইলেন, ইহার কারণ এই যে, ছহিহ মত এই যে, নিশ্চয় আল্লাহতায়ালা তাহাকে বিনা মৃত্যু আছমানে উঠাইয়া লইয়াছেন। বহু সংখ্যক তফছিরকারক এই মত প্রবল প্রতিপন্ন করিয়াছেন এবং এবনো জরির এই মত মনোনীত স্থির করিয়াছেন। ইহার কারণ এই যে, নবি (ছাঃ) হইতে ছহিহ হাদিছে আসিয়াছে যে, হজরত ইছা আলাইহিস সালাম (আছমান হইতে) নাজিল হইয়া দাজ্জাল হত্যা করিবেন। কেহ কেহ বলিয়াছেন, وفاة শব্দের অর্থ নিদ্রা, ইহা ছুরা আনয়ামের আয়তে উহার অর্থ নিদ্রা, অনেক বিদ্বান এই মত সমর্থন করিয়াছেন।

তফছিরে রুহোল মায়ানী, ১/৪৯৬ পৃষ্ঠা ;-

والصحيح كما قاله الفرطبيى ان الله تعالى رفعه من غير وفاة ولا نوم وهو اختيار الطبرى و الرواية المصحيحة عن اين عباس.

কোরতবি যেরূপ বলিয়াছেন, তাহাই ছহিহ মত, উহা এই যে, নিশ্চয় আল্লাহ (হজরত) ইছা আলাইহিস সালামকে বিনা মৃত্যু ও বিনা নিদ্রা তুলিয়া লইয়াছেন। ইহা তাবারির মনোনীত মত এবং (হজরত) এবনো আব্বাছের ছহিহ মত।

পাঠক, এক্ষণে অহাব বেনে মোনাব্বাহ হইতে যে মত বর্ণিত হইয়াছে, তাহার আলোচনা করা যাউক। এবনো জরির ২/১৮৪ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছেন ;-

عن ابن اسحق عمن لا يتهم عن وهب بن منبه اليمانيى كانه قال توفى الله عيسى مريم ثلاث شاعات من النهار حتى رفعه اليه.

এবনো ইছহাক উক্ত ব্যক্তি হইতে- যিনি দোষাম্বিত ছিলেন না, তিনি অহাব বেনে মোনাব্বাহ ইমানি হইতে রেওয়াএত করিয়াছেন, তিনি বলিয়াছেন, আল্লাহ ইছা বেনে মরয়েমকে  দিবসের  তিন  ঘন্টা  মারিয়া  রাখিয়াছিলেন, তৎপরে তিনি তাহাকে তাঁহার দিকে (আছমানে) তুলিয়া লইয়াছিলেন। এই রেওয়াএতের দ্বিতীয় রাবির নাম উল্লিখিত হয় নাই, কাজেই এই রেওয়াএত মোনকাতা (জইফ)। এই হেতু ফৎহোল বায়ানের ২/৪৯ পৃষ্ঠায় লিখিত আছে ;-

وقيل ان الله سبحانه توفاه ثلاث ساعات من نهار ثم رفعه الى السماء وفيه ضعف.

কেহ বলিয়াছেন, নিশ্চয় আল্লাহ পাক তাঁহাকে দিবসের তিন ঘন্টা মারিয়া রাখিয়াছিলেন, তৎপরে তাহাকে আছমানে তুলিয়া লইয়াছিলেন। ইহা জইফ (দুর্ব্বল) রেওয়াএত। এই রেওয়াএত বাতীল হওয়ার দ্বিতীয় কারণ এই যে, তফছিরে দোররোল মনছুরের ২/৩৬ পৃষ্ঠায় অহাবের তিনটী রেওয়াএত আছে, প্রথম রেওয়াএতে আছে, আল্লাহ তাঁহাকে দিবসে তিন ঘন্টা মারিয়া রাখিয়া আছমানে তুলিয়া লইয়াছিলেন। দ্বিতীয় রেওয়াএতে আছে যে, তাঁহাকে তিন দিবস মারিয়া রাখিয়া জীবিত করিয়া পরে আছমানে তুলিয়া লইয়াছিলেন। তৃতীয় রেওয়াএতে আছে যে, আল্লাহ তাঁহাকে ৭ ঘন্টা  মারিয়া রাখিয়া  জীবিত  করিয়াছিলেন, তৎপরে আছমানে তুলিয়াছিলেন।

মায়ালেমের ১/২৯৯ পৃষ্ঠায় আছে, আল্লাহ তাহাকে ৩ ঘন্টা মারিয়া রাখিয়া জীবিত করিয়া আছমানে লইয়া গিয়াছিলেন। যদি অহাবের রেওয়াএত ছহিহ হইত, তবে তিন প্রকার বিপরীত বিপরীত রেওয়াএত হইত না। এক্ষণে এবনে এছহাকের রেওয়াএতের আলোচনা করা হউক।     মায়ালেম, ১/২৯৯ পৃষ্ঠা ;-

 قال محمد بن اسحق ان النصاري يزعمون ان الله تعالى توفاه سبع ساعات من النهار ثم اجياه ورفعه اليه.

মোহাম্মদ বেনে ইছহাক বলিয়াছেন, খ্রীষ্টানেরা ধারণা করিয়া থাকে যে, আল্লাহতায়ালা তাঁহাকে দিবসের সাত ঘন্টা মারিয়া তৎপরে তাহাকে জীবিত করিয়াছিলেন এবং তাহাকে নিজের দিকে (আছমানে) উঠাইয়া লইয়াছিলেন।উপরোক্ত বিবরণে বুঝা যাইতেছে যে, প্রাচীন সমস্ত মুছলমান হজরত ইছা আলাইহিস সালাম-এর জীবিতাবস্থায় স্বশরীরে আছমানে সমুত্থিত হওয়ার মত ধারণ করিতেন। অহাবের রেওয়াএত বাতীল, ইহা পূর্ব্বে প্রমাণিত হইয়াছে। আর খ্রীষ্টানদিগের মত যে বাতীল, তাহাও নিম্নোক্ত আয়তে বেশ বুঝা যাইতেছে।

ছুরা নেছা ;-

وما قتلوه وما صلبوه ولكن شبه لهم وان الذين اختلفوا فيه لفيى شك منه- مالهم به من علم الااتباع الظن وما قتلوه يقينا بل رفعه الله اليه.

এবং য়িহুদীরা তাহাকে হত্যা করে নাই এবং ক্রশে বিদ্ধ করে নাই, কিন্তু তাহাদের পক্ষে দৃষ্টান্ত প্রদর্শন করা হইয়াছিল এবং যাহারা তাহার সম্বন্ধে মতভেদ করিয়াছে, নিশ্চয়ই তাহার সম্বন্ধে সন্দেহের মধ্যে আছে। তাহাদের তাহার সম্বন্ধে অনুমানের অনুসরণ ব্যতীত প্রকৃত জ্ঞান নাই। তাহারা নিশ্চয় তাঁহাকে হত্যা করে নাই; বরং আল্লাহ তাঁহাকে নিজের দিকে তুলিয়া লইয়াছেন।

মূলকথা, ছুরা নেছার এই আয়তে হজরত ইছা আলাইহিস সালাম-এর জীবিতাবস্থায় আছমানে উত্থিত হওয়া প্রমাণিত হইতেছে, আর কোন প্রাচীন মুছলমান বিদ্বান তাঁহার মৃত্যুর কথা সত্য বলিয়া বিশ্বাস করেন নাই।  (অসমাপ্ত)

(২)

ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক পাকিস্তান সুপ্রীম কোর্ট কর্তৃক কাদিয়ানীদের- কাফেরঘোষণা!

(পূর্ব প্রকাশিতের পর)

 অনুবাদক - আলহাজ্ব মুহম্মদ হাবিবুল হক 

 তার স্ত্রীর মাধ্যমে আহমদ বেগকে প্রভাবাম্বিত করতে অস্বীকার করলে মির্জা গোলাম আহমদ কাদিয়ানীর ছেলে, তার (মির্জা শের আলী বেগের) কন্যাকে তালাক দেয়ার শাসানির প্রেক্ষিতে মির্জা শের আলী বেগ আশ্চার্য্যন্বিত হন। তার (মির্জা শের আলীর) কন্যার ক্ষতি হবে (তালাক হলে) চিন্তায় কিভাবে একটি অসুস্থ লোক যে সবিষাদ চিন্তার লক্ষণযুক্ত উন্মাদ রোগ বিশেষের কারণে ধর্ম শাস্ত্রে বিশারদ হওয়ার দাবীদার, তার (মির্জা সাহেবের) ভাইয়ের মেয়ের বিয়ের জন্য ভাইকে প্রভাবাম্বিত করতে পারে। (কাদিয়ানী মাজহাব, পৃষ্ঠা-৩৮১, ৩৮২) পরিশেষে মির্জা সাহেবের ছেলে ফজল আহমদ অনিচ্ছা সত্বেও নিজ স্ত্রী মির্জা শের আলী বেগের কন্যাকে, মির্জা গোলাম আহমদের পীড়া-পীড়িতে তালাক দেয়। মির্জা সাহেবের প্রথমা স্ত্রী এবং তার ছেলে সুলতান আহমদ, মুহাম্মদী বেগমের পরিবারের পক্ষ অবলম্বন করে। মির্জা সাহেব তার প্রথমা স্ত্রীকে তালাক দেয় এবং তার ছেলে সুলতান আহমদকে উত্তরাধিকারত্ব থেকে বঞ্ছিত করে। (তাবলীগ-ই-রিসালাত, ভলিউম-২ পৃঃ ৯-১১)

মুহাম্মদী বেগমের বিয়ে হয়েছিল মির্জা সুলতান মুহাম্মদের সাথে। মির্জা সাহেবের ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী তিনি মারা যাননি এবং অনেক দীর্ঘ দিনই বেঁচে ছিলেন। মির্জা আহমদ বেগ তার মেয়ের বিয়ের ছয় মাসের মধ্যে ইন্তেকাল করেন এবং ইহাকেই মির্জা সাহেবের ভবিষ্যদ্বাণীর কার্য্যকারীতা হিসাবে কাজে লাগায়। কিন্তু সুলতান মুহম্মদের বিয়ে এবং তার মৃত্যুর ভবিষ্যদ্বাণীর কার্য্যকারীতার কি হলো? তিনি (সুলতান মুহম্মদ), মির্জা সাহেবের মৃত্যুর পর অনেক দিন বেঁচে ছিলেন। প্রথম বিশ্ব যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করে আহত হন, কিন্তু তারপরও অনেক দিন বেঁচে ছিলেন। (কাদিয়ানীয়াত- সাইদ হোসেন আল নদভী পৃষ্ঠা-১৬৫) সিরাত-উল-মাহদী নামক বইয়ে স্বীকার করা হয়েছে যে, মির্জা সাহেবের এই বিয়ের জন্য, তিনি তার আত্মীয়দের অনেক চিঠি লিখেছেন এবং বিয়ের  (ভলিউম-১, পৃষ্ঠা-১৮৬)

সফলতার জন্য জোর প্রচেষ্টা চালিয়েছে। এই বইয়ের লেখক এই প্রচেষ্টার সম্বন্ধে মত পোষণ করে বলে, “কোন নবীই নাই, যিনি তার ভবিষ্যদ্বাণীর পরিপূর্ণতার জন্য প্রচেষ্টা নেননি।ইহা নিশ্চয়ই খুব বড় দাবীর সামিল। (ইবিড, পৃষ্ঠা-১৭৫) কিন্তু ইহাকে সত্য মনে করা হলে, সে যে তার ছেলের স্ত্রীকে তালাক দেয়ার জন্য পীড়া-পীড়ি করেছিল এবং ছেলের শ্বশুরকে শাসিয়ে ছিল যে, যদি তিনি মির্জা সাহেবের বিয়েতে সাহায্য করতে অস্বীকার করেন, তবে মির্জা সাহেব তার ছেলেকে নির্দেশ দিবে, তার স্ত্রীকে তালাক দিতে- ইহা কি আইনসঙ্গত ছিল? মির্জা সাহেব যে ধর্মের অনুসারী বলে দাবী করে, উহাতে কেউ তার জীবদ্দশায় অবাধ্য সন্তানকে উত্তরাধিকারত্ব থেকে বঞ্ছিত করতে পারেনা। কিন্তু মির্জা সাহেব উহা ঘোষণা করে লিখিতভাবে। সে তার প্রথমা স্ত্রীকেও একই কারণে তালাক দেয়। মির্জা সাহেবের এই বিয়েতে তিনি (স্ত্রী) আত্মীয়-স্বজনদের বুঝিয়ে-সুঝিয়ে রাজি করতে ইচ্ছুক ছিলেন না। কিন্তু মির্জা সাহেব তার স্ত্রী, পুত্র এবং পুত্রবধুর প্রতিশোধ গ্রহণে খুব তৎপর ভূমিকা নেয়। সিরাত-উল-মাহদীর লেখক লিখেছে যে, মির্জা আহমদ বেগই শুধু মারা যাননি, তার পরিবারকে অনেক দুর্ভাগ্য গ্রহণ করতে হয়েছে। ইহাতে বলা হয় যে, মির্জা আহমদ বেগের মৃত্যুই ভবিষ্যদ্বাণীর কার্য্যকারিতার প্রমাণ করে। কিন্তু ভবিষ্যদ্বাণীটি ছিল যে, মুহাম্মদী বেগমের স্বামী আড়াই বৎসরের মধ্যে মারা যাবে এবং তার পিতা তিন বৎসরের মধ্যে মারা যাবে। যুক্তিসঙ্গত ব্যাখ্যা হতে পারতো যে, মুহম্মাদী বেগমের পিতা মারা যাবেন তার স্বামীর মৃত্যুর পর এবং বিয়ের তিন বৎসরের মধ্যে। কিন্তু তিনি মারা গিয়েছিলন বিয়ের পরপরই এবং যে ব্যক্তির মৃত্যু হওয়ার কথা ছিল প্রথম, তিনি বেঁচে থাকলেন অনেক দিন।

সাধারণতঃ বিবাহের বাগদান ব্যর্থ বা সফল হওয়া কোন বিশেষ ব্যাপার নয়, কিন্তু এক্ষেত্রে মির্জা সাহেবের ভবিষ্যদ্বাণীর উল্লেখ এবং বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা বিষয়টিকে প্রতিপত্তিশীল করে। আনজাম-ই-আথাম গ্রন্থে (সিলসিলা-ই-তাছনিফাতে প্রকাশিত, ভলিউম-৮, পৃষ্ঠা-৪৭৭৩ বিশেষ দ্রষ্টব্য)  ( অসমাপ্ত )

*****************************************************************************************

খতমে নুবুওওয়াত প্রচার কেন্দ্র

খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারীরা কাফির

(ইসলামী শরীয়তের হুকুম মোতাবেকযারা মুসলমান থেকে খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারী সম্প্রদায়েরঅন্তর্ভূক্ত হয় (যেমন-কাদিয়ানী, বাহাইইত্যাদি) তাদের তওবার জন্য নির্ধারিত সময়  ৩দিন। এরপর তওবা না করলেতাদের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড)

 (১)

কাদিয়ানী রদ!

(তৃতীয় ভাগ)

 বাহরুল উলুম, ফখরুল ফোক্বাহা, রইছুল মোহাদ্দেসীন, তাজুল মোফাসসেরীন, হাফেজে হাদীছ, মুফতীয়ে আজম, পীরে কামেল, মোর্শেদে মোকাম্মেল হযরত মাওলানা আল্লামা শাহ্ সূফী মুহম্মদ রুহুল আমিন রহমতুল্লাহি আলাইহি কর্তৃক প্রণীত কাদিয়ানি রদকিতাবখানা (৬ষ্ঠ খণ্ডে সমাপ্ত)। আমরা মাসিক আল বাইয়্যিনাত পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করছি। যাতে কাদিয়ানিদের সম্পর্কে সঠিক ধারণাসহ সমস্ত বাতিল ফেরকা থেকে আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের অনুসারীদের ঈমান আকীদার হেফাজত হয়। আল্লাহ পাক আমাদের প্রচেষ্টার কামিয়াবী দান করুন (আমিন)। ওনার কিতাব থেকে হুবহু উদ্ধৃত করা হলো, তবে তখনকার ভাষার সাথে বর্তমানে প্রচলিত ভাষার কিছুটা পার্থক্য রয়েছে। (পূর্ব প্রকাশিতের পর) মির্জ্জার মছিহ্ দাবী খন্ডন। মির্জ্জা ছাহেব এজালাতোল খেফার ২২৮ পৃষ্ঠায় ছুরা মায়েদার আয়ত উল্লেখ করিয়া বলিয়াছেন যে, ইহাতে হযরত ইছার মৃত্যুর কথা স্পষ্ট বুঝা যায়।  আমাদের উত্তর

وكنت عليهم شهيدا ما دمت فيهم فلما تو فيتنى كنت انت الر قيب عليهم وانت على كل شئ شهيد.

ছুরা মায়েদার আয়ত এই ;- (“হজরত ইছা আলাইহিস সালাম বলিলেন,) আমি যত দিবস তাহাদের মধ্যে ছিলাম, আমি তাহাদের পর্য্যবেক্ষণকারী ছিলাম, তৎপরে তুমি যে সময় আমাকে তুলিয়া লইয়াছিলে, তুমি তাহাদের রক্ষক ছিলে এবং তুমি প্রত্যেক বিষয়ের পরিদর্শনকারী।”      মির্জ্জা ছাহেব এজালাতোল আওহামের ২২৮ পৃষ্ঠায় দাবী করিয়াছেন যে, কুরআন নাজীল হওয়ার পূর্ব্বে হজরত ইছা আলাইহিস সালাম এইরূপ বলিয়াছিলেন, কেননা এস্থলে اذقالশব্দ ব্যবহার করা হইয়াছে, আর উভয় শব্দ অতীত কালের জন্য ব্যবহার করা হইয়া থাকে। আর تو فيتنيى শব্দের অর্থ- তুমি আমাকে মারিয়া ফেলিয়াছিলে।ইহাতে বুঝা যায় যে, হজরত ইছা আলাইহিস সালামকুরআন নাজিল হওয়ার পূর্ব্বে মরিয়া গিয়াছেন। আমাদের উত্তর ।     তফছির মোজহারী, ছুরা মায়েদা, ১০০ পৃষ্ঠা;-

قال سائر المفسرين انما يقول الله تعالى له ذلك يوم القيمة يريد به تو بيخ الكفرة وتبليتهم يد ليل تعالى يوم يجمع الله الرسل وقوله تعالى هذا يوم ينفع الصدقين صدقهم واراد بها يوم القيمة وقد يجئ اذ مع صيفة الماضيى فى المستقبل للد لا لة على اتيا نها لا محالة كانها كائنة نظيرة قوله تعالى ولو ترى اذ فزعوا.

সমস্ত তফছির কারক বলিয়াছেন, “কাফেরদিগকে তিরস্কার ও নির্ব্বাক করাশ উদ্দেশ্যে আল্লাহ্তায়ালা উক্ত ইছা আলাইহিস সালাম উনাকে উহা কেয়ামতের দিবস বলিবেন, ইহার প্রমাণ এই যে, আল্লাহ (ইহার পূর্ব্বে) বলিয়াছেন, -যে দিবস আল্লাহ রাসূলগণকে সংগ্রহ করিবেন।আরও তিনি (উহার শেষে) বলিয়াছেন, -“ইহা উক্ত দিবস- যে দিবস সত্যবাদীদিগকে তাহাদের সত্যতা ফলদায়ক হইবে।আল্লাহ উহা কেয়ামতের দিবসের অর্থে ব্যবহার করিয়াছেন। কখন ব্জব্জ ও অতীত কাল মূলক ক্রিয়া ভবিষ্যৎ কাল অর্থে ব্যবহৃত হয়, ইহাতে বুঝা যায় যে, উক্ত ঘটনা নিশ্চয় সংঘটিত হইবে। ইহার দৃষ্টান্ত কোর-আনের এই আয়ত, ولو ترى اذ فزعوا.

আমরা বলি, কোর-আন শরিফে অনেক স্থলে কেয়ামতের অবস্থা অতীতকালের ক্রিয়া দ্বারা প্রকাশ করা হইয়াছে। যথা-

(১) ونفخ فى الصور(২) واشرقت الارض (৩) وضع الكباب (৪) حئ بالنبيين(৫) قضى بينهم وسيق الذين كفروا.

মির্জ্জা ছাহেব মেশকাতের ৪৮৩ পৃষ্ঠায় উল্লিখিত ছহিহ বোখারী ও মোছলেমের নিম্নোক্ত হাদিছটি পেশ করিয়া উহা অতীতকালের ঘটনা বলিয়া দাবী করিয়াছেন। হাদিছটী এই

ان ناسا من اصحابى يؤخذ بهم ات الشمال فا قول اصيحابى اصيحابي فيقول انهم لن يزالوامر تدين على اعقايهم مذفار قتهم فاقول كما قال العبد الصالح وكنت عليهم شهيدا ما دمت فيهم.

নিশ্চয় আমার কতকগুলি ছাহাবাকে বামদিকে লইয়া যাওয়া হইবে, ইহাতে আমি বলিব, আমার ক্ষুদ্র একদল ছাহাবা, আমার ক্ষুদ্র একদল ছাহাবা। তদুত্তরে আল্লাহ বলিবেন, নিশ্চয় তুমি যখন তাহাদিগকে পরিত্যাগ করিয়াছিলে, তাহারা অবিরত নিজেদের পশ্চাদ্দিকে প্রত্যাবর্ত্তন করিয়াছিল। তৎশ্রবণে আমি বলিব, যেরূপ নেক বান্দা (ইছা আলায়হেচ্ছালাম) বলিয়াছিলেন, আমি যত দিবস তাহাদের মধ্যে ছিলাম, তত দিবস তাহাদের পরিদর্শনকারী ছিলাম।মির্জ্জা ছাহেব বলিয়াছেন, ‘নেক বান্দা বলিয়াছিলেনএই অতীত কালের ক্রিয়া ব্যবহারে বুঝা যায় যে, ইহা অতীতকালের ঘটনা, ইহা কেয়ামতের ঘটনা নহে। আমাদের উত্তর ; ... কেয়ামতে আল্লাহ প্রথমে হজরত ইছা আলাইহিস সালাম উনাকে প্রশ্ন করিবেন, তৎপরে তিনি হজরত নবী (ছাঃ)কে উহা বলিবেন, এই হেতু উক্ত হাদিছে অতীত কালের ক্রিয়া ব্যবহার করা হইয়াছে। কোর-আনে ইহার নজির আছে, যথা- يوم يأتى بعض ايات ربك لا ينفع نفسا ايمانها لم تكن امنت من قبل. মির্জ্জা ছাহেব নিজে জমিমায় বারাহিনে আহমদিয়ার ৬/৭পৃষ্ঠায় লিখিয়াছেন;- এইভবিষ্যদ্বাণীতে অতীতকালের ক্রিয়া ব্যবহৃত হইলেও উহা ভবিষ্যৎ কালের ক্রিয়ার অর্থে গৃহীত হইবে। যেস্থলে কোন ভবিষ্যৎ ঘটনা অবশ্যম্ভাবি বলিয়া স্থিরীকৃত হয়, তথায় অতীতকালের ক্রিয়ার অর্থ ভবিষ্যৎ কাল লইতে হয়। যথা-

واذ قال الله يا عيسى ابن مريم ء انت قلت للناس اتخذونيى واميى الهين من ذون الله- ولو ترى اذ وقفوا على النار-   

এস্থলে মির্জ্জা ছাহেব নিজেই হজরত ইছার ঘটনা কেয়ামতের ঘটনা বলিয়া স্বীকার করিয়াছেন।         দ্বিতীয় এই আয়তে যে توفيت শব্দ আছে, উহা توفيىমছদর হইতে উৎপন্ন হইয়াছে, ইহার অর্থে প্রাচীন বিদ্বান্গণ কি লিখিয়াছেন, তাহা শুনুন;- তফছির এবনো-জরির, ৭/৮৪ পৃষ্ঠা ;-

فلما توفيتنيى يقول قبضتنيى

যে সময় তুমি আমাকে গ্রহণ করিলে।”      রুহোল- মায়ানি, ২/৪১৪ পৃষ্ঠা ;-

فلما تو فيتنى اى قبضتنيى با لرفع الى السماء.

 

যে সময় তুমি আমাকে আছমানে তুলিয়া লইয়া গ্রহণ করিয়াছিলে।তফছির মোজহারী ছুরা মায়েদা, ১০০ পৃষ্ঠা;-فلما تو فيتنى يعنى قبضتنى و رقعتنى اليك.

যখন তুমি আমাকে গ্রহণ করিলে ও নিজের নিকট তুলিয়া লইলে।এইরূপ উহার অর্থ তুলিয়া লওয়া জালালাএনের ১০৯ পৃষ্ঠায়, জামেয়োল বায়ানের ১০৯ পৃষ্ঠায়, হাশিয়ায় জোমালের ১/৫৪৬ পৃষ্ঠায়, হোছায়নির ৬৪ পৃষ্ঠায়, মোনিরের ১/২৩৯ পৃষ্ঠায়, অজিজের ১/২৩৯ পৃষ্ঠায়, রুহোল বায়ানের ১/৬১২ পৃষ্ঠায়, খাজেনের ২/৯৪ পৃষ্ঠায়, মায়ালেমের ২/৯৪ পৃষ্ঠায়, ছেরাজোল মনিরের ১/৪০৫ পৃষ্ঠায় ও বয়জবির ২/১৭৭ পৃষ্ঠায় লিখিত আছে।

আয়তের অর্থ, -আল্লাহ্তায়ালা যখন কেয়ামতে হজরত ইছা আলাইহিস সালাম উনাকে বলিবেন, তুমি কি লোকদিগকে তোমাকে ও তোমার মাতাকে উপাস্যরূপে গ্রহণ করিতে বলিয়াছিলে, তিনি বলিবেন, আমি এরূপ বলি নাই। যতক্ষণ আমি তাহাদের সঙ্গে ছিলাম, তাহাদের অবস্থা অবগত ছিলাম। আর যখন তুমি আমাকে আছমানে তুলিয়া লইয়াছিলে, তখন তুমি তাহাদের রক্ষক ছিলে। প্রশ্ন;..       মির্জ্জা ছাহেব এজালাতোল আওহামের ৪৫৯ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছেন, ছহিহ বোখারীর ৬৬৫ পৃষ্ঠায় আছে ;-

قال ابن عباس متو فيك مميتك.

এবনো আব্বাছ বলিয়াছেন, হৃণ্ডèল্পরূ শব্দের অর্থ আমি তোমাকে মারিয়া ফেলিব।”     ( অসমাপ্ত )

(২)

ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক পাকিস্তান সুপ্রীম কোর্ট কর্তৃক কাদিয়ানীদের- কাফেরঘোষণা!

(পূর্ব প্রকাশিতের পর)

অনুবাদক - আলহাজ্ব মুহম্মদ হাবিবুল হক

 

মির্জা সাহেব লিখেছে যে, “আহমদ বেগের জামাতা সম্বন্ধে ভবিষ্যদ্বাণীর সারাংশ হলো- তার অপরিহার্য্য নিয়তি। এরজন্য অপেক্ষা কর, যদি আমি মিথ্যাবাদী হই, তবে এই ভবিষ্যদ্বাণী আমার মৃত্যু পর্যন্ত কার্য্যকর হবেনা।এবং তা কার্য্যকর হয়নি। যা ছিল ১৮৯৯সাল। পূর্বেও সে এরূপ বলেছিল তার বিবাহ সম্বন্ধে, যা ১৮৯৪ সালের ৬ই সেপ্টেম্বরে প্যাম্ফ্লিটের দ্বারা প্রচার করা হয়। সে লিখেছে, “ভবিষ্যদ্বাণীর সারাংশ হলো-আমার সাথে ঐ মহিলার বিয়েই অপরিহার্য্য নিয়তি, যা প্রত্যাহার (মিথ্যা প্রমাণিত) করা যায়না।কারণ এই অংশটি ঐশী ভবিষ্যদ্বাণীতে আছে, ”ীর্টটঠঢণণফট-ফধ-টিফধবর্টধফফটদ” (আল্লাহ পাক-এর কথার কোন পরিবর্তন নাই) তার অর্থ হলো- আমি যা বলেছি, তা প্রত্যাহার (মিথ্যা প্রমাণিত) করা যাবেনা। যদি এটা প্রত্যাহার করা হয়, (অসত্য প্রমাণিত) আল্লাহ পাক-এর কথা অসার এবং মূল্যহীন প্রতিপন্ন হয়।

কিন্তু যে সময় এই কথাগুলি লিখা হয়েছিল, তখন সুলতান মুহম্মদের মৃত্যু হওয়ার সময়-সীমাও উল্লেখ করা হয়েছিল। ঐ সময় অতিক্রান্ত হয়ে যায়, কিন্তু মির্জা সাহেব জোরের সঙ্গে প্রচার করছিল যে, নিয়তির বিধান ঘটবেই, হয়তো কিছু দেরী হতে পারে। ১৮৯১ সালে মির্জা সাহেব একটি ভবিষ্যদ্বাণী করেছিল,

سلطنت بر طانيه هشت سال

سلطنت بر طانيه هفت سال.

(ব্রিটিশ শাসন  আট  বৎসরের বা  ব্রিটিশ  শাসন   সাত বৎসরের মাত্র)। ইহাই ছিল বিভিন্ন ব্যাখ্যার বিষয়বস্তু। কেননা দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের পর পর্যন্ত ব্রিটিশ শাসন চলেছে। (দ্রষ্টব্য- সীরাত-ই-মাহদী, ভলিউম-২ পৃষ্ঠা-৯, নম্বর-৩১৪) বরাহিনে আহমদীয়া, ভলিউম-৫ (পৃষ্ঠা-৭৩-৭৪)  মির্জা সাহেব সূরা ৩-এর আয়াত নং- ৫৫ উল্লেখ করেছে,

اذ قال الله يعيسى انى متو فيك ورافعك الى ومطهرك من الذين كفروا وجاعل الذين اتببعوك فوق الذين كفرو الى يوم القيامة.

(স্মরণ কর সেই সময়কে) যখন আল্লাহ পাক বললেন, “হে ঈসা আলাইহিস সালাম! নিশ্চয়ই আমি আপনাকে মৃত্যু দিব এবং আমার দিকে আপনাকে উন্নীত করবো এবং যারাঅস্বীকার করে, তাদের উপর আপনার অনুসরণকারীদিগকে ক্বিয়ামত দিবস পর্যন্ত প্রাধান্য দান করবো।এবং বলেন, এর অর্থ, হে ঈসা আলাইহিস সালাম! আমি আপনাকে মৃত্যু দিব এবং আমার দিকে উঠিয়ে নিব এবং আপনাকে অভিযোগাদি থেকে মুক্ত করার ইঙ্গিত দিব। আপনার উপর বিশ্বাস স্থাপন কারীদিগকে আমি অবিশ্বাস কারীদের উপর প্রাধান্য দিব। এই বিস্ময়কর প্রকাশে ঈসা (াণ্রল্র) শব্দটি আমাকেই বুঝানো হয়েছে

এবং অনুসারীশব্দটি আমার সংগঠনকে ইঙ্গিত করা হয়েছে।         কুরআন শরীফের ভবিষ্যদ্বাণী যীশু খৃষ্টের সম্বন্ধে এবং দমিত সমাজ শব্দগুলি ইহুদিদের উদ্দেশ্যে উল্লেখ করা হয়েছে। যারা প্রতিদিনই সংখ্যায় কমে যাচ্ছে। এই আয়াত শরীফের সদ্য প্রকাশিত গুপ্ত তথ্য আমার জন্য এবং আমার সংগঠনের জন্য। যাতে ইঙ্গিত বহন করে যে, যারা এই সংগঠনের বাইরে রয়েছে, তারা সংখ্যায় কমে যাবে এবং মুসলমানদের সকল ফেরকা, যারা আমার সংগঠনের বাইরে রয়েছে, তারাও সংখ্যায় হ্রাস পাবে (যার অর্থ এই যে), তারা আমার সংগঠনে প্রবেশ করতে থাকবে অথবা তাদেরকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করা হবে। এই ভবিষ্যদ্বাণীর অসারতা এতই স্বচ্ছ যে, এ সম্বন্ধে বেশী কিছু বলার অবকাশ নেই। ১৯৮১ সালের আদম শুমারী অনুযায়ী পাকিস্তানে কাদিয়ানীদের মোট সংখ্যা হলো- ১,০৩,০০০ মাত্র এবং পাঞ্জাবেই মুসলমানদের সংখ্যা সে তুলনায় অনেক গুণ বেড়ে গেছে। যেখানে মির্জা সাহেবের কিছু অনুসারী ছিল। উল্লেখ্য কাদিয়ানীদের সংখ্যা সব সময়েই অতিরঞ্জিত করে বলা হয়েছে, যা এনসাইক্লোপিডিয়া অব রিলিজিয়ন এন্ড এথিক্স-এর ভলিউম-১০, পৃষ্ঠা ৯৩০ থেকেই বুঝা যায়। ১৮৮৯ সালে শুরু হয়ে এই আন্দোলনটি নিয়মিতভাবে গড়ে উঠে।

১৮৯৬ সালে সদস্য সংখ্যা ৩১৩ বলে দাবী করা হয়। ১৯০১ সালের সরকারী আদম শুমারী অনুযায়ী দেখা যায় ১১১৩ জন পুরুষ যুক্ত প্রদেশের জন্য ফিরে যায় এবং ১১,০৮৭ জন বোম্বাই প্রদেশে ফিরে যায়। (স্পষ্টতঃই এক মিথ্যা বক্তব্য) ১৯০৪ সালে মির্জা সাহেব দাবী করে, তার অনুসারী ১,০০,০০০ হবে। তার মৃত্যুর পূর্বে তার অনুসারীর সংখ্যা ৫,০০,০০০ হবে বলে সে অনুমান করে। এই অনুমানে অতিরঞ্জন ছিল, কেননা ১৯১১ সালের পাঞ্জাবের আদম শুমারী অনুযায়ী আহমদীয়াদের সংখ্যা ছিল- ১৮,৬৯৫ জন। বর্তমানে সারা ভারতবর্ষে সম্ভবতঃ মোট ৬০,০০০ আহমদীয় আছে। এটাও খুবই উদারভাবে। এছাড়া অন্যান্য দেশে বিক্ষিপ্ত কিছু অনুসারী আছে।

( অসমাপ্ত ) 

*******************************************

খতমে নুবুওওয়াত প্রচার কেন্দ্র

খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারীরা কাফির

(ইসলামী শরীয়তের হুকুম মোতাবেক যারা মুসলমান থেকে খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভূক্ত হয় (যেমন- কাদিয়ানী, বাহাই  ইত্যাদি) তাদের তওবার জন্য নির্ধারিত সময় ৩দিন। এরপর তওবা না করলে, তাদের শাস্তি মৃত্যুদন্ড)

(১)

কাদিয়ানী রদ!

(তৃতীয় ভাগ)

 

বাহরুল উলুম, ফখরুল ফোক্বাহা, রইছুল মোহাদ্দেসীন, তাজুল মোফাসসেরীন, হাফেজে হাদীছ, মুফতীয়ে আজম, পীরে কামেল, মোর্শেদে মোকাম্মেল হযরত মাওলানা আল্লামা শাহ্ সূফী মুহম্মদ রুহুল আমিন রহমতুল্লাহি আলাইহি কর্তৃক প্রণীত কাদিয়ানি রদকিতাবখানা (৬ষ্ঠ খন্ডে সমাপ্ত)। আমরা মাসিক আল বাইয়্যিনাত পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করছি। যাতে কাদিয়ানীদের সম্পর্কে সঠিক ধারণাসহ সমস্ত বাতিল ফেরকা থেকে আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের অনুসারীদের ঈমান আকীদার হিফাযত হয়। মহান আল্লাহ পাক আমাদের প্রচেষ্টার কামিয়াবী দান করুন (আমিন)। ওনার কিতাব থেকে হুবহু উদ্ধৃত করা হলো, তবে তখনকার ভাষার সাথে বর্তমানে প্রচলিত ভাষার কিছুটা পার্থক্য রয়েছে।

 

(পূর্ব প্রকাশিতের পর)

মির্জ্জার মছিহ দাবী খণ্ডন

আমাদের উত্তর ।

তফছির আবু দাউদ, ২/৪২০ পৃষ্ঠা ও রুহোল মায়ানী, ১৫৯৬ পৃষ্ঠা ;-

والصحيح كما قاله القر طبيى ان الله تعالى رفعه من غير وفاة ولانوم وهوا ختيار الطبرى و الرواية الصحيحة عن ابن عباس.

ছহিহ মত যাহা কোরতবি বলিয়াছেন, উহা এই যে, নিশ্চয় আল্লাহ্ তায়ালা তাঁহাকে বিনা মৃত্যু ও নিদ্রা উঠাইয়া লইয়াছিলেন, ইহা তাবারির মনোনীত মত ও এবনো আব্বাছের ছহিহ রেওয়াএত।

তফছিরে র্দোরোল মন্ছুর, ২/৩৬ পৃষ্ঠা ;-

عن ان عباس فيى قوله انيى متوفيك و رافعك .. رافعك ثم متوفيك فى اخرالزمان.

“(হজরত) এবনো আব্বাছ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলিয়াছেন, উহার অর্থ এই - আমি তোমাকে আছমানে তুলিয়া লইব, তৎপরে শেষ জামানায় তোমাকে মারিয়া ফেলিব।

তফছিরে আব্বাছি, ১/১৭৭ পৃষ্ঠা ;-

مقدم و موخر يقول انيى رافعل (الى ومطهرك) منجيك (من الذين كفروا) بك (وجاعل الذين اتبعوك) اتبعوا دينك (فوق الذين كفروا) با لحدة والنصرة (الى يوم القيمة) ثم متو فيك قابضك يعد النزول.

হজরত এবনো আব্বাছ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলিয়াছেন, এই আয়তে শব্দের অগ্র পশ্চাৎ হইয়াছে, অর্থ এই, নিশ্চয় আমি তোমাকে আমার নিকট (আছমানে) তুলিয়া লইব, তোমাকে কাফিরদিগ হইতে রক্ষা করিব, তোমার দ্বীনের অনুসরণকারীদিগকে প্রমাণ ও সহায়তা দ্বারা কেয়ামত অবধি কাফিরদের উপর উন্নত করিব, তৎপরে আছমান হইতে নাজিল হওয়ার পরে তোমাকে মারিয়া ফেলিব।

তফছিরে দোর্রোল মনছুর, ২/২৩৮ পৃষ্ঠা ;-

عن ابن عباس قال لما اراد الله كان يرفع عيسى الى السماء خرج الى اصحابه وفى البيت اثنا عشر رجلا من الحوارين نخرح عليهم من غير البيت وراسه بقطر ماء ثم قال ايكم يلقى عليه شبهى فيقتل مكانيى ويكون معى فيى درجتى فقام شاب من اخد ثهم سنا فقال له اجلس ثم اعاد عليهم فقال انت ذاك فالقى عليه شيه عيسى ورفح عيسى من روزنة فيك الييت الى السماء قال وجاء الطلب من اليهود فاخذوا الشيه فقتلوه ثم صلبوه.

“(হজরত) এবনো আব্বাছ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলিয়াছেন, যে সময় আল্লাহ্ (হজরত) ইছা আলাইহিস সালামকে আছমানে তুলিয়া লইতে ইচ্ছা করিলেন, তিনি নিজের সহচরগণের নিকট বাহির হইলেন, গৃহের মধ্যে ১২জন হাওয়ারি ছিলেন, তাঁহার মস্তক হইতে বিন্দু বিন্দু পানি পড়িতেছিল, এমতাবস্থায় তিনি গৃহের বাহির হইতে তাঁহাদের নিকট উপস্থিত হইয়া বলিলেন, তোমাদের মধ্যে কোন্ ব্যক্তিকে অবিকল আমার আকৃতি প্রদান করা হইবে, তৎপরে আমার পরিবর্ত্তে তাহাকে হত্যা করা হইবে, সে ব্যক্তি আমার সহিত আমার তুল্য দরজা প্রাপ্ত হইবে। তৎশ্র্রবণে তাহাদের মধ্য হইতে সমধিক অল্প বয়স্ক একজন যুবক দন্ডায়মান হইল, ইহাতে তিনি তাহাকে বলিলেন, তুমি উপবেশন কর। তৎপরে তাহাদের নিকট তিনি দুইবার উহার পুনরুক্তি করিলেন, ইহাতে দুইবার সেই যুবক দন্ডায়মান হইয়া বলিল, আমি। হজরত বলিলেন, তুমি উহা প্রাপ্ত হইবে। তৎপরে উক্ত যুবক (হজরত) ইছা আলাইহিস সালাম-এর আকৃতিতে পরিবর্ত্তিত হইল এবং (হজরত) ইছা আলাইহিস সালাম গৃহের গবাক্ষ হইতে আছমানে সমুত্থিত হইলেন। য়িহুদিদিগের পক্ষ হইতে পিয়াদা সকল উপস্থিত হইয়া সেই যুবককে ধরিয়া হত্যা করিল, পরে তাহাকে শূল-বিদ্ধ করিল।

উপরোক্ত বিবরণে স্পষ্টভাবে বুঝা যাইতেছে যে, হজরত এবনো আব্বাছ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুর মতে হজরত ইছা আলাইহিস সালাম জীবিতবস্থায় সশরীরে আছমানে সমুত্থিত হইয়াছিলেন। (অসমাপ্ত)

(২)

ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক পাকিস্তান সুপ্রীম কোর্ট কর্তৃক কাদিয়ানীদের- কাফিরঘোষণা!

(পূর্ব প্রকাশিতের পর)

অনুবাদক - আল্হাজ্ব মুহম্মদ হাবিবুল হক

         ১৯৩১ সালের আদম শুমারী অনুযায়ী কাদিয়ানীদের সংখ্যা ছিল- ৫৫,০০০ মাত্র। কিন্তু মির্জা মাহমুদ আহমদের অনুমান ছিল- ৭৫,০০০ (মিয়া বশির উদ্দীন মাহমুদ আহমদের বক্তৃতা আল ফজল কাদিয়ান, ভলিউম-২১, নম্বর-১৫২, তারিখ ২১-৬-১৯৩৪, সি.এফ কাদিয়ানী মাজহাব, পৃষ্ঠা-৪১৫তে উল্লেখিত)

১৮৯৯ সালের ২৭শে সেপ্টেম্বরের প্যাম্ফলেটে মির্জা সাহেব লিখেছে যে, সে কিছু বইতে তার অনুসারীর সংখ্যা ৩০০ উল্লেখ করেছে। অনুসারীর সংখ্যা এখন ১০,০০০ হয়েছে এবং তিন বৎসরের মধ্যে উক্ত সংখ্যা ১,০০,০০০-এরও বেশী হয়ে যাবে। (তাবলীগ-ই- রিসালাত, ভলিউম-৮, পৃষ্ঠা-৫৪)। ১৯০০ সালের ৪ঠা নভেম্বরের প্যাম্ফলেটে সে তার অনুসারীর সংখ্যা ৩০,০০০ হবে বলে উল্লেখ করেছে। (প্রাগুক্ত ভলিউম-৯, পৃষ্ঠা-৯০)

মির্জা সাহেব শপথ করে এবং বলে, “আমি হলফ করে বলছি যে, আমার সংগঠনে কমপক্ষে এক লক্ষ লোক আমাকে অন্তর থেকে বিশ্বাস করে।” (সিরাত-ই-মেহদী, ভলিউম-১, পৃষ্ঠা-১৪৬)। তহ্ফত-উন-নদওয়া (১৯০২)তে সে এই সংখ্যাই নিরূপন করেছে এবং বলেছে, এর মধ্যে ১০,০০০ আস্থা স্থাপন করেছে প্লেগ প্রাদূর্ভাবের সময়ে।

হক্বিক্বত-উল-ওহী-এর সম্পূরক অংশে (১৯০৭ সালে মুদ্রিত) ১১৭ পৃষ্ঠাতে মির্জা সাহেব তার অনুসারীদের সংখ্যা ৪,০০,০০০ উল্লেখ করেছে।

মির্জা সাহেব এবং তার উত্তরাধিকারী ছাড়া তার অনুসারী মুবারক আহমদ, জামিয়া আহমদীয়া কাদিয়ানের অধ্যাপক সংখ্যাটিকে অতিরঞ্জিত করে। সে কাদিয়ানীদের সংখ্যা ৫০,০০,০০০ বলে উল্লেখ করে।

মিষ্টার ফিলবির নিকট আবদুর রহমান দার্দ বলে, কাদিয়ানীর সংখ্যা পাঞ্জাবে এখন মুসলমানদের চেয়ে বেশী। এটা বলা হয়েছিল, যখন পাঞ্জাবে মুসলমান জনসংখ্যা ১ কোটি ৫০ লক্ষ। তার (দার্দের) দাবী অনুযায়ী এর অর্থ হয়, তখন পাঞ্জাবে কাদিয়ানীদের সংখ্যা ছিল ৭৫ লক্ষ। সম্প্রতি লন্ডন ইকনোমিষ্ট পত্রিকায় এই সংখ্যা উল্লেখ করেছে ১ কোটি। কাদিয়ানীরাই এটি পত্রিকাকে জানিয়েছে। পাঞ্জাবে মুসলিম জনসংখ্যা এখন সাড়ে চার কোটিরও বেশী। যখন সারা দেশে (পাকিস্তানে) কাদিয়ানীদের মোট সংখ্যা ১,০৩,০০০। অতএব, এই ছিল মির্জা সাহেবের ভবিষ্যদ্বাণী।

অপরদিকে দি ইউনিটি অব ক্যালকাটা পত্রিকায় মির্জা সাহেবের মৃত্যু সম্বন্ধে একটি প্রবন্ধে উল্লেখ করা হয়েছে, তার সমর্থকের সংখ্যা ছিল- ২০,০০০ (সিরাত-ই-মেহ্দী, ভলিউম-১, পৃষ্ঠা-২৬৫, নম্বর ২৯০)।

যখন মির্জা সাহেবের অল্প কিছু অনুসারী হয়েছে, সে ১৮৮৮ সালের ১লা ডিসেম্বর একটি প্যাম্ফলেটের মাধ্যমে অনুগামীদের বাইয়াত গ্রহণ করতে বলে। (হায়াত-ই-তাইয়্যেবা, পৃষ্ঠা-৯৭,৯৮), এনসাইক্লোপিডিয়া অব রিলিজিয়ন এন্ড এথিক্স, ভলিউম-১০-এর কাদিয়ান নামক প্রবন্ধে কাদিয়ানী অনুসারীর সংখ্যা ১৮৯৬ সালে ৩১৩ ছিল।

মোটামুটি কিছু অনুসারী সংগ্রহ হওয়ার পর মির্জা সাহেব দ্বিতীয় পদক্ষেপে নিজেকে প্রতিশ্রুত মসীহ্ হিসেবে ঘোষণা করে এবং ১৮৯১ সালে মাহদী ঘোষণা দেয়। তার এই ঘোষণার, মুসলিম উম্মাহ্র আশংকা ছিল যে, সে নবী দাবী করতে চলেছে, তা আংশিক সত্য প্রমাণিত হয়।

প্রকৃতপক্ষে ইতিমধ্যে মির্জা সাহেব বরাহিন-ই-আহমদীয়া গ্রন্থে নিজেকে মসীহ হিসাবে দাবীর উল্লেখ করে প্রতিশ্রুত মসীহ হওয়ার ঘোষণার ভিত্তি স্থাপন করেছিল।

মির্জা সাহেব ফাত্হ-ই-ইসালাম নামক (১৮৯১ সালে প্রকাশিত) গ্রন্থে প্রকাশ করে যে, তাকে সংস্কারক হিসাবে প্রেরণ করা হয়েছে। যাতে সে মানুষের মনে ধর্মকে পুনঃর্জীবিত এবং প্রতিষ্ঠিত করতে পারে। তাকে একইভাবে প্রেরণ করা হয়েছে, যেমন একজনকে প্রেরণ করা হয়েছিল, হযরত মুসা আলাইহিস সালাম-এর পর, যার আত্মাকে উঠিয়ে নেয়া হয়েছিল অনেক পরীক্ষা এবং ক্লেশের পর। অতঃপর আর একজন, যিনি হযরত মুসা আলাইহিস সালাম-এর মত মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে সম্পর্কযুক্ত এবং যিনি বাস্তবিকই নবী এবং রাসূল আলাইহিস সালামগণের প্রধান এবং ফেরাউনদের পরাজিত করতে এসেছিলেন এবং যাঁর সম্বন্ধে কোরআন শরীফে বলা হয়েছে, (কোরআন ৭৩:১৫) নিশ্চয়ই! আমি তোমাদের নিকট প্রেরণ করেছি, এক রাসূল তোমাদের উপর সাক্ষী স্বরূপ। যেরূপ ফেরাউনের নিকট প্রেরণ করেছিলাম একজন রাসূল।” (অসমাপ্ত)

 ************************************************************************************************************************************************************************

খতমে নুবুওওয়াত প্রচার  কেন্দ্র

খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারীরা কাফির

(ইসলামী শরীয়তের হুকুম মোতাবেক যারা মুসলমান থেকে খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভূক্ত হয়

(যেমন- কাদিয়ানী, বাহাই  ইত্যাদি) তাদের তওবার জন্য নির্ধারিত সময় ৩দিন। এরপর তওবা না করলে, তাদের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড)

(১)

কাদিয়ানী রদ!

(তৃতীয় ভাগ)

 

বাহরুল উলুম, ফখরুল ঊাক্বাহা, রইছুল ঊাহাঊসীন, তাজুল ঊাফাসসেরীন, হাফেজে হাদীছ, মুফতীয়ে আজম, পীরে কামেল, ঊার্শেদে ঊাকাঊ§ল হযরত মাওলানা আল্লামা শাহ সূফী মুহম্মদ রুহুল আমিন রহমতুল্লাহি আলাইহি কর্তৃক প্রণীত কাদিয়ানি রদকিতাবখানা (৬ঊখঊ সমাপ্ত)। আমরা মাসিক আল বাইয়্যিনাত পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করছি। যাতে কাদিয়ানীদের সম্পর্কে সঠিক ধারণাসহ সমস্ত বাতিল ঊরকা ঊকে আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের অনুসারীদের ঈমান আকীদার হিফাযত হয়। আল্লাহ পাক আমাদের প্রচেষ্টার কামিয়াবী দান করুন (আমিন)।

ওনার কিতাব থেকে হুবঊউদ্ধৃত করা হলো, তবে তখনকার ভাষার সাথে বর্তমানে প্রচলিত ভাষার কিছুটা পার্থক্য রয়েছে।

(পূর্ব প্রকাশিতের পর)

মির্জ্জার মছিহ দাবী খন্ডন।

         

          তিনি  متوفيك এর অর্থ ممتيك ঊামাকে মারিয়া ঊলিব।বলিয়া প্রকাশ করিয়াছেন, ইহার প্রকঊ মর্ম ঊ ঊ, আল্লাহ্তায়ালা উপরোক্ত আয়তে কয়েকটি ভবিষ্যদ্বাণী করিয়াছেন, প্রথম এই ঊ, আমি নিজেই ঊামাকে মারিব। দ্বিতীয় আমি ঊামাকে আছমানে তুলিয়া লইব। তৃতীয় কাফেরগণ হইতে ঊামাকে পবিত্র করিব। চতুর্থ ঊামার অনুসরণকারিদিগকে উন্নত করিব।

          ছুরা ঊছার এই আয়তে بل رفعه الله اليه বরং তিনি তাঁহাকে নিজের নিকট তুলিয়া লইয়াছেন।দ্বিতীয় ভবিষ্যদ্বাণী সফল হইয়াছে, তৃতীয় ও চতুর্থ ভবিষ্যদ্বাণী তিনি আছমান হইতে নাজিল হইলে সফল হইবে অর্থাৎ ঊই জামানায় আল্লাহ তাঁহাকে মারিয়া ঊলিবেন।

প্রশঊ;...

          মির্জ্জা ছাহেব এজালাতোল আওহামের ২১৪/৪৫৯/৪৬৫ পঊায় লিখিয়াছেন ঊ, আল্লাহ তায়ালা চারিটী বাক্য তরতিবের সঊ প্রকাশ করিয়াছন, উপরোক্ত প্রকার অর্থ গ্রহণ করিলে ঊার-আন শরিফ তহরিফ ও পরিবর্ত্তন করা হইবে, ইহাতে ঊার-আনের বালাগাত ও ফাছাহাত নঊহইয়া যাইবে এবং ইহা সম্পূর্ণ এলহাদ ও ঊ-ইমানী হইবে।

আমাদের উত্তর ।

          মির্জ্জা ছাহেব এজালাতোল আওহামের ৪৫৯/৪৬০ পঊায় ঊ হজরত এবনো আব্বাছের ঊওয়াএত লইয়া এত নর্ত্তন-কুর্দ্দন করিয়াছেন এবং ঊ হজরত এবনো আব্বাছের এত প্রশংসা করিয়াছেন, তিনিই ঊা উক্ত আয়তের শব্দগুলির তরতিবের অগ্র পশ্চাৎ হওয়ার মত ধারণ করিয়াছেন। এক্ষণে আমরা মির্জ্জা ভক্তদিগকে জিজ্ঞাসা করি ঊ, উক্ত ছাহাবা প্রবর কি ঊার-আন তহরিফ ও পরিবর্ত্তন করিয়াছেন? তিনিই কি ঊার-আন শরিফের ফাছাহাত ও বালাগাতের জ্ঞান রাখিতেন না? তিনিই কি এলহাদ ও ঊইমানি করিয়াছেন? ধন্য মির্জ্জা ছাহেবের মুখজুরি ধন্য তাহার প্রলাপোক্তির শক্তি। জনাব, ঊারআন শরিফের বহুস্থলে এইরূপ শঊঅগ্র পশ্চাৎ বর্ণনা করা হইয়াছে, ইহাতে উহার বালাগাত ও ফাছাহাতের বিঘ্ন হয় না, ইহাতে ঊার-আন পরিবর্ত্তন করা হয় না, ইহা এলহাদ ও ঊইমানি নহে।

          যদি মির্জ্জায়িদলের তফছিরের সম্যক জ্ঞান থাকিত, তবে এইরূপ বাতীল প্রশঊকরিতে সাহসী হইতেন না।

          মির্জ্জা ছাহেব এজালাতোল আওহামের ১৩৫/১৩৬ পঊায় লিখিয়াছেন, এমাম জালালুদ্দিন ছাইউতি কাশফের দ্বারা হজরত নবি (ছাঃ)-এর নিকট হইতে হাদিছের সত্যাসত্য নির্দ্ধারণ করিয়া লইতেন। ঊই এমাম জালালুদ্দিন ছাইউতি তফছিরে এৎকানের ৩০০ পঊায় লিখিয়াছেন ;-

          ঊার-আন শরিফে কতক স্থলে শঊঅগ্র-পশ্চাৎ উল্লেখ করা হইয়াছে, ইহা দুই প্রকার -এক প্রকারে শব্দগুলির অগ্র-পশ্চাৎ স্বীকার না করিলে, অর্থবোধ দুস্কর হইয়া পড়ে, তিনি ইহার কতকগুলি দঊান্ত প্রকাশ করিয়াছেন, এস্থলে তন্মধ্যে কতকগুলি উল্লেখ করা হইতেছে-

 

 (১) فلا تعجبك اموالهم ولا اولادهم انما يريد الله ليعذبهم بها فى الحيوة الدنياء.

এবনো আবি হাতেম কাতাদা হইতে উল্লেখ করিয়াছেন, এস্থলে আসল তরতিব এইরূপ হইবে;-

فلا تعجبك اموالهم ولا اولادهم فى الحيوة الدنيا انما يريد الله ليعذبهم بها.

() ولولا كلمة سبقت من ربك لكان لزاما واجل مسمى.

          কাতাদা বলেন, এস্থলে আসল তরতিব এইরূপ হইবে ;-

 

ولولا كلمة سبقت واجل مسمى لكان لزاما

 ()انزل على عبده الكتاب ولم يجعل له عوجا قيما.

          ঊাজাহেদ বলেন, প্রকঊ তরতিব এইরূপ হইবে;-

انزل على عبده الكتاب قيما ولم يجعل له عوجا

() انيى متوفيك ورافعك.

কাতাদা বলেন, মূল তরতিব এইরূপ হইবে ;-

انيى رافعكا ومتوفيك

() لهم عذاب شديد بما نسوا يوم الحساب.

একরামা বলেন, মূল তরতিব এইরূপ হইবে ;-

لهم يوم الحساب عذاب شديد بما نسوا

() واذ قتلتم نفسا فا لدارئتم فيها.

বাগাবি বলেন, ইহা ঘটনার প্রথম আয়ত, কিন্তু ঊষে উল্লেখ করা হইয়াছে।

() افرأيت من اتخذ الهه هواه.

হজরত এবনো আব্বাছ বলেন, মূল তরতিব এইরূপ হইবে ;-

اقرأيت من اتخذ هواه اليه

 () فضحكت فبشرناها

তিনি বলেন, মূল তরতিব এইরূপ হইবে ;-

فبشرنا ها فضحكت

মূলকথা, ঊার-আন শরিফের কতকগুলি স্থলে শঊর ব্যাখ্যা করা কালে তরতিব পরিবর্ত্তন না করিলে আয়তের অর্থ পরিবর্ত্তন হইয়া যায়। কাজেই ছাহাবা ও তাবেয়ি তফছির কারকগণ উক্ত শব্দগুলির ব্যাখ্যাতে তরতিব পরিবর্ত্তন করিতে বাধ্য হইয়াছেন, ইহা তহরিফ ও এলহাদ নহে।

          ঊার-আন শরিফে আছে ;-

واوحينا الى ابراهيم واسمعيل و اسحاق ويعثوب والا سباط وعيسى وايوب ويونس وهارون وسليمان و اتينا داود زبورا.

আমি এবরাহিম, এছমাইল, এছহাক, ইয়াকুব, আওলাদগণ, ইছা, আইউব, ইউনোছ, হারুন ও ঊালায়মানের নিকট অহি নাজিল করিয়াছি এবং দাউদকে জবুর প্রদান করিয়াছি।

          আল্লাহ এস্থলে নবিগণের নামগুলি ঊ তরতিবে উল্লেখ করিয়াছেন, প্রকঊ পঊ তাঁহারা দুন্ইয়ায় ঊই হিসাবে আসেন নাই। হজরত ইছা সকলের ঊষে আসিয়াছিলেন।

          এক্ষণে মির্জ্জা ভক্তদিগকে জিজ্ঞাসা করি, উক্ত আয়তে ঊ তরতিবের সহিত নবিগণের নাম উল্লিখিত হইয়াছে, আপনারা ঊই হিসাবে তাঁহাদের দুন্ইয়ায় আসা স্বীকার করিবেন কিনা? যদি না করেন, তবে ঊার-আনের তহরিফ, এলহাদ, ঊইমানি ও বালাগাত ফাছাহাত নঊকরিবেন কিনা?

          মির্জ্জা ছাহেব এজালাতোল আওহামের ৪৫৯/৪৬০ পঊায় লিখিয়াছেন, এই আয়তে চারিটী বিষয় তরতিব অনুসারে লিখিত হইয়াছে, প্রথম ঊামাকে প্রাকঊতক মৃত্যুতে মারিয়া ঊলিব। দ্বিতীয় ঊামাকে সম্মানের সহিত উঠাইয়া লইব। তৃতীয় ঊামাকে ক্রুশে মৃত্যু ও উহার কুফল হইতে রক্ষা করিব। চতুর্থ ঊামার তাবেদারগণকে উন্নত করিব।

          মির্জ্জা ছাহেবের এইরূপ ব্যাখ্যা বাস্তব ঘটনার সহিত মিল খায় না, ঊননা মির্জ্জা ছাহেব রাজে হকিকতের ২/৩ পঊায় ও আইয়ামোছ ঊালহ ঊতাবের ১১২ পঊায় লিখিয়াছেন ঊ, হজরত ইছা আলাইহিস সালাম ক্রুশ হইতে রক্ষা পাইয়া কাশমিরের শ্রীনগরে ১২০ বৎসর বয়সে মরিয়াছিলেন। মির্জ্জা ছাহেবের এইরূপ ব্যাখ্যা ঊার-আনের তরতিবের বিপরীত, কারণ হজরত ইছার ক্রুশ হইতে নিস্কৃতি পাওয়া প্রথম ঘটনা, প্রাকঊতক নিয়মে মৃত্যু দ্বিতীয় ঘটনা, সম্মানের সহিত সমুত্থিত হওয়া তৃতীয় ঘটনা, কিন্তু ঊার-আনের উল্লিখিত তৃতীয় ঘটনা দুন্ইয়ায় প্রথমেই ঘটিয়াছে। এঊঊ মির্জ্জা ছাহেব ঊার-আনের তরতিবের বিপরীত ব্যাখ্যা করিয়া উহার তহরিফ করিয়াছেন কিনা? এলহাদ ও ঊ-ইমানি করিয়াছেন কিনা? ঊার-আনের বালাগত ও ফাছাহাত ধ্বংস করিয়াছেন কিনা?

প্রশঊ;...

          মির্জ্জা ছাহেব মছিলে-মছিহ ছিলেন কিনা?

আমাদের উত্তর ।

          এই ঊতাবের প্রথমে সপ্রমাণ করা হইয়াছে ঊ, হাদিছ শরিফে ঊ প্রতিশ্রুত মছিহের আগমনের কথা আছে, মির্জ্জা ছাহেব ঊই প্রতিশ্রুত মছিহ নহেন।

          মির্জ্জা ছাহেব এজালাতোল আওহামের ১৪৬ পঊায় লিখিয়াছেন ;-

مین نے یہ دعوی ھرگز نھین کیا کہ مین مسیح بن مریم ھون- جو شخص یہ الزام میرے پر لگاوے وہ سراسر مفتری اور کذاب ھے بلکہ میری طرف سے عرصہ سات اتھہ سال سے برابر یھی شائع ھو رھا ھے کہ مین مثیل مسیح ھون بعنے حضرت عیسی علیہ السلام کے بعض روحانی خواص طبع اور عادات او اخلاق و غیرہ کے خدائے تعالی نے میری فطرت مین بھی رگیھے ھین-

আমি কখনও এই দাবি করি নাই ঊ, আমি মছিহ ঊনে মরয়েম, ঊ ব্যক্তি এই অপবাদ আমার উপর প্রয়োগ করে, ঊ ব্যক্তি নিতান্ত অপবাদক ও মিথ্যাবাদী, বরং আমার পক্ষ হইতে ৭/৮ বৎসর যাবৎ সর্ব্বদা ইহাই প্রচারিত হইতেছে ঊ, আমি মছিহের তুল্য (মছিল), অর্থাৎ ঊাদাতায়ালা আমার প্রকঊতর মধ্যে হজরত ইছা আলাইহিস সালাম-এর ঊজাজের কতক রুহানি খাছিএত (আত্মিক গুণ), স্বভাব, চরিত্র স্থাপন করিয়াছেন।

উপরোক্ত বিবরণে বুঝা যায় ঊ, মির্জ্জা ছাহেব প্রতিশ্রুত মছিহ নহেন, বরং তিনি মছিহের তুল্য হওয়ার দাবি করিয়াছেন, কিন্তু ঊার-আন ও হাদিছে মছিহ আগমনের কথা আছে, তাঁহার তুল্য আসার আর একটী কথা নাই।

আরও তিনি এজালাতোল আওহামের ১৪৯, ১৫০ পঊায় লিখিয়াছেন

 

مین نے صرف مثیل مسیح ھونے کا دعوی کیا ھے اور میرا یہ بھی دعوی نھین کہ صرف مثیل ھونا میرے پرھی ختم ھوگیا ھے بلکہ میرے  نزدیک ممکن ھے کہ ایندہ زمانون مین میرے جیسے اور دس ھزار بھی مثیل مسیح اجائین-

আমি ঊবল মছিহের তুল্য হওয়ার দাবি করিয়াছি, আর আমার ইহাও দাবি নহে ঊ, ঊবল মছিলে মছিহ হওয়া আমার উপর ঊষ হইয়া গিয়াছে, বরং আমার মতে ইহা সম্ভব ঊ, ভবিস্যতে আমার ন্যায় দশ্ সহস্র মছিলে-মছিহ আগমন করেন।” (অসমাপ্ত)


(৩৯)

(২)

ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক পাকিস্তান সুপ্রীম কোর্ট কর্তৃক কাদিয়ানীদের- কাফিঘোষণা!

(পূর্ব প্রকাশিতের পর)

অনুবাদক - আলহাজ্ব মুহম্মদ হাবিবুল হক

         

সুতরাং তিনি, যিনি কার্য্যতঃ মুসা আলাইহিস সালাম-এর সাদঊ্য ছিলেন। তিনি মুসা আলাইহিস সালাম-এর ঊয়ে উচ্চ মর্যাদা সম্পনঊছিলেন এবং আরো অঙ্গিকার করে ঊ, ঊ (মির্জা সাহেব) দ্বিতীয় মসীহ (যীঊ, ঊমন ঊরীর পুত্র যীঊএসেছিলেন মুসা আলাইহিস সালাম-এর ১৪০০ বৎসর পর। আল্লাহ পাক অনুরূপ সময়ের ব্যবধানে দ্বিতীয় মসীহকে অবতরন করিয়েছেন। (দ্রষ্টব্য, ফাত্হ-ই-ইসলাম যা ছাপা হয়েছে, রূহান-ই-খাজাইন, ভলিউম-৩ পঊা-৮) মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে প্রথম কথোপথনকারীশব্দগুলির পরের কথাগুলি অভিপ্রায় বিশিঊ কিন্তু মির্জা সাহেবের মতবাদের সারমর্ম হিসাবে উল্লেখ করেছি। ঊমন মির্জা সাহেব অন্যান্য স্থানে এবং গ্রঊব্যাখ্যা করেছে।         

মির্জা সাহেব লিখেছে, “মসীহ, যার আসার কথা ছিল, তিনি এসেছেন” (পঊা-৯)

এটা ঊান নূতন কথা নয় ঊ, মির্জা সাহেবকেই মসীহ হিসাবে ঊ্ররণ করা হয়েছে। বরাহিন-ই-আহমদীয়াতে এটা উল্লেখ করা হয়েছে ঊ, মসীহের একটি বিশেষ স্বভাবের সাথে তার মিল ছিল বিধায় তাকেই মসীহ হিসাবে ঊ্ররণ করা হয়েছে। এই সারমর্ম পরবর্তী সময়ে ঊ ব্যাখ্যায় রূপান্তরিত হয়েছিল, তাহলো- যীঊইুÍকাল করে এবং ঊ স্বাভাবিক মৃত্যু বরণ করে এবং ঊ কাশ্মীরে মৃত্যু বরন করে। এবং এবার তার রূহ্ যখন জান্নাতে চলে ঊছে, তা আর ফিরে আসবে না পৃথিবীতে।

ঊ (মির্জা সাহেব) তাউজিহুল মারাম গ্রুঊ(১৮৯১ সালে প্রকাশিত) (রূহান-ই-খাজাইন, ভলিউম-৩, পঊা-৬০ দ্রষ্টব্য) আরো বলেছে ঊ, ওহীর দরজা সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়নি এবং ওহী আসাও বন্ধ করা হয়নি। পয়গম্বরত্বের এবং ভবিষ্যদ্বাণীর দরজা আংশিক ঊালা রয়েছে এবং সব সময়ই থাকবে। কিন্তু ইহা পরিপূর্ণ পয়গম্বরত্ব নয়। ইহা আংশিক পয়গম্বরত্ব মাত্র, যা মুহাঊসিয়াত নামে পরিচিত। যা অর্জিত হয়, নিখূঁত ব্যক্তিকে অনুসরণ করে। মুহাঊসের ব্যাখ্যা অন্যত্র উল্লেখ করা হয়েছে- যিনি মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে ঊাগাযোগে আছেন। বরাহিন-ই-আহমদীয়া গ্রুঊমুহাঊসকে ঊ রাসূলের মত বলে উল্লেখ করেছে। কিন্তু ঊ এখানে বলছে, আংশিক পয়গম্বর। বরাহিন-ই-আহমদীয়া গ্রুঊঠিক ঊমন উল্লেখ করা হয়েছে- তার (মুহাঊস) মর্যাদা পয়গম্বরের নিকটবর্তী (পঊা-৪৬)। ঊ উদাহরণ স্বরূপ উল্লেখ করেছে, ইসা আলাইহিস সালাম-এর মাতা মরিয়ম আলাইহিস সালাম, ঈসা আলাইহিস সালাম তাঁর বাণী প্রচারের জন্য ঊ বারজন শিষ্যকে ঊছে নিয়েছিলেন, তাদের ঊকোন একজন খিজির আলাইহিস সালাম, তাঁদের মধ্যে ঊউই পয়গম্বর ছিলেন না। ১৮৯০ সাল পর্যন্ত ঊ (মির্জা সাহেব) নিজেকে পয়গম্বরের মর্যাদায় প্রতিষ্ঠা করার ঊষ্টা করেছে। কিন্তু এরপর উপরের আলোচনানুযায়ী পরিবর্তন করে।

          “এখন মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট ঊকে ওহী আসা আর সম্ভব নয়, যা ঊারআন শরীফের ঊান আদেশ বা নিষেধ বাতিল বা পরিবর্তন করতে পারে।এই কথাগুলিকে তার নিজের বিশ্বাসে নির্দিঊরূপ দানে বর্ণনা করে এবং শরীয়ত উপেক্ষা করে ঊ ঊাষণা করে, রাসূল আগমনের দরজা ঊালা রয়েছে। ঊ ঊউ এর বিপরীত বিশ্বাসী হবে, মুসলিম উম্মাহ্ ঊকে খারিজ হবে এবং ঊ একজন অবিশ্বাসী ও কাফের হবে (ইজালা-ই-আওহাম, পঊা-১৩৮)।

          ১৮৯১ সাল পর্যন্ত ভারত উপমহাদেশের মুসলমানের কাছে যখনই মির্জা সাহেবের ভবিস্যদ্বাণী অসত্য প্রতিয়মান হতো, তখনই তাকে নিয়ে ঠাট্টা-মস্কারা করতো। ইতিমধ্যে মুহম্মদী ঊগমের দীর্ঘ কাহিনীতে ঊখা ঊছে, তার নিজ পরিবারের ঊাকেরা তাকে ভন্ড, মুসাইলাম এবং গুন প্রকাশক বিশেষণ দ্বারা আখ্যায়িত করেছেন। নিশ্চয়ই তারা তাকে ঘনিষ্টভাবে জানতো।

          কিন্তু মসীহ এবং মাহ্দী আলাইহিস সালাম দাবীই মুসলমানদের অস্থির করে ঊয়। সমালোচনার প্লাবন/জোয়ার, অসুÍাষ এবং ঊাধ প্রকাশিত হয়। মুসলমানদের শান্ত করার লঊ্য সুস্পষ্টরূপে মির্জা সাহেব খুব দ্রুত তার পদঊপ কিছুটা পশ্চাতে নিয়েছিল। কিন্তু এই বিষয়টি আলোচনার পূর্বে নবী (পয়গম্বর), রাসূল বা মূরসাল (সংবাদ বাহক) শব্দগুলি ব্যাখ্যা করা প্রয়োজন।

( অসমাপ্ত )

***********************************************************************************************************

খতমে নুবুওওয়াত প্রচার ঊন্দ্র

খতমে নুবুওওয়াত

অস্বীকারকারীরা কাফির

( ইসলামী শরীয়তের হুকুম ঊাতাবেক

যারা মুসলমান ঊকে খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভূক্ত হয়

ঊমন- কাদিয়ানী, বাহাই  ইত্যাদি) তাদের তওবার জন্য নির্ধারিত সময়

৩দিন। এরপর তওবা না করলে,

তাদের শাস্তি মৃত্যুদন্ড )

(১)

কাদিয়ানী রদ!

(তৃতীয় ভাগ)

                   বাহরুল উলুম, ফখরুল ঊাক্বাহা, রইছুল ঊাহাঊসীন, তাজুল ঊাফাসসেরীন, হাফেজে পবিত্র হাদীছ শরীফ, মুফতীয়ে আজম, পীরে কামেল, ঊার্শেদে ঊাকাঊ§ল হযরত মাওলানা আল্লামা শাহ্ সূফী মুহম্মদ রুহুল আমিন রহমতুল্লাহি আলাইহি কর্তৃক প্রণীত কাদিয়ানি রদকিতাবখানা (৬ঊখঊ সমাপ্ত)। আমরা মাসিক আল বাইয়্যিনাত পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করছি। যাতে কাদিয়ানীদের সম্পর্কে সঠিক ধারণাসহ সমস্ত বাতিল ঊরকা ঊকে আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের অনুসারীদের ঈমান আকীদার হিফাযত হয়। মহান আল্লাহ পাক আমাদের প্রচেষ্টার কামিয়াবী দান করুন (আমিন)। ওনার কিতাব ঊকে হুবঊউদ্ধৃত করা হলো, তবে তখনকার ভাষার সাথে বর্তমানে প্রচলিত ভাষার কিছুটা পার্থক্য রয়েছে।

(পূর্ব প্রকাশিতের পর)

মির্জ্জার মছিহ্ দাবী খন্ডন।

         

          পাঠক, মির্জ্জা ছাহেব প্রতিশ্রুত মছিহের; অর্থ মছিলে-মছিহ গ্রহণ করিয়াছেন, যদি তাঁহার এই অর্থ সত্য হইত, তবে তিনি দশ হাজার মছিলে মছিহ হওয়ার সম্ভাবনা স্বীকার করিতেন না, ঊননা হাদিছে ঊবল একজন মছিহ আসার কথা আছে।

          যদি ঊান মির্জ্জায়ি হাদিছে স্পষ্টভাবে ঊখাইয়া দিতে পারেন ঊ, দশ সহস্র মছিলে-মছিহ বা একজন মছিলে-মছিহ আসিবেন, তবে ১০০/- টাকা পুরস্কার পাইবেন।

          মির্জ্জা ছাহেব দাবি করিয়াছে ঊ, ঊহ কতক স্বভাব ও চরিঊ কাহারও তুল্য হইলে, প্রথম ব্যক্তি দ্বিতীয় ব্যক্তির মাছিল (তুল্য) হইবে। ইহা কতদূর সত্য, আলোচনা করা যাউক।

           ঊশকাত, ৫৬৬ পঊা ;-

عن انس قال لم يكن احد اشبه بالنبيى صلى الله عليه وسلم من الحسن بن على و قال فى الحسين ايضا كان اشبههم برسول الله عليه وسلم رواه البخاري.

 

          “আনাছ বলিয়াছেন, হাছান ঊনে আলি অপেক্ষা রাছুলুল্লাহ্ (ছাঃ)-এর সমধিক ঊৗসাদঊ্য সম্পনঊঅন্য ঊহই ছিলনা। আরও তিনি ঊাছাএনের সম্বঊ বলিয়াছেন, তিনি রাছুলুল্লাহ্ (ছাঃ)-এর সহিত সমধিক ঊৗসাদঊ্য ছিলেন।

          ঊশকাত, ৫৭৪ পঊা ;-

عن حذيفة قال ان اشبه الناس دلا وسمتا وهديا برسول الله صلى الله عليه وسلم لابن ام عبد.

ঊাজায়ফা বলিয়াছেন, নিশ্চয় ঊাকদিগের মধ্যে এবনো-ওঊ§-আঊ(আবদুল্লাহ্ ঊনে-মছউদ) তরিকা, চরিত্র ও রীতিতে রাছুলুল্লাহ্ (ছাঃ)-এর সহিত ঊৗসাদঊ্য সম্পনঊছিলেন।

          ছহিহ ঊাখারি, ১/৫২৬ পঊা ;-

قال له النبيى صلى الله عليه وسلم اشبهت خلقى وخلقى.

নবি (ছাঃ) জাফর ঊনে আবি তালেবকে বলিয়াছিলেন, তুমি রূপে এবং চরিঊ আমার ঊৗসাদঊ্য সম্পনঊহইয়াছ।

          তফছিরে ঊামাল ;-

قال ان مثلك يا ابابكر مثل ابراهيم قال فمن تبعنى فائه منى ومن عصائي فائك غفور رحيم ومثل عيشى قال ان تعذبهم فائهم عبادك وان تغفر لهم فائك انت العزيز الحكيم ومثلك يا عمر مثل نوح قال رب لا تذر على الارض من الكافرين ديارا ومثلك مثل موسى قال ربنا اطمس على اموالهم واشدد عاى قلوبهم.

হজরত বলিয়াছিলেন, ঊ আবু বকর, ঊামার অবস্থা এবরাহিমের ন্যায়, তিনি বলিয়াছিলেন, ঊ ব্যক্তি আমার অনুসরণ করে, ঊ ব্যক্তি আমা হইতে, আর ঊ ব্যক্তি আমার অবাধ্যতা করে, নিশ্চয় তুমি ক্ষমাশীল দয়ালু। আরও ঊামার অবস্থা ইছার ন্যায়, তিনি বলিয়াছেন, যদি তুমি তাহাদিগের উপর শাস্তি কর, তবে নিশ্চয় তাহারা ঊামার বান্দা। আর যদি তুমি তাহাদিগকে মাফ কর, তবে নিশ্চয় তুমি পরাক্রান্ত ঊকমত বিশিষ্ট। ঊ ওমার, ঊামার অবস্থা নুহের তুল্য, তিনি বলিয়াছিলেন, ঊ আমার প্রতিপালক, তুমি পৃথিবীতে কাফেরদিগের মধ্যে ঊান জীবিতকে ত্যাগ করিও না।

          আরও ঊামার অবস্থা মুছার তুল্য, তিনি বলিয়াছিলেন, ঊ আমাদের প্রতিপালক, তুমি তাহাদের অর্থ-সম্পত্তিগুলিকে ধ্বংস কর এবং তাহাদের ঊয়ে কাঠিন্য আনয়ন কর।

          হজরত আবু বকর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু নিজেকে মছিলে-এবরাহিম ও মছিলে-ইছা বলিয়া দাবি করেন নাই।

          এইরূপ হজরত ওমার রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু নিজেকে মছিলে-নূহ ও মছিলে-মুছা বলিয়া প্রকাশ করেন নাই।

          ঊশকাত, ৫৬৫ পঊা ;-

 

عن على قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم فيك مثل من عيسى ابغضته اليهود حتى بهتوا امه واحبته النصاري حتى انزله بالمنزلة التيى ليست له ثم قال يهلك فيى رجلان محب مفرط يقر ظنى بما ليس فى ومنض يحمله شنانى على ان يبهتنيى رواه احمد.

          “(হজরত) আলি রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হইতে ঊওয়াএত করা হইয়াছে, (জনাব) রাছুলুল্লাহ্ (ছাঃ) বলিয়াছেন, ঊামার মধ্যে (হজরত) ইছা আলাইহিস সালাম-এর ঊৗসাদঊ্য আছে, য়িহুদীরা তাঁহার সহিত বিঊষভাব ঊাষণ করিল, এমন কি তাঁহার মাতার উপর (ব্যভিচারের) অপবাদ প্রয়োগ করিল। খ্রীষ্টানেরা তাঁহাকে ভালবাসিল, এমন কি তাঁহাকে এরূপ পদে অভিষিক্ত করিল -যাহা তাহার পঊ (শোভনীয়) নহে।

          তৎপরে তিনি বলিয়াছেন, আমার জন্য দুই ব্যক্তি বিনঊহইবে- সীমা অতিক্রমকারী ঊ্রমিক একজন -সে আমার এরূপ প্রশংসা করে, যাহা আমার মধ্যে নাই। দ্বিতীয় বিঊষকারী ব্যক্তি, ঊ আমার সহিত শত্রুতা তাহাকে আমার উপর মিথ্যা অপবাদ প্রয়োগ করিতে উঊজিত করিয়াছে।

          যদিও হজরত ইছার অবস্থার সহিত হজরত আলির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু অবস্থার ঊৗসাদঊ্য আছে, কিন্তু হজরত আলি কখনও নিজেকে মছিলে-ইছা বলিয়া দাবি করেন নাই।

          ঊশকাত, ৫৭৯ পঊা ;-

قال رسول الله صلى الله عليه وسلم ما اظلت الخضراء ولا اقلت الغبراء من ذى لهجة اصدق ولا اوفيى من ابيى ذرشبه عيسى بن مريم يعنيى فى الزهد رواه الترمذي.

রাছূল (ছাঃ) বলিয়াছেন, সবুজ আছমান ছায়া প্রদান করেন নাই, এরূপ রসনাধারির উপর এবং ধুলি মিশ্রিত ভূমি (এরূপ বাক্শক্তি সম্পন্নকে) বহন করেন নাই- ঊ আবু জার্র অপেক্ষা সমধিক সত্যবাদী ও প্রতিশ্রুতি রক্ষাকারী হয়, তিনি ঊরাগ্যে ইছা ঊনে মরয়েমের ঊৗসাদঊ্য সম্পনঊছিলেন।

          হজরত আবু জার্র কখনও নিজেকে হজরত ইছার মছিল হওয়ার দাবি করেন নাই।

          ঊশকাত, ৫৩০ পঊা ;-

واذا عيسي قائم يصلى اقرب الناس به شبها عروة بن مشعود رواه مسلم.

“(হজরত বলিয়াছেন), হঠাৎ ইছা আলাইহিস সালাম উনাকে দাঁড়াইয়া নামাজ পড়িতে ঊখিলাম, ওরওয়া ঊনে মছউদ ঊাকদিগের মধ্যে তাহার সহিত সমধিক ঊৗসাদঊ্য সম্পন্ন।” ঊাছলেম ইহা ঊওয়াএত করিয়াছেন।

          ইনি কখন নিজেকে মছিলে মছিহ বলিয়া দাবি করেন নাই।

          হাদিছ শরিফে আছে ;-

تخلقوا با خلاق الله.

          “ঊামার আল্লাহতায়ালার গুণাবলীর সহিত গুণাম্বিত হও।

          এই হাদিছের দঊাুÍ মির্জ্জা ছাহেব ঊান দিবস বলিয়া ঊলিবেন ঊ, আমার মধ্যে ঊাদার কতকগুলি গুণ আছে, কাজেই আমি মছিলে-খোদা। (নাউজোঃ)

          মির্জ্জা ছাহেব এজালাতোল আওহামের ১৭৩ পঊায় ছুরা ফাতেহার আয়তের অর্থ বিকঊ করিয়া লিখিয়াছেন ;-

 

اھدنا الصراط المستقیم صراط الذین انمت علیھم یعنی ای میرے خداوند رحمن و رحیم ھمین ایسی ھدایت بخش کہ ھم ادم صفی اللہ کے مثیل ھو جانین شیث نبی اللہ کے مثیل بنجائین جضرت نوح علیہ السلام ادم ثانی  کے مثیل ھوجائین حضرت ابراھیم خلیل اللہ کے مثیل ھو جائین کلیم اللہ کے مثیل ھو جائین عیسی روح اللہ کے مثیل ھجائین اور جناب احمد مجتبی محمد مصطفی حبیب اللہ  کے مثیل ھو جائین اور دنیا کے ھر ایک صدیق و شھید کے مثیل ھو جائین-

অর্থাৎ ঊ আমার ঊাদাওয়া¿দ রহমান, রহিম, আমাদিগকে এরূপ ঊদাএত প্রদান কর ঊ, আমরা আদম ছফিউল্লাহ্র মছিল (তুল্য) হইয়া যাই, শিছ নবিউল্লাহ্র তুল্য হইয়া যাই, হজরত নূহ আদম ছানির তুল্য হইয়া যাই, এবরাহিম খলিলুল্লাহ্র তুল্য হইয়া যাই, মুছা কলিমুল্লাহ্র তুল্য হইয়া যাই, ইছা রুহোল্লার তুল্য হইয়া যাই, জনাব আহমদ ঊাজতবা ঊাহাম্মদ ঊাস্তফা হবিবুল্লাহ্র তুল্য হইয়া যাই, দুনইয়ার সমস্ত ছিদ্দিক ও শহিদের তুল্য হইয়া যাই।

আমাদের উত্তর ।

          ঊারআনের

اهدنا الصراط المستقيم صراط الذين انعمت عليهم.

এই আয়তের অনুবাদ ঊুন ;-

          “(হে ঊাদা) তুমি আমাদিগকে সরল পথ-উক্ত ঊাকদের পথ যাহাদের উপর তুমি ঊয়ামত প্রদান করিয়াছ, প্রদর্শন কর।

          আয়তের মূল মর্ম এই ঊ, ঊ ঊাদা, তুমি আমাদিগকে ঊয়ামত প্রাপ্ত নবি, শহিদ, ছিদ্দিক ও ঊককারদিগের সরল পথ ঊখাও কিম্বা উহাতে স্থির-প্রতিজ্ঞ রাখ।

          দুন্ইয়ার ঊান তফছিরে উহার এরূপ অর্থ লিখিত নাই ঊ, তুমি আমাদিগকে নবিগণের মছিল কর।

          নবিগণের পথে চলিলে, যদি তাঁহাদের মছিলহওয়া যাইত, তবে ছাহাবা, তাবেয়ি ও তাবা-তাবেয়িগণ নবিগণের মছিল হওয়ার দাবি করেন নাই ঊন? যদি নবিগণের পথে চলিলে, তাঁহাদের মছিল হওয়া সম্ভব হয়, তবে সমস্ত দুন্ইয়ার শরিয়তধারিগণ তাঁহাদের মছিল হইবেন, ইহাতে মির্জ্জা ছাহেবের বিশেষত্ব কি আছে?

          মির্জ্জা ছাহেব ছাহাবা, তাবেয়ি, তাবা-তাবেয়ি ও দুন্ইয়ার সমস্ত এমাম, ঊাজতাহেদ, ঊাহাঊছ ও অলির বিরুদ্ধাচরণ করিয়াছেন, কাজেই তিনি নবি, শহিদ ও ছিদ্দিকগণের পথগামি ছিলেন না, কাজেই তাঁহার নবি, শহিদ ও ছিদ্দিকগণের মছিল হওয়া দূরের কথা, একজন মুসলমান নামে অভিহিত হইতে পারেন কিনা, ইহাতে স¿দহ আছে।

          ইহাতে স্পষ্ট বুঝা যাইতেছে ঊ, মির্জ্জা ছাহেব ছুরা ফাতেহার আয়তের অর্থ বিকঊ করিয়া এলহাদ করিয়াছেন।

 

(২)

ইসলামী শরীয়ত ঊাতাবেক পাকিস্তান সুপ্রীম ঊার্ট কর্তৃক কাদিয়ানীদের- কাফের’ ঊাষণা!

( পূর্ব প্রকাশিতের পর )

অনুবাদক - আল্হাজ্ব মুহম্মদ হাবিবুল হক

         

          পরবর্তী সময়ে মির্জা সাহেবের ঊখায় রাসূল ও নবী আলাইহিস সালামগণের পার্থক্য রাখা হয়নি। কিন্তু যদি ঊউ পার্থক্য জানতে চান, তবে উপরে বর্ণিতভাবেই করতে হবে (উর্দূ পুস্তক দাইরাত-উল-মাআরেফ-ই-ইসলামীয়ার ১০নং ভলিউমের ২৫৩ পঊায় রাসূল শঊর ব্যাখ্যা)। আবূ হাফিয়াছ উমর সম্পাদিত আল আকাইদুল নাসাফেয়া পুস্তকে উল্লেখ করা হয়েছে, রাসূল এবং নবী শব্দার্থের ঊান পার্থক্য ঊই। কিন্তু ঐ পুস্তকেই শরীয়ত প্রণেতাকেই রাসূল হিসাবে প্রকাশ করা হয়েছে (প্রাগুক্ত)।

          ইজালা-ই-আউহাম পুস্তকের ৫৩৪ পঊায় মির্জা সাহেব নবী, রাসূল এবং মুরসাল তিনটি শব্দই ব্যবহার করেছে। মসীহ্ হিসাবে হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম দ্বিতীয়বার আগমনের উল্লেখ অমূলক প্রতিপনঊকরার প্রচেষ্টায় ঊ লিখেছে, “এটি কিভাবে সম্ভব ঊ, ঊষ নবীর পর আবার একজন নবী আসবেন। প্রকঊ নবুওওয়তের শর্ত হলো- হযরত জীব্রাঈল আলাইহিস সালাম তাঁর কাছে ওহী নিয়ে আসবেন। ঊারআন শরীফের ব্যাখ্যানুযায়ী যিনি হযরত জীব্রাঈল আলাইহিস সালাম মারফত আদেশ/নিষেধ এবং ধর্মানুভূতি ঊয়েছেন, তিনিই রাসূল। ওহীর দরজা প্রায় ১৩০০ বৎসর পূর্বে বন্ধ করা হয়েছে, তা কি এখন ঊালা যাবে? (মির্জা সাহেবের মতে ওহী আর আসা কি সম্ভব)। ঊখা যায় ঊ, নবী এবং রাসূল শব্দগুলি অদল-বদল করে ব্যবহার করা হয়েছে এবং স্পষ্টভাবে করা হয়নি।

          ৭৬১ পঊায় বলা হয়েছে, “চতুর্থতঃ ঊষ নবীর পরে ঊান রাসূল আসবেন, ঊারআন শরীফেও একে বিধিসম্মত করেনি। তিনি নতুন ঊান বা পুরাতনই ঊান না ঊন? কারণ হযরত জীব্রাঈল আলাইহিস সালাম মারফত রাসূলগণের নিকট নাযিল করা হতো। ধর্মীয় জ্ঞান যা এখন আর হবেনা এবং রাসূল আসতে পারে কিন্তু ওহী আসবে না।

          ইজালা-ই-আউহাম পুস্তকের ৬১৪নং পঊায় ঊারআন শরীফের ৩৩নং সূরার ৪০নং আয়াত শরীফে উল্লেখ করা হয়েছে, “মুহম্মদ সাল্লাল্লাঊআলাইহি ওয়া সাল্লাম ঊামাদের কারো পিতা নয়, তিনি মহান আল্লাহ পাক, রাসূল সাল্লাল্লাঊআলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং ঊষ নবী (পয়গম্বর আলাইহিস সালামগণের আগমনের ঊষ অর্থাৎ তাঁর পর আর নবী আসবেন না।)

          মির্জা সাহেব আয়াত শরীফের ঊষ অংশ প্রকঊ অর্থ হিসাবেই ব্যাখ্যা করেছে, “কিন্তু ঊ মহান আল্লাহ পাক উনার রাসূল এবং ঊষ নবী।অতঃপর ঊ বলেছে, “এই আয়াত শরীফ পরিস্কার প্রমাণ ঊ, আমাদের নবী (পয়গম্বর) পর আর ঊান রাসূল এই পৃথিবীতে আসবেন না। এও পরিস্কার বুঝায় ঊ, মহান আল্লাহ পাক উনার রাসূল সাল্লাল্লাঊআলাইহি ওয়া সাল্লামও আর পৃথিবীতে আসতে পারেন না। কারণ রাসূলগণ হযরত জীব্রাঈল আলাইহিস সালাম-এর মারফতই ধর্মীয়জ্ঞান ঊয়ে থাকেন।কিন্তু ঊ আরো বলেছে ঊ, “ঊসালত প্রত্যাদেশের সীমা ক্বিয়ামত পর্যন্ত ঊালা আছে।

          এটি বিশেষভাবে লক্ষণীয় ঊ, ঊষ নবী শব্দগুলিতে নবী শ্বদ উল্লেখের পর ঊ বলেছে, “ক্বিয়ামত পর্যন্ত আর ঊান রাসূল আসবেন না (৭১৪ পঊা)। এবং বরাহিন-ই-আহমদীয়া পুন্তকে নিজেকে পবিত্র নবী (ঊঈ.খ.ঔ) এবং তার নিকট ওহী নাযিল ঊষ পর্যায়ে আছে বলে উল্লেখ করে। কিন্তু এখন আবার নিজেকে নবী হিসাবে চূড়ান্ত ঊাষণার একটি উছিলা ঊর করার জন্য ঊাষণা করে ঊ, ওহীর দরজা বন্ধ করা হয়নি।

          ১৮৯১ সালের ২রা অঊাবরে প্রকাশিত এক হ্যান্ডবিলে এবং তাবলীগ-ই-রিছালাতে (ভলিউম ২, পঊা-২০) পূনঃ প্রকাশিত হয়। ঊ বলে, “ইসলামী শরীয়তে যা কিছু অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে, আমি সব বিশ্বাস করি এবং আহ্লে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত যা বিশ্বাস করে, আমিও তা বিশ্বাস করি। ঊারআন শরীফ এবং পবিত্র হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রমাণিত সব কিছুই আমি বিশ্বাস করি এবং আমি মনে করি, পবিত্র ঊষ নবীর (ঊঈ.খ.ঔ) (যিনি খাতাম-উল-মুরসালীন) পরে ঊউ নবী দাবী করলে ঊ ভন্ড, মিথ্যা দাবীদার কাফের। আমি বিশ্বাস করি, নবুওওয়তের জন্য ঊ ওহী তা হযরত আদম আলাইহিস সালাম ঊকে আরম্ভ হয়ে মুহম্মাদুর রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাঊআলাইহি ওয়া সাল্লাম পর্যন্ত ঊষ হয়েছে। এ আলোচনা পূর্বে আলোচিত বিষয় ঊকে ভিন্নতর।

          ১৮৯১ সালের ২৩শে অঊাবর প্রকাশিত অন্য একটি হ্যান্ডবিলে, যা দিল্লী জামীয়া মসজিদে এক সভায় প্রচারিত হয় এবং পূনঃ তাবলীগ-ই-রিসালাত, ভলিউম-২ এর ৪৪নং পঊায় উল্লিখিত হয়। মির্জা সাহেব বলে, “এই সকল বিষয়ে আমার ধর্ম আহ্লে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের মতই। এখন মহান আল্লাহ পাক উনার এই ঘরে অঙ্গীকার করে বলছি ঊ, আমি বিশ্বাস করি, মুহম্মদ সাল্লাল্লাঊআলাইহি ওয়া সাল্লাম ঊষ নবী এবং অস্বীকারকারী ইসলাম ঊকে খারিজ।

          ১৮৯১ সালের ২রা অঊাবর প্রকাশিত প্রথম হ্যান্ডবিলে মির্জা সাহেব বলে ঊ, ঊ মনে করে- পয়গম্বর দাবীকারী একজন ভন্ড বা জাল পয়গম্বর এবং খারেজী।                    (অসমাপ্ত)

আবা-৩৬,৩৭,৩৮,৩৯,৪০

 

0 Comments: