কাদিয়ানি রদ -২১

 


খতমে নুবুওওয়াত প্রচার কেন্দ্র খতমে নুবুওওয়াত  অস্বীকারকারীরা কাফির ( ইসলামী শরীয়তের হুকুম মোতাবেক  যারা মুসলমান থেকে খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভূক্ত হয় (যেমন- কাদিয়ানী, বাহাই  ইত্যাদি) তাদের তওবার জন্য নির্ধারিত সময়  ৩দিন। এরপর তওবা না করলে,  তাদের শাস্তি মৃত্যুদন্ড ) (১) কাদিয়ানী রদ! (  চতুর্থ ভাগ )

 

বাহরুল উলুম, ফখরুল ফোক্বাহা, রইছুল মোহাদ্দেসীন, তাজুল মোফাসসেরীন, হাফেজে হাদীস, মুফতীয়ে আজম, পীরে কামেল, মোর্শেদে মোকাম্মেল হযরত মাওলানা আল্লামা শাহ্ সূফী মুহম্মদ রুহুল আমিন (রঃ) কর্তৃক প্রণীত কাদিয়ানি রদ কিতাবখানা (৬ষ্ঠ খন্ডে সমাপ্ত)। আমরা মাসিক আল বাইয়্যিনাত পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করছি। যাতে কাদিয়ানীদের সম্পর্কে সঠিক ধারণাসহ সমস্ত বাতিল ফেরকা থেকে আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের অনুসারীদের ঈমান আকীদার হিফাযত হয়। আল্লাহ্ পাক আমাদের প্রচেষ্টার কামিয়াবী দান করুন (আমিন)। ওনার কিতাব থেকে হুবহু উদ্ধৃত করা হলো, তবে তখনকার ভাষার সাথে বর্তমানে প্রচলিত ভাষার কিছুটা পার্থক্য রয়েছে।

(১৫) কোরআন ও হাদিছের উপর মির্জ্জা ছাহেবের ইমাম আনার অবস্থা;- মির্জ্জা একজন অপরিচিত লোকের রেওয়াএতে একজন মজজুবের ৩০/৩১ বৎসর পূর্ব্বের কাশর্ব্বের কাশফের কথা এজালাতোল-আওহামের ৩ ৭১ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছে;-

میں قران  کی غلطیاں نکالنے کے ایا ھوں جو تفسیروں کی وجہ سے و اقعہ ھوگئی ھے-

আমি কোরআনের ভ্রমগুলি বাহির করার জন্য আসিয়াছি, যাহা তফছির সমূহের জন্য সংঘটিত হইয়াছে।

আরও সে উক্ত কিতাবের ৩৮৯ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছে;-

قران زمین سے اٹھہ گیا تھا- میں قران کو اسمان پر سے لا یا ھوں-

 

কোরআন জমি হইতে উঠিয়া গিয়াছিল, আমি কোরআনকে আছমান হইতে আনিয়াছি।

১৩ শতাব্দীর অধিক হইতে চলিল, কেহই কোরআন শরিফের ভ্রম প্রমাণ করিতে সক্ষম হইল না, আর মির্জ্জা ছাহেব কোরআনের ভ্রম বাহির করিলেন, ইহা কি ইমানদার লোকের কথা হইতে পারে? কোরআন শরিফের ছুরা হেজরে আছে;-

انا نحن نزلنا الذكر وانا له لحا فظون.

নিশ্চয় আমি কোরআন নাজিল করিয়াছি এবং নিশ্চয়ই আমি উহার রক্ষক।

খোদার এই ওয়াদা অনুসারে কোরআন কেয়ামত অবধি দুনইয়ায় থাকিবে, কাজেই কোরআন আছমানে উঠিয়া যাওয়ার দাবি একেবারে বাতীল। মাওলানা শাহ আবদুল আজিজ ছাহেব তফছিরে-আজিজির ৩০১ পৃষ্ঠায়-

ولا تلبسوالحق باباطل وتكتمون الحق.

এই আয়তের অর্থে লিখিয়াছে;- তোমরা সত্যকে বাতিলের সহিত মিশ্রিত করিও না, অথচ তোমরা সত্য গোপন করিতেছ।

কোরআনের অর্থ নিজের নফছের কামনা অনুসারে গ্রহণ করা, আয়াতের অগ্র-পশ্চাতের খেয়াল না করা এবং সর্ব্বনাম (ضمير) কে করিনার (ভাব লক্ষণের) খেলঅফ অন্যদিকে ফিরান, ইহাই ভ্রান্ত দলেরা করিয়া থাকে।

মির্জ্জা ছাহাবা, তাবেয়ি ও তাবা-তাবেয়ি এবং মহা মহা অলিগণের তফছিরের বিপরীে মনগড়া অর্থ প্রকাশ করিয়া কোরআনের গুপ্ততত্ত্ব নামে অভিহিত করিয়া থাকে। কোরআনের প্রকৃত অর্থ একরূপ, আর সে উহার বিপরীত অর্থ প্রকাশ পূর্ব্বক আত্মগৌরব করিয়া থাকে। উহা কোরআনের অর্থ তহরিফ ব্যতীত  আর কিছুই নহে।

সে এজালাতোল-আওহামের ১০৬ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছে;-

اسی روز کشفی طور پر میں نے دیکھا کہ میرے بھائی ماحب مرحوم مرز اغلام قادر میرے قریب بیٹھکر باواز بلند قران شریف پرھا کہ انا انزلناہ قریبا من القدیان تو میں نے سنکر بھت تعجب کیا کہ کیا قادیان کا نام بھی قران شریف میں لکھا ھو اھے تب انھوں نے کھا کہ یہ دیکھو لکھا ھوا ھے تب جو نظر ذالکر جو دیکھا تو  معلوم ھوا کہ فی الحقیقت قران شریف کے دائیں صفحہ میں شاید قریب نصف کے موتعہ پر یھی الھامی عبارت لکھی ھوئی موجود ھے تب میں نے دل میں  کھا کہ ھان و اقعی طور پر قادیان کا نام قران شریف میں درج ھے-

সেই দিবস কাশফে আমি দেখিলাম যে, আমার ভাই মির্জ্জা গোলাম কাদের মরহুম ছাহেব আমার নিকট বসিয়া উচ্চশব্দে কোরআন শরিফ পড়িতেছেন এবং পড়িতে পড়িতে তিনি এই শব্দগুলি পড়িলেন-

انا انزلناه قريبا من القاديان.

আমি উহা কাদেয়ানের নিকট নাযিল করিয়াছি। আমি উহা শুনিয়া আশ্চর্য্যম্বিত হইলাম যে, কি কাদেয়ান নামটি কোরআন শরীফে লিখিত আছে, তখন সে বলিল, এই দেখ লিখিত আছে। তখন আমি দৃষ্টিপাত করিয়া দেখিলাম, উহাতে জানা গেল যে, প্রকৃতপক্ষে কোরআন শরীফের ডাহিন পৃষ্ঠায় সম্ভবতঃ অর্দ্ধেকের নিকট এই এলহামি শব্দগুলি লিখিত আছে। সেই সময় আমি মনে মনে বলিলাম, হাঁ, প্রকৃত পক্ষে কাদেয়ান নামটা কোরআন শরীফে লিখিত আছে।

পাঠক, মির্জ্জার এলহাম ও কাশফ নাকি কোরআনের তুল্য অকাট্য, কাজেই সে কোরআন শরীফে এই শব্দটা যোগ করার দাবি করিয়া কোরআন তহরিফ করিতে সাধ্য সাধনা করিয়াছিল।

মির্জ্জা বোজর্গ আলিমগণকে অতিরিক্ত গালিগালাজ করিয়াছে, যদি কেহ ইহার প্রতিবাদ করিত, তবে সে ইহার উত্তরে বলিত, কোরআন শরিফে এইরূপ অশ্রাব্যগালিগালাজ আছে, যেন সে নিজের কথাগুলিকে খোদার কোরআন বুঝিয়াছে। এজালাতোল- আওহামের ৮৬/৮৭ পৃষ্ঠার হাশিয়া দ্রষ্টব্য।

আরবাইন ৪ নম্বর, ২৫ পৃষ্ঠা;-

 

مجھے اپنی وحی پر ایسا ھی ایمان ھی حیسا کہ توریت اور  انجیل اور قران کریم پر-

আমার নিজের অহির উপর এইরূপ ইমান আছে, যেরূপ তওরাত, ইঞ্জিল ও কোরআনে-করিমের উপর আছে।

হকিকাতোল-অহি, ২১১ পৃষ্ঠা;-

مین خدا تعالی کی قسم کھاکر کھتا ھوں کہ میں ان الھامات پر اسی طرح ایمان لاتا ھوں جیسا کہ قران شریف طرح میں قران شیف کو یقین اور  قطعی طور پر خدا کا کلام جانتا ھوں اسی طرح اس کلام  کو بھی جو میرے پر نازل ھوتا ھے خدا کا کلام یقین کرتا ھوں-

 

আমি খোদাতায়ালার কছম করিয়া বলিতেছি, আমি এই এলহামগুলির উর এইরূপ ইমান আনিয়া থাকি, যেরূপ কোরআন শরিফ এবং খোদার অন্যান্য কিতাবগুলির উপর (ইমান আনি), যেরূপ আমি কোরআর শরিফকে অকাট্যভাবে খোদার কালাম জানি, সেইরূপ আমার উপর অবতারিত এই কালামকে খোদার কালাম বলিয়া দৃঢ় বিশ্বাস করি।

ইহাতে বুঝা যায় যে, তিনি কোরআনের উপর আস্থা স্থাপন করেন না। মির্জ্জা ছাহেব কোরআনের মত মোশরেকি মত বলিয়া ধৃষ্টতার চরম সীমায় উপস্থিত হইয়াছেন।

কোরআন ছুরা আল-এমরান, ৫ রুকু;-

انى قد جئتكم باية من ربكم انى اخلق لكم من الطين كهيئة الطير فانفخ فيه فيكون طيرا باذن الله.

 

নিশ্চয় আমি তোমাদের নিকট তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ হইতে নিদর্শন আনয়ন করিয়াছি, সত্যই আমি তোমাদের জন্য কর্দ্দম হইতে পরীর আকৃতি প্রস্তুত করিয়া উহাতে ফুৎকার করিয়া থাকি, ইহাতে উহা আল্লাহতায়ালার অনুমতিতে পক্ষী হইয়া যায়।

কোরআনের উক্ত মতের সম্বন্ধে এজালাতোল আওহামের ২০৩ পৃষ্ঠায় লিখিত আছে;-

 

یہ عاتقاد بالکل غما اور فاسد اوزر مشرکانہ ھے کہ مسیح متی کے پرندے بناکر اور ان میں پھونک مارکر انھیں سچ مچ کے جانور بنا دیتا تھا بلکہ صرف عمل الترب تھا جو روح کی قوت سے ترقی پذیر ھوگیا تھا- یہ بھی ممکن ھے کہ مسییح ایسے کام کے لئے اس تالاب کی متی  تھا جص میں روح القدس کی تاثیر رکھی کئی تھی- بھر حال یہ معجرہ صرف ایک کھیل کی قسم سے تھا اور وہ متی در حقیقت ایسی متی تھی جیسے سامری کا کو سالہ-

এইরূপ মত সম্পূর্ণ ভ্রান্তিমূলক, বাতীল ও মোশরেকী যে, মছিহ মৃত্তিকার পক্ষী বানাইয়া এবং উহাতে ফু দিয়া উহাকে প্রকৃত জন্তু বানাইয়া দিতেন, বরং ইহা কেবল মেছমেরিজম ছিল- যাহা আত্মার শক্তিতে উন্নত হইয়ছিল। ইহাও সম্ভব যে, মছিহ এইরূপ কার্য্য করার জন্য উক্ত পুষ্করিণীর মৃত্তিকা আনয়ন করিতেন- যাহাতে জিবরাইলের তাছির স্থাপন করা হইয়াছিল। যাহা হউক, এই মোজেজা কেবল এক প্রকার ক্রীড়া ছিল এবং উক্ত মৃত্তিকা প্রকৃত পক্ষে মৃত্তিকাই ছিল, যেরূপ ছামিরির গো-বৎস।

(অসমাপ্ত)

 

(২)

ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক পাকিস্তান সুপ্রীম কোর্ট কর্তৃক কাদিয়ানীদের- কাফির ঘোষণা!

(পূর্ব প্রকাশিতের পর)

অনুবাদক- আলহাজ্জ মুহম্মদ হাবিবুল হক

হযরত ঈসা (আঃ)-এর মোজেজা সমূহে বিশ্বাস করাকে মির্জা বহু ঈশ্বরবাদী এবং খারেজী হিসাবে নিন্দা করে। (নাঊযুবিল্লাহ) (ইজালা-ই- আউহাম, পৃষ্ঠা-২৯৬) (মির্জা হযরত ঈসা (আঃ)-এর অলৌকিক ক্ষমতার কথা অস্বীকার করে এবং যারা তার (মির্জার) নিকট অলৌকিক ঘটনা দেখানোর দাবী করে সে লিখিতভাবে তাদের নিন্দা করে এবং তাদেরকে অবৈধ সন্তান হিসাবে আখ্যায়িত করে। সেইদিন থেকে ঐ ভদ্রলোকেরা তাকে (মির্জাকে) বর্জন করে (যামিমা আঞ্জাম-ই-আথাম পৃষ্ঠা-৬)।

এরপর সে (মির্জা) একটি ভিন্ন পথ অবলম্বন করে এবং প্রচার করে, হতে পারে আল্লাহ হযরত ঈসা (আঃ)কে মৃত মানুষ জীবন্ত করার এবং খেলনা পাকি উড়ানোর  কৌশলের জ্ঞান দিয়ে ছিলেন (ইজালা-ই-আউহাম, পৃষ্ঠা-৩০২) অথবা তিনি (হযরত ঈসা (আঃ) সম্মোহন বিদ্যা প্রয়োগ করেছিলেন, যা আধ্যাত্মিক সাধনার ফলে উৎকর্ষ লাভ করেছিল (নাঊযুবিল্লাহ) (প্রাগুক্ত পৃষ্ঠা-৩২২)। ঐ সময় ওখানে একটি পুকুর ছিল। যা থেকে কিছু অলৌকিকতা প্রকাশের খবর প্রচার করা হতো। মির্জা আরও বলে যিশু (হযরত ঈসা (আঃ) হয়তো ঐ পুকুরের মাটি দিয়েই পাখি তৈরী করেছিলেন। ছলনা ও ভাওতা ছাড়া তাঁর মধ্যে কিছুই ছিলনা (নাঊযুবিল্লাহ) (যামিমা আঞ্জাম-ই-আথাম, পৃষ্ঠা-৬, মার্জিন ইজালা-ই-আউহাম, পৃষ্ঠা-৩২২)।

মির্জা আরও লিখেছেন, ইহা প্রমাণিত হলো যে, যিশু সম্মোহন বিদ্যায় পারদর্শী ছিলেন। (নাঊযুবিল্লাহ) আল্লাহর নির্দেশেই তিনি পারদর্শীতা অর্জন করেছিলেন (ইজালা-ই-আউহাম, পৃষ্ঠা-৩০৯)। সম্মোহন বিদ্যার প্রতি মির্জার খারাপ ধারণা এবং ঘৃণা না থাকলে সেও (মির্জা) ঐ কৌশর প্রকাশে যিশুর সমান পারদর্শী হতো। (প্রাগুক্ত)

কোরআন শরীফে যিশুর জন্ম সম্বন্ধে যে বর্ণনা উল্লেখ করা হয়েছে, তা তার শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করেনা বলে মির্জা মন্তব্য করে। (নাঊযুবিল্লাহ) হযরত আদম (আঃ) জন্মগ্রহণ করেছেন পিতা-মাতা ছাড়া। বর্ষাকালে হাজার হাজার পোকা নিজে নিজেই জন্মগ্রহণ করে থাকে। পিতা ছাড়া জন্মগ্রহণ বাস্তবে এটাই প্রমাণ করে যে, তিনি ছিলেন কোন অঙ্গহীন (নাঊযুবিল্লাহ) (قوى ) (চশমা-ই-মসীহ, পৃষ্ঠা-১৮)। যিশু (ঈসা (আঃ) বিয়ে করেননি- উল্লেখ করে মির্জার মন্তব্য ছিল খোজারা যে কারণে বিয়েতে অপারগ (নাঊযুবিল্লাহ) (দ্রষ্টব্যঃ মকতবা-ই-আহমদীয়া, ভলিউম-৩, পৃষ্ঠা-২৮)।

মির্জা বলে যে, তাঁর (হযরত ঈসা (আঃ) বংশ পরিচয় ছিল খুবই খারাপ। তাঁর (ঈসা (আঃ) তিন দাদী এবং নানীই ছিলেন ব্যভিচারিনী (নাঊযুবিল্লাহ)। (যামিমা-আঞ্জাম-ই-আথাম, পৃঃ-৭, মার্জিন)।

হযরত ঈসা (আঃ) সম্বন্ধে মির্জা অভিযোগ করে যে, তিনি কটুক্তিপূর্ণ ভাষা ব্যবহারে পটু ছিলেন। মেজাজী ছিলেন এবং মিথ্যা কথা বলতেন। (নাঊযুবিল্লাহ) (প্রাগুক্ত পৃষ্ঠা-৫)

একবার মির্জাকে আফিম খাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছিল। মির্জা মন্তব্য করেছিলো লোকে বলবে, প্রথম মসীহ ছিলেন- মদ্যপ (নাঊযুবিল্লাহ) এবং দ্বিতীয়জন- হলেন আফিম খোর।

আল্লাহ পাক-এর একজন জলিলুল কদর রাসূল (আঃ) সম্পর্কে মির্জার ধৃষ্টতা ও ঘৃণ্য অপবাদের কয়েকটি মাত্র উদ্ধৃতি এখানে আমি উল্লেখ করেছি। মির্জার ঐ সকল উদ্ধৃতি এখানে উল্লেখ করা আমি পরিহার করেছি, যেগুলি সম্পর্কে মির্জা বলেছে যে, ঐগুলি খৃষ্টান মিশনারীদের সাথে বিতর্কিত অবস্থায় আছে। যারা পবিত্র রাসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সম্পর্কে আরও খারাপ ভাষা প্রয়োগ করেছে। (নাঊযুবিল্লাহ) ইহা কোন তর্ককারীর জন্য কোন কুফরী আক্বীদা বিশিষ্ট লোকের জন্য আইনসঙ্গতঃ হতে পারে কিন্তু কোন রাসূল সম্পর্কে মর্যাদাহানীকর উক্তি ইসলামে গ্রহণযোগ্য নয়। (নাউযুবিল্লাহ) ইহা কোন তর্ককারীর জন্য কোন কুফরী আক্বীদা বিশিষ্ট লোকের জন্য আইনসঙ্গতঃ হতে পারে কিন্তু কোন রাসূল সম্পর্কে মর্যাদাহানীকর উক্তি ইসলামে গ্রহণযোগ্য নয়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামগণের সকল বক্তব্য বিশ্বাস করা ঈমানের অঙ্গ। বাইবেলে হযরত নূহ (আঃ) এবং হযরত লুত (আঃ) সম্পর্কে অনেক অবজ্ঞাসূচ উক্তির অবতারণা হতে পারে  হেহেতু উহা বিকৃত) কিন্তু ইসলামী শরীয়ত অনুযায়ী নবী-রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামগণ সকল অপছন্দনীয় কাজ এবং গুণাহ থেকে পবিত্র। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামগণ তাঁর ক্বওমের জন্য পথ প্রদর্শক। যাঁর উদ্দেশ্য হলো- মানুষদের মধ্যে ধর্মীয় অনুভূতি সঞ্চার করা সুতরাং তিনি অবশ্যই একজন সৎ ব্যক্তি।

কোরআন শরীফে মরীয়ম আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর গর্ভধারণ এবং ঈসা আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর জন্মের বর্ণনা মর্যাদাময় উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু মির্জা তুলনা করেছে- বর্ষাকালে যে অসংখ্য কীট-পতঙ্গ জন্মে তার সাথে। (নাঊযুবিল্লাহ) একটি পুকুরের মাটির অলৌকিক গুণ মেনে নিতে মির্জা প্রস্তুত, কিন্তু আল্লাহ পাক-এর রাসূল-এর মোজেজা মেনে নিতে সে অস্বীকার করে। এটা স্মরণ করা যেতে পারে যে, মির্জা তার ঘর সংলগ্ন মসজিদকে বাইত-উল-যিকর নামকরণ করেছিল।

বরাহিন-ই-আহমদীয়ায় মির্জা লিখেছে, এই মসজিদের ফযীলত মক্কার কাবা বা বাইত-উল-হারামর সমতুল্য, কেননা এখানে যে প্রবেশ করবে, সে নিরাপদ বা শান্তিপ্রাপ্ত।

সে ঘোষণা করে যে, এই মসজিদ বাইত-উল-হারাম এর মত। মির্জার পরবর্তী পদক্ষেপ ছিল- কাদিয়ান শহরের উচ্চ মর্যাদার ঘোষণা দেয়া এবং এটাকে মক্কা শহরের সমতুল্য বর্ণনা করা। সে দুররে ছামীন পৃষ্ঠা ৫ তে লিখেছে, ইহাতে অনেক লোক সমাগম হয় সুতরাং ইহা এখন পবিত্র কাবা শরীফের ভূমি।

মির্জা রচিত উপরোক্ত কবিতায় তেমন কোন অর্থ বোধগম্য না হলেও অন্যান্য পারিপার্শ্বিকতা মির্জার ঘোষণা সমূহের তাৎপর্য বহন করে।

আইনা-ই-কামালাত-ই-ইসলা (পৃষ্ঠা-৩৫২) পুস্তিকায় মির্জা উল্লেখ করে যে,  কাদিয়ানের বার্ষিক সভায় সমাগতরা সওয়াব (ثواب ) প্রাপ্তিতে শারীরিক হজ্ব পালনকারীদের ছাড়িয়ে গেছে।

(অসমাপ্ত)

*********************************************************************************

খতমে নুবুওওয়াত প্রচার কেন্দ্র খতমে নুবুওওয়াত  অস্বীকারকারীরা কাফির ( ইসলামী শরীয়তের হুকুম মোতাবেক  যারা মুসলমান থেকে খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভূক্ত হয় (যেমন- কাদিয়ানী, বাহাই  ইত্যাদি) তাদের তওবার জন্য নির্ধারিত সময়  ৩দিন।

এরপর তওবা না করলে,  তাদের শাস্তি মৃত্যুদন্ড ) (১) কাদিয়ানী রদ! (  চতুর্থ ভাগ )

 

বাহরুল উলুম, ফখরুল ফোক্বাহা, রইছুল মোহাদ্দেসীন, তাজুল মোফাসসেরীন, হাফেজে হাদীস, মুফতীয়ে আজম, পীরে কামেল, মোর্শেদে মোকাম্মেল হযরত মাওলানা আল্লামা শাহ্ সূফী মুহম্মদ রুহুল আমিন (রঃ) কর্তৃক প্রণীত কাদিয়ানি রদ কিতাবখানা (৬ষ্ঠ খন্ডে সমাপ্ত)। আমরা মাসিক আল বাইয়্যিনাত পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করছি। যাতে কাদিয়ানীদের সম্পর্কে সঠিক ধারণাসহ সমস্ত বাতিল ফেরকা থেকে আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের অনুসারীদের ঈমান আকীদার হিফাযত হয়। আল্লাহ্ পাক আমাদের প্রচেষ্টার কামিয়াবী দান করুন (আমিন)। ওনার কিতাব থেকে হুবহু উদ্ধৃত করা হলো, তবে তখনকার ভাষার সাথে বর্তমানে প্রচলিত ভাষার কিছুটা পার্থক্য রয়েছে।

 

(পূর্ব প্রকাশিতের পর)

মির্জ্জার আকায়েদ

আরও সে এজালাতোল-আওহামের ১৯৪/১৯৫ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছে-

وہ ২২ سال تک اپنے باپ یوسف نجار کے ساتھہ نجاری کا کام  کرتا رھا- اس پیشہ مین کلون  و غیرہ کا بنانا خوب اتا ھے کچھہ تعجب کی جکہ نھین کہ خدا تعالی نے حضرت مسیح کو عقلی طور پر ایسے طریق پر اطلاع دیدی ھو جو ایک کھلونا کل کو دبانے سے یا کسے پھوذک ما رنے کے طور پر پرواز کرتا ھو-

 

(হজরত) মছিহ ২২ বৎসর পর্যন্ত নিজের পিতা ইউছফ সূত্রধরের সহিত সূত্রধরের কায্য্য করিতেন, এই পেশাতে বিবিধ প্রকার কল প্রস্তুত করার  খুব সুযোগ ঘটিয়া থাকে। ইহা কিছু আশ্চর্য্য নহে যে, খোদাতায়ালা হযরত মছিহকে এরূপ বুদ্ধি সঙ্গত নিয়ম অবগত করাইয়াছিলেন যে, কল দাবাইলে কিম্বা ফুৎকার করিলে, মৃত্হিতকার পক্ষী উড়িয়া যাইত।

পাঠক, কুরআন শরীফে হযরত ইছা আলাইহিস সালাম উনার যে খেদার আদেশে মৃত্তিকার পক্ষীকে জীবিত করিয়া উড়াইয়া দিবার মুজেজার  কথা আছে মির্জ্জা ছাহেব উহা অস্বীকার করিয়াছেন। তিনি ইহা একবার মেছমিরিজম, দ্বিতীয় বার পুরস্করণীর মৃত্তিকার ক্রিয়া- যাহাতে জিবরাইল ফেরেশতার তাছির আছে, তৃতীয়বার কলের ক্রিয়া বলিয়া উক্ত মুজেজা উড়াইয়া দিবার চেষ্টা করিয়াছেন, বরং উহা শেরকি আকিদা বলিয়া প্রকাশ করিয়াছেন,  ইহাতে বুঝা যায় যে, তিনি কুরআনের উপর কিছুতেই ইমান আনিতেন না।

সে এজলাতোল-আওহামের ৩০৯ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছেন;-

 

اگر یہ عاجز اس عمل (مسمریزم) کو مکروہ اور قابل نفرت نہ سمجھتا تو خدا تعالی  کے فضل و توفیق سے امید قوی رکھتا تھا کہ کا عجوویہ نمائیون مین حضرت ابن مریم  سے کم نرھتا-

 

যদি এই অক্ষম মেছমেরিজমকে দুষিত ও ঘৃনাহ না জানিত, তবে খোদার ফজল ও ক্ষমতার প্রবল আশা রাখিত যে, বিস্ময়কর বিষয় প্রদর্শনে হযরত এবনে মরয়েম অপেক্ষ কম থাকিত না।

মির্জ্জা ছাহেব এস্থলে হজরত ইছা (আঃ) এর মোজেজাকে কুৎসিত ও ঘৃণিত কার্য্য বলিয়া প্রকাশ করিয়াছেন। এমাম রাজি তছছিরে-কবিরে জাদুর কয়েক প্রকারের কথা উল্লেখ করিয়াছেন, একদল লোক ধেয়ান-ধারণা ও আত্মিক শক্তি বৃদ্ধি করিতে করিতে উহা এরূপ প্রবল হইয়া পড়ে যে, তদ্বারা আশ্চর্য্য ঘটনাবলী প্রকাশিত হইয়া থাকে। ইহা এক প্রকার জাদু।

দ্বিতীয় ভৌতিক আত্মগুলির সাহায্যে আশ্চর্য্যজনক কার্য্য সকল প্রকাশিত হইয়া থাকে। ইহা অসংখ্য প্রমাণে প্রমাণিত হইয়াছে যে, জাদুকরেরা আমলি তদবিরগুলির দ্বারা ভৌতিক আত্মাগুলির উপর এরূপ প্রভাব বিস্তার করিয়া থাকে যে, উহারা অনুগত ও বাধ্য হইয়া পড়ে।

মূলকথা, জাদুতে জাদুকরদের আত্মিক প্রভাব থাকে এবং উহাতে ভৌতিক আত্মগুলি অনুগত হইয়া পড়ে, ইহাকে মেছমেরিজম বলা হয়। মেছমেরিজমের কিতাবগুলিতে এইরূপ নিয়ম লিখিত আছে যে, উহাতে অভিপ্রেত ব্যক্তির আত্ম অনুগত হইয়া যায় এবং অস্বাভাবিক ও অপূর্ব্ব কার্য্য করিয়া দেখায়।

ইহাতে বুঝা যায় যে, মেছমেরিজম এক প্রকার জাদু। মেছমার সাহেব উহাতে উন্নতি করিয়া এক স্বতন্ত জাদু শাস্ত্রে পরিণত করিয়াছেন। এই মেছমেরিজম শিক্ষা লাভে করায়ত্ত্ব হয়, এই হেতু ইহা অলৌকিক কার্য্য বলিয়া গণ্য হইতে পারে না, মোজেজা হওয়া ত দূরের কথা, কেননা খোদাতায়ালা যে কার্য্যটী নিজের অসীম ক্ষমতা বলে কোন নবী কর্তৃক এই উদ্দেশ্যে প্রকাশ করেন যে, অন্য কোন লোক উক্ত কার্য্য করিতে সক্ষম না হয়। মেছমার সাহেবের পূর্ব্বে মেছমিরিজম আবিষ্কৃত হয় নাই, যদি মির্জ্জা ছাহেব ইতিহাস জানিতেন, তবে কখনও হজরত ইহা (আঃ) এর কার্য্যকে মেছমেরিজম বলিয়া প্রকাশ করিতেন না।

মির্জ্জা ছাহেব এস্থলে যেরূপ হজরত ইছা পয়গম্বরের মোজেজাকে জাদু বলিয়া এবং তাঁহাকে জাদুকর বলিয়া প্রকাশ করিয়াছেন, সেইরূপ অন্যান্য নবীকে জাদুগির বলিয়া প্রকাশ করিয়াছেন। (অসমাপ্ত)

 

(২)

ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক পাকিস্তান সুপ্রীম কোর্ট কর্তৃক কাদিয়ীনীদের- কাফের ঘোষণা!

(প্্ূর্ব প্রকাশিতের পর)

অনুবাদক- আলহাজ্ব মুহম্মদ হাবিবুল হক

হযরত সাহেবজাদা আব্দুল লতিফকে মির্জা মক্কায় হজ্ব পালনে যাওয়া থেকে বিরত রাখে। তিনি (আব্দুল লতিফ) আহমদীয়তে শিক্ষা গ্রহণে কাদিয়ানে থাকেন (কাদিয়ানী মাযহাব পৃ:-৩৬৩)।

মির্জা বশির উদ্দীন মাহমুদ আহমদ কাদিয়ান সফর করে হজ্ব তুল্য হিসাবে (প্রাগুক্ত ৩৬২ পৃষ্ঠা)।

মির্জা তার মসজিদের নাম রেখেছিল- মসজিদ-উল-আকসা (দ্রষ্টব্য কোরআন ১৭ঃ১, তবলীগ-ই-রিসালাত,  ভলিউম-৯, পৃষ্ঠা-৩৭)। হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, মসীহ (আঃ) দামাস্কাসের মসজিদের পূর্ব মিনারায় আসমান থেকে অবতরণ করবেন। উক্ত বর্ণনার প্রেক্ষিতে মির্জা কাদিয়ানে তার মসজিদের পূর্ব পাশে মিনারা নির্মাণ করে। আর একটি বর্ণনা রয়েছে, মসীহ (আঃ) মসজিদ-উল-আকসাতে (বাইতুল মুকাদ্দাস) অবতরন করবেন। এগুলি হলো যুক্তিবৃত্তির মাধ্যমে সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ার প্যারোডি। মির্জা প্রমাণ করতে চেয়েছে, উপরোল্লিখিত মিনারা মসজিদ-ইল-আকসার সাথেই সংশ্লিষ্ট। মির্জা আরো বলে, হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ভবিষ্যদ্বানী কার্যকর হওয়ার জন্য কাদিয়ান মসজিদেই মিনার নির্মাণ করতে হবে (প্রাগুক্ত ৩৮ পৃষ্ঠা)।

মির্জা কোরআন ১৭ঃ১ আয়াত শরীফের উল্লেখ করে। কোরআন ১৭ঃ১-

سبحان الذى اسرى بعيده ليلامن المسجد الحرام الى المسجد الاقصا الذى باركنا حوله لنريه من ايتنا انه هوالسميع البصير.

অর্থ:- পরম পবিত্র ও মহিমাময় সত্তা তিনি। যিনি স্বীয় বান্দাকে রাত্রি বেলায় ভ্রমণ করিয়েছিলেন মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা পর্যন্ত। যার চারদিকে আমি পর্যাপ্ত বরকত দান করেছি। যাতে আমি তাঁকে আমার কুদরতের কিছু নিদর্শন দেখিয়ে দেই। নিশ্চয়ই তিনি পরম শ্রবণকারী ও দেখনে ওয়ালা।

ইহা হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মিরাজ শরীফ সম্পর্কে। মির্জা উহার তাফসীরে বর্ণনা করে, হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মিরাজের রাত্রে মক্কার কাবা শরীফ থেকে কাদিয়ানের মসজিদে-ই-আকসায় ভ্রমণ করেন। (প্রাগুক্ত পৃষ্ঠা-৪০-৪১) (নাঊযুবিল্লাহ মিন জালিক)

১৯৮৪ সালের শরীয়ত আবেদন নম্বর ২/এল-এর আবেদনকারী ক্যাপ্টেন আব্দুল ওয়াজেদ আহমদীয়াদের লাহোরী দলের একজন সদস্য ছিল। তার আবেদনের যুক্তিসমূহ, অন্য আবেদনকারী মিঃ মুজিবর রহমানের যুক্তিসমূহেরই পুনরাবৃত্তি ছিল। তবে তার আবেদনে লাহোরী এবং কাদীয়ানের আহমদীয়া দলের সদস্যদের বিশ্বাসের পার্থক্যের একটি বিষয় উত্থাপিত হয়। তিনি বলেন, লাহোরের কাদিয়ানী সদস্যরা বিশ্বাস করে না যে, মির্জা সাহেব নবী এবং তিনি আরো বলেন, মির্জা কখনো দাবী করেনি যে, সে (মির্জা) নবী। তিনি বলেন, লাহোরের কাদিয়ানী সদস্যরা বিশ্বাস করে যে, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দ্বারাই নুবুওওয়াত শেষ করা হয়েছে। অর্থাৎ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পর আর কোন নবী আসবেন না। তিনি বলেন, তারা মির্জাকে মনে করে প্রতিশ্রুত মেহদী, প্রতিশ্রুত সংস্কারক মসীহ, মুহাদ্দীস কিছু একটা, তবে নবী নয়। এ প্রসঙ্গে আস্থা প্রকাশে এবং মির্জা যে নবী হিসাবে ঘোষণার কোন পদক্ষেপই নেয়নি, প্রমাণ করতে তিনি (ক্যাপ্টেন ওয়াজেদ) কয়েকটি পুস্তকের নাম উল্লেখ করে। যেমন- ইজালা-ই-আউহাম,  নিশান-ই-আসমানী, আইনা-ই-কামালত-ই-ইসলাম, হামামত-উল-বুশরা, আইয়াম-উল-সুলাহ ইত্যাদি। তাকে বলা হয় যে, মির্জার সংশ্লিষ্ট বিধয়গুলো লিখা হয়েছিল ১৯০১ সাল থেকে ১৯০৮ সালের মধ্যে এবং একঘালাতিকা ইজালাতেই প্রথম উল্লেখ করা হয় মির্জার নবী দাবীর বিষয়। তিনি ঐ বিজ্ঞাপনটির কিছু অংশ পড়েছেন কিন্তু সংশ্লিষ্ট বিষয়টি বাদ দিয়ে।

ক্যাপ্টেন আব্দুল ওয়াজেদ বলেন যে, মির্জা বা লাহোরের কাদিয়ানী সম্প্রদায় কখনো বলেনি, মুসলিম উম্মাহ বা কেউ যদি কলেমা (লা-ইলাহা-ইল্লাল্লাহু মুহাম্মদুর রাসূলুল্লাহ) পাঠ করে মির্জাকে অবিশ্বাসের জন্য, তবে সে কাফের হবে। যদিও তিনি স্বীকার করেন যে, এই অভিযানের প্রেক্ষিতেই সকল মুসলমান মির্জাকে কাফের বলে থাকেন। (অসমাপ্ত)

******************************************************************************

খতমে  নুবুওওয়াত  প্রচার  কেন্দ্র

খতমে নুবুওওয়াত

অস্বীকারকারীরা কাফের

( ইসলামী শরীয়তের হুকুম মোতাবেক

যারা মুসলমান থেকে খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভূক্ত হয়

(যেমন- কাদিয়ানী, বাহাই  ইত্যাদি) তাদের তওবার জন্য নির্ধারিত সময়

৩দিন। এরপর তওবা না করলে,

তাদের শাস্তি মৃত্যুদন্ড )

(১)

কাদিয়ানী রদ!

চতুর্থ ভাগ )

                        বাহরুল উলুম, ফখরুল ফোক্বাহা, রইছুল মোহাদ্দেসীন, তাজুল মোফাসসেরীন, হাফেজে হাদীস, মুফতীয়ে আজম, পীরে কামেল, মোর্শেদে মোকাম্মেল হযরত মাওলানা আল্লামা শাহ্ সূফী মুহম্মদ রুহুল আমিন (রঃ) কর্তৃক প্রণীত কাদিয়ানি রদ কিতাবখানা (৬ষ্ঠ খন্ডে সমাপ্ত)। আমরা মাসিক আল বাইয়্যিনাত পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করছি। যাতে কাদিয়ানীদের সম্পর্কে সঠিক ধারণাসহ সমস্ত বাতিল ফেরকা থেকে আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের অনুসারীদের ঈমান আকীদার হিফাযত হয়। আল্লাহ্ পাক আমাদের প্রচেষ্টার কামিয়াবী দান করুন (আমিন)। ওনার কিতাব থেকে হুবহু উদ্ধৃত করা হলো, তবে তখনকার ভাষার সাথে বর্তমানে প্রচলিত ভাষার কিছুটা পার্থক্য রয়েছে।

(পূর্ব প্রকাশিতের পর)

মির্জ্জার আকায়েদ

             কোরআন ছুরা বাকারা ;- 

واذ قتلتم نفسا فادار أتم فيها والله مخرج ما كنتم تكتمون فقلنا اضربوه ببعضها كذلك يحيى الله الموتى وير يكم اياته لعلكم تعقلون.

 

            এবনো-জরির রেওয়াএত করিয়াছেন, বনি ইছরাইলদিগের মধ্যে এক ব্যক্তি নিঃসন্তান ছিল, তাহার বিপুল অর্থ ছিল, তাহার ভ্রাতুষ্পুত্র একমাত্র উত্তরাধিকারী ছিল, সে উক্ত চাচাকে হত্যা করিয়া রাত্রিযোগে একজন লোকের দ্বারদেশে নিক্ষেপ করিয়া তাহাদের নিকট ক্ষতিপূরণ চাহিতে লাগিল। তাহারা হজরত মুছা (আঃ) এর নিকট উপস্থিত হইয়া ইহার বিহিত ব্যবস্থা করিতে বলিলেন। তিনি একটী গো-জবাহ করিতে বলিলেন, উহা জবাহ করা হইল, উহার একখন্ড মাংস দ্বারা মৃতকে প্রহার করা হইল, অমনি সে জীবিত হইল। তাহারা বলিল, তোমাকে কে হত্যা করিয়াছে; সে বলিল, আমার ভ্রাতুষ্পুত্র আমাকে হত্যা করিয়াছে। তৎপরে সে মরিয়া পড়িয়া গেল। -তঃ এবনো-কছির, ১/১৮৩ পৃষ্ঠা।

            মির্জ্জা ছাহেব এই আয়তের অর্থ বিকৃত করিয়া এজালাতোল-আওহামের ৩০৯ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছে ;-

اس قصہ سے و اقعی طور پر لاش کا زندہ ھونا ھرگز ثابت نھین ھوتا- اصل حقیقت یہ ھے کہ یہ طریق علم عمل الترب یعنے مسمریزم کا ایک شعبہ تھا-

            এই ঘটনা দ্বারা প্রকৃতপক্ষে লাশের জীবিত হওয়া কিছুতেই প্রমাণিত হয় না। প্রকৃত অবস্থা এই যে, ইহা এক প্রকার মেছমেরিজম ছিল।

            এস্থলে মির্জ্জা ছাহেব যেরূপ কোরআনের আয়তকে অস্বীকার করিলেন, সেইরূপ হজরত মুছা (আঃ)কে জাদুকর বলিলেন, ইহা কি ইমানদারির লক্ষণ?

ছুরা বাকারা, ১১ রুকু ;-

 

واتينا عيسى ابن مريم البينت وايدناه بروح القدس.

এবং আমি ইছাবেনে-মরয়েমকে নিদর্শন সমূহ (মোজেজা সমূহ) প্রদান করিয়াছিলাম এবং তাঁহাকে জিবরাইল দ্বারা সহায়তা করিয়াছিলাম।

সূরা মায়েদা, ১৫ রুকু

 

وتبرى الا كمه والابرص باذنى واذتخرج الموتى باذنى.

            এবং (হে ইছা) তুমি জন্মান্ধ ও শ্বেতকুষ্ঠ রোগীকে আমার হুকুমে সুস্থ করিয়া দিতে এবং যে সময় তুমি মৃতদিগকে আমার হুকুমে জীবিত করিতে।

মির্জ্জা ছাহেব জমিমায়-আঞ্জামে আথাম, ৬/৭ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছেন;-

 

عیسائیون نے بھت سے اپکے معجزا لکھے ھین مگر حق بات یہ ھے کہ اپ سے کوئی معجزہ نھین ھوا-

ممکن ھے کہ اپ نے معمولی تدبیر کے ساتھہ کسی شب کور و غیرہ کو اچھا گیا ھو یا کسی اور ایسی بیماری کا علاج کیا ھو مگر اپکی بد قسمتی سے اسی زمانہ مین ایک تالاب موجود تھا جس سے بزے بزے نشان ظاھر ھوتے تھے- خیال ھو سکتا ھے کہ اس تالاب کی متی اپ بھی پوری پوری حقیقت کھلتی ھے اور اسی تالاب نے فیصلہ کردیاھے کہ اگر اپ سے کوئی معجزہ بھی ظاھر ھوا ھوتو وہ معجزہ اپ کا نھین بلکہ اس تلااب کا معجزہ ھے اور اپکے ھاتھہ مین سوا مکر اور فریب کے اور کچھہ نھین تھا-

 

            খীষ্টানেরা (হজরত) ইছা (আঃ) এর বহু মোজেজা লিপিবদ্ধ করিয়াছেন, কিন্তু সত্য কথা এই যে, তাঁহার দ্বারা কোন মোজেজা হয় নাই। ইহা সম্ভব যে, তিনি সাধারণ তদবিরের দ্বারা রাত্তিকানা ইত্যাদিকে সুস্থ করিতেন, কিম্বা অন্য কোন রোগীর ঔষধ করিয়াছিলেন, কিন্তু তাহার অদৃষ্ট দোষে সেই জামানায় একটী জলাশয় ছিল যদ্বারা বৃহৎ বৃহৎ নিদর্শন প্রকাশিত হইত। ইহা ধারণা করা যাইতে পারে যে, তিনি উক্ত পুষ্করিণীর মৃত্তিকা ব্যবহার করিতেন। এই পুষ্করিণী দ্বারা তাহার মোজেজাগুলির পূর্ণ তত্ত্ব প্রকাশ হইয়া পড়িতেছে। এই পুষ্করিণী দ্বারা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায় যে, যদি তাঁহার দ্বারা কোন মোজেজা প্রকাশিত হইয়া থাকে, তবে উহা তাঁহার নিজের মোজেজা নহে, বরং উক্ত পুষ্করিণীর মোজেজা। তাঁহার দ্বারা চক্র ও ধোকাবাজি ব্যতীত কিছু হয় নাই।

            নিরপেক্ষ পাঠক, এক্ষণে আপনি বুঝুন, মির্জ্জা ছাহেব কি কোরআনের উপর ইমান আনিতেন, যদি তিনি উহার উপর ইমান আনিতেন, তবে তিনি স্পষ্ট কোরআনের আয়তের বিপরীতে এইরূপ মন্তব্য প্রকাশ করিতেন না।

            ছুরা আল-এমরান, ৫ রুকু ;-

اذ قالت الملئكة يمريم ان الله يبشرك بكلمة منه اسمه المسيح عيسى ابن مريم.. قالت رب انى يكون لى ولد ولم يمسسنى يشر- قال كذلك الله يخلق ما يشاء اذا قضى امرا فانما يقول له كن فيكون.

 

            যে সময় ফেরেশতাগণ বলিলেন হে মরয়েম, নিশ্চয় আল্লাহ্ তোমাকে তাঁহা হইতে (আগত) একটী বাক্যের সুসংবাদ প্রদান করিতেছেন, যাহার নাম মছিহ বেনে-মরয়েম।  ......তিনি (মরয়েম) বলিলেন, হে আমার প্রতিপালক, কিরূপে আমার সন্তান হইবে, অথচ আমাকে কোন মনুষ্য স্পর্শ করে নাই। আল্লাহ বলিলেন, ঐরূপ (বিনা পুরুষ সঙ্গমে সন্তান) হইবে, আল্লাহ্ যাহা ইচ্ছা করেন সৃজন করেন। যে সময় তিনি কোন কার্য্য পূর্ণ করিতে চাহেন, উহাকে বলেন, তুমি হও, ইহাতে উক্ত বস্তু হইয়া যায়।

            ছুরা নেছা, ২৩ রুকু ;-

 

انما المسيح عيسى ابن مريم رسول الله وكلمته القها الى مريم وروح منه.

            মছিহ ইছা বেনে মরয়েম ইহা ব্যতীত না হয় যে, আল্লাহ্তায়ালার রাছুল ও তাঁহার বাক্য, তিনি উক্ত বাক্যটী মরয়েমের উপর নিক্ষেপ করিয়াছেন এবং তাঁহার পক্ষ হইতে একটী রুহ।  ছুরা আল-এমরান, ৬ রুকু ;-

 

ان مثل عيسى عند الله كمثل ادم خلقه من تراب ثم قال له كن فيكون.

            নিশ্চয় আল্লাহ্তায়ালার নিকট ইছার অবস্থা আদমের অবস্থার তুল্য, তিনি তাহাকে মৃত্তিকা হইতে সৃষ্টি করিয়াছেন, তৎপরে তাহাকে বলিলেন, তুমি হও, ইহাতে সে হইয়া গেল।

            অর্থাৎ হজরত ইছা (আঃ) যেরূপ বিনা পিতায় হইয়াছিলেন, হজরত আদম (আঃ) সেইরূপ বিনা পিতায়, (বরং বিনা মাতায়) হইয়াছিলেন।

            ছুরা আল-এমরান, ২ রুকু ;-

اذ قالت امراة عمران .... بغير حساب.

 

            যে সময় এমরানের স্ত্রী বলিল, হে আমার প্রতিপালক, নিশ্চয় আমি তোমার জন্য মানসা করিয়াছি যে, যাহা কিছু আমার গর্ভে আছে আজাদ থাকিবে, তুমি উহা কবুল কর, নিশ্চয় তুমি শ্রেষ্ঠতম শ্রোতা অভিজ্ঞ। যখন সে তাহাকে প্রসব করিল, বলিল, হে আমার প্রতিপালক, নিশ্চয় আমি উহা কন্যা প্রসব করিয়াছি। আল্লাহ্ সে যাহা প্রসব করিয়াছে, তৎসম্বন্ধে সমধিক অভিজ্ঞ। (অভিপ্রেত) পুত্র এই কন্যার তুল্য নহে, আমি তাহার নাম মরয়েম রাখিলাম এবং তোমার নিকট বিতাড়িত শয়তান হইতে তাহার এবং তাহার বংশধরগণের উদ্ধার কামনা করিতেছি। ইহাতে আল্লাহ্ তাহাকে উৎকৃষ্টভাবে কবুল করিয়া লইলেন এবং তাহাকে সুন্দর ভাবে প্রতিপালন করিলেন এবং জাকারিয়াকে তাহার পৃষ্ঠপোষক করিলেন। যে সময় জাকারিয়া তাঁহার নিকট উৎকৃষ্ট স্থানে উপস্থিত হইতেন, তাহার নিকট জীবিকা পাইতেন, তিনি বলিতেন, হে মরয়েম, ইহা তোমার জন্য কোথা হইতে আসিল? তিনি বলিতেন, ইহা আল্লাহ্তায়ালার নিকট হইতে, নিশ্চয় আল্লাহ্ যাহাকে ইচ্ছা করেন, অগণিত জীবিকা প্রদান করেন।            ( অসমাপ্ত )

 

(২)

ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক পাকিস্তান সুপ্রীম কোর্ট কর্তৃক কাদিয়ানীদের- কাফের ঘোষণা

( পূর্ব প্রকাশিতের পর )

অনুবাদক - আল্হাজ্ব মুহম্মদ হাবিবুল হক

 

            ক্যাপ্টেন আব্দুল ওয়াজেদ বলেন যে, মির্জা বা লাহোরের কাদিয়ানী সম্প্রদায় কখনো বলেনি, মুসলিম উম্মাহ্ বা কেউ যদি কলেমা (লা-ইলাহা-ইল্লাল্লাহু মুহাম্মদুর রাসূলুল্লাহ্) পাঠ করে মির্জাকে অবিশ্বাসের জন্য, তবে সে কাফের হবে। যদিও তিনি স্বীকার করেন যে, এই অভিযানের প্রেক্ষিতেই সকল মুসলমান মির্জাকে কাফের বলে থাকেন।

            উপরোক্ত উভয় বিষয়ই ভিত্তিহীন। মির্জার নিজের লিখাতেই পাওয়া যায় যে, সে নিজেকে নবী দাবীর ঘোষণা দিয়েছিল। এমনকি মির্জার লিখায় ইহাও উল্লেখ করেছে যে, লাহোরী দলের প্রতিষ্ঠাতা (মুঃ মুহাম্মদ আলী) তাকে (মির্জাকে) নবী হিসাবে বিশ্বাস করতো ১৯১৪ সাল পর্যন্ত। তারপর সে প্রধান কাদিয়ানী দল ত্যাগ করে এবং নিজের আর একটি দল প্রতিষ্ঠা করে।

            এ প্রসঙ্গে আব্দুল কাদির সম্পাদিত মির্জার জীবর্ন- হায়াত-ই-তাইয়েবা পুস্তাকের উল্লেখ করা যেতে পারে। মাত্র দুটি উদ্ধৃতিই প্রমাণের জন্য যথেষ্ট। ২৯৯ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, ১৯০৪ সালে মৌলভী কমরুদ্দিন সাহেবের মামলায় ফরিয়াদীর পক্ষে মুহাম্মদ আলী বিশেষ হলফ করে সাক্ষী দেয় যে, নবী দাবীকে যে মিথ্যা বলে প্রমাণ করতে চায়, সে মিথ্যাবাদী। অভিযুক্ত মির্জা সাহেব একজন নবী দাবীদার।

            ৩০০ পৃষ্ঠায় এম, মুহাম্মদ আলীর লিখা নিম্নে উল্লেখিত বিষয় পুণরায় উল্লেখ করা হয়েছে। যা তার সংবাদপত্র পয়গম-ই-সুলাহতে  ১৯১৩ সালের ১৬ই অক্টোবর প্রকাশিত হয়েছিল- আমরা বিশ্বাস করি যে, তিনি (মির্জা) প্রতিশ্রুত মসীহ এবং প্রতিশুত মেহদী, যিনি এ যামানার পাপমোচনকারী নবীও। (নাউযুবিল্লাহ্)

            উদ্ধৃতাংশ থেকে প্রমাণিত যে, এম, মুহাম্মদ আলী এরং তার দলীয় আহমদীরা মির্জা তার জীবদ্দশায় এবং তার স্থলাভিষিক্ত এম. নুরউদ্দীনকে নবী মনে করতো। (নাউযুবিল্লাহ্) কিন্তু অনেক পরে যখন তিনি আহমদীয়দের সাধারণ কমিটি ত্যাগ করেন, তখন তিনি ভিন্ন মত প্রকাশ করেন এবং বলেন, মুসলিম উম্মাহ্র মধ্যে কেউ নবী দাবী করলে সে মিথ্যাচারী (আল নুবুওওয়ত-ফিল-ইসলাম, পৃষ্ঠা-১৫৫) এবং আমি বিশ্বাস করি মির্জাকে নবী মানা ইসলামকে ধ্বংস করার তুল্য (পয়গম-ই-সুলেহ, ভলিউম-২, পৃৃষ্ঠা-১১৯, তারিখ ১৬ই এপ্রিল,১৯১৫)।

            মির্জা যখন নিজেকে শুধুমাত্র প্রতিশ্রুত মেহদী ও মসীহ দাবী করে, তখনই তাকে খারেজী আখ্যার সম্মুখীন হতে হয। তার অনুসারীদেরকেও খারেজী দলের অন্তর্ভূক্ত হিসাবে অভিহিত করা হয়।

            মাওলানা মুহম্মদ হুসেইন বাটলভি যিনি বরাহিন-ই-আহমদীয়ার কিছু অংশ পড়ে, মির্জার উচ্ছসিত প্রশংসা করেছিলেন, তিনিই এ দাবীর প্রেক্ষিতে মির্জার এক চরম বিরোধীতাকারী হিসাবে সক্রিয় হয়ে ওঠেন। তিনি ফতওয়া দেন যে, মির্জা সাহেব খারেজী ও কাফের এবং ইহা সারা ভারতবর্ষের বিখ্যাত বহু আলেমদের সমর্থনে, তাঁদের স্বাক্ষর সংগ্রহ করেন (হায়াত-ই-তাইয়েবা, রচনা আব্দুল কাদির, পৃষ্টা ১৩২)

            ফতওয়া দ্বারা প্রভাবিত না হয়ে এই বিষয়টি নিরপেক্ষভাবে বিচার করে দেখা প্রয়োজন, মির্জা এবং তার অনুসারীদের লিখিত পুস্তিকাদিতে মির্জার নবী দাবীর উল্লেখ স্পষ্টভাবেই করেছে এবং তার (মির্জার) দাবীর অস্বীকারকারীদের কাফের আখ্যায়িত করা হয়েছে।

            এখন ইসলামী শরীয়তে তাদের জন্য কি আদেশ আছে। যারা প্রচলিত মতের বিরুদ্ধে মতাবলম্বী ব্যক্তির (খারেজী) অনুসরণ করে অন্ধভাবে এবং তাকে বিশ্বাস করে মামুর মিনাল্লাহ্ (আল্লাহ্ পাক এর দ্বারা নিযুক্ত) মুজাদ্দিদ, (ইসলামের প্রদুত্ত সংস্কারক) প্রতিশ্রুত মসীহ বা মাহদী যদিও ইসলামের বিধান অনুযায়ী তিনি তা নন?

            খারেজীদের সমর্থন কি খারেজী মতাবলম্বন নয়?

            শরীয়তের মাসয়ালা অনুযায়ী- যে খারেজীদের কোন কিছু ভাল মনে করবে, নীরবে মেনে নিবে, বা উহাতে সন্তোষ প্রকাশ করবে, সে মুসলমান নয়। মাওলানা আনওয়ার শাহ কাশ্মীরীর লিখিত (ইকফার-উল-মুলহিদিন,-পৃষ্টা-৫৯)।            বাহরূর রায়েক-এর ৫ম খন্ডের ২৪ পৃষ্টায় বলা হয়েছে, যে ইহুদী ধর্ম প্রচারকদের আলোচনা ভাল মত পোষণ করে বা তাদের ব্যাখ্যাতে সন্তোষ প্রকাশ করে, সেও ঈমান হারা হবে। মির্জা এ তত্ত্বটির একটি নীরস ব্যাখ্যা দিয়ে বলে, যে একজন অবিশ্বাসীকে বিশ্বাসী বলে, সে নিজেই অবিশ¡াসী। (হাক্বীক্বত-উল-ওহী পৃঃ ১৬৪)।        

( অসমাপ্ত )

******************************************************************************

খতমে নুবুওওয়াত  প্রচার কেন্দ্র

খতমে নুবুওওয়াত

অস্বীকারকারীরা কাফের

( ইসলামী শরীয়তের হুকুম মোতাবেক

যারা মুসলমান থেকে খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভূক্ত হয়

(যেমন- কাদিয়ানী, বাহাই  ইত্যাদি) তাদের তওবার জন্য নির্ধারিত সময়

৩দিন। উনারপর তওবা না করলে,

তাদের শাস্তি মৃত্যুদন্ড )

(১)

কাদিয়ানী রদ!

চতুর্থ ভাগ )

            বাহরুল উলুম, ফখরুল ফোক্বাহা, রইছুল মোহাদ্দেসীন, তাজুল মোফাসসেরীন, হাফেজে হাদীস, মুফতীয়ে আজম, পীরে কামেল, মোর্শেদে মোকাম্মেল হযরত মাওলানা আল্লামা শাহ্ সূফী মুহম্মদ রুহুল আমিন রহমতুল্লাহি কর্তৃক প্রণীত কাদিয়ানি রদকিতাবখানা (৬ষ্ঠ খন্ডে সমাপ্ত)। আউনারা মাসিক আল বাইয়্যিনাত পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করছি। যাতে কাদিয়ানীদের সম্পর্কে সঠিক ধারণাসহ সমস্ত বাতিল ফেরকা থেকে আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের অনুসারীদের ঈমান আকীদার হিফাযত হয়। আল্লাহ্ পাক আমাদের প্রচেষ্টার কামিয়াবী দান করুন (আমিন)। ওনার কিতাব থেকে হুবহু উদ্ধৃত করা হলো, তবে তখনকার ভাষার সাথে বর্তমানে প্রচলিত ভাষার কিছুটা পার্থক্য রয়েছে।

(পূর্ব প্রকাশিতের পর)

মির্জ্জার আকায়েদ

            ছুরা আল-এউনারান, ৫ রুকু ;-

 

واذ قالت الملائكة يمريم ان الله اصطفك وطهرك واصطفك على نساء العلمين.

            “এবং যখন ফেরেশতাগণ বলিলেন, হে উনারয়েম, নিশ্চয় আল্লাহ্ তোমাকে মনোনীত করিয়াছেন, পবিত্র করিয়াছেন এবং তোমাকে জগদ্বাসীদিগের স্ত্রলোকদিগের উপর শ্রেষ্ঠত্ব প্রদান করিয়াছেন।

            মির্জ্জা ছাহেব কোরআনের উপরোক্ত আয়তগুলির বিপরীতে এজালাতোল-আওহাউেনার ১৯৫ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছেন-

 

حضرت مسیح ابن مریم اپنے باپ یوسف کے ساتھہ ئیس برس کی مدت تک نجاری کا کام کرتے رھے-

 

            “(হজরত) মছিহ বেনে-উনারয়েম নিজের পিতা ইউছফের সহিত ২২ বৎসর কাল পর্য্যন্ত সূত্রধারের কর্ম্ম করিতেন।

            তিনি আইয়ামোছ-ছোলহকেতাবের ৬৫ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছেন

 

اختلاط مریم صدیقہ با منسوب خودش یوسف و بمعیت وی خارج بیت گردش نمودن شھادت حقہ بر این وسم است-

            “উনারয়েম সিদ্দিকার তাঁহার বাগ্দত্ত্ব ইউছফের সহিত সঙ্গম করা এবং তাহার সহিত গৃহের বাহিরে ভ্রমণ করা এই নিয়উেনার সত্য প্রমাণ।

            পাঠক, কোরআন সাক্ষ্য প্রদান করিতেছে যে, হজরত উনারয়েম কোন পুরুষ সঙ্গম করেন নাই, হজরত ইছা বিনা পিতায় আল্লাহ্ তায়ালার হুকুমে হইয়াছিলেন।

            আর মির্জ্জা ছাহেব বলেন, হজরত উনারয়েম বিবাহের পূর্ব্বে ইউছফের সহিত ব্যভিচার করিয়াছিলেন, হজরত ইছা সেই হারাম বীর্য্যে পয়দা হইয়াছিলেন। এক্ষণে আপনারা বলুন, তিনি কি কোরআনের উপর ইমান আনেন?

            তিনি জমিমায়-আঞ্জামে-আথাউেনার ৭ পৃষ্ঠার হাশিয়ায় লিখিয়াছেন ;-

اپ کا خاندان بھی نھایت پاک اور مطھر ھے- تین دادیان اور نانیان اپکی زناکار اور کسبی عور تین تھین جن کے خون سے اپ کا وجود ظھور پذیر ھوا-

 

            “তাঁহার (হজরত ইছার) বংশ নিতান্ত পাক ও পবিত্র ছিল, তাঁহার তিন দাদি ও নানি ব্যভিচারিণী ও বেশ্যা ছিল- যাহাদের রক্ত হইতে তাঁহার শরীর প্রকাশিত হইয়াছে।

             খোদাতায়ালা যে খান্দানের প্রশংসা করেন, মির্জ্জা সাহেব তাহার বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করিতে সাধ্য-সাধনা করিয়া নিজের পরকাল নষ্ট করিয়াছেন।

            ছুরা আল-এউনারান, ৫ রুকু ;-

 

ان الله يبشرك بكلمة منه اسمه المسيح عيسى بن مريم وجيها فى الدنيا والاخرة ومن المقربين. ويكلم الناس فى المهد وكهلا ومن الصالحين .......... ويعلمه الكتاب والحكمة والتوراة والانجيل ورسولا الى نبى اسرائيل.

            “নিশ্চয় তোমাকে তাঁহা হইতে (প্রেরিত) বাক্যের সুসংবাদ প্রদান করিতেছি- তাহার নাম মছিহ বেনে উনারয়েম, দুনইয়া ও আখেরেতে সম্মানিত এবং নৈকট্য প্রাপ্ত ব্যক্তিগণের অন্তর্গত হইবেন। এবং আল্লাহ্ তাঁহাকে কেতাব, হেকমত, তওরাত এবং ইঞ্জিল শিক্ষা দিবেন এবং বনি-ইছরাইলদিগের রাছুল করিবেন। এবং তিনি দোলারোহণে ও প্রৌঢ়াবস্থায় লোকের সঙ্গে কথা বলিবেন এবং নেককারদিগের অন্তর্গত হইবেন।

            ছুরা মায়েদা, ৭ রুকু ;-

 

واتينه الانجيل نيه هدى ونور.

            “এবং আমি তাঁহাকে ইঞ্জিল প্রদান করিয়াছি, উহাতে সত্যপথ ও জ্যোতি আছে।

            মির্জ্জা ছাহেব জমিমায়-আঞ্জামে-আথাউেনার ৯ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছেন ;-

 

پس ھم ایسے نا پاک خیال اور متکبر اور راستبازون کے دشمن کو ایک پھلا مانس ادمی بھی قرار نھین دے سکتے چہ جائیکہ اس کو نبی قرار دین-

            “অতএব আউনারা এইরূপ নাপাক চিত্ত, অহঙ্কারী এবং সত্য-পরায়ণ লোকদিগের শত্রুকে একজন ভাল মনুষ্য স্থির করিতে পারি না, তাঁহাকে নবি স্থির করা ত দূরের কথা।

            মির্জ্জা ছাহেব এস্থলে হজরত ইছাকে নাপাক চিত্ত, অহঙ্কারী ও সত্যপরায়ণদিগের শত্রু বলিয়াছেন, বরং তাঁহার নবী হওয়াা অস্বীকার করিয়াছেন।

            তিনি ১৯০২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারির আল-হাকাম পত্রিকায় লিখিয়াছেন ;-

 

مسیح کے حالات پر ھو تویہ شخص اس لائق نھین ھو سکتا کہ نبی بھی ھو-

            “মছিহর অবস্থাগুলি পড়, এই ব্যক্তি নবী হওয়ার উপযুক্ত নহেন।

            তিনি দাফেয়োল-বালার শেষ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছেন ;-

 

مسیح کے راستبازی اپنے زمانہ مین دوسرے راستبازون سے بزھکر ثابت نھین ھوتی بلکہ یحیی نبی کو اسپر ایک فضیلت ھے کیونکہ وہ شراب نھین پیتا تھا اور کبھی نھین سنا گیا کہ کسی فاحشہ عورت نے اکر ابنی کمائی کے مال سے اس کے سر پر عطر ملا تھا یا ھاتھون اور اپنے سر کے بالون سے اس کے بدن کو چھوا تھا یا کوئی بی  تعلق جوان عورت اسکی خدمت کرتی تھی اسی وجہ سے خدا نے قران مین یحیی کا نام حصور رکھا مگر مسیح کا یہ نام نہ رکھا کیونکہ ایسے قصے اس نام کے رکھنے سے مانع تھے-

 

            “মছিহ (আঃ)উনার সত্যপরায়ণতা তাঁহার জামানার অন্যান্য সত্যপরায়ণদিগের চেয়ে অধিকতর প্রমাণিত হয় নাই, বরং (হজরত) এহইয়া নবীর তাঁহার উপর শ্রেষ্ঠত্ব ছিল, কেননা তিনি মদ পান করিতেন না এবং কখনও শুনা যায় নাই যে, কোন বেশ্যা স্ত্রীলোক আসিয়া নিজের উপার্জ্জিত অর্থের আতর দ্বারা তাহার মস্তকে মর্দ্দন করিয়াছে, কিম্বা হস্ত ও মস্তকের কেশ দ্বারা তাহার শরীর স্পর্শ করিয়াছে অথবা কোন সম্বন্ধহীনা যুবতী স্ত্রীলোক তাঁহার খেদমত করিত, এই হেতু খোদাতায়ালা কোরআনে (হজরত) এহইয়ার নাম হাছুর ম্নম্বèরাখিয়াছেন, কিন্তু মছিহ (আঃ)কে এই নামে অভিহিত করেন নাই, কেননা এইরূপ ব্যাপারগুলি এই নাম রাখার প্রতিবন্ধকতা জন্মাইয়াছে।

            তিনি ১৯০২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারির আল-হাকাম পত্রিকায় লিখিয়াছেন ;-

یہ بات پوشیدہ نھین کہ کس طرح پر وہ نا محرم جوان عورتون سے ملتا تھا اور کس طرح ایک بازاری عورت سے عطر ملوتا تھا- وہ ایک ازکی پر عاشق ھو گیا اور جب استاد کے سامنے اس کے حسن و جمال کا تذکرہ کو بیتھا تو استاد نے اسے عاق کردیا-

            “ইহা স্পষ্ট কথা যে, তিনি (হজরত মছিহ) কিরূপে গর-মহরম যুবতী স্ত্রীলোকদের সহিত সাক্ষাৎ করিতেন, কিরূপে এক বেশ্যা স্ত্রীলোক দ্বারা আতর মালিশ করাইতেন। তিনি একটী বালিকার উপর আসক্ত হইয়াছিলেন এবং যখন তিনি শিক্ষকের সম্মুখে তাহার সৌন্দর্য্য ও রূপের আলোচনা করিয়াছিলেন, তখন শিক্ষক তাহাকে বাহির করিয়া দিয়াছিলেন।”                  ( অসমাপ্ত )

(২)

ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক পাকিস্তান সুপ্রীম কোর্ট কর্তৃক কাদিয়ানীদের-কাফেরঘোষণা!

( পূর্ব প্রকাশিতের পর )

অনুবাদক - আল্হাজ্ব মুহম্মদ হাবিবুল হক

 

            কোরআন শরীফে সূরা-২, আয়াত ২৫৬-এই বিষয়ে সঙ্গত। ইহা নিম্নরূপ-

 

لا اكراه فى الدين قد تبين الرشد من الغى فمن يكفر بالطا غوت ويومن بالله فقد استمعد بالغروة الوثقى لا انفصام لها والله سميع عليم.

অর্থঃ- দ্বীনের ব্যাপারে কোন জবরদস্তি বা ব্যাধ্য-বাধকতা নেই। নিঃসন্দেহে হিদায়েত গোউনারাহী থেকে পৃথক হয়ে গেছে। এখন যারা গোউনারাহীকারী তাগুতদেরকে মানবেনা এবং আল্লাহ্ পাককে বিশ্বাস স্থাপন করবে। সে ধারন করল সুদৃঢ় হাতল, যা ভাঙ্গবার নয়। আর আল্লাহ্ পাক সবই শুনেন জানেন।

তাগুত (طاغوت) শব্দটি আল্লাহ্ পাক-উনার বিপরীতার্থক শব্দ হিসাবে কোরআন শরীফের বিভিন্ন স্থানে ব্যবহার করা হয়েছে। উপরোক্ত আয়াতে এবং ১৬নং সূরার ৭৬ নম্বর আয়াত শরীফে বলা হয়েছে, “যারা বিশ্বাসী, তাঁরা আল্লাহ্ পাক-উনার পথে সংগ্রাম করে এবং যারা অবিশ্বাসী, তারা তাগুতের পথে সংগ্রাম করে, সুতরাং তোউনারা শয়তানের বিরুদ্ধে সংগ্রাম কর, শয়তানের কৌশল দূর্বল।

            জাওহারী বলেন, ইহা ব্যবহার করা হয়েছে- শয়তান, যাদুকর, জ্যোতিষী এবং গোউনারাহী অনুসারীদের প্রকাশ করার জন্য-

والطاغوت الكاهن واشيطان وكل راس فى الضلال.

তাগুত অর্থ শয়তান, যাদুকর, জ্যোতিষী এবং গোউনারাহী পথের অনুসারী كل راس فى الضلال এই  শব্দগুলি দ্বারা অর্ন্তভুক্ত করা হয়েছে কোন ধর্মের প্রতিষ্ঠাতাকে। যে মানুষকে গোউনারাহীতে পরিচালিত করে বা যে সঠিক মতপথ থেকে বিচ্যুত। (দেখুন- পীর মুহম্মদ করাম শাহ সম্পাদিত জিয়াউল কোরআন, বর্তমানে সুপ্রীম কোর্ট শরীয়ত বেঞ্চের বিচারক, ভলিওম ১ পৃঃ ১৭৯, ১৮০)

            ২ নম্বর সূরার ২৫৬ নম্বর আয়াত শরীফে ব্যবহৃত তাগুতশব্দের অর্থ বিভিন্ন অনুবাদক ভিন্ন অর্থ উল্লেখ করেছেন। মিঃ পিকাল উহাকে অনুবাদ করেছেন মিথ্যা দেবতা হিসাবে। মাওলানা মাহমুদুল হাসান, এই শব্দটির অনুবাদে লিখেছেন-                   

(گمرہ کرنے و الا)

যে মানুষকে গোউনারাহী পথে পরিচালিত করে।

            মুমিন বা মুসলামানের গুণ যে, সে আল্লাহ্ পাককে বিশ্বাস করে এবং অস্বীকার করে তাগুতকে, যা এক মিথ্যা নবী দাবীদারদের জন্য প্রযোজ্য। ইহা তাদেরও প্রযোজ্য, যে মিথ্যা নবীকে প্রত্যাখান করে না, যে মানুষকে গোউনারাহী পথের নির্দেশ না দেয়, যে এমন এক ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা, যা ইসলাম থেকে বিচ্যুত, সে আল্লাহ্ পাককে বিশ্বাস করলেও মুসলমান হিসাবে গণ্য নয়। যে তাগুতকে বিশ্বাস করে এবং আল্লাহ্ পাককেও বিশ্বাস করে, তার ফয়সালা খুব খারাপ। তাকে কোন ভাবেই মুসলমান বলা যাবেনা। মুসলিম উম্মাহকে বিচ্ছিন্নতাতেকে রক্ষা করার নিমিত্তে سددرائع (ধংধফফব ফযধৎরধ) নীতী অবলম্বনকারী, বিপথগামী ব্যক্তিদেরকেও ইসলাম থেকে খারিজ গণ্য করতে হবে, যেহেতু তাগুতের প্রতি বিশ্বাস হবে, সেহেতু তাগুতের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন, মুসলিম উম্মাহের নীতিগর্হীত।

            এক মালাতি-কা-ইজালা (অর্থঃ- এক ভূল অপসারণ বা সংশোধন) বিজ্ঞাপনে মির্জা সর্ব প্রথম নবী দাবী সূচনা করে। এ বিজ্ঞাপন প্রকাশের কারণে উল্লেখ করা হয়েছে যে, কিছু দিন পূর্বে মির্জার বিরোধীতাকারীরা, তার অনুসারীদের নিকট একটি প্রতিবাদ উত্থাপন করেছিল। তাঁরা জানতে চেয়েছে, মির্জা কার নকট বাইয়াত গ্রহণ করে নবী দাবী করেছে। তার অনুসারীরা এই প্রতিবাদ ঠিক নয় বলে প্রত্যাখান করেছিল। কিন্তু মির্জা উল্লেখ করেছে, “তাদের প্রত্যাখান ঠিক হয়নি। কেননা আল্লাহ্র নিকট থেকে আমি ওহী পেয়েছি, যাতে রাসূল, মুরসাল এবং নবী শব্দগুলি বহুবার ব্যবহার করা হয়েছে। সুতরাং তাদের প্রত্যাখান ঠিক নয়।সে এ শব্দগুলি বহু পূর্বে প্রায় ২২ বছর আগে বারাহিন-ই-আহমদিয়ায় প্রকাশ করেছে।

            ইহা বলা হয়েছে,

 

هو الذى ارسل رسوله بالهدى ودين الكق ليظهره على الدين كله.

অর্থঃ-তিনিই উনাররাসূলকে হিদায়েত ও সত্য ধর্মসহ প্রেরণ করেছেন, যাতে একে অন্য সমস্ত ধর্মের উপর জয়যুক্ত করেন। (বরাহিন-ই-আহ্মদীয়া পৃষ্ঠা-৪৯৮)।

            ইহাতে পরিস্কারভাবে লিখা হয়েছে যে, তিনি (মির্জা সাহেব) একজন পয়গম্বর। ঐ পুস্তিকায় তার (মির্জা) সম্বন্ধে আরো উল্লেখ করা হয়েছে যে তিনি রাসূলের সূরতে আল্লাহ্র কথা প্রচারে প্রেরিত ব্যক্তি (পৃষ্ঠা ৫০৪)।

( অসমাপ্ত )

*******************************************************************

খতমেনুবুওওয়াতপ্রচারকেন্দ্র

খতমেনুবুওওয়াত

অস্বীকারকারীরাকাফের

( ইসলামীশরীয়তেরহুকুমমোতাবেক

যারামুসলমানথেকেখতমেনুবুওওয়াতঅস্বীকারকারীসম্প্রদায়েরঅন্তর্ভূক্তহয়

(যেমন- কাদিয়ানী, বাহাইইত্যাদি) তাদেরতওবারজন্যনির্ধারিতসময়

৩দিন।এরপরতওবানাকরলে,

তাদেরশাস্তিমৃত্যুদন্ড )

(১)

কাদিয়ানীরদ!

চতুর্থভাগ )

বাহরুলউলুম, ফখরুলফোক্বাহা, রইছুলমোহাদ্দেসীন, তাজুলমোফাসসেরীন, হাফেজেহাদীস, মুফতীয়েআজম, পীরেকামেল, মোর্শেদেমোকাম্মেলহযরতমাওলানাআল্লামাশাহ্সূফীমুহম্মদরুহুলআমিন (রঃ) কর্তৃকপ্রণীতকাদিয়ানিরদকিতাবখানা (৬ষ্ঠখন্ডেসমাপ্ত)।আমরামাসিকআলবাইয়্যিনাতপত্রিকায়ধারাবাহিকভাবেপ্রকাশকরছি।যাতেকাদিয়ানীদেরসম্পর্কেসঠিকধারণাসহসমস্তবাতিলফেরকাথেকেআহ্লেসুন্নতওয়ালজামায়াতেরঅনুসারীদেরঈমানআকীদারহিফাযতহয়।আল্লাহ্পাকআমাদেরপ্রচেষ্টারকামিয়াবীদানকরুন (আমিন)।ওনারকিতাবথেকেহুবহুউদ্ধৃতকরাহলো, তবেতখনকারভাষারসাথেবর্তমানেপ্রচলিতভাষারকিছুটাপার্থক্যরয়েছে।

(পূর্বপ্রকাশিতেরপর)

মির্জ্জারআকায়েদ

তিনি১৯০৩সালেররিভিউঅফরিলিজিয়নেলিখিয়াছেন;-

উদূলেখাঢুকবে................................................

 

মির্জ্জাছাহেবেরএকজন বন্ধু তাঁহাকে অগ্নিমান্দ্য রোগের জন্য আফিনপরামর্শদিয়াছিলেন, তদুত্তরেমির্জ্জাছাহেববলিয়াছিলেন, আমিআশঙ্কাকরিযে, লোকেবিদ্রুপকরিয়াইহানাবলেযে, প্রথমমছিহমদ্যপায়ীছিলেনএবংদ্বিতয়িমছিহআফিনখোর।

পাঠক, মির্জ্জাছাহেবকোরআনশরিফেরউপদেশপদদলিতকরিয়াজালবাইবেলেরকথাগুলিপ্রামাণ্যধারণায়একজনশ্রেষ্ঠনবীরউপরএইরূপঅযথাঅপবাদপ্রয়োগকরিয়াছেন, তিনিযেকোরআনেরউপরতিলবিন্দুইমানরাখিতেন, ইহাআমাদেরবিশ্বাসহয়না।

তিনিজমিমায়-আঞ্জামে-আথামের৫/৬পৃষ্ঠারহাশিয়ায়লিখিয়াছেন;-

উদূলেখাঢুকবে................................................

 

ইহাওস্মরণরাখাউচিতযে, তাঁহার (হজরতইছার) কিছুপরিমাণমিথ্যাবলারঅভ্যাসছিল।

নিতান্তলজ্জারকথা, তিনিপাহাড়িশিক্ষাযাহাকেইঞ্জিলেরমজ্জাবলাহয়, য়িহুদিদিগেরতালমুদকেতাবহইতেচুরিকরিয়ালিখিয়াছেন, ইহাসত্ত্বেওতিনিএইরূপপ্রকাশকরিয়াছেনযে, যেনইহাআমারশিক্ষা, কিন্তুযখনহইতেএইচুরিধরাপড়িয়াছে, খৃষ্টানগণঅত্যন্তলজ্জিতহইয়াছেন।

আবারইহাওপরিতাপেরবিষয়যে, উক্তশিক্ষাওএকটুভালনহে, বুদ্ধিওবিবেকউভয়েএইশিক্ষারমুখেরউপরচপেটাঘাতকরিয়াথাকে।

তাঁহারএকজনয়িহুদীশিক্ষকছিল-ইনিতাহারনিকটছবকছবককরিয়াতওরাতপড়িয়াছিলেন, ইহাতেঅনুমিতহয়যে, খোদাতাহাকেবুদ্ধিরবড়একটীঅংশপ্রদানকরেননাই, কিম্বাউক্তশিক্ষকেরদুষ্টামিহইতেপারেযে, সেতাঁহাকেনির্ব্বোধকরিয়ারাখিয়াছে, যাহাহউকতিনিজ্ঞানওকর্ম্মশক্তিতেনিতান্তঅপরিপক্কছিলেন।  (অসমাপ্ত)

ইসলামীশরীয়তমোতাবেকপাকিস্তানসুপ্রীমকোর্টকর্তৃককাদিয়ানীদের- কাফেরঘোষণা!

( পূর্বপ্রকাশিতেরপর )

অনুবাদক - আল্হাজ্বমুহম্মদহাবিবুলহক

 

বরাহিন-ই-আহ্মদীয়াপুস্তিকায়আরোএকটিআয়াতেরউল্লেখআছে (আয়াত৪৮ ঃ২৯)।

 

محمد رسول الله والذين معه اشداء على الكفار رحماء بينهم.

অর্থঃ- মুহম্মদআল্লাহ্ররাসূলএবংতাঁরসহচরগণকাফেরদেরপ্রতিকঠোর, নিজেদেরমধ্যেপরস্পরসহানুভূতিশীল।

মির্জারব্যাখ্যায়এইআয়াতেতাকেই (মির্জা) মুহম্মদএবংপয়গম্বরহিসাবেনামকরণকরাহয়েছে।এভাবেবরাহিন-ই-আহ্মদীয়াপুস্তিকায়অনেকবারতাকে (মির্জা) রাসূলউল্লেখকরাহয়েছে।

হুজুরপাকসাল্লাল্লাহুআলাইহিওয়াসাল্লাম-এরপরআরনবীআসবেননা, যেহেতুতাঁরদ্বারানুবুওওয়াতশেষকরাহয়েছে- এইহাদীসশরীফেরপ্রতিবাদেমির্জাঈসা (আঃ)-এরদ্বিতীয়আবির্ভাবেরসম্বন্ধেমুসলমানদেরআক্বীদাখন্ডনেরপ্রয়াসনেয়।সে (মির্জা) বলে- এইআয়াতশরীফেরঅর্থ- যেহেতুমুহম্মদসাল্লাল্লাহুআলাইহিওয়াসাল্লামনবীদেরশেষ, নুবুওওয়তেরদরজাপবিত্রনবী (তাঁরপ্রতিশান্তিবর্ষিতহোক) দ্বারাবন্ধকরাহয়েছেএবংক্বিয়ামতপর্যন্তবলবতথাকবে, কোনহিন্দু, ইহুদী, খৃষ্টানবাঅন্যকারোপক্ষেসম্ভবনয়, যেবলবেপূর্বেমুসলমানছিলেনএবংনিজেরজন্যনবীআখ্যাপ্রয়োগকরবে।সে (মির্জা) বলে- একটিব্যতীতনুবুওওয়তেরসকলজানালাবন্ধহয়েগেছে, যেটিহলোসিরাত-ই-সিদ্দীকিএবংযাহাএকজনইমাত্রদাবীকরতেপারেযিনিফানা-ফি-রাসূল।

মির্জাআরোবলে, এইজানালাদিয়েযেআল্লাহ্রনিকটবর্তীহয়, তাকেছায়ানবীরছদ্মাবেশদ্বারাসম্মানিতকরাহয়।ইহাইমুহম্মদসাল্লাল্লাহুআলাইহিওয়াসাল্লাম-এরনুবুওওয়তআত্মা, নিজেকে (মির্জা) নবীঘোষণারজন্যলজ্জিতহওয়ারকিছুনাই, কেননাতিনিনবীহওয়ারগুণাবলীনিজেরকাছথেকেঅর্জনকরেননি, বরংকরেছেনতারনবীসাল্লাল্লাহুআলাইহিওয়াসাল্লামথেকে।একইভাবেইহাতিনিতারনিজেরজন্যঅর্জনকরেননি।ইহাঅর্জনকরেছেনআল্লাহ্এবংতাঁরমহত্বেরজন্য।যেকারণেজান্নাতেতার (মির্জা) নামমুহম্মদএবংআহ্মদ-এরব্যাখ্যায়মির্জাউল্লেখকরেযে, মুহম্মদসাল্লাল্লাহুআলাইহিওয়াসাল্লম-এরনুবুওওয়তেরচূড়ান্তপর্যায়মুহম্মদ (মির্জা) পেয়েছেন, যদিওদুনিয়ারশারীরিকসূরতে।

বরাহিন-ই-আহমদীয়ায় (পৃষ্ঠা-৭) সেলিখেছে- এইমহম্মদ (সাল্লাল্লাহুআলাইহিওয়াসাল্লাম) শেষনবীসত্ত্বেওদ্বিতীয়মুহম্মদ (মির্জা) ছিলেনঐমুহম্মদ (সাল্লাল্লাহুআলাইহিওয়াসাল্লাম)-এরছবিস্বরূপএবংতাঁরনামওধারণকরেছেন।সেআরোলিখেছে- মুহম্মদএবংআহ্মদনামহওয়ায়সেএকজনরাসূলএবংনবী (পৃষ্ঠা-৯)।আয়াতশরীফ/৬২ঃ৩)

এইরাসূলকেপ্রেরণকরাহয়েছেঅন্যলোকদেরজন্য, যারাএখনওতাদেরলোকদেরজন্য, যারাএখনওতাদেরসাথেমিলিতহয়নি) এইআয়াতশরীফকেবিকৃতকরেমির্জাঅপব্যাখ্যাদেয়নিজেরজন্যএরভবিষ্যতনবীদেরজন্য।সেবলে, ছায়ানবীহিসেবেআমিইসেইনবীএবং২০বছরআগেবরাহিন-ই-আহ্মদীয়ায়মুহম্মদএবংআহ্মদনামউল্লেখকরাহয়েছেএবংতাকে (মির্জা) পবিত্রপয়গম্বরের (তাঁরপ্রতিশান্তিবর্ষিতহোক) ছায়াহিসাবেঘোষণাদেয়াহয়েছে।তার (মির্জা) মতেইহাপবিত্রনবীর (তাঁরপ্রতিশান্তিবর্ষিতহোক) দ্বারানুবুওওয়াতশেষহওয়াকেখুবমারাত্মকঅবস্থায়সৃষ্টিকরেনি, কেননাছায়ামূলথেকেবিচ্ছিন্ননয় (পৃষ্ঠা-১০)।

আয়াতশরীফ৬২ঃ৩পড়তেহবেপূর্ববর্তীআয়াত৬২ঃ২-এরসাথেমিলিয়ে, যাহাতেপবিত্রনবীসাল্লাল্লাহুআলাইহিওয়াসাল্লাম-এরদায়িত্বসম্বন্ধেউল্লেখকরাহয়েছে।এখানেবলাহয়েছে- যারাঅক্ষরজ্ঞানহীন (যারাতখনওঈমানআনেনি) তাদেরকেআয়াতশরীফপড়েশুনাতে, ওহীরব্যাখ্যা, ধর্মশাস্ত্রএবংইহারমধ্যস্থিতজ্ঞানসম্বন্ধেঅবহিতকরতে, ........) যেহেতুপূর্বেতাঁরাভুলভ্রান্তিতেছিলেন।

দুটিআয়াতশরীফে (৬২ঃ২এবং৬২ঃ৩) মাত্রএকজনরাসূলেরউল্লেখআছেঅর্থাৎমুহম্মদ (সাল্লাল্লাহুআলাইহিওয়াসাল্লাম)।ইহারসুস্পষ্টঅর্থহলোওহীদ্বারাপ্রাপ্ততাঁরজবানমোবারকেরকথাঅর্থাৎকোরআনশরীফএবংপ্রজ্ঞাতাঁরইন্তেকালেরপরপরবর্তীবংশধরদেরপর্যায়ক্রমেশিক্ষাদিতেথাকবে।আয়াতশরীদ্বয়েভবিষ্যতেরকোননবীসম্বন্ধেকিছুউল্লেখকরাহয়নি, যেহেতুনুবুওওয়াতেরদরজাবন্ধকরেদেয়াহয়েছে।      (অসমাপ্ত)

 ******************************************************

আবা-৫৬,৫৭,৫৮,৫৯,৬০


0 Comments: