কাদিয়ানি রদ -২৪

 


খতমে নুবুওওয়াত

প্রচার কেন্দ্র 

(ইসলামী শরীয়তের হুকুম মোতাবেক

যারা মুসলমান থেকে খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভূক্ত হয়

(যেমন- কাদিয়ানী, বাহাই  ইত্যাদি) তাদের তওবার জন্য নির্ধারিত সময়

৩দিন। এরপর তওবা না করলে,

তাদের শাস্তি মৃত্যুদন্ড )

(১)

কাদিয়ানী রদ!

(  পঞ্চম ভাগ )

                   বাহরুল উলূম, ফখরুল ফোক্বাহা, রইছুল মোহাদ্দেসীন, তাজুল মোফাসসেরীন, হাফেজে হাদীস, মুফতীয়ে আজম, পীরে কামিল, মুর্শিদে মোকাম্মেল হযরত মাওলানা আল্লামা শাহ্ সূফী মুহম্মদ রুহুল আমিন (রঃ) কর্তৃক প্রণীত কাদিয়ানী রদকিতাবখানা (৬ষ্ঠ খন্ডে সমাপ্ত) আমরা মাসিক আল বাইয়্যিনাত পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করছি। যাতে কাদিয়ানীদের সম্পর্কে সঠিক ধারণাসহ সমস্ত বাতিল ফেরকা থেকে আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের অনুসারীদের ঈমান আক্বীদার হিফাযত হয়। আল্লাহ্ পাক আমাদের প্রচেষ্টার কামিয়াবী দান করুন (আমিন)। ওনার কিতাব থেকে হুবহু উদ্ধৃত করা হলো, তবে তখনকার ভাষার সাথে বর্তমানে প্রচলিত ভাষার কিছুটা পার্থক্য রয়েছে।

 

(ধারাবাহিক)

মির্জ্জার আকায়েদ

(৯) মির্জ্জা ছাহেবের হায়েয ও বাচ্চা হওয়ার বিবরণঃ-

তাতেম্মায়-হকিকাতোল অহি, ১৪৩ ও আরবাইন ৪ নম্বর, ২৩ পৃষ্ঠা,

بابو الھی بخش صاحب کی نسبت یہ الھام ھے یریدون ان یروا طمثک (تا) بابو الھے بخش چاھتا ھے کہ تیرا حیض دیکھے یا کسے پلیدی اور ناپاکے پر اطلاع پائے مگر خدا تعالی تجھے اپنے انعامات دکھلائے گا جو مواتر ھونگے اور تجھہ میں  حیض نھین بلکہ وہ بچہ ھوگیا ھے جو بمنزلہ اطفال اللہ کے ھے-

বাবু এলাহি বখ্শ ছাহেবের সম্বন্ধে এই এলহাম হইয়াছিল, বাবু এলাহি বখ্শ তোমার হায়েজ দেখার কিম্বা কোন নাপাকি জানিবার ইচ্ছা করে,  কিন্তু খোদা তোমাকে নিজের এনয়াম সকল যাহা ধারাবাহিক হইতে থাকিবে, দেখাইবেন, আর তোমার মধ্যে হায়েজ নাই, বরং উহা বাচ্চা হইয়া গিয়াছে--যাহা আল্লাহ্ তায়ালার বাচ্চাদের তুল্য হইয়াছে।

(১০) মির্জ্জা সাহেবের আল্লাহ্ তায়ালার বীর্য্য হওয়ার বিবরণঃ (নাউজো-বিল্লাহ্ মিনহে)

আরবায়িন, নম্বর ২, ৩৯ পৃষ্ঠা,

وانت من ماءنا وهم من فشل.

এবং তুমি আমার পানি (বীর্য্য) হইতে, আর তাহারা শুষ্ক হইতে।

(১১) মির্জ্জা ছাহেবের খোদার বিবি হওয়ার দাবি (নাউ-জোঃ)

মির্জ্জা ছাহেবের খাস-মুরিদ কাজি ইয়ার মোহম্মদ ছাহেব বি, এল, প্লীডার অমৃতসরের রেয়াজ হেন্দ প্রেসে মুদ্রিত ইছলামি কোরাবাণিনামক ৩৪ নম্বর ত্রিকেটে লিখিয়াছে;

جیسا کہ حضرت مسیح موعود نے ایک موقعہ پر اپنی حالت یہ ظاھر فرمائی ھے کہ کشف کی حالت اپ پر اس طرح طاری ھوئے کہ گوبا اپ عورت ھین اور اللہ تعالی نے رجولیت کی طاقت کا اظھار فرمایا سمجھنے و الے کے و اسطے اشارہ ماف ھر، (استغفر اللہ)

যেরূপ হজরত প্রতিশ্রুত মছিহ (মির্জ্জা ছাহেব) একস্থানে নিজের এইরূপ অবস্থা প্রকাশ করিয়াছেন যে, কাশফের অবস্থায় তাহার এইরূপ অবস্থা হইয়াছিল যে, যেন তিনি স্ত্রীলোক হইয়াছেন, আর আল্লাহ্ তায়ালা পুরুষত্বের শক্তি (তাহার উপর) প্রকাশ করিলেন, বুদ্ধিমানের পক্ষে ইশারাই যথেষ্ট।” (আসতাগ্ফেরোল্লাহ্) (অসমাপ্ত)

 

ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক পাকিস্তান সুপ্রীম কোর্ট কর্তৃক

কাদিয়ানীদের- কাফেরঘোষণা!

অনুবাদক - আল্হাজ্ব মুহম্মদ হাবিবুল হক

(ধারাবাহিক)

          ইহাই সত্য নয় যে, মির্জা জিহাদ স্থগিত ঘোষণা করেছিলেন একটি সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য। এই দাবী খন্ডনেরও উল্লেখ করা হয়েছে, জিহাদ পূর্ণভাবে বন্ধ হবে। এই হাদীস শরীফ অনুযায়ী অল্পকালের জন্য জিহাদ নিষিদ্ধ হওয়া নির্দেশ গ্রহণযোগ্য নয়। 

ইহাও ঠিক নয় যে তিনি (মির্জা) জিহাদ স্থগিত ঘোষণা করেছিলেন একটি সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য। এই দাবী খন্ডনের উদ্ধৃতি দেয়া হয়েছে। মসীহ্ (আঃ)-এর আবির্ভাবের হাদীস শরীফে। জিহাদ সম্পূর্ণ বন্ধের উল্লেখ রয়েছে। এই হাদীস শরীফ অনুযায়ী অল্পকালের জন্য জিহাদ নিষিদ্ধ হওয়ার নির্দেশ গ্রহণযোগ্য নয়।

          বিষয়টি পাঞ্জাব প্রদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে বিচার করতে হবে। ঐ সময়ে সমস্ত সামন্ততান্ত্রিক বা জমিদার শ্রেণীর ব্যক্তিদের ঘৃণ্য ব্যক্তি হিসাবে মনে করা হতো, কেননা, তারা সরকারের সন্তুষ্টির জন্য যে কোন কাজ করতে প্রস্তুত ছিল। একজন ইংরেজের জন্য প্রতীক্ষা করাটা তারা গৌরব মনে করতো।

          মির্জা সাহেবের লিখিত পুস্তিকাসমূহ থেকে এটা সহজভাবেই বুঝা যায় যে, তার ভাইসহ তার পরিবার ব্রিটিশদের প্রতি তাদের অটল আনুগত্যতা অব্যাহত রেখেছিল।

          তার (মির্জা) লিখায় যেখানে ব্রিটিশদের উচ্চ প্রশংসা করা হয়েছে, তা উদ্দেশ্যবিহীন ছিলনা। উপরোক্ত উদাহরণ থেকে একটি উদ্দেশ্য পরিস্কার বুঝা যায় যে আহমদীরা ব্রিটিশ সরকারের অশ্রিতের অন্তর্ভূক্ত ছিল। মরিশানদের ব্যাপারে অপর উদাহরণটি প্রমাণ করে যে, তাহারা (আহমদীরা) ঐ সরকারের প্রশ্রয়প্রাপ্ত ছিল, কেননা আহমদী ধর্ম প্রচারকদের আহ্মদীয়া মত প্রচারে মুসলমানদের প্রতিবাদ সত্ত্বেও মরিশাস সরকার তাদের সরকারী মিলনায়তন সপ্তাহে তিনদিনের জন্য আহমদী ধর্ম প্রচারকদের আহমদী মত প্রচারে অনুমতি দিয়েছিল। ব্রিটিশ সরকারের প্রশংসায় মির্জা সাহেবের আচরণ এমনকি তোষামোদী এবং গোলামতুল্য আচরণ ও ছাড়িয়ে যায়। ইহাতে জনসাধারণের মনে সন্দেহ উদ্রেক হওয়া স্বাভাবিক যে, হয়তো সে (মির্জা) সরকার কর্তৃক মুসলিম উম্মাহ্র মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির কাজে নিয়োজিত হয়েছে এবং জনসাধারণকে সম্ভাব্য দাসত্বের পরিণতিতে নিয়ে যাওয়া বা ইহা দ্বারা সে (মির্জা) সরকার থেকে বিভিন্ন ফায়দা আদায় করছে।

          অন্যান্য আলেমগণ যে যুক্তি দিয়েছেন একই রায় এখানে প্রযোজ্য নয়, কেননা, ইহা সরকারের পক্ষে একটি খাপ ছাড়া মতামত বা খাপছাড়া রায় নয়, তবে প্রলোভনের চারণ ভূমির একটি লাগাতার প্রক্রিয়া।

          ইহাকে আকস্মিক ঘটনা মনে করা খুবই কঠিন, যে মির্জা সাহেব একজন মুজাদ্দিদ, প্রতিশ্রুত মসীহ্, মেহদী এবং এক নবীর দাবীদার হয়ে ব্রিটিশ সরকারের উচ্চ প্রশংসা করেছে। ত্রয়োদশ শতাব্দির শেষের দিকে ইরানে বাবী ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা মির্জা আলি মুহম্মদ বাব এরপরে হুসেইন আলী (বাহাই ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা) রাশিয়ান (নাস্তিক)দের উচ্চ প্রশংসা করেছিল। বাহাউল্লাহ্ মির্জা সাহেবের মত একইভাবে জিহাদ অবলুপ্তি ডিক্রি ঘোষণা করেছিল।

          এই বিষয়ের আলোচনার সমাপ্তিতে, এ প্রসঙ্গে আল্লামা মুহম্মদ ইকবাল-এর মতামত এবং যুক্তিসমূহ উল্লেখ করা প্রাসঙ্গিকঃ-

ইসলামে খিলাফত-এর ধারণায় কি কোন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান সংঘঠিত করা বুঝায়? কিভাবে ভারতীয় মুসলমানগণ এবং সংশ্লিষ্ট উদ্দেশ্যে তুরস্ক সাম্রাজ্যের বাইরের মুসলমানগণ তুরস্কের খেলাফতের সাথে সম্পর্কিত? ভারত কি (দারুল হরব) কাফের কবলিত বা দারুল-ইসলাম? ইসলাম ধর্মে জিহাদের মতবাদের প্রকৃত অর্থ কি? “তোমাদের মধ্য থেকে”- কোরআন শরীফের এই উক্তির অর্থ কি?

          আল্লাহ্ পাক-এর আনুগত্য কর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর আনুগত্য কর, যোগ্য ব্যক্তির আনুগত্য কর অর্থাৎ তোমাদের মধ্য থেকে সর্দার নিয়োজিত ব্যক্তির আনুগত্য কর। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে ইমাম মেহেদী (আঃ)-এর আগমনের ভবিষ্যত বাণী করেছেন তাতে বংশ সম্প্রদায়, জাতি প্রভৃতির (পুরুষানুক্রমিক) ঐতিহ্যের কি উল্লেখ করেছেন? পরবর্তীতে সুস্পষ্ট কারণে, এই সকলসহ অন্যান্য প্রশ্ন এসেছে এবং খুব তাড়াতাড়ি ইসলামী জগতে প্রসারিত হয়েছে।

          এই সকল প্রশ্নের জন্য যে মতবিরোধ সৃষ্টি হয়েছে, ইহা ভারতে ইসলামের ইতিহাসের একটি কৌতুহলী অধ্যায়। গল্পটি যথেষ্ট লম্বা এবং এখনও একজন শক্তিশালী লেখকের অপেক্ষায় রয়েছে। মুসলিম রাজনীতিবিদরা দৃষ্টি নিবদ্ধ রেখেছিল প্রধানতঃ পরিস্থিতির বাস্তবতার প্রতি, এবং ধর্ম বিষয়ক যুক্তি শক্তিশালী করার জন্য ওলামাদের এক অংশের সমর্থন হাছিল করতে সফল হয়েছিল এবং তারা মনে করেছিল উহা পরিস্থিতির জন্য উপযোগী হয়েছে। কিন্তু, কেবল যুক্তি দিয়ে বিশ্বাস জয় করা সহজ ছিলনা, যেখানে বহু শতাব্দী থেকে ভারতের ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা এক নীতি চেতনায় নিয়ন্ত্রিত ছিল। এই পরিবেশে যুক্তি গ্রহণীয় হয়, রাজনৈতিক উপযোগীতায় বা প্রকৃত (ধর্মগ্রন্থের) পাঠংশ বা ঐতিহ্যকে নতুন পারিপার্শ্বিক অবস্থা ইত্যাদির সাথে খাপ খাওয়ানো দ্বারা। জনসাধারণের নিকট উভয় পথই আবেদন রাখতে ব্যর্থ হবে। প্রকৃত ইসলাম ধর্মাবলম্বী জনগণের নিকট চূড়ান্ত আবেদন রাখতে সক্ষম হবে কেবলমাত্র ঐশ্বরিক কর্তৃত্ব।  (অসমাপ্ত)

****************************************************

খতমে নুবুওওয়াত প্রচার কেন্দ্র

খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারীরা কাফির

ইসলামী শরীয়তের হুকুম মুতাবেক যারা মুসলমান

থেকে খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভূক্ত হয়

(যেমন- কাদিয়ানী, বাহাই ইত্যাদি)

তাদের তওবার জন্য নির্ধারিত সময় ৩দিন এরপর তওবা না করলে তাদের শাস্তি মৃত্যুদ-

 

কাদিয়ানী রদ! (১)

 

(পঞ্চম ভাগ)

বাহরুল উলূম, ফখরুল ফোক্বাহা, রইছুল মোহাদ্দেসীন, তাজুল মোফাসসেরীন, হাফেজে হাদীস, মুফতীয়ে আজম, পীরে কামিল, মুর্শিদে মোকাম্মেল হযরত মাওলানা আল্লামা শাহ্ সূফী মুহম্মদ রুহুল আমিন (রঃ) কর্তৃক প্রণীত কাদিয়ানী রদকিতাবখানা (৬ষ্ঠ খন্ডে সমাপ্ত) আমরা মাসিক আল বাইয়্যিনাত পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করছি। যাতে কাদিয়ানীদের সম্পর্কে সঠিক ধারণাসহ সমস্ত বাতিল ফেরকা থেকে আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের অনুসারীদের ঈমান আক্বীদার হিফাযত হয়। আল্লাহ্ পাক আমাদের প্রচেষ্টার কামিয়াবী দান করুন (আমিন)। ওনার কিতাব থেকে হুবহু উদ্ধৃত করা হলো, তবে তখনকার ভাষার সাথে বর্তমানে প্রচলিত ভাষার কিছুটা পার্থক্য রয়েছে।

 

(ধারাবাহিক)

মির্জ্জার আকায়েদ

(১২) মির্জ্জা ছাহেবের গর্ভস্থিতি হওয়ার দাবি:-

কিস্তিয়ে নূহ, ৪৬ : ৪৭ পৃষ্ঠা:

مریم کی طرح عیسے کی روح مجھہ میں نفخ کی گئی اور استعارہ کے رنگ  مین مجھے حاملہ تھیر ایا گیا- اور اخر کئی مھینہ کے بعد جودس مھینے سے زیادہ نھین بذریعہ اس الھام کے ----- مجھے مریم سے بنا یا گیا-

মরয়েমের ন্যায় ইছার রুহ আমার মধ্যে ফুৎকার করা হইল, রূপকভাবে আমাকে গর্ভিণী স্থির করা হইল, অবশেষে কয়েক মাসের পরে যাহা দশ মাসের অতিরিক্ত নহে, এই এলহামের দ্বারা আমাকে মরয়েমে হইতে ইছাতে পরিণত করা হইল।

মির্জ্জা ছাহেব মাতা হইলেন, বাচ্চা হইলেন, আবার বাচ্চার পিতাও হইলেন, ইহা আশ্চার্য্যজনক কথা নহে কি?

(১৩) মির্জ্জা ছাহেবের প্রসব বেদনা:- কিস্তিয়ে নূহ ৪৬ : ৪৭ পৃষ্ঠা:

پھر مریم کو جو مراد اس عاجز سے ھے دردزہ تنہ کھجور کی طرف لے ائی-

তৎপরে প্রসব বেদনা মরয়েমকে অর্থাৎ আমাকে (মির্জ্জা ছাহেবকে) খর্জ্জুর বৃক্ষের কা-ের দিকে আনয়ন করিল।

মির্জ্জায়ি বন্ধুগণ, এই সমস্ত কি আপনাদের পীর মোর্শেদের হকিকত ও মারেফত? একবার মির্জ্জা ছাহেবের খোদা তাহাকে সন্তান বলেন, আর একবার তাহাকে স্ত্রী রূপে ব্যবহার করেন, লজ্জার কথা, ইসলামে কি এইরূপ গুপ্ততত্ত্বলির অভাব ছিল, ছিল যাহা মির্জ্জা ছাহেব আসিয়া পূর্ণ করিয়াছেন? এইরূপ বাতীল মতগুলিতে কি ইসলামের গৌরব বৃদ্ধি হইতেছে? এইরূপ কলূষিত ( استعاره مجاز) রূপক বর্ণনার কি আবশ্যক হইয়াছে?

(১৪) মির্জ্জা ছাহেবের খোদা হওয়ার দাবি:- আইনায় কামালাতে ইছলাম, ৪৪৯ পৃষ্ঠা:।

ورايتنى فى المنام عين الله وتيقنت اننى هو

এবং আমি স্বপ্নযোগে নিজেকে স্বয়ং খোদা দেখিলাম এবং বিশ্বাস করিলাম যে, নিশ্চয় আমি উক্ত খোদা।

(১৫) মির্জ্জা ছাহেবের খোদার পিতা হওয়ার দাবি-

হাকিকাতোল অহি, ৭৪ “(খোদা বলিতেছেন) তুমি আমা হইতে এবং আমি তোমা হইতে।

আইনায় কামালতে ইছলাম, ৫৩০, ৫৩১ পৃষ্ঠা:

فرزند دلبند كرامى أرجمند مظهز الاول والاخر، مظهر الحق والعلاء كان الله نزل من السماء،

এস্থলে মির্জ্জা ছাহেব নিজের পুত্রের সম্বন্ধে লিখিতেছেন, “যেন স্বয়ং খোদা আছমান হইতে নামিয়া আসিয়াছেন।” (চলবে)

 

ইসলামী শরীয়ত মুতাবেক পাকিস্তান সুপ্রীম

কোর্ট কর্তৃক কাদিয়ানীদের কাফিরঘোষণা! (২)

 

(ধারাবাহিক)

(২) কুরআন শরীফ বুঝার নিয়ম বা নীতিসমূহ। (৩) কুরআন শরীফ-এর প্রকৃত অর্থ। (৪) ধর্মীয় ঘোষণা ও আমল করার অধিকারের উদ্দেশ্য। (৫) ব্যাপকভাবে স্বধর্মের প্রচারের অধিকার। (৬) পাকিস্তান হওয়ার পূর্বে এবং পরে, কাদিয়ানী এবং মুসলমানদের মধ্যে সম্পর্কিত চুক্তিপত্র সমূহের ফলাফল- যাতে তাদের (কাদিয়ানীদের) প্রচার অধিকারসহ ধর্ম পালনে পূর্ণ স্বাধীনতার নিশ্চয়তার বিধান রয়েছে।

মি: মুজিবুর রহমান আর্টিকেল ২০৩- ডি এর উল্লেখে যুক্তি দেখান যে, রাষ্ট্র ফেডারেল শরীয়ত কোর্টকে যে ক্ষমতা দেয়া হয়েছে তার সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তিনি বলেন, কুরআন এবং সুন্নাহ অনুযায়ী অপরাধ করার ক্ষমতা বা মহান আল্লাহ পাক এবং উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অবাধ্যতা সংশ্লিষ্ট কোন আদেশ মানার নির্দেশ নাই। ইহা ঐ বিখ্যাত ঐতিহানুযায়ী, لاطاعة فى عصيم الله

পাপের বাধ্যতা নাই, (বোখারী কিতাবই ইহকাম ভলিউম-২ পৃষ্ঠা ১০৫৭, ১০৫৮ এবং ১০৭৮) এবং ঐরূপ অন্যান্য ঐতিহ্যানুযায়ী। সূরা ৪ এর ৫৯ নম্বর আয়াত শরীফ-এর উপর আস্থা রেখে,

ياايها الذين امنوا اطيعوا الله واطيعوا الرسول واولى الامر منكم فان تنازعتم فى شيئ فردوه الى الله والرسول ان كنتم تؤمنون بالله واليوم الاخر ذلك خير واحسن نأويلا.

অর্থ:- হে ঈমানদারগণ! মহান আল্লাহ পাক উনার নির্দেশ মান, নির্দেশ মান রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং তোমাদের মধ্যে যারা মহান আল্লাহ পাক উনার মতে মত এবং রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পথে পথ। তারপর যদি তোমরা কোন বিষয়ে বিবাদে প্রবৃত্ত হয়ে পড়, তাহলে তা মহান আল্লাহ পাক ও উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি প্রত্যার্পন কর-যদি তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনার ও কিয়ামত দিবসের উপর বিশ্বাসী হয়ে থাক। আর এটাই কল্যাণকর এবং পরিনতির দিক দিয়ে উত্তম।

মি: মুজিবুর রহমান বলেন, এই আয়াতে শাসন কর্তৃপক্ষ ও শাসিতদের বিরোধের উল্লেখ করা হয়েছে। তিনি বলেন, এই আয়াতে উলুল আমরদ্বারা বুঝানো হয়েছে, সেই ব্যক্তিকে, যিনি কর্তৃত্বের অধিকারী (মহান আল্লাহ পাক উনার মতে মত এবং হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পথে পথ এবং কোন আলিম বা কোন ধর্মীয় প-িতকে বুঝানো হয়নি। তিনি আরও বলেন, অনুচ্ছেদ ২০৩-ডি তে বিচক্ষণতার ব্যাখ্যায় উল্লেখ করা হয়েছে- মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং রাষ্ট্রসহ অন্যান্যের আনুগত্যের ব্যাপারে বির্তক পরিহারের জ্ঞান। প্রথম প্রস্তাবের সমর্থনে তিনি কয়েকটি পুস্তকের উদ্ধৃতি দেন।

দ্বিতীয় প্রস্তাবের সমর্থনে তিনি তরজমানুল কুরআন ভলিউম-১ এর ৯৮ পৃষ্ঠায় কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এবং সূরা ৪ এর ৫৯ নম্বর আয়াত শরীফ-এর নির্দেশ উল্লেখ বলেন যে, মত পার্থক্য সমাধানে একটি ইনষ্টিটিউশন থাকতে হবে। এবং .........

(অর্থ: যদি তোমাদের কোন বিষয়ে মত পার্থক্য হয় তবে মহান আল্লাহ পাক এবং উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট সিদ্ধান্তের জন্য প্রেরণ কর) আরো বলেন যে, এই কোটই সেরূপ একটি ইনষ্টিটিউশন।

উলুল আমর এর ব্যাখ্যার জন্য কোন প্রস্তুকের উদ্ধৃতির প্রয়োজন নাই, বা এ ব্যাপারে কোন আলোচনারও প্রয়োজন নাই যেহেতু ইহা সমালোচনার উর্ধ্বে এবং এ প্রসঙ্গে এই কোর্টেই পধংব হড়. ং. ঢ় শ-২: ১৯৮২ ঐ মতের পক্ষেই রায় হয়েছে। এই মত গ্রহণ করা হয়েছে যে, উলুল আমর তিনি; যিনি আইন প্রণয়ন, প্রশাসন এবং বিচার সংক্রান্ত বিষয়ে কর্তৃত্বের অধিকারী।

সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২০৩-ডি তে বলা হয়েছে- এ কোর্টের দায়িত্ব হল কোর্টের এখতিয়ার ভুক্ত কোন আইনে কুরআন এবং হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুন্নাহ আনুযায়ী অমিল এবং বিরোধীতা দূর করা। মি: মুজিবুর রহমানের এই যুক্তির প্রতি তুচ্ছ আপত্তি তোলার কিছু নাই। পাপ বা অবৈধতার প্রতি বাধ্যতা নাই, তার এই শর্ত সমালোচনার অতীত।

অতি সম্প্রতি এই কোর্টে প্রেস এবং পাবলিকেশনস অর্ডিনেশন ১৯৬৩ এবং পাঞ্জাব, সিন্ধু উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ এবং বেলুচিস্তান সিভিল সার্ভেন্টস এ্যাক্টের উপর এই বিষয়ে এবং মুসলিম রাষ্ট্রের আইন প্রণয়ন সংক্রান্ত ক্ষমতার সীমা সম্বন্ধে শুনানি হয়েছে এবং রায় হয়েছে। (চলবে)

 **************************************************************

(১)

খতমে নুবুওওয়াত প্রচার কেন্দ্র

খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারীরা কাফির

ইসলামী শরীয়তের হুকুম মোতাবেক যারা মুসলমান থেকে

খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভূক্ত হয়

(যেমন- কাদিয়ানী, বাহাই  ইত্যাদি)

তাদের তওবার জন্য নির্ধারিত সময় ৩দিন। এরপর তওবা না করলে  তাদের শাস্তি মৃত্যুদন্ড )

 

কাদিয়ানী রদ!

(পঞ্চম ভাগ)

          মুবাহিছে আযম, বাহরুল উলূম, ফখরুল ফোক্বাহা, রইছুল মোহাদ্দেসীন, তাজুল মোফাসসেরীন, হাফেজে হাদীস, মুফতীয়ে আজম, পীরে কামিল, মুর্শিদে মোকাম্মেল হযরত মাওলানা আল্লামা শাহ্ সূফী মুহম্মদ রুহুল আমিন (রঃ) কর্তৃক প্রণীত কাদিয়ানী রদকিতাবখানা (৬ষ্ঠ খন্ডে সমাপ্ত) আমরা মাসিক আল বাইয়্যিনাত পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করছি। যাতে কাদিয়ানীদের সম্পর্কে সঠিক ধারণাসহ সমস্ত বাতিল ফেরকা থেকে আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের অনুসারীদের ঈমান আক্বীদার হিফাযত হয়। আল্লাহ্ পাক আমাদের প্রচেষ্টার কামিয়াবী দান করুন (আমিন)। ওনার কিতাব থেকে হুবহু উদ্ধৃত করা হলো, তবে তখনকার ভাষার সাথে বর্তমানে প্রচলিত ভাষার কিছুটা পার্থক্য রয়েছে।

 

তৃতীয় অধ্যায়

মির্জ্জা ছাহেবের মিথ্যা বলার বিবরণঃ

কোরআন শরীফে আছে, لعنة الله على الكاذبين.

          “মিথ্যাবাদিদিগের উপর আল্লাহতায়ালার লানত।

মির্জ্জা ছাহেব তাতেম্মায়ে-হকিকাতোল-অহিকেতাবের ২৬ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছেন-

جھوٹ بولنے سے بدتر دنیا میں اور کوئی براکام نھین-

দুনইয়াতে মিথ্যা বলা অপেক্ষা সমধিক মন্দ অন্য কোন অহিত কার্য্য নাই।

আরও তিনি জমিমায়-আঞ্জামে-আতহামের ৫০ পৃষ্ঠায় মিথ্যা কথা বলা বে-ইমানি ও বিষ্ঠা ভক্ষণের তুল্য বলিয়াছেন।

          তিনি চশমায়-মারেফাতের ২২২ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছেন-

ظاھر ھے کہ جب ایک بات مین کرتی جھوتا ٹابت ھو جائے تو پھر دوسری باتون مین بھی اس پر اعتبار نھین رھتا-

যখন কোন ব্যক্তি এক কথায় মিথ্যাবদী সাব্যস্ত হইয়া যায়, তখন অন্যান্য কথায় তাহার উপার বিশ্বাস করা যাইতে পারে না।

          তিনি রিভিউ ২য় খন্ড ৪০৯ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছেন-

جو لوگ دنیا کی اصلاح کے لئے اتے ھین ان کا فرض ھوتا ھے کہ سچائی کو زمین پر پھیلادین اور جھوٹ کی بیخکنی کرین- وہ سچائی کے دوست اور جھوٹ کے دشمن ھوتے ھین-

যাহারা দুনইয়ার সংস্কার করার জন্য আসিয়া থাকেন, তাহাদের পক্ষে জমিতেসত্য প্রচার করা ও মিথ্যার মূলোচ্ছেদ করা ফরজ হইয়া থাকে, তাঁহারা সত্যের মিত্র ও মিথ্যার শত্রু হইয়া থাকে।

          মির্জ্জা ছাহেরব নিজের পুস্তকগুলিতে বহু মিথ্যা কথা যোগ করিয়াছেন এবং নির্ভীক চিত্তে মিথ্যাভাবে আছমানি কেতাবগুলির বরাত দিয়া থাকেন।

          (১) এজাজে-আহমদী, ১পৃষ্ঠা-

اگر ان پیشگونیون کے پورا ھوتے کے تمام گواہ اگتھے کئے جائین تو مین خیال کرتا ھون کہ وہ ساٹھہ لاکھہ سے بھی زیادہ ھونگے-

          “যদি এই ভবিষ্যদ্বাণী সমূহের পূর্ণ হওয়ার সমস্ত সাক্ষীকে একত্রিত করা হয়, তবে আমি ধারণা করি যে, তৎসমুদয় ৬০ লক্ষের অধিক হইবে।”  

                   মির্জ্জা ছাহেবের অনেক ভবিষ্যদ্বাণী পূর্ণ না হওয়ার প্রমাণ পরে জানিতে পারিবেন, আর তিনি যে ভবিষ্যদ্বাণীগুলিকে সত্য মিথ্যার নিদর্শন ও মাপকাঠী বলিয়া পেশ করিয়াছিলেন,তৎসমুদয়ের একটীও পূর্ণ হয় নাই, কাজেই ভ্রান্তিমূলক ভবিষ্যদ্বাণীগুলির পুর্ণ হওয়ার দাবি করা প্রথম মিথ্যা।

          দ্বিতীয়, তিনি নজুলোল-মছিহ কেতাবের ১২১ পৃষ্ঠায় নিজের মুরিদগণের সংখ্যা ৭০ সহস্র বলিয়া প্রকাশ করিয়াছেন। যখন তাহার মুরিদগণের সংখ্যা ৭০ সহস্র হইল, তখন তাহার  ভবিষ্যদ্বাণী সকলের সাক্ষিগণের সংখ্যা ৬০ লক্ষ হইবে কিরূপে? ইহা মির্জ্জা ছাহেবের জ্বলন্ত মিথ্যা কথা নহে কি?

          (২) তিনি শাহাদাতোল-কোর-আনের ৪১ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছেন-

مثلا صحیح بخاری کی وہ حدیثین جن مین اخری زمانہ مین بعض خلیفون کی نسبت خبردی گئی ھے خاصکر وہ خلیفہ جسکی نسبت بخاری مین لکھا ھے کہ اسمان سے اسکے لئے اواز اشیگی کہ ھذا خلیفۃ اللہ الخمدی-

          “দৃষ্টান্ত স্থলে ছহিহ বোখারির যে হাদিছগুলিতে শেষ জামানার কোন খলিফার সম্বন্ধে সংবাদ দেওয়া হইয়াছে, বিশেষতঃ যে খলিফার সম্বন্ধে বোখারিতে লিখিত আছে যে, আছমান হইতে তাহার জন্য শব্দ হইবে, এই ব্যক্তি আল্লাহতায়ালার খলিফা মাহদী।

          ছহিহ বোখারিতে এইরূপ হাদিছ নাই, মির্জ্জা ছাহেব সাধারণ লোকদিগকে ধোকা দিয়া ভ্রান্ত করা উদ্দেশ্যে এইরূপ লিখিয়াছেন, ইহা জ্বলন্ত মিথ্যা নহে তা কি?

          যদি কোন কাদেয়ানি কিম্বা আহমদী ছহিহ বোখারি হইতে এই হাদিছটী বাহির করিয়া দিতে পারেন, তবে সহস্র টাকা পুরষ্কার পাইবেন।

          (৩) তিনি ৩ নম্বর আরবাইনের ১১ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছেন-

مولوی غلام دستگیر نصوری نے اپنے کتاب مین اور مولوی اسمعیل علی کرتھہ و الے نے میری نسبت قطعی حکم لگایا کہ اگر وہ کاذب ھے  تو ھم سے پھے مریگا-

          ‘‘মৌলবি গোলাম দস্তগির কছুরি ছাহেব নিজের কেতাবে এবং আলিগড় নিবাসি মৌলবী এছমাইল আমার সম্বন্ধে নিশ্চিত হুকুম লাগাইয়াছেন যে, যদি মির্জ্জা ছাহেব মিথ্যাাবাদী হন, তবে আমাদের অগ্রে মরিবেন।

          উক্ত মৌলবি ছাহেবদ্বয় নিজেদের কেতাবে এইরূপ লেখেন নাই, ইহা মির্জ্জা ছাহেবের জ্বলন্ত মিথ্যা কথা, তিনি এইরূপ মিথ্যা কথা লিখিয়া লোকদিগকে ধোকা দিয়া গোমরাহ করিয়া থাকেন।

           কোন মির্জ্জায়ি ইহার সত্যতা প্রমাণ করিতে পারেন কি?

          (৪) তিনি হকিকাতোল-অহির ২৯ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছেন-

یہ بات بالکل غیر معقول ھے کہ انحضرت صلی اللہ علیہ وسلبم کے بعد کوئی ایسا نپی انے و الاھے کہ جب لوگ نمز کے لئے مساجد کیطرف دو ژینکے تو وہ کلیسیا کی طرف بھاگے گا- اور جب لوگ قران شریف پر ھینگے تو وہ انجیل گھول بیتھے گا اور جب لوگ عبادت کے وقت بیت اللہ کی طرف منھہ کرینگے تو وہ بیت المقدس کی طرف مترجہ ھوگا اور شراب پئے گا اور سور کا کو شت کھائیگا اور اسلام کے حلال و حرام کی  کچھہ پروا نھین رکھے گا-

ইহা নিতান্ত বিবেক-বিরুদ্ধ মত যে, হজরত নবি (ছাঃ) এর পরে এরূপ কোন নবী আসিবেন যে, লোকে নামাজের জন্য মছজিদ সমূহের দিকে ধাবিত হইবেন, আর তিনি গির্জ্জা ঘরের দিকে পলায়ন করিবেন,যখন লোকে কোর-আন পড়িবেন, তখন তিনি ইঞ্জিল খুলিয়া বসিবেন, যখন লোকে এবাদতের সময় কাবা শরিফের দিকে মুখ করিবেন, মদ পান করিবেন, শূকরের মংস ভক্ষণ করিবেনএবং ইছলামের হালাল ও হারামের কোন পরওয়া করিবেন না।

          এই এবারতের সমস্ত কথাই মিথ্যা, ১৩শ বৎসর হইতে মুছলমানগণের এই আকিদা চলিয়া আসিতেছে যে, হজরত ইছা (আঃ) দ্বিতীয়বার আছমান হইতে নাজিল হওয়ার পরে শরিয়তে-ইসলাম অনুসারে আমল করিবেন, মির্জ্জা ছাহেব কোন কেতাব হইতে উপরোক্ত কথাগুলি উদ্ধৃত করিয়াছেন? হজরত ইছা (আঃ)মদ পান করিবেন ও শূকর ভক্ষণ করিবেন, মির্জ্জায়িগণ ইহার কোন প্রমাণ দিতে পারেন কি?

উল্লিখিত সমস্ত কথাই মিথ্যা ও প্রলাপোক্তি। (অসমাপ্ত)

 

 

ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক পাকিস্তান সুপ্রীম

কোর্ট কর্তৃক কাদিয়ানীদের কাফেরষোষণা! (২)

অনুবাদক- আলহাজ্ব মুহম্মদ হাবিবুল হক

 

দ্বিতীয় বিষয়ে তিনি যুক্তি দেখান যে, কোরআন শরীফ এবং হাদীস শরীফে যা আইন সঙ্গত ঘোষণা করা হয়েছে তা রাষ্ট্র কর্তৃক বেআইনী ষোষণা করতে পারেনা এবং এজন্য নির্দিষ্ট আয়াত শরীফের প্রতি লক্ষ্য করতে হবে। তিনি তাকলিক উপেক্ষা করার বিষয়ে জোর দেন।

          ইহা বাস্তবে কাদিয়ানীদের অমুসলিম ষোষণায় সংসদের ক্ষমতার প্রতি পরোক্ষ চ্যালেঞ্জ স্বরূপ। আল্লামা মুহম্মদ ইকবাল যেমন বলেছেন, এ বিষয়ে সংক্ষিপ্ত জবাব হল, ইহা একটি আইন সংক্রান্ত বিষয়। আইন প্রণয়নকারী কর্তৃপক্ষ- সংসদ, তার ক্ষমতার মাধ্যমে সংবিধানের অনুচ্ছেদ- ২৬০-এর ষোষণা দেয়। আল্লামা মুহম্মদ ইকবাল বলেনঃ

প্রশ্ন হল, যখন কোন ব্যক্তি বা কমিউনিটি ইসলামের সদস্য থাকার যোগ্যতা হারায়, ইহা কি শুধু আইন সংক্রান্ত প্রশ্নে- এবং ইহার সমাধান হওয়া উচিত ইসলামের অবকাঠামোর নীতিতে।

          ফেডারেল গভর্ণমেন্টের উপদেষ্টা শাহ্ গিয়াস মুহম্মদ ও অনুরূপ যুক্তির উল্লেখ করেছিলেন। প্রাদেশিক কর্মচারী আইন নিরীক্ষাকালেই এই আদালত এই বিষয়টি এবং আদালতের এখতিয়ারের সীমানা নির্দ্ধারণ করেছেন। সিদ্ধান্ত  হয় যে আদালতের এখতিয়ার কোরআন শরীফ এবং হাদীস শরীফের কোন নির্দিষ্ট আয়াত দ্বারা সীমাবদ্ধ নয়। কোন আইন বা চুক্তি বাতিল করার পরীক্ষা-নিরীক্ষার সময় আদালত কোরআন শরীফ ও হাদীস শরীফের বিধানও গ্রহণ করতে পারে। মুহম্মদ রিয়াজ এবং অন্যান্য বনাম ফেডারেল গভর্ণমেন্ট মোকদ্দমায় (চখউ, ১৯৮০ ঋঝঈও) আদালত এই রায় ষোষণা দেয় যে, জনসাধারণ সম্বন্ধীয় আইন তকলীদের মতবাদ দ্বারা সীমাবদ্ধ নয়। মিঃ মুজিবুর রহমানের চেতনা উপশম হওয়ার জন্য ইহাই যথেষ্ট।

অতঃপর মিঃ মুজিবুর রহমান কোরআন শরীফের মূলতত্ত্ব বুঝার প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন। তিনি বলেন প্রথমতঃ মূলতত্ত্ব হল কোরআন শরীফের ব্যাখ্যা আয়াত শরীফের নাযিলের প্রেক্ষাপটেই করতে হবে, যেহেতু ইহা প্রত্যেক বিষয়বস্তুর স্বতন্ত্র অর্থ হয়ে থাকে। পুনরুক্তি করার উদ্দেশ্য হল বিষয়বস্তু মানুষের মনে বদ্ধমূল করে দেয়া। কোন সময়ে, কোন স্থানে বিষয়বস্তু সংক্ষেপে বলা হয়েছে এবং অন্যত্র তা বিশদভাবে বিস্তারিত বলা হয়েছে।

তিনি কোরআন শরীফের কিছু আয়াত উল্লেখ করেন। (সূরা- ......... ৬, আয়াত/১০৬)

وكذالك نصرف الايات وليقولوا درست ولنيينه لقوم يعلمون.

অর্থঃ-  এবং এইভাবে আমি নিদর্শনাবলী বিভিন্নভাবে বর্ণনা করি- (মুহম্মদ আপনার প্রতি) যেন তারা না বলে যে, আপনি তো পড়ে নিয়েছেন এবং যেন আমি ইহা জ্ঞান সম্পন্নদের জন্য সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করে দিই।

(সূরা-১৭, আয়াত/৮৯)

ولقد صرفنا لناس فى هذا القران من كل مثل فابى اكثر الناس الا كفورا.

অর্থঃ- এবং আমি মানবমন্ডলীর জন্য নিশ্চয়ই এই কোরআনে প্রত্যেক উপমা বিভিন্নভাবে, বিশদ বর্ণনা করেছি, কিন্তু অধিকাংশ মানুষ অস্বীকার না করে থাকেনি।

(সূরা-১৭, আয়াত/৪১)

ولقد صرفنا فى هذا القران ليذكرو وما يزيدهم الا نفورا.

অর্থঃ- আমি এই কোরআন বিভিন্নভাবে বর্ণনা করেছি যেন তারা চিন্তা করে অথচ এতে তাদের কেবল বিমূখতাই বেড়েছে। (সূরা-১৮, আয়াত/৫৪)

ولقد صرفنا فى هذا القران للناس من كل مثل وكان الانسان اكثر شئى جدلا.

অর্থঃ-  নিশ্চয়ই আমি এ কোরআনে মানুষকে নানাভাবে বিভিন্ন উদাহরণ দ্বারা আমার বাণী বুঝিয়েছি। সৃষ্টজীবের মধ্যে মানুষ সর্বাধিক তর্ক প্রিয়।” (অসমাপ্ত)

 ********************************************************************************

খতমে নুবুওওয়াত প্রচার কেন্দ্র

খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারীরা কাফির

 ইসলামী শরীয়তের হুকুম মোতাবেক যারা মুসলমান

থেকে খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভূক্ত হয়

(যেমন- কাদিয়ানী, বাহাই  ইত্যাদি)

তাদের তওবার জন্য নির্ধারিত সময় ৩দিন। এরপর তওবা না করলে তাদের শাস্তি মৃত্যুদন্ড

 

          (৫) মির্জ্জা ছাহেব জঙ্গে-মোকাদ্দছের ১৮৮/১৮৯ পৃষ্ঠায় মিষ্টার আব্দুল্লাহ আথাম খৃষ্টানের সম্বন্ধে লিখিয়াছেন-

جو فریق عمدا جھوژ کو اختیار کر رھا ھے اور سچے خدا کو چھور رھا ھے اور عاجز انسان کو خدا بنا رھا ھے وہ انھی دنون مباحثہ کے لحاظ  سے یعنی فی دن ایک مھینہ لیکر یعنے ১৫ ماہ تک ھاویہ مین کرا یا جاویگا اور اس کو سخت ذلت پھنچے گی  بشر طیکہ حق کی طرف رجوع نہ کرے -

          “যে দল জ্ঞাতসারে মিথ্যা অবলম্বন করিতেছে, সত্য খোদাকে ত্যাগ করিতেছে এবং অক্ষম মনুষ্যকে খোদা বানাইতেছে, সেই দল এই তর্কের দিবসগুলির অনুপাতে অর্থাৎ প্রত্যেক দিবসের পরিবর্ত্তে এক একমাস ধরিয়া ১৫ মাস পর্যন্ত হাবিয়াতে’  নিক্ষেপ করা হইবে এবং তাহার উপর কঠিন লাঞ্ছনা উপস্থিত হইবে- যদি সে সত্যের দিক রুজু না করে।

          আর তিনি হকিকাতোল-অহির ১৮৫ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছেন-

اتھم کی بابت پیشگوئی کے لفظ یہ تھے کہ وہ ১৫ مھینے مین ھلاک ھوگا-

          “আথামের সম্বন্ধে ভবিষ্যদ্বাণীর শব্দ এই ছিল যে, সে ১৫ মাসের মধ্যে ধ্বংস প্রাপ্ত হইবে।

          উক্ত এবারতদ্বয়ের মর্ম্ম এই যে, মিষ্টার আথাম ১৫ মাসের মধ্যে মরিয়া যাইবে, কিন্তু এই স্পষ্ট বিবরণের বিপরীতে কিস্তিয়ে নূহের ৬ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছেন-

پیشکوئی مین یہ بیان تھا کہ جو شخس  اپنے عقیدے کے روسے جھوزا ھے وہ پھلے مریگا-

          ‘‘ভবিষ্যদ্বাণীর বিবরণ এই ছিল যে, যে ব্যক্তি নিজের আকিদার হিসাবে মিথ্যাবাদী ছিল, সে প্রথমে মরিবে।

          মিষ্টার আথাম ১৫ মাসের মধ্যে মৃত্যুপ্রাপ্ত হন নাই, এবং মির্জ্জা ছাহেবের ভবিষ্যদ্বাণী বিফল হইয়াছে, এই লজ্জা নিবারণের জন্য ১৫ মাসের মধ্যে মরিবেস্থলে প্রথম মরিবেলেখা হইয়াছে, ইহা জ্বলন্ত মিথ্যা কথা নহে কি?

          (৬) মৌলবী আবদুল করিম ছাহেব মির্জ্জা ছাহেবের পরম ভক্তিভাজন মুরিদ ছিলেন, তিনি কারবাঙ্কল (পৃষ্ঠব্রণ) রোগে আক্রান্ত হইলে, মির্জ্জা ছাহেব তাঁহার সুস্থতার জন্য বিশেষভাবে দোয়া করিয়াছিলেন, দোয়ার ফলাফল সম্বন্ধে ১৯০৫ সালের ৫ই সেপটেম্বর তারিখের আল-হাকামপত্রিকায় লিখিয়াছেন-

اس دعا مین مین نے بھت تکلیف اطتھائییھانتک کہ اللہ تعالی نے بشارت نازل کی اور عبد اللہ سنوری و الا خواب دیکھا جس سے نھایت درجہ غمناک دل کو تشفی ھوئی-

          “এই দোয়া সম্বন্ধে আমি বহু কষ্ট স্বীকার করিয়াছি, এমন কি আল্লাহতায়ালা সুসংবাদ নাজিল করিলেন এবং আবদুল্লাহ ছোনওয়ারি স্বপ¦ দেখিল যাহাতে নিতান্ত ব্যথিত হৃদয় শান্তি প্রাপ্ত হইল।”        

          পাঠক, মির্জ্জা ছাহেব এই স্থলে মৌলবী আবদুল করিম ছাহেবের রোগমুক্ত হওয়ার ভবিষ্যদ্বাণী করিয়াছেন, কিন্তু মৌলবী আবদুল করিম ছাহেব উক্ত সালের ১১ই অক্টোবর তারিখে উক্ত পীড়ায় এন্তেকাল করেন এবং মির্জ্জা ছাহেবের ভবিষ্যদ্বাণী নিষ্ফল হইয়া গেল।

          মির্জ্জা ছাহেব এই লজ্জা নিবারণ হেতু হকিকাতোল-অহির ৩২৬ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছেন-

ایک مخلص دوست یعنے مولوی عبد الکریم صاحب مرحوم اس بیماری کا ربنکل یعنے سرطان سے فرت ھوکئے تھے- ان کے لئے مین نے بھت دعا کی تھی مکر ایک الھام بھی ان کے لئے بسلی بخش نہ تھا-

এক খাঁটি বন্ধূ অর্থাৎ মৌলবী আবদুল করিম মরহুম ছাহেব এই কারবাঙ্কল রোগে এন্তেকাল করিয়া গিয়াছেন, তাহার জন্য আমি বহু দোয়া করিয়াছিলাম, কিন্তু তাহার সম্বন্ধে শান্তিদায়ক একটী এলহামও প্রাপ্ত হই নাই।

পাঠক, মির্জ্জা ছাহেবের ইহা জ্বলন্ত মিথ্যা কথা নহে কি?  (অসমাপ্ত)

 

 

ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক পাকিস্তান সুপ্রীম কোর্ট কর্তৃক

 কাদিয়ানীদের কাফিরষোষণা! (২)

অনুবাদক- আলহাজ্ব মুহম্মদ হাবিবুল হক

 

(ধারাবাহিক)

          উপরোক্ত নীতি বা তত্ত্ব সম্বন্ধে কোন মতবিরোধ নাই। মিঃ মুজিবুর রহমান তার যুক্তি উপস্থাপনায় কোরআন শরীফের বিভিন্ন আয়াতের প্রতি আমাদের বিশেষ মনযোগ আকর্ষণ করছিলেন, যেগুলো তার মতে ওহী নাযিলের কারণ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ছিলনা। এবং ঐগুলোর ব্যাপ্তি সার্বজনীন মনে করতে হবে।

          দ্বিতীয় নীতি হিসাবে তিনি যুক্তি উপস্থাপন করেন যে, আয়াত শরীফের অর্থ বুঝতে হলে আয়াত শরীফ নাযিলের পরিস্থিতি জানতে হবে। ইহা আয়াত শরীফ বুঝতে সাহায্য করে যদিও এর অর্থ ওহী নাযিলের পরিস্থিতির মধ্যে সীমাবদ্ধ বা বিশেষ ব্যাপাররূপে উল্লেখ্য নয়। ইহার প্রয়োগের ব্যাপ্তি সাধারণভাবে কম করা হয়নি। ইহা নীতি নির্দেশিকা সম্বলিত, যা কেয়ামত পর্যন্ত প্রযোজ্য। তিনি আল-ইতকান এর সাহায্য তালাশ করেন (ভলিউম-১, ওহী নাযিলের কারণসমূহের নবম শ্রেণীভূক্তকরণ সম্বন্ধীয়, পৃষ্ঠা-৭০ হইতে ৮৭)।

          তৃতীয় নীতি তিনি বলেন, হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর হাদীস শরীফ থেকে আলোচনা করা, যদি কোরআন শরীফে কোন নির্দেশনা না পাওয়া যায়। সর্বশেষ নীতি তিনি বলেন যদি হাদীস শরীফেও কোন সমাধান না পাওয়া যায় তবে ঐ বিষয়ে সাহাবী (রাঃ)গণ কি ব্যাখ্যা দিয়েছেন তাহাই গ্রহণ করতে হবে। তিনি পরামর্শ দেন যে কোরআন-এর মূলনীতি ঠিকভাবে বুঝতে হবে এবং বিশেষ বিবেচনায় রাখতে হবে।

চতুর্থ বিষয়টি ছিল বিশ্বাস এবং ধর্ম পালনে স্বাধীনতা। মিঃ মুজিবুর রহমান বলেন এ প্রসঙ্গে কিছু প্রশ্ন এসে যায়ঃ

(১) একজন কাফিরকে আল্লাহ্ পাক-এর একত্ব ঘোষণায় কি ইসলাম অনুমোদন দেয়?

(২) একজন কাফিরকে- পবিত্র রাসূলের (চইটঐ) দাবীকৃত সত্যবাদিতার স্বীকৃতি- কি ইসলাম গ্রহণ করে?

(৩) কোরআন শরীফ একটি ভাল জীবন ব্যবস্থা দেয় এবং ইহা অনুসরণীয়- কাফেরের এ স্বীকৃতি কি ইসলামে গ্রহণীয়?

(৪) কোরআনের আদেশানুযায়ী চলা কি একজন কাফেরের জন্য অনুমতিযোগ্য। যদি সে পছন্দ করে?

(৫) জাওয়াব যদি না সূচক হয়, তবে কোরআন শরীফে এবং হাদীস শরীফে সেই নির্দেশনামা কোথায়?

(৬) ঈমানদারগণ যাকে মুসলমান মনে করেনা এবং যার মুসলমান দাবী করার যোগ্যতাও নাই তার জন্য কোরআনের সত্যনিষ্ঠায় মুহম্মদ রাসূলাল্লাহ্ (চইটঐ)-এর নুবুওওয়তীতে কুরআনে কি পন্থা গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছে?

          সূরা- ২, আয়াত শরীফ ঃ ২৫৬, সূরা-৮, আয়াত শরীফ ঃ২৯, সূরা ১০, আয়াত শরীফঃ ৯৯ এবং ১০৮, সূরা-২৬, আয়াত শরীফঃ৩, সূরা- ৯০, আয়াত শরীফঃ ১০, সূরা- ৯১, আয়াত শরীফ ঃ ৮, ৯ এবং ১০ এবং বিখ্যাত ভাষ্যকারদের মতামতের উপর আস্থাসহকারো নির্ভর করে, ইসলামের আদেশের ভিত্তিতে সার সংক্ষেপ করা যায়ঃ-

(ক) কোন ধর্ম গ্রহণে বাধ্য করা উচিত নয়। (খ) স্বেচ্ছায় ইহাতে ধর্মান্তরিত হওয়ায় কোন বাধা থাকা উচিত নয়।(গ) জোর করে কাউকেই তার ধর্ম থেকে বহিস্কার করা যাবেনা। (ঙ) যদি কেহ তার ধর্মে থাকতে না চায় তবে তাকে তা পরিত্যাগে বাধা দিতে হবে। তিনি আরো কিছু আয়াত শরীফের উল্লেখ করেন, সূরা ১৬ঃ আয়াত ১০৬,

من كفر بالله من بعد ايمانه الا من اكره وقلبه مطمبن بالايمان ولكن من شرح بالكفر صدر فعليهم غضب من الله ولهم عذاب عظيم.

অর্থঃ- যার উপর জবরদস্তি করা হয় এবং তাঁর অন্তর বিশ্বাসে অটল থাকে সে ব্যতীত যে কেউ ঈমান আনার পরে আল্লাহ্ পাক-এর অবিশ্বাসী হয় এবং কুফরীর জন্য মন উন্মূক্ত করে দেয় তাদের পড়বে আল্লাহ্র গযব এবং তাদের জন্য রয়েছে শাস্তি। (সূরা/৪, আয়াত- ১৯)

يا ايها الذين امنوا لا يحل لكم ان ترثوا النساء كرها ولا تعضلو هن لتذهبوا ببعض ما اتيتمو هن الا ياتين بفاحشة مبينة وعاشرو هن بالمعروف فان كرهتمو هن فعسى ان تكرهوا شيا ويجعل الله فيه خيرا كثيرا.

অর্থঃ-হে ঈমানদারগণ! বলপূর্বক নারীদেরকে উত্তরাধিকার গ্রহণ করা তোমাদের জন্য হালাল নয় এবং তাদেরকে আটক রেখোনা যাতে তোমরা তাদেরকে যা দিয়েছ তা থেকে কিছু আত্মসাত করার উদ্দেশ্যে তাদের উৎপীড়ন করোনা। যদি না তারা প্রকাশ্যে অশ্লীলতা করে। তাদের সাথে সৎভাবে জীবনযাপন করবে। অতঃপর যদি তাদেরকে অপছন্দ করো, ধৈর্য্যধারণ করো, কেননা আশ্চর্য নয় যে, তোমরা যাকে অপছন্দ করছ বস্তুতঃ তার মধ্যে আল্লাহ্ বহু কল্যাণ দিয়ে রেখেছেন। (অসমাপ্ত

 ***************************************************************

খতমে নুবুওওয়াত প্রচার কেন্দ্র

খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারীরা কাফির

 ইসলামী শরীয়তের হুকুম মোতাবেক যারা মুসলমান

থেকে খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভূক্ত হয়

(যেমন- কাদিয়ানী, বাহাই  ইত্যাদি)

তাদের তওবার জন্য নির্ধারিত সময় ৩দিন। এরপর তওবা না করলে তাদের শাস্তি মৃত্যুদন্ড

 

কাদিয়ানী রদ! (১)

(পঞ্চম ভাগ)

          (মুবাহিছে আযম, বাহরুল উলূম, ফখরুল ফোক্বাহা, রইছুল মোহাদ্দেসীন, তাজুল মোফাসসেরীন, হাফেজে হাদীস, মুফতীয়ে আজম, পীরে কামিল, মুর্শিদে মোকাম্মেল হযরত মাওলানা আল্লামা শাহ্ সূফী মুহম্মদ রুহুল আমিন (রঃ) কর্তৃক প্রণীত কাদিয়ানী রদকিতাবখানা (৬ষ্ঠ খন্ডে সমাপ্ত) আমরা মাসিক আল বাইয়্যিনাত পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করছি। যাতে কাদিয়ানীদের সম্পর্কে সঠিক ধারণাসহ সমস্ত বাতিল ফেরকা থেকে আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের অনুসারীদের ঈমান আক্বীদার হিফাযত হয়। আল্লাহ্ পাক আমাদের প্রচেষ্টার কামিয়াবী দান করুন (আমিন)। এক্ষেত্রে তাঁর কিতাব থেকে হুবহু উদ্ধৃত করা হলো, তবে তখনকার ভাষার সাথে বর্তমানে প্রচলিত ভাষার কিছুটা পার্থক্য লক্ষ্যণীয়)।

(ধারাবাহিক)

          (৭) মির্জ্জা ছাহেব জমিমায়-বারহিনে আহমদীয়ার পঞ্চম খন্ডে (১৯৯ পৃষ্ঠায়) লিখিয়াছেন-

جواب شبھات الخطاب الملیح فی تحقیق المھدی و المسیح جو مولوی رشید احمد صاحب گنگوھی کی خرافات کا مجموعہ ھے-

          “এ স্থলে মির্জ্জা ছাহেব আল-খেতাবোল-মলিহ ফি-তাহকিকোল মাহদী-ওল মছিহকেতাবকে মাওলানা রশিদ আহমদ গাঙ্গুহী ছাহেবের প্রণীত কেতাব বলিয়া প্রকাশ করিয়াছেন, কিন্তু ইহা মির্জ্জা ছাহেবের মিথ্যা কথা, কারণ উক্ত কেতাবটী মাওলানা আশরাফ আলি ছাহেবের প্রণীত কেতাব, উক্ত কেতাবখানা ছাহারাণপুরের মাজাহেরে-উলুম মাদ্রাসার এহইয়াবি কেতাবখানায় পাওয়া যায়। যাহার ইচ্ছা হয়, কেতাবটী তথা হইতে আনাইয়া মির্জ্জা ছাহেবের মিথ্যা কথা পরীক্ষা করুন।

          (৮) মির্জ্জা ছাহেব জরুরাতোল-এমাম কেতাবের ১৭ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছেন-

بائبل مین لکھا ھے کہ ایک مرتبہ چار سو نبی کو شیطانی الھام ھوا تھا اور انھون الھام کے ذریعہ جو ایک سفید جن کا کرتب تھا ایک بادشاہ کی فتح کی پیشگوئی کی- اخر وہ بادشاہ بری ذلت سے اس اڑائی مین مارا گیا اور بری شکست ھوئی-

          ‘‘বাইবেলে লিখিত আছে, একবার চারিশত নবীর শয়তানি এলহাম হইয়াছিল এবং তাঁহারা একটী এলহাম দ্বারা যাহা শ্বেত জ্বেন কর্তৃক সংঘটিত হইয়াছিল। একজন বাদশাহের জয় লাভ করার ভবিষ্যদ্বাণী করিয়াছিলেন, অবশেষে বাদশাহ অতিশয় লাঞ্ছনার সহিত যুদ্ধে নিহত হইয়াছিল এবং বড় পরাজয় ঘটিয়াছিল।

          আরও তকরির দেলপিজিরএর ৭ পৃষ্ঠায় এবং অন্যান্য কেতাবে লিখিয়াছেন-

اس سے یہ ثابت کرنا چاھا ھے کہ انبیاء علیھم السلام کو بھی جھو ٹے الھام ھو جاتی ھے-

এতদ্বারা ইহা প্রমাণ করিতে ইচ্ছা করা হইয়াছে যে, নবীগণেরও মিথ্যা এলহাম হইয়া থাকে।

          পাঠক, মির্জ্জা ছাহেব অনেক সময় কোন  কোন কথা এলহাম হওয়ার দাবি করিতেন, অথচ উহা মিথ্যা প্রমাণিত হইয়াছে, এইরূপ তিনি অনেক ভবিষ্যদ্বাণী প্রকাশ করিয়াছিলেন, কিন্তু উহা পূর্ণ হয় নাই, তিনি এই দোষ ঢাকিবার উদ্দেশ্যে পয়গম্বরগণের উপর উপরোক্ত প্রকার মিথ্যা অপবাদ প্রয়োগ করিয়াছেন, কিন্তু যাহার হৃদয়ে ইমানের জ্যোতি আছে, সে ব্যক্তি কখনও মির্জ্জা ছাহেবের উপরোক্ত মিথ্যা অপবাদকে সত্য বলিয়া বিশ্বাস করিবেন না। যদি পয়গম্বরগণের উপর শয়তানি এলহাম হয় এবং তাঁহাদের ভবিষ্যদ্বাণী ভ্রান্তিমূলক হয়, তবে নবীগণের ও গণকগণের এবং জ্বেনের আমেলগণের মধ্যে প্রভেদ কি হইবে? (অসমাপ্ত)

 

ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক পাকিস্তান সুপ্রীম কোর্ট কর্তৃক

 কাদিয়ানীদের কাফিরষোষণা! (২)

(অনুবাদক- আলহাজ্ব মুহম্মদ হাবিবুল হক)

 

لا اكراه فى الدين قدتبين الرشد من الغى فمن يكفر بالطاغوت ويؤ من بالله فقد استمسك بالعروة الوثقى لانفصام لها والله سميع عليم. (সূরা/২, আয়াত/২৫৬)

অর্থঃ- ধর্মে কোন প্রকার জবরদস্তী নাই, আলাদাভাবে বলে দেয়া হয়েছে হিদায়েতের পথকে গোমরাহী থেকে, অতএব যে ব্যক্তি শয়তানী চক্রান্তের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে এবং আল্লাহ্ পাক-এর উপর বিশ্বাস স্থাপন করবে, সে বিপর্যয়হীন সুদৃঢ় আশ্রয় পেয়েছে। আল্লাহ্ পাক সবকিছু শোনেন ও সকল কিছু সম্পর্কে পরিজ্ঞাত। (সূরা/৬, আয়াত/১০৮)

ولو شاء الله ما اشركوا- وما جعلنك عليهم حفيظا وما انت عليهم بوكيل-

অর্থঃ- এবং যদি আল্লাহ্ পাক ইচ্ছা করতেন, তবে ইহারা শিরক করতোনা এবং আমি আপনাকে ইহাদের সংরক্ষক করিনি এবং হিদায়েতের মালিক আল্লাহ্ পাক।

ولو شاء ربك لامن من فى الارض كلهم جميعا- افانت تكره الناس حتى يكونوا مؤمنين.

অর্থঃ- আর আপনার প্রতিপালক ইচ্ছা করলে পৃথিবীতে যারা আছে তারা সকলেই ঈমান আনতো ঈমান আনার জন্য কি জবরদস্তি করবেন?” (সূরা/১০, আয়াত/৯৯)

قل يا ايها الناس قد جاء كم الحق من ربكم فمن اهتدى فانما يهتدى لنفسه ومن ضل فانما يضل عليها وما انا عليكم بوكيل

অর্থঃ- বলে দিন হে মানবকুল! সত্য তোমাদের নিকট পৌঁছে গেছে তোমাদের পরওয়ারদিগারের তরফ থেকে। এমন যে কেউ পথে আসে সে পথ প্রাপ্ত হয় স্বীয় মঙ্গলের জন্য। আর যে বিভ্রান্ত ঘুরতে থাকে। সে নিজ অমঙ্গলের জন্য বিভ্রান্ত অবস্থায় ঘুরতে থাকবে। এবং আমি তোমাদের কর্মবিধায়ক নই। (সূরা/১০, আয়াত/১০৮) لعلك باخع نفسك الا يكو نوامؤمنين.

অর্থঃ- ওরা  বিশ্বাস করে না বলে আপনি হয়ত মর্ম ব্যথায় ব্যথিত হবেন।” (সূরা/২৬, আয়াত/৩)

ان نشا ننزل عليهم من السماء اية فظلت اعنا قهم لها خضعين.

অর্থঃ- আমি ইচ্ছা করলে আকাশ হতে ওদের নিকট এক নিদর্শন প্রেরণ করতে পারি। ফলে ওরা তার প্রতি নত হয়ে পড়বে।” (সূরা/২৬, আয়াত/৪) وهدينه النجدين.

অর্থঃ- আমি তাকে কি দুটি পথই দেখাইনি।” (সূরা/৯০, আয়াত/১০) قد افلح من زكها.

অর্থঃ- যে নিজেকে পবিত্র করে সেই সফলকাম হয়।”(সূরা/৯১, আয়াত/৯) وقد خاب من دسها

অর্থঃ- এবং সেই ব্যর্থ হবে যে নিজেকে কলূষাচ্ছন্ন করবে।” (সূরা ৯১/, আয়াত/১০)

وقل الحق من ربكم فمن شاء فليؤمن ومن شاء فليكفر انا اعتدنا للظلمين نارا احاط بهم سرادقها وان يستغيثوا يغاثوا بما عكالمهل يشوى الوجوه بئس الشراب وساعت مزتفقا.

অর্থঃ- বলে দিন, তোমাদের পালনকর্তার তরফ থেকে সত্য প্রেরিত। অতএব, যারা ইচ্ছা বিশ্বাস স্থাপন করুক এবং যারা ইচ্ছঅ আমান্য করুক। আমি জালেমদের জন্য জ্বলন্ত আগন প্রস্তুত করে রেখেছি। যা তাদেরকে পরিবেষ্টন করে রাখবে। ওরা পানিচাইলে ওদের দেয়া হবে পুঁজের ন্যায় পানীয় যা ওদের মুখ মন্ডল দগ্ধ করবে, কি ভীষণ সে পানীয় আর কি নিকৃষ্ট তাদের আশ্রয় স্থান।” (সূরা/১৮, আয়াত/২৯) (অসমাপ্ত)

আবা-৭১,৭২,৭৩,৭৪,৭৫


0 Comments: