কাদিয়ানি রদ -১৮

 


খতমে নুবুওওয়াত প্রচার কেন্দ্র খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারীরা কাফির

 (ইসলামী শরীয়তের হুকুম মোতাবেক যারা মুসলমান থেকে খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভূক্ত হয় (যেমন- কাদিয়ানী, বাহাই  ইত্যাদি) তাদের তওবার জন্য নির্ধারিত সময় ৩দিন। এরপর তওবা না করলে, তাদের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড)

(১)

কাদিয়ানী রদ!

(তৃতীয় ভাগ)

বাহরুল উলুম, ফখরুল ফোক্বাহা, রইছুল মোহাদ্দেসীন, তাজুল মোফাসসেরীন, হাফেজে হাদীছ, মুফতীয়ে আজম, পীরে কামেল, মোর্শেদে মোকাম্মেল হযরত মাওলানা আল্লামা শাহ্ সূফী মুহম্মদ রুহুল আমিন রহমতুল্লাহি আলাইহি কর্তৃক প্রণীত কাদিয়ানি রদকিতাবখানা (৬ষ্ঠ খন্ডে সমাপ্ত)। আমরা মাসিক আল বাইয়্যিনাত পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করছি। যাতে কাদিয়ানীদের সম্পর্কে সঠিক ধারণাসহ সমস্ত বাতিল ফেরকা থেকে আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের অনুসারীদের ঈমান আকীদার হিফাযত হয়। আল্লাহ্ পাক আমাদের প্রচেষ্টার কামিয়াবী দান করুন (আমিন)। ওনার কিতাব থেকে হুবহু উদ্ধৃত করা হলো, তবে তখনকার ভাষার সাথে বর্তমানে প্রচলিত ভাষার কিছুটা পার্থক্য রয়েছে।

 

(পূর্ব প্রকাশিতের পর)

মির্জ্জার মছিহ দাবী খন্ডন।

 

মির্জ্জা ছাহেব এজালাতোল আওহামের ৯৯১ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছেন ;-

قل انكنتم تحبون الله فاتبعونى بحببكم الله

یعنی ...............سے محبث رکھتے ھو تو اؤ میری پیروی کرو تا خدایتعالی بھی تم سے محبت رکھے اور تمھین محبوب بنا لیوے اب سوچنا چاھئے جس و قت انسان  ایک محبوب کی پیروی سے خود بھی محبوب بن گیا تو گیا اس محبوب کا مثیل ھوگیا  یا ابھی غیر مثیل رھا-

অর্থাৎ তুমি তাহাদিগকে বলিয়া দাও, যদি তোমরা খোদাতায়ালার মহব্বত রাখ, তবে আমার পয়রবি (অনুসরণ) কর, তাহা হইলে খোদাতায়ালাও তোমাকে ভালবাসিবেন, আর তোমাকে মহবুব (প্রেমাস্পদ) করিয়া লইবেন। এখন চিন্তা করা আবশ্যক, যখন মনুষ্য এক প্রেমাস্পদের অনুসরণ করায় নিজেই প্রেমাস্পদ হইয়া গেল, তখন উক্ত প্রেমাস্পদের (হজরত নবি করিমের) মছিল হইল, কিম্বা গরমছিল রহিয়া গেল।

আমাদের উত্তর ।

যদি হজরতের তাবেদারি করাতে তাঁহার মছিল হওয়া যায়, তবে ছাহাবা-তাবেয়ি ও তাবা-তাবেয়ি এই তিন সম্প্রদায় হজরতের শ্রেষ্ঠতম তাবেদার হইয়া কেন নিজেদিগকে মছিলে-মোহাম্মদ বলিয়া দাবি করিলেন না?

মির্জ্জা ছাহেব উহার ১৭১ পৃষ্ঠায় নিজেকে মছিলে-আদম; মছিলে-নূহ, মছিলে-দাউদ, মছিলে-ইউছুফ, মছিলে-এবরাহিম ও মছিলে-মুছা বলিয়া দাবি করিয়াছেন, এক্ষণে তিনি য়িহুদী ইত্যাদি শরিয়তের তাবেদারি করিয়াছিলেন কি?

তিনি খ্রীস্টানি মতের তাবেদারি করিয়া মছিলে-মছিহ হইয়াছেন কি?

মির্জ্জা ছাহেব উহার ১৭৩/১৭৪ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছেন ;-

اس دین متین مین مثیل الانبیاء بننے کی راہ کھلی ھوئی ھے جیسا کہ انحضرت صلی اللہ علیہ وسلم روحانی اور ربانی علماء کیلئے یہ خوشخبری فرماگئے ھین کہ علماء امتی کا نبیاء بنی اسرائیل-

এই মজবুত দীনে মছিলোল-আম্বিয়া হওয়ার পথ খোলা আছে, যেমন রাছুলুল্লাহ্ (ছাঃ) রূহানি ও রাব্বানি আলেমগণের জন্য এই সুসংবাদ প্রদান করিয়াছেন, “আমার উম্মতের আলেমগণ বনি-ইছরাইলের নবিগণের তুল্য।

তাজকেরাতোল আওলিয়াতে হজরত বা এজিদ বোস্তামির কথা আছে যে, তিনি হজরত আদম, শিছ, নূহ, এবরাহিম, মুছা, ইছা ও মোহাম্মদ (ছাঃ)-এর মছিল হওয়ার দাবি করিয়াছিলেন, ইহাতে তাঁহার উপর ৭০ বার কাফেরি ফৎওয়া দেওয়া হইয়াছিল এবং তাঁহাকে বোস্তাম হইতে বাহির করিয়া দেওয়া হইয়াছিল। বড়পীর ছাহেব ফতুহোল গায়েবে লিখিয়াছেন, লোকে ফান-ফিল্লাহ্ দরজাতে নিজেকে নবিগণের মছিল, বরং তাঁহাদের রূপে দেখিয়া থাকে।

আমাদের উত্তর ।

উপরোক্ত হাদিছটী বিদ্বান্গণের মতে জইফ। শরহে তরিকায় মোহাম্মদী দ্রষ্টব্য। মেশকাত, ৫৬০ পৃষ্ঠা ;-

قال رسول الله صلعم ابوبكر وعمر سيدا كهول اهل الجنة من الاولين والاخرين الاالنببعينن والمرسلين.

রাছুলুল্লাহ্ (ছাঃ) বলিয়াছেন, নবিগণ ও রাছুলগণ ব্যতীত পূর্ব্ব ও শেষ জামানার অর্দ্ধবৃদ্ধ বেহেশ্তিদিগের অগ্রণী আবু বকর ও ওমর হইবে।ইহাতে বুঝা যায় যে, আবু বকর ও ওমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এই উম্মতের মধ্যে সর্ব্বশ্রেষ্ঠ পুরুষ, কিন্তু তাঁহারা কোন নবির দরজায় পৌঁছিতে পারেন নাই। কাজেই এই উম্মতের আলেমগণ বনি-ইছরাইলের নবিগণের তুল্য হইবেন কিরূপে? যদি উক্ত জঈফ হাদিছটী ছহিহ বলিয়া স্বীকার করিয়া লওয়া হয়, তবে বলি, দুন্ইয়ার সমস্ত রুহানি ও রাব্বানি আলেম মছিলে আম্বিয়া হইবেন কিনা? ইহাতে মির্জ্জা ছাহেবের বিশেষতঃ কি আছে? যদি এই হাদিছ মছিলে-মছিহ হওয়ার প্রমাণ হয়, তবে হজরত যেরূপ মছিহ নাজিল হওয়ার কথা বলিয়াছেন, অন্যান্য নবিগণের নাজিল হওয়ার কথা কেন বলিলেন না?

মির্জ্জা ছাহেব হজরত বা-এজিদ বোস্তামির কথা উল্লেখ করিয়াছেন, ইনি একজন ফানা-ফিল্লাহ্ প্রাপ্ত অলি ছিলেন, যেরূপ মনছুর হাল্লাজ অচৈতন্য অবস্থায় আনাল হক বলিয়াছিলেন, সেইরূপ তিনিও অচৈতন্য অবস্থায় নিজেকে মছিহ-আম্বিয়া বলিয়া ফেলিয়াছিলেন, যদিও তাঁহাদের অচৈতন্য অবস্থায় উহা বলার জন্য তাঁহারা ক্ষমার পাত্র, কিন্তু সজ্ঞান সচেতন অবস্থায় কোন মুসলমানের উহা বলা যে কাফেরি, ইহাতে সন্দেহ নাই। এই হেতু শরিয়তের আলেমগণ হজরত বা-এজিদ বোস্তামির উপর কাফেরি ফৎওয়া ও মনছুর হাল্লাজের হত্যা করার ফৎওয়া দিয়াছিলেন। হজরত পীরাণপীর ছাহেব ঐরূপ মজজুব ফকিরদের অচৈতন্য অবস্থার কথা উল্লেখ করিয়াছেন, ইহা শরিয়তের প্রমাণ হইতে পারেনা। মির্জ্জা ছাহেব পীর বা-এজিদ বোস্তামির কথা উল্লেখ করিয়াছেন, কিন্তু মির্জ্জা ছাহেব কখন কোন তরিকতপন্থী পীরের খেদমত করেন নাই, সুস্বাদু ও পুষ্টিকর খাদ্য ও ঔষধ ভক্ষণ ও সেবন করিতে রত থাকিতেন, কখন আরাম ত্যাগ করেন নাই, দুনইয়ার টাকা-কড়ি সংগ্রহ করা উদ্দেশ্যে হালাল ও হারাম কিছুর বাদ-বিচার করেন নাই। মছজিদ প্রস্তুত, শ্বেতমিনার প্রস্তুত, বেহেশ্তি কবরস্থান প্রস্তুত, বাটীর আয়তন বৃদ্ধি ও দালান প্রস্তুত, কেতাব মুদ্রিত করা, মেহমানখানা প্রস্তুত ইত্যাদি বলিয়া মুরিদগণের অসংখ্যক টাকা শোষণ করিতেন, আত্মগরিমা, অহঙ্কার ও লোকদিগের গালিগালাজে নিজের কেতাবগুলি পূর্ণ করিয়াছেন, তিনি তাছাওয়ফ ও তরিকতের বা কি শিক্ষা করিবেন? আর হজরত বা-এজিদ বোস্তামির রেয়াজত সাদ্য-সাধনা ও ফানা-বাকা লাভের কিইবা বুঝিবেন? কাজেই এরূপ ঘোর সংসারীর পক্ষে ঐরূপ খোদা প্রেমিক আত্মহারা ওলির কার্য্যকলাপ প্রমাণ স্বরূপ পেশ করা কি শোভনীয় হইতে পারে?

(অসমাপ্ত)


(২)

ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক পাকিস্তান সুপ্রীম কোর্ট কর্তৃক কাদিয়ানীদের- কাফেরঘোষণা!

(পূর্ব প্রকাশিতের পর)

অনুবাদক - আলহাজ্ব মুহম্মদ হাবিবুল হক

 

দ্বিতীয় হ্যান্ডবিলে সে খতমে নুবুওওয়ত উল্লেখ করেছে। কিন্তু স্পষ্ট প্রতীয়মান হয় যে, উদ্দেশ্য ছিল নবীই রাসূল বুঝানো।

তার রচিত আঞ্জাম-ই-আতহাম’ (১৮৯৬ সালে মুদ্রিত) বইয়ের ২৪ পৃষ্ঠার মার্জিনে মির্জা সাহেব বলে, “এ রকম দূর্ভাগা, প্রতারক হয় কি? যে পবিত্র কোরআনে এবং নিম্নোলিখিত আয়াত শরীফে বিশ্বাস করে।

ولكن رسول الله وخاتم النبيين.

অর্থ : কিন্তু তিনি আল্লাহ রাসূল এবং নবীদের সীল মোহর) এবং তবু বলতে পারে যে, আমি পয়গম্বর এবং রাসূল (نبى اور رسول)পবিত্র রাসূল (ল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর পর।

সর্ব সাধারণের অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, আমি এই নগণ্য ব্যক্তিটি বাস্তবিকই কখনো নুবুওওয়ত বা রিসালত দাবী করিনি। দৈনন্দিন আলাপ আলোচনার আদান প্রদানে কোন শব্দের অপ্রাকৃতিক ব্যবহারে আভিধানিক অর্থের কিছু হেরফের আমি মনে করিনা, কারো ঈমান নষ্ট হয়ে যাবে। তবে আমি পছন্দ করিনা যে, মুসলমানদের প্রতারিত হওয়ার কোন আশঙ্কা হয়। আমি আল্লাহ্র নিকট থেকে যে আদেশ সকল পেয়েছি, তাতে নুবুওওয়ত, রিসালত শব্দগুলো অনেকবার ছিল। আমি এগুলি গোপন রাখতে পারিনা, যেহেতু আমি আল্লাহ পাক দ্বারা মনোণীত (ومامور من الله)বরং আমি পুণঃ পুণঃ উল্লেখ করেছি যে, এই ওহী গুলিতে যেখানে মুরসাল বা রাসূল বা নবী হিসাবে আমাকে সম্বোধন করা হয়েছে, তা প্রকৃত রাসূল অর্থে করা হয়নি। তার প্রমাণ হিসাবে আমি প্রকাশ্যে সাক্ষী দিচ্ছি যে, “আমাদের রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম), রাসূলদের মধ্যে সর্ব শেষ এবং তাঁর পর আর কোন রাসূল হবেন না, নতুন বা পুরাতন।

আমাদের রাসূল এবং নেতার পর যে কেউ সত্যিকার অর্থে বা মিথ্যার আশ্রয়ে কোরআনের অর্থ পরিবর্তন করে বলবে যে, আমি রাসূল বা নতুন ধর্মের প্রবর্তক, সে একজন ভন্ড বা খারেজী। আমাদের শরীয়ত অনুযায়ী যে পবিত্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সুপারিশের আশা ত্যাগ করে নিজেকে ঐ পবিত্র ধারা থেকে পৃথক করে, নিজেকে আল্লাহ রাসূল দাবী করবে, সে খারেজী এবং কাফের। ঐ রকম একজন ব্যক্তি সম্ভবতঃ নতুন কলেমা (আল্লাহ পাক-এর নামের সাথে তার নিজ নুবুওওয়তের প্রকাশ) এবং ইবাদতের নতুন নিয়ম সংযোজন এবং শরীয়তের মাসায়ালার পরিবর্তন করবে। তেমন ব্যক্তি নিঃশ্চিত মিথ্যাবাদী মুসায়লামার ভাই এবং সে যে কাফের, তাতে আর কোন সন্দেহ থাকবে না।

হাম্মামাতুল বুশরায়৯৬ পৃষ্ঠায় (১৮৯৪ সালে প্রকাশিত) সে (মির্জা সাহেব) বলে,   

مالى ان ادعى النبوته اخرج من الاسلام والحق بالكافرين.

(ইসলামী সমাজচ্যুত হয়ে খারেজীদের সাথী হওয়া আমার জন্য যুক্তিসংগত হবেনা) সে নুবুওওয়ত দাবী করেনি, সে দাবী করেছিল মুজাদ্দিদিয়াত। সে তার প্রাপ্ত ইলহাম হযরত (বড়পীর) আব্দুল কাদির জ্বিলানী রহমতুল্লাহি আলাইহি প্রাপ্ত ইল্হামের অনুরূপ বলে উল্লেখ করে।

সে হাম্মামাতুল বুশরায়বিশেষ জোর দিয়ে বলেছে, “অবগত আছেন কি? যে আল্লাহ পাক ঘোষণা করেছেন, আমাদের রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম), যাঁর সমতুল্য কেউ নয়, সেহেতু তিনি রাসূলদের মধ্যে সর্বশেষ রাসূল এবং আমাদের রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)।এর অর্থ ব্যাখ্যা করেছে এবং বলেছে, (لانبى بعدى) “আমার পরে আর  কোন  রাসূল আসবেন না।এবং এটি খুব বিশদভাবে ব্যাখ্যা করেছে। ওহীর দ্বার বন্ধ হওয়ার পর যদি আমরা এখন আবার নুবুওওয়তের ওহীর দ্বার খুলে দেই, তবে তা মুসলমানদের জন্য শরীয়ত সম্মত হবেনা। নুবুওওয়ত এবং ওহীর দরজা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর কি করে আবার রাসূল আসতে পারে।

উপরোক্ত বক্তব্যের শেষ অংশে প্রতীয়মান হয়, হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম কি আবার আসবেন এবং তিনি হবেন কি রাসূলদের মধ্যে শেষ রাসূল? মির্জা সাহেব বলে, আমাদের বিশ্বাস হলো- নুবুওওয়ত শেষ হয়েছে, আমাদের রাসূলের (মুহম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আগমনের সাথে।

শেষোক্ত মতামত থেকে ইহা স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়, মির্জা সাহেবের ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম-এর পুণঃ আগমন রাসূল হিসাবে হবে না, কেননা তাহলে তো তিনিই রাসূলদের মধ্যে শেষ রাসূল হবেন।

একথা আইয়াম-ই-সলেহ্ নামক বইতে ১৮৯৯ সালে প্রকাশিত হয়েছে (পৃষ্ঠা-১৪৬)। সে বলেছে, “মেরীর পুত্র ঈসা আলাইহিস সালাম-এর দ্বিতীয়বার আগমনের কোন উল্লেখ কোরআনে নেই। নুবুওওয়ত শেষ হওয়ার কথা খুব পরিস্কারভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। পুরাতন এবং নতুন রাসূলের মধ্যে পার্থক্য করা ঠিক হবেনা। কোরআন বা হাদীসে তেমন কোন পার্থক্য পাওয়া যায়না। অপরপক্ষে হাদীছ শরীফ ব্জৈশুব্দঞ্জব্দম্লম্ফ‘ (আমার পর কোন নবী নেই) জঈফ হাদীছ (যা সত্য বলে স্বীকার করেনা)। কেমন দুঃসাহসিক ঔদ্ধত্য, গর্হিত কল্পনার প্রভাবে কোরআনের স্পষ্ট আয়াত মর্যাদাহানীকরভাবে স্বেচ্ছায় রহিত করা এবং বিশ্বাস করা যে, শেষ নবী পর আবার নবী আসবেন, যার অর্থ নুবুওওয়তের ওহী আবার নাযিল হবে। কেননা ইহা স্থিরিকৃত যে, যাঁকে নুবুওওয়ত দেয়া হয়, তিনি ওহী পাবেন। (অসমাপ্ত)

*******************************************************

খতমে নুবুওওয়াত প্রচার কেন্দ্র

খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারীরা কাফির

(ইসলামী শরীয়তের হুকুম মোতাবেক

যারা মুসলমান থেকে খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভূক্ত হয় (যেমন- কাদিয়ানী, বাহাই  ইত্যাদি) তাদের তওবার জন্য নির্ধারিত সময় ৩দিন। এরপর তওবা না করলে, তাদের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড)

(১)

কাদিয়ানী রদ!

(তৃতীয় ভাগ)

বাহরুল উলুম, ফখরুল ফোক্বাহা, রইছুল মোহাদ্দেসীন, তাজুল মোফাসসেরীন, হাফেজে হাদীছ, মুফতীয়ে আজম, পীরে কামেল, মোর্শেদে মোকাম্মেল হযরত মাওলানা আল্লামা শাহ্ সূফী মুহম্মদ রুহুল আমিন রহমতুল্লাহি আলাইহি কর্তৃক প্রণীত কাদিয়ানি রদকিতাবখানা (৬ষ্ঠ খন্ডে সমাপ্ত)। আমরা মাসিক আল বাইয়্যিনাত পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করছি। যাতে কাদিয়ানীদের সম্পর্কে সঠিক ধারণাসহ সমস্ত বাতিল ফেরকা থেকে আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের অনুসারীদের ঈমান আকীদার হিফাযত হয়। আল্লাহ পাক আমাদের প্রচেষ্টার কামিয়াবী দান করুন (আমিন)। ওনার কিতাব থেকে হুবহু উদ্ধৃত করা হলো, তবে তখনকার ভাষার সাথে বর্তমানে প্রচলিত ভাষার কিছুটা পার্থক্য রয়েছে।

(পূর্ব প্রকাশিতের পর)

 

মির্জ্জার মছিহ দাবী খণ্ডন।

পাঠক, এক্ষণে আসুন, মির্জ্জা ছাহেচ হজরত ইছা আলাইহিস সালাম-এর মছিল হইতে পারে কিনা, তাহার আলোচনা করা হউক।

(১) হজরত মছিহ আলাইহিস সালাম উনার নাম ইছা, আর মির্জ্জা ছাহেবের নাম গোলাম আহমদ।

(২) হজরত মছিহ কুমারীর গর্ভে ও হজরত জিবরাইল আলাইহিস সালাম-এর সুসংবাদে পয়দা হইয়াছিলেন, আর মির্জ্জা ছাহেবের অবস্থা সেইরূপ নহে।

(৩) মির্জ্জা ছাহেবের পিতার নাম গোলাম মরতজা, আর হজরত মছিহ বিনা পিতায় পয়দা হইয়াছিলেন।

(৪) হজরত ইছা আলাইহিস সালাম উনার শিক্ষা এইরূপ ছিল, যে ব্যক্তি তোমায় সহিত এক ক্রোশ চলিবে, তুমি তাহার সহিত দুই ক্রোশ চলিবে। যে ব্যক্তি তোমার একগালে চপেটাঘাত করিবে, তুমি তোমার দ্বিতীয়গালে চপেটাঘাত করিবার জন্য তাহার দিকে ফিরাইয়া দাও। মির্জ্জা ছাহেব এই শিক্ষার বিপরীত কার্য্য করিতেন।

হজরত মছিহ বাসগৃহ প্রস্তুত করেন নাই এবং টাকা-কড়ি সংগ্রহ করেন নাই, মির্জ্জা ছাহেব ঘোর সংসারী ছিলেন, ঘরবাড়ি দালান প্রস্তুত করিতে ও নানা উপায় টাকা-কড়ি সংগ্রহ করিতে মজবুত ছিলেন।

(৫) হজরত ইছা আলাইহিস সালাম বিবাহ করেন নাই। মির্জ্জা ছাহেব উপযুক্ত স্ত্রী থাকিতেও বৃদ্ধ বয়সে অল্প বয়স্ক মোহাম্মদী বেগমের প্রেমে পড়িয়া নিজের স্ত্রীকে তালাক দিলেন, নিজের পুত্রকে ত্যজ্য পুত্র বলিয়া ঘোষণা করিলেন এবং খোদা রাছুলকে ভুলিয়া গেলেন।

(৬) হজরত মছিহ যে সমস্ত মোজেজা দেখাইয়াছিলেন, মির্জ্জা ছাহেব তাহার বয়সে তদনুরূপ কিছুই করিতে পারেন নাই। এই হিসাবে নিশ্চয় আমরা দাবি করিয়া বলিতে পারি যে, মির্জ্জা ছাহেব কিছুতেই মুছলে-মছিহ হইতে পারেন না।

একজন সামান্য উম্মত হইয়া একজন শ্রেষ্ঠ নবির তুল্য হইবেন, ইহা বিবেকসম্পন্ন লোক কি কখনও বিশ্বাস করিতে পারে? এক্ষণে মির্জ্জা ছাহেব হজরত ইছার কিরূপ প্রশংসা করিয়াছেন, তাহাও উদ্ধৃত করিয়া মছিল হওয়ার প্রসঙ্গ শেষ করিব।

মির্জ্জা ছাহেব আইয়ামোছ ছোলহকেতাবের ৬৫ পৃষ্ঠার হাশিয়ায় লিখিয়াছেন ;-

افاغنه مثل بهود فرقى ميان نسبت ونكاح نه كرده دختران از ملاقاتومخالطت با منسوب مضا يقت نه كيرند- مثلا اختلاط ريم صديقه با منسوب خودش يوسف وبمعبت وي خارج بيت كردش يوسف وبمعبت ويى خارج بيت كردش غمودن شهادت حته براين رسم است ودربعشى از قبائل خوانين جري وساري ايت كه غالب او قات راد خترى قبل از اجراى مراسم نكاح ابستنى شده.

আফগানিরা য়িহুদিদিগের ন্যায় বিবাহের সম্বন্ধ ও বিবাহের মধ্যে প্রভেদ করেন না, কন্যারা বাগদত্ত পুরুষের সহিত সাক্সাৎ ও সহবাস করিত, ইহাতে তাহারা দোষ ভাবিত না, যথা মরয়েম ছিদ্দিকার তাহার বাগ্দত্ত ইউছফের সহিত সঙ্গ করা এবং তাহার সঙ্গে গৃহের বাহিরে ভ্রমণ করা এই রীতির প্রত্যক্ষ সাক্ষ্য, কোন কোন পাহাড়ি পাঠান শ্রেণীর মধ্যে কন্যাদের বাদ্দত্ত পুরুষদের সহিত সহবাস করার প্রথা এরূপভাবে প্রচলিত রহিয়াছে যে, অনেক ক্ষেত্রে বিবাহের নিয়ম জারি করার পূর্ব্বে কন্যা গর্ভবতী হইয়া থাকে।

(১) মির্জ্জা ছাহেব কিস্তিয়ে নুহেয় ১৬ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছেন;-

مفتوی ھے وہ شخص جو مجھے کھتا ھے کہ مین مسبح ابن مریم کی عزت نھین کرتا بلکہ مسیح تو مسبح مین تو اس کے چارون بھائیون کی بھی عزت کرتا ھون کیونکہ پانچون ایک ھی مان کے بیتے ھین نہ صرف اسی قدر بلکہ مین تو حضرت مسیح کی دونون حقیقی ھمشیرون کو بھی مقدسہ سجھتا ھون- کیونکہ یہ سب بزرگ مریم بتول کے پیت سے ھین اور مریم کی وہ شان ھے جس نے ایک مدت نک اپنے لتن نکاح سے روکا- پھر بزر گان قوم کے نھایت اصرار سے  بوجہ حمل کے نکاح کرلیا گو لوگ اعتراض کرتے ھین برخلاف تعلیم توریت عین حمل مین کیونکر نکاح کیا گیا اور بتول ھونے کے عھد کو کیون ناحق تورا گیا اور تعدد ازواج کی کیون بنیاد دالی گئی یعنے باوجود یوسف نجائ کی پھلی بیوی ھونے کے پھر مریم کیون راضی ھوئی کہ  یوسف نجار کے نکاح مین اوے-

ঐ ব্যক্তি মিথ্যা অপবাদকারী যে বলে যে আমি মছিহ বেনে মরয়েমের সম্মান করিয়া থাকিনা, বরং মছিহ ত মছিহ, আমি উনার চারি ভ্রাতার সম্মান করিয়া থাকি, কেননা পাঁচজন এক মাতার পুত্র। ইহা কেবল নহে, বরং আমি হজরত মছিহর হকিকি ভগ্নিকে পাক বিবেচনা করি, কেননা এই সমস্ত মহাত্মা মরয়েম বতুলের উদরে জন্ম গ্রহণ করিয়াছিলেন। মরয়েমের অবস্থা এই যে, তিনি কতককাল নিজেকে নেকাহ হইতে বিরত রাখিয়াছিলেন, দলের মহৎ লোকদের নিতান্ত জেদে ও গর্ভ সঞ্চারের দায়ে পড়িয়া নিকাহ করিয়াছিলেন। যদিও লোকে অনুযোগ করিতেছিল যে, তওরাতের শিক্ষার বিপরীত গর্ভাবস্থায় কিরূপে নিকাহ দেওয়া হইল? সংসার ত্যাগিনী হওয়ার প্রতিশ্রুতি অন্যায়ভাবে কেন ভঙ্গ করা হইল? কেন বহু দার গ্রহণ করার ভিত্তি স্থাপন করা হইল? অর্থাৎ সূত্রধর ইউছফের প্রথমা স্ত্রী থাকা সত্ত্বেওমরয়েম কেন তাহার সহিত বিবাহে সম্মতি প্রদান করিলেন?” মির্জ্জা ছাহেবের উক্ত কথাগুলিতে বুঝা যায় যে, হজরত মরয়েম আলাইহিস সালাম নিকাহ করার পূর্ব্বে ইউছফ সূত্রধরের সহিত ব্যাভিচার করায় তাহার গর্ভ হইয়াছিল, ইহাতে তিনি য়িহুদিদের ন্যায় হজরত মরয়েম আলাইহিস সালামকে ব্যাভিচারিণী ওসেই গর্ভজাত সন্তান হজরত ইছা আলাইহিস সালামকে জারজ (হারামজাদা) হওয়ার দাবি করিয়াছেন। ইহা জ্বলন্ত মিথ্যা অপবাদ।

(অসমাপ্ত)                          

 

 

(২)

ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক পাকিস্তান সুপ্রীম কোর্ট কর্তৃক কাদিয়ানীদের- কাফেরঘোষণা!

(পূর্ব প্রকাশিতের পর)

অনুবাদক - আল্হাজ্ব মুহম্মদ হাবিবুল হক

 

অপরপক্ষে পবিত্র হাদীছ শরীফ لانبى بعدى (আমার পর কোন নবী নেই) জঈফ হাদীছ (যা সত্য বলে স্বীকার করেনা)। কেমন দুঃসাহসিক ঔদ্ধত্য, গর্হিত কল্পনার প্রভাবে কোরআনের স্পষ্ট আয়াত মর্যাদাহানীকরভাবে স্বেচ্ছায় রহিত করা এবং বিশ্বাস করা যে, শেষ নবীর পর আবার নবী আসবেন, যার অর্থ- নুবুওওয়াতের ওহী আবার নাযিল হবে। কেননা ইহা স্থিরকৃত যে, যাঁকে নুবুওওয়াত দেয়া হয়, তিনি ওহী পাবেন।

২০শে শাবান ১৩১৪ হিজরী (১৮৯৭ইং) তাবলীগ-ই- রিসালত, ভলিউম-৬-এর ২য় পৃষ্ঠায় প্রকাশিত একটি হ্যান্ডবিলে সে লিখেছে, (নবী দাবীকে আমরা নিন্দা করি) আমরা মহান আল্লাহ পাক উনার একত্বে বিশ্বাস করি এবং মহান আল্লাহ পাক তিনি ছাড়া কোন প্রভূ নেই এবং এও বিশ্বাস করি যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার রসূল এবং আমরা বিশ্বাস করি যে, তিনি শেষ নবী। আমরা বিশ্বাস করিনা নুবুওওয়তের ওহী, কিন্তু বিশ্বাস করি দরবেশসূলভ ওহী, যা দরবেশরা অর্জন করেন- পবিত্র নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অনুসরণ এবং অনুকরণের মাধ্যমে।

উপরোক্ত আলোচনায় খতম (خاتم) শব্দটি যেভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে, “ইজালা-ই-আওহামপুস্তকের ৫৭৭ পৃষ্ঠায় একইভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে, যখন মির্জা সাহেব নবী দাবী করেছে, পবিত্র নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পর নুবুওওয়াতে ওহী মির্জা সাহেব প্রত্যাখান করে।

জঙ্গ-ই-মুকাদ্দাছ (جنك مقدس)-এর ৬৭ পৃষ্ঠায় (১৮৯৩ সালে প্রকাশিত) মির্জা সাহেব তার নবী দাবী করার অভিযোগটি অমূলক বলে প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করে এবং মোজেজা সম্বন্ধে ব্যাখ্যা করে। সে বলে- নুবুওওয়াতের কোন দাবী আমার নেই। ইহা আপনাদের বিভ্রান্তি বা উদ্দেশ্যমূলকভাবে আপনারা বলছেন। ইহা কি জরুরী, যে কেউ ইলহাম প্রাপ্তি সম্বন্ধে দাবী করবেন, তিনিই নবী হবেন? আমি পরিপূর্ণভাবে উম্মতে হাবীবী এবং মহান আল্লাহ এবং উনার রসূল নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অনুসারী। আমি এই সকল নিদর্শণকে মোজেজা বলতে চাই না।

আমাদের ধর্মানুযায়ী এগুলিকে কারামত বলা হয়। যা আমাকে দেয়া হয়েছে, মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অনুসরণের কারণে।

নুবুওওয়াত দাবী করার কিছুদিন আগে থেকে মির্জা সাহেব নিজেকে প্রায়ই পয়গম্বর হিসাবে যোগ্য উল্লেখ করতে থাকে। মুসলমানদের উত্তেজনা, বৈরীভাব এবং অস্বস্তি দূর করার জন্য সে ইহা তার নিজের মতাদর্শে ব্যাখ্যা করতো।

সীরাজ-ই-মুনীরার ৩য় পৃষ্ঠায় সে বলেছে, (ইহা সত্যি যে, মহান আল্লাহ পাক উনার এই বান্দার উপর ইলহাম করেছেন এবং তাতে হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম, মুরসাল (রেমযদর্ণ মর ুণ্র্রণভথণর মত ইফফটদ) শব্দগুলি আমাকে উদ্দেশ্য করেই ব্যবহার করেছেন। কিন্তু এই শব্দগুলি তার আসল অর্থে ব্যবহৃত হয়নি (প্রত্যেকেরই তার নিজস্ব পরিভাষা আছে)। ইহা মহান আল্লাহ পাক উনার পরিভাষা, যা তিনি ব্যবহার করেছেন। নুবুওওয়াতের সত্যি অর্থে আমরা বিশ্বাস করি এবং স্বীকার করি যে, আমাদের নবী, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আগমনের পর্ব নূতন বা পুরাতন কোন নবীই আর আসতে পারে না (হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম-এর দ্বিতীয়বার আগমনের উল্লেখকেই বুঝানোর জন্য পুরাতন পয়গম্বর শব্দটি ব্যবহার করেছে)। তেমন পয়গম্বরের আগমন কোরআনে নিষেধ করা হয়েছে। কিন্তু ইহা মহান আল্লাহ পাক উনার ইচ্ছা যে, তিনি মুলহিমকে (যিনি ইলহাম প্রাপ্ত হন, মির্জা সাহেব যাকে ওহী বলেছে) রসূল বা পয়গম্বর বলে সম্বোধন করেন)।

১৮৯৯ সালের ১৭ই আগষ্টে প্রকাশিত ২৮নং লেকচার-ই- কাদীয়ানের ৩য় ভলিউমে এক পত্রে মির্জা সাহেব বলে, (আসল ব্যাপার হলো এই যে, গত ২০ বছর যাবত এই বান্দা ইলহাম (ওহী) পাচ্ছে, যাতে রসূল বা নবী শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে কিন্তু মির্জা সাহেব ভুলে উহা সত্যি পয়গম্বর হিসাবে মনে করেছে। ইহা স্বাভাবিক যে, ঐ সকল শব্দ রূপকার্থে ব্যবহার ইসলামে কলহ সৃষ্টিকারী এবং ইহার ফল অপ্রীতিকর হতে পারে। দৈনন্দিন আলোচনায় ঐ সকল শব্দ তার সংগঠনের সদস্যদের ব্যবহার করা উচিত নয়)।

ইহা পূর্বেই বলা হয়েছে যে, মির্জা সাহেব তাউজিয়া-উল- মারামে বলেছে যে, আংশিক নুবুওওয়াত এবং ওহী প্রাপ্তির দরজা এখনও বন্ধ হয়নি এবং মুহাদ্দিস (যার সাথে মহান আল্লাহ পাক উনার যোগাযোগ আছে এবং আল্লাহ যাকে সম্বোধন করে কথা বলেন) হলো আংশিক পয়গম্বর।

ইজাল-ই-আওহাম (পৃঃ-১৩৮) পুস্তকে সে বলেছে, যারা মনে করে পবিত্র পয়গম্বরের (ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর) পর কোন ঐশী বাণী দ্বারা কুরআন শরীফের আদেশ পরিবর্তন করা সম্ভব, তাদের ঈমান নেই। অর্থাৎ নুবুওওয়াতের দরজা খোলা আছে। একই পুস্তকে ৫৩৪ পৃষ্ঠায় সে বলেছে, নুবুওওয়াতে ওহী আসা অসম্ভব এবং ৭৬১ পৃষ্ঠায় বলেছে, নবী আগমনও বন্ধ হয়ে গেছে। ইহাতে প্রমাণিত হয় যে, মির্জা সাহেব যখন মুসলমানদের বিশ্বাসের বিপরীতে কিছু বলতে চেয়েছে, তখন সে এক কদম অগ্রসর হয়ে যেতো এবং যখন মুসলমানদের বুঝানোর জন্য দুকদম পিছিয়ে গেছে এবং বলেছে, তার বিশ্বাস আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদাভূক্ত। ভবিষ্যতে তার দাবী আরো উন্নত করার উদ্দেশ্যে সে বিরূপ কথা বলেছে এবং যা ছিল মুসলমানদের বিশ্বাস হননের পুনরাবৃত্তি।

প্রথমতঃ মুহাদ্দেসিয়াতকে নুবুওওয়াতের প্রায় সমকক্ষ বলা হয়েছে, তৎপর ইহাকে আংশিক নুবুওওয়ত বলা হয়েছে। অতঃপর নুবুওওয়াতই দাবী করা হয়েছে। এভাবেই ক্রমান্বয়ে তার দাবী উন্নিত করেছে, তার অনুসারীদের নিকট পরবর্তী দাবীকে গ্রহণীয় করার পর।      ( অসমাপ্ত )

**********************************************************

খতমে নুবুওওয়াত প্রচার কেন্দ্র

খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারীরা কাফির

(ইসলামী শরীয়তের হুকুম মোতাবেক যারা মুসলমান থেকে খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভূক্ত হয় (যেমন- কাদিয়ানী, বাহাই  ইত্যাদি) তাদের তওবার জন্য নির্ধারিত সময় ৩দিন। এরপর তওবা না করলে, তাদের শাস্তি মৃত্যুদন্ড)

(১)

কাদিয়ানী রদ!

(তৃতীয় ভাগ)

 

বাহরুল উলুম, ফখরুল ফোক্বাহা, রইছুল মোহাদ্দেসীন, তাজুল মোফাসসেরীন, হাফেজে হাদীছ, মুফতীয়ে আজম, পীরে কামেল, মোর্শেদে মোকাম্মেল হযরত মাওলানা আল্লামা শাহ্ সূফী মুহম্মদ রুহুল আমিন রহমতুল্লাহি আলাইহি কর্তৃক প্রণীত কাদিয়ানি রদকিতাবখানা (৬ষ্ঠ খন্ডে সমাপ্ত)। আমরা মাসিক আল বাইয়্যিনাত পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করছি। যাতে কাদিয়ানীদের সম্পর্কে সঠিক ধারণাসহ সমস্ত বাতিল ফেরকা থেকে আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের অনুসারীদের ঈমান আকীদার হিফাযত হয়। মহান আল্লাহ পাক আমাদের প্রচেষ্টার কামিয়াবী দান করুন (আমিন)। ওনার কিতাব থেকে হুবহু উদ্ধৃত করা হলো, তবে তখনকার ভাষার সাথে বর্তমানে প্রচলিত ভাষার কিছুটা পার্থক্য রয়েছে।

 

(পূর্ব প্রকাশিতের পর)

মির্জ্জার মছিহ দাবী খণ্ডন

(২) মির্জ্জা ছাহেব জমিমায়-আঞ্জামে-আথামের ৭ পৃষ্টার হাশিয়ায় লিখিয়াছেন;

اپ کا خندان بھی نھایت پاک اور مطھر ھے تین دادبان اور نانیان اپ کی زناکار اور کسبی عور تین تھین جن کے خون سے پ کا وجود ظھور پذیر ھوا

 

“(হজরত) ইছার বংশ অতিশয় পাক ও নির্ম্মল ছিল, তাঁহার তিন দাদি ও নানি ব্যাভিচারিণী বেশ্যা ছিল, যাহাদের রক্তে তাঁহার অস্তিত্ব প্রসাশিত হইয়াছিল।

(৩) আরও তিনি উহার ৯ পৃষ্ঠার হাশিয়ায় লিখিয়াছেন;-

ایسے ناپاک خیال- متکبر اور استبازون کے دشمن کو ایک بھلا مانس ادمی بھی قرارنھن دے سکتے چہ جاے کہ اس کو نبی قرار دین-

এইরূপ নাপাক খেয়াল, অহঙ্কারি ও সত্যপরায়ণদিগের শত্রুকে একজন নবি স্থির করা ত দুরের কথা, লোকে তাহাকে একজন ভাল মানুষ স্থির করিতে পারেন না।

(৪) তিনি ১৯০২ সালের ২১ শে ফেব্রুয়ারির আলহাকামপত্রিকায় লিখিয়াছেন;-

مسیح کے حالات پزھو تو یہ شخص اس لائق نھین ھو سکتا کہ نبی بھی ھو-

যদি মছিহর অবস্থাগুলি পাঠ কর, তবে এই ব্যক্তি নবি হওয়ার উপযুক্ত নহেন।

(৫) দাফেয়োল-বালা, শেষ পৃষ্ঠা;-

مسیح کی راسبازی اپنے زمانہ مین دوسرے راستبازون سے بزھکر ثابت نھین ھوتی بلکہ یحیی نبی کو اسپر ایک فضیلت ھے کیونکہ و ہ شراب نھین پیتا تھا اور  کبھی نھین سناگیا  کہ کسن فاحشہ عورت نے اکر اپنی کمائی کے مال سے اس کے سر پر عطر ملاتھا یا ھاتھون اور اپنے سرکے بالون سے اس کے بدن کو چھوا تھا یا کوئی بی تعلق جوان عورت اس کی خدمت کرتی تھی اسی وجہ سے خدا نے قران مین یحیی کا نام حصور رکھا مگر مسیح کا یہ نام نہ رکھا کیونکہ ایسے قصے اس نام کے رکھنے سے مانع تھے-

মছিহর ধার্ষ্মিকতা! তাঁহার জামানায় অন্যান্য ধার্ষ্মিক দিগ্ হইতে উৎকৃষ্ট প্রতিপন্ন হয় নাই, বরং তাঁহার উপর এহইয়া নবির শ্রেষ্ঠত্ব নাই যে, কোন ব্যাভিচারিণী স্ত্রীলোক আসিয়া নিজের উপার্জ্জিত অর্থ দ্বারা তাঁহার মস্তকে আতর মালিশ করিত, কিম্বা হস্তদ্বয় ও নিজের মস্তকের কেশ দ্বারা তার শরীর স্পর্শ করিয়াছিল, কিম্বা কোন সম্বন্ধ হীনাযুবতী স্ত্রীলোক তাহার সেবা করিত।  এই কারণে খোদা কোরান শরিফে তাঁহার নাম হাছুররাখিয়াছেন, কিন্তু মাছিহের এইরূপ নাম রাখেন নাই, কেন না এইরূপ ঘটনা উক্ত নাম রাখায় প্রতিবন্ধকতা জন্মাইয়াছে।

মূলকথা, মির্জ্জা ছাহেব হযরত মছিহকে মদ্যপায়ি ও উপরোক্ত প্রকার দোষে দোষাম্বিত সাব্যস্ত করিয়াছেন।

জমিমায়-আঞ্জামে-আথামের ৭ পৃষ্ঠার হাশিয়া;-

اپ کا کنجریون سے میلان اور صحبت بھی شاید اسی وجہ سے ھو کہ جدی مناسبت درمیان ھے ورنہ کوئی پر ھیز گار انسان ایک جوان کنجری کویہ موقعہ نھین دے سکتا کہ وہ اسکے سر پر اپنے نا پاک ھاتھہ لگاوے اور زنا کاری کی کمائی کا پلید عطر اسکے سر پر ملے ا اور اپنے بالون کو اسکے پیرون پر ملے- سمجھنے و الے سمجہہ لین کہ ایسا انسان کس چلن کا ادمی ھو سکتا ھے-

“(হজরত) ইছা আলাইহিস সালাম-এর বেশ্যাদিগের সতি মিলন ও অন্তরের আকর্ষণ বোধ হয় এই কারণে হইয়াছিল যে, পূর্ব্ব পুরুষদিগের সম্বন্ধ বিদ্যমান ছিল, নচেৎ কোন পরহেজগার মানুষ একটা যুবতী বেশ্যাকে এই সুযোগ দিতে পারে না যে, সে নিজের নাপাক হস্ত তাহার মস্তকে লাগাইবে, ব্যাভিচারে উপার্জ্জিত নাপাক আতর তাহার মস্তকে মর্দ্দন করিবে এবং নিজের কেশগুলি দ্বারা তাহার পদদ্বয় মুছাইয়া দিবে, বিবেক সম্পন্ন লোক বুঝিয়া লউক যে, এইরূপ মানুষ কিরূপ চরিতের হইতে পারে।

তিনি ১৯০২ সালের ২১ শে ফেব্রুয়ারির আল হাকাম পত্রিকায় লিখিয়াছেন;

وہ ایک لزکی پر عاشق ھوگیا اور جب استاد کے سامنے اس کے حسن و جمال کا تذکرہ کر بیتھا تو استاد نے اسے عاق کردیا-

“(হযরত) ইছা একটী বালিকার প্রেমে আকৃষ্ট হইয়াছিলেন, আর যখন তিনি নিজের শিক্ষকের সম্মুখে তাহার রূপ ও সৌন্দর্যের আলোচনা করিয়া ফেলিয়াছিলেন, তখন শিক্ষক তাঁহাকে বাহির করিয়া দিয়াছিলেন।

(৬) জমিমায়-আঞ্জামে-আথাম, ৫/৬ পৃষ্ঠার হাশিয়া;-

اپکو کیسقدر جھوت بولن کی بھی عادت تی-

 اپکا ایکا ایک یھودی استاد تھا جس سے اپ نے

 توریت کو سبقا سبقا پرھا تھا- معلوم ھوتا ھے

کہ یا تو قدرت نے اپکو زبر کی سے کچھہ بھت

حصہ نھین دیا تھا اور یا اس استاد کییہ

شرارت ھے کہ اسنے اپکو محض سادہ لوح رکھا-

بھر حال اپ علمی اور علمی قوی مین بھت کچے

تھے اپ کی انھین حرکات سے اپ کے حقیقی

بھائی اپ سے سخت ناراض رھتے تھے اور ان کو

یقینتھا کہ اپ کے دماغ مین ضرور کچھہ خلل ھے-

“(হজরত) ইছার কিছু পরিমাণ মিথ্যা বলার স্বভাব ছিল, তাঁহার একজন য়িহুদী শিক্ষক ছিল, তিনি তাহার নিকট হইতে তওরাত কিতাব এক এক ছবক করিয়া পড়িয়াছিলেন, ইহাতে বিবেচিত হয় যে, হয়ত খোদা তাঁহাকে বুদ্ধি বিবেকের বড় কোন অংশ প্রদান করেন নাই, না হয় ইহা শিক্ষকের দুষ্টামি যে, সে তাঁহাকে নিতান্ত মুর্খ করিয়া রাখিয়াছিল। যাহা হউক, তিনি এলাম ও আমলি শক্তিতে অতি অপরিপক্ক ছিলেন। তাঁহার এই কার্যাকলাপের জন্য তাঁহার হকিকি ভ্রাতা তাঁহার উপর অতিশয় অসন্তুষ্ট থাকিতেন, আর তিনি বিশ্বাস করিতেন যে, নিশ্চয় তাঁহার মস্তিস্কের কিছু দোষ ছিল।

(৭) জমিমায়-আঞ্জামে-আথামের ৬ পৃষ্ঠার হাশিয়া;-

اپ کو اپنی زند گی مین تین مرتبہ شیطانی

 الھام بھی ھوا تھا چنانچہ ایک مرتبہ اپ اسی

الھام سے خدا سے منکر ھو نیکے لئے بھی تیار ھو گئے تھے-

“(হজরত) ইছার নিজের জীবনে তিনবার শয়তানি এলহাম হইয়াছিল, এমন কি একবার তিনি উক্ত এলহামের জন্য খোদার উপর এনকার করিতে উদ্যত হইয়াছিলেন।

(৮) আরও উক্ত পৃষ্ঠা;-

نھایت شرم کی بات یہ ھے کہ اپ نے پھازی

 تعلیم کو جو انجیل کا مغز کھلائی ھے یھودیون

کی کتاب طالمود سے چورا کر لکھا ھے اور پھر

ایسا ظاھر کیا کہ یہ میری تعلیمک ھے.....

افسوس ھے کہ وہ تعلیم بھی کچھہ عمدہ نھین

عقل اور کانسنس دونون اس تعلیم کے منھہ پر طمانچے مار رھے ھین-

নিতান্ত লজ্জার কথা এই যে, (হজরত) ইছা আলাইহিস সালাম নিজের পাহাড়ি শিক্ষা- যাহা ইঞ্জিলের মস্তিস্ক বলা হয়, য়িহুদিদিগের তালমুদ কেতাব হইতে চুরি করিয়া লিখিয়াছেন এবং ইহা সত্ত্বেও এইরূপ প্রকাশ করিয়াছেন যে, ইহা আমার শিক্ষা। দুঃখের বিষয় এই যে, উক্ত শিক্ষা উৎকৃষ্ট নহে, বুদ্ধি ও বিবেক উভয় উক্ত শিক্ষার মুখের উপর চপেটাঘাত করিয়া থাকে।

(৯) তিনি এজালাতোল-আওহামের ১৯৮ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছেন;-

یھی وجہ ھے کہ گو حضرت مسیح جسمانی

بیمارون کو اس عمل کے ذریعہ سے اچھا

کرتے تھے مگر ھدایت اور توحید اور دینی

استقامتون کی کامل طور پر دلون مین قائم

کرنے کے بارے مین ان کی کاروائیان کا نمبر

ایسا کم درجہ کا رھا کہ قریب ناکام کے رھے-

এই কারণে হযরত মছিহ মেছমেরজম দ্বারা শারীরিক পীড়াগুলি আরোগ্য করিতেন, কিন্তু হেদাএত, তওহিদ ও দীনি স্থিরতা লোকের অন্তরে পূর্ণভাবে বদ্ধমূল করা সম্বন্ধে তাহার কার্য্য-বিবরণীর নম্বর এত কম দরজা রহিয়াছে যে, তিনি প্রায় অকৃতকায্য্য রহিয়াছেন।” (অসমাপ্ত)


(২)

ইসলামী শরীয়ত মুতাবেক পাকিস্তান সুপ্রীম কোর্ট কর্তৃক কাদিয়ানীদের- কাফিরঘোষণা!

(পূর্ব প্রকাশিতের পর)

অনুবাদক- আলহাজ্ব মুহম্মদ হাবিবুল হক

 

মির্জা সাহেবের ভাষায় প্রকাশিত মুহাদ্দিসিয়াত মতবাদ এবং উনার উদ্দেশ্য পরীক্ষা করে দেখা যায়। ১৮ ৯২ সালের ৩রা ফ্রেব্রুয়ারি তাবলীগ-ই-রিসালত, ভলিউম ২য়-এর ৯৫ পৃষ্ঠঅয় প্রকাশিত মৌলভী আব্দুল হাকিম ও মির্জা সাহেবের মধ্যে সম্পাদিত সমঝোতা পত্রে মির্জা সাহেব সকল মুসলমানদের উদ্দেশ্যে লিখেছে, “তার (মির্জা সাহেবের) প্রকাশিত প্যামফ্লেট সমূহে (ফাত-উল-ইসলাম, তাওজিয়া-উল-মারাম, ইজালা-ই-আওহাম) উল্লেখ করা হয়েছে যে, মুহাদ্দিস এক অর্থে পয়গম্বর এবং মুহাদ্দেসিয়াত হলো- আংশিক নবুওওুয়াত বা অসম্পূর্ণ নবুওওয়াত। ইহা পরিস্কারভাবে বুঝা প্রয়োজন যে, এ সকল শব্দ প্রকৃত অর্থে ব্যবহার করা হয়নি। এগুলি আভিধানিক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। পক্ষান্তরে মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! আমি আসল নুবুওওয়াতের দাবীদার নই। ইজালা-ই-আওহামে (পৃষ্ঠা-১৩৭) পূর্বেই আমি বলেছি যে, আমি বিশ্বাস করি, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শেষ নবী। আমি ইহা পরিস্কারভাবে সকল মুসলমান ভাইদের বলতে চাই যে, যদি তারা আমার জন্য ঐ শব্দগুলি ব্যবহার অপছন্দ করেন, তবে তারা যেন ঐ সকল শব্দের পরিবর্তে মুহাদ্দিস ব্যবহার করেন (যেখানে প্রযোজ্য হয়)।

যেখানে নবী (চজঙচঐঊঞ) শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে, ঐ শব্দটি পরিবর্তন করে তৎপরিবর্তে মুহাদ্দিস শব্দ ব্যবহার করা যেতে পারে।

হাম্মাতুল বুশরা (حماة البشرى) পুস্তকের ৯৬ পৃষ্ঠায় যেখানে তিনি (মির্জা সাহেব) তার নবী দাবীর প্রসঙ্গ খ-ন করেছেন এবং দৃঢ়রূপে ঘোষণা করেছেন, “আমি কারো কাছেই অন্য কিছু প্রকাশ করি নাই। আমি আমার পুস্তকে উল্লেখ করেছি, আমি একজন মুহাদ্দিস। এবং আল্লাহ পাক একইভাবে আমার সাথে কথা বলেন, যেমন অন্যান্য মুহাদ্দিসদের (محد ثين) সাথে বলেছেন। আইনা-ই-ইসলাম (১৮৯৩ সালে প্রকাশিত-এর ৩১৬ পৃষ্ঠা, সিলসিলা-ই তাছানিফ ভলিউম ৫, পৃষ্ঠা ২০৮ য়ে ও ইহা দেখতে পারেন।

হাম্মাতুল বুশরা পুস্তকের ৯৯ পৃষ্ঠায় মির্জা সাহেব বলেছেন, “ইহা সত্য যে, আমি বলেছি যে আংশিক নুবুওওয়ত সম্বন্ধে তা হাদীসে (মুহাদ্দিস হওয়ার বর্ণনা) বর্ণনা করা হবে, কিন্তু আসলে আংশিক নয়, ইহা পূর্ণই, এবং যদি নুবুওওয়তের দরজা বন্ধ না হত, তিনি (মির্জা সাহেব) আসল নবীই হতো। সুতরাং তাকে (মির্জা সাহেব) আল নবী-উল-মুহাদ্দেস (অষ- ঘধনরুুঁষ গড়যধফফধং) বা মুহাদ্দিস রসূল বলা জায়িয। এবং এরপর নবী আসবে ব্যাখ্যা করে মির্জা সাহেব নিজেকে নবী হিসাবে উপস্থাপন করেন।

একইভাবে নিজেকে (মির্জা সাহেব) মসীহ দাবীর বিষয়াদি প্রকাশ করা হয়েছিল।

বরাহিন-ই-আহমদীয়া পুস্তকে মির্জা সাহেব উল্লেখ করেছে, তার জীবনের প্রথমভাগ মসীহর জীবনের অনুরূপ ছিল এবং দুইজনের প্রকৃতি একইরকম ছিল। যেহেতু মির্জা সাহেব সকল দিক দিয়ে মসীহর মত, আল্লাহ পাক মসীহ সম্বন্ধে ভবিষ্যদ্বানীতে মির্জা সাহেবের কথাও উল্লেখ করেছেন। ইহা বলা হয়েছে যে, মসীহ পৃথিবীতে আসবে এবং সর্বত্র ইসলামকে প্রসার করবে। ইহা হবে তার স্বশরীরে উপস্থিতি, কিন্তু ভবিষ্যদ্বাণীতে মির্জা সাহেবের উল্লেখ হল- আধ্যাত্মিক ধারণার (৪৯৯ পৃষ্ঠা) এই মতবাদ অনুযায়ী মেরীর পুত্র jesus নিশ্চয়ই আসবেন, কিন্তু মির্জা সাহেব হলেন আধ্যাত্মিকভাবে উনার (মসীহর) সংস্করণ, যাকে তিনি (মির্জা সাহেব) বলেছেন মাসীল (مثيل) (ঝবব ঋধবঃয রংষধস ঢ়ধমব-১১)

ফ্যাথ-ই-ইসলামে (পৃষ্ঠা ১০) উল্লেখ করা হয়েছে যে, মির্জা সাহেব আগমন করেছে, এমন পরিস্থিতিতে, যার সাথে ঔবংঁং এর আগমনের পরিস্থিতির মিল রয়েছে। সে ঘোষণা করে যে, আল্লাহ মসীহর মাসীলকে প্রেরণ করেছেন মানুষকে সথ্যের জ্ঞান জানাতে। তারপর সে (মির্জা সাহেব) দ্ব্যর্থহীন ভাষায় অন্য কিছু বলে, সে বলে, “তিনিই মসীহ, যিনি অবশ্যই আসার ছিলেন। তোমরা পছন্দ হলে মান্য কর।” (পৃষ্ঠা-১৫)

তার এই দাবী মুসলমানদের বিশ্বাসে ভষিণ আঘাত করেছিল। তাই গুরুতর প্রতিবাদ হয়েছিল এবং মির্জা সাহেবকে অবিশ্বাসী (কাফির) ঘোষণা করা হয়েছিল (আসমানী ফায়সালা দ্রষ্টব্য) প্রতিবাদের নিকট মির্জা সাহেব তার অভ্যাস অনুযায়ী কিহটে যায় এবং পুনঃঘোষণা করে যে, নে (নিজে) একজন মাসীল মাত্র (তাউযিহ-উল-ম্যারাম পৃষ্ঠা ১৬-২১)

সে আরো বলেছে, “মেরীর পুত্র ঔবংঁং হওয়ার কোন দাবীই সে করে না। এমনকি মৃত্যুর পর অন্য দেহে আত্মার গমনও সে বিশ্বাস করে না। সে আরো বলেছে, সে নিজে মছীহর অনুরূপ। মুহাদ্দিস যেমন নবীর কায়মোকাম, তেমনিভাবে তার (মির্জা সাহেব) আধ্যাত্মিক অবস্থা ও মসীহর আধ্যাত্মিক অবস্থার অনুরূপ (তাবলীগ-ই-রিসালাত ভলিউম-২ পৃষ্ঠা-২১)। মসীহ আসবেই এবং নিজেকে সেই মসীহ হিসেবে তার পূর্বের দাবীর বিপরীতে এখন সে বলছে, ভবিষ্যতে আর কোন মসীহ নাও আসতে পারে। সে আরো বলেছে, হয়ত আরো ১০০০০ হাজার মাসীলও আসতে পারে। তাদের মধ্যে একজন হয়ত দামাসকাসে অবতরণ করবেন (ওুধষধ-ও-অটঐঅগ চঅএঊ-২৯৬) ) অথবা ১০, ০০০ মাসীল ও আসতে পারে। সে আবার বলে, কিন্তু তিনি হলেন, যুগের মাসীল (গঅঝঊঊখ) এবং অন্য কোন মাসীলের জন্য অপেক্ষা করা বৃথা (ষনরফ, চধমব-১৯৯) । এরপর সে তার মুখোশ উন্মোচন করে এবং বলে তার (মির্জা সাহেবের) পর ক্বিয়ামত পর্যন্ত আর কোন মেহদী ও মসীহ আস বেনা। আমিই মেহদী ও মসীহ। যার আসার কথা ছিল (১৯০৫ সালের ৫ই এপ্রিলের প্যামফ্লেট। তাবলীগ-ই- রিসালত ভলিউম-১০, ৭৮ পৃষ্ঠা। (অসমাপ্ত)

**************************************************************************************************

খতমে নুবুওওয়াত প্রচার কেন্দ্র খতমে নুবুওওয়াত  অস্বীকারকারীরা কাফির

 ( ইসলামী শরীয়তের হুকুম মোতাবেক  যারা মুসলমান থেকে খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভূক্ত হয় (যেমন- কাদিয়ানী, বাহাই  ইত্যাদি) তাদের তওবার জন্য নির্ধারিত সময়  ৩দিন। এরপর তওবা না করলেতাদের শাস্তি মৃত্যুদন্ড ) (১) কাদিয়ানী রদ!

তৃতীয় ভাগ )

          বাহরুল উলুম, ফখরুল ফোক্বাহা, রইছুল মোহাদ্দেসীন, তাজুল মোফাসসেরীন, হাফেজে হাদীস, মুফতীয়ে আজম, পীরে কামেল, মোর্শেদে মোকাম্মেল হযরত মাওলানা আল্লামা শাহ্ সূফী মুহম্মদ রুহুল আমিন রহমতুল্লাহি আলাইহি কর্তৃক প্রণীত কাদিয়ানি রদকিতাবখানা (৬ষ্ঠ খন্ডে সমাপ্ত)। আমরা মাসিক আল বাইয়্যিনাত পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করছি। যাতে কাদিয়ানীদের সম্পর্কে সঠিক ধারণাসহ সমস্ত বাতিল ফেরকা থেকে আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের অনুসারীদের ঈমান আকীদার হিফাযত হয়। মহান আল্লাহ পাক আমাদের প্রচেষ্টার কামিয়াবী দান করুন (আমিন)। ওনার কিতাব থেকে হুবহু উদ্ধৃত করা হলো, তবে তখনকার ভাষার সাথে বর্তমানে প্রচলিত ভাষার কিছুটা পার্থক্য রয়েছে। (পূর্ব প্রকাশিতের পর) মির্জ্জার মছিহ্ দাবী খন্ডন।        (১০) জমিময় আঞ্জামে-আথামের ৬/৭ পৃষ্ঠার হাশিয়া ;-

عیسائیون نے بھت سے اپکے معجزات لکھے ھین مگر حق بات یہ ھے کہ اپ سے کوئی معجزہ نھین ھوا- اور اپکے ھاتھ مین سوا مکر اور فریب کے اور کچھہ نھین تھا-

 

ৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃখৃষ্টানেরা তাঁহার বহু মোজেজা লিপিবদ্ধ করিয়াছেন, কিন্তু সত্য কথা এই যে, তাঁহার দ্বারা কোন মোজেজা হয় নাই। তাঁহার হস্তে চক্র ও ধোকাবাজি ব্যতীত আর কিছুই ছিল না।মির্জ্জা ছাহেব মছিলে মছিহ হওয়ার অর্থ তবলিগ কেতাবের ৩৫৬-৩৫৮ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছেন ;-

 

و استدعی من اللہ نائبا متحدا بقیقتہ و متشابھا بجوھرہ و مقیما فی مقام جوارحہ لا تمام مراداتہ و مظھرا لظھور ارادتہ فصرف لھذہ المنیۃ عنان التوجہ الی الثری فاقتضی بدبیر الحق ان یھب لہ نائبا تنطبع فیہ صورتہ المثالیۃ کما تنطبع فی الحیاض صور النجوم من السموات العلی فانا النائب الذی ارسلنی اللہ... ونفث فی روعی من روع المسیح و جعلت و عاء لارادتہ و توجھاتہ حتی امتلات نفسی و نسمی بھا و انخرطت فی سلک و جودہ حتی ترای شبح روحہ فی نفسی و اشربت فی قلبی وجودہ وبرق منہ بارق فتلقتہ روحی اتم تلق و لصقت بوجودہ اشد مما یخیل کانی ھو و غبت من نفسی و ظھر المسیح فی مراتی و تجلی حتی  تخیلت ان قلبی و کبدی و عروفی و اوتاری ممتلئۃ من و جودہ و وجودی قطعۃ من جوھر و جودہ-

 “এবং (হজরত) মছিহ আল্লাহ্তায়ালার নিকট একজন নায়েব চাহিলেন- যাহার স্বরূপ (হকিকত) তাঁহার স্বরূপের তুল্য হয় এবং যাহার জাত তাঁহার জাতের তুল্য হয়, যিনি তাহার উদ্দেশ্য পূর্ণ করিতে তাহার অঙ্গ প্রত্যঙ্গগুলির তুল্য হয় এবং তাহার ইচ্ছার প্রকাশক হয়।”   আল্লাহ্ এই প্রার্থনার জন্য ধেয়ানের রজ্জুকে জমির দিকে ফিরাইলেন এবং আল্লাহ্তায়ালা কাজা ও কদর ইচ্ছা করিল যে, তাহাকে এরূপ একজন নায়েব দান করেন যে, তাঁহার মধ্যে (হজরত) ইছার ছুরতে মেছালি (আত্মিক রূপ) অঙ্কিত হইবে- যরূপ হাওজগুলি মধ্যে উন্নত আছমানগুলির নক্ষত্রবৃন্দের প্রতিমূর্ত্তি অঙ্গিত হইয়া থাকে। আমিই সেই নায়েব, আল্লাহ্ আমাকে প্রেরণ করিয়াছেন। আল্লাহ্ আমার অন্তরে মছিহের অন্তরে ফয়েজ ফুৎকার করিয়া দিয়াছেন, আমি তাঁহার ধেয়ান ও ধারণাগুলির আধাররূপ পরিণত হইয়াছি; এমন কি আমার প্রাণ ও নিশ্বাস উহা দ্বাা পরিপূর্ণ হইয়া গিয়াছে। আমি তাহার শরীরের মধ্যে এরূপভাবে প্রবিষ্ট হইয়াছি যে, তাঁহার আত্মার প্রতিমূর্ত্তি আমার মধ্যে বিলীন হইয়া গিয়াছে। তাঁহা হইতে একটী বিদ্যুৎ প্রজ্জ্বলিত হইয়া উঠিল, আমার রুহ পূর্ণরূপে উহা আয়ত্ত্ব করিয়া লইল এবং আমি তাঁহার অজুদের সহিত ধারণাতীত দৃঢ়ভাবে মিলিত হইলাম, যেন আমি তিনিই হইলাম। আমি আত্মা-বিস্মৃতিতে নিমগ্ন হইলাম, মছিহ আমার দেহের মধ্যে প্রকাশিত হইয়া তাজাল্লি বিস্তার করিলেন, এমন কি আমি ধারণা করিলাম যে, আমার অন্তর, হৃৎপিন্ড, শিরা ও স্নায়ুগুলি তাঁহার অজুদ দ্বারা পূর্ণ হইয়া গিয়াছে। আমার এই অজুদ তাঁহার অজুদের এক অংশ।”           মূলকথা, মির্জ্জা ছাহেব এস্থলে হজরত মছিহ আলাইহিস সালাম-এর অবতার হওয়ার দাবী করিয়াছেন। ইছলামে এই অবতারবাদ কাফেরিমূলক মত ইহার আলোচনা অন্যত্র হইবে।        যাহা হউক, যখন তিনি মছিলে-মছিহ অর্থাৎ উভয়ের এক রূহ ও এক ওজুদ হওয়ার দাবি করিয়াছেন। এক্ষণে আমি মির্জ্জায়িদিগকে জিজ্ঞাসা করি-     (১) মির্জ্জা ছাহেব কি উক্ত মছিহের পূর্ণ অবতার- যাহার জন্ম হারামভাবে হইয়াছিল?          (২) তিনি কি উক্ত মছিহের পূর্ণ অজুদ- যিনি অপবিত্র ধারণা বিশিষ্ট অহঙ্কারী ও সত্যপরায়ণদিগের শত্রু ও কুলোক ছিলেন এবং দাদি ও নানিরা ব্যাভিচারিণা ছিলেন?          (৩) তিনি কি উক্ত মছিহের পূর্ণ অজুদ ছিলেন- যিনি নবি নামে অভিহিত হওয়ার উপযুক্ত ছিলেন না?           (৪) তিনি কি উক্ত মছিহের পূর্ণ অজুদ ছিলেন- যিনি অসত্যপরায়ণ, মদ্যপায়ি ছিলেন, বেশ্যাদিগের হারামে উপার্জ্জিত অর্থের আতর মালিশ করাইতেন, যুবতী অপর স্ত্রীলোকদের সহিত মিল মহব্বত রাখিতেন এবং মোহম্মদী বেগমের রুহাহি ভগ্নি বা মছিলের উপর আসক্ত হইয়াছিলেন?    (৫) মির্জ্জা ছাহেব কি উক্ত মছিহের পূর্ণ অজুদ ছিলেন- যাহার মিথ্যা বলার স্বভাব ছিল এবং এলমি ও আমলি শক্তিতে পরিপক্কতা ছিল না?        (৬) তিনি কি উক্ত মছিহের পূর্ণ অজুদ- যাহার শয়তানি এলহাম হইত? (৭) তিনি কি উক্ত মছিহের পূর্ণ অজুদ- যিনি জ্ঞানিদিগের কেতাবগুলি হইতে প্রবন্ধগুলি চুরি করিয়া নিজের প্রণীত কেতাব বলিয়া প্রকাশ করিতেন?     (৮) তিনি কি উক্ত মছিহের পূর্ণ অবতার- যিনি হেদাএত, তওহিদ ও দীনি-দৃঢ়তা লোকদের অন্তরে বদ্ধমূল করিতে একেবারে অকৃতকার্য্য রহিয়াছিলেন? (৯) তিনি কি উক্ত মছিহের পূর্ণ অবতার- যিনি মিছমেরিজম ও ভোজ-বিদ্যাকে মোজেজা বলিয়া প্রকাশ করিতেন?     (১০) তিনি কি উক্ত মছিহের পূর্ণ হাস্তি -যাহার রাশি রাশি মোজেজা বর্ণনা করা হয়, অথচ তিনি মোজেজা প্রকাশ করেন নাই এবং যাহা দ্বারা চক্র ও ধোকাবাজি ব্যতীত কিছুই প্রকাশ হয় নাই?     যদি মির্জ্জায়িগণ- হাঁ বলিয়া উত্তর দেন, তবে তিনি কি উপরোক্ত দোষগুলির আধার ছিলেন?    আর যদি তাঁহারা নাবলিয়া উত্তর দেন, তবে তিনি কিছুতেই মছিলে-মছিহ হইতে পারেন না। (তৃতীয় ভাগ সমাপ্ত) ( পরবর্তী সংখ্যা হতে চতুর্থ ভাগ আরম্ভ হবে ইন্শাআল্লাহ্ ) (২) ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক পাকিস্তান সুপ্রীম কোর্ট কর্তৃক কাদিয়ানীদের- কাফেরঘোষণা! ( পূর্ব প্রকাশিতের পর ) অনুবাদক - আল্হাজ্ব মুহম্মদ হাবিবুল হক     এটা ঐ কৌশল যা মির্জা রচিত পুস্তিকা সমূহে প্রায়ই দেখতে পাওয়া যায়। সে একই সময়ে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য রাখে, যাতে প্রয়োজন অনুযায়ী যেকোন তার জন্য প্রযোজ্য হয়। তার সাহায্য নিতে পারে। সুতরাং মির্জা ইজালা-ই-আউহামে (৬৩৪ পৃষ্ঠা) এক ঐশী প্রেরণা উল্লেখ কারণ “...... আমরা তোমাকে মেরীর পুত্র মসীহ হিসেবে প্রেরণ করেছি।)          এবং আরবাইন পুস্তিকায়ও সে-ই (মির্জা) যে মসীহ্ তার সমর্থনে দাবী করতে গিয়ে এই ঐশী প্রেরণার উল্লেখ করেন (দ্রষ্টব্য ৩নং সংখ্যা পৃষ্ঠা-৪৪)      ১৮৯২ সালে প্রকাশিত নিশান-ই-আসমানীপুস্তিকার ৩৫ পৃষ্ঠায় মির্জা তার এক অনুসারীর স্বাক্ষীর উল্লেখ করে বলে যে, তার (মির্জার অনুসারীর) নিকট গুলাব শাহ নামক এক ব্যক্তি প্রকাশ করে যে, মির্জাই মাসীহ্-ই-মাউদ, যার আগমন সম্বন্ধে অঙ্গীকার করা হয়েছে। যার নাম পুস্তিকায় াণ্রল্র লেখা হয়েছে (৩৬নং পৃষ্ঠা)। পুস্তিকায় গোলাম আহমদ নামে াণ্রল্র-এর আগমনের প্রকাশ করা হয়েছে।  উপরোক্ত ব্যাখ্যা মির্জা অনেক পূর্বেই ১৮৮৪ সালেই বরাহীন-ই-আহমদীয়া পুস্তিকায় উল্লেখ করেছে এবং বলেছে, তার (মির্জা) মধ্যে াণ্রল্র-এর আত্মাকে স্থাপন করা হয়েছে যেমনভাবে মেরী আলাইহিস সালাম-এর মধ্যে ঈসা আলাইহিস সালামকে স্থাপন করা হয়েছিল। যেজন্য তিনি গর্ভবতী হন এবং ১০ মাস পর ঈসা আলাইহিস সালাম আগমন করেন। মেরী আলাইহিস সালাম-এর পুত্র হিসাবে মির্জা সম্ভবতঃ ঐ সময়ে ঈসা আলাইহিস সালাম-এর ইন্তেকাল সম্বন্ধে বলার সময় হয়নি বলে মনে করেছিল, নতুবা তার মনে এ ধরণের কল্পনা তখনো শুরু হয়নি। তবে তার পরিকল্পনা ছিল নিজেকে ঈসা আলাইহিস সালাম হিসাবে ঘোষণা করা, যিনি প্রতিশ্রুত মসীহ্। যে বিষয়টি অত্যন্ত স্পষ্ট এবং পরবর্তীতে যা সত্যিই স্পষ্টভাবে প্রকাশ করা হয়েছে। নিম্নে উল্লিখিত পুস্তিকাগুলিতে প্রকাশ করা হয়েছে। যেমন- আরবাইন, এক ঘালাতি কা ইজালা, কিশ্তী-ই-নূহ্।  (ধ্রির্দধ-ণ-ূলদ)            (অসমাপ্ত)

********************************************************************************************

খতমে নুবুওওয়াত প্রচার কেন্দ্র খতমে নুবুওওয়াত  অস্বীকারকারীরা কাফির ( ইসলামী শরীয়তের হুকুম মোতাবেক  যারা মুসলমান থেকে খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভূক্ত হয় (যেমন- কাদিয়ানী, বাহাই  ইত্যাদি) তাদের তওবার জন্য নির্ধারিত সময়  ৩দিন। এরপর তওবা না করলেতাদের শাস্তি মৃত্যুদন্ড ) (১) কাদিয়ানী রদ! (  চতুর্থ ভাগ ) 

            বাহরুল উলুম, ফখরুল ফোক্বাহা, রইছুল মোহাদ্দেসীন, তাজুল মোফাসসেরীন, হাফেজে হাদীস, মুফতীয়ে আজম, পীরে কামেল, মোর্শেদে মোকাম্মেল হযরত মাওলানা আল্লামা শাহ্ সূফী মুহম্মদ রুহুল আমিন (রঃ) কর্তৃক প্রণীত কাদিয়ানি রদ কিতাবখানা (৬ষ্ঠ খন্ডে সমাপ্ত)। আমরা মাসিক আল বাইয়্যিনাত পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করছি। যাতে কাদিয়ানীদের সম্পর্কে সঠিক ধারণাসহ সমস্ত বাতিল ফেরকা থেকে আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের অনুসারীদের ঈমান আকীদার হিফাযত হয়। আল্লাহ্ পাক আমাদের প্রচেষ্টার কামিয়াবী দান করুন (আমিন)। ওনার কিতাব থেকে হুবহু উদ্ধৃত করা হলো, তবে তখনকার ভাষার সাথে বর্তমানে প্রচলিত ভাষার কিছুটা পার্থক্য রয়েছে।

 (পূর্ব প্রকাশিতের পর) মির্জ্জার আকায়েদ

            (১) তিনি খোদার সন্তান সন্ততি থাকার দাবি করিয়াছেন। তিনি হকিকাতোল-অহির ৮৬ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছেন;-

انت منيى بمنزلة ولدى.

            তুমি আমার নিকট আমার সন্তানের তুল্য।            তিনি দাফেয়োল-বালায় লিখিয়াছেন;- انت منيى بمنزلة اولادى.

            তুমি আমার নিকট আমার সন্তানদিগের তুল্য।       তিনি আলবোশরা কেতাবের প্রথম খন্ডের ৪৯ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছেন ;- اسمع ولدى           তুমি শুন, হে আমার পুত্র।          তিনি তওজিহে-মারামের ৫০ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছেন ;-

مسیح اور اس عاجز کا مقام ایسا ھے جسے استعارہ کے طورپر ابنیت کے افظ سے تعبیر کرسکتے ھین-

            মছিহ এবং এই অক্ষমের (মির্জ্জা ছাহেবের) দরজা এইরূপ যে, রূপকভাবে খোদার পুত্র শব্দ প্রয়োগ করিতে পারেন।             কোরআন শরিফে আছে ;-

لم يتخذ ولدا سبحانه.

            তিনি (আল্লাহ্) পুত্র বানান নাই, তিনি পাক। ছুরা এখলাছ ;- لم يلد ولم يولد

            তিনি (কাহাকেও) জন্মদান করেন নাই এবং (কাহারও) জাত নহেন।            কোরআন ;-

قل ان كان للر حمن ولد فانا اول العابدين.

            তুমি (হে মোহাম্মদ) বল, যদি রহ্মানের পুত্র হইত, তবে আমি (তাহার) প্রথম এবাদতকারী (উপাসক) হইতাম।  কোরআন ;-

تكاد السموات يتفطرن منه وتنشق الارض وتخر الجبال هدا. ان دعواللرحمن ولدا.

            যেহেতু লোকে রহমানের পুত্র বলিয়া ডাকিয়াছে, বিচিত্র নহে যে, আছমান সমূহ উহার জন্য চূর্ণ বিচূর্ণ হইয়া যায়, জমি বিদীর্ণ হয় এবং পাহাড় সকল খন্ড খন্ড হইয়া পতিত হয়।    মূলকথা, য়িহুদীরা নিজেদিগকে খোদার পুত্র ও খৃষ্টানেরা হজরত ইছা (আঃ)কে খোদার পুত্র বলিয়া অভিহিত করিতেন, খোদা ইহার প্রতিবাদে কোরআনের উপরোক্ত আয়তগুলি নাজিল করিয়াছেন, কিন্তু মির্জ্জা ছাহেব কোরআনের হুকুমের বিপরীতে য়িহুদী ও খৃষ্টানদিগের মত প্রচার করিয়াছেন।         (২) মির্জ্জা ছাহেব তওজিহে-মারামের ২১/২২ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছেন ;-

ان دونون محبتون کے ملنے سے جو در حقیقت نر و مادہ کا حکم رکھتے ھے-

ایک مستحکم رشتہ اور ایک شدید مواصلت خالق اور مخلوق مین پیدا ھوکر الھی محبت کے چمکنے و الی اگ سے ایک تیسری چیز  پیدا ھوتی ھے جس کا نام روح القدس ھے اور یھی پاک نثلیث ھے انتھی ملحضا-

            এই দুই প্রেমের মিলনে যাহা প্রকৃত পক্ষে পুরুষ ও স্ত্রী নামে অভিহিত হইতে পারে, সৃষ্টিকর্ত্তা ও সৃষ্ট বস্তুর মধ্যে এক দৃঢ় সম্বন্ধ ও মজবুত সহযোগ প্রকাশিত হয়, খোদাতায়ালার সমুজ্জ্বল প্রেমের অগ্নিতে এক তৃতীয় বস্তু সৃজিত হয় যাহার নাম রুহোল কুদছ। ইহাই পাক ত্রীত্ববাদ (তছলিছ)।       কোরআন শরিফে আছে ;-

لقد كفر الذين قالوا ان الله ثالث ثلثة.

            যাহারা বলে যে, নিশ্চয় আল্লাহ্ তিনের এক, সত্যই তাহারা কাফের হইয়াছে।             খৃষ্টানেরা পিতা, পুত্র, পবিত্র আত্মা (আল্লাহ্, মছিহ ও জিবরাইল) এই তিনজনকে এক পূর্ণ খোদা ধারণা করিত, ইহাকে ত্রীত্ববাদ (তছলিছ) বলা হয়, কোরআন ইহার ঘোর প্রতিবাদ করিয়াছে। মির্জ্জা ছাহেব এই খৃষ্টানি মত প্রচার করিয়া উহাকে পাক তছলিছ নামে অভিহিত করিয়াছেন। তিনি যখন এইরূপ লানতি ত্রীত্ববাদকে পাক বলিয়াছেন, তখন তাহার মতে পাক মিথ্যা, পাক শেরক, পাক ব্যভিচার, পাক জুয়া, পাক চুরি ইত্যাদি মত প্রচারিত হওয়া জরুরি নহে কি? (৩) মির্জ্জা ছাহেব তওজিহে-মারামের ৭৫ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছেন ;-

ایک ایسا وجود اعظم جس کے بیشمار ھاتھہ بی شمار پیر ھین اور ھریک عضواس کثرت سے ھے کہ تعدان سے خارج اور لا  انتھا عرض اور طول رکھتا ھے اور تیندوے کی طرخ اس کی قارین بھی ھین-

            সেই শ্রেষ্ঠতম অস্তিত্বের (খোদাতায়ালার) অসংখ্য হস্ত, অসংখ্য পদ তাঁহার প্রত্যেক অঙ্গ গণনাতীত এবং অসীম দৌর্ঘ প্রস্থ বিশিষ্ট আছে এবং মাকড়সার ন্যায় তাহার তার সকল আছে।            কোরআন শরিফে আছে ;-

ليس كمثله شئ

            তাঁহার তুল্য কোন বস্তু নাই। ইহাতে বুঝা যায় যে, অঙ্গ-প্রতঙ্গ, আকৃতি, দৌর্ঘ, প্রস্থ ইত্যাদি মানবীয় ও পার্থিব ভাব হইতে খোদাতায়ালা পাক। মির্জ্জা ছাহেব কোরআনের বিপরীতে হিন্দুদের মতের পৃষ্ঠপোষকতা করিতেছেন।       (৪) মির্জ্জা ছাহেব জরুরাতোল-এমামের ১৩ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছেন ;-

(صاحب الھام لوگون سے) خدا قریب ھو جاتا ھے اور کسی قدر پردہ اپنے پاک اور روشن چھرہ پر سے جو نور محض ھے اثار دیتا ھے اور یہ کیفیت دوسرون کو میسر نھین اتی بلکہ وہ تو  بسا اوقات اپنے تئین ایسا پاتئے ھین کہ گویا ان سے کوئی تھتھا کر رھا ھے-

            খোদাতায়ালা (এলহাম প্রাপ্ত লোকদিগের) নিকটবর্তী হইয়া যান এবং নিজের পাক বিশুদ্ধ নূর আলোকময় চেহারা হইতে কতক পরিমাণ পরদা উঠাইয়া দেন, এই হাবভাব অন্য লোকদিগের ভাগ্যে ঘটিয়া উঠেনা, বরং তাহারা অনেক সময় নিজেদিগকে এইরূপ অবস্থায় প্রাপ্ত হন যে, যেন কেহ তাহাদের সহিত ঠাট্টা বিদ্রুপ করিতেছে।  কোরআন শরিফে আছে ;-

لاتدركه الابصار.

চক্ষু সকল তাঁহাকে দেখিতে পারে না।      কোরআন ছুরা আরাফ ;-

قال رب ارنى انظر ليك قال لن تر انىমুছা বলিলেন, হে আমার প্রতিপালক, তুমি আমার সহিত দেখা দাও, আমি তোমাকে দেখিব, আল্লাহ্ বলিলেন, তুমি কখন আমাকে দেখিতে পারিবে না।   মির্জ্জা ছাহেব কোরআনের বিপরীতে একেত নিরাকার খোদাকে সাকার ধারণা করিলেন, দ্বিতীয় দুনইয়াতে তাঁহার দর্শন লাভের দাবি করিলেন।             (৫) তিনি বারাহিনে আহমদিয়ার ৫৫৫/৫৫৬ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছেন ;-

اغفر وارحم من السماء ربنا عاج.

তুমি মাফ কর, আছমান হইতে রহ্মত কর, আমার  প্রতিপালক عاج  আজ মির্জ্জা ছাহেব আরবি عاج শব্দের অর্থ খুজিয়া পান নাই, আশ্চর্য্যের কথা, যিনি বৃষ্টির ন্যায় অহি নাজেল হওয়ার এবং খোদার সাক্ষাতে কথা বলার দাবি করিয়া থাকেন, তিনি উক্ত এলহামের অর্থ বুঝিতে পারিলেন না।          মোন্তাখাবোল লাগাতের ৩০৪ পৃষ্ঠায় আছে ;-  عاج শব্দের অর্থ হস্তীর দাঁত, হস্তীর হাড়, গোবিষ্ঠা ইত্যাদি।            এক্ষণে মির্জ্জায়িরা খোদাকে হস্তীর দাঁত, হস্তীর হাড় কিম্বা গোবিষ্ঠার তুল্য ধারণা করিতে পারেন। মির্জ্জা ছাহেব ছোরাইয়ার নিকট হইতে যে কেতাব আনয়ন করার দাবি করিয়াছেন, তাহাতেই খোদার এইরূপ হুলইয়া লেখা থাকিতে পারে, ইহা কোরআন শরিফের শিক্ষা নহে। (৬) মির্জ্জা ছাহেব হকিকাতোল অহির ২৫ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছেন ;-

پس روحانی طور پر انسان کے لئے اس سے برھکر کوئی کمال نھین کہ وہ اس قدر صفائی حاصل کرے کہ خدا تعالی کی تصویر اس مین کھینچی جاوے-

            তৎপরে আত্মিকভাবে মনুষ্যের পক্ষে ইহা অপেক্ষা অধিকতর যোগ্যতা হইতে পারে না যে, সে এই পরিমাণ শুদ্ধিলাভ করে যে, তাহার মধ্যে খোদাতায়ালার ছবি অঙ্কিত হইয়া যায়। ( অসমাপ্ত )

 (২) ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক পাকিস্তান সুপ্রীম কোর্ট কর্তৃক কাদিয়ানীদের- কাফের ঘোষণা! ( পূর্ব প্রকাশিতের পর ) অনুবাদক - আল্হাজ্ব মুহম্মদ হাবিবুল হক       ১৯০০ সালে প্রকাশিত আরবাইন পুস্তিকায় মির্জা লিখেছে, আল্লাহ্ পাক তাকে (মির্জাকে) জানিয়েছেন যে, সেই (মির্জা) প্রতিশ্রুত মসীহ এবং আল্লাহ্ পাক-এর পক্ষে সে-ই (মির্জা) মেহদী (আঃ)। এ কথাটি ঐ পুস্তকের অনেক জায়গায় পুনঃপুনঃ উল্লেখ করা হয়েছে। এক ঘালাতি-কা-ইজালা পুস্তিকার ৩নং পৃষ্ঠায় সে স্পষ্টভাবে বলেছে যে, সে-ই (মির্জা) প্রতিশ্রুত মসীহ। এটা বোধগম্য নয় যে, সে কিভাবে দশ হাজার মাসীলের একজন। এক্ষেত্রে নিজেকে মাসীল হিসাবে বলার উদ্দেশ্য ছিল জনগণের উত্তেজনা প্রশমন। কিশ্তী-ই-নূহ্ পুস্তিকার ৪৭নং পৃষ্ঠায় সে (মির্জা) লিখেছে, মেরী (আঃ) এবং াণ্রল্র সম্বন্ধে যে ওহী সে পেয়েছিল, তার মর্মার্থ তখন সে (মির্জা) হৃদয়ঙ্গম করতে পারেনি। কিন্তু অতঃপর যখন সময় হলো এবং আল্লাহ্ পাক গোপনীয় বিষয়ে তাকে (মির্জাকে) বুঝিয়ে দিলেন, তখন সে (মির্জা) বুঝতে পারলো, প্রতিশ্রুত মসীহ্ হিসাবে দাবী ঠিকই আছে। এটাও এক দাবী যা বরাহীন-ই-আহমদীয়া পুস্তিকায় স্পষ্টভাবে কয়েকবার উল্লেখ করা হয়েছে।        সে আরো উল্লেখ করেছে, আল্লাহ্ পাক তার (মির্জার) সম্বন্ধে বলেছে, আল্লাহ্ পাক তাকে (মির্জার) এক প্রতীক হিসাবে উপস্থাপন করবেন এবং মেরী ও াণ্রল্র নামদ্বয় তার (মির্জার) জন্যই ব্যবহার করা হয়েছে। সে আরো বলেছে, সে-ই (মির্জা) মেরীর পুত্র াণ্রল্র, যার আগমণ অবশ্যসম্ভাবী।         সে আরো উল্লেখ করেছে, আল্লাহ্ পাক তার (মির্জার) প্রসঙ্গে বলেছেন, তিনি (আল্লাহ্ পাক) তাকে (মির্জাকে) এক প্রতীক হিসাবে উপস্থাপন করবেন এবং মেরী (আঃ) ও াণ্রল্র নামদ্বয় তার (মির্জার) প্রসঙ্গেই ব্যবহার করা হয়েছে। সে আরো বলেছে, সেই (মির্জা) মেরী (আঃ)-এর পুত্র াণ্রল্র, যার আগমণ অবসম্ভাবী। সেই (মির্জা) সত্য এবং সেই (মির্জা) প্রতিশ্রুত (মসীহ)। (প্রাগুক্ত, পৃষ্ঠা-৪৮)             মির্জা আরো কিছু অনুসারী তৈরী করে ১৯০১ সালে নবী দাবী করে। বরাহিন-ই-আহমদীয়া, ভলিউম ৩ এবং ৪ প্রকাশ করার পর থেকে তার (মির্জার) নুবুওওয়ত দাবীর প্রসঙ্গে মুসলিম সম্প্রদায়কে প্রস্তুতকরতে থাকে। প্রথমতঃ পাঞ্জাবের মুসলিম সম্প্রদায় এবং ভারত উপ-মহাদেশের মুসলিম সম্প্রদায় বহু আগে থেকেই তার (মির্জার) নবী দাবীর আশঙ্কা করছিলেন। মসীহ্ ও মেহদী দাবী করার কয়েক বছর পূর্ব থেকেই মির্জা পরিবারের সদস্যরা তাকে (মির্জাকে) ভন্ড হিসাবে অভিহিত করেছিল। এক-ঘালাতি-কি-ইজালা পুস্তকেএকটি প্যামফ্লেটের মাধ্যমেই প্রথম নবী দাবীর ঘোষণা করে। (৯০১ সালে বিংশ শতাব্দীর শুরুতেই প্রকাশিত হয়)     নবী দাবীর বাস্তাবতার প্রেক্ষিতে পূর্বেও যেমন দেখা গেছে মির্জা, অভিযোগে বর্ণিত নুবুওওয়ত সম্বন্ধীয় ঐশী বাণীর উল্লেখ সমূহ যা নিজের অধিকারের স্বীকৃতির নিবন্ধ, তা গোপন করে বলে যে, তার জন্য নবী ও রাসূলের উল্লেখ রূপক শোভিত, আসল অর্থে নয়। আরবাইন (ভলিউম-২ পৃষ্ঠা-১৮, ১৯০০ সালে প্রকাশিত) পুস্তিকায় সে উহাই বলেছে, যা সে বরাহিন-ই-আহমদীয়ায় পূর্বেও উল্লেখ করেছে- এই (আমি)পয়গম্বরের আনুষ্ঠানিকতায় আল্লাহ্র রাসূল। পুস্তিকার মার্জিনে সে বলেছে, এই শব্দগুলি রূপকার্থে ব্যবহার করা হয়েছে। আরবাইন পুস্তিকার ৩নং ভলিউমের ৪৪ পৃষ্ঠায় সে লিখেছে, তিনিই আল্লাহ্, যিনি তাঁর রাসূল প্রেরণ করেন। আমার (মির্জা) উদ্দেশ্যেই বলা হয়েছে, ধর্মের পথ নির্দেশক এবং চরিত্র সংস্কারক। তার (মির্জার) বিরুদ্ধাচরন কারীদের উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে, যদি সে মির্জা) মিথ্যা বলে, তবে সে (মির্জা) ধ্বংস প্রাপ্ত হবে, কেননা মিথ্যার উদ্ভাবন- অপরাধ।             মির্থাবাদী ধ্বংস প্রাপ্ত হবে, এই থিওরীর সমর্থনে সে নির্ভর করেছে-  ৪ৈ০:২৮ (ূৃ.৩, টেথণ-৫)

وان يك كاذبا فعليه كذبه ت.  (যদি তিনি মিথ্যা বলেন, তবে তিনিই তার শাস্তি পাবেন) মির্জা সাহেব প্রথম অংশে অনুবাদ করে বলেছে, যদি এই নবী মিথ্যা হয়, তবে এই মিথ্যার জন্য তিনিই ধ্বংস প্রাপ্ত হবেন।     তার এই অনুবাদ শুদ্ধ নয়। অপরদিকে প্রতিষ্ঠিত নীতি এই যে, এ ধরণের শর্তারোপনকারীদের সময় দেয় হয়, কোনরূপ বাধা না দিয়ে যেটা মৌলভী সানাউল্লাহ্ অমৃতসরী উল্লেখ করেছিলেন, যখন মির্জা এই শর্ত আরোপ করেছিল, যিনি মিথ্যা বা অযৌক্তিক, তিনিই ধ্বংস প্রাপ্ত হবেন।          আরবাইন পুস্তিকা৪ এর ৭ পৃষ্ঠায়- আর একধাপ এগিয়ে মির্জা উল্লেখ করে যে, সে শরীয়ত সহই নবী। এ দাবী করতে সে শরীয়তসহ নবীর সংজ্ঞার কিছু পরিবর্তন করে। পূর্বে নবীর সংজ্ঞায় সে বলেছিল- যিনি নতুন শরীয়ত প্রবর্তন বা পূর্ব শরীয়তের সংশোধনী করেন, তিনি নবী। এখানে সে শরীয়তের যে সংজ্ঞা দেয়, তাহলো- যা বর্ণনা করে দৈব বলে লব্ধ কিছু আদর্শ  (امر) এবং কিছু নিষেধ    (نهى)এবং উম্মতের জন্য নির্দিষ্ট করে দেয়া কিছু আইন। এরূপ ব্যক্তি শরীয়ত  (صاحب شريعه) পালনকারী। এই সংজ্ঞার আলোকেও আমাদের প্রতিপক্ষ অভিযুক্ত, কেননা সে বলেছে, দৈব বলে লব্ধ জ্ঞানে আমাকে আদেশ ও নিষেধ করা হয়েছে। বরাহিন-ই-আহমদীয়াতে এই দৈব লব্ধ জ্ঞানের উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন কোরআন ২৪ঃ৩০ বিশ্বাসী লোকদের বল, তাদের দৃষ্টিকে নীচু করতে এবং বিণয়ী হতে। উহা তাদের জন্য পবিত্রতর। দেখ! আল্লাহ্ সর্ব জ্ঞানী। ইহাতে আদেশ এবং নিষেধ রয়েছে এবং এই গুপ্ত তথ্য আমি ২৩ বছর আগে পেয়েছি। আজ পর্যন্ত আমি যত গুপ্ত তথ্য পেয়েছি, তাতে আদেশ এবং নিষেধ রয়েছে। এখন যদি আপনারা মনে করেন, শরীয়ত তাকেই বলে যাতে নতূন আদেশ রয়েছে, তা একবারেই অশুদ্ধ। ইহা ছিল একটি নতূন কৌশল এবং শরীয়ত সম্বন্ধে নতুন ব্যাখ্যার অবতারনা, যা দ্বারা শরীয়তসহ নবী দাবী করাতে আরো একটু জোর দেয়া।             (অসমাপ্ত) 

আবা-৪১,৪২,৪৩,৪৪,৪৫


0 Comments: