সকল দেওবন্দী ওহাবীদের প্রধান মুরুব্বীদের পবিত্র মীলাদ শরীফ ও ক্বিয়াম শরীফের পক্ষে ফতোয়া পক্ষে ফতোয়া ৮৪

সকল দেওবন্দী ওহাবীদের প্রধান মুরুব্বীদের পবিত্র মীলাদ শরীফ ও ক্বিয়াম শরীফের পক্ষে ফতোয়া পক্ষে ফতোয়া
=================================================
দেওবন্দী, তাবলীগি দের চাইতে বড় ভন্ড মুনাফিক দুনিয়ায় আছে কিনা সন্দেহ আছে। আমারা যে আমল গুলো করলে তারা শিরক- বিদয়াতের গরম ফতোয়া দেয়, সে কাজগুলো তাদের মুরুব্বীরা করলে সম্পূর্ণ নিশ্চুপ থাকে।
নবীজী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সকল আশেকগনের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, উনারা মীলাদ শরীফ এবং ক্বিয়াম শরীফ করে থাকেন। অথচ দেওবন্দী –তাবলীগি- কওমী-খারেজীরা মীলাদ শরীফ এবং ক্বিয়াম শরীফ কে সরাসরি বিদয়াত/ কুফরী/শিরিকী বলে ফতোয়া দেয়।
অথচ, এই দেওবন্দী তাবলীগি দের মুরুব্বীরা এই মীলাদ শরীফ এবং ক্বিয়াম শরীফকে জায়েজ বলেই ফতোয়া প্রদান করেছে এবং পালনও করেছে ।
আসুন তাদের কিতাব থেকেই দলীল প্রদান করি —
আশরাফ আলী থানবী , রশিদ আহমদ গাঙ্গুহী, সহ সকল উলামায়ে দেওবন্দীদের পীর শায়েখে আরব ওয়াল আযম ,হাজী এমদাদুল্লাহ মুহাজির মক্কী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার কিতাবে বর্ননা করেন –>
مولود شريف كو ذريعه بركلت سمجه كر هر سال منعقد كرتاهون اورقيام كے وقت بے حد لطف ولذت پاتاهوی
অর্থ- মীলাদ শরীফের মাহফিলকে বরকত লাভের উসিলা মনে করে আমি প্রতি বছর মীলাদ শরীফ এর মজলিস করি এবং মীলাদ মাহফিলে ক্বিয়াম শরীফ করার সময় আমি অশেষ আনন্দ ও স্বাদ উপভোগ করি।”
(ফয়সালায়ে হাফতে মাসায়লা পৃষ্ঠা ৫)
হাজী এমদাদুল্লাহ মুহাজিরে মক্কী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার অন্য কিতাবে বলেন —
“আমাদের আলেমগন (দেওবন্দী) মীলাদ শরীফের বিষয়ে খুবই বিরোধ করছে। তবু আমি ক্বিয়াম শরীফ জায়েজ পন্থি আলেমগনের পক্ষেই গেলাম। যখন ক্বিয়াম শরীফ জায়েজ হওয়ার দলীল মওজুদ আছে, তখন কেন এতো বাড়াবড়ি করা হচ্ছে । আমাদের জন্য তো মক্কা শরীফ মদীনা শরীফের অনুকরনই যথেষ্ট। অবশ্য ক্বিয়ামের সময় জন্মের এতেকাদ না রাখা চাই। মীলাদ শরীফ মজলিশে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহ ওয়া সাল্লাম উপস্থিত হতে পারেন এমন বিশ্বাস স্থাপনে কোন দোষ নেই। কারন জড় জগত স্থান ও কাল থেকে মুক্ত নয়, তবে রুহানী জগত স্থান ও কাল হতে সম্পূর্ণ মুক্ত।
সূতরাং হুজুরপাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মীলাদ মাহফিলে আগমন করা উনার পবিত্র জাত মুবরকের জন্য অসম্ভব নয় !”
(শামায়েলে এমদাদীয়া ৮ পৃষ্ঠা)
দেওবন্দী সর্বোচ্চ গুরু আশরাফ আলী থানবী তার কিতাবে লিখেছে —
ولاحتفال بذكر الودة ان كان خاليا حن البدعات المروجة جاءز بل مندوب كساءر اذكاره صلي الله عليه و سلم – والقيم عند ذكر ولادته الشريفة حاشا الله ان يكون كفرا
অর্থ– “হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফের বর্ননা করার জন্য মাহফিল করা জায়েজ বরং মুস্তাহাব, যখন উহা (হিন্দুস্থানের) প্রচলিত বিদয়াত হতে পবিত্র হবে এবং ( মীলাদ শরীফে) তাওয়াল্লুদ শরীফ পাঠ করার সময় ক্বিয়ম করা কখনোই কুফরী নয় !”
(ইমদাদুল ফতোয়া ৪ র্থ খন্ড ৩২০ পৃষ্ঠা)
আশরাফ আলী থানবী অপর এক কিতাবে লিখেছে —-
“ঐ সকল কার্যাবলী ( অর্থাৎ শিরনী, ক্বিয়াম ইত্যাদি) প্রকৃত পক্ষে মুবাহ কাজ সমূহের অন্তর্ভুক্ত। তাতে কোন ক্ষতি নেই এবং সেজন্য প্রকৃত মীলাদ শরীফ এর ব্যাপারে কোন প্রকার নিষেধ আসতে পারে না।”
(তরীকায়ে মীলাদ ৮ পৃষ্ঠা ।)
দেওবন্দী ইমাম মাওলানা খলীল আহমদ সাহারানপুরী রচিত “আল মহান্নাদ আলাল মুফান্নাদ” কিতাবে পবিত্র মক্কা শরীফ এবং মদীনা শরীফ এর আলেমদের মীলাদ শরীফ সম্পর্কে প্রশ্নের জবাব দেওবন্দী খলীল আহমদ সাহারানপুরী লিখেন-
“রসূলে করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মুবারক বেলাদতের আলোচনা বা মীলাদ শরীফ পাঠ এমন কি তাঁর পাদুকা সংশ্লিষ্ট ধূলি অথবা তাঁর বাহন গাধাটির প্রশ্রাব-পায়খানা মুবারক আলোচনাকে আমরা কেন, কোন সাধারণ মুসলমান বেদআতে মুহররমা বা হারাম বলতে পারে না। না আমরা কখনো বলিনি বলিও না।
ঐ অবস্থা যার বিন্দুমাত্র সম্পর্ক হযরত রসূলে করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে রয়েছে তার আলোচনা আমাদের মতে অধিকতর পছন্দনীয় ও উন্নতমানের মুস্তাহাব।”
দলীল- {আল মহান্নাদ আলাল মুফান্নাদ ২১ তম প্রশ্নের জবাব।
লেখক- মাওলানা খলীল আহমদ সাহারানপুরী দেওবন্দী।
প্রকাশনা- ইত্তেহাদ বুক ডিপো, দেওবন্দ (ইউ পি)}
খলীল আহমদ সাহারানপুরী এই বইতে লিখেছে এটাই দেওবন্দী আকাবিরদের আক্বীদা। এর বিপরীত আক্বীদা পোষনকারীরা দেওবন্দী গ্রুপের নয়।
সকল দেওবন্দী ও বাংলাদেশর কওমীদের অন্যতম গর্ব আশরাফ আলী থানবীর খলীফা , শামছুল হক ফরিদপুরী তার “তাছাউফতত্ত্ব” কিতাবে মীলাদ শরীফ ও ক্বিয়াম শরীফ এর ব্যাপারে প্রশ্নের জবাবে লিখেছে —
“ক্বিয়াম জিনিসটা আসলে ফিকাহের অন্তর্ভুক্ত নাহে –ইহা তাছাউফের অন্তর্ভুক্ত। অর্থাৎ মুহব্বত বাড়ানোর উদ্দেশ্যে হযরত রাসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর তারিফের কাসীদা পড়া হয় তাহা দ্বারা মুহব্বত বাড়ে এবং লোকজন মুহব্বতের জোশে খাড়া হইয়া যায় । মুহব্বতের জোশে খাড়া হইলে তাহাকে বিদয়াত বলা যায় না। তাহা ছাড়া হযরত নবীজী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে সালাম করার সময় বসিয়া বসিয়া সালাম করা শরীফ তবিয়তের লোকের কাছে বড়ই বেয়াদবী লাগে।”
দলীল— (তাছাউফ তত্ত্ব ৪১ পৃষ্ঠা)
শুধু তাই নয়, দেওবন্দী সিলসিলার প্রতিষ্ঠিাতা সহ, সকল দেওবন্দীদের পীর সাহেব হযরত হাজী ইমদাদুল্লাহ মুহাজিরে মক্কী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার নিজের ত্বরীকা সম্পর্কে সকল অনুসারীদের মধ্যে কিছু উপদেশ লিখিত আকারে রেখে গিয়েছিলেন। আসুন দেখা যাক উপদেশগুলা কি ছিলো –>
★গৌরব করবে না।
★নিজেকে বড় মনে করবে না।
★খায়ের ও বরকতের জন্য মীলাদ মাহফিলের আঞ্জাম করবে এবং ক্বিয়াম করবে।
★পীর আওলিয়া গনের ঈসালে সাওয়াব মাহফিলে যোগদান করবে!
★ফাতেহা খানীতে যোগদান করবে।
★মাশায়েখ ও পীর আওলিয়াগনের মাযার শরীফ যিয়ারত করবে।
★অবসর সময় তাঁদের মাযার শরীফের পার্শ্বে এসে রূহানীয়ত সহ মুতাওজ্জুহ হবে এবং স্বীয় মুর্শিদের সুরতে তাদের ধ্যান করবে ও ফয়েজ হাসিলের চেষ্টা করবে। কারন তাঁরা আল্লাহ পাক এবং উনার রসূল পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার স্থলাভিষিক্ত বলে গন্য!
★এগুলোই আমার ত্বরীকা !
আর এসবই বরকতময় কর্ম। আমার লেখা “ফায়সালায়ে হাফতে মাসায়লা” কিতাবে এ সকল বিষয় বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে !””
(যিয়াউল কুলুব- কতিপয় বিশেষ উপদেশ পরিচ্ছেদ )
লেখক- হাজী ইমদাদুল্লাহ মুহাজির মক্কী রহমাতুল্লাহি আলাইহি !
মুসলমান ভাইগন, আমার প্রশ্ন হচ্ছে-দেওবন্দী সিলসিলায় কয়জন এই উপদেশ মান্যকরে ?
দেওবন্দী দের কাছে এই আমাল গুলাতো শিরিক আর বিদয়াত !!
তবে তারা কি উনাকে মুশরিক/বিদয়াতি বলবে ?
পীরের ত্বরীকা অস্বীকার করে কি তারা পীরের সিলসিলায় থাকতে পারে ?
জবাব পেলে ভালো হতো।
এবার একটু চিন্তা করুন দেওবন্দীরা কত নিকৃষ্ট। নিজেদের সিলসিলার সবাই মীলাদ -ক্বিয়ামের পক্ষে ফতোয়া দিয়ে গেছে সেটা দেখে না। আমরা সুন্নী মুসলমানরা মীলাদ শরীফ ও ক্বিয়াম শরীফ করলে সেটা তাদের কাছে শিরক-বিদায়াত হয়ে যায়। যদি আমাদেরকে শিরকি- বিদয়াতী ফতোয়া দিতে চায় তাহলে সর্বপ্রথম যেন নিজেদের মুরুব্বী দের মুশরিক আর বেদাতী ফতোয়া দিয়ে নেয় । নচেত আমাদের বিরুদ্ধে কিছু বলার অধিকার তাদের নাই।

0 Comments: