একজন কুতুবুজ্জামান- উনার দিদারে মাওলার দিকে প্রস্থান- সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযুর ক্বিবলা সাইয়্যিদ মুখলেছুর রহমান আলাইহিস সালাম উনার সাওয়ানেহে উমরী মুবারক-পর্ব-৮১

 


ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ্ দাওয়াত, আফযালুল ইবাদ, ছহিবে কাশ্ফ ওয়া কারামত, ফখরুল আউলিয়া, ছুফীয়ে বাতিন, ছহিবে ইস্মে আযম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, আমাদের সম্মানিত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম-উনার স্মরণে-

একজন কুতুবুয্ যামান-উনার দিদারে মাওলা উনার দিকে প্রস্থান-

পরোপকার ও দানশীলতা-

কোন অভাবগ্রস্ত মানুষ এবং সায়েলকেই রহমাতুল্লিল আলামীন, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কখনোই ফেরত দেননি। এমনকি অনেক সময় ধার-কর্জ করেও অনবরত দান করেছেন। ফখরুল আউলিয়া, কুতুবুয্ যামান, হযরতুল আল্লামা, সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান আলাইহিস সালাম এ সুন্নত পালনে অর্জিত ধন-সম্পদ ব্যয়ে আল্লাহ পাক এবং প্রিয়তম হাবীব, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার সন্তুষ্টি হাছিলে নিমগ্ন থেকেছেন।

হযরত হারেসা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু একদিন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সমীপে বিনীত নিবেদন করলেন, ‘ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি যথার্থ মুমিন হতে পেরেছি বলে মনে করি।এতে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে জানতে চাইলেনঃ উনার প্রমাণ কী?’ হযরত হারেসা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু সবিনয় জানালেনঃ দুনিয়ার মোহ আমার অন্তর থেকে এমনভাবে পলায়ন করেছে যে, আমার দৃষ্টিতে স্বর্ণ ও রৌপ্যের মধ্যে কোন পার্থক্য সূচিত হয়না। উভয় বস্তুই আমার কাছে সমান তুচ্ছ। জান্নাত এবং জাহান্নাম আমি দিব্য চোখে দেখতে পাই।

 এ কথা শুনে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ ঈমানের যে সোপানে তোমার উপনীত হওয়া প্রয়োজন ছিল, সে সোপানে তুমি উপনীত হয়েছ। এখন সযত্নে এ ঈমানকে হিফাজত করো।

ইতোপূর্বে বর্ণিত হাদীছ শরীফ থেকে জানা গেছে, অভাব মোচনের মতো পরিমিত ধন-সম্পদ না থাকলে সঠিক ঈমান রক্ষার ক্ষেত্রে কুফরী হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। অভাবের তীব্রতা সমুহ বিনাশ সাধন করতে পারে।

 পরিমিত সম্পদের অভাবে আল্লাহ পাক এবং উনার প্রিয়তম হাবীব, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার সন্তুষ্টি হাছিলের প্রশস্ত পথ বিপদ সংকুল হয়ে উঠাও বিচিত্র নয়। যেমন, অর্থ-সম্পদের অভাবে দান-খয়রাত, হজ্জ, যাকাত ইত্যাদি নেক কাজ সমাধা করা যায়না এবং সম্পদরূপ নিয়ামতের জন্য আল্লাহ পাক-উনার শুকরিয়া আদায়ের মাধ্যমে অশেষ পূণ্যলাভে মাহরূম থাকতে হয়। তাই প্রয়োজন পূরণের পরিমাণ সম্পদ থাকা বাঞ্ছনীয়। সম্পদের বহুবিধ অপকার সত্ত্বেও দুনিয়ায় প্রায় সর্বক্ষেত্রে উনার কল্যাণ অনস্বীকার্য। আল্লাহ পাক বলেছেনঃ

ولاتنس نصيبك من الدنيا.

অর্থঃ- দুনিয়া থেকে তোমাদের প্রাপ্য অংশ গ্রহণে ভুল করোনা।” (সূরা ক্বাছাছ/৭৭) অনেক জরুরী বিষয়ে এবং অসংখ্য মুবাহ কাজে অর্থ-বিত্ত ব্যয়ে এ আয়াত শরীফের মিছদাক হওয়ার সুযোগ অবারিত।

কালামুল্লাহ শরীফে ইরশাদ হয়েছেঃ

يايها الذين امنوا لا تلهكم امو الكم ولا اولادكم عن ذكر الله ومن يفعل ذلك فاولئك هم الخسرون.

অর্থঃ- হে ঈমানদারগণ! তোমাদের ধন-দৌলত এবং সন্তান-সন্তুতি যেনো তোমাদেরকে আল্লাহ পাক-উনার যিকির থেকে বিরত না রাখে। যারা বিরত থাকবে, নিশ্চয়ই তারা ক্ষতিগ্রস্তের অন্তর্ভুক্ত।” (সূরা মুনাফিকূন/৯)

এ আয়াত শরীফে ধন-সম্পদ এবং সন্তান-সন্ততির নিন্দা করা হয়েছে। তবে ধন-দৌলত এবং সন্তান আধিক্যের সময়ও যেনো মানুষ আল্লাহ পাক-উনার খালিছ স্মরণ থেকে গাফিল না হয়, মূলতঃ সে সম্পর্কেই এ আয়াত শরীফে সাবধান করা হয়েছে। একমাত্র মাহবুব ওলীগণ ব্যতীত সম্পদ ও বৈভবে নির্লিপ্ত থেকে পরিপূর্ণ আনুগত্যে আল্লাহ পাক-উনার শুকরিয়া আদায় এবং হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার সন্তুষ্টি হাছিল করা অন্য কারো পক্ষেই সম্ভব নয়। এ কারণে কেবলমাত্র ওলীআল্লাহগণের জন্যই সম্পদ উৎকৃষ্ট। অন্য কারো জন্য নয়। (অসমাপ্ত)

আবা-১৪১

0 Comments: