একজন কুতুবুজ্জামান- উনার দিদারে মাওলার দিকে প্রস্থান- সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযুর ক্বিবলা সাইয়্যিদ মুখলেছুর রহমান আলাইহিস সালাম উনার সাওয়ানেহে উমরী মুবারক-পর্ব-৭৭

 


ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ্ দাওয়াত, আফযালুল ইবাদ, ছহিবে কাশ্ফ ওয়া কারামত, ফখরুল আউলিয়া, ছুফীয়ে বাতিন, ছহিবে ইস্মে আযম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, আমাদের সম্মানিত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম-উনার স্মরণে- একজন কুতুবুয্ যামান-উনার দিদারে মাওলার দিকে প্রস্থান-

 সুন্নত অনুশীলনসহ ইসলাম ধর্ম  পালনে মানুষকে অভ্যস্ত করে  তোলায় নিরলস কোশেশ আল্লাহ পাক-উনার সদয় ইচ্ছায় ওলী আল্লাহগণ লক্ষ্যভ্রষ্ট মানুষকে দ্বীনের ছহীহ সমঝ্ দান করে খালিছ হিদায়েতের পথে নিয়ে আসেন। এজন্য একজন হিদায়েতকারীকে পূর্ণ সামর্থ্যবান হতে হয় এবং উনাকে প্রকৃত হাদী (সূক্ষ্মদর্শী মাহবুব ওলীআল্লাহ)-উনার মাক্বামে অধিষ্ঠিত হতে হয়। আল্লাহ পাক-উনার তরফ থেকে পরিমিত বখ্শীস এবং উনার প্রিয়তম হাবীব,  হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার সদয় ইহ্সানে ওলীআল্লাহগণ যোগ্যতা, প্রভাব-প্রতিপত্তি এবং প্রবল ব্যক্তিত্বের অধিকারী হয়ে থাকেন।

 দুনিয়া বিমুখ এমন ওলীআল্লাহগণ অনুক্ষণ আল্লাহ পাক-উনার মত এবং খাজিনাতুর রহমত, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার পথে জীবন নির্বাহে অভ্যস্ত থাকেন এবং অপরকে অভ্যস্ত করে তোলেন।  সব নিয়ামত পেয়েও আরো পাবার অবারিত প্রত্যাশায় ওলীআল্লাহগণ নিরন্তর কোশেশে ব্যাপৃত হয়ে বেদনার অথৈ পারাবারে নিমজ্জিত থাকেন। যেমন ছিলেন সূক্ষ্মদর্শী ওলীআল্লাহ হযরতুল আল্লাম সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান আলাইহিস সালাম। মাদারজাদ ওলী হিসেবে কামিয়াবী হাছিলের জন্য কাঙ্খিত গন্তব্যে পৌঁছার ক্ষেত্রে সকল বাধা-বিপত্তি উনার কাছে একান্তই তুচ্ছ ছিলো।

 আল্লাহ পাক এবং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসারীন, খাতামুন্ নাবিয়্যীন, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার রেযামন্দি হাছিলের ক্ষেত্রে সকল প্রতিবন্ধকতার শিকড় তিনি অবলীলায় অপসারিত করেছেন। দুনিয়া যে আখিরাতের প্রতিবন্ধক, একথা ওলীআল্লাহগণ ছাড়া আর কে ভালো জানে? হযরত আবূ দারদা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেছেনঃ আমি চেয়েছিলাম,  দুনিয়া ও আখিরাত একসঙ্গে অর্জন করি এবং তিজারত ও ইবাদত সমন্বয় করে এক সঙ্গে মিলিয়ে দিই।

কিন্তু শত চেষ্টাতেও তাকার্যকর করা গেলোনা। অবশেষে তিজারতকে আলবিদাবলে আখিরাতের দিকে ঝুঁকে পড়লাম।হযরত   ওমর ইবনুল খাত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু আরো তাৎপর্যপূর্ণ উক্তি করেছেন। তিনি বলেছেনঃ যদি কারো পক্ষে দুনিয়া ও আখিরাত একসাথে অর্জন করা সম্ভব হতো, তবে তাআমার পক্ষেই সম্ভব ছিলো। কারণ, এরূপ ক্ষমতা আল্লাহ পাক আমাকে দান করেছেন।  অর্থাৎ হযরত উমর ইবনুল খত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুও দুনিয়াকে আলবিদাজানিয়েছেন। মূল কথা হলো, আখিরাতের অনুষঙ্গ-উপকরণবিহীন দুনিয়ার সবটুকুই তিনি পরিত্যাগ করেছেন। হাদীছ শরীফে বর্ণিত হয়েছেঃ

 حب الدنيا رأس كل خطيئة.

 অর্থঃ সকল পাপের মূল হলো, দুনিয়ার প্রতি আসক্তি।আল্লাহ পাক -উনার উদ্দিষ্ট ব্যবস্থাই এমন যে, পরিপূর্ণ অনুগত বান্দাগণকে (মাহবুব ওলী) তিনি উনার সন্তুষ্টি দান করেন এবং সঙ্গে সঙ্গে আখিরাতের উপকরণোপযোগী পরিমিত পরিমাণ দুনিয়াও দান করেন। অপরদিকে আখিরাত বিমুখ দুর্ভাগারা দুনিয়ার অতি নগণ্য বৈভবে বিভোর হয়ে আল্লাহ পাক এবং রহমতুল্লিল আলামীন, রউফুর রহীম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার সন্তুষ্টি লাভে পরিপূর্ণরূপে মাহ্রুম থাকে। অর্থাৎ তারা জাহান্নামের ইন্ধনে পরিণত হয়।

 আল্লাহ পাক এবং উনার প্রিয়তম হাবীব, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার সন্তুষ্টি হাছিলে ওলীয়ে মাদারজাদ, আফযালুল ইবাদ, ফখরুল আউলিয়া,  লিসানুল হক্ব, আওলাদে রসূল, হযরতুল আল্লাম সাইয়্যিদ মুখলেছুর রহমান আলাইহিস সালাম সর্বোতভাবে গায়রুল্লাহ পরিত্যাগ করেছেন। আল্লাহ পাক-উনার নিগূঢ় নৈকট্য হাছিলের অনুকূল অবস্থা বহাল থাকা সত্ত্বেও তিনি মর্যাদাপূর্ণ সরকারী চাকুরী ইস্তফা দিয়েছেন। জীবনের এক সন্ধিক্ষণে লাভজনক ব্যবসাও তিনি ছেড়ে দিয়েছেন। আখিরাতের সঙ্গে বিযুক্ত দুনিয়া হতে উনার একেবারেই সম্পর্কচ্ছেদ ঘটেছে। আল্লাহ পাক এবং হাবীবুল আউয়ালীন ওয়াল আখিরীন, মাশুকে মাওলা, ছাহিবুল ইহ্সান, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার পরিপূর্ণ সন্তুষ্টি ভরা নিয়ামত সম্ভার এখন সুন্নত অনুশীলনসহ ইসলাম ধর্ম পালনে মানুষকে দায়িমীভাবে অভ্যস্ত করে তোলার কাজে তিনি মশগুল থাকবেন, এটাইতো স্বাভাবিক। (অসমাপ্ত)

আবা-১৩৭

0 Comments: