একজন কুতুবুজ্জামান- উনার দিদারে মাওলার দিকে প্রস্থান- সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযুর ক্বিবলা সাইয়্যিদ মুখলেছুর রহমান আলাইহিস সালাম উনার সাওয়ানেহে উমরী মুবারক-পর্ব-৭৬

 


ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ্ দাওয়াত, আফযালুল ইবাদ, ছহিবে কাশ্ফ ওয়া কারামত, ফখরুল আউলিয়া, ছুফীয়ে বাতিন, ছহিবে ইস্মে আযম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, আমাদের সম্মানিত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম-উনার স্মরণে- একজন কুতুবুয্ যামান-উনার দিদারে মাওলার দিকে প্রস্থান-

 বেদনা-বিমুগ্ধ মানসিকতায় জীবন  যাপনে নতুন মাত্রা যোগ এবং  অভীষ্ট লক্ষ্যে ক্রমবর্ধিষ্ণু উত্তরণ নমরূদ, ফিরাউন, সাদ্দাদকে যা দেয়া হয়েছে, মাথা কুটলেও অনুগত বান্দাগণকে কস্মিনকালেও আল্লাহ পাক তা দেননা। কারণ, ওসবের কানাকড়ি মূল্যও নেই। ওলীআল্লাহগণকে যা দান করা হয়, তা হলো আল্লাহ পাক এবং উনার প্রিয়তম হাবীব, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার নিগূঢ় নৈকট্য। এ নৈকট্য সংযোগের মাত্রা ও পরিধি উপলব্ধি করা সাধারণের কাজ নয়।  বলা হয়,

 علم من علم وجهل من جهل.

 অর্থাৎ যারা জানবার তথা হক্কানী-রব্বানী ওলীগণ উনার তো সবকিছু জেনেই ফেলেছেন। আর যারা নির্বোধ তারা সবকিছুতেই অজ্ঞ।সূক্ষ্মদর্শী ওলীআল্লাহগণের হাক্বীক্বত সকলের পক্ষে জানা সম্ভব নয়। জানা জরুরীও নয়। কাজেই, কামিয়াবীর শীর্ষ মাকামে অধিষ্ঠিত ওলীয়ে মাদারজাদ, আফযালুল ইবাদ, ফখরুল আউলিয়া, ছূফীয়ে বাতিন, ছাহিবে কাশ্ফ ওয়া কারামত, লিসানুল হক্ব, ছাহিবে ইসমে আযম, গরীবে নেওয়াজ, মুসতাজাবুদ দাওয়াত, কুতুবুয্ যামান, আওলাদে রসূল, হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান আলাইহিস সালাম-উনার আপন ঘরে পরবাসএবং সকলের মাঝে থেকেও নিভৃত অবস্থানের বৈশিষ্ট্যগুণে উনাকে মানুষ শুধু ওলীআল্লাহ হিসেবেই জানলো। কিন্তু আল্লাহ পাক এবং উনার প্রিয়তম হাবীব, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার সঙ্গে উনার নৈকট্য সংযোগের গভীরতা ও মাকাম জানা সম্ভব হলো না। সুন্নত অনুশীলনসহ ইসলাম ধর্ম পালনে মানুষকে অভ্যস্ত করে তোলায় নিরলস কোশেশ বর্তমান সংঘাতময় পৃথিবীতে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি, আক্বিদা ও আমল, স্বার্থ সিদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন বাতিল ফিরক্বার কূটকৌশল এবং সাধারণের অনুপলব্ধির কারণে ইসলাম ধর্ম পালনের রীতি ও নীতি কোন জনপদেই একীভূত নয়। ব্যক্তি, ব্যষ্টি ও সমষ্টির দ্বন্দ্ব ও সংঘাত, ইলমের অনগ্রসরতা, পারস্পরিক হানাহানি এবং স্বার্থ হাছিলের অতি ন্যাক্কারজনক প্রতিযোগিতায় লিপ্ত থেকেও প্রত্যেকেই আপন বলয়ে আল্লাহ পাক-উনার অনুগত বান্দা হিসেবে নিজেকে কামিয়াব মনে করে। অথচ কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াসের সঙ্গে এদের কোন যোগসূত্রই নেই। এদের প্রসঙ্গে কালামুল্লাহ শরীফে ইরশাদ হয়েছেঃ

 ومنهم اميون لايعلمون الكتب الا امانى وان هم الا يظنون.

 অর্থঃ- তাদের মধ্যে এমন কিছু মূর্খ লোক রয়েছে যারা মনভুলানো কথা ব্যতীত আল্লাহ পাক-উনার কিতাবের কিছুই অবহিত নয়। আর তারা কেবল অলীক কল্পনাসমূহ রচনা করে থাকে।” (সূরা বাক্বারা/৭৮) আল্লাহ পাক এবং উনার প্রিয়তম হাবীব, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার আদেশ-নির্দেশ পালনে অনাগ্রহী বাতিল ফিরক্বার উদ্ভাবক এবং অনুসারীরাই ইসলাম প্রিয় সাধারণ মানুষের মনে দ্বন্দ্ব ও সংশয় সৃষ্টি করেছে। তারা সমাজকে করে তুলেছে সমস্যা সংকুল। এরা নিজেদেরকে হাদী মনে করে। এদের সম্পর্কে আল্লাহ পাক বলেনঃ

 وانهم ليصدونهم عن السبيل ويحسبون انهم مهتدون.

 অর্থঃ- শয়তানই তাদেরকে সঠিক পথ হতে নিবৃত করে রাখে। অথচ তারা ধারণা করে যে, তারা সঠিক পথেই রয়েছে।” (সূরা যুখরুফ/৩৭) আপন বিশ্বাস ও কাজে সকলেই নিজেকে কামিয়াব মনে করে। এটি এমন এক জটিল মূর্খতা, পথ প্রদর্শক ছাড়া এ অভিশাপ থেকে নিস্তার পাবার কোনই উপায় নেই। ওলীআল্লাহগণ অনিবার্যভাবে এ পথ প্রদর্শকের ভূমিকা পালন করে থাকেন। উনাদের মূল কাজ হলো অজ্ঞ ও বিভ্রান্ত মানুষকে আলোয় নিয়ে আসা, আল্লাহ পাক-উনার উদ্দিষ্ট ব্যবস্থায় জাহান্নামী মানুষকে জান্নাতী করে দেয়া। অর্থাৎ না পাবার দুঃখবোধকে অন্তরে জাগিয়ে তুলে আল্লাহ পাক-উনার মত এবং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিয়্যীন, রহমতুল্লিল আলামীন, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার পথে মানুষকে দায়িম ও কায়িম করে দেয়া। (অসমাপ্ত)

আবা-১৩৫

0 Comments: