কুরআন-সুন্নাহর দৃষ্টিতে ইমামাহ্ বা পাগড়ীর ফাযায়েল ও আহ্কাম এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া ( ১১.ক নং )


ইমামাহ্ বা পাগড়ীর ফাযায়েল ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া দেয়ার কারণ
            সুন্নতের মূর্ত প্রতীক, হক্বের অতন্দ্র প্রহরী, দ্বীন ইসলামের নির্ভীক সৈনিক, সারা জাহান থেকে কুফরী, শেরেকী ও বিদ্য়াতের মুলৎপাটনকারী, বাতিলের আতঙ্ক এবং আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদায় বিশ্বাসী একমাত্র দলীলভিত্তিক মূখপত্র- মাসিক আল বাইয়্যিনাতপত্রিকায় যত লিখা বা ফতওয়াই প্রকাশ বা পত্রস্থ হয়েছে, তার প্রতিটিরই উদ্দেশ্য বা মকছুদ এক ও অভিন্ন। অর্থাৎ মাসিক আল বাইয়্যিনাতেএমন সব লিখাই পত্রস্থ করা হয়, যা মানুষের আক্বীদা ও আমল ইসলাহ্ করনে একান্ত আবশ্যক।
            এ ধারাবাহিকতায় মাসিক আল বাইয়্যিনাতেইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারক ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া দেয়ার পেছনেও একই কথা। কারণ অধিকাংশ মুসলমানই পাগড়ীর সঠিক আহ্কাম ও ফযীলত সম্পর্কে জ্ঞাত নয়। যার ফলে তারা পাগড়ী সম্পর্কিত বিষয়ে সঠিক আক্বীদা পোষণ করতে যেরূপ ব্যর্থ, তদ্রুপ পাগড়ী পড়ার ন্যায় একখানা গুরুত্বপূর্ণ ও ফযীলতপূর্ণ দায়িমী সুন্নত পালনেও ব্যর্থ। যা অবশ্যই মহান আল্লাহ্ পাক ও তাঁর হাবীব সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন্নাবিয়্যীন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর রেজামন্দী হাছিলের ক্ষেত্রে বিরাট অন্তরায়।
            এছাড়া অনেকে পাগড়ীকে অবজ্ঞা বা তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করার কারণে পাগড়ী পরিহিত ব্যক্তিকে ঠাট্টা বা বিদ্রুপ করে থাকে। অথচ এটা সুস্পষ্ট কুফরীর অন্তর্ভূক্ত। কেননা আক্বাইদের ইমামগণের মতে শুধু পাগড়ী নয় বরং যে কোন সুন্নতের অবজ্ঞাই কুফরীর কারণ। এ প্রসঙ্গে আক্বাইদের কিতাবে উল্লেখ আছে যে, اهانة السنة كفر.
অর্থঃ- সুন্নতের অবজ্ঞা বা তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য কুফরীর অন্তর্ভূক্ত।
 পাগড়ী পরিধান করা নামাযের বাইরে ও ভিতরে উভয় অবস্থায়ই সুন্নত ও ফযীলতের কারণ। যেমন, নামাযের মধ্যে পাগড়ী পরিধান করার ফযীলত সম্পর্কে উক্ত কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছে যে,
ان ركعتين مع العمامة افضل من سبعين ركعة بدونها.
অর্থঃ- নিশ্চয়ই পাগড়ী পরিধান করে দুরাকায়াত নামায আদায় করা, পাগড়ী ছাড়া ৭০ রাকায়াত নামায আদায় করার চেয়ে অধিক ফযীলতপূর্ণ।” (হাশিয়ায়ে শামাইলুত্ তিরমিযী/৮)
            আর নামাযের বাইরে পাগড়ী পরিধান করা সুন্নত হওয়ার ব্যাপারে হাদীস শরীফের সহীহ্ কিতাব তিরমিযী শরীফেরহাশিয়ায় উল্লেখ আছে,
ان لبس العمامة سنة.
অর্থঃ- নিঃসন্দেহে পাগড়ী পরিধান করা (দায়িমী) সুন্নত।”(হাশিয়ায়ে শামাইলুত্ তিরমিযী/৮)
            পাগড়ীর উল্লিখিত ফযীলত থেকে যেন উম্মত মাহরুম না হয়, সে জন্যে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন্নাবিয়্যীন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিশেষ গুরুত্ব সহকারে উম্মতদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন যে,
عليكم بالعمائم فانها سيماء الملئكة.
অর্থঃ- তোমাদের জন্যে পাগড়ী অবধারিত, কেননা তা ফেরেশ্তাগণের নিদর্শন স্বরূপ।” (মিশকাত শরীফ/৩৩৭, ফাইদুল ক্বদীর ৪র্থ জিঃ ৪৫৪ পৃষ্ঠা, শুয়াবুল ঈমান লিল বাইহাক্বী ৫ম জিঃ ১৭৬ পৃষ্ঠা)
মহান আল্লাহ্ পাক পবিত্র কালাম পাকে ইরশাদ করেন,
قل ان كنتم تحبون الله فاتبعونى يحببكم الله ويغفرلكم ذنوبكم والله غفور رحيم.
অর্থঃ- হে হাবীব (ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আপনি বলুন, যদি তোমরা মহান আল্লাহ্ পাক-এর ভালবাসা চাও, তবে আমাকে (আমার সুন্নতকে) অনুসরণ কর, তবেই আল্লাহ্ পাক তোমাদেরকে ভালবাসবেন এবং তোমাদের সকল গুণাহ্-খতা ক্ষমা করে দিবেন। আল্লাহ্ পাক ক্ষমাশীল ও দয়ালু।” (সূরা আলে ইমরান/৩১)
            অতএব বলার অপেক্ষাই রাখেনা যে, নামাযের ভিতরে ও বাইরে পাগড়ীর মত দায়িমী সুন্নতের আমলের দ্বারা বান্দা অবশ্যই মহান  আল্লাহ্ পাক ও তাঁর হাবীব, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর খাছ রেজামন্দী লাভ করতে পারবে।  অথচ আজকাল অনেকেই পীর, ছুফী, দরবেশ, মুফতী, মুহাদ্দিস, মুফাস্সির, আল্লামা, আশেকে রসূল কত কি দাবি করে। কিন্তু পাগড়ীদায়িমীভাবে পরিধান করা তো দূরের কথাই নামাযের সময়ও পরিধান করেনা।
কোন রং-এর ইমামাহ্ বা
পাগড়ী পরিধান করা খাছ সুন্নত
মাসিক আল বাইয়্যিনাত-এর ৮৬-৯৩তম সংখ্যাগুলোর ফতওয়া বিভাগে প্রদত্ত ৫৪৯টি নির্ভরযোগ্য ও অকাট্য দলীল-আদীল্লাহ্ সমূহের দ্বারা যে বিষয়গুলো সুষ্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়েছে তা হলো-
 ১। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, রহমতুল্লিল আলামীন, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দায়িমীভাবে ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারক পরিধান করেছেন।
            ২। পূর্ববতী সকল নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সালামগণও দায়িমীভাবে ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারক পরিধান করতেন।
            ৩। মহান আল্লাহ্ পাক-এর সমস্ত মালাইকাবা ফেরেশ্তাগণও দায়িমীভাবে ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারক পরিধান করেন।
            ৪। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, শাফিউল মুযনিবীন, ছহেবে হাযির ও নাজির হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সুন্নত অনুসরণে এবং তাঁরই মুবারক নির্দেশ পালনার্থে হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমগণও দায়িমীভাবে ইমামাহ্ বা পাগড়ী পরিধান করেছেন।
            ৫। এবং অনুরূপভাবে হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমগনের ন্যায় সমস্ত আউলিয়া-ই-কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম ও ইমাম মুজতাহিদগণও দায়িমীভাবে ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারক পরিধান করতেন ও করছেন।
            অতএব, দায়িমীভাবে ইমামাহ্ বা পাগড়ী পরিধান করা আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ, ফখরে মাওজুদাত, নূরে মুজাস্সাম হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর খাছ সুন্নত। শুধু তাই নয় সমস্ত নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সালাম, সমস্ত মালাইকা বা ফেরেশ্তা, হযরত ছাহাবা-ই- কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম ও হযরত আউলিয়া-ই-কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম গণেরও খাছ সুন্নত হচ্ছে দায়িমীভাবে ইমামাহ্ বা পাগড়ী পরিধান করা।
            এখন প্রশ্ন হলো- কোন রং-এর ইমামাহ্ বা পাগড়ী পরিধান করা খাছ সুন্নত? অর্থাৎ সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোন্ রং-এর ইমামাহ্ বা পাগড়ী পরিধান করেছেন বা করতেন?
            বস্তুতঃ কিতাবে পাগড়ীর রং সম্পর্কে মুখতালিফ বা বিভিন্ন প্রকার বর্ণনা দেখা গেলেও তাফসীর, হাদীস, শরাহ, ফিক্বাহ, ফতওয়া ও সীরাত গ্রন্থ সমূহে বর্ণিত গ্রহণযোগ্য মতে সাদা, কালো ও সবুজ এই তিন রং-এর পাগড়ী পরিধান করাই খাছ সুন্নত। কারণ সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাধারণতঃ উক্ত তিন রং-এর ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারকই অধিকাংশ সময় পরিধান করতেন। নিম্নে পর্যায়ক্রমে এ সম্পর্কিত দলীল আদিল্লাহ্ সমূহ উল্লেখ করা হচ্ছে-
সাদা রংয়ের ইমামাহ্ বা পাগড়ী
খাছ সুন্নত হওয়ার প্রমাণ
            স্মতর্ব্য যে, ইমামাহ্ বা পাগড়ীও লিবাস বা পোশাকের অন্তর্ভূক্ত। অর্থাৎ ইমামাহ্ বা পাগড়ী হচ্ছে لباس الرأس বা  মাথার পোশাক। আর হাদীস শরীফে আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ্, ছহেবে ইল্মে গায়ব হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাদা রং-এর পোশাক পরিধান করার ব্যাপারে যেরূপ আদেশ করেছেন, তদ্রুপ সাদা পোশাকের বহু ফযীলতও বর্ণনা করেছেন। কারণ সাদা রং স্বয়ং আল্লাহ্ পাক ও তাঁর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট অধিক পছন্দনীয় । যেমন, এ প্রসঙ্গে ইরশাদ হয়েছে,
সাদা রং মহান আল্লাহ্ রব্বুল
আলামীন-এর নিকট অধিক প্রিয়
[৫৫০-৫৫১]

عن ابن عباس رضى الله عنه ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال ان الله خلق الجنة بيضاء واحب شئ الى الله البياض. (مجمع الزوائد جص১২৮اللباس والزينة ص৫৫৬)
অর্থঃ- হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নিশ্চয়ই রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ্ পাক জান্নাত (বেহেশ্ত) কে সৃষ্টি করেছেন সাদা রংয়ের করে। আর আল্লাহ্ পাক-এর কাছে অধিক পছন্দনীয় হচ্ছে সাদা রংয়ের বস্তু।” (মাজমাউয্ যাওয়াইদ ৫ম জিঃ ১২৮ পৃষ্ঠা, আল্ লিবাসু ওয়ায যীনাহ্ ৫৫৬ পৃষ্ঠা)
রহমতুল্লিল আলামীন হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকটও অধিক প্রিয় রং হচ্ছে সাদা তাই উম্মতদেরকেও সাদা রং-এর পোশাক পরিধান করার নির্দেশ দিয়েছেন
[৫৫২-৫৭৪]

عن ابن عباس رضى الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم البسوا ثيابكم الياض فانها من خير ثيابكم وكفنوا فيها موتاكم. (ابوداود شريف جص২৮৫، ص২০৭بذل المجهود جص৪৮৬عون المعبود جشرح ابى داؤد لبدر الدين العينىترمذى شريف جص১১৮تحفة الاحوذى جص৭২عارضة الاحوذى ج১০ ص২৫৩معارف السننمشكوة شريف ص১৪৪ مرقاة جص৩৬شرح الطيبى جص৩৫৫التعليق الصبيحلمعاتاشعة اللمعاتمظاهرحق جص৪১مرأت المناجيح جص ৪৬৩اللباس والزينة ص১১৪فتح الربانى للشيبانى ج১৭ ص২৩৫ بلوغ الامانى ج১৭ ص২৩৫نيل الاوطارشرح منقى الاخبار ج১২ ص২৬، ৫১ كتاب الحدائق لابن الجوزى جص২৪مسند احمد بن حنبل جص২৪৭، ص২৮৪ ص৩২৮ ص৩৬৩شعب الايمان للبيهقى جص১৯০)
অর্থঃ- হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন তোমরা সাদা পোশাক পরিধান কর, কেননা ইহা তোমাদের জন্য উত্তম পোশাক। আর তোমাদের মধ্যে যারা ইন্তিকাল করে তাদেরকে সাদা কাপড়ে কাফন দাও। (আবু দাউদ শরীফ ২য় জিঃ ১৮৫, ২০৭ পৃষ্ঠা, বযলুল মাজহুদ ৬ষ্ট জিঃ ৬, ৪৮ পৃষ্ঠা, আউনুল মাবুদ ৪র্থ জিঃ, শরহু আবী দাউদ লি বদরিদ্দীন আইনী, তিরমিযী শরীফ ১ম জিঃ১১৮ পৃষ্ঠা, তুহফাতুল আহওয়াযী ৪র্থ জিঃ ৭২ পৃষ্ঠা, আরিদাতুল্ আহওয়াযী ১০ম জিঃ ২৫৩ পৃষ্ঠা, মায়ারিফুস্ সুনান, মিশকাত শরীফ ১৪৪ পৃষ্ঠা, আত্ তালীকুছ্ ছবীহ্, লুময়াত, আশয়াতুল্ লুময়াত, মুযাহিরে হক্ব ২য় জিঃ ৪১ পৃষ্ঠা, মিরয়াতুল্ মানাজীহ্ ২য় জিঃ ৪৬৩ পৃষ্ঠা, আল্লিবাসু ওয়ায্ যীনাহ্ ১১৪ পৃষ্ঠা, ফাতর্হু রব্বানী লিশ্ শাইবানী ১৭তম জিঃ ২৩৫ পৃষ্ঠা, বুলুগুল্ আমানী ১৭তম জিঃ ২৩৫ পৃষ্ঠা, নাইলুল্ আউতার শরহে মুনতাক্বাল্ আখবার ২য় জিঃ ১০২ পৃষ্ঠা, ছহীহু ইবনি হাব্বান ৭ম জিঃ ৩৯২ পৃষ্ঠা, আল্ মুজামুল্ কবীর ১২তম জিঃ ৩৬, ৫১ পৃষ্ঠা, কিতাবুল্ হাদাইক লি ইবনিল জাওযী ৩য় জিঃ ২৪ পৃষ্ঠা, মুসনাদু আহমদ ইবনে হাম্বল ১ম জিঃ ২৪৭, ২৮৪ পৃষ্ঠা, শুয়াবুল ঈমান লিল্ বাইহাক্বী ৫ম জিঃ ১৯০ পৃষ্ঠা)
[৫৭৫-৬০৩]
عن سمرة عن النبى صلى الله عليه وسلم قال البسوا من ثيابكم البياض فانها اطهر واطيب وكفنوا فيها موتاكم- (نسائى شريف جص২৬৮نسائى بشرح السيوطى جص২০৫نسائى بشرح السندى جص২০৫السنن الكبرى للنسائى جص৪৭৭ابن ماجة ص২৬৩مسند احمد بن حنبل جص১৩ ص১৯شعب الايمان للبيهقى جص১৯১مشكوة شريف ص৩৭৪مرقاة اللمعاتاشعة اللمعات جص৫৪৪مظاهر حق جص৫৩৪مرأة المناجيح جص১০৪الفتح الربانى للشيبانى ج১৭ ص২৩৫- بلوغ الامانى ج১৭ ص২৩৫نيل الاوطار شرح منتقى الاخبار للشوكانى جص১০২. شرح السنة للبغوى جص১৫৬كتاب الحدائق لابن الجوزى جص২৪اللباس والزينة ص৮৫، ৮৭ ص৫১১شمائل الترمذى صجمع الوسائل جص১৪৮شمائل بشرح المناوى جص১৪৮المواهب اللدنية على الشمائل المحمدية ৭৪خصائل نبوى صلى الله عليه وسلم ص৫৬فتح البارى ج১০ ص২৮৩ارشاد السارى جص৪৩৬المصنف لعبد الرزاق)
অর্থঃ- হযরত সামুরাহ্ ইবনে জুনদুব রদ্বিয়াল্লাহু আনহু হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন। হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন যে, তোমরা সাদা পোশাক পরিধান কর। কেননা ইহা অধিক পবিত্র এবং পছন্দনীয় আর ইহা দ্বারা তোমাদের মৃতদেরকেও কাফন দাও।” (নাসায়ী শরীফ ১ম জিঃ ২৬৮ পৃষ্ঠা, নাসায়ী বিশরহিস্ সুয়ূত্বী ৮ম জিঃ ২০৫ পৃষ্ঠা, নাসায়ী বিশ্রহিস্ সিনদী ৮ম জিঃ ২০৫ পৃষ্ঠা, আস্ সুনানুল কুবরা লিন্ নাসায়ী ৫ম জিঃ ৪৭৭ পৃষ্ঠা, ইবনু মাজাহ্ ২৬৩ পৃষ্ঠা, মুসনাদু আহমদ ইবনে হাম্বল ৫ম জিঃ ১৩ ও ১৯ পৃষ্ঠা, শুয়াবুল ঈমান লিল বাইহাক্বী ৫ম জিঃ ১৯১ পৃষ্ঠা, মিশকাত শরীফ ৩৭৪ পৃষ্ঠা, মিরকাত ৮ম জিঃ ২৪৮ পৃষ্ঠা, শরহুত্ ত্বীবী ৮ম জিঃ ২১৬ পৃষ্ঠা, আত্ তালীকুছ ছবীহ্ ৪র্থ জিঃ ৩৮৭ পৃষ্ঠা, লুময়াত, আশয়াতুল লুময়াত ৩য় জিঃ ৫৪৪ পৃষ্ঠা, মুযাহিরে হক্ব ৩য় জিঃ ৫৩৪ পৃষ্ঠা, মিরয়াতুল্ মানাজীহ্ ৬ষ্ঠ জিঃ ১০৪ পৃষ্ঠা, আল্ ফাতহুর রব্বানী লিশ্ শাইবানী ১৭তম জিঃ ২৩৫ পৃষ্ঠা, বুলূগুল আমানী ১৭তম জিঃ ২৩৫ পৃষ্ঠা, নাইলুল্ আউত্বার শরহে মুনতাকাল আখবার লিশ্ শাওকানী ২য় জিঃ ১০২ পৃষ্ঠা, শরহুস্ সুন্নাহ্ লিল্ বাগবী ৬ষ্ঠ জিঃ ১৫৬ পৃষ্ঠা, কিতাবুল্ হাদাইক্ব লি ইবনিল্ জাওযী ৩য় জিঃ ২৪ পৃষ্ঠা, আল্ লিবাসু ওয়ায্ যীনাহ ৮৫, ৮৭ ও ৫১১ পৃষ্ঠা, শামাইলুত্ তিরমিযী ৬ পৃষ্ঠা, জামউল ওয়াসাইল ১ম জিঃ ১৪৮ পৃষ্ঠা, শামাইল বিশরহিল্ মানাবী ১ম জিঃ১৪৮ পৃষ্ঠা, আল্ মাওয়াহিবুল্ লাদুন্নিয়াহ্ আলাশ্ শামাইলিল্ মুহম্মদিয়া ৭৪ পৃষ্ঠা, খছাইলে নববী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ৫৬ পৃষ্ঠা, ফতহুল বারী ১০ম জিঃ ২৮৩ পৃষ্ঠা, ইরশাদুস্ সারী ৮ম জিঃ ৪৩৬ পৃষ্ঠা, আল্ মুছান্নাফু লি আব্দির রয্যাক)
[৬০৪-৬১৩]
عن سمرة بن جندب رضى الله عنه قال قال رسول الله عليه صلى الله عليه وسلم عليكم بهذه البياض فليلبسها احياؤكم وكفنوا فيها موتاكم فانها من خير ثيابكم. (مسند احمد بن حنبل جص১২১২১ شمائل الترمذى صجمع الوسائل جص১৪৭ شمائل بشرح المناوى جص১৪৭المواهب اللد نية على الشمائل المحمدية ص৭৪خصانل نبوى صلى الله عليه وسلم ص৫৬نيل الاوطار بشرح منتقى الاخبار للشوكانى جص১০২ المعجم الكبير للطبرانى ج১২ ص৫১، ২১৪. المسند الحميدى جص৮৪. مجمع الزوائد جص১২৮)
অর্থঃ- হযরত সামুরাহ্ ইবনে জুনদুব রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন যে, তোমাদের জন্য এই সাদা কাপড় অবধারিত। তাই, তোমাদের জীবিতরা যেন ইহা পরিধান করে এবং মৃতদের ইহা দ্বারা কাফন দেয়, কেননা, ইহাই (অর্থাৎ সাদা কাপড়) তোমাদের জন্য উত্তম পোশাক।” (মুসনাদু আহমদ ইবনে হাম্বল ৫ম জিঃ ১২, ২১ পৃষ্ঠা, শামাইলুত্ তিরমিযী ৬পৃষ্ঠা, জামউল ওয়াসাইল ১ম জিঃ ১৪৭ পৃষ্ঠা, শামাইলু বিশরহিল্ মানাবী ১ম জিঃ ১৪৭ পৃষ্ঠা, আল্ মাওয়াহিবুল্ লাদুন্নিয়া আলাশ্ শামাইলিল মুহম্মদিয়া ৭৪ পৃষ্ঠা, খছাইলে নববী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ৫৬ পৃষ্ঠা, নাইলুল্ আউতার বিশরহে মুনতাক্বাল্ আখবার লিশ্ শাওকানী ২য় জিঃ ১০২ পৃষ্ঠা, আল্ মুজামুল কবীর লিত্ ত্বাবারানী ১২ জিঃ ৫১, ২১৪ পৃষ্ঠা, আল্ মুসনাদুল্ হামীদী ১ম জিঃ ২৪০ পৃষ্ঠা, মাজমাউয্ যাওয়াইদ ৫ম জিঃ ১২৮ পৃষ্ঠা)
[৬১৪]
عن ابى هريرة ....... ان لله عز وجل ملائكة وقوفا بباب المسجد يستغفرون لاصحاب العمائم البيض. (كشف الخفاء ومزيل الالباس جص৮)
অর্থঃ- হযরত আবু হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ্ পাক-এর কিছু বিশেষ  ফেরেশ্তা রয়েছেন, যাঁরা মসজিদের দরজায় অবস্থান করে সাদা পাগড়ী পরিধানকারী বান্দা গণের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকেন।” (কাশফুল খফা ওয়া মুযীলুল্ ইলবাস ২য় জিঃ ৬৮ পৃষ্ঠা)
[৬১৫]
            হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিশেষ ক্ষেত্রে কালো রংয়ের পাগড়ী পরেছেন। তবে বেশীর ভাগ সময়ে তিনি সাদা পাগড়ী পরিধান করতেন। যেহেতু রংয়ের মধ্যে সাদা রং-ই ছিল তাঁর কাছে সর্বাধিক প্রিয়। একটি হাদীসে নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ সাদা পোশাকই তোমাদের সর্বোত্তম পোশাক। তোমাদের মৃতদেরকে সাদা কাপড়ে দাফন কর। তাই অধিকাংশ সময়ে তাঁর পাগড়ী হত সাদা রংয়ের। (আখলাকুন্ নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ১৮১ পৃষ্ঠা)
            উপরে বর্ণিত হাদীস শরীফের ভিত্তিতে এটাই প্রমাণিত হলো যে, স্বয়ং মহান আল্লাহ্ পাক ও তাঁর হাবীব হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট অধিক পছন্দনীয় রং হচ্ছে সাদা রং। তাই আল্লাহ্ পাক-এর হাবীব হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাদা রং-এর বহু ফযীলত বর্ণনা করে উম্মতদেরকে সাদা পোশাক পরিধান করার ব্যাপারে বিশেষভাবে উৎসাহিত করেছেন। শুধু তাই নয় সাদা রং তাঁর নিকট অধিক প্রিয় হওয়ার কারণে ইন্তিকালের পর সাদা কাপড় দ্বারা কাফন দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন, যেমন ইরশাদ হয়েছে, وكفنوا فيها موتاكم.
অর্থাৎ তোমরা মৃত ব্যক্তিদের সাদা রং-এর কাপড় দ্বারা কাফন দাও।
            তাই উক্ত হাদীস শরীফ সমূহের ব্যাখ্যায় হাদীস শরীফসমূহের সকল ব্যাখ্যাকারগণ একমত পোষণ করে বলেছেন যে, সাদা রং-এর কাপড়ে কাফন দেয়াই খাছ সুন্নত বা মুস্তাহাব। যেমন হাদীস শরীফের বিখ্যাত ব্যাখ্যা গ্রন্থ সমূহে উক্ত হাদীস শরীফ সমূহের ব্যাখ্যায় উল্লেখ আছে,
[৬১৬]
ان افضل مايكفن فيه الميت من الالوان البياض وقدكفن النبى صلى الله عليه وسلم فى ثلاثة اثواب بيض. (بذل المجهود جص৪৮)
অর্থঃ- মৃত ব্যক্তিকে কাফন দেয়ার জন্য সাদা রংয়ের কাপড়ই সর্বোত্তম। আর নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে তিনটি সাদা কাপড় দ্বারা কাফন দেয়া হয়েছে।” (বযলুল্ মাজহুদ ৬ষ্ঠ জিঃ ৪৮ পৃষ্ঠা)
[৬১৭-৬২২]
قوله كفنوا فيها موتاكمالامر فيه استحباب قال ابن الهمام واوجبها البياض. (حاشية ابى داؤد جص২০৭حاشية ترمذى جص১১৮تحفة الاحوذى جص৭২مرقاة جص৩৬مظاهر حق جص৪১مرأت المناجيح جص৪২৩)
অর্থঃ- রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর উক্তিঃ তোমরা তোমাদের মৃতদের উহা (সাদা কাপড়) দ্বারা কাফন দাও।এখানে নির্দেশটি দ্বারা মুস্তাহাবপ্রমাণিত। ইবনে হুমাম রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, সাদা রং তাঁর নিকট অধিক পছন্দনীয় বা উত্তম।” (হাশিয়ায়ে আবু দাউদ ২য় জিঃ ২০৭ পৃষ্ঠা, হাশিয়ায়ে তিরমিযী ১ম জিঃ ১১৮ পৃষ্ঠা, তুহফাতুল আহওয়াযী ৪র্থ জিঃ ৭২ পৃষ্ঠা, মিরকাত ৪র্থ জিঃ ৩৬, ৭২ পৃষ্ঠা, মুযাহিরে হক্ব ২য় জিঃ ৪১ পৃষ্ঠা, মিরয়াতুল্ মানাজীহ ২য় জিঃ ৪৬৩ পৃষ্ঠা)
[৬২৩]
قال ابن حجر لان اللون الابيض افضل الالوان ...... وقد لبس عليه الصلاة والسلام غير الابيض كثيرا لبيان جوازه. (مرقاة جص৩৬)
অর্থঃ- হযরত ইবনে হাজার আসকালীন রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, নিশ্চয়ই সাদা রং-ই রং সমূহের মধ্যে সর্বোত্তম রং। আর সাদা রংয়ের পোশাক ছাড়াও অন্য রংয়ের পোশাক হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পরিধান করতেন, জায়েয বা বৈধ প্রমাণ করার জন্য। (মিরকাত ৪র্থ জিঃ ৩৬ পৃষ্ঠা)
হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট সাদা রং অধিক পছন্দনীয় হওয়ার পরও  কালো বা অন্য রংয়ের পাগড়ী পরিধান করার কারণ
            উপরোক্ত বর্ণনা দ্বারা বুঝা গেল যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট অধিক পছন্দনীয় রং হচ্ছে সাদা রং। তাই তিনি নিজেও অধিকাংশ সময় সাদা রং-এর পোশাক বা পাগড়ী পরিধান করতেন এবং উম্মতদেরকেও সাদা রং-এর পোশাক পরিধান করতে ও সাদা রংয়ের কাপড় দ্বারা মৃতদেরকে কাফন দিতে বলেছেন। এখন প্রশ্ন উঠতে পারে সাদা রং অধিক পছন্দনীয় হওয়ার পরও হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কালো বা অন্য রং-এর পাগড়ী পরিধান করার কারণ কি?
            মূলতঃ এর জবাব হলো- আখিরী রসূল হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যদি সর্বদা শুধুমাত্র সাদা পোশাকই ব্যবহার করতেন কালো বা অন্য পাগড়ী ব্যবহার না করতেন তবে মানুষ কালো রং-এর পাগড়ী পরিধান করাকে নাজায়েয মনে করতো। কাজেই কালো রং-এর পাগড়ী পরিধান করা যে জায়েয, তা প্রমাণ করার জন্যই তিনি কখনো কখনো কালো ও সবুজ পাগড়ী পরিধান করেছেন। যেমন হাদীস শরীফে বর্ণিত- عمامة سوداء অর্থাৎ কালো পাগড়ীর ব্যাখ্যায় বিশ্বখ্যাত ব্যাখ্যাগ্রন্থ সমূহে উল্লেখ আছে,
[৬২৪]
 (وعليه عمامة سوداء) فيه جواز لباس الثياب السود وفى الرواية الأخرى خطب الناس وعليه عمامة سوداء فيه جواز لباس الناس الاسود فى الخطبة وان كان الابيض افضل كما ثبت فى الحديث الصحيح خير ثيابكم البياضوأما لباس الخطباء السواد فى حال الخطبة فجائز ولكن الأفضل البياص كما ذكرنا وانما لبس العمامة السوداء فى هذا الحديث بيانا للجواز والله اعلم- (مسلم بشرح النووى جص১৩৩)
অর্থঃ- “(তাঁর মাথায় ছিল কালো পাগড়ী) এই হাদীসে سوداء (কালো) দ্বারা কালো রংয়ের পোশাক পরিধান করা জায়েয ফতওয়া দেয়া হয়েছে। অন্য হাদীস শরীফে রয়েছে, “তিনি মানুষের উদ্দেশ্যে খুত্ববাহ্ দিলেন, যখন তাঁর মাথায় কালো পাগড়ী ছিল।অত্র হাদীস দ্বারা খুত্ববাহ্ দানকালে কালো পোশাক পরিধান জায়েয ইহাই প্রমাণ করা হয়েছে। যদিও সাদা পোশাক (যেমন সাদা পাগড়ী) হচ্ছে সর্বোৎকৃষ্ট। তাই, খুত্ববাহ্ প্রদান অবস্থায় কালো পোশাক জায়েয(বৈধ)। কিন্তু সাদা পোশাক (যেমন পাগড়ী) সর্বোৎকৃষ্ট। যেমন  আমরা আলোচনা করেছি। তবে জেনে রাখা দরকার, নিশ্চয়ই এই হাদীস শরীফ কালো পাগড়ী জায়েয (বৈধ) প্রমাণের জন্য, (উৎকৃষ্ট প্রমাণের জন্য নয়, বরং উৎকৃষ্ট হচ্ছে (সাদা পাগড়ী)। আল্লাহ্ পাক অধিক জ্ঞাত।” (মুসলিম বিশরহিন নববী ৫ম জিঃ ১৩৩ পৃষ্ঠা)
[৬২৫]

وقوله وعليه عمامة سوداء فى بعض النسخ عصابة بدل عمامة وهى بمعناها ويؤخذ منه كما قال جمع جواز لبس الأسود فى الخطبة وان كان الابيض افضل- (المواهب اللدنية على الشمائل المحمدية ص১০০)

অর্থঃ- وعليه عمامة سوداء অর্থাৎ তাঁর মাথায় কালো পাগড়ী ছিল, কোন কোন কিতাবে عمامة (ইমামাহ্) এর পরিবর্তে عصابة (ইছাবাহ) বা পাগড়ী উল্লেখ আছে। ইহার অর্থ ও عمامة (ইমামাহ্-পাগড়ী) এর অর্থ একই। হাদীসে اسود (কালো) দ্বারা খুত্ববাহ-এর সময় কালো পোশাক পরিধান জায়েয ইহাই উদ্দেশ্য নেয়া হয়েছে। যদিও সাদা পোশাক (যেমন সাদা পাগড়ী) তা থেকে উৎকৃষ্ট।” (মাওয়াহিবুল্ লাদুন্নিয়া আলাশ্ শামাইলিল মুহম্মদিয়া ১০০ পৃষ্ঠা)
[৬২৬-৬২৭]
(وعليه عمامة سوداء) واستدل بعض العلماء بهذا الحديث على جواز لبس السواد وان كان البياض افضل لماسبق من ان خيرثيا بكم البيض- (جمع الوساءل جص২০৪ خصاءل البنوى صلى الله عليه وسلم ص২২৮)
অর্থঃ- “(وعليه عمامة سوداء) অত্র হাদীসকে দলীল হিসেবে গ্রহণ করে অধিকাংশ উলামাগণ মত পোষণ করেন যে, কালো পোশাক পরিধান জায়েয। যদিও সাদা পোশাক (যেমন সাদা পাগড়ী) তোমাদের পোশাকের মধ্যে উৎকৃষ্ট- তার দিক থেকে ফযীলত পূর্ণ।” (জামউল ওয়াসাইল ১ম জিঃ ২০৪ পৃষ্ঠা, খছাইলুন্ নববী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ২২৮ পৃষ্ঠা)
[৬২৮-৬৩০]
قال النووى فى الحديث جواز لبس الاسود فى الخطبة وان كان الابيض افضل منه- (جمع الوساءل جص২০৫. شمائل بشرح المناوى جص৪০৬- خصائل النبوى صلى الله عليه وسلم ص২২৮)
অর্থঃ- হযরত ইমাম নববী রহমতুল্লাহি আলাইহি (عمامة سوداء) হাদীসের বিশ্লেষণ করে বলেন, সাদা পোশাক (পাগড়ী) পরিধান করে খুত্ববাহ্ দেয়া উত্তম ও আফযল হলেও কালো পোশাক (পাগড়ী) পরিধান করে খুত্ববাহ্ দেয়া জায়েয রয়েছে।” (জামউল ওয়াসাইল ১ম জিঃ ২০৫ পৃষ্ঠা, শামাইলু বিশরহিল্ মানাবী ১ম জিঃ ২০৬ পৃষ্ঠা, খছাইলুন্ নববী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ২২৮ পৃষ্ঠা)
[৬৩১]
            রসূলুল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সদা-সর্বদা সাদা রংয়ের পাগড়ীই পরেছিলেন। ..... মুহাদ্দিসীন-ই-কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম বলেন, ঐ সময় (মক্কা বিজয়ের সময়) রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কালো রংয়ের পাগড়ী পরেছিলেন। সাদা রংয়ের কাপড় পরিধান করার জন্য নির্দেশ দেয়া সত্ত্বেও তাঁর নিজের কালো পাগড়ীর পরিধান করার হেতু সম্বন্ধে তাঁরা বলেন যে, নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যদি কালো পাগড়ী পরিধান না করতেন তাহলে মুমিনগণ স্বাভাবিকভাবে এই ধারণাই করত যে, সাদা ছাড়া অন্য কোন রংয়ের পাগড়ী পরা চলবে না এবং তাতে লোকদের পক্ষে কষ্ট নিশ্চয় হত। তাই সাদা রংয়ের পাগড়ী ছাড়া অন্য রংয়ের পাগড়ী ব্যবহারের বৈধতা জ্ঞাপন করার উদ্দেশ্যে তিনি কালো পাগড়ী ব্যবহার করেছিলেন।” (খছাইলুন্ নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ২২৭ পৃষ্ঠা)

0 Comments: