কুরআন-সুন্নাহর দৃষ্টিতে ইমামাহ্ বা পাগড়ীর ফাযায়েল ও আহ্কাম এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া ( ৮ নং )


ইমামাহ্ বা পাগড়ীর ফাযায়েল ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া  দেয়ার কারণ


            সুন্নতের মূর্ত প্রতিক, হক্বের অতন্দ্র প্রহরী, দ্বীন ইসলামের নির্ভীক সৈনিক, সারা জাহান থেকে কুফরী, শেরেকী ও বিদ্য়াতের মুলৎপাটনকারী, বাতিলের আতঙ্ক এবং আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদায় বিশ্বাসী একমাত্র দলীলভিত্তিক মূখপত্র- মাসিক আল বাইয়্যিনাতপত্রিকায় যত লেখা বা ফতওয়াই প্রকাশ বা পত্রস্থ হয়েছে তার প্রতিটিরই উদ্দেশ্য বা মাকছুদ এক ও অভিন্ন। অর্থাৎ মাসিক আল বাইয়্যিনাতেএমন সব লিখাই পত্রস্থ করা হয়, যা মানুষের আক্বীদা ও আমলসমূহ পরিশুদ্ধ করনে বিশেষ সহায়ক।
            তদ্রুপ মাসিক আল বাইয়্যিনাতে”- ইমামাহ্ বা পাগড়ী মোবারক ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া দেয়ার উদ্দেশ্য বা মাকছুদও ঠিক তাই। কারণ অধিকাংশ মুসলমানই পাগড়ীর সঠিক আহ্কাম ও ফযীলত সম্পর্কে জ্ঞাত নয়। যার ফলে তারা পাগড়ী সম্পর্কিত বিষয়ে সঠিক আক্বীদা পোষণ করতে যেরূপ ব্যর্থ, তদ্রুপ পাগড়ীর ন্যায় একখানা গুরুত্বপূর্ণ ও ফযীলতপূর্ণ দায়িমী সুন্নত পালনেও ব্যর্থ। যা অবশ্যই মহান আল্লাহ্ পাক ও তাঁর হাবীব সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন্নাবিয়্যীন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর রেযামন্দী হাছিলের ক্ষেত্রে বিরাট অন্তরায়।
            স্মরণযোগ্য যে, অনেকেই পাগড়ীর সঠিক আহ্কাম ও ফযীলত না জানার কারণে পাগড়ীকে অবজ্ঞা বা তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে থাকে এবং পাগড়ী পরিহিত ব্যক্তিকে ঠাট্টা বা বিদ্রুপ করে থাকে। অথচ এটা সুস্পষ্ট কুফরীর অন্তর্ভূক্ত। কেননা আক্বাইদের ইমামগণের মতে শুধু পাগড়ী নয় বরং যে কোন সুন্নতের অবজ্ঞাই কুফরীর কারণ। এ প্রসঙ্গে আক্বাইদের কিতাবে উল্লেখ আছে যে, “কদু  খাওয়া সুন্নত। কারণ সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন্নাবিয়্যীন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কদু পছন্দ করতেন এবং খেয়েছেন। তাই কেউ যদি বলে যে, আমি কদু খাওয়া পছন্দ করিনা তবে সে কাফির হয়ে যাবে। কারণ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যেটা পছন্দ করেছেন সেটা সে অপছন্দ করলো।
            আর তাই আক্বাইদের কিতাবে লিখা হয় যে, اهانة السنة كفر.
অর্থঃ- সুন্নতের অবজ্ঞা বা তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য কুফরীর অন্তর্ভূক্ত।
            সুতরাং বলার অপেক্ষাই রাখেনা যে, পাগড়ীর ন্যায় মহান সুন্নতের প্রতি অবজ্ঞা বা তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা নিঃসন্দেহে ঈমান হানীর কারণ। অথচ বান্দার ইবাদত-বন্দেগী বা নেক আমল কবুলযোগ্য হওয়ার জন্যে প্রধানতম শর্ত হচ্ছে- আক্বীদা শুদ্ধ থাকা অর্থাৎ আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদার ন্যায় আক্বীদা পোষণ করা। কারণ বিশুদ্ধ আক্বীদা আমল কবুল হওয়ার পূর্ব শর্ত। তাই মহান আল্লাহ্ পাক পবিত্র কালামে পাকে ইরশাদ করেন,
والعصر ان الانسان لفى خسر الا الذين امنوا وعملوا الصالحات.
অর্থঃ- আছরের সময়ের কসম! সকল মানুষ ক্ষতিগ্রস্থের মধ্যে, একমাত্র তারা ছাড়া, যারা ঈমান এনেছে এবং নেক আমল করেছে।” (সূরা আছর)
            উপরোক্ত আয়াত শরীফে আল্লাহ্ পাক মানব জাতির ধ্বংস হতে নাযাত পাওয়ার প্রথম উপায় হিসাবে ঈমান (আক্বীদা)কে আখ্যায়িত করেছেন। অতঃপর আমলের প্রশ্ন। কারণ ঈমানহীন ব্যক্তির নেক আমলের কোন মূল্যই আল্লাহ্ পাক-এর নিকট নেই। কাজেই বান্দার জন্যে প্রধানতম ফরজ এই যে, সে সর্ব প্রথম তার ঈমান বা আক্বীদাকে বিশুদ্ধ করবে অর্থাৎ ইসলামের প্রতিটি বিষয়ে, আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের ন্যায় আক্বীদা  পোষণ করবে।
কেননা আক্বীদাগত কারণেই ইসলামে ৭২টি বাতিল ফিরকার আবির্ভাব হয়েছে। যদিও তাদের কথাবার্তা, চাল-চলন, ছূরত-সীরত ইত্যাদি বাহ্যিক দৃষ্টিতে অনেক ক্ষেত্রেই মুসলমানের ন্যায় বা ইসলামসম্মত, কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই তারা ইসলামের মৌলিক বিষয়ে ইসলাম তথা কুরআন শরীফ, হাদীস শরীফ, ইজ্মা ও ক্বিয়াস অর্থাৎ আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদার সম্পূর্ণ বিপরীত আক্বীদা পোষণ করে থাকে, যা সুস্পষ্ট কুফরী।
            যেমন- ক্বদরিয়া সম্প্রদায়- তারা তক্বদীরকে অবিশ্বাস করে, অথচ তক্বদীরের উপর ঈমান আনা ফরজ।
খারিজী সম্প্রদায়- তাদের আক্বীদা হলো, হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদিয়াল্লাহু আনহুমগণ কাফির। (নাউযুবিল্লাহ্), অথচ হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদিয়াল্লাহু আনহুমগণের প্রতি সুধারণা পোষণ করা ঈমানের অঙ্গ বা ফরজ।
রাফিজী বা শিয়া সম্প্রদায়- তাদের আক্বীদা মতে শিয়াদের ইমামদের মর্যাদা নবী-রাসূল আলাইহিমুস্ সালামগণের চেয়েও বেশী, বর্তমান কুরআন শরীফ পরিবর্তীত, হযরত আলী রদিয়াল্লাহু আনহু ব্যতীত খোলাফা-ই-রাশিদীনের সকলেই মুরতাদ। (নাউযুবিল্লাহ)
মুশাব্বিহা বা মুনাব্বিহা সম্প্রদায়ঃ- তাদের আক্বীদা হলো, মহান আল্লাহ্ পাক নূর বা আলোমহান আল্লাহ্ পাক-এর দেহ বা আকার-আকৃতি রয়েছে। অথচ মহান আল্লাহ্ পাক উল্লিখিত সকল বিষয় থেকেই সম্পূর্ণ বেনিয়াজ ও পবিত্র।
            অনুরূপ বর্তমান যামানার ভয়ঙ্কর ফিৎনা- কাদিয়ানী সম্প্রদায়, তাদের আক্বীদা হলো- সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শেষ নবী নন, তাঁর পর আরো নবী পৃথিবীতে আসবে, তাই তারা গোলাম কাদিয়ানীকে নবী বলে বিশ্বাস করে, যা অকাট্য কুফরী।
            অথচ তারা প্রত্যেকেই বাহ্যিক দৃষ্টিতে নামায, রোযা, হজ্ব, যাকাতের কথা বলে, টুপি, কোর্তা, পাগড়ী পরিধান করে। এতকিছুর পরও তারা আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের ফতওয়া মোতাবেক কাফির বা অমুসলিম। কারণ তাদের উপরোক্ত আক্বীদাসমূহ সম্পূর্ণই কুফরী।
            আর এদের প্রসঙ্গেই হাদীস শরীফে ইরশাদ হয়েছে যে,
ستفترق امتى على ثلاث وسبعين فرقة كلهم فى النار الا ملة واحدة قيل من هى يارسول الله صلى الله عليه وسلم قال ما انا عليه واصحابى.
অর্থঃ- অতি শীঘ্রই আমার উম্মত ৭৩ দলে বিভক্ত হবে, একটি দল ব্যতীত সকল দল জাহান্নামে যাবে। জিজ্ঞাসা করা হলো- যে দলটি (নাযাত পাবে) সেটা কোন দল? ইয়া রসূলাল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “যে (মত-পথের) উপর আমি এবং আমার ছাহাবা-ই-কিরাম রদিয়াল্লাহু আনহুমগণ রয়েছি, তার উপর যাঁরা থাকবে, তাঁরাই সেই নাযাত প্রাপ্ত দল।” (আবু দাউদ, আহ্মদ, মিশকাত, মিরকাত, লুময়াত, আশয়াতুল লুময়াত, শরহুত্ ত্বীবী, আত্ তালীকুছ্ ছবীহ্, মুযাহিরে হক্ব)
            উপরোক্ত আলোচনা দ্বারা এটা সুস্পষ্টভাবেই প্রমাণিত হলো যে, ইসলামের  যেকোন আমলই করা হোক না কেন এবং যে কেউই করুক না কেন, তা যদি আক্বীদা শুদ্ধ রেখে শরীয়ত সম্মতভাবে করা হয়, তবে তা গ্রহণযোগ্য। আর যদি আক্বীদার মধ্যে কোন ত্রুটি থাকে, তবে তা অবশ্যই পরিত্যাজ্য। যেমন- খারিজী, রাফিজী, কাদিয়ানী ইত্যাদি সম্প্রদায় পরিত্যাজ্য ও বাতিল।
            অতএব, প্রতিটি মুসলমানকেই পাগড়ী সম্পর্কিত বিষয়ে সঠিক বা বিশুদ্ধ আক্বীদা পোষণ করতে হবে। কোন ভাবেই পাগড়ীকে অবজ্ঞা বা তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা যাবেনা।
দ্বিতীয়তঃ অনেকেই অজ্ঞতা হেতু বলে থাকে যে, পাগড়ী পরিধান করা দায়িমী সুন্নত নয় বরং শুধুমাত্র নামাযের মধ্যে পরিধান করলেই চলে। আবার কেউ কেউ সুন্নত স্বীকার করলেও নামাযের মধ্যে পাগড়ী পরিধান করার সুন্নত ও ফযীলতকে অস্বীকার করে থাকে।
            অথচ তাদের উল্লিখিত বক্তব্য শুধু শরীয়ত বিরোধীই নয় বরং মনগড়া, অজ্ঞতামূলক ও বিভ্রান্তিকরও বটে। কারণ পাগড়ী পরিধান করা নামাযের বাইরে ও ভিতরে উভয় অবস্থায়ই সুন্নত ও ফযীলতের কারণ। যেমন, নামাযের বাইরে পাগড়ী পরিধান করা সুন্নত হওয়ার ব্যাপারে হাদীস শরীফের সহীহ্ কিতাব তিরমিযী শরীফেরহাশিয়ায় উল্লেখ আছে, ان لبس العمامة سنة.
অর্থঃ- নিঃসন্দেহে পাগড়ী পরিধান করা (দায়িমী) সুন্নত।”(হাশিয়ায়ে শামাইলুত্ তিরমিযী/৮)
            আর নামাযের মধ্যে পাগড়ী পরিধান করার ফযীলত সম্পর্কে উক্ত কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছে যে,
ان ركعتين مع العمامة افضل من سبعين ركعة بدونها.
অর্থঃ- নিশ্চয়ই পাগড়ী পরিধান করে দুরাকায়াত নামায আদায় করা, পাগড়ী ছাড়া ৭০ রাকায়াত নামায আদায় করার চেয়ে অধিক ফযীলতপূর্ণ।” (হাশিয়ায়ে শামাইলুত্ তিরমিযী/৮)
            পাগড়ীর উল্লিখিত ফযীলত থেকে যেন উম্মত মাহরুম না হয় সে জন্যে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন্নাবিয়্যীন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিশেষ গুরুত্ব সহকারে উম্মতদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন যে,
فاعتموا فان العمامة سيماء الاسلام وهى الحاجز بين المسلمين والمشركين.
অর্থঃ- তোমরা পাগড়ী পরিধান কর। নিশ্চয়ই পাগড়ী ইসলামের নির্দশন এবং তা মুসলমান ও মুশরিকদের মাঝে পার্থক্যকারী।” (যুরকানী ৬ষ্ঠ জিঃ ২৭২ পৃষ্ঠা, উমদাতুল
ক্বারী ২১ জিঃ ৩০৮ পৃষ্ঠা, খছাইলে নববী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ৭৮ পৃষ্ঠা, তুহ্ফাতুল আহওয়াযী ৫ম জিঃ ৪১২ পৃষ্ঠা)
            সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন্নাবিয়্যীন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো এরশাদ করেন যে, عليكم بالعمائم فانها سيماء الملئكة.
অর্থঃ- তোমাদের জন্যে পাগড়ী অবধারিত, কেননা তা ফেরেশ্তাগণের নিদর্শন স্বরূপ।” (মিশকাত শরীফ/৩৩৭, ফাইদুল ক্বদীর ৪র্থ জিঃ ৪৫৪ পৃষ্ঠা, শুয়াবুল ঈমান লিল বাইহাক্বী ৫ম জিঃ ১৭৬ পৃষ্ঠা)
            অতএব, সুস্পষ্টভাবেই প্রমাণিত হলো যে, পাগড়ী পরিধান করা যেরূপ দায়িমী সুন্নত । তদ্রুপ অশেষ ফযীলত লাভেরও কারণ। নামাযের সময় যেরূপ পাগড়ী পরিধান করা সুন্নত, নামাযের বাইরেও তদ্রুপ পাগড়ী পরিধান করা সুন্নত। অর্থাৎ পাগড়ী পরিধান করা হচ্ছে- দায়িমী বা সার্বক্ষণিক সুন্নত।
            এছাড়াও পাগড়ী সম্পর্কিত বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য মাসিক আল বাইয়্যিনাতের অগণিত পাঠকের পক্ষ হতে প্রেরিত অসংখ্য চিঠিও পাগড়ী ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়েফতওয়া দেয়ার একটি কারণ।
            কেননা মহান আল্লাহ্ পাক পবিত্র কালামুল্লাহ্ শরীফে ইরশাদ করেন,
فاسئلوا اهل الذكر ان كنتم لاتعلمون.
অর্থঃ- যদি তোমরা না জান, তবে আহ্লে যিকির বা হক্কানী আলিমগণের নিকট জিজ্ঞাসা করো।” (সূরা নহল/৪৩ ও আম্বিয়া/৭) অর্থাৎ তোমরা যারা জাননা বা দ্বীনের ব্যাপারে জ্ঞান রাখনা, তারা যাঁরা জানেন, তাঁদের নিকট জিজ্ঞাসা করে জেনে নাও।
            অতএব, যাঁরা জানেন, তাঁদের পবিত্র দায়িত্ব হলো- প্রশ্নকারীর প্রশ্নের শরীয়তসম্মত জাওয়াব প্রদান করা। কারণ যারা জানা থাকা সত্ত্বেও প্রশ্নকারীর প্রশ্নের জবাব প্রদান হতে বিরত থাকবে, তাদের জন্যে কঠিন শাস্তির কথা হাদীস শরীফে উল্লেখ আছে। যেমন আখিরী রসূল, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন,
من سئل عن علم علمه ثم كتمه الجم يوم القيامة بلجام من النار.
অর্থঃ- যাকে দ্বীন সম্পর্কে কোন প্রশ্ন করা হয়, জানা থাকা সত্ত্বেও যদি সে তা গোপন করে অর্থাৎ জবাব না দেয়, তবে ক্বিয়ামতের দিন তার গলায় আগুণের বেড়ী পরিয়ে দেয়া হবে।” (আবু দাউদ, তিরমিযী, ইবনে মাজাহ্, আহ্মদ, মিশকাত, বযলুল মাজহুদ, উরফুশ্ শাযী, তুহ্ফাতুল আহ্ওয়াযী, মায়ারিফুস্ সুনান, মিরকাত, শরহুত্ ত্বীবী, আত্ তালীকুছ্ ছবীহ্, আশয়াতুল লুময়াত, মুযাহিরে হক্ব, মিরয়াতুল মানাজীহ্ ইত্যাদি)
            অন্য হাদীস শরীফে বলা হয়েছে, “তার জিহ¡া আগুণের কেঁচি দ্বারা কেটে দেয়া হবে।
            কাজেই উপরোক্ত হাদীস শরীফে যে ভয়াবহ শাস্তির কথা বলা হয়েছে, তার থেকে বাঁচার জন্যে অর্থাৎ আল্লাহ্ পাক ও তাঁর রসূল, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর খাছ সন্তুষ্টি হাছিল করার লক্ষ্যে এবং বিদ্য়াতীদের কুফরীমূলক বক্তব্যের কারণে সাধারণ মুসলমানগণ যেন পাগড়ী সম্পর্কিত বিষয়ে কুফরী আক্বীদা পোষণ না করে অর্থাৎ পাগড়ীর ন্যায় মহান সুন্নতকে যেন অবজ্ঞা বা তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য না করে এবং তাদের প্ররোচনায় যেন এ মহান সুন্নত ত্যাগ করতঃ অশেষ ফযীলত ও রেযায়ে মাওলা অর্জনে ব্যর্থ না হয় বরং পাগড়ী সম্পর্কিত প্রতিটি বিষয়ে সঠিক ও সহীহ্ আক্বীদা পোষণ করতে পারে এবং পাগড়ীর ন্যায় অশেষ ফযীলতপূর্ণ সুন্নত পালন করে মহান আল্লাহ্ পাক ও তাঁর হাবীব সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন্নাবিয়্যীন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর খাছ রেযামন্দী হাছিল করতে পারে। সে জন্যেই মসিক আল বাইয়্যিনাতেপাগড়ী মোবারক ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কিত ফতওয়া প্রকাশ করা হলো।
            এখানে বিশেষভাবে স্মরণীয় এই যে, আমাদের সাথে কারো যেরূপ বন্ধুত্ব নেই, তদ্রুপ নেই বিদ্বেষ। অর্থাৎ যাদের আক্বীদা ও আমল শরীয়তসম্মত, তাদের সাথে আমাদের কোন প্রকার বিদ্বেষ নেই। আর যাদের আক্বীদা ও আমল শরীয়তের খেলাফ বা বিপরীত, তাদের সাথে আমাদের কোন প্রকার বন্ধুত্ব নেই। কারণ বন্ধুত্ব বা বিদ্বেষ একমাত্র আল্লাহ্ পাক-এর জন্যেই হতে হবে।
            এ প্রসঙ্গে হাদীস শরীফে ইরশাদ হয়েছে,
من احب لله وابغض لله واعطى لله ومنع لله فقد استكمل الايمان.
অর্থঃ- যে ব্যক্তি আল্লাহ্ পাক-এর (সন্তুষ্টি লাভের) জন্যে মুহব্বত বা বন্ধুত্ব করে, বিদ্বেষ পোষণ করে, আদেশ করে, নিষেধ করে, তার ঈমান পরিপূর্ণ।” (আবূ দাউদ, তিরমিযী, বযলুল মাজহুদ, উরফুশ্ শাযী, তুহ্ফাতুল আহ্ওয়াযী, মায়ারিফুস্ সুনান, মিশকাত, মিরকাত, শরহুত্ ত্বীবী, আত্ তালীকুছ্ ছবীহ্, মুযাহিরে হক্ব, লুময়াত, মিরয়াতুল মানাজীহ্ ইত্যাদি)
            বস্তুতঃ মাসিক আল বাইয়্যিনাত পত্রিকার প্রতিটি লিখা, বক্তব্য, সুওয়াল-জাওয়াব, ফতওয়া, প্রতিবাদ, প্রতিবেদন, মতামত ইত্যাদি সবই উপরোক্ত হাদীস শরীফের মূলনীতির ভিত্তিতেই প্রকাশিত হয়ে থাকে।
            কাজেই মাসিক আল বাইয়্যিনাত পত্রিকায়” “পাগড়ী ও তার  সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্র্কে  সঠিক, বিশুদ্ধ ও শরীয়তসম্মত ফায়সালা প্রদান করার মুল মাকছুদ হলো- সত্যান্বেষী বা হক্ব তালাশী সমঝদার মুসলমানগণের নিকট সত্য বা হক্ব বিষয়টি ফুটিয়ে তোলা। যেন প্রত্যেকেই পাগড়ী সম্পর্কে অবগত হতে পারে এবং সুন্নত মোতাবেক আমল করে ইহ্লৌকিক ও পারলৌকিক এত্মিনান ও নাযাত লাভ করতে পারে।
            মূলতঃ মানুষ মাত্রই ভুল হওয়া স্বাভাবিক, তাই এক মুমিন অপর মুমিনের ভুল ধরিয়ে দেয়া ঈমানী আলামত। কারণ হাদীস শরীফে ইরশাদ হয়েছে যে, المؤمن مرأة المؤمن.
অর্থঃ- এক মুমিন অপর মুমিনের জন্যে আয়না স্বরূপ।” (আবূ দাউদ শরীফ, বযলুল মাজহুদ)
            এ প্রসঙ্গে কিতাবে উল্লেখ আছে যে, আমীরুল মুমিনীন, হযরত ওমর ইবনুল খত্তাব রদিয়াল্লাহু আনহু স্বীয় খিলাফতকালে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর রীতিনীতি প্রকাশ করার উদ্দেশ্যে সমবেত আনছার এবং মুহাজির রদিয়াল্লাহু আনহুমগণকে জিজ্ঞাসা করলেন, “যদি আমি দ্বীনের হুকুম-আহ্কামকে সহজতর করার উদ্দেশ্যে শরীয়ত বিরোধী কোন আদেশ দান করি, তবে তোমরা কি করবে?” উপস্থিত লোকেরা নীরব রইল। হযরত ওমর ইব্নুল খত্তাব রদিয়াল্লাহু আনহু দ্বিতীয় এবং তৃতীয়বার একই কথার পূণরাবৃত্তি করলেন। তখন হযরত বশীর ইব্নে সাঈদ রদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, “যদি আপনি এরূপ করেন, তবে আমরা আপনাকে এরূপ সোজা করবো, যেরূপ তীরকে সোজা করা হয়।এ কথা শুনে হযরত ওমর ইবনুল খত্তাব রদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, “তোমরাই আমার প্রকৃত বন্ধু, দ্বীনের কাজে সাহায্যকারী।” (আওয়ারিফুল মাআরিফ)
            অতএব, পাগড়ী সম্পর্কিত বিষয়ে যারা ফিৎনা বা বিভ্রান্তিতে রয়েছে, তাদের সে ফিৎনা ও বিভ্রান্তি নিরসন করা ও উপরোক্ত হাদীস শরীফের মেছদাক হওয়াই মাসিক আল বাইয়্যিনাতে পাগড়ী সম্পর্কিত ফতওয়া প্রকাশ করার মূল কারণ।    
            বস্তুতঃ পাগড়ী পরিধান করা যদিও সুন্নততবে সুন্নতের অনুসরণই মহান আল্লাহ্ পাক ও তাঁর হাবীব সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন্নাবিয়্যীন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর খাছ সন্তুষ্টি হাছিলের একমাত্র মাধ্যম। কেননা মহান আল্লাহ্ পাক পবিত্র কালামে পাকে ইরশাদ করেছেন,
قل ان كنتم تحبون الله فاتبعونى يحببكم الله ويغفرلكم ذنوبكم والله غفور رحيم.
অর্থঃ- হে হাবীব! (ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আপনি বলুন, যদি তোমরা মহান আল্লাহ্ পাক-এর ভালবাসা চাও তবে আমাকে (আমার সুন্নতকে) অনুসরণ কর তবেই আল্লাহ্ পাক তোমাদেরকে ভালবাসবেন এবং তোমাদের সকল গুণাহ্-খতা ক্ষমা করে দিবেন। আল্লাহ্ পাক ক্ষমাশীল ও দয়ালু।” (সূরা আলে ইমরান/৩১)
            আর উক্ত আয়াত শরীফের ব্যাখ্যায় হাদীসে কুদসীতেইরশাদ হয়েছে,
لايزال العبد يتقرب الى بالنوافل حتى احبه.
অর্থঃ- মহান আল্লাহ্ পাক বলেন, আমার বান্দারা নফল অর্থাৎ সুন্নত বা মুস্তাহাব আমলের দ্বারা আমার এতটুকু নৈকট্য বা সন্তষ্টি হাছিল করে যে, স্বয়ং আমি আল্লাহ্ পাক তাকে মুহব্বত করি বা ভালবাসি।
            অতএব, বলার অপেক্ষাই রাখেনা যে, পাগড়ীর আমলের দ্বারা বান্দা অবশ্যই মহান আল্লাহ্ পাক ও তাঁর হাবীব হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর খাছ রেযামন্দী লাভ করতে পারবে। কারণ পাগড়ী আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন্নাবিয়্যীন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সুন্নতসমূহের মধ্যে একখানা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ও অশেষ ফযীলতপূর্ণ সুন্নত।

(পূর্ব প্রকাশিতের পর)
ইমামাহ্ বা পাগড়ী পরিধান করা দায়িমী সুন্নত হওয়ার বিস্তারিত নির্ভরযোগ্য ও অকাট্য দলীল-আদিল্লাসমূহ
            গত কয়েক সংখ্যার আলোচনা দ্বারা সুস্পষ্টভাবেই প্রমাণিত হলো যে, খোলাফা-ই-রাশিদীন রদিয়াল্লাহু আনহুমসহ সকল ছাহাবা-ই-কিরাম রদিয়াল্লাহু আনহুম এবং চার মাযহাব ও চার তরীক্বার ইমামসহ সকল আউলিয়া-ই-কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণ আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, রহমতুল্লিল আলামীন, নূরে মুজাস্সাম হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সুন্নতসমূহ বা আদেশ-নিষেধসমূহ সুক্ষ্মাতিসুক্ষ্ম বা পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে পালন করতেন। তাই বলার অপেক্ষাই রাখেনা যে, ইমামাহ্ বা পাগড়ীর ক্ষেত্রেও তাঁরা আখিরী রসূল, নূরে মুজাস্সাম, শাফিউল মুযনিবীন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকেই অনুসরণ-অনুকরণ করতেন। অর্থাৎ হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদিয়াল্লাহু আনহুম ও হযরত আউলিয়া-ই-কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণ দায়িমীভাবে পাগড়ী পরিধান করতেন।
            অথচ আজকাল অনেকেই পীর, ছুফী, দরবেশ, মুফতী, মুহাদ্দিস, মুফাস্সির, আল্লামা, আশেকে রসূল কত কি দাবি করে। কিন্তু পাগড়ীদায়িমীভাবে পরিধান করাতো দূরের কথাই নামাযের সময়ও পরিধান করেনা।
            অথচ পাগড়ী পরিধান করা হচ্ছে, আখিরী নবী ও রসূল, দুজাহানের বাদশাহ্, ফখরে মওজুদাত, সরকারে কায়েনাত, নূরে মুজাস্সাম হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর খাছ তথা দায়িমী সুন্নত। শুধু তাই নয় পূর্ববর্তী সকল নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সালামগণ সকলেই পাগড়ী পরিধান করেছেন এবং মহান আল্লাহ্ পাক-এর ফেরেশ্তাগণও দায়িমীভাবে পাগড়ী পরিধান করে থাকেন।
            অতএব,  পাগড়ী পরিধান করা ফেরেশ্তাগণের সুন্নত, সমস্ত নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সালামগণের সুন্নত, ইমামুল মুরসালীন, রহমতুল্লিল আলামীন, নূরে মুজাস্সাম হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর খাছ সুন্নত, হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদিয়াল্লাহু আনহুমগণের সুন্নত ও হযরত আউলিয়া-ই-কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণের সুন্নত। তাঁরা প্রত্যেকেই দায়িমী বা সার্বক্ষণিকভাবে অর্থাৎ অধিকাংশ সময় পাগড়ী পরিধান করেন বা করতেন।
            নিম্নে উল্লিখিত বিষয়ে পর্যায়ক্রমে ও বিস্তারিতভাবে নির্ভরযোগ্য ও অকাট্য দলীল-আদিল্লাসমূহ উল্লেখ করা হলো-
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, রহমতুল্লিল আলামীন হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দায়িমী বা সার্বক্ষণিকভাবে ইমামাহ্ বা পাগড়ী পরিধান করতেন
            সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন্নাবিয়্যীন, রহমতুল্লিল আলামীন, নূরে মুজাস্সাম, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে ইমামাহ্ বা পাগড়ী দায়িমী বা সার্বক্ষণিক ভাবে পরিধান করতেন সে বিষয়ে গত দুই সংখ্যায় ৯৬ থেকে ২২৪ নম্বর দলীল অর্থাৎ ১২৮টি অকাট্য ও নির্ভরযোগ্য দলীল উল্লেখ করা হয়েছে। বাকী দলীলগুলো নিম্নে উল্লেখ করা হলো-
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন্নাবিয়্যীন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর খুত্ববাহ্ দান কালে ইমামাহ্ বা পাগড়ী মোবারক
            সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া  সাল্লাম দায়িমীভাবে ইমামাহ্ বা পাগড়ী পরিধান করতেন। এমনকি খুত্ববাহ্ দানকালেও তাঁর মাথা মোবারকে পাগড়ী মোবারক শোভা পেত। খুত্ববাহ্ দানকালে যে, তাঁর মাথা মোবারকে পাগড়ী মোবারক থাকত নিম্নে এ সম্পর্কিত দলীল সমূহ উল্লেখ করা হলো-
[২২৫-২৩২]
عن جعفر بن عمروبن حريث عن ابيه ان رسول الله صلى الله عليه وسلم خطب الناس وعليه عمامة سوداء- (مسلم شريف جص৪৩৯- مسلم بشرح النووى جص১৩৩- شرح الابى والسنوسى جص ৪৬৭- مسند احمد بن جنبل جص৩০৭- شمائل الترمذى ص৯- جمع الوسائل جص ২০৫- شمائل بشرح المناوى جص ২০৫- المواهب اللدينة على الشمائل المحمدية ص ১০০)
অর্থঃ- হযরত জাফর ইবনে আমর ইবনে হুরাইস রদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তাঁর পিতা (হযরত আমর ইবনে হুরাইস রদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, নিশ্চয়ই রসূলুল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মানুষদের (ছাহাবাগণের) উদ্দেশ্যে খুত্ববাহ্ দিচ্ছিলেন, তখন তাঁর মাথা মোবারকে কালো পাগড়ী ছিল।” (মুসলিম শরীফ ১ম জিঃ ৪৩৯ পৃষ্ঠা, মুসলিম বি শরহিন নববী ৫ম জিঃ ১৩৩ পৃষ্ঠা, শরহুল উবাই ওয়াস্ সিনূসী ৪র্থ জিঃ ৪৬৭ পৃষ্ঠা, মুসনাদু আহমদ ইবনে হাম্বল ৪র্থ জিঃ ৩০৭ পৃষ্ঠা, শামাইলুত্ তিরমিযী ৯পৃষ্ঠা, জামউল ওয়াসাইল ১ম জিঃ ২০৫ পৃষ্ঠা, শামাইলু বি শরহিল মানাবী ১ম জিঃ ২০৫ পৃষ্ঠা, আল মাওয়াহিবুল লাদুন্নিয়া আলাশ্ শামাইলিল মুহম্মদিয়া ১০০পৃষ্ঠা।
[২৩৩-২৪৪]
عن جعفر بن عمرو بن حريث عن ابيه قال كانى انظر الى رسول الله صلى الله عليه وسلم على المنبر وعليه عمامة سوداء قد ارخى طرفيها بين كتفيه. (مسلم شريف ج ص ৩৩০- مسلم بشرح النووى جص ১৩৩- شرح الابى والسنوسى جص ৪৬৭- ابو داؤد شريف جص ২০৯- بذل المجهود جص ৫১- عون المعبود جص ৯৫- شرح ابى داؤد لبدر الدين العينى- نسائى شريف جص ২৯৯- نسائى بشرح السيوطى جص ২১১- السنن الكبرى للنسائى جص ৪৯৮- فتح البارى ج ১০ ص ২৭৩- اللباس والزينة ص ১৩৩)
অর্থঃ- হযরত জাফর ইবনে আমর ইবনে হুরাইস রদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তাঁর পিতা (হযরত আমর ইবনে হুরাইস রদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, নিশ্চয়ই আমার চোখে সেই দৃশ্য এখনো ভেসে আসে, যখন আমি রসূলুল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে মিম্বরে খুত্ববাহ্ দিতে দেখেছি। তখন তাঁর মাথা মোবারকে কালো পাগড়ী বাঁধা ছিল। যার দুপ্রান্ত (শামলা) তাঁর দুকাঁধের মধ্যবর্তী স্থানে ঝুলছিল।” (মুসলিম শরীফ ১ম জিঃ ৪৪০ পৃষ্ঠা, মুসলিম বি শরহিন নববী ৫ম জিঃ ১৩৩পৃষ্ঠা, শরহুল উবাই ওয়াস্ সিনূনী ৪র্থ জিঃ ৪৬৭পৃষ্ঠা, আবু দাউদ শরীফ ২য় জিঃ ২০৯ পৃষ্ঠা, বযলুল মাজহুদ ৬ষ্ঠ জিঃ ৫১ পৃষ্ঠা, আউনুল মাবুদ ৪র্থ জিঃ ৯৫ পৃষ্ঠা,শরহু আবী দাউদ লি বদরিদ্দীন আইনী, নাসায়ী শরীফ ২জিঃ ২৯৯ পৃষ্ঠা, নাসায়ী বি শরহিস্ সুয়ূতী ৮ম জিঃ ২১১ পৃষ্ঠা, আস্সুনানুল কুবরা লিন্ নাসায়ী ৫ম জিঃ ৪৯৮ পৃষ্ঠা, ফতহুল বারী শরহে বুখারী ১০ম জিঃ ২৭৩ পৃষ্ঠা, আল্ লিবাসু ওয়ায্ যীনাহ্ ১৩৩ পৃষ্ঠা)
[২৪৫-২৪৬]
عن جعفر عن ابن عمروبن حريث عن ابيه قال رأيت النبى صلى الله عليه وسلم يخطب على المنبر وعليه عمامة سوداء. (ابن ماجة شريف ص ২৬৪- اللباس والزينة ص ১৩০)
অর্থঃ- হযরত জাফর রদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হযরত ইবনে আমর ইবনে হুরাইস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে তিনি তাঁর পিতা থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন, আমি নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে মিম্বরে বসে খুত্ববাহ্ দিতে দেখেছি, যখন তাঁর মাথা মোবারকে কালো পাগড়ী ছিল।” (ইবনে মাজাহ্ ২৬৪ পৃষ্ঠা, আল লিবাসু ওয়ায্ যীনাহ্ ১৩০ পৃষ্ঠা)
[২৪৭-২৪৯]
عن ابن عباس رضى الله عنهما ان النبى صلى الله عليه وسلم خطب الناس وعليه عصابة دسماء. (شمائل الترمذى ص ৯- جمع الوسائل جص ২০৯- شرح المناوى جص ২০৯)
অর্থঃ-হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মানুষদের (ছাহাবাগণের) উদ্দেশ্যে খুত্ববাহ্ দিলেন, যখন তাঁর মাথা মোবারকে কালো পাগড়ী বাঁধা ছিল।” (শামাইলুত্ তিরমিযী ৯ পৃষ্ঠা, জামউল ওয়াসাইল ১ম জিঃ ২০৯ পৃষ্ঠা, শরহুল মানাবী ১ম জিঃ ২০৯ পৃষ্ঠা)
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন্নাবিয়্যীন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর জিহাদ অবস্থায় ইমামাহ্ বা পাগড়ী মোবারক
 সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সর্বদাই পাগড়ী পরিধান করতেন। এমনকি জিহাদ অবস্থায়ও তাঁর মাথা মোবারকে পাগড়ী মোবারক থাকত। যেমন, মক্কা বিজয়ের দিন, তাবুক যুদ্ধে, খন্দক যুদ্ধে, সানিইয়াতুল হানযাল এবং অপরাপর যুদ্ধে তাঁর মাথা মোবারকে কালো পাগড়ী বাঁধা ছিল। নিম্নে এসম্পর্কিত দলীলসমূহ উপস্থাপন করা হলো-
[২৫০-২৫২]
عن جابربن عبد الله الانصارى رضى الله عنه ان رسول الله صلى الله عليه وسلم دخل مكة وقال قتيبة دخل يوم فتح مكة وعليه عمامة سوداء. (مسلم شريف ج ص ৪৩৯- مسلم بشرح النووى جص ১৩৩- شرح الابى والسنوسى جص ৪৬৭)
অর্থঃ- হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ্ আল-আনছারী রদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন যে, নিশ্চয়ই রসূলুল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মক্কা শরীফে প্রবেশ করেন। কুতাইবা বলেন, যখন তিনি মক্কা বিজয়ের দিন মক্কা শরীফে প্রবেশ করেন, তখন তাঁর মাথা মোবারকে কালো পাগড়ী ছিল।” (মুসলিম শরীফ ১ম জিঃ ৪৩৯ পৃষ্ঠা, মুসলিম বি শরহিন নববী ৫ম জিঃ ১৩৩ পৃষ্ঠা, শরহুল উবাই ওয়াস্ সিনূসী ৪র্থ জিঃ ৪৬৭ পৃষ্ঠা)
[২৫৩-২৬৬]
عن جابربن عبد الله رضى الله عنه ان النبى صلى الله عليه وسلم دخل يوم فتح مكة وعليه عمامة سوداء بغير احرام. (مسلم شريف ج ص ৪৩৯- مسلم بشرح النووى جص ১৩৩- شرح الابى والسنوسى جص ৪৬৭- ترمذى شريف جص ২০১، ২০৭- تحفة الاحوذى جص ৩২৭، ৪১০- عارضة الاحوذى جص ২৪৩- نسائى شريف جص ২৯، ২৯৯- نسائى بشرح السيوطى جص ২০১ جص ২১১- السنن الكبرى للنسائى جص ৪৯৭- ابن ماجة ص ২০৭، ২৬৪- مسند احمد بن حنبل جص ৩৬৩، ৩৮৭- الدارمى جص ১০১- شعب الايمان للبيهقى جص ১৭৩- اللباس والزينة ص ১৩০)
অর্থঃ- হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ্ রদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন যে, নিশ্চয়ই যখন নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মক্কা বিজয়ের দিবস ইহরাম ছাড়াই মক্কা শরীফে প্রবেশ করেন, তখন তাঁর মাথা মোবারকে কালো পাগড়ী ছিল।” (মুসলিম শরীফ ১ম জিঃ ৪৩৯ পৃষ্ঠা,মুসলিম বি শরহিন নববী ৫ম জিঃ ১৩৩পৃষ্ঠা, শরহুল উবাই ওয়াস্ সিনূসী ৪র্থ জিঃ ৪৬৭ পৃষ্ঠা, তিরমিযী শরীফ ১ম জি ২০১,২০৭ পৃষ্ঠা, তুহ্ফাতুল আওয়াযী ৫ম জিঃ ৩২৭, ৪১০ পৃষ্ঠা, আরিদ্বাতুল আহওয়াযী ৭ম জিঃ ২৪৩ পৃষ্ঠা, নাসায়ী শরীফ ২য় জিঃ ২৯, ২৯৯ পৃষ্ঠা, নাসায়ী বি শরহিস্ সুয়ূতী ৫ম জিঃ ২০১, ৭ম জিঃ ২১১ পৃষ্ঠা, আস্ সুনানুল কুবরা লিন নাসায়ী ৫ম জিঃ ৪৯৭ পৃষ্ঠা, ইবনে মাজাহ্ ২০৮, ২৬৪ পৃষ্ঠা, মুসনাদু আহমদ ইবনে হাম্বল ৩য় জিঃ ৩৬৩, ৩৮৭ পৃষ্ঠা, দারিমী ২য় জিঃ ১০১ পৃষ্ঠা, শুয়াবুল ঈমান লিল বাইহাক্বী ৫ম জিঃ ১৭৩ পৃষ্ঠা, আল্ লিবাসু ওয়ায্ যীনাহ্ ১৩০ পৃষ্ঠা)
[২৬৭-২৭১]
عن جابر رضى الله عنه ان النبى صلى الله عليه وسلم دخل عام الفتح مكة وعليه عمامة سوداء. (ابو داؤد شريف ج ص ২০৯- بذل المجهود جص ৫১- عون المعبود جص ৯৫- شرح ابى داؤد لبدر الدين العينى- اللباس والزينة ص ১২৮)
অর্থঃ- হযরত জাবির রদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন যে, নিশ্চয়ই নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মক্কা বিজয়ের বৎসর মক্কা শরীফে প্রবেশ করেন, যখন তাঁর মাথা মোবারকে কালো পাগড়ী ছিল।” (আবু দাউদ শরীফ ২য় জিঃ ২০৯ পৃষ্ঠা, বযলুল মাজহুদ ৬ষ্ঠ জিঃ ৫১ পৃষ্ঠা, আউনুল মাবুদ ৪র্থ জিঃ ৯৫ পৃষ্ঠা, শরহু আবী দাউদ লি বদরিদ্দীন আইনী, আল্ লিবাসু ওয়ায্ যীনাহ্ ১২৮ পৃষ্ঠা)
[২৭২-২৭৫]
عن عبد الله بن دينار عن ابن عمر ان النبى صلى الله عليه وسلم دخل يوم فتح مكة وعليه عمامة سوداء. (ابن ماجة شريف ص ২৬৪- الدارمى جص ১০১- مسند احمد بن حنبل جص ৩৬৩. ৩৮৭- اللباس والزينة ص ১২৪)
অর্থঃ- হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে দীনার রদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমর রদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, নিশ্চয়ই নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মক্কা বিজয়ের দিবস যখন মক্কা শরীফে প্রবেশ করেন, তখন তাঁর মাথা মোবারকে কালো পাগড়ী বাঁধা ছিল।” (ইবনে মাজাহ্ শরীফ ২৬৪ পৃষ্ঠা, দারিমী ২য় জিঃ ১০১ পৃষ্ঠা, মুসনাদু আহমদ ইবনে হাম্বল ৩য় জিঃ ৩৬৩, ৩৮৭ পৃষ্ঠা, আল্ লিবাসু ওয়ায্ যীনাহ্ ১২৪ পৃষ্ঠা)
[২৭৬]
عن ابى أسامة رضى الله عنه فقال وعليه عمامة سوداء مرقانية قد ارخى عليه طرفيها بين كتفيه وقال يوم فتح مكة. (شعب الايمان للبيهقى جص ১৭৩)
অর্থঃ- হযরত আবু উসামাহ্ রদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, (যেদিন) হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মাথা মোবারকে কালো পাগড়ী, যার দুপ্রান্ত তাঁর উভয় কাঁধের মধ্যবর্তী স্থানে ঝুলন্ত অবস্থায় ছিল। (রাবী বলেন) সেই দিনটিই ফাত্হে মক্কা বা মক্কা বিজয়ের দিন।” (শুয়াবুল ঈমান লিল বাইহাক্বী ৫ম জিঃ ১৭৩ পৃষ্ঠা)
[২৭৭]
عن ابى امامة رضى الله عنه عند الطبرانى بلفظ مسح رسول الله صلى الله عليه وسلم على الخفين والعمامة فى غزوة تبوك. (نيل الاوطار جص ১৮২)
অর্থঃ- হযরত আবু উমামাহ্ রদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত হাদীসটি ইমাম তিরবানী রহমতুল্লাহি আলাইহি শব্দগত দিক থেকে এভাবে বর্ণনা করেন যে, রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাবুক যুদ্ধে মোজা এবং পাগড়ীর উপর মাসেহ্ করেছিলেন।” (নাইলুল আউতার ১ম জিঃ ১৮২ পৃষ্ঠা)
[২৭৮]
عن جابر بن عبد الله رضى الله عنه قال كانت عمامة رسول الله صلى الله عليه وسلم سوداء يوم ثنية الحنظل وذلك يوم الخنذق. (شعب الايمان للبيهقى جص ১৭৩)
অর্থঃ- হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ্ রদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘সানিইয়াতুল্ হানযালএর দিবসে রসূলুল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পাগড়ী ছিল কালো রংয়ের এবং অনুরুপ ভাবে খন্দক যুদ্ধের দিবসেও (কালো পাগড়ী) ছিল।” (শুয়াবুল ঈমান লিল বাইহাক্বী ৫ম জিঃ ১৭৩ পৃষ্ঠা)
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, রহমতুল্লিল আলামীন, রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে পদ্ধতিতে পাগড়ী মোবারক পরিধান করেছেন
            সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু  আলাইহি ওয়া সাল্লাম সকলের জন্যই উত্তম আদর্শ নিয়ে দুনিয়ায় এসেছেন। তাই পাগড়ী বাঁধার ব্যাপারে ও তাঁর উত্তম আদর্শ বা পদ্ধতি বিদ্যমান ছিল। যেমন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন পাগড়ী পরিধান করতেন। তখন তার একটি প্রান্ত মাথায় পেঁচিয়ে তারই শেষ কিনারা মাথার পিছনে উপরে গুঁজে দিতেন। আর শামলা উভয় কাঁধের মাঝে ঝুলাতেন। কখনো কখনো দুটি শামলাও পিঠের উপর রাখতেন। নিচে এ বিষয়ে দলীলসমূহ পেশ করা হলো-
[২৭৯-২৮০]
عن ابن سلام بن عبد الله بن سلام قال سألت ابن عمر كيف كان النبى صلى الله عليه وسلم يعتم؟ قال كان يدير العمامة على رأسه ويقورها من وؤائه ويرسل لها ذؤابة بين كتفبه. (نيل الاوطار جص ১১৩ تحفة الاحوذى جص ৪১৩)
অর্থঃ- হযরত ইবনে সালাম ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম রদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমর রদিয়াল্লাহু আনহুকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম যে, “রসূলুল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কিভাবে পাগড়ী বাঁধতেন?” উত্তরে তিনি বলেছিলেন, রসূলুল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পাগড়ীর একটি প্রান্ত মাথা মোবারকে পেঁচাতেন ও তারই শেষ প্রান্ত পিছনে উপরে গুঁজে দিতেন। আর পাগড়ীর শামলা উভয় কাঁধের মাঝখানে ঝুলাতেন।” (নাইলুল আউতার ২য় জিঃ ১১৩ পৃষ্ঠা, তুহফাতুল আহওয়াযী ৫ম জিঃ ৪১৩ পৃষ্ঠা)
[২৮১-২৯০]
رواية ابى عبد السلام عن ابن عمر رضى الله عنهما قال قلت لابن عمر كيف كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يعتم؟ قال كان يدير كور العمامة على رأسه ويغرزها من ورائه ويرخى له ذوابة بين كتفيه. (عمدة القارى ج ২১ ص ২০৮- ارشاد السارى جص ৪২৮- تحفة الاحوذى جص ৪১২. ৪১৪- جمع الوسائل جص ২০৬- مرقاة جص ২৪৯- التعليق الصبيح جص ৩৮৮ شعب الايمان للبيهقى جص ১৭৪- الززقانى جص ২৭৬- اللباس والزينة ص ১৩৪- مجمع الزوائد جص ১২০)
অর্থঃ- হযরত আবু আব্দুস্ সালাম রহমতুল্লাহি আলাইহি হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমর রদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা থেকে বর্ণনা করেন। তিনি (আবু আব্দুস্ সালাম রহমতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আমি হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমর রদিয়াল্লাহু আনহুমাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম যে, রসূলুল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কিভাবে পাগড়ী বাঁধতেন? তিনি উত্তরে বলেছিলেন, রসূলুল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পাগড়ীর একটি প্রান্ত মাথা মোবারকে পেঁচাতেন এবং তাঁরই শেষ প্রান্ত পিছনে উপরে গুঁজে দিতেন। আর পাগড়ীর শামলা উভয় কাঁধের মাঝখানে ঝুলিয়ে রাখতেন।” (উমদাতুল কারী ২১জিঃ ৩০৮ পৃষ্ঠা, ইরশাদুস্ সারী ৮ম জিঃ ৪২৮ পৃষ্ঠা, তুহফাতুল আহওয়াযী ৫ম জিঃ ৪১২ ও ৪১৪ পৃষ্ঠা, জামউল ওসাইল ১ম জিঃ ২০৬ পৃষ্ঠা, মিরকাত ৮ম জিঃ ২৪৯ পৃষ্ঠা, আত্ তালিকুছ্ ছবীহ ৪র্থ জিঃ ৩৮৮ পৃষ্ঠা, শুয়াবুল ঈমান লিল বাইহাক্বী ৫ম জিঃ ১৭৪ পৃষ্ঠা, আয্ যুরক্বানী ৬ষ্ঠ জিঃ ২৭৬ পৃষ্ঠা, আল্ লিবাসু ওয়ায্ যীনাহ্ ১৩৪ পৃষ্ঠা, মাজমাউয্ যাওয়াইদ ৫ম জিঃ ১২০ পৃষ্ঠা)
            উপরোক্ত হাদীস, হাদীসের বিশ্ববিখ্যাত শরাহ্, বিশ্ব সমাদৃত ফিক্বাহর কিতাব, তাসাউফ ও সীরাত গ্রন্থ ইত্যাদি সর্বজন মান্য কিতাব সমূহের নির্ভরযোগ্য বর্ণনা দ্বারা স্পষ্টভাবে প্রমানিত হলো যে, “সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামূল মুরসালীন, খতামুন্নাবিয়্যীন, রহমতুল্লিল আলামীন, হাবীবুল্লাহ্ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দায়িমী বা সার্বক্ষনিকভাবে ইমামাহ্ বা পাগড়ী পরিধান করতেন।হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যেহেতু দায়িমীভাবে বা অধিকাংশ সময় পাগড়ী পরিধান করতেন, সেহেতুই পাগড়ী পরিধান করা দায়িমী সুন্নতের অন্তর্ভূক্ত। সুতরাং আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য হলো দায়িমীভাবে পাগড়ী পরিধান করে হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সন্তুষ্টি হাছিলের মাধ্যমে আল্লাহ্ পাক-এর সন্তুষ্টি অর্জন করা।
ইমামাহ্ বা পাগড়ী বাঁধার ব্যাপারে হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর আমর বা নির্দেশ
            সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে শুধু নিজেই পাগড়ী পরিধান করেছেন তা নয়। বরং হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম গণসহ সমস্ত উম্মতে মুহম্মদীকে পাগড়ী পরিধান করার নির্দেশ দিয়েছেন। আর হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রতিটি আদেশ নিষেধ পালন করা বা মেনে চলা উম্মতের জন্য অবশ্য কর্তব্য। তাই হাম্বলী মাযহাবের ইমাম হযরত ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর ফতওয়া হচ্ছে সমস্ত সুন্নতগুলো পালন করা হচ্ছে ফরয। ইসলামী শরীয়ত যদিও পাগড়ী পরিধান করাকে ফরয, ওয়াজিব ও সুন্নতে মুয়াক্কাদা হিসেবে সাব্যস্ত করে নাই, তবে হাদীস শরীফে পাগড়ী পরিধান করার ব্যাপারে যথেষ্ট তাক্বীদ এসেছে। যেন উম্মত পাগড়ীর ফাযায়েল-ফযীলত, মর্যাদা-মর্তবা হতে বঞ্চিত না হয়। কেননা পাগড়ী পরিধান করলে শুধু সুন্নতই আদায় হয়না বরং মহান আল্লাহ পাক-এর খাছ রহমতও লাভ করা যায়। যেমন এ সম্পর্কে হাদীস শরীফে ইরশাদ হয়েছে,
روى الطبرانى ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال ان الله وملائكته يصلون على صاحب العمائم يوم الجمعة- (بذل المجهود شرح ابى داؤد ج ص ৫১- انوار المحمود جص ৪৪৬- اللباس والزينة ص ১৩৫- مجمع الزوائد جص ১২০. ১২১- الجمعة جص ১৭৬- الميزان جص ২৯৩- كشف الخفاء ومزيل الالباس جص ৬৮)
অর্থঃ- ইমাম তিবরানী রহমতুল্লাহি আলাইহি থেকে বর্ণিত (তিনি বলেন) নিশ্চয়ই রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, অবশ্যই আল্লাহ্ পাক পাগড়ী (দায়িমীভাবে) পরিধান কারীগণের উপর প্রতি জুমুয়ার দিবসে ছলাত বা খাছ রহমত এবং ফেরেশ্তাগণ খাছ দোয়া বর্ষন করেন।” (বযলুল মাজহুদ শরহে আবী দাউদ ৬ষ্ঠ জিঃ ৫১ পৃষ্ঠা, আনওয়ারুল মাহমুদ ২য় জিঃ ৪৪৬ পৃষ্ঠা, আল্ লিবাসু ওয়ায্ যীনাহ্ ১৩৫ পৃষ্ঠা, মাজমাউয্ যাওয়াইদ ৫ম জিঃ ১২০, ১২১ পৃষ্ঠা, আল জুমুআহ্ ২য় জিঃ ১৭৬ পৃষ্ঠা, আল মীযান ১ম জিঃ ২৯৩ পৃষ্ঠা, কাশফুল্ খফা ওয়া মুযীলুল্ ইলবাস ২য় জিঃ ৬৮ পৃষ্ঠা)
            তাই আমরা সমস্ত হাদীস শরীফের কিতাব, হাদীস শরীফের শরাহ এবং সীরাত গ্রন্থ সমূহে দেখতে পাই আল্লাহ্ পাক-এর রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্বয়ং দায়িমী ভাবে পাগড়ী পরিধান করেছেন তৎসঙ্গে ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণকে পরিধান করার জন্য আমর বা নির্দেশ প্রদান করেছেন। নিম্নে এসম্পর্কিত দলীল-আদিল্লা সমূহ উল্লেখ করা হলো-
[২৯১]
قال النبى صلى الله عليه وسلم "تسوموا فان الملائكة قد تسومت" (تفسير احكام القران لابن العربى ج ص ২৯৬)
অর্থঃ- সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন্নাবিয়্যীন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (বদর যুদ্ধের দিন ছাহাবা-ই-কিরাম রদিয়াল্লাহু আনহুমগণকে) বলেছিলেন, “তোমরা চিহৃ গ্রহণ কর অর্থাৎ পাগড়ী পরিধান কর। কেননা ফেরশ্তাগণ আজ বিশেষ চিহ্ন গ্রহণ করেছেন। অর্থাৎ পাগড়ী পরিধান করেছেন।” (তাফসীরে আহ্কামুল কুরআন লি ইবনিল আরাবী ১ম জিঃ ২৯৬ পৃষ্ঠা)
[২৯২-৩০৯]
عن عبادة رضى الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم عليكم بالعمائم فانها سيماء الملائكة وارخوها خلف ظهوركم. (مشكوة شريف ص ৩৭৭- مرقاة جص ২৬৫- شرح الطيبى جص ২২৮- التعليق الصبيح جص ৩৯৫- اشعة اللمعات جص ৫৫৬- مظاهر حق ج  ص ৫৪৩- مرأة المناجيح- تحفة الاحوذى جص ৪১৪- شعب الايمان للبيهقى جص ১৭৬- فيض القدير جص ৪৫৪- المعجم الكبير ج ১২ ص ২৯৩- جامع المسانيد والسنن ج ২৯ ص ৩৮৩- اللباس والزينة ص ১২৭ مجمع الزوائد جص ১২০- الكبير ج ১২ ص ৩৮৩- الميزان جص ৩৯৬- الضعيفة جص ১১৯- كشف الخفاء ومزيل الالباس جص ৬৭)
অর্থঃ- হযরত উবাদা ইবনে সামিত রদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, তোমাদের জন্য পাগড়ী পরিধান অবধারিত। কেননা তা ফেরশ্তাগণের নিদর্শণ স্বরূপ। আর উহার (পাগড়ীর) শামলা তোমাদের পিছনে পিঠের উপর ছেড়ে দাও।” (মিশকাত শরীফ ৩৭৭ পৃষ্ঠা, মিরকাত ৮ম জিঃ ২৬৫ পৃষ্ঠা, শরহুত্ ত্বীবী ৮ম জিঃ ২২৮ পৃষ্ঠা, আত্ তালীকুছ ছবীহ ৪র্থ জিঃ ৩৯৫ পৃষ্ঠা, আশয়াতুল্ লুময়াত ৩য় জিঃ ৫৫৬ পৃষ্ঠা, মুযাহিরে হক্ব ৩য় জিঃ ৫৪৩ পৃষ্ঠা, মিরয়াতুল মানাজীহ, তুহফাতুল আহওয়াযী ৫ম জিঃ ৪১৪ পৃষ্ঠা, শুয়াবুল ঈমান লিল্ বাইহাক্বী ৫ম জিঃ ১৭৬ পৃষ্ঠা, ফাইদ্বুল ক্বদীর ৪র্থ জিঃ ৪৫৪ পৃষ্ঠা, আল মুজামুল কবীর ১২ জিঃ ২৯৩ পৃষ্ঠা, জামিউল্ মাসানীদি ওয়াস্ সুনান ২৯ জিঃ ৩৮৩ পৃষ্ঠ্,া আল্ লিবাসু ওয়ায্ যীনাহ্ ১২৭ পৃষ্ঠা, মাজমাউয্ যাওয়াইদ ৫ম জিঃ ১২০ পৃষ্ঠা, আল কবীর ১২ জিঃ ৩৮৩ পৃষ্ঠা, আল মীযান ৪র্থ জিঃ ৩৯৬ পৃষ্ঠা, আদ্ দ্বঈফাহ ২য় জিঃ ১১৯ পৃষ্ঠা, কাশফুল খফা ওয়া মুযীলুল ইলবাস ২য় জিঃ ৬৭ পৃষ্ঠা)
[৩১০-৩১৩]
عن عبد الرحمن بن عدى البهرانى عن اخيه عبد الاعلى بن عدى ان رسول الله صلى الله عليه وسلم دعا على بن ابى طالب رضى الله تعالى عنه يوم غد يرخم فعممه وارخى عذبة العمامة من خلفه ثم قال هكذا فاعتموا فان العمائم سيماء الاسلام- وهى الحاجز بين المسلمين والمشركين. (عمدة القارى ج ২১ ص ৩০৮- الزرقانى جص ২৭২- خصائل النبوى ص ৭৮- تحفة الاحوذى جص ৪১২)
অর্থঃ- হযরত আব্দুর রহমান ইবনে আদিয়্যীল বাহরানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তাঁর ভাই হযরত আব্দুল আলা ইবনে আদি রহমতুল্লাহি আলাইহি হতে বর্ণনা করেন যে, রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত আলী রদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে এক বৃষ্টির দিনে ডেকে তাঁর মাথায় পাগড়ী বেঁধে তার শামলা পিছনে পিঠের উপর ঝুলিয়ে দিলেন। অতঃপর বললেন, তোমরা অনুরুপভাবে পাগড়ী পরিধান কর। কেননা নিশ্চয়ই পাগড়ী ইসলামের বিশেষ নিদর্শণ। আর উহা (পাগড়ী) মুসলমান ও মুশরিকদের মধ্যে পার্থক্যকারী। অর্থাৎ পাগড়ী পরা মুসলমানগণের নিদর্শণ আর পাগড়ী পরা ছেড়ে দেয়া মুশরিকদের নিদর্শন।” (উমদাতুল কারী ২১তম জিঃ ৩০৮ পৃষ্ঠা, যুরকানী ৬ষ্ঠ জিঃ ২৭২ পৃষ্ঠা, খছাইলে নববী ৭৮ পৃষ্ঠা, তুহফাতুল আহওয়াযী ৫ম জিঃ ৪১২পৃষ্ঠা)
[৩১৪-৩২১]
عن ابى المليح بن اسامة عن ابيه رفعه اعتموا تزدادوا حلما (فتح البارى ج ১০ ص ২৮৩- خصائل النبوى ص ৭৮- المستدرك جص ১৯৩- كشف الغمة جص ৯৪- اللباس والزينة ص ১২৫- مجمع الزوائد جص ১১৯- الكبير جص ১৯৪- كشف الخفاء ومزيل الالباس جص ৬৭)
অর্থঃ- হযরত আবুল মুলাইহ্ ইবনে উসামাহ্ রহমতুল্লাহি আলাইহি তাঁর পিতা থেকে বর্ণনা করেন যে, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমরা পাগড়ী পরিধান কর। এতে সহনশলীতা ও গাম্ভীর্যতা বৃদ্ধি পাবে।” (ফতহুল বারী ১০ম জিঃ ২৮৩ পৃষ্ঠা, খছাইলে নববী ৭৮ পৃষ্ঠা, আল্ মুসতাদ্রক ৪র্থ জিঃ ১৯৩ পৃষ্ঠা, কাশফুল গুম্মাহ্ ১ম জিঃ ৯৪ পৃষ্ঠা, আল্ লিবাসু ওয়ায্ যীনাহ্ ১২৫ পৃষ্ঠা, মাজমাউয্ যাওয়াইদ ৫ম জিঃ ১১৯ পৃষ্ঠা, আল্ কবীর ১ম জিঃ ১৯৪ পৃষ্ঠা, কাশফুল খফা ওয়া মুযীলুল্ ইলবাস ২য় জিঃ ৬৭ পৃষ্ঠা)
[৩২২-৩২৪]
عن ابن عباس رضى الله عنهما قال قال رسول الله صلى الله عليه واله وسلم اعتموا تزدادوا حلما. (اللباس والزينة ص ১২৪- مجمع الزوائد جص ১১৯- الكبير ج ১২ ص২২১)
অর্থঃ- হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা হতে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, রসূলুল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, তোমরা পাগড়ী পরিধান কর। এতে সহনশীলতা ও গাম্ভীর্যতা বৃদ্ধি পায়।” (আল্ লিবাসু ওয়ায্ যীনাহ্ ১২৪ পৃষ্ঠা, মাজমাউয্ যাওয়াইদ ৫ম জিঃ ১১৯ পৃষ্ঠা, আল্ কবীর ১২তম জিঃ ২২১ পৃষ্ঠা)
[৩২৫]
عن خالدبن معدان قال أتى النبى صلى الله عليه وسلم بثياب من الصدقة فقسمها بين اصحابه فقال اعتموا خالفوا على الامم قبلكم. (شعب الايمان للبيهقى ج ص ১৭৬)
অর্থঃ- হযরত খালিদ ইবনে মাদান রদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন। একদা হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছদকার কিছু কাপড় নিয়ে এসে হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদিয়াল্লাহু আনহুমগণের মধ্যে বন্টন করলেন।অতঃপর বললেন, তোমরা পাগড়ী পরিধান করার মাধ্যমে পূর্ববর্তী উম্মতগণের খেলাফ কর। (শুয়াবুল ঈমান লিল্ বাইহাক্বী ৫ম জিঃ ১৭৬ পৃষ্ঠা)
[৩২৬-৩২৭]
عن ابن عمر رضى الله عنه قال عمم رسول الله صلى الله عليه وسلم ابن عوف بعمامة سوداء كرابيس وارخوها من خلفه قدر اربع اصابع وقال هكذا فاعتم. (عمدة القارى ج ২১ ص ৩০৭- تحفة الاحوذى جص ৪১২)
অর্থঃ- হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একদা হযরত আব্দুর রহমান ইবনে আউফ রদিয়াল্লাহু আনহুকে সুতী কাপড়ের কালো রংয়ের পাগড়ী বেঁধে দিলেন এবং তাঁর শামলা তাঁর পিছনে (পিঠের উপর) চার আঙ্গুল পরিমান ঝুলিয়ে রাখলেন। অতঃপর বললেন, অনুরূপভাবে পাগড়ী পরিধান কর।” (উমদাতুল কারী ২১তম জিঃ ৩০৭পৃষ্ঠা, তুহফাতুল আহওয়াযী ৫ম জিঃ ৪১২ পৃষ্ঠা)
[৩২৮-৩৩১]
عن عثمان بن عطاء الخراسانى عن ابيه ان رجلا اتى ابن عمر وهو فى مسجد منى فيسأله عن ارخاء طرف العمامة فقال له عبد الله ان رسول الله صلى الله عليه وسلم بعث سرية وأمر عليها عبدالرحمن بن عوف وعقد لواء فذكر الحديث الى أن قال وعلى عبد الرحمن بن عوف عمامة من كرابيس مصبوغة بسواد فدعاه رسول الله صلى الله عليه وسلم فحل عمامته ثم عممه بيده وافضل عمامته موضع اربع اصابع أو نحو ذلك فقال هكذا فاعتم فانه احسن واجمل. (شعب الايمان للبيهقى ج ص ১৭৪- اللباس والزينة ص ১২৬- مجمع الزوائد جص ১২০- الاوسط)
অর্থঃ- হযরত উসমান ইবনে আত্বা আল্ খুরাসানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তাঁর পিতা (হযরত আত্বা আল্ খুরাসানী রদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বলেন। নিশ্চয়ই একদা এক ব্যক্তি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদিয়াল্লাহু আনহু এর কাছে আসল। আর তখন তিনি মসজিদে মিনায় অবস্থান করছিলেন। অতঃপর সে ব্যক্তি তাঁকে পাগড়ীর শামলা ঝুলানোর পরিমাণ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করল। উত্তরে হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমর রদিয়াল্লাহু আনহু তাকে বললেন, একদা হযরত রসূলুল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একটি সারিয়াহ প্রেরণ করলেন এবং হযরত আব্দুর রহমান ইবনে আউফ রদিয়াল্লাহু আনহুকে তার আমীর নিযুক্ত করে পতাকা প্রদান করলেন।
            অতঃপর (হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমর রদিয়াল্লাহু আনহু) অন্য হাদীস বর্ণনা করে বলেন, (সারিয়ায় প্রেরণের প্রাক্কালে) হযরত আব্দুর রহমান ইবনে আউফ রদিয়াল্লাহু আনহু এর মাথায় সুতী কাপড়ের কালো রং করা ইমামাহ্ বা পাগড়ী বাঁধা ছিল। অতঃপর হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁকে ডাকলেন এবং তাঁর মাথা থেকে পাগড়ী খুলে আবার তাঁর নিজ হাত মোবারক দ¦ারা তা তাঁর মাথায় বেঁধে দিলেন। পাগড়ীর শামলা চার আঙ্গুলী পরিমাণ বা তার চেয়ে কিছু কম বেশী ঝুলালেন।তৎপর ইরশাদ করলেন অনুরূপভাবে পাগড়ী পরিধান কর। কেননা ইহাই অতি উত্তম এবং সুন্দরতম পদ্ধতি। (শুয়াবুল ঈমান লিল্ বাইহাকী ৫ম জিঃ ১৭৪ পৃষ্ঠা, আল্ লিবাসু ওয়ায্ যীনাহ্ ১২৬ পৃষ্ঠা, মাজমাউয্ যাওয়াইদ ৫ম জিঃ ১২০ পৃষ্ঠা, আল্ আওসাত্ব) (অসমাপ্ত)

0 Comments: