১০৭ নং-সুওয়াল: চুলের সুন্নত কয় প্রকার ও কি কি?


সুওয়াল: চুলের সুন্নত কয় প্রকার ও কি কি?
জাওয়াব: তিন প্রকার চুল রাখা সুন্নত। জুম্মা, লিম্মা ও অফরা। অর্থাৎ কানের লতি বরাবর, কাঁধ আর কানের লতির মাঝামাঝি, কাঁধের কাছাকাছি। এই তিন প্রকারেই সাধারণতঃ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি চুল মোবারক রাখতেন। আর কোন কোন সময় কানের মাঝামাঝি চুল মোবারক রাখতেন, যাকে নেসফু জুন বলে। আজকাল কিছু কিছু লোক সুন্নতি চুল বলতে চুল চাছা, চুল ছোট রাখা আর কানের লতি বরাবর বাবরী, এই তিন প্রকার চুল রাখাকে বুঝায়, যা শুদ্ধ নয়। মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কখনও মাথার চুল চেছে রাখেননি। সবসময়ই বাবরী রেখেছেন। জীবনে একবার হজ্ব করেছেন আর চারবার ওমরাহ করেছেন, শুধু তখনই মাথা মোবারক মুন্ডন করেছেন। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
دعاللمحلقين ثلث مراتا وللمقصرين رة واحدة.
অর্থঃ  নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি চুল মুন্ডনকারীদের জন্য তিনবার দোয়া করেছেন, আর যারা চুল ছোট করে রাখে, তাদের জন্য একবার দোয়া করেছেন। এ পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার ব্যাখ্যায় অনেকে চুল মুন্ডন করাকে ফযীলত ও নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দোয়া এবং মহান আল্লাহ পাক উনার বিশেষ রহমত লাভের কারণ বলে মনে করে থাকে।
অথচ উপরোক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ শুধু হাজী ছাহেবদের হজ্বের সময়ে চুল কাটার ব্যাপারেই বলা হয়েছে। সাধারণের বেলায় এ হুকুম প্রযোজ্য নয়। কেননা হজ্বের সময়ে চুল ছোট করা ওয়াজিব। তাই কেউ যদি হজ্বের সময়ে চুল চেছে ফেলে, তাহলে তার ওয়াজিব ও সুন্নত উভয়টিই আদায় হয়।
অথচ যদি কেউ হজ্বের সময় চুল ছোট করে, তাহলে তার শুধু ওয়াজিব আদায় হয়। যারা এই সুন্নত ও ওয়াজিব একসাথে আদায় করে, তাদের জন্য তিনবার, আর যারা শুধু ওয়াজিব আদায় করে, তাদের জন্য একবার নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি দোয়া করেছেন। মূলতঃ হযরত আলী আলাইহিস সালাম তিনি চুল মুবারক ছোট রাখতেন। কারণ হিসেবে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার বরাত দিয়ে বলা হয় যে, একবার হযরত আলী আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে থেকে শুনতে পান যে, একটি চুলের গোড়ায়ও যদি পানি না পৌঁছায়, তাহলে ফরজ গোসল আদায় হবে না এবং  নামায  আদায় হবে না। হযরত আলাইহিস সালাম উনার চুল মুবারক ছিল খুব ঘন, তাই তখন থেকে সতর্কতা হিসেবে তিনি ছোট চুল রাখতে আরম্ভ করেন। আর অন্যান্য খোলাফায়ে রাশেদীনগণ বাবরী চুল রাখতেন।
আবা-১২

0 Comments: