৮১ নং- সুওয়াল : সম্প্রতি মাসিক মদীনায় এক প্রশ্নের জওয়াবে বলা হয়েছে, “যার পীর নাই তার পীর শয়তান” কথাটা পবিত্র হাদীছ শরীফ বা অনুসরণীয় কোন মনীষীর বাণী নয়। এটা এক শ্রেণীর পেশাদার লোকের প্রচারণা কৌশল ছাড়া আর কিছু নয়।


 সুওয়াল : সম্প্রতি মাসিক মদীনায় এক প্রশ্নের জওয়াবে বলা হয়েছে, “যার পীর নাই তার পীর শয়তানকথাটা পবিত্র হাদীছ শরীফ বা অনুসরণীয় কোন মনীষীর বাণী নয়। এটা এক শ্রেণীর পেশাদার লোকের প্রচারণা কৌশল ছাড়া আর কিছু নয়।
জাওয়াব : হ্যাঁ, কথাটা সরাসরি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার পবিত্র আয়াত শরীফ বা পবিত্র হাদীছ শরীফ নয়, তবে অবশ্যই এটা অনুসরণীয় বুযুর্গানে দ্বীন উনার কথা। মূল আরবীতে হলো-
من ليس له شيخ فشيخه شيطان.
অর্থঃ- যার শায়েখ (পীর) নেই, তার শায়েখ (পীর) শয়তান।
          হযরত বায়েজীদ বোস্তামী রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত জোনায়েদ বাগদাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত ইমাম গাজ্জালী রহমতুল্লাহি আলাইহি প্রমুখ বুযুর্গানে দ্বীন একথা বলেছেন, যা উনাদের সীরত গ্রন্থে উল্লেখ রয়েছে।
উপরোক্ত ক্বওল শরীফ উনার ব্যাপারে উল্লেখ করা হয়, যদি কোন ব্যক্তি, কোন হাক্কানী আল্লাহওয়ালা পীর ছাহেব (শায়েখ) উনার (তথাকথিত নয়) মুরীদ হয়, তাহলে তার পক্ষে মহান আল্লাহ পাক উনার মতে এবং মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পথে কায়েম থাকা সম্ভব। কারণ মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন,
وماينطق عن الهواء ان هوالاوحى يوخى.
অর্থঃ- তিনি (নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ওহী ব্যতীত নিজ থেকে কোন কথা বলেন না।এ পবিত্র আয়াত শরীফ উনার পবিত্র তফসীর মুবারক উনার মধ্যে পবিত্র হাদীছ-এ কুদসী শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ করা হয়,
لايزال العبد يتقرب الى يالنوافل حتى احبه قاذااحببت كنت سمعه الذى يسمع به كنت بصره الذى يتصربه- كنت لسانه الذى ينطق به- كنت يده الذى يبطش بهاكنت رجله الذى يمشى بها- فاذا سئلنى اعطيته.
          অর্থঃ-বান্দা অতিরিক্ত আমল (সুন্নতে যায়েদা, মুস্তাহাব, নফল, মোবাহ্ ইত্যাদি) করতে করতে আমার এতটুকু নৈকট্য লাভ করে যে, আমি তাকে মহব্বত করি। আমি যখন তাকে মহব্বত করি, তখন আমি তার কান হই, সে আমার কানে শুনে। আমি তার চক্ষু হই, সে আমার চোখে দেখে। আমি তার যবান হই, সে আমার যবানে কথা বলে। আমি তার হাত হই, সে আমার হাতে ধরে। আমি তার পা হই, সে আমার পায়ে চলে। যখন সে আমার কাছে কিছু চায়, তা অবশ্যই আমি তাকে দান করি এবং তখন অবশ্যই আমি তাকে আশ্রয় দান করি।অর্থাৎ বান্দা কখনও মহান আল্লাহ পাক হয় না, আবার মহান আল্লাহ পাকও কখনও বান্দা হন না।
মূলকথা হলো- বান্দা মহান আল্লাহ পাক উনার আনুগত্যতা করতে করতে এতটুকু অনুগত হয় যে, তখন তার কান, চোখ, যবান, হাত, পা ইত্যাদি সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ এবং সে নিজেও মহান আল্লাহ পাক উনার হুকুমের খেলাফ কোন কাজ করে না। কাজেই কোন ব্যক্তি যদি কোন হক্কানী পীর ছাহেব (শায়েখ) উনার নিকট বাইয়াত (মুরীদ) হয়, তাহলে সে তার পীর ছাহেব উনার কথামত চলবে এবং এর কারণেই মহান আল্লাহ পাক উনার মত এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পথের উপর কায়েম থাকবে। আর যদি কোন পীর ছাহেব উনার কাছে বাইয়াত না হয়, তাহলে সে অবশ্যই নফসের তথা শয়তানের পায়রবী করবে এবং শয়তানই তার একমাত্র উপদেষ্টা হবে। কারণ, তার নফস ইছলাহ বা সংশোধন হয়নি। কাজেই যার পীর নেই, তার পীর হচ্ছে শয়তানকথাটা শুদ্ধ এবং যারা এটাকে অশুদ্ধ বলে তাদের কথাই মুলতঃ অশুদ্ধ।
আবা-১২

0 Comments: