১১৯ নং- সুওয়াল: সম্প্রতি মাসিক মদীনা পত্রিকার মার্চ-১৯৯৩ সংখ্যায় হযরত বড় পীর ছাহেব আব্দুল কাদির জ্বিলানী রহমতুল্লাহি আলাইহিকে গাউসুল আ’যম বলা হলো কেন? এ প্রশ্নের জওয়াবে বলা হয়েছে, “গাওসুল” শব্দের আভিধানিক অর্থ “ফরিয়াদ শ্রবণকারী, বিপদ ত্রাণকারী, সাহায্যকারী।” এ অর্থে কোন মানুষের প্রতি এ শব্দ ব্যবহার শরীয়তের দৃষ্টিতে বৈধ হতে পারে না। হযরত আব্দুল কাদির জ্বিলানী রহমতুল্লাহি আলাইহি খুব উঁচুস্তরের ওলী ছিলেন। ওলী-আওলিয়াগণের মধ্যে উনাকে সর্বোচ্চস্তরের একজন বলে মনে করা হয়। জীবিতকালে বিপন্ন মানুষের সেবা এবং আশ্রয় প্রদানের ক্ষেত্রেও তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করতেন। এজন্য হয়ত উনাকে গাউস অর্থাৎ সাহায্যকারী বা ফরিয়াদ শ্রবণকারী বলে অভিহিত করা হতো। কিন্তু ইন্তেকালের পরেও তিনি মানুষের ফরিয়াদ শ্রবণ করেন এবং তিনি সর্বাপেক্ষা বড় ফরিয়াদ শ্রবণকারী। এরূপ আক্বীদা পোষণ কিংবা বাস্তব অর্থেই এ নামে উনাকে সম্বোধন করা শরীয়তসম্মত হতে পারে না।


সুওয়াল: সম্প্রতি মাসিক মদীনা পত্রিকার মার্চ-১৯৯৩ সংখ্যায় হযরত বড় পীর ছাহেব আব্দুল কাদির জ্বিলানী  রহমতুল্লাহি আলাইহিকে গাউসুল আযম বলা হলো কেন? এ প্রশ্নের জওয়াবে বলা হয়েছে, “গাওসুলশব্দের আভিধানিক অর্থ ফরিয়াদ শ্রবণকারী, বিপদ ত্রাণকারী, সাহায্যকারী।এ অর্থে কোন মানুষের প্রতি এ শব্দ ব্যবহার শরীয়তের দৃষ্টিতে বৈধ হতে পারে না। হযরত আব্দুল কাদির জ্বিলানী রহমতুল্লাহি আলাইহি খুব উঁচুস্তরের ওলী ছিলেন। ওলী-আওলিয়াগণের মধ্যে উনাকে সর্বোচ্চস্তরের একজন বলে মনে করা হয়। জীবিতকালে বিপন্ন মানুষের সেবা এবং আশ্রয় প্রদানের ক্ষেত্রেও তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করতেন। এজন্য হয়ত উনাকে গাউস অর্থাৎ সাহায্যকারী বা ফরিয়াদ শ্রবণকারী বলে অভিহিত করা হতো। কিন্তু ইন্তেকালের পরেও তিনি মানুষের ফরিয়াদ শ্রবণ করেন এবং তিনি সর্বাপেক্ষা বড় ফরিয়াদ শ্রবণকারী। এরূপ আক্বীদা পোষণ কিংবা বাস্তব অর্থেই এ নামে উনাকে সম্বোধন করা শরীয়তসম্মত হতে পারে না।
জাওয়াব: মাসিক মদীনার উপরোক্ত জাওয়াব বিশুদ্ধ হয়নি। গাউসুল আযমশব্দটি তাসাউফের একটি লক্বব। তাসাউফের উচ্চস্তরে পৌঁছলে আউলিয়া-ই-কিরামগণ উনাদেরকে মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে যোগ্যতা অনুযায়ী বিভিন্ন লক্বব দিয়ে সন্মানিত করে বিভিন্ন দায়িত্বে নিয়োজিত করা হয়। যেমন, পবিত্র হাদীছ শরীফ মোতাবেক মোজাদ্দিদ এর লক্বব দেয়া হয়, এটা ব্যতীত কুতুবুল আলম, সুলতানুল আরেফীন, কাইউম, ইমামুল আইম্মা ইত্যাদি। এরূপ বিভিন্ন লক্ববের মধ্যে একটি উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন লক্বব হলো গাউসুল আযম। যেমন কুরআন শরীফে সুরা নাজেয়াতে৫নং আয়াত শরীফে আল্লাহ পাক তিনি ইরমাদ করেন,
المدبرات امرا
অর্থঃ যারা কার্যনির্বাহ করে। এই পবিত্র আয়াত শরীফ উনার ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে যে, মহান আল্লাহ পাক উনার কায়েনাত পরিচালনার জন্য বিভিন্ন ফেরেস্তা ও ইনসান নিয়োজিত রয়েছেন। যেমন, হযরত ইলিয়াস আলাইহিস সালাম উনাকে বনভূমির, হযরত খিজির আলাইহিস সালাম উনাকে পানির জিম্মাদারী দেয়া হয়েছে এবং কিছু রেজালুল গায়ের অর্থাৎ অদৃশ্য মানব, যাদেরকে মরুভূমি অথবা কোন নির্জন এলাকায় কোন পথহারা ব্যক্তিকে পথ দেখানোর জন্য নিয়োজিত করা হয়েছে। অপরদিকে হযরত জীবরাঈল আলাইহিস সালাম উনাকে ওহীর দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল, হযরত মীকাঈল আলাইহিস সালাম উনাকে রিযিক বন্টন করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। হযরত ইসরাফিল আলাইহিস সালাম উনাকে সিঙ্গায় ফু দেয়ার জন্য এবং হযরত আজরাঈল আলাইহিস সালাম উনাকে জান কবজ করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এরূপ বিভিন্ন আউলিয়ায়ে কিরামগণ উনাদেরকে বিভিন্ন কাজ পরিচালনার জন্য মহান আল্লাহ পাক কর্তৃক দায়িত্ব দেয়া হয় এবং সে জন্য বিভিন্ন লক্ববও দেয়া হয়ে থাকে। যার বিস্তারিত আলোচনা করেছেন হযরত মোজাদ্দিদে আলফে সানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মকতুবাত শরীফে। আর কোন আউলিয়ায়ে কিরাম ইন্তেকাল করলেই উনাকে উনার লক্বব মুবারক দ্বারা সম্বোধন করা যাবে না এটা বিশুদ্ধ নয়। যেমন হযরত নবী-রসূল আলাইহিস সালামগণ উনারা ইন্তেকালের পরও উনারা উনাদের স্বস্ব সন্মানিত লক্বব মুবারক উনার দ্বারাই সম্বোন্বিত হবেন। কাজেই গাউসুল আযম ও এই প্রকার লক্ববসমূহকে শাব্দিক অর্থে ব্যবহার করা চলবেনা। বিশুদ্ধ জাওয়াব পেতে হলে যারা তাসাউফে পারদর্শী, উনাদের কাছ হতে এসকল বিষয় জেনে নেয়া উচিত। কারণ যারা তাসাউফে পারদর্শী নয়, তাদের পক্ষে এসকল লক্ববের মর্মার্থ উপলব্ধি করা দুরূহ। আর এ সমস্ত লক্বব সম্বন্ধে কারো মনে কোন প্রকার সংশয় রাখা উচিত নয় এবং বিনাদ্বিধায় এগুলো মেনে নেয়া উচিত। কেননা এগুলো পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র কিয়াস শরীফ উনাদের দ্বারা প্রমাণিত।
আবা-১২

0 Comments: