পবিত্র ছোহবত মুবারক গ্রহণের ফাযায়িল-ফযীলত, গুরুত্ব-তাৎপর্য ও আবশ্যকতা

পবিত্র ছোহবত মুবারক গ্রহণের ফাযায়িল-ফযীলত,
গুরুত্ব-তাৎপর্য ও আবশ্যকতা
খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
يايها الذين امنوا اتقوا الله وكونوا مع الصادقين.
অর্থ: “হে ঈমানদারগণ! খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনাকে ভয় করো এবং ছাদিক্বীন বা সত্যবাদীগণ উনাদের সঙ্গী হয়ে যাও।”  (পবিত্র সূরা তওবা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১১৯)
খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি নির্দেশ মুবারক করেন যে, তোমরা ছাদিক্বীন বা আল্লাহওয়ালাগণ উনাদের ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করো। আর খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার নির্দেশ মুবারক পালন করা হচ্ছে বান্দার জন্য ফরয-ওয়াজিব উনার অন্তর্ভুক্ত।
পবিত্র ছোহবত মুবারক উনার গুরুত্ব সম্পর্কে বলতে হয় যে, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করেছেন। সেজন্য খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাদের প্রতি সন্তুষ্ট। উনাদের সমস্ত আমল-আখলাক্ব মুবারক উনাদের প্রতি সন্তুষ্ট। এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে এসেছে-
عن حضرت جابر رضى الله تعالى عنه عن النبى صلى الله عليه وسلم لاتمس النار مسلما رانى و راى من رانى
অর্থ: “হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহ তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, জাহান্নামের আগুন স্পর্শ করবেনা উনাদেরকে, যাঁরা আমাকে দেখেছেন। শুধু তাই নয়, যাঁরা আমাকে দেখেছেন উনাদেরকে যারা দেখবেন উনাদেরকেও জাহান্নামের আগুন স্পর্শ করবে না। সুবহানাল্লাহ! (মিশকাত শরীফ, মাছাবীহুস সুন্নাহ শরীফ, মিরকাত শরীফ)
এত মর্যাদা উনাদেরকে দেয়া হয়েছে একমাত্র খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছোহবত মুবারক উনার কারণে। ঠিক একইভাবে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনিও ইরশাদ মুবারক করেন-
والسابقون الاولون من المهجرين والانصار والذين اتبعوهم باحسان رضى الله عنهم روضوا عنه واعدلهم جنت تجرى تحتها الانهار خالدين فيها ابدا ذلك الفوز العظيم.
অর্থ: “মুহাজির ও আনছার ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের মধ্যে ঈমান আনয়নে পূর্ববর্তীদের মধ্যে যাঁরা অগ্রবর্তী উনারা এবং উনাদেরকে যাঁরা (ক্বিয়ামত পর্যন্ত) উত্তমভাবে অনুসরণ করবে, উনাদের উপর খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি সন্তুষ্ট এবং উনারাও খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি সন্তুষ্ট। উনাদের জন্য খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি এরূপ বেহেশত নির্ধারিত রেখেছেন, যার তলদেশ দিয়ে ঝর্ণা প্রবাহিত হতে থাকবে, উনারা সর্বদা সে বেহেশত উনার মধ্যে অবস্থান করবেন, এটা উনাদের বড় সফলতা বা কামিয়াবী।” (পবিত্র সূরা তওবা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১০০)
যারা হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে পবিত্র ঈমান উনার সাথে দেখেছেন উনারা তো অবশ্যই জান্নাতী। শুধু তাই নয়, ক্বিয়ামত পর্যন্ত যারা উনাদের সঙ্গে তায়াল্লুক রাখবে, মুহব্বত রাখবে, উনাদেরকে অনুসরণ করবে উনাদের প্রতিও খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি সন্তুষ্টি মুবারক প্রকাশ করে দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
এত মর্যাদার কারণ হচ্ছে উনারা খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করেছেন। সেজন্য কিতাবে উল্লেখ করা হয় যে, খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যিনি এক সেকে- ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করেছেন ঈমান উনার সাথে, ঈমান উনার সাথে যমীনে অবস্থান করেছেন এবং  ঈমান উনার সাথে ইন্তিকাল মুবারকও করেছেন উনি ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু। উনার মর্যাদা পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সমস্ত উম্মত উনাদের চাইতেও বেশি। সুবহানাল্লাহ! 
বলা হয়, খইরুত তাবিয়ীন হযরত ওয়ায়িছ আল ক্বরনী রহমতুল্লাহি আলাইহি। উনার সম্পর্কে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেছেন। ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عن حضرت عمر رضى الله تعالى عنه قال سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول ان خير التابعين رجل يقال له وائس وله والدة كان به بياض فمروه فليستغفر لكم.
অর্থ: “হযরত উমর ইবনুল খত্তাব আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমি শুনেছি, নিশ্চয়ই তাবিয়ীন রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হচ্ছেন ওই ব্যক্তি যিনি হযরত ওয়ায়িছ আল ক্বরনী রহমতুল্লাহি আলাইহি। তিনি ক্বরন দেশে ছিলেন। সেখানে উনার মা ছিলেন। তিনি উনার মা উনার খিদমতের জন্য খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করতে পারেননি। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যদি তোমরা উনার সাক্ষাৎ পাও, উনাকে বলো, উনি যেন তোমাদের জন্য দোয়া করেন। উনি দোয়া করলে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি তোমাদেরকে কবুল করে নিবেন। সুবহানাল্লাহ! (হিলইয়াতুল আওলিয়া)
এতবড় মর্যাদা-মর্তবা উনার। উনার মা উনার খিদমতে মশগুল থাকার কারণে তিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাক্ষাৎ মুবারক করতে পারেননি। কোনো কোনো বর্ণনায় রয়েছে, উনি একবার এসেছিলেন কিন্তু খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাক্ষাৎ মুবারক পাননি। ফিরে চলে গেছেন। কিন্তু এত মর্যাদা থাকার পরেও উনি তাবিয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি হয়েছেন, ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে পারেননি। একজন ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু যিনি একবারমাত্র খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে দেখেছেন ঈমান উনার সাথে, ঈমান উনার সাথে যমীনে অবস্থান করেছেন এবং ঈমান উনার সাথে বিদায় নিয়েছেন, উনার মর্যাদা একজন তাবিয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে লক্ষ কোটি গুণ বেশি। সুবহানাল্লাহ!
পবিত্র ছোহবত মুবারক উনার গুরুত্ব বুঝাতে গিয়ে হযরত শায়েখ সা’দী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি একটা ঘটনা বর্ণনা করেছেন উনার কিতাবের মধ্যে-
پسر نوح بابداں بنشست+ خاندان نبوتش گم شد
سگ اصحاب کھف روزے چند+ پئے نیگاں گرفت مردم شد
অর্থ: “হযরত নূহ আলাইহিস সালাম উনার ছেলে কেনান খারাপ লোকদের ছোহবতে থাকায় নুবুওওয়াতী খান্দানের মর্যাদা থেকে বঞ্চিত হয়ে জাহান্নামী হলো। আর আছহাবে কাহাফ উনাদের কুকুর নেককার উনাদের ছোহবত মুবারকে থাকার কারণে মানুষের ছূরতে জান্নাতী হবে।” সুবহানাল্লাহ! (গুলেস্তাঁ)
অর্থাৎ হযরত নূহ আলাইহিস সালাম উনার ছেলে কেনান কাফিরদের ছোহবতে থাকার কারণে নুবুওওয়াতী খান্দান হারিয়ে ফেললো। শেষ পর্যন্ত ঈমান উনাকেও হারালো। অথচ সে নবী ও রসূল আলাইহিস সালাম উনার সন্তান। নবী ও রসূল আলাইহিস সালাম উনার সন্তান হওয়া সত্ত্বেও কাফিরদের ছোহবতে থাকার কারণে নুবুওওয়াতী খান্দান হারিয়ে বিভ্রান্ত হয়ে গেলো। আর সেই আছহাবে কাহাফ উনাদের কুকুর যে আছহাবে কাহাফ উনাদের বর্ণনা পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে রয়েছে। উনাদের সাত জনের সাথে একটা কুকুর ছিল। যেটাকে উনারা নিতে প্রথমে রাজি ছিলেন না, শেষ পর্যন্ত উনাদের মধ্যে যিনি মূল ছিলেন, উনার কথায় কুকুরটাকে নেয়া হয়েছিল উনাদের পাহারা দেয়ার জন্য, আপদ-বিপদে কাজে লাগানোর জন্য। সে কুকুরটা উনাদের সাথে ছিল, এখনো রয়েছে। হযরত শায়েখ সা’দী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি একথার ব্যাখ্যায় লিখেছেন, আছহাবে কাহাফ উনারা হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম উনার নেককার উম্মত। সেই আছহাবে কাহাফ উনাদের কুকুরটা উনাদের ছোহবত মুবারকে থাকার কারণে মানুষ হয়ে গেছে অর্থাৎ ক্বিয়ামতের দিন বনী ইসরাইলের সেই মরদুদ দরবেশ বালআম বিন বাউর যে জাহান্নামী হবে তার ছূরতে কুকুরটা জান্নাতে যাবে। সুবহানাল্লাহ! 
তাহলে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যাঁরা নেককার উম্মত হযরত আওলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের ছোহবত মুবারক যদি কেউ ইখতিয়ার করে সে কত বেমেছাল ফযীলত, বুযুর্গী, সম্মান মুবারক হাছিল করবে সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। 
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عن حضرت بهذ بن حكيم عن ابيه عن جده رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم من استقبل العلماء فقد استقبلنى ومن زار العلماء فقد زارنى ومن جالس العلماء فقد جالسنى ومن جالسنى فكانما جالس ربى وفى رواية من زار عالما فكانما زارنى ومن زارنى فكانما زار الله ومن زار الله فقد غفر له.
অর্থ: হযরত বাহয ইবনে হাকীম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার পিতা থেকে, তিনি উনার পিতামহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণনা করেন, খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি উলামায়ে হক্কানী-রব্বানীগণ উনাদেরকে অভ্যর্থনা বা সম্মান করলো সে মূলত আমাকেই অভ্যর্থনা বা সম্মান করলো এবং যে উনাদের মুবারক যিয়ারত লাভ (সাক্ষাৎ) করলো প্রকৃতপক্ষে সে আমারই পবিত্র যিয়ারত মুবারক লাভ করলো এবং যে উনাদের সাথে বসলো প্রকৃতপক্ষে সে আমার সাথে বসলো আর যে আমার সাথে বসলো সে মূলত খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার সাথেই বসলো। অপর রেওয়ায়েতে বর্ণিত রয়েছে, “যে ব্যক্তি কোনো হক্কানী-রব্বানী আলিম, খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার ওলী উনার যিয়ারত মুবারক করলো, সে প্রকৃতপক্ষে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যিয়ারত মুবারক করলো। আর যে ব্যক্তি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যিয়ারত মুবারক করলো সে প্রকৃতপক্ষে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে যিয়ারত মুবারক করলো। আর যে ব্যক্তি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার যিয়ারত মুবারক করলো খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি তাঁকে ক্ষমা করে দিবেন।” সুবহানাল্লাহ! (কানযুল উম্মাল, র্আ রাফিয়ী)
উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের ব্যাখ্যায় একাধিক ঘটনা বর্ণিত রয়েছে যে, খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার খালিছ ওলী চীশতিয়া খান্দান উনার বিশিষ্ট বুযুর্গ হযরত বাবা ফরীদুদ্দীন মাসউদ গঞ্জে শকর রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেন, আল্লাহওয়ালা উনাদের ছোহবত মুবারক উনার কতটুকু ফায়দা রয়েছে। তিনি বলেন, হাজ্জাজ বিন ইউসুফ যে ব্যক্তি কাট্টা যালিম ছিল। সে তার যামানার ইমাম, মুজতাহিদ, আওলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের অনেকের উপর যুলুম করেছে। যেটা বলার অপেক্ষা রাখেনা। সকলে মনে মনে ধারণা করেছিলেন যে, হাজ্জাজ বিন ইউসুফ ইন্তিকাল করলে সরাসরি জাহান্নামের অতল গহ্বরে তলিয়ে যাবে। হযরত বাবা ফরীদুদ্দীন মাসউদ গঞ্জে শকর রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেন, হাজ্জাজ বিন ইউসুফ যখন ইন্তিকাল করলো তার কিছুদিন পর একজন বুযুর্গ ব্যক্তি তাকে স্বপ্নে দেখলেন। দেখে জিজ্ঞাসা করলেন, “হে হাজ্জাজ! তোমাকে দেখে মনে হচ্ছে তুমি খুব সুখ-শান্তিতে রয়েছ? এর পিছনে কি কারণ? তুমি যে যুলুম করেছ, অন্যায় অত্যাচার করেছ, আমরা তো মনে করেছিলাম তুমি জাহান্নামে যাবে, কিন্তু এখন দেখতে পাচ্ছি পবিত্র জান্নাত উনার মধ্যে তুমি বিচরণ করছো। এর পিছনে কি কারণ রয়েছে?” হাজ্জাজ বিন ইউসুফ জাওয়াব দিল, হে মহান আল্লাহ পাক উনার ওলী! আপনি সত্যই বলেছেন। যমীনে আমি বুঝতে পারিনি, অনেক যুলুম-অত্যাচার করেছিলাম। যার বদলা জাহান্নাম ব্যতীত কিছুই ছিলনা। কিন্তু তারপরেও আমার একটা আমল খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি পছন্দ করেছেন। যার বিনিময়ে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমার জীবনের সমস্ত গুনাহখতা মাফ করে জাহান্নাম না দিয়ে পবিত্র জান্নাত নছীব করেছেন।  সুবহানাল্লাহ!
জিজ্ঞাসা করা হলো, তোমার কোন্ আমল খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি কবুল করেছেন? হাজ্জাজ বিন ইউসুফ বললো, আমি একবার রাস্তা দিয়ে কোথাও যাচ্ছিলাম কিছু সৈন্য-সামন্ত নিয়ে। যেহেতু রাজকীয় ক্ষমতা ছিল, ক্ষমতার গর্বে গর্বিত হয়ে শান-শওকত প্রকাশ করে আমি রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলাম। যাওয়ার সময় দেখতে পেলাম এক স্থানে কিছু লোক জমা হয়েছে। মনে হচ্ছে সেখানে ওয়াজ-নছীহত মুবারক হচ্ছে, আমি লোকদের জিজ্ঞাসা করলাম, এখানে কি হচ্ছে? লোকজন বললো, এখানে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার বিশিষ্ট ওলী, বিশিষ্ট তাবিয়ী, ইমামুশ শরীয়ত ওয়াত তরীক্বত হযরত ইমাম হাসান বছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি নছীহত মুবারক করছেন। হাজ্জাজ বিন ইউসুফ বললো, তখন আমার মনে একটা চিন্তা হলো, উনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার খালিছ ওলী কি না- সেটা পরীক্ষা করতে হবে। যেহেতু হাজ্জাজ বিন ইউসুফের সাথে অনেক সৈন্য-সামন্ত ছিল, লোকজন ছিল, সে ক্ষমতার গর্বে গর্বিত ছিল, সে উদ্ধতভাবে ইমামুশ শরীয়ত ওয়াত তরীক্বত হযরত ইমাম হাসান বছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সেই দরবার শরীফ উনার মধ্যে প্রবেশ করলো। হাজ্জাজ বিন ইউসুফ বললো, আমি যখন প্রবেশ করলাম আমি দেখতে পেলাম, খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার ওলী ইমামুশ শরীয়ত ওয়াত তরীক্বত হযরত ইমাম হাসান বছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার চেহারা মুবারক উনার উপর কোনোই ছাপ পড়লো না। আমার শান-শওকত, রাজকীয় ক্ষমতা, আমার গর্ব, উদ্ধত অবস্থা, এটা উনাকে কোনো ক্রিয়া করলো না। আমি বুঝতে পারলাম, নিশ্চয়ই উনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার খালিছ ওলী হবেন। আমি আদবের সাথে বসলাম। কিছু নছীহত মুবারক শুনলাম। শোনার পর মনে মনে ফিকির করলাম, নিশ্চয়ই উনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার খালিছ ওলী। সেই খেয়ালে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার মুহব্বতে, সন্তুষ্টি মুবারক হাছিলের লক্ষ্যে, খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার খালিছ ওলী ইমামুশ শরীয়ত ওয়াত তরীক্বত হযরত ইমাম হাসান বছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার হাত মুবারক মাঝে চুম্বন করলাম। সেই চুম্বনের ওসীলায় খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাকে মৃত্যুর পর ডেকে বললেন, হে হাজ্জাজ বিন ইউসুফ! তুমি যে যুলুম করেছ, অন্যায়-অত্যাচার করেছ, এর বদলা জাহান্নামে যাওয়া উচিত ছিল। কিন্তু আমার বিশিষ্ট ওলী, আমার মাহবুব, যিনি উনার যামানায় ইমামুশ শরীয়ত ওয়াত তরীক্বত ছিলেন, হযরত ইমাম হাসান বছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে তুমি সম্মান করে, তা’যীম-তাকরীম করে, আমার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে উনার হাত মুবারক মাঝে চুম্বন করেছিলে সেই কারণে আমি তোমার গুনাহখতা মাফ করে জাহান্নামের পরিবর্তে পবিত্র জান্নাত দিয়ে দিলাম। সুবহানাল্লাহ!
শায়খুল ইসলাম, ইমামুল  আইম্মাহ হযরত বাবা ফরীদুদ্দীন মাসউদ গঞ্জে শকর রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, হাজ্জাজ বিন ইউসুফ কাট্টা যালিম ছিল। এত যুলুম, অন্যায়-অত্যাচার করার পরেও একজন খালিছ ওলী উনার সাথে মুহব্বত, ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার, হস্ত মুবারক চুম্বন করার কারণে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি যদি তাকে ক্ষমা করে দেন, তাহলে যারা অন্যান্য লোক রয়েছে তারা যদি সত্যিই আল্লাহওয়ালা উনাদের ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করে, মুহব্বত করে, অবশ্যই খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি তাদেরকেও ক্ষমা করে দিবেন। সুবহানাল্লাহ!
সেটাই বলা হয়েছে যে, আল্লাহওয়ালা উনাদের ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করো। যাঁরা আল্লাহওয়ালা উনাদের ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করবে তারা প্রকৃতপক্ষে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনারই ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করলো। সেটাই কিতাবে এসেছে, বিশিষ্ট বুযুর্গ হযরত মাওলানা জালালুদ্দীন রুমী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেছেন-
ہر کے خواہد  ہمنشینی باخدا +گو ناشیند در حضور اولیاء
অর্থ: “যদি কোনো ব্যক্তি চায় খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে উঠা-বসা করতে, তাহলে সে যেন খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার ওলীগণ উনাদের সাথে উঠা-বসা করে।” সুবহানাল্লাহ!
যেটা আরবীতে বলা হয়েছে-
من اراد ان يجلس مع الله فليجلس مع اهل التصوف
“কেউ যদি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে উঠা-বসা করতে চায়, সে যেন আহলে তাছাউফ বা আল্লাহওয়ালা উনাদের ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করে, উনাদের সাথে যেন উঠা-বসা করে, তাহলে সে প্রকৃতপক্ষে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার সাথেই উঠা-বসা করলো।” সুবহানাল্লাহ! 
এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, একবার আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা আরযু করলেন, “হে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! কোন সঙ্গী উত্তম? আপনার পরে আমরা কার ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করবো?”
খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন-
من ذكركم الله رؤيته وزاد فى علمكم منطقه وذكركم بالاخرة عمله
অর্থ: “যাঁকে দেখলে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার কথা স্মরণ হয়, যাঁর কথা শুনলে দ্বীনি ইলম বৃদ্ধি হয়ে থাকে। যাঁর আমল দেখলে পরকালের আমল করতে ইচ্ছে হয়।” (মুসনাদে আহমদ, ক্ববাসুম মিন নূরে মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
এই তিনটি গুণ যাঁর মধ্যে থাকবে তিনি অবশ্যই খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার খালিছ ওলী।
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার ব্যাখ্যায় বিশিষ্ট তাবিয়ী ইমামুশ শরীয়ত ওয়াত তরীক্বত হযরত ইমাম হাসান বছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন-
انما الفقيه الزاهد فى الدنيا والراغب الى الاخرة والبصير بذنبه والمداوم على عبادة ربه والوارع والكاف عن اعراض المسلمين والعفيف عن اموالهم والناصح لجماعتهم.
অর্থ: “ফক্বীহ বা আল্লাহওয়ালা ওই ব্যক্তি, যিনি দুনিয়া হতে বিরাগ, পরকালের প্রতি ঝুঁকে আছেন, গুনাহের প্রতি সতর্ক, সর্বদা খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার ইবাদত উনাতে মশগুল, পরহেযগার বা সুন্নত মুবারক উনার পাবন্দ, মুসলমানের মান-সম্মান নষ্ট করেন না, তাদের সম্পদের প্রতি লোভ করেন না এবং অধীনস্তদেরকে নছীহত মুবারক করেন।” (হিলইয়াতুল আওলিয়া)
এ প্রসঙ্গে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনিও ইরশাদ মুবারক করেন-
واصبر نفسك مع الذين يدعون ربهم بالغدوة والعشى يريدون وجهه ولاتعد عينك عنهم تريد زينة الحيوة الدنيا.
অর্থ: “ওই সমস্ত লোকদের ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করো, যারা সকাল-সন্ধ্যা তথা দায়িমীভাবে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টি মুবারক উনার জন্য যিকির-ফিকির করে থাকেন। দুনিয়ার চাকচিক্য দেখে বা দুনিয়ার মোহে মোহগ্রস্ত হয়ে উনাদের থেকে তোমাদের দৃষ্টি ফিরিয়ে নিয়ো না।” (পবিত্র সূরা কাহফ শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ২৮)
এ পবিত্র আয়াত শরীফ উনার তাফসীরে হযরত আবূ ইউসুফ হামদানী রহমতুল্লাহি আলাইহি যিনি নকশবন্দিয়ায়ে মুজাদ্দিদিয়া তরীক্বা উনার বিশিষ্ট বুযুর্গ যিনি হুজ্জাতুল ইসলাম হযরত ইমাম গাজ্জালী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার পীর ভাই ছিলেন। তিনি বর্ণনা করেন, তিনি একদিন নছীহত মুবারক করছিলেন। উনার যারা মুরীদ-মু’তাক্বিদ ছিলেন উনাদের মাঝে। তিনি বললেন দেখ, খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র আয়াত শরীফ নাযিল করেছেন, তোমাদেরকে বলা হয়েছে, যে সমস্ত লোক সকাল-সন্ধ্যা খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্র যিকিরে মশগুল থাকেন খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টি মুবারক উনার লক্ষ্যে, তোমরা উনাদের ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করবে। প্রতিদিন উনাদের ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করবে। তখন সেখানে একজন লোক ছিলেন ব্যবসায়ী। যিনি সারাবিশ্বে অর্থাৎ নানান দেশে ঘুরে ঘুরে ব্যবসা করতেন। সে ব্যক্তি আদবের সাথে দাঁড়িয়ে বললেন, হে আমার শায়েখ! আপনি যে বলেছেন, প্রতিদিন খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার ওলী উনাদের ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করার জন্য। আপনি দলীলও পেশ করেছেন। আমরা অবশ্যই সেটা মেনে নিয়েছি। তারপরেও আমার একটা কথা রয়েছে। কি কথা রয়েছে? আমি দেশ বিদেশে ঘুরে থাকি। আর সবস্থানে তো খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার ওলী পাওয়া সম্ভব নয়। আর যদি থেকেও থাকেন আমার সেটা জানা থাকে না। তাহলে কি করে আমি প্রতিদিন খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার ওলী উনাদের ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করবো? তখন খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার খালিছ ওলী হযরত আবূ ইউসুফ হামদানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, যদি তোমাদের এমন হয়, প্রতিদিন খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার ওলী উনাদের ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করতে না পারো, তাহলে আওলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের জীবনী মুবারক, সাওয়ানেহ উমরী মুবারক থেকে কমপক্ষে ৮ পৃষ্ঠা করে পাঠ করবে। প্রতিদিন ৮ পৃষ্ঠা হযরত আওলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের জীবনী মুবারক থেকে, তাযকিরাতুল আওলিয়া থেকে পাঠ করবে। ফলে ছোহবত মুবারক উনার যে নিয়ামত তা হাছিল হয়ে যাবে। সুবহানাল্লাহ! যেটা আফদ্বালুল আওলিয়া হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেছেন-
الـمكتوب نصف الـملاقة
অর্থাৎ “চিঠি হচ্ছে অর্ধেক সাক্ষাৎ।” 
একবার উনার এক মুরীদ উনাকে চিঠি লিখেছিলেন। হে আমার শায়েখ হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি! আপনি তাগিদ করেছেন আপনার ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করার জন্য। কিন্তু আমার পক্ষে তো সেভাবে ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করা সম্ভব হচ্ছে না। তাহলে আমি কি করবো? তখন হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেছিলেন, “আমার যে চিঠিটা তোমার কাছে রয়েছে সেটা তুমি পাঠ কর। সে চিঠি পাঠ করলেই আমার অর্ধেক ছোহবত মুবারক তোমার হাছিল হয়ে যাবে।” সুবহানাল্লাহ!
এ প্রসঙ্গে পঞ্চদশ হিজরী শতাব্দীর মুজাদ্দিদ ও ইমাম, মুজাদ্দিদে আ’যম, আওলাদে রসূল ইমাম রাজারবাগ শরীফ উনার হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “প্রত্যেক মুরীদের জন্য স্থান-কালের পার্থক্য অনুযায়ী স্বীয় মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করতে হবে। সেই সাথে উনার পৃষ্ঠপোষকতায় প্রকাশিত আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত উনার আক্বীদা ও আমল সম্বলিত, শরীয়ত ও সুন্নত উনাদের পথিকৃত, যামানার তাজদীদী মুখপত্র দৈনিক আল ইহসান শরীফ, মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ পাঠ এবং আনজুমানে আল বাইয়্যিনাত উনার মজলিস করতে হবে।”
উল্লেখ্য, হযরত শায়েখ বা  মুর্শিদ  ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করা সম্পর্কে জামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, জব্বারিউল আউওয়াল, ছাহিবু সুলতানিন নাছির, সাইয়্যিদুনা হযরত মুজাদ্দিদে আয’ম আলাইহিস সালাম তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন, “যারা নিকটে অবস্থান করে তারা প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাযে পাঁচবার ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করবে। যারা একই মহল্লায় থাকে তারা প্রতিদিন কমপক্ষে একবার। যারা একই শহর বা গ্রামে থাকে তারা সপ্তাহে কমপক্ষে দু’বার। যারা সেই শহর বা গ্রামের বাইরে বসবাস করে তারা সপ্তাহে কমপক্ষে একবার। যারা পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোতে বসবাস করে তারা মাসে অন্ততপক্ষে একবার। যারা দূরবর্তী জেলাগুলোতে অবস্থান করে তারা কমপক্ষে তিন মাসে একবার। যারা নিকটবর্তী দেশে অবস্থান করে তারা কমপক্ষে ছয় মাসে একবার। আর যারা  দূরদেশে বসবাস করে তারা কমপক্ষে বৎসরে একবার শায়েখ বা মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করবে। তবে যে ব্যক্তি তার শায়েখ বা মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার যতবেশি ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করবে তার মর্যাদা-মর্তবা ততবেশি হবে। পবিত্র ইছলাহ বা পরিশুদ্ধি, তায়াল্লুক, নিসবত এবং নৈকট্য মুবারক ততবেশি হাছিল হবে।” সুবহানাল্লাহ!
পিডিএফ লিংক- https://drive.google.com/file/d/1rcCw3RnJoIwLbieEIHqIQeVG2ieHG8Tt/view?usp=sharing

0 Comments: