যাকাত আদায় না করলে কি হয়। পর্ব-১২


Image result for যাকাতযাকাত আদায় না করলে কি হয়
ক) সম্মানিত যাকাত অস্বীকারকারী মুশরিক :
সম্মানিত যাকাত উনার পরিমাণ ও যাবতীয় বিধি-বিধান পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের মাধ্যমে সাব্যস্ত হয়েছে। সম্মানিত যাকাত পবিত্র ইসলাম উনার অন্যতম একটি মূল বুনিয়াদ। সম্মানিত যাকাত উনাকে অস্বীকার করা মানেই পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদেরই অস্বীকার করার শামীল যা কাট্টা কুফরী।
وَوَيْلٌ لِّلْمُشْرِكِيْنَ. اَلَّذِيْنَ لَا يُؤْتُوْنَ الزَّكٰوةَ وَهُم بِالْاٰخِرَةِ هُمْ كٰفِرُوْنَ.
অর্থ : “আর মুশরিকদের জন্যে ধ্বংস অনিবার্য; যারা সম্মানিত যাকাত আদায় করে না, আর তারাই পরকালে অবিশ্বাসী।” (পবিত্র সূরা হা-মীম সাজদাহ শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৬-৭)
যেহেতু সম্মানিত যাকাত অস্বীকারকারী মুশরিক। তাই সম্মানিত যাকাত অস্বীকারকারীর ঈমান বরবাদ হয়ে কাট্টা কাফির ও মুরতাদে পরিণত হয়ে যাবে। এ কারণেই প্রথম খলীফা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি সম্মানিত যাকাত উনাকে অস্বীকারকারী আব্স ও যুবিয়ান সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে ঘোষণা দিয়ে জিহাদ করেছিলেন। রিদ্দার জিহাদের অন্যতম কারণও হচ্ছে সম্মানিত যাকাত অস্বীকার করা।
খ) দুনিয়া ও আখিরাতে অশান্তির কারণ : সম্মানিত দ্বীন ইসলাম শান্তির দ্বীন। আর এই দ্বীন উনার মধ্যবর্তী খুঁটি হচ্ছেন যাকাত। তাই যারা যাকাত আদায় করবে না তাদেরকে দুনিয়া ও আখিরাতে চরম অশান্তিতে পড়তে হবে। বিভিন্ন ধরণের আযাব-গযব তার উপর আরোপিত হবে।
পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
وَالَّذِيْنَ يَكْنِزُوْنَ الذَّهَبَ وَالْفِضَّةَ وَلَا يُنْفِقُوْنَـهَا فِىْ سَبِيْلِ اللهِ فَبَشِّرْهُمْ بِعَذَابٍ اَلِيْمٍ. يَوْمَ يُـحْمٰى عَلَيْهَا فِىْ نَارِجَهَنَّمَ فَتُكْوٰى بِـهَا جِبَاهُهُمْ وَجُنُوْبـُهُمْ وَظُهُوْرُهُمْ ۖ هٰذَا مَا كَنَزْتُـمْ لِاَنْفُسِكُمْ فَذُوْقُوْا مَا كُنْتُمْ تَكْنِزُوْنَ.
অর্থ : “আর যারা সোনা-রূপা জমা করে, অথচ মহান আল্লাহ পাক উনার রাস্তায় তা ব্যয় করে না (অর্থাৎ তারা সম্পদের সম্মানিত যাকাত দেয় না) তাদেরকে সংবাদ দিন কষ্টদায়ক আযাবের, যে দিন গরম করা হবে সেগুলোকে দোযখের আগুনে, অতঃপর দাগা দেয়া হবে সেগুলো দ্বারা তাদের ললাটে, তাদের পার্শ্বদেশে ও তাদের পৃষ্ঠদেশে (এবং বলা হবে) এগুলো যা তোমরা (দুনিয়াতে) নিজেদের জন্যে জমা করে রেখেছিলে। সুতরাং এখন জমা করে রাখা সম্পদের স্বাদ গ্রহণ করো।” (পবিত্র সূরা তওবা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৪, ৩৫)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَبِـيْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَكُوْنُ كَنْزُ اَحَدِكُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ شُجَاعًا اَقْرَعَ يَفِرُّ مِنْهُ صَاحِبُهٗ وَهُوَ يَطْلُبُهُ حَتّٰى يُلْقِمَهٗ اَصَابِعَهٗ.
অর্থ : “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন- তোমাদের কারও সংরক্ষিত মাল কিয়ামতের দিন কেশহীন বিষাক্ত সাপ হবে এবং তা হতে মালের মালিক পলায়ন করতে চাবে; কিন্তু ওই বিষধর সাপ তাকে অনুসন্ধান করতে থাকবে, এমনকি তার অঙ্গুলীসমূহ (খাদ্যরূপে) গিলে ফেলবে। নাঊযুবিল্লাহ!” (মুসনাদে আহমদ শরীফ ২য় খ-, ৫৩০ পৃষ্ঠা, হাদীছ শরীফ নং ১০৮৬৭)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো বর্ণিত রয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُوْدٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ يَبْلُغُ بِهِ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَا مِنْ رَجُلٍ لَا يُؤَدِّيْ زَكٰوةَ مَالِهٖ اِلَّا جَعَلَ اللهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فِيْ عُنُقِهٖ شُجَاعًا  ثُـمَّ قَرَاَ عَلَيْنَا مِصْدَاقَهٗ مِنْ كِتَابِ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ ‏وَلَا يَـحْسَبَنَّ الَّذِيْنَ يَبْخَلُوْنَ بِـمَا اٰتَاهُمُ اللهُ مِنْ فَضْلِهٖ‏ الاٰيَةَ‏ وَقَالَ مَرَّةً قَرَاَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِصْدَاقَهٗ ‏سَيُطَوَّقُوْنَ مَا بَـخِلُوْا بِهٖ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَمَنِ اقْتَطَعَ مَالَ اَخِيْهِ الْمُسْلِمِ بِيَمِيْنٍ لَقِيَ اللهَ وَهُوَ عَلَيْهِ غَضْبَانُ ثُـمَّ قَرَاَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِصْدَاقَهٗ مِنْ كِتَابِ اللهِ اِنَّ الَّذِيْنَ يَشْتَرُوْنَ بِعَهْدِ اللهِ الاٰيَةَ‏.

অর্থ : “হযরত ইবনে মাসঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন- যে ব্যক্তি তার মালের যাকাত আদায় করবে না, নিশ্চয়ই কিয়ামতের দিন মহান আল্লাহ পাক তিনি ওই যাকাতের মালগুলোকে মালিকের ঘাড়ে সাপে পরিণত করবেন। (অতঃপর সেগুলো দংশন করতে থাকবে।) অতঃপর এর সমর্থনে একখানা আয়াত শরীফ আমাদের সামনে পেশ করলেন, যার অর্থ হচ্ছে, ‘মহান আল্লাহ পাক তিনি স্বীয় অনুগ্রহে তাদেরকে যে মাল দান করেছেন, তা থেকে যারা কৃপণতা করে, তারা যেন মনে না করে যে, তা তাদের জন্যে ভাল বা বরকতের কারণ। বরং তা তাদের জন্যে ক্ষতির কারণ।’ বর্ণনাকারী কখনো বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এর সমর্থনে এ আয়াত শরীফ পেশ করলেন, যার অর্থ হচ্ছে, ‘যাতে তারা কৃপণতা করে ক্বিয়ামতের দিন তা তাদের গলায় বেড়ী হবে’। তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন- যে ব্যক্তি মিথ্যা শপথের মাধ্যমে তার মুসলিম ভাইয়ের মাল আত্মসাৎ করে, সে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে এরূপ অবস্থায় মিলিত হবে যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি তার প্রতি অসন্তুষ্ট। এর সত্যতার সমর্থনে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার এ আয়াত শরীফ পেশ করলেন, যার অর্থ হচ্ছে, ‘যারা মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে কৃত ওয়াদা এবং নিজেদের ওয়াদাসমূহকে তুচ্ছমূল্যে বিক্রয় করে।” (তিরমিযী শরীফ : কিতাবুত তাফসীর : হাদীছ শরীফ নং ৩০১২)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَبِـيْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ اٰتَاهُ اللهُ مَالًا فَلَمْ يُؤَدِّ زَكَاتَهٗ مُثِّلَ لَهٗ يَوْمَ الْقِيَامَةِ شُجَاعًا اَقْرَعَ لَهٗ زَبِيبَتَانِ يُطَوَّقُهٗ يَوْمَ الْقِيَامَةِ ثُـمَّ يَأْخُذُ بِلِهْزِمَتَيْهِ، يَعْنِى شِدْقَيْهِ ثُـمَّ يَقُوْلُ اَنَا مَالُكَ اَنَا كَنْزُكَ ثُـمَّ تَلَا لَا يَـحْسَبَنَّ الَّذِيْنَ يَبْخَلُوْنَ الاٰيَةَ وَلَا يَـحْسَبَنَّ الَّذِيْنَ يَبْخَلُوْنَ بِـمَآ اٰتَاهُمُ اللهُ مِن فَضْلِهٖ هُوَ خَيْرًا لَّـهُم ۖ بَلْ هُوَ شَرٌّلَّـهُمْ ۖ سَيُطَوَّقُوْنَ مَا بَـخِلُوْا بِهٖ يَوْمَ الْقِيَامَةِ ۗ وَلِلّٰهِ مِيْرَاثُ السَّمَاوَاتِ وَالْاَرْضِ ۗ وَاللهُ بِـمَا تَعْمَلُوْنَ خَبِيْرٌ.
অর্থ : “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন- মহান আল্লাহ পাক তিনি যাকে মাল-সম্পদ দান করেছেন, অথচ সে ঐ সম্পদের সম্মানিত যাকাত আদায় করেনি, কিয়ামতের দিন তার মালকে তার জন্যে একটি কেশহীন বিষধর সাপে পরিণত করা হবে, যার চক্ষুর উপর দুটি কালো দাগ থাকবে (অর্থাৎ অতি বিষাক্ত হবে) তাকে তার গলার বেড়ীস্বরূপ করা হবে। তা তার মুখের দু’দিকে দংশন করতে থাকবে এবং বলবে, আমি তোমার মাল আমি তোমার সংরক্ষিত অর্থ। অতঃপর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি (উনার সমর্থনে) এ পবিত্র আয়াত শরীফ পাঠ করলেন- “মহান আল্লাহ পাক তিনি যাদেরকে আপন সম্পদ হতে কিছু দান করেছেন, আর তারা তা নিয়ে কৃপণতা করে, তবে তারা যেন মনে না করে যে, তা তাদের জন্যে ভাল বা বরকতের কারণ। বরং তা তাদের জন্যে ক্ষতির কারণ। অতি শীঘ্রই কিয়ামতের দিন সে সমস্ত ধন-সম্পদকে তাদের ঘাড়ে শিকলরূপে পরিয়ে দেয়া হবে, যা নিয়ে তারা কৃপণতা করেছে। আর মহান আল্লাহ পাক তিনি হচ্ছেন আসমান ও যমীনের পরম সত্ত্বাধিকারী। আর যা কিছু তারা করে থাকে; মহান আল্লাহ পাক তিনি সে সম্পর্কে জানেন।” নাঊযুবিল্লাহ! (বুখারী শরীফ : কিতাবুয যাকাত : বাবু ইসমি মানি‘য়িয যাকাহ : হাদীছ শরীফ নং ১৪০৩)
গ) যাকাত আদায় না করে মূল মালের সাথে মিশ্রিত করলে মাল-সম্পদ হারাম হয়ে যায় : যারা যাকাত আদায় করে না তাদের হালাল মালের যাকাত উনার মাল সংমিশ্রিত হয়ে সমস্ত মালকে হারাম করে দেয়। ফলে উক্ত মাল থেকে মালিকে নিছাব যখন নিজের প্রয়োজন মিটায় তখন উক্ত ব্যক্তির গৃহীত হারাম খাদ্য-পানীয় দ্বারা তার দেহের বৃদ্ধি ঘটে। এক গ্লাস পানিতে এক ফোঁটা নাপাক পড়লে যেমন গ্লাসের পুরো পানিই নাপাক হয়ে যায় ও পানের অযোগ্য ও হারাম হয়ে যায়। ঠিক তেমনি হালাল মালের সাথে যাকাত উনার মাল মিশ্রিত হয়ে পুরো মালই হারাম হয়ে যায়।
আর হারাম খাবার গ্রহণ প্রসঙ্গে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
عَنْ حَضْرَتْ اَبِـىْ بَكْرٍ عَلَيْهِ السَّلَامُ اَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لَا يَدْخُلُ الْـجَنَّةَ جَسَدٌ غُذِيَ بِالْـحَرَامِ.

অর্থ : “হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ওই দেহ বেহেশতে প্রবেশ করবে না, যা হারাম জীবিকা দ্বারা গঠিত হয়েছে।” (শু‘য়াবুল ঈমান লিল বাইহাক্বী, মিশকাত শরীফ ২য় খ- ১২৯ পৃষ্ঠা : হাদীছ শরীফ নং ২৭৮৭)
একদা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার এক গোলাম উনাকে কিছু খাবার দিল। হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি তা খেলেন। খাওয়া শেষ হলে তিনি উক্ত গোলামকে জিজ্ঞেস করলেন,
فَمِنْ اَيْنِ الطَّعَامُ يَا غُلَامُ؟ قَالَ دَفَعَهٗ اِلَيَّ اُنَاسٌ كُنْتُ اَحْسَنْتُ اِلَيْهِمْ فِي الْـجَاهِلِيَّةِ بِكَهَانَةٍ صَنَعْتُهَا لَـهُمْ وَهُنَا اَرْتَعَدَتْ فَرَائَصُ الصِّدِّيْقِ وَاَدْخَلَ يَدَهٗ فِيْ فَمٍ وَقَاءَ كُلَّ مَا فَيْ بَطْنِهٖ وَقَالَ وَاللهِ لَوْ لَـمْ تَـخْرُجْ تِلْكَ اللُّقْمَةُ اِلَّا مَعَ نَفْسِيْ لَاَخْرجْتُهَا
অর্থ : “এটা কোথা থেকে এসেছে? এ প্রশ্নের জবাবে সে বলল, আমি জাহিলী যুগে এক ব্যক্তির ভাগ্য গণনা করেছি। অথচ আমি ভাগ্য গণনায় পারদর্শী নই। আমি লোকটিকে ধোঁকা দিয়েছি। আর সে আমাকে এটা দিয়েছে। আর তাই আপনি এইমাত্র খেলেন। এ কথা শুনে হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি নিজ মুখে হাত ঢুকিয়ে বমি করে দিলেন। পেটে যা ছিল সব বের করে দিলেন। অতঃপর বললেন, মহান আল্লাহ পাক উনার শপথ, যদি তা বের করতে গিয়ে আমার জীবন দিতে হতো তবে আমি তাই করতাম।” (জামি‘উল আহাদীছ, বাবু মুসনাদ আবি বকর, হাদীছ শরীফ নং ২৭৮০৭)
ঘ) যাকাত আদায় না করে মূল মালের সাথে মিশ্রিত করলে মাল-সম্পদ ধ্বংস হয়ে যায় : পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اُمِّ الْمـُؤْمِنِيْنَ الثَّالِثَةَ عَلَيْهَا السَّلَامَ قَالَتْ سَـمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُوْلُ مَا خَالَطَتِ الزَّكٰوةُ مَالًا قَطُّ اِلَّا اَهْلَكَتْهُ رَوَاهُ الشَّافِعِىُّ وَالْبُخَارِىُّ فِىْ تَارِيْـخِهٖ وَالْـحُمَيْدِىُّ وَزَادَ قَالَ يَكُوْنُ قَدْ وَجَبَ عَلَيْكَ صَدَقَةً فَلَا تُـخْرِجُهَا فَيُهْلِكُ الْـحَرَامُ الْـحَلَالَ.
অর্থ : “ হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, আমি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ইরশাদ মুবারক করতে শুনেছি, যখন মূল মালের সাথে সম্মানিত যাকাত উনার মাল মিশবে তখন সেই মালই মূল মালকে ধ্বংস করে ফেলবে অর্থাৎ উভয় মালই ধ্বংস হবে। নাঊযুবিল্লাহ! এটা বর্ণনা করেছেন হযরত ইমাম শাফেয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি ও হযরত ইমাম বুখারী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার তারীখ গ্রন্থে। এছাড়া হযরত ইমাম হুমায়দী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি আরো বৃদ্ধি করে বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তোমার উপর যে মালের সম্মানিত যাকাত ফরয হয় অতঃপর সে মালের সম্মানিত যাকাত বের করবে না, তখন এই হারাম মালই অর্থাৎ যে মালের যাকাত আদায় করা হয়নি সেই মালই অন্য সমস্ত হালাল মালকে ধ্বংস করে দিবে।” নাঊযুবিল্লাহ! (মিশকাত শরীফ)

ঙ) যাকাত দেয়া বন্ধ করলে মাল-সম্পদ ধ্বংস হয়ে যায় : পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ عُمَرَ الْفَارُوْقِ عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ مَا تُلِفُ مَالٌ فِىْ بَرٍّ وَّ لَا بَـحْرٍ اِلَّا بـِحَبْسِ الزَّكٰوةِ. وَفِىْ رِوَايَةٍ اِلَّا بِـمَنْعِ الزَّكٰوةِ.
অর্থ : “সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি বর্ণনা করেন- নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যমীনে এবং পানিতে যেখানেই কোন সম্পদ বিনষ্ট বা ধ্বংস হয়, তা কেবল মালের যাকাত দেয়া বন্ধ করার কারণেই অর্থাৎ যাকাত না দেয়ার কারণে।” (ত্ববারানী শরীফ)
عَنْ حَضْرَتْ عَبْدِ اللهِ بْنِ بُرَيْدَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ عَنْ أَبِيْهِ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا مَنَعَ قَوْمٌ الزَّكَاةَ اِلَّا ابْتَلاهُمُ اللهُ بِالسَّنِيْنَ.
অর্থ : “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে বুরাইদা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি উনার পিতা উনার থেকে বর্ণনা করেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, কোন সম্প্রদায় যখন যাকাত দিতে অস্বীকৃতি জানায় তখন তাদেরকে ক্ষুধা ও দুর্ভিক্ষে নিমজ্জিত করেন।” নাঊযুবিল্লাহ! (মু’জামুল আওসাত ৫ম খ- ২৬ পৃষ্ঠা : হাদীছ শরীফ নং ৪৫৭৭; তারগীর ওয়াত তারহীব ১ম খ- ৩০৯ পৃষ্ঠা : হাদীছ শরীফ নং ১১৪৫)
চ) কোন ইবাদত-বন্দেগী কবুল হয় না : এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ مَسْعُوْدٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ النَّبِىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اُمِرْتُـمْ بِالصَّلَاةِ وَالزَّكَاةِ فَمَنْ لَّـمْ يُزَكِّ فَلَا صَلَاةَ لَهٗ.
অর্থ : ফক্বীহুল উম্মত, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আপনারা সম্মানিত নামায এবং সম্মানিত যাকাত আদায়ের জন্যে আদিষ্ট হয়েছেন। কাজেই যে ব্যক্তি সম্মানিত যাকাত আদায় করেনা, তার নামায কবুল হয়না।” (তাফসীরে কুরতুবী ৮ম খ-, ৮১ পৃষ্ঠা, সূরা তওবা শরীফ- আয়াত শরীফ নং ১২, প্রকাশনী : দারুল কিতাবুল মিছরিইয়্যা, কায়রো, ১৩৮৪ হিজরী; তাফসীরে রূহুল মায়ানী ৫ম খ-, ২৫২ পৃষ্ঠা, সূরা তওবা শরীফ, প্রকাশনী : দারুল কিতাবুল ‘ইলমিইয়্যা, বৈরুত, ১৪১৫ হিজরী; তাফসীরে খযীন ২য় খ-, ৩৩৯ পৃষ্ঠা, সূরা তওবা শরীফ, প্রকাশনী : দারুল কিতাবুল ‘ইলমিইয়্যা, বৈরুত, ১৪১৫ হিজরী; তাফসীরে বাগবী ৩য় খ-, ৩৩৬ পৃষ্ঠা, প্রকাশনী : দারুস সালাম লিন নাশার ওয়াত তাওযী’, রিয়াদ, ১৪১৬ হিজরী; তারগীব ওয়াত তারহীব ২য় খ-, ২২৪ পৃষ্ঠা, হাদীছ শরীফ নং : ১৪৭৬, প্রকাশনী : দারুল হাদীছ, কায়রো, ১৪১৪ হিজরী)
মূলতঃ যাকাত আদায় না করার কারণে উক্ত মাল যা গরীব-মিসকীনের হক্ব তা মালিকে নিছাব নিজেই ভক্ষণ করছে যা তার জন্য হারাম। এই হারাম ভক্ষন করার কারণে তার কোন ইবাদত-বন্দেগী, দু‘আ-মুনাজাত কবুল হবে না। যেহেতু ইবাদত-বন্দেগী, দু‘আ-মুনাজাত কবুল হওয়ার পূর্বশত হচ্ছে হালাল রিযিক।
এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَبِـيْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَيُّهَا النَّاسُ اِنَّ اللهَ طَيّبٌ لَا يَقْبَلُ اِلَّا طَيِّبًا وَاِنَّ اللهَ اَمَرَ الْمُؤْمِنِيْنَ بِـمَا اَمَرَ بِهِ الْمُرْسَلِيْنَ فَقَالَ ‏يَآ اَيُّهَا الرُّسُلُ كُلُوْا مِنَ الطَّيِّبَاتِ وَاعْمَلُوْا صَالِـحًا اِنّـِيْ بِـمَا تَعْمَلُوْنَ عَلِيْمٌ‏‏ وَقَالَ ‏يَآ اَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوا كُلُوْا مِنْ طَيِّبَاتِ مَا رَزَقْنَاكُمْ‏‏‏. ثُـمَّ ذَكَرَ الرَّجُلَ يُطِيْلُ السَّفَرَ اَشْعَثَ اَغْبَرَ يَـمُدُّ يَدَيْهِ اِلَى السَّمَاءِ يَا رَبّ يَا رَبّ وَمَطْعَمُهٗ حَرَامٌ وَمَشْرَبُهٗ حَرَامٌ وَمَلْبَسُهٗ حَرَامٌ وَغُذِيَ بِالْـحَرَامِ فَاَنّٰـى يُسْتَجَابُ لِذٰلِكَ‏.
অর্থ : “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন- নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র। তিনি পবিত্র ও হালাল বস্তু ছাড়া গ্রহণ করেন না। আর মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার প্রেরিত হযরত রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে যে হুকুম মুবারক দিয়েছেন মু’মিন উনাদেরকেও সে হুকুম মুবারক দিয়েছেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ‘হে হযরত রসূল আলাইহিমুস সালাম! আপনারা পবিত্র ও হালাল বস্তু আহার করুন এবং ভালো কাজ করুন। আমি আপনাদের কৃতকর্ম সম্বন্ধে জ্ঞাত।’ মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ‘হে ঈমানদারগণ! আমি আপনাদেরকে যে সব পবিত্র বস্তু রিযিক হিসেবে দান করেছি তা থেকে আহার করুন।’ অতঃপর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এক ব্যক্তির কথা উল্লেখ করলেন, যে যে দীর্ঘ সফরে থাকা অবস্থায় এলোমেলো চুল ও ধূলায়-ধুসরিত ক্লান্ত-শ্রান্ত বদনে আকাশের দিকে মহান আল্লাহ পাক শাহী দরবারে হাত তুলে আর্জি করে- “হে আমার মহান রব তায়ালা! হে আমার মহান রব তায়ালা! অথচ তার খাদ্য হারাম, পানীয় হারাম, পরিধেয় বস্ত্র হারাম এবং আহার্যও হারাম। কাজেই এমন ব্যক্তির দু’আ মহান আল্লাহ পাক তিনি কী করে কবুল করতে পারেন?” (মুসলিম শরীফ : কিতাবুয যাকাত : বাবু ক্বাবূলিছ ছদাক্বাতি মিনাল কাসবিত্ব ত্বাইয়্যিবি ওয়া তারবিয়াতিহা : হাদীছ শরীফ নং ২২৩৬; তিরমিযী শরীফ : কিতাবু তাফসীরুল কুরআন : হাদীছ শরীফ নং ৩২৫৭; দারে কুতনী ২য় খ- ৩৮৯ পৃষ্ঠা : হাদীছ শরীফ নং ২৭১৭; শু‘য়াবুল ঈমান ৭ম খ- ৪৯১ পৃষ্ঠা : হাদীছ শরীফ নং ৫৩৫৩)
আর পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত আছে-
عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ اَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ اُمِرْتُ اَنْ اُقَاتِلَ النَّاسَ حَتّٰى يَشْهَدُوْا اَنْ لَّا اِلٰهَ اِلَّا اللهُ وَاَنَّ مُـحَمَّدًا رَسُوْلُ اللهِ وَيُقِيْمُوا الصَّلَاةَ وَيُؤْتُوا الزَّكَاةَ فَاِذَا فَعَلُوْا ذٰلِكَ عَصَمُوْا مِنِّيْ دِمَاءَهُمْ وَاَمْوَالَـهُمْ اِلَّا بِـحَقّ الْاِسْلَامِ وَحِسَابُـهُمْ عَلَى اللَّهِ تَعَالٰى .
অর্থ : “হযরত ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমি লোকদের সাথে যুদ্ধ চালিয়ে যাবার জন্যে নির্দেশিত হয়েছি, যতক্ষণ না তারা সাক্ষ্য দেয় যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই ও নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, আর নামায প্রতিষ্ঠা করে ও যাকাত আদায় করে। তারা যদি এগুলো করে, তবে আমার পক্ষ হতে তাদের জান ও মালের ব্যাপারে নিরাপত্তা লাভ করলো; অবশ্য সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার বিধান অনুযায়ী যদি কোন কারণ থাকে, তাহলে স্বতন্ত্র কথা। আর তাদের হিসাবের ভার মহান আল্লাহ পাক উনার উপর ন্যস্ত।” (বুখারী শরীফ : কিতাবুল ঈমান : বাবু ফা ইন তাবূ ওয়া আক্বামুছ ছলাতা ওয়া আতুয যাকাতা ফাখ¦াল্লূ সাবীলাহুম : হাদীছ শরীফ নং ২৫; মুসলিম শরীফ : কিতাবুল ঈমান : বাবুল আমরি বিক্বিতালিন নাসি হাত্তা ইয়াক্বূলূ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহ : হাদীছ শরীফ নং ২২)
ছ) মহান আল্লাহ পাক তিনি ও নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা অসন্তুষ্ট হন এবং যাকাত আদায়ে অস্বীকৃতিকারী জিহাদের সম্মুখীন : এ ব্যাপারে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَبِـىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالى عَنْهُ قَالَ فَقَالَ حَضْرَتْ اَبُوْ بَكْرٍ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَاللهِ لَاُقَاتِلَنَّ مَنْ فَرَّقَ بَيْنَ الصَّلٰوةِ وَالزَّكٰوةِ فَاِنَّ الزَّكٰوةَ حَقُّ الْمَالِ وَاللهِ لَوْ مَنَعُوْنِـىْ عَنَاقًا كَانُوْا يُؤَدُّوْنَـهَا اِلٰى رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَقَاتَلْتُهُمْ عَلٰى مَنْعِهَا.
অর্থ : “হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! আমি অবশ্যই তাদের সাথে জিহাদ করব যারা সম্মানিত নামায ও সম্মানিত যাকাত উনাদের মধ্যে পার্থক্য করে (অর্থাৎ, সম্মানিত নামায উনাকে স্বীকার করে, আর সম্মানিত যাকাত উনাকে অস্বীকার করে)।
নিশ্চয়ই সম্মানিত যাকাত হচ্ছে মালের হক্ব। মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! যদি তারা একটি বকরীর বাচ্চা দিতেও আমাকে অস্বীকৃতি প্রদান করে, যা তারা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে প্রদান করত, তবুও আমি তার জন্যে তাদের সাথে জিহাদ করব।” (বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ)
অন্য পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَبِـيْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ عَعَالٰى عَنْهُ قَالَ لَمَّا تُوُفِّـيَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَكَانَ حَضْرَتْ اَبُوْ بَكْرٍ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَكَفَرَ مَنْ كَفَرَ مِنَ الْعَرَبِ فَقَالَ حَضْرَتْ عُمَرُ عَلَيْهِ السَّلَامُ كَيْفَ تُقَاتِلُ النَّاسَ وَقَدْ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اُمِرْتُ اَنْ اُقَاتِلَ النَّاسَ حَتّٰى يَقُوْلُوْا لَا اِلٰهَ اِلَّا اللهُ‏. فَمَنْ قَالَـهَا فَقَدْ عَصَمَ مِنِّيْ مَالَهٗ وَنَفْسَهٗ اِلَّا بِـحَقِّهٖ وَحِسَابُهٗ عَلَى اللهِ‏. فَقَالَ وَاللهِ لَاُقَاتِلَنَّ مَنْ فَرَّقَ بَيْنَ الصَّلٰوةِ وَالزَّكٰوةِ فَاِنَّ الزَّكٰوةَ حَقُّ الْمَالِ وَاللهِ لَوْ مَنَعُوْنِـيْ عَنَاقًا كَانُوْا يُؤَدُّوْنَـهَا اِلٰى رَسُوْلِ الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَقَاتَلْتُهُمْ عَلَى مَنْعِهَا‏. قَالَ حَضْرَتْ عُمَرُ عَلَيْهِ السَّلَامُ فَوَاللهِ مَا هُوَ اِلَّا اَنْ قَدْ شَرَحَ اللهُ صَدْرَ حَضْرَتْ اَبِـيْ بَكْرٍ عَلَيْهِ السَّلَامُ فَعَرَفْتُ اَنَّهُ الْـحَقُّ‏.
অর্থ : “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যমীন থেকে পর্দা করার পর সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার ১ম খলীফা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার খিলাফতকালে আরবের কিছু লোক মুরতাদ হয়ে যায়। তখন হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি [হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনাকে লক্ষ্য করে] বললেন, আপনি (সে সব) লোকদের বিরুদ্ধে কিভাবে জিহাদ করবেন (যারা সম্পূর্ণরূপে দ্বীন পরিত্যাগ করেনি, বরং যাকাত দিতে অস্বীকার করেছে মাত্র)? অথচ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ মুবারক করেছেন, ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু’ বলার পূর্ব পর্যন্ত মানুষের বিরুদ্ধে জিহাদ করার নির্দেশ আমাকে দেয়া হয়েছে, যে কেউ তা বললো, সে তার সম্পদ ও জীবন আমার পক্ষ থেকে নিরাপদ করে নিলো। তবে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার বিধান লঙ্ঘন করলে (শাস্তি দেয়া যাবে), আর তার অন্তরের গভীর (অন্তরে কুফরী লুকানো থাকলে এর) হিসাব-নিকাশ মহান আল্লাহ পাক উনার যিম্মায়।
তখন হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই আমি জিহাদ করবো যারা নামায ও যাকাতের মধ্যে পার্থক্য করবে। নিশ্চয়ই যাকাত হল সম্পদের উপর আরোপিত হক্ব। মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম। যদি তারা একটি মেষ শাবক যাকাত দিতেও অস্বীকৃতি জানায় যা মহান আল্লাহ পাক-উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে তারা দিত, তাহলে যাকাত না দেয়ার কারণে তাদের বিরুদ্ধে আমি অবশ্যই জিহাদ করবো। হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার অন্তর (সত্য উপলব্ধির জন্যে) প্রসারিত করেছেন বিধায় উনার এ দৃঢ়তা, এতে আমিও বুঝতে পারলাম উনার সিদ্ধান্তই যথার্থ।” (বুখারী শরীফ : কিতাবুয যাকাত : বাবু উযূবিয যাকাত : ১৩৯৯ ও ১৪০০)
যাকাত অনাদায়কারীর প্রতি মহান আল্লাহ পাক তিনি কতখানি অসন্তুষ্ট হয় তা নি¤œাক্ত হাদীছ শরীফদ্বয় হতে স্পষ্টভাবে বুঝা যায়।
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
اَلْبَخِيْلُ بَعِيْدٌ مِّنَ اللهِ وَبَعِيْدٌ مِّنَ النَّاسِ وَبَعِيْدٌ مِّنَ الْـجَنّةِ وَقَرِيْبٌ مِّنَ النَّارِ.
অর্থ : “কৃপন ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার থেকে দূরে, মানুষ থেকে দূরে, পবিত্র জান্নাত হতে দূরে, জাহান্নামের নিকটে।” (তিরমিযী শরীফ)
সম্মানিত যাকাত অনাদায়কারী বখীল। আর বখীল মহান আল্লাহ পাক উনার শত্রুতে পরিণত হয়। নাঊযুবিল্লাহ!
এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত আছে-
اَلْبَخِيْلُ عَدُوُّ اللهِ وَلَوْ كَانَ عَابِدًا
অর্থ : “বখীল মহান আল্লাহ পাক উনার শত্রু যদিও সে আবিদ হোক না কেন।”
সাধারণ বখীল ব্যক্তিই মহান আল্লাহ পাক উনার শত্রু যদিও সে আবিদ হোক না কেন, তাহলে ফরয ইবাদত যাকাত অনাদায়কারীর প্রতি মহান আল্লাহ পাক তিনি কতখানি অসন্তুষ্ট, তা সহজেই বোধগম্য।
এ প্রসঙ্গে একটি ওয়াকিয়া বর্ণিত রয়েছে।
সালাবা ইবনে হাতিবের ওয়াকিয়া : পবিত্র সূরা তওবা শরীফ উনার ১০৩ নং আয়াত শরীফ নাযিল হওয়ার পর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ২ জন ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা উনাদেরকে ‘সালিম গোত্রে’ এবং ‘জোহাইনা গোত্রে’ যাকাতের হুকুম-আহকাম লিখে পাঠালেন। সালাবা ইবনে হাতিবের কাছে এবং আরেক জন ‘সালিম গোত্রের’ ব্যক্তির কাছে। যিনি অনেক সম্পদশালী ছিলেন, উনার অনেক গরু-ছাগল, দুম্বা-বকরী ছিলো।
দুইজন ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা উনারা প্রথমে সালাবা ইবনে হাতিবের নিকট গেলেন। সেখানে গিয়ে তাকে যখন যাকাতের কথা বললেন এবং আয়াত শরীফ বললেন এবং সেই কাগজ মুবারক দেখালেন যেখানে কিভাবে যাকাত দিতে হবে দুম্বা, ভেড়া, মেষ ইত্যাদির। এটা দেখে সে বললো- আপনার বলেন কি? এটা দেখি কাফিরদের মতো ‘জিযিয়া কর’। নাঊযুবিল্লাহ! এটা কেমন কথা! মুসলমানদের কাছ থেকে এটা কেন নেয়া হবে? এটা বলে সে অনেক চু-চেরা করলো। শেষে বললো আপনারা যেখানে যাওয়ার যান। যাওয়ার সময় দেখা করে যাবেন।
উনারা যখন দ্বিতীয় ব্যক্তি ‘সালিম গোত্রের” নিকট গেলেন সেই ব্যক্তি অত্যন্ত খুশি হলেন। খুশি হয়ে উনার যতটুকু যাকাত দেয়ার কথা ছিলো তার চেয়ে বেশি দিতে চাইলেন। হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা বললেন, আমাদেরকে যেভাবে আদেশ মুবারক করা হয়েছে আমরাতো সেভাবেই নিবো। কিন্তু আপনি তো বেশি দিচ্ছেন। সেই ব্যক্তি বললেন, আমার তো ইচ্ছে করছে আরো বেশি দেয়ার জন্য। উনারা বললেন আমরা এটা কিভাবে নিবো? তাহলে আপনি আমাদের সাথে চলুন। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহু, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বিষয়টি জানাতে হবে। ওই ব্যক্তি সমস্ত উত্তম উত্তম দুম্বা, বকরী, ভেড়া ইত্যাদি দিলেন। ফেরার পথে সালাবার নিকট আবার গেলেন। সালাবা বললো, কই আপনাদের কাগজটি আমাকে দেখান। কাগজটি নিয়ে সে আবারও চু-চেরা করলো। বললো আচ্ছা! কি দিতে হবে, না হবে সেটা আমি চিন্তা করে সিদ্ধান্ত নিবো। নাঊযুবিল্লাহ! সে বার বার বলতে লাগলো এটা জিযিয়া করের মতো হয়ে গেলো! নাঊযুবিল্লাহ!
এটা মুসলমানদের কাছ থেকে নেয়া ঠিক হবে না। নাঊযুবিল্লাহ! তখন ওই দুই ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা এবং আরেক ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার যাকাতসহ ফিরে আসলেন। যখন উনারা দরবারে নববী শরীফ প্রবেশ করলেন, প্রবেশ করা মাত্রই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, আফসোস! সালাবার জন্য। আর যিনি দ্বিতীয় ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনি তো অনেক বেশি বেশি দিয়েছেন যাকাত। তিনি এসে বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! ইত্যাদি ইত্যাদি নিয়ে এসেছি। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, ঠিক আছে বেশি দিলে গ্রহণ করা হবে। যেহেতু আপনি খুশি হয়ে দিচ্ছেন। আর সালাবার জন্য আফসুস। পরবর্তিতে এই আমলের জন্য পবিত্র আয়াত শরীফ নাযিল হলো-
وَمِنْهُم مَّنْ عَاهَدَ اللهَ لَئِنْ اٰتَانَا مِن فَضْلِهِ لَنَصَّدَّقَنَّ وَلَنَكُوْنَنَّ مِنَ الصَّالِـحِيْنَ. فَلَمَّا اٰتَاهُمْ مِّنْ فَضْلِهٖ بَـخِلُوْا بِهٖ وَتَوَلَّوْا وَّهُمْ مُّعْرِضُوْنَ. فَأَعْقَبَهُمْ نِفَاقًا فـِيْ قُلُوْبِـهِمْ اِلٰى يَوْمِ يَلْقَوْنَهٗ بِـمَآ اَخْلَفُوا اللهَ مَا وَعَدُوْهُ وَبِـمَا كَانُوْا يَكْذِبُوْنَ.
অর্থ : “আর তাদের মধ্যে কেউ কেউ মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট ওয়াদা করেছিলে, মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজ অনুগ্রহে আমাদেরকে দান করলে আমরা অবশ্যই ছদক্বা দিবো এবং অবশ্যই আমরা সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত হবো। অতঃপর যখন তাদেরকে স্বীয় অনুগ্রহের মাধ্যমে দান করা হলো, তখন তাতে বখীলতা করেছে এবং কৃত ওয়াদা থেকে ফিরে গেছে এবং অস্বীকার করেছে। তারপর এরই পরিণতিতে তাদের অন্তরে নিফাকী (কপটতা) স্থান করে নিয়েছে সেদিন পর্যন্ত, যেদিন তারা মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে গিয়ে মিলিত হবে। তা এজন্যে যে, তারা মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে কৃত ওয়াদা লংঘন করেছিল এবং এজন্যে যে, তারা মিথ্যা কথা বলতো।” (পবিত্র সূরা তওবা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৭৫-৭৭)
এই আয়াত শরীফ যখন নাযিল করা হলো তখন মসজিদে নববী শরীফ-এ সালাবার এক আত্মীয় ছিলো। সে তা শুনতে পেল। সে শুনে তাড়াতাড়ি সালাবার কাছে গেল। গিয়ে বললো তুমি কি করেছো। তোমার উপরতো আয়াত শরীফ নাযিল হয়েছে। তোমার এই কুফরী আর নেফাকীর উপর। তুমি তাড়াতাড়ি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দরবার শরীফ গিয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করো। যাকাত দাও। যখন তাকে বলা হলো তখন সে বুঝতে পারলো। সে তার সবকিছু নিয়ে আসলো। নিয়ে এসে বললো- ইয়া রসূল্লাল্লাহু, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি দয়া করে আমার যাকাতগুলো কবুল করুন।
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, তোমার এই যাকাত, এই টাকা পয়সা নেয়ার জন্য মহান আল্লাহ পাক তিনি নিষেধ করেছেন। তোমার যাকাত নেয়া যাবেনা। তখন সে ব্যক্তি তার মাথায় ধুলা-বালি নিক্ষেপ করতে করতে চলে গেলো।
পরবর্তীতে সে সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীকে আকবর আলাইহিস সাাম উনার কাছে যাকাত নিয়ে আসলে তিনিও তার যাকাত গ্রহণ করেননি। তিনি বলেছিলেন, স্বয়ং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তোমার যাকাত গ্রহণ করেননি তাহলে আমি কিভাবে গ্রহণ করবো। তারপর যথাক্রমে সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূকে আ’যম আলাইহিস সালাম এবং সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনাদের খিলাফতকালেও সে যাকাত নিয়ে গেলে উনারাও তার যাকাত গ্রহণ করেননি। সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার খিলাফতকালেই তার মৃত্যু হয়।” নাঊযুবিল্লাহ! নাঊযুবিল্লাহ! নাঊযুবিল্লাহ!

যাকাত প্রদান করুন


মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ মাদরাসা উনার একাউন্ট নাম্বার সমূহ-

Account no.1
Muhammadia Jamia Shareef Madrasa & yatimkhana

A/C-200007569
Sonali Bank Limited, Malibag Branch
Dhaka, Bangladesh



Account no.2
name:-MD. Mufizul Islam

A/C-1020335489001 Naya-paltan branch
IFIC Bank Limited, Dhaka, Bangladesh
Swift Code: IFICBDDH



Account no.3
name:-MD. Mufizul Islam

A/C-108101277050 Shantinaghar branch
Dutch Bangla Bank Limited, Dhaka, Bangladesh
Swift Code: DBBLBDDH



Account no.4
Dutch Bangla mobile Banking-017187407422

Account no.5
Bkash-(parsonal) 01718740742, 01876043934, 01990770065
Bkash-(Agent)- 01709672605



0 Comments: