সম্মানিত যাকাত উনার গুরুত্ব ও ফযীলত। পর্ব-১১


No photo description available.


সম্মানিত যাকাত উনার গুরুত্ব ও ফযীলত
১.       সম্মানিত যাকাত সম্মানিত ঈমান উনার দলীল : সম্মানিত যাকাত সম্মানিত ঈমান উনার দলীল স্বরূপ। কেননা মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
اِنَّ الَّذِيْنَ اٰمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِـحَاتِ وَاَقَامُوا الصَّلٰوةَ وَاٰتَوُا الزَّكٰوةَ لَـهُمْ اَجْرُهُمْ عِنْدَ رَبِـّهِمْ ج وَلَا خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلَا هُمْ يَـحْزَنُوْنَ.
অর্থ : “নিশ্চয়ই যাঁরা ঈমান আনেন, আমলে ছলেহ করে, সম্মানিত নামায কায়িম করেন ও সম্মানিত যাকাত আদায় করেন উনাদের জন্যে উনাদের মহান রব তায়ালা উনার নিকট বিনিময় রয়েছে। উনাদের জন্যে কোন ভয় নেই এবং কোন চিন্তা পেরেশানীও নেই।” (পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ২৭৭)
মহান আল্লাহ পাক তিনি অন্যত্র ইরশাদ মুবারক করা হয়েছে-
اَلَّذِيْنَ لَا يُؤْتُوْنَ الزَّكٰوةَ وَهُم بِالْاٰخِرَةِ هُمْ كٰفِرُوْنَ.
অর্থ : যারা সম্মানিত যাকাত আদায় করে না, আর তারাই পরকালে অবিশ্বাসী। (পবিত্র সূরা হা-মীম সাজদাহ শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৭)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ عَبْدِ الرَّحْـمٰنِ بْنِ غَنْمٍ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ اَنَّ حَضْرَتْ اَبَا مَالِكٍ الاَشْعَرِيَّ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ حَدَّثَهٗ اَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ‏ اِسْبَاغُ الْوُضُوْءِ شَطْرُ الاِيـْمَانِ وَالْـحَمْدُ لِلّٰهِ تَـمْلاُ الْمِيْزَانَ وَالتَّسْبِيْحُ وَالتَّكْبِيْرُ يـَمْلَاُ السَّمٰوَاتِ وَالاَرْضَ وَالصَّلٰوةُ نُوْرٌ وَالزَّكٰوةُ بُرْهَانٌ وَالصَّبْرُ ضِيَاءٌ وَالْقُرْاٰنُ حُجَّةٌ لَّكَ اَوْ عَلَيْكَ‏.
অর্থ : “হযরত আব্দুুর রহমান ইবনে গান্ম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হযরত আবূ মালিক আশ‘য়ারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি শুনেছেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, পূর্ণাঙ্গরূপে ওযূ করা ঈমানের অঙ্গ। আর আলহামদুলিল্লাহ্ মীযানকে পরিপূর্ণ করে, তাসবীহ্ ও তাকবীর আসমান-যমীনকে পরিপূর্ণ করে। সম্মানিত নামায হলো নূর (আলো) আর সম্মানিত যাকাত হলো দলীল, ধৈর্য্য (রোযা) হলো জ্যোতি এবং পবিত্র কুরআন শরীফ আপনার পক্ষে অথবা বিপক্ষে প্রমাণ স্বরূপ।” (নাসায়ী শরীফ : কিতাবুয যাকাত : বাবু উযূবিয যাকাত : হাদীছ শরীফ নং ২৪৩৭)

সম্মানিত যাকাত সম্মানিত ঈমান উনার দলীল। তাই কেউ যদি নিজের ফরয যাকাত আদায় করতে অস্বীকার করে তাহলে সে ব্যক্তি ঈমানদার হিসেবে সাব্যস্ত হবে না, বরং কাফির হবে। আর যদি যাকাত উনার ফরযিয়াত স্বীকার করে, কিন্তু আদায় না করে, তাহলে চরম ফাসিক হবে এবং তার সম্পদগুলো হারাম হয়ে যাবে। আহলুস সুন্নাহ্ ওয়াল জামায়াত উনার এটাই ছহীহ ফতওয়া।
২.       সম্মানিত যাকাত আদায় করা ফরয : সম্মানিত যাকাত একটি ফরয ইবাদত। পবিত্র কুরআন শরীফ উনার আয়াত শরীফ দ্বারাই যাকাত ফরয করা হয়েছে। যেহেতু পূর্ববর্তী উম্মতের জন্যও সম্মানিত যাকাত উনার বিধান জারী ছিল। সে হিসেবে সম্মানিত যাকাত ফরয হয় পবিত্র মক্কা শরীফ অবস্থানকালীন সময়েই কিন্তু তখনও কোন কোন মালে যাকাত দিতে হবে এবং কি পরিমাণ মালে কত পরিমাণ যাকাত দিতে হবে, তার বিস্তারিত বিবরণ নাযিল হয়নি। তাই হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের নিজেদের আবশ্যকের অতিরিক্ত যা থাকত তা প্রায় সবই উনারা দান করে দিতেন। (তাফসীরে মাযহারী) অতঃপর ৮ম হিজরীতে পবিত্র মদীনা শরীফ উনার মধ্যে যাকাত সম্পর্কে বিস্তারিত বিবরণ নাযিল হয়। এ কারণে বলা হয় যে, পবিত্র মদীনা শরীফ উনার মধ্যেই ৮ম হিজরীতে সম্মানিত যাকাত ফরয হয়েছে।
আবার যেহেতু কোন বিষয়ে মহান আল্লাহ পাক তিনি শুধুমাত্র ১ বার আদেশ মুবারক করলেই তা সমস্ত কায়িনাতের জন্যে পালন করা ফরযে আইন হয়ে যায়। সেখানে মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে সম্মানিত যাকাত শব্দ মুবারক ৩২ বার উল্লেখ করেছেন এবং অন্যান্য খরচ করা হিসেবে আরো ১৫০ বার উল্লেখ করেছেন। সুতরাং সম্মানিত যাকাত উনার গুরুত্ব অপরিসীম।
আর তাই, ফরয হুকুম অস্বীকার করা হচ্ছে কুফর। সুতরাং যারা যাকাত অস্বীকার করবে তারা কুফরী করলো। ফলে তারা ঈমানহারা হয়ে যাবে।
৩.      সম্মানিত যাকাত অর্থনৈতিক মুক্তির শর্ত : মহান আল্লাহ পাক তিনি রিযিকের মালিক, তিনি যাকাত ব্যবস্থাপনা দিয়েছেন।
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
مَآ اَفَاءَ اللهُ عَلٰى رَسُوْلِهٖ مِنْ اَهْلِ الْقُرٰى فَلِلّٰهِ وَلِلرَّسُوْلِ وَلِذِي الْقُرْبٰـى وَالْيَتَامٰى وَالْمَسَاكِيْنِ وَابْنِ السَّبِيْلِ كَيْ لَا يَكُوْنَ دُوْلَةً بَيْنَ الْاَغْنِيَاءِ مِنْكُمْ ج وَمَآ اٰتَاكُمُ الرَّسُوْلُ فَخُذُوْهُ وَمَا نَـهَاكُمْ عَنْهُ فَانْتَهُوا ج وَاتَّقُوا اللهَ اِنَّ اللهَ شَدِيْدُ الْعِقَابِ.
অর্থ : “মহান আল্লাহ পাক তিনি জনপদবাসীদের কাছ থেকে উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে যা দিয়েছেন, তা মহান আল্লাহ পাক উনার, উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার, উনার আতœীয়-স্বজনের, ইয়াতীম-মিসকীনদের এবং মুসাফিরদের জন্যে, যাতে ধন-সম্পদ কেবল আপনাদের বিত্তশালীদের মধ্যেই আবর্তন না করে। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আপনাদের জন্যে যা নিয়ে এসেছেন, তা আঁকড়ে ধরুন এবং যার থেকে বিরত থাকতে বলেছেন, তার থেকে বিরত থাকুন এবং মহান আল্লাহ পাক উনাকে ভয় করুন, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি কঠিন শাস্তিদাতা।” (পবিত্র সূরা হাশর শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৭)
মহান আল্লাহ পাক তিনি অন্যত্র ইরশাদ মুবারক করেন-
وَالَّذِيْنَ فِي اَمْوَالِـهِمْ حَقٌّ مَّعْلُومٌ. لِّلسَّائِلِ وَالْمَحْرُوْمِ.
অর্থ : “আর উনাদের (ধনীদের) মালে রয়েছে নির্ধারিত হক্ব অভাবী ও বঞ্চিতের।” (পবিত্র সূরা মাআরিজ শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ২৪)
যেহেতু যাকাত ব্যবস্থার কারণে বিত্তশালীদের ধন-সম্পদ কেবল বিত্তশালীদের মধ্যেই আবর্তিত হতে পারে না তাই একমাত্র সম্মানিত যাকাত উনার মাধ্যমেই অর্থনৈতিক মুক্তি ও সচ্ছলতা আসে এবং আত্মিক পরিতৃপ্তি অর্জন হয়। কুদরতী ফায়সালা হয়, চাহিদাতো মিটেই, সম্পদও বহুগুণে বৃদ্ধি পায়।
এ প্রসঙ্গে পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
وَمَآ اٰتَيْتُم مِّنْ زَكٰوةٍ تُرِيْدُوْنَ وَجْهَ اللهِ فَاُولئِكَ هُمُ الْمُضْعِفُوْنَ.
অর্থ : “আর আপনারা যাঁরা যাকাত দ্বারা মহান আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টি মুবারক কামনা করেন; উনারাই ওই সম্পদ বহুগুণ প্রাপ্ত হবেন।” (পবিত্র সূরা রূম শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৯)
বস্তুত যখনই যাকাত ব্যবস্থা জারী হয়েছে তখন ঘরে ঘরে লক্ষ লক্ষ দিনার-দিরহাম সঞ্চিত ও বণ্টিত হয়েছে। হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, খলীফাতুছ ছালিছ হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার খিলাফতকালে যখন যাকাত ব্যবস্থা বিস্তৃত পরিসরে বিস্তার লাভ করলো তখন উনারা কাততানের কাপড় দিয়ে নাক মুবারক মুছেছেন। সুবহানাল্লাহ!
আবার হযরত উমর ইবনে আব্দুল আযীয রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার খিলাফতকালে যাকাত ব্যবস্থা এমনভাবে জারী হয়েছিলো যে, বায়তুল মাল থেকে যাকাত প্রদানের জন্যে জনসাধারণকে জানানো হলেও কেউই যাকাত নিতে আসলো না। এমতাবস্থায় বাজারে বাজারে যাকাত গ্রহণের জন্যে ঘোষণা প্রদান করা হলো কিন্তু এতেও কেউ আসলো না। অতঃপর খলীফা হযরত উমর ইবনে আব্দুল আযীয রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার পক্ষ থেকে ফরমান মুবারক দেয়া হলো যে, রাস্তার মোড়ে মোড়ে যেন যাকাত গ্রহণের জন্যে ঘোষণা প্রদান করা হয়। কিন্তু এতেও কোন সাড়া পাওয়া গেল না। সুতরাং এটা সহজেই বোধগম্য যে, যাকাত ব্যবস্থা অর্থনৈতিক মুক্তির অনন্য উপায়। সুবহানাল্লাহ!



সুদ ব্যবস্থার প্রতিরোধ করতে যাকাত ব্যবস্থা :
মহান আল্লাহ পাক উনার মহান নির্দেশ মুবারক হচ্ছে এই যে, বৈধ উপায়ে যে ধন-সম্পদ উপার্জন করা হয় তা পুঞ্জিভূত করে রাখা যাবেনা। কারণ এর ফলে ধন-সম্পদের আবর্তন বন্ধ হয়ে যায় এবং ফলশ্রুতিতে বন্টনে ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি হয়। যে ব্যক্তি ধন-সম্পদ পুঞ্জীভূত করে রাখে সে কেবল নিজে মারাত্মক নৈতিক রোগে আক্রান্ত হয় তাই নয় বরং মূলতঃ এটা সমগ্র মানব সমাজের মধ্যে একটি জঘন্যতম অপরাধ।
এজন্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে বখীলতা ও কারুনের ন্যায় সম্পদ কুক্ষিগত ও পুঞ্জীভূত করে রাখার প্রতি কঠোরতা আরোপ করে ইরশাদ মুবারক করেন-
وَلَا يَـحْسَبَنَّ الَّذِيْنَ يَبْخَلُوْنَ بـِمَآ اٰتَاهُمُ اللهُ مِنْ فَضْلِهٖ هُوَ خَيْرًا لَّـهُمْ ۖ بَلْ هُوَ شَرٌّ لَّـهُمْ ۖ
অর্থ : “মহান আল্লাহ পাক উনার প্রদত্ত অনুগ্রহে যারা বখীলতা করে, তারা যেন একথা মনে না করে যে, তাদের এ কাজ তাদের জন্য কল্যাণকর বরং প্রকৃতপক্ষে এটা তাদের জন্য ক্ষতিকর।” (পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১৮০)
মহান আল্লাহ পাক তিনি অন্যত্র ইরশাদ মুবারক করেন-
وَالَّذِيْنَ يَكْنِزُوْنَ الذَّهَبَ وَالْفِضَّةَ وَلَا يُنْفِقُوْنَـهَا فِيْ سَبِيْلِ اللهِ فَبَشِّرْهُمْ بِعَذَابٍ اَلِيْمٍ
অর্থ : “আর যারা সোনা-রূপা জমা করে, অথচ মহান আল্লাহ পাক উনার রাস্তায় তা ব্যয় করে না (অর্থাৎ তারা সম্পদের সম্মানিত যাকাত দেয় না) তাদেরকে সংবাদ দিন কষ্টদায়ক আযাবের।” (পবিত্র সূরা তওবা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৪)
মূলতঃ উপরোক্ত পবিত্র আয়াত শরীফদ্বয় পুঁজিবাদের ভিত্তিতে আঘাত হানে। উদ্বৃত্ত অর্থ জমা করে রাখা এবং জমাকৃত অর্থ আরো অধিক পরিমাণ অর্থ অর্থাৎ সুদ সংগ্রহে খাটানো যা পুঁজিবাদের মূল কথা। মহান আল্লাহ পাক তিনি এই সুদ প্রথাকে সমাজ থেকে সমূলে উৎপাটন করে যাকাত ব্যবস্থাকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্যেই মুসলমান উনাদেরকে আদেশ মুবারক করেছেন।
এ প্রসঙ্গে পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
يَـمْحَقُ اللهُ الرّبَا وَيُرْبِـيى الصَّدَقَاتِ
অর্থ : “মহান আল্লাহ পাক তিনি সুদকে ধ্বংস করে দেন এবং ছদক্বা অর্থাৎ সম্মানিত যাকাত উনাকে বৃদ্ধি করেন অর্থাৎ দান, ছদকা ও যাকাতদানকারীর সম্পদ বৃদ্ধি পায়।” সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ২৭৬)
তাই ক্যাপিটালিজম বা পুঁজিবাদ, যা ধনীকে আরো ধনী করে আর গরীবকে করে আরো গরীব, তার ধ্বংসাত্মক আগ্রাসন থেকে বাঁচতে হলে সমাজে যাকাত ব্যবস্থার কোন বিকল্পই নেই।
الْمُضْعِفُوْنَ মুদ্বইফূন শব্দ মুবারক উনার বিশ্লেষণ :
مُضْعِفُوْنَ শব্দটি বাবে اِفْعَالٌ-এর ওজনে اِضْعَافٌ মাছদার হতে اِسْمٌ فَاعِلٌ-এর ছীগাহ। বলা বাহুল্য যে, বাবে اِفْعَالٌ-এর বৈশিষ্ট্য হলো কোন কিছু ক্রমান্বয়ে সংঘটিত হওয়া। তাই مُضْعِفُوْنَ শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো- বৃদ্ধিকারী, দ্বিগুণকারী, বহুগুণকারী, বহুগুণবৃদ্ধিকারী, বেশি বেশি দানকারী, অতিরিক্ত দানকারী, অত্যধিক দানকারী, সীমাহীন দানকারী ইত্যাদি।
যেহেতু বাবে اِفْعَالٌ-এর বৈশিষ্ট্য হলো কোন কিছু ক্রমান্বয়ে সংঘটিত হওয়া। তাই যাকাতদাতা একদিকে যেমন নিজে সমৃদ্ধশীল হিসেবে পরিণত হন, তেমনি উক্ত যাকাতদাতা নিজের সমৃদ্ধশীল হওয়ার কারণে অপরকেও সমৃদ্ধশীল হিসেবে পরিণত করতে পারেন। আর এই সমৃদ্ধশীলতা শুধুমাত্র দুনিয়াতেই সীমাবদ্ধ নয় বরং দুনিয়া ও আখিরাত উভয়কালের জন্যে প্রযোজ্য। সুবহানাল্লাহ!
৪.       সম্মানিত যাকাত সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যবর্তী স্তম্ভ : সম্মানিত যাকাত সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার ৫টি রোকন বা স্তম্ভসমূহের মধ্যে ৩য় বা মধ্যবর্তী রোকন বা মূল ভিত্তি। পবিত্র ঈমান ও নামায উনাদের পরেই সম্মানিত যাকাত উনার স্থান।
যেমন পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ  اِبْنِ عُمَرَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بُنِىَ الْاِسْلَامُ عَلٰى خَـمْسٍ شَهَادَةِ اَنْ لَّٓا اِلٰهَ اِلَّا اللهُ وَاَنَّ مُـحَمَّدًا رَّسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَاِقَامِ الصَّلٰوةِ وَاِيْتَاءِ الزَّكٰوةِ وَالْـحَجِّ وَصَوْمِ رَمَضَانَ.
অর্থ : “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন- নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন- পবিত্র ইসলাম পাঁচটি বুনিয়াদ বা ভিত্তির উপর স্থাপিত। (১) ‘মহান আল্লাহ পাক তিনি ব্যতীত অন্য কোন ইলাহ বা রব নেই এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার হাবীব ও রসূল’- এ কথার সাক্ষ্য দেয়া। (২) সম্মানিত নামায কায়িম করা। (৩) সম্মানিত যাকাত আদায় করা। (৪) পবিত্র হজ্জ সম্পাদন করা। (৫) পবিত্র রমাদ্বান শরীফ উনার মাসে রোযা পালন করা।” (বুখারী শরীফ : কিতাবুল ঈমান : বাবু দু‘য়ায়ুকুম ঈমানুকুম : হাদীছ শরীফ নং ৮; মুসলিম শরীফ : কিতাবুল ঈমান : বাবু বাইয়ানি আরকানিল ইসলামি ওয়া দা‘য়ায়িমিহিল ইজ্বমি : হাদীছ শরীফ নং ১৬; নাসায়ী শরীফ : কিতাবুল ঈমানি ওয়া শরায়ি‘য়াহ : বাবু ‘আলা কাম বুনিয়াল ইসলাম : হাদীছ শরীফ নং ৫০০১; তিরমিযী শরীফ : কিতাবুল ঈমান ‘আন রসূলুল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম : বাবু মাজাআ বুনিয়াল ইসলামু ‘আলা খ¦ামস : হাদীছ শরীফ নং ২৬০৯)
উপরোক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, সম্মানিত যাকাত হচ্ছে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার ৩য় অর্থাৎ মধ্যবর্তী বুনিয়াদ বা ভিত্তি। সুতরাং প্রত্যেক মুসলমান যার যার ঘর সাদৃশ্য সম্মানিত দ্বীন ইসলাম মজবুত রাখতে হলে যাকাত নামক মধ্যবর্তী খুঁটি বা ভিত্তিকে অবশ্যই সুদৃঢ় করতেই হবে। মধ্যবর্তী খুঁটি বা ভিত্তি ছাড়া যেমন একটি ঘর সুদৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে পারে না। ঠিক তেমনি প্রত্যেক মুসলমানের যার যার সম্মানিত দ্বীন ইসলাম নামক ঘরও মধ্যবর্তী খুঁটি যাকাত ছাড়া কোন ভাবেই সুদৃঢ় থাকতে পারে না।
যাকাত প্রদান করুন


মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ মাদরাসা উনার একাউন্ট নাম্বার সমূহ-

Account no.1
Muhammadia Jamia Shareef Madrasa & yatimkhana

A/C-200007569
Sonali Bank Limited, Malibag Branch
Dhaka, Bangladesh



Account no.2
name:-MD. Mufizul Islam

A/C-1020335489001 Naya-paltan branch
IFIC Bank Limited, Dhaka, Bangladesh
Swift Code: IFICBDDH



Account no.3
name:-MD. Mufizul Islam

A/C-108101277050 Shantinaghar branch
Dutch Bangla Bank Limited, Dhaka, Bangladesh
Swift Code: DBBLBDDH



Account no.4
Dutch Bangla mobile Banking-017187407422

Account no.5
Bkash-(parsonal) 01718740742, 01876043934, 01990770065
Bkash-(Agent)- 01709672605



0 Comments: