গৃহপালিত পশুর যাকাত ফরয হওয়ার শর্তসমূহ ও নিছাব ।পর্ব-২১


Image result for যাকাতগৃহপালিত পশুর যাকাত ফরয হওয়ার শর্তসমূহ
১. নিছাব পরিমাণ হওয়া : গৃহপালিত পশুর যাকাত ফরয হওয়ার জন্যে নিছাব পরিমাণ পশুর মালিক হতে হবে। সাধারণভাবে উট ৫টি, গরু/মহিষ ৩০টি এবং ছাগল/ভেড়া/দুম্বা ৪০টি হলে যাকাত ফরয হয়। এ সংখ্যার কম হলে যাকাত ফরয হয় না।
২. পূর্ণ এক চন্দ্র বছর মালিকানায় থাকা : বছরে একবার গৃহপালিত পশুর যাকাত আদায় করতে হবে। আর আদায়ের সময় বাচ্চা মায়ের হিসাবের অন্তর্র্ভুক্ত হবে।
৩. ‘সায়েমা’ তথা বিচরণশীল হতে হবে : যে পশু বছরের অধিকাংশ সময় নিজেই বিচরণ করে খাদ্য গ্রহণ করে তাকে সায়েমা বলা হয়। অতএব বছরের অধিকাংশ সময় মালিক নিজে খাদ্য সংগ্রহ করে পশুকে খাওয়ালে সে পশুর উপর যাকাত ফরয নয়।
গৃহপালিত পশুর যাকাত উনার নিছাব
যে পরিমাণ পশু থাকলে সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার বিধান মুতাবিক পশুর যাকাত ফরয তাই পশুর যাকাত উনার নিছাব। সাধারণভাবে উট ৫, গরু, মহিষ ৩০ এবং দুম্বা, ছাগল, ভেড়া ৪০ সংখ্যায় পৌঁছলে উহাতে সম্মানিত যাকাত ফরয হয়। এ সংখ্যার কম হলে যাকাত ফরয হয় না।

এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَبِىْ سَعِيْدٍ الْـخُدْرِىِّ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَيْسَ فِيْمَا دُوْنَ خَـمْسِ ذَوْدٍ صَدَقَةٌ مِّنَ الْاِبِلِ.
অর্থ : “হযরত আবূ সা’ঈদ খুদরী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, পাঁচের কম সংখ্যক উটের উপর যাকাত নেই।” (বুখারী শরীফ : কিতাবুয যাকাত : বাবু যাকাতিল ওয়ারক্ব : হাদীছ শরীফ নং ১৪৪৭)
সুতরাং উপরের বর্ণনা থেকে দেখা যাচ্ছে যে, উটের সংখ্যা ৫টি বা ততোর্ধ্ব হলে উটের যাকাত হবে। এর কম হলে উটের যাকাত হবে না।

আর গরুর যাকাত সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ عَبْدِ اللهِ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ عَنِ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ فِىْ ثَلَاثِيْنَ مِنَ الْبَقَرِ تَبِيْعٌ اَوْ تَبِيْعَةٌ وَفِىْ اَرْبَعِيْنَ مُسِنَّةٌ‏.
অর্থ : “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, প্রতি ৩০টি গরুর ক্ষেত্রে একটি তাবী’ (১ বছর পূর্ণ হয়ে ২য় বর্ষে পদার্পনকারী এঁড়ে বাছুর) অথবা তাবীয়া’ (১ বছর পূর্ণ হয়ে ২য় বর্ষে পদার্পনকারী বকনা বাছুর) এবং প্রতি ৪০টি গরুর জন্যে একটি মুসিন্নাহ (২ বছর পূর্ণ হয়ে ৩য় বর্ষে পদার্পনকারী বাছুর) যাকাত হিসেবে দিতে হবে।” (তিরমিযী শরীফ : কিতাবুয যাকাত : বাবু মা-জা-আ ফী যাকাতিল বাক্বারি : হাদীছ শরীফ নং ৬২২; ইবনে মাজাহ শরীফ : কিতাবুয যাকাত : বাবু ছদাক্বতিল বাক্বারি : হাদীছ শরীফ নং ১৮০৪)
অন্য বর্ণনায় বর্ণিত রয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ بَعَثَنِي النَّبِىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِلَى الْيَمَنِ فَاَمَرَنِـىْ اَنْ اٰخُذَ مِنْ كُلِّ ثَلَاثِيْنَ بَقَرَةً تَبِيْعًا اَوْ تَبِيْعَةً وَمِنْ كُلِّ اَرْبَعِيْنَ مُسِنَّةً وَمِنْ كُلِّ حَالِـمٍ دِيْنَارًا اَوْ عِدْلَهٗ مَعَافِرَ.
অর্থ : “হযরত মুয়ায ইবনে জাবাল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাকে ইয়েমেনে (গভর্ণর করে) প্রেরণ করলেন এবং আদেশ মুবারক দিলেন, আমি যেন প্রতি ৩০টি গরুর জন্যে একটি ২ বছরের এঁড়ে বাছুর অথবা বকনা বাছুর; প্রতি ৪০টি গরুর জন্যে একটি ৩ বছরের বাছুর (যাকাত হিসেবে) এবং প্রত্যেক প্রাপ্ত বয়সের (জিম্মী) লোকের নিকট হতে এক দীনার (স্বর্ণ মুদ্রা) অথবা একই মূল্যের মাআফির নামক কাপড় (জিয্য়া হিসাবে) আদায় করি।” (তিরমিযী শরীফ : কিতাবুয যাকাত : বাবু মা-জা-আ ফী যাকাতিল বাক্বারি : হাদীছ শরীফ নং ৬২৩; নাসায়ী শরীফ : কিতাবুয যাকাত : বাবু যাকাতিল বাক্বারি : হাদীছ শরীফ নং ২৪৫০; ইবনে মাজাহ শরীফ : কিতাবুয যাকাত : বাবু ছদাক্বতিল বাক্বারি : হাদীছ শরীফ নং ১৮০৩)






গরুর যাকাত ছকের সাহায্যে বিষয়টিকে নিচে দেখানো হলো-
সংখ্যা  যাকাত হিসেবে প্রদানকৃত পশুর পরিমাণ ও বৈশিষ্ট্য
৩০-৩৯         ১টি তাবী’ (১ বছর পূর্ণ হয়ে ২য় বর্ষে পদার্পনকারী এঁড়ে বাছুর) অথবা ১টি তাবীয়া’ (১ বছর পূর্ণ হয়ে ২য় বর্ষে পদার্পনকারী বকনা বাছুর)
৪০-৫৯         ১টি মুসিন্নাহ (২ বছর পূর্ণ হয়ে ৩য় বর্ষে পদার্পনকারী বাছুর)
৬০-৬৯          ২টি তাবী’ অথবা ২টি তাবীয়া’
৭০-৭৯         ১টি তাবী’ ও ১টি মুসিন্নাহ অথবা ১টি তাবীয়া’ ও ১টি মুসিন্নাহ
৮০-৮৯         ২টি মুসিন্নাহ
৯০-৯৯          ৩টি তাবী’ অথবা ৩টি তাবীয়া’
১০০-১০৯      ২টি তাবী’ ও ১টি মুসিন্নাহ অথবা ২টি তাবীয়া’ ও ১টি মুসিন্নাহ
এরপর প্রতি ৩০টি গরুর ক্ষেত্রে ১টি তাবী’ অথবা ১টি তাবীয়া’; প্রতি ৪০টি গরুর ক্ষেত্রে ১টি মুসিন্নাহ যাকাত দিতে হবে।
সুতরাং উপরের বর্ণনা থেকে দেখা যাচ্ছে যে, গরুর সংখ্যা ৩০টি বা ততোর্ধ্ব হলে গরুর যাকাত হবে। এর কম হলে গরুর যাকাত হবে না।
আর উট ও ছাগলের যাকাত সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-
اَنَّ حَضْرَتْ اَنَسًا رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ حَدَّثَهٗ اَنَّ حَضْرَتْ اَبَا بَكْرٍ عَلَيْهِ السَّلَامُ كَتَبَ لَهٗ هٰذَا الْكِتَابَ لَمَّا وَجَّهَهٗ اِلَى الْبَحْرَيْنِ بِسْمِ اللهِ الرَّحْـمٰنِ الرَّحِيْمِ هٰذِهٖ فَرِيْضَةُ الصَّدَقَةِ الَّتِىْ فَرَضَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى الْمُسْلِمِيْنَ وَالَّتِىْ اَمَرَ اللهُ بِـهَا رَسُوْلَهٗ فَمَنْ سُئِلَهَا مِنَ الْمُسْلِمِيْنَ عَلٰى وَجْهِهَا فَلْيُعْطِهَا وَمَنْ سُئِلَ فَوْقَهَا فَلَا يُعْطِ فِىْ اَرْبَعٍ وَّعِشْرِيْنَ مِنَ الْاِبِلِ فَمَا دُوْنَـهَا مِنَ الْغَنَمِ مِنْ كُلِّ خَـمْسٍ شَاةٌ اِذَا بَلَغَتْ خَـمْسًا وَّعِشْرِيْنَ اِلٰى خَـمْسٍ وَّثَلَاثِيْنَ فَفِيْهَا بِنْتُ مَـخَاضٍ اُنْثٰى فَاِذَا بَلَغَتْ سِتًّا وَّثَلَاثِيْنَ اِلٰى خَـمْسٍ وَّاَرْبَعِيْنَ فَفِيْهَا بِنْتُ لَبُوْنٍ اُنْثٰى فَاِذَا بَلَغَتْ سِتًّا وَّاَرْبَعِيْنَ اِلٰى سِتِّيْنَ فَفِيْهَا حِقَّةٌ طَرُوْقَةُ الْـجَمَلِ فَاِذَا بَلَغَتْ وَاحِدَةً وَّسِتِّيْنَ اِلٰى خَـمْسٍ وَّسَبْعِيْنَ فَفِيْهَا جَذَعَةٌ فَاِذَا بَلَغَتْ يَعْنِى سِتًّا وَّسَبْعِيْنَ اِلٰى تِسْعِيْنَ فَفِيْهَا بِنْتَا لَبُوْنٍ فَاِذَا بَلَغَتْ اِحْدَى وَّتِسْعِيْنَ اِلٰى عِشْرِيْنَ وَّمِائَةٍ فَفِيْهَا حِقَّتَانِ طَرُوْقَتَا الْـجَمَلِ فَاِذَا زَادَتْ عَلٰى عِشْرِيٰنَ وَّمِائَةٍ فَفِىْ كُلِّ اَرْبَعِيْنَ بِنْتُ لَبُوْنٍ وَفِىْ كُلِّ خَـمْسِيْنَ حِقَّةٌ وَمَنْ لَّـمْ يَكُنْ مَّعَهٗ اِلَّا اَرْبَعٌ مِّنَ الْاِبِلِ فَلَيْسَ فِيْهَا صَدَقَةٌ اِلَّا اَنْ يَّشَاءَ رَبُّـهَا فَاِذَا بَلَغَتْ خَـمْسًا مِّنَ الْاِبِلِ فَفِيْهَا شَاةٌ وَفِىْ صَدَقَةِ الْغَنَمِ فِىْ سَائِمَتِهَا اِذَا كَانَتْ اَرْبَعِيْنَ اِلٰى عِشْرِيْنَ وَّمِائَةٍ شَاةٌ فَاِذَا زَادَتْ عَلٰى عِشْرِيْنَ وَّمِائَةٍ اِلٰى مِائَتَيْنِ شَاتَانِ فَاِذَا زَادَتْ عَلٰى مِائَتَيْنِ اِلٰى ثَلاَثِ مِائَةٍ فَفِيْهَا ثَلَاثٌ فَاِذَا زَادَتْ عَلٰى ثَلاَثِ مِائَةٍ فَفِىْ كُلِّ مِائَةٍ شَاةٌ فَاِذَا كَانَتْ سَائِمَةُ الرَّجُلِ نَاقِصَةً مِّنْ اَرْبَعِيْنَ شَاةً وَّاحِدَةً فَلَيْسَ فِيْهَا صَدَقَةٌ اِلَّا اَنْ يَّشَاءَ رَبُّـهَا وَفِىْ الرِّقَةِ رُبُعُ الْعُشْرِ فَاِنْ لَـمْ تَكُنْ اِلَّا تِسْعِيْنَ وَّمِائَةً فَلَيْسَ فِيْهَا شَىْءٌ اِلَّا اَنْ يَّشَاءَ رَبُّـهَا‏.
অর্থ : “হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি উনাকে বাহরাইনে প্রেরণকালে অত্র বিধানটি উনার জন্যে লিখে দেন- পরম করুণাময় অসীম দয়ালু মহান আল্লাহ পাক উনার নাম মুবারক স্মরণ করে। এটাই যাকাতের নিছাব-যা নির্ধারণ করেছেন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মুসলিমদের প্রতি এবং যা মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নির্দেশ মুবারক দিয়েছেন। মুসলিমদের মধ্যে যার নিকট হতে নিয়মানুযায়ী চাওয়া হয়, সে যেন তা আদায় করে দেয় আর তার চেয়ে অধিক চাওয়া হলে তা যেন আদায় না করে। ২৪ ও তার চেয়ে কম সংখ্যক উটের যাকাত বকরী দ্বারা আদায় করা হবে। প্রতি ৫টি উটে ১টি বকরী এবং উটের সংখ্যা ২৫ হতে ৩৫ পর্যন্ত হলে একটি মাদী বিনতে মাখায। ৩৬ হতে ৪৫ পর্যন্ত একটি মাদী বিনতে লাবূন। ৪৬ হতে ৬০ পর্যন্ত ষাঁড়ের পালযোগ্য একটি হিককা, ৬১ হতে ৭৫ পর্যন্ত একটি জাযা’আ, ৭৬ হতে ৯০ পর্যন্ত দুটি বিনতে লাবূন, ৯১টি হতে ১২০ পর্যন্ত ষাঁড়ের পালযোগ্য ২টি হিককা আর ১২০-এর অধিক হলে (অতিরিক্ত) প্রতি ৪০টিতে ১টি করে বিনতে লাবূন এবং (অতিরিক্ত) প্রতি ৫০টিতে ১টি করে হিককা। যার ৪টির বেশি উট নেই, সেগুলোর উপর কোন যাকাত নেই, তবে মালিক স্বেচ্ছায় কিছু দিতে চাইলে দিতে পারবে। কিন্তু যখন ৫-এ পৌঁছে তখন ১ট বকরী ওয়াজিব। আর বকরীর যাকাত সম্পর্কে- গৃহপালিত বকরী ৪০টি হতে ১২০টি পর্যন্ত ১টি বকরী। এর বেশি হলে ২০০টি পর্যন্ত ২টি বকরী। ২০০-র অধিক হলে ৩০০ পর্যন্ত ৩টি বকরী। ৩০০-র অধিক হলে প্রতি ১০০-তে ১টি করে বকরী। কারো গৃহপালিত বকরীর সংখ্যা ৪০ হতে ১টিও কম হলে তার উপর যাকাত নেই। তবে স্বেচ্ছায় দান করলে তা করতে পারে। রৌপ্যের যাকাত ৪০ ভাগের ১ ভাগ। ১৯০ দিরহাম হলে সেক্ষেত্রে যাকাত নেই, তবে মালিক স্বেচ্ছায় কিছু দিলে দিতে পারে।” (বুখারী শরীফ : কিতাবুয যাকাত : হাদীছ শরীফ নং ১৪৫৪)
উটের যাকাত ছকের সাহায্যে বিষয়টিকে নিচে দেখানো হলো-
সংখ্যা  যাকাত হিসেবে প্রদানকৃত পশুর পরিমাণ ও বৈশিষ্ট্য
৫-৯    ১টি ছাগল
১০-১৪ ২টি ছাগল
১৫-১৯ ৩টি ছাগল
২০-২৪          ৪টি ছাগল
২৫-৩৫         ১টি বিনতে মাখায (১ বছর পূর্ণ হয়ে ২য় বছরে পদার্পণকারী উষ্ট্রি)
৩৬-৪৫         ১টি বিনতে লাবূন (২ বছর পূর্ণ হয়ে ৩য় বছরে পদার্পণকারী উষ্ট্রি)
৪৬-৬০          ১টি হিক্কাহ (৩ বছর পূর্ণ হয়ে ৪র্থ বছরে পদার্পণকারী উষ্ট্রি)
৬১-৭৫          ১টি জায‘আহ (৪ বছর পূর্ণ হয়ে ৫ম বছরে পদার্পণকারী উষ্ট্রি)
৭৬-৯০         ২টি বিনতে লাবূন
৯১-১২০        ২টি হিক্কাহ
এরপর উটের সংখ্যা ১২০টির বেশি হলে প্রত্যেক ৪০টিতে একটি বিনতে লাবূন এবং প্রত্যেক ৫০টিতে একটি হিক্কাহ যাকাত দিবে।
১২১-১২৯      ৩টি বিনতে লাবূন
১৩০-১৩৯      ১টি হিক্কাহ ও ২টি বিনতে লাবূন
১৪০-১৪৯      ২টি হিক্কাহ ও ১টি বিনতে লাবূন
১৫০-১৫৯      ৩টি হিক্কাহ
১৬০-১৬৯      ৪টি বিনতে লাবূন
১৭০-১৭৯      ১টি হিক্কাহ ও ৩টি বিনতে লাবূন
১৮০-১৮৯      ২টি হিক্কাহ ও ২টি বিনতে লাবূন
১৯০-১৯৯      ৩টি হিক্কাহ ও ১টি বিনতে লাবূন
২০০-২০৯     ৪টি হিক্কাহ ও ৩টি বিনতে লাবূন
ছাগলের যাকাত ছকের সাহায্যে বিষয়টিকে নিচে দেখানো হলো-
সংখ্যা  যাকাত হিসেবে প্রদানকৃত পশুর পরিমাণ
৪০-১২০        ১টি ছাগল
১২১-২০০      ২টি ছাগল
২০১-৩০০     ৩টি ছাগল
এরপরে প্রতি ১০০ ছাগলে ১টি করে ছাগল যাকাত দিতে হবে।
সুতরাং উপরের বর্ণনা থেকে দেখা যাচ্ছে যে, উটের সংখ্যা ৫টি বা ততোর্ধ্ব হলে উটের যাকাত হবে। এর কম হলে উটের যাকাত হবে না। আর ছাগলের সংখ্যা ৪০টি বা ততোর্ধ্ব না হলে ছাগলের যাকাত হবে না।
গৃহপালিত পশুর যাকাত আদায়ের ক্ষেত্রে লক্ষণীয় বিষয়াবলী
গৃহপালিত পশুর মালিক কর্তৃক যাকাত বাবদ প্রদানকৃত ও যাকাত আদায়কারী কর্তৃক গৃহীত পশুর ক্ষেত্রে লক্ষ্যণীয় বিষয়াবলী নি¤œরূপ-
১. পশু দোষ-ত্রুটি মুক্ত হওয়া : রোগাক্রান্ত, অঙ্গহানী যুক্ত, ক্রয়-বিক্রয়ের অযোগ্য জীর্ণশীর্ণ পশু এবং যা দ্বারা কুরবানী বৈধ নয়, এমন পশু দ্বারা যাকাত আদায় করা জায়িয নয়। কেননা মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
يَآيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْآ اَنْفِقُوْا مِنْ طَيِّبَاتِ مَا كَسَبْتُمْ وَمِـمَّا اَخْرَجْنَا لَكُم مّنَ الْاَرْضِ ۖ وَلَا تَيَمَّمُوا الْـخَبِيْثَ مِنْهُ تُنْفِقُوْنَ وَلَسْتُمْ بِاٰخِذِيْهِ اِلَّآ اَنْ تُغْمِضُوْا فِيْهِ ۚ وَاعْلَمُوْآ اَنَّ اللهَ غَنِىٌّ حَـمِيْدٌ
অর্থ : “হে ঈমানদারগণ! তোমরা তোমাদের উপার্জিত হালাল সম্পদ হতে এবং যা আমি তোমাদের জন্যে যমীন হতে উৎপন্ন করেছি তা হতে দান করো। আর তা থেকে নিকৃষ্ট জিনিস ব্যয় করতে মনস্থ করো না। কেননা তা তোমরা কখনও গ্রহণ করবে না; তবে যদি তোমরা চোখ বন্ধ করে নিয়ে নাও। জেনে রেখো, মহান আল্লাহ পাক তিনি অভাবমুক্ত, প্রশংসিত।” (পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ২৬৭)
আর পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مُعَاوِيَةَ الْغَاضِرِىّ مِنْ غَاضِرَةِ قَيْسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ النَّبِىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثَلَاثٌ مَّنْ فَعَلَهُنَّ فَقَدْ طَعِمَ طَعْمَ الْاِيْـمَانِ مَنْ عَبَدَ اللهَ وَحْدَهٗ وَاَنَّهٗ لَآ اِلٰهَ اِلَّا اللهُ وَاَعْطٰى زَكٰوةَ مَالِهٖ طَيِّبَةً بِـهَا نَفْسُهٗ رَافِدَةً عَلَيْهِ كُلَّ عَامٍ وَلَا يُعْطِى الْـهَرِمَةَ وَلَا الدَّرِنَةَ وَلَا الْمَرِيْضَةَ وَلَا الشَّرَطَ اللَّئِيْمَةَ وَلٰكِنْ مِنْ وَسَطِ اَمْوَالِكُمْ فَاِنَّ اللهَ لَـمْ يَسْاَلْكُمْ خَيْرَهٗ وَلَـمْ يَأْمُرْكُمْ بِشَرّهِٖ‏.
অর্থ : “গাদিরাহ ক্বায়িসের অধিবাসী হযরত আবদুল্লাহ ইবনু মু‘আবিয়াহ আল-গাদিরী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তিন ধরণের লোক যারা এরূপ করবে, তারা পরিপূর্ণ ঈমানের স্বাদ গ্রহণ করবে- যিনি কেবলমাত্র মহান আল্লাহ পাক উনার ইবাদতে রত থাকেন এবং স্বীকার করেন যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি ছাড়া কোন সত্য ইলাহ নেই; যিনি প্রত্যেক বছর উনার মালের যাকাত হিসাবে উত্তম মাল প্রদান করেন এবং বৃদ্ধ বয়সের, রোগগ্রস্ত, ত্রুটিপূর্ণ, নিকৃষ্ট মাল প্রদান করেন না বরং মধ্যম মানের মাল প্রদান করেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনাদের নিকট তোমাদের সর্বোত্তম মাল চাননি এবং নিকৃষ্ট মাল প্রদান করতেও নির্দেশ দেননি।” (আবূ দাঊদ শরীফ : কিতাবুয যাকাত : বাবু ফী যাকাতিস সায়িমাতি : হাদীছ শরীফ নং ১৫৮২)
২. সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত কর্তৃক নির্ধারিত বয়সের হওয়া : যে বয়সের পশু দ্বারা যাকাত আদায়ের নির্দেশ দেয়া হয়েছে ঠিক সেই বয়সের পশু দ্বারাই যাকাত আদায় করতে হবে। কেননা এর চেয়ে কম বয়সের পশু গ্রহণ করা হলে তাতে গরীবদের হক নষ্ট ও ক্ষতি সাধিত হয়। আর বেশি বয়সের নেয়া হলে পশুর মালিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অতএব মালিকের নিকট সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত নির্ধারিত নির্দিষ্ট বয়সের পশু না থাকলে তার নিকট বিদ্যমান পশু দ্বারাই যাকাত আদায় করবে। তবে ক্ষতিপূরণ স্বরূপ সাথে ২টি ছাগল অথবা ২০ দিরহাম প্রদান করতে হবে।
এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-
اِنَّ حَضْرَتْ اَنَسًا رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ حَدَّثَهٗ اَنَّ حَضْرَتْ اَبَا بَكْرٍ عَلَيْهِ السَّلَامُ كَتَبَ لَهٗ فَرِيْضَةَ الصَّدَقَةِ الَّتِى اَمَرَ اللهُ رَسُوْلُهٗ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ بَلَغَتْ عِنْدَهٗ مِنَ الْاِبِلِ صَدَقَةُ الْـجَذَعَةِ وَلَيْسَتْ عِنْدَهٗ جَذَعَةٌ وَعِنْدَهٗ حِقَّةٌ فَاِنَّـهَا تُقْبَلُ مِنْهُ الْـحِقَّةُ وَيَـجْعَلُ مَعَهَا شَاتَيْنِ اِنِ اسْتَيْسَرَتَا لَهٗ اَوْ عِشْرِيْنَ دِرْهَـمًا وَمَنْ بَلَغَتْ عِنْدَهٗ صَدَقَةُ الْـحِقَّةِ وَلَيْسَتْ عِنْدَهُ الْـحِقَّةُ وَعِنْدَهُ الْـجَذَعَةُ، فَاِنَّـهَا تُقْبَلُ مِنْهُ الْـجَذَعَةُ، وَيُعْطِيهِ الْمُصَدِّقُ عِشْرِيْنَ دِرْهَـمًا اَوْ شَاتَيْنِ، وَمَنْ بَلَغَتْ عِنْدَهٗ صَدَقَةُ الْـحِقَّةِ وَلَيْسَتْ عِنْدَهٗ اِلَّا بِنْتُ لَبُوْنٍ فَاِنَّـهَا تُقْبَلُ مِنْهُ بِنْتُ لَبُوْنٍ وَيُعْطِىْ شَاتَيْنِ اَوْ عِشْرِيْنَ دِرْهَـمًا وَمَنْ بَلَغَتْ صَدَقَتُهٗ بِنْتَ لَبُوْنٍ وَعِنْدَهٗ حِقَّةٌ فَاِنَّـهَا تُقْبَلُ مِنْهُ الْـحِقَّةُ وَيُعْطِيْهِ الْمُصَدِّقُ عِشْرِيْنَ دِرْهَـمًا اَوْ شَاتَيْنِ وَمَنْ بَلَغَتْ صَدَقَتُهٗ بِنْتَ لَبُوْنٍ وَلَيْسَتْ عِنْدَهٗ وَعِنْدَهٗ بِنْتُ مَـخَاضٍ فَاِنَّـهَا تُقْبَلُ مِنْهُ بِنْتُ مَـخَاضٍ وَيُعْطِىْ مَعَهَا عِشْرِيْنَ دِرْهَـمًا اَوْ شَاتَيْنِ‏‏.
অর্থ : “হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি উনার কাছে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে যাকাত সম্পর্কে যে বিধান নাযিল হয়েছিল তা লিখে পাঠান- যে ব্যক্তির উপর উটের যাকাত হিসেবে জাযা’আ ফরয হয়েছে, অথচ তার নিকট জাযা’আহ (৪ বছর পূর্ণ হয়ে ৫ম বর্ষে পদার্পণকারী উষ্ট্রি) নেই বরং তার নিকট হিককা (৩ বছর পূর্ণ হয়ে ৪র্থ পদার্পণকারী উষ্ট্রি) রয়েছে, তখন হিককা গ্রহণ করা হবে। এর সাথে সম্ভব হলে (পরিপূরকরূপে) ২টি বকরী দিবে অথবা ২০ দিরহাম দিবে। আর যার উপর যাকাত হিসেবে হিককা ফরয হয়েছে, অথচ তার কাছে হিককা নেই বরং জাযা’আ রয়েছে, তখন তার নিকট হতে জাযা’আ গ্রহণ করা হবে। আর যাকাত উছূলকারী (ক্ষতিপূরণ স্বরূপ) মালিককে ২০ দিরহাম বা ২টি বকরী দিবে। যার উপর হিককা ফরয হয়েছে, অথচ তার নিকট বিনতে লাবূন (২ বছর পূর্ণ হয়ে ৩য় বর্ষে পদার্পণকারী উষ্ট্রি) রয়েছে, তখন বিনতে লাবূনই গ্রহণ করা হবে। তবে মালিক ২টি বকরী বা ২০ দিরহাম দিবে। আর যার উপর বিনতে লাবূন ফরয হয়েছে, কিন্তু তার কাছে হিককা রয়েছে, তখন তার হতে হিককা গ্রহণ করা হবে এবং আদায়কারী মালিককে ২০ দিরহাম বা ২টি বকরী দিবে। আর যার উপর বিনতে লাবূন ফরয হয়েছে কিন্তু তার নিকট তা নেই বরং বিনতে মাখায (১ বছর পূর্ণ হয়ে ২য় বছরে পদার্পণকারী উষ্ট্রি) রয়েছে, তবে তাই গ্রহণ করা হবে, অবশ্য মালিক এর সঙ্গে ২০ দিরহাম বা ২টি বকরী দিবে।” (বুখারী শরীফ : কিতাবুয যাকাত : বাবু মান বালাগাত ঈনদাহু ছদাক্বাতাহু বিনতি মাখাদ্বিন ওয়ালাইসাত ঈনদাহু : হাদীছ শরীফ নং ১৪৫৩)

নির্ধারিত বয়সের পশু না থাকলে ক্ষতি পূরণ হিসেবে বা অতিরিক্ত হিসেবে যাকাতদাতা যথাক্রমে যা প্রদান করবে বা পাবে তা ছকের সাহায্যে দেখানো হলো-
যাকাতদাতার উপর ফরয        যাকাতদাতার না থাকলে যা প্রদান করা যাবে    যাকাতদাতা সাথে অতিরিক্ত যা প্রদান করবে  উছূলকারী যাকাতদাতাকে যা প্রদান করবেন
জাযা’আহ (৪ বছর পূর্ণ হয়ে ৫ম বর্ষে পদার্পণকারী উষ্ট্রি)        হিককা (৩ বছর পূর্ণ হয়ে ৪র্থ পদার্পণকারী উষ্ট্রি)          ২টি বকরী অথবা ২০ দিরহাম   -
হিককা (৩ বছর পূর্ণ হয়ে ৪র্থ পদার্পণকারী উষ্ট্রি)         জাযা’আহ (৪ বছর পূর্ণ হয়ে ৫ম বর্ষে পদার্পণকারী উষ্ট্রি)          -        ২টি বকরী অথবা ২০ দিরহাম
বিনতে লাবূন (২ বছর পূর্ণ হয়ে ৩য় বর্ষে পদার্পণকারী উষ্ট্রি)     ২টি বকরী অথবা ২০ দিরহাম   -
বিনতে লাবূন (২ বছর পূর্ণ হয়ে ৩য় বর্ষে পদার্পণকারী উষ্ট্রি)     হিককা (৩ বছর পূর্ণ হয়ে ৪র্থ পদার্পণকারী উষ্ট্রি)          -        ২টি বকরী অথবা ২০ দিরহাম
বিনতে মাখায (১ বছর পূর্ণ হয়ে ২য় বছরে পদার্পণকারী উষ্ট্রি)   ২টি বকরী অথবা ২০ দিরহাম   -

যাকাত প্রদান করুন


মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ মাদরাসা উনার একাউন্ট নাম্বার সমূহ-

Account no.1
Muhammadia Jamia Shareef Madrasa & yatimkhana

A/C-200007569
Sonali Bank Limited, Malibag Branch
Dhaka, Bangladesh



Account no.2
name:-MD. Mufizul Islam

A/C-1020335489001 Naya-paltan branch
IFIC Bank Limited, Dhaka, Bangladesh
Swift Code: IFICBDDH



Account no.3
name:-MD. Mufizul Islam

A/C-108101277050 Shantinaghar branch
Dutch Bangla Bank Limited, Dhaka, Bangladesh
Swift Code: DBBLBDDH



Account no.4
Dutch Bangla mobile Banking-017187407422

Account no.5
Bkash-(parsonal) 01718740742, 01876043934, 01990770065
Bkash-(Agent)- 01709672605



0 Comments: