হুযুরপাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র জীবনী মুবারক । (পর্ব- ৭৫১-৯২৪) (ড)


পবিত্র মদীনা শরীফ উনার পবিত্রতা ও ফযীলত সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো বর্ণিত রয়েছে,
عن حضرت ابى بكرة رضى الله تعالى عنه عن النبى صلى الله عليه وسلم قال لايدخل المدينة رعب المسيح الدجال لها يومئذ سبعة ابواب على كل باب ملكان.
অর্থ: হযরত আবু বাকরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত।  তিনি আখিরী নবী, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে বর্ণনা করেন। আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, “পবিত্র মদীনা শরীফ উনার মধ্যে কানা দাজ্জালের প্রভাব পৌঁছবে না। তৎকালে পবিত্র মদীনা শরীফ উনার সাতটি দরজা মুবারক হবে এবং প্রত্যেক দরজা মুবারকেই দুইজন করে ফেরেশতা আলাইহিমাস সালাম মোতায়েন বা পাহারা দিবেন।” সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ, মিশকাত শরীফ)
হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে,
عن حضرت انس رضى الله تعالى عنه عن النبى صلى الله عليه وسلم قال اللهم اجعل بالمدينة ضعفى ماجعلت بمكة من البركة.
অর্থ: হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে বর্ণনা করেন। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এই দোয়া করেছেন- “হে মহান আল্লাহ পাক! পবিত্র মক্কা শরীফ উনার মধ্যে আপনি যে বরকত দান করেছেন। পবিত্র মদীনা শরীফ উনার মধ্যে  তার থেকে দ্বিগুণ বহুগুণ বরকত দান করুন।” (মুত্তাফাকুন আলাইহি, মিশকাত শরীফ)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো বর্ণিত রয়েছে,
عن رجل من ال الخطاب عن النبى صلى الله عليه وسلم قال من زارنى فتعمدا كان فى جوارى يوم القيمة ومن سكن المدينة وصبر على بلائها كنت له شهيدا وشفيعا يوم للقيمة ومن مات فى احد الحرمين بعثه الله من الامنين يوم القيمة.
অর্থ: খাত্তাব পরিবারের এক ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে বর্ণনা করেন। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, যে ব্যক্তি কেবল আমার যিয়ারত মুবারকের উদ্দেশ্যে পবিত্র মদীনা শরীফ এসে আমার যিয়ারত করবে, ক্বিয়ামতের দিন সে আমার পার্শ্বে থাকবে। আর যে পবিত্র মদীনা শরীফ বসবাস করার ইচ্ছা পোষণ করবে এবং সর্বপ্রকার কষ্টে ধৈর্যধারণ করবে ক্বিয়ামতের দিন আমি তার জন্য সাক্ষী বা সুপারিশকারী হবো এবং যে ব্যক্তি দুই হেরেম শরীফ উনাদের কোনো একটিতে ইন্তেকাল করবে ক্বিয়ামতের দিন তাকে মহান আল্লাহ পাক তিনি বিপদমুক্তদের অন্তর্গত করে উঠাবেন।” (মিশকাত শরীফ)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো বর্ণিত রয়েছে,
عن حضرت يحيى بن سعيد رضى الله تعالى عنه ان رسول الله صلى الله عليه وسلم كان جالسا وقبر يحفر بالمدينة فاطلع رجل فى القبر فقال بئس مضجع المؤمن فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم بئسما قلت قال الرجل انى لم ارد هذا انما اردت القتل فى سبيل الله فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم لامثل القتل فى سبيل الله ماعلى الارض بقعة احب الى ان يكون قبرى بها منها ثلث مرات.
অর্থ: “হযরত ইয়াহইয়া ইবনে সায়ীদ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত রয়েছে যে, একদা আখিরী নবী, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এক আসন মুবারক-এ বসে ছিলেন, তখন পবিত্র মদীনা শরীফ উনার একটি কবর খোঁড়া হচ্ছিলো। এক ব্যক্তি কবরে উঁকি মেরে দেখলো এবং বললো, মু’মিনের কি মন্দ স্থান ইহা! তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহ ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, আমি কত মন্দ কথাই না বললে! লোকটি বললো, ইয়া রসূল্লাল্লাহু, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এই উদ্দেশ্যে ইহা বলি নাই। আমার কথার উদ্দেশ্য হলো ওই মৃত ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার রাস্তায় বিদেশে কেন শহীদ হলেন না (পবিত্র মদীনা শরীফ উনার মধ্যে ইন্তেকাল করে এখানে কেন দাফন হইলো)? তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, হ্যাঁ, মহান আল্লাহ পাক উনার রাস্তায় শহীদ হওয়ার মতো কিছুই হইতে পারে না, তবে মনে রাখিও মহান আল্লাহ পাক উনার যমীনে এমন কোনো স্থান নেই- যাতে আমার রওজা শরীফ হওয়া, পবিত্র মদীনা শরীফ উনার অপেক্ষা আমার নিকট প্রিয়তম হতে পারে। ইহা তিনি তিনবার বললেন। (মিশকাত শরীফ)
হযরত ইমাম হাকিম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার ‘মুসতাদরিক’ গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
اللهم انك اخرجتنى من احب البقاع الى فاسكنى فى احب البقاع اليك.

অর্থ: “হে বারে ইলাহী মহান আল্লাহ পাক! আপনি আমাকে আমার সবচেয়ে বেশি প্রিয় স্থান থেকে বের করে নিয়ে এসেছেন, অতপর আপনি আমাকে আপনার নিকট সবচেয়ে বেশি প্রিয় স্থান মুবারক-এ বসবাস করান।”
অর্থাৎ পবিত্র মক্কা শরীফ উনার তো বেমেছাল ফাযায়িল-ফযীলত রয়েছে। তার পাশাপাশি পবিত্র মদীনা শরীফ উনার ফযীলত আরো বেমেছাল থেকে বেমেছালতম।
মূলতঃ পবিত্র মদীনা শরীফ উনার ফযীলত গোটা কুলকায়িনাতের উপরে। এ জন্যে ‘জযবুল কুলুব ইলা দিয়ারিল মাহবূব’ গ্রন্থে উল্লেখ রয়েছে,

اذا الحبيب لا يختار لحبيبه الا هو احب واكرم عنده.
অর্থ: “কেননা বন্ধু উনার বন্ধুর জন্য কেবল ওই মুবারক স্থানই মনোনীত করেছেন, যা উনার নিকট সবচেয়ে প্রিয়তম এবং সম্মানিত।” সুবহানাল্লাহ!
হযরত শায়েখ আব্দুল হক্ব মুহাদ্দিছ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি মূল্যবান নছীহত ও উপদেশ দানে বলেন, মহান আল্লাহ পাক উনার পরে সর্বদিক দিয়ে সর্বক্ষেত্রে প্রত্যেক বস্তু এবং প্রত্যেক ব্যক্তি গোটা মাখলুকাতের উপর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাক্বাম মুবারক এবং তিনিই হচ্ছেন সর্বশ্রেষ্ঠ। আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ব্যতীত আর যা কিছু আছে, পবিত্র মক্কা শরীফ হোক বা পবিত্র মদীনা শরীফ হোক অথবা অপর কোনো কিছু হোক এ সমস্ত বিষয়গুলোর মধ্যে ফযীলত সমান নয়। তবে ফযীলত কম-বেশি হওয়ার ক্ষেত্রে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সম্পর্ক বা নিছবতেই হবে সবকিছুর মাপকাঠি। অর্থাৎ আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে যাঁর যত বেশি নিছবত, তায়াল্লুক ও সম্পর্ক স্থাপিত হবে, উনার তত বেশি ফযীলত বাড়বে। সুবহানাল্লাহ!
কাজেই পবিত্র মদীনা শরীফ উনার ফাযায়িল- ফযীলত যা বলার অপেক্ষা রাখে না, কারণ এই পবিত্র মদীনা শরীফ উনার মাটি মুবারক-এ স্বয়ং যিনি আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আরাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি চলাফিরা মুবারক করেছেন তিনি সেখানে অবস্থান করছেন। সুবহানাল্লাহ!
পবিত্র মদীনা শরীফ উনার ফযীলত ও প্রশংসা প্রসঙ্গে ‘জযবুল কুলুব ইলা দিয়ারিল মাহবুব’ গ্রন্থে হযরত শাহ আব্দুল হক্ব মুহাদ্দিছ দেহলভী রহমতুল্লাহি আল্লাহ তিনি বলেন,
د رہیچ ذرہ نیت کہ نور محمدی ، ارطلعت وجوداونہ طالع است
“সৃষ্টি জগতের এমন কোনো কণা নেই? যার মধ্যে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ঝলক পড়েনি।
دریائےفیض جودالہی وجوداو ، انہار کائنات بوئےجملہ داجع ست
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র অস্তিত্ব মুবারক মহান আল্লাহ পাক উনার দয়া ও হাদিয়ার সাগর। গোটা সৃষ্টি আলমের সমস্ত নদ-নদী তথা সকলেই এ সাগরের দিকে প্রবাহিত।
نہ سپہر طاہرانر نفاس فیض ا وست"  اہل نکتہ چیش اہل نظرام واقع ست
 “সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্রতম নিঃশ্বাস মুবারক উনার ফায়েযের বরকতেই ৭ (সাত) আসমান পবিত্র হয়েছে। আলিম বা জ্ঞানীগণের নিকট এ রহস্য মুবারক বাস্তব।”

فردا لو  ائے حمد بدست محمد صلی اللہ علیہ وسلم است
متبوع اوست و جملہ جہا نش متابع است
“কাল হাশরের ময়দানে لو  ائے حمد মহান আল্লাহ পাক উনার প্রশংসা মুবারক উনার পতাকা, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পূতঃপবিত্র হাত মুবারক-এ থাকবে। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সকলের অনুসরণীয় সর্বোত্তম আদর্শ মুবারক। আর সমস্ত কায়িনাতবাসী উনারই অনুসারী।
بیاتا در مدینہ نور احمد صلی اللہ علیہ وسلم
بہ بینی از درود  یو ار  لا مع
হে (জিন-ইনসান) এখানে এসো যাতে তুমি পবিত্র মদীনা শরীফ উনার অলি-গলি মুবারক-এ এবং প্রাচীর মুবারক-এ সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নূর মুবারক দেখতে পাও।
جمال مصطفی صلی اللہ علیہ وسلم بے پر دہ بینی
چو خورشیدے کہ بے ابراست طالع
এখানে তুমি পর্দা বা আড়াল ছাড়াই সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বেমেছাল সৌন্দর্য মুবারক দেখতে পাবে; যেদিন মেঘবিহীন সূর্য উদীত হয়েছে।

بیا  ای کور  چشم تیرہ باطن + بہ بیں ہر گو شہ صد برہان ساطع
‘ওহে দৃষ্টিহীন এবং অন্তরান্ধ! অবলোকন করো, এখানে শত শত অর্থাৎ অসংখ্য অগণিত মু’জিযা বা অকাট্য প্রমাণ যে সমুজ্জল।
بروق شبہ سوز  انجا لو  ایح +  بدور دیں فرد زأنجا سواطع
সন্দেহ নিরসনকারী বিদ্যুৎ এখানে চমকিত আর পবিত্র দ্বীন উনাতে প্রকাশকারী তথা আলোদানকারী চন্দ্র এখানে উদীয়মান।
نجوم اہتد انجا فروزاں + شموس اصطفا أنجا طوالع
“এখানে হিদায়েতের নক্ষত্রসমূহ ঝলমল করে এবং মহান আল্লাহ পাক উনার মকবুল এবং মনোনীত বান্দাগণ এখানে সূর্যের মতো উদ্ভাসিত। সুবহানাল্লাহ!
چواز ناری کجا تو نور بینی  + بود  ہر کس با صل خویش راجع
তোমার প্রকৃতিতে যখন আগুন, তখন তুমি নূর বা আলো কোথায় দেখতে পাবে? কেননা প্রত্যেক মানুষ তার আসল ফিৎরাতের দিকে প্রত্যাবর্তন করে।
 چرابا خویش دشمن کشتئہ تو + چہ خودرا میزنی برسیف قاطع
হে অন্ধ! কেনো তুমি নিজের শত্রু হলে। কেন তুমি নিজকে ধারালো তরবারীর উপর নিক্ষেপ করলে।

ولیکن کے توانی دیدایں نور+ چہ نور فطرتت گردید ضایع
কিন্তু তুমি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ওই নূর মুবারক কিরূপে দেখতে পাবে? খোদা প্রদত্ত তোমার আসল নূর তো নষ্ট হয়ে গেছে।
نصیحت کردمت دیگر تو دانی+ فان الدین عند اللہ واقع
হযরত শায়েখ আব্দুল হক মুহাদ্দিছ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, আমি আপনাদের উপদেশ প্রদান করছি বাকী আপনাদের ইচ্ছা! কেননা পবিত্র দ্বীন ইসলাম উহা মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট প্রতিষ্ঠিত মহান আল্লাহ পাক উনার প্রিয়তম হাবীব সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রিয়তম দেশের কথা আগ্রহ সহকারে শ্রবণ করুন। হক্কানী-রব্বানী আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের কথা জেনে নিন এবং প্রেমিকদের ত্বরীকা হাত ছাড়া করবেন না।”
جا نب عشق عزینرا ستگزاس
মুহব্বতের তরীক্বা খুবই প্রিয়তম, এ ত্বরীক্বা কখনো ছেড়ে দিবেন না।
و من مذهبى حب الديار لاهلها، وللناس فيما يعشقون مذاهب
আমার আখলাক্ব বা চরিত্র মুবারক হলো এ পবিত্র মদীনা শরীফ তথা এ নগরীতে অবস্থানকারীকে মুহব্বত করা। তবে মুহব্বতের ক্ষেত্রে মানুষের ধরনও বিভিন্ন।”
ازہرچ حیرود لسخن دوست خوشتراست،
“বন্ধুর যে কোনো কথা বলা হোক না কেনো তা সুমধুর।
فا قول وبالله التوفيق
আমি মহান আল্লাহ পাক উনার তাওয়াক্কুল করে উক্ত কথাগুলো বললাম।”
স্মরণীয় যে, পবিত্র মদীনা শরীফ উনার ফাযায়িল-ফযীলত বেমেছালতম যা বলার অপেক্ষাই রাখে না। পবিত্র মদীনা শরীফ উনার ফযীলত সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে এসেছে, “মহান আল্লাহ পাক তিনি ও উনার হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্বয়ং এই পবিত্রতম শহর মুবারককে অত্যাধিক মুহব্বত করেছেন। যেমন বর্ণিত রয়েছে- সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র ছফর মুবারক থেকে প্রত্যাবর্তনের সময় পবিত্র মদীনা শরীফ উনার কাছাকাছি যখন পৌঁছে যেতেন তখন তাড়াতাড়ি পবিত্র মদীনা শরীফ পৌঁছে যাওয়ার খুশিতে সাওয়ারী মুবারক জোরে চালিয়ে দিতেন এবং চাদর মুবারক স্বীয় কাঁধ মুবারক থেকে সরিয়ে নিয়ে বলতেন-
هذه ارواح طيبة.
‘ইহা খুবই আনন্দ ও পুতঃপবিত্র বাতাস মুবারক’ অর্থাৎ হে আমার শ্বাস গ্রহণের ¯িœগ্ধ পূরবী বাতাস মুবারক আপনাকে আমি স্বাগতম জানাই।
শুধু তাই নয়, পবিত্র মদীনা শরীফ উনার যে সব ধুলি-বালি মুবারকগুলো উনার চেহারা মুবারকে লাগতো তা তিনি ঝেড়ে ফেলতেন না। এমনকি যদি কোনো ব্যক্তিকে দেখতেন যে তিনি ধুলি-বালি থেকে বেঁচে থাকার উদ্দেশ্যে মাথা মুবারক এবং মুখম-ল মুবারক আবৃত করছেন, তখন তিনি নিষেধ করতেন এবং ইরশাদ মুবারক করলেন, “পবিত্র মদীনা শরীফ উনার মাটি মুবারক শেফা” একারণেই পবিত্র মদীনা শরীফ উনার একটি নাম মুবারক  شافية (আরোগ্যদানকারী) বলা হয়েছে।
পবিত্র মদীনা শরীফ উনার আরেকটি ফযীলত এই যে, হযরত আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম  উনার থেকে বর্ণনা করেন যে, “পবিত্র মদীনাবাসী যে শয়তানের পুজা করবে না এ থেকে শয়তান নিরাশ হয়ে গেছে, তবে মানুষকে ফিতনা-ফাসাদে লিপ্ত করাতে সে কোশেশ করে থাকে।”
পবিত্র মদীনা শরীফ উনার ফাযায়িল-ফযীলত সম্পর্কে আরো বর্ণিত রয়েছে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি দোয়া মুবারক করতেন যে, আমার পবিত্র বিছাল শরীফ যেনো পবিত্র মদীনা শরীফ উনার মধ্যে হয়। একইভাবে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম ও আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারাও পবিত্র মদীনা শরীফ উনার মধ্যে পবিত্র বিছাল শরীফ-এর ইচ্ছা বা আকাঙ্খা প্রকাশ করেছেন এবং দোয়া করেছেন।  সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন,
اللهم لا تجعل منايانا.
“হে বারে ইলাহী মহান আল্লাহ পাক! আপনি পবিত্র মক্কা ভূমিতে আমাদের পবিত্র বিছাল শরীফ দিবেন না।”

 অপর এক পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে এসেছে, “সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, পৃথিবীতে এমন কোনো স্থান নেই, যে স্থানকে আমি আমার রওজা শরীফ উনার জন্য পছন্দ করি, একমাত্র পবিত্র মদীনা শরীফ ব্যতীত।
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে এসেছে, হযরত উমর ইবনুল খত্তাব আলাইহিস সালাম তিনি প্রায়ই এ দোয়া করতেন-
اللهم ارزقنى شهادتى فى سبيلك واجعل موتى فى بلد رسولك  صلى الله عليه و سلم.
“হে মহান আল্লাহ পাক! আপনার পথে শাহাদত নসীব করুন এবং আপনার হাবীব সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র শহর (পবিত্র মদীনা শরীফ) উনার মধ্যে পবিত্র বিছাল শরীফ নসীব করুন।”
বর্ণিত রয়েছে, হযরত ইমাম মালিক রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি একবার ব্যতীত আর হজ্জ মুবারক করেননি। পবিত্র মদীনা শরীফ ছাড়া অন্যস্থানে ইন্তিকাল হওয়ার ভয়ে ফরয হজ্জ আদায় করার পর তিনি আর কখনো পবিত্র মক্কা শরীফ উনার মধ্যে গমন করেননি। তিনি সারাজীবন পবিত্র মদীনা শরীফ উনার মধ্যে অতিবাহিত করেন ও সেখানেই পবিত্র বিছাল শরীফ গ্রহণ করেন এবং পবিত্র মদীনা শরীফ উনার মধ্যেই উনাকে দাফন মুবারক করা হয়। সুবহানাল্লাহ! (জযবুল কুলূব ইলা দিয়ারিল মাহবূব)
পবিত্র মদীনা শরীফ উনার পুতঃপবিত্র ছিফতী নাম মুবারক অসংখ্য ও অগণিত। যা উনার বেমেছাল মর্যাদা-মর্তবা, ফাযায়িল-ফযীলত প্রকাশ করে।
উল্লেখ্য যে, কোন বস্তুর নামের আধিক্য তার সর্বোচ্চ মর্যাদা ও মহত্বের এক অনন্য প্রমাণ। যেমন মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পুতঃপবিত্র ছিফতী লক্বব বা ইসম মুবারকসমূহের আধিক্য উনার তামাম সৃষ্টির উপর সুমহান সর্বোচ্চ মর্যাদা ও মহত্বেরই সুপ্রমাণ।
স্মরণীয় যে, সারা কায়িনাতের মধ্যে পবিত্র মদীনা শরীফ তিনি ব্যতীত এমন কোনো স্থান বা শহর নেই যার এতো অধিক নাম রয়েছে। পবিত্র মদীনা শরীফ উনার ছিফতী নাম মুবারক উনাদের প্রতি লক্ষ্য করলেই উনার বেমেছাল মর্যাদা-মর্তবা সহজেই বুঝা যায়।
‘দিয়ারিল মাহবুব’ গ্রন্থে হযরত শায়েখ আব্দুল হক্ব মুহাদ্দিছ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি পবিত্র মদীনা শরীফ উনার পুতঃপবিত্র ছিফতী নাম মুবারক উল্লেখ করেছেন,
১। طابة (ত্ববাহ)
২। طيبة (ত্বইবাহ)
৩। طيبة (ত্বইয়্যাবাহ)
৪। طائبة (ত্বয়িবাহ)
উপরোক্ত পবিত্র ইসম বা ছিফতী নাম মুবারক পবিত্র মদীনা শরীফ উনার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়েছে। পবিত্র মদীনা শরীফ উনার শান মুবারকে উক্ত লফয বা শব্দ মুবারক ব্যবহার হয়েছে এ জন্য যে,
প্রথমতঃ পবিত্র মদীনা শরীফ তিনি কুফর ও শিরক-এর অপবিত্রতা থেকে পুতঃপবিত্র।
দ্বিতীয়তঃ পবিত্র মদীনা শরীফ উনার আবহাওয়া মুবারক মানুষের প্রকৃত আখলাক বা স্বভাবের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ও মনোমুগ্ধকর।
তৃতীয়তঃ পবিত্র মদীনা শরীফ উনার আবহাওয়া মুবারক পবিত্র ও সুগন্ধিযুক্ত। শুধু তাই নয় তথাকার প্রত্যেক জিনিসপত্র মুবারক পবিত্র ও সুবাসযুক্ত। সুবহানাল্লাহ!
চতুর্থতঃ সকলেরই অভিমত যে, পবিত্র মদীনা শরীফ উনার অধিবাসীগণ আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র রওজা মুবারক এমনকি দরজা মুবারক, জানালা মুবারক এবং দেয়াল মুবারক থেকে এমন এক সুঘ্রান মুবারক লাভ করেন যা অপর কোনো বস্তুতে পাওয়া যায় না।
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কোন কোন আশিক ও মুহিব্বীন এই মুবারক সুঘ্রানের স্বাদ গ্রহণ করেছেন। হযরত আব্দুল্লাহ আত্তার রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন,
بطيب رسول الله صلى الله عليه و سلم طاب نسيمها فما للمسك الكافور و الصندل الرطب
অর্থ: “সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বেমেছাল সুঘ্রান মুবারক উনার ছোয়া পেয়ে তথাকার বাতাস সুবাশিত হয়েছে। ইহা এমন এক সুঘ্রাণ মুবারক যা মিশক, কার্পূর এবং চন্দনের খুশবুকেও হার মানিয়ে দিয়েছে। সুবহানাল্লাহ!
হযরত শিবলী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, পবিত্র মদীনা শরীফ উনার মাটি মুাবরকে এমন এক বেমেছাল সুঘ্রান মুবারক বিদ্যমান রয়েছে, যা মিশক আম্বরেও পাওয়া যায় না। আশ্চর্যের কথা এই যে, (প্রকৃত পক্ষে আশ্চর্য হওয়ার কিছুই নেই) যে স্থান মুবারক মহান আল্লাহ পাক উনার প্রিয় হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শ্বাস-প্রশ্বাস মুবারকের সুঘ্রান মুবারক লাভ করেছেন। সেই সুঘ্রানের তুলানায় মিশক আম্বরের সুগন্ধ মূল্যহীন।
در اں زمیں کہ نیسمے و زد زطرہ دوست
 چہ جائے دم زدن نافہا ئے تاتاریست.
অর্থ: “বন্ধু উনার যুলফ (নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাথা মুবারক উনার চুল মুবারক বিশেষ) উনার সংস্পর্শ মুবারক লাভ করে যে স্থান মুবারক উনার বাতাস মুবারক প্রবাহিত হয় সে স্থান মুবারক উনার বাতাস মুবারক উনার খুশবু মুবারক উনার মোকাবিলায় তাতারী মৃগ নাভীর খুশবুর কি মর্যাদা থাকতে পারে?
পবিত্র মদীনা শরীফ উনার যতগুলো সুঘ্রানযুক্ত বস্তু যেমন ফুল রয়েছে উনার সুঘ্রান এতোই উৎকৃষ্ট যে, অপরাপর স্থানের কোনো ফুলের মধ্যে এমন সুঘ্রান নেই। বিশেষ করে গোলাপ ফুল সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সম্পর্কিত বলে বিখ্যাত।
زنسیم جاں فزایت تن مردہ زندہ گردد
زکدام باغے ای گل کہ چنیں خوش است بویت
অর্থ: আপনার সংস্পর্শে আসা জীবনী শক্তিবর্ধক বাতাস মৃত ব্যক্তিকে জীবন্ত করে তোলে। হে অপরূপ পুস্প! আপনি কোন বাগানের ফুল যে, আপনার খুশবু এতোই চিত্তাকর্ষক!
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
ان الله امرنى ان اسمى المدينة طابة.
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাকে জানিয়ে দিয়েছেন আমি যেনো পবিত্র মদীনা শরীফ উনার নাম মুবারক ‘ত্ববা’ রাখি।”
পবিত্র তাওরাত শরীফ উনার মধ্যে পবিত্র মদীনা শরীফ উনার নাম মুবারক ‘ত্ববা’ ত্বয়্যিবা এবং ত্বইবা বলে বর্ণিত রয়েছে।
এজন্য হযরত ইমাম মালিক রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সম্মানিত মাযহাব মতে যে ব্যক্তি পবিত্র মদীনা শরীফ উনার মাটি মুবারক উনাকে খুশবুবিহীন ধারনা করে অথবা তথাকার আবহাওয়া মুবারক উনাকে স্বাস্থ্যের অনুপযোগী বলে মনে করে তাকে تعزير ইসলামী শরীয়ত নির্ধারিত শাস্তি প্রদান ও বন্দি করে রাখা ওয়াজিব। খালিছ তওবা না করা পর্যন্ত তাকে ছেড়ে দেয়া যাবে না।
আনুষ্ঠানিক পবিত্র নুবুওওয়াত শরীফ প্রকাশ উনার পূর্বে পবিত্র মদীনা শরীফ উনার নাম মুবারক ছিলো ‘ইয়াছরিব’। পরবর্তীতে ‘ইয়াছরিব’ উনার পরিবর্তে পবিত্র মদীনা শরীফ উনার নাম মুবারক রাখা হয় পবিত্র মদীনা শরীফ।
‘তারিখে বুখারী শরীফ’ উনার মধ্যে এসেছে, “সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “যে ব্যক্তি একবার ইয়াছরিব বলবে তার এ অবৈধ উক্তির জন্য দশবার পবিত্র মদীনা শরীফ বলা উচিত।”
হযরত আহমদ আবূ ইয়ালা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত, “যে ব্যক্তি পবিত্র মদীনা শরীফ উনার নাম ইয়াছরিব বলবে তার ইস্তেগফার করা উচিত। কেননা পবিত্র মদীনা শরীফ উনার নাম মুবারক ‘ত্ববা’।”
৫। এই পবিত্র শহর উনার নাম মুবারকসমূহ উনার মধ্যে ارض الله (মহান আল্লাহ পাক উনার যমীন)।
৬। ارض الهجرة (পবিত্র হিজরত উনার স্থান মুবারক)। যেমন পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
اْ أَلَمْ تَكُنْ أَرْضُ اللّهِ وَاسِعَةً فَتُهَاجِرُواْ فِيهَا
অর্থাৎ “মহান আল্লাহ পাক উনার যমীন কি প্রশস্ত ছিলো না, যেখানে তোমরা হিজরত করতে পারো।” অর্থাৎ অত্র পবিত্র আয়াত শরীফ উনার দ্বারা উক্ত নাম মুবারকদ্বয় উনাদের সমর্থন পাওয়া যায়, আর উক্ত নাম মুবারক উনার মাধ্যমে পবিত্র মদীনা শরীফ উনার সম্মান প্রকাশ পায়।
৭। اكالة البلدان (আক্কালাতুল বুলদান) অর্থাৎ সর্বশ্রেষ্ঠ শহর মুবারক।
৮। اكالة القرى (আক্কালাতুল কুরা) যমীনের সমস্ত শহর ও স্থান মুবারকের মধ্যে প্রাধান্য লাভের ফলে উক্ত দু’নাম মুবারকে পবিত্র মদীনা শরীফ উনাকে অভিহিত করা হয়েছে বলে বর্ণিত রয়েছে। যেমন মূল নগরী হওয়ার কারণে পবিত্র মক্কা শরীফ উনাকে ام القرى (উম্মুল কুরা) অর্থাৎ শহরসমূহের মা বলা হয়েছে। ইমাম মুজতাহিদগণ বলেন, উম্মুল কুরা থেকে এ শব্দ মুবারক দু’টি উনাদের মধ্যে পূর্ণতা অধিক। উম্মুল বা মা হওয়ার দ্বারা অন্যান্য শহরকে নিশ্চিহ্ন হওয়া বুঝায় না। কিন্তু اكل (আক্বালুন) শব্দ মুবারক দ্বারা অপরাপর সমস্ত শহরকে নিশ্চিহ্ন করে স্বীয় প্রাধান্য বিস্তার করাকেই বুঝায়।
৯। ايمان (ঈমান) যা পবিত্র মদীনা শরীফ উনার অন্যতম নাম মুবারক। পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
وَالَّذِينَ تَبَوَّؤُوا الدَّارَ وَالْإِيمَانَ
অর্থ: “যাঁরা পবিত্র মদীনা শরীফ উনার মধ্যে বসতি স্থাপন করেছেন এবং ঈমানকে আঁকড়িয়ে ধরেছেন।” অর্থাৎ পবিত্র মদীনা শরীফ উনাকে এ নামে অভিহিত করার কারণ এই যে, এ পবিত্র আয়াত শরীফখানা পবিত্র মদীনাবাসী হযরত আনছার ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের ফাযায়িল-ফযীলতের উপর নাযিল হয়েছে। তারপরও এ পবিত্র শহর হচ্ছে ঈমানের উৎস এবং কেন্দ্র বিন্দু। মূলত এই পবিত্র মদীনা শরীফ উনার থেকেই ঈমান বের হয়েছে এবং উনার দিকেই তা প্রত্যাবর্তন করবে।
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত হয়েছে, “সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন পবিত্র ঈমান উনার ফেরেশতা যিনি ঈমানদার এবং ঈমানদার বা বিশ্বাসীদের অন্তরে ভালো কথা ঢেলে দেন এবং লজ্জার ফেরেশতা উভয়েই ওয়াদা করেছেন যে, উনারা পবিত্র মদীনা শরীফ উনার মধ্যে অবস্থান করবেন এবং কখনো পবিত্র মদীনা শরীফ উনার বাইরে থাকবেন না।” এ ছিফত মুবারক দুটি পবিত্র মদীনা শরীফ উনার সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
الحياء من الايمان অর্থ: “লজ্জাশীলতা পবিত্র ঈমানের অঙ্গ।”
১০। بر (বাররা), ১১। بار (বার), ১২। بره (বাররাহ), ১৩। بارة (বারাহ) এই লক্বব বা শব্দ মুবারক দ্বারা পবিত্র মদীনা শরীফ উনাকে বুঝানো হয়েছে। মূলত, পবিত্র মদীনা শরীফ যে বরকত এবং কল্যানর কেন্দ্রভূমি তাতে কোনো সন্দেহের অবকাশ নেই। সুবহানাল্লাহ!
১৪। بلد (বালাদ) যেমন পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
لَا أُقْسِمُ بِهَذَا الْبَلَدِ
অর্থ: “পবিত্র এ শহর উনার ক্বসম করে বলছি।” অর্থাৎ অনেক তাফসীরকারকগণ অত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে বালাদ দ্বারা পবিত্র মদীনা শরীফ উনাকে উল্লেখ করেছেন। কেননা, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এই পবিত্র মদীনা শরীফ উনার মধ্যে তাশরিফ নিয়ে এই শহরকে ধন্য করেছেন।
১৫।
 بيت رسول الله صلى الله عليه وسلم
(মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হুজরা শরীফ)।
পবিত্র মক্কা শরীফ উনাকে যেমন بيت الله ‘বাইতুল্লাহ’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে সেভাবে পবিত্র মদীনা শরীফ উনাকে
بيت رسول الله صلى الله عليه وسلم
অর্থ মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র হুযরা শরীফ বলা হয়েছে।
زہے سعادت آں بندئہ کہ کرد نزول
گہے بہ بیت خدا وگہے بہ بیب رسول
অর্থ: “ওই বান্দা কতই ভাগ্যবান, যিনি কখনো মহান আল্লাহ পাক উনার এবং কখনো সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ঘর মুবারক উনার মেহমান হন।
১৬। جابرة (জাবিরাহ) ১৭। جبارة (জাবারাহ), ১৮। جبارة (জাব্বারাহ)এ
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
للمدينة عشرة اسماء.
“মদীনা শরীফ উনার দশটি নাম মুবারক রয়েছে।” আর পবিত্র মদীনা শরীফ উনাকে উক্ত নাম মুবারকে অভিহিত করা সম্পর্কে কয়েকটি কারণ রয়েছে। جبر শব্দ মুবারককে ‘পূর্ণ করে দেয়ার’ অর্থে নেয়া হলে এটা স্পষ্ট যে, পবিত্র মদীনা শরীফ উনার মধ্যে ফকীর, গরীব এবং ভগ্ন হৃদয়ের লোকদের সব ধরনের অভাব মোচন হয় এবং চাহিদা পূরণ হয়। আর প্রভাব এবং প্রাধান্যের অর্থ নেয়া হলে তাতেও কোনো অসুবিধা নেই। কারণ এখানে অহংকারীদের অহংকার চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যায় এবং তারা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার আনুগত্য স্বীকারে বাধ্য হয়। এ বর্ণনাসহ আরো কয়েকটি বর্ণনায় প্রথমোক্ত নাম মুবারক দু’টির উল্লেখ পাওয়া যায়। আর جبارة (জাব্বারাহ) বর্ণনাটি ‘কিতাবুন নাওয়াহী’ প্রণেতা পবিত্র তাওরাত শরীফ উনার থেকে উদ্ধৃত করেছেন। আর উক্ত শব্দ মুবারক দ্বারা পবিত্র মদীনা শরীফ উনাকে বুঝানো হয়েছে।
১৯। مجبورة (মাজবূরাহ) পবিত্র মদীনা শরীফ উনার একটি নাম মুবারক। অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক উনার ইচ্ছা মোতাবিক সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যমীনে অবস্থানকালীন এবং পবিত্র বিছাল শরীফ উনার পরে এই পবিত্র শহর মুবারকে অবস্থান করেন।
২০। جزيرة العرب (জাযীরাতুল আরব) কোনো কোনো মুহাদ্দিছীনে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা বলেছেন ইহা পবিত্র মদীনা শরীফ উনার একটি নাম মুবারক। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে।
اخرجوا المشركين من جزيرت العرب.
অর্থ: “(সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন) জাযীরাতুল আরব তথা পবিত্র মদীনা শরীফ উনার মধ্য থেকে কাফির-মুশরিকদের বের করে দাও।” তবে কোনো কোনো মুহাদ্দিছীনে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা ব্যাখ্যা করেছেন এখানে জায়ীরাতুল আরব বলতে সমগ্র হিজাজকে বুঝায়।
২১। محبة (মুহিব্বাহ), ২২। حبيبة (হাবীবাহ),
২৩। محبوبة (মাহবূবাহ) এ সম্মানীত নাম মুবারকগুলো পবিত্র মদীনা শরীফ উনার নাম মুবারক। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
اللهم حبب علينا المدينة كحبنا مكة.
অর্থাৎ “আমরা পবিত্র মক্কা শরীফ উনাকে যেভাবে মুহব্বত করি তদ্রƒপ পবিত্র মদীনা শরীফ উনার মুহব্বত আমাদের অন্তরে ঢেলে দিন।” এই পবিত্র হাদীছ শরীফখানা উক্ত নাম মুবারক উনার সমর্থক।
২৪। حرم (হিরাম)
২৫।
 حرم رسول الله صلى الله عليه وسلم.
(হিরামু রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পবিত্র ‘মুসলিম শরীফ’ উনার মধ্যে উল্লেখ রয়েছে, المدينة حرم তথা পবিত্র মদীনা শরীফ হচ্ছে হারাম বা সম্মানিত। অপর এক পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো এসেছে,
حرم حضرت ابراهيم عليه السلام مكة وحرمى المدينة.
অর্থ: হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার হারম পবিত্র মক্কা শরীফ এবং আমার হারম পবিত্র মদীনা শরীফ।
২৬। حسنة (হাসানাহ) অধিক সংখ্যক বাগান, পানির ঝর্ণা, প্রশস্ত মাঠ, বহু সংখ্যক গম্বুজ, দালান এবং উঁচু উঁচু পাহাড় পবিত্র মদীনা শরীফ উনাকে অপরূপ শোভায় সুশোভিত করায় এ নাম মুবারকে অভিহিত করা হয়েছে। এছাড়া সর্বত্তোম মুবারক দিকটি হলো, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং উনার পুতঃপবিত্র আহাল পাক আলাইহিমুস সালাম, হযরত উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালামগণ এবং হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের অবস্থান মুবারক তার কারণেই উক্ত নাম মুবারকে অভিহিত করা হয়েছে। কিতাবে উল্লেখ রয়েছে,
عرف من ذات و وجد من عرف.
“যে ব্যক্তি মুহব্বতের স্বাধ গ্রহণ করেছে সে বন্ধুর পরিচয় লাভ করেছে। আর যে পরিচয় পেয়েছে সে কৃতকার্য হয়েছে।”
ذوق ایں را نشنا سی بخداتا پخشی
অর্থ: মুহব্বতের শরবতের স্বাদ গ্রহণ করবে না যতক্ষন তুমি এ শরবতের তৃপ্তি ও আনন্দ উপলব্ধি করতে পারবে না। মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম। রূহানী আনন্দ এবং খুশি যা মুহব্বতের দ্বারা লাভ করা যায়, তা বাদ দিলেও প্রকৃতি সৌন্দর্য ও শোভা যা এ শহর উনার মধ্যে দৃষ্টি সোচর হয়, তা অপর কোন শহরে দৃষ্টি গোচর হয় না বা শুনাও যায় না।
অবশ্য কোন কোন স্থানে কিছু কিছু এ নূর মুবারক উনার ঝলক পাওয়া যায় তা মূলত এ শহর তথা পবিত্র মদীনা শরীফ উনারই বরকত। যেমন দিল্লী। কেননা এ মহান দরবার শরীফ-এ বিশিষ্ট আলিমগণ ও গোলামরা তথায় শায়িত আছেন।
ہر کجا نوریست تا باں باکمال
ظاہراست از افتاب ایں جمال
যে কোন স্থানে কোন নূরের ঝলক দ্বীপ্তিমান। উহা হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সৌন্দর্যের সূর্য থেকেই বিচ্ছূরিত। সুবহানাল্লাহ!
২৭। خيرة (খাইয়ারাহ) তাশদীদের সাথে।
২৮। خيرة (খাইরাহ) যবরের সাথে। এ নাম মুবারকে অভিহিত হওয়ার কারণ এই যে, পবিত্র মদীনা শরীফ দুনিয়া ও আখিরাতের সমস্ত কল্যানের কেন্দ্র।
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
المدينة خيرلهم لوكانوا يعلمون
অর্থ: “পবিত্র মদীনা শরীফ উনার মধ্যে অবস্থান উনাদের জন্য অধিক কল্যাণকর যদি উনারা এ কথাটি বুঝতে পারতেন।”
অত্র পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে যে বিষয়টি বলা হয়েছে তা হলো, পবিত্র মদীনা শরীফ উনার মধ্যে অবস্থান করা মুসলমান উনাদের জন্য বেমেছাল খায়ের বরকত রয়েছে। কারণ, এই পবিত্র মদীনা শরীফ উনার মধ্যে যিনি নবী আলাইহিস সালাম উনাদের নবী, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এ মুবারক শহরে অবস্থান করছেন। সুবহানাল্লাহ! যিনি হচ্ছেন স্বয়ং রহমাতুল্লিল আলামীন (সারা আলমের জন্য রহমত)। আর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন ক্বসিম বা বণ্টনকারী। এই পবিত্র মদীনা শরীফ উনার মধ্য থেকে সমস্ত নিয়ামত, বরকত, রহমত তথা সবকিছুই বণ্টিত হয়ে থাকে।
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عن حضرت معاوية رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم من يرد الله به خيرا يفقهه فى الدين وانما انا قاسم والله يعطى (متفق عليه)
অর্থ: হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি যার ভালাই চান উনাকেই পবিত্র দ্বীনের ছহীহ সমঝ দান করেন। নিশ্চয়ই আমি বণ্টনকারী আর মহান আল্লাহ পাক তিনি হচ্ছেন দানকারী বা সুমহানদাতা।” (পবিত্র বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ, মিশকাত শরীফ ৩২ পৃষ্ঠা)
কাজেই বলার অপেক্ষা রাখে না যে, পবিত্র মদীনা শরীফ হচ্ছে আসমান-যমীন, আরশ-কুরসী, বেহেশত তথা কায়িনাতের সমস্ত কিছু থেকে শ্রেষ্ঠতম, কল্যানকর।
২৯। دار الابرار (দারুল আবরার)
৩০। دار الاخيار (দারুল আখইয়ার)
৩১। دار الاسلام (দারুল ইসলাম)
৩২। دار السنة (দারুস সুন্নাহ)
৩৩। دار الايمان (দারুল ঈমান)
৩৪। دار الفتح (দারুল ফাতহ)
৩৫। دار الهجرة (দারুল হিজরত)
৩৬। قبة الاسلام (কুব্বাতুল ইসলাম)

0 Comments: