৫৬৩ নং- সুওয়াল :মসজিদে সানী জামাআত মাকরূহে তাহরীমী। প্রশ্ন হচ্ছে, মসজিদের বারান্দায় সানী জামাআত করা যাবে কিনা?


সুওয়াল : মাসিক মঈনুল ইসলাম নভেম্বর-৯৫ইং সংখ্যায় নিম্নলিখিত জিজ্ঞাসা ও তার সমাধান ছাপানো হয়-
জিজ্ঞাসা : মাসিক মুঈনুল ইসলামের বিগত কোন একটি সংখ্যায় দেখতে পেলাম যে, মসজিদে সানী জামাআত মাকরূহে তাহরীমী। প্রশ্ন হচ্ছে, মসজিদের বারান্দায় সানী জামাআত করা যাবে কিনা?
সমাধান : সকল ফুকাহায়ে কিরামদের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যে সব মসজিদে ইমাম-মুয়াযযিন নির্ধারিত রয়েছে সেসব মসজিদে ছানী জামাআত করা মাকরূহে তাহরীমী।
বারান্দা প্রসঙ্গে কথা হচ্ছে যেসব বারান্দা মসজিদ হিসাবে ব্যবহৃত হয়, সেসব বারান্দার উপর মূল মসজিদের ন্যায় সকল হুকুম প্রযোজ্য হবে। সুতরাং এহেন বারান্দায়ও সানী জামাআত মাকরূহ। পক্ষান্তরে যেসব মসজিদের পৃথকভাবে বারান্দার ব্যবস্থা রয়েছে, অর্থাৎ যে অংশ মসজিদরূপে ব্যবহার হয়না এবং মসজিদ হিসাবে গণ্যও করা হয়না বরং শুধুমাত্র বারান্দার জন্যই তৈরী করে রাখা হয়েছে, এরূপ বারান্দায় সানী জামায়াত করা যাবে এবং তার উপর মসজিদের হুকুম বর্তাবে না। কেননা, এরূপ বারান্দা মূল মসজিদের অংশ হিসেবে গন্য নয়। এ কারণেই এহেন বারান্দায় ইতিকাফরত ব্যক্তি প্রবেশ করলে তার ইতিকাফ ভঙ্গ হয়ে যায়। বলাবাহুল্য, মসজিদ সংলগ্ন আঙ্গিনায় একাধিক জামাআত জায়েয আছে। (ফতওয়ায়ে দারুল উলুম-৩/৪৬, ইমদাদুল আহকাম-১/৪০৫)
এখন আমার প্রশ্ন হলো- উপরোক্ত জিজ্ঞাসার সমাধান কতটুকু শুদ্ধ হয়েছে, তা জানায়ে বাধিত করবেন।
জাওয়াব : মাসিক মুঈনুল ইসলামের উপরোক্ত উত্তর অসম্পূর্ণ ও অস্পষ্ট হয়েছে। কেননা বিশ্বে যে সমস্ত মসজিদ রয়েছে, তা দুভাগে ভাগ করা যায়- (১) যার ইমাম-মুয়াজ্জিন নির্ধারিত নেই। (২) যার ইমাম-মুয়াজ্জিন নির্ধারিত রয়েছে।
যে সমস্ত মসজিদে ইমাম-মুয়াজ্জিন নির্ধারিত নেই, সে সমস্ত মসজিদে আযান-ইক্বামত দিয়ে একাধিক জামায়াত আদায় করা সর্বসম্মতিক্রমে জায়িয রয়েছে।
আর যে সমস্ত মসজিদে ইমাম-মুয়াজ্জিন নির্ধারিত রয়েছে, সেখানে ছানী জামায়াত করা ক্ষেত্র বিশেষে জায়িযও রয়েছে, আবার নাযায়িযও রয়েছে।
যে সমস্ত মসজিদে ইমাম-মুয়াজ্জিন মুকাররার (নির্ধারিত) রয়েছে, সেখানে নিম্নলিখিত শর্ত সাপেক্ষে ছানী জামায়াত নাযায়িয।
নির্দিষ্ট জামায়াতের পর আযান-ইক্বামত দিয়ে ইমাম ছাহেবের নির্দিষ্ট স্থানে দাঁড়িয়ে সেই মসজিদের মুছল্লীদেরকে নিয়ে (যারা গাফলতীর জন্য নির্দিষ্ট জামায়াত পায়নি) ছানী জামায়াত করা মাকরূহ তাহরীমী।
আর যদি আযান-ইক্বামত ব্যতীত ইমাম ছাহেবের নির্দিষ্ট স্থানে না দাঁড়িয়ে বহিরাগত কিছু মুছল্লী (যারা নির্দিষ্ট জামায়াত পায়নি) যদি ছানী জামায়াত করে, তাহলে সেটা জায়িয রয়েছে।
এছাড়াও মসজিদের মুছল্লীদের মধ্য হতে কিছু মুছল্লী, যারা শরয়ী কোন কারণে নির্দিষ্ট জামায়াতে শামিল হতে পারেনি। যেমন: দাফন-কাফন, রোগীর খেদমত, আগুন নিভানো ইত্যাদি, তাহলে তাদের পক্ষেও আযান-ইক্বামত ব্যতীত ইমাম ছাহেবের নির্দিষ্ট স্থানে না দাঁড়িয়ে ছানী জামায়াত করা জায়িয রয়েছে।
(দুরারুল আহকাম, খাজানা, বাজ্জাজিয়া, মুনিয়া, রোদ্দুল মোহতার, তাতারখানীয়া, আল ওয়ালেজিয়া, দোররুল মোখতার, শামী, হাফতে মাসায়েল ইত্যাদি)

আব-৩২

0 Comments: