ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ্
দা’ওয়াত, আফযালুল ইবাদ, ছাহিবে কাশ্ফ ওয়া কারামত, ফখরুল আউলিয়া, ছুফীয়ে বাতিন, ছাহিবে ইস্মে
আ’যম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, আমাদের সম্মানিত
দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম-উনার স্মরণে-
একজন কুতুবুজ্জামান-উনার দিদারে মাওলা
উনার দিকে প্রস্থান-
খাজিনাতুর রহমত, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার সদয় অনুমতিতে দেশে
ফেরা
এতোক্ষণের আলোচনায় বুঝতে কষ্ট হওয়ার কথা নয় যে, আশিকে নবী,
আফযালুল ইবাদ, ছাহিবে কাশফ্ ও কারামত,
ফখরুল আউলিয়া, আওলাদে রসূল,
হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর
রহমান রহমতুল্লাহি আলাইহি-উনার মূল কাজ পবিত্র মদীনা শরীফে অবস্থান করা নয়। আল্লাহ
পাক-উনার অপার অনুগ্রহ এবং দলীলে কা’বায়ে মাক্বছূদ, হাবীবে আ’যম,
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার
সদয় বন্টন ব্যবস্থায় উনার দায়িত্ব পালনের স্থান দেশের পরিচিত জনপদে, আপন ঠিকানায়। তাই সহসাই আল্লাহ পাক-উনার সকল কাজের ইন্তিজামকারী, মাশুকে মাওলা,
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার
সদয় নির্দেশে তিনি দেশে ফিরে আসবেন, এটাইতো স্বাভাবিক
ও সংগত। জগতিক সকল বন্ধন ও আসক্তিহীনতায় পবিত্র রওযা মুবারক সান্নিধ্যে নিরবচ্ছিন্ন
সময় বয়ে যাচ্ছে। সময় অতিক্রান্তির এই গতি অতি দ্রুততর। কাঙ্খিত নিয়ামতপ্রাপ্তিতে চাওয়া-পাওয়ার
একীভূত অবস্থায় পরম প্রশান্তির পূর্ণতায় সময়ের ধাবমানতা ক্ষিপ্র মনে হয়। নিত্যদিন নিবিড়
যোগাযোগ ও একান্ত সাক্ষাৎ হচ্ছে। রওযা মুবারকের নিকট সান্নিধ্যে রাত-দিনের দায়েমী আরজুঃ
“ইয়া রাসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ, ইয়া রহমাতাল্লিল আলামীন,
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আমাকে ধন্য করুন,
পূর্ণ করুন, আরো এতমিনান দান করুন।” পরিপূর্ণ এতমিনান
(প্রশান্তি) হাছিল করেও আরো অধিক নিয়ামতলাভে নিরন্তর মাহবুব ওলীগণের অন্তরের ক্রমবর্ধিঞ্চু
যে যন্ত্রণাকাতর প্রত্যাশা,
তা’ তাঁদের পার্থিব জীবনাবসানের মাধ্যমে ছাহিবুল মাফাতীহ, রউফুর রহীম,
হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার মুবারক উছীলায় জান্নাতের স্থায়ী
বাসিন্দা হয়ে আল্লাহ্ পাক-উনার দিদারলাভ না হওয়া পর্যন্ত পূরণ হবার নয়। এ উপলব্ধি মন
ও মননে ধারণ করেও অন্তরের সহজাত বেদনা এবং লব্ধ নিয়ামতের আপেক্ষিকতা বিবেচনায় আরো পাবার
আকুতি নৈকট্য প্রাপ্ত মাহবুব ওলীগণের কখনোই ফুরায়না। পাবার এ তীব্র আকাঙ্খা ইন্তিকাল
অবধি জাগরূক থাকে। কামিয়াবী হাছিলকারী সূক্ষ্মদর্শী ওলীগণের সামগ্রিক জীবন পরিক্রমার
এই মুল বৈশিষ্ট্য আল্লাহ্ পাক-উনারই মহান দান। উনার তাৎপর্যপূর্ণ ব্যাখ্যা আমরা জানতে
পাই এমন কামিযাবীর শীর্ষ সোপানে অধিষ্ঠানকারী আফযালুল আউলিয়া, ইমামে রব্বানী,
ক্বাইউমে আউয়াল, মুজাদ্দিদে আলফেসানী,
হযরত শয়খ আহমদ ফারুকী সিরহিন্দী রহমতুল্লাহি
আলাইহি-উনার নিগূঢ় অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ বাণীতে। তিনি বলেছেন, যে ব্যক্তি নিজেকে তৃপ্ত মনে করে, সে বঞ্চিত। পক্ষান্তরে
নিজেকে যে অতৃপ্ত ও অপূর্ণভাবে,
সে প্রাপ্ত। অর্থাৎ সে পরিপূর্ণ, সে নিয়ামত সমৃদ্ধ। অতৃপ্তিবোধের এমন দহনে মুহ্যমান ওলীয়ে মাদারজাদ, আফযালুল ইবাদ,
লিসানুল হক্ব, ফখরুল আউলিয়া,
আওলাদে রসূল, হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান রহমতুল্লাহি আলাইহি সবকিছু পেয়েও
আরো পাবার প্রত্যাশায় প্রার্থনায় নিমগ্ন রয়েছেন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন,
খাজিনাতুর রহমত, খাজিনু কামালিল্লাহ,
হাবীবে আ’যম, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার পাক দরবার শরীফে। পাবার সান্ত¡না ও আসন্ন বিচ্ছেদের
সীমাহীন যন্ত্রনায় মন ভারাক্রান্ত। কাছের ও দূরের, এমনকি অনেক দূরের
দৈহিক অবস্থানেও আশিক ও মাশুক-উনার মনোগত সংযোগ একই বৃত্তে সম্মিলিত থাকে। দৈহিক নৈকট্য
অথবা দূরবর্তীতার প্রশ্ন এখানে অবান্তর। তবে সার্বিক সতর্কতা, অনাবিল মনোযোগ ও পূর্ণ হুজুরীতে মাশুকের সরাসরি সান্নিধ্যে যে অভাবনীয় নিয়ামত হাছির
হয়, তা তুলনাহীন। যদিও কেউ কেউ বিশ্বাস করতে অভ্যস্ত যে, দূরের পাওয়াই পাওয়া। কাছের পাওয়ায় কখনো কখনো ফাঁক থাকে। প্রেমাস্পদের পরম সান্নিধ্য
থেকে দৈহিক বিয়োজনে প্রেমিকের মনে যন্ত্রণাকাতর বেদনার দহন অনুক্ষণ দ্বিগুণ-বহুগুণে
বৃদ্ধি পেতে থাকে। এ দহন নিবৃত্তির প্রয়াস, প্রত্যাশী প্রেমিক
ও দাতা প্রেমাস্পদ দু’জনেরই। আর যারা জানেন তাদের তো একথা জানা যে, সকল ইচ্ছাই প্রেমাস্পদের এবং অপার বেদনা ও সীমাহীন দুঃখভরা যতো প্রত্যাশা তা কেবল
আশিক প্রেমিকের। (অসমাপ্ত)
আবা-১২৬
0 Comments:
Post a Comment