Headlines
Loading...
خَلِيْفَةُ اللهِ، خَلِيْفَةُ رَسُوْلِ اللهِ، رَءُوْفٌ رَّحِيْمٌ، رَحْـمَةٌ لِّلْعَالَـمِيْـنَ، صَاحِبُ سَيِّدِ سَيِّدِ الْاَعْيَادِ شَرِيْفٍ، صَاحِبِ نِعْمَتْ، اَلسَّفَّا حُ، اَلْـجَبَّارِىُّ الْاَوَّلُ، اَلْـقَوِىُّ الْاَوَّلُ، حَبِيْبُ ال لهِ، مُطَهِّرٌ، اَهْلُ بَــيْتِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَائِمُ مَقَامِ حَبِيْبِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، مَوْلـٰـنَا مَـمْدُوْحْ مُرْشِدْ قِـبْـلَةْ سَيِّدُنَا حَضْرَتْ سُلْطَانٌ نَّصِيْـرٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ اَلْـحَسَنِـىُّ وَالْـحُسَيْنِـىُّ وَالْقُرَيْشِىُّ، رَاجَارْبَاغُ شَرِيْفٌ، دَاكَا খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, রঊফুর রহীম, রহমাতুল্লিল ‘আলামীন, ছাহিবু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, ছাহিবে নেয়ামত, আস সাফফাহ, আল জাব্বারিউল আউওয়াল, আল ক্বউইউল আউওয়াল, হাবীবুল্লাহ, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মাওলানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম আল হাসানী ওয়াল হুসাইনী ওয়াল কুরাঈশী, রাজারবাগ শরীফ, ঢাকা -উনার গোলাম-মুহম্মদ ইউসুফ হুসাইন রাজী খাজা
সালাহউদ্দীন আইয়ুবী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনি কে?
Published from Blogger Prime Android App

সালাহউদ্দীন আইয়ুবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনি কে?

বলতে পারেন, তিনি মহান বীর, যিনি ক্রুসেডারদের হারিয়েছেন বারবার এবং জেরুজালেমকে মুসলিম শাসনাধীন করেছেন। পরিচয় শুধু এটা না। আরও পরিচয় আছে। তিনি কীভাবে সালাহউদ্দীন আইয়ুবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি হলেন, সেটাও তো দেখতে হবে। আসুন মিলিয়ে নেই- আমরা কি সালাহউদ্দীন আইয়ুবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার আকীদা-মানহাজে আছি কি না? 

সালাহউদ্দীন আইয়ুবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি পারিবারিকভাবে সায়্যিদুনা হযরত আবদুল কাদির জিলানি রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার সাথে সম্পৃক্ত। আল্লামা মাকরিযি রহমাতুল্লাহি আলাইহি জানিয়েছেন যে, সুলতানুল আউলিয়া বাযুল্লাহিল আশহাব শায়খ আব্দুল কাদির জিলানি রহমাতুল্লাহি আলাইহি সালাহউদ্দীন আইয়ুবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনাকে দুআ করে দিয়েছিলেন। সময়টা ৫৩৩ হিজরী। সুলতান সালাহউদ্দীন আইয়ুবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার শায়েখ সায়্যিদুনা হযরত আবদুল কাদির জিলানি রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার পরে উনার  সন্তান শায়খ আব্দুর রাজ্জাক ইবন আব্দুল কাদির জিলানি রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার সাথে সম্পর্ক  রাখতেন।

সালাহউদ্দীন আইয়ুবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার পীর ছিলেন শায়খ হুসাইন ইবন ঈসা বা আল কাদিবুল বান আল জিলানি আল হুসাইনি রাহিমাহুল্লাহ (মৃ. ১১৭৭ খ্রি.)। তিনি সায়্যিদুনা আব্দুল কাদির জিলানি রাহিমাহুল্লাহর খাস শিষ্য এবং  জামাতা ছিলেন। সায়্যিদুনা জিলানির ইন্তিকালের পর তাঁর ওসিয়্যত মোতাবেক শায়খ কাদিবুল বান তাঁর গোসল দিয়েছিলেন। এই শায়খের সাথে সাক্ষাতের জন্য সালাহউদ্দীন আইয়ুবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি সুদূর বাগদাদ সফর করেছিলেন। শায়খ তাঁকে যোদ্ধাবাহিনী গড়ে তোলার জন্য প্রেরণা দিয়েছিলেন, নিজের মুরিদান থেকে বিরাট একটা অংশ তাঁর সাথে পাঠিয়ে দেন। এই মুরিদদের একজন মুখ ঢাকা অশ্বারোহী যোদ্ধা ক্রসেডারদের একজন কমান্ডারকে হত্যা করে প্রতিপক্ষকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছিলেন। কেউ আর সামনে আগায়নি।  (নিহাযাতুল মাতালিব ফি আনসাবি ফাতিমাতিয যাহরা, পৃ. ১২)

সায়্যিদুনা হযরত আবদুল কাদির জিলানি রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার মাদরাসা থেকে কমপক্ষে ৪০০ নামজাদা এমন আলিম-সুফি বেরিয়েছিলেন, যারা তাঁর ইন্তিকালের পর মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন শহরে ছড়িয়ে পড়েছেন এবং মাদরাসা স্থাপন করেছেন। শায়খ জিলানি তাঁদের যে দ্বীনী জাগরণের শিক্ষা দিয়েছিলেন, এইসব শিষ্যরা তা ছড়িয়ে দিয়েছেন এবং এর ফলেই সুলতান সালাহুদ্দিন সৈন্যবাহিনীর একটা বিরাট অংশ পুরোপুরি আল্লাহ ও রাসুলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের রাস্তায় ফেদায়ী বাহিনী হিসেবে পেয়েছেন। এটা কথার কথা না। 

হামিদ আল হাররানি (মৃ. ৫৬৯ হি.) বলেন, ‘আমি একদিন শায়খ জিলানির মাদরাসায় এসে একেবারে তঁর কাছে তাঁর জায়নামাযের উপর বসে পড়লাম। তখন আমার দিকে তাকিয়ে তিনি বললেন, ‘হামিদ! তুমি অবশ্যই রাজা—বাদশার গালিচায় বসবে।’ এরপর আমি যখন হাররানে ফিরে আসলাম, সুলতান নুরুদ্দিন জিঙ্গি আমাকে তাঁর সাথে থাকার আদেশ দিলেন। তিনি আমাকে অনেক কাছে আনলেন, নিজের গালিচায় বসালেন এবং ওয়াকফ মন্ত্রণায়লয়ের দায়িত্ব দিলেন। তখন আমার শায়খের সেই কথা মনে হতে লাগলো।

সালাহুদ্দীন আইয়ুবির যা হাত ধরে উঠে এসেছেন, সেই সুলতান নুরুদ্দীন জিংগি রহমাতুল্লাহি আলাইহি হামিদ আল হাররানিকে এতটাই পছন্দ করতেন যে, কেবল তাঁর জন্যই তিনি হাররানে মাদরাসাতুন নুরিয়্যাহ প্রতিষ্ঠা করেন। হাররানে তিনি ছিলেন তাঁর গভর্নর। ইমাম ইবন রজব হাম্বলি রাহিমাহুল্লাহ আয যাইল আলা তাবাকাতিল হানাবিলা গ্রন্থে এ প্রসঙ্গে আরেকটি ঘটনা উল্লেখ করেছেন। সেখানে শায়খ জিলানি হামিদ ইবন মুহাম্মদকে দেখে জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘এ কে?’ লোকেরা বলেছিল, ‘এ হলো ফকিহ হামিদ আল হাররানি।’ তখন শায়খ বলেছিলেন, ‘রাজা—বাদশার এর সম্পর্ক হবে একসময়।’ ইবন রজব বলেন, ‘পরবতীর্তে সেটাই হয়েছিল।’

অনুরূপ শায়খ যাইনুদ্দীন ইবন ইবরাহীম ইবন নাজা আল আনসারী আদ দিমাশকীর কথা বলা যায়। তিনি শায়খ জিলানি (রহ.) এর কাছে বাগদাদে শিক্ষাগ্রহণ করার পর দামেস্ক ও মিশর ভ্রমণ করেন। এক সময় তিনি সালাহ উদ্দীন আইয়ুবি (রহ.) এর খাস পরামর্শদাতায় পরিণত হন। এমনকি তাঁকে সালাহুদ্দিনের আমর ইবনুল আস বলা হতো। এ প্রসঙ্গে মাজিদ কিলানী ‘হাকাযা যাহারা জিলু সালাহিদ্দিন ওয়া হাকাযা আদাত আল কুদস’ বইয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। 

সুলতান সালাহুদ্দীন যেকোনো যুদ্ধে সুফি শায়খদের তাঁবু সৈন্যদের ঘাঁটিতে বসাতেন। সুফি শায়খ আল্লাহর কাছে দুআ করতে থাকতেন, সাহায্য প্রার্থনা করতে থাকতেন। জেরুজালেম বিজয়ের সময় এইভাবে আশেপাশের সমস্ত সুফিরা জড়ো হয়ে মহাবিজয় প্রত্যক্ষ করেছিলেন বলেন আরব ঐতিহাসিক ইবনুল ওয়ার্দি আমাদের জানাচ্ছেন। তিনি বলেছেন, ‘তাঁর বিজয় মিশর ও শামের অনেক খিরকাধারী, যাহিদ ও আলিম ব্যক্তিবর্গ প্রত্যক্ষ করেছিলেন। এমনকি তাঁদের কেউই পিছে থাকেননি।’ (ইবনুল ওয়ার্দির তাতিম্মাতুল মুখতাসার ফি আরবাবিল বাশার, ২/১৪৭)

জেরুজালেম বিজয়ে যেসব বিখ্যাত সুফি শায়খ অংশ নেন, তাঁদের মধ্যে আবু আমর আর মাকদিসি, আবু সাওর প্রমুখ অন্যতম। আবু সাওর আসলে তাঁর মূল নাম না। সাওর বা একটা ষাঁড়ের পিঠে চড়ে তিনি যুদ্ধ করেছিলেন, বলে আবু সাওর নামে তিনি প্রসিদ্ধ হয়ে যান। এই যুদ্ধের  আরেকজন যোদ্ধা সুফি শায়খ আব্দুল্লাহ আল ইউনানিকে অসাধারণ বীরত্বের জন্য সবাই বলতো আসাদুশ শাম বা শামের সিংহ।  

শুধু জেরুজালেম বিজয় নয়, মিশর থেকে শিয়াবাদ হটিয়ে সুন্নিয়ত প্রতিষ্ঠা করাও সুলতান সালাহুদ্দীনের অনেক বড় কৃতিত্ব। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, সুলতানী ফরমান জারি করে মানুষের আকীদা সহিহ করা যাবে না। এজন্য তিনি ব্যাপকভাবে সুফিদের পৃষ্ঠপোষকতা করেছিলেন। ইমাম সুয়ুতি এবং মাকরিযির মতে,  মিশরে প্রথম সুফি খানকাহ (সাদুস সুআদা) তিনিই নির্মান করেন। বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি খানকার নামে ওয়াকফ করে দেন। এই খানকায় রুটি-মাংস ইত্যাদি খাবার ব্যবস্থা ছিল। শাসকদের মধ্যে তিনিই সবচেয়ে বেশি সংখ্যক খানকা নির্মান করেছিলেন। তাঁর পদ্ধতি ছিল যেখানেই যেতেন একটি মাদরাসা এবং তার পাশে একটি রিবাত বা খানকা প্রতিষ্ঠা করা। ইসরায়েলে আক্কা শহর জয় করার পর তিনি দেখলেন, সেখানে ইসতেবার নামে বিরাট একটা দালান আছে। সেটার অর্ধেকটা তিনি ফিকহে শাফেঈর মাদরাসা এবং অর্ধেকটা সুফিদের খানকার জন্য নির্দিষ্ট করে দেন। ইবন জুবায়র তাঁর ভ্রমণকাহিনীতে এসব খানকা প্রতিষ্ঠার জন্য সুলতানের প্রশংসা করেছেন এবং সুফিদের পুরো ব্যাপারটাতেই তিনি চমৎকৃত হয়েছেন। 
সুফিরা সামা বা আধ্যাত্মসঙ্গীত শ্রবণ করে থাকেন। আইয়্যুবি সুফিদের এতটাই ভালোবাসতেন যে, ইবনুল আছির আমাদের জানাচ্ছেন যে, ‘দরবেশ আর সুফিরা তাঁর কাছে আসতেন। তখন তিনি তাঁদের জন্য সামার মজলিসের আয়োজন করতেন। সুফিরা [ভাবোচ্ছাসে] উঠে আন্দোলিত হলে (রকস) তিনিও উঠে দাঁড়াতেন এবং তাঁরা না বসা পর্যন্ত নিজে বসতেন না। (আল কামিল ফিত তারিখ, ১২/৯৭)

সুলতান সালাহুদ্দীন জীবিত ও মৃত বুযুর্গদের কাছ থেকে তাবাররুক হাসিল করতেন। তাঁরা জীবিত হলে সরাসরি দেখা করতেন। নয়তো তাঁদের কবর যিয়ারত করতেন। যেমন সুলতানের জীবনীকার ইবন শাদ্দাদ বলেছেন, সুলতান বরকতের জন্য ইমাম শাফেঈর কবর যিয়ারত করেছেন। (وقد زار  الإمام الشافعى تبركا به) অনুরূপ তিনি সায়্যিদুনা উমর ইবন আব্দুল আযিযের কবর যিয়ারত করেছেন। এবং সেখানে সুফি শায়খ আবু যাকারিয়া আল মাগরিবির সাথে তাঁর দেখা হয়েছে। এই ঘটনার বর্ণনা করে আবু শামা বলেছেন, ‘এসব যিয়ারতে আল মালিক আল মুযাফফর সালাহুদ্দিন মৃত ও জীবিত- উভয়ের থেকে বরকত হাসিল করেছেন। (فقد تبرك الملك المظفر صلاح الدين فى هذه الزيارة بالميت والحى) হালাব জয়ের পর একজন সায়্যিদের মাজার যিয়ারত করতে যেয়ে তিনি সেখানে দশ হাজার দিরহাম দিয়েছিলেন। এছাড়া তারিখুল খুলাফা গ্রন্থে ইমাম সুয়ুতি লিখেছেন, সুলতান সালাহুদ্দিন ইমাম শাফেঈর মাযারের উপর গম্বুজ নির্মান করেন এবং ফিলিস্তিনেও একটি মাজার নির্মান করেন। 

সুলতান সালাহিুদ্দীন মিলাদুন্নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদযাপনকে অত্যন্ত গুরুত্বের চোখে দেখতেন। রাষ্ট্রীয়ভাবে ঈদে মীলাদুন্নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদযাপন করতেন। এমনকি কেউ মাউলিদ বিষয়ক কোনো গ্রন্থ লিখলেও লেখককে বিপুল পরিমাণ হাদিয়া দিতেন। ক্রসেডারদের সাথে যুদ্ধের সময় তাঁর পৃষ্ঠপোষকতায় আলাদা নাত সাহিত্যের বিকাশ ঘটেছিল। কবিরা আল্লাহর রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রশংসা করতেন এবং তাঁর ওসিলায় আল্লাহ তায়ালা যেন তাঁর উম্মতের দুঃখ-দুর্দশা দূর করেন, সেই আবেদন ফুটিয়ে তুলতেন। (মুহাম্মদ যগলুল সালামের আল আদাব ফিল আসরিল আইয়ুবি, পৃ. ২৩৬)

এমন একজন কবি ছিলেন, শহীদ ইবন রাওয়াহা আল হামাভি। তিনি  রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শাফায়াত এবং আল্লাহর কাছে তাঁর ওয়াসিলায় শাহাদাত লাভের আকাঙ্ক্ষায় রওজা শরীফ যিয়ারত করেছিলেন। তাঁর কবিতার দুটি লাইন ছিল:
يا خاتم الرسل سل الله لي + خاتمة محمودة العاقبة
ولاتردن يدي بعدما + مددتها مستشفعا خائبة
‘ওগো সর্বশেষ রাসুল! আল্লাহর কাছে আমার জন্য প্রশংসনীয় পরিণতি প্রার্থনা করুন। আপনার শাফায়াতের প্রার্থী হয়ে যে হাত আমি বাড়িয়েছি, সেই হাতকে আপনি নিরাশ করে ফিরিয়ে দিয়েন না।’ 
পরবর্তীতে ইবন রাওয়াহা যখন ঘুমিয়েছেন, রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে স্বপ্নে দেখেছেন। তিনি বলেছেন, ‘ইবন রাওয়াহা। তোমাকে কবুল করা হয়েছে।’ এর পর ইবন রাওয়াহা জেরুজালেমে আক্কায় সালাহুদ্দীনের সাথে যোগ দেন এবং শহীদ হন। 

(শায়খ আবু আব্দিল্লাহ মুহাম্মদ আইনুল হুদা, আল ইহতিফাল বিল মাওলিদি বাইনাল ইফরাতি ওযাত তাফরিত, পৃ. ২৫৩-২৫৪)
আরও অনেক কিছু সুলতান সালাহুদ্দিন ওয়াদ দুনিয়া নিয়ে লেখার আছে। পাখি সব করে রব রাতি পোহাইল। আরেকদিন ইনশাআল্লাহ জেরুজালেম বিজয়ে সুফিদের অবদান নিয়ে লিখবো। 
লেখায় ভুল-ত্রুটি যা হয়েছে, আল্লাহর কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। তথ্যগত বা বানানগত কোনো ভুল চোখে পড়লে জানাবেন। এতখানি লেখা পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
Abdullah Jobair
 কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কথিত নামধারী হাদীস বিশারদ খন্দকার আ.ন.ম আবদুল্লাহ জাহাঙ্গীর নামের এক ব্যক্তির  মিথ্যাচার

 

কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কথিত নামধারী হাদীস বিশারদ খন্দকার আ.ন.ম আবদুল্লাহ জাহাঙ্গীর নামের এক ব্যক্তির আরেকটি মিথ্যাচার-

আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর তার বইতে লিখেছে-

‘‘ইবন আব্বাস বলেন, একদিন তিনি নিজ বাড়িতে রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর জন্মের ঘটনাবলি বর্ণনা করছিলেন। তখন রাসূলুল্লাহ ﷺ আগমন করেন এবং বলেন: তোমাদের জন্য আমার শাফাআত পাওনা হলো।’’ (জালিয়াত লক্ষ্য করেনি যে, ইবন আববাসের বয়স ৮ বৎসর পূর্ণ হওয়ার আগেই রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর ইন্তেকাল হয়। তিনি কি ৫/৬ বৎসর বয়সে ছেলেমেয়েদের হাদীস শুনাচ্ছিলেন!) ///

তথ্যসূত্র- ওহাবী/আহলে হাদীসদের ওয়েবসাইট- http://www.hadithbd.com/showqa.php?b=37&s=393

পাঠক লক্ষ্য করুন, ওহাবী আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর লিখেছে নবীজী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিছাল শরীফের সময় হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু এর বয়স নাকি ৮ বছরে কম ছিলো। মাদ্রসায় পড়ুয়া আলিম শ্রেনীর ছাত্র অথবা জেনারেল শিক্ষিত ইন্টারনেট সম্পের্কে নূন্যতম ধারনা সম্পন্ন লোকের পক্ষেও জাহাঙ্গীরে জালিয়াতি ধরা সহজ।

হাদীস শরীফের রাবীদের পরিচিতি নিয়ে লিখিত ‘আসমাউর রেজাল’ খুলে দেখুন, সেখানে স্পষ্ট লেখা আছে ‘ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হিযরতের ৩ বছর আগে হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু জন্মগ্রহন করেন। ’ অথাৎ নবীজীর বেছাল শরীফের সময় ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহুর বয়স হয় ১১+৩= ১৪ বছর। অর্থাৎ ১১ হিজরী হচ্ছে বিছাল গ্রহন আর তিন বছর যোগ করে হয় ১৪ বছর।

ইন্টারনেটে উইকিপিডিয়তে সার্চ করে দেখেন সেখানেও পাবেন হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিছাল শরীফের সময় হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহুর বয়স ছিলো ১৪ বছর। উইকিপিডিয়তে আছে হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহুর জন্ম ৬১৯ সালে। সূতরাং (৫৭০+৬৩) = ৬৩৩। এখন এই ৬৩৩ সাল থেকে ৬১৯ সাল বিয়োগ করুন (৬৩৩-৬১৯)= ১৪ বছর।

তথ্যসূত্রঃ https://en.wikipedia.org/wiki/Abd_Allah_ibn_Abbas

আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর লিখেছে-

ইবন আববাসের বয়স ৮ বৎসর পূর্ণ হওয়ার আগেই রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর ইন্তেকাল হয়। //

তাহলে সহজেই বোঝা যচ্ছে ওহাবী আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর মীলাদুন্নবী অস্বীকার করার জন্য চরম মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে ১৪ বছর বয়সী একজন ছাহাবীর বয়স ইচ্ছাকৃতভাবে অর্ধেক কমিয়ে ৮ বছরের কম বলার ধৃষ্টতা দেখিয়েছে। এভাবে সে নিজে বিভিন্ন রকম জালিয়াতি করে পূর্বের সমস্ত আলেমদের নামে মিথ্যাচার করে সাধারণ মুসলমানদের ধোঁকা দিয়ে যাচ্ছে।

ইতিপূর্বে সে নিজের এবং তার দল আহলে হাদীসদের অপছন্দের কারণে একটি সহীহ হাদীসকে জাল বলে প্রচারের জালিয়াতি নিয়েছিল। বিস্তারিত দেখুন-

https://www.facebook.com/SolutionInIslam/photos/a.764276776918415.1073741837.479488178730611/968694496476641


[মূলপোষ্ট https://www.facebook.com/noore.julfikar.3/posts/1735064556712586 থেকে সংগৃহীত এবং এডিটকৃত]

অপ্রাসঙ্গিক মন্তব্য পরিহারের বিনীত অনুরোধ রইল।

মূলপোষ্ট-

ভাত রান্না হয়েছে কিনা এটা বুঝতে পাতিলের সবগুলো ভাত টিপে দেখতে হয় না। দুই একটা ভাত টিপলেই পুরা পাতিলের খবর জানা যায়। ওহাবী মতবাদের প্রচারকারী, সৌদী থেকে ওহাবী মতবাদে দীক্ষা লাভ করে বাংলাদেশে প্রচারকরী আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীরে পতিলের খবর জানতেও তার সবকিছু গবেষনা করার দরকার নাই। ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বিরোধীতা করতে গিয়ে সে যে নিকৃষ্ট মিথ্যাচারের আশ্রয় গ্রহন করেছে তা দেখে ইবলিসও লজ্জা পাবে।
এই ওহাবী এজেন্ট আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর তার বইতে লিখেছে - // ‘‘ইবন আববাস বলেন, একদিন তিনি নিজ বাড়িতে রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর জন্মের ঘটনাবলি বর্ণনা করছিলেন। তখন রাসূলুল্লাহ ﷺ আগমন করেন এবং বলেন: তোমাদের জন্য আমার শাফাআত পাওনা হলো।’’ (জালিয়াত লক্ষ্য করে নি যে, ইবন আববাসের বয়স ৮ বৎসর পূর্ণ হওয়ার আগেই রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর ইন্তেকাল হয়। তিনি কি ৫/৬ বৎসর বয়সে ছেলেমেয়েদের হাদীস শুনাচ্ছিলেন!)///
পাঠক লক্ষ্য করুন, ওহাবী আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর লিখেছে নবীজী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিছাল শরীফের সময় হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু এর বয়স নাকি ৮ বছরে কম ছিলো। মাদ্রসায় পড়ুয়া আলিম শ্রেনীর ছাত্র অথবা জেনারেল শিক্ষিত ইন্টারনেট সম্পের্কে নূন্যতম ধারনা সম্পন্ন লোকের পক্ষেও জাহাঙ্গীরে জালিয়াতি ধরা সহজ।
হাদীস শরীফের রাবীদের পরিচিতি নিয়ে লিখিত ‘আসমাউর রেজাল’ খুলে দেখুন, সেখানে স্পষ্ট লেখা আছে ‘ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হিযরতের ৩ বছর আগে হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু জন্মগ্রহন করেন। ’ অথাৎ নবীজীর বেছাল শরীফের সময় ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহুর বয়স হয় ১১+৩= ১৪ বছর। অর্থাৎ ১১ হিজরী হচ্ছে বিছাল গ্রহন আর তিন বছর যোগ করে হয় ১৪ বছর।
ইন্টারনেটে উইকিপিডিয়তে সার্চ করে দেখেন সেখানেও পাবেন হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিছাল শরীফের সময় হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহুর বয়স ছিলো ১৪ বছর। উইকিপিডিয়তে আছে হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহুর জন্ম ৬১৯ সালে। সূতরাং (৫৭০+৬৩) = ৬৩৩। এখন এই ৬৩৩ সাল থেকে ৬১৯ সাল বিয়োগ করুন (৬৩৩-৬১৯)= ১৪ বছর।
অথচ মুনাফিক, ইহুদী নাছারাদের টাকার পরিচালিত এজেন্ট আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর লিখেছে // ইবন আববাসের বয়স ৮ বৎসর পূর্ণ হওয়ার আগেই রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর ইন্তেকাল হয়। //
তাহলে সহজেই বোঝা যচ্ছে ওহাবী আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর মীলাদুন্নবী অস্বীকার করার জন্য চরম মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে ১৪ বছর বয়সী একজন ছাহাবীর বয়স ইচ্ছাকৃতভাবে অর্ধেক কমিয়ে ৮ বছরের কম বলার ধৃষ্টতা দেখিয়েছে।
লেখার শুরুতেই যেটা বললাম, পাতিলের ভাত সব টিপতে হয় না। সূতরাং আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীরের লেখায় হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহুর বয়স হের ফের করার হাতে নাতে চুরির প্রমান দ্বারাই বোঝা যায় তার লেখায় সবগুলো কথাই চুরি এবং মিথ্যাচারে পরিপূর্ন । সূতরাং তার ঈদে মীলাদুন্নবী সম্পের্কে আপত্তি মোটেও গ্রহনযোগ্য নয়।
কালিমা শরীফ " লা'ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহম্মদুর রসূলাল্লাহ" ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অস্বীকারকারী কাফিরদের দাঁতভাঙ্গা জবাব:

কালিমা শরীফ " লা'ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহম্মদুর রসূলাল্লাহ" ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অস্বীকারকারী কাফিরদের দাঁতভাঙ্গা জবাব:

বর্তমানে সালাফী, লা'মাযহাবী, ওহাবী বাতিল ফির্কার লোকেরা প্রচার করছে "লা' ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহম্মদুর রাসূলুল্লাহ" ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই কালিমা শরীফ নাকি হাদীস শরীফে কোথাও নাই, এবং মুস্তাদরেকে হাকিম কিতাবে বর্নিত হাদীস শরীফটি নাকি মওজু। নাউযুবিল্লাহ !!!

এই ব্যাপারে দাঁতভাঙ্গা জবাব দেয়াটা একজন মুসলমান হিসাবে ঈমানী দায়িত্ব মনে করছি। 

কালিমা শরীফের মূল শিক্ষা হচ্ছে আল্লাহ পাক রব্বুল আ'লামীন উনাকে ইলাহ বা মা'বুদ হিসাবে ঈমান আনা সেই সাথে হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনি যে আল্লাহ পাক উনার রসূল সে বিষয়ে ঈমান আনা। 

এ প্রসংঙ্গে স্বয়ং আল্লাহ পাক ইরশাদ মুবারক করেন,-

انما المؤمنون الذين امنوا بالله و رسوله

অর্থ: নিশ্চয়ই প্রকৃত মু'মিন মুসলমান তাঁরাই যারা আল্লাহ তায়ালা এবং উনার রসূল উনার উপর ঈমান এনেছে।"

( সূরা নূর ৬২ নং আয়াত শরীফ )

এই আয়াত শরীফ থেকে বোঝা গেলো আল্লাহ এবং উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি ঈমানকে শর্ত কর দিয়েছেন। আর সে কারনে মু'মিন মুসলমানদের ঈমান ও আক্বীদার মূল কালিম হচ্ছে-

لا اله الا الله محمد رسول الله صلي الله عليه و سلم

অর্থ: মহান আল্লাহ পাক ব্যাতীত কোন ইলাহ নাই, সাইয়্যিদুনা মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহ তায়ালার রসূল।"

আর এই পবিত্র কালিমা শরীফ সহীহ সনদে হাদীস শরীফে বর্নিত আছে। আসুন আমরা সনদ সহ হাদীস শরীফখানা লক্ষ্য করি- 

حدثنا علي بن حمشاد العدل املاء هرون بن العباس الهاشمي ثنا جندل بن والق ثنا عمرو بن أوس الانصاري 

حدثنا سعيد بن ابي عروبة عن قتادة عن سعيد بن المسيب عن ابن عباس رضي الله عنه قال اوحي الله الي عيسي عليه السلام يا عيسي امن بمحمد صلي الله عليه و سلم وامر من ادركه من امتك ان يؤمنوا به فلو لا محمد صلي الله عليه و سلم ما خلقت ادم عليه السلام ولولا محمد صلي الله عليه و سلم ما خلقت الجنة و النار ولقد خلقت العرش علي الماء فضطرب فكتبت عليه "لا اله الا الله محمد رسول الله صلي الله عليه و سلم فسكن. هذا حديث صحيح الاسناد 

অর্থ: হযরত ইমাম হাকিম নিসাবুরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, আমাদের কাছে হাদীস শরীফ বর্ননা করেছেন হযরত আলী বিন হামশাদ আদল ইমলা রহমাতুল্লাহি আলাইহি। তিনি বলেন, আমাদের কাছে হাদীস শরীফ বর্ননা করেছেন হারূন বিন আব্বাস হাশেমী রহমাতুল্লাহি আলাইহি। তিনি বলেন, আমাদের কাছে হাদীস শরীফ বর্ননা করেছেন জানদাল বিল ওয়াকিল রহমাতুল্লাহি আলাইহি। তিনি বলেন আমাদের কাছে হাদীস শরীফ বর্ননা করেছেন হযরত আমর বিন আউস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু। 

সনদ পরিবর্তন/ দ্বিতীয় সনদ : হযরত ইমাম হাকিম রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, আমাদের কাছে হাদীস শরীফ বর্ননা করেছেন হযরত সাঈদ বিন আবু উরূবাহ রহমাতুল্লাহি আলাইহি , তিনি হযরত ক্বাতাদাহ রহমাতুল্লাহি আলাইহি থেকে। তিনি সাঈদ বিন মুসাঈয়িব রহমাতুল্লাহি আলাইহি থেকে, তিনি হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে। তিনি বলেন-

" মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম উনাকে ওহী করলেন। হে হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম ! আপনি হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি ঈমান আনুন এবং আপনার উম্মতের মধ্যে উনাকে যারা পেতে চায় তাঁদের নির্দেশ করুন, তাঁরা যেন উনার প্রতি ঈমান আনে। যদি সাইয়্যিদুনা মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম না হতেন হতেন তবে আদম আলাইহিস সালাম উনাকে সৃষ্টি করতাম না, যদি সাইয়্যিদুনা মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সৃষ্টি না হতেন তবে জান্নাত এবং জাহান্নাম সৃষ্টি করতাম না। আর যখন আমি পানির উরর আরশ সৃষ্টি করলাম তখন তা টলমল করছিলো, যখনই আরশের মধ্যে 

لا اله الا الله محمد رسول الله صلي الله عليه و سلم

লিখে দেই তৎক্ষণাৎ আরশ স্থির হয়ে যায়।"

এই হাদীস শরীফের সনদ সহীহ।"

দলীল-

√ আল মুসতাদরাক আলাছ ছহীহাঈন লিল হাকীম নিসাবূরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি, - কিতাবু তাওয়ারীখিল মুতাক্বাদ্দিমীন- যিকরু আখবারী সাইয়্যিদুল মুরসালীন ওয়া খাতামুন নাব্যিয়িন মুহম্মদ বিন আব্দুল্লাহ বিন আব্দুল মুত্তালিব মুছতাফা ছলাওয়াতুল্লাহি আলাইহি ওয়া আলিহীত ত্বহীরিন ৪র্থ খন্ড ১৫৮৩ পৃষ্ঠা।

√ মুখতাছারুল মুসতাদরাক ২য় খন্ড ১০৬৭ পৃষ্ঠা। 

উপরোক্ত শরীফে এ কালেমা শরীফের স্পষ্ট বর্ণনা পাওয়া গেলো। এ সম্পর্কে আরো একটি সহিহ হাদীস শরীফ দেখুন-

عن عمر بن الخطاب رضي الله عنه قال قال رسول الله صلي الله عليه و سلم لما افتري ادم عليه السلام الخطيءة قال يارب اسألك بحق محمد صلي الله عليه و سلم لما غفرت لي فقال الله يا ادم عليه السلام وكيف عرفت محمدا صلي الله عليه و سلم ولم اخلقه ؟ قال يا رب لما خلقتني بيدك و نفقت في من روحك رفعت رأسي فرأيت علي قواءم العرش مكتوبا "لا اله الا اللهمحمد رسول الله صلي الله عليه و سلم فعلمت انك لم تضف الي اسمك الا احب الخلق اليك فقال الله صدقت يا ادم عليه و السلام انه لاحب اخلق الي ادعني بحقه فقد غفرت لك ولو لا محمد صلي الله عليه و سلم ما خلقتك. هذا حديث صحيح الاسناد 

অর্থ: “হযরত উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন: নবী করিম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, যখন হযরত আদম আলাইহিস সালামের দোয়া ক্ববূলের সময় হলো তখন তিনি দোয়া করলেন, হে আমার রব! আমি আপনার কাছে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয় সাল্লমের ওসীলায় প্রার্থনা করছি। অতএব আমার দোয়া ক্ববূল করুন। মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, হে হযরত আদম আলাইহিস সালাম! আপনি কিভাবে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে চিনলেন, এখনো তো উনাকে যমীনে প্রেরণ করিনি। জাওয়াবে হযরত আদম আলাইহিস সালাম বলেন, হে আমার রব! আপনি যখন আমাকে আপনার কুদরতী হাত মুবারক-এ তৈরি করে আমার মধ্যে রূহ ফুকে দেন তখন আমি আমার মাথা উত্তোলন করে আরশের খুঁটিসমূহে লিখিত দেখতে পাই- “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম”।

তখন আমি বুঝতে পারলাম, আপনার নাম মুবারক-এর সাথে যাঁর নাম মুবারক সংযুক্ত আছে, তিনি সৃষ্টির মধ্যে আপনার সবচেয়ে মুহব্বতের হবেন। মহান আল্লাহ বলেন, হে হযরত আদম আলাইহিস সালাম! আপনি সত্য কথাই বলেছেন। কারণ তিনি সৃষ্টির মধ্যে আমার কাছে সবচেয়ে মুহব্বতের। হযরত আদম আলাইহিস সালাম বলেন, হে মহান আল্লাহ ! উনার ওসীলায় আমার প্রার্থনা ক্ববূল করুন। মহান আল্লাহ বলেন, আমি আপনার দোয়া কবূল করলাম। যদি আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম না হতেন তাহলে আমি আপনাকেও সৃষ্টি করতাম না। সুবহানাল্লাহ! ” 

দলীল-

√ মুসতাদরেকে হাকীম- কিতাবু তাওয়ারিখিল মুতাকাদ্দেমীন ৪র্থ খণ্ড ১৫৮৩ পৃষ্ঠা। 

√ আছ ছহীহাহ ১ম খন্ড ৮৮ পৃষ্ঠা।

√ মুখতাছারুল মুস্তাদরাক ২য় খন্ড ১০৬৯ পৃষ্ঠা।

√ আত তাওয়াসুল ১১৫ পৃষ্ঠা।

√ তাফসীরে দুররিল মানছুর ১ম খন্ড ৫৮ পৃষ্ঠা।

√ কানযুল উম্মাল ১১ খন্ড ৪৫৫ পৃষ্ঠা।

√ দালায়েলুন নবুওয়াত লি বায়হাকী।

√ তাবরানী শরীফ।

√ মাদারেজুন নবুওয়াত ।

√ ইবনে আসাকির।

√ মাওয়ারিদুর রাভী লি মোল্লা আলী ক্বারী।

ইমাম হাকিম রহমতুল্লাহি আলাইহি এ হাদীছ শরীফখানর সনদ সহীহ তথা বিশুদ্ধ বলেছেন। ইমাম জালালুদ্দীন সূয়ুতি রহমাতুল্লাহি আলাইহি , শায়েখ আব্দুল হক মুহাদ্দিস দেহলবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি , ইবনে আসাকির, ইমাম তাবরানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি , ইমাম বায়হাক্বী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উক্ত হাদীস শরীফের ব্যাপারে আস্থা স্থাপন করেছেন।

বিখ্যাত ইমাম হাফিজে হাদীস আল্লামা জালালুদ্দীন সূয়ুতি রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার কিতাবে উল্লেখ করেন- 

عن ابن عباس رضي الله عنه قال: قال رسول الله صلي الله عليه و سلم ما في الجنة شجرة عليها ورقة الا مكتوب عليها لا اله الا الله محمد رسول الله صلي الله عليه و سلم

অর্থ: হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্নিত, তিনি বলেন- মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ মুবারক করেন, জান্নাতের এমন কোন গাছ নেই যার পাতার মধ্যে لا اله الا الله محمد رسول الله صلي الله عليه و سلم এ বরকতময় কালিমা শরীফ লিখিত নেই। "

দলীল-

√ খাছায়েছুল কুবরা ১ম খন্ড ১৩ পৃষ্ঠা।

√ আল হিলইয়া লি আবু নুয়াইম রহমাতুল্লাহি আলাইহি।

হযরত ইমাম জালালুদ্দীন সূয়ুতি রহমাতুল্লাহি আলাইহি আরো বর্ননা করেন,-

عن حضرت جابر رضي الله عنه قال: قال رسول الله صلي الله عليه و سلم مكتوب علي باب الجنة لا اله الا الله محمد رسول الله صلي الله عليه و سلم

অর্থ: হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু আনহু বর্ননা করেন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ মুবারক করেন, জান্নাতের দরজা মুবারকে লিখা রয়েছে-

لا اله الا الله محمد رسول الله صلي الله عليه و سلم 

দলীল- 

√ খাছায়িছুল কুবরা ১ম খন্ড 

কিতাবে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা বর্ননা রয়েছে-

عن حضرت ابي الحسن علي بن عبد الله الهاشمي الرقي رحمة الله عليه قال : دخلت بلاد الهند، فرايت في بعض قرأها شجرة ورد اسود ينفتح عن وردة كبيرة طيبة الراءحة سوداء عليها مكتوب بخط ابيض لا اله الا الله محمد رسول الله صلي الله عليه و سلم ابو بكرن الصديق عليه السلام عمر الفاروق رضي الله عنه فشككت في ذاك وقلت انه معمول فعمدت الي حبة لم تفتح ففتحتها فرايت فيها كما رايت في ساءر الورد في البلد منه شيء كثير

অর্থ: হযরত ইবনে আসাকির রহমাতুল্লাহি আলাইহি এবং হযরত ইবনে নাজ্জার রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনারা দু'জন স্বীয় ইতিহাসগ্রন্থে হযরত আবুল হাসান আলী ইবনে আব্দুল্লাহ আল হাশীমি আররক্বী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি ভারতবর্ষের কোন এক এলাকায় পৌঁছে একটি কালো রঙ্গের গোলাপ গাছ দেখলাম। এর অকটি ফুল অনেক বড়, যার রঙ কালো, সুগন্ধিনয় এবং অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর ছিলো। ঐ ফুলটির গায়ে সাদা হরফে লিখা ছিলো-

لا اله الا الله محمد رسول الله صلي الله عليه و سلم ابو بكرة صديق رضي الله غنه عمر الفاروق رضي الله عنه 

আমি মনে মনে চিন্তা করলাম এবং আমার বিশ্বাস হলো নিশ্চয়ই এটা কারো কাজ হবে। তাই আমি অন্য একটি বন্ধ কলি খুলে দেখলাম। আশ্চর্যের বিষয় তাতেও এরূপ লিখা ছিলো। এধরনের গোলাপ গাছ সেখানে প্রচুর পরিমান ছিলো। " সুবহানাল্লাহ্ !!

দলীল-

√ ইবনে আসাকির

√ ইবনে নাজ্জার।

উপরোক্ত নির্ভরযোগ্য দলীল থেকে প্রমানিত হলো কালিমা শরীফ হচ্ছে " লা'ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহম্মদুর রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম'"। 

অথচ সালাফী ওহাবীপন্থী মুরতাদরা বলছে এধরনের কোন কালিমা শরীফ নাকি ইসলামে নাই। নাউযুবিল্লাহ !!

শুধু তাই নয় জামাতের মুরতাদ তারেখ মনোয়ার বলেছে কালিমা শরীফে " লা'ইলাহা ইল্লাল্লাহু " এই বাক্যের পাশাপাশি "মুহম্মদুর রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম লিখা শিরক। নাউযুবিল্লাহ !!

অথচ উপরোক্ত হাদীস শরীফ দেখুন, স্পষ্ট ভাবেই দুইটা কালাম একসাথেই আছে॥ এবং হাদীস শরীফের ইমামগনও পাশাপাশি ভাবে নিজেদের কিতাবে উল্লেখ করেছেন। 

এত সহীহ দলীল থাকার পরও কিভাবে এরা বিরোধীতা করে ??

হাদীস শরীফে আছে, আখেরী জামানায় কিছু মিথ্যাবাদী দাজ্জালের চেলা বের হবে। এরা এমন সব কথা বলবে তোমরা শোন নাই তোমাদের বাপ দাদারাও শোনে নাই। "

দলীল-

√ মুসলিম শরীফ।

এ হাদীস শরীফ থেকে দেড়া দেখা যাচ্ছে ওহাবী সালাফীরা হচ্ছে এই আখেরী জামানার দাজ্জালের অন্যতম চেলা। কারন ইসলামের ১৪০০ বছর ধরে কালিমা শরীফ নিয়ে এমন আপত্তি কেউ কোনদিন করাতো দূরের কথা কল্পনাও করে নাই। অথচ বর্তমান ওহাবী সালাফীরা হঠাৎ করে দাজ্জালের সাগরেদের নত নিজের কুফরী কথা নিয়ে আগমন করে কুফরী কথা প্রচার করছে ।

সহীহ হাদীস শরীফ দ্বারা প্রমানিত ১২ ই রবিউল আউয়াল শরীফ সোমবার শরীফ-ই হচ্ছে ঈদে মীলাদুন্নবী


 
সহীহ হাদীস শরীফ দ্বারা প্রমানিত ১২ ই রবিউল আউয়াল শরীফ সোমবার শরীফ- হচ্ছে ঈদে মীলাদুন্নবী-

ধর্মব্যবসায়ী, মুনাফিক,ভন্ড,শ্রেনীর কিছু লোক  মানুষকে ধোঁকা দেওয়ার জন্য বলে থাকে নবীজী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ উনার তারিখ নিয়ে মতভেদ আছে। তাই মতভেদ যুক্ত বিষয়ে আমল করা যাবে না অর্থাৎ ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা যাবে না । নাউযুবিল্লাহ !!

আসলে এই বাতিল ফির্কাগুলা মুনাফিক হএয়ার কারনে সত্য বিষয় গোপন করে। দেখুন সহীহ হাদীস শরীফে হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু  আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফের তারিখ,বার, মাস সবই বর্ণনা করা আছে ।
হাফিজে হাদীস হযরত আবু বকর ইবনে আবী শায়বা রহমাতুল্লাহি আলাইহি যেটা বিশুদ্ধ সনদে হাদীস শরীফে বর্ননা করেন-

ﻋﻦ ﻋﻔﺎﻥ ﻋﻦ ﺳﻌﻴﺪ ﺑﻦ ﻣﻴﻦ ﻋﻦ ﺟﺎﺑﺮ ﻭﺍﺑﻦ ﻋﺒﺎﺱ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﻤﺎ ﻗﺎﻝ ﻭﻟﺪ ﺭﺳﻮﻝ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ ﻋﺎﻡ ﺍﻟﻔﻴﻞ ﻳﻮﻡ ﺍﻻﺛﻨﻴﻦ ﺍﻟﺜﺎﻧﻲ ﻋﺸﺮ ﻣﻦ ﺷﻬﺮ ﺭﺑﻴﻊ ﺍﻻﻭﻝ

অর্থ : হযরত আফফান রহমাতুল্লাহি আলাইহি হতে বর্নিত,তিনি হযরত সাঈদ ইবনে মীনা রহমাতুল্লাহি আলাইহি থেকে বর্ননা করেছেন যে, হযরত জাবির ও হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ হস্তি বাহীনি বর্ষের ১২ই রবীউল আউয়াল সোমবার শরীফ হয়েছিল।”

দলীল-
√ মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বা

√ বুলুগুল আমানী শরহিল ফতহুর রব্বানী ২য় খন্ড ১৮৯ পৃস্ঠা।

√ বিদায়া ওয়ান নিহায়া ৩ য় খন্ড ১০৯ পৃষ্ঠা , প্রকাশনা- দারূল ফিকর , বৈরূত লেবানন।

উক্ত হাদীস শরীফ এর রাবীগন অত্যান্ত সেকাহ বা বিশস্ত। রবীগনের নাম ও তাদের সম্পর্কে রেজাল বিদগন কি বলেছেন আসুন দেখা যাক। উপরোক্ত হাদীস শরীফের সনদে রাবীগন হচ্ছেন,

 –হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু।

– হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু আনহু

– সাঈদ ইবনে মীনা রহমাতুল্লাহি আলাইহি
 হযরত আফফান রহমাতুল্লাহি আলাইহি

সনদের উপরের দুজনতো সাহাবী উনাদের তে কোন তুলনাই নাই । অপর দুই জন রাবী সাঈদ ইবনে মীনা রহমাতুল্লাহি আলাইহি  ও হযরত আফফান রহমাতুল্লাহি আলাইহি সম্পর্কে রেজালের কিতাবে বলা হয়েছে– উচ্চ পর্যায়ের নির্ভযোগ্য ইমাম, সিকাহ, তীক্ষ্ণ স্মরন শক্তি সম্পন্ন, বিশস্ত এবং নির্ভরযোগ্য ,দৃঢ় প্রত্যয় সম্পন্ন ব্যাক্তিত্ব।’’

দলীল-
√ খুলাছাতুত তাহযীব ২৬৮ পৃষ্ঠা
√ ত্বাকরীবুত তাহযীব ২ খন্ড ১২৬ পৃষ্ঠা

শুধু তাই নয় সহীহ হাদীস শরীফে অন্য সনদেও এ বিষয়ে হাদীস শরীফ উল্লেখ আছে। ইমাম হাকিম নিশাপুরী রহমতুল্লাহি আলাইহি এ প্রসঙ্গে উনার কিতাবে উল্লেখ করেন,

মুহম্মদ বিন ইসহাক রহমতুল্লাহি আলিইহি (তাবেয়ী)  বলেন, নবী করিম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ১২ ই রবিউল আউয়াল শরীফ এর রাতে বিলাদত (জন্ম) লাভ করেন।’’ ইমাম হাকিম ও ইমাম যাহাবী  রহমতুল্লাহি আলাইহিম বলেন- উক্ত হাদীস শরীফটি সহীহ।

দলীলঃ

  • আল মুস্তাদরাকে হাকিম ২য় খন্ড ৬৫৯ পৃস্ঠা , কিতাবুল মানাকিব অধ্যায় , হাদীস নম্বর ৪১৮২।

সূতরাং আমরা সহীহ হাদীস শরীফ থেকে নবীজী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফের তারিখ জানতে পাররাম। এবার আসুন দেখা যাক পরবর্তী উলামায়ে কিরামগন এ বিষয়ে কি বলেছেন। বিখ্যাত ইতিহাসবিদ ইবনে ইসহাক রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন,  ‘নবী করিম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদত ১২ ই রবিউল আউয়ালের আমুল ফিল বা হস্তী বাহীনির বছর রাতের শেষ ভাগে হয়েছে।’’

দলীলঃ

  • কিতাবুল ওয়াফা পৃষ্ঠা ৮৭ । লেখক – আল্লামা ইবনে জাওজী রহমতুল্লাহি আলাইহি, প্রকাশনা – দারূল কুতুব ইসলামীয়া , বৈরূত লেবানন।

হাফিজে হাদীস ইমাম কুস্তালানি রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন প্রসিদ্ধ মত অনুসারে নিশ্চয়ই  ‘নবী করিম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ১২ ই রবিউল আউয়াল শরীফ সোমবার দুনিয়ায় শুভ আগমন করেছেন। ………….. ১২ ই রবিউল আউয়াল শরীফ মক্কা শরীফের অধিবাসীদের মধ্যে নবী করিম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর পবিত্র জন্মস্থান যিয়ারত করার আমল বর্তমান অবধি জাড়ি রয়েছে।’’

দলীলঃ

  • শরহুল মাওয়াহেব ১ম খন্ড ২৪৮ পৃস্ঠা।

বিখ্যাত ইতিহাসবিদ ইমাম ইবনে হিশাম রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, ‘‘নবী করিম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ১২ ই রবিউর আউয়ালের আমুল ফিল বা হস্তী বাহীনির বছর রাতের শেষ ভাগে উনার পবিত্র বিলাদত  লাভ করেন।’’

দলীলঃ

  • সিরাতে ইবনে হিশাম ১ম খন্ড ১৫৮ পৃষ্ঠা।

ঐতিহাসি ইবনে খালদুন রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, ‘‘নবী করিম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ১২ ই রবিউর আউয়ালের আমুল ফিল বা হস্তী বাহীনির বছর রাতে শুভ আগমন করেন। তখন ছিলো বাদগশা নাওয়াশেরের শাষনকাল।

দলীলঃ

  • সিরাতে নববীয়া ৮১ পৃস্ঠা।

ইমাম জারির তাবারী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, ‘‘নবী করিম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ১২ ই রবিউর আউয়ালের আমুল ফিল বা হস্তী বাহীনির বছর রাতের শেষ ভাগে উনার পবিত্র বিলাদত  লাভ করেন।’’

দলীলঃ

  • তারিখে ওমুম ওয়াল মুলক ২ খন্ড ১২৫ পৃষ্ঠা।

ইমাম ইবনে কাছীর ও ইমাম যুরকানী রহমতুল্লাহি আলাইহিম বলেন, ১২ ই রবিউর আউয়াল তারিখ ই নবীজী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর তারিখ হিসাবে জমহুর উলামায়ে কিরামের নিকট প্রসিদ্ধ। উক্ত ১২ ই রবিউর আউয়াল তারিখ ই নবীজী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর শুভাগমন হিসাবে সবাই পালন করে আসছে।

দলীলঃ

  • বিদায়া ওয়ান নিহায়া ৩ য় খন্ড ১০৯ পৃষ্ঠা।
  • শরহুল মাওয়াহেব ২ খন্ড ২৪৮ পৃষ্ঠা।

উপমহাদেশের বিখ্যাত আলেম ও হাদীস শরীফ বিশারদ শায়েখ আব্দুল হক মুহাদ্দেস দেহলবী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, ‘নবীজী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বিলাদত শরীফের তারিখ হিসাবে ১২ ই রবিউল আউয়াল তারিখ ই মশহুর। মক্কা শরীফের অধিবাসীদের আমল হলো  উক্ত তারিখে তারা নবী করিম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর পবিত্র জন্মস্থান যিয়ারত করতেন ’’

দলীলঃ

  • মা-সাবাতা বিস সুন্নাহ ৮১ পৃষ্ঠা।

তিনি আরো বলেন, প্রসিদ্ধ সিরাতবিদদের মতে, ‘নবীজী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বিলাদতের সময় হলো হস্তী বর্ষের ৫৫ দিন পর। এই মতই সর্বাধিক প্রসিদ্ধ যে তা ছিলো রবিউল আউয়াল শরীফ মাসের ১২ তারিখ। অধিকাংশ আলেম ও ইতিহাসবি এ বিষয়ে ঐক্যমত্য স্থাপন করেছেন।

দলীলঃ

  • মা-সাবাতা বিস সুন্নাহ ৮১ পৃষ্ঠা।

উক্ত কিতাবে আরো বর্নিত আছে , ‘সমস্ত মুসলমানগন এ বিষয়ের উপর ইজমা করেছেন বা একমত যে, ‘নবীজী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ১২ ই রবিউল আউয়াল আগমন করেছেন।

দলীলঃ

  • মা-সাবাতা বিস সুন্নাহ ৮২ পৃষ্ঠা।

শুধু তাই নয় বর্তমানে যে সকল ওহাবী সালাফীরা নবীজী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আগমনের তারিখ ১২ ই রবিউল আউয়াল অস্বীকার করে তাদের গুরু লা-মাযহাবী নওয়াব সিদ্দীক হাসান খান ভুপালি তার কিতাবে লিখেছে, ‘নবীজী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বিলাদত মক্কা শরীফের বাদশা আবরাহার হস্তী বাহীনির বছর ১২ ই রবিউল আউয়ালের সুবহে সাদিকের সময় হয়েছে, এটার উপর উলামায়ে কিরাম একমত হয়েছেন এবং এটার উপর ইবনে জাওযী রহমতুল্লাহি আলাইহি বর্ননা করেছেন ও ঐক্যমত্য পোষন বরেছেন।

দলীলঃ

শামামাতুর আনবার ইয়ার ফি মাওলিদে খায়রিল বারিয়াহ ৭ পৃষ্ঠা।

সূতরাং এত স্পষ্ট এবং বিশুদ্ধ দলীল থাকার পরও নবীজী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আগমনের তারিখ ১২ ই রবিউল আউয়াল নিয়ে বিরোধিতা করা সুস্পষ্ট বিভ্রান্তির নামান্তর।

অনেকে আবার ১২ ই রবিউল আউয়ালকে অস্বীকার করতে বিভিন্ন মহাকাশবিদরে রেফারেন্স দেয়ার অপচেষ্টা করে। এসকল লোকদের জন্য নিম্নোক্ত গবেষনামূলক গানিতিক হিসাব উল্লেখ করা হলো-

 

অ্যাস্ট্রোনমারদের গবেষণায় নির্ভুলভাবে প্রমাণ হয় ১২ই রবিউল আউয়াল-ই হচ্ছে নবীজির আগমণ (জন্ম) এর দিন

নবীজির বিদায় গ্রহণের দিন ছিলো:
হিজরী সন: ১১ হিজরীর ১২ই রবিউল আউয়াল
ঈসায়ী সন: ৬৩২ সাল৮ই জুন
বার: সোমবার
**(১ নং দ্রষ্টব্য দেখুন)

Back Calculation করে দেখা যায়, ৫৭০ ঈসায়ী সনে রবীউল আউায়াল মাস শুরু হয়েছিলো:
হয়,
২৩ শে এপ্রিল ৫৩ হিজরী পূর্ব সনে। (যদি সফর মাস ২৯শে দিনে হয়)
অথবা,
২৪ শে এপ্রিল ৫৩ হিজরী পূর্ব সনে। (যদি সফর মাস ৩০ শে দিনে হয়)

কিন্তু, এটা নিশ্চিত ৫৩ হিজরী পূর্ব সনে সফর মাস ৩০ দিনের হয়েছিলো। **(সূত্র: ২ নং দ্রষ্টব্য দেখুন)

সে অনুযায়ী আপনি নিজেই গণনা করলে পাবেন:
৫৭০ সালের ৫ই মে সোমবারই হচ্ছে ১২ই রবিউল আউয়াল শরীফ।

তাহলে আমরা দেখতে পেলাম-
বিলাদত দিবস : ৫ই মে৫৭০ ঈসায়ী সন ৫৩ পূর্ব হিজরী সোমবার
বিদায় দিবস : ৮ই জুন৬৩২ ঈসায়ী সন১১ হিজরী সোমবার

দুই ইংরেজী সনের সময়ের পার্থক্য-
৬২ বছর ১ মাস ৩ দিন

সুতরাং চন্দ্র বৎসর অনুযায়ী-
৬২x৩৬৫+৩১+৩= (২২৬৬৪ ভাগ ৩৫৫ দিন)= ৬৩+ বৎসর

১ নং দ্রষ্টব্য: আখেরী চাহার শোম্বা বলা হয় সফর মাসের শেষ বুধবারকে, কিন্তু কোন তারিখ নিদ্দিষ্ট করা হয় না। এর কারণ সফর মাসের শেষ বুধবার ছিলো হিজরী মাসের ৩০ তারিখ, যা সব সময় আসে না। তাই পরবর্তীতে এ দিনটি যেন প্রতি বছর পালন করা যায় সেই সুবিধার্থে সফর মাসের শেষ বুধবার ধরে দিনটি পালন করা হয়। এখন ৩০ তারিখ যদি বুধবার ধরা হয়, তবে আপনি নিজেই হাতে গুনে দেখুনে ১২ তারিখ সোমবার হয়।

২ নং দ্রষ্টব্য: ৫৭০ ঈসায়ী সন ৫৩ পূর্ব হিজরীতে সফর মাস যে ৩০ দিন ছিলো তার প্রমাণ দুটি:
ক) চাদ গবেষণায় প্রমাণ পাওয়া যায়নবীজির বিলাদতের আগে পর পর ৪ চন্দ্র মাস ৩০ দিন করে হয়েছিলো।
খ) যদি সফর মাস ৩০ না হয়তবে বিলাদত দিবস সোমবার হয় না। অথচ সহিহ হাদীসে প্রমাণ পাওয়া যায় নবীজি নিজেই বলেছেন উনার বিলাদত গ্রহণ হচ্ছে সোমবার দিন।

তাই অ্যাস্ট্রোনমার বা জোর্তিবিজ্ঞানীদের গবেষণায় নির্ভুল ভাবে প্রমাণিত নবীজির বিলাদতের দিন অবশ্যই ১২ই রবিউল আউয়াল শরীফ।