নাস্তিকদের আপত্তি- হাদিস জানায়, সন্তানের চেহারা নির্ভর করে পিতা বা মাতার মাঝে কার বীর্যপাত আগে ঘটবে তার ওপর কিন্তু আমরা এখন জানি যে, সন্তানের চেহারা নির্ভরশীল পিতা-মাতার জেনেটিক্স এর ওপর! এ ধরনের কুসংস্কারে আপনি কি করে বিশ্বাস স্থাপন করছেন?
নাস্তিকদের আপত্তি ৯ : হাদিস জানায়, সন্তানের চেহারা নির্ভর করে পিতা বা মাতার মাঝে কার বীর্যপাত আগে ঘটবে তার ওপর (Sahih Bukhari 4:55:546)! কিন্তু আমরা এখন জানি যে, সন্তানের চেহারা নির্ভরশীল পিতা-মাতার জেনেটিক্স এর ওপর! এ ধরনের কুসংস্কারে আপনি কি করে বিশ্বাস স্থাপন করছেন?
নাস্তিকদের আপত্তি ১০ : “মুহম্মদের ভাষ্যমতে, যদি কোন পুরুষের প্রথমে বীর্য স্থলন ঘটে তবে সন্তানের চেহারা হবে তার (বাবার) মত, যদি স্ত্রীর আগে ঘটে তবে হবে মায়ের মত (Sahih Bukhari 4:55:546) ! নবীর এধরনের মিথ্যাচারে আপনি বিশ্বাস স্থাপন করে যাচ্ছেন কেন?
http://au.answers.yahoo.com/question/index?qid=20100201220421AATRr1l
http://www.dnaftb.org/1/Ó
খন্ডন : সন্তানের চেহারা নির্ভর করে পিতা-মাতার জেনেটিক্স এর উপর। এ কথাটি বলা হচ্ছে বংশগতির সূত্রগুলোর ভিত্তিতে। ১৯০০ সালের আগে এ বিষয়গুলো নিয়ে কারো কোন জ্ঞানও ছিল না। তথাকথিত বিজ্ঞানী ম্যান্ডেল বংশগতির সূত্রগুলো উপস্থাপন করেছে দাবী করলেও ১৯০০ সালের আগে কেউই এ ব্যাপারে অন্য কেউ গবেষণাই করেনি।
অথচ সপ্তম শতাব্দীতেই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন- “পুরুষের নুত্বফা সাদাটে এবং নারীর নুত্বফা হলুদ হয়। যখন এ দুটি মিলিত হয় এবং পুরুষের নুত্বফা নারীর নুত্বফার ওপর আধিপত্যশালী হয় তখন মহান আল্লাহ পাক উনার হুকুম মুবারক অনুযায়ী সন্তানের চেহারা পিতার মতো হয়। আর যখন নারীর নুত্বফা পুরুষের নুত্বফার ওপর আধিপত্যশালী হয়, তখন মহান আল্লাহ পাক উনার হুকুম মুবারক অনুযায়ী সন্তানের চেহারা মাতার মতো হয়।”
যেমন পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত আছে-
عَنْ اُمُّ الْمُؤْمِنِيْنْ حَضْرَتْ عَائِشَةَ عَلَيْهَ السَّلَامَ اَنَّ امْرَاَةً، قَالَتْ لِرَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ هَلْ تَغْتَسِلُ الْمَرْاَةُ اِذَا احْتَلَمَتْ وَاَبْصَرَتِ الْمَاءَ فَقَالَ نَعَمْ. فَقَالَتْ لَـهَا عَائِشَةُ تَرِبَتْ يَدَاكِ وَاُلَّتْ. قَالَتْ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ دَعِيهَا وَهَلْ يَكُونُ الشَّبَهُ اِلاَ مِنْ قِبَلِ ذَلِكِ اِذَا عَلاَ مَاؤُهَا مَاءَ الرَّجُلِ اَشْبَهَ الْوَلَدُ اَخْوَالَهُ وَاِذَا عَلاَ مَاءُ الرَّجُلِ مَاءَهَا اَشْبَهَ اَعْمَامَهُ.
অর্থ : “উম্মুল মু’মিনীন হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমত মুবারকে একজন মহিলা ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা তিনি সুওয়াল করলেন, একজন মহিলার ইহ্তিলাম হলে এবং কাপড়ে দাগ দেখতে পেলে কি গোছল ফরয হবে? নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, হ্যাঁ, গোছল ফরয হবে। উম্মুল মু’মিনীন হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনিও উক্ত মহিলা ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা উনার কথায় বিষ্ময় প্রকাশ করলে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, সন্তানের মায়ের ন্যায় হবার পেছনে কি এছাড়া অন্য কোনো কারণ থাকতে পারে? যখন নারীর নুত্বফা পুরুষের নুত্বফার ওপর আধিপত্যশালী হয়, তখন সন্তান মাতামহের খান্দানের লোকদের অনুরূপ হয়। আর যখন পুরুষের নুত্বফা নারীর নুত্বফার ওপর আধিপত্যশালী হয়, তখন সন্তান পিতামহের খান্দানের লোকদের অনুরূপ হয়।’ (মুসলিম শরীফ)
উপরোক্ত হাদীছ শরীফ উনার আলোচনা মুতাবিক বুঝা যাচ্ছে যে, একটিমাত্র ফিনোটাইপিক (Phenotypic) বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করেই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সুস্পষ্টভাবেই বিশ্ববাসীকে একটি জিনোটাইপিক (Genotypic) বৈশিষ্ট্যের বিষয় জানিয়ে দিলেন। অথচ তথাকথিত বিজ্ঞানীরা ক্বিয়ামত পর্যন্ত চেষ্টা করলেও এই ফিনোটাইপিক বিষয়টি উদ্ভাবন করতে সমর্থ হতো না। কেননা তথাকথিত বিজ্ঞান কোন দিনই জানতো না যে, সন্তানের চেহারা নির্ধারক জীনগুলো পিতা বা মাতার মাঝে কার নুত্বফা আগে বের হবে তার ওপর নির্ভর করে। অর্থাৎ পুরুষের প্রথমে নুত্বফা বের হওয়ার ফলে সন্তানের চেহারা নির্ধারক জীনগুলোর মধ্যে পিতা থেকে প্রদত্ত জিনগুলো প্রকট (Dominant) বৈশিষ্ট্য লাভ করার ফলে পিতা থেকে প্রদত্ত জিনগুলো মাতা থেকে প্রদত্ত জিনগুলোর উপর প্রভাব বিস্তার করে এবং ফিনোটাইপিক (Phenotypic) বৈশিষ্ট্য হিসেবে সন্তানের চেহারা পিতার মতো হয়। বিপরীতক্রমে স্ত্রীর প্রথমে নুত্বফা বের হওয়ার ফলে সন্তানের চেহারা নির্ধারক জীনগুলোর মধ্যে মাতা থেকে প্রদত্ত জিনগুলো প্রকট (Dominant) বৈশিষ্ট্য লাভ করার ফলে মাতা থেকে প্রদত্ত জিনগুলো পিতা থেকে প্রদত্ত জিনগুলোর উপর প্রভাব বিস্তার করে এবং ফিনোটাইপিক (Phenotypic) বৈশিষ্ট্য হিসেবে সন্তানের চেহারা মাতার মতো হয়। আর এর মাধ্যম্যেই প্রমাণিত হয় যে, যিনি মানুষের সৃষ্টিকর্তা তিনিই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে প্রকৃত বিষয়টি জানিয়ে দিয়েছেন।
0 Comments:
Post a Comment