একমাত্র আদম আলাইহিস সালাম ব্যতীত পৃথিবীর কোন মানুষ মাটির সৃষ্টি নয়, পর্ব-২
Related imageএকমাত্র আদম আলাইহিস সালাম ব্যতীত পৃথিবীর কোন মানুষ মাটির সৃষ্টি নয়, পর্ব-২
কুরআন শরীফে যত জায়গায় মানুষ মাটির সৃষ্টি বলা হয়েছে তার দ্বারা মূলত একমাত্র হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনাকেই বুঝানো হয়েছে। আদম আলাইহিস সালাম ব্যতীত কোন মানুষই মাটির দ্বারা সৃষ্ট নয়। মানুষ মাটির সৃষ্টি এমন ১৪ খানা আয়াত শরীফ কুরআন শরীফে রয়েছে। প্রত্যেকটি তাফসীর ধারাবাহিক ভাবে উল্লেখ করা হবে।

(বিগত পর্বের পর)

২ নং আয়াত শরীফ :

ان خلقكم من تراب ثم اذا انتم بشر تنتشرون

অর্থ: তাঁর ( আল্লাহ পাক) উনার নিদর্শনাবলীর মধ্যে এক নিদর্শন এই যে, তিনি মাটি থেকে তোমাদের সৃষ্টি করেছেন। এখন তোমরা মানুষ পৃথিবীতে ছড়িয়ে আছো।”

[ সূরা রুম ২০ নং আয়াত শরীফ]

উক্ত আয়াত শরীফের তাফসীরে মুফাসসিরানে কিরামগন কি বলেছেন সেটা এখন তুলে ধরছি—>

→ইমামুল মুফাসসিরীন, আল্লামা ইমাম বাগবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উল্লেখ করেন-

(ان خلقكم) اي اباكم (من تراب ثم اذا انتم بشر) اي ادم وذريته (تنتشرون)

অর্থ: তিনি তোমাদেরকে অর্থাৎ তোমাদের পিতাকে (আদম আলাইহিস সালাম ) সৃষ্টি করেছেন মাটি থেকে। অতঃপর তোমরা অর্থাৎ হযরত আদম আলাইহিস সালাম ও উনার সন্তান জমীনে ছড়িয়ে পড়েছে।”

দলীল-
√ তাফসীরে বাগবী ৩য় খন্ড ৪৩১ পৃষ্ঠা।

→বিখ্যাত মুফাসসির, আল্লামা ইমাম কুরতুবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

قوله تعالي (ومن اياته ان خلق كم من تراب) اي من علامته رب بيته و وحدا نيته ان من تراب اي خلق اباكم منه

অর্থ: (আল্লাহ পাক উনার নিদর্শন সমূহের মধ্যে একটি নিদর্শন এই যে, আল্লাহ পাক তোমাদেরকে মাটির থেকে সৃষ্টি করেছেন) অর্থাৎ আল্লাহ পাক উনার রুবুবিয়্যাত ও অহদানিয়্যাত এর নিদর্শন এই যে, তিনি তোমাদের পিতা (হযরত আদম আলাইহিস সালাম ) উনাকে মাটি থেকে সৃষ্টি করেছেন।”

দলীল-
√ তাফসীরে কুরতুবী

→ইমামুল হুদা, আল্লামা কাজী ছানাউল্লাহ পানিপথী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

ان خلقكم اي خلق اصلكم ادم من تراب

অর্থ: তিনি (আল্লাহ পাক) তোমাদেরকে অর্থাৎ তোমাদের আছল হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনাকে মাটি থেকে সৃষ্টি করেছেন।”

দলীল-
√ তাফসীরে মাজহারী ৭ম খন্ড ২২৯ পৃষ্ঠা।

→আল্লামা আবুল লাইছ সমরকান্দী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

(ان خلقكم من تراب) يعني خلق ادم من تراب وانتم ولده (ثم اذا انتم) ذريته من بعده (بشر تنتشرون) يعني تبسطون

অর্থ: ( তিনি মাটি থেকে তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন) অর্থাৎ হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনাকে মহান আল্লাহ পাক মাটি থেকে সৃষ্টি করেছেন। আর তোমরা হলে উনার সন্তান উনার পরে পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েছো।”

দলীল-
√ তাফসীরে সামারকান্দী ৩য় খন্ড ৯ পৃষ্ঠা।

→বিখ্যাত মুফাসসির, আল্লামা আলাউদ্দীন আলী ইবনে মুহম্মদ ইবনে ইব্রাহিম বাগদাদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি লিখেন-

(ان خلقكم من تراب) اي خلق اصلكم وهو ادم من تراب -(ثم اذا انتم بشر تنتشرون) اي تبسطون في الارض

অর্থ: (তিনি তোমাদেরকে মাটি থেকে সৃষ্টি করেছেন) অর্থাৎ তোমাদের আছল হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনাকে মাটি থেকে সৃষ্টি করেছেন। অতঃরর তোমরা যমীনে ছড়িয়ে পড়েছ মানুষ হিসেবে।”

দলীল-
√ তাফসীরে খাযেন ৩য় খন্ড ৪৩১ পৃষ্ঠা।

সূতরাং, পবিত্র কুরআন শরীফের “সূরা রুম ২০ নং আয়াত শরীফের” তাফসীর দ্বারাও স্পষ্টভাবে প্রমাণ হয়ে গেল যে, মানুষ মাটির তৈরি বলতে হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনাকেই বুঝানো হয়েছে।



একমাত্র হযরত আদম আলাইহিস সালাম ব্যতীত পৃথিবীর কোন মানুষ মাটির সৃষ্টি নয়, পর্ব-৩
Related imageএকমাত্র হযরত আদম আলাইহিস সালাম ব্যতীত পৃথিবীর কোন মানুষ মাটির সৃষ্টি নয়, পর্ব-৩


ইসলামের দুশমন, ধর্মব্যবসায়ী, ওহাবী/দেওবন্দী/তাবলিগি/জামাতি/সালাফি সহ সকল বাতিল ফির্কা মানুষকে পথভ্রষ্ট করার জন্য কুরআন শরীফ উনার আয়াত শরীফের অপব্যাখ্যা করে বলে থাকে হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নাকি মাটির সৃষ্টি মানুষ।
নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক।

তারা মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য কুরআন শরীফ থেকে কিছু আয়াত শরীফ ভুল ভাবে উপস্থাপন করে।
যেসব আয়াত শরীফে মানুষ মাটির সৃষ্টি ইত্যাদি কথা বলা হয়েছে।
অনুসন্ধান করে দেখা গেছে কুরআন শরীফে ১৪ খানা আয়াত শরীফ আছে যেখানে “মানুষ মাটির সৃষ্টি” এরকম কথা বলা হয়েছে। কিন্তু উক্ত ১৪ খানা আয়াত শরীফ এর তাফসীর খুলে দেখা যায় “মানুষ মাটির সৃষ্টি” বলতে শুধুমাত্র হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনাকেই বুঝানো হয়েছে, আর দুনিয়ার কোন মানুষকেই মাটির সৃষ্টি বলা হয় নাই।
ওহাবীদের দাঁতভাঙ্গা জবাব দিতে আপনাদের জন্য উক্ত ১৪ খানা আয়াত শরীফ এবং এর তফসীর ধারাবাহিক ভাবে উল্লেখ করবো ইনশাআল্লাহ !!

(পূর্ববর্তী পোস্টের পর….)

৩ নং আয়াত শরীফ :

মহান আল্লাহ পাক ইরশাদ মুবারক করেন-

ولقد خلقنا الانسان من سلالة من طين

অর্থ: আমি মানুষ মাটির সারাংশ থেকে সৃষ্টি করেছি।”

[ সূরা মু’মিনুন ১২ নং আয়াত শরীফ]

উক্ত আয়াত শরীফ এর তাফসীরে নির্ভরযোগ্য এবং সর্বজনমান্য মুফাসসিরানে কিরামগন কি বলেছেন দেখুন–>>

→ বিখ্যাত মুফাসসির, আল্লামা আবু আবদুল্লাহ মুহম্মদ ইবনে আহমদ আনছারী আল কুরতুবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি লিখেন-

(ولقد خلقنا الانسان) الانسان هنا ادم عليه اصلاة والسلام قاله وغيره

অর্থ: (নিঃসন্দেহে আমি মানুষকে মাটির সারাংশ থেকে সৃষ্টি করেছি) এখানে “ইনসান” বা মানুষ দ্বারা হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনাকেই বুঝানো হয়েছে। হযরত ক্বাতাদা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু এবং উন্যান্য মুফাসসিরগন এরূপই বলেছেন।”

দলীল-
√ তাফসীরে কুরতুবী ৬ষ্ঠ খন্ড ১০৯ পৃষ্ঠা।

→ ইমামুল হুদা, আল্লামা ক্বাজী ছানাউল্লাহ পানীপথি রহমাতুল্লাহি আলাইহি লিখেন-

(ولقد خلقنا) الجنس (الانسان) او ادم عليه السلام (سلالة من طين)

অর্থ: নিঃসন্দেহে আমি মানুষের জিনস অথবা আদম আলাইহিস সালাম উনাকে মাটির সারাংশ থেকে সৃষ্টি করেছি।”

দলীল-
√ তাফসীরে মাযহারী ৬ষ্ঠ খন্ড ৩৬৭ পৃষ্ঠা।

→ বিখ্যাত মুফাসসির, আল্লামা আবু লাইছ সামারকান্দী রহমাতুল্লাহি আলাইহি লিখেন-

(ولقد خلقنا الانسان مم سلالة من طين) يعني ادم عليه السلام قال الكلبي ومقاتل

অর্থ: ( নিঃসন্দেহে আমি মানুষকে মাটির সারাংশ থেকে সৃষ্টি করেছি) অর্থাৎ হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনাকে (মাটির সারাংশ থেকে সৃষ্টি করেছি)। ক্বলবী ও মাকাতিল রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনাদের অভিমত এটাই।”

দলীল-
√ তাফসীরে সামারকান্দী ২য় খন্ড ৪০৯ পৃষ্ঠা।

→ ইমামুল মুফসসিরিন, আল্লামা আলাউদ্দীন আলী মুহম্মদ ইবনে ইব্রাহিম বাগদাদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি লিখেন-

(ولقد خلقنا الانسان)… المراد من الانسان هو ادم عليه السلام

অর্থ: (নিঃসন্দেহে আমি মানুষকে মাটির সারাংশ থেকে সৃষ্টি করেছি) অর্থাৎ আদম আলাইহিস উনাকে মাটির সারাংশ থেকে সৃষ্টি করেছি।”

দলীল-
√ তাফসীরে খাযেন ৩য় খন্ড ৩০১ পৃষ্ঠা।

→ ইমামুল মুফাসসিরিন, আল্লামা ইমাম বাগবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

(ولقد خلقنا الانسان) اي ادم عليه السلام

অর্থ: (নিঃসন্দেহে আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি) অর্থাৎ হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনাকে সৃষ্টি করেছি (মাটির সারাংশ থেকে)।

দলীল-
√ তাফসীরে বাগবী ৩য় খন্ড ৩০১ পৃষ্ঠা।

→ উক্ত আয়াত শরীফ সম্পর্কে তাফসীরের কিতাবে আরো উল্লেখ আছে-

(ولقد خلقنا الانسام من سلالة من طين) اور مقرر پيدا كيا همنے ادم كو جو وه سب ادميوی كا باپ هے اچہی کسے اچہی گوند هي هوءي سے

অর্থ: (নিঃসন্দেহে আমি মানুষকে মাটির সারাংশ থেকে সৃষ্টি করেছি) অর্থাৎ হযরত আদম আলাইহিস সালাম যিনি সকল মানুষের পিতা, উনাকে মাটির সারাংশ থেকে সৃষ্টি করেছি।”

দলীল-
√ তাফসীরে মুদ্বিহুল কুরআন ৩৫১ পৃষ্ঠা।

সূতরাং “সূরা মু’মিনুন ১২ নং আয়াত শরীফ” এবং উক্ত আয়াত শরীফ এর ব্যাখ্যা এটাই প্রমান করে যে, সকল মানুষের পিতা হযরত আদম আলাইহিস সালাম তিনিই সরাসরি মাটি দ্বারা সৃষ্টি। অন্যকোন মানুষ নয়। যে কারনে মুফাসসিরিনে কিরামগন উক্ত আয়াত শরীফে “ইনসান” দ্বারা আদম আলাইহিস সালাম উনাকেই বুঝিয়েছেন।



একমাত্র হযরত আদম আলাইহিস সালাম ব্যতীত পৃথিবীর কোন মানুষ মাটির সৃষ্টি নয় ,পর্ব-৪
Related imageএকমাত্র হযরত আদম আলাইহিস সালাম ব্যতীত পৃথিবীর কোন মানুষ মাটির সৃষ্টি নয় ,পর্ব-৪
মানুষ মাটির সৃষ্টি বলতে কুরআন শরীফে যত আয়াত শরীফে রয়েছে প্রতিটা আয়াত শরীফে মানুষ দ্বারা শুধুমাত্র হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনাকে বুঝান হয়েছে।

(বিগত পর্বের পর)

৪ নং আয়াত শরীফ :

আল্লাহ পাক কালামুল্লাহ শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন-

واذ قال ربك للملءكة اني خالق بشرا من طين

অর্থ: যখন আপনার পালনকর্তা ফেরেশতাগনকে বললেন, আমি মাটির মানুষ সৃষ্টি করবো।'”

[সূরা ছোয়াদ ৭১ নং আয়াত শরীফ]

মূলত উক্ত আয়াত শরীফ এর তাফসীরে সকল তাফসীরের কিতাবেই এসেছে “মাটির মানুষ” হচ্ছেন হযরত আদম আলাইহিস সালাম।

→এ প্রসঙ্গে বিখ্যাত মুফাসসিরে কুরআন, আল্লামা আবু লাইছ সমারকান্দী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

(اني خالق بشرا من طين) يعني ادم عليه السلام

অর্থ: (নিশ্চয়ই আমি সৃষ্টি করবো মাটি থেকে বাশার) অর্থাৎ হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনাকে।”

দলীল-
√ তাফসীরে সামারকান্দী ৩য় খন্ড ১৪১ পৃষ্ঠা।

→ ইনামুল মুফাসসিরিন, আল্লামা আলাউদ্দীন আলী ইবনে মুহম্মদ ইবনে ইব্রাহিম বাগদাদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি লিখেন-

(اني خالق بشرا من طين) يعني ادم عليه السلام

অর্থ: নিশ্চয়ই আমি মাটি থেকে বাশার অর্থাৎ হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনাকে সৃষ্টি করেছি।”

এছাড়া উক্ত আয়াত শরীফে “খালিক্বুম বাশারাম মিন ত্বীন” দ্বারা পৃথিবীর সকল তাফসীরের কিতাবে শুধুমাত্র হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনাকেই মাটির সৃষ্ট মানুষ বুঝানো হয়েছে।

দলীল –
√ মুদ্বিহুল কুরআন ৪৮১ পৃষ্ঠা।

√ তাফসীরে ক্বাদেরী ২য় খন্ড ৩২৩ পৃষ্ঠা।

√ তাফসীরে বাগবী।

√ তাফসীরে মাযহারী।

√ তাফসীরে রুহুল বয়ান।

√ তাফসীরে রুহুল মায়ানী।

√ তাফসীরে কবীর।

√ তাফসীরে কুরতুবী।

ইত্যাদি তাফসীরের কিতাব সহ দুনিয়ার সকল আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের তাফসীরের কিতাব দ্রষ্টব্য।

সূতরাং, পবিত্র কুরআন শরীফের “সূরা ছোয়াদ ৭১ নং আয়াত শরীফ” উনার তাফসীরে জগৎ বিখ্যাত সকল তাফসীরর কিতাব থেকেই আমরা জানতে পারলাম উক্ত আয়াত শরীফ দ্বয়ে “মানুষ মাটির সৃষ্টি” বলতে শুধুমাত্র হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনাকেই বুঝানো হয়েছে, পৃথিবীর আর কোন মানুষকে বুঝানো হয় নাই।



একমাত্র হযরত আদম আলাইহিস সালাম ব্যতীত পৃথিবীর কোন মানুষ মাটির সৃষ্টি নয়, পর্ব-৫
Image result for মাটিএকমাত্র হযরত আদম আলাইহিস সালাম ব্যতীত পৃথিবীর কোন মানুষ মাটির সৃষ্টি নয়, পর্ব-৫

কুরআন শরীফে মাটির তৈরি বলতে যত আয়াত শরীফ আছে সহ আয়াত শরীফ দ্বারা শুধুমাত্র হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনাকেই বুঝানো হয়েছে, অন্য কোন মানুষকে নয়।

(বিগত পর্বের পর)

৬ নং আয়াত শরীফ :

মহান আল্লাহ পাক কুরআন শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন-

الذي احسن كل شءي خلقه وبدأ خلق الانسان من طين

অর্থ: যিনি তাঁর প্রত্যেকটি সৃষ্টিকে সুন্দর করেছেন এবং কাদামাটি থেকে মানব সৃষ্টির সূচনা করেছেন।”

[ সূরায়ে সিজদাহ ৭ নং আয়াত শরীফ]

উক্ত আয়াত শরীফের তাফসীরে মুফাসসিরিনে কিরামগনের অভিমত উল্লেখ করা হলো-

→ বিখ্যাত মুফাসসির আল্লামা আবুল লাইছ সামারকান্দী রহমাতুল্লাহি আলাইহি লিখেন-

(وبدأ خلق الانسان من طين) يعني خلق ادم عليه السلام من طين من ادم الارض

অর্থ: ( তিনি কাদামাটি থেকে মানুষ সৃষ্টির সূচনা) অর্থাৎ হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনাকে জমিনের কাদামাটি থেকে সৃষ্টি করেছেন।”

দলীল-
√ তাফসীরে সামারকান্দী ৩য় খন্ড ২৯ পৃষ্ঠা।

→ বিখ্যাত মুফাসসির, আল্লামা কাজী ছানাউল্লাহ পানীপথী রহমাতুল্লাহি আলাইহি লিখেন-

(وبدأ خلق الانسان) يعني ادم عليه السلام من طين

অর্থ: আল্লাহ পাক কাদামাটি দ্বারা মানুষ অর্থাৎ হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনাকে সৃষ্টি শুরু করেন।”

দলীল-
√ তাফসীরে মাযহারী ৭ম খন্ড ২৬৯ পৃষ্ঠা।

→ আল্লামা আলাউদ্দীন আলী ইবনে মুহম্মদ ইবনে ইব্রাহীম রহমাতুল্লাহি আলাইহি লিখেন-

(وبدأ خلق الانسن من طين) يعني ادم عليه السلام

অর্থ: তিনি কাদামাটি থেকে মানুষ সৃষ্টি করেন অর্থাৎ আদম আলাইহিস সালাম উনার সৃষ্টির সূচনা করেন।”

দলীল-
√ তাফসীরে খাযেন ৩য় খন্ড ৪৪৫ পৃষ্ঠা।

→বিখ্যাত মুফাসসির, আল্লামা ইমাম কুরতুবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি লিখেন-

(وبدأ خلق الانسان من طين) يعني ادم عليه السلام

অর্থ: ( তিনি কাদামাটি থেকে মানব সৃষ্টির সূচনা করেন) অর্থাৎ হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনাকে কাদামাটি থেকে সৃষ্টি করা শুরু করেন।”

দলীল-
√ তাফসীরে কুরতুবী ৭ম খন্ড ৯০ পৃষ্ঠা।

→ আল্লামা আলুসী বাগদাদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি লিখেন-

(وبدأ خلق الانسان) ادم عليه السلام (من طين)

অর্থ: ( তিনি মানুষ সৃষ্টির সূচনা করেন) অর্থাৎ হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনাকে সৃষ্টি করা শুরু করেন কাদামাটি থেকে।”

দলীল-
√ তাফসীরে রূহুল মায়ানী ১১ তম খন্ড ১২৩ পৃষ্ঠা।

এছাড়া উক্ত আয়াত শরীফ উনার ব্যাখ্যায় পৃথিবীর সকল তাফসীরের কিতাবে “কাদামাটি থেকে মানুষ সৃষ্টির সূচনা করেন” বলতে আদম আলাইহিস সালাম উনার সৃষ্টির কথাই বুঝানো হয়েছে।

দলীল-
√ তাফসীরে রূহুল বয়ান ৭ম খন্ড ১১১ পৃষ্ঠা।

√ তাফসীরে বাগবী ৩য় খন্ড ৪৪৫ পৃষ্ঠা।

√ তাফসীরে কাদেরী ২য় খন্ড ২৩৬ পৃষ্ঠা।

সূরাতুস সিজদাহ” এর উক্ত আয়াত শরীফ ও ব্যাখ্যা দ্বারা দিবালোকের ন্যায় সুস্পষ্ট ভাবে প্রমানিত হলো, শুধুমাত্র হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনাকেই মহান আল্লাহ পাক সরাসরি মাটি থেকে সৃষ্টি করেছেন।

সূতরাং প্রমানিত হলো মাটির সৃষ্টি বলতে যত আয়াত শরীফ আছে সেগুলা দ্বারা একমাত্র আদম আলাইহিস সালাম উনাকে বুঝানো হয়েছে, অন্যকোন মানুষকে বুঝানো হয় নাই।