পবিত্র দ্বীন ইসলামে ছোঁয়াচে রোগের প্রতি বিশ্বাস রাখা হারাম ও শিরকের অন্তর্ভূক্ত, সূতরাং যারা করোনা গজবকে ছোঁয়াচে বলছে তারা কুফরী করছে (পর্ব ৬)
বালিত ফির্কার লোকেরা ছোঁয়াচে রোগ প্রমাণ করতে যে হাদীছ শরীফখানা মূল দলীল হিসাবে উপস্থাপন করে থাকে তা হচ্ছে,
عَنْ أُسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ عنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ: إذَا سمِعْتُمْ الطَّاعُونَ بِأَرْضٍ، فَلاَ تَدْخُلُوهَا، وَإذَا وقَعَ بِأَرْضٍ، وَأَنْتُمْ فِيهَا، فَلاَ تَخْرُجُوا مِنْهَاহযরত উসামা ইবনে যাইদ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু অলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ মুবারক করেন, “যখন তোমরা শুনবে যে, কোন স্থানে প্লেগ রোগ হয়েছে, তাহলে সেখানে প্রবেশ করো না। আর যখন কোন স্থানে সেই রোগের প্রাদুর্ভাব হয় এবং তোমরা সেখানে থাকো, সেখান থেকে বের হয়ে যেয়ো না।” (বুখারী শরীফ ৫৭২৮, মুসলিম শরীফ ৫৯০৫)
এ হাদীছ শরীফের ব্যাখ্যায় বুখারী শরীফের ব্যাখ্যাকারক হাফিজুল হাদীছ হযরত ইমাম কাস্তালানী রহমতুল্লাহি আলাইহি কয়েকটি কারন উল্লেখ করেছেন,
১) যখন কোন এলাকায় মহামারী বিস্তার লাভ করে তখন সে এলাকার নির্দিষ্ট কিছু লোকদের উপর আল্লাহ পাক উনার ফয়সালা কায়েম হয়ে যায়। অর্থাৎ সে ঐ এলাকায় থাকলেও তার সে রোগ হবে অথবা সে এলাকা ত্যাগ করলেও তা থেকে সে বাঁচতে পারবে না। তাই সে এলাকা থেকে পালিয়ে যাওয়া বুদ্ধিমানের কাজ নয়।
২) যদি মানুষেরা মহামারী দেখে সে এলাকা থেকে বের হয়ে যায় তখন ঐ এলাকার আক্রান্ত ব্যক্তি চরম বিপদে পতিত হয়। কারন আক্রান্ত ব্যক্তিকে দেখাশোনা করার কেউ থাকে না এমনকি সে মারা গেলেও তাকে দাফনের কেউ থাকে না। আক্রান্ত ব্যক্তিকে এহেন বিপদের মধ্যে ফেলে তাই এলাকা ত্যাগ করতে না করা হয়েছে।
৩) কোন মাহামারীর কারনে যদি মানুষ সে এলাকা থেকে বের হয়ে যেতে শুরু করে তখন সবার দেখা দেখি সুস্থ ও শক্তিশালী লোকেরাও বের হয়ে যাবে। এর ফলে দুর্বল ব্যক্তিদের মন ভেঙ্গে যাবে। উলামায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহি এ বিষয়কে জিহাদের ময়দান থেকে পালয়নের সাথেও তুলনা করেছেন। কারন জিহাদের ময়দান থেকে কেউ পালালে তাদের দেখে দুর্বল লোকেদের মনোবল ভেঙ্গে পড়ে এবং শত্রুপক্ষ সম্পর্কে ভীতিগ্রস্থ হয়ে পড়ে।
৪) বাহিরে বের হয়ে যাওয়া লোকেরা মনে করে যদি আমরা আক্রান্ত স্থানে থাকি তাহলে আমরাও আক্রান্ত হয়ে যাব আর ওখানে অবস্থানকারী লোকেরা ধারনা করে আমরা যদি বের হয়ে যাই তবে বেঁচে যাব। এটা ঈমানহানীকর বিষয়। তাই নিষেধ করা হয়েছে।
হযরত আরিফ ইবনে আবি জামরা রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, কোন বিপদ নাযিল হওয়ার থাকলে ঐ স্থানে অবস্থানকারীদের নিয়ন্ত্রন করা হয়, জমিনের ঐ অংশ (অর্থাৎ যেখানে মহামারী হচ্ছে) নিয়ন্ত্রিত হয়না। সূতরাং মহান আল্লাহ পাক যার উপর মহামারী নাযিল করার সিদ্ধান্ত নিবেন তার উপর নাযিল হবেই সে যেখানেই বা যে এলাকাতেই যাক না কেন তার উপর সেটা নাযিল হবেই।
আর মহামারী আক্রান্ত এলাকায় প্রবেশ করতে নিষেধ করার হেতু হচ্ছে ঐ এলাকায় গেলে আল্লাহ পাকের ইচ্ছায় যদি সে লোক আক্রান্ত হয়ে যায় তাহলে ছোঁয়াচে রোগের ধারনা করে ঈমান নষ্ট করে বসবে। তাই এই ধরনে আক্বীদার লোকদের আক্রান্ত এলাকায় প্রবেশ করতে নিষেধ করা হয়েছে। (শরহে বুখারী, মাওয়াহেবু ল্লাদুন্নিয়াহ, শরহে যারকানী)
১) যখন কোন এলাকায় মহামারী বিস্তার লাভ করে তখন সে এলাকার নির্দিষ্ট কিছু লোকদের উপর আল্লাহ পাক উনার ফয়সালা কায়েম হয়ে যায়। অর্থাৎ সে ঐ এলাকায় থাকলেও তার সে রোগ হবে অথবা সে এলাকা ত্যাগ করলেও তা থেকে সে বাঁচতে পারবে না। তাই সে এলাকা থেকে পালিয়ে যাওয়া বুদ্ধিমানের কাজ নয়।
২) যদি মানুষেরা মহামারী দেখে সে এলাকা থেকে বের হয়ে যায় তখন ঐ এলাকার আক্রান্ত ব্যক্তি চরম বিপদে পতিত হয়। কারন আক্রান্ত ব্যক্তিকে দেখাশোনা করার কেউ থাকে না এমনকি সে মারা গেলেও তাকে দাফনের কেউ থাকে না। আক্রান্ত ব্যক্তিকে এহেন বিপদের মধ্যে ফেলে তাই এলাকা ত্যাগ করতে না করা হয়েছে।
৩) কোন মাহামারীর কারনে যদি মানুষ সে এলাকা থেকে বের হয়ে যেতে শুরু করে তখন সবার দেখা দেখি সুস্থ ও শক্তিশালী লোকেরাও বের হয়ে যাবে। এর ফলে দুর্বল ব্যক্তিদের মন ভেঙ্গে যাবে। উলামায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহি এ বিষয়কে জিহাদের ময়দান থেকে পালয়নের সাথেও তুলনা করেছেন। কারন জিহাদের ময়দান থেকে কেউ পালালে তাদের দেখে দুর্বল লোকেদের মনোবল ভেঙ্গে পড়ে এবং শত্রুপক্ষ সম্পর্কে ভীতিগ্রস্থ হয়ে পড়ে।
৪) বাহিরে বের হয়ে যাওয়া লোকেরা মনে করে যদি আমরা আক্রান্ত স্থানে থাকি তাহলে আমরাও আক্রান্ত হয়ে যাব আর ওখানে অবস্থানকারী লোকেরা ধারনা করে আমরা যদি বের হয়ে যাই তবে বেঁচে যাব। এটা ঈমানহানীকর বিষয়। তাই নিষেধ করা হয়েছে।
হযরত আরিফ ইবনে আবি জামরা রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, কোন বিপদ নাযিল হওয়ার থাকলে ঐ স্থানে অবস্থানকারীদের নিয়ন্ত্রন করা হয়, জমিনের ঐ অংশ (অর্থাৎ যেখানে মহামারী হচ্ছে) নিয়ন্ত্রিত হয়না। সূতরাং মহান আল্লাহ পাক যার উপর মহামারী নাযিল করার সিদ্ধান্ত নিবেন তার উপর নাযিল হবেই সে যেখানেই বা যে এলাকাতেই যাক না কেন তার উপর সেটা নাযিল হবেই।
আর মহামারী আক্রান্ত এলাকায় প্রবেশ করতে নিষেধ করার হেতু হচ্ছে ঐ এলাকায় গেলে আল্লাহ পাকের ইচ্ছায় যদি সে লোক আক্রান্ত হয়ে যায় তাহলে ছোঁয়াচে রোগের ধারনা করে ঈমান নষ্ট করে বসবে। তাই এই ধরনে আক্বীদার লোকদের আক্রান্ত এলাকায় প্রবেশ করতে নিষেধ করা হয়েছে। (শরহে বুখারী, মাওয়াহেবু ল্লাদুন্নিয়াহ, শরহে যারকানী)
সর্বোপরি, বুখারী শরীফের এই হাদীছ শরীফ দ্বারা যা প্রমাণ হয়, মহামারী কবলিত স্থানে কেউ থাকলে তাকে সেখান থেকে বের হয়ে আসতে নিষেধ করা হয়েছে এ আক্বীদার ভিত্তিতেই যে, ছোঁয়াচে রোগ বলতে কোন রোগ নেই। আর এ আক্বীদা যেন তার মনে স্থান না পায় এ এলাকায় থাকলে সে আক্রান্ত হবে আর ছেড়ে
অপরদিকে উক্ত হাদীছ শরীফের মধ্যে মহামারী কবলিত স্থানে কাউকে যেতে নিষেধ করা হয়েছে এ জন্য যে, যাতে সেখানে গিয়ে আল্লাহ পাক উনার ইচ্ছায় সে রোগে আক্রান্ত হয়ে যাতে ধারনা করে না বসে এ এলাকায় প্রবেশ করার কারনে সে আক্রান্ত হয়েছে।
চলে গেল সে আক্রান্ত হবে না।অপরদিকে উক্ত হাদীছ শরীফের মধ্যে মহামারী কবলিত স্থানে কাউকে যেতে নিষেধ করা হয়েছে এ জন্য যে, যাতে সেখানে গিয়ে আল্লাহ পাক উনার ইচ্ছায় সে রোগে আক্রান্ত হয়ে যাতে ধারনা করে না বসে এ এলাকায় প্রবেশ করার কারনে সে আক্রান্ত হয়েছে।
হযরত ইবনে আব্দুল বার রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি এ বিষয়টা পরিষ্কার করে উনার কিতাবে বলেন,
أَمَّا قَوْلُهُ لَا عَدْوَى فَمَعْنَاهُ أَنَّهُ لَا يُعْدِي شَيْءٌ شَيْئًا وَلَا يُعْدِي سَقِيمٌ صَحِيحًا وَاللَّهُ يَفْعَلُ مَا يَشَاءُ لَا شَيْءَ إِلَّا مَا شَاءَঅর্থ: ‘ছোঁয়াচে রোগ বলে কিছুই নেই’ এ হাদীছ শরীফের অর্থ হচ্ছে, কোন কিছুই কোন কিছুকে সংক্রামিত করতে পারে না এবং কোন রোগী কোন সুস্থ ব্যক্তিকে সংক্রামিত করতে পারেনা। বরং মহান আল্লাহ পাকের ইচ্ছায় সবকিছু হয়। উনার ইচ্ছার বাইরে কোন কিছু হয় না।” (আল ইস্তিযকার ৮/৪২২; প্রকাশনা: দারু কুতুব আল ইলমিয়া, বৈরুত লেবানন)
أَمَّا قَوْلُهُ لَا عَدْوَى فَمَعْنَاهُ أَنَّهُ لَا يُعْدِي شَيْءٌ شَيْئًا وَلَا يُعْدِي سَقِيمٌ صَحِيحًا وَاللَّهُ يَفْعَلُ مَا يَشَاءُ لَا شَيْءَ إِلَّا مَا شَاءَঅর্থ: ‘ছোঁয়াচে রোগ বলে কিছুই নেই’ এ হাদীছ শরীফের অর্থ হচ্ছে, কোন কিছুই কোন কিছুকে সংক্রামিত করতে পারে না এবং কোন রোগী কোন সুস্থ ব্যক্তিকে সংক্রামিত করতে পারেনা। বরং মহান আল্লাহ পাকের ইচ্ছায় সবকিছু হয়। উনার ইচ্ছার বাইরে কোন কিছু হয় না।” (আল ইস্তিযকার ৮/৪২২; প্রকাশনা: দারু কুতুব আল ইলমিয়া, বৈরুত লেবানন)
সূতরাং মুসলমানদের আক্বীদা হচ্ছে, মহান আল্লাহ পাক উনার হুকুম ছাড়া কারো কোন রোগ হতে পারে না। সেই ভিত্তিতে প্রথম জনের যেভাবে মহান আল্লাহ পাকের হুকুমে রোগ হয়েছে, তেমনি অন্যজনেরও যদি হয় মহান আল্লাহ পাকের হুকুমেই সেই রোগ হবে। আর মহান আল্লাহ পাক উনার হুকুম না হলে কিছুতেই তার সেই রোগ হবে না। এমনকি আক্রান্ত রোগীর সাথে একাসথে খেলে, থাকলে, স্পর্শ করলে কোন অবস্থাতেই না। এটাই আক্বীদা, এ আক্বীদাই সকল মুসলমানদের পোষন করতে হবে। (চলবে...)