করোনাসহ সকল প্রকার আযাব-গযব থেকে বাঁচার উপায়-


করোনাসহ সকল প্রকার আযাব-গযব থেকে বাঁচার উপায়
* সুওয়াল: করোনাসহ সকল প্রকার আযাব-গযব থেকে বাঁচার উপায় কী?
জাওয়াব: করোনাসহ সকল প্রকার আযাব-গযব থেকে বাঁচার উপায় হচ্ছে-
(১) বেশি বেশি পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠ করতে হবে এবং সুন্নতী খাদ্য গ্রহণ করতে হবে:
বর্তমান বিশ্বের এই চরম নির্যাতিত ও নিপীড়িত মানবতা ও মানবাত্মার একমাত্র মুক্তির দিশারী, নাজাতের কা-ারী, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত ১০ম খলীফা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “করোনাসহ সকল প্রকার আযাব-গযব থেকে বাঁচতে হলে বেশি বেশি পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠ করতে হবে এবং সুন্নতী খাদ্য গ্রহণ করতে হবে।”
করোনা ভাইরাস নিয়ে অনেকেই নানা ধরণের তথ্য প্রচার করছে। যা নিয়ে অনেকেই অহেতুক আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশসহ বিশ্বের মুসলমানদের কি করণীয় হলো, বেশি বেশি পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠ করা এবং নিয়মিত সুন্নতী খাদ্যসমূহ গ্রহণ করা। কেননা, পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠকারীর প্রতি এবং যে স্থানে পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠ করা হয়, সেখানে মহান আল্লাহপাক উনার খাছ রহমত মুবারক নাযিল হয়ে থাকে। এ সম্পর্কে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন,
عن حضرت ابن عباس رضى الله تعالى عنهما انه كان يحدث ذات يوم فى بيته وقائع ولادته صلى الله عليه وسلم لقوم فيستبشرون ويحمدون الله ويصلون عليه صلى الله عليه وسلم فاذا جاء النبى صلى الله عليه وسلم قال حلت لكم شفاعتى.
অর্থ : “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা উনার থেকে বর্ণিত আছে যে, একদা তিনি পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করে উনার নিজগৃহে ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে সমবেত করে মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ উনার ঘটনাসমূহ শুনাচ্ছিলেন। এতে শ্রবণকারীগণ আনন্দ ও খুশি প্রকাশ করছিলেন এবং মহান আল্লাহ পাক উনার প্রশংসা তথা তাছবীহ-তাহলীল পাঠ করছিলেন এবং মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উপর (পবিত্র ছলাত শরীফ ও পবিত্র সালাম শরীফ তথা) পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠ করছিলেন। এমন সময় নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তথায় উপস্থিত হয়ে পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করতে দেখে বললেন, আপনাদের জন্য আমার শাফায়াত মুবারক ওয়াজিব।” সুবহানাল্লাহ! (কিতাবুত তানবীর ফী মাওলিদিল বাশীর ওয়ান নাযীর, ছুবুলুল হুদা ফী মাওলিদে মুস্তফা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
عن حضرت ابى الدرداء رضى الله تعالى عنه انه مر مع النبى صلى الله عليه وسلم الى بيت عامر الانصارى رضى الله تعالى عنه وكان يعلم وقائع ولادته صلى الله عليه وسلم لابنائه وعشيرته ويقول هذا اليوم هذا اليوم فقال عليه الصلوة والسلام ان الله فتح لك ابواب الرحمة والملائكة كلهم يستغفرون لك من فعل فعلك نجى نجتك.
অর্থ : “হযরত আবূ দারদা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত আছে, একদা তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে হযরত আমির আনছারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার গৃহে উপস্থিত হয়ে দেখতে পেলেন যে, তিনি পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করে উনার সন্তানাদি এবং আত্মীয়-স্বজন, জ্ঞাতি-গোষ্ঠী, পাড়া-প্রতিবেশী উনাদেরকে নিয়ে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ উনার ঘটনাসমূহ শুনাচ্ছেন এবং বলেছেন, এই সেই দিবস এই সেই দিবস (অর্থাৎ এই দিবসে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যমীনে তাশরীফ মুবারক এনেছেন। এই দিবসে ইহা সংঘটিত হয়েছে ইত্যাদি ইত্যাদি)। এমন সময় নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উপস্থিত হয়ে পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করতে দেখে (পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠ করতে দেখে) বললেন, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার সমস্ত রহমত উনার দরজা আপনাদের জন্য উন্মুক্ত করেছেন এবং সমস্ত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা আপনাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করছেন এবং ক্বিয়ামত পর্যন্ত যে কেউ আপনাদের মতো এরূপ কাজ করবে, আপনাদের মতো তারাও নাজাত (ফযীলত) লাভ করবে।” (কিতাবুত তানবীর ফী মাওলিদিল বাশীর ওয়ান নাযীর, সুবুলুল হুদা ফী মাওলিদে মুস্তফা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠকারীর প্রতি এবং যে স্থানে পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠ করা হয়, সেখানে মহান আল্লাহপাক উনার খাছ রহমত মুবারক নাযিল হয়ে থাকে। আর যেখানে মহান আল্লাহপাক উনার রহমত মুবারক নাযিল হয় সেখানে কোন ধরণের আযাব-গযব আসতেই পারে না। তাই সকল মুসলমানদের উচিত, বেশি বেশি পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠ করা। তাছাড়া নিয়মিত সুন্নতী খাদ্যদ্রব্য গ্রহণ করারও প্রয়োজন। কারণ সুন্নতী খাদ্যসমূহে আছে বেমেছাল রহমত ও বরকত, যা শক্তিশালী রোগপ্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে। মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার থেকে জানা যায়, সিরকা, কালোজিরা, মধু, ত্বীন, যয়তুন, খেজুর ইত্যাদি সুন্নতী খাদ্যসমূহ বিভিন্ন ধরণের অসুখ-বিসুখ, রোগ-বালাইকে প্রতিরোধ করে, ধ্বংস করে দেয়।
(২) ওলীআল্লাহ উনাকে মুহব্বত করা বা উনার ছোহবত ইখতিয়া করা:
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত ১০ম খলীফা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “কেউ যদি কোন ওলীআল্লাহ উনাকে মুহব্বত করে বা উনার ছোহবত ইখতিয়া করে, করোনাসহ কোন প্রকার আযাব-গযবই তাকে স্পর্শ করতে পারবে না।” সুবহানাল্লাহ!
যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
أَلَا إِنَّ أَوْلِيَاءَ اللهِ لَا خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلَا هُمْ يَحْزَنُونَ. الَّذِيْنَ آمَنُوْا وَكَانُوْا يَتَّقُوْنَ. لَهُمُ الْبُشْرى فِى الْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَفِى الْآخِرَةِ لَا تَبْدِيْلَ لِكَلِمَاتِ اللهِ ذلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِيْمُ.
অর্থ: “সাবধান! নিশ্চয়ই যারা যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার ওলী রয়েছেন উনাদের কোন ভয় নেই, চিন্তা নেই, পেরেশানী নেই।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত সূরা ইউনূস শরীফ : সম্মানিত আয়াত শরীফ : ৬২-৬৪)
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
إِنَّ رَحْمَتَ اللَّهِ قَرِيبٌ مِنَ الْمُحْسِنِينَ
অর্থ: “নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক উনার রহমত মুহসিন বান্দা তথা ওলীআল্লাহ উনাদের নিকটে রয়েছে।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আ’রাফ শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৬)
আর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে
‏المرء مع من أحب
অর্থ: “যে যাঁকে মুহব্বত করবে, সে তার অন্তর্ভূক্ত হবে।” সুবহানাল্লাহ!
কাজেই কেউ যদি কোন ওলীআল্লাহ উনাকে মুহব্বত করে বা উনার সাথে সম্পর্ক রাখে, সেই ওলীআল্লাহ উনার যেই হুকুম ঐ ব্যক্তিরও ঠিক একই হুকুম হবে। সুবহানাল্লাহ! আর কোনো ওলীআল্লাহ উনার উপর কস্মিনকালেও গযব নাযিল হবে না। তাহলে ওলী আল্লাহ উনাকে যে মুহব্বত করবে, তার উপর গযব নাযিল হবে কেন? সেও তো রহমতের মধ্যেই থাকবে। সুবহানাল্লাহ!
কাজেই যারা করোনাসহ সকল প্রকার আযাব-গযব থেকে বাঁচতে চায়, তাদের জন্য দায়িত্ব কর্তব্য হচ্ছে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত ১০ম খলীফা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে মুহব্বত করা এবং উনার সম্মানিত ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করা।
যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সবাইকে সেই তাওফীক্ব দান করুন। আমীন!

0 Comments: