আজ মহাসম্মানীত ১২ ই সফর শরীফ।  আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বা‘আহ্ আছ ছানিয়াহ্(হালিমা সাদিয়্যাহ) আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত সংক্ষিপ্ত পরিচিতি মুবারক

আজ মহাসম্মানীত ১২ ই সফর শরীফ।  আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বা‘আহ্ আছ ছানিয়াহ্(হালিমা সাদিয়্যাহ) আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত সংক্ষিপ্ত পরিচিতি মুবারক-

আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বা‘আহ্ আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দুধ মাতা আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ! তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ! উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ! এক কথায় তিনি শুধু যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারিণী হচ্ছেন তিনি। সুবহানাল্লাহ! উনার সম্মানিত মুহব্বত মুবারকই হচ্ছেন সম্মানিত ঈমান। সুবহানাল্লাহ! আর উনার প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করা সুস্পষ্ট কুফরী। না‘ঊযুবিল্লাহ!

আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, রহমাতুল্লিল আলামীন মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বা‘আহ্ আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার এক নজরে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র পরিচিতি মুবারক প্রকাশ করেছেন। সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম!

নিম্নে এক নজরে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র পরিচিতি মুবারক তুলে ধরা হলো-

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় ইসিম বা নাম মুবারক: সাইয়্যিদাতুনা হযরত হালীমাহ্ সা’দিয়াহ্ আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুনিয়াত মুবারক: সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কাব্শাহ্ আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লক্বব মুবারক: উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মিনার রদ্বা‘আহ্, মুরদ্বি‘আতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, হাদ্বিনাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ছহিবাতুল ইয্যাহ্ ইত্যাদি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিশেষ লক্বব মুবারক উনাদের অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ!

যেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লক্বব মুবারক দ্বারা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র পরিচিতি মুবারক গ্রহণ করেছেন: সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বা‘আহ্ আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আব্বাজান আলাইহিস সালাম: সাইয়্যিদুনা হযরত আবূ যুআইব আব্দুল্লাহ ইবনে হারিছ আলাইহিস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র যাওজুম মুকাররম: সাইয়্যিদুনা হযরত হারিছ আলাইহিস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আওলাদ আলাইহিমুস সালাম: মোট ৪ জন। একজন মহাসম্মানিত ছেলে আওলাদ আলাইহিস সালাম এবং তিনজন মহাসম্মানিত মেয়ে আওলাদ আলাইহিন্নাস সালাম। উনারা ছিলেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত দুধ ভাই-বোন আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঈমান মুবারক প্রকাশ: নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নুবুওওয়াতী এবং রিসালতী শান মুবারক প্রকাশ পাওয়ার কিছু দিন পর। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ: ৯ম হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’দাদ শরীফ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই ছফর শরীফ)। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র স্থান মুবারক: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ। সুবহানাল্লাহ!

দুনিয়ার যমীনে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র অবস্থান মুবারক: ৮০ বছরের অধিক সময়। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র জান্নাতুল বাক্বী’ শরীফ। সুবহানাল্লাহ!

 আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বা‘আহ্ আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত সংক্ষিপ্ত পরিচিতি মুবারক

আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বা‘আহ্ আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত সংক্ষিপ্ত পরিচিতি মুবারক

আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বা‘আহ্ আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দুধ মাতা আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ! তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ! উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ! এক কথায় তিনি শুধু যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারিণী হচ্ছেন তিনি। সুবহানাল্লাহ! উনার সম্মানিত মুহব্বত মুবারকই হচ্ছেন সম্মানিত ঈমান। সুবহানাল্লাহ! আর উনার প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করা সুস্পষ্ট কুফরী। না‘ঊযুবিল্লাহ!

আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, রহমাতুল্লিল আলামীন মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বা‘আহ্ আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার এক নজরে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র পরিচিতি মুবারক প্রকাশ করেছেন। সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম!

নিম্নে এক নজরে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র পরিচিতি মুবারক তুলে ধরা হলো-

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় ইসিম বা নাম মুবারক: সাইয়্যিদাতুনা হযরত হালীমাহ্ সা’দিয়াহ্ আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুনিয়াত মুবারক: সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কাব্শাহ্ আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লক্বব মুবারক: উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মিনার রদ্বা‘আহ্, মুরদ্বি‘আতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, হাদ্বিনাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ছহিবাতুল ইয্যাহ্ ইত্যাদি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিশেষ লক্বব মুবারক উনাদের অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ!

যেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লক্বব মুবারক দ্বারা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র পরিচিতি মুবারক গ্রহণ করেছেন: সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বা‘আহ্ আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আব্বাজান আলাইহিস সালাম: সাইয়্যিদুনা হযরত আবূ যুআইব আব্দুল্লাহ ইবনে হারিছ আলাইহিস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র যাওজুম মুকাররম: সাইয়্যিদুনা হযরত হারিছ আলাইহিস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আওলাদ আলাইহিমুস সালাম: মোট ৪ জন। একজন মহাসম্মানিত ছেলে আওলাদ আলাইহিস সালাম এবং তিনজন মহাসম্মানিত মেয়ে আওলাদ আলাইহিন্নাস সালাম। উনারা ছিলেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত দুধ ভাই-বোন আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঈমান মুবারক প্রকাশ: নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নুবুওওয়াতী এবং রিসালতী শান মুবারক প্রকাশ পাওয়ার কিছু দিন পর। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ: ৯ম হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’দাদ শরীফ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই ছফর শরীফ)। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র স্থান মুবারক: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ। সুবহানাল্লাহ!

দুনিয়ার যমীনে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র অবস্থান মুবারক: ৮০ বছরের অধিক সময়। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র জান্নাতুল বাক্বী’ শরীফ। সুবহানাল্লাহ!



 সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বয়াহ আছ্ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম রহমতুল্লিল আলামীন, রঊফুর রহীম, নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দ্বিতীয় দুধমাতা আলাইহাস সালাম

 সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বয়াহ আছ্ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম রহমতুল্লিল আলামীন, রঊফুর রহীম, নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দ্বিতীয় দুধমাতা আলাইহাস সালাম

নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দ্বিতীয় মহাসম্মানিতা দুধমাতা হচ্ছেন সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, হযরত হালীমাহ সা’দিয়াহ আলাইহাস সালাম। তিনি যেহেতু বনী সা’দ ইবনে বকর গোত্রের ছিলেন, তাই উনাকে বলা হয় সা’দিয়া। বিশেষ করে বনী সা’দ গোত্রের ব্যক্তিগণ ছিলেন মিষ্টভাষী। উনারা আরবী ফাসাহাত ও বালাগাতে সবচেয়ে পারদর্শী।

নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে দুধ মুবারক পানের ক্ষেত্রে সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, হযরত সা’দিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি যেহেতু দ্বিতীয়, সেহেতু উনাকে ‘সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বয়াহ আছ্ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম’ বলে সম্বোধন করাই আদব।

বিশ্ব বিখ্যাত সীরাত গ্রন্থের কিতাব ‘আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া’-এর ২য় খন্ডে উল্লেখ রয়েছে যে, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বয়াহ আছ্ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত পিতা হযরত আবূ যুওয়াইব আলাইহিস সালাম। উনার পুরো নাম মুবারক হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে হারিছ আলাইহিস সালাম। 

সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বয়াহ আছ্ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার বংশ তালিকা মুবারক হচ্ছে, হযরত সা’দিয়া বিনতে আব্দুল্লাহ ইবনে শাজনাহ ইবনে জাবির ইবনে রিযাম ইবনে নাছিরা ইবনে সা’দ ইবনে বকর ইবনে হাওয়াযিন ইবনে মানছুর ইবনে ইকরামা ইবনে হাফসা ইবনে কায়িস আইলান ইবনে মুদ্বার আলাইহিমুস সালাম।

নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত দুধ পিতা তথা সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বয়াহ আছ্ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার আহাল ছিলেন হযরত হারিছ ইবনে আব্দুল উজ্জা ইবনে রিফায়া ইবনে মিলান ইবনে নাসিরা ইবনে সা’দ ইবনে বকর ইবনে হাওয়াযিন আলাইহিমুস সালাম। আনুষ্ঠানিকভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নুবুওওয়াত মুবারক প্রকাশের দু’বছর পর তিনি পবিত্র মক্কা শরীফে আগমন করেন এবং সম্মানিত দ্বীন ইসলাম কবুল করেন। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুধ ভাই ও বোন ছিলেন মোট ৩ জন। এক. সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে হারিছ আলাইহিস সালাম। দুই. হযরত আনীসা বিনতে হারিছ আলাইহাস সালাম। তিন. হযরত হুযাফা বিনতে হারিছ আলাইহাস সালাম।

হযরত হুযাফাহ আলাইহাস সালাম উনার অপর নাম মুবারক হযরত শায়মা আলাইহাস সালাম। ঐতিহাসিকগণ বলেন, হযরত শায়মা আলাইহাস সালাম তিনি উনার মহাসম্মানিতা মাতা সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বয়াহ আছ্ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার সাথে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক খিদমতের আঞ্জাম দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! (আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া)

বিশুদ্ধ মতে, হস্তি বাহিনী ধ্বংস হওয়ার ৫০ দিন পর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ উনার সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’দাদ শরীফ মহাসম্মানিত ১২ই রবীউল আউওয়াল শরীফে সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ বা ইছনাইনিল ‘আযীম শরীফ উনার সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আওক্বাত শরীফ বা ছুবহে ছাদিক্ব শরীফ উনার সময় পবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! উনাকে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সর্বপ্রথম পবিত্র দুধ মুবারক পান করান। তারপর সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বয়াহ আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছুয়াইবিয়া আলাইহাস সালাম তিনিও কিছু দিন পবিত্র দুধ মুবারক পান করান। অতঃপর সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বয়াহ আছ্ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি পবিত্র দুধ মুবারক পান করান। সুবহানাল্লাহ! 

দুই বছর পবিত্র দুধ মুবারক পান করানো শেষ হলে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বয়াহ আছ্ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট নিয়ে আসেন। তারপর উনারা খায়ের-বরকত লাভের জন্য সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট আরজী পেশ করে পূণরায় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত বনূ সা’দ গোত্রে নিয়ে যান। সুবহানাল্লাহ! 

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়াবী মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হায়াত মুবারক যখন ৪ বছর, তখন প্রথমবার আনুষ্ঠানিকভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল ইলম মুবারক বা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সিনা মুবারক চাক সম্পর্কিত ঘটনা মুবারক সংঘটিত হয়। সুবহানাল্লাহ! তখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বয়াহ আছ্ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি চিন্তিত হয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট নিয়ে আসেন। তখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এবং সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা বলেন যে, এটা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিশেষ শান মুবারক। সুবহানাল্লাহ! তারপর সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বয়াহ আছ্ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি পূণরায় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত বনূ সা’দ গোত্রে নিয়ে যান। সুবহানাল্লাহ!

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি দুনিয়াবী হায়াত মুবারক অনুযায়ী পাঁচ বছর পর্যন্ত বনূ সা’দ গোত্রে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বয়াহ আছ্ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র হুজরা শরীফে অবস্থান মুবারক করেন। অতপর, ৬ষ্ঠ বছরের শুরুতে তিনি উনার মহাসম্মানিত হযরত আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনার নিকট ফিরে আসেন। সুবহানাল্লাহ! 

নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র ছোহবত মুবারক লাভ করার পর হতে দুধমাতা সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বয়াহ আছ্ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি প্রতি মূহুর্তে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সীমাহীন পবিত্র মু’জিযা শরীফ দেখতে পান।

সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূল মির্না রদ্বয়াতি তথা রহমতুল্লিল আলামীন, রঊফুর রহীম, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিতা দুধমাতা হযরত সা’দিয়া আলাইহাস সালাম উনার বেমেছাল শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত রয়েছে-

قَالَ حَضْرَتْ اَلْقَاضِىْ اَبُو الْفَضْلِ عِيَاضٌ رَحِمَهُ اللهُ تَعَالـٰى لَـمَّا وَرَدَتْ حَضْرَتْ حَلِيْمَةُ السَّعْدِيَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ عَلـٰى رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَـبَسَطَ لَـهَا رِدَاءَهٗ وَقَضٰى حَاجَتَـهَا

অর্থ: “হযরত ক্বাযী আবুল ফযল আয়ায রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, যখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বয়াহ আছ্ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট তাশরীফ মুবারক এনেছিলেন, তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বয়াহ আছ্ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানার্থে উনার জন্য নিজ সম্মানিত চাদর মুবারক বিছিয়ে দিয়েছিলেন এবং উনার সমস্ত প্রয়োজন মুবারক পূরণ করেছিলেন।” সুবহানাল্লাহ! (সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ফী সীরাতি খইরিল ইবাদ ১/৩৮৩)

অপর বর্ণনায় এসেছে- 

عَنْ حَضْرَتْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ قَالَ جَاءَتْ حَضْرَتْ حَلِيْمَةُ ابْـنَةُ عَبْدِ اللهِ اُمُّ النَّبِىِّ صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنَ الرَّضَاعَةِ اِلـٰى رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَ حُنَيْنٍ فَـقَامَ اِلَيْهَا وَبَسَطَ لَـهَا رِدَاءَهٗ فَجَلَسَتْ عَلَيْهِ

অর্থ: “হযরত আতা ইবনে ইয়াসার রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিতা দুধ মাতা সাইয়্যিদাতুনা হযরত সা’দিয়াহ বিনতে আবূ যুয়াইব আব্দুল্লাহ আলাইহাস সালাম তিনি পবিত্র হুনাইন জিহাদ উনার দিন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট আগমন মুবারক করেন। তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ক্বিয়ামী শান মুবারক প্রকাশ করেন এবং উনার জন্য নিজ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র চাদর মুবারক বিছিয়ে দেন। সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বয়াহ আছ্ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি সেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র চাদর মুবারক-এ বসেন।” (শারহুয যারক্বানী আলাল মাওয়াহিব)

অর্থাৎ, স্বয়ং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দুধ মাতা আলাইহাস সালাম উনার বসার জন্য নিজ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র চাদর মুবারক বিছিয়ে দিয়েছেন এবং উনার মহাসম্মানিতা দুধ মাতা আলাইহাস সালাম তিনি উনার সেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র চাদর মুবারকে বসেছেন। সুবহানাল্লাহ! 

ছহিবে সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, মামদূহ মুরশিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ৯ম হিজরীর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই ছফর শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ অর্থাৎ সোমবার) সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বয়াহ আছ্ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবরক প্রকাশ করেন এবং পবিত্র জান্নাতুল বাক্বী শরীফে উনার পবিত্র রওযা শরীফ স্থাপন করা হয়েছে।

 মহান আল্লাহ পাক তিনি ছহিবে সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, মামদূহ মুরশিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার মুবারক উসীলায় সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বয়াহ আছ্ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার মুবারক শানে জানার এবং সর্বোচ্চ হুসনে যন পোষণ ও আদব রক্ষা করার তাওফীক্ব মুবারক দান করুন। আমীন।


 রহমতুল্লিল আলামীন, রঊফুর রহীম, নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দুধমাতা সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বা’য়াহ আছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত সীরত মুবারক

 রহমতুল্লিল আলামীন, রঊফুর রহীম, নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দুধমাতা সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বা’য়াহ আছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত সীরত মুবারক

মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,

وَوَصَّيْنَا الْإِنسَانَ بِوَالِدَيْهِ حَمَلَتْهُ أُمُّهٗ وَهْنًا عَلٰى وَهْنٍ وَفِصَالُهٗ فِيْ عَامَيْنِ أَنِ اشْكُرْ لِيْ وَلِوَالِدَيْكَ إِلَيَّ الْمَصِيْرُ

অর্থ: আমি মানুষকে তার পিতা-মাতা সম্পর্কে নসীহত মুবারক করছি। তাকে তার মাতা অত্যধিক কষ্ট করে বহন করেছেন এবং দু’বছর দুধ পান করিয়েছেন। আমার এবং তোমার পিতা-মাতা উনাদের শুকরিয়া আদায় করো। আমার নিকট তোমাদের প্রত্যাবর্তন স্থল। (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা লুকমান শরীফ, সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ১৪)

বর্ণিত আয়াত শরীফে সন্তানের সাথে মাতার দু’দিক থেকে সম্পর্কের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। মাতা সন্তানকে রেহেম শরীফে বহন করেন। আবার মাতা সন্তানকে দুধ পান করান। অর্থাৎ, যিনি সন্তানকে রেহেম শরীফে বহন করেন তিনি হবেন মাতা। আবার যিনি সন্তানকে দুধ পান করান তিনিও মাতা হিসেবে সম্মানিত শরীয়ত কর্তৃক স্বীকৃত।

হানাফী মাযহাব অনুযায়ী, সন্তান ২ বৎসর বয়স পর্যন্ত মায়ের দুধ পান করতে পারবে। তবে কোন সন্তান যদি আড়াই বৎসর বয়সের মধ্যে কোন মহিলার এক ঢোক দুধও যদি পান করে, তাহলে সে মহিলা সেই সন্তানের দুধমাতা হিসেবে সাব্যস্ত হবে।

পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত আছে,

عَنْ حَضْرَتْ عَلِيِّ بْنِ أَبِيْ طَالِبٍ  عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّ اللّٰهَ حَرَّمَ مِنَ الرَّضَاعِ مَا حَرَّمَ مِنَ النَّسَبِ 

 অর্থ: হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু আলাইহিস সালাম হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ মুবারক করেন, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি দুধ পানের কারণেও হারাম করেছেন, যা নসবগত কারণে হারাম করেছেন। (তিরমিযী শরীফ)

অর্থাৎ, রেহেম শরীফে বহনকারীণী মাতার ন্যায় দুধমাতার অধিকারও সুনির্ধারিত। দুই মাতারই অধিকার বা হক্ব রয়েছে। দুইজনকেই তা’যীম-তাকরীম করতে হবে।

বলার অপেক্ষা রাখেনা, রঊফুর রহীম, নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি রহমতুল্লিল আলামীন। আর উনার ছোহবত মুবারক, নিসবত মুবারক এবং খিদমত মুবারকে আনজাম প্রদানের জন্য মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার বান্দাদের মধ্য হতে কতিপয় বান্দাকে বিশেষভাবে মনোনীত করেন। উনার মুবারক নিসবতপ্রাপ্ত প্রতিটি মুবারক বিষয়ই কায়িনাত মাঝে সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বাধিক ফযীলতপ্রাপ্ত এবং সর্বাধিক বরকতময় ও সর্বোচ্চ মর্যাদা সম্পন্ন। তাই, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে দুধ মুবারক পান করানোর মহান কাজে আনযাম প্রদানকারিণীগণও আখাছ্ছুল খাছভাবে মনোনীত এবং বেমেছাল খুছুছিয়ত মুবারকের মালিকাহ। জনসাধারণের মাঝে উনাদের মুবারক আলোচনা তেমন লক্ষ্য করা যায়না। কিন্তু উনারা যে বেমেছাল ফাযায়িল-ফযীলতের অধিকারিণী, তা সাধারণ মানুষের বোধগম্যের বাহিরে। সঙ্গতকারণেই উনাদের মুবারক আলোচনা অতীব জরুরী।

মশহূর এবং গ্রহণযোগ্য মতে, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূল মির্না রদ্বয়াতি তথা রহমতুল্লিল আলামীন, রঊফুর রহীম, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিতা দুধমাতা আলাইহিন্নাস সালাম উনারা দুইজন। অর্থাৎ, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিনা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পর দুইজন মহান ব্যক্তিত্ব নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে দুধ মুবারক পান করানোর সুনসীব লাভ করেছেন। উনারা হচ্ছেন, প্রথমত, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, হযরত ছুয়াইবিয়াহ আলাইহাস সালাম। উনার মুবারক শানে ইতিপূর্বে আলোচনা করা হয়েছে।

দ্বিতীয়ত, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, হযরত হালীমাহ সা’দিয়াহ আলাইহাস সালাম।  সংক্ষিপ্তাকারে উনার খুছুছিয়ত মুবারক আলোচনা করা হলো। 

নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দ্বিতীয় মহাসম্মানিতা দুধমাতা হচ্ছেন সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, হযরত হালীমাহ সা’দিয়াহ আলাইহাস সালাম। তিনি যেহেতু বনী সা’দ ইবনে বকর গোত্রের ছিলেন, তাই উনাকে বলা হয় সা’দিয়া। বিশেষ করে বনী সা’দ গোত্রের ব্যক্তিগণ ছিলেন মিষ্টভাষী। উনারা আরবী ফাসাহাত ও বালাগাতে সবচেয়ে পারদর্শী।

বিশ্ব বিখ্যাত সীরাত গ্রন্থের কিতাব ‘আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া’-এর ২য় খন্ডে উল্লেখ রয়েছে যে, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, হযরত সা’দিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত পিতা হযরত আবূ যুওয়াইব আলাইহিস সালাম। উনার পুরো নাম মুবারক হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে হারিছ আলাইহিস সালাম। সাইয়্যিদাতুনা হযরত সা’দিয়া আলাইহাস সালাম উনার বংশ তালিকা মুবারক হচ্ছে, হযরত সা’দিয়া বিনতে আব্দুল্লাহ ইবনে শাজনাহ ইবনে জাবির ইবনে রিযাম ইবনে নাছিরা ইবনে সা’দ ইবনে বকর ইবনে হাওয়াযিন ইবনে মানছুর ইবনে ইকরামা ইবনে হাফসা ইবনে কায়িস আইলান ইবনে মুদ্বার আলাইহিমুস সালাম।

নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত দুধ পিতা তথা সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, হযরত সা’দিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার আহাল ছিলেন হযরত হারিছ ইবনে আব্দুল উজ্জা ইবনে রিফায়া ইবনে মিলান ইবনে নাসিরা ইবনে সা’দ ইবনে বকর ইবনে হাওয়াযিন আলাইহিমুস সালাম। আনুষ্ঠানিকভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নুবুওওয়াত মুবারক প্রকাশের দু’বছর পর তিনি পবিত্র মক্কা শরীফে আগমন করেন এবং সম্মানিত দ্বীন ইসলাম কবুল করেন। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুধ ভাই ও বোন ছিলেন মোট ৩ জন। এক. সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে হারিছ আলাইহিস সালাম। দুই. হযরত আনীসা বিনতে হারিছ আলাইহাস সালাম। তিন. হযরত হুযাফা বিনতে হারিছ আলাইহাস সালাম।

হযরত হুযাফাহ আলাইহাস সালাম উনার অপর নাম মুবারক হযরত শায়মা আলাইহাস সালাম। ঐতিহাসিকগণ বলেন, হযরত শায়মা আলাইহাস সালাম তিনি উনার মহাসম্মানিতা মাতা সাইয়্যিদাতুনা হযরত সা’দিয়া আলাইহাস সালাম উনার সাথে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক খিদমতের আঞ্জাম দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! (আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া)

উল্লেখ্য যে, সাইয়্যিদাতুনা হযরত সা’দিয়া আলাইহাস সালাম তিনি হাওয়াজিন গোত্রের মহাসম্মানিতা ব্যক্তিত্ব। তৎকালীন যুগের প্রথা অনুযায়ী বেদুঈন গোত্রের মহিলারা বছরে দু’বার শহরে আগমন করতেন। শহরের অভিজাত মহিলাগণ স্বীয় দুগ্ধপোষ্য শিশুদেরকে উনাদের দায়িত্বে অর্পন করতেন। এই নিয়ম অনুযায়ী নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি দুনিয়ার যমীনে পবিত্র তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করার কয়েকদিন পর হাওয়াজিন গোত্রের কতিপয় মহিলাগণ পবিত্র মক্কা শরীফে আসেন। উনাদের মধ্যে সাইয়্যিদাতুনা হযরত সা’দিয়া আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন অন্যতম, সর্বশ্রেষ্ঠা ও সবচেয়ে সম্মানিতা। 

মূলত, সাইয়্যিদাতুনা হযরত সা’দিয়া আলাইহাস সালাম উনাকে মহান আল্লাহ পাক তিনি সৃষ্টি লগ্ন থেকেই সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দুধ মাতা হিসেবে মনোনীত করে রেখেছেন। সুবহানাল্লাহ! এজন্য মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক খিদমতের জন্য হযরত সা’দিয়া আলাইহাস সালাম উনাকে প্রেরণ করেন এবং তিনি যথাযথভাবে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমতে নিজেকে বিলিয়ে দেন।

স্মরণীয় যে, সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য একজন দুধমাতা খুঁজছিলেন। কয়েকদিনের মধ্যে দেখা গেলো তায়েফের একদল মহিলা পবিত্র মক্কা শরীফে আগমন করেন। তাদের উদ্দেশ্য মক্কা শরীফ থেকে শিশু ছেলে-মেয়েদের নিয়ে লালন-পালন করা এবং এর বিনিময় কিছু অর্থ কামাই করা। দেখা গেলো, সেই মহিলারা শহরে প্রবেশ করেই একেকজন একেক শিশুকে নিয়ে বাড়ীর দিকে পথ ধরলেন। তবে সাইয়্যিদাতুনা হযরত সা’দিয়া আলাইহাস সালাম তিনি এবং উনার আহাল উনারাও একজন সন্তান খোঁজ করছিলেন। 

মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট উনাদের আরজী ছিলো যে, এমন একজন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সন্তান মহান আল্লাহ পাক তিনি যেনো উনাদেরকে দান করেন, উনার উসীলায় উনারা রহমতপ্রাপ্ত হন। ইতমিনানপ্রাপ্ত হন এবং মহান আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টিপ্রাপ্ত হন। আর এদিকে সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনিও একজন ত্বহিরা বা পূতঃপবিত্রা, সৎ ও ধৈর্য্যশীলা দুধমাতা খোঁজ করছিলেন। এই মুবারক সংবাদ শুনে সাইয়্যিদাতুনা হযরত সা’দিয়া আলাইহাস সালাম তিনি উনার আহালকে নিয়ে সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বাড়িতে তাশরীফ মুবারক নিলেন। সাইয়্যিদাতুনা হযরত সা’দিয়া আলাইহাস সালাম তিনি এসে সন্তান লালন পালনের কথা বললেন, সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাদের কথা শুনে উনার পছন্দ হলো এবং তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার শুকরিয়া আদায় করলেন। কারণ তিনি এমনই একজন মহাসম্মানিতা দুধমাতা খুঁজছিলেন। যিনি হবেন সম্ভ্রান্তশালী, পূতঃপবিত্রা, মহান আল্লাহ পাক উনাতে বিশ্বাসী, সৎ ধৈর্যশীল ও সর্বাধিক মিষ্টিভাষী। সুবহানাল্লাহ!

বিশুদ্ধ মতে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হস্তি বাহিনী ধ্বংস হওয়ার ৫০ দিন পর সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ উনার সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’দাদ শরীফ মহাসম্মানিত ১২ই রবীউল আউওয়াল শরীফে সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ বা ইছনাইনিল ‘আযীম শরীফ উনার সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আওক্বাত শরীফ বা ছুবহে ছাদিক্ব শরীফ উনার সময় পবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! উনাকে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সর্বপ্রথম পবিত্র দুধ মুবারক পান করান। তারপর সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছুয়াইবিয়া আলাইহাস সালাম তিনিও কিছু দিন পবিত্র দুধ মুবারক পান করান। অতঃপর সাইয়্যিদাতুনা হযরত সা’দিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি পবিত্র দুধ মুবারক পান করান। সুবহানাল্লাহ! 

দুই বছর পবিত্র দুধ মুবারক পান করানো শেষ হলে সাইয়্যিদাতুনা হযরত সা’দিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট নিয়ে আসেন। তারপর উনারা খায়ের-বরকত লাভের জন্য সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট আরজী পেশ করে পূণরায় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত বনূ সা’দ গোত্রে নিয়ে যান। সুবহানাল্লাহ! 

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়াবী মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র  হায়াত মুবারক যখন ৪ বছর, তখন প্রথমবার আনুষ্ঠানিকভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল ইলম মুবারক বা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সিনা মুবারক চাক সম্পর্কিত ঘটনা মুবারক সংঘটিত হয়। সুবহানাল্লাহ! তখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত সা’দিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি চিন্তিত হয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট নিয়ে আসেন। তখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এবং সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা বলেন যে, এটা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিশেষ শান মুবারক। সুবহানাল্লাহ! তারপর সাইয়্যিদাতুনা হযরত সা’দিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি পূণরায় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত বনূ সা’দ গোত্রে নিয়ে যান। সুবহানাল্লাহ!

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি দুনিয়াবী হায়াত মুবারক অনুযায়ী পাঁচ বছর পর্যন্ত বনূ সা’দ গোত্রে সাইয়্যিদাতুনা হযরত সা’দিয়া আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র হুজরা শরীফে অবস্থান মুবারক করেন। অতপর, ৬ষ্ঠ বছরের শুরুতে তিনি উনার মহাসম্মানিত হযরত আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনার নিকট ফিরে আসেন। সুবহানাল্লাহ! 

নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র ছোহবত মুবারক লাভ করার পর হতে দুধমাতা সাইয়্যিদাতুনা হযরত সা’দিয়া আলাইহাস সালাম তিনি প্রতি মূহুর্তে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সীমাহীন পবিত্র মু’জিযা শরীফ দেখতে পান।

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, সাইয়্যিদাতুনা হযরত সা’দিয়া আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বক্ষ মুবারক দুধশূন্য ছিল। কিন্তু নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পবিত্র কোল মুবারকে তুলে নেয়ার সাথে সাথে আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বক্ষ মুবারক পর্যাপ্ত দুধে পরিপূর্ণ হয়ে যায়। সুবহানাল্লাহ!

সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূল মির্না রদ্বয়াতি তথা রহমতুল্লিল আলামীন, রঊফুর রহীম, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিতা দুধমাতা হযরত সা’দিয়া আলাইহাস সালাম উনার বাহনটি অতিশয় দূর্বল ছিল। কিন্তু নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পবিত্র কোল মুবারকে নিয়ে সেই বাহনে আরোহনের সাথে সাথে বাহনটি এত সতেজ ও শক্তিশালী হলো যে, পুরো কাফেলায় বাহনটি সবার আগে আগে অতি দ্রুতগতিতে চলতে লাগলো। সাইয়্যিদাতুনা হযরত সা’দিয়া আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! আমার গাধীটা আমাদের নিয়ে এতো দ্রুত পথ চললো যে, কাফিলার কোন গাধাই এর মোকাবিলা করতে পারছিলো না। সুবহানাল্লাহ!

বনূ সা’দ-এর জনপদের চেয়ে অধিক শুস্ক বা অনুর্বর কোন ভূমি ছিলো না। কিন্তু নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত সা’দিয়া আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র  হুজরা শরীফে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র  তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করার পর চারণভূমির অবস্থা সম্পূর্ণ পরিবর্তন হয়ে গেল। ছাগলের পালগুলো সারাদিন সেখান থেকে সন্ধায় পেট ভরে ও দুধে পরিপূর্ণ হয়ে ফিরে আসতে শুরু করলো। অথচ অন্যদের ছাগলগুলো এক ফোঁটাও দুধ দিতো না এবং সন্ধা বেলায় ক্ষুধার্ত অবস্থায় ফিরে আসতো। সুবহানাল্লাহ!

সাইয়্যিদাতুনা হযরত সা’দিয়া আলাইহাস সালাম তিনি আরো বলেন, আমি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে দোলনা মুবারকে শুয়ে চাঁদের সঙ্গে কথা মুবারক বলতে শুনেছি এবং চাঁদের দিকে ইশারা মুবারক করতে দেখেছি। তিনি যেদিকে ইশারা মুবারক করতেন চাঁদ সেদিকেই হেলে যেতো। সুবহানাল্লাহ! আর হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুসগণ উনার দোলনা মুবারক দুলিয়ে দিতেন। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত মহাপবিত্র পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত রয়েছে, সাইয়্যিদাতুনা হযরত সা’দিয়া আলাইহাস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র না’ত শরীফ পাঠ করতে করতে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ঘুম পারাতেন। তিনি বলতেন, 

يَا رَبِّ اِذَ اَعْطَيْتَهٗ فَاَبْقِهٖ

وَاعْلِهٖ اِلَى الْعَلَا وَارْقِهٖ

وَادْحَضْ اَبَاطِيْلَ الْعَدِىِّ بـِحَقِّهٖ.

“আয় বারী তায়ালা! আপনি যখন উনাকে যমীনে পাঠিয়েছেন তখন উনাকে দায়িম-ক্বায়িম রাখুন। 

আপনি উনাকে সম্মান-ইজ্জতের সর্বোচ্চ স্থান মুবারকে নিয়েছেন এবং উনাকে সবচেয়ে সুউচ্চ শান মুবারক হাদিয়া করেছেন। 

উনার পবিত্র রো’ব মুবারক উনার মাধ্যমে সমস্ত শত্রুদের সকল মিথ্যাচার ধ্বংস করে দিন।”  (খছায়িছুল কুবরা)

সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূল মির্না রদ্বয়াতি তথা রহমতুল্লিল আলামীন, রঊফুর রহীম, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিতা দুধমাতা হযরত সা’দিয়া আলাইহাস সালাম উনার বেমেছাল শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত রয়েছে,

قَالَ حَضْرَتْ اَلْقَاضِىْ اَبُو الْفَضْلِ عِيَاضٌ رَحِمَهُ اللهُ تَعَالـٰى لَـمَّا وَرَدَتْ حَضْرَتْ حَلِيْمَةُ السَّعْدِيَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ عَلـٰى رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَبَسَطَ لَـهَا رِدَاءَهٗ وَقَضٰى حَاجَتَهَا

অর্থ: “হযরত ক্বাযী আবুল ফযল আয়ায রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, যখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত সা’দিয়া আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট তাশরীফ মুবারক এনেছিলেন, তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত সা’দিয়া আলাইহাস সালাম উনার সম্মানার্থে উনার জন্য নিজ সম্মানিত চাদর মুবারক বিছিয়ে দিয়েছিলেন এবং উনার সমস্ত প্রয়োজন মুবারক পূরণ করেছিলেন।” সুবহানাল্লাহ! (সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ফী সীরাতি খইরিল ইবাদ ১/৩৮৩)

অপর বর্ণনায় এসেছে, 

عَنْ حَضْرَتْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ قَالَ جَاءَتْ حَضْرَتْ حَلِيْمَةُ ابْنَةُ عَبْدِ اللهِ اُمُّ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنَ الرَّضَاعَةِ اِلـٰى رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَ حُنَيْنٍ فَقَامَ اِلَيْهَا وَبَسَطَ لَـهَا رِدَاءَهٗ فَجَلَسَتْ عَلَيْهِ.

অর্থ: “হযরত আতা ইবনে ইয়াসার রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিতা দুধ মাতা সাইয়্যিদাতুনা হযরত সা’দিয়াহ বিনতে আবূ যুয়াইব আব্দুল্লাহ আলাইহাস সালাম তিনি পবিত্র হুনাইন জিহাদ উনার দিন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট আগমন মুবারক করেন। তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র  ক্বিয়ামী শান মুবারক প্রকাশ করেন এবং উনার জন্য নিজ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র চাদর মুবারক বিছিয়ে দেন। সাইয়্যিদাতুনা হযরত সা’দিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি সেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র  চাদর মুবারক-এ বসেন।” (শারহুয যারক্বানী আলাল মাওয়াহিব)

অর্থাৎ, স্বয়ং নূরে মুজসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দুধ মাতা আলাইহাস সালাম উনার বসার জন্য নিজ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র  চাদর মুবারক বিছিয়ে দিয়েছেন এবং উনার মহাসম্মানিতা দুধ মাতা আলাইহাস সালাম তিনি উনার সেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র চাদর মুবারকে বসেছেন। সুবহানাল্লাহ! 

কতিপয় ঐতিহাসিক উনাদের মতে, ৮ম হিজরীর পরে সাইয়্যিদাতুনা হযরত সা’দিয়া আলাইহাস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র  মদীনা শরীফে পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন এবং পবিত্র জান্নাতুল বাক্বী শরীফে উনার পবিত্র রওযা শরীফ স্থাপন করা হয়েছে।

 মহান আল্লাহ পাক তিনি ছহিবে ছমাদ, ছহিবে সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, মামদূহ মুরশিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার মুবারক উসীলায় সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূল মির্না রদ্বয়াতি তথা রহমতুল্লিল আলামীন, রঊফুর রহীম, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দুধমাতা সাইয়্যিদাতুনা হযরত সা’দিয়া আলাইহাস সালাম উনার মুবারক শানে জানার এবং সর্বোচ্চ হুসনে যন পোষণ ও আদব রক্ষা করার তাওফীক্ব মুবারক দান করুন। আমীন! 



 সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বা‘আহ্ আছ ছানিয়াহ্(হযরত হালিমা সাদিয়্যাহ) আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত সংক্ষিপ্ত জীবনী মুবারক

মুরদ্বি‘আতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বা‘আহ্ আছ ছানিয়াহ্ (হযরত হালিমা সাদিয়্যাহ) আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত সংক্ষিপ্ত জীবনী মুবারক

আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বা‘আহ্ আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দুধ মা আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ! তিনি হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ! উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ! এক কথায় তিনি শুধু যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারিণী হচ্ছেন তিনি। সুবহানাল্লাহ! উনার সম্মানিত মুহব্বত মুবারকই হচ্ছেন সম্মানিত ঈমান। সুবহানাল্লাহ! আর উনার প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করা সুস্পষ্ট কুফরী। না‘ঊযুবিল্লাহ!

উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় ইসিম বা নাম মুবারক হচ্ছেন “সাইয়্যিদাতুনা হযরত হালীমাহ্ আলাইহাস সালাম।” সুবহানাল্লাহ! তিনি ছিলেন বনূ সা’দ গোত্রের। এজন্য ‘সাইয়্যিদাতুনা হযরত সা’দিয়্যাহ্ আলাইহাস সালাম’ বলা হয়। উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুনিয়াত মুবারক হচ্ছেন ‘সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কাব্শাহ্ আলাইহাস সালাম’।” সুবহানাল্লাহ! (সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১/৩৭৮)

উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মিনার রদ্বা‘আহ্, মুরদ্বি‘আতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, হাদ্বিনাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ছহিবাতুল ইয্যাহ্ ইত্যাদি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিশেষ লক্বব মুবারক উনাদের অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ!

উনার মহাসম্মানিত আব্বাজান আলাইহিস সালাম তিনি হচ্ছেন সাইয়্যিদুনা হযরত আবূ যুআইব আব্দুল্লাহ ইবনে হারিছ আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ! (মাজমাউয্ যাওয়াইদ ৯/২৫৯)

মহাসম্মানিত নসব মুবারক হচ্ছেন- “সাইয়্যিদাতুনা হযরত হালীমাহ্ আলাইহাস সালাম বিনতে আবী যুআইব আলাইহিস সালাম। আর সাইয়্যিদুনা হযরত আবূ যুআইব আলাইহিস সালাম ইবনে হারিছ ইবনে শিজ্নাহ্ ইবনে জাবির ইবনে রিযাম ইবনে নাছিরাহ্ ইবনে সা’দ ইবনে বক্র ইবনে হাওয়াযিন ইবনে মানছূর ইবনে ইকরাম্ ইবনে হাফছাহ্ ইবনে ক্বইস্ ইবনে ‘আইলান ইবনে মুদ্বর ইবনে নিযার ইবনে মা‘আদ ইবনে ‘আদনান আলাইহিমুস সালাম।” সুবহানাল্লাহ! (আল বিদায়াহ্ ওয়ান নিহায়াহ্ ২/২৭৩, ইস্তী‘আব ২/৮৫ ইত্যাদি)

তিনি উনার প্রাথমিক জীবন মুবারক বনূ সা’দ গোত্রের অতিবাহি করেন। সুবহানাল্লাহ! উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে ‘আযীম শরীফ বনূ সা’দ গোত্রের সাইয়্যিদুনা হযরত হারিছ আলাইহিস সালাম উনার সাথে অনুষ্ঠিত হন। সুবহানাল্লাহ! উনি হচ্ছেন সাইয়্যিদুনা হযরত হারিছ ইবনে আব্দুল ‘উয্যা ইবনে রিফা‘আহ্ ইবনে মাল্লান ইবনে নাছিরাহ্ ইবনে সা’দ ইবেন বকর ইবনে হাওয়াযিন আলাইহিস সালাম।” সুবহানাল্লাহ! (সীরাতে ইবনে কাছীর ১/২২৫)

সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বা‘আহ্ আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার মোট আওলাদ ছিলেন ৩ জন। একজন ছেলে আওলাদ আলাইহিস সালাম এবং দুইজন মেয়ে আওলাদ আলাইহিমাস সালাম। উনারা হচ্ছেন- ১. সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে হারিছ আলাইহিস সালাম। তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে দুধ মুবারক পান কেেছন। সুবহানাল্লাহ! ২. সাইয়্যিদাতুনা হযরত উনাইসাহ্ আলাইহাস সালাম এবং ৩. সাইয়্যিদাতুনা হযরত শায়মা আলাইহাস সালাম। উনারা ছিলেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত দুধ ভাই-বোন আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত।” সুবহানাল্লাহ! (সীরাতে ইবনে কাছীর ১/২২৫)

মহান আল্লাহ পাক তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বা‘আহ্ আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনাকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দুধ মা হিসেবে বেমেছাল ইজ্জত-সম্মান মুবারক এবং সম্মানিত পবিত্রতা মুবারক হাদিয়া মুবারক করেই সৃষ্টি মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি পূর্ব থেকেই নির্ধারণ করে রেখেছেন যে, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বা‘আহ্ আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনিই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মা হিসেবে উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দুধ মুবারক পান করাবেন। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বা‘আহ্ আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার সৌভাগ্য ও ক্ববূলিয়্যাত সম্পর্কে বিশ^খ্যাত সীরাত বিশারদ আল্লামা হযরত ইমাম মুহম্মদ ইবনে ইঊসুফ ছালিহী শামী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি লিখেন,

وذكر العوفي رحمه الله تعالى أن عبد المطلب سمع وقت دخول حليمة مكة هاتفاً يقول:

إن ابن آمنة الأمين محمّداً ... خير الأنام وخيرة الأخيار

ما إن له غير الحليمة مرضعٌ ... نعم الأمينة هي على الأبرار

مأمونةٌ من كلّ عيبٍ فاحش ... ونقيّة الأثواب والأزرار

لا تسلمنه إلى سواها إنّه ... أمرٌ وحكمٌ جا من الجبّار 

অর্থ: “হযরত ইমাম ‘আওফী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেন, নিশ্চয়ই সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বা‘আহ্ আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ-এ প্রবেশ করার সময় সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এক অদৃশ্য কন্ঠে নি¤েœাক্ত শ্লোকগুলো শুনতে পান-

সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বা‘আহ্ আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি ব্যতীত অন্য কেউ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দুধ মুবারক পান করাবেন না। তিনি পুণ্যবানদের জন্য কতই না বিশ্বস্ত!

অশ্লীল দোষ-ত্রুটি থেকে তিনি মুক্ত এবং যাবতীয় পাপ ও পঙ্কিলতা থেকে পরিচ্ছন্ন।

আপনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বা‘আহ্ আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার নিকট ছাড়া আর কারো নিকট সমর্পণ করবেন না। মহাপরাক্রমশালী মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট থেকে এই আদেশ মুবারক ও সিদ্ধান্ত মুবারক এসেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ফী সীরাতি খইরিল ইবাদ ১/৩৮৬)

আল্লামা দিয়ার বাকরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, “যখন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন, তখন বলা হলো, র্দুরে ইয়াতীম অর্থাৎ বেনিয়াজ, ছমাদ, একক ও অদ্বিতীয় এবং মহামূল্যবান মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল কুদরত মুবারক উনার সম্মানিত লালন-পালন মুবারক কে করবেন? পাখিরা বললো, আমরা উনার সম্মানিত লালন-পালন মুবারক করবো। আর আমরা উনার সম্মানিত খেদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়ে ফায়দা হাছিল করবো, সারা কায়িনাতের মধ্যে ধন্য হবো। বন্য প্রাণীরা বললো, আমরা উনার সম্মানিত খেদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেওয়ার অধিক হক্বদার। অতঃপর মহান আল্লাহ পাক তিনি সম্মানিত কুদরতী যবনে আহ্বান করলেন যে, হে সমস্ত মাখলূক্বাত নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার প্রাচীন পূর্ববর্তী হিকমত মুবারক উনার মধ্যে নির্ধারণ করে রেখেছেন যে, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নবী-রসূল, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মহাবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত দুগ্ধ মুবারক পান করবেন মহাধৈর্যশীল, সৌভাগ্যশীল সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বা‘আহ্ আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার।” সুবহানাল্লাহ! (তারীখুল খমীস ১/২২৩)

কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছেন, “সৃষ্টি জগতের মাঝে যিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র পবিত্র দুধ মুবারক পান করিয়ে অত্যন্ত সুনাম, ঐতিহ্য, বিখ্যাত এবং সর্বোচ্চ সম্মান মুবারক উনার অধিকারী তিনিই হচ্ছেন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বা‘আহ্ আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম। তিনি কায়িনাত মাঝে সবচেয়ে বড় নেককার ও পূণ্যময়ী, সম্মানিতা ও ধৈর্যশীলা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মহিলা ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নাম মুবারক যেমন তিনি কাজ-কর্ম মুবারকেও ঠিক তেমনটিই ছিলেন। ‘সাইয়্যিদাতুনা হযরত হালীমাহ্ আলাইহাস সালাম’ এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নাম মুবারক উনার অর্থ মুবারক হচ্ছেন- নেক-বখতী, পূণ্যময়ী। সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বা‘আহ্ আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি ‘বনূ সা’দ ইবনে বকর’ গোত্রের অর্ন্তভুক্ত ছিলেন। যাঁরা ভাষার বিশুদ্ধতায় এবং অলংকার শাস্ত্রে তৎকালে আরব বিখ্যাত এবং সুমিষ্ট পানি ও মধ্যম বায়ূর সুপরিচিত ছিলেন। (স্বাস্থ্যের জন্য উনাদের আবহাওয়া অত্যন্ত উপযোগী বলে গণ্য হতো।) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বণিত রয়েছেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন- “আমি আরব অর্থাৎ সমস্ত কায়িনাত মাঝে সকলের চেয়ে সর্ব্বোচ্চ ফছীহ, বিশুদ্ধ ও অলংকৃত ভাষা বর্ণনাকারী। কেননা আমি সম্মানিত কুরাইশ বংশে আগমনকারী এবং বনূ সা’দ বিন বাকার গোত্রে রেখে আমাকে সম্মানিত ও পবিত্র দুধ মুবারক পান করানো হয়েছে।” সুবহানাল্লাহ! (নূরে মুহম্মদী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)

বিভিন্ন সীরাতগ্রন্থসমূহে উল্লেখ রয়েছেন, “সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বা‘আহ্ আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি নিজে বলেন, আমি বনী সা’দ ইবনে বকর গোত্রের অন্যান্য মহিলাদের সঙ্গে দুগ্ধপোষ্য শিশু গ্রহণের জন্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ তাশরীফ মুবারক নেই। আমার একটি দুর্বল গাধী ছিল, যা ছিল প্রায় শক্তিহীন। আমার একটি উটনী ছিল, যেটি এক ফোটা দুধও দিতো না। আমার সঙ্গে ছিলেন আমার শিশু সন্তান ও আমার সম্মানিত আহাল আলাইহিস সালাম তিনি। আমাদের অসচ্ছলতা এ রকম ছিল যে, রাত কোনক্রমে কাটলেও দিন কাটতে চাইতো না। আমাদের গোত্রের অন্যান্য মহিলারা আগেভাগে তাড়াহুড়া করে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ পৌঁছে দুগ্ধপোষ্য সকল শিশুদের নিয়ে নেয়। শুধুমাত্র নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অবশিষ্ট ছিলেন। আমি আমার সম্মানিত আহাল আলাইহিস সালাম উনাকে বললাম, মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! কোন শিশুকে না নিয়ে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ ত্যাগ করবো না। আমি অবশ্যই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে আমার সঙ্গে নিবো এবং আমি উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দুধ মুবারক পান করাবো অর্থাৎ উনার আমি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খিদমত করবো। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর আমি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খিদমত মুবারক-এ উপস্থিত হলাম এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খিদমত মুবারক করার জন্য উনাকে গ্রহণ করলাম।” সুবহানাল্লাহ!

সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বা‘আহ্ আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, অতঃপর সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাকে বিদায় দিলেন। আমরা গাধীতে সাওয়ার হয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কোল মুবারক-এ নিয়ে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ থেকে রওয়ানা দিলাম। আমার গাধীটি ক্ষিপ্রগতিসম্পন্ন হয়ে গেলো। গর্দান টান করে দ্রুত সামনের দিকে চলতে লাগলো। আমরা যখন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কা’বা শরীফ উনার সামনে এলাম তখন আমার গাধীটি তিনটি সিজদা করলো। তারপর আকাশের দিকে মাথা উঁচু করে আওয়াজ করলো এবং আমার গোত্রের অন্যান্য সকল বাহনের আগে আগে দৌড়ে যেতে লাগলো। আমার গাধীর এরূপ দ্রুতগতি দেখে সমস্ত লোকজন আশ্চার্যিত হয়ে গেলো। আমার সঙ্গী মহিলারা আমাকে জিজ্ঞাসা করলো, হে বিনতে আবী যুওয়াইব আলাইহাস সালাম এটি কি আপনার সেই গাধীটি নয় যার উপর আরোহন করে আমাদের সঙ্গে এসেছিলেন? আমি বললাম, মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! এটা তো সেই গাধীই যাতে আরোহন করে আমি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ উনার মধ্যে এসেছিলাম। মহান আল্লাহ পাক তিনি এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুমহান শিশু উনার উছীলায় এবং উনার বরকতে আমার বাহনকে শক্তিশালী করে দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! সকলেই বললেন, তাহলে বাহনে আরোহিত এই সন্তান উনার শান-মান, মর্যাদা-মর্তবা সারা কায়িনাতের মাঝে সবচেয়ে বেশি। সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বা‘আহ্ আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি বললেন,

فكنت أسمع أتانى تنطق وتقول والله ان لى لشأنا ثم شأنا بعثنى الله بعد موتى وردّلى سمنى بعد هزالى ويحكنّ يا نساء بنى سعد انكنّ لفى غفلة عظيمة وهل تدرين من على ظهرى على ظهرى خير النبيين وسيد المرسلين وخير الاوّلين والآخرين وحبيب رب العالمين

 “আমি আমার গাধীকে বলতে শুনলাম- হ্যাঁ; মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! আমার আরোহী উনার মর্যাদা-মর্তবা সত্যি সত্যিই সর্বোচ্চ। আমি তো মৃতপ্রায় ছিলাম। উনার সম্মান ও বরকতের কারণেই আমাকে শক্তিশালী করা হয়েছে। হে বনী সা’দ গোত্রের মহিলা! আপনারা এখনো অচেতন? আপনারা বুঝতে পারছেন না আমার পিঠ মুবারক-এ কাকে বহন করে নিয়ে চলছি? আমার পিঠ মুবারক-এ রয়েছেন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, খাইরুল আউয়ালীন ওয়াল আখিরীন, হাবীবে রব্বুল আলামীন, নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!” (শাওয়াহিদুন নুবুওয়াত)

* সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বা‘আহ্ আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, যখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত বয়স মুবারক দুই বছর পূর্ণ হলেন, তখন হঠাৎ একদিন একটি বকরি এসে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সিজদাহ্ করে। সুবহানাল্লাহ! 

* সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বা‘আহ্ আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার দুই বছর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দুগ্ধ মুবারক পান করানো শেষ হলে এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাস উনার শেষের দিকে তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট নিয়ে আসেন। সুবহানাল্লাহ! তারপর উনারা খায়ের-বরকত লাভের জন্য সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট আরজী পেশ করে পূণরায় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত বনূ সা’দ গোত্রে নিয়ে যান। সুবহানাল্লাহ!

সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বা‘আহ্ আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি দীর্ঘ ৫ বছর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেন। সুবহানাল্লাহ! তারপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আম্মাজান সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট ফিরে আসেন। সুবহানাল্লাহ!

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আযীমুশ শান নিসবতে আযীম শরীফ অনুষ্ঠিত হওয়ার সময় সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বা‘আহ্ আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি উপস্থিত হয়েছিলেন এবং এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আযীমুশ শান নিসবতে আযীম শরীফ-এ ৪০টি ছাগল বা খাসি মুবারক হাদিয়া মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রিসালাত মুবারক প্রকাশ পাওয়ার পর সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বা‘আহ্ আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি উনার সম্মানিত আহাল আলাইহিস সালাম উনিসহ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খিদমত মুবারক-এ এসে উনারা উভয়ে অনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছেন,

عَنْ حَضْرَتْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ قَالَ جَاءَتْ حَضْرَتْ حَلِيْمَةُ ابْنَةُ عَبْدِ اللهِ اُمُّ النَّبِىِّ صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنَ الرَّضَاعَةِ اِلـٰى رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَ حُنَيْنٍ فَقَامَ اِلَيْهَا وَبَسَطَ لَـهَا رِدَاءَهٗ فَجَلَسَتْ عَلَيْهِ

অর্থ: “হযরত আতা ইবনে ইয়াসার রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত দুধ মাতা সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বা‘আহ্ আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি সম্মানিত হুনাইন জিহাদ উনার দিন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট আগমন মুবারক করেন। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বা‘আহ্ আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানার্থে দাঁড়িয়ে যান এবং উনার জন্য নিজ চাদর মুবারক বিছিয়ে দেন। সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বা‘আহ্ আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি সেই সম্মানিত চাদর মুবারক-এ বসেন।” সুবহানাল্লাহ! (আল ইস্তিয়াব ২/৮৫, তা’লীক্বুশ শিফা ১/১২৮, যাখায়িরুল ‘উক্ববা লিমুহিব্বে ত্ববারী ১/২৫৯, ‘আওনুল মা’বূদ ১৪/৫৩, ‘উইউনুল আছার ১/৪৫, তারীখুল খমীস ১/২২৮, শারহুয যারক্বানী আলাল মাওয়াহিব ১/২৬৫ ইত্যাদি)

অনুরূপ ঘটনা সম্মানিত খায়বার বিজয়ের সময়ও সংঘটিত হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!

উপরোক্ত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার থেকে স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে, স্বয়ং নূরে মুজসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বা‘আহ্ আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানার্থে দাঁড়িয়ে গেছেন। সুবহানাল্লাহ! শুধু তাই নয়; তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বা‘আহ্ আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার বসার জন্য নিজের মহাসম্মানিত চাদর মুবারক বিছিয়ে দিয়েছেন এবং সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বা‘আহ্ আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি সেই মহাসম্মানিত চাদর মুবারক-এ বসেছেন। সুবহানাল্লাহ! 

     যেখানে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত তা’যীম-তাকরীম মুবারক করার জন্য, উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার জন্য, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুর দারাজাত মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ক্বদম মুবারক) উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুশ শারাফাত মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ধূলি-বালি মুবারক) লাভের জন্য সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারাসহ কায়িনাতের সকলেই বেক্বারার, পেরেশান। সেখানে স্বয়ং নূরে মুজসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার মহাসম্মানিতা দুধ মাতা সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বা‘আহ্ আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানার্থে দাঁড়িয়ে গেছেন। সুবহানাল্লাহ! শুধু তাই নয়; তিনি উনার বসার জন্য নিজের পরিধেয় মহাসম্মানিত চাদর মুবারক বিছিয়ে দিয়েছেন এবংসাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বা‘আহ্ আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি সেই মহাসম্মানিত চাদর মুবারক-এ বসেছেন। সুবহানাল্লাহ! তাহলে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বা‘আহ্ আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কত বেমেছাল তা সমস্ত জিন-ইনসান এবং কায়িনাতবাসী সকলের চিন্তা-কল্পনার অনেক উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ! এক কথায় তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারিণী হচ্ছেন তিনি। সুবহানাল্লাহ!

সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বা‘আহ্ আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি ৯ম হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই ছফর শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ অর্থাৎ সোমবার) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবরক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ মহাসম্মানিত জান্নাতুল বাক্বী শরীফ উনার মধ্যে অবস্থিত। সুবহানাল্লাহ! তিনি দুনিয়ার যমীনে ৮০ বছরের অধিক সময় মহাসম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!

মহান আল্লাহ পাক তিনি আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার সম্মানার্থে আমাদের সবাইকে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুর রদ্বা‘আহ্ আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক জানার, উনাকে সম্মানিত তা’যীম-তাকরীম মুবারক করার, মুহব্বত মুবারক করার, উনার সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করার এবং সম্মানিত গোলামী মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার তাওফীক্ব দান করুন। আমীন!