আদ্ দুরারুল মুখতারাহ্ - ফী নিসবাতি সুলত্বানিন নাছীর (১ম খণ্ড)মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুদরতময় এক বিশেষ নূরানী মাহফিল মুবারক উনার মধ্যে সর্বোচ্চ পন্থায় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খিলাফত মুবারক প্রদান এবং পরিশেষে মহান আল্লাহ পাক কর্তৃক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুদরতী কোল মুবারক-এ করে সারা পৃথিবী, সারা কায়িনাত ঘুরিয়ে দেখানো-পর্ব-১০

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুদরতময় এক বিশেষ নূরানী মাহফিল মুবারক উনার মধ্যে সর্বোচ্চ পন্থায় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খিলাফত মুবারক প্রদান এবং পরিশেষে মহান আল্লাহ পাক কর্তৃক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুদরতী কোল মুবারক-এ করে সারা পৃথিবী, সারা কায়িনাত ঘুরিয়ে দেখানো-পর্ব-১০

যিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এক বিশেষ নূরানী মাহফিল মুবারক উনার মধ্যে সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম, সমস্ত হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা'য়ালা আনহুম, সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত হযরত আওলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম এবং সমস্ত হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মুখে স্বয়ং যিনি খালিকু মালিক রব মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন উনার মুবারক নির্দেশে সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল হুদা মুবারক-এ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাথা মুবারক-এ) সাদা, কালো, সবুজ এই তিন ধরণের তিনখানা পাগড়ী মুবারক পড়িয়ে, একখানা আছা মুবারক হাদিয়া মুবারক করে সর্বোচ্চ পন্থায় যাহিরী এবং বাতিনী উভয় প্রকার খিলাফত মুবারক প্রদান করেন। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উপস্থিত সকলের সামনে উনার সর্বশ্রেষ্ঠ মহাসম্মানিত আওলাদ, উনার সর্বশ্রেষ্ঠ খলীফা, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, কায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুত্বহ্হার, মুত্বহির, আছ ছমাদ মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে লক্ষ্য করে বললেন, “হে আমার যোগ্যতম মহাসম্মানিত

আওলাদ! আপনাকে যেরূপ সর্বোচ্চ পন্থায় খিলাফত মুাবরক প্রদান করা হলো, এরূপ সর্বোচ্চ পন্থায় আর কাউকে খিলাফত মুবারক দেয়া হয়নি।” সুবহানাল্লাহ! শুধু তাই নয়, উক্ত বিশেষ মজলিসে তিনি উপস্থিত সবার সম্মুখে পুনরায় এক মুবারক ই'লান দিলেন যে, "যামানার শেষের দিকে পৃথিবীর বুকে আইয়্যামে জাহিলিয়াতের পুনরাবৃত্তি ঘটেছে, ফিতনা- ফাসাদ চরমভাবে প্রকাশ পেয়েছে, পুরো দুনিয়া যুলুম-নির্যাতন, অত্যাচার- অবিচার, কুফরী-শিরকী হারাম-নাজায়িয কার্যকলাপে ভরে গেছে। পৃথিবীর কোথায়ও ইনসাফের লেশমাত্র অবশিষ্ট নেই। এমনি এক কঠিন পরিস্থিতে, এমন এক কঠিন সময়ে দুনিয়ার যমীনে আমার এই সুযোগ্য মহাসম্মানিত আওলাদ, খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক তাশরীফ। তিনি সমস্ত কাফির-মুশরিক, ইহুদী- নাছারা, গোমরাহ-পথভ্রষ্ট, মুনাফিক্ব ও উলামায়ে সূ'দেরকে নিশ্চিহ্ন করে দিয়ে দুনিয়ার যমীনে ইনসাফ মুবারক প্রতিষ্ঠা করবেন, খিলাফত মুবারক জারি করবেন। সুবহানাল্লাহ! আমার এই সুমহান মহাসম্মানিত আওলাদ তিনি হচ্ছেন আমার পক্ষ থেকে একজন আখাচ্ছল খাছ মহান খলীফা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। দুনিয়ার যমীনে উনার যারা বিরোধীতা করবে, উনার যারা শত্রুতা পোষণ করবে, তারা প্রত্যেকেই নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে, ধ্বংস হয়ে যাবে, তাদের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাবে।” সুবহানাল্লাহ!

এছাড়াও যিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি খিলাফত মুবারক প্রদানের আগে ও পরে উক্ত মুবারক মাহফিল উনার মধ্যে সকলের সম্মুখে আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, কায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুত্বহ্হার, মুত্বহহির, আছ ছমাদ মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আরো অনেক ছানা-ছিফত মুবারক বর্ণনা করেন। সুবহানাল্লাহ!

পরিশেষে যাঁরা বড় বড় হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা রয়েছেন, উনারা প্রত্যেকেই আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু

আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুত্বহহার, মুত্বহহির, আছ ছমাদ মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক খিদমতে আরজী পেশ করলেন যে, "আপনার সাথে পেরে উঠা আমাদের পক্ষে আর সম্ভব হবে না। কেননা আপনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযুর্গী-সম্মান মুবারক স্বয়ং যিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বর্ণনা মুবারক করেছেন।” সুবহানাল্লাহ!

আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, কায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ১৪৪১ হিজরী শরীফ উনার সম্মানিত জুমাদাল উখরা শরীফ অথবা সম্মানিত রজবুল হারাম শরীফ-এ ৪র্থ তলা খানকাহ শরীফ-এ ইরশাদ মুবারক করেন, "এই মহাসম্মানিত মজলিস মুবারক উনার ব্যবস্থা সরাসরি স্বয়ং যিনি খালিকু মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি করেছেন। মহাসম্মানিত মজলিস মুবারক শেষে স্বয়ং যিনি খালিকু মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাকে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুদরতী কোল মুবারক-এ নিয়ে সারা পৃথিবী, সারা কায়িনাত ঘুরিয়েছেন, দেখিয়েছেন।” সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!

আলোচ্য ঘটনা মুবারক থেকে আমরা বুঝতে পারলাম যে, যিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এক বিশেষ নূরানী মাহফিল মুবারক-এ সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম, সমস্ত হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা'য়ালা আনহুম, সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত হযরত আওলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম এবং সমস্ত হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মুখে স্বয়ং যিনি খালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন উনার মুবারক নির্দেশে সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা,

খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সাদা, কালো, সবুজ এই তিন ধরণের তিনখানা পাগড়ী মুবারক পড়িয়ে, একখানা আছা মুবারক হাদিয়া মুবারক করে সর্বোচ্চ পন্থায় যাহিরী এবং বাতিনী উভয় প্রকার খিলাফত মুবারক প্রদান করেছেন। এরূপ সর্বোচ্চ পন্থায় অন্য কাউকে খিলাফত মুবারক দেয়া হয়নি; আর দেয়া হবেও না। শুধু তাই নয়, উক্ত বিশেষ মাহফিল মুবারক-এ যিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়‍্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উপস্থিত সবার সম্মুখে এই মুবারক ঘোষণাও দিয়েছেন যে, যামানার শেষের দিকে পৃথিবীর বুকে আইয়্যামে জাহিলিয়াতের পুনরাবৃত্তি ঘটেছে, ফিতনা-ফাসাদ চরমভাবে প্রকাশ পেয়েছে, পুরো দুনিয়া যুলুম-নির্যাতন, অত্যাচার-অবিচার, কুফরী- শিরকী হারাম-নাজায়িয কার্যকলাপে ভরে গেছে। পৃথিবীর কোথায়ও ইনসাফের লেশমাত্র অবশিষ্ট নেই। এমনি এক কঠিন পরিস্থিতে, এমন এক কঠিন সময়ে দুনিয়ার যমীনে আমার এই সুযোগ্য মহাসম্মানিত আওলাদ, খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক তাশরীফ। তিনি সমস্ত কাফির-মুশরিক, ইহুদী- নাছারা, গোমরাহ-পথভ্রষ্ট, মুনাফিক্ব ও উলামায়ে সূ'দেরকে নিশ্চিহ্ন করে দিয়ে দুনিয়ার যমীনে ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করবেন, খিলাফত জারি করবেন। সুবহানাল্লাহ! শুধু তাই নয়, মহাসম্মানিত মজলিস মুবারক শেষে স্বয়ং যিনি খালিকু মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাকে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুদরতী কোল মুবারক-এ নিয়ে সারা পৃথিবী, সারা কায়িনাত ঘুরিয়েছেন, দেখিয়েছেন। সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!

তাহলে মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি

ওয়া সাল্লাম, কায়িম মাকামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুত্বহহার, মুত্বহহির, আছ ছমাদ মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কত বেমেছাল মহাসম্মানিত তা'য়াল্লুক্ব-নিসবত মুবারক, সেটা সমস্ত জিন- ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। এক কথ ায় তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযুর্গী- সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারী হচ্ছেন তিনি। সুবহানাল্লাহ!








১০০টি চমৎকার ঘটনা - পর্ব-৩৩ ( হাবীবী সীলমোহরে ছিদ্দীক্বী মুহাব্বতের নিশান )

হাবীবী সীলমোহরে ছিদ্দীক্বী মুহাব্বতের নিশান-পর্ব-৩৩

দ্বীন ইসলাম উনার প্রচার প্রসার শুরু হলে বিভিন্ন দেশের বাদশাহদের কাছে দ্বীন ইসলাম উনার পয়গাম প্রেরণ করার প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু তাদের কাছে চিঠিপত্র প্রেরণ করতে হলে তাতে সীলমোহর থাকতে হয়, নইলে তারা সেগুলো গ্রহণ করে না। এই বিষয়টা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে জানানো হলো। তিনি শুনে উনার আংটি মুবারক হযরত আবু বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম উনাকে দিলেন এবং সেখানে "লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহ" বাক্য মুবারক খোদাই করে আনতে বললেন।

হযরত ছিদ্দীকে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি আংটি মুবারক একজন খোদাইকারকের কাছে নিয়ে গিয়ে বললেন, সেখানে "লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহ” (ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বাক্য মুবারক খোদাই করে দিতে। তারপর খোদাই করা হয়ে গেলে, আংটি মুবারক নিয়ে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকটে ফিরে আসলেন।

হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আংটি মুবারক নিয়ে দেখলেন সেখানে খোদাই করা আছে, "লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহ (ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ওয়া আবূ বাকরিন আলাইহিস সালাম"। তিনি হযরত ছিদ্দীকে আকবর আলাইহিস সালাম উনাকে বললেন,

'হে হযরত ছিদ্দীকে আকবর আলাইহিস সালাম! আপনি এটা কি লিখিয়ে এনেছেন?' হযরত ছিদ্দীকে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি জবাব দিলেন, "ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্র নাম মুবারক থেকে আপনার পবিত্র নাম মুবারক জুদা হবে এটা আমার বরদাশত হয়নি। তাই আমি 'মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহ' (ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অংশ মুবারক সংযোজিত করে দিয়েছি।" হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, "আচ্ছা, তাহলে বাকি অংশ, 'ওয়া আবু বাকরিন আলাইহিস সালাম' কিভাবে আসলো?" হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, 'মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! আমি এই ব্যাপারে কিছু জানি না।'

তখন হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি আগমন করলেন। তিনি বললেন, 'ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! মহান আল্লাহ পাক আমাকে প্রেরণ করেছেন; আপনাকে জানানোর জন্য যে, হযরত ছিদ্দীকে আকবর আলাইহিস সালাম উনার যেমন বরদাশত হয়নি মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্র নাম মুবারক থেকে আপনার পবিত্র নাম মুবারক জুদা হবে, তেমনি মহান আল্লাহ পাক তিনিও পছন্দ করেননি যে আপনার পবিত্র নাম মুবারক থেকে হযরত ছিদ্দীকে আকবর আলাইহিস সালাম উনার নাম মুবারক জুদা হবে। তিনিই বাকি অংশ সংযোজিত করে দিয়েছেন।' সুবহানাল্লাহ! কত বেমেছাল মর্যাদা উনার!

১০০টি চমৎকার ঘটনা - পর্ব-৩২ ( প্রকৃত প্রেমিকের নিদর্শন )



প্রকৃত প্রেমিকের নিদর্শন-পর্ব-৩২

পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার প্রাথমিক অবস্থায় কেউ দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করলে যথা সম্ভব সেটাকে গোপন রাখার চেষ্টা করা হতো। কাফিরদের পক্ষ থেকে কোনো নির্যাতন আসে কিনা, এজন্য স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনিও গোপন রাখার জন্য পরামর্শ দিতেন।

মুসলমানদের সংখ্যা যখন ঊনচল্লিশে দাঁড়ায়, তখন হযরত আবু বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম তিনি প্রকাশ্যে ইসলাম প্রচার করার অনুমতি প্রার্থনা করেন। প্রথমে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অনুমতি মুবারক দেননি। কিন্তু পরে হযরত ছিদ্দীকে আকবর আলাইহিস সালাম উনার বারংবার অনুরোধে সম্মত হন। দ্বীন ইসলামে নব দীক্ষিত সবাইকে নিয়ে পবিত্র কা'বা শরীফে হাযির হলেন। হযরত ছিদ্দীকে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি দাওয়াতী খুৎবা আরম্ভ করেন। পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার উপর এটাই ছিল প্রথম ভাষণ। সেইদিন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার চাচা হযরত হামযা আলাইহিস সালাম এবং এর তিনদিন পর হযরত উমর ফারুক আলাইহিস সালাম উনারা পবিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেন।

কিন্তু খুৎবা শুরু হতেই চতুর্দিক থেকে কাফিররা মুসলমানদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়লো। পবিত্র মক্কা শরীফে হযরত ছিদ্দীকে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি যথেষ্ট প্রভাবশালী হওয়া সত্ত্বেও কাফিররা উনাকে এমন বেদম মারধর করে যে, উনার চেহারা এবং নাক, কান মুবারক সবকিছু রক্তে রঞ্জিত হয়ে যায়। বিভিন্ন রকমের আঘাতের কারণে তিনি একদম বেহুঁশ হয়ে পড়েন।

এই খবর শুনে বনী তাইমের লোক এসে হযরত ছিদ্দীকে আকবর আলাইহিস সালাম উনাকে নিয়ে গেলেন। কারো ধারণা ছিল না যে, তিনি আর বাঁচতে পারবেন। বনী তাইম হারাম শরীফ উনার মধ্যে দাঁড়িয়ে ঘোষণা করলেন যে, 'এই দুর্ঘটনায় হযরত ছিদ্দীকে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি যদি ইন্তিকাল করেন, তবে আমরা এর প্রতিশোধ স্বরূপ উতবা ইবনে রাবিয়াকে হত্যা করবো। যেহেতু মারধরের ব্যাপারে উতবার ভূমিকা ছিল সবচেয়ে বেশী। সন্ধ্যা পর্যন্ত হযরত ছিদ্দীকে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি অচেতন অবস্থায় ছিলেন। সন্ধ্যার সময় জ্ঞান ফেরার পর উনার সর্বপ্রথম কথা ছিল যে, 'আমার প্রিয় নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কি অবস্থায় আছেন?' উপস্থিত লোকজন উনাকে এই বলে ভাল-মন্দ বলতে লাগলো যে, 'যার দরুন আপনার এই করুণ অবস্থা। সারাদিন মৃত্যুর মুখে থেকে যখন জ্ঞানশক্তি আসলো তখন আবার সেই নবীর নাম!' হযরত ছিদ্দীকে আকবর আলাইহিস সালাম উনার আম্মা উম্মুল খায়ের রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা কিছু খাবার তৈরি করে আনলেন এবং উনাকে তা খেতে বললেন। কিন্তু হযরত ছিদ্দীকে আকবর আলাইহিস সালাম উনার মুখে শুধু একই আওয়াজ, 'আমার প্রিয় নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কি অবস্থা? তিনি কেমন আছেন? তিনি কি ভাল আছেন?' উনার মা বললেন, 'বাবা আমি জানি না তিনি কি অবস্থায় আছেন?' তিনি বললেন, 'হযরত উমর ফারুক আলাইহিস সালাম উনার ভগ্নী উম্মে জামীল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা উনার নিকট গিয়ে জেনে আসুন।'

মা ছেলের কষ্ট সহ্য করতে না পেরে উম্মে জামীল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা উনার নিকট গিয়ে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হালত বা অবস্থা জিজ্ঞাসা করলেন। উম্মে জামীল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা সাধারণ নিয়মানুসারে নিজের ঈমানকে কঠোরভাবে গোপন রেখে বললেন, 'আমি কি জানি কে মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আর কে আবু বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম! তবে আপনার ছেলের মারধরের কথা শুনে আমি খুব দুঃখ পেয়েছি। উনাকে দেখার জন্য আমাকে নিয়ে চলুন।' তিনি উম্মুল খায়ের রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা উনার সাথে আসলেন। এসে যখন হযরত ছিদ্দীক্কে আকবর আলাইহিস সালাম উনার মর্মান্তিক অবস্থা দেখলেন, কান্নায় ভেংগে পড়লেন তিনি। কাফিররা উনাকে কিরূপ আঘাত করেছে! মহান আল্লাহ পাক তিনি তাদেরকে এর শাস্তি প্রদান করুন।

হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, 'বলেন তো, আমার মাহবুব উনার অবস্থা কি? তিনি কেমন আছেন?' উম্মে জামীল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা উনার মায়ের দিকে ইশারা করে বললেন, 'আপনার মা শুনে ফেলতে পারেন।' হযরত ছিদ্দীকে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, 'উনার বিষয়ে কোনো ভয় করবেন না।' উম্মে জামীল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা বললেন, 'হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ভালো আছেন এবং হযরত আরকাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার ঘরে আছেন।' হযরত ছিদ্দীকে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, 'মহান আল্লাহ পাক উনার কছম! আমি ঐ পর্যন্ত কিছুই খাবো না, পানও করবো না, যেই পর্যন্ত হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাক্ষাৎ মুবারক না হবে।' কসম শুনে উম্মুল খায়ের রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা আরও ব্যস্ত হয়ে পড়লেন। লোকে দেখে ফেলে কিনা, এই ভয়ে রাত্রি গভীর হওয়ার অপেক্ষা করতে লাগলেন। যখন লোক চলাচল বন্ধ হয়ে গেলো তখন তিনি হযরত ছিদ্দীকে আকবর আলাইহিস সালাম উনাকে নিয়ে হযরত আরকাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার ঘরে পৌঁছলেন।

প্রিয় নবী নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে দেখে হযরত ছিদ্দীকে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি জড়িয়ে ধরলেন। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনিও উনাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগলেন এবং সকল মুসলমানগণ কাঁদতে লাগলেন। হযরত ছিদ্দীকে আকবর আলাইহিস সালাম বললেন, 'ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! ইনি আমার মা। আমার মাকে ঈমানের দাওয়াত দিন

এবং হিদায়াতের জন্য দোয়া করুন।' হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ঈমানের দাওয়াত দিলেন ও দোয়া করলেন সঙ্গে সঙ্গে হযরত ছিদ্দীকে আকবর আলাইহিস সালাম উনার আম্মা ঈমান কবুল করে মুসলমান হলেন। সুবহানাল্লাহ!

বস্তুতঃ এটাই হলো প্রকৃত প্রেমিকের নিদর্শন। সুখ, শান্তি ও আরাম আয়েশের সময় মুহাব্বতের দাবীদার শত-সহস্র দেখা যায়। অথচ বিপদে ও মুছীবতের সময় যা বাকি থাকে সেটাই প্রকৃত মুহাব্বত। আমরাও যদি সত্যিকারেই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে মুহাব্বত করে থাকি তবে আমাদেরকে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের পথকে অনুসরণ করতে হবে।