‘ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ ব্যবহার সম্পর্কে এক চরম জাহিল, গণ্ডমূর্খ, মিথ্যাবাদী, মুনাফিক্ব, উলামায়ে সূ’, ধোঁকাবাজ এবং প্রতারকের জিহালতী, মূর্খতা, মিথ্যাচার, ধোঁকা, প্রতারণা ও অপব্যাখ্যার দলীলভিত্তিক দাঁতভাঙ্গা জবাব-২
ইতোপূর্বে এই প্রতিবন্ধী মার্কা, চরম জাহিল ও গণ্ডমূর্খলোকটা ইবারত পড়তে গিয়ে যে সকল ভুল করেছে, সেই ভুলগুলো আমরা আপনাদের নিকট তুলে ধরেছি। এখন আমরা তার ইহুদী কায়দায় ইবারত কারচুপী, ধোঁকা, প্রতারণা, অপব্যাখ্যা এবং হযরত ইমাম-মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের নামে মিথ্যা তোহমত দেয়ার বিষয়গুলো তুলে ধরবো। ইনশাআল্লাহ!
এই প্রতিবন্ধী মার্কা, চরম জাহিল ও গণ্ডমূর্খলোকটা ‘তাফসীরে ইবনে কাছীরের’ ইবারত দ্বারা হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা ব্যতীত অন্যদের ক্ষেত্রে পৃথকভাবে ‘ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ ব্যবহার করা নাজায়েয প্রমাণ করার চেষ্টা করেছে। অথচ আল্লামা ইবনে কাছীর রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি নিজেই হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা ব্যতীত অন্যদের ক্ষেত্রে পৃথকভাবে ‘ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ ব্যবহারের বিষয়টি গ্রহণ করেছেন। তারপর সে ইবারত কারচুপী করে, অন্যদের বক্তব্যকে আল্লামা হযরত ইবনে কাছীর রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নামে চালিয়ে দিয়েছে। না‘ঊযুবিল্লাহ!
এই প্রতিবন্ধী মার্কা, চরম জাহিল ও গণ্ডমূর্খ লোকটা সর্বপ্রথম ‘তাফসীরে ইবনে কাছীর’ থেকে নিম্নোক্ত ইবারতখানা পড়েছে-
وأما الصلاة على غير الأنبياء، فإن كانت على سبيل التبعية كما تقدم في الحديث: "اللهم، صل على محمد وآله وأزواجه وذريته"، فهذا جائز بالإجماع، وإنما وقع النزاع فيما إذا أفرد غير الأنبياء بالصلاة عليهم:
অর্র্থ: “(হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা ব্যতীত অন্যদের ক্ষেত্রে ছলাত পাঠ তথা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ব্যবহার করা যায় কি না- এ বিষয়ে হযরত ইমাম মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের বক্তব্য হচ্ছে-) যদি হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের অনুগামী করে অন্যদের ক্ষেত্রে ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ব্যবহার করা হয়, যেমন- মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফখানা পূর্বে আলোচনা করা হয়েছে,
اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَآلِهِ وَأَزْوَاجِهِ وَذُرِّيَّتِهِ
‘আয় মহান আল্লাহ পাক! আপনি ছলাত পাঠ করুন! নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতি, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের প্রতি এবং উনার সম্মানিত বংশধর উনাদের প্রতি।’
তাহলে তা সকলের ইজমা’ মতে জায়েয। আর হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা ব্যতীত অন্যদের ক্ষেত্রে পৃথকভাবে ছলাত পাঠ তথা ‘ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ ব্যবহারের বিষয়ে ইখতিলাফ রয়েছে।” (তাফসীরে ইবনে কাছীর ৬/৪৭৭)
এই প্রতিবন্ধী মার্কা, চরম জাহিল ও গণ্ডমূর্খলোকটা ‘তাফসীরে ইবনে কাছীর’ থেকে এতটুকু ইবারত পড়ে, তারপর সে আল্লামা হযরত ইমাম ইবনে কাছীর রহমতুল্লাহি আলাইহ তিনি যেই মত গ্রহণ করেছেন এবং যেই মতের স্বপক্ষে দলীল পেশ করেছেন, সেগুলো সে বাদ দিয়ে চলে গেছে। আর তা হচ্ছে-
فقال قائلون: يجوز ذلك، واحتجوا بقوله: { هُوَ الَّذِي يُصَلِّي عَلَيْكُمْ وَمَلائِكَتُهُ } ، وبقوله { أُولَئِكَ عَلَيْهِمْ صَلَوَاتٌ مِنْ رَبِّهِمْ وَرَحْمَةٌ } [البقرة: ১৫৭]، وبقوله تعالى { خُذْ مِنْ أَمْوَالِهِمْ صَدَقَةً تُطَهِّرُهُمْ وَتُزَكِّيهِمْ بِهَا (১) وَصَلِّ عَلَيْهِمْ إِنَّ صَلاتَكَ سَكَنٌ لَهُمْ } [التوبة: ১০৩]، وبحديث عبد الله بن أبي أوْفَى قال: كان رسول الله صلى الله عليه وسلم إذا أتاه قوم بصدقتهم قال: "اللهم صل عليهم". وأتاه أبي بصدقته فقال: "اللهم صل على آل أبي أوفى". أخرجاه في الصحيحين. وبحديث جابر: أن امرأته قالت: يا رسول الله، صل عَلَيَّ وعلى زوجي. فقال: "صلى الله عليكِ وعلى زوجك" (২) .
অর্থ: “একদল ইমাম-মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা বলেছেন, হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা ব্যতীত অন্যদের ক্ষেত্রে পৃথকভাবে ছলাত পাঠ তথা ‘ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ ব্যবহার করা জায়েয় রয়েছে। আর উনারা উনাদের মতের স্বপক্ষে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ থেকে নিম্নোক্ত দলীলসমূহ পেশ করেছেন-
(১)
هُوَ الَّذِي يُصَلِّي عَلَيْكُمْ وَمَلائِكَتُهُ
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার সমস্ত হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা তোমাদের প্রতি ছলাত পাঠ করেন।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আহ্যাব শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৪৩)
(২)
وَبِقَوْلِهِ أُولَئِكَ عَلَيْهِمْ صَلَوَاتٌ مِنْ رَبِّهِمْ وَرَحْمَةٌ
অর্থ: “(মু’মিন ব্যক্তি) উনাদের প্রতি উনাদের রব তা‘য়ালা মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে ছলাত এবং রহমত।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা বাক্বারাহ্ শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ১৫৭)
(৩)
خُذْ مِنْ أَمْوَالِهِمْ صَدَقَةً تُطَهِّرُهُمْ وَتُزَكِّيهِمْ بِهَا وَصَلِّ عَلَيْهِمْ إِنَّ صَلاتَكَ سَكَنٌ لَهُمْ
অর্থ: “আপনি তাদের মাল-সম্পদ থেকে ছদ্ক্বাহ্ গ্রহণ করুন। আর এর মাধ্যমে আপনি তাদেরকে পবিত্র করুন এবং তাযকিয়াহ্ করুন। আর তাদের প্রতি ছলাত পাঠ করুন অর্থাৎ তাদের মাগফিরাত কামনা করুন, তাদের জন্য দো‘আ করুন। নিশ্চয়ই আপনার ছলাত পাঠ তাদের জন্য ইতমিনানের কারণ।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা তাওবাহ্ শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ১০৩)
(৪)
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আবী আওফা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ দ্বারা দলীল পেশ করেন। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আবী আওফা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বলেন,
: كان رسول الله صلى الله عليه وسلم إذا أتاه قوم بصدقتهم قال: "اللهم صل عليهم". وأتاه أبي بصدقته فقال: "اللهم صل على آل أبي أوفى
অর্থ: “যখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট কোনো গোত্র উনাদের ছদ্ক্বাহ নিয়ে আসতেন, তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করতেন, اللهم صل عليهم “আয় আল্লাহ পাক! আপনি উনাদের উপর ছলাত পেশ করুন।’ একবার আমার সম্মানিত পিতা তিনি ছদক্বাহ্ নিয়ে আসলেন, তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, اللهم صل على آل أبي أوفى ‘আয় মহান আল্লাহ পাক! আপনি হযরত আবূ আওফা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার এবং উনার পরিবারের উপর ছলাত পেশ করুন।’ অর্থাৎ উনাদের জন্য তিনি দো‘আ মুবারক করলেন। সুবহানাল্লাহ! এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফখানা বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ-এ বর্ণিত রয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
(৫)
তারপর হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ দ্বারা দলীল পেশ করেন-
أن امرأته قالت: يا رسول الله، صل عَلَيَّ وعلى زوجي. فقال: "صلى الله عليكِ وعلى زوجك
অর্থ: ‘একবার হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার আহলিয়াহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট আরজী পেশ করলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! দয়া করে আপনি আমার প্রতি এবং আমার সম্মানিত আহাল উনার প্রতি অর্থাৎ আমাদের উভয়ের প্রতি ছলাত পাঠ করুন। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনার প্রতি এবং আপনার আহাল উনার প্রতি অর্থাৎ আপনাদের উভয়ের প্রতি ছলাত পেশ করুন। অর্থাৎ তিনি উনাদের উভয়ের জন্য সম্মানিত দো‘আ মুবারক করলেন।” সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে ইবনে কাছীর ৬/৪৭৮)
দেখুন! এখানে হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা ব্যতীত অন্যদের ক্ষেত্রে পৃথকভাবে ছলাত পাঠ করা তথা ‘ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ ব্যবহার জায়েয হওয়ার বিষয়টি অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ থেকে দলীল-আদিল্লাহ মুবারক দ্বারা ছাবিত করে দেয়া হয়েছে। সুবহানাল্লাহ! এ বিষয়ে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ থেকে আরো বহু অকাট্য দলীল-আদিল্লাহ্ মওজূদ রয়েছে। আমরা পরবর্তীতে তা উল্লেখ করবো। ইনশাআল্লাহ!
এ মতটাই আল্লামা হযরত ইমাম ইবনে কাছীর রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি গ্রহণ করেছেন এবং তিনি বলেছেন,
وهذا مسلك حسن.
অর্থ: “এটা একটি উত্তম পন্থা।” সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে ইবনে কাছীর ৬/৪৭৮)
এই প্রতিবন্ধী মার্কা, চরম জাহিল ও গণ্ডমূর্খলোকটা আল্লামা হযরত ইমাম ইবনে কাছীর রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি যেই মতের পক্ষে, সেই মতটি বাদ দিয়ে জুমহূর উলামায়ে কিরামের মতটি তুলে ধরেছে এবং তিনি যে স্পষ্টভাবে ‘ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ ব্যবহারের পক্ষ অবলম্বন করেছেন, সেই ইবারতের অর্থটুকু না তুলে, সে শ্রোতাদেরকে ধোঁকা দিয়েছে এবং খিয়ানত করেছে। না‘ঊযুবিল্লাহ! অথচ প্রতারকটা তার আলোচনার মাধ্যমে এটাই প্রমাণ করতে চেয়েছে যে, আল্লামা হযরত ইমাম ইবনে কাছীর রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা ব্যতীত অন্যদের ক্ষেত্রে পৃথকভাবে ছলাত পাঠ করা তথা ‘ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ ব্যবহার জায়েয হওয়ার বিপক্ষে। না‘ঊযুবিল্লাহ! দেখুন, সে কতো বড় জালিয়াত এবং প্রতারক। সে নিজের মত ছাবিত করতে যেয়ে কিরূপ জালিয়াতী, প্রতারণা ও ধোঁকার আশ্রয় নিয়েছে। না‘ঊযুবিল্লাহ!
জুমহূর উলামায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা বলেছেন যে, হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা ব্যতীত অন্যদের ক্ষেত্রে পৃথকভাবে ছলাত পাঠ করা তথা ‘ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ ব্যবহার করা জায়েয নেই। উনাদের যুক্তি হচ্ছে-
لِأَنَّ هَذَا قَدْ صَارَ شِعَارًا لِلْأَنْبِيَاءِ إِذَا ذُكِرُوا فَلَا يَلْحَقُ بِهِمْ غَيْرُهُمْ
অর্থ: “কেননা এটা হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের শি‘য়ারে পরিণত হয়ে যায়। কাজেই উনাদের সাথে অন্য কারো সংযুক্ত করা যাবে না।” (তাফসীরে ইবনে কাছীর ৬/৪৭৮)
আল্লামা হযরত ইমাম ইবনে কাছীর রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি জুমহূর উলামায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের মতটি এভাবে খ-ন করে দিয়েছেন যে,
وَحَمَلُوا مَا وَرَدَ فِي ذَلِكَ مِنَ الْكِتَابِ وَالسُّنَّةِ عَلَى الدُّعَاءِ لَهُمْ؛ وَلِهَذَا لَمْ يَثْبُتْ شِعَارًا لِآلِ أَبِي أَوْفَى، وَلَا لِجَابِرٍ وَامْرَأَتِهِ. وَهَذَا مَسْلَكٌ حَسَنٌ.
‘(যে সকল ইমাম-মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা ব্যতীত অন্যদের ক্ষেত্রে পৃথকভাবে ছলাত পাঠ করা তথা ‘ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ ব্যবহার করা জায়েয বলেছেন,) উনারা হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা ব্যতীত অন্যদের ক্ষেত্রে পৃথকভাবে ছলাত পাঠ করা তথা ‘ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ ব্যবহার করা জায়েয হওয়ার স্বপক্ষে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ থেকে যে সকল দলীলসমূহ বর্ণিত হয়েছে, সেখানে ছলাত দ্বারা দো‘আ অর্থ নিয়েছেন। আর (এ কারণে তা শিয়ার ছাবিত হয় না) এ কারণে হযরত আবূ আওফা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার জন্য এবং হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার এবং উনার আহলিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা উনার জন্য অর্থাৎ উনাদের জন্য যে ছলাত পাঠ করা হয়েছে, সেটি শি‘য়ার ছাবিত হয়নি। (অর্থাৎ ছলাত উনার অর্থ দো‘আ গ্রহণ করলে, হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা ব্যতীত অন্যদেরকে ‘ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ বললে, এটা হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের শি‘য়ারে পরিণত হয় না। কাজেই এটা জায়েয রয়েছে।) সুবহানাল্লাহ! وَهَذَا مَسْلَكٌ حَسَنٌ. আর এটা একটি উত্তম পন্থা।” সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে ইবনে কাছীর ৬/৪৭৮)
জুমহূর উলামায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা বলেছেন যে, হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা ব্যতীত অন্যদের ক্ষেত্রে পৃথকভাবে ছলাত পাঠ করা তথা ‘ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ ব্যবহার করা জায়েয নেই। উনাদের যুক্তি হচ্ছে- ‘কেননা এটা হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের শি‘য়ারে পরিণত হয়ে যায়। কাজেই উনাদের সাথে অন্য কারো সংযুক্ত করা যাবে না।’
এখানে আল্লামা হযরত ইমাম ইবনে কাছীর রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি হযরত জুমহূর উলামায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের মতকে স্পষ্টভাবে খ-ন করে দিয়েছেন এভাবে যে, ‘হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা ব্যতীত অন্যদের ক্ষেত্রে পৃথকভাবে ছলাত পাঠ করা তথা ‘ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ ব্যবহার করা জায়েয হওয়ার’ বিষয়ে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ থেকে যে দলীলসমূহ পেশ করা হয়েছে, সেখানে ছলাত দ্বারা দো‘আ অর্থ নেয়া হয়েছে। আর এ কারণে এটা শি‘য়ার ছাবিত হয় না অর্থাৎ অন্যদেরকে ‘ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ বললে, এটা হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের শি‘য়ারে পরিণত হয় না। তাহলে জুমহূর উলামায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের আপত্তি এখানে শেষ হয়ে গেলো। কাজেই হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা ব্যতীত অন্যদের ক্ষেত্রে পৃথকভাবে ছলাত পাঠ করা তথা ‘ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ ব্যবহার করা জায়েয। তারপর আল্লামা হযরত ইবনে কাছীর রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি স্পষ্টভাবে বলেছেন, وَهَذَا مَسْلَكٌ حَسَنٌ. আর এটা একটি উত্তম পন্থা। সুবহানাল্লাহ!
পাঠক! দেখুন, এই প্রতিবন্ধী মার্কা, চরম জাহিল ও গণ্ডমূর্খলোকটা কতো বড় জালিয়াত, আল্লামা হযরত ইমাম ইবনে কাছীর রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি নিজেই হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা ব্যতীত অন্যদের ক্ষেত্রে পৃথকভাবে ছলাত পাঠ করা তথা ‘ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ ব্যবহার করা জায়েয হওয়ার পক্ষ নিয়েছেন। অথচ সে আল্লামা হযরত ইবনে কাছীর রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নামে মিথ্যা তোহমত দিয়েছে, অপবাদ দিয়েছে যে, তিনি নাকি বলেছেন, যারা হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা ব্যতীত অন্যদের প্রতি পৃথকভাবে ‘ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ ব্যবহার করবে, আমরা তাদের অনুরসণ করবো না। না‘ঊযুবিল্লাহ!
তারপর সে অন্য একদলের মতকে আল্লামা হযরত ইবনে কাছীর রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নামে চালিয়ে দিয়েছে। না‘ঊযুবিল্লাহ!
আল্লামা হযরত ইবনে কাছীর রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি স্পষ্টভাবেই উল্লেখ করেছেন,
وَقَالَ آخَرُونَ لَا يَجُوزُ ذَلِكَ؛ لِأَنَّ الصَّلَاةَ عَلَى غَيْرِ الْأَنْبِيَاءِ قَدْ صَارَتْ مِنْ شِعَارِ أَهْلِ الْأَهْوَاءِ، يُصَلُّونَ عَلَى مَنْ يَعْتَقِدُونَ فِيهِمْ، فَلَا يُقْتَدَى بِهِمْ فِي ذَلِكَ، وَاللَّهُ أَعْلَمُ.
অর্থ: “অপর একদল বলেছে, হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা ব্যতীত অন্যদের ক্ষেত্রে পৃথকভাবে ছলাত পাঠ করা তথা ‘ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ ব্যবহার করা জায়েয নেই। কারণ এটা কুপ্রবৃত্তির অনুসারীদের নিদর্শনে পরিণত হয়। তারা তাদের শ্রদ্ধাভাজনদের প্রতি ছলাত পাঠ করে থাকে। তাই তাদেরকে অনুসরণ করা যাবে না। (এ বিষয়ে আল্লামা হযরত ইবনে কাছীর রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেছেন,) এ বিষয়ে মহান আল্লাহ পাক তিনি অধিক ভালো জানেন।” (তাফসীরে ইবনে কাছীর ৬/৪৭৮)
এখানে আল্লামা হযরত ইমাম ইবনে কাছীর রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি وَاللَّهُ أَعْلَمُ ‘এ বিষয়ে মহান আল্লাহ পাক তিনি অধিক ভালো জানেন।’ এ কথা বলে, এটাই স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, তারা যে মত পেশ করেছে- ‘হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা ব্যতীত অন্যদের ক্ষেত্রে পৃথকভাবে ছলাত পাঠ তথা ‘ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ ব্যবহার করা জায়েয নেই। কারণ এটা কুপ্রবৃত্তির অনুসারীদের নিদর্শনে পরিণত হয়। তারা তাদের শ্রদ্ধাভাজনদের প্রতি ছলাত পাঠ করে থাকে। তাই তাদেরকে অনুসরণ করা যাবে না।’
এই মতটা আল্লামা হযরত ইবনে কাছীর রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি গ্রহণ করেননি।
অথচ, এই চরম জালিয়াত, প্রতারকটা তার আলোচনায়- আল্লামা হযরত ইবনে কাছীর রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নামে মিথ্যাচার করেছে, তোহমত দিয়েছে। সে বলেছে, তিনি নাকি বলেছেন, ‘হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা ব্যতীত অন্যদের ক্ষেত্রে পৃথকভাবে ছলাত পাঠ করা তথা ‘ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ ব্যবহার করা জায়েয নেই। কারণ এটা কুপ্রবৃত্তির অনুসারীদের নিদর্শনে পরিণত হয়। তারা তাদের শ্রদ্ধাভাজনদের প্রতি ছলাত পাঠ করে থাকে। কাজেই আমরা তাদের ফলো করবো না, অনুসরণ করবো না।’ না‘ঊযুবিল্লাহ!
সে তার আলোচনায় আলোচ্য ইবারতে উল্লেখিত فَلَا يُقْتَدَى ‘তাই তাদেরকে অনুসরণ করা যাবে না’ গইবের ছিগাহ্ থেকে মুতাকাল্লিমের অর্থ তুলে বলেছে, ‘কাজেই আমরা তাদের ফলো করবো না, অনুসরণ করবো না। আল্লামা হযরত ইবনে কাছীর রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি এটা বলেছেন।’ না‘ঊযুবিল্লাহ!
তাহলে আপনারা দেখুন! সে কত বড় মিথ্যুক, ধোঁকাবাজ, প্রতারক এবং জালিয়াত যে, সে নিজের মতকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য আল্লামা হযরত ইমাম ইবনে কাছীর রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নামে মিথ্যা তোহমত দিয়েছে, অপবাদ দিয়েছে এবং ইহুদী কায়দায় ইবারত কারচুপী করেছে। না‘ঊযুবিল্লাহ!
এ শ্রেণীর ধোঁকাবাজদের ব্যাপারে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে,
مَنْ غَشَّ فَلَيْسَ مِنَّا
অর্থ: “যে ধোঁকাবাজী করে, সে আমার উম্মত নয়।” না‘ঊযুবিল্লাহ! (তিরমিযী শরীফ- মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ নং ১৩১৫)
আর যারা মিথ্যা কথা বলে এবং হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের নামে অপবাদ দেয়, তাদের উপর মহান আল্লাহ পাক উনার লা’নত। না‘ঊযুবিল্লাহ! এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
لَعْنَتَ اللهِ عَلَى الْكٰذِبِيْنَ
অর্থ: “মিথ্যাবাদীদের উপর মহান আল্লাহ পাক উনার লা’নত।” না‘ঊযুবিল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আল ইমরান শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৬১)
সুতরাং এই প্রতারকটা একদিকে চরম জালিয়াত এবং ইহুদী কায়দায় ইবরাত কারচুপীকারী। অন্যদিকে সে হচ্ছে-
১. ধোঁকাবাজ,
২. মিথ্যাবাদী,
৩. খিয়ানতকারী এবং
৪. ওয়াদাখিলাফকারী: কেননা সে বলেছিলো যে, ‘আমাদের ইমামগণ যা বলেছেন, তা উল্লেখ করতে হবে। অন্য কারো কথা উল্লেখ করা যাবে না। নিজেদের ইমামদের ক্বওল উল্লেখ করতে হবে, যেহেতু আমরা সবাই হানাফী। হানাফী মাযহাবের রায় উল্লেখ করতে হবে।’ অথচ সে নিজেই আল্লামা হযরত ইবনে কাছীর রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নামে মিথ্যা তোহমত দিয়ে উনার ক্বওল দ্বারা ‘হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা ব্যতীত অন্যদের ক্ষেত্রে পৃথকভাবে ছলাত পাঠ করা তথা ‘ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ ব্যবহার করা না জায়েয প্রমাণ করার অপচেষ্টা করেছে। কিন্তু আল্লামা ইবনে কাছীর রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি হানাফী ছিলেন না। তারপর সে হযরত ‘উমর ইবনে আব্দুল ‘আযীয রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ক্বওল শরীফ উনার অপব্যাখা করে উনার ক্বওল শরীফ দ্বারাও দলীল দেয়ার ব্যর্থ চেষ্টা করেছে। অথচ তিনিও হানাফী ছিলেন না।
অর্থাৎ এই প্রতারকটা নিঃসন্দেহে কাট্টা মুনাফিক্ব। কেননা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عن أبي هريرة رضى الله تعالى عنه ، عن النبي صلى الله عليه وسلم قال آيَةُ الْمُنَافِقِ ثَلاَثٌ إِذَا حَدَّثَ كَذَبَ وَإِذَا وَعَدَ أَخْلَفَ وَإِذَا ائْتُمِنَ خَانَ.
অর্থ: “হযরত আবূ হুরায়রাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মুনাফিক্বদের নির্দশন হচ্ছে তিনটি। এক. কথা বললে মিথ্যা বলে, দুই. ওয়াদা করলে খিলাফ করে এবং তিন. আমানত রাখলে খিয়ানত করে।” না‘ঊযুবিল্লাহ! (বুখারী, মুসলিম, তিরমিযী, আহমদ, শুয়াবুল ঈমান, আস সুনানুল কুবরা লিন নাসায়ী, মা’রিফাতুস সুনান ওয়াল আছার, মিশকাত ইত্যাদি)
অন্যদিকে মুজাদ্দিদে আ’যম, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আছ ছমাদ মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আখাছ্ছুল খাছ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ উনাদের অন্তর্ভুক্ত। আর যারা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের বিরোধীতা করে, উনাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে তারা প্রত্যেকেই মুনাফিক্ব। এই সম্পর্কে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে এসেছে,
عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ رضى الله تعالى عنه قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ أَبْغَضَنَا أَهْلَ الْبَيْتِ فَهُوَ مُنَافِقٌ.
অর্থ: “হযরত আবূ সাঈদ খুদরী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যারা আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের বিরোধীতা করে, উনাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে, তারা মুনাফিক্ব।” না‘ঊযুবিল্লাহ! (তাফসীরে র্দুরে মানছূর ১৩/১৫১, ফাদ্বায়িলু ছাহাবাহ লিআহমদ ইবনে হাম্বল ২/৬৬১, আর রিয়াদুন নাদ্বরা ১/৩৬২, যাখাইরুল ‘উক্ববা ১/১৮)
অন্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ মুবারক উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
مَنْ أَبْغَضَ أَهْلَ الْبَيْتِ فَهُوَ مُنَافِقٌ.
অর্থ: “যে ব্যক্তি আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করলো, উনাদের বিরোধীতা করলো সে মুনাফিক্ব।” ( যাখাইরুল ‘উক্ববা লিমুহিব্বে ত্ববারী ১/১৮, জামিউল আহাদীছ লিস সুয়ীত্বী ৪১/৩৬০, আছ ছওয়াইকুল মুহ্রিক্বাহ্ লিইবনে হাজার হাইছামী ২/৫০৩, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১১/৮, দায়লামী শরীফ ইত্যাদি)
অন্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ মুবারক উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حضرت عَلِيٍّ عليه السلام قَالَ قَالَ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ لَمْ يَعْرِفْ حَقَّ عِتْرَتِي وَالْأَنْصَارِ وَالْعَرَبِ فَهُوَ لِإِحْدَى ثَلَاثٍ: إِمَّا مُنَافِقٌ، وَإِمَّا لِزَنْيَةٍ، وَإِمَّا امْرُؤٌ حَمَلَتْ بِهِ أُمُّهُ فِي غَيْرِ طُهْرٍ ".
অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নূরে মুজাসসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের, হযরত আনছার উনাদের এবং আরব উনাদের হক্ব মুবারক বুঝলো না, উনাদের সম্মান ইজ্জত মুবারক বুঝলো না, উনাদের সম্মান করলো না, উনাদের বিরোধীতা করলো, সেই ব্যক্তির তিনটির যে কোন একটি অবস্থাÑ হয় সে মুনাফিক্ব, না হয় অবৈধ সন্তান অথবা তার মা তাকে গাইরে তুহুর তথা নিষিদ্ধ সময় গর্ভে ধারণ করেছে।” (দায়লামী শরীফ ৩/৬২৬, আছ ছওয়াইকুল মুহ্রিক্বাহ্ ২/৪৯৯, জামিউল আহাদীছ লিস সুয়ূত্বী ২১/৪২০, জামউল জাওয়ামি’, শুয়াবুল ঈমান লিল বাইহাক্বী ৩/১৬২, আল মাক্বাছিদুল হাসানাহ ১/৬৪, যাখীরাতুল হুফ্ফায ইত্যাদি)
অন্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ মুবারক উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عن جابر بن عبد الله رضى الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم لايـحبنا أهل البيت إلا مؤمن تقى ولا يبغضنا إلا منافق شقى.
অর্থ: “হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, একমাত্র যিনি পরহেজগার, দ্বীনদার, মোত্তাক্বী মু’মিন তিনিই শুধু আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করেন আর একমাত্র যে দুর্ভাগা, অপরাধী, দুষকর্মা মুনাফিক্ব সেই কেবল আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের বিরোধীতা করে।” না‘ঊযুবিল্লাহ! (যাখাইরুল ‘উক্ববা লিমুহিব্বে ত্ববারী ১/১৮, আছ ছওয়াইকুল মুহরিক্বাহ লিইবনে হাজার হাইছাইমী ২/৫০০ ও ৬৬৩)
অন্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ মুবারক উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عن حضرت جابر بن عبد الله الانصاري رضى الله تعالى عنه قال خطبنا رسول الله صلى الله عليه وسلم فسمعته وهو يقول يا أيها الناس من أبغضنا اهل البيت حشره الله يوم القيامة يهوديا فقلت يا رسول الله وان صام وصلى قال وان صام وصلى وزعم انه مسلم.
অর্থ: “হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ আনছারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি একদা আমাদের উদ্দেশ্যে খুতবা মুবারক দিলেন এবং বলতে থাকলেন যে, হে লোক সকল! যারা আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করলো, উনাদের বিরোধীতা করলো, তাদের হাশর-নশর হবে ইহুদীদের সাথে। আমি আরজ করলাম, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! যদি তারা রোযা রাখে এবং নামায পড়ে? উত্তরে তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, হ্যাঁ! যদিও তারা রোযা রাখে, নামায পড়ে এবং দাবী করে যে, তারা মুসলমান। (তা সত্ত্বেও মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের বিরোধীতা করার কারণে, উনাদের শত্রু হওয়ার কারণে যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি তাদের সমস্ত ইবাদত বিনষ্ট করে দিয়ে তাদেরকে ক্বিয়ামতের দিন ইহুদীদের দলভুক্ত করে উঠাবেন।)” না‘ঊযুবিল্লাহ! (আল মু’জামুল আওসাত্ব লিতত্ববারণী ৪/২১২, জামিউল আহাদীছ লিস সুয়ূত্বী ১০/৪৭৫, জামউল জাওয়ামি‘ লিস সুয়ূত্বী, মাজমাউয যাওয়াইদ লিল হাইছামী ৯/৭১২ তারীখে জুরজান ৩৬৯ পৃ.)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَوْ اَنَّ رَجُلًا صَفَّ بَيْنَ الرُّكْنِ وَالْـمَقَامِ فَصَلّٰى وَصَامَ ثُـمَّ لَقِىَ اللهَ وَهُوَ مُبْغِضٌ لِّاَهْلِ بَيْتِ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ دَخَلَ النَّارَ.
অর্থ: “হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, কোন ব্যক্তি যদি সম্মানিত রুকনে ইয়ামেন এবং সম্মানিত মাক্বামে ইবরাহীম শরীফ উনাদের মধ্যবর্তী স্থানে সারিবদ্ধ হয়ে থাকে। অতঃপর নামায পড়ে এবং রোযা রাখে। কিন্তু এই অবস্থায় তার মৃত্যু হয় যে, সে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে, তাহলে সে অবশ্যই জাহান্নামে প্রবেশ করবে।” না‘ঊযুবিল্লাহ! (যাখাইরুল ‘উক্ববা লিমুহিব্বে ত্ববারী ১/১৮, খ¦ছায়িছুল কুবরা ২/৪৬৫)
আর এই শ্রেণীর মুনাফিক্বদের ভয়াবহ্ কঠিন পরিণতি সম্পর্কে যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন,
وَعَدَ اللَّهُ الْمُنَافِقِينَ وَالْمُنَافِقَاتِ وَالْكُفَّارَ نَارَ جَهَنَّمَ خَالِدِينَ فِيهَا هِيَ حَسْبُهُمْ وَلَعَنَهُمُ اللَّهُ وَلَـهُمْ عَذَابٌ مُقِيمٌ.
অর্থ: “যিনি খলিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ওয়াদা মুবারক করেছেন যে, তিনি মুনাফিক্ব পুরুষ, মুনাফিক্ব নারী এবং কাফিরদেরকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন। তারা সেখানে চিরস্থায়ীভাবে থাকবে। সেটাই তাদের জন্য যথেষ্ট। আর মহান আল্লাহ পাক তিনি তাদের প্রতি লা’নত বর্ষণ করেছেন এবং তাদের জন্য রয়েছে স্থায়ী আযাব।” না‘ঊযুবিল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা তাওবা শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৬৮)
অন্য সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
إِنَّ اللَّهَ جَامِعُ الْمُنَافِقِينَ وَالْكَافِرِينَ فِي جَهَنَّمَ جَمِيعًا
অর্থ: “নিশ্চয়ই যিনি খালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি দোযখের মধ্যে মুনাফিক্ব ও কাফিরদেরকে একত্রিত করবেন।” না‘ঊযুবিল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা নিসা শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ১৪০)
অর্থাৎ এসব লোক কুফরী ও মুনাফেক্বীর কারণে মৃত্যুর পর জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে। উক্ত সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি মুনাফিক্বদের কথা কাফিরদের পূর্বে উল্লেখ করেছেন, এর কারণ হচ্ছে যে, এরা কাফিরদের চাইতেও লক্ষ-কোটি গুণ জঘন্য ও নিকৃষ্ট। আর এদের সম্পর্কে অন্যত্র ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
إِنَّ الْمُنَافِقِينَ فِي الدَّرْكِ الْأَسْفَلِ مِنَ النَّارِ.
অর্থ: “নিঃসন্দেহে মুনাফিক্বরা জাহান্নামের সর্ব নিম্নস্তরে অবস্থান করবে।” না‘ঊযুবিল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা নিসা শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ১৪৫)
মূল কথা হলো, ‘তাফসীরে ইবনে কাছীরে ৬ষ্ঠ খণ্ডের ৪৭৭ থেকে ৪৭৮ নং পৃষ্ঠায়’ আল্লামা হযরত ইমাম ইবনে কাছীর রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি “হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা ব্যতীত অন্যদের ক্ষেত্রে ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ব্যবহার করা জায়েয কিনা- এ বিষয়ে ৩টি মত উল্লেখ করেছেন-
(১) প্রথমে তিনি যে সকল ইমাম মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা ‘হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা ব্যতীত অন্যদের ক্ষেত্রে ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ব্যবহার করা জায়েয বলেছেন’ উনাদের মত উল্লেখ করেছেন এবং উনাদের মতের স্বপক্ষে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ থেকে উনারা যে সকল দলীল-আদিল্লাহসমূহ পেশ করেছেন তা উল্লেখ করেছেন। মূলত, আল্লামা হযরত ইমাম ইবনে কাছীর রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি নিজেই এই মত গ্রহণ করেছেন।
(২) তারপর তিনি জুমহূর উলামায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের মত উল্লেখ করেছেন। উনারা বলেছেন যে, হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা ব্যতীত অন্যদের ক্ষেত্রে পৃথকভাবে ছলাত পাঠ তথা ‘ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ ব্যবহার করা জায়েয নেই। উনাদের যুক্তি হচ্ছে- ‘কেননা এটা হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের শি‘য়ারে পরিণত হয়ে যায়। কাজেই উনাদের সাথে অন্য কারো সংযুক্ত করা যাবে না।’ আল্লামা হযরত ইমাম ইবনে কাছীর রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি জুমহূর উলামায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের এই যুক্তি দলীল দ্বারা খ-ন করে দিয়েছেন এবং বলেছেন ‘যে সকল ইমাম-মুজতাহিদ উনারা হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা ব্যতীত অন্যদের ক্ষেত্রে পৃথকভাবে ছলাত পাঠ তথা ‘ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ ব্যবহার করা জায়েয বলেছেন,) উনারা হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা ব্যতীত অন্যদের ক্ষেত্রে পৃথকভাবে ছলাত পাঠ তথা ‘ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ ব্যবহার করা জায়েয হওয়ার স্বপক্ষে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ থেকে যে সকল দলীলসমূহ বর্ণিত হয়েছে, সেখানে ছলাত দ্বারা দো‘আ অর্থ নিয়েছেন। যার কারণে এটা শিয়ার ছাবিত হয় না। আর এ কারণে হযরত আবূ আওফা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার এবং হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার এবং উনার আহলিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা উনার জন্য অর্থাৎ উনাদের জন্য যে ছলাত পাঠ করা হয়েছে, সেটি শি‘য়ার ছাবিত হয়নি। অর্থাৎ ছলাত উনার অর্থ দোআ গ্রহণ করলে, হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা ব্যতিত অন্যদেরকে ‘ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ বললে, এটা হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের শি‘য়ারে পরিণত হয় না। (কাজেই এটা জায়েয রয়েছে।) সুবহানাল্লাহ!
আর এটা হচ্ছে- উত্তম একটি পন্থা। সুবানাল্লাহ!
(৩) তৃতীয়ত তিনি অপর একটি দলের মত উল্লেখ করেছেন। তারপর তিনি বলেছেন, ‘এ বিষয়ে মহান আল্লাহ পাক তিনি ভালো জানেন।’
সুতরাং এখান থেকে দিবালোকের ন্যায় অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়ে গেলো যে, আল্লামা হযরত ইমাম ইবনে কাছীর রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ‘হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা ব্যতীত অন্যদের ক্ষেত্রে ‘ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ ব্যবহার জায়েয হওয়ার পক্ষ নিয়েছেন। তিনি ‘হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা ব্যতীত অন্যদের ক্ষেত্রে ‘ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ ব্যবহার করা নাজায়েয বলেননি।
এই প্রতারকটা আল্লামা ইমাম ইবনে কাছীর রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নামে মিথ্যা তোহমত ও অপবাদ দিয়েছে। কাজেই, এই প্রতারকটা যেই কিতাব থেকে দলীল দিয়েছে, সেই কিতাব দ্বারাই প্রমাণিত হলো যে, হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা ব্যতীত অন্যদের ক্ষেত্রে স্বতন্ত্রভাবে ‘ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ ব্যবহার করা জায়েয। সুবহানাল্লাহ!
পিডিএফ লিংক - https://drive.google.com/open?id=1n-BD-ECaKMYbdoZPkQd9vYIdvcIL2kWa