একজন কুতুবুজ্জামান
উনার দিদারে মাওলা উনার দিকে প্রস্থান-
হযরত সাইয়্যিদাতুনা আহমদ জাহানারা বেগম আলাইহাস
সালাম উনার অনুপম পরহেযগারী মুবারক উনার পরিচয়-
মাদারজাদ ওলী, আওলাদে রাসূল,
হযরত সাইয়্যিদাতুনা আহমদ জাহানারা বেগম , আলহাসানী, ওয়াল হুসাইনী, ওয়াল কুরাঈশী আলাইহাস সালাম “বাড়ী মজলিশ” গ্রামে বুযুর্গ
পিতার কাছে দ্বীন ইসলাম-এর সার্বিক ইল্ম ও তাসাউফের দীক্ষায় ব্যুৎপত্তিলাভ করেন। পরহেযগারীতে
অভ্যস্ততা উনার নিত্যদিনের বৈশিষ্ট্য হয়ে দাঁড়ায়। অল্প বয়সেই উনার দৃঢ় প্রত্যয় জন্মে
যে, পার্থিব ও পারলৌকিক
সৌভাগ্যলাভের ক্ষেত্রে তাকওয়া অবলম্বন ছাড়া অন্য কোন বিকল্প পথই মানুষের জন্য আল্লাহ্
পাক সৃষ্টি করেননি। চিরস্থায়ী সৌভাগ্যের জন্য পরিপূর্ণরূপে আল্লাহ্ পাক উনার প্রতি
একান্তভাবে নিবেদিত হওয়া অপরিহার্য। ইবাদত-বন্দেগীর পরিণত স্তরই হলো সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন,
খতামুন্নাবিয়্যীন,
হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কর্তৃক প্রণীত শরিয়তের
পাবন্দ হওয়া এবং সুন্নাত মুবারক অনুসরণে অভ্যস্ত হওয়া। প্রণীত শরিয়তের নীতি নির্ধারণ
করে হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক আচার-আচরণ, অভ্যাস, উচ্চারণ ও ইবাদত-বন্দেগীসহ
যাবতীয় বিষয়াবলীর মাহাত্ম্যপূর্ণ ও সৌন্দর্যমন্ডিত রীতির বাস্তব নমুনা দেখিয়েছেন। কোন
আমল হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অভ্যাসগত মনে করে পরিহার করলে আল্লাহ্
পাক উনার সন্তুষ্টির অবারিত পথ রুদ্ধ হয়ে যায়। কারণ উনার কোন কাজই আপন ইচ্ছা অথবা অভ্যাসপ্রসূত
নয়, সবই আল্লাহ্ পাক
কর্তৃক নির্দেশিত ও নিয়ন্ত্রিত। হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আমলের
কোনটি আমাদের জন্য ফরজ, কোনটি ওয়াজিব, কোনটি সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ্,
কোনটি নফল, সুন্নাতে যায়েদা, মুস্তাহাব। বন্দেগীর এই শ্রেণীভিত্তিক বিভাজন কোন ইবাদতেরই গুরুত্ব
ও গভীরতা হাল্কা অথবা হ্রাস করেনা। আল্লাহ্ পাক উনার ইচ্ছা অনুযায়ী উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম কর্তৃক শ্রেণীবিন্যাসকৃত এসব ইবাদত পালনে পদ্ধতিগত ব্যতিক্রম থাকলেও, এর প্রতিটিতেই একই মাত্রার পূর্ণ হুজুরী (মনোনিবেশ) আবশ্যক।
সুন্নাতের তাৎপর্য ও গুরুত্ব বুঝাতে বলা হয়ে থাকে,
হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ইবাদত ও আমলের
সবগুলোই উম্মতের জন্য সুন্নাত। কিন্তু শ্রেণীবিন্যাসকৃত সুন্নাত মুবারক গুলো ফরজ নয়।
হযরত সাইয়্যিদাতুনা
আহমদ জাহানারা বেগম আলাইহাস সালাম জন্ম সূত্রেই তীক্ষ মেধা ও সূক্ষ“
সমঝ লাভ করেন। মাদারজাত ওলী হিসেবে ছোট কালেই তিনি আল্লাহ্ পাক
ও উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি আনুগত্যপূর্ণ মানসিকতায় তাসাউফের
হাক্বীক্বত (মূল তত্ত্ব) উপলব্ধি করতে সক্ষম হন। বুযুর্গ পিতার কাছে তিনি শিক্ষালাভ
করেন যে, গায়রুল্লাহ্ থেকে
দৃষ্টি ফিরিয়ে আল্লাহ্ পাক উনার প্রতি মনোযোগী না হলে ইহকাল ও পরকাল বরবাদ হয়ে যায়।
আর আল্লাহ্ পাক এবং উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুহব্বতে অটল না
থাকলে আল্লাহ্ পাক উনার প্রতি দৃষ্টি নিবদ্ধ মনোযোগ আচ্ছন্ন হয়ে যায় এবং ইবাদত-বন্দেগীসহ
জীবনের সকল আয়াসসাধ্য আয়োজন নিষ্ফল হয়ে পড়ে। এই নিগূঢ় তত্ত্ব অনুধাবনে তিনি পরিপূর্ণরূপে
আল্লাহ্ পাক ও উনার রাসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আদেশ পালনে মনোযোগী
ও অভ্যস্ত হয়ে পড়েন। এই অবিরাম অভ্যস্ততা উনাকে আল্লাহ্ পাক ও হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পূর্ণ সন্তুষ্টি অর্জনের কাঙ্খিত মন্জিলে পৌঁছে দেয়।
নিসবতে আযীম মুবারক-
ক্রমান্বয়ে বসয়
মুবারক বেড়ে ঊনিশে দাঁড়ায়। এখন শাদী মুবারক দেয়া প্রয়োজন। দুনিয়া বিমুখ এই মাদারজাত
ওলীর জন্য একজন উপযুক্ত পাত্র দরকার। পিতা-মাতার আরজু একজন বুযুর্গ ব্যক্তি খুঁজে পাওয়া।
আল্লাহ্ পাক উনাদের আরজু পূরণ করেন। একই উর্দ্ধতন পুরুষের মুবারক বংশজাত কুতুবুজ্জামান, আরিফবিল্লাহ,
আওলাদে রাসূল হযরতুল আল্লামা,
শাহ সুফী, সাইয়্যিদ মুহম্মদ
মুখলেছুর রহমান, আল হাসানী, ওয়াল হুসাইনী,
ওয়াল কুরাঈশী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার সাথে ১৯৩৬ সালে উনার
নিসবতে আযীম মুবারক অনুষ্ঠিত
হয়। আল্লাহ্ পাক উনার বিধানই এমন যে,
তিনি উনার মনোনীত ইসলাম ধর্ম আবাদের জন্য পরিণয়ণসূত্রে বুযুর্গ
পাত্র-পাত্রীর সম্মিলন ঘটিয়ে থাকেন। এই মহামিলনের মাধ্যমে আল্লাহ্ পাক উনার মাহবুব
ওলীগণকে জমিনে পাঠিয়ে লক্ষ্যবিচ্যূত মানুষকে হিদায়েত দানে জান্নাতে যাবার পথ সুগম করে
থাকেন। আলোচ্য ক্ষেত্রেও আল্লাহ্ পাক উনার অনুরূপ সদয় ইচ্ছা বাস্তবায়ন করেছেন। আল্লাহ্
পাক উনার পূর্ব পরিকল্পিত ব্যবস্থায় মাদারজাত ওলী,
আওলাদে রাসূল,
হযরত সাইয়্যিদাতুনা আহমদ জাহানারা বেগম, আল হাসানী, ওয়াল হুসাইনী, ওয়াল কুরাঈশী,
আলাইহাস সালাম উনার নেক ঔরসে এমন এক মুবারক পুত্র সন্তান দান
করেন, যিনি আল্লাহ্ পাক
উনার লক্ষ্যস্থল এবং উনার প্রিয়তম হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কায়েম
মাক্বাম ও উনার প্রণীত শরীয়তের রক্ষক। যিনি বিদ্য়াত অপসারণকারী, সুন্নাত যিন্দাকারী এবং মানুষকে তাসাউফে দীক্ষাদানকারী। সর্বোপরি
যিনি সহীহ্ তরীকায় বর্তমানে খিলাফত আলা মিনহাযিন্নুবুওওয়া উনার সফল রূপকার। যিনি দুনিয়া আসক্ত মানুষকে মহান আল্লাহ্ পাক উনার অপার রহমতে দুনিয়া
থেকে বিরাগ করে জান্নাতী করে দেয়ার এক মহান মুজাদ্দিদ, যুগ-যুগান্তরের প্রত্যাশিত এক মহামানব। যথাস্থানে উনার সম্পর্কে
সবিস্তারে আলোচিত হবে।
বুযুর্গী মুবারক ও বৈশিষ্ট্য মুবারক-
হযরত
সাইয়্যিদাতুনা আহমদ জাহানারা বেগম আলাইহাস সালাম উনার বুযুর্গী ও মুবারক বৈশিষ্ট্য
সংক্ষেপে নিম্নরূপঃ-
(১) তিনি
বুযুর্গ পূর্ব পুরুষের অধঃস্তন সন্তান। উনার বংশ পরম্পরা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন্নাবিয়্যীন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সম্পৃক্ত হয়েছে।
(২) তিনি
মাদারজাত ওলী।
(৩) তিনি
একজন কুতুবুজ্জামান রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার সহধর্মিণী,
(৪) তিনি
পরিপূর্ণরূপে আল্লাহ্ পাক উনার প্রতি সমর্পিত
(৫) তিনি
বর্তমান জামানার মুজাদ্দিদে আযম আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত আম্মাজান। (অসমাপ্ত)
আবা-৭০