এক নজরে সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ, মালিকুল জান্নাহ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনু ইমামিল আউওয়াল আছ ছালিছ আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত পরিচিতি মুবারক

এক নজরে সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ, মালিকুল জান্নাহ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনু ইমামিল আউওয়াল আছ ছালিছ আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত পরিচিতি মুবারক

 সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনু ইমামিল আউওয়াল আছ ছালিছ আলাইহিস সালাম তিনি হচ্ছেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত সিব্তুন (নাতী) আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ! তিনি হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্যে বিশেষ ব্যক্তিত্ব মুবারক। সুবহানাল্লাহ! তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারী হচ্ছেন তিনি। সুবহানাল্লাহ! উনার সম্মানিত মুহব্বত মুবারকই হচ্ছেন সম্মানিত ঈমান। সুবহানাল্লাহ! 

এখানে এক নজরে উনার সম্মানিত পরিচিতি মুবারক তুলে ধরা হলো-

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় ইসিম বা নাম মুবারক: সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম মুহ্সিন আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লক্বব মুবারক: সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ, মালিকুল জান্নাহ, মালিকুল কায়িনাত, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সিব্তু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইত্যাদি ইত্যাদি। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আম্মাজান আলাইহাস সালাম: সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, উম্মু আবীহা, আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আব্বাজান আলাইহিস সালাম: ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নানাজান ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম: সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নানীজান আলাইহাস সালাম: আফযালুন নিসা ওয়ান নাস বা’দা রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহ্লিল জান্নাহ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মামাজান আলাইহিমুস সালাম: ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা মাওলানা হযরত আন নূরুল আউওয়াল আলাইহিস সালাম তিনি, ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা মাওলানা হযরত আন নূরুছ ছানী আলাইহিস সালাম তিনি, ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা মাওলানা হযরত আন নূরুছ ছালিছ আলাইহিস সালাম তিনি এবং ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা মাওলানা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খালাজান আলাইহিন্নাস সালাম: বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আন নূরুল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত খইরু ওয়া আফযালু বানাতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি এবং বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দাদীজান আলাইহাস সালাম: সাইয়্যিদাতুনা হযরত ফাত্বিমাহ্ বিনতে আসাদ আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ: ৯ম হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ৯ই সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ) ইয়াওমুছ ছুলাছা শরীফ (মঙ্গলবার)। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র স্থান মুবারক: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ভাই আলাইহিমুস সালাম এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বোন আলাইহিন্নাস সালাম: 

১. সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি, 

২. সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি, ৩. সাইয়্যিদাতুনা হযরত যয়নাব বিনতে কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহাস সালাম তিনি, 

৪. সাইয়্যিদাতুনা হযরত রুকাইয়্যাহ্ বিনতে কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহাস সালাম তিনি, 

৫. সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহাস সালাম তিনি। 

অর্থাৎ তিনিসহ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ভাই আলাইহিমুস সালাম উনারা ৩ জন এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বোন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা ৩ জন অর্থাৎ তিনিসহ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ভাই আলাইহিমুস সালাম উনারা এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বোন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা মোট ৬ জন। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ভাই-বোন আলাইহিমুস সালাম ও আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্যে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র অবস্থান মুবারক: ষষ্ঠ। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ভাই আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্যে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র অবস্থান মুবারক: তৃতীয়। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ: ৯ম হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২০শে সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ) ইয়াওমুস সাব্ত শরীফ (শনিবার)। সুবহানাল্লাহ!

দুনিয়ার যমীনে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র অবস্থান মুবারক: মাত্র ১১ দিন। সুবহানাল্লাহ!

 হাফাদাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত সিবতুন (নাতি) আলাইহিমুস সালাম এবং মহাসম্মানিত সিবত্বাতুন (নাতনী) আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি মুবারক

 হাফাদাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত সিবতুন (নাতি) আলাইহিমুস সালাম এবং মহাসম্মানিত সিবত্বাতুন (নাতনী) আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি মুবারক

 নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আওলাদ আলাইহিমুস সালাম উনারা মোট ৮ জন। উনাদের মধ্যে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আবনা’ (ছেলে) আলাইহিমুস সালাম উনারা ৪ জন এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত বানাত (মেয়ে) আলাইহিন্নাস সালাম উনারা ৪ জন। সুবহানাল্লাহ! মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আবনা’ আলাইহিমুস সালাম উনারা প্রত্যেকেই দুনিয়াবী দৃষ্টিতে অল্প বয়স মুবারক-এ তথা সম্মানিত দুধ মুবারক পানরত অবস্থায় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন। আর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত বানাত (মেয়ে) আলাইহিন্নাস সালাম উনারা প্রত্যেকেই সম্মানিত ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার যুগ পেয়েছেন, সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেছেন, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ হিজরত মুবারক করেছেন এবং উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে আযীম শরীফও হয়েছিলো। সুবহানাল্লাহ! উনাদের মধ্যে একমাত্র বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি ব্যতীত অন্যান্য যাঁরা রয়েছেন অর্থাৎ সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুল ঊলা আলাইহাস সালাম উনার, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার এবং আন নূরুর রাবি‘য়াহ সাইয়্যদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের প্রত্যেকেরই মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিমুস সালাম ও আলাইহিন্নাস সালাম উনারা ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! আর উনারাই হচ্ছেন হাফাদাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তথা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত সিবতুন (নাতি) আলাইহিমুস সালাম এবং মহাসম্মানিতা সিবত্বাতুন (নাতনী) আলাইহিন্নাস সালাম। সুবহানাল্লাহ! 

হাফাদাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তথা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত সিবতুন (নাতি) আলাইহিমুস সালাম এবং মহাসম্মানিতা সিবত্বাতুন (নাতনী) আলাইহিন্নাস সালাম উনারা কত জন এই নিয়ে অনেক ইখতিলাফ রয়েছে। মুত্বহহার, মুত্বহহির, আছ ছমাদ, আস সাফফাহ্, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা খলীফাতুল্লাহ হযরত সুলত্বানুন নাছীর ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সমস্ত ইখতিলাফকে মিটিয়ে দিয়ে ইরশাদ মুবারক করেন যে, “হাফাদাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তথা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত সিবতুন (নাতি) আলাইহিমুস সালাম এবং মহাসম্মানিতা সিবত্বাতুন (নাতনী) আলাইহিন্নাস সালাম উনারা সর্বমোট ১০ জন। সুবহানাল্লাহ! উনারা হচ্ছেন,

১. আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সিবত্বতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত বিনতে যিন নূর আলাইহাস সালাম (সাইয়্যিদাতুনা হযরত উমামাহ আলাইহাস সালাম) অনুষ্ঠানিকভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মি’রাজ শরীফ সংঘটিত হওয়ার পরের দিন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২৮শে রজবুল হারাম শরীফ ইয়াওমুছ ছুলাছা শরীফ (মঙ্গলবার) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত বয়স মুবারক ৫০তম বছর মুবারক পার হয়ে ৫১তম বছর মুবারক চলাকালীন। সুবহানাল্লাহ! আর তিনি ৪৫ হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২৭শে ছফর শরীফ সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ (ইওয়ামুল ইছনাইনিল ‘আযীম শরীফ তথা সোমবার) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি দুনিয়ার যমীনে ৪৫ বছর ৬ মাস ২৯ দিন সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!

২. আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনে যুন নূর আলাইহিস সালাম (সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আলী ইবনে আবুল আছ ইবনে রবী’ আলাইহিস সালাম) তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ হিজরত মুবারক করার ১৩ মাস ১৬ দিন পূর্বে তথা ১ বছর ১ মাস ১৬ দিন পূর্বে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২৬শে মুহররমুল হারাম শরীফ ইয়াওমুল খমীস শরীফ (বৃহস্পতিবার) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! আর তিনি ১৫ হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১০ই রজব শরীফ ইয়াওমুল আহাদ শরীফ  (রোববার) সম্মানিত ইয়ারমূক জিহাদ মুবারক উনার ময়দানে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি দুনিয়ার যমীনে ১৫ বছর ৫ মাস ১৪ দিন সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!

৩. আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনে যুন নূর আছ ছানী আলাইহিস সালাম (সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনে আবুল আছ ইবনে রবী’ আলাইহিস সালাম) তিনি ২য় হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১৮ই শাওওয়াল শরীফ সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ (ইয়াওমুল ইছনাইনিল ‘আযীম শরীফ তথা সোমবার) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করা অবস্থায় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! 

এই ৩ জন উনারা খইরু ওয়া আফযালু বানাতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুল ঊলা আলইহাস সালাম উনার মাধ্যমে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!

৪. আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনে যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম (সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আব্দুল্লাহ ইবনে যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম) তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নুবুওওয়াত ও রিসালত মুবারক প্রকাশের ১১ তম বছর মুবারক পার হয়ে ১২ তম বছর মুবারক উনার শুরুতে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ৫ই রবী‘ঊছ ছানী শরীফ সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ (ইয়াওমুল ইছনাইনিল ‘আযীম শরীফ তথা সোমবার) সম্মানিত ও পবিত্র হাবশায় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত বয়স মুবারক ৫১তম বছর মুবারক পার হয়ে ৫২তম বছর মুবারক চলাকালীন। সুবহানাল্লাহ! আর তিনি ৪র্থ হিজরী শরীফ উনার সম্মানিত ও পবিত্র ২২শে জুমাদাল ঊলা শরীফ ইয়াওমুল আরবিয়া’ শরীফ (বুধবার) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি দুনিয়ার যমীনে ৬ বছর ১ মাস ১৭ দিন সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!

৫. সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম) তিনি ৩য় হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১৫ই রমাদ্বান শরীফ ইয়াওমুল আরবিয়া শরীফ (বুধবার) বা’দ আছর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! আর তিনি ৪৯ হিজরী শরীফ উনার ২৮শে সফর শরীফ জুমুয়াবার ভোর রাত্রে ফজরের আগে তাহাজ্জুদের শেষ সময় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি দুনিয়ার যমীনে ৪৫ বছর ৫ মাস ১৩ দিন সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!

৬. সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম) তিনি ৪র্থ হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ৫ই শা’বান শরীফ ইয়াওমুল জুমু‘য়াহ শরীফ বা’দ আছর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! আর তিনি ৬১ হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১০ই মুহররমুল হারাম শরীফ ইয়াওমুল জুমু‘য়াহ শরীফ যোহরের সময় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি দুনিয়ার যমীনে ৫৬ বছর ৫ মাস ৫ দিন সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!

৭. আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সিবত্বতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাইনাব বিনতে যুন নূর হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহাস সালাম। তিনি ৫ম হিজরী শরীফ উনার ৫ই জুমাদাল ঊলা শরীফ ইয়াওমুল জুমুয়াহ্ শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! আর তিনি ৬৫ হিজরী শরীফ উনার ১৫ই রজবুল হারাম শরীফ ইয়াওমুস সাব্ত শরীফ (শনিবার) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!

৮. আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সিবত্বতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত রুক্বইয়্যাহ বিনতে যুন নূর হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহাস সালাম। তিনি ৬ষ্ঠ হিজরী শরীফ উনার ২০শে জুমাদাল উখরা শরীফ ইয়াওমুল জুমুয়াহ্ শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! আর তিনি ৬ষ্ঠ হিজরী শরীফ উনার ২৯শে জুমাদাল উখরা শরীফ ইয়াওমুল আহাদ শরীফ (রোববার) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি দুনিয়ার যমীনে মাত্র ৯ দিন সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!

৯. আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সিবত্বতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে যুন নূর হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহাস সালাম। তিনি ৭ম হিজরী শরীফ উনার ১০ই সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ) ইছনাইনিল আযীম শরীফ তথা সোমবার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! আর তিনি ৭৩ হিজরী শরীফ উনার ১৪ই শাওওয়াল শরীফ ইয়াওমুল আরবিয়া শরীফ (বুধবার) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!

১০. আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম মুহসিন আলাইহিস সালাম। তিনি ৯ম হিজরী শরীফ উনার ৯ই সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ) ইয়াওমুছ ছুলাছা শরীফ (মঙ্গলবার) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! আর তিনি ৯ম হিজরী শরীফ উনার ২০ই সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ) ইয়াওমুস সাব্ত শরীফ (শনিবার) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি দুনিয়ার যমীনে মাত্র ১১ দিন সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!

উনারা ৬ জন বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মাধ্যমে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!

 সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ, সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনু ইমামিল আউওয়াল আছ ছালিছ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত সংক্ষিপ্ত জীবনী মুবারক

 
সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ, সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনু ইমামিল আউওয়াল আছ ছালিছ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত সংক্ষিপ্ত জীবনী মুবারক

 সম্মানিত পরিচিতি মুবারক:

সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ, সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনু ইমামিল আউওয়াল আছ ছালিছ আলাইহিস সালাম তিনি হচ্ছেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত সিব্তুন (নাতী) আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ! তিনি হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্যে বিশেষ ব্যক্তিত্ব মুবারক। সুবহানাল্লাহ! তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারী হচ্ছেন তিনি। সুবহানাল্লাহ! উনার সম্মানিত মুহব্বত মুবারকই হচ্ছেন সম্মানিত ঈমান। সুবহানাল্লাহ! 

মহাসম্মানিত আম্মাজান আলাইহাস সালাম:

সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ, সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনু ইমামিল আউওয়াল আছ ছালিছ আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আম্মাজান হচ্ছেন উম্মু আবীহা, আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! উনার শান মুবারক-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,

عَن حَضْرَتْ الْمِسْوَرِ بْنِ مَخْرَمَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّمَا حَضْرَتْ فَاطِمَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ بِضْعَةٌ مِنّـِىْ يُؤْذِينِىْ مَا اٰذَاهَا.

অর্থ: “হযরত মিসওয়ার ইবনে মাখরামা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নিঃসন্দেহে সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, উম্মু আবীহা আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন, আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মুজাসসাম মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র জিসিম মুবারক) উনার একখানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র টুকরো মুবারক। সুবহানাল্লাহ! উনাকে যে সকল বিষয়গুলো কষ্ট দেয়, সেগুলো আমাকেও কষ্ট দেয়।” না‘ঊযুবিল্লাহ! (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, মুসনাদে আহমদ শরীফ ইত্যাদি)

অন্য বর্ণনায় এসেছেন,

مَنْ اَحَبَّهَا فَقَدْ اَحَبَّنِىْ وَمَنْ اَبْغَضَهَا فَقَدْ اَبْغَضَنِىْ.

অর্থ: “যে ব্যক্তি উনাকে মুহব্বত করলেন, তিনি মূলত আমাকেই মুহব্বত করলেন। সুবহানাল্লাহ! আর যে ব্যক্তি উনাকে অসন্তুষ্ট করলো, সে মূলত আমাকেই অসন্তুষ্ট করলো।” না‘ঊযুবিল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আব্বাজান আলাইহিস সালাম:

সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ, সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনু ইমামিল আউওয়াল আছ ছালিছ আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আব্বাজান আলাইহিস সালাম হচ্ছেন ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! যিনি হচ্ছেন- ইমামুল আউওয়াল মিন আহিল বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রথম ইমাম এবং হযরত খুলাফায়ে রাশেদীন আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্যে বিশেষ ব্যক্তিত্ব মুবারক। সুবহানাল্লাহ! 

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ:

কিতাবে বর্ণিত রয়েছেন,

عن حضرت الليث بن سعد رحمة الله عليه قال تزوج حَضْرَتْ عَلِىٍّ كَرَّمَ اللهُ وَجْهَه عَلَيْهِ السَّلَامُ حَضْرَتْ فَاطِمَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ فولدت له حَضْرَتْ حسناً عَلَيْهِ السَّلَامُ وحَضْرَتْ حسيناً عَلَيْهِ السَّلَامُ وحَضْرَتْ محسناً عَلَيْهِ السَّلَامُ وحَضْرَتْ زينب عَلَيْهَا السَّلَامُ وحَضْرَتْ أم كلثوم عَلَيْهَا السَّلَامُ وحَضْرَتْ رقيّة عَلَيْهَا السَّلَامُ فماتت حَضْرَتْ رقيّة عَلَيْهَا السَّلَامُ ولم تبلغ وقال غيره ولدت حَضْرَتْ حسناً عَلَيْهِ السَّلَامُ وحَضْرَتْ حسيناً عَلَيْهِ السَّلَامُ وحَضْرَتْ محسناً عَلَيْهِ السَّلَامُ فهلك حَضْرَتْ محسن عَلَيْهِ السَّلَامُ صغيرا

অর্থ: “হযরত লাইছ ইবনে সা’দ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আন নূরুর রবি‘য়াহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত র্কারামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে ‘আযীম শরীফ করেন। উনার মাধ্যমে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম মুহ্সিন আলাইহিস সালাম তিনি, সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাইনাব আলাইহাস সালাম তিনি, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কলছূম আলাইহাস সালাম তিনি এবং সাইয়্যিদাতুনা হযরত রুক্বাইয়্যাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সাইয়্যিদাতুনা হযরত রুক্বাইয়্যাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি দুনিয়াবী দৃষ্টিতে অল্প বয়স মুবারক-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। আর কেউ কেউ বলেন, আন নূরুর রবি‘য়াহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মাধ্যমে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম মুহসিন আলাইহিস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম মুহসিন আলাইহিস সালাম তিনি দুনিয়াবী দৃষ্টিতে অল্প বয়স মুবারক-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন।” সুবহানাল্লাহ! (যাখাইরুল ‘উক্ববা)

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত ১০ম খলীফা, মুত্বহ্হার, মুত্বহহির, আছ ছমাদ, আস সাফফাহ্, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত সুলত্বানুন নাছীর ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সবাইকে এ বিষয়ে ছহীহ ইলিম মুবারক হাদিয়া মুবারক করে ইরশাদ মুবারক করেন, “সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনু ইমামিল আউওয়াল আছ ছালিছ আলাইহিস সালাম তিনি ৯ম হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ৯ই সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ) ইয়াওমুছ ছুলাছা শরীফ (মঙ্গলবার) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন।” সুবহানাল্লাহ!

মূলত, এই তারীখ মুবারকখানা পৃথিবীর কোনো কিতাবে উল্লেখ নেই। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সাথে মুত্বহহার, মুত্বহহির, আছ ছমাদ, আস সাফফাহ্, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা খলীফাতুল্লাহ হযরত সুলত্বানুন নাছীর ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার রয়েছে বেমেছাল মহাসম্মানিত তা‘য়াল্লুক-নিসবত, মুহব্বত-ক্বুরবত মুবারক, যা কায়িনাতের কারো পক্ষে ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। সুবহানাল্লাহ! যার কারণে একমাত্র মুত্বহহার, মুত্বহহির, আছ ছমাদ, আস সাফফাহ্, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা খলীফাতুল্লাহ হযরত সুলত্বানুন নাছীর ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পক্ষেই সম্ভব হয়েছে প্রায় সাড়ে ১৪ শত বছর পর দুনিয়ার যমীনে তাশরীফ মুবারক নিয়ে সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনু ইমামিল আউওয়াল আছ ছালিছ আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের তারিখ মুবারক প্রকাশ করা। সুবহানাল্লাহ! 

সম্মানিত আক্বীক্বা মুবারক দেয়া এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় ইসিম বা নাম মুবারক রাখা:

সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনু ইমামিল আউওয়াল আছ ছালিছ আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের ৭ম দিন সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ (ইয়াওমুল ইছনাইনিল ‘আযীম শরীফ তথা সোমবার) উনার পক্ষ থেকে সম্মানিত আক্বীক্বা মুবারক দেয়া হয় এবং স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় ইসিম বা নাম মুবারক রাখেন ‘সাইয়্যিদুনা হযরত মুহ্সিন আলাইহিস সালাম’। সুবহানাল্লাহ!

এ সম্পর্কে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছেন,

عَنْ اِمَامِ الْاَوَّلِ سَيِّدِنَا حَضْرَتْ عَلِىٍّ كَرَّمَ اللهُ وَجْهَهٗ عَلَيْهِ السَّلَامُ بْنِ اَبِىْ طَالِبٍ قَالَ لَمَّا وَلَدَتْ    سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ فَاطِمَةُ الزَّهْرَاءِ عَلَيْهَا السَّلَامُ الْحَسَنَ عَلَيْهِ السَّلَامُ جَاءَ النَّبِـىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ اَرُوْنِيْ اِبْنِيْ مَا سَـمَّـيْتُمُوْهُ قَالَ قُلْتُ سَمَّيْتُهُ حَرْبًا قَالَ بَلْ هُوَ حَسَنٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ فَلَمَّا ولدت الْحُسَيْنَ عَلَيْهِ السَّلَامُ جَاءَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ اَرُوْنِيْ اِبْنِيْ مَا سَمَّيْتُمُوْهُ قَالَ قُلْتُ سَمّيْتُه حَرْبًا فَقَالَ بَلْ هُوَ حُسَيْنٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ ثم لما ولدت الثالث جاء رسول الله صلى الله عليه وسلم قال أروني ابني ما سميتموه قلت سميته حربا قال بل هو محسن عَلَيْهِ السَّلَامُ ثم قال إنما سميتهم باسم ولد حضرت هارون عليه السلام شَبَر وشُبَير ومُشْبِر

অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন, তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আন নূরুর রবি‘য়াহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত হুজরা শরীফ-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নিয়ে ইরশাদ মুবারক করেন, আমাকে আমার মহাসম্মানিত নাতী উনাকে দেখান। আপনারা উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নাম মুবারক কি রেখেছেন? সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, আমি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নাম মুবারক রেখেছি ‘র্হাব’। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, না; বরং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় নাম মুবারক রাখুন ‘সাইয়্যিদুনা হযরত হাসান আলাইহিস সালাম’। এভাবে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন, তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আন নূরুর রবি‘য়াহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত হুজরা শরীফ-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নিয়ে ইরশাদ মুবারক করেন, আমাকে আমার মহাসম্মানিত নাতী উনাকে দেখান। আপনারা উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নাম মুবারক কি রেখেছেন? সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, আমি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় নাম মুবারক রেখেছি ‘র্হাব’। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, না; বরং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় নাম মুবারক রাখুন ‘সাইয়্যিদুনা হযরত হুসাইন আলাইহিস সালাম’। একইভাবে তৃতীয় মহাসম্মানিত আওলাদ তিনি যখন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন, তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আন নূরুর রবি‘য়াহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত হুজরা শরীফ-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নিয়ে ইরশাদ মুবারক করেন, আমাকে আমার মহাসম্মানিত নাতী উনাকে দেখান। আপনারা উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নাম মুবারক কি রেখেছেন? ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, আমি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নাম মুবারক রেখেছি ‘র্হাব’। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, না; বরং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নাম মুবারক রাখুন ‘সাইয়্যিদুনা হযরত মুহসিন আলাইহিস সালাম’। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, আমি উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় ইসিম বা নাম মুবারক রেখেছি হযরত হারুন আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত আওলাদ হযরত শাবার আলাইহিস সালাম, হযরত শুবাইর আলাইহিস সালাম এবং হযরত মুশ্বির আলাইহিস সালাম উনাদের নাম মুবারক অনুযায়ী।” সুবহানাল্লাহ! (সিয়ারু আলামিন নুবালা, তাহযীবুল কামাল, যখায়িরুল ‘উক্ববা ফি মানাক্বিবি যাবিল কুবরা, আয যুরি‌্যয়াতুত ত্বহিরাহ, মুস্তাদরাকে হাকিম, মুসনাদে আহমদ, ছহীহ ইবনে হিব্বান, আল মু’জামুল কবির, মাজমা‘উয যাওয়াইদ, আল ইছাবাহ, আল আদাবুল মুফরাদ ইত্যাদি( 

 বেমেছাল শ্রেষ্ঠত্ব মুবারক:

মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,

وَلِلّٰهِ الْعِزَّةُ وَلِرَسُوْلِهٖ وَلِلْمُؤْمِنِيْنَ وَلٰكِنَّ الْمُنٰفِقِيْنَ لَا يَعْلَمُوْنَ

অর্থ: “সমস্ত ইয্যত তথা শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক একমাত্র যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার (এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের) জন্য এবং (উনাদের সাথে নিসবত স্থাপন করার কারণে) মু’মিনীন উনাদের জন্য। সুবহানাল্লাহ! কিন্তু মুনাফিক্বরা তা জানে না, বুঝে না।” (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা মুনাফিকূন শরীফ: সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৮)

এই সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনার ব্যাখ্যায় মুত্বহহার, মুত্বহহির, আছ ছমাদ, আস সাফফাহ্, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা খলীফাতুল্লাহ হযরত সুলত্বানুন নাছীর ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি সমস্ত ইয্যত-সম্মান, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের একক মালিক। উনার পর উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা সমস্ত ইয্যত-সম্মান, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের মালিক। সুবহানাল্লাহ! আর উনাদের সাথে নিসবত স্থাপন করার কারণে মু’মিনগণ উনারাও সম্মানিত।” সুবহানাল্লাহ!

এই সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে মু’মিন বলতে একমাত্র যিনি খালিক্ব¡ মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ব্যতীত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারাসহ সমস্ত জিন-ইনসান, হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারাসহ তামাম কায়িনাতবাসী সকলেই উদ্দেশ্য। সুবহানাল্লাহ! উনারা সকলেই মু’মিন। উনারা প্রত্যেকেই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি সম্মানিত ঈমান মুবারক এনেছেন। সুবহানাল্লাহ! কোনো হযরত নবী আলাইহিস সালাম উনাকে সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক দেয়া হয়নি, কোনো হযরত রসূল আলাইহিস সালাম উনাকে সম্মানিত রিসালাত মুবারক দেয়া হয়নি; যতক্ষণ পর্যন্ত না উনারা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি সম্মানিত ঈমান মুবারক এনেছেন। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি সম্মানিত ঈমান মুবারক আনার পরেই মহান আল্লাহ পাক তিনি সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে সম্মানিত নুবুওওয়াত ও রিসালাত মুবারক হাদিয়া মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ! এ প্রসঙ্গে স্বয়ং যিনি খালিক্ব¡ মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

وَاِذْ اَخَذَ اللهُ مِيْثَاقَ النَّبِـيّٖنَ لَمَاۤ اٰتَيْتُكُمْ مِّنْ كِتٰبٍ وَّحِكْمَةٍ ثُـمَّ جَآءَكُمْ رَسُوْلٌ مُّصَدِّقٌ لِّـمَا مَعَكُمْ لَتُؤْمِنُنَّ بِهٖ وَلَتَنْصُرُنَّهٗ قَالَ ءَاَقْرَرْتُـمْ وَاَخَذْتُـمْ عَلـٰى ذٰلِكُمْ اِصْرِىْ قَالُوْاۤ اَقْرَرْنَا قَالَ فَاشْهَدُوْا وَاَنَا مَعَكُمْ مِّنَ الشّٰهِدِيْنَ. فَمَنْ تَوَلّٰى بَعْدَ ذٰلِكَ فَاُولٰٓـئِكَ هُمُ الْفٰسِقُوْنَ.

অর্থ: “আর (আমার মহাসম্মানতি ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি স্মরণ করুন ঐ সময়ের কথা) যখন মহান আল্লাহ পাক তিনি সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের থেকে অঙ্গীকার মুবারক গ্রহণ করলেন যে, আপনাদেরকে সম্মানিত কিতাব মুবারক ও হিকমত মুবারক দেয়া হবে। অতঃপর আপনাদের নিকট একজন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রসূল তথা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করবেন এবং তিনি আপনাদেরকে ও আপনাদের কাছে যা কিছু রয়েছে সমস্ত কিছুর তাছদীক্ব বা সত্যায়ন করবেন। আপনারা অবশ্যই অবশ্যই উনার প্রতি সম্মানিত ঈমান মুবারক আনবেন এবং উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিবেন। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, আপনারা কি তা স্বীকার করে নিলেন এবং এ মর্মে আমার সম্মানিত ওয়াদা মুবারক গ্রহণ করলেন? উনারা বললেন, আমরা স্বীকার করে নিলাম। মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, তাহলে আপনারা সকলে সাক্ষী থাকুন এবং আমিও আপনাদের সাথে সাক্ষী রইলাম। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর যে এই সম্মানিত ওয়াদা মুবারক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে অর্থাৎ ওয়াদা মুবারক উনার খিলাফ করবে, তারাই হচ্ছে ফাসিক্ব তথা চরম নাফরমান, কাট্টা কাফির।” না‘ঊযুবিল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আল ইমরান শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৮১-৮২) 

সেটাই সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল খামিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, 

اِنَّا مِنَ اللهِ بِـمَكَانٍ وَّمَنْزِلَةٍ رَّفِيْعَةٍ فَلَوْ لَا نَـحْنُ مَا خَلَقَ اللهُ تَعَالـٰى سَـمَاءً وَّلَا اَرْضًا وَّلَا جَنَّةً وَّلَا نَارًا وَّلَا شَـمْسًا وَّلَا قَمَرًا وَّلَا جِنِّيًّا وَّلَا اِنْسِيًّا.

অর্থ: “ নিশ্চয়ই যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার কাছে আমাদের এমন সুউচ্চ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাকান ও মাক্বাম মুবারক রয়েছেন যে, আমরা যদি না হতাম, তাহলে মহান আল্লাহ পাক তিনি আসমান-যমীন, জান্নাত-জাহান্নাম, সূর্য-চন্দ্র এবং জিন-ইনসান কোনো কিছুই সৃষ্টি করতেন না।” সুবহানাল্লাহ!

সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল খামিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো বলেন, 

اِنَّ لَنَا عِنْدَ اللهِ مَنْزِلَةً وَّمَكَانًا رَّفِيْعًا وَلَوْلَا نَـحْنُ لَـمْ يـَخْلُقِ اللهُ اَرْضًا وَلَا سَـمَاءً وَلَا جَنَّةً وَلَا نَارًا وَلَا شَـمْسًا وَلَا قَمَرًا وَّلَا جِنِّيًّا وَّلَا اِنْسِيًّا وَلَا بَرًّا وَلَا بـَحْرًا وَلَا سَهْلًا وَلَا جَبَلًا وَلَا رَطْبًا وَلَا يَابِسًا وَلَا حُلْوًا وَلَا مُرًّا وَلَا مَاءً وَلَا نَبَاتًا وَلَا شَجَرًا وَاخْتَرَعْنَا اللهُ مِنْ نُّوْرِهٖ وَلَا يُقَاسُ بِنَا اَحَدٌ.

অর্থ: “নিশ্চয়ই যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার কাছে আমাদের এমন সুউচ্চ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাক্বাম মুবারক রয়েছেন যে, আমরা যদি সৃষ্টি না হতাম, তাহলে মহান আল্লাহ পাক তিনি যমীন-আসমান, জান্নাত-জাহান্নাম, সূর্য-চন্দ্র, জিন-ইনসান, স্থল-সমুদ্র, সমভূমি-পাহাড়, ভিজা-শুকনা, মিষ্ট-তিক্ত, পানি, গাছপালা-তরুলতা কোনো কিছুই সৃষ্টি করতেন না। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূর মুবারক থেকে তথা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিশেষ নূর মুবরাক থেকে সৃষ্টি মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ! আমাদের সাথে কারো তুলনা করা যাবে না।” সুবহানাল্লাহ!

 এজন্যই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,

عَنْ اِمَامِ الْاَوَّلِ سَيِّدِنَا حَضْرَتْ كَرَّمَ اللهُ وَجْهَهٗ عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ اِنَّ النَّبِـىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَقُوْلُ نَـحْنُ اَهْلُ بَيْتٍ طَهَّرَهُمُ اللهُ مِنْ شَجَرَةِ النُّبُوَّةِ وَمَوْضِعِ الرِّسَالَـةِ وَمُـخْتَلِفِ الْمَلَائِكَةِ وَبَيْتِ الرَّحْمَةِ وَمَعْدِنِ الْعِلْمِ.

অর্থ: “ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত র্কারামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সবসময় ইরশাদ মুবারক করতেন, আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের (আমাদেরকে) সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক উনার বৃক্ষ, সম্মানিত রিসালাত মুবারক উনার স্থান, বিভিন্ন হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের, উনাদের দ্বারা সম্মানিত খিদমত মুবারক, সম্মানিত রহমত মুবারক উনার ঘর মুবারক এবং সম্মানিত ইলম মুবারক উনার খনি মুবারক (ইত্যাদি সমস্ত কিছু) থেকে পবিত্র রেখেছেন, ছমাদ তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী) করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে দুররে মানছূর ৬/৬০৬, ইবনে আবী হাতিম ৯/৩১৩৩)

মুত্বহহার, মুত্বহহির, আছ ছমাদ, আস সাফফাহ্, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা খলীফাতুল্লাহ হযরত সুলত্বানুন নাছীর ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন যে, “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাকে বলেছেন যে, আলোচ্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে- 

اَهْلُ بَيْتٍ نَـحْنُ

(আমরা আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম) বলেÑ আমি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে আমার নিজের অন্তর্ভুক্ত করে নিয়েছি।” সুবহানাল্লাহ!

সেটাই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা ইরশাদ মুবারক করেন, 

لِـىْ وَلَنَا مَعَ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَقْتٌ لَّا يَسْعٰنِىْ فِيْهِ مَلَكٌ مُّقَرَّبٌ وَلَا نَبِىٌّ مُّرْسَلٌ

অর্থ: ‘নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে আমার এবং আমাদের এমন একটি সময় রয়েছে, অর্থাৎ দায়েমীভাবে এমন নিছবত মুবারক রয়েছেন যেখানে কোনো নৈকট্যপ্রাপ্ত হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের এবং হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের স্থান সঙ্কুলান হয় না।’ সুবহানাল্লাহি ওয়া রসূলিহি ওয়া আহলি বাইতি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!

সুতরাং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের দায়েমীভাবে এমন নিছবত মুবারক রয়েছেন যেখানে কোনো নৈকট্যপ্রাপ্ত হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের এবং হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের স্থান সঙ্কুলান হয় না। সুবহানাল্লাহ! মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা হচ্ছেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সংযুক্ত এবং সম্পৃক্ত। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পরেই উনাদের মহাসম্মানিত মাক্বাম মুবারক। সুবহানাল্লাহ!

কাজেই, একমাত্র খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা ব্যতীত সমস্ত সৃষ্টি জগতের জন্য ফরযে আইন হচ্ছে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতি ঈমান আনা, উনাদেরক মুহব্বত করা তা’যীম-তাকরীম করা, উনাদের সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়া। সুবহানাল্লাহ! উনারাই হচ্ছেন মহান আল্লাহ পাক উনাকে এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকে হাছিল করার একমাত্র উসীলা বা মাধ্যম। উনারা ব্যতীত খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনাকে এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকে হাছিল করার দ্বিতীয় কোনো উসীলা বা মাধ্যম নেই। সুবহানা সুলত্বানিন নাছীর ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!

 সেটাই সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুস সাদিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,

نَحْنُ اٰلُ بَيْتِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ )نَحْنُ اَهْلُ بَيْتِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ( ونحن اَلْوَسِيْلَةُ اِلَى اللهِ وَلَا وَسِيْلَةَ اِلَى اللهِ اِلَّا عَنْ غَيْرِ طَرِيْقِنَا اَوْ مِنْ سِوَانَا.

অর্থ: “আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। আমরা মহান আল্লাহ পাক উনাকে পাওয়ার একমাত্র উসীলা। আমাদের পথ বা আমাদের ব্যতীত মহান আল্লাহ পাক উনাকে এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকে পাওয়ার দ্বিতীয় কোনো উসীলা বা মাধ্যম নেই।” সুবহানাল্লাহ! (শরহে আক্বাইদে ত্বহাবী)

এ কারণেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন-

عَنْ اِمَامِ الْاَوَّلِ سَيِّدِنَا حَضْرَتْ كَرَّمَ اللهُ وَجْهَهٗ عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَـحْنُ اَهْلُ بَيْتٍ شَجَرَةُ النُّبُوَّةِ وَمَعْدِنُ الرِّسَالَـةِ لَيْسَ اَحَدٌ مِّـنَ الْـخَلَائِقِ يَفْضُلُ اَهْلَ بَيْـتِـىْ غَيْرِىْ.

অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। আমরা সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক উনার সম্মানিত বৃক্ষ মুবারক এবং সম্মানিত রিসালাত মুবারক উনার সম্মানিত খনি মুবারক। সুবহানাল্লাহ! সমগ্র সৃষ্টি জগতে একমাত্র আমি ব্যতীত দ্বিতীয় আর কেউ নেই, যে আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সমকক্ষতা দাবী করে। অর্থাৎ সমগ্র সৃষ্টি জগতে আমার পরেই আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের শ্রেষ্ঠত্ব মুবারক, ফযীলত মুবারক।” সুবহানাল্লাহ! 

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছেন-

عَنْ حَضْرَتْ اَنَسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَـحْنُ اَهْلُ بَيْتٍ لَّا يُقَاسُ بِنَا اَحَدٌ.

অর্থ: “হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। আমাদের সাথে অন্য কারো ক্বিয়াস বা তুলনা করা যাবে না।” সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! (দায়লামী ৪/২৮৩, জামি‘উল আহাদীছ ২২/২১৯, কানযুল উম্মাল ১২/১০৪, জাম‘উল জাওয়ামি’ ১/২৪৯৫০, যাখায়েরুল ‘উক্ববাহ ফী মানাক্বিবে যাওইল কুরবা লিমুহিব্বে ত্ববারী ১/১৭, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১১/৭)

এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার ব্যাখ্যায় সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল খ¦মিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন,

 اِنَّا نَـحْنُ اَهْلُ بَيْتٍ لَّا يُقَاسُ بِنَا اَحَدٌ مَنْ قَاسَ بِنَا اَحَدًا فَقَدْ كَفَرَ

অর্থ: “নিশ্চয়ই আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। আমাদের সাথে অন্য কারো ক্বিয়াস বা তুলনা করা যাবে না। সুবহানাল্লাহ! যে ব্যক্তি আমাদের সাথে অন্য কাউকে তুলনা করবে, সে কুফরী করবে।” সুব্হানা মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!

সুতরাং যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার পরেই উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত মাক্বাম মুবারক। সুবহানাল্লাহ! আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পরেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত মাক্বাম মুবারক। সুবহানাল্লাহ! আর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের পরে সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারাসহ তামাম সৃষ্টি জগতের সম্মানিত মাক্বাম মুবারক। কাজেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সাথে সৃষ্টি জগতের কারো তুলনা দেয়া যাবে না। সুবহানাল্লাহ! উনাদের সাথে সৃষ্টি জগতের কারো তুলনা দেয়া, সুস্পষ্ট কুফরী। সুবহানাল্লাহ! যদি তাই হয়ে থাকে, তাহলে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্যে বিশেষ ব্যক্তিত্ব মুবারক সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ, মালিকুল জান্নাহ, সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনু ইমামিল আউওয়াল আছ ছালিছ আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত পবিত্রতা মুবারক, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কতো বেমেছাল, সেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর চিন্তা ও কল্পনার ঊর্ধ্বে। যা কস্মিনকালেও ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। সুবহানাল্লাহ! এক কথায় তিনি শুধু যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া সমস্ত সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারী হচ্ছেন তিনি। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ:

কিতাবে বর্ণিত রয়েছেন,

عن حَضْرَتْ أبي هريرة رضى الله تعالى عنه قال: ثقل حَضْرَتْ ابن حَضْرَتْ فاطمة عليها السلام فبعث إلى النبي-صلى الله عليه وسلم

অর্থ: “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আন নূরুর রবি‘য়াহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার একজন মহাসম্মানিত ছেলে আওলাদ আলাইহিস সালাম তিনি কঠিন মারীদ্বী শান মুবারক গ্রহণ করেন। তখন উনাকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট প্রেরণ করা হয়।” সুবহানাল্লাহ! (জাম‘উল ওয়াছাইল ফী শরহিশ শামাইল, শরহু কিতাবিত তাওহীদ)

কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছেন,

حَضْرَتْ محسن بن علي بن أبي طالب عليه السلام وقد اتفق أهل العلم بالأخبار أنه مات صغيرا في حياة النبي صلى الله عليه وسلم

অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনু ইমামিল আউওয়াল আছ ছালিছ আলাইহিস সালাম। অবশ্যই হযরত ‘উলামায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা অনেক সংবাদের ভিত্তিতে এ বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছেন যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি (যাহিরীভাবে) দুনিয়ার যমীনে অবস্থান মুবারক করাকালীন সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনু ইমামিল আউওয়াল আছ ছালিছ আলাইহিস সালাম তিনি দুনিয়াবী দৃষ্টিতে অল্প বয়স মুবারক-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন।” সুবহানাল্লাহ! (ফাতহুল বারী লি ইবনে হাজার ৩/১৫৬)

কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছেন,

وأما حَضْرَتْ محسن بن علي عليه السلام فهلك وهو صغير.

অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনু ইমামিল আউওয়াল আছ ছালিছ আলাইহিস সালাম তিনি দুনিয়াবী দৃষ্টিতে অল্প বয়স মুবারক-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন।” সুবহানাল্লাহ! (আল মা‘আরিফ)

কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছেন,

حَضْرَتْ محسن بن علي بن ابى طالب بن عبد المطلب الهاشمي عليه السلام: سبط النبي صلى الله عليه وسلم وشقيق حَضْرَتْ الحسين عليه السلام أمهم حَضْرَتْ فاطمة الزهراء عليها السلام مات بالمدينة وهو صغير

অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম মুহসিন আলাইহিস সালাম ইবনে ‘আলী ইবনে আবী ত্বালিব ইবনে ‘আব্দিল মুত্ত্বালিব আল হাশিমী আলাইহিস সালাম তিনি সিবত্বুন নাবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তথা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত নাতী আলাইহিস সালাম এবং সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত আপন ভাই। সুবহানাল্লাহ! উনাদের মহাসম্মানিত মাতা হচ্ছেন- আন নূরুর রবি‘য়াহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহ্রা আলাইহাস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! তিনি দুনিয়াবী দৃষ্টিতে অল্প বয়স মুবারক-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন।” সুবহানাল্লাহ! (আত্ তুহফাতুল লাত্বীফাহ্ ফী তারীখিল মাদীনাতিশ শারীফাহ্)

মুত্বহ্হার, মুত্বহহির, আছ ছমাদ, আস সাফফাহ্, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ, মালিকুল জান্নাহ, সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনু ইমামিল আউওয়াল আছ ছালিছ আলাইহিস সালাম তিনি ৯ম হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২০শে সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ) ইয়াওমুস সাব্ত শরীফ (শনিবার) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন।” সুবহানাল্লাহ!

 তিনি দুনিয়ার যমীনে মাত্র ১১ দিন সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!


 সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কতিপয় বেমেছাল খুছূছিয়াত বা বৈশিষ্ট্য মুবারক

 

সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কতিপয় বেমেছাল খুছূছিয়াত বা বৈশিষ্ট্য মুবারক

 হযরত শায়েখ আব্দুল হক্ব মুহাদ্দিছ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার লিখিত ‘মাদারিজুন নুবুওয়াত শরীফ’ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে, “সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত ও পবিত্র জিসম মুবারক থেকে সবসময় মেশক ও আম্বরের সুগন্ধি বের হতো।” সুবহানাল্লাহ!

‘মাওয়াহিবুল লাদুননিয়্যাহ শরীফ’ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে, 

وكان عبد المطلب يفوح منه رائحة المسك الاذفر،

অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত ও পবিত্র জিসম মুবারক থেকে মেশকের প্রবল সুগন্ধি মুবারক বিচ্ছুরিত হতো।” সুবহানাল্লাহ!

‘শারহুয যারক্বানী ‘আলাল মাওয়াহিব শরীফ’ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে,

وكانت قريش إذا أصابها قحط شديد تأخذ بيد عبد المطلب فتخرج به إلى جبل ثبير فيتقربون به إلى الله، ويسألونه أن يسقيهم الغيث، فكان يغيثهم ويسقيهم ببركة نور رسول الله صلى الله عليه وسلم غيثًا عظيمًا.

অর্থ: “কুরাইশরা যখন কঠিন দুর্ভিক্ষে পড়তো, তখন তারা সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে উনার সম্মানিত হাত মুবারক ধরে (অত্যন্ত সম্মানের সাথে) ছাবীর পাহাড়ে নিয়ে যেতো এবং উনার সম্মানিত উসীলা মুবারক দিয়ে তারা মহান আল্লাহ পাক উনার নৈকট্য কামনা করতো এবং বৃষ্টি প্রার্থনা করতো। তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি ‘মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তথা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ উনার বরকত মুবারক-এ তাদেরকে প্রচুর বৃষ্টি দান করতেন।” সুবহানাল্লাহ! (শারহুয যারক্বানী ‘আলাল মাওয়াহিব শরীফ)

কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছে,

ويقول الشهرستاني: "ظهر نور النبي صلى الله عليه وسلم في أسارير عبد المطلب بعض الظهور، وببركة ذلك النور ألهم النذر في ذبح ولده، وببركته كان يأمر ولده بترك الظلم والبغي، ويحثهم على مكارم الأخلاق، وينهاهم عن دنيات الأمور، وببركة ذلك النور كان يقول في وصاياه: إنه لن يخرج من الدنيا ظلوم حتى ينتقم منه، وتصيبه عقوبة، إلى أن هلك رجل ظلوم لم تصبه عقوبة، فقيل لعبد المطلب في ذلك

 অর্থ: “হযরত ইমাম শাহরাস্তানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত ও পবিত্র কপাল মুবারক-এ ‘নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূর মুবারক তথা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ বিশেষভাবে প্রকাশিত হতেন। সুবহানাল্লাহ! এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূর মুবারক তথা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বরকত মুবারক-এ সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার সম্মানিত আওলাদ আলাইহিস সালাম উনাকে কুরবানী করার মান্নত করার অনুপ্রেরণা পেয়েছিলেন। সুবহানাল্লাহ! আর এই সম্মানিত ‘মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূর মুবারক তথা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ উনার বরকত মুবারকেই সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার সম্মানিত আওলাদ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে যুলুম, অন্যায় ও অত্যাচার থেকে বিরত থাকার নির্দেশ মুবারক দিতেন এবং উত্তম চরিত্র মুবারক গ্রহণের ব্যাপারে উৎসাহিত করতেন, উনাদেরকে নি¤œ ও নিকৃষ্ট কাজ থেকে বিরত রাখতেন। এই ‘মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূর মুবারক তথা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ উনার বরকতেই তিনি উনার সম্মানিত নছীহত বা উপদেশ মুবারক-এ বলতেন, দুনিয়ার যমীন থেকে কখনও যুলুম-নির্যাতন, অত্যাচার-অবিচার দূর হবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত এর জন্য শাস্তি দেয়া না হবে।” (আস সীরাতুন নুবুওওয়াহ)

‘শারহুয যারক্বানী ‘আলাল মাওয়াহিব শরীফ’ উনার মধ্যে এসেছে,

ولما جعله الله فيه من مخالفة ما كان عليه الجاهلية بإلهام من الله، وكان يأمر أولاده بترك الظلم والبغي، ويحثهم على مكارم الأخلاق وينهاهم عن دنيات الأمور، ويؤثر عنه سنن جاء بها القرآن والسنة كالوفاء بالنذر، والمنع من نكاح المحارم، وقطع يد السارق، والنهي عن قتل الموءودة وتحريم الخمر والزنا، وأن لا يطوف بالبيت عريان،.

অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার পক্ষ থেকে সম্মানিত ইলহাম মুবারক দ্বারা সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে জাহিলিয়াতের যুগে আলাদাভাবে বেশিষ্ট্য ম-িত করেছেন। তিনি উনার সম্মানিত আওলাদ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে যুলুম, অন্যায় ও অত্যাচার থেকে বিরত থাকার নির্দেশ মুবারক দিতেন এবং উত্তম চরিত্র মুবারক গ্রহণের ব্যাপারে উৎসাহিত করতেন, উনাদেরকে নি¤œ ও নিকৃষ্ট কাজ থেকে বিরত রাখতেন। সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দ্বারা যেই সকল সুন্নত বা বিধানসমূহ শুরু হয়েছে, তার অধিকাংশগুলো সম্মানিত ও পবিত্র কুরআন শরীফ এবং সম্মানিত ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের মধ্যে এসেছে। তারমধ্যে কতিপয় হচ্ছেন, ১.মান্নত পূর্ণ করা, ২. মাহরামদের সাথে বিবাহ নিষিদ্ধ, ৩. চোরের হাত কাটা, ৪. কন্যা সন্তান হত্যা নিষিদ্ধ, ৫. মদ ও ব্যভিচার হারাম করণ, ৬. বিবস্ত্র হয়ে বাইতুল্লাহ শরীফ (সম্মানিত ও পবিত্র কা’বা শরীফ) তাওয়াফ না করা ইত্যাদি।” সুবহানাল্লাহ! (শারহুয যারক্বানী ‘আলাল মাওয়াহিব)

কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছে,

وتؤثر عنه سنن جاء القرآن بأكثرها، وجاءت السنة بها: منها الوفاء بالنذر، والمنع من نكاح المحارم، وقطع يد السارق، والنهي عن قتل الموؤدة، وتحريم الخمر والزنا، وأن لا يطوف بالبيت عريان كذا في كلام سبط ابن الجوزي

অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দ্বারা যেই সকল সুন্নত বা বিধানসমূহ শুরু হয়েছে, তার অধিকাংশগুলোই (পরবর্তীতে) সম্মানিত ও পবিত্র কুরআন শরীফ এবং সম্মানিত ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের মধ্যে এসেছে তথা সম্মানিত ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে সেগুলো জারী রয়েছে। সুবহানাল্লাহ! (অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা সাইয়্যিদুনা জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জারীকৃত সুন্নত বা বিধানসমূহ অত্যন্ত বেমেছালভাবে কবুল করেছেন। সুবহানাল্লাহ!) তারমধ্যে কতিপয় হচ্ছেন, ১.মান্নত পূর্ণ করা, ২. মাহরামদের (যেমন- বোন, ফুফু, খালা) সাথে বিবাহ নিষিদ্ধ, ৩. চোরের হাত কাটা, ৪. কন্যা সন্তান হত্যা নিষিদ্ধ, ৫. মদ ও ব্যভিচার হারাম করণ, ৬. বিবস্ত্র হয়ে সম্মানিত ও পবিত্র বাইতুল্লাহ শরীফ (সম্মানিত ও পবিত্র কা’বা শরীফ) তাওয়াফ না করা।” (আস সীরতুল হালবিয়্যাহ শরীফ ১/৭)

‘আস সীরতুল হালবিয়্যাহ শরীফ’ উনার মধ্যে আরো বর্ণিত রয়েছে,

  وكان عبد المطلب يأمر أولاده بترك الظلم والبغي، ويحثهم على مكارم الأخلاق وينهاهم عن دنيئات الأمور.

অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে যুলুম, অন্যায় ও অত্যাচার থেকে বিরত থাকার নির্দেশ মুবারক দিতেন এবং উত্তম চরিত্র মুবারক গ্রহণের ব্যাপারে উৎসাহিত করতেন, উনাদেরকে নি¤œ ও নিকৃষ্ট কাজ থেকে বিরত রাখতেন।” (আস সীরাতুল হালবিয়্যাহ শরীফ ১/৭) 

‘আস সীরতুল হালবিয়্যাহ শরীফ’ উনার মধ্যে আরো বর্ণিত রয়েছে,

وكان يقول لن يخرج من الدنيا ظلوم حتى ينتقم منه.

অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলতেন, দুনিয়ার যমীন থেকে কখনও যুলুম-নির্যাতন, অত্যাচার-অবিচার দূর হবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত এর জন্য শাস্তি দেয়া না হবে।” (আস সীরতুল হালবিয়্যাহ শরীফ ১/৭)

কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছে,

وهو أول من طلى الكعبة بالذهب

অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনিই সেই সুমহান ব্যক্তিত্ব মুবারক যিনি সর্বপ্রথম সম্মানিত ও পবিত্র কা’বা শরীফ উনাকে স্বর্ণ দ্বারা প্রলেপ দিয়েছেন।” সুবহানাল্লাহ!

কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছে,

أنه كان أول من سن دية النفس مائة من الإبل،

অর্থ: “তিনিই সেই সুমহান ব্যক্তিত্ব মুবারক যিনি সর্বপ্রথম একজন মানুষের ‘রক্তপণ একশত উট’ এ বিষয়টি প্রবর্তণ করেছেন।” সুবহানাল্লাহ!

কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছে,

وممن حرم الخمر على نفسه، وهو أول من تحنث بغار حراء,. 

অর্থ: “তিনি সেই সকল সুমহান ব্যক্তিত্ব মুবারক উনাদের মধ্যে অন্যতম যিনি নিজের উপর মদ হারাম করেছিলেন এবং তিনিই সেই সুমহান ব্যক্তিত্ব মুবারক যিনি সর্বপ্রথম সম্মানিত হেরা গুহা মুবারক-এ নির্জনে ইবাদাত মুবারক করতেন।” সুবহানাল্লাহ!

কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছে,

أول من تحنث بحراء كان إذا دخل شهر رمضان صعده وأطعم المساكين،

অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনিই সম্মানিত হেরা গুহায় নির্জনে ইবাদাত-বন্দেগী করার সূচনা করেন। পবিত্র রমাদ্বান শরীফ মাস আসলে তিনি সম্মানিত হেরা গুহায় আরোহণ মুবারক করতেন এবং মিসকীনদেরকে (বিশেষভাবে) খাদ্য খাওয়াতেন।” সুবহানাল্লাহ! (শারহুয যারক্বানী ‘আলাল মাওয়াহিব শরীফ)

কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছে,

وكان إذا دخل شهر رمضان، صعده وأطعم المساكين، وكان صعوده للتخلي من الناس؛ ليتفكر في جلال الله وعظمته. 

অর্থ: “যখন সম্মানিত রমাদ্বান শরীফ মাস আসতো, তখন সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত হেরা গুহা মুবারক-এ আরোহণ মুবারক করতেন এবং মিসকীনদেরকে (বিশেষভাবে) খাদ্য খাওয়াতেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি সেখানে আরোহণ মুবারক করতেন লোকজন থেকে আলাদা হয়ে নির্জনে মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত জালাল ও ‘আযমত মুবারক তথা মহিমা, মহত্ত্ব, সম্মান, মর্যাদা-মর্তবা ও বড়ত্ব মুবারক সম্পর্কে ফিকির করার জন্য।” সুবহানাল্লাহ! 

অপর বর্ণনায় এসেছে,

وكان إذا دخل شهر رمضان صعد حراء وأطعم المساكين جميع الشهر وكان صعوده للتخلي عن الناس يتفكر في جلال الله وعظمته

অর্থ: “যখন সম্মানিত রমাদ্বান শরীফ মাস আসতো, সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত হেরা গুহা মুবারক-এ আরোহণ মুবারক করতেন এবং সারা মাসব্যাপী মিসকীনদেরকে (বিশেষভাবে) খাদ্য খাওয়াতেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি সেখানে আরোহণ মুবারক করতেন লোকজন থেকে আলাদা হয়ে নির্জনে মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত জালাল ও আযমত মুবারক তথা মহিমা, মহত্ত্ব, সম্মান, মর্যাদা-মর্তবা ও বড়ত্ব মুবারক সম্পর্কে ফিকির করার জন্য।” সুবহানাল্লাহ!


 সাইয়্যিদুন নাস, সাইয়্যিদু কুরাইশ, সাইয়্যিদুল আরব ওয়াল আজম, আল ফাইয়্যায, যুল মাজদি ওয়াস সু’দাদ, মুত্ব‘ইমুল ইন্সি ওয়াল জিন্নি ওয়াল ওয়াহ্শি ওয়াত ত্বইর, আহলু বাইতি রসূল্লিাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ইমামুল মুত্তাক্বীন, ইমামুছ ছাক্বালাইন, আবূ যাবীহিল্লাহ আলাইহিস সালাম সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত জীবনী মুবারক

 
সাইয়্যিদুন নাস, সাইয়্যিদু কুরাইশ, সাইয়্যিদুল আরব ওয়াল আজম, আল ফাইয়্যায, যুল মাজদি ওয়াস সু’দাদ, মুত্ব‘ইমুল ইন্সি ওয়াল জিন্নি ওয়াল ওয়াহ্শি ওয়াত ত্বইর, আহলু বাইতি রসূল্লিাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ইমামুল মুত্তাক্বীন, ইমামুছ ছাক্বালাইন, আবূ যাবীহিল্লাহ আলাইহিস সালাম সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত জীবনী মুবারক

 সম্মানিত পরিচিতি মুবারক: মহান আল্লাহ পাক উনার সৃষ্টিজগতে যেই সকল সুমহান ব্যক্তিত্ব মুবারক শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক এবং শ্রেষ্ঠত্ব মুবারক উনার দিক থেকে সর্বোচ্চ শিখরে অধিষ্ঠিত উনাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন সাইয়্যিদুন নাস, সাইয়্যিদু কুরাইশ, সাইয়্যিদুল আরব ওয়াল আজম, আল ফাইয়্যায, মালিকুল জান্নাহ, মালিকুল কায়িনাত, জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল মুত্ত্বালিব আলাইহিস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারী। সুবহানাল্লাহ! উনার সম্মানিত মুহব্বত মুবারকই হচ্ছেন সম্মানিত ঈমান। সুবহানাল্লাহ! উনার সবচেয়ে বড় পরিচয় মুবারক হচ্ছেন- তিনি হচ্ছেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত দাদাজান আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ! তাই মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আছ ছমাদ, আস সাফফাহ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত সুলত্বানুন নাছীর ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত ফতওয়া মুবারক দিয়েছেন যে, “সাইয়্যিদু কুরাইশ, সাইয়্যিদুল ‘আরব ওয়াল আজম, আল ফাইয়্যায, যুল মাজদি ওয়াস সু’দাদ, মুত্ব‘ইমুল ইন্সি ওয়াল জিন্নি ওয়াল ওয়াহ্শি ওয়াত ত্বইর সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত জীবনী মুবারক জানা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর জন্য ফরযে আইন।” সুবহানাল্লাহ! 

মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আছ ছমাদ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক হাছিলের লক্ষ্যে আমারা এখানে সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত জীবনী মুবারক আলোচনা করার নিয়াত করেছি। মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আছ ছমাদ, আস সাফফাহ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত সুলত্বানুন নাছীর ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুদ দারাজাত মুবারক-এ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ক্বদম মুবারক-এ) চুমু খেয়ে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানার্থে হাক্বীক্বী তাওয়াল্লুক্ব-নিছবত মুবারক, ফয়েয-তাওয়াজ্জুহ, ইলম, ইখলাছ, ইছলাহী ও দয়া, দান, ইহসান মুবারক ভিক্ষা চেয়ে শুরু করছি। 

সম্মানিত বংশীয় পবিত্রতা মুবারক:

মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,

وَتَقَلُّبَكَ فِـى السّٰجِدِيْنَ.

অর্থ: “আর (আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) আপনার স্থানান্তরিত হওয়ার বিষয়টিও ছিল মহাসম্মানিত সিজদাকারীগণ উনাদের মাধ্যমে।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা শুয়ারা শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ২১৯)

‘তাফসীরে কবীর শরীফ’ উনার মধ্যে উল্লেখ রয়েছে, 

فَالْاٰيَةُ دَالَّـةٌ عَلـٰى اَنَّ جَمِيْعَ اٰبَاءِ مُحَمَّدٍ عَلَيْهِمُ السَّلَامُ كَانُوْا مُسْلِمِيْنَ.

অর্থ: “এই সম্মানিত আয়াত শরীফ থেকে প্রমাণিত হয় যে, নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত পূর্বপুরুষ আলাইহিমুস সালাম উনারা সকলেই মুসলমান ছিলেন, ঈমানদার ছিলেন।” সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে কবীর শরীফ ১৩/৩২) 

اِنَّهٗ كَانَ يَنْقُلُ نُوْرُهٗ مِنْ سَاجِدٍ اِلـٰى سَاجِدٍ

অর্থ: “নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূর মুবারক সিজদাকারীগণ উনাদের মাধ্যমে স্থানান্তরিত হয়েছিলেন।” সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে কবীর শরীফ ১৩/৩২, মাওয়াহিবুল লাদুননিয়্যাহ শরীফ ১/১০৪, শারহুয যারক্বানী আলাল মাওয়াহিব ১/৩২৬, তারীখুল খমীস ১/২৩৪, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ শরীফ)

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

لَـمْ اَزَلْ اُنْقَلُ مِنْ اَصْلَابِ الطَّاهِرِيْنَ اِلـٰى اَرْحَامِ الطَّاهِرَاتِ.

অর্থ: “আমি সবসময় পূত-পবিত্র পুরুষ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্য থেকে পূত-পবিত্রা মহিলা আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের সম্মানিত ও পবিত্র রেহেম শরীফ-এ স্থানান্তরিত হয়েছি।” সুবহানাল্লাহ!

এখান থেকেই সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত বংশীয় পবিত্রতা মুবারক উনার বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যায়। সুবহানাল্লাহ! 

সম্মানিত পিতা আলাইহিস সালাম: সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত পিতা ছিলেন সাইয়্যিদুল ‘আরব ওয়াল আজম, সাইয়্যিদু কুরাইশ, মাহবূবে এলাহী, আল জাদ্দুছ ছানী লিরসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! উনারা ছিলেন চার ভাই-

১. সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম,

২. সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুশ শামস ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম,

৩. সাইয়্যিদুনা হযরত মুত্তালিব ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম,

৪. সাইয়্যিদুনা হযরত নাওফিল ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম।

কেউ কেউ বলেছেন, সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম তিনি ছিলেন উনার ভাই উনাদের মধ্যে সকলের বড়। আবার কেউ কেউ ভিন্ন মতও পোষণ করেছেন।

আল জাদ্দুছ ছানী লিরসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম তিনি ছিলেন উনার মহাসম্মানিত পিতা আলাইহিস সালাম উনার এবং সম্মানিত পরিবার উনাদের সকলের নিকট সর্বাধিক প্রিয় ব্যক্তিত্ব মুবারক। সুবহানাল্লাহ! তিনি আল জাদ্দাতুছ ছালিছাহ লিরসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত ‘আতিকাহ বিনতে মুররাহ আলাইহাস সালাম উনার মাধ্যমে সম্মানিত ও পবিত্র মক্কা শরীফ-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!

তিনি কুরাইশ বংশের বনু হাশিম শাখার মহাসম্মানিত প্রথম পুরুষ আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ! উনার সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক ছিলেন সাইয়্যিদুনা হযরত আমর আলাইহিস সালাম। উনার সীমাহীন সম্মান ও মর্যাদা-মর্তবা মুবারক উনার কারণে উনাকে ‘আমরু ‘উলা বা আমরুল ‘আলী’ বলে সম্বোধন করা হতো। সুবহানাল্লাহ! তিনি সকলের মাঝে সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম আলাইহিস সালাম হিসেবে পরিচিতি মুবারক গ্রহণ করেন। এর কারণ হিসেবে সীরাতগ্রন্থসমূহে অনেক বর্ণনা রয়েছে। অনেকের মতে তিনি সম্মানিত ও পবিত্র মক্কা শরীফ-এ দুর্ভিক্ষের সময় রুটি টুকরা টুকরা করে ছারীদ তৈরি করে সবাইকে খাওয়ান, যার কারণে তিনি সকলের মাঝে সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম হিসেবে পরিচিতি মুবারক গ্রহণ করেন। সুবহানাল্লাহ! কেননা ‘হাশমুন’ শব্দ মুবারক উনার অর্থ মুবারক হচ্ছেন, চূর্ণ করা, গুঁড়ো করা, টুকরো করা ইত্যাদি। আর সেখান থেকে ‘হাশিম’। অর্থ- টুকরাকারী, গুঁড়োকারী, চূর্ণকারী।

তিনি ছিলেন বেমেছাল দানশীল। উনার বদান্যতার বিষয়টি আরব এবং অনারব তথা সারা পৃথিবীতে প্রসিদ্ধ ছিলো। সুবহানাল্লাহ!

তিনিই সর্বপ্রথম কুরাইশদের জন্য শীত ও গ্রীষ্মকালীন দুটি বাণিজ্য সফর প্রচলন করেন। সুবহানাল্লাহ! যে বিষয়টি স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি সম্মানিত ও পবিত্র কুরআন শরীফ উনার ‘সম্মানিত ও পবিত্র সূরা কুরাইশ শরীফ’ উনার মধ্যে আলোচনা করেছেন। সুবহানাল্লাহ! আবার তিনিই সর্বপ্রথম সম্মানিত ও পবিত্র মক্কা শরীফ-এ হাজীদেরকে ছারীদ দ্বারা আপ্যায়ন করেন। সুবহানাল্লাহ!

আল জাদ্দুছ ছানী লিরসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম তিনি উনার মহাসম্মানিত পিতা আল জাদ্দুছ ছালিছ লিরসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আবদু মানাফ ইবনে কুছাই আলাইহিস সালাম উনার পর রিফাদাহ ও সিক্বায়াহ তথা হাজীদের খাদ্য খাওয়ানো ও পানি পান করানোর দায়িত্ব মুবারক গ্রহণ করেন। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম তিনি ছিলেন বেমেছাল সৌন্দর্য মুবারক উনার অধিকারী। এই সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছে, 

وكان من أحسن الناس وأجملهم،

অর্থ: “তিনি ছিলেন মানুষের মাঝে সর্বোত্তম ও সর্বাধিক সৌন্দর্য মুবারক উনার অধিকারী।” সুবহানাল্লাহ! (সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ফী সীরাতি খইরিল ইবাদ ১/২৭০)

কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছে,

كان النور يرى على وجهه كالهلال يتوقّد، لا يراه أحد إلا أحبّه وأقبل نحوه.

অর্থ: “চাঁদ যেরূপ প্রজ্বলিত হয়, তদ্রুপ সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত চেহেরা মুবারক-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূর মুবারক তথা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে প্রজ্বলিত অবস্থায় দেখা যেতেন। সুবহানাল্লাহ! যে কেউ সেই সম্মানিত নূর মুবারক দেখতো, সে উনাকে মুহব্বত না করে পারতো না এবং সে উনার নিকট চলে আসতো।” সুবহানাল্লাহ! (সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ফী সীরাতি খইরিল ইবাদ ১/২৭০)

আবূ সা’দ আব্দুল মালিক ইবনে মুহম্মদ ইবনে ইবরাহীম নীশাপুরী খরকূশী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি (বিছাল শরীফ: ৪০৭ হিজরী) উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘শরফুল মুস্তফা শরীফ’ উনার মধ্যে উল্লেখ করেন,

وكان النور على وجهه كالهلال يتوقد شعاعه، لا يمر بشيء إلا سجد له، ولا يراه أحد إلا أقبل نحوه

অর্থ: ‘চাঁদ যেমন তার আলোক রশ্মি প্রজ্বলিত করে থাকে, ঠিক তেমনিভাবে আল জাদ্দুছ ছানী লিরসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত চেহারা মুবারক-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূর মুবারক ঝলমল করতেন। অর্থাৎ আল জাদ্দুছ ছানী লিরসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত চেহারা মুবারক-এ চাঁদের ন্যায় সুস্পষ্টভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে দেখা যেতেন এবং চাঁদের আলোর ন্যায় সেখান থেকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূর মুবারক উনার রশ্মি মুবারক বিচ্ছূরিত হতেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি কোনো কিছু (যেমন পশু-পাখি, গাছ-পালা, তরুলতা ইত্যাদির) পাশ দিয়ে অতিক্রমকালে সেগুলো উনাকে সিজদা করতো আর জিন-ইনসান উনাকে সম্মান করতো। সুবহানাল্লাহ! আর যে ব্যক্তিই সেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূর মুবারক দেখতো, সে মুহব্বতের সাথে উনার নিকট অগ্রসর হতো। সুবহানাল্লাহ! (শরফুল মুস্তফা শরীফ ১/৩৩১)

সুতরাং এখান থেকে স্পষ্ট হয়ে যায় যে, আল জাদ্দুছ ছানী লিরসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কতো বেমেছাল, যেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ!

আল জাদ্দুছ ছানী সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম উনার আলোচনা মুবারক পূর্ববর্তী আসমানী কিতাবে এবং রোম ও পারস্য কথিত সম্রাটদের নিজ মেয়েদেরকে উনার নিকট সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ দেয়ার জন্য দূত প্রেরণ:

আল জাদ্দুছ ছানী লিরসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত আলোচনা মুবারক, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক পূর্ববর্তী সম্মানিত আসমানী কিতাব মুবারকেও ছিলো। সুবহানাল্লাহ! যার কারণে যারা সম্মানিত আসমানী কিতাব মুবারক উনাদের ইলম মুবারক রাখতেন, উনারা উনাকে দেখেই চিনে ফেলতেন যে, তিনিই সেই সুমহান ব্যক্তিত্ব মুবারক যিনি আখিরী নবী, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূর মুবারক ধারণ করে আছেন। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ উনার মাঝে এখন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অবস্থান মুবারক করছেন। সুবহানাল্লাহ! তাই আরব-অনারবের সকল সম্ভ্রান্তশীলা মহিলাগণ উনার নিকট সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ-এ আবদ্ধ হওয়ার জন্য বেকারার ছিলো। সুবহানাল্লাহ! এ প্রসঙ্গে মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আছ ছমাদ, আস সাফফাহ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত সুলত্বানুন নাছীর ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “স্বয়ং রোম ও পারস্য কথিত সম্রাটরা তাদের নিজ মেয়েদেরকে আল জাদ্দুছ ছানী লিরসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম উনার নিকট সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ দেয়ার জন্য দূত প্রেরণ করেছিলো। কিন্তু তিনি সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেননি।” সুবহানাল্লাহ! 

এ সম্পর্কে ইমামুল মুহাদ্দিছীন হযরত ইমাম মুহম্মদ ইবনে ইঊসুফ ছালিহী শামী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি (বিছাল শরীফ: ৯৪২ হিজরী শরীফ) উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ শরীফ’ উনার মধ্যে উল্লেখ করেন,

وبعث إليه قيصر رسولا ليتزوج ابنته لما وجد في الإنجيل من صفته فأبى.

অর্থ: “রোমের কথিত সম্রাট সম্মানিত ও পবিত্র ইনজিল শরীফ-এ আল জাদ্দুছ ছানী লিরসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম উনার ছিফত তথা গুণাবলী মুবারক পেয়ে, উনার নিকট দূত প্রেরণ করেছিলো, তার কন্যাকে উনার নিকট সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ দেয়ার জন্য। কিন্তু সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম আলাইহিস সালাম তিনি উক্ত প্রস্তাব অস্বীকার করেন। অর্থাৎ তিনি রোমের কথিত সম্রাটের প্রস্তাব ফিরেয়ে দেন।” সুবহানাল্লাহ! (সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ফী সীরাতি খইরিল ইবাদ ১/২৭০)

আবূ সা’দ আব্দুল মালিক ইবনে মুহম্মদ ইবনে ইবরাহীম নীশাপুরী খরকূশী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি (বিছাল শরীফ: ৪০৭ হিজরী) উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘শরফুল মুস্তফা শরীফ’ উনার মধ্যে উল্লেখ করেন,

وبعث إليه قيصر حفيد هرقل ملك الروم، وطلب إليه أن يزوج ابنته منه لما وجد في الإنجيل من قصته، وهو أن النور كان في وجهه ظاهرا فأبى

অর্থ: “আর তৎকালীন রোম শাসক বা কথিত সম্রাট আল জাদ্দুছ ছানী লিরসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ দূত প্রেরণ করে উনার নিকট এই আরজী পেশ করে যে, সে তার স্বীয় কন্যাকে উনার নিকট সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ দিতে চায়। সুবহানাল্লাহ! আর এই ঘটনাটি ঘটেছিলো, যখন রোমের কথিম সম্রাট সম্মানিত ও পবিত্র ইনজীল শরীফ-এ সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম আলাইহিস সালাম উনার আলোচনা মুবারক পেয়েছিলো তখন। সুবহানাল্লাহ! আর নিশ্চয়ই সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম আলাইহিস সালাম তিনি সেই সুমহান ব্যক্তিত্ব মুবারক যে, উনার সম্মানিত চেহারা মুবারক-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সুস্পষ্টভাবে দেখা যেতেন। সুবহানাল্লাহ! কিন্তু সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম আলাইহিস সালাম তিনি (রোমের কথি সম্রাটের) উক্ত প্রস্তাব অস্বীকার করেন, ফিরেয়ে দেন।” সুবহানাল্লাহ! (শরফুল মুস্তফা শরীফ ১/৩৩১)

 অনুরূপ বর্ণনা পারস্যের কথিত সম্রাটের ক্ষেত্রেও রয়েছে। সুবহানাল্লাহ!

কাজেই এখান থেকে স্পষ্ট হয়ে যায় যে, সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম আলাইহিস সালাম উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কতো বেমেছাল ছিলো এবং তিনি আরব-অনারব তথা সারা পৃথিবীতে কত বেমেছাল সম্মান মুবারক উনার অধিকারী ছিলেন যে, স্বয়ং তৎকালীন কথিত পরাশক্তি রোম ও পারস্যের কথিত সম্রাটরা তাদের কন্যাদেরকে উনার সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ (শাদী মুবারক) দেয়ার জন্য প্রস্তাব দিয়েছিলো; কিন্তু তিনি সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেননি। সুবহানাল্লাহ! সুতরাং তিনি সারা পৃথিবীতে, সারা কায়িনাতে সকলের নিকট কতটুকু সম্মানিত ছিলেন, সেটা চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ!

আল জাদ্দুছ ছানী লিরসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ:

আল জাদ্দুছ ছানী লিরসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম তিনি যখন রোম ও পারস্যের কথিত সম্রাটের রাজকন্যাদের সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ সংক্রান্ত প্রস্তাবটি প্রত্যাখ্যান করেন, তখন এক রাতে এক অপূর্ব স্বপ্ন মুবারক দেখতে থাকেনÑ “স্বয়ং যিনি খ¦ালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম উনাকে সম্মানিত ও পবিত্র মদীনা শরীফ উনার বনী আদী ইবনে নাজ্জার গোত্রের সম্ভ্রান্তশীলা, বিস্ময়কর সৌন্দর্য মুবারক এবং পূত-পবিত্র চরিত্র মুবারক মুবারক উনার অধিকারিণী আল জাদ্দাতুছ ছানিয়াহ লিরসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত সালমা বিনতে ‘আমর আলাইহাস সালাম উনাকে দেখিয়ে বলতেছেন যে, আপনি উনাকে সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ (শাদী মুবারক) করুন।” সুবানাল্লাহ!

এই স্বপ্ন মুবারক দেখার পর আল জাদ্দুছ ছানী লিরসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম তিনি শাম দেশে সফরকালে সম্মানিত ও পবিত্র মদীনা শরীফ-এ কিছু দিনের জন্য সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। অতঃপর সেখানে কুরাইশ বংশীয় বিশেষ শাখা বনী আদী ইবনে নাজ্জার গোত্রের সবচেয়ে সম্ভ্রান্তশীলা, সীমাহীন ইলম মুবারক উনার মালিকাহ, ত্বাহিরাহ, পূত-পবিত্রা ব্যক্তিত্বা মুবারক আল জাদ্দুছ ছানিয়াহ লিরসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত সালমা বিনতে আমর আলাইহাস সালাম উনাকে দেখতে পান। তিনি ছিলেন তৎকালীন সময়ে সমগ্র কুরাইশ, আবর এবং আজম তথা সারা পৃথিবীর বুকে সবচেয়ে পবিত্রতা, সম্মানিতা এবং সর্বাধিক সৌন্দর্য মুবারক উনার অধিকারিণী। সুবহানাল্লাহ!

আল জাদ্দুছ ছানীলিরসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম তিনি আল জাদ্দাতুছ ছানিয়াহলিরসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত সালমা বিনতে আমর আলাইহাস সালাম উনাকে দেখার সাথে সাথেই চিনে ফেলেন যে, তিনিই স্বপ্ন মুবারক-এ দেখা সেই সুমহান ব্যক্তিত্বা মুবারক। সুবাহানাল্লাহ! আর উনাকেই সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ করার জন্য স্বয়ং যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাকে নির্দেশ মুবারক দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!

অতঃপর সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম আলাইহিস সালাম তিনি উনাকে সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ করেন। এ সম্পর্কে ‘শরফুল মুস্ত¡ফা শরীফ’ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে, 

فأري في المنام أن تزوج بنت زيد بن عمرو فتزوج بها

অর্থ: “অতঃপর উনাকে স্বপ্ন মুবারক দেখানো হয় যে, তিনি যেন সাইয়্যিদাতুনা হযরত সালমা বিনতে আমর বিনতে যায়েদ ইবনে আমর আলাইহাস সালাম উনাকে সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ করেন। অতঃপর তিনি উনাকে নিসবতে আযীম শরীফ করেন।” সুবহানাল্লাহ! (শরফুল মুস্তফা শরীফ ১/৩৩১)

আল জাদ্দাতুছ ছানিয়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত সালমা বিনতে আমর আলাইহাস সালাম উনার মাঝে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাশরীফ মুবারক নেয়া:

আল জাদ্দুছ ছানী লিরসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম উনার সাথে আল জাদ্দাতুছ ছানিয়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত সালমা বিনতে আমর আলাইহাস সালাম উনার আযীমুশ শান মহাসম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ অনুষ্ঠিত হয় সম্মানিত মদীনা শরীফ-এ। অতঃপর সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম আলাইহিস সালাম তিনি বেশ কিছু দিন সম্মানিত ও পবিত্র মদীনা শরীফ অবস্থান মুবারক করেন। তখনই উনার সম্মানিত ও পবিত্র কপাল মুবারক থেকে ‘মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূর মুবারক’ আল জাদ্দাতুছ ছানিয়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত সালমা বিনতে আমর আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ (সম্মানিত রেহেম শরীফ-এ) কুদরতীভাবে মহাসম্মানিত তাশরীফ মুবারক রাখেন। সুবহানাল্লাহ! সে রাতে মহান আল্লাহ পাক তিনি সারা পৃথিবীতে, সারা কায়িনাতে অফুরন্ত রহমত-বরকত সাকীনাহ মুবারক নাযিল করেন এবং সম্মানিত জান্নাত মুবারক উনাকে অপরূপ সাজে সুসজ্জিত মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!

সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ:

আল জাদ্দুছ ছানী সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম উনার এবং আল জাদ্দাতুছ ছানিয়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত সালমা বিনতে আমর আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের উভয়ের মাঝে আযীমুশ শান মহাসম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ অনুষ্ঠিত হওয়ার পর সাইয়্যিদাতুনা হযরত সালমা বিনতে আমর আলাইহাস সালাম তিনি উনার সম্মানিত আব্বাজান আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত বাড়িতে অর্থাৎ সম্মানিত ও পবিত্র মদীনা শরীফেই অবস্থান মুবারক করতে থাকনে। সুবহানাল্লাহ! এ বিষয়ে অনেক বর্ণনা রয়েছে। কেউ কেউ বলেছেন, আযীমুশ শান মহাসম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ অনুষ্ঠিত হওয়ার পূর্বেই বলা হয়েছে যে, সাইয়্যিদাতুনা হযরত সালমা বিনতে আমর আলাইহাস সালাম তিনি সম্মানিত ও পবিত্র মদীনা শরীফেই অবস্থান মুবারক করবেন এবং সম্মানিত ও পবিত্র মদীনা শরীফেই উনার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করবেন। সুবহানাল্লাহ! আবার কেউ কেউ বলেছেন যে, সাইয়্যিদাতুনা হযরত সালমা বিনতে আমর আলাইহাস সালাম তিনি সম্মানিত ও পবিত্র মক্কা শরীফ-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নিয়েছেন এবং সম্মানিত অবস্থান মুবারকও করেছেন। কিতাবে এরূপ আরো অনেক মত উল্লেখ রয়েছে। তবে এ কথা সর্বজন স্বীকৃত যে, সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার সম্মানিত নানাজান সাইয়্যিদুনা হযরত আমর আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত বাড়িতে তথা সম্মানিত ও পবিত্র মদীনা শরীফ-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন। সুবহানাল্লাহ! উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশে উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার জন্য মহান আল্লাহ পাক তিনি সম্মানিত জান্নাত মুবারক থেকে বিশেষ সম্মানিত মহিলা আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে প্রেরণ করেন। সুবহানাল্লাহ! তখন উনারা সাইয়্যিদাতুনা হযরত সালমা বিনতে আমর আলাইহাস সালাম উনাকে উদ্দেশ্য করে বলেন যে, আপনার যিনি মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিস সালাম তিনি এখন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করবেন, তিনি হবেন যিনি সমস্ত রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রসূল, আখিরী নবী, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦তামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত দাদাজান আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ! তাই উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার জন্য মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে আপনার নিকট প্রেরণ করেছেন। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কুদরতীভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! উনার মাঝে তখন ‘মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি’ সম্মানিত অবস্থান মুবারক করছিলেন। সুবহানাল্লাহ! ফলে সেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আলোতে সাইয়্যিদাতুনা হযরত সালমা বিনতে আমর আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত ও পবিত্র হুজরা শরীফ, সম্মানিত ও পবিত্র মদীনা শরীফ এবং উনার আশপাশ সমস্ত কিছু আলোকিত হয়ে গেলো। সুবহানাল্লাহ!

সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক রাখা এবং সম্মানিত আক্বীক্বাহ মুবারক দেয়া:

সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের সপ্তম দিনে উনার সম্মানিত আক্বীক্বা মুবারক দেয়া হয় এবং উনার সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক রাখা হয়। উনার সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক কি এ বিষয়ে সীরাতগ্রন্থগুলোতে অনেক বর্ণনা রয়েছে। কেউ কেউ বলেছেন, উনার সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক ‘সাইয়্যিদুনা হযরত আমির আলাইহিস সালাম।’ আবার কেউ কেউ বলেছেন, উনার সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক ‘সাইয়্যিদুনা হযরত শায়বাহ আলাইহিস সালাম।’ আবার কেউ কেউ বলেছেন, উনার সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক ‘সাইয়্যিদুনা হযরত শায়বাতুল হামদ আলাইহিস সালাম।’ সুবহানাল্লাহ!

এ বিষয়ে মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আছ ছমাদ, আস সাফফাহ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত সুলত্বানুন নাছীর ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সর্বোত্তম ফায়ছালা মুবারক দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, “প্রকৃপক্ষে সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত ও পবিত্র মূল ইসম বা নাম মুবারক ছিলেন, ‘সাইয়্যিদুনা হযরত শায়বাহ আলাইহিস সালাম।’ সুবহানাল্লাহ! তবে একজন মানুষের যেমন একাধিক নাম মুবারক থাকে সেই হিসেবে সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আরো একখানা সম্মানিত নাম মুবারক ছিলেন, ‘সাইয়্যিদুনা হযরত আমির আলাইহিস সালাম’। আর ‘শায়বাতুল হামদ’ হচ্ছেন সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার একখানা সম্মানিত বিশেষ লক্বব মুবারক।” সুবহানাল্লাহ!

সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক কেন ‘সাইয়্যিদুনা হযরত শায়বাহ আলাইহিস সালাম’ রাখা হয়েছে, এ বিষয়ে সীরাতবিশারদগণ উনারা বিভিন্ন অভিমত ব্যক্ত করেছেন। কেউ কেউ বলেছেন, উনার মহাসম্মানিত আব্বাজান আল জাদ্দুছ ছানী লিরসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান আল জাদ্দাতুছ ছানিয়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত সালমা বিনতে আমর আলাইহাস সালাম উনাকে সম্মানিত ওছীয়ত মুবারক করেন যে, তিনি যেন উনার মহাসম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল মুত্ত্বালিব আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক রাখেন ‘সাইয়্যিদুনা হযরত শায়বাহ আলাইহিস সালাম।’ সুবহানাল্লাহ! তাই উনার সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক রাখা হয় ‘সাইয়্যিদুনা হযরত শায়বাহ আলাইহিস সালাম।’ সুবহানাল্লাহ! যেমন কিতাবে বর্ণিত রয়েছে, 

لأن أباه وصّى أمه بذلك.

অর্থ: “কেননা উনার মহাসম্মানিত পিতা আলাইহিস সালাম তিনি উনার মহাসম্মানিত আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনাকে এ বিষয়ে সম্মানিত ওছীয়ত মুবারক করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ফী সীরাতি খইরিল ইবাদ শরীফ ১/২৬২)

আর এটা এই জন্য যে, সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম তিনি উনার মহাসম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল মুত্ত্বালিব আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত শুভ পরিণাম সম্পর্কে, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক সম্পর্কে নিশ্চিতভাবে অবহিত ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি জানতেন যে, ‘উনার যেই মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করতে যাচ্ছেন, তিনি ‘মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ উনাকে বহন করবেন এবং তিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত দাদাজান হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন মুবারক করবেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি কায়িনাতের মাঝে সবচেয়ে বড় সৌভাগ্যবান হবেন। সবহানাল্লাহ! অল্প বয়স মুবারক থেকেই উনার বেমেছাল ইলম, হিকমত ও সম্মান মুবারক উনার বিষয়টি প্রকাশিত হতে থাকবে। সুবহানাল্লাহ! তাই তিনি উনার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত ও পবিত্র নাম মুবারক ‘সাইয়্যিদুনা হযরত শায়বাহ আলাইহিস সালাম’ রাখার জন্য সম্মানিত ওছীয়ত মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ! কেননা, আরবরা স্বীয় সন্তানদের বিচক্ষণতা ও বুদ্ধিমত্তাতার কামনা করে উনাদের সন্তানদের নাম রাখতেন শায়বাহ। সুবহানাল্লাহ!

মূল কথা হলো, আল জাদ্দুছ ছানী লিরসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম তিনি এবং আল জাদ্দাতুছ ছানিয়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত সালমা বিনতে আমর আলাইহাস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারা মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে সম্মানিত ইলহাম-ইলক্বা’ মুবারক এবং সম্মানিত স্বপ্ন মুবারক-এ আদিষ্ট হয়ে উনাদের মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক রেখেছেন ‘সাইয়্যিদুনা হযরত শায়বাহ আলাইহিস সালাম।’ সুবহানাল্লাহ! আর উনাদের সম্মানিত ইলহাম-ইলক্বা মুবারক এবং সম্মানিত স্বপ্ন মুবারক ছিলেন সম্মানিত ওহী মুবারক উনার ন্যায় অকাট্য। সুবহানাল্লাহ!

সম্মানিত কুনিয়াত মুবারক: আবূ হারিছ আলাইহিস সালাম, আবূ আব্দিল্লাহ আলাইহিস সালাম, আবূ বাত্বহা’ আলাইহিস সালাম।

জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত আব্বাজান আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ: 

সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ (রেহেম শরীফ-এ) অবস্থান মুবারক করেন, তখন উনার মহাসম্মানিত আব্বাজান, আল জাদ্দুছ ছানী লিরসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম তিনি ব্যবসার উদ্দেশ্যে শাম দেশে রওয়ানা হন। অতঃপর ফিলিস্তিনের গাযা শহরে মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! সেখানে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ অবস্থিত, যা সকলের নিকট সুপরিচিত। সুবহানাল্লাহ! উনার সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক অনুযায়ী গাযা শহরে ‘মসজিদুস সাইয়্যিদি হাশিম’ নামে একখানা মসজিদও রয়েছে। উনার কারণে গাযা শহরকে ‘গাযায়ে হাশিম’ বলা হয়। সুবহানাল্লাহ! 

 শৈশবকালে সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত লালন-পালন মুবারক:

সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত ও পবিত্র মদীনা শরীফ-এ উনার মহাসম্মানিত নানাজান আলাইহিস সালাম উনার বাড়িতে উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনার বেমেছাল আদর-যত্ম মুবারক-এ লালিত-পালিত হন। সুবহানাল্লাহ! সেখানে তিনি ৬, ৭ বা ৮ বছর সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন।

 সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সকলের মাঝে ‘সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল মুত্ত্বালিব আলাইহিস সালাম’ হিসেবে মশহূর হওয়ার কারণ:

এ বিষয়েও সীরাতগ্রন্থগুলোতে অনেক মত পরিলক্ষিত হয়। তবে বিশুদ্ধ কথা হচ্ছে, সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করার পর থেকে সম্মানিত ও পবিত্র মদীনা শরীফ-এ উনার মহাসম্মানিত নানাজান আলাইহিস সালাম উনার বাড়ীতে সম্মানিত অবস্থান মুবারক করতে থাকেন। যখন উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ৬, ৭ বা ৮ বছর, তখন উনার সম্মানিত চাচা সাইয়্যিদুনা হযরত মুত্ত্বালিব আলাইহিস সালাম তিনি উনাকে সম্মানিত ও পবিত্র মক্কা শরীফ আনার জন্য সম্মানিত ও পবিত্র মদীনা শরীফ যান। অতঃপর সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনার অনুমতিক্রমে সাইয়্যিদুনা হযরত মুত্ত্বালিব আলাইহিস সালাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত ও পবিত্র মক্কা শরীফ নিয়ে আসেন। তারপর তিনি উনাকে অত্যন্ত আদর-যত্ম ও মায়া-মুহব্বত মুবারক করে লালন-পালন মুবারক করতে থাকেন। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদুনা জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার সম্মানিত চাচা সাইয়্যিদুনা হযরত মুত্ত্বালিব আলাইহিস সালাম উনার নিকট সর্বাধিক প্রিয় ও মুহব্বতের পাত্র ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! আর আরবীতে ‘আবদ’ শব্দ মুবারক উনার একখানা অর্থ মুবারক হচ্ছেন, ‘হাবীব, মাহবূব, প্রিয়’। যেহেতু সাইয়্যিদুনা হযরত মুত্ত্বালিব আলাইহিস সালাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সবচেয়ে বেশি মুহব্বত মুবারক করতেন, তাই সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ‘আব্দুল মুত্ত্বালিব’ তথা মুত্ত্বালিব আলাইহিস সালাম উনার প্রিয়পাত্র বলে সম্বোধন করা হতো। সুবহানাল্লাহ! সেখান থেকে সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সকলের মাঝে ‘আব্দুল মুত্ত্বালিব আলাইহিস সালাম’ হিসেবে পরিচিতি মুবারক গ্রহণ করেন। সুবহানাল্লাহ!

সম্মানিত পবিত্রতা মুবারক:

মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আছ ছমাদ, আস সাফফাহ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত সুলত্বানুন নাছীর ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল বাশার ছফীউল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার থেকে শুরু করে আবূ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সময় পর্যন্ত যেই সুমহান ব্যক্তিত্ব এবং ব্যক্তিত্বা মুবারক উনারা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ধারণ মুবারক করেছেন উনারা প্রত্যেকেই হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত।” সুবহানাল্লাহ!

কাজেই, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের যত খুছূছিয়াত বা বৈশিষ্ট্য মুবারক রয়েছে, সমস্ত খূছূছিয়াত বা বৈশিষ্ট্য মুবারক উনাদের অধিকারী হচ্ছেন তিনি। সুবহানাল্লাহ! আর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের পবিত্রতা সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,

اِنَّـمَا يُرِيْدُ اللهُ لِيُذْهِبَ عَنْكُمُ الرِّجْسَ اَهْلَ الْبَيْتِ وَيُـطَـهِّـرَكُمْ تَطْهِيْرًا.

অর্থ: “হে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি চান আপনাদের থেকে সমস্ত প্রকার অপবিত্রতা দূর করে আপনাদেরকে পবিত্র করার মতো পবিত্র করতে। অর্থাৎ তিনি আপনাদেরকে পবিত্র করার মতো পবিত্র করেই সৃষ্টি মুবারক করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৩)

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,

فَاَنَا وَاَهْلُ بَيْتِىْ مُطَهَّرُوْنَ مِنَ الذُّنُوْبِ.

অর্থ: “আমি এবং আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম আমরা সকলেই যুনূব তথা সমস্ত প্রকার ছগীরা-কবীরা এবং যাবতীয় অপছন্দনীয় কাজ থেকে পূত-পবিত্র।” সুবহানাল্লাহ! (দালায়িলুন নুবুওওয়াহ লিল বায়হাক্বী, শিফা ১/৩২৫, সীরাতে হালবিয়্যাহ ১/৪২, আল মা’রিফাতু ওয়াত তারীখ ১/৪৯৮, খছাইছুল কুবরা ১/৬৬, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১/২৩৫, তাফসীরে দুররে মানছূর লিস সুয়ূত্বী ৬/৬০৬, তাফসীরে ইবনে আবী হাতিম ৯/৩১৩৩ ইত্যাদি) 

সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,

اَنَّ النَّبِـىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَقُوْلُ نَـحْنُاَهْلُ بَيْتٍ طَهَّرَهُمُ اللهُ مِنْ شَجَرَةِ النُّبُوَّةِ وَمَوْضِعِ الرِّسَالَـةِ وَمُـخْتَلِفِ الْمَلَائِكَةِ وَبَيْتِ الرَّحْمَةِ وَمَعْدِنِ الْعِلْمِ.

অর্থ: “নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সবসময় ইরশাদ মুবারক করতেন, আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে (আমাদেরকে) সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক উনার বৃক্ষ, সম্মানিত রিসালাত মুবারক উনার স্থান, বিভিন্ন ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের, উনাদের দ্বারা সম্মানিত খিদমত মুবারক, সম্মানিত রহমত মুবারক উনার ঘর মুবারক এবং সম্মানিত ইলম মুবারক উনার খনি মুবারক (ইত্যাদি সমস্ত কিছু) থেকে পবিত্র রেখেছেন, ছমাদ তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী) করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে দুররে মানছূর ৬/৬০৬, ইবনে আবী হাতিম ৯/৩১৩৩)

এ সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ এবং সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের পরিপূর্ণ মিছদাক্ব হচ্ছেন সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! তাহলে উনার সম্মানিত পবিত্রতা মুবারক কতো বেমেছাল, তা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ!

সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ‘মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’:

সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি দৃষ্টিকাড়া বেমেছাল সৌন্দর্য মুবারক উনার অধিকারী ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! উনার সম্মানিত ও পবিত্র চেহারা মুবারক-এ সবসময় মহাসম্মানিত এবং মহাপবিত্র নূরে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঝলমল করতেন। সুবহানাল্লাহ! কিতাবে বর্ণিত রয়েছে, 

ونور رسول الله صلى الله عليه وسلم يضيء في غرته،

অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত কপাল মুবারক-এ ‘নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূর মুবারক তথা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ ঝলমল করতেন।” সুবহানাল্লাহ! (মাওয়াহিবুল লাদুননিয়্যাহ শরীফ)

কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছে,

"وكان نور رسول الله صلى الله عليه وسلم يضيء في غرته" أي: جبهته بينًا واضحًا،

অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত কপাল মুবারক-এ ‘নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূর মুবারক তথা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ অত্যন্ত সমুজ্জ্বলভাবে ঝলমল করতেন।” (শারহুয যারক্বানী ‘আলাল মাওয়াহিব)

কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছে,

على شيبة الحمد الذي كان وجهه ...

 يضيء ظلام الليل كالقمر البدري

অর্থ: “পূর্ণ চাঁদের মতো শায়বাতুল হামদ সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত ও পবিত্র চেহারা মুবারক অন্ধকার রাতকে আলোকিত করতেন।” সুবহানাল্লাহ! (শারহুয যারক্বানী)

সম্মানিত বিশেষ শান মুবারক উনার বহিঃপ্রকাশ:

عن كعب الأحبار: أن نور رسول الله صلى الله عليه وسلم- لما صار إلى عبد المطلب وأدرك، نام يوما فى الحجر فانتبه مكحولا مدهونا، قد كسى حلة البهاء والجمال، فبقى متحيرا لا يدرى من فعل به ذلك، فأخذه أبوه بيده ثم انطلق به إلى كهنة قريش فأخبرهم بذلك، فقالوا له: اعلم أن إله السماوات قد أذن لهذا الغلام أن يتزوج، فزوجه قيلة فولدت له الحارث

অর্থ: “হযরত কা’ব ইবনে আহবার রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু হতে বর্ণিত রয়েছে, ‘মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ যখন সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে স্থান্তরিত হলেন এবং সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পরিণত বয়স মুবারক-এ উপনীত হলেন, তখন তিনি একদিন সম্মানিত কা’বা শরীফ উনার হাতিম-এ ঘুমিয়ে ছিলাম। ঘুম থেকে জেগে উঠে দেখলেন যে, উনার সম্মানিত চোখ মুবারক-এ সুরমা লাগানো, সম্মানিত মাথা মুবারক উনার চুল মুবারক তৈল লাগানো এবং এক সেট অতি উজ্জ্বল ও সুন্দর মূল্যবান কাপড় পরিহিত। সুবহানাল্লাহ! সমস্ত লোক উনার সৌন্দর্য মুবারক ও মাহাত্ম্য দেখে অবাক হয়ে গেলো যে, তিনি এটা কিভাবে পেলেন, কে উনাকে এই উচ্চ মর্যাদায় ভূষিত করলেন। এই ঘটনার পর উনার সম্মানিত চাচা উনাকে কুরায়শদের কয়েকজন বিশেষ ব্যক্তি যারা আসমানী কিতাবসমূহের ইলম রাখতেন উনাদের নিকট নিয়ে গেলেন এবং উনাদেরকে সমস্ত ঘটনা খুলে বললেন। উনারা বললেন, আপনি জেনে রাখুন, আকাশের রব মহান আল্লাহ পাক তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ‘মহাসম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ’ করার ইযাযত মুবারক দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! তখন উনার চাচা সাইয়্যিদাতুনা হযরত ক্বায়লা আলাইহাস সালাম উনার সাথে উনার সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ সুসম্পন্ন করেন। সুবহানাল্লাহ! উনার মাধ্যমে সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত হারিছ আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! (তিনি ছিলেন সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বড় আওলাদ।) (‘মাওয়াহিবুল লাদুননিয়্যাহ শরীফ)

আযওয়াজুম মুত্বহ্হারাতগণ-

সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিতা আযওয়াজুম মুত্বহ্হারাত আলাইহিন্নাস সালাম উনারা ছিলেন ৬ জন। উনারা হচ্ছেন,

১. সাইয়্যিদাতুনা হযরত ফাত্বিমা বিনতে আমার ইবনে ‘আয়িয আলাইহাস সালাম। উনার মাধ্যমেই আবূ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!

২. সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছফিয়্যাহ বিনতে জুনদুব আলাইহাস সালাম। উনার সম্মানিত লক্বব মুবারক সাইয়্যিদাতুনা হযরত ক্বায়লা আলাইহাস সালাম,

৩. সাইয়্যিদাতুনা হযরত হালাহ বিনতে ওয়াহাইব আলাইহাস সালাম। তিনি ছিলেন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিনা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আপন চাচাতো বোন।

৪. সাইয়্যিদাতুনা হযরত নুতাইলাহ্ বিনতে জানাব আলাইহাস সালাম,

৫. সাইয়্যিদাতুনা হযরত লুব্না বিনতে হাজার আলাইহাস সালাম,

৬. সাইয়্যিদাতুনা হযরত মুমান্না‘আহ্ বিনতে ‘আমর আলাইহাস সালাম। 

 সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত চাচা সাইয়্যিদুনা হযরত মুত্ত্বালিব আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ:

هَلَكَ الْمُطَّلِبُ بِرَدْمَانَ مِنْ أَرْضِ الْيَمَنِ،

 অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত মুত্ত্বালিব আলাইহিস সালাম তিনি ইয়ামেনের রাদমান এলাকায় মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন।” (ইবনে হিশাম)

তখন জনৈক এক আরব্য কবি উনার উদ্দেশ্যে শোক প্রকাশ করে বলেন, 

قَدْ ظَمِئَ الْحَجِيجُ بَعْدَ الْمُطَّلِبِ ...

 بَعْدَ الْجِفَانِ وَالشَّرَابِ المُنْثَعِبْ

لَيْتَ قُرَيْشًا بَعْدَهُ عَلَى نَصَبْ

অর্থ: “হাজীগণ কানায় কানায় পূর্ণ পেয়ালায় যমযমের পানি পান করেও সাইয়্যিদুনা হযরত মুত্ত্বালিব আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের কারণে পিপাসার্ত রয়ে গেলো।

 হায়! যদি কুরায়শগণ উনার মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের পর এক পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হতো।” (ইবনে হিশাম)

সিকায়া ও রিফাদা:

‘সীরাতে ইবনে হিশাম শরীফ’ উনার মধ্যে উল্লেখ রয়েছে,

ثُـمَّ وَلِيَ عَبْدُ الْمُطَّلِبِ بْنُ هَاشِمِ السِّقَايَةَ وَالرِّفَادَةَ بَعْدَ عَمِّهِ الْمُطَّلِبِ، فَأَقَامَهَا لِلنَّاسِ وَأَقَامَ لِقَوْمِهٖ مَا كَانَ اٰبَاؤُهُ يُقِيْمُوْنَ قَبْلَهٗ لِقَوْمِهِمْ مِنْ اَمْرِهِمْ، وَشَرُفَ فِـىْ قَوْمِهٖ شَرَفًا لَـمْ يَبْلُغْهُ اَحَدٌ مِنْ اٰبَائِهِ.

অর্থ: “চাচা সাইয়্যিদুনা হযরত মুত্ত্বালিব আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের পর সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ‘সিকায়া ও রিফাদা’ তথা হাজীদের পানি পান করানো ও খাদ্য খাওয়ানোর দায়িত্ব মুবারক গ্রহণ করেন। এছাড়া তিনি উনার পূর্বপুরুষ উনাদের ন্যায় ক্বাওমের যাবতীয় দায়িত্ব সুচারুরূপে আনজাম দেন এবং সামাজিক প্রভাব-প্রতিপত্তি ও মর্যাদায় তিনি উনার পূর্বসূরীদের ছাড়িয়ে যান।” সুবহানাল্লাহ! (ইবনে হিশাম)

সাইয়্যিদু কুরাইশ, সাইয়্যিদুন নাস, মালিকু আহলি বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ উনার প্রায় ৮৭ বছর পূর্বে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২০শে সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রবী‘উল আউওয়াল শরীফ) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ অর্থাৎ সোমবার) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। আর দুনিয়াবী দৃষ্টিতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বয়স মুবারক যখন ৮ বছর ২ মাস ১০ দিন, তখন ২২শে জুমাদাল ঊলা শরীফ সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ (ইছনাইনিল আযীম শরীফ অর্থাৎ সোমবার) মালিকুল জান্নাহ সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন অর্থাৎ পবিত্র দীদার মুবারক-এ তাশরীফ মুবারক নেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি দুনিয়ার যমীনে ৯৫ বছর ২ মাস ২ দিন সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। 

মহান আল্লাহ পাক তিনি আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত সুলত্বানুন নাছীর ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানার্থে আমাদের সবাইকে সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাওয়ানেহ্ ‘উমরী মুবারক, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক জানার, উনার সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করার, উনাকে সম্মানিত তা’যীম-তাকরীম মুবারক করার এবং দায়িমীভাবে অনন্তকাল যাবৎ উনার সম্মানিত গোলামী মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার তাওফীক্ব দান করুন। আমীন! আমীন! আমীন!