কুরান বলে পৃথিবীর গঠন বিছানা বা কার্পেট এর মত কিন্তু কেউ কখনো স্ফেরিক্যাল কার্পেট দেখেনি! এখন কথা হল কেন আল্লাহ পৃথিবীর গঠনের জন্যে শব্দ খানা ব্যবহার করলেন না?
নাস্তিকদের আপত্তি : কুরান বলে পৃথিবীর গঠন বিছানা বা কার্পেট এর মত (Quran 15:19, 20:53, 43:10, 50:7, 51:48, 71:19, 78:6, 79:30, 88:20 and 91:6)! কিন্তু কেউ কখনো স্ফেরিক্যাল কার্পেট দেখেনি! এখন কথা হল কেন আল্লাহ পৃথিবীর গঠনের জন্যে "Kurah" (Arabic for spherical) শব্দ খানা ব্যবহার করলেন না?
খণ্ডন : যেহেতু পৃথিবী বলতে আকাশ ও যমীন উভয় মিলিয়ে বুঝিয়ে থাকে। সুতরাং বর্ণিত আয়াত শরীফ উনাদের মধ্যে কোথাও পৃথিবীর গঠন বা আকার-আকৃতি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়নি বরং যমীন বা ভূপৃষ্ঠের অবয়ব বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
যেমন মহান আল্লাহ পাক তিনি (Quran 51:48) ইরশাদ মুবারক করেন-
وَالْاَرْضَ فَرَشْنَاهَا فَنِعْمَ الْمَاهِدُوْنَ
অর্থ : “আমি যমীন বা ভূমিকে বিছিয়েছি। আমি কত সুন্দরভাবেই না বিছাতে সক্ষম।” (পবিত্র সূরা যারিয়াহ্ শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৪৮)
সুতরাং অত্র আয়াত শরীফ (Quran 51:48) উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি اَرْضَ ‘আর্দ’ শব্দ মুবারক দ্বারা আকাশ ও যমীন সহ পৃথিবীকে বুঝাননি বরং শুধুমাত্র যমীনকে বুঝিয়েছেন। কেননা পূর্ববর্তী আয়াত শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَالسَّمَاءَ بَنَيْنَاهَا بِأَيْدٍ وَإِنَّا لَمُوسِعُونَ
অর্থ : “আমি স্বীয় ক্ষমতাবলে আকাশ নির্মাণ করেছি এবং আমি অবশ্যই ব্যাপক ক্ষমতাশালী।” (পবিত্র সূরা যারিয়াহ্ শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৪৭)
অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক তিনি আকাশ ও যমীন সৃষ্টি করার বিষয় আলাদাভাবে বর্ণনা করেছেন। তাই আয়াত শরীফ (Quran 51:48) উনার মধ্যে اَرْضَ ‘আর্দ’ শব্দ মুবারক দ্বারা শুধুমাত্র যমীনকে বুঝানো হয়েছে, আকাশ ও যমীন সহ পৃথিবীকে বুঝানো হয়নি। আর তাই পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُمَا قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَوَّلُ بُقْعَةٍ وُّضِعَتْ فِـى الْاَرْضِ مَوْضِعُ الْبَيْتِ ثُـمَّ مُدَّتْ مِنْهَا الْاَرْضُ وَاِنَّ اَوَّلَ جَبَلٍ وَّضَعَهُ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ عَلـٰى وَجْهِ الْاَرْضِ اَبُوْ قُبَيْسٍ ثُـمَّ مُدَّتْ مِنْهُ الْـجِبَالُ.
অর্থ: “হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, পবিত্র বাইতুল্লাহ শরীফ তথা পবিত্র কা’বা শরীফ উনার স্থান মুবারকই হচ্ছেন পৃথিবীর বুকে সৃষ্টি করা সর্বপ্রথম স্থান বা ভূখ- মুবারক। অতঃপর সেখান থেকে সমস্ত যমীন প্রসারিত হয়, সৃষ্টি হয়। আর পৃথিবীর বুকে সর্বপ্রথম যেই পাহাড় সৃষ্টি করা হয়, তা হলো আবূ কুবাইস পাহাড়। অতঃপর সেখান থেকে সমস্ত পাহাড় বিস্তার লাভ করে, সৃষ্টি হয়।” সুবহানাল্লাহ! (শু‘য়াবুল ঈমান শরীফ ৫/৪৪৭, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ শরীফ ১/১৪০)
সুতরাং আয়াত শরীফ (Quran 51:48) উনার মধ্যে فَرَشْنَاهَا বলতে পবিত্র কা’বা শরীফ উনার স্থান মুবারক থেকে সমস্ত যমীন প্রসারিত করা বা সৃষ্টি করার বিষয় বুঝানো হয়েছে।
আর তাই মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَالْاَرْضَ مَدَدْنَاهَا وَاَلْقَيْنَا فِيْهَا رَوَاسِيَ وَاَنْبَتْنَا فِيْهَا مِنْ كُلِّ شَيْءٍ مَّوْزُونٍ.
অর্থ : “আমি যমীন বা ভূপৃষ্ঠকে বিস্তৃত করেছি এবং তার উপর পর্বতমালা স্থাপন করেছি এবং তাতে প্রত্যেক বস্তু সুপরিমিতভাবে উৎপন্ন করেছি।” (পবিত্র সূরা হিজর শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১৯)
وَالْاَرْضَ مَدَدْنَاهَا وَاَلْقَيْنَا فِيْهَا رَوَاسِيَ وَأَنبَتْنَا فِيهَا مِنْ كُلِّ زَوْجٍ بَـهِيجٍ.
অর্থ : “আমি যমীন বা ভূপৃষ্ঠকে বিস্তৃত করেছি এবং তার উপর পর্বতমালা স্থাপন করেছি এবং তাতে প্রত্যেক ধরনের নয়নাভিরাম উদ্ভিদ উদগত করেছি।” (পবিত্র সূরা ক্বাফ শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৭)
এই আয়াত শরীফদ্বয় (Quran 15:19, 50:7) উনাদের মধ্যে مَدَدْنَاهَا শব্দ মুবারক ব্যবহৃত হওয়ার পরপরই মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, وَاَلْقَيْنَا فِيْهَا رَوَاسِيَ অর্থাৎ আর তার (ভূপৃষ্ঠের) উপর পর্বতমালা স্থাপন করেছি। পর্বতমালা স্থাপনের মাধ্যমে যেহেতু ভূপৃষ্ঠকে দৃঢ়তা প্রদান করা হয়েছে যাতে ভূপৃষ্ঠ টলে না যায়। তাই আয়াত শরীফদ্বয় (Quran 15:19, 50:7) উনাদের মধ্যে ব্যবহৃত مَدَدْنَاهَا শব্দ মুবারক দ্বারা ‘বিস্তৃত করা হয়েছে বা আবরণ দেয়া হয়েছে’ বুঝানো হয়েছে। সুতরাং অত্র আয়াত শরীফদ্বয় উনাদের দ্বারা ভূপৃষ্ঠের অবয়ব বুঝানো হয়েছে, পৃথিবীর গঠন বুঝানো হয়নি। তাই অত্র আয়াত শরীফদ্বয় ব্যবহার করে ‘পৃথিবীর গঠন বিছানা বা কার্পেট এর মত’ বলা চরম মিথ্যাচারীতা।
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
الَّذِي جَعَلَ لَكُمُ الْأَرْضَ مَهْدًا وَسَلَكَ لَكُمْ فِيْهَا سُبُلًا وَأَنزَلَ مِنَ السَّمَاءِ مَاءً فَأَخْرَجْنَا بِهِ أَزْوَاجًا مِّن نَّبَاتٍ شَتّٰى.
অর্থ : “তিনি তোমাদের জন্যে যমীন বা ভূপৃষ্ঠকে আরামদায়কভাবে বসবাস যোগ্য করেছেন এবং তাতে চলার পথ করেছেন, আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষণ করেছেন এবং তা দ্বারা আমি বিভিন্ন প্রকার উদ্ভিদ উৎপন্ন করেছি।” (পবিত্র সূরা ত্বহা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৩)
الَّذِي جَعَلَ لَكُمُ الْأَرْضَ مَهْدًا وَجَعَلَ لَكُمْ فِيهَا سُبُلًا لَّعَلَّكُمْ تَـهْتَدُونَ.
অর্থ : “যিনি তোমাদের জন্যে যমীন বা ভূপৃষ্ঠকে আরামদায়কভাবে বসবাস যোগ্য করেছেন এবং তাতে তোমাদের জন্যে করেছেন পথ, যাতে তোমরা গন্তব্যস্থলে পৌঁছতে পারো।” (পবিত্র সূরা যুখরুফ শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১০)
এই আয়াত শরীফদ্বয় (Quran 20:53, 43:10) উনাদের মধ্যে جَعَلَ শব্দ মুবারক ব্যবহৃত হয়েছে, خَلَقْنَا বা بَنَيْنَا শব্দ মুবারক ব্যবহৃত হয়নি। সুতরাং অত্র আয়াত শরীফদ্বয় দ্বারা কখনোই পৃথিবীর গঠন বুঝানো হচ্ছে না, বরং যমীনের উপরের অবয়বকে ব্যক্ত করছে। আর অত্র আয়াত শরীফদ্বয় উনাদের মধ্যে ব্যবহৃত مَهْدًا শব্দ মুবারক দ্বারা যমীনকে যে মানুষের জন্য বসবাস যোগ্য আরামদায়ক করা হয়েছে সেটাই বুঝানো হয়েছে।
যেমন পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-
اُطْلُبُوْا الْعِلْمَ منَ الْمَهْدِ الَى الْلَحَدِ
অর্র্থ: “তোমরা দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত ইল্ম অর্জন করো।” (তাফসীরে রূহুল বয়ান)
অত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে مَهْدًا শব্দ মুবারক দ্বারা দোলনা বুঝানো হয়েছে। সুতরাং উপরোক্ত আয়াত শরীফদ্বয় (Quran 20:53, 43:10) উনাদের মধ্যে ব্যবহৃত مَهْدًا শব্দ মুবারক দ্বারা ‘আরামদায়কভাবে বসবাস যোগ্য করা হয়েছে’ বুঝানো হয়েছে।
কেননা, পৃথিবী ছাড়া অন্যান্য যে গ্রহ-উপগ্রহ রয়েছে, সেখানে মানুষ ও অন্যান্য জীবের সহজে আরাম ও স্বাচ্ছন্দের সাথে বসবাসের জন্য অনুকূল পরিবেশ নেই। কিন্তু পৃথিবীতে মানুষ ও অন্যান্য জীবের সহজে আরাম ও স্বাচ্ছন্দের সাথে বসবাসের জন্য অনুকূল পরিবেশ রয়েছে। তাই এখানে مَهْدًا শব্দ মুবারক ব্যবহৃত হয়েছে। দ্বিতীয়ত পৃথিবীর যমীনের ভিতরাংশ মানুষ ও অন্যান্য জীবের জন্য অত্যন্ত বিপদজনক। কেননা ভূপৃষ্ঠের নিচের স্তরগুলো গরম ও তরল যা কোন উদ্ভিদ ও প্রাণীর জন্য বাসোপযোগী নয়। আর তাই মহান আল্লাহ পাক তিনি যমীনের উপরে ২-৩৫ কিলোমিটার পুরু শক্ত ছালের মত একটি স্তর বা ভূত্বক সৃষ্টি করে যমীনকে বাসোপযোগী বাসস্থান করেছেন। যেমনভাবে মানুষ ঘরের মেঝের খসখসে, অমসৃণ ও ঠা-াভাব দূর করতে মাদুর, চাটাই, চট, গালিচা, কার্পেট ইত্যাদি দ্বারা পুরুত্ব বৃদ্ধি করে প্রতিকূল অবস্থাকে অনুকূলে নিয়ে আসে এবং পাশাপাশি মেঝের সৌন্দর্যও বৃদ্ধি করে থাকে।
আর তাই অত্র আয়াত শরীফদ্বয় উনাদের দ্বারা ‘পৃথিবীর গঠন বিছানা বা কার্পেট এর মত’ বলা চরম মিথ্যাচারীতা। কেননা আয়াত শরীফদ্বয় উনাদের দ্বারা পৃথিবীর গঠন বুঝানো হয়নি বরং যমীনের অবয়ব বুঝানো হয়েছে।
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
وَاللهُ جَعَلَ لَكُمُ الْاَرْضَ بِسَاطًا
অর্র্থ: “মহান আল্লাহ পাক তিনি তোমাদের জন্যে যমীনকে করেছেন আচ্ছাদিত।” (পবিত্র সূরা নূহ শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১৯)
অত্র আয়াত শরীফ (Quran 71:19) উনার মধ্যেও جَعَلَ শব্দ মুবারক ব্যবহৃত হয়েছে, خَلَقْنَا বা بَنَيْنَا শব্দ মুবারক ব্যবহৃত হয়নি। সুতরাং অত্র আয়াত শরীফদ্বয় দ্বারা কখনোই পৃথিবীর গঠন বুঝানো হচ্ছে না, বরং যমীনের উপরের অবয়বকে ব্যক্ত করছে। আর অত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে ব্যবহৃত بِسَاطًا শব্দ মুবারক উনার অর্থ হবে “আচ্ছাদিত করা হয়েছে”। কেননা পরবর্তী আয়াত শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
لِّتَسْلُكُوا مِنْهَا سُبُلًا فِجَاجًا
অর্র্থ: “যাতে তোমরা চলাফেরা করো প্রশস্ত পথে।” (পবিত্র সূরা নূহ শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ২০)
এই আয়াত শরীফ উনার মধ্যে ব্যবহৃত لِ ‘লি’ অব্যয় দ্বারা পূর্বের بِسَاطًا শব্দ মুবারককে পরবর্তী تَسْلُكُوا শব্দ মুবারক উনার সাথে সম্পর্কযুক্ত করার কারণে بِسَاطًا শব্দ মুবারক উনার অর্থ হবে “আচ্ছাদিত করা হয়েছে”। সুতরাং উপরোক্ত আয়াত শরীফদ্বয় উনাদের অর্থ হবে- “মহান আল্লাহ পাক তিনি তোমাদের প্রশস্ত পথে চলাফেরা করার জন্যে যমীনকে আচ্ছাদিত করেছেন।”
আর যমীন যেহেতু বন্ধুর অর্থাৎ পাহাড়-পর্বত থাকার কারণে কোথাও উঁচু আবার কোথায়ও নিচু। কুনো ব্যাঙের চামড়ার মতো। আর তাই মহান আল্লাহ পাক তিনি যমীনের উপরে ভূত্বক সৃষ্টির মাধ্যমে চলাফেরা করার জন্যে যমীনকে আচ্ছাদিত করেছেন।
এই আয়াত শরীফ উনার মধ্যেও পৃথিবীর গঠন সম্পর্কে বর্ণিত হয়নি বরং যমীনের অবয়বের বর্ণনা দেয়া হয়েছে।
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
اَلَـمْ نَـجْعَلِ الْاَرْضَ مِهَادًا.
অর্র্থ: “আমি কি করিনি যমীনকে দোলনার মতো দোদুল্যমান?” (পবিত্র সূরা নাবা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৬)
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
وَالْـجِبَالَ اَوْتَادًا
অর্র্থ: “এবং পর্বতমালাকে পেরেক?” (পবিত্র সূরা নাবা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৭)
যেহেতু মহান আল্লাহ পাক তিনি আয়াত শরীফ (Quran 78:6) উনার মধ্যে مِهَادًا শব্দ মুবারক ব্যবহার করেছেন আর পরবর্তী আয়াত শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ করেছেন, وَالْـجِبَالَ اَوْتَادًا অর্থাৎ পর্বতমালাকে পেরেক বা গোঁজ বানিয়েছেন। আর পেরেক বা গোঁজ দেয়ার প্রয়োজন পড়ে তখনই যখন কোন স্থানচ্যুতি বা জোড়া লাগানোর বিষয় থাকে। তাই প্রথম আয়াত শরীফ (Quran 78:6) উনার অর্থ হবে “আমি কি করিনি যমীনকে দোলনার মতো দোদুল্যমান?”। দোদুল্যমান বলেই স্থিতিশীল করতে পর্বতমালাকে পেরেক বা গোঁজ হিসেবে বসানো হয়েছে।
এই বিষয়টিকেই পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত হয়েছে এভাবে-
وَاَلْقَىٰ فِي الْاَرْضِ رَوَاسِيَ اَن تَـمِيْدَ بِكُمْ وَأَنْـهَارًا
অর্থ : “এবং তিনি যমীনের উপর পর্বতমালা স্থাপন করেছেন যে, কখনো যেন তা তোমাদেরকে নিয়ে হেলে-দুলে না পড়ে।” (পবিত্র সূরা নাহল শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১৫)
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
وَالْاَرْضَ بَعْدَ ذٰلِكَ دَحَاهَا
অর্থ : “পৃথিবীকে এরপরে বিস্তৃৃত করেছেন।” (পবিত্র সূরা নাযি‘য়াত শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৩০)
অত্র আয়াত শরীফ (Quran 79:30) উনার মধ্যে دَحَاهَا শব্দ মুবারক ‘ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে, বিস্তৃত করা হয়েছে’ অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।
কেননা হযরত ইমাম আবূ বকর মুহম্মদ ইবনে ইবরাহীম ইবনে মুনযির নীশাপূরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার স্বীয় তাফসীর গ্রন্থে উল্লেখ করেন-
عَنْ حَضْرَتْ اَبِـىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ اِنَّ الْكَعْبَةَ خُلِقَتْ قَبْلَ الْاَرْضِ بِاَلْفَىْ سَنَةٍ وَّهِىَ قَرَارُ الْاَرْضِ اِنَّـمَا كَانَتْ خَشَفَةً اَوْ حَشَفَةً عَلَى الْمَاءِ عَلَيْهَا مَلَكَانِ مِنَ الْمَلائِكَةِ يُسَبِّحَانِ اللَّيْلَ وَالنَّهَارَ اَلْفَىْ سَنَةٍ فَلَمَّا اَرَادَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ اَنْ يَّـخْلُقَ الاَرْضَ دَحَاهَا مِنْهَا فَجَعَلَهَا فِىْ وَسَطِ الْاَرْضِ.
অর্থ: “হযরত আবূ হুরায়রাহ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নিশ্চয়ই পৃথিবী সৃষ্টির ২০০০ বছর পূর্বে পবিত্র কা’বা শরীফ সৃষ্টি করা হয়। আর পবিত্র কা’বা শরীফই হচ্ছেন পৃথিবীর অবস্থানস্থল। যা পানির উপর জমাটবদ্ধ পানি/বরফ অথবা ছোট দ্বীপ আকারে ছিলেন। পবিত্র কা’বা শরীফ উনার উপর হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্য থেকে দু’জন সম্মানিত ফেরেশতা আলাইহিমাস সালাম উনারা রাত-দিন একাধারে ২০০০ বছর সম্মানিত তাসবীহ পাঠরত অবস্থায় ছিলেন। অতঃপর যখন মহান আল্লাহ পাক তিনি পৃথিবী সৃষ্টি করার ইচ্ছা মুবারক করেন, তখন পবিত্র কা’বা শরীফ উনার থেকে পৃথিবীকে বিস্তার করেন। তারপর পবিত্র কা’বা শরীফ উনাকে করেন পৃথিবীর ওয়াসাত্ব তথা মধ্যস্থান।” সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে ইবনে মুনযির ১/২৯৪, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১/১৪০)
সুতরাং অত্র আয়াত শরীফ উনার দ্বারা কখনোই পৃথিবীর গঠন বিছানা বা কার্পেটের মতো বুঝানো হয়নি। বরং এই বক্তব্য দ্বারা মূর্খতা ও মিথ্যাচারের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। যদি অত্র আয়াত শরীফ (Quran 79:30) দ্বারা পৃথিবীর গঠন বিছানা বা কার্পেটের মতোই বুঝায়। তাহলে পরের আয়াত শরীফ দ্বারা সার্বিক অর্থ দাঁড়াবে যে, বিছানার মধ্য থেকে প্রসবণ নির্গত হয়। কি হাস্যকর ব্যাপার।
কেননা মহান আল্লাহ পাক তিনি পরের আয়াত শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
اَخْرَجَ مِنْهَا مَاءَهَا وَمَرْعَاهَا
অর্থ: “তিনি (মহান আল্লাহ পাক) এর মধ্য থেকে এর পানি ও ঘাম নির্গত করেছেন।” (পবিত্র সূরা নাযি‘য়াত শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৩১)
অতএব এই আয়াত শরীফ দ্বারা ‘পৃথিবীর গঠন বিছানা বা কার্পেট এর মত’ বলাও চরম মিথ্যাচারীতা শামীল।
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَالْاَرْضِ وَمَا طَحَاهَا
অর্থ: “কসম! যমীনের এবং তাতে যা ছড়িয়ে আছে বা ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে।” (পবিত্র সূরা শামস্ শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৬)
অত্র আয়াত শরীফ (Quran 91:6) উনার মধ্যে ব্যবহৃত مَا طَحَاهَا অর্থ তাতে যা ছড়িয়ে আছে বা ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে। শুরুতে مَا বর্ণটি মাউছূলা যে বা যা অর্থে ব্যবহার হয় এবং শেষে هَا বর্ণটি যমীরে মানছূব মুত্তাছিল।
সুতরাং অত্র আয়াত শরীফ উনার দ্বারা যমীনে যা কিছু ছড়িয়ে আছে বা ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে সে সমস্ত বিষয়কে বুঝানো হয়েছে। আর যমীনে ছড়িয়ে রয়েছে পাহাড়-পর্বত, গাছপালা, মানুষ, বিভিন্ন প্রাণী ইত্যাদি। তাই এই আয়াত শরীফ দ্বারাও পৃথিবীর গঠন বুঝায়নি বলে ‘পৃথিবীর গঠন বিছানা বা কার্পেট এর মত’ বলা অজ্ঞতা ও মূর্খতার পরিচায়ক।
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
وَاِلَى الْاَرْضِ كَيْفَ سُطِحَتْ
অর্থ: “এবং যমীনের দিকে লক্ষ্য করে না যে, তার উপরিতল কিভাবে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে?” (পবিত্র সূরা গ¦শিয়াহ্ শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ২০)
এই আয়াত শরীফ (Quran 88:20) উনার মধ্যেও ভূত্বক বা যমীনের উপরিতলকে ছড়িয়ে দেয়ার ব্যাপারে বলা হয়েছে। যমীনের উপরিতলকে ছড়িয়ে দেয়া উল্লেখ করলে যদি পৃথিবীর গঠন বিছানা বা কার্পেট এর মত হয়ে যায়। তাহলে বিভিন্ন পশু যেমন উট, ঘোড়া, গাধা বা খচ্চরের পিঠে আরোহণের জন্য যখন গদি/আসন বিছানো হয়, যাকে হাওদা, পর্যাণ, জিন, পালান ইত্যাদি নামে অভিহিত করা হয়। পশুর পিঠে এসব গদি/আসন বিছানোর কারণে পশুর গঠন হাওদার মতো বা পর্যাণের মতো বা জিনের মতো বা পালানের মতো বলা হয় কি? হয় না। তখন কেন বলা হয় না, কেউ কখনো বেলনাকৃতি (Cylindrical) বা মোচাকৃতি হাওদা দেখেনি! তাহলে যমীনের উপরিভাগকে বিস্তৃত বা ছড়িয়ে দেয়ার কারণে কেন বলা হচ্ছে পৃথিবীর গঠন বিছানা বা কার্পেট এর মত? কেউ কখনো স্ফেরিক্যাল কার্পেট দেখেনি! এই দ্বৈত নীতি বা কপটতার কারণ কি? আর দ্বৈত নীতি বা কপটতা যারা অবলম্বন করে তারা মুনাফিক্ব।
অতএব ‘পৃথিবীর গঠন বিছানা বা কার্পেট এর মত’ প্রমাণ করতে নাস্তিকদের উল্লেখিত প্রত্যেকটি আয়াত শরীফ উনার মধ্যে যে শব্দ মুবারক ব্যবহৃত হয়েছে, উক্ত শব্দ মুবারক উনাদের আম বা সাধারণ অর্থ হচ্ছে ‘বিস্তৃত করা’ আর নির্দিষ্ট আয়াত শরীফ অনুযায়ী অর্থ করা হলে পূর্ববর্তী বা পরবর্তী আয়াত শরীফ উনার সাথে সম্পৃক্ত বিষয়ের সম্বন্ধযুক্ত অর্থ হবে।
নিচের সারণীতে তা উল্লেখ করা হলো-
cweÎ
m~iv kixd |
cweÎ
AvqvZ kixd bs |
g~j kã
gyeviK |
A_© |
cweÎ m~iv wnRi kixd |
19 |
مَدَدْنَاهَا |
we¯Í…Z Kiv,
cÖmvwiZ Kiv, m¤úªmvwiZ Kiv |
cweÎ m~iv K¡vd kixd |
7 |
||
cweÎ m~iv Z¡nv kixd |
53 |
مَهْدًا |
†`vjbv |
cweÎ m~iv hyLiæd kixd |
10 |
||
cweÎ m~iv bvev kixd |
6 |
مِهَادًا |
†`vjbv |
cweÎ m~iv hvwiqvZ kixd |
48 |
فَرَشْنَاهَا |
weQv‡bv |
cweÎ m~iv b~n kixd |
19 |
بِسَاطًا |
Av”Qvw`Z Kiv |
cweÎ m~iv bvwhÔAvZ kixd |
30 |
دَحَاهَا |
Qwo‡q †`qv n‡q‡Q, we¯Í…Z Kiv n‡q‡Q |
cweÎ m~iv Mvwkqvn kixd |
20 |
سُطِحَتْ |
DcwiZj Qwo‡q †`qv |
cweÎ m~iv kvgm kixd |
6 |
طَحَاهَا |
hv Qwo‡q
Av‡Q ev Qwo‡q †`qv n‡q‡Q |
উপরোক্ত আলোচনা হতে বুঝা যাচ্ছে যে, ১০ খানা আয়াত শরীফ উনাদের মধ্যে শুধুমাত্র পবিত্র সূরা ত্বহা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৩ এবং পবিত্র সূরা যুখরুফ শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১০ উনাদের দ্বারা যমীন বা ভূপৃষ্ঠকে আরামদায়কভাবে বসবাস যোগ্য আবাসস্থল হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। আর তাই এক দিকে ১০ খানা আয়াত শরীফ ব্যবহার করে পৃথিবীর গঠন বিছানা বা কার্পেটের মতো বলা যেমন মিথ্যাচারিতা। কেননা আয়াত শরীফদ্বয়ে পৃথিবীর গঠন বর্ণিত হয়নি বরং যমীনের অবয়ব বর্ণিত হয়েছে। অন্যদিকে যমীনকে “আরামদায়কভাবে বসবাস যোগ্য আবাসস্থল” অর্থ না নিয়ে বরং “বিছানা বা কার্পেটের মতো” শাব্দিক অর্থ গ্রহণ করে অপব্যাখ্যা করা হয়েছে।
এখন যদি ধরেও নেয়া হয় যমীনের অবয়ব “বিছানা বা কার্পেটের মতো”, এর দ্বারা তো আর এটা বুঝাবে না যে, যমীনকে বিছানা বা কার্পেট হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। কেননা যদি বলা যাহিদ সিংহের মতো- এর দ্বারা এটা বুঝায় না যে, যাহিদ স্বয়ং সিংহ। কেউ কি কখনো দু’পায়া সিংহ দেখেছে? বরং সিংহের যেমন অনেক শক্তি বা সাহস আছে, যাহিদেরও অনেক শক্তি বা সাহস আছে। তবে যাহিদ মানুষই আছে পশু হয়ে যায়নি।
ঠিক তেমনি যমীনের অবয়ব “বিছানা বা কার্পেটের মতো” হওয়ার অর্থ জীবের বসবাসের জন্য পৃথিবী অন্যান্য গ্রহ-উপগ্রহের মতো প্রতিকূল নয় বরং অনূকুল। দ্বিতীয়ত যমীনের উপরে ২-৩৫ কিলোমিটার পুরু ভূত্বক যমীনকে মানুষ ও অন্যান্য জীবের সহজে আরাম ও স্বাচ্ছন্দের সাথে বাসোপযোগী বাসস্থান করেছে। তাই এটা বলার সুযোগ নেই যে, “কেউ কখনো স্ফেরিক্যাল কার্পেট দেখেনি! কেন মহান আল্লাহ পাক তিনি পৃথিবীর গঠনের জন্যে ÒKurahÓ (Arabic for spherical) শব্দখানা ব্যবহার করলেন না?” নাঊযূবিল্লাহ!
তাহলে কি পশুর পিঠে বিছানো হাওদা বা পালানের ব্যাপারে বলতে হবে যে, কেউ কখনো বেলনাকৃতি (Cylindrical) বা মোচাকৃতি হাওদা বা পালান দেখেনি!
বস্তুত নাস্তিকরা পবিত্র কুরআন শরীফ উনার অনুবাদের ক্ষেত্রে নিজেদের মনগড়া অনুবাদকে গ্রহণ করার কারণেই এই বিপত্তির উদ্ভব ঘটছে। আর তাদের ইসলাম বিরোধী ষড়যন্ত্রে অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছে কিছু তথাকথিত ইসলামী চিন্তাবিদ ও উলামায়ে সূ’দের মনগড়া অনুবাদ। কেননা ১০ খানা আয়াত শরীফ উনাদের মধ্যে বিভিন্ন ধরণের শব্দ মুবারক ব্যবহৃত হয়েছে। কিন্তু উক্ত আরবী শব্দ মুবারক উনাদের অনুবাদ করার সময় সব শব্দ মুবারক সম্পর্কে একই অর্থ গ্রহণ করা হয়েছে। নাঊযূবিল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি পৃথিবীর গঠনের জন্যে كروى “কুরওয়া” শব্দখানা ব্যবহার করেননি বিধায় পৃথিবীর গঠন সমতল হয়ে গেল? অর্থাৎ পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে পৃথিবীর গঠনের জন্যে كروى “কুরওয়া” শব্দখানার ব্যবহার নেই বলেই কি পৃথিবীর আকৃতি গোলাকার হবে না? কেননা كروى “কুরওয়া” শব্দখানা ব্যবহৃত হওয়ার পরও সাথে যদি নেতিবাচক অব্যয়যুক্ত থাকে, তাহলে গোলাকার নয় বুঝাবে। সুতরাং كروى “কুরওয়া” শব্দখানার ব্যবহার না থাকলেই পৃথিবীর আকৃতি গোলাকার নয় বলে প্রমাণ হয় না। নাস্তিকদের প্রতি চ্যালেঞ্জ থাকলো।
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
وَالسَّمَاءِ ذَاتِ الْـحُبُكِ.
অর্থ : “আর আকাশ, যা পথ ও কক্ষপথ দ্বারা পরিপূর্ণ।” (পবিত্র সূরা জারিয়াহ শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৭)
অর্থাৎ পৃথিবীসহ সমস্ত গ্রহ-নক্ষত্রই কক্ষপথে ঘূর্ণায়মান রয়েছে। আর যেহেতু ঘূর্ণায়মান রয়েছে তাই পৃথিবী আকৃতিও গোল।
আবার মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
اَلَـمْ تَرَ اَنَّ اللهَ يُوْلِجُ اللَّيْلَ فِي النَّهَارِ وَيُوْلِجُ النَّهَارَ فِي اللَّيْلِ
অর্থ : “আপনি কি দেখেন না যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি রাত্রিকে দিবসে প্রবিষ্ট করেন এবং দিবসকে রাত্রিতে প্রবিষ্ট করেন?” (পবিত্র সূরা লুক্বমান শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ২৯)
অত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে ব্যবহৃত ولـج শব্দ মুবারক দ্বারা বুঝায় যে ধীরে ধীরে রাত দিনের মধ্যে প্রবিষ্ট হয় আর দিনও ধীরে ধীরে রাতের মধ্যে প্রবিষ্ট হয়। আর পৃথিবী গোলাকৃতি বলেই এভাবে ধীরে ধীরে ঘটে থাকে। যদি পৃথিবী সমতল হতো তাহলে এই পরিবর্তনদ্বয় হঠাৎ করে সংঘটিত হতো।
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
يُكَوِّرُ اللَّيْلَ عَلَى النَّهَارِ وَيُكَوِّرُ النَّهَارَ عَلَى اللَّيْلِ ۖ
অর্থ : “তিনি রাত্রিকে দিবস দ্বারা আচ্ছাদিত করেন এবং দিবসকে রাত্রি দ্বারা আচ্ছাদিত করেন।” (পবিত্র সূরা যুমার শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৫)
অত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে ব্যবহৃত كَوِّرُ শব্দ মুবারক দ্বারা আচ্ছাদিত করা বা কু-লী পাকানো বুঝায়। যেমন করে ঘূর্ণিঝড় বাতাসের কু-লী পাকিয়ে এগোতে থাকে। আর পৃথিবী গোলাকৃতি বলেই এভাবে কু-লী পাকিয়ে রাত-দিন আর্বিতত হতে থাকে।
অতএব দেখা যাচ্ছে যে, পবিত্র কুরআন শরীফ উনার আলোকে পৃথিবীর আকৃতি মূলত গোলাকার, মোটেও সমতল নয়।
নাস্তিকদের এ ধরণের মিথ্যাচারের প্রেক্ষিতে তাদেরকে ধারণাতীত আযাবের সুসংবাদ প্রদান করা হচ্ছে। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
فَأَمِنَ الَّذِيْنَ مَكَرُوا السَّيِّئَاتِ اَنْ يَّـخْسِفَ اللهُ بِـهِمُ الْاَرْضَ اَوْ يَأْتِيَهُمُ الْعَذَابُ مِنْ حَيْثُ لَا يَشْعُرُوْنَ.
অর্থ : “যারা কুচক্র করে, তারা কি এ বিষয়ে ভয় করে না যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি তাদেরকে ভূগর্ভে বিলীন করে দিবেন কিংবা তাদের কাছে এমন জায়গা থেকে আযাব আসবে যা তাদের ধারণাতীত।” (পবিত্র সূরা নাহল শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৪৫)