আল্লাহ সর্ব প্রথম কি সৃষ্টি করলেন? -মহাকাশ নাকি পৃথিবী
নাস্তিকদের আপত্তি : আল্লাহ সর্ব প্রথম কি সৃষ্টি করলেন? -মহাকাশ (Quran 79:27) নাকি পৃথিবী (Quran 41:10-11, 2:29)!
খণ্ডন : মহান আল্লাহ পাক তিনি সর্বপ্রথম মহাকাশ সৃষ্টি করেছেন। তার অনেক পরে পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন।
মহান আল্লাহ পাক তিনি যেহেতু আগে মহাকাশ সৃষ্টি করেছেন, তাই ইরশাদ মুবারক করেন-
اَاَنْتُمْ اَشَدُّ خَلْقًا اَمِ السَّمَاءُ ۚ بَنَاهَا. رَفَعَ سَـمْكَهَا فَسَوَّاهَا. وَاَغْطَشَ لَيْلَهَا وَاَخْرَجَ ضُحَاهَا. وَالْاَرْضَ بَعْدَ ذٰلِكَ دَحَاهَا.
অর্থ : “তোমাদের সৃষ্টি অধিক কঠিন না আকাশের, যা তিনি নির্মাণ করেছেন? তিনি একে উচ্চ করেছেন ও সুবিন্যস্ত করেছেন। তিনি এর রাত্রিকে করেছেন অন্ধকারাচ্ছন্ন এবং এর সূর্যোলোক প্রকাশ করেছেন। যমীনকে এর পরে বিস্তৃত করেছেন।” (পবিত্র সূরা নাযিয়াত শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ২৭-৩০)
সূর্যালোক প্রকাশ সূর্যের উপস্থিতিকেই প্রমাণ করে। আবার রাতের অন্ধকার সূর্যের ঘূর্ণনকে প্রমাণ করে। অর্থাৎ সৌরজগতের উপস্থিতি প্রমাণ করে। রাত-দিনের বর্ণনার পর মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করছেন-
وَالْاَرْضَ بَعْدَ ذٰلِكَ دَحَاهَا
অর্থ : “যমীনকে এর পরে বিস্তৃত করেছেন।”
সুতরাং রাতের অন্ধকার আর সূর্যালোক প্রকাশের পরে যমীনকে বিস্তৃত করেছেন। আর পানির উপর অবস্থিত বিধায় বিস্তৃত করার পর যমীন টলমল করছিল, তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি এর উপর অটল পর্বত স্থাপন করে দেন। তাই মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَجَعَلَ فِيْهَا رَوَاسِيَ مِن فَوْقِهَا وَبَارَكَ فِيْهَا وَقَدَّرَ فِيْهَا اَقْوَاتَـهَا فِي اَرْبَعَةِ اَيَّامٍ سَوَاءً لِّلسَّائِلِيْنَ. ثُـمَّ اسْتَوٰى اِلٰى السَّمَاءِ وَهِيَ دُخَانٌ فَقَالَ لَـهَا وَلِلْاَرْضِ ائْتِيَا طَوْعًا اَوْ كَرْهًا قَالَتَا اَتَيْنَا طَائِعِيْنَ.
অর্থ : “তিনি যমীনের উপরিভাগে অটল পর্বতমালা স্থাপন করেছেন, তাতে কল্যাণ নিহিত রেখেছেন এবং চার ধাপের মধ্যে তাতে তার খাদ্যের ব্যবস্থা করেছেন-পূর্ণ হল জিজ্ঞাসুদের জন্যে। অতঃপর তিনি আকাশের দিকে মনোযোগ দিলেন যা ছিল ধু¤্রকুঞ্জ, অতঃপর তিনি তাকে ও যমীনকে বললেন, তোমরা উভয়ে আসো ইচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায়। তারা বলল, আমরা স্বেচ্ছায় আসলাম।” (পবিত্র সূরা হা-মীম সাজদাহ্ শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১০-১১)
هُوَ الَّذِىْ خَلَقَ لَكُمْ مَّا فِي الْاَرْضِ جَـمِيْعًا ثُـمَّ اسْتَوٰى اِلٰى السَّمَاءِ فَسَوَّاهُنَّ سَبْعَ سَـمَاوَاتٍ ۚ وَهُوَ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيْمٌ.
অর্থ : “তিনিই সে সত্ত্বা যিনি সৃষ্টি করেছেন তোমাদের জন্য যা কিছু যমীনে রয়েছে সে সমস্ত। তারপর তিনি মনোসংযোগ করেছেন আকাশের প্রতি। বস্তুতঃ তিনি তৈরী করেছেন সাত আসমান। আর মহান আল্লাহ পাক তিনি সর্ববিষয়ে অবহিত।” (পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ২৯)
উপরোক্ত আয়াত শরীফদ্বয় (Quran 41:11, 2:29) উনাদের মধ্যে ব্যবহৃত ثُـمَّ اسْتَوٰى শাব্দিক অর্থে যদিও “তারপর মনোসংযোগ করেন” কিন্তু এখানে ثُـمَّ কালক্ষেপণ বা ধারাবাহিকতা বুঝাতে ব্যবহৃত হয়নি বরং আসমান ও যমীন- এই দুই সৃষ্টির মধ্যে পার্থক্য নির্ণীত হয়েছে। আর তাই “অতঃপর তিনি আকাশের দিকে মনোযোগ দিলেন” এর অর্থ যমীন সৃষ্টি করে আকাশের দিকে মনযোগ দিলেন এমন নয়।
মূর্খ নাস্তিকরা এ ধরণের আপত্তির অবতারণার দ্বারা তাদের মূর্খতাকেই প্রকাশ করেছে।
0 Comments:
Post a Comment