সুওয়াল : অনেককে দেখা যায়, গরু-ছাগলের মূল্য নির্ধারণ করে অন্যকে বরগা দিতে। পরবর্তীতে
তা বিক্রি করে নির্ধারিত মূল্যসহ অতিরিক্ত টাকার অর্ধেক মালিকের এবং বাকী অর্ধেক
যিনি বরগা নিয়েছেন তার, এটা কি জায়েয?
জাওয়াব: না,
জায়িয নেই। তবে গরু-ছাগল মালিকেরই থাকবে। বিক্রি করলে যা
হবে পুরোটাই মালিক পাবে। গরু-ছাগল প্রতিপালনকারি চরাইবার জন্য বেতন পাবেন।
অনির্ধারিত মজুরী জায়িয নেই। (হেদায়া, দুররুল মুখতার, ফতওয়া আমিনিয়া)
আবা-১৬
সুওয়াল: ওয়েস্ট কোট? মুজিব কোট ইত্যাদি পরিধান করা কি? বর্তমানে
দেখা যায়,
অনেক আলেম এটা পরিধান করে থাকে। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
কি এ ধরণের কোন লিবাস পরিধান করেছিলেন?
জাওয়াব: নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম লুঙ্গি তথা ইজার, পাঞ্জাবী, জুব্বা,
পাগড়ী, টুপি, রুমাল, চাদর মুবারক ইত্যাদি ব্যতীত অন্য কোন পোশাক পরিধান করেননি। কোট, ওয়েস্ট কোট?
মুজিব কোট? জওহর কোট? শিরওয়ানী, আসকান,
গেঞ্জি ইত্যাদি কোন লিবাস পরিধান করেননি। হযরত
ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, তাবেঈন ও
তাবে তাবেঈনগণও না। বিজাতীয় পোশাক যে কেউ পরিধান করুক না কেন তা কখনো সুন্নত
হিসাবে গণ্য হবেনা। বিজাতীয় পোশাক পরিধানকারী পীর সাহেব, সূফী, দরবেশ,
আলেম, মুফতী, মুহাদ্দিস, মুফাসসির,
ওয়ায়েজ, আম-খাছ যে কেউ হোক না কেন তাদের
আমল দলীল হিসাবে গ্রহণযোগ্য হবেনা। উপরোক্ত বিজাতীয় পোশাক পরিধান করা বিদয়াতে
সাইয়্যিয়াহ্। আর যদি তাশাব্বুহ্র জন্য হয়, তাহলে
হারাম হবে।
আবা-১৬
সুওয়াল : নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও
উম্মুল মু’মিনীনগণ উনাদের হুজরাসমূহ কখন হতে মসজিদে নববীর অন্তর্ভূক্ত করা হয়?
জাওয়াব : খলীফা ওয়ালিদ বিন আব্দুল মালেকের শাসনামলে উনার তত্ববধানে এ সমস্ত পবিত্র হুজরা
শরীফ মসজিদে নববীর অন্তর্ভূক্ত করা হয়। এ সময় পবিত্র মদীনা শরীফ উনার গভর্নর ছিলেন, হযরত ওমর বিন আব্দুল আযীয রহমতুল্লাহি আলাইহি এ ঘটনা যেদিন সংঘটিত হয়, মদীনাবাসীগণ সেদিন চোখের পানি রাখতে পারেননি।
আবা-১৬
জাওয়াব: না,
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল
মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
তিনি কখনো পায়জামা (সালাওয়ার) পরিধান করেননি। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সর্বদা সেলাইবিহীন লুঙ্গি পরিধান করেছেন।
হযরত উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু মিনা থেকে একটি সালাওয়ার খরিদ করে নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে
হাদীয়াস্বরূপ দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি তা পরিধান করেননি। হযরত ইমাম আহমদ ইবনে
হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেছেন, এটাই বিশুদ্ধ মত, এটা মুসনদে আহমদে উল্লেখ আছে। (শামায়েলে তিরমিযী, খাসায়েলে নববী, মাদারেজুন নুবুওওত, জামেউল ওসায়েল, যাদুল মা’আদ ইত্যাদি)
আবাি-১৬
সুওয়াল: নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কি সর্বদা পাগড়ী পড়ে নামায পড়েছেন? পাগড়ী না পড়লে কি অসুবিধা আছে?
জাওয়াব : হ্যাঁ, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
সর্বদা পাগড়ী মুবারক পরিধান করে নামায পড়েছেন। শুধু তাই নয়, যখনই ঘর থেকে বের হতেন, পাগড়ী মুবারকসহ বের হতেন। এমনকি
ঘরের ভিতরেও পাগড়ী মুবারক ব্যবহার করতেন। পাগড়ী পরিধান করা দায়েমী সুন্নাত।
যুদ্ধের ময়দানেও লৌহ শিরস্ত্রানের উপর পাগড়ী মুবারক ছিল। নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “মানুষ যখন পাগড়ী পরা ছেড়ে দিবে, তখন তাদের থেকে দ্বীন চলে যাবে।” পাগড়ীসহ নামায পড়লে ৭০ গুণ বেশী
সাওয়াব হয়। (সিহাহ সিত্তাহ্, মিরকাত, মাদারেজুন নবুওওয়াত, সিরাতুন নবী, জামেউল ওসায়েল, সিরাতে হালাবী ইত্যাদি)
আবা-১৬
সুওয়াল : নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কি রুমাল ব্যবহার করেছেন?
জাওয়াব : হ্যাঁ,
আমাদের প্রাণের আঁকা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম তিনি রুমাল ব্যবহার করেছেন। (উসওয়াতুর রসূল, আল মুরশিদুল আমীন)
আবা-১৬
সুওয়াল: আমাদের বি-বাড়িয়াতে কোন কোন মসজিদে জানাযার নামায পড়ার জন্য যোহরের নামাযের
ফরজ নামায পড়ার পর বেরিয়ে যায় এবং জানাযার নামাযান্তে পূণরায় যোহরের বাকী নামায
আদায় করে। তারা যুক্তি প্রদর্শন করে, জানাযা হলো ফরজে ক্বিফায়া সুতরাং
সুন্নাতের পূর্বে তা আদায় করতে হবে। এ অভিমত কতটুকু শরীয়ত সম্মত?
জাওয়াব : জানাযার নামায সুন্নাতের পরে পড়তে হবে এটাই বিশুদ্ধ মত। জানাযার নামায ফরজে
ক্বিফায়াহ্,
একজন লোক আদায় করলেই এলাকা বা গ্রামের সমস্ত লোকের হক আদায়
হয়ে যায়। কিন্তু সুন্নাতে মোয়াক্কাদা নামায প্রতিটি লোককেই পড়তে হবে, কেউ বাদ দিলে সে গুণাহ্গার হবে। তাছাড়া সুন্নাত নামায হলো সুন্নাতে মোয়াক্কাদা
আইনী (মুরাবিতা মুত্তাসিল) অর্থাৎ ফরজ নামাযের সাথে মিলিত সুন্নাত। তাই জানাযার
নামায সুন্নাতের পর পড়তে হবে। (বাহরুর রায়েক, হাদিয়াতুল মুছাল্লীন, ফতওয়া দেওবন্দ, আহ্সানুল ফাতাওয়া, ফাতাওয়া রশিদিয়া)
আবা-১৬
জাওয়াব : ‘মুজাদ্দিদ’
উনার কাজ হলো- ১। ওলামায়ে হক্বদেরকে হক পথে কায়েম থাকার
জন্য সাহায্য করা এবং ওলামায়ে ‘ছু’দের তথা
দুনিয়াদার আলেমদের গুমরাহী হতে পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ,
পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ অনুযায়ী আমল করতে
সাহায্য করা।
২। বিদয়াত দূরিভূত করে সুন্নাহ্ প্রতিষ্ঠা করা।
৩। মাসয়ালা-মাসায়েলের
সূত্রে মানুষ হারাম কার্যে লিপ্ত হলে তা হতে হালাল পথ প্রদর্শন করা।
৪। খিলাফত ভিত্তিক রাষ্ট্র
পরিচালনার কোশেশ করা ইত্যাদি।
উপরোক্ত জাওয়াব সংক্ষেপে দেয়া হলো। ভবিষ্যতে
বিস্তারিতভাবে দলীল-আদীল্লাহ দিয়ে প্রকাশ করা হবে ইনশাআল্লাহ।
আবা-১৬
সুওয়াল: হযরত ওমর ফারুক আলাইহিস সালাম তিনি খলীফা হওয়ার পর বিভিন্ন প্রদেশে বিশেষ করে আযমী দেশসমূহে যে সমস্ত ফরমান পাঠিয়েছেন, তাতে কি ছিল? জানালে কৃতজ্ঞ হবো।
জাওয়াব: আমিরুল মু’মিনীন হযরত ওমর ইবনুল খাত্তাব আলাইহিস সালাম উনার খিলাফতকালে ইসলামী রাজ্যের সীমানা বিস্তৃত হতে
থাকে। এমনকি শক্তিধর রোম-পারশ্যের তখত উলট-পালট হয়ে যায়। দলে দলে মানুষ সম্মানিত
দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করতে থাকে, সাথে সাথে আযমীদের চাল-চলন ও
লিবাসের নমূনাও ইসলামে অনুপ্রবেশ করে। এ প্রসঙ্গে আমিরুল মু’মিনীন হযরত ওমর ইবনুল খাত্তাব আলাইহিস সালাম নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুন্নত মুবারক ও পবিত্র কুরআন শরীফ উনার বিধানকে
বাস্তবায়ন ও আযমীদের (অনারব) চাল-চলন ও লিবাসকে পরিহার করে চলার জন্য বিভিন্ন দেশ
ও প্রদেশে যে ফরমান পাঠিয়েছেন, তা নিম্নোক্ত দেয়া হলো-
হযরত ওমর ফারুক আলাইহিস সালাম তিনি পারশ্যের
অধিবাসীদের জন্য যে ফরমান পাঠান, তা সহীহ্ বুখারী শরীফ উনার মধ্যে
এভাবে বর্ণিত আছে-
عن
عمر رضى الله عنه انه كتب الى المسلمين الممين بيلاد فارس اياكم وذى اهل المشرك.
অর্থঃ- আমিরুল মু’মিনীন হযরত উমর ইবনে খাত্তাব আলাইহিস সালাম, যে সমস্ত
মুসলমান পারশ্যে অবস্থান করছিলেন, তাদের উদ্দেশ্যে লিখেন, “হে মুসলমানগণ! নিজেকে মুশরিক ও কাফিরদের লিবাস ও
চাল-চলন হতে দূরে রাখ।”
মসনদে আহমদ ইবনে হাম্বলে বর্ণিত আছে যে, হযরত আবু উসমান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, আমি আজার বাইজানে ছিলাম, আমাদের সেনাপতি হযরত ওতবা বিন
ফরকাদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার নামে আমিরুল মু’মিনীন
আলাইহিস সালাম তিনি এ ফরমান পাঠান-
يا
عتبة بن فر قد اياكم اياكم والتنعم وزى اهل الـمشرك ولبوس الحرير.
অর্থঃ- “হে ওতবা বিন ফরকাদ, তোমাদের সকলের জন্যই এটা ফরজ যে, স্বাচ্ছন্দ ও কোমল জীবন যাপন এবং কাফির ও মুশরিকদের লেবাস ও চাল-চলন হতে এবং
রেশমী কাপড় ব্যবহার হতে পরহেয কর।”
এটা হতে প্রতিয়মান হয় যে, মুসলমানদের জন্য কাফির-মুশরিকদের পোশাক-পরিচ্ছদ, চাল-চলন
ইত্যাদির অনুসরণ করা হতে পরহেয করতে হবে, যেমন খ্রীষ্টানদের পোশাক। এ সমস্ত
পোশাক পরিধান করলে মুসলমানদের স্বাতন্ত্র চিন্তা আর থাকেনা। কোনা ফাঁড়া পাঞ্জাবী, চোষ পায়জামা, আসকা, কিসতিটুপি ইত্যাদি হিন্দুদের
পোশাক,
হিন্দুদের হতে এর উৎপত্তি; তাই এ
সমস্ত পোশাক-পরিচ্ছদ হতে পরহেয করার জন্যই আমিরুল মু’মিনীন
হযরত ওমর ইবনে খাত্তাব আলাইহিস সালাম তিনি
উক্ত ফরমান দিয়েছেন। কেননা উক্ত সমস্ত পোশাকই আযমীদের পোশাক। উক্ত ফরমান কোন স্থান, কালের সাথে সম্পর্কযুক্ত নয়, বরং ক্বিয়ামত পর্যন্ত উক্ত হুকুম
জারি থাকবে।
আবা-১৬
সুওয়াল: নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র মি’রাজ শরীফ
কি স্বশরীরে হয়েছিল, পবিত্র মি’রাজ শরীফ
কতবার হয়েছিল?
জাওয়াব: সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র মি’রাজ শরীফ সর্বমোট ৩৪ বার হয়েছিল। ২০ জনেরও অধিক হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা এ পবিত্র মি’রাজ
সম্পর্কীত পবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেছেন। আত্মিক যে মি’রাজ, তা নবুওওতের পূর্বে ঘটেছিল। সিরাতে হালাবী কিতাব উনার ১ম খণ্ড
৩৯৮ পৃষ্ঠায় লিখিত আছে- শায়খ আব্দুল ওহাব শা’রানী
রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেছেন যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র মি’রাজ শরীফ মোট ৩৪ বার হয়েছিল। একবার স্বশরীরে, অবশিষ্টগুলো
রূহানীভাবে হয়েছিল।
পবিত্র মি’রাজ শরীফ
উনার ঘটনাবলী দু’টি অংশে বিভক্ত। প্রথম হলো- পবিত্র কা’বা শরীফ থেকে পবিত্র বায়তুল মুকাদ্দাস শরীফ যাওয়া। এটাকে ইসরা বা রাত্রিকালীন
ভ্রমন বলা হয়। পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ আছে,
سيحان
الذى اسرى بعبده ليلا من المسجد الحرام الى المسجد الاقصا الذى بار كنا حوله
لنوريه من اياتنا.
অর্থঃ- সেই পবিত্র ও
মহিমাম্বিত সত্তা, যিনি নিজ বান্দাকে রাত্রে মসজিদে হারাম হতে মসজিদে আকসা
পর্যন্ত নিয়েছেন, যার চারদিকে বরকত দিয়েছেন, যেন আমি
তাকে আমার নিদর্শন দেখিয়ে দেই।” (পবিত্র সূরা বণি ইসরাইল)
দ্বিতীয় হলো- পবিত্র বায়তুল মুকাদ্দাস শরীফ
হতে সিদরাতুল মুনতাহা শরীফ হয়ে মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে সাক্ষাৎ ও দীদার, এটাকে পবিত্র মি’রাজ শরীফ বলা হয়।
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল
মুরসালীন , নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনার পবিত্র মি’রাজ শরীফ স্বশরীরে হয়েছিল। আর স্বশরীরে হয়েছিল বলেই কাফির ও মুশরিকরা যখন
শুনলো যে,
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল
মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
এক রাত্রিতে পবিত্র বায়তুল মুকাদ্দাস ও তথা হতে সাত আসমানের উপর পর্যন্ত ভ্রমণ
করেছেন। তারা এটা অস্বীকার করলো এবং বললো- একজন মানুষের পক্ষে এটা কি করে সম্ভব? পবিত্র
মি’রাজ শরীফ যদি স্বশরীরে না হয়ে
রূহানী হবে,
তাহলে কাফিররা এ ঘটনা অস্বীকার করলো কেন? রূহানী বা স্বপ্নে তো অনেক কিছুই হতে পারে। একজন সাধারণ মানুষওতো স্বপ্নে অনেক
কিছু দেখে যেমন- পৃথিবীর এক প্রান্ত হতে অন্যপ্রান্ত পর্যন্ত এক ঘন্টার ঘুমের
মধ্যেই ভ্রমন করতে পারে। স্বপ্নের মধ্যে কিছু হওয়া বা ঘটার মধ্যে তো আশ্চর্যের
কিছু নেই অথচ মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজেই পবিত্র ইসরা ও পবিত্র মি’রাজ শরীফ উনার ঘটনাকে বিস্ময় ও আশ্চর্য প্রকাশ করেছেন এবং ক্বিয়ামত পর্যন্ত
সমগ্রবিশ্ববাসিকে দেখিয়ে দিলেন এ আশ্চর্যজনক ঘটনা। মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরাত, নিদর্শন যা শ্রবনে ও দর্শনে মানুষের বিবেক, বুদ্ধি, প্রজ্ঞা ও অনুভব সবই অকেজো হয়ে যায় এবং সেখানে পৌঁছার আগেই যা নিঃশ্বেষ হয়ে
যায় সে ?
পবিত্র মি’রাজ শরীফ
যদি রূহানী বা আত্মীকই হবে, তাহলে এতে আশ্চর্যের কি আছে? স্বপ্ন কি আশ্চর্যজনক ঘটনা? এর দ্বারা কি মানুষ বিস্ময় প্রকাশ
করে? আত্মিকভাবে এক নিমিষে সমগ্র সৃষ্টি বেহেশতের আনাচে-কানাচে তো নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কেন, উনার উম্মতরাও ভ্রমণ করতে পারে। যেমন হযরত আবু বকর সিদ্দীক আলাইহিস সালাম তিনি
চার পলকে আরশ,
কুরসী, লৌহ, কলম, বেহেশত,
দোযখ, আসমান, যমীন
ভ্রমন করেছেন।
কিতাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, একবার হযরত জিব্রাঈল আলাইহিস সালাম মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট বেহেশত দেখার
জন্য অনুমতি চাইলেন। তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, “আমার
বেহেশত এতবড় যে,
তা তোমার পক্ষে দেখে শেষ করা সম্ভব নয়।” তারপরও হযরত জিব্রাঈল আলাইহিস সালাম বেহেশত দেখার জন্য আরজু করলেন। মহান আল্লাহ
পাক তিনি বললেন,
“বেশ চেষ্টা করে দেখ।” তখন হযরত
জিব্রাঈল আলাইহিস সালাম তিনি উনার ছয়শত বা ছয় হাজার পাখা নিয়ে ভ্রমণ করা শুরু
করলেন। একাধারা ছয় হাজার বছর ভ্রমন করার পরও বেহেশতের সীমানা তো পেলেনই না বরং
উনার সমস্ত পাখা ব্যাথা হয়ে গেল। তখন তিনি বিনীতভাবে বললেন যে, “আয় আল্লাহ পাক! দয়া করে আমাকে একটু বিশ্রাম দান করুন।” তখন মহান
আল্লাহ পাক কুদরতিভাবে উনাকে বিশ্রাম দান করলেন এবং ফিরায়ে নিয়ে আসলেন আর বললেন, “আমি তো আগেই বলেছিলাম, তোমার পক্ষে সম্পূর্ণ বেহেশত দেখা
সম্ভব নয়। কিন্তু মনে রেখ আখিরী নবী, আমার হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম উনার উম্মতগণ চোখের পলকে সমস্ত বেহেশত দেখতে পারবে।” সুবহানাল্লাহ! তখন হযরত জিব্রাঈল আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, “আয় আল্লাহ পাক! আমি আপনার কাছে এ ব্যাপারে অনুমতি চাচ্ছি যে, যখন আখিরী নবী, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম তিনি আসবেন এবং উনার উম্মত হবেন, তখন আমি উনাদের পরীক্ষা করবো।” তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, “বেশ, পরীক্ষা
করো।”
অতঃপর, যখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নবুওওয়ত প্রকাশ পেল এবং কয়েকজন
উনার উম্মত হলেন, তখন হযরত জিব্রাঈল আলাইহিস সালাম তিনি মহান আল্লাহ পাক
উনাকে বললেন,
“আল্লাহ পাক! পূর্বে আমি যে বিষয়ে নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উম্মতকে পরীক্ষা করার
জন্য অনুমতি চেয়েছিলাম, সে বিষয়ে পরীক্ষা করার জন্য
পূণরায় অনুমতি চাচ্ছি।” মহান আল্লাহ
পাক পরীক্ষা করার জন্য অনুমতি দিলেন। তখন হযরত জিব্রাঈল আলাইহিস সালাম মানুষের
বেশে হযরত আবু বকর সিদ্দীক আলাইহিস সালাম উনার নিকট এসে জিজ্ঞেস করলেন যে, “হে হযরত আবু বকর সিদ্দীক আলাইহিস সালাম!
আপনি কি আমাকে বলতে পারেন, এখন হযরত জিব্রাঈল আলাইহিস সালাম
তিনি কোথায় আছেন?” তখন হযরত আবু বকর সিদ্দীক আলাইহিস সালাম তিনি চোখ বন্ধ
করলেন এবং খুললেন, একবার, দু’বার।
অতঃপর বললেন,
“আমি তো হযরত আবু বকর সিদ্দীক আলাইহিস সালাম, সুতরাং আপনিই হযরত জিব্রাঈল আলাইহিস সালাম।” তখন হযরত
জিব্রাঈল আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, “আপনি এটা কি করে জানলেন?” হযরত আবু বকর সিদ্দীক আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, “আমি
চোখের পলকে আরশ,
কুরসি, লৌহ, কলম, বেহেশ্ত,
দোযখ, আসমান, যমীন
সবকিছু দেখে এসেছি, কোথাও হযরত জিব্রাঈল আলাইহিস সালাম উনাকে পাইনি, কাজেই আপনিই হযরত জিব্রাঈল আলাইহিস সালাম।
হযরত আবু বকর সিদ্দীক আলাইহিস সালাম শরীফ উনার এ ভ্রমণ ছিল রূহানী বা
আত্মিক ভ্রমণ। তাছাড়া উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ---
বলেছেন। শুধু রূহ্কে কখনো --- বলা হয়না বরং রূহ্ ও শরীর উভয়টির সংমিশ্রনের নাম হলো
--- এটা দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র মি’রাজ শরীফ স্বশরীরে হয়েছিল। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
مازاغ اليصر وما طغى.
অর্থঃ- “উনার দৃষ্টি অন্যদিকে ফিরেনি এবং অন্য কোন কিছুর প্রতি আকৃষ্টও হয়নি।” (পবিত্র সূরা নজম শরীফ)
এ পবিত্র আয়াত শরীফ উনার তফসীর মুবারকে বলা হয়
যে, হযরত ফেরেশতা আলাইহিস সালাম মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনাকে দেখার জন্য সিদরাতুল মুনতাহায় একত্রিত হয়েছিলেন। আরো অন্যান্য যা কিছু
আশ্চর্য্যজনক বিষয় নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম তিনি দেখেছেন। তা হঠাৎ করে দেখে বিব্রতবোধ করেননি, বরং
পরিচিতের মতই ছিলেন। স্বাভাবিক মানুষ অপরিচিত কোথায়ও গেলে কোন নতুনত্ব দেখে দৃষ্টি
এদিক-ওদিক হয়। কিন্তু নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দৃষ্টিকে তা আকৃষ্ট করতে পারেনি, তিনি
ছিলেন স্বাভাবিক।
মি’রাজ শরীফ যদি রূহানী বা আত্মীক হবে, তাহলে -- বলা হতোনা। কেননা
রূহানভাবে দেখার জন্য --- এর প্রয়োজন নেই, তা
ঘুমিয়ে থাকলে ও চোখ বন্ধ করে ধ্যান করেও হাসিল হয়। সুতরাং নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র মি’রাজ শরীফ যে স্বশরীরে হয়েছিল, তা প্রথমোক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ
উনার --- ও --- দ্বারা এবং দ্বিতীয় পবিত্র
আয়াত শরীফ উনার --- তা প্রমাণ করে। কেননা স্বপ্নে বা রূহানীভাবে ভ্রমণের জন্য
শরীরের প্রয়োজন হয়না বরং স্বপ্নে রূহ্ -- ভ্রমণ করে থাকে, শরীর নয়।
রূহ্ এবং শরীর উভয়টির নাম -- স্বপ্নে দেখাই যদি হতো, তাহলে
দৃষ্টি বিভ্রম বা দৃষ্টি ফিরার কথা বলা হতোনা, স্বপ্ন
স্বপ্নই।
এছাড়া পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ
আছে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ‘বোরাকে’
আরোহন করানো হয়েছিল। কোন কিছুতে আরোহনের জন্য শরীরের দরকার, রূহানী ভ্রমণের জন্য বাহনের প্রয়োজন নেই। এটা দ্বারাও প্রমাণিত হয় যে, মি’রাজ শরীফ স্বশরীরে জাগ্রত অবস্থায়ই হয়েছিল।
তবে যারা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার স্বশরীরে মি’রাজকে
অস্বীকার করে,
তারা হযরত আয়েশা সিদ্দীকা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ও হযরত
মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে
রেওয়ায়েতকৃত একটি হাদীছ শরীফের বরাত দিয়ে থাকে। তারা স্বপ্নে দেখা বা রূহানীভাবে
মি’রাজ হওয়ার ৩৩টির কোন একটি সম্বন্ধে জিজ্ঞাসিত হয়ে বলেছিলেন যে, “আমি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনার শরীর মুবারক স্থানান্তরিত হতে দেখিনি। এ পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার দুই অবস্থার
একটি হওয়া অপরিহার্য্য-
১। স্বপ্নের কোন পবিত্র মি’রাজ শরীফ উনার ঘটনা শুনে হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণ
উনারা হয়তো জিজ্ঞেস করেছিলেন, এ পবিত্র মি’রাজ শরীফ উনার মধ্যে কি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শরীর মুবারক উর্ধ্বে গমন করেছিলেন। হযরত ছিদ্দীকা আলাইহাস
সালাম তিনি বলেছেন, “স্থানান্তরিত হওয়া আমি দেখিনি।
২। স্বশরীরে জাগ্রত
অবস্থায় যখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনার পবিত্র মি’রাজ শরীফ সংঘটিত হয়, তখন হযরত সিদ্দীকা আলাইহাস সালাম উনার
পবিত্র শাদী মুবারক হয়নি। আর তখন তো তিনি শিশু ছিলেন। সুতরাং কি করে তিনি এ
ব্যাপারে সাক্ষ্য দিবেন, “আমি উনার শরীর মুবারককে
স্থানান্তর হতে দেখিনি।” আর এটা তো ঐতিহাসিক প্রসিদ্ধ
রেওয়ায়েত যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র মি’রাজ শরীফ
উনার রাত্রিতে হযরত উম্মে হানী আলাইহাস সালাম উনার ঘরে ছিলেন।
অতএব, হযরত
সিদ্দীকা আলাইহাস সালাম উনার ও হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার
রেওয়ায়েতকৃত পবিত্র হাদীছ শরীফটি রূহানী মি’রাজ শরীফ
সম্পর্কে। তাছাড়া আগেই বর্ণনা করা হয়েছে যে, নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মি’রাজ শরীফ
স্বশরীরে জাগ্রত অবস্থায় হওয়ার পবিত্র হাদীছ শরীফ ২০ জনেরও অধিক হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনারা বর্ণনা
করেছেন।
সুওয়াল: নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র সুন্নাত মুবারক উনার আলোচনা প্রসঙ্গে কেউ যদি বলে, এত
সুন্নত উনার প্রয়োজন নেই। এ ধরণের বক্তব্য প্রসঙ্গে ইসলামী শরীয়ত উনার ফয়সালা কি?
জাওয়াব: “এত সুন্নাত মুবারক উনার প্রয়োজন নেই”-এ ধরণের কথা কুফরীর অন্তর্ভূক্ত।
কেননা এ ধরণের কথা সরাসরি পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার বিরোধী। মহান
আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
ومااتاكم الرسول فخزوه وما نهكم عنه فنته.
অর্থঃ- “নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
তোমাদের জন্য যে আদেশ মুবারক করেছেন, তা তোমরা গ্রহণ করো। আর যা থেকে
বিরত থাকতে বলেছেন, তা থেকে বিরত থাক।”
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ আছে,
كل
امتى يدخلون الحينة الامن ابى قيل ومن ابى يا رسول الله صلى الله عليه وسلم قال:
من اطا عنى دخل الجنة ومن عصانى فقد ابى.
অর্থঃ- “আমার প্রতিটি উম্মত বেহেশতে যাবে, তবে যে যেতে অসম্মত সে ব্যতীত।
জিজ্ঞাসিত হলেন- কে সে, যে যেতে অসম্মত? নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
ইরশাদ মুবারক করলেন, যে আমার ইত্তেবা করেছে, সে বেহেশতে
যাবে এবং যে আমার অবাধ্য হয়েছে, সে বেহেশতে যেতে অসম্মত।” (বুখারী শরীফ)
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল
মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
فمن رغب عن سنتى فليس منى.
অর্থঃ- “যে আমার সুন্নত মুবারক উনাকে অস্বীকার করলো, সে আমার
উম্মতের অন্তর্ভূক্ত নয়।”
পবিত্র কুরআনুল করীমে মহান আল্লাহ পাক তিনি
ইরশাদ মুবারক করেন,
لقد كان لكم فى رسول الله اسوة حسنة.
অর্থঃ- “নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনার মধ্যে তোমাদের জন্য রয়েছে উত্তম আদর্শ।” (পবিত্র সূরা
আহযাব শরীফ)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক
হয়েছে,
من
احب سنتى فقد احبنى ومن احبنى كان معى فى الجنة.
অর্থঃ- “যে আমার সুন্নত মুবারককে মহব্বত করে (অর্থাৎ অনুসরণ করে) সে যেন আমাকে মহব্বত
করে। আর যে আমাকে মহব্বত করে, বেহেশতে সে আমার সাথে থাকবে।” (তিরমিযী শরীফ)
উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ
হতে বুঝা যায় যে, সুন্নাত পালনই হলো নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে মুহব্বতের একমাত্র নিদর্শন। আর এ সম্পর্কে পবিত্র কুরআন
শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের মধ্যে হুকুম রয়েছে। সুতরাং যারা বলবে যে, এত সুন্নত উনার আমল করতে হয়না, তাদের কথা পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র
হাদীছ শরীফ উনাদের বিরোধী। তাই এ ধরণের কথা বলা কুফরীর অন্তর্ভূক্ত।
আবা-১৬