রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি-৩১
রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি-৩১
কিতাব প্রকাশনা -১
পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার অনুবাদ ও তাফসীর, হাদীস শরীফ উনার শরাহ, ফেকাহ, তাসাউফ, ইসলাম ইত্যাদি সম্মানিত বিষয় নিয়ে কিতাব রচিত হয়েছে অনেক। যিনি যে কিতাব রচনা করেছেন তা উনার ব্যাক্তিগত উপলব্ধি, প্রজ্ঞা, ইলম অনুযায়ীই রচনা করেছেন। এই ১৪৩৯ বছরে যা প্রকাশিত হয়েছে তা মহাসমুদ্রের এক ফোটা পানির সমানও প্রকাশিত হয়নি আবার এ সকল বিষয় নিয়ে কিতাব প্রকাশনা থেমেও থাকেনি এবং থাকবে না , প্রকাশিত হতেই থাকবে কিয়ামত পর্যন্ত ইনশাআল্লাহ। 
কিন্তু সম্মানিত ইসলাম এমন একটি বিষয় যা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনার সঙ্গে নিসবত মুবারক ছাড়া সঠিকভাবে প্রকাশ করা সম্ভব নয়। নিসবত মুবারক যার যত গভীর, উনার অন্তরের স্বচ্ছতাও হবে তত নিবিড় এবং সে রকম ধারণকৃত অন্তর মুবারক থেকে ইলম উনার প্রকাশও ঘটবে অফুরন্ত। নিসন্দেহে পূর্ববর্তী ইমাম, মুস্তাহিদ, আউলিয়া কিরামগণ উনাদেরও কম বেশী নিসবত মুবারক থাকার কারণেই উনারা যত সামান্য ইলম প্রকাশ করতে সক্ষম হয়েছেন তবে একটি বিষয় যা উপলব্ধির তা হচ্ছে, সকলের কাছে সকল বিষয় প্রকাশ করা হয়না। এ বিষয়গুলো আউলিয়া কিরাম উনাদের মাকাম এবং নিসবত মুবারক অনুযায়ী প্রকাশিত হয়ে থাকে এবং যা উনাদের কারামত মুবারকের অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ।
সম্মানিত রাজারবাগ দরবার শরীফ থেকে প্রকাশিত কিতাব সমূহের মধ্যে রয়েছে পনেরো শতকের সম্মানিত মুজাদ্দিদ, হযরত মুজাদ্দিদে আযম আলাইহিস সালাম উনার ইলম মুবারক উনার নূর মুবারকের বিচ্ছুরণ। সুবহানাল্লাহ। রাজারবাগ দরবার শরীফে রয়েছে মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ গবেষণা কেন্দ্র, যেখানে অনেক মুফতী-মুহাদ্দিস-আল্লামা উনারা যামানার লক্ষ্যস্থল ওলী আল্লাহ, যামানার ইমাম ও মুস্তাহিদ হযরত মুজাদ্দিদে আযম আলাইহিস সালাম উনার সরাসরি দিক নির্দেশনা অনুযায়ী, উনার দেয়া ইলম, আকীদা লিপিবদ্ধ করে প্রকাশ করে থাকেন। আর সে কারণে কোন কিতাব কোন ব্যাক্তি বিশেষের নামে প্রকাশিত না হয়ে মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ গবেষণা কেন্দ্রের নামে প্রকাশিত হয়। সুবহানাল্লাহ।
রাজারবাগ দরবার শরীফ থেকে কোন কিতাব প্রকাশের মূল উদ্দেশ্য থাকে সঠিক আকিদা, আদব, ফতোয়া, ইতিহাস প্রচার এবং প্রচলিত সব ভুল আকিদা ও বিশ্বাসের মূলোৎপাটনের মাধ্যমে যিনি খালিক, যিনি মালিক, যিনি রব মহান আল্লাহ পাক উনার সন্তুস্টি হাছিল করা।
মহান দরবার শরীফ থেকে কোন কোন কিতাবের কয়েকটি সংস্করণ বের করা হয়েছে। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ, হুযুর পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনার সঙ্গে হযরত মুজাদ্দিদে আযম আলাইহিস সালাম উনার গভীর নিসবত মুবারক থাকার কারণে যখন কোন বিষয়ে প্রগাঢ় ইলম উনার কাছে প্রকাশিত হয়েছে তা পরবর্তী সংখ্যায় প্রকাশ করা হয়েছে। আবার কখনো কখনো মানুষের গ্রহন করার যোগ্যতা, উপলব্ধি ও সমঝের অভাব থাকার কারণে কোন কোন বিষয় পর্যায়ক্রমে প্রকাশ করা হয়েছে। একটি কিতাবের তালিকা এবং তা প্রকাশের সংক্ষিপ্ত উদ্দেশ্য সহ এখানে তুলে ধরা হল।
রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি-৩০
রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি-৩০
অডিও প্রকাশনা
যামানার সুমহান মুজাদ্দিদ, হযরত মুজাদ্দিদে আযম আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র জুমুয়ার দিনের আলোচনা মুবারক যদি কেউ এক বছর মনোযোগ সহকারে শোনেন, তিনি পুরুষ হোক বা মহিলাই হোক উনার সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার বিষয়ে গভীর ইলম অর্জিত হয় যা দিয়ে সত্য মিথ্যার প্রভেদ করা সম্ভব হয়, মানুষ হিদায়েতের দিকে আকর্ষিত হন। সুবহানাল্লাহ। 
অথচ পনেরো শতকের সম্মানিত মুজাদ্দিদ, হযরত মুজাদ্দিদে আযম আলাইহিস সালাম উনার এক বছরের সকল ওয়াজ শরীফ থেকে পরবর্তী বছরের ওয়াজ শরীফ উনার মাঝে আরও গভীর ইলম উনার নূর বিচ্ছুরিত হন। ওয়াজ শরীফ উনার বিষয়গুলো মানুষের কাছে আরও স্পষ্ট হয় এবং মানুষ আরও সহজে হিদায়েতের নূর অন্তরে ধারণ করতে সক্ষম হন। সুবহানাল্লাহ। কিন্তু বর্তমান সময়ে অনুপস্থিত মানুষগণ বা যারা দূরে আছেন বা যারা আগামীতে আসবেন তারা যেন এই নিয়ামত থেকে বঞ্চিত না হন সে কারণে এক সপ্তাহের ওয়াজ শরীফ পরবর্তী সপ্তাহে সিডি আকারে প্রকাশিত হয়। আবার দেখা গেছে একবার হযরত মুজাদ্দিদে আযম আলাইহিস সালাম জবান নিঃসৃত আলোচনা মুবারক শোনা হলেও সকলের পক্ষে সাথে সাথে ফিকির করা সম্ভব হয়ে উঠে না ,বারবার শোনার মধ্যে বিষয় সমূহের ফিকির আরও স্পষ্ট হয় । সেসব দিক লক্ষ্য করে অডিও প্রকাশনার আয়োজন করা হয় সম্মানিত রাজারবাগ দরবার শরীফ থেকে।
এছাড়া পনেরো শতকের সম্মানিত মুজাদ্দিদ হযরত মুজাদ্দিদে আযম আলাইহিস সালাম উনার এক অনবদ্য তাজদীদ মুবারক হচ্ছে হারাম গান-বাজনার বিপরীতে সম্মানিত সুন্নত উনার অনুসরনে হামদ শরীফ-নাত শরীফ,কাসিদা শরীফ লেখা,পাঠ করা এবং শোনার প্রচলন করা। সুবহানাল্লাহ। হামদ শরীফ-নাত শরীফ-কাসিদা শরীফ বিশ্বময় ছড়িয়ে দেবার লক্ষ্যে আয়োজন করা হয় সামা শরীফ উনার মাহফিল। এ ছাড়া রয়েছে পাঠকগণের হামদ শরীফ-নাত শরীফ-কাসিদা শরীফ রেকর্ড করার আধুনিক ব্যবস্থা। এভাবেই রেকর্ডকৃত বিষয় সমূহ প্রকাশ করে ক্রমাগত ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে সম্মানিত দরবার শরীফ থেকে।
রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি-২৯
রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি-২৯
সংবাদ প্রকাশনা
দৈনিক আল ইহসান শরীফ প্রথম প্রকাশিত হয় ৩রা সামিন, ১৩৬৪ শামসী (১৯৯৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর) সালে। পৃথিবীতে এটি একমাত্র দৈনিক পত্রিকা যেখানে কোন প্রকার প্রাণীর ছবি থাকে না আর ছবি না থাকার কারণে মাসজিদ-মাদরাসা, নামাজ ঘর ইত্যাদি স্থানে রেখে পত্রিকা পড়া যায়, নামাজ আদায় করা যায়। উল্লেখ্য সব ধরণের ছবি তোলা, আঁকা, রাখা, দেখা হারাম আর ছবি রেখে নামাজ আদায় করলে নামাজ মাকরুহ হয়ে যায় এবং দোহরানো ওয়াজিব হয়ে পড়ে। 
পৃথিবীতে প্রায় ১৯৫ টি দেশ এবং ৪৪১৬ টি ছোট-বড় শহর রয়েছে। একটি সফটওয়্যার ভিত্তিক জরিপে দেখা গেছে পৃথিবীর অধিকাংশ দেশ এবং শহর থেকেই দৈনিক আল ইহসান শরীফের অন লাইন ভার্সন পঠিত হয়েছে এবং হচ্ছে । সুবহানাল্লাহ । সাধারণ দৈনিক পত্রিকাগুলো থেকে দৈনিক আল ইহসান পত্রিকার আলাদা অনন্য সাধারণ কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা নীচে কয়েকটি উল্লেখ করা গেল।
দৈনিক আল ইহসান শরীফ পত্রিকার উপস্থাপন ১) এখানে হেড লাইন্স প্রাধান্য পেয়ে থাকে যামানার সুমহান মুজাদ্দিদ মুজাদ্দিদে আযম আলাইহিস সালাম উনার সুমহান কওল শরীফ উনার উপর ভিত্তি করে।
২) এখানে অশ্লীল, অশালীন ও সুড়সুড়ি মূলক কোন রিপোর্ট প্রকাশ করা হয় না।
৩) মুসলমান উনাদের শান মান প্রকাশিত হয় সে রকম খবর গুলো গুরুত্বের সাথে বিবেচিত হয়।
৪) কাফিরদের উপর আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে আযাব-গযবের সংবাদগুলো চিত্র সহকারে (প্রাণীর ছবি ছাড়া) প্রকাশ করা হয়
৫) মহান আল্লাহ পাক বিশেষ বিশেষ দিন মানুষকে হাদিয়া করেছেন সে সকল সম্মানিত দিন সমূহের উপর লক্ষ্য রেখে বিশেষ ক্রোড় পত্র প্রকাশ করা হয়।
৬) এই পত্রিকার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য যেহেতু মহান আল্লাহ পাক এবং উনার হাবীব সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনাদের সন্তুস্টি ফলে যাচাই বাছাই করে বস্তুনিষ্ঠ সঠিক সংবাদ প্রকাশ করা হয়।
৭) পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ এবং পবিত্র হাদীস শরীফ থেকে ব্যাখ্যা সহ লেখা প্রকাশ করা হয়।
৮) যেহেতু সম্মানিত শরীয়ত উনার মধ্যে খেলাধুলা, গান-বাজনা সম্পূর্ণরূপে হারাম তাই এসব বিষয়ের উপর নিউজ ছাপানো হয়না।

সাধারণ দৈনিকগুলোর উপস্থাপন:
১) হেড লাইন্স জাতীয় কোন ঘটনার উপর ভিত্তি করে প্রকাশ করা হয়।
২) পত্রিকার কাটতি বাড়াবার লক্ষ্যে অশালীন ছবি সহ উদ্দীপক নিউজ প্রকাশ করে থাকে। নাউযুবিল্লাহ।
৩) পাশ্চাত্যের কাফিরদের প্ররোচনায় মুসলমানদের কিভাবে সন্ত্রাসী হিসেবে দেখানো যায় সেধরনের নিউজ ছাপানো হয়।
৪) কেবল কাফেররাই মানবতাবাদী, শান্তি স্থাপনকারী এবং জাতিসংঘ অর্থাৎ ইহুদী সংঘের কার্যক্রম ফলাও করে প্রচার করা হয়। নাউযুবিল্লাহ।
৫) বিশেষ দিনের মধ্যে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার ধর্মীয় গুরুত্ব পাশ কাটিয়ে কেবল ঈদ ফ্যাশন, রান্না-বান্না ইত্যাদি বিষয় নিয়ে অর্থহীন বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করা হয়।
৬) এ সকল পত্রিকার মালিকগন রাজনৈতিক আদর্শ দ্বারা প্রভাবিত থাকার কারণে তাদের নিজেদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সংবাদ প্রকাশ করে থাকে।
৭) নাম মাত্র ধর্মীয় আলোচনা থাকলেও তা অধিকাংশই ভুলে ভরা।
৮) খেলাধুলা, গান-বাজনা ইত্যাদি হারাম বিষয়ের নিউজ প্রকাশ করে এক ধরণের হুযুগ তুলে যুব সমাজকে বিভ্রান্ত করা হয়। নাউযুবিল্লাহ।
রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি-২৮
রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি-২৮
সংবাদ প্রকাশনা
সংবাদ প্রকাশনার ক্ষেত্রে রাজারবাগ শরীফ উনার মুখপত্র হচ্ছে মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ ও দৈনিক আল ইহসান শরীফ। 
আল বাইয়্যিনাত শরীফ হচ্ছে প্রথম পত্রিকা যা মাসিক হিসেবে সম্মানিত দরবার শরীফ থেকে প্রকাশিত হয়। আল বাইয়্যিনাত শরীফ উনার প্রথম সংখ্যা প্রকাশিত হয় জিলক্বদ-জিলহজ্জ মাসে, ১৪১১ হিজরী সনে, ১৩৫৯ শামসী সনের আউয়াল মাসে (বাংলা জৈষ্ঠ-আষাঢ়, ১৩৯৮ ফসলী, জুন, ১৯৯১ ঈসায়ী।) এবং বর্তমান সময় পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে চলছে। সুবহানাল্লাহ।
আল বাইয়্যিনাত শরীফ প্রকাশিত হবার পূর্বে হাতে গোনা যে কয়টি ইসলামিক পত্রিকা প্রকাশিত হত তার মধ্যে অনেক ভুল মাসলা-মাসায়েল, ফতোয়া প্রকাশ করা হত এবং মানুষের কাছে কোন বিকল্প না থাকায় সেগুলো পরেই ধর্মীয় জ্ঞান আরোহণ করার অপচেষ্টা করতো। এ সকল তথাকথিত ইসলামিক পত্রিকার প্রকাশকদের কাছে দ্বীন প্রচারের চেয়ে বেশী গুরুত্ব পেতো ব্যাবসায়িক সাফল্য। এ সকল ইসলামিক পত্রিকাতে যে ভুল মাসলা-মাসায়েল ও ফতোয়া যেত তা আল বাইয়্যিনাত শরীফ প্রকাশিত হওয়ার পূর্বে মানুষের ধারনাতেই আসেনি। যে কেউ এ পর্যন্ত প্রকাশিত আল বাইয়্যিনাত শরীফ সবগুলো সংখ্যা পাঠ করলে উনার দ্বীনের একটি শক্ত ভীত তৈরি হবে যার আলোকে তিনি হক ও নাহককে আলাদা করতে পারবেন। এ লেখা প্রকাশিত হবার সময়কাল পর্যন্ত আল বাইয়্যিনাত শরীফ উনার ২৭১ টি সংখ্যা প্রকাশিত হয়েছে এবং ফতোয়া হিসেবে ৩৪ তম ফতোয়া ধারাবাহিকভাবে চলছে।
আল বাইয়্যিনাত পত্রিকার শুরুতেই মূল নীতি দেয়া আছে এভাবে যে " যে ব্যক্তি মুহব্বত করে মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য, বিদ্বেষ পোষণ করে মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য, আদেশ (দান) করেন মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য, নিষেধ করেন মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য, তিনি ঈমানে পরিপূর্ণ। (আবু দাউদ শরীফ, তিরমিযী শরীফ, মিশকাত শরীফ)"
আর সে কারণেই আল বাইয়্যিনাত শরীফ সত্য প্রকাশে নির্ভীক। আল বাইয়্যিনাত শরীফ উনার মাঝে অনেক বাস্তব সত্য প্রকাশিত হবার কারণে মাসিক মদীনা, রহমানী পয়গাম এসব তথাকথিত পত্রিকার সার্কুলেশন অবিশ্বাস্যরকমভাবে কমে যায় এবং এ সকল পত্রিকার নেপথ্যে থাকা সকল উলামায়ে ছূ দের হাকীকত উম্মোচিত হয়। যে কোন মুসলমান উনার উচিত আল বাইয়্যিনাত শরীফ পত্রিকার যতগুলো সংখ্যা পাওয়া যায় তার সবগুলো সংখ্যাই সংগ্রহে রাখা ।
রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি-২৭
রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি-২৭
প্রকাশনা
সকল আউলিয়া কিরামগন উনারা উনাদের সুযোগ্য এবং খিলাফত প্রাপ্ত সম্মানিত মুরীদ উনাদের মাধ্যমে সিলসিলার শিক্ষা রেখে গেছেন। ফলে তাসাউফের অনেক সিলসিলার মাঝে লিখিত বিষয় কম পাওয়া যায় আবার অনেক সময় অনেক ওলী আল্লাহ উনার সুযোগ্য মুরীদগণের মাঝে কেউ কেউ মাজলিশের আলোচনা লিপিবদ্ধ করে গেছেন যা পরবর্তী সময়ে কিতাব আকারে প্রকাশ পেয়েছে। সেক্ষেত্রে লিখিত বিষয়গুলো কতটুকু সঠিকভাবে লিপিবদ্ধ হয়েছে তা যাচাই করা হয়নি। 
কিন্তু সম্মানিত মুজাদ্দিদগণ উনাদের প্রায় সকলেই উনাদের আকিদা, ইস্তিহাদ , ইলম লিখিতভাবে রেখে গেছেন। হয়তো উনাদের মাঝে কেউ কেউ অনেক বেশী আবার কেউ তুলনামূলক ভাবে কম লিখেছেন। তারপরেও একটি বিষয় লক্ষ্য করা গেছে সম্মানিত মুজাদ্দিদগণের কারো একটি বিষয় মানুষের কাছে বিশেষভাবে প্রকাশিত হয়েছে অন্য বিষয়গুলো তেমন প্রকাশিত হয়নি। যেমন হযরত ইমাম আবু হানিফা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ফেকাহর বিষয়ে ইস্তিহাদ যতটুকু প্রকাশিত হয়েছে তাসাউফের বিষয়টি প্রকাশিত হয়নি; আবার হযরত মুজাদ্দিদে আল ফিসানী রহমতুল্লাহি আলাহি উনার তাসাউফের বিষয়গুলো বেশী আলোচিত হয়েছে। আবার হযরত ইমাম গাজ্জালী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ফিকাহ ও তাসাউফ দুটো বিষয় নিয়েই বিস্তারিত লিখেছেন। কিন্তু যিনি পনেরো শতকের সম্মানিত মুজাদ্দিদ, হযরত মুজাদ্দিদে আযম আলাইহিস সালাম উনার সকল কার্যক্রম ব্যতিক্রম এবং ব্যাপক।
সম্মানিত দ্বীন উনার যখন যে বিষয়েই ইজতিহাদের প্রয়োজন পরছে যেমন আকিদা, ফিকাহ, তাসাউফ, সমসাময়িক বিষয় এসব সকল বিষয়ের উপর লিখিত দলীল প্রকাশনার মাধ্যমে প্রকাশ করে যাচ্ছেন বর্তমান শতকের সম্মানিত মুজাদ্দিদ , হযরত মুজাদ্দিদে আযম আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ। আরও উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে আকিদা ও ফিকাহর সকল বিষয়গুলো তিনি নিজে পড়ে, লিখে এবং প্রয়োজনীয় নোট সংযোজন করে প্রকাশ করে আগামী প্রজন্মের জন্য স্পষ্ট করে যাচ্ছেন যা ইতোপূর্বে কারো মাঝে দেখা যায়নি। এছাড়া মুবারক মাজলিশে আলোচিত উনার সকল নসীহত শরীফ রেকর্ড আকারে সংরক্ষিত হচ্ছে যাতে উনার মুবারক জবান নিঃসৃত আলোচনা পুনরায় শুনে নসীহত হাছিল করা যায়। সুবহানাল্লাহ। রাজারবাগ দরবার শরীফ উনার অনেক ধরণের প্রকাশনা থাকলেও বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে সংবাদ প্রকাশনা, কিতাব প্রকাশনা, অডিও প্রকাশনা।
সংবাদ প্রকাশনার মধ্যে রয়েছেঃ মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ, দৈনিক আল ইহসান শরীফ।
কিতাব প্রকাশনাঃ কিতাব প্রকাশনার তালিকা অনেক বড় যা আমরা যথাসময়ে প্রকাশ করবো ইনশাআল্লাহ।
অডিও প্রকাশনাঃ এর মধ্যে রয়েছে পবিত্র জুমুয়া শরীফে দেয়া খুৎবা মুবারক, বিশেষ মাহফিল উনার আলোচনা মাজলিশ, পারিবারিক তালীমে দেয়া উনার সওয়াল জাওয়াব মুবারক ইত্যাদি। এছাড়াও রয়েছে হামদ শরীফ, নাত শরীফ ও কাসিদা শরীফ উনার সিডি প্রকাশনা। সুবহানাল্লাহ।
রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি-২৬
রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি-২৬
সফর দল এবং উনাদের কার্যক্রম
সফর দলের কাজ হচ্ছে বছরের নির্দিষ্ট কয়েকটি মাসে নির্দিষ্ট কয়েকদিনের জন্য দেশব্যাপী সফর করে যামানার সুমহান মুজাদ্দিদ, সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আযম আলম আলাইহিস সালাম উনার মুবারক নির্দেশাবলী অন্য সকলের কাছে পৌছে দেয়া এবং উনার মুবারক নির্দেশাবলী অনুযায়ী কাজ সম্পন্ন করে সুমহান দরবার শরীফে ফিরে আসা। কিন্তু এই কার্যক্রম সম্পন্ন করার বিষয়টি লেখা যত সহজ বাস্তবে আনজাম দেয়া তত সহজ নয়, এই কাজ বাস্তবায়নের জন্য চাই মেধা- তালীম-কৌশল -জযবা-পরিকল্পনা ইত্যাদির সমন্বয়। আর এই সকল বিষয়ে নিখুতভাবে তালীম দিয়ে সফর দলের সকল সদস্যদের তৈরি করেন যিনি শাহ দামাদে আউয়াল হযরত শাফীউল উমাম আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ।
সফর দল যাত্রা শুরু করার বেশ অনেকদিন আগে থেকেই শুরু হয় উনাদের তালীম। সফর দল সাধারণভাবে যে সব বিষয়ের উপর তালীম নেন এবং সফরে গিয়ে মানুষকে উৎসাহিত করেন তা হচ্ছে
১. “ফালইয়াফরাহু” সাইয়্যিদুল আইয়াদ শরীফ পালন:
(ক) কিভাবে সাইয়্যিদুল আইয়াদ শরীফ মজলিস ও মীলাদ শরীফ জারী করা যায় এবং কিভাবে প্রতিদিন দৈনিক ৩০টি মজলিস জারি রাখা যায় সে বিষয়ে উনারা সফররত এলাকার মানুষদের তালীম দিয়ে থাকেন । সুবহানাল্লাহ।
(খ) সফর দল মানুষকে সম্মানিত সুন্নত প্রচারকেন্দ্র ও বাইতুল হিকমাহ (লাইব্রেরী) প্রতিষ্ঠা করা যায় সে বিষয়ে উৎসাহিত করেন কারণ জ্ঞান হচ্ছে মুসলমান উনাদের হারিয়ে যাওয়া ধন। কমপক্ষে একটি আলমারি কিনে বা তৈরি করে সেখানে কিতাব রেখে হলেও লাইব্রেরী প্রতিষ্ঠার বিষয়ে উনারা জোর তাগিদ দিয়ে থাকেন।
২. সফর দল নাজাত ও বরকত লাভের কারণে বিভিন্ন দান কার্যক্রমে শরীক থাকার ব্যাপারে মানুষকে উৎসাহিত করেন। যেমন ছদকায়ে জারিয়ার কাজ করা, যাকাত-ফিতরা-উশর, দানবক্স, হাদিয়া বক্স, মান্নত, কাফফারা, বাইতুল মাল ইত্যাদির কাজ করা। এছাড়া কুরবানীর চামড়ার টাকা উত্তোলন ও জবেহ করার টাকা সংগ্রহ করে এতিমখানায় দেয়ার ব্যাপারেও সফর দল মানুষকে উৎসাহিত করে থাকেন। মানুষ যেন এ সকল নেক কাজ সমূহে নিজেকে সম্পৃক্ত করে নেয় সে ব্যাপারে সফর দল মানুষকে সম্মানিত শরীয়ত উনার তালীম যা উনারা সম্মানিত দরবার শরীফ থেকে শিখে যান তা মানুষের কাছে পৌছে দিয়ে থাকেন।
৩. মাদরাসা-মসজিদ: জান্নাতে যেন মানুষ নিজের স্থায়ী বাসস্থান গড়তে পারেন সে লক্ষ্যে সফর দল মানুষকে মাসজিদ-মাদ্রাসার জন্য জায়গা দানে উৎসাহিত করে থাকেন।
৪. যামানার যিনি লক্ষ্যস্থল ওলী আল্লাহ, যামানার ইমাম ও মুস্তাহিদ, মুজাদ্দিদে আযম আলাইহিস সালাম উনার হাত মুবারকে বায়াত করানোর লক্ষ্যে মানুষকে মুবারক ছোহবতে এনে আল্লাহওয়ালা বানানোর লক্ষ্যেও উনারা কাজ করে থাকেন।
রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি-২৫
রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি-২৫
দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মাহফিলের আয়োজন (উলামা আনজুমানের সফর)
দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠিত মাদরাসা থেকে উচ্চতর ডিগ্রী নেয়া এবং প্রথম শ্রেণীতে পাশ করা অনেক মাওলানা সাহেব রয়েছেন যারা যামানার সুমহান মুজাদ্দিদ, সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আযম আলাইহিস সালাম উনার মুরিদ হবার সৌভাগ্য অর্জন করেছেন। যেহেতু উনারা জাহিরি ইলম অর্জন করেছেন উনাদের অনেকেই তালাশ করছিলেন একজন কামিল শায়েখ, আবার কেউ কেউ ছিলেন তাসাউফের ব্যাপারে বিরুপধারণার অধিকারী। কিন্তু যামানার সুমহান মুজাদ্দিদ, হযরত মুজাদ্দিদে আযম আলাইহিস সালাম তিনি যখন বিভিন্ন জেলায় সফর করেন তখন উনার বয়ান মুবারক শুনে অনেক মাদরাসা পাশ করা মাওলানা সাহেব জীবনের সকল ভুল ধারণা ভেঙ্গে উনার হাত মুবারকে বয়াত হয়ে নিজের জীবনকে হিদেয়েতের দিকে পরিবর্তন করে ফেলেন।
এরকম পাশ করা মাওলানা সাহেব উনাদের সংখ্যা লক্ষাধিক হবে। কিন্তু তারপরেও উনাদের মধ্য থেকে যারা যামানার সুমহান মুজাদ্দিদ, সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আযম আলাইহিস সালাম উনার খাস সোহবত শরীফ এখতিয়ার করার সৌভাগ্য অর্জন করেছেন, আহলে সুন্নাতুল জামায়াত উনার আকিদা অনুযায়ী নিজেদের আকিদা বিশুদ্ধ করতে পেরেছেন উনারা হিদায়েতের কাজের আনজাম দেবার লক্ষ্যে মুবারক অনুমতি সাপেক্ষে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সফর করে থাকেন। তারপরেও সাধারণভাবে পবিত্র সফর মাস এবং শাহরুল আযম পবিত্র রবীউল আউয়াল মাসে মাওলানা সাহেবগণ কোন মাহফিলে অংশগ্রহণ করেন না বরং এই দুই মাস উনারা নিজেরাই তালীম গ্রহন ও সাইয়্যিদুল আইয়াদ শরীফ পালন করার জন্য সুমহান দরবার শরীফেই অবস্থান করেন।
আল্লামাগন উনাদের অনেকেই পবিত্র দরবার শরীফের গবেষণা কেন্দ্রে, কেউ মাদরাসায় তালীম দেবার কাজে নিয়োজিত রয়েছেন। সাধারণভাবে কোথাও মাহফিল করাতে চাইলে সেই এলাকার প্রতিনিধিগণকে মুবারক দফতর শরীফে আবেদন করতে হয় এবং পছন্দনীয় কোন আল্লামাকে নিয়ে যাবার প্রয়োজন হলে আবেদন পত্রে উনার নাম উল্লেখ করতে হয়। অতঃপর মুবারক অনুমতি হলে আয়োজক দল পোস্টার, ব্যানার ছাপিয়ে মাহফিলের আয়োজন করেন। সুমহান দরবার শরীফে কোন বিশেষ অনুষ্ঠান থাকলে সে সময় বাইরে কোন মাহফিল বা আনজুমান অনুষ্ঠান করাও নিষেধ তবে মুবারক অনুমতি সাপেক্ষে যে কোন সময়ই আয়োজন করা যেতে পারে। এ যাবত উলামা আনজুমানের সদস্যগণ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মাহফিল করে, বাহাসে অংশগ্রহণ করে দলীল সমৃদ্ধ জবাব দিয়ে ওহাবী-খারিজিদের সমুচিত জবাব দিয়ে হককে প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন।
রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি-২৪
রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি-২৪
হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাসসালাম এবং হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুসসালাম উনারা

সহ সফর।
পনেরো শতকের সম্মানিত মুজাদ্দিদ, সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আযম আলাইহিস সালাম তিনি এককভাবে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সফর করার কারণে যখন দলে দলে মানুষ উনার মুবারক হাতে বয়াত হয়ে ইসলাম উনার সুশীতল ছায়াতলে আসতে শুরু করলো তখন বিভিন্ন পরিবারের মহিলাগণ উনাদেরও তালীম তালকিনের প্রয়োজন দেখা দিল, প্রয়োজন পরলো উনাদেরও বিশেষ হিদায়েতের নূর মুবারকের যা কেবল সোহবতের মাধ্যমেই অর্জন করা সম্ভব। কিন্তু মহিলাগণ কার সোহবত এখতিয়ার করবেন এবং কিভাবে সেই নূর মুবারক ধারণ করবেন?
ওলী আল্লাহগণ বিভিন্ন কারণেই সফর করে থাকেন, জাহিরিভাবে কিছু বোঝা গেলেও বাতিনি অনেক কারণ থাকেন যা সাধারণের উপলব্ধির বাইরে। উনাদের সফর করার কারণে সফরকৃত অঞ্চলসমূহের মধ্যে বিশেষ রহমত নাযিল হয় এবং যাদের নসীবে হিদায়েত লেখা থাকে উনারা সেই নিয়ামত লাভে ধন্য হন। সুবহানাল্লাহ। বিভিন্নদিক লক্ষ্য রেখেই ১৪২১ হিজরির ১২ই রবীউসসানি শরীফ থেকে ১৯ শে রবীউস সানি (২০০০ ঈসায়ী সালে ১৫ জুলাই থেকে ২২ জুলাই) পর্যন্ত হযরত মুরশিদ কিবলা আলাইহিস সালাম তিনি চট্রগ্রাম সফর করেন। এই সফরই ছিল প্রথম বিশেষ সফর অর্থাৎ যে সফরে হযরত মুরশিদ কিবলা আলাইহিস সালাম উনার সফরসঙ্গী হন উম্মুল উমাম আম্মাজী কিবলা আলাইহাস সালাম এব হযরত আহলে বাইত শীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা। শুরু হয় তাজদীদ মুবারকের এক নব দিগন্ত। বিশেষ সফর উপলক্ষ্যে পবিত্র দরবার শরীফ এবং প্রতিটি জেলায় সাজ সাজ রব পরে যায় । সবাই অধীর সগ্রহে অপেক্ষা করতে থাকেন কবে কোন জেলায় বিশেষ সফর হবে সেই আশায়। উল্লেখ্য তখন যে সফরে উম্মুল উমাম হজরত আম্মাজী কিবলা আলাইহাস সালাম এবং হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা যেতেন সেই সফরকে বিশেষ সফর বলা হত। সেই সফর উপলক্ষ্যে গাড়ীর সংখ্যা এবং খাদেম-খাদেমার সংখ্যা বাড়ানো হয়। এভাবে হিজরি ১৪২১ সাল থেকে ১৪২৯ হিজরি সাল পর্যন্ত ( ঈসায়ী ২০০০ সাল থেকে ২০০৮ সাল) উম্মুল উমাম হজরত আম্মাজী কিবলা আলাইহাস সালাম এবং হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা সারা দেশব্যাপী মানুষকে হিদায়েতের আলো দানের উদ্দেশ্যে অমানুষিক পরিশ্রম করে সফর করেছিলেন। এই বিশেষ সফরে বিভিন্ন জেলায় জেলায় অনেক মহিলা আনজুমান গঠিত হয় যারা আজও নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। সুবহানাল্লাহ।
রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি-২৩
রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি-২৩
হযরত মুরশিদ কিবলা আলাইহিস সালাম উনার মাহফিল উপলক্ষ্যে সফর
যিনি খালিক, যিনি মালিক, যিনি রব মহান আল্লাহ পাক উনার দিকে মানুষকে ডাকা খাস সুন্নতে রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। সকল নবী রসূল আলাইহিমুস সালামগণ উনারাও উনাদের সমগ্র জীবন মুবারকে মানুষকে মহান আল্লাহপাক উনার দিকে, হিদায়েতের দিকে ডেকে গেছেন আর এই ডাকার ফলশ্রুতিতে অবর্ণনীয় কস্ট, ত্যাগ তিতিক্ষা সহ্য করেছেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হূযুর পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনার উম্মতগণের মধ্যে যারা হক্কানী রব্বানী ওলী আল্লাহ উনারা হচ্ছেন বাণী ইসরাইল যুগের নবীগণ সদৃশ। সুবহানাল্লাহ।
একজন মানুষের প্রথমে নিজে ইসলাহ হওয়া ফরয অতঃপর যখন একজন হাদী হয়ে যান তখন উনার মানুষকে হিদায়েতের দিকে ডাকাও ফরয হয়ে যায়। সে কারণে হযরত সাহাবা আযমাইন রদিয়াল্লাহু আনহুমগণ এবং উনাদের পরবর্তীতে সকল ইমাম-মুস্তাহিদ, আউলিয়া কিরামগণ দেশের পর দেশ সফর করেছেন দ্বীন প্রচারের লক্ষ্যে। পূর্ববর্তী আউলিয়াকিরামগনের জন্য দেশের পর দেশ সফর করা সহজ ছিল কারণ তখন ছবি তুলে পাসপোর্ট করার প্রয়োজন হতোনা কিন্তু কাফিরদের প্ররোচনায় এখন ছবিযুক্ত পাসপোর্টের কারণে দেশের বাইরে সফর করা যাচ্ছে না । এখানে বলে রাখা ভাল সাধারণ মানুষের জীবিকার কারণে পাসপোর্ট করে বাইরে যাওয়ার সাথে ওলী আল্লাহগণের বিষয়টি মেলানো যাবে না কারণ যিনি হাদী হবেন তিনি সকল প্রকার হারাম কাজ থেকে দূরে থাকবেন এমনকি অপছন্দনীয় কাজ থেকেও দূরে থাকবেন। তাহলে কি করে তিনি ছবি তুলতে পারেন ? অথচ মানুষকে হিদায়েতের দিকে ডাকার নাম করে উলামায়ে ছু"রা হর হামেশা টিভি-চ্যানেলে প্রোগাম করে যাচ্ছে। অসংখ্য অগণিত হারাম ছবি তুলে কবিরাগুনাহতে লিপ্ত হচ্ছে। নাউযুবিল্লাহ । এরা নিজেরাই হক পথ প্রাপ্ত নয় আর মানুষকে কি করে হিদায়েতের দিকে ডাকবে?
এখানে আরও একটি বিষয় উল্লেখ্য বর্তমান সময়য়ের উলামায়ে ছূরা মাহফিল করে, টিভিতে প্রোগ্রাম করে অর্থ উপার্জনের জন্য। টিভিতে প্রোগ্রাম করলে মানুষ চিনবে-জানবে তাকে আরও দাওয়াত দেবে এই আশায়। নাউযুবিল্লাহ। এদেশের অনেক উলামায়ে ছূ কে মাহফিলের দাওয়াত দিতে গেলে তারা মাহফিলের পূর্বেই কত পয়সা পাবে আর খাওয়ার মেন্যূ কি হবে এ নিয়ে প্রশ্ন তোলে। কেউ কেউ আবার হেলিকপ্টার ছাড়া মাহফিলেই যায় না। নাউযুবিল্লাহ। এই সব অন্তঃসারশূন্য মানুষদের দ্বারা আর যাই হোক মানুষের হিদায়েত হবে না এটা নিশ্চিত। এরা মাহফিল করে তাদের অনুসারী বৃদ্ধির লক্ষ্যে মানুষকে হিদায়েত দানের জন্য নয়। অবশ্য পবিত্র হাদীস শরীফ উনার মাঝে এদের সম্পর্কে আগেই সতর্ক করা আছে। সুবহানাল্লাহ।
যিনি পনেরো শতকের সম্মানিত মুজাদ্দিদ, সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আযম আলাইহিস সালাম তিনি মানুষকে মহান আল্লাহ পাক এবং উনার হাবীব সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনাদের দিকে রুজু করার লক্ষ্যে নিজ খরচে সারা দেশব্যাপী সফর করেছেন । তেতুলিয়া থেকে টেকনাফ এমন কি উত্তাল সাগর পাড়ি দিয়ে সেইন্টমারটিন দ্বীপ, কুতুবদিয়া দ্বীপ এবং খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি, বান্দরবন এলাকার দুর্গম এলাকা পর্যন্ত সফর করেছেন। ১৫ শতকের সম্মানিত মুজাদ্দিদ, সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আযম আলাইহিস সালাম উনার কেবল সফর মুবারকের বর্ণনা লিখতে গেলে একটি বিশাল আকৃতির কিতাব রচিত হবে। উনার নিজস্ব ল্যান্ড-রোভার গাড়ীতে করে প্রথম দিকে ১০-১৫ জনকে সাথে নিয়ে সফর মুবারকের উদ্দেশ্যে যাত্রা করতেন। নিজ খরচে সফর করে মানুষকে হিদায়েতের উদ্দেশ্যে ডাকার পথে তিনি যে পরিমাণ উলামায়ে ছু'দের বিরোধিতা, অত্যাচার, মানসিক যন্ত্রণা ভোগ করেছেন তা বলে শেষ করা যাবে না। কিন্তু যেহেতু তিনি পরিপূর্ণভাবে মহান আল্লাহ পাক উনার মতে মত এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হূযুর পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনার পথে পথ তাই কোন দুঃখ -কস্টই উনাকে বিচলিত করতে পারেনি। সুবহানাল্লাহ। সে সময় হাজার-হাজার মানুষ উনার হাত মুবারকে বয়াত হয়ে হিদায়েত নসীব করেছেন সুবহানাল্লাহ।
রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি-২২
রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি-২২
অনন্তকালব্যাপী পবিত্র সায়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ মাহফিল জারি এবং উনার কার্যক্রম।

বছরব্যাপী তাবারুক বিতরণ/ বিশেষ দিনে বিশেষ তাবারুক
সকল ওলী আল্লাহগণই সম্মদশালী হয়ে থাকেন কারণ যেহেতু উনারা দুনিয়া তরক করে থাকেন ফলে দুনিয়া উনাদের পেছনে পেছনে ছোটে। তাহলে এই সহজ ফর্মুলা থেকে বোঝা যায় যিনি যত দুনিয়াকে পায়ে ঠেলবেন ততই দুনিয়া উনাদের কাছে ধরা দেবেন। সে কারণে দেখা যায় যারা আছাছুল খাস ওলী আল্লাহ উনারা অকাতরে ধন সম্পদ দান করতেন। সেই প্রক্রিয়া আজও আছে এবং থাকবে কিয়ামত পর্যন্ত। সম্পদ থাকলেই দান করা যায় খরচ করা যায়। না থাকলে খরচ বা দেবার প্রশ্নই আসে না।
পূর্বের অনেক ইমাম ও মুস্তাহিদ উনারা নিজের অর্থ খরচ করে উনার ছাত্রদের শেখাতেন এবং ভাতা দিতেন। অর্থাৎ তলিবে ইলম উনাদের ভরণ পোষণের দায়িত্বও ইমাম মুস্তাহিদ উনারাই গ্রহন করতেন। এ ছাড়াও আমরা জানি পূর্ববর্তী সকল মুজাদ্দিদ যেমন হযরত বড় পীর সাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত খাজা সাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত মুজাদ্দিদে আল ফি সানী রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত নিজামুদ্দিন আউলিয়া রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাদের পবিত্র দরবার শরীফে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ তবারুক খেতেন। তারপরেও বলা যায় সে সময়কার জীবন ব্যবস্থা বর্তমান সময়য়ের মত কঠিন ছিলনা। একটি হাদিস শরীফ থেকেই বিষয়টি উপলব্ধি করা যেতে পারে। হাদিস শরীফ উনার মাঝে রয়েছে "শেষ যামানায় সুন্নত পালন করতে দিনার-দিহরামের প্রয়োজন পড়বে"। অর্থ বেশ স্পষ্ট। সুন্নত পালন অর্থই হচ্ছে সম্মানিত শরীয়ত পালনের বিষয় অর্থাৎ শেষ যামানায় শরীয়ত পালন করতে অর্থের প্রয়োজন পড়বে । এখান থেকে আরও যে অর্থ গ্রহন করা যায় তা হচ্ছে শেষ যামানায় অর্থ ছাড়া দৈনন্দিন কার্যক্রমতো করা যাবেই না এমন কি আমল করতেও অর্থের দরকার পরবে।
তাহলে এই সময়ে যিনি প্রতিদিন তিন বেলা হাজার হাজার মানুষকে খাওয়াচ্ছেন, উনাদের ভরণ পোষণের দায়িত্ব গ্রহন করছেন, মাসজিদ-মাদরাসা এতিম খানা চালাচ্ছেন তিনি যে কত গনী এবং মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে নিসবত-কুরবত প্রাপ্ত তা সাধারণের অনুভবের অনেক ঊর্ধ্বে। প্রতিদিন তিন বেলা খাবারের আয়োজনের পাশাপাশি "বিশেষ আইয়ামুল্লাহ" বা আল্লাহ পাক উনার নিদর্শন যুক্ত যে সকল দিন- রাত রয়েছে সেদিন বিশেষ ব্যবস্থায় পরিবেশন করা হয় বিশেষ খাবার। পোলাও, গরু-খাসীর রেজালা, মুরগীর রোস্ট, টিকিয়া, জরদা-ফিন্নী এসব হচ্ছে অতি পরিচিত কয়েকটি খাবার যা বিশেষ দিনগুলোতে পরিবেশন করা হয়। সারা বছরে এখন পর্যন্ত হযরত মুজাদ্দিদে আযম আলাইহিস সালাম তিনি আমাদের কাছে কিতাবে প্রকাশিত দিনসমূহ সহ মোট ৭৪ দিন বিশেষ আইয়ামমুল্লাহ হিসেবে প্রকাশ করেছেন, যা সামনে আর বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই বিশেষ দিন সমূহের মধ্যে যেদিন হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের বিলাদত শরীফ উপস্থিত হয় সেদিন হযরত মুজাদ্দিদে আযম আলাইহিস সালাম তিনি সম্মানিত আকিকা মুবারকের জন্য পশু যবেহ করার ব্যবস্থা গ্রহন করেন। পবিত্র জুমুয়াবার এবং পবিত্র ইসনাইনীল আযীম শরীফে তিনি আলাদাভাবে আকিকা পালনারথে পশু যবেহ করার ব্যবস্থা গ্রহন করেন। সুবহানাল্লাহ। কেবল এ বছর অর্থাৎ ১৪৩৯ হিজরি সনের পবিত্র ১২ শরীফ উনার সম্মানার্থে মানুষকে খাওয়ানোর জন্য কেনা হয় অর্ধ লক্ষ মুরগী; টাকার অঙ্কে আসে প্রায় ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকার উপরে । কেবল ৬৩ দিন মাহফিল উনার মধ্যে যবেহ করা হয় ৬৩ টি খাসী এছাড়া কেবল ১২ই শরীফ উনার দিনে যবেহ করা হয় একটি বড় আকারের (এখানে বড় আকার বলতে সে সময়ে বাজারে পাওয়া সবচেয়ে বড় প্রানী) মহিষ, একটি বড় আকারের গরু, একটি বড় আকৃতির খাসী এছাড়া আলাদাভাবে ৯ টি খাসী ( মোট ১২ টি প্রানী) । সুবহানাল্লাহ। এখান থেকে সহজেই অনুমেয় কি ধরণের প্রস্তুতি চলে সারা বছর ধরে। প্রতি বছর ১০-১১- ১২ ই যিলহজ্জ শরীফে প্রায় ২৫০ টি গরু, ৪৫০ টি খাসী কুরবানী করা হয় এবং এ সকল গোশত সমূহ সংরক্ষণ করা হয় বৃহদাকারের ফ্রীজে। কেবল গোশত সংরক্ষণ করার উদ্দেশ্যেই বিদেশ থেকে কেনা হয়েছে ২৪ টন ধারণ ক্ষমতার বিশাল ফ্রিজ। এ ছাড়াও রয়েছে ৮ টন ধারণ ক্ষমতার আরও ৩ টি ফ্রিজ।
১৫ শতকের সুমহান মুজাদ্দিদ তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হূযুর পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সঙ্গে নিসবত মুবারক হাছিলের এক বিস্ময়কর অধ্যায় রচনা করেছেন , তিনি মহান আলাহপাক ও উনার রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনাদের মুহব্বতের এক নতুন দিগন্ত রচনা করেছেন যে দিগন্তদিয়ে কেবলই ১৫ শতকের সুমহান মুজাদ্দিদ, সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আযম আলাইহিস সালাম এবং উনার সম্মানিত আহল পাক গণ উদ্ভাসিত। সুবহানাল্লাহ।