সবচেয়ে বড় নাফরমান সর্বোচ্চ জান্নাতী
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছেন
إن رجلا عصى الله مائتي سنة يتمرد ويجترئ عليه فيها كلها فلما مات أخذ بنو إسرائيل برجله والقوه على مزبلة فأوحى الله إلى حضرت موسى عليه الصلوة والسلام أن غسله وكفنه وصلى عليه في جمع بني إسرائيل ففعل ما أمره الله تعالى به فتعجب بنو إسرائيل من ذلك فأخبروه انه لم يكن في بني إسرائيل أغنى منه ولا أكثر معاصي منه فقال قد علمت ولكن الله أمرني بذلك فقالوا سل ربك فسال حضرت موسى عليه السلام ربه عز وجل فقال يا رب قد علمت ما قالوا فأوحى الله إليه أن صدقوا ما
قالوا إنه عصاني مائتي سنة إلا أن يوما من الأيام فتح التوراة فنظر إلى اسم سيدنا مؤلنا محمد صلى الله عليه وسلم مكتوبا فقبله ووضعه بين عينيه وفي رواية أخرى وصلى
عليه فشكرت له ذلك فغفرت له ذنوب مائتي سنة وزوجته سبعين حوراء অর্থ: “নিশ্চয়ই (বনী ইসরাঈলে) এক ব্যক্তি (যে দুই শত বছর হায়াত পেয়েছিলো এবং) দুই শত বছর মহান আল্লাহ পাক উনার নাফরমানী করেছিলো। সে তার সম্পূর্ণ হায়াতে মহান আল্লাহ পাক উনার চরম অবাধ্য ও নাফরমানীতে মশগূল ছিলো, বেপরওয়া ছিলো। (যার কারণে কেউ তাকে পছন্দ করতো না এবং সকলে চরম ঘৃণা করতো।) ফলে সে যখন ইন্তেকাল করল, তখন বনী ইসরাঈলরা তার পায়ে ধরে তাকে টেনে হেঁচড়ে গোবর পূর্ণ স্থানে, গোবরের স্তূপে নিক্ষেপ করল। তারপর যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি জলীলুল ক্বদর নবী এবং রসূল হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে সম্মানিত ওহী মুবারক করেন যে, তিনি যেন বণী ইসরাঈলের সমস্ত লোকজন নিয়ে ঐ ব্যক্তির গোসল, কাফন ও দাফনের ব্যবস্থা করেন এবং তার জানাযার নামায পড়েন। মহান আল্লাহ পাক তিনি যা নির্দেশ মুবারক করলেন, হযরত কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি তাই করলেন। এই কারণে বনী ইসরাঈলরা আশ্চর্য হলো। তারা বললো, সে এমন এক ব্যক্তি- যার মতো অত্যধিক সীমালঙ্গনকারী, চরম অবাধ্য, অত্যন্ত কঠিন হৃদয়ের অধিকারী, চরম বেপরওয়া, কর্কশভাষী, বড় যালিম, চরম বেআদব, সেরকাশী (অবাধ্য ) এবং অত্যধিক পাপীষ্ঠ, গুণাহগার আর কেউ ছিলো না। হযরত কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, নি:সন্দেহে আমি তা জানি। কিন্তু মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাকে এরূপ করার জন্য সম্মানিত নির্দেশ মুবারক দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! তখন তারা সবাই বললো, আপনি (দয়া করে) আপনার রব তা'য়ালা মহান আল্লাহ পাক উনাকে (এ বিষয়ে) জিজ্ঞাসা করুন (যে, এর হাক্বীক্বত কী?)। তারপর হযরত কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি উনার রব তা'য়ালা মহান আল্লাহ পাক উনাকে সুওয়াল করলেন। তিনি বললেন, আয় বারে এলাহী! বনী ইসরাঈলরা যা বলেছে আপনি অবশ্যই তা জানেন। তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে সম্মানিত ওহী মুবারক করলেন যে, বনী ইসরাঈলরা যা বলেছে তা সত্যই বলেছে। নিশ্চয়ই সে দুই শত বছর আমার নাফরমাণী করেছে। তবে সে একদিন সম্মানিত ও পবিত্র তাওরাত শরীফ খুলে দেখতে পেলো যে, সেখানে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় ইসিম বা নাম মুবারক লিখিত রয়েছেন।
তখন সে খুশি মুবারক প্রকাশ করে অত্যন্ত মুহব্বতে আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবুব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় ইসিম মুবারক 'সাইয়্যিদুনা হযরত মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মধ্যে (একবার মাত্র) বুছা দিয়েছিলো এবং খুশি মুবারক প্রকাশ করে অত্যন্ত মুহব্বতে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় ইসিম মুবারক তার দুই চোখে লাগিয়েছিলো। সুবহানাল্লাহ! অপর বর্ণনায় রয়েছেন, এবং সে উনার প্রতি সম্মানিত ছলাত মুবারক পাঠ করেছিলো অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদুল আ'ইয়াদ শরীফ পালন করেছিলো। সুবহানাল্লাহ! এই কারণে আমি তাকে উত্তম প্রতিদান দান করেছি। সুবহানাল্লাহ! তার দুই শত বছরের (জীবনের) সমস্ত গুণাহ-খতাগুলো ক্ষমা করে দিয়েছি এবং তার সাথে সত্তর জন হুরের বিবাহ দিয়েছি। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ তার উপর জাহান্নাম হারাম করে সম্মানিত জান্নাত মুবারক ওয়াজিব করে দিয়েছি এবং আপনার মতো একজন জলীলুল ক্বদর নবী ও রসূল উনার জন্য তার গোসল, কাফন ও দাফনের ব্যবস্থা করা এবং তার জানাযার নামায পড়া ফরয করে দিয়েছি।” সুবহানাল্লাহ! (খছায়িছল কুবরা ১/২৯, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১/৪১২, সীরাতে হালবিয়্যাহ ১/১৩৬, তাফসীরে দুররে মানছুর ৩/৫৭৯, শরহুল বুখারী ২/১১৯ ইত্যাদি)
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় ইসিম বা নাম মুবারক মাত্র একবার বুছা দিলে, চোখে স্পর্শ মুবারক করলে অথবা উনার প্রতি একবার সম্মানিত ছলাত মুবারক পাঠ করলে অর্থাৎ উনার সম্মানার্থে সামান্য সময় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদুল আ'ইয়াদ শরীফ পালন করলে যদি দুইশত বছরের সমস্ত গুনাহ্-খতা মাফ করে দেয়া হয়, ঐ ব্যক্তি উনার উপর জহান্নাম হারাম করে দিয়ে সম্মানিত জান্নাত মুবারক ওয়াজিব করে দেয়া হয়, ৭০ জন হুরের সাথে বিবাহ দেওয়া হয় এবং ঐ ব্যক্তি উনার গোসল, কাফন ও দাফনের ব্যবস্থা করা এবং তার জানাযার নামায পড়া জলীলুল ক্বদর নবী এবং রসূল হযরত কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার উপর ফরয করে দেয়া হয়, তাহলে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদুল আ'ইয়াদ শরীফ পালন করার ফযীলত মুবারক কতো বেমেছাল এটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ! আর এই উম্মত যদি খালিছ নিয়তে দায়িমীভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদুল আ'ইয়াদ শরীফ পালন করে, তাহলে কতো বেমেছাল নিয়ামত মুবারক লাভ করবে, সেটা বলার অপেক্ষাই রাখেনা। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত মুসলমান উনাদেরকে এই সীমাহীন নিয়ামত ও ফযীলত মুবারক থেকে মাহরূম করার জন্য বাতিল ৭২ ফিরক্বার লোকেরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদুল আ'ইয়াদ শরীফ পালন নিয়ে নানা বিভ্রান্তি ছড়িয়ে থাকে, নানা চূ-চেরা, ক্বীল-ক্বাল করে থাকে। নাঊযুবিল্লাহ! সারা দুনিয়ার সমস্ত সম্মানিত মুসলমান উনাদের জন্য ফরয হচ্ছেন বাতিল ৭২ ফিরক্বার লোকদের সর্বপ্রকার বিভ্রান্তি ও চূ-চেরা, ক্বীল-ক্বালের দাঁতভাঙ্গা জবাব দেয়া এবং যথাযথ তা'যীম-তাকরীম এবং সীমাহীন আদব-শরাফত ও মুহব্বতের সাথে, সাখাওয়াতির সাথে, অত্যন্ত জাকযমকের সাথে দায়িমীভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদুল আ'ইয়াদ শরীফ পালন করা। সুবহানাল্লাহ!
বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, রহমতুল্লিল আলামীন মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানার্থে, উনারই জন্য খুশি মুবারক প্রকাশ করে ইতিহাসে নযীরবিহীন অনন্তকালব্যাপী মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদুল আ'ইয়াদ শরীফ মাহফিল মুবারক জারী করেছেন। সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম! এরপরেও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাস মুবারক এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র তারীখ মুবারক সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহুরিল আ'যম শরীফ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ) মাস উনার সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ'দাদ শরীফ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই শরীফ) উনার সম্মানার্থে ১৪৪৪ হিজরী শরীফ উপলক্ষে বিশেষভাবে ৯০ দিনব্যাপী মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদুল আ'ইয়াদ শরীফ মাহফিল মুবারক উনার ইন্তেজাম মুবারক করেছেন। সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম! তাই সকলের জন্য ফরয হচ্ছেন- জান-মাল সমস্ত কিছু দিয়ে হাক্বীক্বীভাবে উক্ত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদুল আ'ইয়াদ শরীফ মাহফিল মুবারক উনার গোলামী মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়া। সুবহানাল্লাহ!
যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি মুতুহ্হার, মুত্বাহির, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, রহমতুল্লিল আলামীন মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার সম্মানার্থে আমাদের সবাইকে কবুল করুন। আমীন!