নাস্তিকদের আপত্তি-একমাত্র আল্লাহ জানেন গর্ভের সন্তান ছেলে হবে না মেয়ে হবে যা অন্য কারো পক্ষে জানা সম্ভব নয় তিনি কি জানতেন না ভবিষ্যতে আল্ট্রাসনোগ্রাফি আবিষ্কৃত হবে?

নাস্তিকদের আপত্তি-একমাত্র আল্লাহ জানেন গর্ভের সন্তান ছেলে হবে না মেয়ে হবে যা অন্য কারো পক্ষে জানা সম্ভব নয় তিনি কি জানতেন না ভবিষ্যতে আল্ট্রাসনোগ্রাফি আবিষ্কৃত হবে?

নাস্তিকদের আপত্তি ১১ : একমাত্র আল্লাহ জানেন গর্ভের সন্তান ছেলে হবে না মেয়ে হবে (Quran 31:34),  যা অন্য কারো পক্ষে জানা সম্ভব নয় (Sahih Bukhari 2:17:149)! তিনি কি জানতেন না ভবিষ্যতে আল্ট্রাসনোগ্রাফি আবিষ্কৃত হবে?

নাস্তিকদের আপত্তি ১২ : হাদিস জানায়, জন্মের পূর্বে কারো পক্ষেই জানা সম্ভব নয় সন্তান ছেলে হবে না মেয়ে হবে (Sahih Bukhari 2:17:149)!  উক্ত বক্তব্যের সাথে কি আপনি একমত?

খ-ন : মহান আল্লাহ পাক তিনি কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-

اِنَّ اللهَ عِندَهُ عِلْمُ السَّاعَةِ وَيُنَزِّلُ الْغَيْثَ وَيَعْلَمُ مَا فِي الْاَرْحَامِ ۖ وَمَا تَدْرِي نَفْسٌ مَّاذَا تَكْسِبُ غَدًا ۖ وَمَا تَدْرِي نَفْسٌ بِاَيِّ اَرْضٍ تَـمُوْتُ ۚ اِنَّ اللهَ عَلِيْمٌ خَبِيْرٌ◌

অর্থ : “নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক উনার কাছেই কিয়ামতের ইলম রয়েছে। তিনিই বৃষ্টি বর্ষণ করেন এবং মায়ের রেহেমে যা থাকে, তিনি তা জানেন। কেউ জানে না আগামীকাল সে কি উপার্জন করবে এবং কেউ জানে না কোন দেশে সে মৃত্যুবরণ করবে। মহান আল্লাহ পাক তিনি সর্বজ্ঞ, সর্ববিষয়ে সম্যক জ্ঞাত।” (পবিত্র সূরা লুক্বমান শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৪)

আর এই ৫টি বিষয়ের পরিপূর্ণ ইলম যে মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট রয়েছে এ বিষয়ে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عُمَرَ رَضِىَ اللهُ تَعالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِفْتَاحُ الْغَيْبِ خَـمْسٌ لَا يَعْلَمُهَا اِلَّا اللهُ لَا يَعْلَمُ اَحَدٌ مَا يَكُوْنُ فِي غَدٍ وَلَا يَعْلَمُ اَحَدٌ مَا يَكُوْنُ فِي الاَرْحَامِ وَلَا تَعْلَمُ نَفْسٌ مَاذَا تَكْسِبُ غَدًا وَمَا تَدْرِي نَفْسٌ بِاَىِّ اَرْضٍ تَـمُوتُ وَمَا يَدْرِي اَحَدٌ مَتَى يَـجِيءُ الْمَطَرُ‏.‏

অর্থ ” “হযরত ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, গায়েব বা অদৃশ্য বিষয়ের চাবি হল পাঁচটি, এই চাবি মহান আল্লাহ পাক তিনি ছাড়া অন্য কারো কাছে নেই। কারো কাছে এই ইলম নেই যে, (১) আগামীকাল কী ঘটবে, (২) আগামীকাল সে কী অর্জন করবে, (৩) মায়ের রেহেমে কী আছে, (৪) সে কোথায় মারা যাবে ও (৫) কখন বৃষ্টি হবে।” (বুখারী শরীফ)

উপরোক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের মধ্যে বৃষ্টি ও মায়ের রেহেমের উল্লেখের মাধ্যমে মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত ইলম মুবারক উনার রূপরেখার একটি নূন্যতম নমুনা তুলে ধরা হয়েছে। মূলত এই পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে ৫টি বিষয়ের ইলম সম্পর্কে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে-

১) কিয়ামতের ইলম 

২) বৃষ্টি

৩) নতুন জীবনের সৃষ্টি

৪) প্রাত্যহিক জীবনযাত্রা

৫) জীবের মৃত্যু।

এই ৫টি রহস্যের ইলমকে সংক্ষিপ্তাকারে প্রকাশ করা হয়েছে। এই পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে সময় ও জ্ঞান সম্বন্ধে যুক্তির অবতারণা করা হয়েছে। সভ্যতার অগ্রগতিতে মানুষ তার জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার জন্য গর্ব করে থাকে। কিন্তু মহান আল্লাহ পাক উনার অসীম ইলম মুবারক উনার নিকট এই জ্ঞান নিতান্তই নগণ্য। আর বিশ্বের অনন্ত প্রবাহে সময়ের প্রকৃত জ্ঞান সম্বন্ধে আমাদের জ্ঞান আরও অনিশ্চিত।

আমরা জানি বৃষ্টিপাত উদ্ভিদের জন্ম দেয়, মাটিকে শস্য শ্যামল ভূমিতে পরিণত করে, মায়ের রেহেমের অন্ধকারে নতুন জীবনের সূত্রপাত ঘটে। কিন্তু কেউ সঠিকভাবে বলতে পারে না কখন, কোন সময়ে কোথায় তা ঘটবে? কেউ বলতে পারে না মায়ের রেহেমে নুত্বফা দশা আলাক্ব পর্যন্ত পৌঁছাবে কিনা? আলাক্ব দশা মুদগা দশায় উপনীত হতে পারবে কিনা? ভ্রুণের মধ্যে প্রাণের সঞ্চার ঘটবে কিনা? প্রাণের সঞ্চার ঘটলেও ভ্রুণটির গর্ভপাত হয়ে যাবে কিনা? ভ্রুণটি কতদিন মায়ের রেহেমে অবস্থান করবে? শিশুটি সুস্থ অবস্থায় জন্মগ্রহণ করবে কিনা? শিশুটি বিকলাঙ্গ হয়ে জন্মলাভ করবে কিনা? জন্মগ্রহণ করার পূর্ব মুহূর্তে শিশুটি মৃত্যুবরণ করবে কিনা? জন্মের পরে পূর্ণবয়স্করূপে তার কি বিশেষত্ব হবে? 

সে কি তার পিতামাতার বা সমাজের জন্য বরকতময় না অভিশাপ হবে? কবে কোথায় কিভাবে জীবনাবসান ঘটবে? ইত্যাদি হাজারো প্রশ্নের জ্ঞান কারো কাছে নেই কিন্তু মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট এইসব জিজ্ঞাসার প্রতিটির ইলম মুবারক রয়েছে।

এমনকি শেষ বিচারের দিন যেদিন প্রতিটি বিষয়ের প্রকৃত মূল্যায়ন হবে এবং সঠিক ভারসাম্য প্রতিষ্ঠিত হবে, সে বিচারে তার কি অবস্থা হবে, শেষ পরিণতি কোথায় হবে? প্রতিটি বিষয়েরই ইলম মুবারক মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট রয়েছে।

সুতরাং এই পবিত্র আয়াত শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের দ্বারা এটা বুঝানো হয়নি যে, একমাত্র মহান আল্লাহ পাক তিনিই জানেন মায়ের রেহেমে সন্তান ছেলে হবে না মেয়ে হবে। বরং এই পবিত্র আয়াত শরীফ উনার দ্বারা সার্বিক বিষয়ের ইলম যে মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট রয়েছে সেটাই স্পষ্ট করা হয়েছে।

আর মায়ের রেহেমে সন্তান ছেলে হবে না মেয়ে হবে এই ইলম মহান আল্লাহ পাক তিনি কোন মাধ্যম ছাড়াই যাকে ইচ্ছা জানিয়ে দিতে পারেন। এমনকি কোন মানুষ কোথায় মৃত্যুবরণ করবে এই ইলমও মহান আল্লাহ পাক তিনি যাকে ইচ্ছা জানিয়ে দিতে পারেন।

কেননা, মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

 يُؤْتِي الْحِكْمَةَ مَن يَشَاءُ ۚ وَمَن يُؤْتَ الْـحِكْمَةَ فَقَدْ اُوتِيَ خَيْرًا كَثِيرًا ۗ 

অর্থ : “মহান আল্লাহ পাক তিনি যাঁকে ইচ্ছা বিশেষ ইলম হাদিয়া করেন এবং যাঁকে বিশেষ ইলম হাদিয়া করা হয়, তিনি প্রভুত কল্যাণকর বিষয় প্রাপ্ত হন।” (পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ২৬৯)

আর পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-

عَنْ اُمِّ الْمُؤْمِنِينَ حَضْرَتْ عَائِشَةَ الصديقة عَلَيْهَا السَّلَامَ اَنَّـهَا قَالَتْ اِنَّ اَبَا بَكْرٍ الصِّدِّيْقَ عَلَيْهِ السَّلَامُ كَانَ نَـحَلَهَا جَادَّ عِشْرِينَ وَسْقًا مِنْ مَالِهِ بِالْغَابَةِ فَلَمَّا حَضَرَتْهُ الْوَفَاةُ قَالَ وَاللهِ يَا بُنَيَّةُ مَا مِنْ النَّاسِ اَحَدٌ اَحَبُّ اِلَيَّ غِنًى بَعْدِي مِنْكِ وَلَا اَعَزُّ عَلَيَّ فَقْرًا بَعْدِي مِنْكِ وَاِنِّي كُنْتُ نَـحَلْتُكِ جَادَّ عِشْرِينَ وَسْقًا فَلَوْ كُنْتِ جَدَدْتِيهِ وَاحْتَزْتِيهِ كَانَ لَكِ وَاِنَّـمَا هُوَ الْيَوْمَ مَالُ وَارِثٍ وَاِنَّـمَا هُـمَا اَخَوَاكِ وَاُخْتَاكِ فَاقْتَسِمُوْهُ عَلَى كِتَابِ اللهِ قَالَتْ عَائِشَةُ فَقُلْتُ يَا اَبَتِ وَاللهِ لَوْ كَانَ كَذَا وَكَذَا لَتَرَكْتُهُ اِنَّـمَا هِيَ اَسْـمَاءُ فَمَنْ الْاُخْرَى فَقَالَ اَبُوْ بَكْرٍ ذُو بَطْنِ بِنْتِ خَارِجَةَ اُرَاهَا جَارِيَةً.

অর্থ : “উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। হযরত ছিদ্দীক্বে আকবার আলাইহিস সালাম তিনি উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনাকে গাবা নামক স্থানে বাগানের কিছু খেজুর গাছ হাদিয়া করলেন। যার মধ্যে বিশ ওসক খেজুর উৎপন্ন হতো। অতঃপর হযরত ছিদ্দীক্বে আকবার আলাইহিস সালাম তিনি উনার পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশের সময় উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনাকে সম্বোধন করে বলতে লাগলেন, হে সম্মানিত আম্মাজান আলাইহাস সালাম! মহান আল্লাহ পাক উনার কসম, আমার পরে আপনার চেয়ে অধিক সচ্ছল কেউ থাকুক আমি তা পছন্দ করি না, আর আপনি অসচ্ছল থাকেন তাও আমার সবচাইতে বেশি অপছন্দ। আমি আপনাকে এমন খেজুর গাছ দিয়েছিলাম যার মধ্যে বিশ ওসক খেজুর জন্মে। আপনি যদি তা দখলে রাখতেন এবং ফল সংগ্রহ করতে থাকতেন তবে তা আপনার সম্পদ হয়ে যেতো। এখন তো তা ওয়ারিসদের সম্পত্তি। ওয়ারিস আপনার দুই ভাই ও দুই বোন। সুতরাং ওয়ারিস স্বত্ত্বকে মহান আল্লাহ পাক উনার কিতাব মুবারক অনুসারে বন্টন করুন। উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, হে সম্মানিত আব্বাজান আলাইহিস সালাম! যত বড় সম্পদই হোক না কেন, আমি তা ছেড়ে দিতাম, কিন্তু আমার তো বোন শুধু একজন হযরত আসমা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি, অন্য জন কে? হযরত ছিদ্দীক্বে আকবার আলাইহিস সালাম তিনি উত্তরে বললেন, হযরত বিনতে খারিজা রদ্বিয়াল্লাহু আনহা তিনি হামেলা শান মুবারক-এ আছেন। উনার রেহেম শরীফ-এ যে আওলাদ আছেন আমার ধারণা তিনি মেয়েই হবে।” (মুয়াত্তা মালিক শরীফ : كتاب الأقضية : ১৪৪৩)

হযরত ইবনে আসকালানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার বিষয়ে একটি ঘটনা বর্ণনা করেন-

“হযরত হারছামা বিন সালামা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, আমরা ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার সাথে ছফরে বের হলাম। তিনি চলতে চলতে কারবালায় গিয়ে পৌঁছলেন। সেখানকার এক গাছের নিচে গিয়ে নামলেন। তারপর নামায আদায় করলেন। নামায শেষে যমীন থেকে কিছু মাটি হাত মুবারক-এ নিয়ে ঘ্রাণ মুবারক নিলেন। তারপর বললেন, হে মাটি! তোমার জন্য আফসুস! তোমার উপর এমন কিছু সম্মানিত ব্যক্তিত্ব উনাদেরকে শহীদ করা হবে, যাঁরা বিনা হিসেবে সম্মানিত জান্নাত উনার মধ্যে প্রবেশ করবেন। এরপর রাবী নিজেই বলেন যে, আমি নিজে দেখেছি যে উক্ত স্থানেই সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ আলাইহিস সালাম তিনি শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ করেন।” (তাহযীবুত তাহযীব : ২/৩৪৮)

সুতরাং প্রমাণিত হলো যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি যাকে ইচ্ছা তাকেই জন্ম-মৃত্যুর বিষয়টি জানিয়ে দিতে পারেন। এমনকি সন্তান ছেলে হবে নাকি মেয়ে হবে তাও তিনি জানিয়ে দিতে পারেন। অর্থাৎ এই পবিত্র আয়াত শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ দ্বারা কখনোই বর্ণনা করা হয়নি যে, একমাত্র মহান আল্লাহ পাক তিনিই জানেন মায়ের রেহেমের সন্তান ছেলে হবে না মেয়ে হবে। বরং প্রমাণিত হলো, মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট এ বিষয় সহ সর্ব বিষয়ের পরিপূর্ণ ইলম মুবারক রয়েছে এবং মহান আল্লাহ পাক তিনি চাইলে অন্য যে কারো পক্ষে তা জানা সম্ভব। আর মহান আল্লাহ পাক তিনি জানালে তখন আল্ট্রাসনোগ্রাফিরও প্রয়োজন পড়ে না। 

উপরন্তু মহান আল্লাহ পাক তিনি জানালে সে ইলম মুবারক উনার মধ্যে কোন ভুলের সম্ভাবনাই থাকে না। কিন্তু আল্ট্রাসনোগ্রাফি দ্বারা সংগৃহীত প্রতিবেদনে ভুরিভুরি ভুলের সমাহার রয়েছে।

যেমন অনেক সময় আল্ট্রাসনোগ্রাফি দ্বারা সংগৃহীত প্রতিবেদনে ছেলে সন্তান উল্লেখ থাকলেও ভুমিষ্ট হয় মেয়ে সন্তান, আবার বিপরীতক্রমে প্রতিবেদনে মেয়ে সন্তান উল্লেখ থাকলেও ছেলে সন্তান ভুমিষ্ট হওয়ার ঘটনাও ঘটে। অনুরূপভাবে প্রতিবেদনে জমজ সন্তান উল্লেখ থাকলেও ভুমিষ্ট হয় একজন সন্তান, আবার বিপরীতক্রমে প্রতিবেদনে একজন সন্তান উল্লেখ থাকলেও জমজ সন্তান ভুমিষ্ট হওয়ার ঘটনাও ঘটে। অর্থাৎ আল্ট্রাসনোগ্রাফি দ্বারা সবসময় সঠিক তথ্য পাওয়া সম্পূর্ণরূপে দুস্কর। কেননা আল্ট্রাসনোগ্রাফি হচ্ছে মানুষের অতি নগণ্য ইলমের একটি বহিঃপ্রকাশ যা ভুলের উর্ধ্বে নয়। আর এই বিষয়ে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

وَمَا اُوتِيتُم مِّنَ الْعِلْمِ اِلَّا قَلِيلًا

অর্থ : “তোমাদেরকে সামান্য জ্ঞানই দান করা হয়েছে।” (পবিত্র সূরা বনী ইসরাঈল শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৮৫)

যেহেতু মহান আল্লাহ পাক উনার কর্তৃক প্রদত্ত প্রকৃত ইলম মনোনীত মহান ব্যক্তিত্ব উনাদের ছাড়া কারো কাছে নেই, তাই এই সামান্য ইলম ভুলের উর্ধ্বে নয়। 

তাছাড়া একটি নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বে আল্ট্রাসনোগ্রাফি দ্বারা সন্তান ছেলে হবে না মেয়ে হবে তা জানা সম্পূর্ণরূপেই অসম্ভব। তখনো লিঙ্গের বিষয়টিই স্পষ্ট হয় না।

যেহেতু মহান আল্লাহ পাক উনার কাছে সর্ববিষয়ের ইলম মুবারক রয়েছে, তাই উনার ইলম মুবারক-এ পৃথিবীতে আল্ট্রাসনোগ্রাফি আবিষ্কৃত হওয়ার বিষয়টিও আছে। আর এই আল্ট্রাসনোগ্রাফির দ্বারা নির্ণীত প্রতিবেদনে ভুল থাকবে- এই ইলম মুবারকও উনার আছে। এমনকি এক সময় পৃথিবী হতে আল্ট্রাসনোগ্রাফিসহ সমস্ত প্রযুক্তি বিলুপ্ত হয়ে যাবে- এই ইলম মুবারকও উনার রয়েছে।

অতএব যে বিষয়টি দিবালোকের ন্যায় সুস্পষ্ট হলো তা এই যে, মহান আল্লাহ পাক উনার নিকটই সর্ববিষয়ের পরিপূর্ণ ইলম রয়েছে। তিনি যদি কাউকে কোন বিষয়ে ইলম প্রদান না করেন, তাহলে সে বিষয়ে তার কোন জ্ঞানই অর্জিত হবে না। আর মহান আল্লাহ পাক তিনি যদি কাউকে কোন বিষয়ে জানিয়ে দেন, তাহলে যতটুকু জানানো হয়েছে তার বেশি জ্ঞান সে অর্জন করতে পারবে না।


 নাস্তিকদের আপত্তি- হাদিস জানায়, সন্তানের চেহারা নির্ভর করে পিতা বা মাতার মাঝে কার বীর্যপাত আগে ঘটবে তার ওপর  কিন্তু আমরা এখন জানি যে, সন্তানের চেহারা নির্ভরশীল পিতা-মাতার জেনেটিক্স এর ওপর! এ ধরনের কুসংস্কারে আপনি কি করে বিশ্বাস স্থাপন করছেন?

নাস্তিকদের আপত্তি- হাদিস জানায়, সন্তানের চেহারা নির্ভর করে পিতা বা মাতার মাঝে কার বীর্যপাত আগে ঘটবে তার ওপর  কিন্তু আমরা এখন জানি যে, সন্তানের চেহারা নির্ভরশীল পিতা-মাতার জেনেটিক্স এর ওপর! এ ধরনের কুসংস্কারে আপনি কি করে বিশ্বাস স্থাপন করছেন?

 নাস্তিকদের আপত্তি ৯ : হাদিস জানায়, সন্তানের চেহারা নির্ভর করে পিতা বা মাতার মাঝে কার বীর্যপাত আগে ঘটবে তার ওপর (Sahih Bukhari 4:55:546)! কিন্তু আমরা এখন জানি যে, সন্তানের চেহারা নির্ভরশীল পিতা-মাতার জেনেটিক্স এর ওপর! এ ধরনের কুসংস্কারে আপনি কি করে বিশ্বাস স্থাপন করছেন?

নাস্তিকদের আপত্তি ১০ : “মুহম্মদের ভাষ্যমতে, যদি কোন পুরুষের প্রথমে বীর্য স্থলন ঘটে তবে সন্তানের চেহারা হবে তার (বাবার) মত, যদি স্ত্রীর আগে ঘটে তবে হবে মায়ের মত (Sahih Bukhari 4:55:546) ! নবীর এধরনের মিথ্যাচারে আপনি বিশ্বাস স্থাপন করে যাচ্ছেন কেন?

http://au.answers.yahoo.com/question/index?qid=20100201220421AATRr1l

http://www.dnaftb.org/1/Ó

খন্ডন : সন্তানের চেহারা নির্ভর করে পিতা-মাতার জেনেটিক্স এর উপর। এ কথাটি বলা হচ্ছে বংশগতির সূত্রগুলোর ভিত্তিতে। ১৯০০ সালের আগে এ বিষয়গুলো নিয়ে কারো কোন জ্ঞানও ছিল না। তথাকথিত বিজ্ঞানী ম্যান্ডেল বংশগতির সূত্রগুলো উপস্থাপন করেছে দাবী করলেও ১৯০০ সালের আগে কেউই এ ব্যাপারে অন্য কেউ গবেষণাই করেনি। 

অথচ সপ্তম শতাব্দীতেই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন- “পুরুষের নুত্বফা সাদাটে এবং নারীর নুত্বফা হলুদ হয়। যখন এ দুটি মিলিত হয় এবং পুরুষের নুত্বফা নারীর নুত্বফার ওপর আধিপত্যশালী হয় তখন মহান আল্লাহ পাক উনার হুকুম মুবারক অনুযায়ী সন্তানের চেহারা পিতার মতো হয়। আর যখন নারীর নুত্বফা পুরুষের নুত্বফার ওপর আধিপত্যশালী হয়, তখন মহান আল্লাহ পাক উনার হুকুম মুবারক অনুযায়ী সন্তানের চেহারা মাতার মতো হয়।” 

যেমন পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত আছে-

عَنْ اُمُّ الْمُؤْمِنِيْنْ حَضْرَتْ عَائِشَةَ عَلَيْهَ السَّلَامَ اَنَّ امْرَاَةً، قَالَتْ لِرَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ هَلْ تَغْتَسِلُ الْمَرْاَةُ اِذَا احْتَلَمَتْ وَاَبْصَرَتِ الْمَاءَ فَقَالَ نَعَمْ.‏ فَقَالَتْ لَـهَا عَائِشَةُ تَرِبَتْ يَدَاكِ وَاُلَّتْ.‏ قَالَتْ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ دَعِيهَا وَهَلْ يَكُونُ الشَّبَهُ اِلاَ مِنْ قِبَلِ ذَلِكِ اِذَا عَلاَ مَاؤُهَا مَاءَ الرَّجُلِ اَشْبَهَ الْوَلَدُ اَخْوَالَهُ وَاِذَا عَلاَ مَاءُ الرَّجُلِ مَاءَهَا اَشْبَهَ اَعْمَامَهُ.‏

অর্থ : “উম্মুল মু’মিনীন হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমত মুবারকে একজন মহিলা ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা তিনি সুওয়াল করলেন, একজন মহিলার ইহ্তিলাম হলে এবং কাপড়ে দাগ দেখতে পেলে কি গোছল ফরয হবে? নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, হ্যাঁ, গোছল ফরয হবে। উম্মুল মু’মিনীন হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনিও উক্ত মহিলা ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা উনার কথায় বিষ্ময় প্রকাশ করলে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, সন্তানের মায়ের ন্যায় হবার পেছনে কি এছাড়া অন্য কোনো কারণ থাকতে পারে? যখন নারীর নুত্বফা পুরুষের নুত্বফার ওপর আধিপত্যশালী হয়, তখন সন্তান মাতামহের খান্দানের লোকদের অনুরূপ হয়। আর যখন পুরুষের নুত্বফা নারীর নুত্বফার ওপর আধিপত্যশালী হয়, তখন সন্তান পিতামহের খান্দানের লোকদের অনুরূপ হয়।’ (মুসলিম শরীফ)

উপরোক্ত হাদীছ শরীফ উনার আলোচনা মুতাবিক বুঝা যাচ্ছে যে, একটিমাত্র ফিনোটাইপিক (Phenotypic বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করেই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সুস্পষ্টভাবেই বিশ্ববাসীকে একটি জিনোটাইপিক (Genotypic)  বৈশিষ্ট্যের বিষয় জানিয়ে দিলেন। অথচ তথাকথিত বিজ্ঞানীরা ক্বিয়ামত পর্যন্ত চেষ্টা করলেও এই ফিনোটাইপিক বিষয়টি উদ্ভাবন করতে সমর্থ হতো না। কেননা তথাকথিত বিজ্ঞান কোন দিনই জানতো না যে, সন্তানের চেহারা নির্ধারক জীনগুলো পিতা বা মাতার মাঝে কার নুত্বফা আগে বের হবে তার ওপর নির্ভর করে। অর্থাৎ পুরুষের প্রথমে নুত্বফা বের হওয়ার ফলে সন্তানের চেহারা নির্ধারক জীনগুলোর মধ্যে পিতা থেকে প্রদত্ত জিনগুলো প্রকট (Dominantবৈশিষ্ট্য লাভ করার ফলে পিতা থেকে প্রদত্ত জিনগুলো মাতা থেকে প্রদত্ত জিনগুলোর উপর প্রভাব বিস্তার করে এবং ফিনোটাইপিক (Phenotypic) বৈশিষ্ট্য হিসেবে সন্তানের চেহারা পিতার মতো হয়। বিপরীতক্রমে স্ত্রীর প্রথমে নুত্বফা বের হওয়ার ফলে সন্তানের চেহারা নির্ধারক জীনগুলোর মধ্যে মাতা থেকে প্রদত্ত জিনগুলো প্রকট (Dominantবৈশিষ্ট্য লাভ করার ফলে মাতা থেকে প্রদত্ত জিনগুলো পিতা থেকে প্রদত্ত জিনগুলোর উপর প্রভাব বিস্তার করে এবং ফিনোটাইপিক (Phenotypicবৈশিষ্ট্য হিসেবে সন্তানের চেহারা মাতার মতো হয়। আর এর মাধ্যম্যেই প্রমাণিত হয় যে, যিনি মানুষের সৃষ্টিকর্তা তিনিই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে প্রকৃত বিষয়টি জানিয়ে দিয়েছেন।


 নাস্তিকদের আপত্তি- কুরানে বার বার উল্লেখ করা হয়েছে পুরুষের থেকে নির্গত বীর্য থেকে সন্তানের জন্ম হয়  কিন্তু স্ত্রীর ডিম্বানুর যে ভূমিকা সে ব্যাপারে কিছুই বলা হয়নি! এটা কি মুহম্মদের অজ্ঞতা ছাড়া অন্য কিছু হতে পারে?

নাস্তিকদের আপত্তি- কুরানে বার বার উল্লেখ করা হয়েছে পুরুষের থেকে নির্গত বীর্য থেকে সন্তানের জন্ম হয়  কিন্তু স্ত্রীর ডিম্বানুর যে ভূমিকা সে ব্যাপারে কিছুই বলা হয়নি! এটা কি মুহম্মদের অজ্ঞতা ছাড়া অন্য কিছু হতে পারে?

নাস্তিকদের আপত্তি ৮ : কুরানে বার বার উল্লেখ করা হয়েছে পুরুষের থেকে নির্গত বীর্য থেকে সন্তানের জন্ম হয় (Quran 86:5-6, 76:2, 23:13-14, 53:45-46, 80:19, 2:223)! কিন্তু স্ত্রীর ডিম্বানুর যে ভূমিকা সে ব্যাপারে কিছুই বলা হয়নি! এটা কি মুহম্মদের অজ্ঞতা ছাড়া অন্য কিছু হতে পারে?

The term ‘nutfatun amshaajin’ could just as easily refer to the sperm-menstrual blood union of Aristotle and the ancient Indian embryologists, or the two sperm hypothesis of Hippocrates and Galen, or even the readily observed mingling of semen and vaginal discharge during sexual intercourse. In other words, the fact the Quran does not explicitly state that ‘nutfatun amshaajin’ contains the ovum, together with the existence of other possible explanations, means that it is illogical to assume the former and not the latter.

খণ্ডণ : পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ব্যবহৃত نُطْفَةٍ “নুত্বফা” শব্দ মুবারক উনার অর্থ শুক্রাণু বা শুক্রবিন্দু গ্রহণ করার কারণেই নাস্তিকরা বলার সুযোগ পাচ্ছে যে, সন্তান জন্মের ব্যাপারে স্ত্রীর ডিম্বাণুর যে ভূমিকা সে ব্যাপারে কিছুই বলা হয়নি!

বস্তুত نُطْفَةٍ “নুত্বফা” শব্দ মুবারক উনার অর্থ হবে জননকোষ বা বীর্য, যা পুরুষ ও নারী উভয়ের থেকে নির্গত হয়। نُطْفَةٍ “নুত্বফা” শব্দ মুবারক উনার সাথে এমন কোন বিশ্লেষণ জুড়ে দেয়া হয়নি যে এটাকে শুধুমাত্র পুরুষের নির্গত বস্তু বলা যায়।

আর নুত্বফা যে নারী-পুরুষ উভয় থেকেই নির্গত হয় এই বিষয়ে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-

عَنْ اُمِّ سَلَمَةَ، قَالَتْ جَاءَتْ اُمُّ سُلَيْمٍ اِلَى رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَتْ يَا رَسُولَ اللهِ اِنَّ اللهَ لاَ يَسْتَحْيِي مِنَ الْحَقِّ، فَهَلْ عَلَى الْمَرْاَةِ مِنْ غُسْلٍ اِذَا احْتَلَمَتْ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم اِذَا رَاَتِ الْمَاءَ ‏.‏ فَغَطَّتْ اُمُّ سَلَمَةَ ـ تَعْنِي وَجْهَهَا ـ وَقَالَتْ يَا رَسُولَ اللهِ وَتَحْتَلِمُ الْمَرْاَةُ قَالَ نَعَمْ تَرِبَتْ يَمِينُكِ فَبِمَ يُشْبِهُهَا وَلَدُهَا ‏"‏‏.‏‏

অর্থ : “উম্মুল মু’মিনীন হযরত উম্মু সালামা আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট হযরত উম্মু সুলাইম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা এসে বললেন, হে মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! মহান আল্লাহ পাক তিনি হক্ব কথা প্রকাশ করতে লজ্জাবোধ করেন না। মহিলাদের ইহতিলাম (স্বপ্নদোষ) হলে কি গোসল করতে হবে? নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, হ্যাঁ, যখন সে নুত্বফা দেখতে পাবে। তখন উম্মুল মু’মিনীন হযরত উম্মু সালামা আলাইহাস সালাম তিনি (লজ্জায়) উনার মুখ মুবারক ঢেকে নিয়ে বললেন, হে মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! মহিলাদেরও ইহতিলাম হয় কি?’ তিনি বললেন, হ্যাঁ, (বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন) তোমার ডান হাতে মাটি পড়ুক! (তা না হলে) তাদের সন্তান মায়ের আকৃতি পায় কিভাবে?” (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ)

অন্য পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

عَنْ اُمِّ سَلَمَةَ اُمِّ الْمُؤْمِنِينَ، اَنَّهَا قَالَتْ جَاءَتْ اُمُّ سُلَيْمٍ امْرَاَةُ اَبِي طَلْحَةَ اِلَى رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَتْ يَا رَسُولَ اللهِ، اِنَّ اللهَ لاَ يَسْتَحْيِي مِنَ الْحَقِّ، هَلْ عَلَى الْمَرْاَةِ مِنْ غُسْلٍ اِذَا هِيَ احْتَلَمَتْ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم ‏نَعَمْ اِذَا رَاَتِ الْمَاءَ‏

অর্থ : “ উম্মুল মু’মিনীন হযরত উম্মু সালামা আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমত মুবারকে হযরত আবূ তালহা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার আহলিয়া হযরত উম্মু সুলাইম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা তিনি এসে বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! মহান আল্লাহ পাক তিনি হক্বের ব্যাপারে লজ্জা করেন না। স্ত্রীলোকের ইহ্তিলাম হলে কি ফরয গোসল করবে? নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, হ্যাঁ, যদি তারা নুত্বফা দেখে।” (বুখারী শরীফ)

عَنْ حَضْرَتْ اَنَسَ بْنَ مَالِكٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ حَدَّثَهُمْ اَنَّ اُمَّ سُلَيْمٍ حَدَّثَتْ اَنَّهَا، سَاَلَتْ نَبِيَّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنِ الْمَرْاَةِ تَرَى فِي مَنَامِهَا مَا يَرَى الرَّجُلُ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم اِذَا رَاَتْ ذَلِكِ الْمَرْاَةُ فَلْتَغْتَسِلْ ‏‏.‏ فَقَالَتْ اُمُّ سُلَيْمٍ وَاسْتَحْيَيْتُ مِنْ ذَلِكَ قَالَتْ وَهَلْ يَكُونُ هَذَا فَقَالَ نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏نَعَمْ فَمِنْ اَيْنَ يَكُونُ الشَّبَهُ اِنَّ مَاءَ الرَّجُلِ غَلِيظٌ اَبْيَضُ وَمَاءَ الْمَرْاَةِ رَقِيقٌ اَصْفَرُ فَمِنْ اَيِّهِمَا عَلاَ اَوْ سَبَقَ يَكُونُ مِنْهُ الشَّبَهُ.‏

অর্থ : “হযরত আনাস বিন মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি শুনছেন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমত মুবারকে হযরত উম্মু সুলাইম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা তিনি এসে সুওয়াল করলেন, পুরুষরা স্বপ্নে যা কিছু দেখে মেয়েরাও যদি স্বপ্নে তাই দেখে (অর্থাৎ যদি ইহ্তিলাম হয়) তাহলে কি করবে? নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যদি তারা নুত্বফা দেখে তাহলে গোসল করবে। একথা শুনে উম্মু সুলাইম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা তিনি পুনরায় সুওয়াল করলেন, মেয়েদেরও এমন হয়? অর্থাৎ মেয়েদেরও কি ইহ্তিলাম ও নুুতফা বের হয়? তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, অবশ্যই! নয়তো সন্তান মায়ের মতো হয় কেমন করে? পুরুষের নতুফা হয় ঘন এবং সাদাটে আর নারীর নুত্বফা হয় পাতলা এবং হলুদ। অতঃপর তাদের মধ্য থেকে যে শক্তিশালী হয় বা যে অগ্রবর্তী হয় সন্তান তার মতোই হয়।” (মুসলিম শরীফ)

উপরোক্ত আলোচনা দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, নারীদেরও নুত্বফা বের হয়। অর্থাৎ মানুষ সৃষ্টির জন্য স্ত্রীর ডিম্বাণু ও পুরুষের শুক্রাণু দুটোই যে অপরিহার্য সে তথ্যটাই স্পষ্ট করে দেয়া হয়েছে।

আর তাই পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত হয়েছে- 

اِنَّا خَلَقْنَا الْاِنسَانَ مِن نُّطْفَةٍ اَمْشَاجٍ

অর্থ : “আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি মিশ্র নুত্বফা থেকে।” (পবিত্র সূরা ইনসান শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ২)

এখানে মিশ্র নুত্বফা বলতে নারী-পুরুষ উভয় থেকেই নুত্বফা দ্বারা মানুষ সৃষ্টি করা হয়েছে। আর তাই সন্তান মায়ের চেহারা বা বৈশিষ্ট্য লাভ করতে পারে।

দ্বিতীয়ত মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

يَا اَيُّهَا النَّاسُ اتَّقُوا رَبَّكُمُ الَّذِي خَلَقَكُم مِّن نَّفْسٍ وَاحِدَةٍ وَخَلَقَ مِنْهَا زَوْجَهَا وَبَثَّ مِنْهُمَا رِجَالًا كَثِيرًا وَنِسَاءً ۚ 

অর্থ : “হে মানব সম্প্রদায়! তোমরা তোমাদের পালনকর্তাকে ভয় কর, যিনি তোমাদেরকে এক ব্যক্তি থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং যিনি তার থেকে তার সঙ্গীনীকে সৃষ্টি করেছেন; আর বিস্তার করেছেন উনাদের দু’জন থেকে অগণিত পুরুষ ও নারী।” (পবিত্র সূরা নিসা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১)

সুতরাং পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে সুস্পষ্টভাবেই বর্ণনা করা হয়েছে যে, সন্তান জন্মের জন্য মাতা-পিতা উভয়েরই ভূমিকা রয়েছে।


নাস্তিকদের আপত্তি- কুরানের আয়াত অনুসারে, মানব ভ্রুণ মাতৃগর্ভে রক্ত পিন্ড অবস্থা থেকে সরাসরি শিশু তে রুপান্তরিত করা হয় যা বিজ্ঞান এবং কুরানের অন্য আয়াতের সাথে সাংঘর্ষিক! কেন এধরনের ভুলের ছড়াছড়ি?

নাস্তিকদের আপত্তি- কুরানের আয়াত অনুসারে, মানব ভ্রুণ মাতৃগর্ভে রক্ত পিন্ড অবস্থা থেকে সরাসরি শিশু তে রুপান্তরিত করা হয় যা বিজ্ঞান এবং কুরানের অন্য আয়াতের সাথে সাংঘর্ষিক! কেন এধরনের ভুলের ছড়াছড়ি?

নাস্তিকদের আপত্তি ৭ : কুরানের আয়াত 40:67 অনুসারে, মানব ভ্রুণ মাতৃগর্ভে ‘রক্ত পিন্ড’ (alaqah stage)  অবস্থা থেকে সরাসরি শিশু তে রুপান্তরিত করা হয় (এবং গর্ভাশয়ের বাইরে বেরিয়ে আসে)! যা বিজ্ঞান এবং কুরানের অন্য আয়াত 23:12-14 র সাথে সাংঘর্ষিক! কেন এধরনের ভুলের ছড়াছড়ি?

খণ্ডণ: যেহেতু পবিত্র সূরা মুমিন শরীফ উনার ৬৭ নং আয়াত শরীফ 40:67  উনার মধ্যে ‘সরাসরি’ শব্দটি নেই, বরং সেটা মিথ্যাবাদী নাস্তিকদের জুড়ে দেয়া একটি শব্দ। আর পবিত্র সূরা মু’মীনূন শরীফ উনার ১২-১৪ নং আয়াত শরীফ 23:12-14  উনাদের মধ্যে প্রতিটি ধাপ আলাদা আলাদাভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। তাই পবিত্র সূরা মু’মীনূন শরীফ উনার ১২-১৪ নং আয়াত শরীফ হচ্ছে পবিত্র সূরা মুমিন শরীফ উনার ৬৭ নং আয়াত শরীফ উনার ব্যাখ্যা, মোটেও সাংঘর্ষিক নয়।

পবিত্র সূরা মুমিন শরীফ উনার পবিত্র আয়াত শরীফ নং ৬৭ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

هُوَ الَّذِي خَلَقَكُم مِّن تُرَابٍ ثُـمَّ مِن نُّطْفَةٍ ثُـمَّ مِنْ عَلَقَةٍ ثُـمَّ يُـخْرِجُكُمْ طِفْلًا

অর্থ : “তিনি তো তোমাদের সৃষ্টি করেছেন মাটির দ্বারা, অতঃপর নুত্বফা দ্বারা, অতঃপর আলাক্ব দ্বারা, অতঃপর তোমাদেরকে বের করেন শিশুরূপে।”

এই পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে কোথাও বলা হয়নি যে, আলাক্ব বা জমাট রক্তপি- দশা হতে সরাসরি শিশুতে রূপান্তরিত হয়। এই আয়াত শরীফ উনার মধ্যে সরাসরি শব্দের কোন অস্তিত্বই নেই। যেহেতু এই আয়াত শরীফ উনার মধ্যে আলাক্ব দশা পর্যন্ত বর্ণিত হয়েছে, আর আলাক্ব দশা হচ্ছে নিষিক্ত ভ্রƒণ। এই দশা থেকে পরবর্তীতে অন্যান্য দশাগুলো অতিক্রম করবে। তাই পরবর্তী দশাগুলোকে উহ্য রেখে শিশুরূপে পরিণত হওয়াকে উল্লেখ করা হয়েছে। তার মানে এই দাঁড়ায় না যে পরবর্তী দশাগুলোকে অতিক্রম না করেই সরাসরি শিশুরূপে পরিণত হয়েছে।

দ্বিতীয়ত পবিত্র সূরা মু’মীনূন শরীফ উনার পবিত্র আয়াত শরীফ নং ১২-১৪ উনাদের মধ্যে ভ্রƒণের প্রতিটি দশা বা ধাপের সুস্পষ্ট বর্ণনা প্রদান করা হয়েছে, যা পবিত্র পবিত্র সূরা মুমিন শরীফ উনার পবিত্র আয়াত শরীফ নং ৬৭ উনার ব্যাখ্যাস্বরূপ।

সুতরাং প্রমাণিত হলো যে, পবিত্র কুরআন শরীফ উনার একটি আয়াত শরীফ অন্য আরেকটি আয়াত শরীফ উনার ব্যাখ্যাস্বরূপ। কখনোই সাংঘষিক নয়। বরং যারা পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে খটুত খটুজে বেড়ায় তাদের চিন্তা-চেতনার মধ্যে সংঘর্ষ রয়েছে। তারা দেখে এক কিন্তু চিন্তা করে বিপরীত কিংবা তাদের চিন্তা করার ক্ষমতাই লোপ পেয়েছে।    


নাস্তিকদের আপত্তি-মুসলিমরা দাবি করে কুরানের আয়াত দ্বারা মানুষের এম্ব্রাইয়োলজি ব্যাখ্যা করা যায়, যদিও ভ্রুণতত্বের প্রথম ধাপ এর কোন ব্যাখ্যা তাদের কাছে নেই

নাস্তিকদের আপত্তি-মুসলিমরা দাবি করে কুরানের আয়াত দ্বারা মানুষের এম্ব্রাইয়োলজি ব্যাখ্যা করা যায়, যদিও ভ্রুণতত্বের প্রথম ধাপ এর কোন ব্যাখ্যা তাদের কাছে নেই

নাস্তিকদের আপত্তি ৬ : মুসলিমরা দাবি করে কুরানের আয়াত 23:12-14  দ্বারা মানুষের এম্ব্রাইয়োলজি (অর্থাৎ ভ্রুণ তত্ব) ব্যাখ্যা করা যায়, যদিও ভ্রুণতত্বের প্রথম ধাপ (১. ধুলা বা কাদা মাটি থেকে তৈরি) এর কোন ব্যাখ্যা তাদের কাছে নেই। এটা কি জোড়পূর্বক কুরান কে বিজ্ঞানময় করার অপচেষ্টা নয়?

খণ্ডন: পবিত্র সূরা মু’মিনূন শরীফ উনার পবিত্র আয়াত শরীফ ১৩-১৪ উনাদের মাধ্যমে পরিপূর্ণরূপে ও নির্ভুলভাবে মানব ভ্রুণতত্ত্বের ব্যাখা দেয়া হয়েছে। যদিও পবিত্র কুরআন শরীফ কোন বিজ্ঞানের কিতাব নয়। 

তবে পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মাধ্যমে জীবনের পরিপূর্ণ বিধি-বিধান বাতলে দেয়া হয়েছে বিধায় প্রসঙ্গক্রমে বিজ্ঞানের বিষয়গুলোও আলোচিত হয়েছে। আর প্রসঙ্গক্রমে আলোচিত বিজ্ঞানের বিষয়গুলোর প্রকৃত স্বরূপই তুলে ধরা হয়েছে, যার কোনটির প্রকৃত স্বরূপ তথাকথিত বিজ্ঞান কর্তৃক উদঘাটিত হয়েছে ফলে পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত গুঢ় রহস্যের জন্য তথাকিথত বিজ্ঞান অবনত মস্তকে শ্রদ্ধা জানিয়েছে। আবার কোন কোন বিষয়ের প্রকৃত স্বরূপ তথাকথিত বিজ্ঞান কর্তৃক এখনো উদঘাটন করা সম্ভব হয়নি বিধায় পবিত্র কুরআন শরীফ উনার পবিত্র আয়াত শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ নিয়ে তারা নানান চু-চেরা কিল-ক্বাল করে থাকে। নাঊযুবিল্লাহ! মূলত এটা তথাকথিত বিজ্ঞানেরই ব্যর্থতা। ঠিক এমনি এক ব্যর্থতার উপখ্যান হচ্ছে ভ্রুণ তত্ত্ব। যদিও তথাকথিত বিজ্ঞান ভ্রƒণ তত্ত্বের বিষয়ে প্রকৃত স্বরূপ উদঘাটনে যথেষ্ট অগ্রসর হয়েছে। কিন্তু নাস্তিকরা যেহেতু সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে থাকে এবং তারা হচ্ছে নিকৃষ্ট পর্যায়ের মূর্খ সেহেতু তারা তথাকথিত বিজ্ঞান যে বিষয়গুলো স্বীকার করে নিয়েছে সেগুলো আড়াল করে রাখার চেষ্টা করে থাকে।

মূলত পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ভ্রুণতত্ত্বের বিষয়গুলো যখন প্রকাশ করা হয় তখন অণুবীক্ষণ যন্ত্রের কোন অস্তিত্বই ছিলো না। পরবর্তীতে যখন অণুবীক্ষণ যন্ত্র আবিষ্কৃত হয় তখন প্রাথমিক অবস্থায় ওই অণুবীক্ষণ যন্ত্রের বিবর্ধন ক্ষমতা ছিল নিতান্তই কম ও লেন্সে স্বচ্ছতাও ছিলো কম। সময়ের পরিক্রমায় অণুবীক্ষণ যন্ত্রের বিবর্ধন ক্ষমতা ও স্বচ্ছতা বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত ভ্রুণতত্ত্বের ধাপগুলোর বর্ণনা এখন ধীরে ধীরে তথাকথিত বিজ্ঞানের কাছে পরিষ্কার হচ্ছে।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নতির পরিক্রমায় ভ্রুণ বিকাশের ধাপগুলো এখনো সহজে বোধগম্য নয়। কেননা এতে ধাপগুলোকে সংখ্যাতাত্ত্বিকভাবে পেশ করা হয়েছে। যেমন, ১ম ধাপ ইত্যাদি। পক্ষান্তরে পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত ধাপগুলো পার্থক্য বোধক এবং সহজে এর আকার-আকৃতি চিহ্নিত করা যায়। এই ধাপগুলো জন্মপূর্ব বিকাশের বিভিন্ন ধাপের উপর ভিত্তিশীল ও বোধগম্য এবং বাস্তবধর্মী ও মার্জিত বর্ণনা সম্পন্ন।

মূল কথা হচ্ছে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অগ্রগতির ফলে যেহেতু ভ্রুণতত্ত্বের ধাপগুলো ধীরে ধীরে বিজ্ঞানীদের কাছে স্পষ্ট হচ্ছে আর এই কারণে পবিত্র কুরআন শরীফ উনার ভ্রুণ বিষয়ক পবিত্র আয়াত শরীফগুলো বিজ্ঞানীরা স্বীকার করে নিচ্ছে। তাই নাস্তিকদের মাথা খারাপ হওয়ার মতো অবস্থা হচ্ছে। কেননা পবিত্র কুরআন শরীফ উনার ভ্রুণ বিষয়ক পবিত্র আয়াত শরীফগুলো নিয়ে তারা সমালোচনা করতো অথচ এখন দেখা যাচ্ছে উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনাদের বর্ণনাই নির্ভুল।

যেহেতু পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত ভ্রুণতত্ত্বের ধাপগুলো নির্ভুল তাই তারা এখন বলতে চাচ্ছে যে, হযরত ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে মাটি থেকে সৃষ্টি করার কোন ব্যাখ্যা নাকি নেই। অথচ পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে স্পষ্ট করেই হযরত ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে মাটি থেকে সৃষ্টি করার এবং পরবর্তীতে মানব বংশধর সৃষ্টির করার ধাপগুলো বর্ণনা করে দেয়া হয়েছে।  

একজন মানুষ হঠাৎ করে নুত্বফা থেকে সৃষ্টি হবে না। নুত্বফা তৈরী হওয়ার জন্য একজন নর ও একজন নারী থাকা প্রয়োজন। আর সেই প্রথম নর হচ্ছেন আবুল বাশার হযরত ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম এবং প্রথম নারী হচ্ছেন উম্মুল বাশার হযরত হাওওয়া আলাইহাস সালাম। হযরত ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে প্রথম মানব হিসেবে মাটি ও পানি দিয়ে সৃষ্টির বিষয়টি সুস্পষ্টভাবেই আলোচিত হয়েছে। সুতরাং এ বিষয়ে ব্যাখ্যা নেই কথাটি সম্পূর্ণ অমূলক ও বিভ্রান্তিকর।