নাস্তিকদের আপত্তি-মুসলিমরা দাবি করে কুরানের আয়াত দ্বারা মানুষের এম্ব্রাইয়োলজি ব্যাখ্যা করা যায়, যদিও ভ্রুণতত্বের প্রথম ধাপ এর কোন ব্যাখ্যা তাদের কাছে নেই
নাস্তিকদের আপত্তি ৬ : মুসলিমরা দাবি করে কুরানের আয়াত 23:12-14 দ্বারা মানুষের এম্ব্রাইয়োলজি (অর্থাৎ ভ্রুণ তত্ব) ব্যাখ্যা করা যায়, যদিও ভ্রুণতত্বের প্রথম ধাপ (১. ধুলা বা কাদা মাটি থেকে তৈরি) এর কোন ব্যাখ্যা তাদের কাছে নেই। এটা কি জোড়পূর্বক কুরান কে বিজ্ঞানময় করার অপচেষ্টা নয়?
খণ্ডন: পবিত্র সূরা মু’মিনূন শরীফ উনার পবিত্র আয়াত শরীফ ১৩-১৪ উনাদের মাধ্যমে পরিপূর্ণরূপে ও নির্ভুলভাবে মানব ভ্রুণতত্ত্বের ব্যাখা দেয়া হয়েছে। যদিও পবিত্র কুরআন শরীফ কোন বিজ্ঞানের কিতাব নয়।
তবে পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মাধ্যমে জীবনের পরিপূর্ণ বিধি-বিধান বাতলে দেয়া হয়েছে বিধায় প্রসঙ্গক্রমে বিজ্ঞানের বিষয়গুলোও আলোচিত হয়েছে। আর প্রসঙ্গক্রমে আলোচিত বিজ্ঞানের বিষয়গুলোর প্রকৃত স্বরূপই তুলে ধরা হয়েছে, যার কোনটির প্রকৃত স্বরূপ তথাকথিত বিজ্ঞান কর্তৃক উদঘাটিত হয়েছে ফলে পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত গুঢ় রহস্যের জন্য তথাকিথত বিজ্ঞান অবনত মস্তকে শ্রদ্ধা জানিয়েছে। আবার কোন কোন বিষয়ের প্রকৃত স্বরূপ তথাকথিত বিজ্ঞান কর্তৃক এখনো উদঘাটন করা সম্ভব হয়নি বিধায় পবিত্র কুরআন শরীফ উনার পবিত্র আয়াত শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ নিয়ে তারা নানান চু-চেরা কিল-ক্বাল করে থাকে। নাঊযুবিল্লাহ! মূলত এটা তথাকথিত বিজ্ঞানেরই ব্যর্থতা। ঠিক এমনি এক ব্যর্থতার উপখ্যান হচ্ছে ভ্রুণ তত্ত্ব। যদিও তথাকথিত বিজ্ঞান ভ্রƒণ তত্ত্বের বিষয়ে প্রকৃত স্বরূপ উদঘাটনে যথেষ্ট অগ্রসর হয়েছে। কিন্তু নাস্তিকরা যেহেতু সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে থাকে এবং তারা হচ্ছে নিকৃষ্ট পর্যায়ের মূর্খ সেহেতু তারা তথাকথিত বিজ্ঞান যে বিষয়গুলো স্বীকার করে নিয়েছে সেগুলো আড়াল করে রাখার চেষ্টা করে থাকে।
মূলত পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ভ্রুণতত্ত্বের বিষয়গুলো যখন প্রকাশ করা হয় তখন অণুবীক্ষণ যন্ত্রের কোন অস্তিত্বই ছিলো না। পরবর্তীতে যখন অণুবীক্ষণ যন্ত্র আবিষ্কৃত হয় তখন প্রাথমিক অবস্থায় ওই অণুবীক্ষণ যন্ত্রের বিবর্ধন ক্ষমতা ছিল নিতান্তই কম ও লেন্সে স্বচ্ছতাও ছিলো কম। সময়ের পরিক্রমায় অণুবীক্ষণ যন্ত্রের বিবর্ধন ক্ষমতা ও স্বচ্ছতা বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত ভ্রুণতত্ত্বের ধাপগুলোর বর্ণনা এখন ধীরে ধীরে তথাকথিত বিজ্ঞানের কাছে পরিষ্কার হচ্ছে।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নতির পরিক্রমায় ভ্রুণ বিকাশের ধাপগুলো এখনো সহজে বোধগম্য নয়। কেননা এতে ধাপগুলোকে সংখ্যাতাত্ত্বিকভাবে পেশ করা হয়েছে। যেমন, ১ম ধাপ ইত্যাদি। পক্ষান্তরে পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত ধাপগুলো পার্থক্য বোধক এবং সহজে এর আকার-আকৃতি চিহ্নিত করা যায়। এই ধাপগুলো জন্মপূর্ব বিকাশের বিভিন্ন ধাপের উপর ভিত্তিশীল ও বোধগম্য এবং বাস্তবধর্মী ও মার্জিত বর্ণনা সম্পন্ন।
মূল কথা হচ্ছে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অগ্রগতির ফলে যেহেতু ভ্রুণতত্ত্বের ধাপগুলো ধীরে ধীরে বিজ্ঞানীদের কাছে স্পষ্ট হচ্ছে আর এই কারণে পবিত্র কুরআন শরীফ উনার ভ্রুণ বিষয়ক পবিত্র আয়াত শরীফগুলো বিজ্ঞানীরা স্বীকার করে নিচ্ছে। তাই নাস্তিকদের মাথা খারাপ হওয়ার মতো অবস্থা হচ্ছে। কেননা পবিত্র কুরআন শরীফ উনার ভ্রুণ বিষয়ক পবিত্র আয়াত শরীফগুলো নিয়ে তারা সমালোচনা করতো অথচ এখন দেখা যাচ্ছে উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনাদের বর্ণনাই নির্ভুল।
যেহেতু পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত ভ্রুণতত্ত্বের ধাপগুলো নির্ভুল তাই তারা এখন বলতে চাচ্ছে যে, হযরত ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে মাটি থেকে সৃষ্টি করার কোন ব্যাখ্যা নাকি নেই। অথচ পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে স্পষ্ট করেই হযরত ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে মাটি থেকে সৃষ্টি করার এবং পরবর্তীতে মানব বংশধর সৃষ্টির করার ধাপগুলো বর্ণনা করে দেয়া হয়েছে।
একজন মানুষ হঠাৎ করে নুত্বফা থেকে সৃষ্টি হবে না। নুত্বফা তৈরী হওয়ার জন্য একজন নর ও একজন নারী থাকা প্রয়োজন। আর সেই প্রথম নর হচ্ছেন আবুল বাশার হযরত ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম এবং প্রথম নারী হচ্ছেন উম্মুল বাশার হযরত হাওওয়া আলাইহাস সালাম। হযরত ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে প্রথম মানব হিসেবে মাটি ও পানি দিয়ে সৃষ্টির বিষয়টি সুস্পষ্টভাবেই আলোচিত হয়েছে। সুতরাং এ বিষয়ে ব্যাখ্যা নেই কথাটি সম্পূর্ণ অমূলক ও বিভ্রান্তিকর।
0 Comments:
Post a Comment