নাস্তিকদের আপত্তি-একমাত্র আল্লাহ জানেন গর্ভের সন্তান ছেলে হবে না মেয়ে হবে যা অন্য কারো পক্ষে জানা সম্ভব নয় তিনি কি জানতেন না ভবিষ্যতে আল্ট্রাসনোগ্রাফি আবিষ্কৃত হবে?

নাস্তিকদের আপত্তি-একমাত্র আল্লাহ জানেন গর্ভের সন্তান ছেলে হবে না মেয়ে হবে যা অন্য কারো পক্ষে জানা সম্ভব নয় তিনি কি জানতেন না ভবিষ্যতে আল্ট্রাসনোগ্রাফি আবিষ্কৃত হবে?

নাস্তিকদের আপত্তি ১১ : একমাত্র আল্লাহ জানেন গর্ভের সন্তান ছেলে হবে না মেয়ে হবে (Quran 31:34),  যা অন্য কারো পক্ষে জানা সম্ভব নয় (Sahih Bukhari 2:17:149)! তিনি কি জানতেন না ভবিষ্যতে আল্ট্রাসনোগ্রাফি আবিষ্কৃত হবে?

নাস্তিকদের আপত্তি ১২ : হাদিস জানায়, জন্মের পূর্বে কারো পক্ষেই জানা সম্ভব নয় সন্তান ছেলে হবে না মেয়ে হবে (Sahih Bukhari 2:17:149)!  উক্ত বক্তব্যের সাথে কি আপনি একমত?

খ-ন : মহান আল্লাহ পাক তিনি কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-

اِنَّ اللهَ عِندَهُ عِلْمُ السَّاعَةِ وَيُنَزِّلُ الْغَيْثَ وَيَعْلَمُ مَا فِي الْاَرْحَامِ ۖ وَمَا تَدْرِي نَفْسٌ مَّاذَا تَكْسِبُ غَدًا ۖ وَمَا تَدْرِي نَفْسٌ بِاَيِّ اَرْضٍ تَـمُوْتُ ۚ اِنَّ اللهَ عَلِيْمٌ خَبِيْرٌ◌

অর্থ : “নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক উনার কাছেই কিয়ামতের ইলম রয়েছে। তিনিই বৃষ্টি বর্ষণ করেন এবং মায়ের রেহেমে যা থাকে, তিনি তা জানেন। কেউ জানে না আগামীকাল সে কি উপার্জন করবে এবং কেউ জানে না কোন দেশে সে মৃত্যুবরণ করবে। মহান আল্লাহ পাক তিনি সর্বজ্ঞ, সর্ববিষয়ে সম্যক জ্ঞাত।” (পবিত্র সূরা লুক্বমান শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৪)

আর এই ৫টি বিষয়ের পরিপূর্ণ ইলম যে মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট রয়েছে এ বিষয়ে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عُمَرَ رَضِىَ اللهُ تَعالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِفْتَاحُ الْغَيْبِ خَـمْسٌ لَا يَعْلَمُهَا اِلَّا اللهُ لَا يَعْلَمُ اَحَدٌ مَا يَكُوْنُ فِي غَدٍ وَلَا يَعْلَمُ اَحَدٌ مَا يَكُوْنُ فِي الاَرْحَامِ وَلَا تَعْلَمُ نَفْسٌ مَاذَا تَكْسِبُ غَدًا وَمَا تَدْرِي نَفْسٌ بِاَىِّ اَرْضٍ تَـمُوتُ وَمَا يَدْرِي اَحَدٌ مَتَى يَـجِيءُ الْمَطَرُ‏.‏

অর্থ ” “হযরত ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, গায়েব বা অদৃশ্য বিষয়ের চাবি হল পাঁচটি, এই চাবি মহান আল্লাহ পাক তিনি ছাড়া অন্য কারো কাছে নেই। কারো কাছে এই ইলম নেই যে, (১) আগামীকাল কী ঘটবে, (২) আগামীকাল সে কী অর্জন করবে, (৩) মায়ের রেহেমে কী আছে, (৪) সে কোথায় মারা যাবে ও (৫) কখন বৃষ্টি হবে।” (বুখারী শরীফ)

উপরোক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের মধ্যে বৃষ্টি ও মায়ের রেহেমের উল্লেখের মাধ্যমে মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত ইলম মুবারক উনার রূপরেখার একটি নূন্যতম নমুনা তুলে ধরা হয়েছে। মূলত এই পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে ৫টি বিষয়ের ইলম সম্পর্কে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে-

১) কিয়ামতের ইলম 

২) বৃষ্টি

৩) নতুন জীবনের সৃষ্টি

৪) প্রাত্যহিক জীবনযাত্রা

৫) জীবের মৃত্যু।

এই ৫টি রহস্যের ইলমকে সংক্ষিপ্তাকারে প্রকাশ করা হয়েছে। এই পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে সময় ও জ্ঞান সম্বন্ধে যুক্তির অবতারণা করা হয়েছে। সভ্যতার অগ্রগতিতে মানুষ তার জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার জন্য গর্ব করে থাকে। কিন্তু মহান আল্লাহ পাক উনার অসীম ইলম মুবারক উনার নিকট এই জ্ঞান নিতান্তই নগণ্য। আর বিশ্বের অনন্ত প্রবাহে সময়ের প্রকৃত জ্ঞান সম্বন্ধে আমাদের জ্ঞান আরও অনিশ্চিত।

আমরা জানি বৃষ্টিপাত উদ্ভিদের জন্ম দেয়, মাটিকে শস্য শ্যামল ভূমিতে পরিণত করে, মায়ের রেহেমের অন্ধকারে নতুন জীবনের সূত্রপাত ঘটে। কিন্তু কেউ সঠিকভাবে বলতে পারে না কখন, কোন সময়ে কোথায় তা ঘটবে? কেউ বলতে পারে না মায়ের রেহেমে নুত্বফা দশা আলাক্ব পর্যন্ত পৌঁছাবে কিনা? আলাক্ব দশা মুদগা দশায় উপনীত হতে পারবে কিনা? ভ্রুণের মধ্যে প্রাণের সঞ্চার ঘটবে কিনা? প্রাণের সঞ্চার ঘটলেও ভ্রুণটির গর্ভপাত হয়ে যাবে কিনা? ভ্রুণটি কতদিন মায়ের রেহেমে অবস্থান করবে? শিশুটি সুস্থ অবস্থায় জন্মগ্রহণ করবে কিনা? শিশুটি বিকলাঙ্গ হয়ে জন্মলাভ করবে কিনা? জন্মগ্রহণ করার পূর্ব মুহূর্তে শিশুটি মৃত্যুবরণ করবে কিনা? জন্মের পরে পূর্ণবয়স্করূপে তার কি বিশেষত্ব হবে? 

সে কি তার পিতামাতার বা সমাজের জন্য বরকতময় না অভিশাপ হবে? কবে কোথায় কিভাবে জীবনাবসান ঘটবে? ইত্যাদি হাজারো প্রশ্নের জ্ঞান কারো কাছে নেই কিন্তু মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট এইসব জিজ্ঞাসার প্রতিটির ইলম মুবারক রয়েছে।

এমনকি শেষ বিচারের দিন যেদিন প্রতিটি বিষয়ের প্রকৃত মূল্যায়ন হবে এবং সঠিক ভারসাম্য প্রতিষ্ঠিত হবে, সে বিচারে তার কি অবস্থা হবে, শেষ পরিণতি কোথায় হবে? প্রতিটি বিষয়েরই ইলম মুবারক মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট রয়েছে।

সুতরাং এই পবিত্র আয়াত শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের দ্বারা এটা বুঝানো হয়নি যে, একমাত্র মহান আল্লাহ পাক তিনিই জানেন মায়ের রেহেমে সন্তান ছেলে হবে না মেয়ে হবে। বরং এই পবিত্র আয়াত শরীফ উনার দ্বারা সার্বিক বিষয়ের ইলম যে মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট রয়েছে সেটাই স্পষ্ট করা হয়েছে।

আর মায়ের রেহেমে সন্তান ছেলে হবে না মেয়ে হবে এই ইলম মহান আল্লাহ পাক তিনি কোন মাধ্যম ছাড়াই যাকে ইচ্ছা জানিয়ে দিতে পারেন। এমনকি কোন মানুষ কোথায় মৃত্যুবরণ করবে এই ইলমও মহান আল্লাহ পাক তিনি যাকে ইচ্ছা জানিয়ে দিতে পারেন।

কেননা, মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

 يُؤْتِي الْحِكْمَةَ مَن يَشَاءُ ۚ وَمَن يُؤْتَ الْـحِكْمَةَ فَقَدْ اُوتِيَ خَيْرًا كَثِيرًا ۗ 

অর্থ : “মহান আল্লাহ পাক তিনি যাঁকে ইচ্ছা বিশেষ ইলম হাদিয়া করেন এবং যাঁকে বিশেষ ইলম হাদিয়া করা হয়, তিনি প্রভুত কল্যাণকর বিষয় প্রাপ্ত হন।” (পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ২৬৯)

আর পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-

عَنْ اُمِّ الْمُؤْمِنِينَ حَضْرَتْ عَائِشَةَ الصديقة عَلَيْهَا السَّلَامَ اَنَّـهَا قَالَتْ اِنَّ اَبَا بَكْرٍ الصِّدِّيْقَ عَلَيْهِ السَّلَامُ كَانَ نَـحَلَهَا جَادَّ عِشْرِينَ وَسْقًا مِنْ مَالِهِ بِالْغَابَةِ فَلَمَّا حَضَرَتْهُ الْوَفَاةُ قَالَ وَاللهِ يَا بُنَيَّةُ مَا مِنْ النَّاسِ اَحَدٌ اَحَبُّ اِلَيَّ غِنًى بَعْدِي مِنْكِ وَلَا اَعَزُّ عَلَيَّ فَقْرًا بَعْدِي مِنْكِ وَاِنِّي كُنْتُ نَـحَلْتُكِ جَادَّ عِشْرِينَ وَسْقًا فَلَوْ كُنْتِ جَدَدْتِيهِ وَاحْتَزْتِيهِ كَانَ لَكِ وَاِنَّـمَا هُوَ الْيَوْمَ مَالُ وَارِثٍ وَاِنَّـمَا هُـمَا اَخَوَاكِ وَاُخْتَاكِ فَاقْتَسِمُوْهُ عَلَى كِتَابِ اللهِ قَالَتْ عَائِشَةُ فَقُلْتُ يَا اَبَتِ وَاللهِ لَوْ كَانَ كَذَا وَكَذَا لَتَرَكْتُهُ اِنَّـمَا هِيَ اَسْـمَاءُ فَمَنْ الْاُخْرَى فَقَالَ اَبُوْ بَكْرٍ ذُو بَطْنِ بِنْتِ خَارِجَةَ اُرَاهَا جَارِيَةً.

অর্থ : “উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। হযরত ছিদ্দীক্বে আকবার আলাইহিস সালাম তিনি উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনাকে গাবা নামক স্থানে বাগানের কিছু খেজুর গাছ হাদিয়া করলেন। যার মধ্যে বিশ ওসক খেজুর উৎপন্ন হতো। অতঃপর হযরত ছিদ্দীক্বে আকবার আলাইহিস সালাম তিনি উনার পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশের সময় উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনাকে সম্বোধন করে বলতে লাগলেন, হে সম্মানিত আম্মাজান আলাইহাস সালাম! মহান আল্লাহ পাক উনার কসম, আমার পরে আপনার চেয়ে অধিক সচ্ছল কেউ থাকুক আমি তা পছন্দ করি না, আর আপনি অসচ্ছল থাকেন তাও আমার সবচাইতে বেশি অপছন্দ। আমি আপনাকে এমন খেজুর গাছ দিয়েছিলাম যার মধ্যে বিশ ওসক খেজুর জন্মে। আপনি যদি তা দখলে রাখতেন এবং ফল সংগ্রহ করতে থাকতেন তবে তা আপনার সম্পদ হয়ে যেতো। এখন তো তা ওয়ারিসদের সম্পত্তি। ওয়ারিস আপনার দুই ভাই ও দুই বোন। সুতরাং ওয়ারিস স্বত্ত্বকে মহান আল্লাহ পাক উনার কিতাব মুবারক অনুসারে বন্টন করুন। উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, হে সম্মানিত আব্বাজান আলাইহিস সালাম! যত বড় সম্পদই হোক না কেন, আমি তা ছেড়ে দিতাম, কিন্তু আমার তো বোন শুধু একজন হযরত আসমা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি, অন্য জন কে? হযরত ছিদ্দীক্বে আকবার আলাইহিস সালাম তিনি উত্তরে বললেন, হযরত বিনতে খারিজা রদ্বিয়াল্লাহু আনহা তিনি হামেলা শান মুবারক-এ আছেন। উনার রেহেম শরীফ-এ যে আওলাদ আছেন আমার ধারণা তিনি মেয়েই হবে।” (মুয়াত্তা মালিক শরীফ : كتاب الأقضية : ১৪৪৩)

হযরত ইবনে আসকালানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার বিষয়ে একটি ঘটনা বর্ণনা করেন-

“হযরত হারছামা বিন সালামা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, আমরা ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার সাথে ছফরে বের হলাম। তিনি চলতে চলতে কারবালায় গিয়ে পৌঁছলেন। সেখানকার এক গাছের নিচে গিয়ে নামলেন। তারপর নামায আদায় করলেন। নামায শেষে যমীন থেকে কিছু মাটি হাত মুবারক-এ নিয়ে ঘ্রাণ মুবারক নিলেন। তারপর বললেন, হে মাটি! তোমার জন্য আফসুস! তোমার উপর এমন কিছু সম্মানিত ব্যক্তিত্ব উনাদেরকে শহীদ করা হবে, যাঁরা বিনা হিসেবে সম্মানিত জান্নাত উনার মধ্যে প্রবেশ করবেন। এরপর রাবী নিজেই বলেন যে, আমি নিজে দেখেছি যে উক্ত স্থানেই সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ আলাইহিস সালাম তিনি শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ করেন।” (তাহযীবুত তাহযীব : ২/৩৪৮)

সুতরাং প্রমাণিত হলো যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি যাকে ইচ্ছা তাকেই জন্ম-মৃত্যুর বিষয়টি জানিয়ে দিতে পারেন। এমনকি সন্তান ছেলে হবে নাকি মেয়ে হবে তাও তিনি জানিয়ে দিতে পারেন। অর্থাৎ এই পবিত্র আয়াত শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ দ্বারা কখনোই বর্ণনা করা হয়নি যে, একমাত্র মহান আল্লাহ পাক তিনিই জানেন মায়ের রেহেমের সন্তান ছেলে হবে না মেয়ে হবে। বরং প্রমাণিত হলো, মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট এ বিষয় সহ সর্ব বিষয়ের পরিপূর্ণ ইলম মুবারক রয়েছে এবং মহান আল্লাহ পাক তিনি চাইলে অন্য যে কারো পক্ষে তা জানা সম্ভব। আর মহান আল্লাহ পাক তিনি জানালে তখন আল্ট্রাসনোগ্রাফিরও প্রয়োজন পড়ে না। 

উপরন্তু মহান আল্লাহ পাক তিনি জানালে সে ইলম মুবারক উনার মধ্যে কোন ভুলের সম্ভাবনাই থাকে না। কিন্তু আল্ট্রাসনোগ্রাফি দ্বারা সংগৃহীত প্রতিবেদনে ভুরিভুরি ভুলের সমাহার রয়েছে।

যেমন অনেক সময় আল্ট্রাসনোগ্রাফি দ্বারা সংগৃহীত প্রতিবেদনে ছেলে সন্তান উল্লেখ থাকলেও ভুমিষ্ট হয় মেয়ে সন্তান, আবার বিপরীতক্রমে প্রতিবেদনে মেয়ে সন্তান উল্লেখ থাকলেও ছেলে সন্তান ভুমিষ্ট হওয়ার ঘটনাও ঘটে। অনুরূপভাবে প্রতিবেদনে জমজ সন্তান উল্লেখ থাকলেও ভুমিষ্ট হয় একজন সন্তান, আবার বিপরীতক্রমে প্রতিবেদনে একজন সন্তান উল্লেখ থাকলেও জমজ সন্তান ভুমিষ্ট হওয়ার ঘটনাও ঘটে। অর্থাৎ আল্ট্রাসনোগ্রাফি দ্বারা সবসময় সঠিক তথ্য পাওয়া সম্পূর্ণরূপে দুস্কর। কেননা আল্ট্রাসনোগ্রাফি হচ্ছে মানুষের অতি নগণ্য ইলমের একটি বহিঃপ্রকাশ যা ভুলের উর্ধ্বে নয়। আর এই বিষয়ে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

وَمَا اُوتِيتُم مِّنَ الْعِلْمِ اِلَّا قَلِيلًا

অর্থ : “তোমাদেরকে সামান্য জ্ঞানই দান করা হয়েছে।” (পবিত্র সূরা বনী ইসরাঈল শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৮৫)

যেহেতু মহান আল্লাহ পাক উনার কর্তৃক প্রদত্ত প্রকৃত ইলম মনোনীত মহান ব্যক্তিত্ব উনাদের ছাড়া কারো কাছে নেই, তাই এই সামান্য ইলম ভুলের উর্ধ্বে নয়। 

তাছাড়া একটি নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বে আল্ট্রাসনোগ্রাফি দ্বারা সন্তান ছেলে হবে না মেয়ে হবে তা জানা সম্পূর্ণরূপেই অসম্ভব। তখনো লিঙ্গের বিষয়টিই স্পষ্ট হয় না।

যেহেতু মহান আল্লাহ পাক উনার কাছে সর্ববিষয়ের ইলম মুবারক রয়েছে, তাই উনার ইলম মুবারক-এ পৃথিবীতে আল্ট্রাসনোগ্রাফি আবিষ্কৃত হওয়ার বিষয়টিও আছে। আর এই আল্ট্রাসনোগ্রাফির দ্বারা নির্ণীত প্রতিবেদনে ভুল থাকবে- এই ইলম মুবারকও উনার আছে। এমনকি এক সময় পৃথিবী হতে আল্ট্রাসনোগ্রাফিসহ সমস্ত প্রযুক্তি বিলুপ্ত হয়ে যাবে- এই ইলম মুবারকও উনার রয়েছে।

অতএব যে বিষয়টি দিবালোকের ন্যায় সুস্পষ্ট হলো তা এই যে, মহান আল্লাহ পাক উনার নিকটই সর্ববিষয়ের পরিপূর্ণ ইলম রয়েছে। তিনি যদি কাউকে কোন বিষয়ে ইলম প্রদান না করেন, তাহলে সে বিষয়ে তার কোন জ্ঞানই অর্জিত হবে না। আর মহান আল্লাহ পাক তিনি যদি কাউকে কোন বিষয়ে জানিয়ে দেন, তাহলে যতটুকু জানানো হয়েছে তার বেশি জ্ঞান সে অর্জন করতে পারবে না।


0 Comments: