ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ্ দা’ওয়াত, আফযালুল ইবাদ, ছহিবে কাশ্ফ ওয়া কারামত, ফখরুল আউলিয়া, ছুফীয়ে বাতিন, ছহিবে ইস্মে আ’যম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, আমাদের সম্মানিত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম-উনার স্মরণে-
একজন কুতুবুয্ যামান-উনার দিদারে মাওলা উনার দিকে প্রস্থান-
পরোপকার ও দানশীলতা
موتوا قبل تموتوا.
অর্থঃ “তোমরা
মৃত্যুর আগেই মৃত্যু বরণ করো”- এ হাদীছ শরীফের মিছদাক্ব হয়ে হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ
মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান আলাইহিস সালাম ইন্তিকালের আগে বার বার ইন্তিকালের স্বাদ
গ্রহণ করে ইল্মে লাদুন্নী ও ছাহিবে ইসমে আ’যম-এ সম্মানে অভিষিক্ত হয়েছেন। এ
কারণে অন্তর্দৃষ্টির গভীরতায় দুনিয়া ও দুনিয়ার প্রাচুর্যকে তুচ্ছ জ্ঞান করা উনারর
দায়িমী স্বভাবে পরিণত হয়েছে। আল্লাহ পাক-উনার মাহবুব ওলীগণের বহুবিধ কাজের মধ্যে
একটি মূল কাজ হলো,
আল্লাহ পাক এবং তার প্রিয়তম হাবীব, হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার পরিপূর্ণ সন্তুষ্টি হাছিলের লক্ষ্যে
অজ্ঞান ও লক্ষ্যভ্রষ্ট মানুষের উপযুক্ত মানস গঠন করা।
আখিরাতের স্থায়িত্ব এবং নশ্বর দুনিয়ার অসারতা
সম্পর্কে মানুষের ঘুমন্ত অন্তরকে জাগিয়ে তোলা, বিবেক ও অনুভূতি শাণিত করা। অমোঘ
শরীয়তের শৃঙ্খলে আবদ্ধ করা এবং সুন্নত পালনের দায়িমী অভ্যস্ততায় আল্লাহ পাক-উনার
প্রতি দায়িমী হুযূরীতে নিমগ্ন থাকায় মানুষকে অভ্যস্ত করে তোলাই ওলীআল্লাহগণের
প্রকৃত কাজ। শরীয়ত পালনের অনিবার্যতা এবং উনার কল্যাণ সম্পর্কে সাইয়্যিদুস্
সাকালাইন, রহমতুল্লিল আলামীন,
হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম বলেছেনঃ
اتعجب من قوم يقادون الى الجنة بالسلاسل.
অর্থঃ “তুমি সে
সম্প্রদায়ের অবস্থা দেখে আশ্চর্যবোধ করছো, যাদেরকে শিকলে বেঁধে জান্নাত
অভিমুখে টেনে নেয়া হচ্ছে”?
তিনি আরো ইরশাদ করেছেনঃ
انتم تتهافتون على النار وانا اخذ بحجزكم.
অর্থঃ “তোমরা
উম্মত হয়ে পতঙ্গের মতো নিজেদেরকে দোযখের আগুনে নিক্ষেপ করছো। আর আমি তোমাদেরকে
তোমাদের কোমর ধরে পিছন দিকে টেনে ধরছি (যেনো দোযখে নিক্ষেপিত না হও)।” এ দু’টি হাদীছ
শরীফে জান্নাতী হওয়ার জন্য শরীয়ত তথা সুন্নতের অনুশাসনে মানুষের প্রতি যবরদস্তী
প্রয়োগের তাৎপর্য বিধৃত হয়েছে। নূরে মুজাস্সাম, ছাহিবে মাক্বামে মাহমুদ, হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার ক্বায়িম মক্বাম খাছ নায়িবগণও (হক্কানী
ওলীআল্লাহ) জাহান্নাম অভিমুখে অগ্রসরমান মানুষের অন্তর ইছলাহ (পরিশুদ্ধ) করে
জান্নাতী করার কাজে নিরন্তর ব্যাপৃত থাকেন। মানুষের অন্তর ইছলাহ করেছেন এবং উনার
প্রক্রিয়া সম্পর্কে শিক্ষাদান করেছেন, সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ, হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। তিনি আল্লাহ পাক ও মাখলুকের মধ্যে সংযোগ
স্থাপনকারী। আল্লাহ পাক সম্পর্কে মানুষের নিবিড়তম চিন্তা, মনোযোগ, অনুসন্ধান, অনুভব ও
আনুগত্যের প্রবেশদ্বার তিনিই উন্মোচন করেছেন। তিনিই খালিক ও মাখলুকের মধ্যে
পার্থক্যের পরিপূর্ণ ও বোধগম্য ব্যাখ্যাদান করেছেন। তিনিই অবুঝ ও বিপথগামী মানুষের
মন ও মননে অনুভব,
প্রজ্ঞা ও সমঝ-উনার উন্মেষ ঘটিয়েছেন এবং তাদের আত্মজাগৃতি
ঘটিয়েছেন। এ মর্মে আল্লাহ পাক বলেন,
لقد من الله على المؤمنين اذ بعث فيهم رسولا من انفسهم يتلوا عليهم اليته ويزكيهم ويعلمهم الكتب والحكمة وان كانوا من قبل لفى ضلل مبين.
অর্থঃ- “নিশ্চয়ই
আল্লাহ পাক ঈমানদারদের প্রতি অনুগ্রহ করেছেন, যখন তিনি তাদের নিকট তাদের
নিজেদের মধ্য থেকে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে পাঠিয়েছেন। তিনি তাদেরকে
উনারর আয়াতসমূহ পাঠ করে শোনান ও তাদেরকে ইছলাহ (অন্তর পরিশুদ্ধ) করেন এবং তাদেরকে কিতাব (শরীয়ত) ও
হিকমত (প্রজ্ঞা) শিক্ষা দান করেন এবং অবশ্যই উনার পূর্বে তারা প্রকাশ্য গোমরাহীতে
নিমজ্জিত ছিল।” (সূরা আলে ইমরান-১৬৪) (অসমাপ্ত)
আবা-১৪৩