সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব চতুষ্ঠয় উনাদের মধ্যে যে কোন একটি সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব উনার উপর মউত পর্যন্ত ইস্তিক্বামত থাকা ফরয ( ৩৪ নং )
পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব চতুষ্ঠয় উনাদের মধ্যে যে কোন একটি সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া”-
পেশ করতে পারায় মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্র দরবার শরীফ-এ শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি।

সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব চতুষ্ঠয় উনাদের মধ্যে যে কোন একটি সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব উনার উপর মউত পর্যন্ত ইস্তিক্বামত থাকা ফরয
পূর্ব প্রকাশিতের পর
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার দৃষ্টিতে আত তাক্বলীদুশ শরয়ী বা শরীয়সম্মত অনুসরণ-অনুকরণ
(৬৩৯-৬৪৬)
عَنْ اُنَاسٍ مِنْ اَهْلِ حِمْصَ مِنْ اَصْحَابِ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ رضى الله عنه اَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم لَمَّا اَرَادَ اَنْ يَّبْعَثَ مُعَاذًا رضى الله عنه اِلَى الْيَمَنِ قَالَ كَيْفَ تَقْضِىْ اِذَا عَرَضَ لَكَ قَضَاءٌ قَالَ اَقْضِىْ بِكِتَابِ اللهِ قَالَ فَاِنْ لَمْ تَجِدْ فِىْ كِتَابِ اللهِ قَالَ فَبِسُنَّةِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ فَاِنْ لَمْ تَجِدْ فِىْ سُنَّةِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَلاَ فِى كِتَابِ اللهِ قَالَ اَجْتَهِدُ رَأْيِىْ وَلاَ آلُو فَضَرَبَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صَدْرَه وَقَالَ اَلْحَمْدُ لله الَّذِى وَفَّقَ رَسُوْلَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم لِمَا يُرْضِىْ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم.
অনুবাদ: হিম্ছ অধিবাসীদের মধ্যে হযরত মুয়ায বিন জাবাল রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনার সঙ্গি-সাথীদের কতক বর্ণনাকারী থেকে বর্ণিত আছে। নিশ্চয়ই নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন হযরত মুয়ায বিন জাবাল রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনাকে ইয়ামান এলাকায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিলেন, তখন তিনি উনাকে পাঠানোর সময় জিজ্ঞাসা করলেন: যখন কোন সমস্যা দেখা দিবে তখন আপনি কিভাবে তার ফায়সালা করবেন? তিনি বললেন, আমি মহান আল্লাহ তায়ালা উনার কিতাব উনার দ্বারা ফায়সালা করব। তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন: আপনি যদি পবিত্র কিতাবুল্লাহ উনার মধ্যে সরাসরি সমাধান না পান! তাহলে কি করবেন? উত্তরে তিনি বললেন, তাহলে পবিত্র সুন্নাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দ্বারা ফায়সালা করব। তিনি আবারো ইরশাদ মুবারক করলেন: আপনি যদি পবিত্র সুন্নাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মধ্যে এবং পবিত্র কিতাবুল্লাহ উনার মধ্যে সরাসরি সমাধান না পান! তাহলে কি করবেন? উত্তরে তিনি বললেন, তাহলে আমি আমার রায় বা সমাধান বের করতে ইজতিহাদ বা ক্বিয়াস করব; এতে আমি চেষ্টায় কোন ত্রুটি করব না। তখন নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার প্রতিনিধি ছহাবী উনার বুক মুবারকে পবিত্র হাত মুবারক দ্বারা স্পর্শ্ব করে বললেন: মহান আল্লাহ তায়ালা উনার সমস্ত প্রসংশা! যিনি উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার রসূল বা প্রতিনিধিকে রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সন্তুষ্টি মুতাবিক কথা বলার তাওফীক্ব দিয়েছেন। (সুনানু আবী দাঊদ লেখক: হযরত আবূ দাঊদ সুলাইমান বিন আশয়াছ সাজিস্তানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি পরিচ্ছে ১১: বাবু ইজতিহাদির রায় ফিল্ ক্বদ্বা ৩য় খণ্ড ৩৩০ পৃষ্ঠা হাদীছ শরীফ নম্বর: ৩৫৯৪ প্রকাশক: দারুল কিতাবিল আরাবী-বইরূত লেবনান, মোট ৪ খণ্ডে সমাপ্ত; আল-জামিউ ওয়াস্ সুনান লিত্ তিরমিযী, মুসনাদ আহমাদ বিন হাম্বাল, মুসনাদুত্ ত্বয়ালাসী, মুছান্নাফ ইবনু আবী শাইবাহ, সুনানুদ দারিমী, আস-সুনানুল্ কুবরা লিল্ বাইহাক্বী, মিশকাতুল মাছাবীহ)
অত্র পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ফাতাওয়া, ফায়সালা, বিচার-মিমাংসা ইত্যাদী করার তারতীব শিক্ষা দেয়া হয়েছে। ইমাম বা ফায়সালাকারী শরীয়াত অনুযায়ী ফায়সালা দিবেন আর তা জনসাধারণ নির্দিধায় মেনে নিবেন এমনটি স্পষ্ট করা হয়েছে। আর ইহাই হচ্ছে মাযহাব মান্য করা।
(৬৪৭-৬৫০)
عَنْ حضرت حُذَيْفَةَ رضى الله عنه قال كنا عند النبى صلى الله عليه و سلم جلوسا فقال اِنِّىْ لاَ اَدْرِىْ مَا قَدْرُ بَقَائِىْ فِيكُمْ فَاقْتَدُوْا بِاللَّذَيْنِ مِنْ بَعْدِىْ وَاَشَارَ اِلى اَبِىْ بَكْرٍ عليه السلام وَعُمَرَ عليه السلام.
অনুবাদ: ছহাবী হযরত হুযাইফাহ ইবনে ইয়ামান রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনার থেকে বর্ণিত আছে। তিনি বলেন: আমরা একদা নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছুহবাতে বসা ছিলাম। সে অবস্থায় তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন: আমি জানি না (অর্থাৎ আমি বলব না) যে; আর কত দিন আপনাদের মধ্যে যাহির থাকব। তাই আমার পরে যে দুজন থাকবেন আপনারা উনাদেরকে ইক্তিদা (অর্থাৎ তাক্বলীদ বা অনুসরণ-অনুকরণ) করবেন। এতে তিনি ছিদ্দীক্বে আকবার হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম ও ফারূক্বে আযম হযরত উমর ইবনুল খত্তাব আলাইহিস সালাম উনাদের দিকে ইঙ্গিত করলেন। (মুসনাদুল ইমাম আহমাদ বিন হাম্বাল লেখক: আল-ইমামুল মুতলাক, ইমামুল মাযহাবিল হানাবিলাহ, ইমাম আহমাদ বিন হাম্বাল আবূ আব্দিল্লাহ শাইবানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ২৪১ হিজরী পরিচ্ছেদ: হাদীছু হুযাইফাহ বিন ইয়ামান রদ্বিয়াল্লাহু আনহু আনিন্ নাবিয়্যি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ৫ম খণ্ড ৩৮৫, ৩৯৯ ও ৪০২ পৃষ্ঠা প্রকাশক: মুয়াসসিসাতু কুরতুবাহ- ক্বাহেরা, মোট ৬ খণ্ডে সমাপ্ত; আল-জামেওয়াস সুনান লিত্ তিরমিযী লেখক: হযরত মুহাম্মাদ বিন ঈসা আবূ ঈসা তিরমিযী সুলামী রহমাতুল্লাহি আলাইহি পরিচ্ছেদ ১৬: বাবুন ফী মানাক্বিবি আবী বকর ওয়া উমর আলাইহিমাস সালাম কিলাইহিমা ৫ম খণ্ড ৬১০ পৃষ্ঠা, পরিচ্ছেদ ৩৫: বাবু মানাক্বিবি আম্মার বিন ইয়াসার রদ্বিয়াল্লাহু আনহু ৫ম খণ্ড ৬৬৮ পৃষ্ঠা, প্রকাশক: দারু ইহইয়ায়িত্ তুরাছির আরাবী- বইরূত, তাহক্বীক্ব: আহমাদ মুহাম্মাদ শাকির ও অন্যান্যরা, মোট ৫ খণ্ডে সমাপ্ত; সুনানে ইবনু মাজাহ লেখক: আবূ আব্দিল্লাহ মুহাম্মাদ বিন ইয়াযীদ ক্বযবীনী ইবনু মাজাহ রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ২৭৩ হিজরী, পরিচ্ছে ১১: বাবুন ফী ফাদ্বায়িলি আছাহাবি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- ফাদ্বলু আবী বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম ১ম খণ্ড ৭৩ পৃষ্ঠা, প্রকাশক: মাকতাবাতু আবিল মায়াত্বী, মোট ৫ খণ্ডে সমাপ্ত; মিশকাতুল মাছাবীহ লেখক: হযরত মুহাম্মাদ বিন আব্দুল্লাহ খত্বীব তাবরীযী রহমাতুল্লাহি আলাইহি পরিচ্ছেদ ৫: বাবু মানাক্বিবি আবী বকর ওয়া উমর আলাইহিমাস সালাম ৩য় খণ্ড ৩২০ পৃষ্ঠা, প্রকাশক: আল-মাকতাবুল ইসলামী- বইরূত লেবনান)
অত্র পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে  ইক্তাদূ অর্থাৎ আপনারা অনুসরণ করতে থাকবেনআমর বা নির্দেশমূলক শব্দ মুবারকখানা শরয়ী তাক্বলীদ বা অনুসরণ-অনুকরণকে ওয়াজিব বা ফরয করে প্রমাণ করে।
(৬৫১)
عَنْ ام الـمؤمنين حضرت عَائِشَةَ عليها السلام قَالَتْ ... فَجَاءَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم حَتّى جَلَسَ عَنْ يَسَارِ اَبِىْ بَكْرٍ عليه السلام، فَكَانَ اَبُوْ بَكْرٍ عليه السلام يُصَلِّىْ قَائِمًا وَكَانَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّىْ قَاعِدًا، يَقْتَدِىْ اَبُوْ بَكْرٍ عليه السلام بِصَلاَةِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَالنَّاسُ مُقْتَدُونَ بِصَلاَةِ اَبِىْ بَكْرٍ عليه السلام.
অনুবাদ: উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত আছে। তিনি বলেছেন ... একদা (মারীদ্বী শান মুবারক অবস্থায়) নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এসে ছিদ্দীক্বে আকবার হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম উনার বাম দিকে বসলেন। এতে হযরত ছিদ্দীক্বে আকবার আলাইহিস সালাম তিনি দাঁড়িয়ে নামায পড়ছিলেন, আর নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বসে নামায পড়াচ্ছিলেন। হযরত ছিদ্দীক্বে আকবার আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নামায মুবারক উনার ইক্তিদা বা অনুসরণ করছিলেন, আর অন্যান্য সকল ছহাবাহ কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম উনারা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবার আলাইহিস সালাম উনার নামায মুবারক উনার ইক্তিদা করছিলেন। (আল-জামিউছ ছহীহু লিল্ বুখারী লেখক: আবূ আব্দিল্লাহ মুহাম্মাদ বিন ইসমাঈর বিন ইবরাহীম বিন মুগীরাহ বুখারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ২৫৬ হিজরী, পরিচ্ছে ৪০: বাবুর রজুলু ইয়াতাম্মু বিল্ ইমামি ওয়া ইয়াতাম্মুন নাসু বিল্ মামূম ১ম খণ্ড ১৮২ পৃষ্ঠা, হাদীছ শরীফ নম্মর: ৭১৩ প্রকাশক: বাবুশ শুয়াব-ক্বাহেরা, মোট ৯ খণ্ডে সমাপ্ত)
অত্র পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে হযরত ছিদ্দীক্বে আকবার আলাইহিস সালাম উনাকে ইক্তিদা বা অনুসরণ করার বিষয়টি স্পষ্ট।
(৬৫২-৬৫৩)
عَنْ حضرت اَبِى وَائِلٍ رحمة الله عليه قَالَ جَلَسْتُ اِلى شَيْبَةَ بن عثمان رضى الله عنه فَقَالَ جَلَسَ عُمَرُ بن الخطاب عليه السلام فِى مَجْلِسِكَ هذَا فَقَالَ لقد هَمَمْتُ اَنْ لاَ اَدَعَ فِى الكعبة صَفْرَاءَ وَلاَ بَيْضَاءَ اِلاَّ قَسَمْتُهَا بَيْنَ الناسِ قال قُلْتُ ليس ذلك لك قد سَبَقَكَ صَاحِبَاكَ لَمْ يَفْعَلَا ذلك فَقَالَ هُمَا الْمَرْانِ يُقْتَدَى بِهِمَا.
 অনুবাদ: তাবিয়ী হযরত আবূ ওয়ায়িল রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত আছে। তিনি বলেন: আমি একদা ছহাবী হযরত শাইবাহ বিন উছমান রদ্বিয়াল্লাহ আনহু উনার নিকট বসা ছিলাম। এমতাবস্থায় তিনি বললেন: আমীরুল মুমিনীন খলীফাতুল মুসলিমীন হযরত উমর ফারূক আলাইহিস সালাম তিনি ঠিক আপনার বসার এই জায়গাতেই বসে বলেছিলেন; আমার ইচ্ছা হয় যে, পবিত্র কাবা শরীফ উনার মধ্যে সংরক্ষিত সকল সোনা-রূপা মুসলমান মানুষদের মধ্যে বন্টন করে দেই। তখন তিনি (হযরত শাইবাহ বিন উছমান রদ্বিয়াল্লাহ আনহু) বললেন, আমি বললাম: আপনার তো সেই অধিকার নেই। কেননা, আপনার পূর্বে দুজন (প্রথমজন নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও অপরজন প্রথম খলীফাহ হযরত ছিদ্দীক্বে আকবার আলাইহিস সালাম) এমন কাজটি করেননি। ইহা শুনে তিনি বললেন: উনাদের দুজনের ইক্তিদা বা অনুসরণ-অনুকরণ করা অবশ্যই উচিৎ অর্থাৎ ফরয-ওয়াজিব। (মুসনাদুল ইমাম আহমাদ বিন হাম্বাল লেখক: আল-ইমামুল মুতলাক, ইমামুল মাযহাবিল হানাবিলাহ, ইমাম আহমাদ বিন হাম্বাল আবূ আব্দিল্লাহ শাইবানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ২৪১ হিজরী পরিচ্ছেদ:  ৩য় খ- ৪১০ পৃষ্ঠা, হাদীছ শরীফ নম্বর: ১৫৪১৯ ও ১৫৪২০ প্রকাশক: মুয়াসসিসাতু কুরতুবাহ- ক্বাহেরাহ, মোট ৬ খণ্ডে সমাপ্ত; মুয়াসসিসাতু কুরতুবাহ- ক্বাহেরা, মোট ৬ খণ্ডে সমাপ্ত; আল-জামিউছ ছহীহু লিল্ বুখারী লেখক: আবূ আব্দিল্লাহ মুহাম্মাদ বিন ইসমাঈর বিন ইবরাহীম বিন মুগীরাহ বুখারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ২৫৬ হিজরী, পরিচ্ছে ২: বাবুল ইক্তিদাহ বিসুনানি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ৯ম খ- ১১৪ পৃষ্ঠা, হাদীছ শরীফ নম্মর: ৭২৭৫ প্রকাশক: বাবুশ শুয়াব-ক্বাহেরা, মোট ৯ খণ্ডে সমাপ্ত)
এখানে يُقْتَدَىইউক্তাদা অর্থাৎ অনুসরণ করা উচিৎশব্দ মুবারকখানা ব্যবহার করা হয়েছে। যা শরয়ী তাক্বলীদ বা অনুসরণ-অনুকরণকে ফরয-ওয়াজিব সাব্যস্ত করে।
(৬৫৪-৬৬১)
عَنْ حضرت عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ: اِنَّ اللّهَ لاَ يَقْبِضُ الْعِلْمَ انْتِزَاعًا يَنْتَزِعُهُ مِنَ الْعِبَادِ وَلَكِنْ يَقْبِضُ الْعِلْمَ بِقَبْضِ الْعُلَمَاءِ حَتَّى اِذَا لَمْ يُبْقِ عَالِمًا اتَّخَذَ النَّاسُ رُؤُوسًا جُهَّالاً فَسُئِلُوا فَافْتَوْا بِغَيْرِ عِلْمٍ فَضَلُّوا وَاَضَلّوا.
অনুবাদ: ছাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ বিন আমর বিন আছ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনার থেকে বর্ণিত আছে। তিনি বলেন, নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে আমি বলতে শুনেছি যে, তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন: নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ তায়ালা তিনি বান্দাদের অন্তর থেকে ছিনিয়ে নেয়ার মাধ্যমে ইল্ম উনাকে তুলে নিবেন না, বরং আলিম উনাদেরকে উঠিয়ে নেয়ার মাধ্যমে ইল্ম উনাকে তুলে নিবেন। এভাবে একজন আলিমও যখন থাকবেন না, তখন মানুষেরা মুর্খদেরকে তাদের পথপ্রদর্শক হিসেবে গ্রহণ করবে। তাই তারা কোন কিছু জিজ্ঞাসিত হলে অজ্ঞতাপ্রসূত ফাতাওয়া দিবে। যার ফলে তারা নিজেরাও গোমরা হবে এবং অন্যদেরকেও গোমরাহ করবে। (আল-জামিউছ ছহীহু লিল্ বুখারী  কিতাবুল ঈমান পরিচ্ছেদ ৩৪: বাবু কাইফা ইউক্বাদুল ইল্ম মুসনাদু আহমাদ বিন হাম্বাল, ছহীহ মুসলিম, আল-জামিউ ওয়াস্ সুনানু লিত্ তিরমিযী, সুনানু ইবনি মাজাহ, ছহীহ ইবুন হিব্বান, মুসনাদুল্ বায্যার, মিশকাতুল মাছাবীহ)
অত্র পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আমলদার হক্কানী আলিম উনাদেরকে অনুসরণ-অনুকরণ করার গুরুত্ব বুঝানো হয়েছে। উনারা না থাকলে জাতী যে মুর্খদের ফাতাওয়া দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে গোমরাহ হয়ে যাবে তাও বলে দেয়া হয়েছে। তাই আলিম উনাদেরকে অনুসরণ করা জরুরী প্রমাণিত হয়।
(৬৬২-৬৬৩)
عَنْ حضرت اَبِىْ عُثْمَانَ الطُّنْبُذِىّ رَضِيعِ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ مَرْوَانَ قَالَ سَمِعْتُ اَبَا هُرَيْرَةَ رضى الله عنه يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم: مَنْ اُفْتِىَ بِغَيْرِ عِلْمٍ كَانَ اِثْمُه عَلى مَنْ اَفْتَاه.
অনুবাদ: তাবিয়ী হযরত আবূ উছমান তুনবুযী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত, যিনি ছিলেন আব্দুল মালিক বিন মারওয়ান-এর দুধভাই। তিনি (তাবিয়ী হযরত আবূ উছমান তুনবুযী রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আমি হযরত আবূ হুরাইরাহ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনার কাছ থেকে শুনেছি যে তিনি বলেছেন- মূলত: নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন: যাকে ইল্ম ছাড়া ফাতাওয়া দেয়া হল, এতে গুনাহ তারই হবে যে ইল্ম ছাড়া ফাতাওয়া দিয়েছে। (সুনানু আবী দাঊদ লেখক: আবূ দাঊদ সুলাইমান বিন আশয়াছ সাজিস্তানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ২৭৫ হিজরী অধ্যায় ২০: কিতাবুল ইল্ম পরিচ্ছেদ ৮: বাবুত্ তাওয়াক্কী ফিল্ ফুত্ইয়া, আল-মুস্তাদারক আলালছ্ ছহীহাঈন লেখক: আবূ আব্দিল্লাহ মুহাম্মাদ বিন আব্দুল্লাহ হাকিম নীসাবূরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি কিতাবুল ইল্ম)
অত্র পবিত্র হাদীছ শরীফখানা তাক্বলীদ বা ইমাম-মুজতাহিদ উনাদের আনুগত্যতার সপক্ষে এক মজবূত দলীল। কেননা, তাক্বলীদ শারীয়াত অনুমোদিত না হলে অজ্ঞতাপ্রসূত ফাতাওয়া প্রদানের সকল দায়-দায়িত্ব মুফতী ছাহেবের একার ঘাড়ে চাপতো না।
(৬৬৪-৬৬৫)
عَنْ حضرت اِبْرَاهِيمَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمنِ الْعَذَرِىِّ رضى الله عنه قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم: يَرِثُ هذَا الْعِلْمَ مِنْ كُلِّ خَلَفٍ عُدُولُه يَنْفُونَ عَنْهُ تَاْوِيلَ الْجَاهِلِينَ وَانْتِحَالَ الْمُبْطِلِينَ وَتَحْرِيفَ الْغَالِينَ.
অনুবাদ: ছাহাবী হযরত ইবরাহীম ইবনে আব্দুর রহমান আযারী রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন: সুযোগ্য উত্তরসূরীরা পূর্ববর্তীদের কাছ থেকে ওয়ারিছ হিসেবে এই ইলম গ্রহণ করবে। আর মুর্খদের ভুল ব্যাখ্যা, বাতিলপন্থীদের মিথ্যাচার এবং বাড়াবাড়িকারীদের বাড়াবাড়ি থেকে এই ইল্ম উনাকে হিফাযত করবে। (আস-সুনানুল কুবরা লিল্ বাইহাক্বী পরিচ্ছেদ ৫০: বাবুর রজুল মিন আহলিল ফিক্হ ইউসয়ালু আনির রজুলি মিন আহলিল্ হাদীছ ফাইয়াকূলু কুফফূ আন্ হাদীছিহী লিআন্নাহূ ইয়াগলাতু আও ইউহাদ্দিছু বিমা লাম ইয়াসমাআও আন্নাহূ লা ইউবছিরুল ফুতইয়া, মুসনাদুল বায্যার)
পবিত্র শরীয়াত উনার বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে মুর্খদের ব্যাখ্যার কঠোর নিন্দা করে এখানে বলা হয়েছে যে, জাহিল-মুর্খদের হাত থেকে ইল্ম উনাকে হিফাযত করা প্রত্যেক যুগের হক্কানী আলিম উনাদের পবিত্র দায়িত্ব-কর্তব্য। সুতরাং পবিত্র কুরআন মাজীদ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের নির্ভুল অনুসরণের জন্য উনাদেরকেই অনুসরণ করতে হবে। আর এটাই তো তাক্বলীদ বা মাযহাব মান্য করা।
(৬৬৬-৬৭০)
وَيُذْكَرُ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ائْتَمُّوا بِى وَلْيَاْتَمَّ بِكُمْ مَنْ بَعْدَكُم.
অনুবাদ: নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে ইরশাদ মুবারক হয়েছে যে, তোমরা আমাকে ইক্তিদা কর, আর তোমাদের পরবর্তীরা তোমাদেরকে দেখে ইক্তিদা বা অনুসরণ করবে। (আল-জামিউছ ছহীহু লিল্ বুখারী পরিচ্ছেদ ৪০: বাবুর রজুল ইয়াতাম্মু বিল্ ইমাম ওয়া ইয়াতাম্মুন্ নাস বিল্ মামূম, ছহীহ মুসলিম, মুসনাদু আহমাদ বিন হাম্বাল, ছহীহ ইবনে খুযাইমাহ, মুসনাদুত্ ত্বয়ালাসী)
এখানে স্পষ্টভাবে ইমাম-মুজতাহিদ তথা ওলীআল্লাহ উনাদেরকে ইত্তিবা বা অনুসরণ করতে নির্দেশ করা হয়েছে। যা মূলত: ফরয উনার অন্তর্ভুক্ত।
(৬৭১)
عَنْ حضرت سَهْلٍ رحمة الله عليه عَنْ اَبِيهِ رضى الله عنه عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَنَّ امْرَاَةً اَتَتْهُ فَقَالَتْ: يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم انْطَلَقَ زَوْجِى غَازِيًا وَكُنْتُ اقْتَدِى بِصَلاَتِه اِذَا صَلّى وَبِفِعْلِه كُلّه فَاخْبِرْنِىْ بِعَمَلٍ يُبْلِغُنِى عَمَلَه حَتّى يَرْجِعَ.
অনুবাদ: হযরত সাহ্ল রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার পিতা (হযরত আবূ সাহ্ল রদ্বিয়াল্লাহু আনহু) উনার থেকে বর্ণনা করেন যে, একদা জনৈক মহিলা ছহাবী নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমতে হাযির হয়ে আরয করলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমার স্বামী জিহাদে গেছেন। উনি থাকতে আমি উনার নামায ও অন্যান্য কাজের অনুসরণ করতাম। এখন উনি ফিরে আসা পর্যন্ত এমন কোন আমল আমাকে জানিয়ে দিন, যা উনার আমলের সমপর্যায়ে আমাকে পৌঁছে দিবে। (মুসনাদু আহমাদ বিন হাম্বাল পরিচ্ছেদ: হাদীছু মুয়ায বিন আনাস আল-জুহানী রদ্বিয়াল্লাহু আনহু)
লক্ষ্য করুন! মহিলা ছহাবী সুস্পষ্ট ভাষায় নিজের ছলাত বা নামাযসহ যাবতীয় আমলের ইক্তিদা করার ঘোষণা দিচ্ছেন, অথচ নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এতে কোন রকম অসম্মতি প্রকাশ করেননি। সুবহানাল্লাহ।
উল্লেখিত ৯ খানা পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে তাক্বলীদ বা শরীয়াত সম্মত আনুগত্যতা যে পবিত্র দীন ইসলাম উনার অন্যতম জরুরী ফরয বিধান তা স্পষ্টই প্রমাণিত হচ্ছে। আর ইহাই তো মাযহাব মান্য করা। 
সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব চতুষ্ঠয় উনাদের মধ্যে যে কোন একটি সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব উনার উপর মউত পর্যন্ত ইস্তিক্বামত থাকা ফরয ( ৩৩ নং )

পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব চতুষ্ঠয় উনাদের মধ্যে যে কোন একটি সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া”-
পেশ করতে পারায় মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্র দরবার শরীফ-এ শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি।

সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব চতুষ্ঠয় উনাদের মধ্যে যে কোন একটি সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব উনার উপর মউত পর্যন্ত ইস্তিক্বামত থাকা ফরয


পূর্ব প্রকাশিতের পর
পবিত্র তাফসীর শরীফ উনাদের নির্ভরযোগ্য কিতাব থেকে আত-তাক্বলীদু গাইরুশ্ শারয়ী তথা শরীয়াত বহির্ভুত অনুসরণউনার বিষয়ে পবিত্র আয়াত শরীফসমূহ উনাদের ছহীহ ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ ও আহকাম

পবিত্র কুরআন মাজীদ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমাউল উম্মাহ ও পবিত্র ছহীহ ক্বিয়াস উনাদের দলীল-আদিল্লাহ উনাদের বিপরীতে নিজেদের খেয়াল-খুশি মতো শায়তান ও তাগূতী যাবতীয় বাতিল মত-পথ মেনে চলাকে আত-তাকলীদু গাইরুশ শারয়ী তথা শারীয়াত বহির্ভুত অনুসরণবলে। একে তাকলীদুন নাফ্সতাকলীদুল হাওয়াতথা প্রবৃত্তির অনুসরণও বলা হয়ে থাকে।
নি¤œ পবিত্র তাফসীর শরীফ উনাদের নির্ভরযোগ্য কিতাব থেকে আত-তাক্বলীদু গাইরুশ শারয়ী  তথা শরীয়াত বহির্ভূত অনুসরণউনার সম্পর্কে পবিত্র আয়াত শরীফ সমূহ উল্লেখ করে উনাদের ছহীহ ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ ও আহকাম বা বিধি-বিধান আলোচনা করা হলো-
পবিত্র আয়াত শরীফ নম্বর- ৯
وَلَا تُطِعْ مَنْ اَغْفَلْنَا قَلْبَه عَنْ ذِكْرِنَا وَاتَّبَعَ هَوَاهُ وَكَانَ اَمْرُه فُرُطًا.
অর্থ: ওই সমস্ত লোকের ইতায়াত (আনুগত্য) করবেন না, (যার বদআমলের দরুন) তার ক্বলবকে আমার যিক্্র থেকে গাফিল করে দিয়েছি। (আর আমার যিক্র থেকে গাফিল হওয়ার কারণেই) সে নাফ্সের পায়রবী করে থাকে। আর তার কাজগুলো শরীয়াত উনার খিলাফ। (পবিত্র সূরাতুল্ কাহ্ফ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ নং ২৮)
অত্র পবিত্র আয়াত উনার বিশুদ্ধ
তাফসীর বা ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ
(৬২৩)
}وَلاَ تُطِعْ مَنْ اَغْفَلْنَا قَلْبَه عَن ذِكْرِنَا} عن توحيدنا {واتبع هَوَاهُ} فى عبادة الاصنام {وَكَانَ اَمْرُه} قوله {فُرُطًا} ضائعًا.
অর্থাৎ: (ওই সমস্ত লোকের আনুগত্য করবেন না, যার বদআমলের দরুন তার ক্বলবকে আমার যিক্্র থেকে গাফিল করে দিয়েছি) আমার তাওহীদ থেকে গাফিল হয়েছে। (আর আমার যিক্র থেকে গাফিল হওয়ার কারণেই সে নাফ্সের পায়রবী করে থাকে) প্রতিমা-মূর্তির উপাসনার মাধ্যমে। (আর তার কাজগুলো) তার কথা-বার্তা বা বক্তব্যগুলো (শরীয়াত উনার খিলাফ) অর্থাৎ নষ্ট হয়েছে। (তানবীরুল মাক্ববাস মিন তাফসীরি ইবনি আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা ওয়াফাত: ৬৮ হিজরী পবিত্র সূরাতুল্ কাহ্ফ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ নং ২৮ সংকলক: মুহাম্মাদ বিন ইয়াকূব ফীরোযাবাদী হানাফী মাতুরীদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৮১৭ হিজরী)
(৬২৪)
}وَلاَ تُطِعْ مَنْ اَغْفَلْنَا قَلْبَه عَن ذِكْرِنَا} اى عن القراٰن {واتبع هَوَاهُ} فى عبادة الاصنام {وَكَانَ اَمْرُه فُرُطًا} اى ضياعًا، وقال السدى رحمة الله عليه: هلاكًا، قال ابو عبيدة رحمة الله عليه: ندمًا. قال المفسرون رحمة الله عليهم: اى سرفًا، وقال الزجاج رحمة الله عليه: تفريطًا وهو العجز.
অর্থাৎ: (ওই সমস্ত লোকের আনুগত্য করবেন না, যার বদআমলের দরুন তার ক্বলবকে আমার যিক্্র থেকে গাফিল করে দিয়েছি) অর্থাৎ পবিত্র কুরআন মাজীদ উনার অনুসরণ থেকে। (আর আমার যিক্র থেকে গাফিল হওয়ার কারণেই সে নাফ্সের পায়রবী করে থাকে) প্রতিমা-মূর্তির উপাসনার মাধ্যমে। (আর তার কাজগুলো সম্মানিত শরীয়াত উনার খিলাফ) অর্থাৎ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। হযরত সুদ্দী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন: তার আমল সমূহ হালাক বা ধ্বংস। হযরত আবূ উবাইদাহ রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন: অনুতাপ বা লজ্জায় নিপতীত। হযরত মুফাসসিরূন কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনারা বলেন: সময় অপচয়। হযরত যুজাজ রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন: বাতিল। (বাহরুল উলূম অর্থাৎ তাফসীরুস সামারকান্দী পবিত্র সূরাতুল্ কাহ্ফ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ নং ২৮ লেখক: হযরত আবুল লাইছ নছর বিন মুহাম্মাদ বিন আহমাদ বিন ইবরাহীম সামারকান্দী হানাফী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৩৭৩ হিজরী)


(৬২৫)
}من اغفلنا قبله} جعلناه غافلًا عما يجب عليه من ذكرنا وعبادتنا {وكان امره فرطًا} اى ضياعًا وهلاكًا.
অর্থাৎ: (যার বদ আমলের দরুন তার ক্বলবকে আমার যিক্্র থেকে গাফিল করে দিয়েছি) আমরা তাকে গাফিল করেছি, অথচ আমার যিক্র করা ও ইবাদত করা তার জন্য ওয়াজিব ছিল। (আর তার কাজগুলো সম্মানিত শরীয়াত উনার খিলাফ) অর্থাৎ বিপরীত ও ধ্বংস। (আইসারুত্ তাফাসীর লিকালামিল আলিয়্যিল্ কাবীর পবিত্র সূরাতুল্ কাহ্ফ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ নং ২৮ লেখক: হযরত জাবির বিন মূসা বিন আব্দুল ক্বাদির বিন জাবির আবূ বকর জাযায়িরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি)
(৬২৬)
وَقَوْلُه فِىْ هٰذِهِ الْاٰيَةِ الْكَرِيمَةِ: مَنْ اَغْفَلْنَا قَلْبَه، يَدُلُّ عَلٰى اَنَّ مَا يَعْرِضُ لِلْعَبْدِ مِنْ غَفْلَةٍ وَمَعْصِيَةٍ.
অর্থাৎ: যার বদ আমলের দরুন তার ক্বলবকে আমার যিক্র থেকে গাফিল করে দিয়েছিঅত্র পবিত্র আয়াত কারীমাহ প্রমাণ করে যে, এখানে বান্দার গাফলাতী ও নাফরমানীকে প্রকাশ করা হয়েছে। (আদ্ওয়াউল্ বয়ান ফী ঈদ্বাহিল কুরআন বিল্ কুরআন পবিত্র সূরাতুল্ কাহ্ফ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ নং ২৮ লেখক: হযরত মুহাম্মাদ আমীন বিন মুহাম্মাদ মুখতার বিন আব্দুল ক্বাদির জাকনী শানক্বীতী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ১৩৯৩ হিজরী)
(৬২৭)
}وَلا تُطِعْ مَنْ اَغْفَلْنَا قَلْبَه عَنْ ذِكْرِنَا} اى جعلنا قلبه غافلا عن ذكرنا يعنى عيينة بن حصن، وقيل: امية بن خلف {وَاتَّبَعَ هَوَاهُ} اى مراده فى طلب الشهوات {وَكَانَ اَمْرُه فُرُطًا} قال قتادة ومجاهد رحمة الله عليهما: ضياعا، وقيل: معناه ضيع امره وعطل ايامه، وقيل: ندما، وقال مقاتل ابن حيان رحمة الله عليه: سرفا، وقال الفراء رحمة الله عليه: متروكا، وقيل باطلا، وقيل: مخالفا للحق، وقال الاخفش رحمة الله عليه: مجاوزا للحد، قيل: معنى التجاوز فى الحد هو قول عيينة رحمة الله عليه.
অর্থাৎ: (ওই সমস্ত লোকের আনুগত্য করবেন না, যার বদ আমলের দরুন তার ক্বলবকে আমার যিক্্র থেকে গাফিল করে দিয়েছি) অর্থাৎ আমরা তার ক্বলবকে আমরা যিক্র থেকে গাফিল করে দিয়েছি। অর্থাৎ সে ব্যক্তি হলো উয়াইনা বিন হিছান, কারো মতে: সে উমাইয়াহ বিন খল্ফ। (আর আমার যিক্র থেকে গাফিল হওয়ার কারণেই সে নাফ্সের পায়রবী করে থাকে) অর্থাৎ এখানে উদ্দেশ্য হচ্ছে শাহাওয়াত অন্বেষণকারী। (আর তার কাজগুলো সম্মানিত শরীয়াত উনার খিলাফ) হযরত ক্বতাদাহ ও মুজাহিদ রহমাতুল্লাহি আলাইহিমা উনারা বলেন: ধ্বংসে নিপতীত। কেউ বলেন: উনার অর্থ হলো, তার কাজ ধ্বংস হয়েছে ও তার দিনগুলো বেকার গেছে। কেউ বলেন: অনুতাপ-পরিতাপময়। হযরত মুক্বাতিল বিন হাইয়ান রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন: তার আমলগুলো অযথা। হযরত ফাররা রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন: বর্জিত কাজ। কেউ বলেন: বাতিল কাজ। কেউ বলেন: হক্ব উনার খিলাফ কাজ। হযরত আখফাশ রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন: সীমা লঙ্ঘিত কাজ। কেউ বলেন: সীমানার মধ্যে অতিক্রান্ত কাজ। ইহা হযরত উয়াইয়াহ রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার উক্তি। (মায়ালিমুত্ তানযীল অর্থাৎ তাফসীরুল্ বাগবী পবিত্র সূরাতুল্ কাহ্ফ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ নং ২৮ লেখক: মুহইস্ সুন্নাহ হযরত আবূ মুহাম্মাদ হুসাঈন বিন মাসঊদ বাগবী শাফিয়ী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৫১০ হিজরী)
(৬২৮)
}اَغْفَلْنَا قَلْبَه عَن ذِكْرِنَا} اى جعلنَاهُ غافلًا عن القُرْاٰنِ والاسلام، قَوْلُه تَعَالٰى: {وَكَانَ اَمْرُه فُرُطًا} اى ضَيَاعًا ونَدَمًا، وَقِيْلَ: هلاكًا، وَقِيْلَ: مُخالفًا للحق، وَقِيْلَ: بَاطلًا، وَقِيْلَ: معناه: ضَيَّعَ امرَه وبطلَ ايامه.
অর্থাৎ: (যার বদ আমলের দরুন তার ক্বলবকে আমার যিক্্র থেকে গাফিল করে দিয়েছি) অর্থাৎ আমরা তাকে পবিত্র কুরআন মাজীদ ও দীন ইসলাম থেকে গাফিল করে দিয়েছি। মহান আল্লাহ তায়ালা উনার ইরশাদ মুবারক: (আর তার কাজগুলো শরীয়াত উনার খিলাফ) অর্থাৎ নষ্ট ও অনুতাপময়। কেউ বলেন: ধ্বংস। কেউ বলেন: হক্ব উনার খিলাফ কাজ। কেউ বলেন: বাতিল কাজ। কেউ বলেন: ফুরুত্বা উনার মর্মার্থ হলো- তার কাজ সমূহ নষ্ট হয়েছে এবং তার বিগত দিনের আমলসমূহ বাতিল বা বাদ। (তাফসীরুল কুরআনিল আযীম লিত্ ত্ববারানী পবিত্র সূরাতুল্ কাহ্ফ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ নং ২৮ লেখক: হযরত আবুল ক্বাসিম সুলাইমান বিন আহমাদ বিন আইয়্যূব বিন মুত্বীর লাখমী শামী ত্ববারানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৩৬০ হিজরী)
অত্র পবিত্র আয়াত শরীফ এবং উনার তাফসীর থেকে যা প্রমাণিত হলো তা হচ্ছে: মহান আল্লাহ তায়ালা ও নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের যিক্র থেকে, পবিত্র তাওহীদ, পবিত্র রিসালাত, পবিত্র নুবুওওয়াত, পবিত্র বিলায়াত, পবিত্র কুরআন মাজীদ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমাউল উম্মাহ, পবিত্র ছহীহ ক্বিয়াস, পবিত্র দীন ইসলাম ও পবিত্র শারীয়াত উনাদের থেকে যারা গাফিল তারাই তাদের নাফ্স-শাহাওয়াত বা কুপ্রবৃত্তির অনুসরণ করে। তারাই গাফিল, বাতিলের অনুসারী এবং তাদের আমল বা কাজ সমূহ অগ্রহণযোগ্য। এমন লোকদেরকে অনুসরণ করতে কঠোরভাবে নিষেধ করা হয়েছে। অত্র পবিত্র আয়াত শরীফ উনার ইহাই মূল মর্মকথা।  
পবিত্র আয়াত শরীফ নম্বর- ১০
ووصينا الانسان بوالديه حسنا وان جاهداك لتشرك بى ما ليس لك به علم فلا تطعهما الى مرجعكم فانبئكم بما كنتم تعملون.
অর্থ: আমি মানুষদেরকে পিতা-মাতা উনাদের সাথে উত্তম ব্যবহার করতে জোর নির্দেশ দিয়েছি। কিন্তু যদি তারা (পিতা-মাতা) তোমাকে আমার সাথে এমন কিছু শরীক করার জন্য জোর প্রচেষ্টা চালায়, যার সম্পর্কে তোমার কোন জ্ঞান নেই, তবে তাদের আনুগত্য করো না। আমারই দিকে তোমাদের প্রত্যাবর্তন। অতপর আমি তোমাদেরকে বলে দেব, যা কিছু তোমরা করতে। (পবিত্র সূরাতুল আনকাবূত শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ নং ৮)
অত্র পবিত্র আয়াত উনার বিশুদ্ধ
তাফসীর বা ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ
(৬২৯)
قوله عز وجل: {وَوَصَّيْنَا الانسان بِوَالِدَيْهِ حُسْنًا} يعنى ووصينا الانسان ان يفعل بوالديه ما يحسن يعنى براً بهما. وقال الكلبى رحمة الله عليه: نزلت الاية فى سعد بن ابى وقاص رضى الله عنه لما اسلم قالت له امه: يا سعد رضى الله عنه بلغنى انك صبوت الى دين محمد صلى الله عليه وسلم، فوالله لا يظلنى سقف بيت، وان الطعام والشراب على حرام حتى تكفر بمحمد صلى الله عليه وسلم، وترجع الى دينك الذى كنت عليه فابى عليها ذلك، فثبتت على حالها لا تطعم ولا تشرب ولا تسكن بيتًا، فلما خلص اليها الجوع لم تجد بداً من ان تأكل وتشرب، فحثّ الله سعد رضى الله تعالى عنه بالبر الى امه، ونهاه ان يطيعها على الشرك فقال: {وَاِن جاهداك لِتُشْرِكَ بِىْ مَا لَيْسَ لَكَ بِه عِلْمٌ} اى ما ليس لك به حجة يعنى الشرك {فَلاَ تُطِعْهُمَا} فى الشرك، ثم حذّره ليثبت على الاسلام فقال: {اِلَىَّ مَرْجِعُكُمْ} يعنى: مصيركم فى الاٰخرة {فَاُنَبِّئُكُم بِمَا كُنتُمْ تَعْمَلُوْنَ} يعنى اخبركم بما كنتم تعملون فى الدنيا من خير او شر، واثيبكم على ذلك.
অর্থ: মহান আল্লাহ আয্যা ওয়া জাল্লা উনার ইরশাদ মুবারক: (আমি মানুষদেরকে পিতা-মাতা উনাদের সাথে উত্তম ব্যবহার করতে জোর নির্দেশ দিয়েছি।) অর্থাৎ আমরা মানুষদেরকে আদেশ করেছি যে, তারা যেন পিতা-মাতাদের সাথে উত্তম ব্যবহার করে তথা সদাচরণ করে। হযরত কালবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন: অত্র পবিত্র আয়াত শরীফ নাযিল হয় ছাহাবী হযরত সাদ বিন আবী ওয়াক্কাছ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনার ইসলাম গ্রহণকে কেন্দ্র করে। যখন হযরত সাদ বিন আবী ওয়াক্কাছ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু তিনি দীন ইসলাম গ্রহণ করলেন, তখন উনার মাতা উনাকে বললেন: হে হযরত সাদ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু! আমার কাছে সংবাদ পৌঁচেছে যে, আপনি দীনে মুহাম্মাদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম গ্রহণ করেছেন। তাই মহান আল্লাহ তায়ালা উনার ক্বসম! তিনি যেন আমাকে এই বাড়ীর ছাদের নিচে ছায়া না গ্রহণ করান এবং খাদ্য-পানীয় আমার জন্য হারাম; যতক্ষণ না আপনি হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অস্বীকার না করছেন এবং আপনার পূর্ব ধর্মে ফিরে না আসছেন। হযরত সাদ বিন আবী ওয়াক্কাছ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু তিনি মায়ের এই শর্তকে অস্বীকার করলেন। তাই উনার মাতা না খাওয়া, না পান করা ও বাড়ীতে বসবাস না করার মধ্যে অবিচল থাকল। যখন তাকে ক্ষুধা কঠিন ভাবে ধরে বসল এবং খাওয়া-পান করা ছাড়া কোন পথ থাকল না, তখন মহান আল্লাহ তায়ালা তিনি হযরত সাদ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনাকে স্বীয় মাতার সাথে উত্তম ব্যবহার করতে উৎসাহিত করলেন এবং উনাকে নিষেধ করলেন যে- তিনি যেন উনার মাতার র্শিকমূলক কাজের অনুসরণ না করেন। অতপর তিনি ইরশাদ মুবারক করেন: (কিন্তু যদি তারা তোমাকে আমার সাথে এমন কিছু শরীক করার জন্য জোর প্রচেষ্টা চালায়, যার সম্পর্কে তোমার কোন জ্ঞান নেই,) যার দলীল তথা শিরকের প্রমাণ তোমার কাছে নেই। (তবে তাদের আনুগত্য করো না।) র্শিকমূলক কাজের ব্যাপারে। অতপর তিনি তাকে সতর্ক করেছেন, যাতে সে দীন ইসলাম উনার উপর প্রতিষ্ঠিত থাকে। তারপর তিনি ইরশাদ মুবারক করেন: (আমারই দিকে তোমাদের প্রত্যাবর্তন।) অর্থাৎ তোমাদের প্রত্যাবর্তন স্থল আখিরাত। (অতপর আমি তোমাদেরকে বলে দেব, যা কিছু তোমরা করতে।) অর্থাৎ আমি তোমাদের দুনিয়ায় কৃত ভাল-মন্দ আমলের ব্যাপারে খবর নিব এবং তা অনুযায়ী তোমাদেরকে প্রতিদান দিব। (বাহরুল উলূম অর্থাৎ তাফসীরুস্ সামারকান্দী পবিত্র সূরাতুল আনকাবূত শরীফ-৮ লেখক: হযরত আবুল লাইছ নছর বিন মুহাম্মাদ বিন আহমাদ বিন ইবরাহীম সামারকান্দী হানাফী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৩৭৩ হিজরী)
(৬৩০)
}فلاتطعهما} فى ذلك فانه لاطاعة لمخلوق فى معصية الخالق كما ورد فى الحديث ويدخل فيه الاستاذ والامير اذا امرا بغير معروف وهو ما انكره الشارع عليه.
অর্থ: (তবে তাদের আনুগত্য করো না) র্শিক ব্যাপারে। কেননা, পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে যে- মহান খালিক আল্লাহ তায়ালা উনার নাফরমানী করে কোন মাখলূকের আনুগত্য করা জায়িয নেই।এ হুকুমের মধ্যে উস্তায বা শিক্ষক ও আমীর বা রাজা-বাদশারাও প্রবিষ্ট। সম্মানিত শারীয়াত প্রণেতা যা অপছন্দ করেন তার বিপরীতে অন্যায় কোন রায় প্রদান করলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না। (রূহুল বয়ান ফী তাফসীরিল কুরআন অর্থাৎ তাফসীরুল্ হাক্কী পবিত্র সূরাতুল আনকাবূত শরীফ-৮ লেখক: হযরত ইসমাঈল হাক্কী বিন মুছতফা ইস্তাম্বূলী খালওয়াতী বারূসাবী হানাফী মাতুরীদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ১১২৭ হিজরী)
(৬৩১)
يَاْمُرُ الله تَعالى عِبَادَهُ الـمُؤْمِنينَ بالاحسانِ الى الوَالِدينِ لاَنَّهُما سَبَبُ وُجُودِ الاِنْسَانِ وَلَهُمَا عَلَيهِ الفَضْلُ الكَبيرُ. وَلكِنْ اِذا كَانَ الوَالِدَانِ مُشْرِكَينِ واَمَرا وَلدَهُما الـمُؤْمِنَ بِمَا فِيهِ كُفْرٌ وَمَعْصِيَةٌ للهِ تَعَالى اَوْ اَمَراهُ باَن يُّشْرِكَ باللهِ مَا لا عِلمَ لَه باُلُوهِيَّتِه (مَا لَيسَ لَكَ بِه عِلْمٌ) فَعَلَيهِ اَنْ لاَ يُطِيعَهُما لاَنّ حَقَّ اللهِ اَعظَمُ مِنْ حَقِّ الوَالِدينِ اِذْ "لاَ طَاعَةَ لِمَخْلُوقٍ فى مَعصِيَةِ الخَالِقِ" كَمَا جاءَ فى الحَدِيثِ الصَّحِيحِ.
অর্থ: মহান আল্লাহ তায়ালা তিনি উনার মুমিন-মুসলমান বান্দাদেরকে তাদের পিতা-মাতা উনাদের প্রতি সদয় হতে আদেশ করেছেন। কেননা, উনারা দুজন মানুষ অস্তিত্ত্বে আসার মাধ্যম বা উপকরণ এবং এজন্য সন্তানের কাছে উনাদের দুজনের বড় মর্যাদা রয়েছে। কিন্তু যখন পিতা-মাতার দুজনেই মুশরিক হয় এবং তাদের মুমিন-মুসলমান সন্তানকে কুফরী ও মহান আল্লাহ তায়ালা উনার সাথে নাফরমানীর আদেশ দেয় অথবা তারা দুজন উক্ত সন্তানকে মহান আল্লাহ তায়ালা উনার সাথে শরীক করতে আদেশ করে যে উলূহিয়্যাত সম্পর্কে তাদের কোন ইল্ম নেই; তখন উক্ত সন্তানের উপর ফরয-ওয়াজিব হয়ে যায় যে, উক্ত পিতা-মাতা উভয়কে অনুসরন না করা। কেননা, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ তায়ালা উনার হক্ব বা অধিকার পিতা-মাতার হক্ব বা অধিকারের থেকেও অনেক বড়। যেমনটি পবিত্র ছহীহ হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে: মহান খালিক বা ¯্রষ্টা আল্লাহ তায়ালা উনার নাফরমানী করে কোন সৃষ্টির আনুগত্য করা জায়িয নেই। (আইসারুত্ তাফাসীর পবিত্র সূরাতুল আনকাবূত শরীফ-৮ লেখক: আসয়াদ হাওমাদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি)
(৬৩২)
ومعناها: ووصَّينا الانسانَ بالبرّ والاحسانِ الى وَالِدَيهِ وقُلنا له: وانْ طَلَبَا منكَ ان تُشْرِكَ بى ما ليسَ لك بهِ عِلْمٌ فلا تُطِعْهُمَا، فانَّ طاعتَهما فى الاشْرَاكِ والمعصيةِ "ليس" من باب الحسن بل هى قبيحةٌ. قال رسولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم: لاَ طَاعَةَ لِمَخْلُوقٍ فِى مَعْصِيَةِ الْخَالِقِ.
অর্থ: অত্র পবিত্র আয়াত শরীফ উনার তাৎপর্য এই যে: আমরা মানুষদেরকে আদেশ করেছি যে, তারা তাদের পিতা-মাতাদের সাথে সৎ ও সদয় আচরন করবে। আমরা তাকে বা সন্তানকে বলব যে: যদি পিতা-মাতা তোমার থেকে আমার সাথে শরীক করার মত কোন কিছু তলব করে, যার ইল্ম তোমার কাছে নেই, তবে তুমি তাদের দুজনের কাউকে অনুসরণ করবে না। কেননা, এমতাবস্থায় তাদের অনুসরনের মধ্যে শিরকী ও নাফরমানী রয়েছে। যা কোন মঙ্গলময় কাজ নয়, বরং তা লাঞ্চনাময় কাজ। নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন: মহান খালিক বা ¯্রষ্টা আল্লাহ তায়ালা উনার নাফরমানী করে কোন সৃষ্টির আনুগত্য করা জায়িয নেই। (তাফসীরুল কুরআনিল আযীম লিল্ ত্ববারানী পবিত্র সূরাতুল আনকাবূত শরীফ-৮ লেখক: হযরত আবুল ক্বাসিম সুলাইমান বিন আহমাদ বিন আইয়্যূব বিন মুত্বীর লাখমী শামী ত্ববারানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৩৬০ হিজরী)
অত্র পবিত্র আয়াত শরীফ এবং উনার তাফসীর থেকে যা প্রমাণিত হলো তা হচ্ছে: মহান আল্লাহ তায়ালা ও উনার রসূল সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিয়্যীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের নাফরমানী করে অর্থাৎ উনাদের আদেশ লঙ্ঘন করে কোন সৃষ্টির আনুগত্য করা জায়িয নেই। তাই পিতা-মাতা যদি কাফির, মুশরিক ও যেকোন বিধর্মী হয় তাহলে তাদেরকে কখনোই অনুসরণ করা যাবে না। তবে তাদের সাথে উত্তম ব্যবহার করতে হবে এবং তাদের ভরণ-পোষণ ঠিকমত দিতে হবে। বাহ্যিকভাবে তাদেরকে কোন কষ্ট দেয়া যাবে না। পাশাপাশি তাদেরকে দীন ইসলাম উনার পথে আসার জন্য নছীহত অব্যাহত রাখতে হবে। কিন্তু পিতা-মাতা যদি মুমিন-মুসলামান পরহেযগার-মুত্তাক্বী ও আলিম-আলিমাহ হন, তাহলে উনারদের খিদমত করতে হবে এবং উনাদের সম্মানিত শারীয়াত সম্মত আদেশ-নির্দেশ মান্য করতে হবে। এটাই পবিত্র শারীয়াত উনার হুকুম।
পবিত্র আয়াত শরীফ নম্বর- ১১
وان جاهدك على ان تشرك بى ما ليس لك به علم فلا تطعهما و صاحبهما فى الدنيا معروفا.
অর্থ: পিতা-মাতা যদি তোমাকে আমার সাথে এমন বিষয়কে শরীক স্থির করতে পীড়াপীড়ি করে, যার জ্ঞান তোমার নেই, তবে তুমি তাদের আনুগত্য করবে না। কিন্তু দুনিয়াতে তাদের সাথে সৎ আচরণ করে চলবে। (পবিত্র সূরাহ লুক্বমান শরীফ-১৫)
অত্র পবিত্র আয়াত উনার বিশুদ্ধ
তাফসীর বা ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ
(৬৩৩-৬৩৪)
فلا يجوز للولد ان يطيعهما فى المعصية.
অর্থ: কোন সন্তানের জন্য নাফরমানীমূলক কাজে তার পিতা-মাতাকে অনুসরণ করা জায়িয নেই। (বাহরুল উলূম অর্থাৎ তাফসীরুস্ সামারকান্দী পবিত্র সূরাহ লুক্বমান শরীফ-১৫ লেখক: হযরত আবুল লাইছ নছর বিন মুহাম্মাদ বিন আহমাদ বিন ইবরাহীম সামারকান্দী হানাফী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৩৭৩ হিজরী, রূহুল বয়ান ফী তাফসীরিল কুরআন অর্থাৎ তাফসীরুল হাক্কী)
(৬৩৫)
فيجب على المسلم نفقة الوالدين ولو كانا كافرين وبرهما وخدمتهما وزيارتهما الا ان يخاف ان يجلباه الى الكفر وحينئذ يجوز ان لا يزورهما ولا يقودهما الى البيعة لانه معصية ويقودهما منها الى المنزل.
অর্থ: পিতা-মাতা কাফির হলেও তাদের জন্য অর্থ-সম্পদ খরচ করা মুসলিম সন্তানের উপর ওয়াজিব বা ফরয। তাদের সাথে সদাচরণ করতে হবে, তাদের খিদমত করতে হবে ও তাদেরকে দেখা-শুনা করতে হবে। কিন্তু তাদের সাক্ষাৎ করতে গেলে যদি কুফরীর দিকে ঝুঁকে যাওয়ার ভয় থাকে, এমতাবস্থায় সাক্ষাৎ না করাও জায়িয রয়েছে। তাদের সাথে সাক্ষাতের জন্য তাদের উপাসনালয়ে গিয়ে বসবে না, কেননা এটা একটি নাফরমানী। তবে তাদের ঘরে তাদের কাছে বসতে পারবে। (রূহুল বয়ান ফী তাফসীরিল কুরআন অর্থাৎ তাফসীরুল্ হাক্কী পবিত্র সূরাহ লুক্বমান শরীফ-১৫ লেখক: হযরত ইসমাঈল হাক্কী বিন মুছতফা ইস্তাম্বূলী খালওয়াতী বারূসাবী হানাফী মাতুরীদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ১১২৭ হিজরী)
(৬৩৬)
}وَصَاحِبْهُمَا فِى الدُّنْيَا مَعْرُوفًا} اى صحبة احسان اليهما بالمعروف، واما اتباعهما وهما بحالة الكفر والمعاصى فلا تتبعهما.
অর্থ: (দুনিয়াতে তাদের সাথে সদাচরণ করে চলবে) অর্থাৎ তাদের সাথে উত্তমভাবে দয়াদ্রতার সাথে চলবে। কিন্তু অনুসরণের ব্যাপারে তারা কুফরী ও নাফরমানী হালতে থাকাবস্থায় তাদেরকে ইত্তিবা বা অনুসরণ করবে না। (তাইসীরুল কারীমির রহমান ফী তাফসীরি কালামিল মান্নান অর্থাৎ তাফসীরুস সাদী পবিত্র সূরাহ লুক্বমান শরীফ-১৫ লেখক: হযরত আব্দুর রহমান বিন নাছির বিন আব্দুল্লাহ সাদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত:১৩৭৬ হিজরী)
(৬৩৭)
ان الاٰية قد تضمنت النهى عن صحبة الكفار والفساق والترغيب فى صحبة الصالحين فان المقارنة مؤثرة.
অর্থ: অত্র পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে কাফির ও ফুস্সাক্ব তথা যাবতীয় গুনাহগারদের ছুহবতকে নিষেধের অন্তুর্ভুক্ত করা হয়েছে। আর ছালিহীন তথা নেককার-পরহেযগার-ওয়ালীআল্লাহ উনাদের ছুহবত অর্জন করতে উৎসাহিত করা হয়েছে। কেননা, উনাদের সাহচর্য মানুষকে ভাল হতে ক্রিয়া করে। (রূহুল বয়ান ফী তাফসীরিল কুরআন অর্থাৎ তাফসীরুল্ হাক্কী পবিত্র সূরাহ লুক্বমান শরীফ-১৫ লেখক: হযরত ইসমাঈল হাক্কী বিন মুছতফা ইস্তাম্বূলী খালওয়াতী বারূসাবী হানাফী মাতুরীদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ১১২৭ হিজরী)
(৬৩৮)
قال ابراهيم قدس سره دواء القلب خمسة: قراءة القراٰن بالتدبر واخلاء البطن وقيام الليل والتضرع الى الله تعالى عند السحر ومجالسة الصالحين.
অর্থ: হযরত ইবরাহীম কুদ্দিসা সিররুহূ তিনি বলেছেন: ক্বলব বা অন্তরের ঔষধ পাঁচ প্রকার। যথা: (১) উপলব্ধির সাথে পবিত্র কুরআন মাজীদ তিলাওয়াত করা। (২) পেট খালী রাখা। (৩) রাত্রিবেলা তাহাজ্জুদ ও অন্যান্য নফল নামায পড়া। (৪) শেষ রাতে মহান আল্লাহ তায়ালা উনাকে বিনয়ের সাথে ডাকা বা যিক্র করা বা দুয়াকরা। (৫) ছালিহীন তথা ওয়ালীআল্লাহ উনাদের মাজলিসে ছুহবতে বসা। সুবহানাল্লাহ। (রূহুল বয়ান ফী তাফসীরিল কুরআন অর্থাৎ তাফসীরুল্ হাক্কী পবিত্র সূরাহ লুক্বমান শরীফ-১৫ লেখক: হযরত ইসমাঈল হাক্কী বিন মুছতফা ইস্তাম্বূলী খালওয়াতী বারূসাবী হানাফী মাতুরীদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ১১২৭ হিজরী)
অত্র পবিত্র আয়াত শরীফ এবং উনার তাফসীর থেকে যা প্রমাণিত হলো তা হচ্ছে: কোন সন্তানের জন্য নাফরমানীর ব্যাপারে তার পিতা-মাতাকে অনুসরণ করা জায়িয নেই। পিতা-মাতা কাফির হলেও তাদের জন্য অর্থ-সম্পদ খরচ করা মুসলিম সন্তানের উপর ওয়াজিব বা ফরয। তাদের সাথে সদাচরণ করতে হবে, তাদের খিদমত করতে হবে ও তাদেরকে দেখা-শুনা করতে হবে। কিন্তু তাদের সাক্ষাৎ করতে গেলে যদি কুফরীর দিকে ঝুঁকে যাওয়ার ভয় থাকে, এমতাবস্থায় সাক্ষাৎ না করাও জায়িয রয়েছে। তাদের সাথে সাক্ষাতের জন্য তাদের উপাসনালয়ে গিয়ে বসবে না, কেননা এটা একটি নাফরমানী। তবে তাদের ঘরে তাদের কাছে বসতে পারবে। এছাড়াও প্রমাণিত হয়েছে যে, ছালিহীন বা ওয়ালীআল্লাহ উনাদের ছুহবত অর্জন করা সকলের জন্য ফরয এবং নিজের ইছলাহিয়্যাতের কারণ। সুবহানাল্লাহ।
আত-তাক্বলীদু গাইরুশ শারয়ী  তথা শরীয়াত বহির্ভূত অনুসরণউনার সম্পর্কে গত কয়েকটিসহ বর্তমান সংখ্যায় প্রকাশিত মোট ১১ খানা পবিত্র আয়াত শরীফ উল্লেখ করে উনাদের ছহীহ তাফসীর বা ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ ও আহকাম বা বিধি-বিধান থেকে যা অকাট্যভাবে প্রমাণিত হল, তার মূল বিষয় হচ্ছে: পবিত্র কুরআন মাজীদ, পবিত্র হাদীছ শরীফ বা পবিত্র সুন্নাহ শরীফ, পবিত্র ইজমাউল উম্মাহ ও পবিত্র ছহীহ ক্বিয়াস উনাদের খিলাফ কোন কাজ করা যাবে না এবং উনাদের খিলাফ কাজ করে এমন কোন ব্যক্তিকে অনুসরণ-অনুকরণ করা যাবে না। যেহেতু এমন অনুসরণ হারাম ও নাজায়িয। কারণ, এমন অনুসরণকেই আত-তাকলীদু গাইরুশ শারয়ী তথা শারীয়াত বহির্ভুত অনুসরণবলে। একে তাকলীদুন নাফ্সতাকলীদুল হাওয়াতথা প্রবৃত্তির অনুসরণও বলা হয়ে থাকে।
আয় মহান আল্লাহ তায়ালা! আপনি আমাদেরকে আত-তাকলীদু গাইরুশ শারয়ী তথা শারীয়াত বহির্ভুত অনুসরণকরা থেকে হিফাযত করে আত-তাক্বলীদুশ্ শারয়ী তথা শারীয়াত সম্মত অনুসরণকরার তাওফীক্ব দান করুন। আমীন।