ঈদে বিলাদতে ,
সিবতু রসূলিল্লাহ, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনে যুন নূরাইন
আলাইহিস সালাম।
উনার নুরুদ দরাজাত
মুবারকে জানাই লক্ষ কোটি বেশুমার ছলাত ও সালাম ।
আজ
সমুহান , বরকতময় , পুত ও পবিত্র ৫ ই রবিউছ ছানী ছানী শরীফ !!!
ঈদ
মুবারক ! ঈদ মুবারক !! ঈদ মুবারক !!!
ঈদে
বিলাদতে সিবতু রসূলিল্লাহ, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনে যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম।
উনার
মহা পুতও পবিত্র নুরুদ দরাজাত মুবারক উনাতে জানাই লাখ ও কোটি বেশুমার ছলাত ও সালাম
।
ইয়া
মালিকে আযম ,রউফুর রহীম , রহমানুর রহীম ,সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনে যুন নূরাইন
আলাইহিস সালাম আপনি আমাকে আপনার খাছ গোলাম হিসেবে ক্ববুল করে নিন আর আমার সকল
গাফলতীকে দূর করে দিন এবং আপনাদের খাছ গোলামী করার তৌফিক ভিক্ষা দান করুন ।
এক
নজরে সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ, সিবতু
রসূলিল্লাহ, আহলু বাইতি
রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনে যুন নূরাইন
আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত পরিচিতি মুবারক-
সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক: সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল্লাহ আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত লক্বব মুবারক: সিবতু রসূলিল্লাহ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ ইত্যাদি ইত্যাদি।
সুবহানাল্লাহ!
যেই সম্মানিত লক্বব মুবারক-এ সম্মানিত পরিচিতি মুবারক গ্রহণ
করেছেন: সিবতু রসূলিল্লাহ সাইয়্যিদুনা ইমাম হযরত ইবনে যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম।
সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত আব্বাজান আলাইহিস সালাম: আমীরুল মু’মিনীন, খলীফাতুল
মুসলিমীন সাইয়্যিদুনা হযরত উছমান ইবনে আফফান যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম।
সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিতা আম্মাজান আলাইহাস সালাম: সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, উম্মু আবীহা বিনতু রসূলিল্লাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ
ছানিয়াহ (হযরত রুক্বইয়্যাহ) আলাইহাস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত নানাজান ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম: সাইয়্যিদুল
মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিতা নানীজান আলাইহাস সালাম: আফদ্বলুন নিসা ওয়ান নাস বা’দা রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাইয়্যিদাতু
নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি
আহলিল জান্নাহ, উম্মুল মু’মিনীন
সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আল ঊলা আলাইহাস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত মামাজান আলাইহিমুস সালাম: ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুল আউওয়াল আলাইহিস সালাম তিনি,ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
সাইয়্যিদুনা হযরত নূরুছ ছানী আলাইহিস সালাম তিনি,ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছ আলাইহিস সালাম তিনি এবংইবনু রসূলিল্লাহ
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রাবি’ আলাইহিস সালাম
তিনি। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত খালাজান আলাইহিন্নাস সালাম: বিনতু রসূলিল্লাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুল ঊলা আলাইহাস
সালাম তিনি, বিনতু রসূলিল্লাহ
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি এবং বিনতু রসূলিল্লাহ
সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আন নূরুর রাবি‘য়াহ আলাইহাস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী
শান মুবারক প্রকাশ: আনুষ্ঠানিকভাবে
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নুবুওওয়াত ও রিসালত মুবারক প্রকাশের ১১ তম বছর মুবারক পার
হয়ে ১২তম বছর মুবারক উনার শুরুতে ৫ই রবী‘উছ ছানী শরীফ সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল
আইয়্যাম শরীফ। সুবহানাল্লাহ! তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত বয়স
মুবারক ৫১ তম বছর মুবারক পার হয়ে ৫২ তম বছর মুবারক চলাকালীন। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী
শান মুবারক প্রকাশ করার সম্মানিত স্থান মুবারক: সম্মানিত
হাবশা। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত
অবস্থান মুবারক: সম্মানিত ও পবিত্র
হাবশা, মহাসম্মানিত ও
মহাপবিত্র মক্কা শরীফ এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ। সুবহানাল্লাহ!
ভাই-বোন আলাইহিমুস সালাম ও আলাইহিন্নাস
সালাম: নেই। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী
শান মুবারক প্রকাশ: ৪র্থ হিজরী সনের
২২শে জুমাদাল ঊলা শরীফ ইয়াওমুল আরবিয়া শরীফ। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী
শান মুবারক প্রকাশ করার স্থান মুবারক: মহাসম্মানিত
ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ। সুবহানাল্লাহ!
দুনিয়ার যমীনে অবস্থান মুবারক: ৬ বছর ১ মাস ১৭ দিন। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র জান্নাতুল বাক্বী’ শরীফ।
সুবহানাল্লাহ!
সিবতু
রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনে হযরত যুন
নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত আব্বা-আম্মা আলাইহমাস সালাম উনাদের হাবশায়
সম্মানিত হিজরত মুবারক:
আনুষ্ঠানিকভাবে
সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক প্রকাশ পাওয়ার ৫ম সালের কথা। মুশরিকরা হযরত ছাহাবায়ে
কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের উপর যুলুমের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। তাদের
অভিপ্রায় ছিলো এর মাধ্যমে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনাকে চিরতরে নিশ্চিহ্ন করে দেয়া।
না‘ঊযুবিল্লাহ! তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম তিনি কিছু সংখ্যক হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম
উনাদেরকে হাবশায় (আবিসিনিয়ায়) হিজরত মুবারক করার অনুমতি মুবারক দেন।তখন একদল হযরত
ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা হাবশায় সম্মানিত হিজরত মুবারক
করেন।
এটি
ছিলো সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার প্রথম হিজরত মুবারক। আর সম্মানিত মুসলামন উনাদের
মধ্যে প্রথমে যাঁরা সম্মানিত হিজরত মুবারক-এ বের হলেন, উনারা হলেন সাইয়্যিদাতুনা হযরত রুকাইয়্যাতু বিনতু
রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি
এবং উনার যাওজুম মুকাররাম সাইয়্যিদুনা হযরত উছমান ইবনে আফফান যুন নূরাইন আলাইহিস
সালাম তিনি অর্থাৎ উনারা। সুবহানাল্লাহ! উনাদের সাথে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু সালামা আলাইহাস সালাম
তিনিসহ আরো অনেকেই ছিলেন। তবে ওই সম্মানিত কাফিলা মুবারক-এ মোট কতজন সদস্য ছিলেন, এই বিষয়ে অনেক ইখতিলাফ রয়েছে। যেমন, ১০ জন, ১২
জন, ১৪ জন, ১৫ জন, ১৬
জন, ১৭ জন এরূপ বিভিন্ন
জন বিভিন্ন মত পেশ করেছেন।
সাইয়্যিদুল
মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক ইরাদা অনুযায়ী আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত রিসালাত মুবারক
প্রকাশ পাওয়ার ৫ম বৎসরের সম্মানিত রজবুল হারাম শরীফ মাসে বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস
সালাম তিনি এবং সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারা হাবশার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। উনাদের সম্মানিত কাফেলা মুবারক দীর্ঘ এক মাস পর সম্মানিত শা’বান মাসে হাবশায় যেয়ে পৌঁছেন। সুবাহানল্লাহ!
উনারা সেখানে যেয়ে নিরাপদে মহান আল্লাহ পাক উনার ইবাদাত-বন্দেগী করতে থাকেন এবং
তা’লীম-তালক্বীন ও সম্মানিত ছোহবত মুবারক দানের মাধ্যমে লোকদেরকে সম্মানিত দ্বীন
ইসলাম উনার দিকে আহ্বান করতে থাকেন। সুবহানাল্লাহ! উনাদের আহ্বানে বহু লোক ঈমান
এনে মুসলমান হয়ে যান।সুবহানাল্লাহ!
এভাবে
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার মুবারক পদচারণা, সম্মানিত তা’লীম-তালক্বীন ও সম্মানিত ছোহবত মুবারক উনার
মাধ্যমে হাবশার যমীনে তথা অনারবে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার আলো ছড়িয়ে পড়ে। সুবহানাল্লাহ!
আর তার পাশাপাশি হাবশাসহ সমগ্র অনারব রহমত, বরকত, ছাকীনাহ
ও নিয়ামত মুবারক লাভে ধন্য হয়। সুবহানাল্লাহ!
তাহলে
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার প্রচার-প্রসারের ক্ষেত্রে সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ
ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত অবদান মুবারক কত বেমেছাল, তা এখান থেকে সুস্পষ্ট হয়ে যায়। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদাতুনা
হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি এবং সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন
আলাইহিস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারা যখন হাবশায় (আবিসিনিয়ায়) সম্মানিত হিজরত মুবারক করেন, তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাদের সম্মানিত খুছূছিয়াত মুবারক সম্পর্কে ইরশাদ মুবারক
করেন,
إِنَّهُمَا لاَوَّلُ مَنْ هَاجَرَ بَعْدَ لُوطٍ وَإِبْرَاهِيمَ عَلَيْهِمَا الصَّلاَةُ وَالسَّلاَمُ.
অর্থ:
“নিশ্চয়ই সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি এবং হযরত যুন
নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারাই হচ্ছেন হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার এবং হযরত লূত আলাইহিস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের পর সর্বপ্রথম হিজরতকারী।” সুবহানাল্লাহ!’ (মুস্তাদরকে হাকিম ৪/৫০)
নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো ইরশাদ
মুবারক করেন,
صَحِبَهُمَا اللهُ تَعَالَى إِنَّ حَضْرَتْ عُثْمَانَ عَلَيْهِ السَّلامُ لأَوَّلُ مَنْ هَاجَرَ إِلَى اللهِ تَعَالى بِأَهْلِه بَعْدَ حَضْرَتْ لُوطٍ عَلَيْهِ السَّلامُ
অর্থ:
“মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাদের দু’জনের সাথী হোন। নিশ্চয়ই হযরত লূত আলাইহিস সালাম
উনার পর হযরত যূন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনিই প্রথম ব্যক্তি যিনি সপরিবারে
সম্মানিত হিজরত মুবারক করেছেন।” সুবহানাল্লহ! (আল আহাদ ওয়াল মাছানী ১/১৪৭, আস সুন্নাহ ২/৫৯৬, দালাইলুন নুবুওওয়াহ ২/২৯৭, মা’রিফাতুছ ছাহাবাহ লিআবী নাঈম ২২/২২৬, আল মাত্বালিবুল আলিয়াহ ১৬/৫৩, উসদুল গবাহ ৩/৩৫২, বিদায়াহ-নিহায়াহ ৩/৮৫, তারীখুল ইসলাম লিযযাহাবী ১/১৮৩ ইত্যাদি)
সিবতু
রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনে হযরত যুন
নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত বরকতময়
বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ:
বিনতু
রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ
আলাইহাস সালাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক হাছিলের লক্ষ্যে স্বদেশ ত্যাগ করে সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার সাথে সুদূর হাবশায় অবস্থান মুবারক করতে থাকেন। তিনি উনার সম্মানিত ছোহবত মুবারক ও তা’লীম-তালক্বীন মুবারক উনাদের মাধ্যমে মানুষদেরকে মহান আল্লাহ পাক
উনার এবং উনার হাবীব, নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের মা’রিফাত-মুহব্বত, রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক শিক্ষা দিতে থাকেন, সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার হাক্বীক্বী আদর্শ মুবারক শিক্ষা
দিতে থাকনে। সুবহানাল্লাহ! হাবশায় অবস্থানকালের ৬ষ্ঠ বৎসরে তথা আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত রিসালাত মুবারক প্রকাশের ১১তম বৎসরে বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার একজন মহাসম্মানিত
আওলাদ আলাইহিস সালাম তিনি দুনিয়ার যমীনে মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক
প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
মুজাদ্দিদে
আ’যম সম্মানিত রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম
খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “যখন সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনে হযরত যুন নূরাঈন আলাইহিস সালাম তিনি দুনিয়ার যমীনে
মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন, তখন দুনিয়াবী জিন্দেগী মুবারক অনুযায়ী নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক
৫১ বছর চলাকালীন আর সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার
সম্মানিত বয়স মুবারক ১৮ বছর চলাকালীন।” সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুনা
হযরত ইমাম ইবনে হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী
শান মুবারক প্রকাশে সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি, সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি, হাবশায় অবস্থানরত হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু
তা‘য়ালা আনহুম উনারা এবং সেখানকার সমস্ত মুসলমানগণ উনারা সকলে মহাসম্মানিত
‘ফালইয়াফরহূ’ সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করেন, বেমেছাল খুশি মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি এবং সাইয়্যিদুনা হযরত যুন
নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারা মহাসম্মানিত ‘ফালইয়াফরহূ’সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করে, বেমেছাল খুশি মুবারক প্রকাশ করে অনেক দান-ছদক্বা মুবারক
করেন। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত
আক্বীক্বা মুবারক দেয়া এবং সম্মানিত নাম মুবারক রাখা:
সাইয়্যিদাতুনা হযরত
আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি এবং সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস
সালাম তিনি অর্থাৎ উনারা উনাদের মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের ৭ম দিনে উনার পক্ষ থেকে সম্মানিত আক্বীক্বা মুবারক দেন এবং উনার সম্মানিত নাম মুবারক রাখেন‘সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল্লাহ আলাইহিস সালাম’। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদাতুনা
হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার এবং সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন
আলাইহিস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের সম্মানিত কুনিয়াত মুবারক গ্রহণ
সাইয়্যিদাতুনা
হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি এবং সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন
আলাইহিস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারা উনাদের মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত নাম মুবারক অনুযায়ী সম্মানিত কুনিয়াত মুবারক গ্রহণ করেন। সুবহানাল্লাহ! তাই সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত কুনিয়াত মুবারক হচ্ছেন‘উম্মু আব্দিল্লাহ আলাইহাস সালাম’ আর সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম
উনার সম্মানিত কুনিয়াত মুবারক হচ্ছেন‘আবূ আব্দিল্লাহ আলাইহিস সালাম’।
সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত
মক্কা শরীফ-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক:
সিবতু
রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরতইবনে হযরত যুন নূরাইন
আলাইহিস সালাম তিনি উনার মহাসম্মানিত আব্বা-আম্মা আলাইহিমাস সালাম উনাদের বেমেছাল
আদর-যত্ম ও মুহব্বত মুবারক-এ হাবশায় সম্মানিত অবস্থান মুবারক করতে থাকেন। অতঃপর
উনার মহাসম্মানিত আব্বা-আম্মা আলাইহিমাস সালাম উনারা যখন হাবশা থেকে সম্মানিত
মক্কা শরীফ তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেন, তখন
তিনিও উনার মহাসম্মানিত আব্বা-আম্মা আলাইহিমাস সালাম উনাদের সাথে সম্মানিত
সম্মানিত মক্কা শরীফ-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেন। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত
নানাজান নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
বেমেছাল আদর-যত্ম মুবারক লাভ:
সাইয়্যিদুল
মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার লখতে জিগার, বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত আওলাদ সিবতু
রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনে হযরত যুন
নূরাইন আলাইহিস সালাম উনাকে দেখে মহাসম্মানিত ‘ফালইয়াফরহূ’ সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ
পালন করেন, বেমেছাল খুশি
মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সাথে মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ
আলাইহিমুস সালাম উনারা এবং হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা
সকলেই মহাসম্মানিত ‘ফালইয়াফরহূ’ সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করেন, বেমেছাল খুশি মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার লখতে
জিগার সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনে হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনাকে সম্মানিত
কোল মুবারক-এ নিয়ে সম্মানিতবুছা মুবারক দিতে থাকেন, উনাকে বেমেছাল আদর যত্ম মুবারক করতে থাকেন। সুবহানাল্লাহ!
এভাবে সাইয়্যিদুনা ইমাম ইবনে হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি উনার মহাসম্মানিত
নানাজান নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
বেমেছাল আদর-যত্ম, ¯েœহ-মমতা, মায়া-মুহব্বত
মুবারক-এ সম্মানিত মক্কা শরীফ অবস্থান মুবারক করতে থাকেন। সুবহানাল্লাহ!
উল্লেখ্য
যে, তিনি উনার
মহাসম্মানিতা নানীজান উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আল ঊলা আলাইহাস
সালাম উনার সম্মানিত ছোহবত মুবারক পাননি। কেননা উনার মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী
শান মুবারক প্রকাশের পূর্বেই উনার মহাসম্মানিতা নানীজান সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা
আল ঊলা আলাইহাস সালাম তিনি মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন।
সম্মানিত
মদীনা শরীফ-এ হিজরত মুবারক:
মহান
আল্লাহ পাক উনার নির্দেশ মুবারক অনুযায়ী নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন সম্মানিত মদীনা শরীফ-এ সম্মানিত হিজরত
মুবারক করেন, তখন বানাতু
রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা প্রত্যেকেই সম্মানিত মক্কা
শরীফ-এ অবস্থান মুবারক করতে থাকেন।
আহলু
বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম
খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত মদীনা শরীফ-এ সম্মানিত
হিজরত মুবারক করার প্রায় এক থেকে দেড় মাস পর সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ
আলাইহাস সালামতিনি, সাইয়্যিদাতুনা হযরত
আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি, সাইয়্যিদাতুনা
হযরত যাহরা আন নূরুর রাবি‘য়াহ আলাইহাস সালাম তিনি, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আছ ছালিছাহ
আলাইহাস সালাম তিনি এবং উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ(সাওদা)
আলাইহাস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারা এক সাথে সম্মানিত মদীনা শরীফ-এ সম্মানিত হিজরত মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!
উল্লেখ্য
যে, এই সম্মানিত কাফেলা
মুবারক-এ বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত আওলাদ
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনে হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনিও ছিলেন। অর্থাৎ তিনিও উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনার সাথে সম্মানিত
মদীনা শরীফ-এ সম্মানিত হিজরত মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত
আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ;
সাইয়্যিদাতু
নিসায়িল আলামীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি সম্মানিত
মদীনা শরীফ-এ হিজরত মুবারক করার পর প্রায় এক বছর কয়েক মাস দুনিয়ার যমীন-এ সম্মানিত
অবস্থান মুবারক করেন। দ্বিতীয় হিজরী সনের সম্মানিত শা’বান মাসের শুরুর দিকে উনার
গুটি বসন্ত হয়। তখন থেকে তিনি সম্মানিত মারীদ্বী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সেই
যুগের যাহিরী সকল চিকিৎসাই উনাকে করা হয়েছিলো। কিন্তু কোন পরিবর্তন ঘটেনি; বরং ধীরে ধীরে মারীদ্বী শান মুবারক বেশি আকারে প্রকাশ পেতে
থাকে। এই দিকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম তিনি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে নিয়ে
সম্মানিত বদরের জিহাদে যাওয়ার প্রস্তুতি মুবারক গ্রহণ করছেন। এমতাবস্থায় যখন বিনতু
রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ
আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত মারিদ্বী শান মুবারক খুব বেশি আকারে প্রকাশ পেয়ে যায়, তখন তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনাকে
বলেন, আপনাকে সম্মানিত
বদর জিহাদ মুবারক-এ যেতে হবে না। আপনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ
আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার জন্য সম্মানিত
মদীনা শরীফেই অবস্থান করুন এবং উনার যথাযথ সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম
মুবারক দিন। উনার সাথে তিনি হযরত উসামা বিন যায়িদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
উনাকেও একই কারণে সম্মানিত মদীনা শরীফ-এ অবস্থান করার জন্য নির্দেশ মুবারক দেন।এই সম্পর্কে
সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে এসেছে,
خَلَفَ النَّبِـىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَضْرَتْ عُثْمَانَ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَحَضْرَتْ اُسَامَةَ بْنَ زَيْدٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ عَلـٰى حَضْرَتْ رُقَيَّةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ فِـىْ مَرَضِهَا وَخَرَجَ اِلـٰى بَدْرٍ وَّهِىَ وَجِعَةٌ
অর্থ:
“নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বিনতু
রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ
আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার জন্য
সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনাকে এবং হযরত উসামা বিন যায়িদ
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকে সম্মানিত মদীনা শরীফ রেখে সম্মানিত বদর জিহাদ মুবারক উনার উদ্দেশ্যে বের হন। তখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত মারীদ্বী শান মুবারক বেশি আকারে প্রকাশ পায়।”
সম্মানিত
বদর জিহাদ মুবারক সংঘটিত হয় ১৭ রমাদ্বান শরীফ আর সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ
ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন ১৮ই
রমাদ্বান শরীফ ইয়াওমুস সাব্ত শরীফ। তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে উনার সম্মানিত বয়স
মুবারক ছিলেন ২১ বছর ৫ মাস ১৫ দিন। বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনাদের মধ্যে সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনিই
সর্বপ্রথম মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! যখন
বিনতু রসূল্লিাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ
ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন, তখন উনার মহাসম্মানিত আওলাদ সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনে হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম
উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন ৪ বছর।
নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত
হুজরা শরীফ মুবারক-এ অবস্থান মুবারক:
সিবতু
রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনে হযরত যুন
নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছানিয়াহ
আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করার পর তিনি
উনার মহাসম্মানিত নানাজান নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত হুজরা শরীফ-এ বেমেছাল আদর-যত্ম ও মুহব্বত মুবারক-এ
লালিত-পালিত হতে থাকেন। সুবহানাল্লাহ! আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার সম্মানিত দৌহিত্র সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম
ইবনে হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনাকে বেমেছাল মুহব্বত মুবারক করতেন।
সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত
মারীদ্বী শান মুবারক প্রকাশ এবং মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ:
কিতাবে
বর্ণিত রয়েছে,
فبلغ ست سنين، فنقره ديك في عينيه فمرض فمات
অর্থ:
“তিনি যখন ছয় বছর বয়স মুবারক-এ উপনীত হন, তখন উনার সম্মানিত দু’চোখ মুবারক-এ একটি মোরগ ঠোকর দেয়।
ফলশ্রুতিতে তিনি উনার সম্মানিত চোখ মুবারক উনার মধ্যে প্রচ- আঘাত মুবারক গ্রহণ করে
সম্মানিত মারিদ্বী শান মুবারক প্রকাশ করেন। আর এই সম্মানিত মারিদ্বী শান মুবারক
প্রকাশ করা অবস্থায় মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন।”
তিনি
কোন হিজরীতে বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন, এই সম্পর্কে অনেক বর্ণনা রয়েছে। তবে মশহূর বর্ণনা হচ্ছে,
قَالَ ابْنُ جَرِيرٍ: وَفِي جُمَادَى الْأُولَى مِنْ هَذِهِ السَّنَةِ) سنة أربع( مَاتَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُثْمَانَ بْنِ عَفَّانَ عليه السلام
অর্থ:
“হযরত ইবনে জারীর রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন,সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আব্দুল্লাহ ইবনে উছমান যুন নূরাইন
আলাইহিস সালাম তিনি ৪র্থ হিজরী সনের জুমাদাল ঊলা শরীফ মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক
প্রকাশ করেন।” (বিদায়াহ-নিহায়াহ)
তবে
তিনি জুমাদাল ঊলা শরীফ মাসের কত তারিখে এই বিষয়ে কিতাবে কোন নির্ভযোগ্য বর্ণনা
নেই। এই বিষয়ে সর্বকালের সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, আহলু
বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা
ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি সর্বোত্তম
ফায়ছালা মুবারক দিয়েছেন। তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনে হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম
তিনি ২২ শে জুমাদাল ঊলা শরীফ ইয়াওমুল আরবিয়া’ শরীফ দুনিয়াবী হিসেবে প্রায় ৬ বৎসর বয়স মুবারক-এ মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন।” সুবহানাল্লাহ!“
সম্মানিত
জানাযা নামায পড়া এবং সম্মানিত রওযা শরীফ উনার মধ্যে রাখা:
কিতাবে
বর্ণিত রয়েছে,
فَصَلَّى عَلَيْهِ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَنَزَلَ فِي حُفْرَتِهِ وَالِدُهُ عُثْمَانُ بْنُ عَفَّانَ عليه السلام.
অর্থ:
“নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনে হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত জানাযা
উনার নামায মুবারক পড়ান এবং উনার সম্মানিত আব্বাজান সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন
আলাইহিস সালাম তিনি উনার সম্মানিত রওযা শরীফ-এ অবতরণ করেন অর্থাৎ উনাকে সম্মানিত রওযা শরীফ উনার মধ্যে রাখেন।” সুবহানাল্লাহ!
অপর
বর্ণনায় রয়েছে,
ودخل رسول الله صلى الله عليه وسلم قبره،
অর্থ:
“নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবেন হযরত যুন
নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত রওযা শরীফ উনার ভিতর প্রবেশ করেন।”
সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত
রওযা শরীফ:
উনার
সম্মানিত রওযা শরীফ সম্মানিত জান্নাতুল বাক্বী’ শরীফ অবস্থিত। সুবহানাল্লাহ! এই
সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
ودفنه أبوه بالبقيع
অর্থ:
“উনার সম্মানিত পিতা উনাকে সম্মানিত জান্নাতুল বাক্বী’ শরীফ-এ সম্মানিত দাফন
মুবারক করেন।” সুবহানাল্লাহ!
উল্লেখ্য
যে, সিবতু রসূলিল্লাহ
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনে হযরত যুন নূরাইন
আলাইহিস সালাম তিনি ব্যতীত সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম
উনার আর কোনো সম্মানিত আওলাদ বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেননি।
আহলু
বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম
খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি সিবতু রসূলিল্লাহ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনে হযরত যুন
নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার সম্মানার্থে আমাদের সবাইকে উনার হাক্বীক্বী শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান
মুবারক জানার, বুঝার, উপলব্ধি করার, উনার
আলোচনা মুবারক করার, উনার হাক্বীক্বী
তায়াল্লুক্ব-নিসবত মুবারক, মা’রিফাত-মুহব্বত, রেযামন্দি-সন্তুষ্টি করার এবং হাক্বীক্বীভাবে উনার সম্মানিত
খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার তাওফীক্ব দান করুন। আমীন
সাইয়্যিদু
শাবাবি আহলিল জান্নাহ, আহলু
বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনে হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার বেমেছাল শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, হাকিমুল হাদীছ, মুজাদ্দিদে
আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ
আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে রয়েছে, একজন নবী-রসূল আলাইহিস সালাম উনাকে শহীদ করলে, এর কাফফারা বাবদ সত্তর হাজার লোককে ধ্বংস করে দেয়া হয়। আর
একজন খলীফা উনাকে শহীদ করা হলে, এর
কাফফারা বাবদ পঁয়ত্রিশ হাজার লোককে ধ্বংস করে দেয়া হয়। আর ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি
বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত শাহাদাত মুবারক
উনার সাথে যারা জড়িত, তাদের
কমপক্ষে এক লক্ষ চল্লিশ হাজার লোককে কাফফারা বাবদ নিশ্চিহ্ন করে দেয়া হবে, ধ্বংস করে দেয়া হবে।” সুবহানাল্লাহ!
এই সম্পর্কে
বিভিন্ন কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ سَلَامٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالى عَنْهُ قَالَ مَا قُتِلَ نَبِيُّ قَطُّ إِلَّا قُتِلَ بِهِ سَبْعُونَ أَلْفًا مِنْ أُمَّتِهِ وَلَا قُتِلَ خَلِيفَةٌ قَطُّ إِلَّا قُتِلَ بِهِ خَمْسَةٌ وَثَلَاثُونَ أَلْفًا.
অর্থ: “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা
আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এমন
কোনো নবী আলাইহিস সালাম উনাকে শহীদ করা হয়নি যে, উনার কাফফারা বাবদ উনার উম্মতের সত্তর হাজার লোককে নিশ্চিহ্ন করে দেয়া হয়নি। আর এমন কোনো খলীফা উনাকে শহীদ করা
হয়নি যে, উনার কাফফারা বাবদ
পঁয়ত্রিশ হাজার লোককে নিশ্চিহ্ন করে দেয়া হয়নি।” (মুছান্নাফে আবী শায়বাহ ১৫/২২৩, মুছান্নাফে আব্দির রাজ্জাক্ব ১১/৪৪৫, আল মাত্বালিবুল আলিয়াহ ১৮/৫২, আছ ছওয়াইকুল মুহ্রিক্বহ ১/৩২৯, ত্ববাক্বতে ইবনে সা’দ ৩/৮৩, ইযালাতুল খফা’ ৬/৩১৯, তাফসীরে রূহুল বয়ান ৮/১৪৬, খাযিন ৩/৩০৩, বাগভী
৬/৫৯, আত তামহীদ ওয়াল
বায়ান ১/১৮১, তারীখুল খুলাফা
১/১২৮, আর রিয়াদুন
নাদ্বরাহ ফী মানাক্বিবে আশারাহ ১/২২৮, আখবারুল
মদীনা ২/২২৫, আল মুহাদ্বারাত
ওয়াল মুহাওয়ারাত ১/৭১, ইত্যাদি)
সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنِ حَضْرَتْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ تعالى عَنْهُمَا قَالَ أَوْحَى اللهُ تَعَالَى إِلَى مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنِّي قَتَلْتُ بِيَحْيَى بْنِ زَكَرِيَّا سَبْعِينَ أَلْفًا وَإِنِّي قَاتِلٌ بِابْنِ ابْنَتِكَ سَبْعِينَ أَلْفًا وَسَبْعِينَ أَلْفًا.
অর্থ: “হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার
থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মহান
আল্লাহ পাক তিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল
মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
নিকট সম্মানিত ওহী মুবারক করেন যে, নিশ্চয়ই
আমি হযরত ইয়াহইয়া ইবনে যাকারিয়া আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত শাহাদাত মুবারক উনার
সাথে সংশ্লিষ্ট সত্তর হাজার লোককে কাফফারা বাবদ নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছি, ধ্বংস করে দিয়েছি। সুবহানাল্লাহ! আর নিশ্চয়ই আমি আপনার লখতে
জিগার, আওলাদ
সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার যিনি সম্মানিত আওলাদ ইমামুছ ছালিছ
মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম
হুসাইন আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত শাহাদাত মুবারক উনার সাথে সংশ্লিষ্ট যারা
থাকবে, তাদের সত্তর হাজার
এবং সত্তর হাজার তথা এক লক্ষ চল্লিশ হাজার লোককে কাফফারা বাবদ নিশ্চিহ্ন করে দিবো, ধ্বংস করে দিবো।” সুবহানাল্লাহ! (মুস্তাদরকে হাকিম শরীফ
৩/১৯৫, খছায়িছুল কুবরা
শরীফ ২/২১৪, ইমতা‘উল আসমা’
১২/২৩৭, শরহুয যারক্বানী
‘আলাল মাওয়াহিব ১০/১৫২ ইত্যাদি)
এই সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মাধ্যমে মহান আল্লাহ পাক তিনি
এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
অর্থাৎ উনারা সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বেমেছাল শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান
মুবারক উনার বিষয়টি স্পষ্ট করে দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার
হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনাকে সম্মানিত ওহী মুবারক করে জানিয়ে দিয়েছেন যে,
إِنِّي قَتَلْتُ بِيَحْيَى بْنِ زَكَرِيَّا سَبْعِينَ أَلْفًا وَإِنِّي قَاتِلٌ بِابْنِ ابْنَتِكَ سَبْعِينَ أَلْفًا وَسَبْعِينَ أَلْفًا.
অর্থ: “নিশ্চয়ই আমি হযরত ইয়াহইয়া ইবনে যাকারিয়া আলাইহিস
সালাম উনার সম্মানিত শাহাদাত মুবারক উনার সাথে সংশ্লিষ্ট সত্তর হাজার লোককে
কাফফারা বাবদ নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছি, ধ্বংস
করে দিয়েছি। সুবহানাল্লাহ! আর নিশ্চয়ই আমি আপনার লখতে জিগার, আওলাদ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার যিনি
সম্মানিত আওলাদ ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত শাহাদাত মুবারক উনার
সাথে সংশ্লিষ্ট যারা থাকবে, সত্তর
হাজার এবং সত্তর হাজার তথা এক লক্ষ চল্লিশ হাজার লোককে কাফফারা বাবদ নিশ্চিহ্ন করে
দিবো, ধ্বংস করে দিবো।”
সুবহানাল্লাহ!
আর এই সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার ব্যাখ্যায় আহলু বাইতি
রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ইমামুল মুহাদ্দিছীন মিনাল আউওয়ালিনা ইলাল আখিরীন, মুজাদ্দিদে আ’যম, মামদূহ
মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস
সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “মূলত, এক লক্ষ চল্লিশ হাজার কাফির-মুনাফিকদেরকে তো নিশ্চিহ্ন করে
দেয়া হয়েছেই। শুধু তাই নয়, এইজন্য
ক্বিয়ামত পর্যন্ত কোটি কোটি কাফির, মুনাফিক্ব ও উলামায়ে সূ’দেরকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়া হবে, ধ্বংস করে দেয়া হবে, তাদের অস্থিত্ব বিলীন করে দেয়া হবে।” সুবহানাল্লাহ!
এখন বলার বিষয় হচ্ছে একজন খলীফা উনাকে শহীদ করার কারণে, কাফফারা বাবদ পঁয়ত্রিশ হাজার লোককে নিশ্চিহ্ন করে দেয়া হয়।
হযরত ইয়াহইয়া ইবনে যাকারিয়া আলাইহিস সালাম তিনি হচ্ছেন একজন বিশেষ নবী-রসূল। উনার
সম্মানিত শাহাদাত মুবারক উনার সাথে জড়িত যারা ছিলো, কাফফারা বাবদ সত্তর হাজার লোককে নিশ্চিহ্ন করে দেয়া হয়েছে; কিন্তু সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ আলাইহিস সালাম উনার
সম্মানিত শাহাদাত মুবারক উনার সাথে জড়িত, তাদের কমপক্ষে এক লক্ষ চল্লিশ হাজার লোককে কাফফার বাবদ
নিশ্চিহ্ন করে দেয়া হয়েছে এবং ক্বিয়ামত পর্যন্ত কোটি কোটি কাফির, মুনাফিক্ব ও উলামায়ে সূ’দেরকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়া হবে, ধ্বংস করে দেয়া হবে, তাদের অস্থিত্ব বিলীন করে দেয়া হবে। সুবহানাল্লাহ!
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ইমামুল মুহাদ্দিছীন মিনাল আউওয়ালিনা ইলাল আখিরীন, মুজাদ্দিদে আ’যম, মামদূহ
মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস
সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “সিবতু
রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন
আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যেই হুকুম, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম উনার সকল হাফাদাত (নাতী-নাতনী) আলাইহিমুস সালাম ও আলাইহিন্নাস সালাম
উনাদেরও ঠিক একই হুকুম।” সুবহানাল্লাহ!
যদি তাই হয়, তাহলে
এখান থেকে স্পষ্ট হয়ে যায় যে, সাইয়্যিদু
শাবাবি আহলিল জান্নাহ, আহলু
বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনে হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান
মুবারক কতো বেমেছাল। সুবহানাল্লাহ! এক কথায় তিনি শুধু যিনি খালিক মালিক রব মহান
আল্লাহ পাক তিনি নন এবং উনার হাবীব, নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান
মুবারক উনাদের অধিকারী হচ্ছেন তিনি। সুবহানাল্লাহ! তিনি একমাত্র মহান আল্লাহ পাক
উনার এবং উনার হাবীব, নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের মুহতাজ। এছাড়া কায়িনাতের
অন্য কারো মুহতাজ নন; বরং
কায়িনাতের সকলেই উনার মুহতাজ। উনার কারণেই কায়িনাতের সকলে সম্মানিত হয়েছেন।
সুবহানাল্লাহ! এই বিষয়টি আরো স্পষ্ট করে দেয়া হয়েছে, নিম্নোক্ত হাদীছ শরীফ উনার মাধ্যমে। সম্মানিত হাদীছ শরীফ
উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
اَنَّ نَبِـىَّ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَقُوْلُ نَـحْنُ اَهْلُ بَيْتٍ طَهَّرَهُمُ اللهُ مِنْ شَجَرَةِ النُّبُوَّةِ وَمَوْضِعِ الرِّسَالَـةِ وَمُـخْتَلِفِ الْمَلَائِكَةِ وَبَيْتِ الرَّحْمَةِ وَمَعْدِنِ الْعِلْمِ.
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি প্রায় ইরশাদ মুবারক করতেন। আমরা মহাসম্মানিত হযরত আহলু
বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত হযরত
আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস উনাদেরকে (আমাদেরকে) সম্মানিত নুবুওয়াত মুবারক উনার
বৃক্ষ, সম্মানিত রিসালাত
মুবারক উনার স্থান, বিভিন্ন ফেরেশতা
আলাইহিমুস সালাম উনাদের, উনাদের
দ্বারা সম্মানিত খিদমত মুবারক, সম্মানিত
রহমত মুবারক উনার ঘর মুবারক এবং সম্মানিত ইলম মুবারক উনার খনি মুবারক (ইত্যাদি
সমস্ত কিছু) থেকে পবিত্র রেখেছেন, ছমাদ
তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী) করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ!
(তাফসীরে দুররে মানছূর লিস সুয়ূত্বী ৬/৬০৬, তাফসীরে ইবনে আবী হাতিম ৯/৩১৩৩)
সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ عَلِـىّ كَرَّمَ الله وَجْهَهٗ عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَحْنُ اَهْلُ بَيْتٍ شَجَرَةُ النُّبُوَّةِ وَمَعْدِنُ الرّسَالَةِ لَيْسَ اَحَدٌ مِّنَ الْـخَلَائِقِ يَفْضُلُ اَهْلَ بَيْـتِـىْ غَيْرِىْ.
অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস
সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক
করেন, আমরা মহাসম্মানিত
হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। আমরা সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক উনার
সম্মানিত বৃক্ষ মুবারক এবং সম্মানিত রিসালাত মুবারক উনার সম্মানিত খনি মুবারক।
সুবহানাল্লাহ! সমগ্র সৃষ্টি জগতে একমাত্র আমি ব্যতীত দ্বিতীয় আর কেউ নেই যে আমার
মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের উপর শ্রেষ্ঠত্ব লাভ করে।
অর্থাৎ সমগ্র সৃষ্টি জগতে আমার পরেই আমার মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ
আলাইহিমুস সালাম উনাদের শ্রেষ্ঠত্ব মুবারক, ফযীলত মুবারক।” সুবহানাল্লাহ!
ম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ اَنَسٍ رَضِىَ الله تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَـحْنُ اَهْلُ بَيْتٍ لَّايُقَاسُ بِنَا اَحَدٌ.
অর্থ: “হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে
বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমরা মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম।
আমাদের সাথে অন্য কারো তুলনা করা যাবে না।” সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ!
(দায়লামী ৪/২৮৩, জামি‘উল আহাদীছ
২২/২১৯, কানজুল ‘উম্মাল
১২/১০৪, জাম‘উল জাওয়ামি’
১/২৪৯৫০, যাখায়েরুল ‘উক্ববাহ
ফী মানাক্বিবে যাওইল কুরবা লিমুহিব্বে ত্ববারী ১/১৭, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১১/৭ ইত্যাদি)
মহান আল্লাহ পাক তিনি আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ছাহিবু ইলমিল
আউওয়ালি ওয়াল ইলমিল আখিরি, মুজাদ্দিদে
আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ
আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার সম্মানার্থে আমাদের সবাইকে সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল
জান্নাহ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সিবতু
রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনে হযরত যুন
নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার হাক্বীক্বী শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান
মুবারক উপলব্ধি করার এবং সে অনুযায়ী উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক
দেয়ার, সম্মানিত
তা’যীম-তাকরীম করার ও সম্মানিত ছানা-ছিফত করার মাধ্যমে হাক্বীক্বী
রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক হাছিল করার তাওফীক্ব দান করুন। আমীন!
সাইয়্যিদুল আম্বিয়া
ওয়াল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনারসম্মানিত আহলু বাইত শরীফ ও আওলাদ আলাইহিমুস সালাম উনাদের ফযীলত মুবারক-
খালিক্ব
মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
قل لا اسئلكم عليه اجرا الا الـمودة فى القربى
অর্থ:
“(হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি জানিয়ে দিন, আমি তোমাদের নিকট কোনো বিনিময় চাচ্ছি না। আর চাওয়াটাও
স্বাভাবিক নয়; তোমাদের পক্ষে
দেয়াও কস্মিনকালে সম্ভব নয়। তবে তোমরা যদি ইহকাল ও পরকালে হাক্বীক্বী কামিয়াবী
হাছিল করতে চাও; তাহলে তোমাদের জন্য
ফরয-ওয়াজিব হচ্ছে- আমার হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করা, তা’যীম-তাকরীম মুবারক করা, উনাদের খিদমত মুবারক উনার আনজাম দেয়া।” (পবিত্র সূরা শূরা
শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ২৩)
নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, উনার পবিত্র বংশধরগণ উনাদের ফযীলত সম্পর্কে রঈসুল
মুফাস্সিরীন, ওলীয়ে কামিল
আল্লামা কাযী ছানাউল্লাহ পানিপথি রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার প্রণিত ‘তাফসীরে
মাযহারী শরীফ উনার ৮ম জিঃ ৩২০ পৃষ্ঠায় উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার ব্যাখ্যায়
লিখেন-
لا اسئلكم اجرا الا ان تودوا اقربائى واهل بيتى وعترتى
অর্থ:
“আমি তোমাদের নিকট প্রতিদান চাইনা তবে তোমরা আমার নিকটাত্মীয়, হযরত আহলে বাইত শরীফ ও পবিত্র বংশধরগণ উনাদের প্রতি সম্মান
প্রদর্শন কর বা উনাদের হক্ব আদায় কর।
এ
সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ রয়েছে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন-
والله لادخل قلب امرئى مسلم ايـمان حتى يحبكم لله ولقرابتى
অর্থ:
“মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! ততক্ষণ পর্যন্ত কোন মুসলমান ব্যক্তির অন্তরে পবিত্র
ঈমান দাখিল হবে না (হাক্বীক্বীভাবে ঈমানদার হবে না) যতক্ষণ পর্যন্ত সে ব্যক্তি
মহান আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টি মুবারক উনার জন্য আমার সম্মানিত বংশধরগণ উনাদেরকে
মুহব্বত না করবে।” (মুসনাদে আহমদ শরীফ, তাফসীরে
ইবনে কাছীর ৭/১৮০)
স্মরণীয়
যে, সাইয়্যিদুল
মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নূরানী বংশধারা সাইয়্যিদাতু নিসায়ি
আহলিল জান্নাহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত দুই আওলাদ ইমামুছ ছানী মিন
আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম এবং ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি
বাইতি রসূলিল্লাহ হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনাদের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী জারী
রয়েছে। সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে ইবনে আবী হাতিম শরীফ, ইবনে কাছীর শরীফ, মাযহারী
শরীফ, মাআরেফুল কুরআন
ইত্যাদি)
সাইয়্যিদুল
মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, রহমতুল্লিল আলামীন, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
الحسن والحسين عليهما السلام سيدا شباب اهل الجنة
অর্থ:
“হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম ও হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনারা হচ্ছেন
বেহেশতের যুবক উনাদের সাইয়্যিদ।” সুবহানাল্লাহ! (মিশকাত শরীফ)
অতএব, যারা ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম উনাদের বংশধর বা আওলাদ উনারাই ‘সাইয়্যিদ বা আওলাদুর রসূল’ নামে
পরিচিত।
নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক
করেন-
انا تارك فيكم الثقلين اولـهما كتب الله فيه الـهدى والنور فخذوا بكتب الله واستمسكوا به فحث على كتب الله و رغب فيه ثم قال واهل بيتى اذكركم الله فى اهل بيتى اذكركم الله فى اهل بيتى
অর্থ:
“আমি তোমাদের জন্য দু’টি নিয়ামত মুবারক রেখে যাচ্ছি। প্রথম নিয়ামত মুবারক হলেন, মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্র কিতাব। উনার মধ্যে রয়েছে
হিদায়েত ও নূর মুবারক। তোমরা পবিত্র কিতাবুল্লাহ উনাকে দৃঢ়ভাবে আঁকড়িয়ে ধর। “তিনি
কিতাবুল্লাহ উনার প্রতি উৎসাহ প্রদান করলেন। অতঃপর বললেন, “দ্বিতীয় নিয়ামত মুবারক হলেন, আমার হযরত আহলু বাইত শরীফ বা (আওলাদগণ) বংশধরগণ। আমি
তোমাদেরকে আমার হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্পর্কে মহান আল্লাহ
পাক উনার তরফ হতে বিশেষ নছীহত মুবারক করছি। (মুসলিম শরীফ, মিশকাত শরীফ)
তিনি
আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
تركت فيكم امرين لن تضلوا ما تمسكتم بهما كتاب الله وعترتى اهل بيتى
অর্থঃ
“আমি তোমাদের নিকট দু’টি নিয়ামত মুবারক রেখে যাচ্ছি। যদি তোমরা উক্ত নিয়ামত নিয়ামত
মুবারকদ্বয়কেআঁকড়িয়ে ধর তবে পথভ্রষ্ট হবে না। প্রথমতঃ মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্র
কিতাব ও দ্বিতীয়তঃ আমার বংশধর বা আওলাদ আলাইহিমুস সালামগণ উনারা।”
তিনি
অন্যত্র ইরশাদ মুবারক করেন-
ان اولادى كسفينة نوح من دخلها نجا
অর্থ:
“নিশ্চয়ই আমার হযরত আওলাদ আওলাইহিমুস সালাম উনাদের উদাহরণ হলো হযরত নূহ আলাইহিস্
সালাম উনার কিস্তির ন্যায়। যে তাতে প্রবেশ করেছে বা আরোহন করেছে সেই নাযাত
পেয়েছে।” সুবহানাল্লাহ! (সিররুশ শাহাদাতাইন) অর্থাৎ হযরত আওলাদুর রসূল ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদেরকে যারা মুহব্বত করবে তারা সকলেই নাজাত লাভ করবে।
সুবহানাল্লাহ!
তিনি
আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
ان اولادى كحطة بنى اسرائيل من قالـها نجا
অর্থ:
“নিশ্চয়ই আমার হযরত আওলাদ আলাইহিমুস সালাম উনারা বণী ইসরাইলের হিত্তাতুন-এর ন্যায়।
যারা তা বলেছে তারা নাযাত লাভ করেছে।” সুবহানাল্লাহ! (সিররুশ্ শাহাদাতাইন)
অর্থাৎ
হযরত আওলাদুর রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদেরকে যারা মুহব্বত করবে
তারা সকলেই নাজাত লাভ করবে। সুবহানাল্লাহ!
তিনি
আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
النجوم امان لاهل السماء واهل بيتى امان لاهل الارض فاذا ذهب اهل بيتى ذهب اهل الارض
অর্থ:
“তারকাসমূহ আসমানবাসীদের জন্য নিরাপত্তা দানকারী আর আমার বংশধর বা আওলাদ আলাইহিমুস
সালামগণ উনারা হচ্ছেন যমীনবাসীদের জন্য নিরাপত্তা দানকারী। সুতরাং যখন আমার হযরত
আহলু বাইত শরীফ বা হযরত আওলাদ আলাইহিমুস সালামগণ উনারা (দুনিয়া থেকে) চলে যাবেন
অর্থাৎ বিদায় গ্রহণ করবেন তখন দুনিয়াবাসী সকলেই নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। অর্থাৎ তখন
ক্বিয়ামত সংঘটিত হবে।” (মুসনাদে আহমদ শরীফ, মিশকাত শরীফ, হাশিয়ায়ে
মিশকাত শরীফ)
কাজেই, বিশ্ববাসীর জন্য নিরাপত্তা দানকারী, নাযাত দানকারী, ধ্বংস
থেকে রক্ষাকারী, পবিত্র ঈমান ও আমল
হিফাযতকারী হযরত আওলাদুর রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করলে মহান আল্লাহ
পাক উনার ও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনাদের সন্তুষ্টি মুবারক পাওয়া যাবে। এ মর্মে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন
নাবিয়্যীন, রহমতুল্লিল আলামীন, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
احبوا الله لـما يغذوكم من نعمة احبونى لحب الله واحبوا اهل بيتى لحبى
অর্থ:
“মহান আল্লাহ পাক তিনি তোমাদেরকে খাওয়া পরার যে নিয়ামত মুবারক দিয়েছেন সেজন্য মহান
আল্লাহ পাক উনাকে মুহব্বত করো। আর আমাকে মুহব্বত করো মহান আল্লাহ পাক উনার
সন্তুষ্টি মুবারক লাভ করার জন্য। আর আমার হযরত আহলে বাইত শরীফ উনাদেরকে মুহব্বত
করো আমার সন্তুষ্টি মুবারক উনার জন্য।” (তিরমিযী শরীফ, মিশকাত শরীফ)
আর
তাই অতীতের সকল ইমাম-মুজতাহিদ, আউলিয়ায়ে
কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা মহান আল্লাহ পাক
উনার এবং উনার প্রিয়তম রসূল, নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সন্তুষ্টি মুবারক পাওয়ার জন্য মন প্রাণ
উজাড় করে এমনকি সর্বস্ব হাদিয়া দিয়ে হযরত আওলাদে রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে
মুহব্বত করেছেন, উনাদের খিদমত
করেছেন।
যেমন
এ প্রসঙ্গে “আনওয়ারুল আরিফীন” কিতাবে হযরত রবি বিন সুলাইমান রহমতুল্লাহি আলাইহি
উনার খিদমতের, তা’যীম-তাকরীমের, মুহব্বতের বিরল ঘটনা বর্ণিত হয়েছে। তিনি হজ্জে যাওয়ার পথে
একজন মহিলা আওলাদুর রসূল আলাইহাস সালাম উনার পরিবারের অসহায় অবস্থা দর্শনে ব্যথিত
হয়ে হজ্জে যাওয়ার সমস্ত টাকা উনাদের খিদমতে হাদিয়া করেছিলেন। ফলশ্রুতিতে মহান
আল্লাহ পাক তিনি উনার ছূরতে একজন ফেরেশতা আলাইহিস সালাম সৃষ্টি করেন যিনি ঐ বছর
থেকে ক্বিয়ামত পর্যন্ত হজ্জ করবেন যার ছাওয়াব উনার আমলনামায় জমা হতেই থাকবে। শুধু
তাই নয় তিনি উনাদের মুবারক খিদমতে রৌপ্য মুদ্রা হাদিয়া করেছিলেন তার বিনিময়ে উনাকে
স্বর্ণ মুদ্রা হাদিয়া করা হয়েছিল এবং স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার তরফ থেকে সুসংবাদ দিয়ে বলা হয়েছিল যারা
আমাদের সাথে ব্যবসা করে তারা কখনো ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। সুবহানাল্লাহ!
হযরত
আওলাদুর রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদেরকে বর্ণনাতীত মুহব্বত, তা’যীম-তাকরীম ও সম্মান প্রদর্শনের নজীর স্থাপন করেছেন
ইমামুল আ’যম, ইমামুল আইম্মাহ, হাকিমুল হাদীছ হযরত ইমাম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি
তিনি।
একবার
তিনি একস্থানে বসে স্বীয় ছাত্রদেরকে র্দস দিচ্ছিলেন। তিনি কিছুক্ষণ পর পর র্দস
বন্ধ করে দাঁড়িয়ে যেতেন। যার কারণে ছাত্রদের পড়া বুঝতে ও ধরতে অসুবিধা হতো। যখন
র্দস শেষ হলো, তখন ছাত্ররা প্রশ্ন
করল, “হে ইমামে আ’যম
রহমতুল্লাহি আলাইহি! বেয়াদবী ক্ষমা করবেন, আমরা লক্ষ্য করেছি যে, আপনি বারবার র্দস বন্ধ করে দাঁড়িয়ে যাচ্ছিলেন এর পিছনে কি
কারণ রয়েছে?” উত্তরে তিনি বললেন
যে, “তোমরা নিশ্চয়ই
লক্ষ্য করেছ যে, আমাদের র্দসগাহের
পাশেই কিছু ছোট ছেলেরা দৌঁড়াদৌঁড়ি করছিল। তন্মধ্যে অমুক ছেলেটি বার বার আমার
নিকটবর্তী হলেই আমি দাঁড়িয়ে যেতাম।” ছাত্ররা বললো যে, “হ্যাঁ, আমরা
তা লক্ষ্য করেছি। তবে এ ছোট ছেলেটি আপনার নিকটবর্তী হলে কেন দাঁড়িয়ে যেতেন, অনুগ্রহ করে তার কারণ আমাদেরকে বলবেন কি?” তখন ইমামে আ’যম হযরত আবূ হানিফা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি
বললেন যে, “দেখ, এ ছেলেটি আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। উনার
সাথে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
নূরুল আহমার মুবারকের সম্পর্ক রয়েছে। সেজন্য যখনই তিনি আমাদের র্দসগাহের নিকটবর্তী হয়েছেন তখনই
আমি উনার সম্মানার্থে দাঁড়িয়েছি। কেননা, নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আওলাদ
আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে তা’যীম-তাকরীম ও সম্মান প্রদর্শন করা পবিত্র ঈমান উনার
অঙ্গ। শুধু তাই নয় মহান আল্লাহ পাক উনার ও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মুহব্বত ও সন্তুষ্টি মুবারক হাছিলেরও
কারণ।”
সাইয়্যিদুনা হযরত মামদূহ মুরশিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ওয়া আহলূ মরশিদ ক্বিবলা চল্লাল্লাহু আলাইহিম ওয়া সাল্লাম আপনাদের খাছ ভাবে গোলামী করার তৌফিক দান করূন । আপনাদের প্রতি বেশি বেশি ছলাত ও সালাম তিলাওয়াল কারার তৌফিক দান করুন।
আমীন!!!